Categories
Blog My text

ইয়াহুদী VS মুসলমান

ইয়াহুদীর দালাল বলে গালি দেয় যারা, তারা নিজেরাও কিন্তু জানেনা ইয়াহুদী কাকে বলে।

আকিদার দিক থেকে ইয়াহুদী মুসলমান কাছাকাছি।

মৌলিক পার্থক্য টা হলো:-

১) ইয়াহুদীরা একটি মাত্র কিতাব তাওরাতকে বিধান মানে।

মুসলমান দুইটি কিতাবের বিধান মানে ——
১) কোরান ২) হাদীস।

২) ইয়াহদীরা একটি কিতাব তাওরাত মানে।

মুসলমান দুইজন নবীর সুন্নত পালন করে।

ইব্রাহীম আঃ ও মুহাম্মদ সাঃ।

ইয়াহুদীরা শুধু মুসা নবীর সুন্নত পালন করে।

মিল কোথায় গরমিল কতটাঃ —–

১) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে সৃষ্টিকর্তায় এক এবং তাদের কোন শরীক নেই।

২) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে আদী পিতা ইব্রাহীম আঃ

৩) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে আদী মানব আদম আঃ

৪) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে বিয়ে বহির্ভুত শাররীক সম্পর্ক গুরুতর অপরাধ।

৫) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে সুদ নিষিদ্ধ এবং জঘন্য পাপ।

৬) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে পশুর রক্ত ও শুকরের মাংস নিষিদ্ধ।

৭) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে সম্পদ থেকে যাকাত প্রদান করতে হবে।

৮) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে জেরুজালেম একটি পবিত্র নগরী।

৯) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে চাঁদ দেখে ধর্মীয় উৎসব পালন।

১০) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে মাথায় টুপি পড়া সুন্নত এবং পড়ে।

১১) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে দাড়ি রাখতে হবে, দাড়ি কাটা পাপ।

১২) দুই ধর্মেই পুরুষদের খতনা করাকে সুন্নত মানে।

১৩) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে মেয়েদের মাথায় কাপড় দিয়ে পর্দা করতে হবে।

১৪) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে পশু যবাইয়ের পুর্বে স্রষ্টার নাম নেয়া।

১৫) দুই ধর্মেই কঠোর ধর্মীয় আইন আছে। মুসলমানদের শরীয়া আইন, ইয়াহুদীদের খালাকা আইন।

১৬) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে কিতাব অনুযায়ী খাদ্য গ্রহন করা। মুসলমান যাকে হালাল বলে ইয়াহুদীরা বলে কুশার।

১৭) দুই ধর্মেই পরস্পরের সালাম প্রথা রয়েছে।

১৮) দুই ধর্মেই সপ্তাহে এবাদতের বিষেশ দিন আছে। মুসলমানের জুম্মা আর ইয়াহুদীদের আইয়ামে সাবেত।

১৯) দুই ধর্মেই এবাদতের জন্য একটি করে দিক নির্বাচন করে। মুসলমান ক্বাবাকে আর ইয়াহুদী বাইতুল মোকাদ্দেস

২০) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে সিয়াম পালন ফরজ। মুসলমান বছরে রমজান মাস ইয়াহুদীরা বছরে বিশেষ পাঁচ দিন।

২১) মুসলমান প্রতিদিন ৫ বার সালাত আদায় করে, ইয়াহুদীরা প্রতিদিন ৩ বার সালাত আদায় করে।

২২) মুসলমানদের হজ্জ হয় বছরে একবার ক্বাবায়। আর ইয়াহুদীদের হজ্জ হয় বছরে তিন বার জেরুজালেমে।

২৩) মুসলিমদের পবিত্র নগরী ক্রমনুসার মক্কা,মদীন, পরে জেরুজালেম। ইয়াদীদের ক্রমনুসারে জেরুজালেম,মক্কা পরে মদীনা।

২৪) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে উভয় ধর্মের মধ্যে পরস্পর বিয়ে করায় কোন নিষেধ নাই।

আমাদের ভুল ধারনা ইয়াহুদীরা সব জাহান্নামী। অথচ আল্লাহ বলেনঃ “নিশ্চয়ই যাহারা ঈমান আনিয়াছে, যাহারা ইয়াহূদী হইয়াছে এবং খ্রিস্টান ও সাবিঈন-যাহারাই আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, তাহাদের জন্য পুরস্কার আছে তাহাদের প্রতিপালকের নিকট। তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিতও হইবে না। (সূরা ২ঃ ৬২)

কেউ ইয়াহুদী বলে গালি দিলে আপনি রেগে যান, মনে প্রচন্ড অপমান বোধ করেন। প্রকৃত কি তাই? ইয়াহুদীর দালাল বলে যে গালি দেয় সে নিজেও কিন্তু জানে না ইয়াহুদী কাকে বলে, কি তাদের ধর্মীয় বৈশিষ্ঠ? আল্লাহর নিকট কতটা তাদের মর্যদা? কি তাদের কিতাব? আল্লাহ ইয়াহুদীদের জ্ঞান বিজ্ঞানে প্রাধন্য দিয়েছেন মর্মে ঘোষানাও রয়েছে কোরানে। আবার এই ইহুদীরা চতুর ও নিকষ্ট সে ঘোষনাও রয়েছে। ইহুদীদের মাঝ থেকেও অনেকেই জান্নাতে যাবে এমন ঘোষনাও রয়েছে।

সুূদ কোন ধর্ম অনুসারীরা প্রচলন করেছেঃ

সুদ প্রসংগে: ইয়াহূদী ধর্মের রীতি হল ইয়াহূদীগণ একে অপরের কাছে থেকে সুদ নিতে পারবে না কিন্তু অন্য ধর্মের কারও কাছে থেকে তারা সুদ নিতে পারবে।

ইয়াহূদীদের ধর্মের পালনীয় বিধানকে
Ten Commandments বলা হয়।

অর্থাৎ দশটি আজ্ঞা পালন করতে হয় যাকে ইংরেজীতে Ten Commandments বলা হয়। এগুলো হলঃ

১। তুমি প্রভূকে মানবে, কেবল তার সেবা করবে আর তার নামে স্মরণ করবে।

২। পিতা-মাতার বাধ্য হয়ে তাদের সম্মান হবে।

৩। রবিবার বিশ্রাম করবে এবং পবিত্রভাবে ইবাদত করবে,

৪। নরহত্যা করবে না।

৫। মনে,বাক্যে ও কর্মে সৎ, শুদ্ব ও দয়ালু হবে,

৬। ব্যভিচার করবে না।

৭। চুরি করবে না ।

৮। মিথ্যা বলবে না।

৯। পরস্ত্রী লোভ করবে না এবং দৃষ্টি নত রাখবে,

১০। পর দ্রব্যের প্রতি লোভ করবে না।

কেনান’ (প্যালেস্টাইন) ইহুদীদের প্রথম মন্দিরে নুহ আ: এর জাহাজ, কল্পিত ‘চিরুবিম’ পশুর মূর্তি ছিল। ‘চিরুবিম’ ছিল আকাশে ভাসমান উড়ন্ত এ্যাঞ্জেল, যাতে উপবেশন করতো ‘যিহোবা’ নিজে। ইহুদীরা তাদের প্রার্থনালয়ে ‘যিহোবা’র কোন মূর্তি রাখতো না কেবল তার পুজো করতো।

এই চিরুবিম এর আকৃতি গঠন কেই মিরাজে ব্যবহৃত যান রফরফ এর কাল্পনিক আকৃতি মনে করেন অনেকেই।

আমি ব্যক্তিগত ভাবে রফরফের সে কাল্পনিক আকৃতির সাথে দ্বীমত পোষন করি।

Categories
Blog My text

ইসরাইলের প্রতি

ইসরাইল কেন এত মারমুখী। কেন কোন শক্তির কাছে পিছু হটে না। সূরা মায়েদার ২১ নং আয়াত থেকে জেনে নেই।

‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ্ তোমাদের জন্য যে পবিত্র ভূমি নির্দিষ্ট করিয়াছেন তাহাতে তোমরা প্রবেশ কর এবং পশ্চাদপসরণ করিও না; করিলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হইয়া পড়িবে।’[ 5:21]

বনী ইসরাঈল” মানে: ইসরাঈলের সন্তানগণ। এখানে “ইসরাঈল” বলতে বোঝানো হচ্ছে নবী ইয়াকুব (আ.)-কে। তার ১২ জন ছেলে ছিল, যাদের বংশধররাই “বনী ইসরাঈল” নামে পরিচিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় পরবর্তি সালামুন মুসা আঃ এর সমপ্রদায়কে বনী ইসরাইল বলা হয়। এদেরা ধর্মের দিক থেকে ইয়াহুদী বলা হয়।

খৃষ্টান সম্প্রায় এদের প্রতি সবসময় বিদ্বেশ পোষন করে আসছে। কারন তাদের নবী ঈসা আঃকে এই ইয়াহুদী সম্প্ীদায়ই নাকি ক্রুস বিদ্ধ করেছিল বলে দাবী।   তাদের বাসবাস  ইসরাইল নামক ভু-খন্ডে । পৃথিবীর মোট ধর্মানুসারী জনসংখ্যার খুবই নগন্য একটি অংশ ইয়াহুদী। এদের  জ্ঞান বিজ্ঞানে সবচেয়ে বেশী নেয়ামত দান করেছেন বলে কোরানে পাওয়া যায়। এরা অত্যন্ত অকৃতজ্ঞ এবং জেদী সম্প্রদায় বলেও কোরানে বর্ণিত হয়েছে।

এবং আমি কিতাবে প্রত্যাদেশ দ্বারা বনী ইস্‌রাঈলকে জানাইয়াছিলাম, ‘নিশ্চয়ই তোমরা পৃথিবীতে দুইবার বিপর্যয় সৃষ্টি করিবে এবং তোমরা অতিশয় অহংকারস্ফীত হইবে।’

وَقَضَيْنَاۤ اِلٰى بَنِىْۤ اِسْرَاۤءِيْلَ فِى الْكِتٰبِ لَـتُفْسِدُنَّ فِى الْاَرْضِ مَرَّتَيْنِ وَلَتَعْلُنَّ عُلُوًّا كَبِيْرًا

সূরা নম্বর: ১৭ আয়াত নম্বর: ৪

প্যালেস্টাইনের সাথে ইসরাইলের বিরোধ দীর্ঘ ১০০০ বছর পুর্ব হতে। অটোমান সম্রাজ্যের অবসানের পর খৃষ্টান রোমক রা এদের এই বিরোধে বরাবর ঘি ঢেলে এসেছে এমন কি এখনো।

ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও জীবন ব্যবস্থা পরিচালনা নীতিতে
মুসলমানের মত প্যারালাল।
১) তারা এক আল্লাহয় বিশ্বাসী।
২) তাদের কিতাব তাওরাত
৩) তাদের অনুসরনীয় নবী সালামুন মুসা
৪) তাদের কিবলা বায়তুল মোকাদ্দেস
৪) তাদের সালাতের জন্য আযান প্রথা রয়েছে,
৫) তারাও  জামাত সালাত করে তবে তিন ওয়াক্ত।
৬) তারাও সিয়াম করে তবে রমজানের নির্দিস্ট ৩০ দিন নয় বছরে ৬ টি।
৭) তারাও হজ্জ ব্রত পালন করে তবে জীবনে নয় প্রতি বছরে তিন বার।
৮) তাদের আরাফাত বায়তুল মোকাদ্দেস প্রাঙ্গন।
৯) তাদের কোরবানী শুধু হজব্রতদের জন্য সীমাবদ্ধ।
১০) তারাও খতনা করে এবং সালাম বিনিময় করে।
১১) তারা কিতাবের ১০ টি বিধানকে জীবন ব্যবস্থা বলে চুরান্ত মনে করে। অর্থাৎ  দশটি আজ্ঞা পালন করতে হয় যাকে ইংরেজীতে Ten Commandments বলা হয়। এগুলো হলঃ

১। তুমি প্রভূকে মানবে, কেবল তার সেবা করবে আর তার নামে স্মরণ করবে।

২। পিতা-মাতার বাধ্য হয়ে তাদের সম্মান হবে।

৩। রবিবার বিশ্রাম করবে এবং পবিত্রভাবে ইবাদত করবে,

৪। নরহত্যা করবে না।

৫। মনে,বাক্যে ও কর্মে সৎ, শুদ্ব ও দয়ালু হবে,

৬। ব্যভিচার করবে না।

৭। চুরি করবে না ।

৮। মিথ্যা বলবে না।

৯। পরস্ত্রী লোভ করবে না এবং দৃষ্টি নত রাখবে,

১০। পর দ্রব্যের প্রতি লোভ করবে না।

এই জাতিকে আল্লাহ অনেক নবী ও অহি দান করেছিলেন। কুরআনের বহু জায়গায় বনী ইসরাঈলের ইতিহাস ও শিক্ষা উল্লেখ আছে, যেমন:
• নবী মূসা (আ.) ও ফিরআউনের ঘটনা
• মান্না ও সালওয়া দিয়ে রিযিক দেওয়া
• গরুর কাহিনী (সূরা বাকারাহ)
• তাওরাত অবতরণ
• তাফরিফ (আল্লাহর বাণী বিকৃত করা)

২. সূরা বনী ইসরাঈল (সূরা আল-ইসরা) – ইতিহাস ও ভবিষ্যদ্বাণী

আয়াত ৪-৭:
“তোমরা দুইবার পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে এবং মহা ঔদ্ধত্য দেখাবে… অতঃপর যখন দ্বিতীয় ওয়াদা এলো, আমি তোমাদের ওপর এমন শত্রু পাঠালাম, যারা তোমাদের মুখমন্ডল বিকৃত করে দিল এবং প্রথমবার যেমন মসজিদে ঢুকে ধ্বংস করেছিল, এবারও তারা ধ্বংস করে দিল…”

প্রথম ফাসাদ:
• বনী ইসরাঈল আল্লাহর আদেশ অমান্য করে ফিতনা সৃষ্টি করেছিল।
• ফলস্বরূপ, বাবিলীয় বাদশাহ বুখতনসর (Nebuchadnezzar) জেরুজালেম আক্রমণ করেন (৫৮৬ খ্রিস্টপূর্ব) এবং বাইতুল মাকদিস ধ্বংস করেন, বহু ইহুদিকে হত্যা ও বন্দি করেন।

দ্বিতীয় ফাসাদ:
• ইহুদিরা আবার অহংকারে ফিরে যায়।
• এইবার রোমান সাম্রাজ্য (৭০ খ্রিস্টাব্দে) জেরুজালেম ধ্বংস করে, বাইতুল মাকদিস আবারও ধ্বংস হয়।
• বহু ইহুদিকে বিতাড়িত করা হয় — শুরু হয় “ডায়াস্পোরা”।

শেষ কথা:
বনী ইসরাঈলের ইতিহাস কুরআনে এই জন্যই এসেছে, যেন মুসলমানরা শিক্ষা নেয়:
• যেন তারা অহংকার না করে
• যেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়
• এবং যেন আল্লাহর প্রতি আনুগত্যে দৃঢ় থাকে।

Categories
Blog

জুম্মা মোবারক

দারুল হরবের দেশে কোন জুম্মার সালাত নেই। এটি সার্বজন স্বীকৃত। তাই দ্বীনি বিশেষজ্ঞগন একমত হয়ে আখেরি জহুর নামে ৪ রাকাত সুন্নত নামাজ যুক্ত করে দিয়েছন, যাতে করে জুমআ আদায় না হলেও যেন জহুরের সালাত আদায় হয়ে যায়। গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত না হয়। এটি ইস্তেহাদের মাধ্যমে সংযোজন করা হলেও সর্ব মতে গৃহীত বলে সুন্নত নামে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন দুপুরে নামাজ ফরজ ৪ রাকাত হলেও জুম্মার দিনের দূপুরের নামাজ সংক্ষিপ্ত করে ২ রাকাত ফরজ কারা হয়েছে এজন্য যে রাষ্ট্রীয় ভাষন অর্থাৎ খুৎবা শোনার জন্য ২ রাকাতের ফরজ আদায় হয়ে থাকে। এ জন্য খুৎবায় আরবীতে বলা হয়, ” আল সুলতানু জিল জিল্যুলাল্লা ওয়াল আরদ……”।

যার অনুবাদ: বাদশাহ বা রাষ্ট্র প্রধান আল্লাহর ছায়া স্বরুপ, সুতারং ইচ্ছা অনিচ্ছায় তাহার আদেশ মান্য কর।”

যদিও রাসুল সাঃ বা তাঁর পড় চার খলিফার সময় এমন খুৎবা বলা হয়নি, মোয়াবিয়ার শাসন আমলে এ খুৎবার প্রচলন শুরু করেন মুয়াবিয়ার রাষ্ট্রীয় নিয়োগ প্রাপ্ত আলেম গন। যার ধারা বাহিকতা আজো চলমান। আমরা এখনো মুয়াবিয়ার প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক কালচারের ছায়াতলে আছি।

রাসুল সাঃ যুগে নির্দিষ্ট করে শুক্রবারে জুম্মা হত না, যখন জরুরী প্রয়োজন দেখা দিত সেদিনই জুম্মার আহ্বান করতেন। এমনও দেখা গেছে জুম্মার আহ্বান করে আবহাওয়ার বৈরিতার জন্য রাসুল সাঃ সেদিনে জুম্মা বাতিল করে দিয়েছেন পুনরায় ঘোষণা দিয়ে।

তার মানে কোন ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান বা তার নিয়োগ প্রাপ্ত নায়েব যখন রাষ্ট্রের জরুরী প্রয়োজনে বা মুমিনের কল্যানে কোন বিষেশ জরুরী আলোচনা শুনার জন্য আহ্বান করা হয় (৬২:৯) এ বর্ণিত আল্লাহর ভাষায় তাকে জুম্মার সালাত বলা হয়। অর্থাৎ ইমামের আহ্বানে গণজামাতে আল্লাহর বিধি নিষেধের সংযোগ, অনুশীলনকেই জুম্মার সালত বলেছেন আল্লাহ উক্ত আয়াতে। ইমামের এমন আহবান পাওয়া মাত্র যে যে কাজে রত থাক তা বন্ধ করে ছুটে যাওয়া ফরজ। আয়াতের শেষে তাই আল্লাহ আরো ব্যাখ্যা সহ সতর্ক করে বলেনঃ ” ইহাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর।”

এ জন্য মেয়েদের জন্য এ সালাত ফরজ নয়। কারন রাষ্ট্রীয় কল্যান, যুদ্ধ দামার আয়োজন নির্দেশনায় নারী ভুমিকা অপরিহার্য আল্লাহ করেন নাই।

বর্তমান বৃটিশ প্রচলিত রাষ্ট্রের সাংসদীয় অধিবেশন এই আয়াতের আলোকেই রচিত। যদি এটি কোন ইসলামিক রাষ্ট্র এবং মুমিনদের নিয়ে সাংসদ গঠিত হতো তবে ১০০% ইসলামিক রাষ্ট্রের কার্যক্রম হতো। সংসদের প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্র প্রধানের নিয়োগ প্রাপ্ত নায়েব বা ইমামা হয়ে সমাজে জুম্মা কায়েম করতো। বৃটিশ প্রথাটি ঠিকই কোরানের আয়াতের থিমে তৈরী করে দিয়ে গেছে কিন্ত তাদের আদর্শ ঢুকিয়ে রেখে দিয়েছে।

বর্তমান প্রচলিত জুমআ ৬২:৯ এর আলোকে আল্লাহর মনোনীত জুম্মা নয়। এটি মোয়াবিয়ার রচিত জুম্মার সালাতের অনুষ্ঠান মাত্র।

ধর্মজীবিরা এটাকে পুঁজি করে তাদের কর্ম সংস্থানের সুযোগ করে নিয়েছেন। সেজন্য তারা মোয়াবিয়ার নিকট কৃতজ্ঞ এবং তার গুনগানে পঞ্চমুখ।

আমজনতা কোরান নিজ ভাষায় পড়েও না তাই সত্যটা উপলব্ধি করতেও সক্ষম নয়। ধর্ম জীবিদের দেখানো পদ্ধতিতেই আমিন আমিন করে গরীবের হজ্জ আদায় করে মহা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে সুবহানাল্লা তসবিহ জপে।


তাই এসব নাদানের উদ্দেশ্যে রাসুল অভিযোগ করে বলবেন, ” হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় তো এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করে।’ (২৫:৩০)

আল্লাহ রাসুলকে শান্তনা দিয়ে জানানঃ ” অচিরেই উহারা এই কোরআন সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবে “। (৪৩:৪৪ )

সালাত -অর্থঃ “আল্লাহর নির্দেশনার অনুশীলন।” সালাত পড়ার মত বা আদায় করার মত কোন জিনিস বা কার্যক্রম নয়। সালাত নিজের মধ্যে এবং সমাজে কায়েম বা প্রতিষ্ঠত করার এক অনুশীলন যা রবের পক্ষ থেকে বালেগ সব নর নারীর জন্য ফরজ করা হয়েছে। ইহা সৎকাজের মধ্যে উত্তম একটি সৎকাজ বটে। জুম্মা অর্থ — “একত্রিত হওয়া”।

আল্লাহ অতীত, বর্তমান,ভবিষ্যতে মানব কি করবে বা অতীতে কি করেছ তার উপমাও কোরানে বিষদ ভাবে বলেছেন। অতীত জাতীর মত মুয়াবিয়ার রাষ্ট্রীয় আলেমগণও যে লালসা পরবস হয়ে যে সালাতকে নষ্ট করবে এবং বর্তমান ধর্মজীবিগন ও একই পথের অনুসারী তা সূরা মারিয়মের ৫৯ নং আয়াতে আল্লাহ ব্যক্ত করেছেন।


উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা – পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে,(১৯:৫৯)

মনোনীত জুম্মার সালাতকে নিজেদের মনগড়া ভাবে পড়ে মর্মেই অন্যত্র সূরা আনফালের ৩৫ নং আয়াতে আল্লাহ বলেনঃ “কা‘বাগৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর। (৮:৩৫)

প্রকৃত জুমআর সালাত কিয়ামত পর্যন্ত কেমন হবে, এ বিষয়ে ইংগীত দিয়ে সূরাতুল মুমিনুনের ১-৩ নং আয়াতে আল্লাহ জানানঃ
” অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মু’মিনগণ- যারা নিজেদের সালাতে বিনয়, নম্র-যারা অসার ক্রিয়া-কলাপ হতে বিরত থাকে।”(মুমিনুন:১-৩)

বর্তমান মোয়াবিয়ার পৃষ্ঠপোষক আলেমদের দ্বারা রচিত প্রচলিত জুম্মা নামাজ আল্লাহর মনোনিত জুম্মা এক নয়, বরং সূরা মুমিনের ৩ নং আয়াতের বর্ণিত ” অসার ক্রিয়া কলাপ সমৃদ্ধ একটি জুম্মার সালাত। যাতে কোন কল্যান নেই বলে আলোচিত আয়াতের দৃষ্টিতে আমি মনে করি।

সবটুকু আলোচনা কোরআন পড়ে আমার একান্ত ব্যক্তিগত উপলব্ধি। তাই কাউকে মানার জন্য আহ্বান করছি না। ভাল লাগলে গ্রহন করবেন, খারাপ লাগলে ডাস্টবিনে ফেলে দিবেন। আর যদি আলোচনার উপর কোন দ্বিমত থাকে রেফারেন্স সহ জানাবেন, আমি শুধরে নেব।

Verified by MonsterInsights