
ইয়েমেন অধিবাসী ভাসান সরদারের অধস্থন ৭ম পুরুষ এ,কে, এম একরামুল হক রুবেল। জন্মঃ ৯মার্চ ১৯৬০ সন।
- এ,কে,এম একরামুল হক রুবেল মিয়া
- ইবনে মজিবুর রহমান বিনতে এফতেদা
- ইবনে সাইদুর রহমান বিনতে ছাবিরন
- ইবনে হামিদুর রহমান বিনতে সালেমন
- ইবনে কেবরাতুল্লাহ সরদার বিনতে আম্বর নেসা
- ইবনে রুপা সরদার বিনতে ফারহ ইয়েমনী
ইবনে ভাসান সরদার বিনতে মেহরান ইয়েমেনী।
১) ভাসান সর্দার (১৭৬২-১৮৪৮) – ৮৬ বছর।
২) রুপাসর্দার (১৭৮৩-১৮৫৫) – ৭২বছর।
৩) কেবরাতুল্লাহ সরদার (১৮২৮-১৯০৮) – ৮০ বছর।
৪) হামিদুর রহমান (১৮৫৫-১৯৩৮)- ৭৮ বছর
৫) সাইদুর রহমান (১৮৮৮-১৯৬৩)- ৭৫ বছর
৬) মজিবুর রহমান ( জন্ম ১৯১৮- মৃত্যু ২৩ জুন ১৯৯৩) – ৭৩বছর
৭) একরামুল হক রুবেল (জন্ম ৯ মার্চ ১৯৬০- চলমান)
সর্দার বা সরদার ছিলো একটি উপাধি যা উসমানীয় সাম্রাজ্যে একটি সামরিক পদবি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। নবাবী আমলে বাংলার নবাবদের বিশেষ পদে অধিষ্ঠিত ছিল এ বংশের ব্যক্তিবর্গ। বার ভূঁইয়া সময় বা জমিদার আমলেও সরদারদের নেতৃত্ব জন মানুষ মুখী ছিল।
তথ্য সংগ্রহঃ- ১) উইকোপিডিয়া।
২) ১৯৪৬ সনে লিখা সাইদুর রহমানের ডাইরী থেকে।
৩) ১৯৫৮ সনে মজিবুর রহমাের লিখে যাওয়া ডায়েরী।
৪) ১৯৪৯ ইং আমার মা এফতেদা বেগম রুবীর লিখা ব্যক্তিগত ডায়েরী থেকে।
৫) ১৯৬৭ সনে ফজিলতন নেসার মৌখিক বর্ণনা।
৬) ১৯৭৬ সনে আজিজুর রহমান কালা খোকার মুখ নিসৃত গল্প ধারা থেকে এ,কে,এম একরামুল হক কর্তৃক লিপিবদ্ধ ডায়েরী।
৭) রাজিয়া মজিদ বেগম কর্তৃক ১৯৬৮ সনে লিখা “জোনাকীর আলো জ্বলে” নামক কিশোর কালের শ্যামপুরের বাগীচা বাড়ীর মধুময় স্মৃতি নামক গল্প গুচ্ছ বই।
৮) ১৯৭১ সনে স্বাধীনতার প্রাক্কালে শ্যামপুর রশিদ মিয়ার বাড়ীতে আশ্রয় নেয়ার সুবাদে আমি নিজেই অনেক বর্ণনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী। রশিদ দাদা,ডোর ফুফু,খুকী ফুফু, রিক্তা ফুফু, মুক্তা ফুফু, মন্টু চাচা, খন্জু দাদা, মোশারফ দাদা, বিষু দাদা, বাচ্চু দাদা, ফটু দাদা, শাহজাহান চাচা, পানু চাচা, মনি চাচা, নীলু ফুফু, মাখন চাচা, লিখন চাচা আরো অনেকের সাথে মধু ময় সময় কাটিয়ে ছিলেম। লিখন চাচার, মন্টু চাচার ছেলে, খুকি ফুফু, ডোর ফুফু তাদের মেয়েদের দেখার সুযোগ হয়েছিল।
তাদের অনেক না বলা কথা আজও মনে ভাসে । সে সময়ে প্রেমের ধারা গুলো ছিল অন্যরকম। ভালবাসাবাসি, ভাললাগার কথা স্মৃতিময় দিন গুলো আজো পুলকিত করে ।
৯) রেণু দাদীর মেয়ে কাজল ফুফুর পুত্র তৌসিফ হতে বর্ণিত তিনি মন্টু চাচার ছেলে রেজু হতে জেনেছেন এমন কয়েকটি তথ্য।
১০) এ বংশের ২০১৭ সনে যাদের বয়স ৭০+ ছিল এমন কতিপয় উত্তর সুরী থেকে সত্যতার স্বপক্ষে যাচাই বাছাই করন । যেমনঃ মজনু মিয়া, আব্দুর রউফ, আঃ রহমান, বালা, পানু, রিক্তা, মুক্তা আরো অনেকে। আলোচনা সাক্ষাত কারের পৃষ্ট পোষকতায় এ,কে,এম, একরামুল হক রুবেল।
দ্রষ্টব্যঃ ডায়েরীর লিপিবদ্ধ করা বক্তব্যের বাহিরে মৌখিক আলোচনা শুনে যে তথ্য গুলি এর সাথে সংযোন করা হয়েছে,যদিও তাহা অতি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে, তদুপরি যদি কোন অসংগতি বা পরিবর্তন যোগ্য বিবেচনা হয় তবে নিন্ম ঠিকানায় অথরকে অবহিত করার জন্য বিনীত অনুরোধ রইল। কারন ইতিহাসে সত্য তথ্য প্রকাশিত হওয়া একান্ত কাম্য।
- Aouthor: Ekramul hoq
- Cell Phone 01710961936
- Mail- ekramulhoq1154@gmail.com
- FBwww.facebook.com/rubelmia1960
- Twiter: Ekramulhoq6
- Web address another.
- https://www.globalbd.shop
- আমি সাধ্যমত সতর্কতা অবলম্বন করেছি নির্ভুলতার ।
১৭৮২ সনে ইয়েমেন থেকে ২৫ বছরের যুবক ভাসান সর্দার ১ পুত্র রুপা সর্দার সহ স্বস্ত্রীক পশ্চিম বাংলায় তৎকালীন ভারত বর্ষের বীরভুম আসেন। ভারত বর্ষে আসার পর আরো ৩টি পুত্র সন্তান ও একটি মেয়ে সন্তানের জনক হন। সোনা সর্দার,ইদু সর্দার ও ভিকু সর্দার। মেয়ের নাম জানা যায়নি। সোনা সরদার সারুলিয়া মিয়া বাড়ী, পরবর্তিতে দুরমুট মিয়া বাড়ী, ইদু সর্দার বাঘা ডোবা মিয়া বাড়ী এবং ভিকু সরদার জামাল চাচা, হীরু চাচার পুর্ব পুরুষ কাজাইকাটা মিয়াবাড়ী বসতি গড়েছিলেন। বোন ভারতের মুর্শিদাবাদ তৎসময়কার পশ্চিম বাংলায় রয়ে যান।
অত্র আলোচনা ভাসান সরদারের ছেলে রুপা সরদার ও তার পরবর্তি বংশধারা নিয়ে সীমাবদ্ধ রাখা হল। পরবর্তিতে সোনা সরদার, ইদু সর্দার ও ভিকু সরদারের বংশ ধারা নিয়ে পর্যায় ক্রমে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ। ভাসান সরদার ইয়ামেন থেক এশিয়ার ভারতবর্ষে ধর্মীয় প্রচার কাজ ও নতুন ব্যবসা অন্বেষনে আসেন । বর্ননায় জানা যায় ইয়েমেন থেকে আসার সময় একটি বাক্সে কিছু মু্ল্যবান পাথর ও সুগন্ধী পাথেয় হিসেবে নিয়ে আসেন । বাক্সটি ছিল সোনার প্লেটে তৈরী যার ভিতর চারটি কোঠরী ছিল। কি রহস্যে তৈরী ছিল, কেনই বা এমন গঠন ছিল তা জানা যায়নি । তবে ধারনা করা হয় নতুন দেশে অর্থনৈতিক কাঠামো সুপ্রতিষ্ঠিত রাখার জন্যই তার পিতা সোয়া দুই কেজি ওজনের এ বাক্সটি ছেলের সাথে পাথেয় স্বরুপ দিয়েছিলেন।যা দিয়ে পরবর্তিতে কেবরাতুল্লাহ সরদার তালুক ও জোত ক্রয় করেছিলেন।
মল্লিকা বনের নেপথ্যের কিছু কথাঃ
ইয়েমেন থেকে ফারাহ ইয়েমেনীকে নিয়ে যুবক ভাসান সর্দার ইংরেজ শাসিত ভারত বর্ষে অধিকার বঞ্চিত জনগোষ্ঠির পাশে এসে দাঁড়ায়। যে জনপদ মুসলিম শাসক গণ দীর্ঘ ৬০০ বছর শাসন করেছে। সে জনপদের জন গোষ্ঠি আজ ইংরেজ শাসিত। পারস্যের ফারাহ সেই যে এল আর কোন দিন ফিরে যেতে পারেনি তার মাতৃভুমিতে। রাজত্বকাল ১৭৫৬–১৭৫৭
পলাশীর যুদ্ধে বিজয়ের পর ব্রিটিশরা বাংলার উপর আধিপত্য লাভ করে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী শাসন করে (১৭৫৭-১৮৫৭) ।
১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছ থেকে ক্ষমতা ব্রিটিশ সরকারের কাছে চলে যায়।
বৃটিশ শাসন করে (১৮৫৭-১৯৪৭)
১৭৫৭ সনে নবাব শাসন ভুলুন্ঠিত হওয়ার পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসন এর যাতাকল চলছিল।জমিদারী প্রথা চালু করে এ জনপদের মানুষ দিয়েই এ জনপদের মানুষের শাসন -শোসনের লক্ষ্যে চালু করা হয় জমিদারী প্রথা।
ভারত বর্ষের সনাতন ধর্মের শিক্ষিত প্রভাবশালী গন তাদের সভা সদের ইন্ধন যোগায়েনিজেদের সুবিধা লুটতে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত ছিল।
ফলশ্রুতিতে জমীদারদের অধিকাংশই সৃষ্টি হয় হিন্দু সম্প্রদায় থেকে । হাতে গোনা গুটি কয়েক নামেমাত্র মুসলমান জমিদার ছিল। ইংরেজদের সাথে হিন্দু জমিদারদের সখ্যতা আর তোষামতির তোপের মুখে কোন ঠাসা হয়ে ছিল মুসলমান জমিদারগন।
এমনি পরিস্থিতিতে ভাসান সর্দারের একমাত্র প্রেরনা ছিল ফারাহ ইয়েমেনীঃ
১৭৬১ সনে রবীঠাকুর জোড়াসাকোয় জমিদার পরিবার জন্ম নিয়ে যখন কাব্য সাহিত্যে ইংরেজদের নজরে এল – তার বেশ কদর । এমনি সময় ১৮৯৯ সনে আসানসোলে এক দরিদ্র মুসলমান পরিবার জন্ম নিলেন বিদ্রহী ধুমকেতু কাজী নজরুল।
ইয়েমেনী ভাসান সর্দার এরই ভিতরে চড়াই উত্তারায়ের মধ্যদিয়ে মাত্র আটটি পরগনার জমিদারী নিয়ে দিন কাটানো অবস্থায় ৪ টি পুত্র সন্তান একটি কন্যা সন্তান রেখে ১৮৪৮ সনে মৃত্যু বরন করেন।
বড় পুত্র রুপা সর্দার বাবার জমিদারীর হাল ধরে ইংরেজদের বেশ কাছাকাছি চলে গেলেন। তিনি পরগনা বৃদ্ধী করলেন। সাথে অনেকটা পুরানো সংস্কৃতির গন্ডি পেরিয়ে ভারত বর্ষের সাংস্কৃতিতে খাপ খাইয়ে নিলেন। হিন্দু জমিদারদের সাথে পাল্লা দিয়ে দিনের পর দিন অটোমেন সম্রাজ্যের মত পরগনা, জোত, তালুক একের পর এক বৃদ্ধী করে চলতে লাগলেন।
ভাই সোনা সর্দার হিন্দু জমীদারদের সাথে গান-বাজনা রঙ মহলের সখ্যতায় মত্ত। ইদু সর্দার উদাস বৈরাগ্য পনায় নিমগ্ন ছিলেন। একমাত্র কনিষ্ঠ ভিকু বড় ভাইয়ের সাথে ছায়ার মত লেগে থাকতো সকল কর্ম নীতিতে।
ইংরেজ শাসকগন রুপা সর্দারের বিচক্ষনতা ও বীরত্বে মুগ্ধ। ইতোমধ্যে তিন পুত্র ১ কণ্যার জনক হয়ে গেলেন।
হামিদুর,আকবর,আহম্মদ ও একমাত্র মেয়ে রুপমা।
নবাব পরিবারের উত্তরসূরীর সাথে কন্যার বিয়ে দিয়ে মুর্শিদাবাদে আরো প্রভাব বিস্তার করেন। চির পরিচিত এ সংসার ছেড়ে রুপমা চলে যায় অন্য এক সংসারে। একদিকে যেমন ছেড়ে যাওয়ার বিরহ ব্যাথা অন্যদিকে নতুনের হাতছানি তাকে বিহ্বলিত করে তুলে।
দ্বীগুন কর ও খাজনা আদায়ের নিশ্চয়তা দিয়ে মুর্শিদাবাদের জমিদার বাহাদূর শ্রী যুক্ত অবনি রায়ের জমিদারী ছিনিয়ে নিলেন। এদিকে বড় পুত্র কেবরাতুল্লাহকে মেদেনীপুর জমিদার কন্যা আম্বর নেসার সাথে বিয়ে দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত জমিদারী বিস্তার লাভ করার মনোবাসনা স্থির করেন ।
১৮৪৬ সন। ইংরেজ শাসকদের প্রবর্তিত জমিদারী প্রথা চরম তুঙ্গে। মেদেনীপুর রঙের আবিরে আলোকিত। চারিদিক হিন্দু জমিদার বাবুদের কোন ঠাসা পেষনের মাঝে আশার আলো মেয়ের বিয়েতে দেখতে পান ।
তদানিন্তন পশ্চিম বঙ্গের গীত গান গুলো বেশ মন কাড়ে।
ভালই চলছিল তাদের নব দাম্পত্য জীবন। কেবরাতুল্লাহ সর্দার এক পুত্রের জনক হয়ে যান। বাবার জমিদারী তদারকির ফাকে পুর্ব বাংলায় প্রায়শঃ বেড়াতে আসতেন।পুর্ব বাংলার মাটির ছোয়া তাকে কাছে পেতে চায়। ভ্রমন পিপাসু এ জমিদার পুত্রের হঠাৎ বীরভুমের এক হিন্দু প্রজার অনন্য সুন্দরী মেয়ে চন্দ্রাবলীর সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে । শেষ পরিনতিতে তিনি তাকে গোপনে বিয়ে করেন এবং সংসার হতে বিমুখ হয়ে পড়েন । দিন দিন তার সংসার বিমুখী কর্মকান্ড, আচরন পরিবারে সদস্যদের মাঝে সংশয়ের সৃষ্টি করে। প্রায়শই পুর্ব বাংলার কথা বলে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে যেতেন।
রবী ঠাকুরের সাথে পুর্ব বাংলায় বেশ কয়েক বার এসেছেন। এমনি ভাবে একদিন চন্দ্রাবলীর বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় এক ঝড়। তাই কেবরাতুল্লাহ সর্দার তার এ আবেগের ভুলের মাশুল মৃত্যুর পুর্ব পর্যন্ত সারাটি জীবন পোহায়ে গেছেন। বড় বৌ কে সামলাতে তাকে অনেক নিষ্ঠুর শর্তকেও মেনে নিতে হয়েছিল । একটি গানের কথায় তা কিছুটা আঁচ করা যায়ঃ
**
চন্দ্রাবলীর(পয়রনেসা) কিশোরকালে আবেগের বশবতী হয়ে গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিয়ে পরবর্তি জীবন ভর অনুতপ্ততায় ভুগেছেন ।
জমিদার পরিবারে না জরিয়ে পল্লীবধু বেশে তার দিন সুখময় হত এটা আঁচ করতে পেরেছেন।
মা-বাবা, ভাই-বোন সকল আত্মীয় স্বজনদের ছেড়ে যে সুখের প্রদীপের স্বপ্ন দেখেছিল তা কি আদৌ কি নাগালে এসেছিল ?
যে কিশোরী সারা গায়ে সাঁঝের তারকার মত ছিল , জমিদার পরিবারে বন্দী হয়ে সে মাটির প্রদীপের মর্যদাটুকুও পায়নি। অনন্তহীন বেদনার কথা গানের ভাষায়ঃ
সাঁঝের তাঁরকা আমি পথ হারিয়ে এসেছি ভুলেঃ
*★*
১৮৫৫ সনে বাবার মৃত্যুতে কেবরাতুল্লাহ সর্দার জমিদারীর দায়িত্ত গ্রহন করেন।
একরোখা ব্যক্তিত্ব ও জেদের জন্য তার জোতদারী হ্রাস পেতে থাকে। ১৮৫৭ সনে ইংরেজ শাসনের অবসান হলে তিনি পশ্চিম বাংলা ত্যাগ করে পুর্ব বাংলায় স্থানান্তরিত হওয়ার বাসনা পোষন করেন। পুর্ব বাংলা নিয়ে রবী ঠাকুরের উপন্যাস তাকে আকৃষ্ট করে তুলেছিল।
১৮৫৪ স্ত্রী আতর নেসার পাশাপাশি বীরভুমের হিন্দু প্রজার এক সুন্দরী মেয়ে চন্দ্রাবলীকে বিয়ে করেন। যার পরবর্তি নাম পয়র নেসা বিবি। আতর নেসার গর্ভে ২ পুত্র ১ কন্যা এবং পয়র নেসার গর্ভে এক পুত্র আকবর। এই আকবর হোসেন এতটা সুফী পরহেজগার ছিলেন যে সমগ্র বংশে তার মত কোন পরহেজগার ব্যক্তি ছিল না। তিনি জোত জমীদারীর প্রতি মোটেও আকর্ষিত ছিলেন না। মৃত্যুর পুর্বদিন তিনি নিজের গোসল নিজে সমাধা করে তাঁর নিজ কামরায় ঘমিয়েছিলেন এবং খাজানচিকে তাকে আর ডাকতে বারন করেছিলেন। ফিরে আসা যাক কেবরাতুল্লাহ সর্দারের কথায়, বিয়ের বছর খানেক পর পুর্ববাংলার জাহাঙ্গীর নগর বিহারে যান এবং সিংহজানী মহকুমার ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকা শ্যামপুর বসতি গড়েন।
এর পর ভারত – পাকিস্তান ভাগ হয়ে যায় ১৯৪৭ সনে।
সাইদুর রহমানের বড় ছেলে মুজিবুর রহমান তার প্রথম স্ত্রী ফুরকানীকে মার অপছন্দ জনিত কারনে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটায়। ফুরকানী ছিলেন মুজিবুর রহমানের ফুফাত বোন। এক কন্যা আফরোজা বেগম। বয়স মাত্র ৬/৭ বছর। মেয়ে আফরোজাকে ছাবিরন নেসা নিজ হেফাজতে রাখেন। মজিবুর রহমান জাহাজের চাকরী ছেড়ে দিয়ে রেলওয়ে ফুড বিভাগে চাকরীতে যোগদেন। গাইবান্ধা মহুকুমায় দায়িত্ব রত অবস্থায় ষ্টাফ হোটেল পরিচালক মফিজ উদ্দীনের সাথে সখ্যতা হওয়ার সুবাদে মফিজ উদ্দীন তার পুর্ববর্তি কর্মের কাচারীর নায়েব ও মারওয়ারীদের গোদামের জোতদার ইসহাক উদ্দীনের বড় মেয়ে এফতেদাহ বেগম রুবীর সাথে বিয়ের প্রস্তাব রাখেন।
স্মার্ট ও সরকারী কর্মকর্তা দেখে ভোলা মিয়া তার বড় মেয়ে রুবীর বিয়ের প্রস্তাবে আগ্রহের সাথে সম্মতি জ্ঞাপন করেন
এন্ট্রাস পড়ুয়া রুবির সাথে মজিবুর রহমানের বিয়ে গাইবান্ধা মহুরীপাড়ার বাসায় অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৪৭ সনের অক্টোবর মাসের ১৭ তারিখ।
তখন মজিবুর রহমানের বয়স ২৯ বছর পক্ষান্তরে এনট্রাস পড়ুয়া রুবির বয়স ১৮ বছর। দুজনের বয়সের পার্থক্য প্রায় ১১ বছর। রুবীর জন্ম ২৬ শে সেপ্টেম্বর ১৯২৯ সন। এই বিশাল বয়সের পার্থক্যের জন্য অনেকটা পারিবারিক সমালোচনা পোহাতে হয়েছিল ভোলা মিয়াকে।
দীর্ঘ তিন বছর পর বড় মেয়ে মাহবুবার জন্মের এক বছর আগে ১৯৫০ সনের এপ্রিল মাসে শশুরালয় শ্যামপুর মিয়া বাড়ী জামালপুর গমন করেন।
শশুর সাইদুর রহমান তখন জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ আইনে সর্বহারা। বাকি যেটুকু ছিল শধু জলমহল ও ইজরা প্রদান ভুমি ছাড়া সব নদী গর্ভে চলে গিয়েছিল। এতদ্বসত্তেও পুর্ব পুরুষের প্রথা অনুযায়ী নতুন বউকে বরন করতে ১৮ একরের বাগান বাড়ী ভিটা তার নামে প্রদান করেন।
আনন্দ ঘন পরিবেশে ঘন মেঘ নামে ছাবিরন নেসার নিকট থাকা ছোট্ট ৫/৬ বছরের ফুটফুটে মেয়ে হলেনকে নিয়ে। মজিবর রহমান তার প্রথম বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখেছিল।
প্রকৃত তিনি তা গোপন রাখতে চান নি বা রাখেন নাই। ঘটক মফিজ উদ্দীন বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন। এ নিয়ে মফিজ উদ্দীনের সাথে ভোলা মিয়ার পরবর্তি বাকি জীবনে আর কথা বলা হয়নি।
বাবার কাছে করুন ভাষায় চিঠি লিখে পাঠান রুবী। ভোলা মিয়া চিঠি পাওয়া মাত্র ছোট ভাই ছৈয়দ আলী মিয়াকে পাঠান জামালপুর মেয়েকে নিয়ে আসার জন্য।
সেই যে নিয়ে এল বাকি ৫ বছরের মধ্যে আর মেয়েকে আর শশুরবাড়ী যেতে দেন নাই।
এফতেদা বেগম রুবী ৫ কন্যা ২ পুত্রের জননী মৃত্যু বরন করেন ২২ সেপ্টম্বর ২০০৬ ইং।
Upgrade Continue —-
হামিদুর রহমান মিয়া, আকবর মিয়া ও আহাম্মদ মিয়ার জীবৎদশা পর্যন্ত জমিদারী জাকজমক ছিল। তাদের পরবর্তি সন্তানদের সম সাময়িক কালে অর্থাৎ সাইদুর, হানিফ, মোশারফ,রশিদ —- ইনাদের সম্যকালে জমিদারী প্রথা উচ্ছেদ হয়, অবশিষ্ঠ ব্রহ্মপুত্র নদী গর্ভে বিলীন হয়ে জমিদারী অবসান হয়ে যায়। পুরো পরিবারটি বিভিন্নদিকে ছড়িয়ে ছিটে পড়ে।
- শর্ট নোটঃ–
- রবী ঠাকুরের জন্ম ১৮৬১- ১৯৪১
- নজরুল জন্ম৷ ১৮৯৯- ১৯৭৬
- রুপা সর্দার ইয়েমেনী ১৮১৮ পুর্বাংলায় আসেন। ৩ ছেলে ২ মেয়ে।
- ১)কেবরাতুল্লাহ সর্দার জন্ম ১৮৩০-১৯০৬ ভারত
- ২) ইরাতুল্লাহ সর্দার জন্ম ১৮৩২-১৮৯৮ ভারত
- ৩) এনায়াতুল্লাহ সর্দার জন্ম ১৮৩৮-১৯১৬ ভারত। মেয়ের নাম জানা যায়নি। বীরভুম ও মুর্শিদাবাদে অবস্থান ছিল বলে জানা গিয়েছে।
- প্রথম কেবরাতুল্লাহ সর্দার নিয়ে আলোচনা আসছি। ধারাবাহিক ভাবে পরবর্তি আলোচনা লিপিবদ্ধ করব।
- কেবরাতুল্লাহ সর্দারের ৩ ছেলে ১ মেয়ে।
- ছেলেরা হলেনঃ
- ১) হামিদুর রহমান বড় মিয়া জন্ম ১৮৭০ – মৃত্যু ১৯৪৮
- ২) আকবর মিয়া
- ৩) আহম্মদ মিয়া এবং
- মেয়ে নাম জানা যায় নি। এতটুকু জানা যায় আবু মিয়ার স্ত্রী। কুলকান্দী মুন্সীবাড়ী
- ইরাতুল্লাহ সর্দারের কোন পুত্র সন্তান ছিল না। শুধু ৩ জন কন্যা সন্তান। তারা হলেনঃ
- ১) আতর নেসা ২) আজিজুননেসা ও ৩) কামরুননেসা।
- এনায়েতুল্লাহ সর্দারের ১ ছেলে ১ মেয়ে।
- ছেলে হেমায়েতুল্লাহ মিয়া। মেয়ের নাম জানা যায়নি।
এবার প্রথমে যাক রুপা সর্দারের বড় ছেলে কেবরাতুল্লাহ সর্দার এবং তার বড় ছেলে হামিদুর রহমান ওরফে বড় মিয়াকে নিয়ে। তারপর ধারাবাহিক ভাবে অন্যদের নিয়ে য়েও ক্রম অনুসারে লিপিবদ্ধ করা হবে।
হামিদূর রহমান ওরফে বড় মিয়ার ২ ছেলে ২ মেয়ে।
ছেলেঃ ১) সাইদুর রহমান মিয়া জন্ম ১৮৯০- ১৯৬২ এবং
২) হানিফ মিয়া জন্ম ১৮৭২- ১৯৩৬
মেয়ে ছালেমন ও রশির মা বলেই পরিচিত।
হেমায়েতুল্লাহ মিয়া পক্ষ দুইটি। ৪ ছেলে ২ মেয়ে।
১) গোলাম সরোয়ার বৈমাত্রিক
২) মোশারফ মিয়া
৩) খালেক মিয়া
৪) এনায়েত মিয়া (বাচ্চু) মেয়ে নয়ার মা ও সেতারার মা।
- আকবর মিয়া জন্ম
সাইদুর রহমান জন্ম ১৮৯০- মৃত্যু ১৯৬২
সাইদুর রহমান মিয়ার ৪ পুত্র এবং ৪ কন্যা।
তারা হলেনঃ
১) মজিবুর রহমান নুদু জন্ম ১৯১৮-১৯৯৩
২) হাফিজুর রহমান দুদু
৩) হাবিবুর রহমান মজনু
৪) মোখলেছুর রহমান তাঁরা।
মেয়েঃ ১) ফজিলাতন নেসা গেন্দী
২) শামছুন্নাহার চম্পা।
৩) জীবন নেসা জোসনা।
৪) কামরুননেসা আঙুর।
- মজিবুর রহমান মিয়ার ৬ মেয় ২ ছেলে। তারা হলেনঃ
১) এ,কে,এম একরামুল হক রুবেল জন্ম ৯ মার্চ ১৯৬০
২) এ,কে,এম এনামুল হক জুয়েল জন্ম ২৫ জানুয়ারী ১৯৬৪
মেয়েঃ ১) আফরোজা রহমান হেলেন জন্ম ১২ মার্চ ১৯৪২ – ২০২১
২) মাহবুবা রহমান বেলুন ১০ নভেঃ ১৯৫১
৩) মাহমুদা রহমান হাসি ২১ আগস্ট ১৯৫৪
৪) মাকছুদা রহমান খুশি ১৯ এপ্রিল ১৯৫৬
৫) মাহফুজা রহমান লিপি ২২ মে ১৯৫৮
৬) মুনছুরা রহমান ডলি ৭ জুন ১৯৬২
কেবরাতুল্লাহ রবি ঠাকুরের ১০ বছরের বড়। হামিদূর রহমান কবি কাজী নজরুল ইসলামের ২/৩ বছরের বড়।
আনুমানিক ১৮২৮ সনে রুপা সরদার ভারত বর্ষের বীরভুমে থেকে এসে পুর্ব বাংলায় বসতি স্থাপন করার পর সেখানে তার তিন ছেলে এক মেয়ে হয়। বড় ছেলে কেবরাতুল্লাহ সরদার, মেঝো ছেলে ইরাদুল্লাহ সরদার, ছোট ছেলে এনায়েতুল্লাহ সরদার। মেয়ের নাম জানা যায়নি। তবে মেয়ের বিয়ে হয়েছিল নদীয়ার এক সম্ভান্ত পরিবারে। যারা পরবর্তিতে নবাব পরিবারের সাথে বৈবাহিক সুত্রে নিবন্ধিত হয়েছিল মর্মে জানা যায়। [ছোট মেয়ে বাবার সাথেই শ্যামপুর চলে আসে এবং কুলকান্দী মুন্সীবাড়ী বিয়ে হয়। স্বামীর নাম ছিল আবু মিয়া, কুলকান্দী, ইসলামপুর।
ভাসান সরদারের ছোট ছেলে ভিকু সরদার মুর্শিদাবাদে বিয়ে করেন । বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষনে জানা যায় ভাসান সরদারের মেঝো ছেলে রুপা সরদার যিনি শ্যামপুর বসতী স্থাপন করেছিলেন তার তিন ছেলে এক মেয়ে ছিল । ভাসান সরদারের বড় ছেলে সোনা সরদার পুর্ব বাংলার সারুলিয়া মিয়া বাড়ী বসতী গড়েন। তিনি বীরভুম অবস্থান কালেই তিন ছেলে এক মেয়ে রেখে মারা যান। মেয়েটি বড় ছিল মুর্শিদাবাদেই বিয়ে হয়। ছেলেরা (Mohommod mia & Irad mia) পরবর্তিতে কেবরাতুল্লাহ সরদারের সাথেই পুর্ব পাকিস্থানে চলে এসেছিলেন। তারা উভয়েই হামিদুর রহমানের চাচাত ভাই ছিলেন।
ক্যাবরাতুল্লাহ সর্দার এর দূজন স্ত্রী ছিল। পুর্ব নদীয়া ১ম স্ত্রী আম্বর নেসা এবং মেদেনী পুরের ২য় স্ত্রী পয়র নেসা । পয়র নেসার পুর্ব নাম চন্দ্রাবলী ছিল। হিন্দু ধর্মালম্বী পরিবারের অনন্য সুন্দরী রমনী ছিলেন। ২য় বিয়ের বিষয়টি দীর্ঘ সময় ধর্মীয় বৈষম্যের কারনে গোপন ছিল। পরবর্তীতে বরন করে আনার পর চন্দ্রাবলীকে আর কোন সময় তার পরিবারের নিকট যেতে দেয়া হয়নি।
১ম স্ত্রীর গর্ভে এক মেয়ে, নাম জানা যায় নি, দুই ছেলেঃ হামীদুর রহমান ও আহম্মদ আলী এবং ২য় স্ত্রীর গর্ভে এক ছেলে, আকবর মিয়া, কোন মেয়ে নাই। অর্থাৎ ক্যাবরাতুল্লাহ সর্দারের ৩ ছেলে এক মেয়ে ছিল।
কেবরাতুল্লাহ সরদারের ছোট ভাই এনায়েতুল্লা সর্দারের ১ ছেলে ১ মেয়ে ছিল। ছেলের নাম হেমায়েতুল্লাহ মিয়া, মেয়ের নাম জানা যায়নি। কেবরাতুল্লাহ সরদারের মেঝো ভাই ইরাদুল্লাহ সরদারের কোন পুত্র সন্তান ছিল না। মাত্র তিনজন মেয়ে ছিল। মেয়েরা সবাই শিক্ষা অনুরাগী ও উচ্চ শিক্ষিতা ছিলেন। জোত, তালুক, ঐশর্যের মোহ মোটেও ছিল না। বীরভুম থেকে কেবরাতুল্লা মিয়ার সাথেই শ্যামপুর চলে আসেন। ভিকু সরদারের বড় মেয়ে মুর্শীদাবাদে এবং ফুফু নদীয়াতে থেকে যান
কেবরাতুল্লাহ সরদারের ছেলেদের নামঃ
১) হামিদুর রহমান বড় মিয়া
২) আকবর মিয়া (বৈমাত্রিক)
৩) আহাম্মদ মিয়া (বৈমাত্রিক)
মেয়ে ———– নাম জানা যায় নি। বিয়ে হয় কুলকান্দী মুন্সীবাড়ী, ইসলামপুর। স্বামীর নাম ছিল আবু মিয়া।
- [[কেবরাতুল্লাহ সরদারের ভাতিজা আফজল,তালেব, ও সাদেক।]]
আনুমানিক ১৮৭০ সনে কোন এক অজানা কারনে কেবরাতুল্লাহ সর্দার তার দুই ভাই ইরাদুল্লাহ সরদার ও এনায়েতুল্লাহ সরদারকে নিয়ে তদানিন্তন পুর্ব পাকিস্তানের মোমেনশাহী জেলার জামালপুর মহকুমার মেলান্দহ কাজাইকাটা গ্রামে বসতি গড়েন। ওদিকে চাচা ভিকু সরদার ও বোন ভারতেই রয়ে যান। বড় চাচা সোনা সরদার পুর্ব বাংলার সারুলিয়ায় বসতী স্থাপন করেন। ভারতের বীরভুম থেকে আাসর সময় তিনি ইয়েমেন থেকে আনিত পিতার সেই সোনার বাক্সটির আট আনা অংশ প্রাপ্য নিয়ে আসেন। অন্যদিকে দুই আনা বোনের হিস্যা বুঝিয়ে দিলেও ধনাট্য ও সম্ভ্রান্ত ভগ্নিপতি তাহা গ্রহন না করে ভাইকে ফেরত দিয়ে দেন। ফলে কেবরাতুল্লাহ সরদার দশ আনা হিস্যা প্রাপ্ত হয়ে পুর্ব পাকিস্তানের মোমেনশাহীর কাজাইকাটা বসতি গড়েন।
- কেবরাতুল্লাহ সরদার ইবনে রুপা সরদার।
- জন্ম ১৮৫০ মৃত্যু ১৯৩৮ সন।
- জীবন কাল ৮৮ বছর।
- তিন ছেলে এক মেয়ে ।
- শ্যামপুর আগমন ১৮৭০ সন।
ভারতের বীরভূম হতে ১৮৭০ সনে মোমেনশাহী জেলার জামালপুর মহকুমাধীন মেলান্দহ কাজাইকাটা ভ্রহ্মপুত্র নদের পাশে বসতি গড়েন। তিন পুত্র এক কন্যা। ১৮৭২ সনে তিনি এস্টেট কালীপুর ছোট তরফ (পশ্চিম হিস্যা) এর মালিক শ্রীযুক্ত ঋতেন্দ্র কান্ত লাহিড়ী চৌধুরী বিএ ও শ্রীযুক্ত ধীরেন্দ্র কান্ত লাহিড়ী চৌধুরী জমিদার মহাশয়ান , নিবাস কালীপুর পোঃ গৌরীপুর জেলাঃ মোমেনশাহী এর নিকট হতে খাজনার দাখিলা এবং বিবিধ তলব (প্রজার অংশ) পথকর, শিক্ষাকর, শস্যকর, বিবিধকর বাবদ মোবালক ৩৮৯ টাকা বাৎসরিক দশ আনা হিস্যা ধার্যে ৪টি তালুক, আটটি জোত দুইটি গোদারা ও দুইটি জলমহল পত্তন নিয়ে আসেন। প্রতিটি জোতে জমির পরিমান প্রায় ৫০০ বিঘা। গোয়ালীনিরচর, বাঘলদী, গোবিন্দী ও পাতিলাদহ পরগনায় প্রধান জোত ও তালুক অবস্থিত ছিল। প্রজাদের নিকট বাৎসরিক হারাহারি খাজনা আদায় ধার্যে জোত ইজারা চুক্তি প্রদান করেন।
১৯৩৮ সনে তিনি তিন পুত্র এক কন্যা ওয়ারিশ বিদ্যমান রেখে ৮৭ বছর বয়সে বার্ধক্য জনিত কারনে মৃত্যু বরন করেন।
- কেবরাতুল্লাহ সরদারের চার ছেলেঃ
১) হামিদুর রহমান ওরফে বড় মিয়া
২) আকবর মিয়া
৩) আহাম্মদ মিয়া । এবং এক মেয়ে
আবুর মা বলেই পরিচিত,নাম জানা যায়নি
হামিদুর রহমান ওরফে বড় মিয়া । ( জন্ম ১৮৭০ সন, মৃত্যু ১৯৪৮ সন) জীবন কাল ৭৮ বছর। বার্ধক্য জনিত কারনে মৃত্যু বরন করেন। মৃত্যুকালে দুই ছেলে চার মেয়ে ওয়ারিশ বিদ্যমান রেখে যান। ছেলেঃ
- ১) সাইদুর রহমান মিয়া
- ২) হানিফ মিয়া ।
- মেয়েঃ ১) রশির মা, যার বিয়ে হয়েছিল ইসলামপুর পালপাড়া নিবাসী ইরাদ মিয়ার নিকট।
- মেয়ে ২) সালেমন, যার বিয়ে হয়েছিল ইসলামপুরের কুলকান্দী নিবাসী আবুল ফজলের নিকট। অপর দুই মেয়ের নাম জানা যায় নি।
হামিদুর রহমান মিয়া ( জন্ম ১৮৭০ – মৃত্যু ১৯৪৮) পরহেজগার, সরল প্রকৃতির অত্যন্ত আবেগ প্রবন ও দয়ালু ব্যাত্তিত্তের অধিকারী ছিলেন। জোত ছিল, তালুক ছিল, জলমহল ছিল, গোদারা ঘাট ছিল, কাচারী ছিল, ডঙ্কা ছিল , প্রজা ছিল। ছোট ভাই আকবর মিয়া ছয়আনা এবং হামিদুর রহমান মিয়া (বোনদের অংশ সহ) দশ আনা হিস্যার অধিকারী হয়েও আকবর মিয়ার সমান খাজনা আদায় হত না । হবেই বা কেমনে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিজের তালুক ছোট মিয়ার নিকট বিক্রী করে বাৎসরিক কালীপুর এষ্টেটের ধার্য্য করের ভর্তুকি দিতেন । তার পেছনে কারন ছিল । তিনি পালপাড়া ও ঝালো পাড়ার প্রজাদের খাজনা প্রায় বছরটা মওকুফ করে দিতেন । জনকল্যানে জলমহল ও গোদারা ঘাটের কোন ইজারা নিতে নিষেধ করেছিলেন । এ নিয়ে আকবর মিয়া গোদারা ঘাট আলাদা করে নিয়ে ইজারা আদায় করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
যে আঁখিতে এত হাসি লুকানো কুলে কুলে তার কেন আঁখি ভার — যে মনের আছে এত মাধুরী সে কেন চলেছে বয়ে এত ব্যাথা ভার।।
***
হামিদুর রহমান মিয়া
( জন্ম ১৮৭০- মৃত্যু ১৯৪৮)
বিয়ে করেছিলেন জামালপুর রাম নগর সরকার বাড়ী। বিয়ে যায় হাতীতে চড়ে এবং আসে পালকিতে নিজ বেহারায়।
এ বিয়ের পেছনে লুকিয়ে ছিল এক রহস্যময় গল্প। সে সময় সরকার বংশ ও আকন্দ বংশের মধ্যে চলছিল বংশ ধারার সিড়ি ভাঙ্গার এক অসম প্রতিযোগীতা। কে কত বড় বংশে ছেলে বিয়ে করাতে পারে বা মেয়ে বিয়ে দিতে পারে। জুয়ার নেশার মত মত্ত ছিল এ প্রতিযোগীতার ধারাক্রম। মেয়েদের উচ্চ বংশে বিয়ে দিতে মেয়ের বাবা বা বিয়ে করাতে ছেলের বাবারা তালুক পর্যন্ত বিক্রী করে দিতেন। এর প্রভাবে মেয়েদের ধারা উর্ধ মুখি ও উচ্চশিক্ষত হতে শুরু করে পক্ষান্তরে ছেলেদের ধারক্রমে শিক্ষা ও আর্থিক উভয় দিক থেকে পিছিয়ে পড়তে থাকে। এমনি এক নাটকীয় ঘটনার বিপাকে পড়ে হামিদুর রহমানের বিয়ে হয়। রামনগর সরকার বাড়ীর মেয়ে কুলসুম। অত্যন্ত সুন্দরী। বাবা ১২ তালুকের মালিক। বড় মেয়েকে মিয়া বংশের ছেলের নিকট যে কোন বিনীময়ে বিয়ে দিবেন বলে দৃঢ় পণ । তিনি দশ আনা জোতের অধিকারী কেবরাতুল্লাহ সর্দারের ছেলে হামিদুর রহমান মিয়ার নিকট মেয়ে কুলসুমের বিয়ের পয়গাম পাঠালেন । দশআনা জোতদার কেবরাতুল্ললাহ সর্দার বিবাহ পয়গাম আনায়ন কারীকে একটি বলিষ্ঠ দূধালো গাভী উপহার দিয়ে কঠোর এক শর্ত কথা জানালেন —- ” যদি নিজ বেহারায় বিয়ে পাঠাতে পারে তবে এ বিয়ের প্রস্তাবে তিনি সম্মত আছেন। ” শর্ত শুনে পয়গাম বাহক স্তব্ধ হয়ে গেলেন ,কারন নিজ বেহারায় বিয়ে পাঠাতে হলে সরকার বাড়ীর তালুক অর্ধেক খোয়াতে হবে। নিজ বেহারা তৈয়ার করতে হলে ৪ জন ডোম পরিবারকে আজীবনের জন্য খাজনা মুক্ত জীবন জীবিকা নির্বাহের জন্য ভুমি দিতে হবে।
তাই তিনি শর্তকে লঘু করার জন্য আবেদন রাখলেন, কিন্তু কোন পরিবর্তনের আশ্বাস না পেয়ে পয়গাম বাহক হতাশা নিয়েই ফিরে এলেন এবং সরকার বাড়ীর বড় কর্তাকে বিষয়টি জানালেন। সরকার বাড়ী তৎসময়ে জোতদারীতে বলীষ্ঠ না হলে শিক্ষায় এগিয়ে ছিল। তাই হার মানার পাত্র নয়। প্রস্তাবে সম্মত হয়ে গেলেন — বিয়ে হবেই, ঘোষনা দিলেন। ধার্য দিনে বর পক্ষ হাতীতে চড়ে রামনগর সরকার বাড়ী (বর্তমান আকন্দ বাড়ী) এলেন । নির্ধারিত শর্ত মোতাবেক বউ (কুলসুম) নিজ বেহারায় পাল্কিতে গেলেন। সাথে মেয়ের দুধ খাবার জন্য নিজ পালের একটি দুধালো লাল গাভী দিয়ে দিলেন। কারন কুলসুম লাল গাভীর দুধ ছাড়া দুধ পান করতেন না, বাবা সেটা জানতেন। তাঁর সূচী বায়ু রোগ ছিল। হামিদুর রহমানের পিতা কেবরাতুল্লাহ সর্দার বিষয়টিকে সহজ ভাবে মেনে নিতে পারলেন না। তিনি একে অপমাননা মনে করে নিলেন। যার প্রতিক্রিয়ার যের দুই পরিবারের মধ্যে বহুদিন পোহাতে হয়েছিল। কুলসুম যখন প্রথম পুত্র সন্তানের মা হলেন তখন তার বড় ভাই ভাগ্নের জন্মানুষ্ঠানের আয়োজন করে দুই পরিবারের দীর্ঘ দিনের মন মালিন্যের অবসান ঘটান। কুলসুমের গর্ভে হামিদুর রহমানের এই প্রথম ছেলের নাম সাইদুর রহমান মিয়া। হামিদুর রহমানের শ্যালক বিশেষ দৈহিক গঠনের অধিকারী ছিলেন । তার পায়ের চপ্পল/পয়টা অর্ডার দিয়ে বানাতে হত। পায়ের পাতা প্রায় ১৪” ইঞ্চির মত লম্বা ছিল। শাররীক উচ্চতা ছিল প্রায় সারে আট ফুট।
হামিদুর রহমান মিয়া মৃত্যুকালে ২ ছেলে ২ মেয়ে রেখে যান। (জন্ম ১৮৭০- মৃত্যু ১৯৪৮)
- ২ ছেলেঃ-
১) সাইদুর রহমান মিয়া
২) হানিফ মিয়া
মেয়েঃ ১) রশির মা, যার বিয়ে হয়েছিল ইসলামপুর পালপাড়া নিবাসী ইরাদ মিয়ার নিকট।
২) ছালেমন – যার বিয়ে হয়েছিল ইসলামপুরের কুলকান্দী নিবাসী মৌলভী আবুল ফজলের নিকট।
- সাইদুর রহমান মিয়া।
- ( জন্ম ১৮৯০ – মৃত্যু ১৯৬২)
অত্যন্ত বিনয়ী, নম্র ও পরহেজগার ছিলেন। তিনি গুরু ট্রেনিং পাশ ও আলেম ছিলেন । নানার বাড়ী রামনগর যাতায়াতের সুবাদে কাঁচাসরা নিবাসী আকন্দ বাড়ীর আজগর মাষ্টারের নজরে পড়েন সাইদুর রহমান। আজগর মাষ্টার পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন। ওদিকে রামনগর সরকার বাড়ীর বড় কর্তা ছিলেন তার বড় দানভাই। সে আত্মীয়তার বন্ধনে পুর্ব হতেই সরকার বাড়ী যাতায়াত ছিল তার। প্রতাব ও প্রভাবশালী পঞ্চায়েত প্রধান আজগর মাস্টার — সুদর্শন বিনম্র সাইদুর রহমানকে দেখে মুগ্ধ হয়ে যান। বড় মেয়ে ছাবিরন কে বিয়ে দিয়ে তার পঞ্চায়েত আরো শক্তিশালী ও সামাজিক মর্যদা উন্নিত করার বাসনা মনে মনে পোষন করেন। তাই তিনি সরকার বাড়ীর দানভাই এর মাধ্যমে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান । তখনো দাদা কেবরাতুল্লাহ সরদার জীবিত। বাবা হামিদুর রহমানের ৮ টি জোত ছিল, ৬টি তালুক ছিল, প্রজা ছিল, ডংকা ছিল, নিজ বেহারা ছিল, কাচারী ছিল। তদুপরি নম্র স্বভাবের জন্য ভাই হেমায়েতুল্লাহ ও আকবর মিয়ার দ্বিগুন হিস্যার তালুকের অধিকারী হয়েও বাৎসরিক খাজনা অর্ধেকও আদায় হত না । তার তালুকের গোদার ঘাটের খাজনা প্রজাদের সুবিধার্থে মওকুফ করে দিয়েছিলেন। বাৎসরিক খাজনা আদায় না হওয়ায় প্রতি বছর নিজ তালুক বিক্রী করে পথকর, শিক্ষাকর, শস্যকর মহাশয়া বাহাদুর গৌরিপুর কে পরিশোধ করতে হত। একই ধারা বাহিকতায় তার পরবর্তি বংশধর গনও সেই জলমহল, গোদারা ঘাটের ইজারা কোন দিন আর গ্রহন করেন।
সাইদুর রহমানের (১৮৯০-১৯৬২) বিয়ে করানো হয় কাচাসড়া নিবাসী আজগর মাস্টারের মেয়ে ছাবিরন নেসা কে দিয়ে। হামিদুর রহমান এ বিয়েতে সম্মতি না দিলেও মা কুলসুমের প্রবল আগ্রহ ছিল। বাবার বাড়ীর দেশে ছেলেকে বিয়ে করিয়ে যাতায়াতের পথ সুগম রাখতে বেঁকে বসলেন । বাবা মার অনুগত ছেলে সাইদুর রহমান কিংকর্তব্য বিমুঢ় হয়ে পড়লেন। হামিুদুর রহমান বিবির মনোবাসনা পুরনে বাধ্য হয়ে ইচ্ছের বিরুদ্ধে হলেও বিয়েতে সম্মতি প্রদান করেন এবং আজগর মাস্টারের বড় মেয়ে ছাবিরনের সাথে ছেলের বিয়ে দিয়ে মিয়া বংশের সাথে আকন্দ পরিবারের অনুপ্রবেশ ঘটান। মা কুলসুম বিবি পরবর্তি জীবনে এ নিয়ে বড্ড অনুতপ্ত ছিলেন মর্মে জানা যায়। কারন মিয়া বংশের সাথে আকন্দ পরিবারের সমন্বয়ে বিপর্যয় ডেকে আনে ।
- এত জল ও কাজল চোখে পাষানী
- *****
এর পর পরই জোত, তালুক দিনদিন হারাতে থাকে এবং অবশিষ্ঠ ভ্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে নদীগর্ভে চলে যায়। খাজনা আদায়ে অপারগতায় বাদবাকী জোত পুর্বপাকিস্তান সরকারের খাস খতিয়ানে চলে যায়।
ভাগি শরীক হেমায়েতুল্লাহ মিয়া, আকবর মিয়া ও তাদের সন্তানাদী একেক জন একেক দিকে চলে যায়। কেউ জামালপুর, কেউ শেরপুর, কেউ বা ঢাকা — যে যেভাবে যেদিকে সুবিধা পেয়েছে সেখানেই আবাস গড়ে নেয় ।
হারিয়ে যায় বিশাল পরিবারটি– একে অপরের কাছ থেকে। পরবর্তিতে আর হয়নি মধুর মিলন সেই বাগিচাবাড়ীর আঙ্গিনায়।
সাইদুর রহমান চার ছেলে চার মেয়ে নিয়ে চলে যান জামালপুর কাঁচাসরা শশুরবাড়ী এলাকায়। হানিফ মিয়া চলে যান মামুদপুর তার শশুর বাড়ী এলাকায়। আকবর মিয়ার ছেলে রশিদ মিয়া তার ছেলে মেয়েদের নিয়ে ঢাকায় চলে যান। ওয়াহেদ মিয়া,ওয়াদুদ মিয়ারাও তাই করন। শুধু হেমায়েত মিয়ার তিন ছেলে মোশারফ মিয়া, এনায়েতুর রহমান মিয়া এবং খালেক মিয়া মেলান্দহের আশেপাশেই পড়ে থাকেন অনূন্যপায় হয়ে। আকবর মিয়ার ছেলে রশীদ মিয়া তার ছেলেমেয়েদের নিয়ে চলে যান ঢাকায়। কেবরাতুল্লাহ সরদারের কনিষ্ঠ ছেলে আহম্মদ মিয়া এর আগেই এক ছেলে রেখে মারা যান। ছেলে লতিফ মিয়া কুচবিহার গিয়ে এক উকিলের মেয়ে বিয়ে করেন নিঃসন্তান অবস্থায় সেখানেই মারা যান।
ভুলু মিয়া, তালেব মিয়ার ছেলে মেয়েরা বাউসী, পাবই, ভাটারা,শেরপুর চলে যায়। সর্বনাশা ভ্রহ্মপুত্র নদ এই বিশাল পরিবার টিকে তছনছ করে খরকুটার মত ভাসিয়ে দেয়।
আজ কে কোথায় কি অবস্থায় আছে জীবনের পড়ন্ত বেলায় জানতে বড্ড সাধ জাগে। পুর্ব শ্যামপুর, কাজাইকাটার বাগিচা বাড়ী দেখতে গিয়ে রবী ঠাকুরের গানটি গুনগুন করে বেঁজে ঊঠে মনের কোণে । পরবে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে, গাইবো না — —-
*****
হামিদুর রহমান মিয়ার দ্বিতীয় ছেলেঃ
হানিফ মিয়া –– অত্যন্ত সাহসী উচু লম্বা দেহের গড়ন ছিল। মাতুল বংশের মতই অত্যন্ত সুন্দর দেহ কাঠামোর অধিকারী ছিলেন। মা কুলসুম ছিলেন অনিন্দ সুন্দরী। ছেলে যেন তারই প্রতিচ্ছবি। বাবা হামিদুর রহমান বড় ছেলেকে আকন্দ বাড়ী ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে করালেও ২য় ছেলের ক্ষেত্রে সেটি আর করেন নি ।
মাহমুদপুর মিয়া বাড়ীর মনির উদ্দীন সরকারের মেয়ে রহিমন নেসাকে বিয়ে করিয়ে ঘরে আনেন। ফুটফুটে এ আদরের বউ এর ঘরে জন্ম নেয় এক ছেলে এক মেয়ে। চান মিয়া ও ননী। নাম দুটি তার নানার ইচ্ছেমতই রাখা হয়েছিল। মেয়ে ননী এত অনন্য সুন্দরী ছিলেন যে দুধে-আলতা গায়ের রঙ ছিল। তাই নানা তার নাম রেখে ছিলেন আদর করে — ননী।
তার জন্মের পর পরই দাদা কেবরাতুল্লাহ ১৯৩৮ সনে বার্ধক্য জনিত কারনে ৯০ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন।
তার জোত ছিল, প্রজা ছিল, তালুক ছিল। বড় ভাই সাইদুর রহমান মিয়ার অত্যন্ত অনুগত ছিলেন হানীফ মিয়া। তাই জোতের অংশ কোন ভাগ না করে বড় ভাইয়ের সাথে একত্রে ছিলেন। তার বিয়ের কিছুদিন পরই ভ্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে জোত হারায়। বাদ বাকি খাজনা অনাদায়ের জন্য তদানিন্তন পুর্ব পাকিস্তান সরকার খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করে নেন। এমন অসহায় পরিস্থিতিতে তিনি মাহমুদপুর তার শশুর বাড়ী এলাকায় বসতি গড়েন। অন্যদিকে বড় ভাই সাইদুর রহমান তার শশুর আজগর মাস্টারের আহ্বানে জামালপুর কাচাসরায় চলে যান ।
অন্যান্য অংশীদারগন ও একই ভাবে কেহ দেয়ানগঞ্জ, কেহ শেরপুর, কেহ বা ঢাকা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েন। হানিফ মিয়ার অকাল মৃত্যু হয়। কুলকান্দী বোনের বাড়ী মজলিসের রান্নার চুলায় হানীফ মিয়া মাথা ঘুড়ে পড়ে যান এবং মৃত্যু বরন করেন।
হানীফ মিয়ার এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে চান মিয়া এবং মেয়ে ননী।
চান মিয়াঃ মাহমুদপুর মিয়া বাড়ী বসবাস। চান মিয়ার চার ছেলে এক মেয়ে।
১) মনোয়ার
২) দেলোয়ার 01312989920
৩) সরোয়ার ও
৪) আনোয়ার। (মৃত)
১) মেয়ের নাম রিমী।
হানিফ মিয়ার একটি মাত্র মেয়ে, নাম ননী।
ননীর বিয়ে হয় ভাটারা মহিষা বাদুরীয়া ময়েজ উকিলের নিকট । সেই স্বর্ণাগর্ভার দুই ছেলে এক মেয়ে।
বড় ছেলে আব্দুর রউফ । ভূমি মন্ত্রানালয়ে সচীব ছিলেন। তিনি বংশের অনেককেই চাকুরী দিয়েছেন। অত্যন্ত সাদামাটা জীবন যাপন করতেন। বর্তমানে ঢাকায় নিবাস।
ছোট ছেলে শামছুল হক (আবু) লন্ডনেই জীবন কাটিয়েছেন। পড়ন্ত বেলায় ঢাকায় । তার দুই মেয়ে লন্ডনেই থাকেন।
একমাত্র মেয়ে ফিরোজা স্বামী ম্যাজিষ্ট্রেট ছিলেন ।
সাইদুর রহমান মিয়ার ৪ ছেলে, ৪ মেয়ে।
১) মজিবর রহমান নুদু মিয়া। (মৃত ২৩/৬/৯৩)
২) হাফিজুর রহমান দুদু মিয়া। (মৃত)
৩) হাবিবুর রহমান মজনু মিয়া। (মৃত)
৪) মোখলেছুর রহমান তারা মিয়া। (মৃত)
- মেয়ে ৪ জনঃ
১) ফজিলতন নেসা গেন্দী। (মৃত)
২) জেবুন নেসা জোসনা। আমেরিকায়।
৩) শামছুন্নাহার চম্পা। (মৃত)
৪) নুরুন্নাহার আঙ্গুর । ঢাকা, দক্ষিন।
মজিবুর রহমানের।
- ( জন্ম ১৯১৮ – মৃত্যু ১৯৯৩)।
- ২ ছেলে ৬ মেয়ে।
- ছেলেদের নামঃ
১) এ,কে,এম,একরামুল হক রুবেল। ম্যানেজার,অগ্রনীব্যাংক,01710961936
২) এ,কে,এম,ইনামুল হক জুয়েল।এক্সিউটিব অফিসার ,জনতা ব্যাংক।
- মেয়েদের নামঃ
১) আফরোজা রহমান হেলেন (মৃত) জং জহুরুল আনোয়ার চৌধুরী, ঢাকা। ১ঃ৬
জন্ম ১২ মার্চ ১৯৪২ – মৃত্যু ২০২১
২) মাহবুবা রহমান বেলুন। ২ঃ২ জং আজিজুর রহমান । প্রভাষক চুয়েট।
(জন্ম ১০ নভেম্বর ১৯৫১ ইং – চলমান)
৩) মাহমুদা ইয়াসমিন হাসি ১ঃ১ জং আব্দুস সোবহান। এজিএম জনতা ব্যাংক। অবঃ জামালপুর।
(জন্ম ২১ আগষ্ট ১৯৫৪ — চলমান)
৪) মাকছুদা রহমান খুশি। ৪ ছেলে। জং এখলাছ উদ্দীন। প্রঃশি, জামালপুর।
( জন্ম ১৯ এপ্রিল ১৯৫৪ — চলমান)
৫) মাহফুজা রহমান লিপি। ৩ ছেলে। জং আঃ সামাদ খান। ডিইও। ময়মনসিংহ।
( জন্ম ২২ মে ১৯৫৯ – চলমান)
৬) মুনছুরা রহমান ডলি। ২ ছেলে। জং সাইফুল ইসলাম। জনতা ব্যাংক, নিবাস শেরপুর।
( জন্ম ৭ জুন ১৯৬২ – মৃত্যু —-)
- হাফিজুর রহমান দুদু মিয়া।
- ২ছেলে,৩ মেয়ে।
ছেলেদের নামঃ
১) রফিকুর রহমান হারুন।
২) শফিকুর রহমান তরুন ।
- মেয়েদের নামঃ
১) শাহিদা বেগম নিলু।
২) সাজেদা বেগম জিলু।
৩) শাহিনা বেগম পিলু।
হাবিবুর রহমান মজনু এর ৮ মেয়ে।
১) মনোয়ারা খাতুন মনি। জং নাসির উদ্দীন
২) সাজেদা বেগম রানী।
৩) ফরিদা বেগম (মৃত) জং আঃ বারেক।
৪) হাসনা হেনা জং হেলাল উদ্দিন।
৫) নার্গিস আক্তার লাকি। জং আমজাদ ।
৬) শাম্মী আক্তার চায়না।
৭) তানজিনা আক্তার সোমা।
৮) হালিমা আক্তার রিমা।
- মোখলেছুর রহমান তারা মিয়া। (১ঃ২)
ছেলেঃ লিটন মিয়া।
মেয়ে ১) ঝরনা বেগম।
মেয়ে ২) তাহমিনা আক্তার পান্না।
সাইদুর রহমানের মেয়েঃ ৪ জন।
১) ফজিলতন নেসা গেন্দী। (মৃত) জং গোলাম রসুল মিয়া।(মৃত)
২ ছেলে ২ মেয়ে।
ক) ছেলেঃ তাজুল ইসলাম সুলতান মিয়া।01713472617
খ) ছেলেঃ আমিনুল ইসলাম সাহেব মিয়া।01725785556
ক) মেয়েঃ দুলারী (মৃত) ৫ ছেলে ৩ মেয়ে 01731262701
খ) শেফালী,শেরপুর।
২ ছেলে ২ মেয়ে।01779172255
২) জেবুন নেসা জোসনা। জং ফয়েজ চৌধুরী। ৩ ছেলে ৩ মেয়ে। আমেরিকায়।
ক) ছেলেঃ আবিদুর রেজা চৌধুরী রিজভী । আমেরিকা স্থায়ী।
খ) ছেলেঃ আবিদুর মোরছালিন চৌধুরী রিপন । আমেরিকায় স্থায়ী।
গ) ছেলেঃ আবিদুস সালেহীন চৌধুরী শাহীন। আমেরিকায় স্থায়ী।
ক) মেয়েঃ আফরোজা সুলতানা,রত্না শাবানা স্বামী ওয়াহেদ সাদেক। আমেরিকায় স্থায়ী বর্তমান।
খ) মেয়েঃ নাসরিন সুলতান রঞ্জিতা স্বামীঃ খোকন । আমেরিকায় স্থায়ী।
গ) মেয়েঃ তাহমিনা সুলতানা রিক্তা । আমেরিকায় স্থায়ী।
তোমাদের কথা মনে পরে মাঝে মধ্যেই ।
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই চিরদিন কেন পাই না
****
৩) শামছুন্নাহার চম্পা (মৃত) হামিদুর রহমান মন্টু। ঢাকায়। ৩ ছেলে ৪ মেয়ে।
ক) ছেলেঃ জিয়াউর রহমান সেলিম। ঢাকা। 01715440099
খ) শহীদুর রহমান ভুট্টু। 01789869141
গ) শফিকুর রহমান শফিক। ঢাকা ।01798674649
ক) হুসনা আরা মায়া 01752806842
খ) রোকেয়া আক্তার মিনু 01992621634
গ) মালা ( নিরুদ্দেশ)
ঘ) ফারিহা ইয়াসমিন পলি 01934349970
- ৪) নুরুন্নাহার আঙ্গুর জং মৃত আবুল হোসেন। ঢাকা । ২ ছেলে ৩ মেয়ে।
ক) ছেলেঃ গালিব। ঢাকা।
খ) ছেলেঃ সোয়েব । ঢাকা।
ক) মেয়েঃ পারভীন । আমেরিকা।
খ) মেয়েঃ শিরীন। ঢাকা।
হামিদুর রহমান ওরফে বড় মিয়ার দুই ছেলে সাইদুর রহমান মিয়া ও হানিফ মিয়ার সংক্ষিপ্ত বিবরন শেষে এখন হেমায়েত মিয়ার উত্তর সুরীদের নিয়ে আলোচনাঃ
- হেমায়েতুল্লাহ মিয়ার ৪ ছেলে ২ মেয়ে।
- স্ত্রী রহিমন নেসা।
- হেমায়েতুল্লাহ মিয়ার ছেলেঃ
১) গোলাম সরোয়ার (বৈমাত্রিক)
২) মোশারফ মিয়া।
৩) খালেক মিয়া
৪) এনায়েতুর রহমান মিয়া ওরফে বাচ্চু মিয়া
- দুই মেয়েঃ
১) নয়ার মা স্বামীঃ মাহবুব পন্ডিত বা মহব্বল মাষ্টার। পন্ডিত বাড়ী, চিকাজানী, দেওয়ানগঞ্জ নিবাস। তিনি এতটা স্থুলকায় দেহের অধিকারী ছিলেন কথিত আছে যে বায়ু মারার সময় দাসীর ঠেং তুলে ধরতে হত।
২) জাহেরা,সেতারার মা — স্বামীঃ মৌলভী আবুল ফজল মিয়া। কুলকান্দী মিয়া বাড়ী,ইসলামপুর নিবাস।
আড়াল থেকে উঁকি দিয়ে যায় ,কে সে আমি জানতে পারি নি —
****
কন্ঠঃ ফেরদৌসী রহমান | ছবিঃ আলিঙ্গন।
হেমায়েতুল্লাহ মিয়ার ৪ ছেলে ২ মেয়ে।
হেমায়েতুল্লাহ মিয়ার ছেলেগনঃ
১) মোশারফ মিয়া
২) খালেক মিয়া
৩) এনায়েতুর রহমান বাচ্চু মিয়া ও
৪) গোলাম সরোয়ার মিয়া।
বাড়ী কয়েকবার নদী ভাঙ্গনের পরও ভাঙ্গনের সাথে সংগ্রাম করে মেলান্দহ ও তার আশপাশে টিকে থাকেন। তার চার ছেলে দুই মেয়ে।
মোশারফ মিয়ার ৪ ছেলে ২ মেয়ের নামঃ
১) শাহজাহান মিয়া সাজু (মৃত) যিনি মৃত্যকালীন দুই ছেলে দুই মেয়ে রেখে যান। ছেলে হাবিব ও রকেট এবং মেয়ে শিরিন ও ইতি। মেলান্দহ বসবাস।
২) আনোয়ার হোসেন পানু। এক ছেলে হাদী এবং এক মেয়ে আরিফা। ঢাকা নন্দীপাড়া বসবাস।
৩) আব্দুর রাজ্জাক ডিপটি (মৃত) । এক ছেলে ও দুই মেয়ে। ছেলে রাকিব। মেয়ে বুলবুলি ও রাবেয়া। মেলান্দহ ও ঢাকায় নিবাস।
৪) মিজানুল হক মনি। ঢাকা নন্দীপাড়ায় নিবাস। এক ছেলে এক মেয়ের জনক। ছেলে তাজবীহ ডেনটিস্ট, মেয়ে তাসলী।
মোশারফ মিয়ার মেয়ে দুইজন।
১) নূরজাহান বেগম মুক্তা স্বামীঃ রিয়াজ মিয়া ঝারকাটা মাহমুদপুর নিবাস। চার মেয়ে এক ছেলে। ছেলেঃ সিদ্দীক।
মেয়েঃ ক) রিপা খ) রেহেনা গ) সাহানা ও ঘ) শাবানা।
২) আফরোজা বেগম মুক্তা স্বামীঃ রউফ মিয়া। বারইপাড়া মেলান্দহ নিবাস। এক ছেলে দুই মেয়ে। ছেলেঃ ফারুক। মেয়েঃ কাজল ও চম্পা।
গানের সুর জাগে হৃদয়ে – বেলা বয়ে যায় ছোট্ট মোদের পানসি তরী সঙ্গে কে কে যাবি আয় —–
*******
হমায়েতুল্লাহ মিয়ার তৃতীয় ছেলে খালেক মিয়া।
- খালেক মিয়ার দুই ছেলে তিন মেয়ে।
১) আব্দুর রহমান মিয়া
২) আঃ সালাম ।
মেয়েঃ ১) আনোয়ারা(মৃত),দূরমুট।
২) মনোয়ারা । মেলান্দহ নিবাস।
৩) রোকেয়া স্বামী মফিজ, পিয়ারপুর।
আব্দুর রহমান মিয়া ,মেলান্দহ বসবাস। তার দুই ছেলে এক মেয়ে। ইয়াসিন – মৌসুমী।
খালেক মিয়ার অপর ছেলে আব্দুস সালাম মিয়া বিদেশ থাকেন। তার মাত্র দুই মেয়ে ।
হেমায়েতুল্লাহ মিয়ার চতুর্থ ছেলে এনায়েত মিয়া ওরফে বাচ্চু মিয়া । পক্ষ দুইটি। বড় জন ইসলামপুর ও ছোট জন জামালপুর। জামালপুর সাইদুর রহমানের ভায়রা ময়েন মৃধার মেয়ে কে বিয়ে করেন । দুই পক্ষে মিলে মোট ৮ ছেলে ৫ মেয়ে। ছেলেরা একজন ছাড়া সবাই মারা গেছেন। মেয়ে ৫ জনই বিদ্যমান আছেন।
- এনায়েত মিয়া (বাচ্চু) ছেলেদের নামঃ
১) বাদশা মিয়া মৃত। নিঃসন্তান।
২) ঠান্ডা মিয়া মৃত । এক ছেলে সৌকত ও এক মেয়ে পপি।
৩) নান্নু মিয়া মৃত । তিন মেয়ে। নাছিমা, নাজমা ও ফাতেমা।
৪) রাজা মিয়া মৃত। তিন ছেলেঃ হাফিজুল, রাসেল ও রাশেদ। এক মেয়ে রাজিয়া।
৫) বাবুল মিয়া মৃত। নিঃসন্তান।
৬) মসকুট মিয়া মৃত । বিডিআর এ চাকরী করতেন স্ত্রী লাইজু ইসলামপুর থাকেন।
৭) মোনছব মিয়া — একমাত্র জীবিত আছেন।
৮) রফিক মিয়া মৃত। এক ছেলে । পাপন ঢাকায় থাকেন।
- হামিদুর রহমানের বোনঃ
১) হামিদুর রহমানের বোনের নাম জানা যায়নি। তবে তাকে মোকাদ্দেসের মা বলেই ডাকা হত। বিয়ে হয়েছিল কুলকান্দী মুন্সীবাড়ী,ইসলামপুর। স্বামীর নাম আবু মিয়া। আবু মিয়ার এক ছেলে নাম মোকাদ্দেস।
- মোকাদ্দেস মিয়ার দুই ছেলে।
১) মনু মিয়া ও
২) খাজা মিয়া। খাজা মিয়া কুলকান্দীর সাবেক চেয়ারম্যান । মনু মিয়া মারা গেছেন ।
- মনু মিয়ার ছেলে শাহীন বর্তমান কুলকান্দীর চেয়ারম্যান ।
- হামিদুর রহমানের ফুফাত/চাচাত ভাই
১) আফজল হোসেন মিয়া ।
২) তালেব হোসেন মিয়া।
৩) সাদেক হোসেন মিয়া। ( সদর মিয়া)
** রুপা সরদারের মেঝো ছেলে তথা কেবরাতুল্লাহ সরদারের অপর ছোট ভাই ইরাদুল্লাহ সরদার।
ইরাদুল্লাহ সরদারের কোন পুত্র সন্তান নেই। তিন জন কন্যা সন্তান।
১) আতর নেছা
২) আজিজুন্নেসা ও
৩) কামরুন্নেসা।
আতরনেছার ছেলের নামঃ-
সাইদুর রহমান মিয়ার চাচাত বোন তিন জন।
( ইসলামপুর,পালপাড়া নিবাস ছিল ইরাদ মিয়ার। তার তিন মেয়ে কামরুন্নেছা, আক্তারুন্নেসা ও টুনি। তথ্য কামরুন্নেসার মেয়ে রেণু এবং রেনুর মেয়ে কাজল এবং কাজলের ছেলে তৌসিফ । কাজলের পিতা খন্দকার হাফেজ আব্দুল করিম। কাজলের স্বামী আবুল কালাম আজাদ। কাজলের মাতা রেণু । কাজলের ছেলে তৌসিফ। কাজলের বোন শেলী, বেবী ও বাচ্চুমনি। )
১) কামরুন্নেসা স্বামী প্রফেসর আব্দুস সবুর সিদ্দিকী। পিতাঃ ইরাদ আলী মিয়া, ইসলামপুর পালপাড়া। Father Irad ali
২) আক্তারুন্নেসা স্বামী মৌলভী —
৩) টুনি স্বামী মৌলভী মোনিম।
কামরুন্নেসা এর ৪ ছেলে ৫ মেয়ে। ছেলেদের নামঃ
১) আব্দুর রউফ সিদ্দিকী। চির কুমার। পুর্ব খাবাসপুর, ফরিদপুর।
আব্দুর রব সিদ্দিকী । ১ ছেলে, ৫ মেয়ে।
আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।
মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী।
২) আব্দুর রব সিদ্দিকী – ডিপুটি সেক্রটারী (অবসর)। ১ ছেলে,৫ মেয়ে।
৩) আজিজুর রহমান সিদ্দিকী ওরফে কালা খোকা। জনতা ব্যাংকের রিজিওনাল ম্যানেজার ছিলেন। অত্যন্ত মিতব্যায়ী ছিলেন। সকল আত্মীয় স্বজনদের সাথে নিবীর যোগাযোগ রাখতেন। বংশের অনেককেই তিনি চাকুরীর নিয়োগ দিয়েছেন। স্ত্রী সম্ভ্রান্ত পরিবারের এবং মর্ডাণ কালচারের ছিলেন। পক্ষান্তরে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মিতব্যায়ী প্রকৃতির। ফলে তিনি বেগম সাহেবাকে খুব সমীহা করে চলতেন। ঢাকায় জীবন অতিবাহিত করলেও অবসর জীবন ফরিদপুর নিজ বাসভবন পদ্মরাগে কাটিয়েছেন। তিনি দুই পুত্র তিন কন্যার সার্থক একজন জনক ছিলেন। ছেলেঃ পান্থ,বিত্ত। মেয়েঃ তন্নী,বহ্নি ও পিউ। নামের ঐশর্য দেখে বুঝা যায় বেগম সাহেবা সে কালেও কতটা মর্ডান ছিলেন। এ পেইজের সকল ডাটা তথ্য ১৯৭৯ সনে তাঁরই নিকট হতে লিপিবদ্ধ করা ছিল। তিনি কখনো পান সিগারেট,চা কফি বাড়তি কোন খাদ্য গ্রহন করতেন না। সুঠামো দেহের অধিকারী। দাঁত গুলো মুক্তার মত ঝকঝকে ছিল । আজ লিখতে গিয়ে তার ছবি বারবার চোখে ভাসছে। কত মিস্টি ভাষায় কথা বলতেন মনে পড়ছে। আল্লাহ তাকে জান্নাতের বাঁগিচায় প্রফুল্ল চিত্তে রাখুন। আমার প্রিয় ব্যাক্তি। ১৯৭৮ সনে বিসিএস পরীক্ষার ভাইবা দেবার সময় তিনি আমার জন্য আপ্রান চেষ্টা করেছিলেন। যা আজো ভুলতে পারি না। হাতির পুলে বাসা। দাদী প্রায় থাকতেন না। সে সুযোগে আসন গেরে বসলাম একটানা ৯ দিন। ওফ ! কি যে মজা। দাদীকে খুব ভয় পেতাম। শুধু আমি কেন ? উনিও। ফাঁকা বাসায় মনের আনন্দে নিজেই পাক করে খেতাম। পান্থ চাচুর সাথে কারাত ট্রেনিং এ যেতাম । ব্লাক বেল্ড বার্মার প্রশিক্ষক। সোহেল রানার ভাই রুবেল আমাদের সাথেই ট্রেনিং করতো। তন্নী ফুফু তখন ঢাবি ৪র্থ ইয়ারে। তন্নী ফুফুর খাতায় একটি ছন্দ পড়েছিলাম। যা আজো মনে আছে।
” জল রঙে আঁকা ছবি জলে মিশে যায়, মুুুছে না সে রঙ যে রঙ মেখেছ তোমার পাখায়, বল না এত মিষ্টি রঙ তুমি পেলে কোথায়।”
ফুফুর হয়ত নিজেরও মনে নেই সে লিখা। কিন্তু আজো সে লিখাটি চোখে ভাসে। ফুফুকে দেখে খুব লজ্জা পেতাম । তাই পারতো পক্ষ সামনেই পরতাম না । কেন জানি অহেতুক ভয় হত দাদীর মতই কি না?আসলে তিনি খুব সাদা মাটা ছিলেন। আমি কথা না বলেই ভয় পেতাম । পক্ষান্তরে পান্থ চাচুর সাথে এতটা খোলামেলা ছিলেম যে বন্ধু মনে হত। ঠিক দাদার সাথে যেমন । পড়ন্ত বেলায় পুরানো স্মৃতি মাখা দিন গুলো বড্ড ভারী হয়ে বুকে উঁকি দেয় । গানের সুরে হৃদয়ের আকুতি প্রকাশ করতে ইচ্ছে হয় —
- কেউ বলে ফালগুন কেউ বলে পলাশের মাস
- আমি বলি আমার সর্বনাশ
- কেউ বলে দখিনা কেউ বলে মাতাল বাতাস
- আমি বলি আমার দীর্ঘশ্বাস
- কেউ বলে নদী — কেউ তটনী
- কেউ বলে এ ছিল — তরঙ্গিনী
- আমি তো তাকে কোন নামে ডাকিনি
- সে যে আমার চোখে — জলোচ্ছাস।।।
- জোনাকীর নাম নাকি আঁধার মানিক
- আমি তো দেখি জ্বলে আগুন ধিকি ধিক
- খর বৈশাখে প্রথম যেদিন —
- মেঘের মিছিলে আকাশ রঙ্গিন
- তৃষ্ণিত হৃদয়ে বাঁজে আনন্দ বীন
- আমি শুনি ঝড়ের পুর্বাভাস।।।
******
৪) মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী দেলু
মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকীর তিন ছেলে তিন মেয়ে। ছেলেঃ দীপু,দোহা ও তো্হা । আর মেয়েঃ দীবা,জেবা ও জেনী।
কামরুন্নেসার চার মেয়ের নামঃ
১) লতিফা খাতুন জং সৈদুর রহমান। সরদার পাড়া,জামালপুর। ৩ ছেলে ৪ মেয়ে।
ছেলে ১) ডঃ আতাউর রহমান হেলাল। প্রফেসর রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ঢাবি।
ছেলে ২) আমিনুর রহমান ফিরোজ , জিএম অপসোনিন।
ছেলে ৩) কামাল , ঢাকা।
মেয়ে ১) রাশেদা খাতুন এমেলী।
মেয়ে ২) রুবী
মেয়ে ৩) ছবি ও
মেয়ে ৪) ডেইজী। সবাই চাকুরী জীবি।
২) রাজিয়া মজিদ বেগম জং শাহ আহম্মদ মোঃ মজিদ। এডভোকেট ও সাবেক এমএলএ। খুলনা তের খাদায় নিবাস। এই বিদূষী শ্যামপুরের স্মৃতি নিয়ে” জোনাকীর আলো জ্বলে ” সম্ভবত এ নামে একটি বই লিখেছিলেন। বইটিতে অনেক তথ্য ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্য বইটির কোন কপি আজ পর্যন্ত পাই নি। তাঁর কোন ছেলে নাই একটি মাত্র মেয়ে। নাম লিপি । লসএন্জেলে স্থায়ী বসবাস।
৩) সালেহা খাতুন রেণু জং ডাঃ খন্দকার আব্দুল করিম। মিরপুর ঢাকা। ছেলে নাই। চার মেয়ে।
মেয়ে ১) বাচ্চুমনি জং আনিছুর রহমান চৌধুরী।
মেয়ে ২) কাজল জং আবুল কালাম আজাদ।
মেয়ে ৩) শেলী জং সেলিমা বদরুজ্জামান ।আমেরিকায় স্থায়ী।
মেয়ে ৪) বেবী জং নাফিসা করিম। আমেরিকায় স্থায়ী।
৪) সেলিমা বেগম আঙ্গুর জং মৃত মজিবর রহমান। আগারগাও,ঢাকা। এক ছেলে তিন মেয়ে।
ছেলে রুপন, ইলেঃ ইন্জি ঢাকা।
মেয়ে ১) রীমা স্বামী কর্নেল।
মেয়ে ২) রুহী স্বামী ম্যাজিষ্ট্রেট।
মেয়ে ৩) রাহী আমেরিকায় স্থায়ী।
৫) মনিরা বেগম মনু স্বামী ইঞ্জিনিয়ার ও নাট্যকার ,ঢাকা।
মাহমুদপুর মিয়া বাড়ীতে আমাদের বংশের কে আছেন ? তারা কেমন আছেন? হামিদুর রহমান বড় মিয়ার দুই ছেলের ছোট জন হানিফ মিয়া। নদী গর্ভে সব জোত চলে যাওয়ার পর মাহমুদপুর তার শশুর বাড়ী মনির সরকারের ওখানে বসতি করেন। গড়ে উঠে মাহমুদপুর মিয়া বাড়ী। কুলকান্দী বোনের বাড়ী এক অনুষ্ঠানে দাওয়াত খেতে গিয়ে বেপারের চুলায় পড়ে গিয়ে হানিফ মিয়া। মৃত্যু কালে রেখে যান এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে চাঁন মিয়া এবং মেয়ে ননী।
মেয়ে ননীর বিয়ে হয় মহিষাবাদুরীয়া ভাটারা নিবাসী ময়েজ উকিলের নিকট। ছেলে চান মিয়াও মৃত্যু বরন করেছেন। মৃত্যু কালে রেখে গেছেন ৪ ছেলে ১ মেয়ে।
ছেলেরা বর্তমানে মাহমুদপুর মিয়া বাড়ীতে থাকলেও শিক্ষা সাংস্কৃতিকের চাহিদায় জামালপুর বাসা বাড়ী করেছেন। চার ছেলের মধ্যে একজন মারা গেছেন । তিনজন জীবিত আছেন। ছেলেরা হল ঃঃ
১) মনোয়ার। কানাডা প্রবাসী।
২) দেলোয়ার। 01312989920
৩) সরোয়ার। 0 1719-37006
৪) আনোয়ার। (মৃত)
এক মাত্র বোন রিমা। বিয়ে দেয়া হয়েছে মাদারগঞ্জ আশেক মাহমুদের ছেলের নাতির নিকট।
আবার ভালবাসার সাধ জাগে — নুপুর কাজী।
*****
জোত জমির নথি ও কাগজ পত্রাদীর পিডিএফ কপি Land Property নামক পেইজে সংরক্ষিত করা হল। গোপনীয়তা রক্ষার্থে পাসোয়ার্ড ব্যবহার করা হল।
এবার আলোচনায় আসা যাক কেবরাতুল্লাহ সর্দারের ছোট ছেলে আকবর মিয়া ও তার সন্তানাদীর বর্ণনা:
- ( আপগ্রেড পেতে চোখ রাখুন নিয়মিত ।)
- যোগাযোগ 01710961936 । সাইদুর রহমানের ডাইরী থেকে ও আজিজুর রহমান কালা খোকার বর্ণনা মোতাবেক লিপিবদ্ধ।
কাহারো নিকট আরো বেশী কোন তথ্য থাকলে সংযোগ করার সহযোগিতার অনুরোধ রইল। শ্রদ্ধেয় তন্নী, পান্থ, পিউ, বহ্নি, রতন, খসরু, সালেহা, নীলুফা, তোমরা হয়তো কেউ দেখনি আমায় অথবা যারা দেখেছেন হয়ত এতটুকুও স্মৃতিতে নেই।