ইয়াহুদীর দালাল বলে গালি দেয় যারা, তারা নিজেরাও কিন্তু জানেনা ইয়াহুদী কাকে বলে। আকিদার দিক থেকে ইয়াহুদী মুসলমান কাছাকাছি। মৌলিক পার্থক্য টা হলো:- ১) ইয়াহুদীরা একটি মাত্র কিতাব তাওরাতকে বিধান মানে। মুসলমান দুইটি কিতাবের বিধান মানে —— ১) কোরান ২) হাদীস। ২) ইয়াহদীরা একটি কিতাব তাওরাত মানে। মুসলমান দুইজন নবীর সুন্নত পালন করে। ইব্রাহীম আঃ ও মুহাম্মদ সাঃ। ইয়াহুদীরা শুধু মুসা নবীর সুন্নত পালন করে। মিল কোথায় গরমিল কতটাঃ —– ১) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে সৃষ্টিকর্তায় এক এবং তাদের কোন শরীক নেই। ২) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে আদী পিতা ইব্রাহীম আঃ ৩) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে আদী মানব আদম আঃ ৪) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে বিয়ে বহির্ভুত শাররীক সম্পর্ক গুরুতর অপরাধ। ৫) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে সুদ নিষিদ্ধ এবং জঘন্য পাপ। ৬) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে পশুর রক্ত ও শুকরের মাংস নিষিদ্ধ। ৭) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে সম্পদ থেকে যাকাত প্রদান করতে হবে। ৮) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে জেরুজালেম একটি পবিত্র নগরী। ৯) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে চাঁদ দেখে ধর্মীয় উৎসব পালন। ১০) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে মাথায় টুপি পড়া সুন্নত এবং পড়ে। ১১) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে দাড়ি রাখতে হবে, দাড়ি কাটা পাপ। ১২) দুই ধর্মেই পুরুষদের খতনা করাকে সুন্নত মানে। ১৩) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে মেয়েদের মাথায় কাপড় দিয়ে পর্দা করতে হবে। ১৪) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে পশু যবাইয়ের পুর্বে স্রষ্টার নাম নেয়া। ১৫) দুই ধর্মেই কঠোর ধর্মীয় আইন আছে। মুসলমানদের শরীয়া আইন, ইয়াহুদীদের খালাকা আইন। ১৬) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে কিতাব অনুযায়ী খাদ্য গ্রহন করা। মুসলমান যাকে হালাল বলে ইয়াহুদীরা বলে কুশার। ১৭) দুই ধর্মেই পরস্পরের সালাম প্রথা রয়েছে। ১৮) দুই ধর্মেই সপ্তাহে এবাদতের বিষেশ দিন আছে। মুসলমানের জুম্মা আর ইয়াহুদীদের আইয়ামে সাবেত। ১৯) দুই ধর্মেই এবাদতের জন্য একটি করে দিক নির্বাচন করে। মুসলমান ক্বাবাকে আর ইয়াহুদী বাইতুল মোকাদ্দেস ২০) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে সিয়াম পালন ফরজ। মুসলমান বছরে রমজান মাস ইয়াহুদীরা বছরে বিশেষ পাঁচ দিন। ২১) মুসলমান প্রতিদিন ৫ বার সালাত আদায় করে, ইয়াহুদীরা প্রতিদিন ৩ বার সালাত আদায় করে। ২২) মুসলমানদের হজ্জ হয় বছরে একবার ক্বাবায়। আর ইয়াহুদীদের হজ্জ হয় বছরে তিন বার জেরুজালেমে। ২৩) মুসলিমদের পবিত্র নগরী ক্রমনুসার মক্কা,মদীন, পরে জেরুজালেম। ইয়াদীদের ক্রমনুসারে জেরুজালেম,মক্কা পরে মদীনা। ২৪) দুই ধর্মেই বিশ্বাস করে উভয় ধর্মের মধ্যে পরস্পর বিয়ে করায় কোন নিষেধ নাই। আমাদের ভুল ধারনা ইয়াহুদীরা সব জাহান্নামী। অথচ আল্লাহ বলেনঃ “নিশ্চয়ই যাহারা ঈমান আনিয়াছে, যাহারা ইয়াহূদী হইয়াছে এবং খ্রিস্টান ও সাবিঈন-যাহারাই আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, তাহাদের জন্য পুরস্কার আছে তাহাদের প্রতিপালকের নিকট। তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিতও হইবে না। (সূরা ২ঃ ৬২) কেউ ইয়াহুদী বলে গালি দিলে আপনি রেগে যান, মনে প্রচন্ড অপমান বোধ করেন। প্রকৃত কি তাই? ইয়াহুদীর দালাল বলে যে গালি দেয় সে নিজেও কিন্তু জানে না ইয়াহুদী কাকে বলে, কি তাদের ধর্মীয় বৈশিষ্ঠ? আল্লাহর নিকট কতটা তাদের মর্যদা? কি তাদের কিতাব? আল্লাহ ইয়াহুদীদের জ্ঞান বিজ্ঞানে প্রাধন্য দিয়েছেন মর্মে ঘোষানাও রয়েছে কোরানে। আবার এই ইহুদীরা চতুর ও নিকষ্ট সে ঘোষনাও রয়েছে। ইহুদীদের মাঝ থেকেও অনেকেই জান্নাতে যাবে এমন ঘোষনাও রয়েছে। সুূদ কোন ধর্ম অনুসারীরা প্রচলন করেছেঃ সুদ প্রসংগে: ইয়াহূদী ধর্মের রীতি হল ইয়াহূদীগণ একে অপরের কাছে থেকে সুদ নিতে পারবে না কিন্তু অন্য ধর্মের কারও কাছে থেকে তারা সুদ নিতে পারবে। ইয়াহূদীদের ধর্মের পালনীয় বিধানকে Ten Commandments বলা হয়। অর্থাৎ দশটি আজ্ঞা পালন করতে হয় যাকে ইংরেজীতে Ten Commandments বলা হয়। এগুলো হলঃ ১। তুমি প্রভূকে মানবে, কেবল তার সেবা করবে আর তার নামে স্মরণ করবে। ২। পিতা-মাতার বাধ্য হয়ে তাদের সম্মান হবে। ৩। রবিবার বিশ্রাম করবে এবং পবিত্রভাবে ইবাদত করবে, ৪। নরহত্যা করবে না। ৫। মনে,বাক্যে ও কর্মে সৎ, শুদ্ব ও দয়ালু হবে, ৬। ব্যভিচার করবে না। ৭। চুরি করবে না । ৮। মিথ্যা বলবে না। ৯। পরস্ত্রী লোভ করবে না এবং দৃষ্টি নত রাখবে, ১০। পর দ্রব্যের প্রতি লোভ করবে না। কেনান’ (প্যালেস্টাইন) ইহুদীদের প্রথম মন্দিরে নুহ আ: এর জাহাজ, কল্পিত ‘চিরুবিম’ পশুর মূর্তি ছিল। ‘চিরুবিম’ ছিল আকাশে ভাসমান উড়ন্ত এ্যাঞ্জেল, যাতে উপবেশন করতো ‘যিহোবা’ নিজে। ইহুদীরা তাদের প্রার্থনালয়ে ‘যিহোবা’র কোন মূর্তি রাখতো না কেবল তার পুজো করতো। এই চিরুবিম এর আকৃতি গঠন কেই মিরাজে ব্যবহৃত যান রফরফ এর কাল্পনিক আকৃতি মনে করেন অনেকেই। আমি ব্যক্তিগত ভাবে রফরফের সে কাল্পনিক আকৃতির সাথে দ্বীমত পোষন করি।
