৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী হোসেনের ক্যাম্পের দিকে অগ্রসর হয়। হুসাইন আব্বাস কে পাঠালেন ইবনে সা’দকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে, যাতে তারা বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। ইবনে সা’দ এই অবকাশ দিতে রাজি হলেন।
হুসেন রাঃ তার লোকদের বলেছিলেন যে, তারা সবাই যেন তার পরিবারের সাথে রাতের আড়ালে চলে যায় । কারণ তার বিরোধীরা কেবল তাকেই চায়। খুব কম লোকই এই সুযোগটি উপভোগ করেছে।
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা করা হয়েছিল: তাঁবুগুলিকে একত্রিত করে একে অপরের সাথে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল এবং তাঁবুর পিছনে একটি খাদ খনন করা হয়েছিল এবং আক্রমণের ক্ষেত্রে আগুন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত কাঠ দিয়ে ভরা হয়েছিল। এরপর হুসাইন ও তার অনুসারীরা বাকি রাত নামাজে কাটিয়ে দেন।
হুসাইনকে কুফা শহরের বাসিন্দারা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন , একটি শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর, সেখানে এসে উমাইয়াদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মান উত্থাপন করতে। কিছু অনুকূল ইঙ্গিত পাওয়ার পর, হুসাইন আত্মীয় ও অনুসারীদের একটি ছোট দল নিয়ে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তিনি পথিমধ্যে কবি আল-ফরাজদাকের সাথে দেখা করেছিলেন এবং তাকে বলা হয়েছিল যে ইরাকিদের হৃদয় তার জন্য, কিন্তু তাদের তলোয়ারগুলি উমাইয়াদের জন্য।
খলিফার পক্ষ থেকে ইরাকের গভর্নর হুসাইন ও তার ছোট দলকে গ্রেফতার করতে ৪,০০০ লোক পাঠান।
তারা কারবালা (অক্টোবর 680) নামক স্থানে ইউফ্রেটিস নদীর তীরের কাছে হুসাইনকে আটকে রাখে । হোসাইন আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করলে তাকে এবং তার সহকারীদের হত্যা করা হয় এবং হুসাইনের মাথা দামেস্কে ( বর্তমানে সিরিয়ায়) ইয়াজিদের কাছে পাঠানো হয়। এজিদের তাবুতে তখন ত্রিশ হাজার সৈন্য। হোসেনর তাবুতে ৭২ জন। নারী বৃদ্ধ শিশু সহ ১৫০ জনের মত।
৬৮০ খৃঃ এ কারবালার যুদ্ধে আলেমগন দুই ভাগে বিভক্ত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ সব আলেম এজিদের তাবুতে হাতে গুনা নাম মাত্র কয়েকজন হোসেনের তাবুতে। হোসেনের বাহিনী পরাজিত হয়, এজিদের বাহিনী বিজিত হয়। এর পর আজ পর্যন্ত হোসেনের তাবুর কোন আলেম গড়ে উঠতে পারেনি।
এজিদের আলেম সমাজ আজো সারা বিশ্বে সায়লব হয়ে আছে। সে সময়ে আপনি বেচে থাকলে কোন তাবুতে অংশ গ্রহন করতেন ? নিশ্চয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দলে।। যা এখনো করছেন।।
হোসনের খন্ডিত মস্তক সামনে রেখে এজিদ বলেছিল,
” আজ যদি আমার পুর্ব পুরুষরা বেঁচে থাকত তবে তারা দেখে খুশি হত বদর প্রান্তের প্রতিশোধ আমি কি ভাবে নিয়েছি।
হোসেনের তাবুর আলেম আজ পর্যন্ত জমিনে আর দেখা যায়নি, যা আছে সব এজিদের পৃষ্ঠপোষক আলেম।।
এজিদ যেমন ইসলামী দল দাবী করে কারবালার যুদ্ধ করেছে বর্তমান ইসলামী দলের দাবীদারও তেমনি ইসলাম কায়েমের দাবী তুলে জনতাকে ধোকা দিয়ে নিজ ক্ষমতা দখলে প্রহসন করে চলছে।।
ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে হোসনর তাবুর একরামুল হক আজো কাঁদে গোমরে গোমরে।
