Categories
My text

হাদীস সৃষ্টির পেছনের কথা

হাদীস সৃষ্টির পেছনের কারনঃ
*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-*-

আল্লাহ ইখতিলাফ নিষিদ্ধ করেছেন ইখতিলাফের কারণ ঘটলেই থামতে বলেছেন। তারপর সত্যের প্রতি মনের নমনীয়তা আসার জন্য আল্লাহর অভিমুখী হতে বলেছেন।

রাসূলের পরপরই মুসলমানরা সেই ইখতিলাফ চর্চাই করতে থাকে। গোত্র প্রথার বিলুপ্তি হলেও বংশ প্রথার গৌরব আর ব্যক্তি স্বার্থের প্রতিযোগিতা দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়লো। রাষ্ট্র ক্ষমতায় জন্য ইসলামের জনপদ পরিণত হতে থাকে রণাঙ্গনে।

এই দাবানলে ঘি ঢালে ইসলামের শত্রুরা। রাসূলের কাছের মানুষ গুলিও আর এক জায়গায় রইলোনা। নিবেদিতরাও আল্লাহর কিতাবে নিবেদিত থাকার বদলে নিবেদিত হলেন নিরবতা অবলম্বনে।

ইসলামী রাষ্ট্রখানি ভালো মানুষদের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়ে। তারা দুনিয়ার দিকে দিকে চলে যায় হিজরত করে। এতে গোটা মুসলিম উম্মাহ বিভক্ত দূর্বল এমনকি কুরআনের খন্ডিত/আংশিক জ্ঞান নিয়ে কোনোমতে বেঁচে থাকা অপদার্থ জনসমষ্টিতে পরিণত হয়।

তখন প্রত্যেক শাষক তাদের ক্ষমতার অনুকূলে কোরআনের বিকল্প কিছু দিয়ে ইসলামী আইন ও শাসনতান্ত্রিক নীতিমালা তৈরি করতে থাকে। তাদের পোষিত সংগ্রাহকরা সত্যমিথ্যা সব কুড়িয়ে জমা করে। তার মধ্যে নিজের নিজের কল্পনা অভিলাষ ও স্বার্থানুগ উৎপাদনও ঢেলে দিতে থাকে। বিপুল পরিমাণ মিথ্যা অতি সামান্য সত্য নিয়ে মাথা তুলে বলে আমি হাদিস। এইটাকে শাষকরা শাসনতান্তিক প্রয়োজনে ব্যবহার করে। বিভক্ত দূর্বল ও পরস্পর বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন হাদীসসমষ্টি বিধিমালা হিসেবে স্হান করে নেয়। যার যে মিথ্যা প্রয়োজন সেই মিথ্যার জন্য মানানসই হাদীস।এক গোষ্ঠীর হাদীস আরেক গোষ্ঠীর হাদীসের বিপরীতে। সে হাদীসেও ইখতিলাফ। হাদীসের পর্যালোচনার ইমাম নামক গুরুত্বপূর্ণ তথা মহান মুরুব্বি হিসেবে অধিষ্ঠিত হতে থাকলো।

ঐসব গর্ধব বিশ্লেষকরা তথাকথিত ইসলামী স্কলার শ্রেণির আবির্ভাব ঘটলো। স্বস্ব শাসকের অনুকূলে রচিত সে সব নব রচিত কৌশলগুলি কাল কালান্তরে হাদীস নামে বিধান হয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বসে। এমন কি কোরআনের বিনাশী হওয়া সত্ত্বেও ইসলামের শরিয়তের উৎসের জায়গা করে নেয়। যা আজো পর্যন্ত দাপটের সাথে চলছে। যার পক্ষে সে সময়ের গর্ধব গুলির উত্তর সূরীরা আজও তৎপর আজও সোচ্চার।

মদীনার রাষ্ট্র ব্যবস্থা হারালো কোথায়? ধর্ম ও রাষ্ট্রঃ ( লিখাটি সবার জন্য উন্মুক্ত নহে)

ধর্ম এবং রাজনীতি হলো কোন রাষ্ট্রের প্রধান দু’টি দর্শনগত অবকাঠামো, যার উপর নির্ভর করে কল্যাণ রাষ্ট্র এবং ব্যর্থ রাষ্ট্রর ভিত্তি তৈরী হয়।

ধর্মের দুইটি রুপ রয়েছে। এক ঐশীতন্ত্র দুই মোল্লাতন্ত্র। ঐশীতন্ত্রের মুল লক্ষ্য হলো ঐশী ইচ্ছা, অর্থাৎ ধর্মের এই ধরণে মানুষ চালিত হয় স্রষ্টার ইচ্ছার কাছে নিজের ইচ্ছা আত্মসমর্পণ করার মধ্য দিয়ে।

অন্যদিকে, মোল্লাতন্ত্রের মুল লক্ষ্য হলো কতিপয় মোল্লা পুরোহিত পাদ্রীর ইচ্ছা। এখানে মোল্লারা যে কোন ধর্মের অনুসারীদের ইচ্ছা, স্বপ্ন, কল্পনা, আশা, ভয়, হতাশা, যৌনতা এমন কি মানবীয় প্রায় সকল অনুভূতি গুলোকে একটা নির্দিষ্ট ছকে এঁকে দেয়। এই ছকটা আঁকে মূলত তাদের স্বার্থ রক্ষার তাগিদে। স্বার্থের উপর নির্ভর করে ধর্মের কিতাব গুলোকে তারা নিজেদের মতো ব্যাখ্যা করে। আর এই ব্যাখ্যাকে পাক কিতাব বলে সাধারণ ধর্মাবলম্বীদের উপর চাপিয়ে দেয়। সেটা কি হিন্দু,কি মুসলিম,কি খৃষ্টান কি বৌদ্ধ সব ধর্মের বেলায় একই নীতি অনুসরন করা হয়।

এবার ভাবা যাক রাজনীতির বিষয়ে। রাজনীতির ক্ষেত্রেও দু’টি নীতি অনুসরন করা হয়। এক গনতন্ত্র/খলিফাতন্ত্র দুই স্বৈরতন্ত্র/জাহেলিয়াত।

গনতন্ত্র/খলিফাতন্ত্রের মূল স্পিরিট হলো সকল মানুষই রবের খলিফা বা প্রতিনিধি। (কোরান) তারা নিজেদের স্বাধীন ইচ্ছার মাধ্যমে নিজেদের মধ্য থেকে একজনকে বা একটা দলকে রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নির্বাচিত করে।

আর স্বৈরতন্ত্রের মূল স্পিরিট হলো একজনই কেবল ভ্রহ্মার প্রতিনিধি, বাদবাকি সকল মানুষ তার দাস বা গোলাম। (সনাতন)

এই তন্ত্রে যেহেতু অধিকাংশ মানুষের খলিফাত্বকে অস্বীকার করা হয়, তাই এই তন্ত্রে মানুষের বাক স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীন ইচ্ছা শক্তিকেও নাকচ করা হয়। দেব কূল আর দাস কূলে বল ভাজন করা হয়। ফলে ঐ একজন শাসক তার ইচ্ছা স্বপ্ন কল্পনা আশা ভয় সবকিছু সাধারণ জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়। সে কয়েকটা ছকে মানুষকে বিভাজিত করে মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে একমাত্র শাসকই স্বাধীন, বাদবাকি সবাই পরাধীন।

স্বৈরতন্ত্রের সাথে মোল্লাতন্ত্রের সারগত জায়গা থেকে সাদৃশ্য আছে বিধায় তারা নিজেদের মধ্যে ধর্ম এবং রাজনীতির মৈত্রী স্থাপন করে মানুষের ইহকাল এবং পরকাল নিয়ন্ত্রণ করে। রাষ্ট্র পরিচালনায় স্বৈরতন্ত্র বাই নেচার মোল্লাতন্ত্রের সাথে আঁতাত করে ঘাকে। একই সাথে মোল্লাতন্ত্র তার ব্যবসা এবং কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বাই নেচার রাষ্ট্র ক্ষমতায় সবসময় স্বৈরতন্ত্রের সহযোগী হয়ে থাকে। মোয়াবিয়া শাশন আমল তার অনন্য দৃষ্টান্ত।

এই ধরণের রাষ্ট্র কাঠামোকে বলা হয় ব্যর্থ রাষ্ট্র বা জুলুমের হাতিয়ার রাষ্ট্র। অন্যদিকে কল্যাণ রাষ্ট্র তৈরী করতে হলে ঐশীতন্ত্রের সাথে গনতন্ত্র বা খলিফাতন্ত্রের মৈত্রী তৈরী করতে হয়( মদীনা মনোয়ারা)।

যারা কল্যাণ রাষ্ট্র তৈরী করতে চান, তাদেরকে অবশ্যই একই সাথে মোল্লাতন্ত্র এবং স্বৈরতন্ত্রের বিরোধিতা করতে হবে, নতুবা একটা বিরোধিতা করে অন্যটায় চুপ থাকলে, এই বিরোধিতা আদতে কোন ফল দেয় না। বরং নীরবতাটা সমর্থনের সূচক হয়। যা হয়েছিল সিফফিনে, কুফায়।

আবার শুধু বিরোধিতাতেও কোন কাজ হয় না, যদি নিজে আধ্যাত্মিক ভাবে রবের খলিফা হয়ে না উঠা যায়।

একজন সত্যিকার রবের খলিফাকে এই বহুমুখী সংগ্রামের মধ্য দিয়েই হয়ে উঠতে হয় আলীর আদর্শে আদশবান এবং বহুমুখী সংগ্রামের মধ্য দিয়েই তৈরী করতে হয় মদীনা রাষ্ট্র।

By Ekramul hoq

I am A.K.M Ekramul hoq MA.LLB. Rtd Bank Manager & PO of Agrani Bank Ltd. I am interested writing and reading. Lives in Bangladesh, District Jamalpur.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by ExactMetrics