Categories
My text

রোমান বা ইটালী বাসীর পুর্ব পরিচয়।

রোমান বা ইটালী বাসীর পুর্ব পরিচয়
——————————–
(সূরা রুম আয়াত ২)

রোমকরা ইসহাক নবীর বংশোদ্ভোত, তারকা পুজারী। এরা সাতটি তারকার উপসনা করত। উত্তর দিক হয়ে সালাত পরতো। এদের দ্বারাই দামেস্ক শহরের পত্তন হয়েছিল। ঈসা আঃ এর নবুয়্যতের পর তিনশত বছর পর্যন্ত রোমকরা তাদের পুর্ব মতবাদের উপর অটল ছিল। তাদের মধ্যে যে বাদশাহ হত তাকে সিজার      ( কাইসার) বলতো। তাদের যে বাদশাহ সর্বপ্রথম খৃস্টান ধর্ম গ্রহন করেন তার নাম কনস্টানটাইন ইবন কসতাস। বহু খৃস্টান পাদরী তার দরবারে হাজির হতো,তাদের মাঝে প্রায়সঃ ধর্ম নিয়ে তর্ক,মতানৈক্য হত। বাদশাহ তা সমাধানের জন্য ৩১৮ জন ধর্মীয় আলেমের সমন্বয়ে এক খানা কিতাব রচনা করেন —
যেখানে বাদশাহের আকীদহ ও মতাদর্শকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এই কিতাবকে আমানতে কুবরা বা সমঝোতা চুক্তি কিতাব বলা হত। এটিকে তাদের নিয়ম নীতির কিতাব বলে মানা হত এবং তাতে হারাম/হালালসহ অনেক কিছু বর্ননা করা হয়। তাদের আলেমরা মনের আনন্দে যা খুশী তাই লিখে তাতে যুক্ত করে এবং দ্বীনে মসীহকে তারা কম বেশী পরিবর্তন করে। ফলে আসল দ্বীন পরিবর্তিত, পরিবর্ধিত ও পরিকল্পিত হয়ে যায়। তারা পুর্বদিকে মুখ করে সালাত আদায় করা শুরু করে এবং শনিবারের পরিবর্তে রবিবারকে তারা বড়দিন ধার্য্য করে। তারা ক্রুসের উপাসনা শুরু করে। শুকরকে তারা হালাল করে নেয়। নতুন নতুন উৎসব তারা আবিস্কার করে।
যেমন ঈদ,ক্রুস,নৈশ ভোজের উৎসব,ইস্টার সান ডে ইত্যাদি ইত্যাদি। তারপর তাদের আলেমদের মর্যদার স্তর তারা নির্ধারন করে নিয়েছে এবং তাদের একজন বড় পাদরী হয়ে থাকে। তার অধীনে ছোট ছোট আলেমদের ক্রমিক পর্যায়ে স্তর বন্টন করে দেয়া হয়।
তারা রুহাবানিয়াত বা বৈরাগ্যের নতুন বিদআত আবষ্কার করে নেয়। তাদের জন্যই বাদশাহ বহু গীর্যা,মন্দির তৈরী করে দেয়। বাদশাহ একটি নতুন শহরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে, যে শহরের নামকরন করা হয় কনস্টানটিনোপল। সেখানে তার মা ও যীশুর নামে একটি পুণ্য সমাধী ( কামাকিমা) তৈরী করে দেয়। তারা সবাই বাদশাহর দীনের উপর ছিল। এ ভাবে একের পর এক সিজার (কাইসার) হয়ে আসছিল। সর্বশেষ সিজার ( কাইসার) হিরাক্লিয়াস হন। ইনিই ছিলেন সমস্ত বাদশাহদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা অধিক বুদ্ধিমান। তার রাজ্য বহুদুর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়েছিল। তার প্রতিদ্বন্দিতায় পারস্য সম্রাট কিসরা উঠে পরে লাগে। কিসরা ছিল অগ্নি উপাসক। তার রাজ্য রোম সম্রাট সিজারের চেয়ে অনেক বড় ছিল। যুদ্ধের এক পর্যায়ে রোম সম্রাট সিজার অবরোদ্ধ হয়। কিসরা কনস্টনটিনোপল দখল করে সেখানের যুবকদের হত্যা ও নারীদের বন্দী করে। দির্ঘদিন অবরোধ চলা অবস্থায় রোম সম্রাট সিজার রোমকদের তার অনুপস্থিতে দায়িত্ব পালনের পরামর্শ দিয়ে ছোট্ট একটি সেনা বাহিনী সাথে নিয়ে যুদ্ধের দিক পরিবর্তন করে উল্টো দিকে কিসরার এলাকা পারস্যে গিয়ে পৌছেন। সেখানে তখন খুব কম সংখ্যক সৈন্যই অবস্থান করছিল, যেহেতু সবাই কিসরার সাথে যুদ্ধে চলে গিয়েছিল। রোম সম্রাট সিজার কিসরার রাজধানীর রক্ষীবাহীনিকে পরাজিত করে কিসরার সিংহাসন দখল করে নেন এবং তার ছেলেকে বন্দী করেন। তার ছেলের মাথা মুন্ডন করে গাধায় চড়িয়ে পরিবারের মহিলাদের অবমাননাকর অবস্থায় কিসরার কাছে পাঠিয়ে দিলেন। কিসরা পরিবারের সদস্যদের এমন অবমাননাকর অবস্থা দেখে ক্রোধে ফেটে পরেন এবং কঠিন আক্রমনের প্রস্তুতি নেন। রোম সম্রাট সিজার এটা জানতে পেরে কৌশল অবলম্বন করলেন। সিজার যাইহুন নদী অতিক্রম করে পথ পরিবর্তন করে কনস্টানটিনোপল রোম সম্রাজ্যে পৌঁছে গেলেন।।

যেদিন তিনি রাজধানীতে পৌঁছলেন সেই দিন খৃস্টানেরা আনন্দোৎসবে মেতে উঠল। কিসরা যখন এ খবর জানতে পারলো, সে বিষ্ময়কর ও হতাশ হয়ে পড়লো। তার না রোম বিজিত হলো – না পারস্য টিকে থাকল। রোমকরা জয়লাভ করল। পারস্যের নারী ও ধন সম্পদ তাদের অধিকারে এসে গেল। এ সব ঘটনা নয় বছরের মধ্যে সংঘটিত হলো। পরাজয়ের পর পুনরায় তারা বিজয় মাল্যে ভূষিত হলো।
একই সময়ে রোমানরা যেমন পারসিকদের পরাজিত করে ঠিক বদর প্রান্তে মুসলমানরা মক্কার পৌত্তলিকদের পরাজিত করে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights