Categories
My text

মুত্তাকীন

মুত্তাকী এর বাংলা কি?

কোরআনে যে শব্দ গুলির কোন বাংলা অনুবাদ অদ্যবধি করা হয় নি তার মধ্যে অন্যতম একটি শব্দ মুত্তাকী  ( الْمُتَّقِيْنَ) ।  এই মুত্তাকীন শব্দটি আমাদের সবার জানা কিন্তু এর বাংলা কি?  তা বলতে পারে না।

কোরআনে মুত্তাকী শব্দটি  নিয়ে ২৫ টি আয়াত আছে।  কোন একটি আয়াতেও এর বাংলা অনুবাদ কোন অনুবাদক আজো লিখেন নাই।

অথচ সবগুলি আয়াতের মর্ম অনুধাবন করলে এর বাংলা সহজেই নিরুপন করা যায়। এবার সব গুলি আয়াতে মুত্তাকীনের বাংলা “সচেতন ” শব্দটি বসিয়ে অনুবাদ করে দেখুন কত সুন্দর সুস্পষ্ট মর্ম জেগে উঠে হৃদয়ে।

উপলব্ধির জন্য আয়াত গুলি নীচে পেশ করা হলো আগ্রহীদের জন্য।

১) তোমাদের মধ্যে কাহারও মৃত্যুকাল উপস্থিত হইলে সে যদি ধন – সম্পত্তি রাখিয়া যায় তবে ন্যায়ানুগ প্রথামত তাহার পিতামাতা ও আত্মীয় স্বজনের জন্য ওসিয়াত করার বিধান তোমাদেরকে দেওয়া হইল। ইহা মুত্তাকীদের জন্য একটি কর্তব্য। (২:১৮০)

كُتِبَ عَلَيْكُمْ اِذَا حَضَرَ اَحَدَكُمُ الْمَوْتُ اِنْ تَرَكَ خَيْرَا    ۖۚ اۨلْوَصِيَّةُ لِلْوَالِدَيْنِ وَالْاَقْرَبِيْنَ بِالْمَعْرُوْفِۚ حَقًّا عَلَى الْمُتَّقِيْنَؕ  (২:১৮০)

২) পবিত্র মাস পবিত্র মাসের বিনিময়ে। যাহার পবিত্রতা অলঙ্ঘনীয় তাহার অবমাননা সকলের জন্য সমান। সুতরাং যে কেহ তোমাদেরকে আক্রমণ করিবে তোমরাও তাহাকে অনুরূপ আক্রমণ করিবে এবং তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয় কর এবং জানিয়া রাখ যে, আল্লাহ্‌ অবশ্যই মুত্তাকীদের সঙ্গে থাকেন। (২:১৯৪)

اَلشَّهْرُ الْحَـرَامُ بِالشَّهْرِ الْحَـرَامِ وَالْحُرُمٰتُ قِصَاصٌ‌ؕ فَمَنِ اعْتَدٰى عَلَيْكُمْ فَاعْتَدُوْا عَلَيْهِ بِمِثْلِ مَا اعْتَدٰى عَلَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاعْلَمُوْٓا اَنَّ اللّٰهَ مَعَ الْمُتَّقِيْنَ   (২:১৯৪)

৩) তালাকপ্রাপ্তা নারীদেরকে যথারীতি ভরণ – পোষণ করা মুত্তাকীদের কর্তব্য। ( ২:২৪১)

وَلِلْمُطَلَّقٰتِ مَتَاعٌ ۢ بِالْمَعْرُوْفِ ‌ؕ حَقًّا عَلَى الْمُتَّقِيْنَ  (২:২৪১)

৪) হাঁ, কেহ তাহার অঙ্গীকার পূর্ণ করিলে এবং তাক্ওয়া অবলম্বন করিয়া চলিলে আল্লাহ্ অবশ্যই মুত্তাকীদের ভালবাসেন। (৩:৭৬)

بَلٰى مَنْ اَوْفٰى بِعَهْدِهٖ وَاتَّقٰى فَاِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِيْن (  ৩:৭৬)

৫) উত্তম কাজের যাহা কিছু তাহারা করে তাহা হইতে তাহাদের কখনও বঞ্চিত করা হইবে না। আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।  (৩:১১৫)

وَمَا يَفْعَلُوْا مِنْ خَيْرٍ فَلَنْ يُّكْفَرُوْهُ ‌ؕ وَاللّٰهُ عَلِيْمٌۢ بِالْمُتَّقِيْنَ  (৩:১১৫)

৬) আদমের দুই পুত্রের বৃত্তান্ত তুমি তাহাদেরকে যথাযথভাবে শোনাও। যখন তাহারা উভয়ে কুরবানী করিয়াছিল তখন একজনের কুরবানী কবূল হইল এবং অন্য জনের কবূল হইল না। সে বলিল, ‘আমি তোমাকে হত্যা করিবই।’ অপরজন বলিল, ‘অবশ্যই আল্লাহ্ মুত্তাকীদের কুরবানী কবূল করেন।’  (৫:২৭)

وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَاَ ابْنَىْ اٰدَمَ بِالْحَـقِّ‌ۘ اِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ  مِنْ اَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنَ الْاٰخَرِؕ قَالَ لَاَقْتُلَـنَّكَ‌ؕ قَالَ  اِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللّٰهُ مِنَ الْمُتَّقِيْنَ   (৫:২৭)

৭) তবে মুশরিকদের মধ্যে যাহাদের সঙ্গে তোমরা চুক্তিতে আবদ্ধ ও পরে যাহারা তোমাদের চুক্তি রক্ষায় কোন ত্রুটি করে নাই এবং তোমাদের বিরুদ্ধে কাহাকেও সাহায্য করে নাই, তাহাদের সঙ্গে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত চুক্তি পূর্ণ করিবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মুত্তাকীদেরকে পছন্দকরেন। (৯:৪)

اِلَّا الَّذِيْنَ عَاهَدتُّمْ مِّنَ الْمُشْرِكِيْنَ ثُمَّ لَمْ يَنْقُصُوْكُمْ شَيْـًٔـا وَّلَمْ يُظَاهِرُوْا عَلَيْكُمْ اَحَدًا فَاَتِمُّوْۤا اِلَيْهِمْ عَهْدَهُمْ اِلٰى مُدَّتِهِمْ‌ؕ اِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِيْنَ  (৯:৪)

৮) আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের নিকট মুশরিকদের চুক্তি কি করিয়া বলবৎ থাকিবে ? তবে যাহাদের সঙ্গে মসজিদুল হারামের সন্নিকটে তোমরা পারস্পরিক চুক্তিতে আবদ্ধ হইয়াছিলে, যাবৎ তাহারা তোমাদের চুক্তিতে স্থির থাকিবে তোমরাও তাহাদের চুক্তিতে স্থির থাকিবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ মুত্তাকীদেরকে পছন্দকরেন।  ( ৯:৭)

كَيْفَ يَكُوْنُ لِلْمُشْرِكِيْنَ عَهْدٌ عِنْدَ اللّٰهِ وَعِنْدَ رَسُوْلِهٖۤ اِلَّا الَّذِيْنَ عَاهَدتُّمْ عِنْدَ الْمَسْجِدِ الْحَـرَامِ‌ ۚ فَمَا اسْتَقَامُوْا لَـكُمْ فَاسْتَقِيْمُوْا لَهُمْ‌ ؕ اِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الْمُتَّقِيْنَ  ( ৯:৭)

৯) নিশ্চয়ই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন হইতেই আল্লাহ্‌র বিধানে আল্লাহ্‌র নিকট মাস গণনায় মাস বারটি; তন্মধ্যে চারটি নিষিদ্ধ মাস, ইহাই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং ইহার মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করিও না এবং তোমরা মুশরিকদের সঙ্গে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ করিবে, যেমন তাহারা তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে যুদ্ধ করিয়া থাকে। এবং জানিয়া রাখ, আল্লাহ্ তো মুত্তাকীদের সঙ্গে আছেন।  ( ৯:৩৬)

اِنَّ عِدَّةَ الشُّهُوْرِ عِنْدَ اللّٰهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِىْ كِتٰبِ اللّٰهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ مِنْهَاۤ اَرْبَعَةٌ حُرُمٌ‌ ؕ ذٰ لِكَ الدِّيْنُ الْقَيِّمُ ۙ   فَلَا تَظْلِمُوْا فِيْهِنَّ اَنْفُسَكُمْ‌  ؕ وَقَاتِلُوا الْمُشْرِكِيْنَ كَآفَّةً كَمَا يُقَاتِلُوْنَكُمْ كَآفَّةً‌  ؕ وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ مَعَ الْمُتَّقِيْنَ  (৯:৩৬)

১০) যাহারা আল্লাহে ও শেষ দিবসে ঈমান আনে তাহারা নিজ সম্পদ ও জীবন দ্বারা জিহাদে অব্যাহতি পাইবার প্রার্থনা তোমার নিকট করে না। আল্লাহ্ মুত্তাকীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত। ( ৯:৪৪)

لَا يَسْتَـاْذِنُكَ الَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ  وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ اَنْ يُّجَاهِدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَاَنْفُسِهِمْ‌ؕ  وَاللّٰهُ عَلِيْمٌۢ بِالْمُتَّقِيْنَ (৯:৪৪)

১১) হে মু’মিনগণ! কাফিরদের মধ্যে যাহারা তোমাদের নিকটবর্তী তাহাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর এবং উহারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা দেখিতে পায়। জানিয়া রাখ, আল্লাহ্ তো মুত্তাকীদের সঙ্গে আছেন। (৯:১২৩)

يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا قَاتِلُوا الَّذِيْنَ يَلُوْنَكُمْ مِّنَ الْكُفَّارِ وَلْيَجِدُوْا فِيْكُمْ غِلْظَةً‌  ؕ وَاعْلَمُوْاۤ اَنَّ اللّٰهَ مَعَ الْمُتَّقِيْنَ  (৯:১২৩)

১২) মুত্তাকীরা থাকিবে জান্নাতে ও প্রস্রবণ সমূহের মধ্যে।(১৫:৪৫)

اِنَّ الْمُتَّقِيْنَ فِىْ جَنّٰتٍ وَّعُيُوْنٍؕ  (১৫:৪৫)

১০)  মুত্তাকীরা থাকিবে স্রোতস্বিনী বিধৌত জান্নাতে,(৫৪:৫৪)

اِنَّ الْمُتَّقِيْنَ فِىْ جَنّٰتٍ وَّنَهَرٍۙ  (৫৪:৫৪)

১৪) এবং যাহারা মুত্তাকী ছিল তাহাদেরকে বলা হইবে, ‘তোমাদের প্রতিপালক কী অবতীর্ণ করিয়াছিলেন?’ তাহারা বলিবে, ‘মহাকল্যাণ’। যাহারা সৎকর্ম করে তাহাদের জন্য আছে এই দুনিয়ায় মঙ্গল এবং আখিরাতের আবাস আরও উৎকৃষ্ট এবং মুত্তাকীদের আবাসস্থল কত উত্তম!(১৬:৩০)

وَقِيْلَ لِلَّذِيْنَ اتَّقَوْا مَاذَاۤ اَنْزَلَ رَبُّكُمْ‌ؕ قَالُوْا خَيْرًاؕ لِّـلَّذِيْنَ اَحْسَنُوْا فِىْ هٰذِهِ الدُّنْيَا حَسَنَةٌ‌  ؕ وَلَدَارُ الْاٰخِرَةِ خَيْرٌ ‌ ؕ وَلَنِعْمَ دَارُ الْمُتَّقِيْنَۙ

১৫) যেদিন দয়াময়ের নিকট মুত্তাকীদেরকে সম্মানিত মেহমানরূপে সমবেত করিব(১৯:৮৫)

يَوْمَ نَحْشُرُ الْمُتَّقِيْنَ اِلَى الرَّحْمٰنِ وَفْدًا‌  ۙ (১৯:৮৫)

১৬) আমি তো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করিয়া দিয়াছি যাহাতে তুমি উহা দ্বারা মুত্তাকীদেরকে সুসংবাদ দিতে পার এবং বিতণ্ডাপ্রবণ সম্প্রদায়কে উহা দ্বারা সতর্ক করিতে পার। (১৯:৯৭)

فَاِنَّمَا يَسَّرْنٰهُ بِلِسَانِكَ لِتُبَشِّرَ بِهِ الْمُتَّقِيْنَ وَتُنْذِرَ  بِهٖ قَوْمًا لُّدًّا

১৭) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং যাহারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করিয়া বেড়ায়, আমি কি তাহাদেরকে সমান গণ্য করিব? আমি কি মুত্তাকীদেরকে অপরাধীদের সমান গণ্য করিব? (৩৮:২৮)

اَمْ نَجْعَلُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ كَالْمُفْسِدِيْنَ فِى الْاَرْضِ  اَمْ نَجْعَلُ الْمُتَّقِيْنَ كَالْفُجَّارِ  (৩৮:২৮)

১৮) অথবা কেহ যেন না বলে, আল্লাহ্‌ আমাকে পথপ্রদর্শন করিলে আমি তো অবশ্যই মুত্তাকীদের অন্তর্ভুক্ত হইতাম।(৩৯:৫৭)

اَوْ تَقُوْلَ لَوْ اَنَّ اللّٰهَ هَدٰٮنِىْ لَكُنْتُ مِنَ الْمُتَّقِيْنَۙ  (৩৯:৫৭)

১৯) বন্ধুরা সেই দিন হইয়া পড়িবে একে অপরের শত্রু, মুত্তাকীরা ব্যতীত। (৪৩:৬৭)

اَلْاَخِلَّاۤءُ يَوْمَٮِٕذٍۢ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ عَدُوٌّ اِلَّا الْمُتَّقِيْنَ  ؕ

২০) মুত্তাকীরা তো থাকিবে নিরাপদ স্থানে -(৪৪:৫১)
اِنَّ الْمُتَّقِيْنَ فِىْ مَقَامٍ اَمِيْنٍۙ

২১) আল্লাহ্‌র মুকাবিলায় উহারা তোমার কোনই উপকার করিতে পারিবে না ; জালিমরা তো একে অপররে বন্ধু। আর আল্লাহ্‌ মুত্তাকীদের বন্ধু। (৪৫:১৯)

اِنَّهُمْ لَنْ يُّغْنُوْا عَنْكَ مِنَ اللّٰهِ شَيْــًٔـا‌  ؕ وَ اِنَّ الظّٰلِمِيْنَ بَعْضُهُمْ اَوْلِيَآءُ بَعْضٍ‌ ۚ وَاللّٰهُ وَلِىُّ الْمُتَّقِيْنَ  (৪৫:১৯)

২২) সেদিন নিশ্চয়ই মুত্তাকীরা থাকিবে প্রস্রবণ – বিশিষ্ট জান্নাতে, (৫১:১৫)

اِنَّ الْمُتَّقِيْنَ فِىْ جَنّٰتٍ  وَّعُيُوْنٍۙ  (৫১:১৫)

২৩) মুত্তাকীরা তো থাকিবে জান্নাতে ও আরাম – আয়েশে,

اِنَّ  الْمُتَّقِيْنَ فِىْ جَنّٰتٍ وَّنَعِيْمٍۙ  (৫২:১৭)

২৪) মুত্তাকীরা থাকিবে স্রোতস্বিনী বিধৌত জান্নাতে (৫৪:৫৪)

اِنَّ الْمُتَّقِيْنَ فِىْ جَنّٰتٍ وَّنَهَرٍۙ   (৫৪:৫৪)

২৫) অবশ্যই মুত্তাকীরা থাকিবে ছায়ায় ও প্রস্রবণবহুল স্থানে, (৭৭:৪১)

اِنَّ  الْمُتَّقِيْنَ فِىْ ظِلٰلٍ وَّعُيُوْنٍۙ  (৭৭:৪১)

By Ekramul hoq

I am A.K.M Ekramul hoq MA.LLB. Rtd Bank Manager & PO of Agrani Bank Ltd. I am interested writing and reading. Lives in Bangladesh, District Jamalpur.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by ExactMetrics