প্রচলিত হাদিস, না মানিলে সে কাফের?
এই কথা যাহারা বলিয়া থাকেন এবং কাফের ফতুয়া দিয়ে থাকেন। তাহাদের ফতুয়ানুযায়ী, যাহারাই প্রচলিত হাদীসের কেতাব রচিত করেছেন তাঁহারাই,কাফের ফতুয়া পাওয়ার যোগ্য হবেন। এই বিষয়েই অতি সংক্ষেপে কিছু কথা। হাদিস কাহাকে বলে? উওরঃ কোরআনের আলোকেই আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম; সাহাবায়ে কেরামদেরকে যেভাবেই শিক্ষা দিয়েছেন। অর্থাৎ কোরআনের বিধান পালন করার জন্য যেসব নিয়ম নীতি এবং আদেশ নিষেধ উপদেশ এবং কাজকর্ম করিতেন। তাহাকেই অতি সংক্ষেপে, আল্লাহর রাসূলের হাদিস বলা হয়। এই হাদিস আমাদের কাছে কি ভাবেই আসল, এবং জানতে পারলাম? উওরঃ আল্লাহর রাসূলের ওফাতের আড়াই শত বছর পরে,হাজারও মাইল দূরের অনারবদের দ্বারাই মূলতঃ একের থেকে অপরের, শুনে শুনে তাহা নিজেদের বিবেক বুদ্ধিতেই যাচাই করে, লেখকদের নিজ নামে যে কেতাব রচিত করেছেন। তাহাকেই হাদীস শরীফের কেতাব বলা হয়। বর্তমানে রাসূলের নামে শতশত হাদীস শরীফের কেতাব আছে। হাদীসের সবচেয়ে বড় কেতাবের নাম হচ্ছে,(বুখারী শরিফ ও মুসলীম শরীফ)! বুখারী শরীফের লেখক ইমাম বোখারী সাহেব,বিভিন্ন জনের থেকে রাসুলের নামে সাড়ে সাত লক্ষ বানী মুখস্ত করে,তাহা নিজের বিচার বুদ্ধি যাচাই করে তাহার রচিত কিতাবে মাএ ৭৩৭৫টি বাক্যকে; রাসুলের নামে সঠিক হাদিস হিসাবে রচনা করেছেন। বা সংকলন করেছেন। তেমনি ভাবেই ইমাম মুসলীম সাহেব, বিভিন্ন জনের থেকে রাসুলের নামে,সাড়ে চার লক্ষ সংগ্রহকৃত বা মুখস্ত করা কথা গুলো,থেকে চার হাজার সঠিক বিবেচনা করে তাহার কেতাবে সংকলন করেছেন। এমনি ভাবেই সকল ইমাম সাহেবরাই রাসুলের নামে বিভিন্ন জনের থেকেই সংগ্রহকৃত লক্ষ লক্ষ বানী বা হাদিসকে বাদ দিয়ে মাএ কয়েক হাজার হাদিস। তাহাদের কেতাব সংকলন করেছেন। আবার তাদের বাতিলকৃত হাদিসকেই অনেক ইমাম সাহেবরাই সহি বা সঠিক বলেছেন। সেহেতু প্রমান হল,যে আল্লাহর রাসূলের কথা এবং তাঁহার কাজকর্ম গুলো,হাদিস শরীফের লেখকরাই সর্বপ্রথমেই অস্বীকার করেছেন। এবংতাহাদের পছন্দোনুযায়ী বানীকেই সঠিক। কেহবা সেটিকে বেঠিক, বলে প্রচার করা হয়েছে। সেহেতু আবারও প্রমানিত হলো যে যাহারাই হাদীস শরীফের কেতাব লিখেছেন, তাহারাই সর্বপ্রথমেই কাফের ফতুয়ার আওতায় পরেছেন। হাদীস শরীফের এখানেই শেষ নয়। প্রচলিত যত হাদিস শরীফের কেতাব আছে। সেইসব হাদিসের কেতাব থেকেই, নাসির উদ্দিন আলবানী নামের এক লোক যিনি অতান্ত দরিদ্র পরিবারের ১৯১৪সালে আলবেনীয়াতে জন্ম গ্রহন করেন। প্রথম জীবনে কাঠের মিস্ত্রি,পরে বাবার সাথে ঘড়ির মেকারী করিতেন।কোরআনের সম্পর্কে তাহার কোন লেখাপড়া ছিল কিনা? তাহার কোন ডকুমেন্ট পাওয়া যায় না। মূলতঃ এই লোকটি,তৎকালীন খ্রিস্টান পাদ্রীদের সাহায্য সহতায় মাধ্যমেই বিভিন্ন ইমামদের সংকলিত, লক্ষ লক্ষ হাদিস থেকে, তাহার গুরুদের পরামর্শে হাজার হাজার হাদিস বাদ দিয়ে একটি নতুন মতোবাদ চালু করেন। তাহার নাম হচ্ছে; আহলে হাদিস আন্দোলন। সৌদিআরবে এই মতোবাদকে সালাফী বা ওহাবী মাযহাব বলা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে আহলে হাদিস নামে পরিচিত। এবং এরা খুবই হিংসাত্মক ও অহংকারী এবং কোরআন সম্পর্কে অজ্ঞ। কিন্ত ফালতু বিষয়েই মহাপন্ডিত স্বভাবের হয়ে থাকে। এবং এই আহলে হাদিসের লোকেরা। কখনোই কোরআনের বিধানে সমাজ এবং রাষ্ট্রে বাস্তবায়ন করিতে রাজী নয়। এবং এর জন্যই অসংখ্য নবী-রাসূল এসেছিলেন। এই দাওয়াত তাহারা না দিয়ে ইসলামের অপ্রাসঙ্গিক এবং কোরআনের বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়ে নিয়েই তাহারা যতসব ফালতু তর্ক বিতর্ক করে সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে। এবং একের সাথে অপরকে ধর্মের মধ্যে দ্বন্দ্ব সংঘাতের ও বিশৃঙ্খলতার সৃষ্টি করছে। মূলতঃএরাই কোন না কোন ভাবে শয়তানের অনুসারী এবং তাগুতের দাসত্বকারী। এদের সম্পর্কে অবশ্যই সাবধান থাকুন। আল্লাহ বলেন, যে বা যারাই আল্লাহর রাসূলকে মান্য করিবে, সে যেন আমি আল্লাহকেই মান্য করিল।৪{৮০}সহ অনেক আয়াত আছে। সেহেতু আমরা আল্লাহর রাসূলকে অবশ্যই সন্মান শ্রদ্ধাবোদ এবং মান্য করিতে হইবে। কিন্ত তাহা কোরআনের আলোকেই। এবং সেই জন্যই আমাদেরকে সর্বপ্রথমেই কোরআনুল কারীম সম্পর্কে জানতে হবে। কোরআন সম্পর্কে জানার পরেই আপনি বুঝতে পারবেন,কোনটি সঠিক হাদিস। আর কোনটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত হাদিস। এবং কোরআনের সাথে সাংঘর্ষিক। এবং কোরআনের সাথে যে সব হাদিসের মিল নাই। তাহাই শয়তানের অনুসারীদের সৃষ্টি করা হাদিস। এবং সেইসব বিতর্কিত হাদিস কোরআনের বিধানের এবং রাসুলের আনুগত্যের মুসলীমরা কখনোই মানিতে পারে না। বিশেষ ভাবেই একটি কথা স্বরণ রাখতে হবে। আল্লাহর রাসূলের ওফাতের শতবছর পরে, ইসলামীক সমাজে নানান মতোভেদ এবং সমস্যার সৃষ্টি হয়। তখন কোরআন ও রাসূলের শিক্ষাকে গবেষণা করে প্রধান চার ইমাম চারটি মতোবাদ বা ফতুয়া দিয়েছিলেন। যেমন, হানাফী, শাফী, মালেকী এবং হাম্বলী। অনেকেই তাহাদের ফতুয়া বা সমাধানকে মান্য করে চলেন।খুবই ভালকথা। কিন্ত তাঁহারা কেহই কোন হাদিস শরীফের কেতাব লিখেন নাই। সেহেতু তাঁরা হচ্ছেন রাসূলের পরের তিন যুগের সম্মানিত মুসলেমীন বা মুসলীমম। কিন্ত হাদিস শরীফ রচনাকারীরা ইহার আওতায় পরে নাই। তাহাদের ব্যাপারে আল্লাহই ভাল জানেন। দয়াময় আল্লাহ।আমাদেরকে কোরআনের বিধান। রাসুলের আনুগত্যের মধ্যেই নিজেরা মান্য করে। তাহা সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যেই বাস্তবায়ন করার তৌফিক দান করুন। উপদেশ কেবলমাত্র বিবেকবানেরাই গ্রহণ করেন। মানা না মানা স্বাধীন ইচ্ছা।
