_____ পাঠ পর্যালোচনা পর্ব – 03
যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত,(৩৯:২৩) الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَ.
(আল্লাজিনা – হুম – আ’লা – সালাতিহিম – দাইমুন)
মাত্র ৫টি শব্দ নিয়ে এ আয়াতটি। গ্রামার জানার আগে প্রথমে আমাদের কোন শব্দের আদল বা মুল শব্দ নিরুপন করা শিখতে হবে। তাতে অনুবাদ করার ৭০℅ যোগ্যতা অর্জন হবে। এ আয়াতের শব্দ ৫টি ইসেম – ফেল- হরফ নির্নয় করা শিখব প্রথম।
১) আল্লাযিনা (الَّذِيْنَ) = যারা [ ইশেম ]
২) হুম (هُمْ) = তারা [সর্বনাম বাচক ইশেম]
৩) আ’লা (عَلٰى) = উপর [ হরফে ]
৪) সালাতিহিম (صَلَاتِهِمْ) মুল শব্দ সাল্লু [ ইশেম] অর্থ রবের সাথে সংযোগ।
৫) দাইমুন (دَآٮِٕمُوْنَ) মুল শব্দ دوم দম যার অর্থ সদা। [ ক্রিয়া বাচক ইশেম]
কি ভাবে সনাক্ত করলাম এটি ইসেম বা ফেল বা হরফ?
১) الَّذِينَ (আল্লাযীনা) = যারা, এটি ইসেম (اسم) কারনঃ আল্’ (ال) দ্বারা শুরু হওয়া ইসেমের অন্যতম আলামত। এটি ইসেম মাওসূল (Relative Pronoun)
২) هُمْ (হুম্) = তারা, এটি ইসেম (اسم)। তার কারনঃ ضمير বা সর্বনাম সবসময় ইসেম হয়।
৩) عَلٰى (আ’লা) = অর্থ: উপর। এটি হরফ (حرف)। কারনঃ অর্থপূর্ণ হলেও স্বতন্ত্রভাবে কোনো অর্থ প্রকাশ করে না। এটি حرف جرّ (preposition)
৪) صَلَاتِهِمْ (সালাতিহিম) = অর্থ: তাদের সালাত। এটি সর্নমাম যুক্ত ইসেম। কারনঃ তানওয়ীন/ইযাফা/মুছাফ (إضافة) অবস্থায় আছে। ‘সালাত’ (নাম বা বস্তু) → ইসেম।
৫) دَائِمُونَ (দায়িমূন) = সর্বক্ষণ/ সদা লিপ্ত / স্থায়ীভাবে করা। এটিও একটি ইসেম। কারনঃ واو+ن (وْنَ) দ্বারা শেষ হওয়া এবং ইসেমের আলামত, বিশেষ করে جمع مذكر سالم (পুরুষবাচক বহুবচন)
উপসংহারঃ #উক্ত আয়াতে আল্লাহ তার বান্দাকে সার্বক্ষনিক তাঁর নির্দেশ মেনে চলাকে সালাতুল দাইমুন বলে উল্লেখ করেছেন। সালাত বান্দার জন্য সার্বক্ষন।
এর পর ১৭:৭৮ অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক সালাত দিবসের অংশ সমুহে রবের সাথে সংযোগ স্থাপনের মনোনিবেশ করতে বলেছেন। যেটিকে কায়েমী সালাত বলা হয়েছে। তবে দাইমি সালাত ব্যতিত কায়েমি সালাত অন্তসার শুন্য। সেজন্যই ৪:৪৩ আয়াতে আল্লাহ বলেছেনঃ হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হইও না, যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার…..
সালাতে কোরান তেলোয়াতের মাধ্যমে যে অনুশীলন করা হয় বাস্তব জীবনে সে অনুযায়ী কর্ম পরিচালনা করাকেই সালাত প্রতিষ্ঠিত বলেছেন আল্লাহ।
নামাজ প্রকৃত মন্ত্র পড়ার মত কোন অনুষ্ঠান নয়। এটি রবের সাথে সংযোগ বা অঙ্গিকার অনুষ্ঠান যা বাস্তব জীবনে প্রতিটি কর্মে পদক্ষেপে রবের নির্দেশনা মেনে চলাকে সালাত কায়েম বুঝিয়েছেন।
আমাদের সমাজে সালাত কায়েম বলতে বুঝে থাকি মোয়াজ্জেম আজান দিয়ে ডাকবে মসজিদে যাওয়ার জন্য মুসুল্লিরা একত্র হবে একজন ইমাম মুসুল্লিদের জামাত বদ্ধ করে সালাত পড়বে, সমাজের সর্বত্র এ ব্যবস্থা চালু হলেই নামাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলা হবে। যার জন্য পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় যত পার মসজিদ গড়ে তুলো তবেই সালাত কায়েম হবে।
আচ্ছা একটু ভাবুন তো সে সময় মক্কা বা মদীনায় তাহলে কয়টি মসজিদ ছিল?? বেতন ভুক্ত কজন ইমাম বা মোয়াজ্জেম ছিল?
