* নামাজ পড়া* বনাম “সালাত কায়েম রাখা” সালাত অবশ্যই আল্লাহর স্মরনে উত্তম জিকির, যা প্রতিটি ঈমানদারের উপর ফরজ। আপনি নামাজ পড়বেন ?, না সালাত কায়েম করবেন? নামাজ হচ্ছে নির্দিষ্ট ফরমেটে বুঝে বা না বুঝে একটা নির্ধারিত সময়ে সালামের মাধ্যমে সমাপ্ত করার নাম। আর সালাত হলো- পঠিত কুরআনের বিধানকে নিজ, পরিবার এবং সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে সিরাতুম মুস্তাকিমে অটল থাকার নাম। সালাত হল কোরান তেলওয়াতের অনুষ্ঠান। সালাতে যা বলছি বাস্তব জীবনে সালাতের বাহিরেও তার বাস্তব প্রতিফলন ঘঠানোকেই সালাত কায়েম করা বুঝায়। সালাত পুঁজা মন্ডবে কিছু মন্ত্র পাঠ করার মত কোন অনুষ্ঠান নয়। সবাইকে জামাতে নামাজ পরতে বাধ্যকরারকে নামাজ প্রতিষ্ঠিত করা বা কায়েম করা বুঝায় না। কায়েম করা কাকে বলে সে বিষয়ে আল্লাহ বলেনঃ الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙ অর্থঃ যাহারা তাহাদের সালাতে সার্বক্ষনিক প্রতিষ্ঠিত,৭০ঃ২৩ পাঁচ ওয়াক্ত নমাজ পড়ে কি সার্বক্ষনিক সালাতে প্রতিষ্ঠিত থাকা বলা যায়? (৭০ঃ৭৩) আয়াতের সার্বক্ষনিক সালাতের ব্যাখ্যায় আল্লাহ বলেনঃ যাহারা দাঁড়াইয়া, বসিয়া ও শুইয়া আল্লাহ্কে স্মরণ করে এবং আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্ত করে ও বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি ইহা নিরর্থক সৃষ্টি কর নাই, তুমি পবিত্র, তুমি আমাদেরকে দোজখের শাস্তি হইতে রক্ষা কর। ( ৩ঃ১৯১) কোরআন বলে বিচার দিবসে সালাত নিয়ে জবাবদিহী করা হবে না, করা হবে কোরান পাঠ নিয়ে। সেদিন আল্লাহ বলবেনঃ তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’ (১৭ঃ১৪) তার মানে এই নয় আনুষ্ঠানিক সালাত অস্বীকার করা। গুরুত্ত অনুধাবেনের দিক থেকে আলোচনা, নামাজ ও সালাতের পার্থক্য বুঝাতে। আল্লাহ সূরা নিসায় বলেনঃ হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হইও না, যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার, ——- ( ৪ঃ ৪৩) (এই নেশা মদ, গাঁজার নেশার কথা বলেন নাই। দুনিয়াবি, সংসার জগতের মোহকে নেশা অনুবাদ করা হয়েছে। যা অন্যমনস্কা করে রাখে।) আনুষ্ঠানিক সালাতে আমরা দিনে অন্তত ১৭ বার বলে থাকিঃ “আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর,(১ঃ৬) এই সরল পথ কি এবং কেমন, জানা না থাকলে আল্লাহ প্রদর্শন করলেও তো আপনি গ্রহন করে নিতে পারবেন না। @ সরল, পথ কি এবং কোনটি ? যাহারা অদৃশ্যে ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে ও তাহাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করিয়াছি তাহা হইতে ব্যয় করে,(২ঃ৩)এবং তোমার প্রতি যাহা নাযিল হইয়াছে ও তোমার পূর্বে যাহা নাযিল হইয়াছে তাহাতে যাহারা ঈমান আনে ও আখিরাতে যাহারা নিশ্চিত বিশ্বাসী,(২ঃ৪) তাহারাই তাহাদের প্রতিপালক-নির্দেশিত সরল পথে রহিয়াছে এবং তাহারাই সফলকাম।(২ঃ৫) @ সরল পথ কি ভাবে পাওয়া যায়? ১) যাহারা মনোযোগ সহকারে (কোরানের) কথা শুনে এবং উহার মধ্যে যাহা উত্তম তাহা গ্রহণ করে। উহারাই বোধশক্তি সম্পন্ন, এবিং উহাদেরকে আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করেন (৩৯ঃ১৮) ২) অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথপ্রাপ্ত।(৩৬ঃ২১) @ ঈমান কিসের উপর আনতে হবে ? ১) তোমরা বল, ‘আমরা আল্লাহ্তে ঈমান রাখি, এবং যাহা আমাদের প্রতি এবং ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাহার বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হইয়াছে; এবং যাহা তাহাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীকে দেওয়া হইয়াছে ‘(২ঃ১৩৬) ২) অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ কেহ আল্লাহ্, পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে।(২ঃ১৭৭) অতঃপর আল্লাহ বলেনঃ যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ কর তারাই সৃষ্টির সেরা,তারাই সফলকাম এবং তাদের জন্যই জান্নাত নির্ধারিত। (২ঃ৮২) (৯৮ঃ৭) @ সৎকর্ম কোনগুলি কি কি? পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোতে কোন পুণ্য নাই; কিন্তু পুণ্য আছে কেহ আল্লাহ্, পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে এবং আল্লাহ্ প্রেমে আত্নীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, পর্যটক, সাহায্য প্রার্থিগণকে এবং দাস-মুক্তির জন্য অর্থ দান করিলে, সালাত কায়েম করিলে ও যাকাত প্রদান করিলে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়া তাহা পূর্ণ করিলে, অর্থ-সংকটে দুঃখ-ক্লেশে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য ধারণ করিলে। ইহারাই তাহারা যাহারা সৎকর্মশীল এবং ইহারাই মুত্তাকী। ২ঃ১৭৭ মুলত বুঝতে হবে সালাত পড়ার জিনিষ নয়। সালাত কায়েম করার আদেশ। সালাতে দাড়িয়ে যে আয়াত তেলোয়াত করি সে অনুযায়ী বাস্তব জীবনে প্রতিষ্ঠা করাকেই সালাত কায়েম বুঝায়। মুখে মসজিদে পড়ে বলে উচ্চারন করে আসলাম অথচ বাহিরে এসে তা নিজের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করার উপলব্ধিই করলাম না এটাকে নামাজ বললেও আল্লাহর কাংক্ষিত সালাত কায়েম বলা হয় না। এসব বিষয় নিয়ে ঘটনা ঘটবে তা আল্লাহ ভাল করে জানেন বলেই আয়াত রয়ে গেছে….. উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা-পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে,( ১৯ঃ৫৯) আর যখন তাহারা সালাতে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সঙ্গে দাঁড়ায়-কেবল লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহ্কে তাহারা অল্পই স্মরণ করে; দোটানায় দোদুল্যমান-না ইহাদের দিকে, না উহাদের দিকে! (৪:১৪২ ও ১৪৩) আমি আমার উপলব্ধি প্রকাশ করলাম মাত্র, কাউকে মানতে আহ্বান করি না। আলোচনা আমার সিদ্ধান্তটা আপনার। কোন দ্বীমত থাকলে রেফারেন্স সহ জানাবেন আমি আমার চিন্তাকে পরিশুদ্ধ করে নেব। ( কোরান থেকে আলোচনায় —– একরামুল হক)
Categories

One reply on “নামাজ পড়া”
Good