Categories
Blog

ধ্যান ও দাওয়াত

আল্লাহ কুরানে একাধিকবার বলেছেন—

আসমান সাতটি।

আমার আরশ ধারণ করে আটজন ফেরেস্তা।

আমার ফেরেস্তাগণ দুই দুই, তিন, চার পাখা বিশিষ্ট।

আমি আসমান-জমিন সৃষ্টি করেছি ছয় দিনে।

পৃথিবী সৃষ্টি করেছি দুই দিনে,

পৃথিবীর গাছপালা, জীব-জন্তু (রিজিক) সৃষ্টি করেছি দুই দিনে।

অতঃপর দুই দিনে আসমানকে

সাত স্তরে বিন্যস্ত করে তিনি আরশে সমাসীন হয়েছেন।  গুহাবাসী ৩০৯ বছর ঘুমিয়ে ছিল। আল্লাহ স্পষ্টভাবে এই সব ঘটনা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন জাগে— আসমান সাতটি না কি ৭০টি? আরশে আটজন ফেরেস্তা না কি আট কোটি? ফেরেস্তাদের পাখা দুই, তিন, চার নাকি দুইশত, তিনশত, চারশত? গুহাবাসী ৩০৯ বছর ঘুমিয়ে ছিল না কি ৩১০ বছর? পৃথিবী ও আসমান কি সত্যিই ছয় দিনে সৃষ্টি হয়েছে, নাকি ছয় সেকেন্ডে? মানুষ কি এগুলো প্রমাণ করতে পারবে? কখনো না।

তবুও কুরআন এগুলো বারবার বর্ণনা করেছে। কেন? তিনিই ভাল জানেন। কিন্তু,মুসলমানদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত—নামাজ—তার বিস্তারিত কুরআনে নেই। কোন নামাজ কত ওয়াক্ত, কত রাকাত, কিভাবে পড়তে হবে—কিছুই স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। এমনকি বলা হয়নি যে, “জিবরিল নবীজিকে নামাজ শিখিয়ে দিয়েছেন।” আল্লাহ পূর্ববর্তী নবীদের গল্পও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বর্ণনা করেছেন।

কুরআন বারবার বলেছে—এই কিতাব সুস্পষ্ট, বিস্তারিত, একমাত্র, পরিপূর্ণ। কোনো কিছু বাদ রাখিনি। সবকিছু ঘুরিয়ে বর্ণনা করেছি, যাতে তুমি পথভ্রষ্ট না হও। কিন্তু যাদের মনে হয়, কুরআনে নামাজের বিস্তারিত নেই, রমজানের রোজার সংখ্যা নেই, যাকাতের হিসাব নেই, ঈদের নামাজ নেই—তারা কি কুরআনকে যথেষ্ট মনে করে? যারা কুরআনের আয়াত মানে না, তারা কাফের, জালিম, ফাসেক। তাদেরকে ক্ষমা হবে না। আল্লাহ বলেছেন—“প্রতিশ্রুতি পালন আমার কর্তব্য। আল্লাহর চেয়ে কে বেশি বদ্ধপরিকর?” যদি কুরআনের আয়াতের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস থাকে, তাহলে বোঝা যায়, মানুষের প্রচলিত নামাজ কুরআনের সালাত নয়।

কুরআন স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছে, কিন্তু মানুষ সেই নির্দেশ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। কুরআন এমন অনেক আয়াতই দিয়েছে যা মুতাশাবিহ—অস্পষ্ট বা রূপক। এইসব আয়াতে শুধু আল্লাহই জানেন বাস্তব অর্থ। অথচ নামাজ কত ওয়াক্ত, কত রাকাত, কিভাবে পড়তে হবে—এই বিষয়গুলো নেই। ৮২ বার “সালাত” শব্দ ব্যবহৃত হলেও অধিকাংশই অন্য অর্থে ব্যবহৃত। আল্লাহ বলেছেন—পৃথিবীর সমস্ত ভাষা তিনি সৃষ্টি করেছেন। মানুষের ভাব প্রকাশের ভাষা তিনি দিয়েছেন। তাহলে স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারা তার জন্য কঠিন কী? তাঁর বান্দারা বোঝে না বা ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে। আজ মানুষ ফরজ, সুন্নাহ, নফল নামাজ পালন করছে। কিন্তু এটি কুরানের পরিপন্থী। কেউ নবী বা হাদিসের নামে নির্দেশ দিলেও তা কুরানের ব্যাখ্যা হতে পারে না। আল্লাহ বলেছেন—যারা কুরানের আয়াতের প্রতি চিন্তা ভাবনা করে না, তারা পৃথিবীর নিকৃষ্ট প্রাণীর চেয়েও অধম। কিন্তু যারা সঠিকভাবে কিতাব বুঝে পাঠ করে, তারা ঈমানদার। আমার উদ্দেশ্য হলো—মানুষকে কুরআন বুঝে পড়ার দিকে উৎসাহিত করা। নামাজ পড়া বা না পড়া আমার ক্ষতি বা লাভের বিষয় নয়। আমি কেবল কুরআনকে ভিত্তি করে জীবনযাপনের পথ দেখাই। কুরআনের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস থাকলে, আল্লাহ যা বলেন তাই করুন।

By Ekramul hoq

I am A.K.M Ekramul hoq MA.LLB. Rtd Bank Manager & PO of Agrani Bank Ltd. I am interested writing and reading. Lives in Bangladesh, District Jamalpur.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *