হাদীসকে কেনো ” খবর ” বলা হয় ?
হাদীস শাস্ত্রে হাদীসের একটি পরিভাষা হলো “খবর” । খবর সত্য কিংবা মিথ্যা হতে পারে। কারন সব হাদীস রাসুলের নামে প্রাচারিত হলেও সব হাদীস রাসুলের নয়। রাসুলের নামে প্রাচারিত হাদীসে হাজার হাজার নয়—- লক্ষ লক্ষ হাদীস জাল সাব্যস্ত হয়েছে।
হাদীস সংকলক ইসমাইল বোখারী সাড়ে ছয় লক্ষ হাদীস সংগ্রহ করলেও—- এগুলো থেকে মাত্র ৭ হাজার হাদীস নিয়েছেন। অবশিষ্ট ৬ লক্ষ তেতাল্লিশ হাজার হাদীসকে সত্য বা সহি মনে করে নেন নাই। এখন ডঃ নাসির উদ্দিন আলবানী বোখারীর এই ৭ হাজার হাদীস পরীক্ষা করে দেখলেন— এগুলোও জাল হাদীসে ভরা।
রাসুলে আকরাম (সাঃ) যখন জানলেন কোনো একজন সাহাবী রাসুলের কিছু কথা লিখে রেখেছেন — তখন তিনি ওগুলো জ্বালিয়ে দিয়েছেন। খলিফা ওমর (রাঃ) হাদীস নিয়ে আলোচনা বা বলাবলি করলে — সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিকে ডেকে নিয়ে নিষেধ করতেন। নিষেধাজ্ঞা না শুনলে বেত্রাঘাত করতেন। এরপরও না শুনলে তাকে কারারূদ্ধ বা নির্বাসিত করতেন। সাহাবীগনের জীবদ্দশায় কোনো সাহাবী হাদীস সংগ্রহ বা সংকলনের প্রয়োজন বোধ করতেন না।
রাসুল (সাঃ) এর ইন্তেকালের আড়াইশত বছর পর, যখন কোনো সাহাবী জীবিত ছিলেন না — তখন মক্কা-মদীনা থেকে ছয় হাজার কিলোমিটার দূরে উজবেকিস্তানের লোকেরা অতি গোপনে সিহাহ সিত্তা নামক হাদীসের কিতাব সংকলন করেন। এর কয়েক শতাব্দী পর এগুলো প্রকাশ্যে আনেন।
নামাজী ভাইয়েরা বলে থাকেন—হাদীস ছাড়া নামাজ পড়বেন কিভাবে ? আমাদের এসব ভাই কখনো কি ভেবে দেখেছেন–রাসুল(সাঃ) নামাজের প্রবর্তন করেন নাই। প্রথম মানুষ আদম (আঃ) এর সময় থেকে শুরু হলেও কোরানে নবী ইবরাহীম (আঃ) এর আমল থেকে কাবা ঘরে নামাজ আদায়ের ঘটনা উল্লেখ আছে।
আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) এর নবুওত লাভের আগে থেকেই কাবাঘরে বিকৃত পদ্ধতিতে নামাজ আদায় হতো। আল্লাহ কোরানের মাধ্যমে জানিয়ে দিলেন—নামাজের পদ্ধতি বিকৃত বা বিনষ্ট হয়ে গেছে। আল্লাহ কোরানের মাধ্যমে সঠিক পদ্ধতি নাজিল করে দিলেন। রাসুল(সাঃ) পূর্ব থেকে কাবার চত্বরে যে নামাজ আদায় হতো তার কাঠামো ঠিক রেখে বিকৃত অংশ কোরানের আলোকে সংশোধন করে নিলেন।
রাসুল (সাঃ) দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার পর ১৪ শত বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। হিজরী প্রথম শতাব্দীসহ বিভিন্ন শতাব্দীতে বহবার কাবাঘর আক্রান্ত হয়েছে। এসময় মতলববাজদের মাধ্যমে বারবার নামাজের পদ্ধতি বিকৃত হয়েছে। কোরান অনুসরনের মাধ্যমে আমাদেরকে কাবার চত্বরের কাঠামো ঠিক রেখে নামাজকে সাজিয়ে নেয়া আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। অন্যথায় আমরা শিরকের গহ্বর থেকে বাঁচতে পারবো না।