Categories
My text

কোরআন বিজ্ঞানময় শুধু উপদেশের নয়ঃ

কোরআন বিজ্ঞানময় আর এতে রয়েছে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শনঃ

কোরআন যে বিজ্ঞানময় তা প্রমানের জন্য একটি  আয়াত তুলে ধরা হলোঃ

আমি শপথ করিতেছি নক্ষত্র সমুহের পতন স্থানের ,(৫৬ঃ৭৫) কিন্তু কেন এ শপথ !

আল্লাহ আল কোরানে  মানুষের ইহকালীন এবং পরকালীন কল্যানের কথা যেমন আলোচনা করেছেন তেমনি আলোচনা করেছেন জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং তার সৃষ্টি কুলের নিগূঢ় রহস্যের কথা। আর এই নিগূঢ় রহস্যের কথা একমাত্র তারাই বুঝতে বা অনুধাবন করতে পারেন, যারা  জ্ঞানী এবং আল্লাহর সৃষ্টি জগত নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা ভাবনা করেন। আল্লাহ তাঁর সৃষ্টি জগতের এত এত বস্তু থাকতে, কেন তিনি তাঁর বাণীর বিশেষ বিশেষ স্থানে বিশেষ  বিশেষ কিছু বিষয় নিয়ে শপথ করেছেন? নিশ্চয় এর মাঝে আছে কোন বিশেষ কোন রহস্য বা সুপ্ত নিদর্শন। তেমনি একটি আয়াত সূরা ওয়াকিয়ারঃ
” আমি শপথ করিতেছি সেই স্থানের যেখানে নক্ষত্র সমুহ পতিত হয়।”(৫৬ঃ৭৫)

উক্ত আয়াতে আল্লাহ নক্ষত্র সমুহ পতনের স্থানের কথা উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ  নক্ষত্র সমুহ পতিত হওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। যে স্থানে এসে নক্ষত্র সমুহ পতিত হয়, শেষ হয়,বা ধংস হয়ে যায় এবং তাদের  পরিসমাপ্তি ঘটে।

তাহলে এই স্থানটিই কি সেই স্থান, যা বর্তমানে আধুনিক বিজ্ঞানীগন ” ব্লাক হোল ” নামে আবিস্কার করেছেন? রাতের আকাশে ঝিঁকিমিকি করতে থাকে অসংখ্য অগনিত নক্ষত্র। কিন্তু আকাশ ভরা অগনিত এই নক্ষত্রের মাঝে অন্ধকার অদৃশ্যের মত ঘুরে বেড়ায় এক ধরনের ভয়ংকর দানব!!  এইসব দানবেরা চলার পথে যাই পায় মহাজাগতিক যে কোন বস্তু, গ্রহ, নক্ষত্র সব কিছুই গোগ্রাসে গিলতে থাকে। ভয়ংকর এসব দানবের নামই হলো ” ব্লাক হোল “।  ব্লাক হোলের গ্রাভেটি বা আকর্ষন বল এত তীব্র যে তার কাছে থেকে আলোও পালাতে পারে না। এই ব্লাক হোল – ই হলো বর্তমান বিজ্ঞানের প্রদত্ত তথ্য অনুসারে মহান আল্লাহর শপথকৃত —” নক্ষত্র পতনের স্থান।”

পরবর্তি আয়াতেই আল্লাহ সেই শপথে কথা স্মরন করিয়ে আবারও বলেন — ” এ এক গুরুতর শপথ, যদি তোমরা জানতে।(৫৬ঃ৭৬)

গুরুতর শপথ, যদি তোমরা জানতে। কি এমন গভীর রহস্যে পরিপুর্ন এ বাক্য।  এ আয়াতে আল্লাহ সেই ব্লাক হোলের গঠন,সৃষ্টির রহস্য তার কার্যপ্রণালীর কথাই বলেছেন। যা আমাদের অজানা বলেই বলেছেন,যদি তোমরা জানতে?

বিজ্ঞান বলেঃ মহাকাশে নক্ষত্রের বিষ্ফোরনের মাধ্যমে যে সুপারনোভার সৃষ্টি হয় তা থেকে ব্লাক হোলের সৃষ্টি।মহাকাশে ছোট বড় অসংখ্য ব্লাক হোল ঘুরে বেড়াচ্ছে। ব্ল্যাক হোল  হলো মহাশূন্যের এমন কিছু জায়গা, যেখানে মহাকর্ষবল আশপাশের সবকিছু টেনে তার কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এমনকি আলোও টেনে নেয়। সামান্য জায়গায় অনেক বেশি পদার্থ ঘনীভূত হয় বলে এর বিরাট আকর্ষণশক্তি থাকে। কোনো বড় তারা (নক্ষত্র) দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে পড়ে নিজের কেন্দ্রে জড়ো হয়ে ব্ল্যাক হোলের উদ্ভব ঘটে। এ সময় সুপারনোভার সৃষ্টি হয়। সুপারনোভা হলো মহাশূন্যে নক্ষত্রের বিস্ফোরণ।

একটি ছোট আকারের ব্লাক হোলের ব্যসার্ধ প্রায় এক আলোক বর্ষ বা ৯৫ হাজার কোটি কিলোমিটার। ব্লাক হোল প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ নক্ষত্রকে মৃত্যুর দুয়ারে পাঠিয়ে দেয়। সূর্য আমাদের গ্রহের চেয়ে ১৩ লক্ষগুন বড়। এই সূর্যের চেয়েও হাজার গুন বড় শত শত নক্ষত্র ব্লাক হোলের কাছে কিছুই না।

তাহলে দেখা যাচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞান সুদীর্ঘ সময় পরিক্ষা-নিরীক্ষা ও গবেষনার মাধ্যমে যে তথ্যগুলো আজ উপস্থাপন করেছে, পবিত্র কোরান ১৫০০ বছর আগেই তা ঘোষনা করেছে। তাই তো আল্লাহ তাআলা বলেন, ” তিনি তোমাদের তাঁহার নিদর্শন সমুহ দেখিয়ে থাকেন, তার পরেও তোমরা আল্লাহর কোন নিদর্শনকে অস্বীকার করবে? ” (৪০ঃ৮১)

অথচ আমাদের অধিকাংশ শায়েখরা কোরআনকে ব্যবহার করেন বিবি তালাকের ফতূয়ার জন্য। আবার আরেক দল রয়েছেন, যারা কোরআন দিয়ে প্রচলিত ইবাদতের ভুল নিরুপন মহা ব্যস্ততায় মগ্ন।

ফলে কোরানের প্রতি শ্রদ্ধা, ভাবগাম্ভীর্যতা অনেকাংশে হ্রাস পাচ্ছে, পক্ষান্তরে নাস্তিকতার পরিধি প্রসারিত হচ্ছে। কোরানের আয়াতকে বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রয়োগ করছে, যা অত্যন্ত ধৃষ্টতা বলে আমি মনে করি।

সূরা ইমরানে আল্লাহ ঈমানদারকে নয়, মুমিনদের উদ্দ্যেশে বলেনঃ

তোমরা যদি তাহাদের দল বিশেষের আনুগত্য কর, তবে তাহারা তোমাদেরকে ঈমান আনার পর আবার কাফির বানাইয়া ছাড়িবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights