কুরআন অনুযায়ী সালাম প্রদানের রীতিঃ আল্লাহ তাঁর রাসূল মুহাম্মাদকে আদেশ দিয়ে বলেন, وَإِذَا جَاءكَ الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِآيَاتِنَا فَقُلْ سَلاَمٌ عَلَيْكُمْ كَتَبَ رَبُّكُمْ عَلَى نَفْسِهِ الرَّحْمَةَ أَنَّهُ مَن عَمِلَ مِنكُمْ سُوءًا بِجَهَالَةٍ ثُمَّ تَابَ مِن بَعْدِهِ وَأَصْلَحَ فَأَنَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ “আমার আয়াত সমূহে যারা ঈমান আনে তাহারা যখন তোমার নিকট আসে তখন তাদের বলিও ‘সালামুন আলাইকুম’ তোমাদের প্রতিপালক (তোমাদের প্রতি) দয়া করা(কাজটিকে) নিজের কর্তব্য রূপে স্থির করিয়াছেন।”সূরা আনআম আয়াত:৫৪। আয়াতটিতে আল্লাহ তাঁর রাসূলকে ঈমানদারগণের প্রতি “সালামুন আলাইকুম’ বলে সালাম দিতে আদেশ করেছেন। সালামুন আলা (রাসূল) মুহাম্মদ আল্লাহর এই আদেশ লংঘন করেছেন কি? আর যারা ঈমান আনবে না,তাদের প্রতি রাসূলের সম্ভাষণ কি হবে সে বিষয়ে আল্লাহর আদেশ: فَاصْفَحْ عَنْهُمْ وَقُلْ سَلَامٌ فَسَوْفَ يَعْلَمُونَ অতএব, আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন এবং বলুন, ‘সালাম’। তারা শীঘ্রই জানতে পারবে। সূরা যুকরুফ:আয়াত-৮৯। ১৯:৪৭। ইব্রাহিম(আ:)তাঁর পিতার প্রতি সালাম দিয়েছেন “সালামুন আলাইকা”। ১৬:৩২। প্রবিত্র থাকা অবস্থায় ফেরেশতাগণ যাহাদের মৃত্যু ঘটায়, তাদেরকে বলে,”সালামুন আলাইকুম”। ৩৯:৭৩। যারা জান্নাতে যাওয়ার যোগ্যতা লাভ করবে, তাদেরকে জান্নাতের রক্ষী ফেরেশতারা বলবে,” ‘সালামুন আলাইকুম’ তোমরা সুখী হও এবং জান্নাতে প্রবেশ করো। কাজেই কুরআন অনুযায়ী: ১। ঈমানদারগণের প্রতি (অর্থাৎ বহুবচনে) সালাম হবে “সালামুনআলাইকুম”(৬:৫৪)। আর কাউকে একক ভাবে সালাম দিলে সালামুন আলা ইব্রাহিমকে অনুসরণ করে “সালামুন আলাইকা” বলতে হবে। ২।আর যারা কুরআন অনুযায়ী ঈমানদার নয়/জাহেল তাদের প্রতি সালাম হবে “সালাম” (৪৩:৮৯ ও ২৫:৬৩)। লক্ষ্য করুন, যারা এখনো “আসসালামু আলাইকুম” বলে আল্লাহর আদেশ বিরোধী সালাম দিচ্ছেন, তাদেরকে মৃত্যুর সময় ফেরেশতারা “সালামুন আলাইকুম” বলবেন কি? আর জান্নাতের প্রহরী ফেরেশতারা তাদের জন্য জান্নাতের দরজা খুলবেন কি? গ্রামাটিক্যাল বিশ্লেষণ: যারা বলেন “সালামুন” শব্দটি নাকেরা(অনির্দিষ্ট) হওয়ায় এর পূর্বে আল (আলিফ, লাম) যুক্ত করে আসসালাম অর্থাৎ মারেফা (নির্দিষ্ট)করে নেওয়া হয়েছে। তাদেরকে বলছি, আপনারা ৩৬:৫৮ আয়াতটি লক্ষ্য করুন। ৩৬:৫৮। “সালামুন”/ (সালাম), পরম দয়ালু রবের পক্ষ থেকে একটি সম্ভাষণ।” এই আয়াতটি দ্বারা মহান রব ‘সালামুন’ শব্দটিকে তাঁর নিজের পক্ষ থেকে ‘মারেফা’ (নির্দিষ্ট) করে দিয়েছেন। সালাম যেহেতু ফার্স্ট পারসন সেকেন্ড পারসনকে আল্লাহর পক্ষথেকে সালাম প্রদান করে, আর “সালামুন” শব্দটিকে আল্লাহ নিজের পক্ষথেকে নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। তাই “আসসালামু আলাইকুম” বলে সালাম প্রদান করলে, তা সালাম প্রদানকারী ব্যাক্তির পক্ষ থেকে হবে। তা আর রবের পক্ষ থেকে থাকবে না وَالسَّلَامُ عَلَيَّ يَوْمَ وُلِدتُّ وَيَوْمَ أَمُوتُ وَيَوْمَ أُبْعَثُ حَيًّا আমার প্রতি সালাম যেদিন আমি জন্মগ্রহণ করেছি, যেদিন মৃত্যুবরণ করব এবং যেদিন পুনরুজ্জীবিত হয়ে উত্থিত হব।(১৯:৩৩)। এই আয়াতে আল্লাহ নিজে সরাসরি তাঁর রাসূল ঈশা (আ:) উপর সালাম প্রেরণ করেছেন, তাই এখানে আসসালামু শব্দটি এসেছে। অতএব, যারা আলিফ-লাম যুক্ত করে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলছেন, তারা জান্নাতে যেতে পারবেন কি? মূলত এটি একটি বিদআত। আর (৫৬:৯১) আয়াতে উল্লেখিত “সালমুল্লাকা” এটি আখিরাতের ব্যাপার। N:B:- সর্বপোরি প্রচলিত সালাম পদ্ধতিতেও দোষের কিছু নেই। রেফারেন্স হিসেবে সূরা মারিয়াম,আয়াত ৩৩ দেকে নিতে পারেন —- ‘আমার প্রতি শান্তি যেদিন আমি জন্মলাভ করিয়াছি, যেদিন আমার মৃত্যু হইবে এবং যেদিন জীবিত অবস্থায় আমি উত্থিত হইব।’ وَالسَّلٰمُ عَلَىَّ يَوْمَ وُلِدْتُّ وَيَوْمَ اَمُوْتُ وَيَوْمَ اُبْعَثُ حَيًّا সূরা নম্বরঃ ১৯, আয়াত নম্বরঃ ৩৩
Categories

One reply on “কুরআন অনুযায়ী সালাম প্রদানের রীতিঃ”
Your point of view caught my eye and was very interesting. Thanks. I have a question for you.