Categories
Blog

উনিশের মুজেজা

” عَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ আলাই্‌হা তিসাতা আশার। “তার উপর রয়েছে উনিশ।” সূরা মুদ্দাসসির বিশ্লেষণ: عَلَيْهَا = তার উপর, تِسْعَةَ عَشَرَ = উনিশ। এই আয়াতটির পুর্ববর্তি ও পরবর্তি আয়াতের বর্ননানুযায়ী তাফসীরকারক গন বলেন আয়াতে জাহান্নামের ভয়াবহতা বর্ণনার পর বলা হচ্ছে, “তার উপর রয়েছে উনিশজন” — অর্থাৎ উনিশজন ফেরেশতা জাহান্নামের রক্ষণাবেক্ষণ কারী। এই ফেরেশতাগণ খুব কঠোর ও নির্দয়, কেবল আল্লাহ যা আদেশ করেন তাই মানে। (দেখুন: ৬৬:৬)। বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ ভিন্নরুপ : কুরআনের এই আয়াতের ভিত্তিতে অনেক গবেষক “১৯ সংখ্যার চক্র” (The Quran Code / 19-based code) নিয়ে গবেষণা করেছেন। ড. রাশাদ খলিফা এ নিয়ে প্রথম গণিত ভিত্তিক গবেষক, যিনি বলেন: কুরআনের অসংখ্য উপাদান — সূরা সংখ্যা, আয়াত সংখ্যা, শব্দ সংখ্যা ইত্যাদি — ১৯ দ্বারা বিভাজ্য বা ১৯ ভিত্তিক গাণিতিক গঠনযুক্ত। ১) যেমন: কুরআন শুরু হয় بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ এতে ১৯টি অক্ষর. ২) “আল্লাহ” নামটি কুরআনে ২,৬৯৮ বার — যা ১৯ × ১৪২ অর্থাৎ ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ৩) অন্যদিকে “بسم الله الرحمن الرحيم” সূচনাটি ১১৪ সূরার মধ্যে ১১৩ বার আছে (সূরা তওবা বাদে), কিন্তু ২৭ নং সুরায়- দুইবার আছে — সব মিলিয়ে ১১৪ বার। যা ১৯ × ৬ অর্থাৎ ১৯ দ্বারা বিভাজ্য। ৪) পুরো কুরআনের আয়াত সংখ্যা:6236 টি যা উনিশ দ্বারা বিভাজ্য = 19 × 328 ৫) “الٓمّ” (আলিফ লাম মীম) — সূরা বাকারা: এই সূরায় আলিফ, লাম ও মীম —প্রত্যেকটির সংখ্যা এমনভাবে সাজানো, যাতে মোট সংখ্যা ১৯-এর গুণিতক ৬) সূরা মুদ্দাসসির — যেখানে ১৯ সংখ্যাকে আল্লাহ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন: “عليها تسعة عشر” “এর ওপর আছে উনিশ ।” (৭৪:৩০) এরপরের আয়াতগুলোয় বলা হয়েছে: এই ১৯ সংখ্যা দিয়ে আল্লাহ কাফিরদের সন্দেহে ফেলবেন, ঈমানদারদের দৃঢ় করবেন, ইহুদি-নাসারাদের পরীক্ষা নেবেন, এবং কোনো সন্দেহ না থাকে — সেটাই নিশ্চিত করবেন। ৭) সূরা ‘ক্বাফ’-এ حرف “ق” ৫৭ বার আছে। যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য ১৯ × ৩ ৮) ‘الرحمن’ ও ‘الرحيم’ শব্দের বার্তা যথাক্রমে ৫৭ ও ১১৪ বার। যা ১৯ দ্বারা বা ভাজ্য। ৫৭ = ১৯×৩, ১১৪ = ১৯× ৪. ৯) সূরা “ن” (আল-কলম) এ حرف “ن” এর সংখ্যা ১৩৩ বার। যা উনিশ দ্বারা বিভাজ্য। ১৯ × ৭ ১০) আর রহমান “الرحمن” শব্দটি সমগ্র কোরআনে ৫৭ বার আছে। যা উনিশ দ্বারা বিভাজ্য। ১৯ × ৩ ১১) ” আর রাহিম الرحيم” শব্দটি সমগ্র কোরআনে ১১৪ বার আছে। যা উনিশ দ্বারা বিভাজ্য। ১৯ × ৬ ১২) প্রথম নাজিলকৃত সূরা: আল-আলাক। প্রথম ৫ আয়াতে ১৯টি শব্দ। পূর্ণ সূরায় ১৯ × ৫ = ৯৫টি অক্ষর। ১০) কোরআনের গাণিতিক বিস্ময় কিসের প্রমাণ? ক) স্রষ্টার নিখুঁত জ্ঞানের: তিনি শুধু শব্দ দেননি, সংখ্যাগত কাঠামোও দিয়েছেন। খ) অপভ্রষ্টতা থেকে রক্ষার: যদি কেউ কোরআনে হেরফের করে, এই গাণিতিক কাঠামো ভেঙে যাবে — ঠিক যেমন কোড বা checksum-এর মতো। উপসংহারঃ এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে স্মার্ট কোডিং সিস্টেম, যাতে: কুরআনের কোনো সংযোজন, বিয়োজন, বিকৃতি সহজে ধরা যায়। এটি একটি “সাইন” (ayah), বিশেষ করে ৭৪:৩১ এ বলা হয়েছে।

By Ekramul hoq

I am A.K.M Ekramul hoq MA.LLB. Rtd Bank Manager & PO of Agrani Bank Ltd. I am interested writing and reading. Lives in Bangladesh, District Jamalpur.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *