ইরানের জয় – পরাজয়ে ব্যাথিত নই
ইসলামের আবির্ভাব সময় রোমে ও ইরান দুই বৃহৎ শক্তির মধ্যে চলছিল দীর্ঘদিনের যুদ্ধ। শক্তিতে ইরান ছিল প্রবল রোম দুর্বল।
৬১৪ খৃঃ পারস্যের সম্রাট খসরু পারভেজ বাইজেন্টাইন রোমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জেরুজালেম দখল করে নেয়। বাইজেন্টাইনরা (রোমান খ্রিস্টানরা) চরমভাবে পরাজিত হয়।
পারস্য বাহিনী বাইবেলের বহু পবিত্র নিদর্শন লুণ্ঠন করে এবং অনেক খ্রিস্টানকে বন্দী করে।
আরবের মুশরিকরা পারস্যের বিজয়ে খুশি হয়েছিল কারণ পারস্য ছিল অগ্নিপূজক, আর রোমানরা ছিল খ্রিস্টান (একেশ্বরবাদী)।
মুসলমানরা ছিল সংখ্যালঘু ও নির্যাতিত — কোরআনের এ ভবিষ্যদ্বাণী ছিল তাদের জন্য আশার বাণী।
রূম পরাজিত হয়েছে নিকটবর্তী ভূখণ্ডে; এবং তারা নিজেদের এই পরাজয়ের পর শীঘ্রই বিজয়ী হবে।” ( সূরা রূম ৩০:২-৩)
৬১৪ খৃঃ কোরআনের আয়াত নাজিল হয় যখন রোমানরা চরমভাবে পরাজিত ছিল।
এই ভবিষ্যদ্বাণী এমন সময়ে করা হয়েছে যখন রোমান সাম্রাজ্য চরম দুর্বল ছিল।
৬২২ খৃঃ হিজরতের বছর, হেরাক্লিয়াস যুদ্ধ শুরু করেন রোম প্রস্তুতি নেয় এবং ৬২৭ খৃঃ নিনেভের যুদ্ধে রোম সম্রাট হেরাক্লিয়াস পারস্যের রাজধানীর নিকটবর্তী নিনেভে অঞ্চলে পারস্য সেনাদের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করেন।
৬২৮ খৃঃ খসরু পারভেজকে হত্যা করা হয়। পারস্য দুর্বল হয়ে পড়ে।
রাসূল ﷺ “খসরু পারভেজ”-কে ইসলাম গ্রহণের জন্য চিঠি পাঠিয়েছিলেন; খসরু তা ছিঁড়ে ফেলেছিল।
“يَهْلِكُ كِسْرَى فَلَا كِسْرَى بَعْدَهُ…
“কিসরা ধ্বংস হবে, তারপর আর কোনো কিসরা থাকবে না…” সহীহ মুসলিম 2918
৬৩০ খৃঃ ইসলামের বিজয় পরবর্তী কয়েক দশকে পারস্য সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়।
নবী সাঃ জীবিত থাকা অবস্থায় ইরানইসলামের ছায়া তলে আসেনি ।
পরবর্তিতে খলিফা উমর রাঃ এর খেলাফত কালে ইরানের সাথে মুসলিমের প্রথম যুদ্ধ হয় ১৪ হিজরী/৬৩৫ খ্রিঃ:। যাহা আল-কাদিসিয়ার যুদ্ধ নামে পরিচিত।
মুসলিম বাহিনীর নেতৃত্বে: সা’দ ইবন আবি ওয়াক্কাস (রাঃ) এবং পারস্যের নেতৃত্ব দেয় : রুস্তম ফাররুখ। মুসলিম আংশিক বিজয় অর্জন করে।
পরবর্তিতে খলিফা উমর রাঃ আবার পারস্য আক্রমন করে ৬৪১ খ্রিঃ: এনং রাজধানী মাদাইন মুসলিমদের হাতে আনতে সক্ষম হন।
সবশেষ উসমান রাঃ এর শাসন আমলে ৬৫১ খ্রিঃ: শেষ কিসরা ইয়াজদেগার্দ নিহত হয় এবং পারস্য সাম্রাজ্যের অবসান হয়।
ইরানবাসী ইচ্ছের বিরুদ্ধে হলেও জিজিয়া মুক্তির লক্ষ্যে ইসলাম ধর্ম গ্রহনে বাধ্য হয়।
এবার বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে ভাবুনঃ
১) ইরাকের সাথে আমেরিকার যুদ্ধে ইরান কি ভুমিকা পালন করেছিল?
২) ঈদের দিন যখন সাদ্দামের ফাঁসি দেয়া হয়, আমেরিকার সৈন্যরাও সেদিন কাছে থেকে কেঁদেছিল তাদের করার কিছু ছিল না। আর ইরান? কোন একটু প্রতিবাদও করেনি কেন?
তাই ইরানের জয় পরাজয়ে আমার আবেগে বিন্দু মাত্র প্রতিক্রীয়ার প্রতিফলন ঘটে না।