Categories
সরদার বংশের ইতি কথা

ধর্ম ও দ্বীন

দেড় হাজার বছর আগে পৃথিবীতে একজনও মুসলমান ছিল না।

মাত্র পাঁচ হাজার বছর আগে স্বধর্ম, স্বজাতির মানুষ ভাইয়ের হাতে ভাই হত্যা হয়েছিল।
সনাতম ধর্ম যাকে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ বলে উল্লেখ করেছে। কাদের মধ্যে হয়েছিল কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ? একই পরিবারের রক্ত সম্পর্কিত ভাইয়ে- ভাইয়ে যে যুদ্ধ হয়েছিল, ইগোর লড়াই, ক্ষমতার লড়াই, প্রেম, যৌন ঈর্ষার লড়াই।

৬৯ এ পূর্ব পাকিস্তান আর পশ্চিম পাকিস্তান যে যুদ্ধ সেটাও ছিল মুসলমানে মুসলমানে। ধর্মের মিল কী তাদের এক দেশ, এক জাতি হিসেবে বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছে? পারে নি।

মুসলমানও মুসলমানের দুঃস্বপ্নের কারণ হতে পারে।

পাজওয়ায়ে হিন্দু- মুসলমানে যুদ্ধ হবে না ? যুদ্ধ হবে মুসলমানে মুসলমানে। যেমন হয়েছিল সীফফিনের যুদ্ধ, জঙে জামালের যুদ্ধ, কারবালার যুদ্ধ।

ধর্ম এক হওয়ার পরও এত বিরোধ তৈরি হয় কেন ? ধর্ম এক হয়েও এত বিশ্বাস ঘাতকতা করে মানুষ একে অন্যের স্বার্থ লুন্ঠন করে কেন?

ধর্মের মিল বলে আসলে কিছুই নেই । ধর্মের মিল মনের মিল তৈরি করতে পারে না।
সাত হাজার বছর আগেও ভাইয়ে ভাইয়ে মিল ছিল না। আজও নেই। পরেও থাকবে না।
ক্ষমতা, অর্থ, ধন সম্পত্তি, নারী- এসব নিয়ে মানুষে মানুষে ক্ষমতা দখলের প্রলয় চলবেই।

আমার জীবনে যতবার অপমানিত হয়েছি, যতবার প্রবঞ্চিত হয়েছি, যতবার আমার মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়ে গেছে, যতবার আমার স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যত অন্যায় হয়েছে আমার সঙ্গে, অফিসে, কলেজে, কোর্ট-কাছারিতে, বাসে, ট্রামে, পুলিশ স্টেশনে, পরিবারের ভেতরে,বাইরে- সমস্ত খারাপ ব্যবহার,, অর্থাৎ জীবনের যাবতীয় অভিশপ্ত ঘটনার দায় আমি কোন ইহুদী,খৃষ্টান বা হিন্দুর কাছ থেকে পাই নি।

অনুরুপ অন্য ধর্মের মানুষগুলির ক্ষেত্রও একই বেদনা।

ধর্ম মানুষের শান্তি,নিরাপত্তা সংরক্ষনে ব্যার্থ হয়েছে শুরু থেকেই। ধর্ম শিক্ষা দেয় নির্দিষ্ট কিছু আচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্প্রদায়িক বিভাজন সৃষ্টি করে বিভক্তি করতে।

পক্ষান্তরে দ্বীন এক অভিন্ন ছায়াতল। দ্বীনে কোন বিভাজন হওয়ার সুযোগ নেই। যে বিভাজনের চেষ্টা করবে সে নিজেই ছিটকে পড়বে।

এজন্য সকল ধর্মের দ্বীনের মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য নেই। সাত হাজার বছর পুর্ব হতে আজ পর্যন্ত যত দ্বীন প্রচলিত আছে তাদের মধ্যে ইসলামকে বিজীত ও মনোনীত করেছেন স্রষ্টা।

দ্বীনের মূখ্য বিষয় নীতি-নৈতিকতার এবং আচার- অনুষ্ঠান গৌন বিষয়।
পক্ষান্তরে ধর্মের মুখ্য বিষয় আচার-অনুষ্ঠান এবং নীতি নৈতিকতা গৌন বিষয়।

মক্কা জীবনের চল্লিশ বছর এই নীতি নৈতিকতারই ট্রেনিং দিয়ে গড়ে তুললেন এক মহা চরিত্রবান মহা মানব।

সে যখন পূর্ণ শক্তিপ্রাপ্ত হয় এবং চল্লিশ বৎসরে উপনীত হয় তখন বলে, ‘হে আমার প্রতিপালক ! তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও, যাহাতে আমি তোমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিতে পারি, সূরা নম্বর: ৪৬ আয়াত নম্বর: ১৫

তারপর ১৩ বছর কোরান নাযিল করে নীতি নৈতিকতার আদেশ নিষেধ সংক্রান্ত উত্তম জীবন বিধানের গাইড লাইন দিলেন।
পরবর্তি মদীনার ১০ বছরে আচার অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষন,
সালাত,সিয়াম,হজ্জ এমন কি রণ কৌশল।

যাহারা নিজেদের দীনে মতভেদ সৃষ্টি করিয়াছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হইয়াছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ লইয়া উৎফুল্ল। (30:32)

যারা নবীর সুন্নত পালনে জোরালো শ্লোগান দিয়ে থাকে, তারা নীতি নৈতিকতার ৫৩ বছর জীবনের অনুসরন করতে চান না।
তারা শেষ ১০ বছরের আচার অনুষ্ঠান পরিপালন করে নিজেকে শ্রেষ্ঠ অনুসরন কারীর দাবী নিয়ে সোয়াব ও হুরের পুরস্কার গ্রহন করতে বিভিন্ন মাযহাব খুলে ধর্মকে রুটি রুজী জীবিকার পথ বানিয়ে বসেছে।
মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ মাদ্রাসা,হেফজো খানা খুলে ধর্মকে কর্মস্থলে গড়ে তুলেছে।
ধর্মকে যারা পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে জীবিকার ফন্দি আটে, তাদেরকে আল্লাহ আগুন ভক্ষন কারী বলে সম্বোধন করেছেন। সূরা বাকারা, আয়াত ১৭৪ দৃষ্টিতে।

এটা আবার মনে করবেন না এভাবে প্রচার করে মানুষকে সচেতন করে ধর্মজীবিদের হাত থেকে উদ্ধার করবেন, তাহলে আপনি টাইটেনিক জাহাজের মত তলীয়ে যাবেন।
কারন ধর্মজীবিদের ভিত অনেক গভীর এই জনতাকেই লেলিয়ে দিবে। কারন তারা উনাদেরই ভক্ত।

Verified by ExactMetrics