জন্মগত বিশ্বাস প্রকৃত ঈমান নয়ঃ
কখনও কখনও মানুষ সত্য শুনতে চায় না কারণ তারা তাদের বিভ্রান্তিগুলি ধ্বংস করতে চায় না।”
জন্মগত ভাবে দেখে আসা বাপ- দাদা, পূর্ব পুরুষের খেয়াল খুশি মতো জীবন পদ্ধতি, নিজের খেয়াল খুশি মতো জীবন যাপন পদ্ধতি, মোল্লা পুরোহিত,পন্ডিতের খেয়াল খুশির অনুসরন করে সমাজ জীবন যাপন পদ্ধতিতে অভ্যস্থ মানুষ যত সত্যই উপস্থাপন করা হোক মেনে নিতে চায় না। কারন সে জন্মগত ভাবে একটি বিশ্বাসের উপর গড়ে উঠেছে এবং অধিকাংশ মানুষ ও বাপ-দাদা, পুর্ব পুরুষকে যে মত ও পথের উপর ধর্ম পালন করতে দেখে আসছে তা থেকে বিচ্যুত হতে নারাজ। এ সংঘাতটাই বেধেছিল নবী মুহাম্মদ ও তৎসময়ের মানুষের মাঝে। তাই কোরান বলে সুরা বাকারা ১৭০ নং আয়াতে….
আর যখন তাদেরকে কেউ বলে যে, সে হুকুমেরই আনুগত্য কর যা আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেছেন, তখন তারা বলে কখনো না, আমরা তো সে বিষয়েরই অনুসরণ করব। যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে দেখেছি। যদি ও তাদের বাপ দাদারা কিছুই জানতো না, জানতো না সরল পথও। ২ঃ১৭০
যদিও তাদের রিতী নীতি বিশ্বাস সমুহ আল্লাহর মনোনীত দ্বীন ছিল না। ইসলাম আসার পর এইসব বহুমাত্রীক দ্বীন গুলো বাতিল হয়েছিল।
যুগ যুগ অতিবাহিত হওয়ায় নবীর প্রতিষ্ঠিত দ্বীন আবার হারিয়ে গিয়ে পুর্বের অবস্থায় ফিরে গিয়েছে। আল্লাহর মনোনীত কিতাবের পাশা পাশি মানব রচিত কিতাবের অনুসরন চালু করা হলো নবীর নাম দিয়ে। বুঝাতে চাইল কোরান পরিপুর্ন নয়। নবীর নামে নিজের কিছু কথা রচনা করে নবীর বানী বলে প্রচার করা হলো। মানুষ সাদরে তা গ্রহন করতে শুরু করে এবং একসময় তা প্রতিষ্ঠিত হয়ে বসলো।
অথচ আল্লাহ ঘোষনা দিলেনঃ
আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাংগ করিলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন মনোনীত করিলাম। (৫:৩)
এ ছাড়াও আল্লাহ সতর্ক করে উপদেশ দিলেনঃ
اَمْ اٰتَيْنٰهُمْ كِتٰبًا مِّنْ قَبْلِهٖ فَهُمْ بِهٖ مُسْتَمْسِكُوْنَ
আমি কি উহাদেরকে কুরআনের পূর্বে কোন কিতাব দান করিয়াছি যাহা উহারা দৃঢ়ভাবে ধারণ করিয়া আছে? (৪৩:২১)
তাদের কাছে কোন সত্যকে তুলে ধরলে তারা পুর্ব বর্তীদের মত একই কথা বলে। পক্ষান্তরে আল্লাহর কিতাবের বাহিরে তাদের রচিত কিতাবকে প্রধান্য দিয়ে থাকে। এবং বলে, তোমরা কি আমাদের নবীর দেখানো পথ হতে সরায়ে নিতে চাইছো?
” তখন তারা বলে, বরং আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে বিষয়ের উপর পেয়েছি, তারই অনুসরণ করব। শয়তান যদি তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তির দিকে দাওয়াত দেয়, তবুও কি? ( সুরা লোকমানঃ২১)
অথচ আল্লাহ নির্দেশ দেনঃ “ আর আমি তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ন করিয়াছি ইহার পুর্বে অবতীর্ণ কিতাবের সত্যায়নকারী ও সংরক্ষক রূপে। সুতরাং আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তুমি তার মাধ্যমে ফয়সালা কর এবং তোমার নিকট যে সত্য এসেছে, তা ত্যাগ করে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না। তোমাদের প্রত্যেকের জন্য আমি নির্ধারণ করেছি শরীয়ত ও স্পষ্ট পন্থা এবং আল্লাহ যদি চাইতেন, তবে তোমাদেরকে এক উম্মত বানাতেন। কিন্তু তিনি তোমাদেরকে যা দিয়েছেন, তাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান। সুতরাং তোমরা ভাল কাজে প্রতিযোগিতা কর। আল্লাহরই দিকে তোমাদের সবার প্রত্যাবর্তনস্থল। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে অবহিত করবেন, যা নিয়ে তোমরা মত বিরোধ করতে। (৫ঃ৪৮)