ঈমান অর্থ নিরাপদ
الَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ بِالْغَيْ
আল্লাযিনা ইউমিনুনা বিল গায়েব।
যাহারা অদৃশ্যে ঈমান আনে, (২:৩)
গায়েব বলতে কি বুঝায়?
আর ঈমান বলতেই বা কি বুঝায় ?
গায়েব যদি অদৃশ্য বিষয় হয়, আর ঈমান যদি বিশ্বাস হয় তবে কেন অদৃশ্য বিষয়ে বিশ্বাসে তাগীদ কেন হবে? এ কেমন নির্দেশ? আল্লাহ এমন অমুলক দাবী নির্দেশ কি মানুষকে দিয়েছেন? ভুল কনসেপ্ট এটি আসলে…..
গায়েবের আভিধানিক অর্থ অদৃশ্য হলেও কোরানের পরিভাষায় গায়েব মানে অদৃশ্য নয়।
অদৃশ্য বলতে বুঝায় যা কখনো দেখা যায় না বা দেখা সম্ভবও নয় শুধু উপস্থিতি অনুভব করা যায়।
জাহান্নাম জান্নাত বা আখেরাত- নবী কখনোই দেখা সম্ভব নয় কি ? এসব কি অদৃশ্য ?
ভুল ধারনা। এসব কোনটিই অদৃশ্য বস্তু নয় বরং অদেখা। যাকে ইংরেজীতে বলে Unseen – Not yet seen but must Visible. যা এখনো দেখা যাচ্ছে না ভবিষ্যতে এক সমায় ঠিকই দেখা যাবে। বা অতীতে সংঘটিত হয়ে গেছে আমার দেখার সুযোগ হয় নি। অবশ্যই তা দৃশ্যমান হবে সময়ের চাহিদায়। তাকেই অদেখা বা গায়েব বলে।
পক্ষান্তরে,
অদৃশ্য শব্দের ইংরেজী হলো “INVISIBLE”
এবং অদেখার ইংরেজী VISIBLE
সুতরাং গায়েব শব্দের আভিধানিক অর্থ অদৃশ্য হলেও কোরানিক কনটেক্সট এ আল্লাহ গায়েব শব্দ দ্বারা অদেখা বস্তু বা বিষয়কে বুঝিয়েছেন।
ঠিক অনুরুপ আমানু, ইমেনুন,মুমেনিন,মুমিন, আমানতু এ শব্দ গুলির মুল রুট ঈমান।
আভিধানিক অর্থে ঈমান অর্থ বিশ্বাস হলেও কোরানিক কনটেক্স এ আল্লাহ ঈমান অর্থ নিরাপত্তা, নিরাপদ অবস্থা,নিরাপত্তা দানকারী, নিরাপত্তাকারী বুঝিয়েছেন।
আল্লাযিনা ইউমিনুনা বিল গায়েব। الَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ بِالْغَيْبِ
অনুবাদ দ্বারায়ঃ যাহার অদেখা বিষয়ে নিরাপত্তা দেয় আল্লাহর সাহায্যে। ( যেহেতু বিল আছে। যেমন বিল কালাম – কথার সাহায্যে। বিল্লাহ — আল্লাহর সাহায্যে।আমান – নিরাপত্তা দেয়)
এবার লক্ষ্য করুন সুরা হাশর আয়াত ২৩ এ আল্লাহ বর্ননা করেনঃ
তিনিই আল্লাহ্, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই। তিনিই অধিপতি, তিনিই পবিত্র, তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তা দাতা,
هُوَ اللّٰهُ الَّذِىْ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۚ اَلْمَلِكُ الْقُدُّوْسُ السَّلٰمُ الْمُؤْمِنُ
এ আয়াতে মুমেনুল এর মুল রুট ঈমান অর্থ ঠিকই – “নিরাপত্তা দাতা ” ব্যবহার করা হয়েছ।
ঈমান অর্থ বিশ্বাস অনুবাদ গ্রহন করা হয় নি। কারন আল্লাহ আবার কি বিশ্বাস করবেন?
সুরা কোরাইশ আয়াত ৪ লক্ষ্য করুনঃ
যিনি উহাদেরকে ক্ষুধায় আহার দিয়াছেন এবং ভীতি হইতে উহাদেরকে নিরাপদ করিয়াছেন। (১০৬:৪)
ওয়া আমানাহুম = তাদেরকে নিরাপদ করেছেন
الَّذِىْۤ اَطْعَمَهُمْ مِّنْ جُوْعٍ ۙ وَّاٰمَنَهُمْ مِّنْ خَوْفٍ
আমানা = to provide security = নিরাপত্তা দেওয়া। বিশ্বাস করা নয়।
এবার আসুন সুরা নেসা আয়াত ৯১
তোমরা অপর কিছু লোক পাইবে যাহারা তোমাদের সঙ্গে ও তাহাদের সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিরাপত্তা চাহিবে….. । 4:91
ইয়ামানুকুম= তোমার নিকট নিরাপত্তা চাহিবে
سَتَجِدُوْنَ اٰخَرِيْنَ يُرِيْدُوْنَ اَنْ يَّاْمَنُوْكُمْ وَيَاْمَنُوْا قَوْم………
আবার সুরা বাকারা আয়াত ১৭৭ এ বর্নিত
কেহ আল্লাহ্ , পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে
اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ وَالْمَلٰٓٮِٕکَةِ وَالْكِتٰبِ وَالنَّبِيّٖن্َۚ…….(2:177)
অনুবাদঃ নিরাপত্তা দেয় আল্লাহর সাহায্যে,
আমানা বিল্লাহি = আল্লাহর দ্বারা বা সাহায্যে নিরাপত্তা দেয়। ( বি= দ্বারা,দিয়া,সাহায্যে…)
যেমনঃ الَّذِىْ عَلَّمَ بِالْقَلَمِۙ
যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়াছেন (৯৬:৪)
এ ভাবে কোরানের বিভিন্ন আয়াতের রেফারেন্সে মননিবেশ করলে দেখা যায় ঈমান শব্দটির আভিধানিক অর্থ বিশ্বাস হলেও কোরানের কনটেক্সট অনুযায়ী ঈমান শব্দটি ” নিরাপদ ” অর্থে মানুষকে লক্ষ্য করে বুঝাতে চেয়েছেন আল্লাহ।
আমানতু বিল্লাহি – আমি আল্লাহর দ্বারা নিরাপদ।
বিল গাইয়েব — অদেখার দ্বারা বা সাহায্যে।
অদৃশ্য কখনোই নয়। তেমনি ঈমান অর্থ বিশ্বাস নয়। নিরাপদ।
Attention : I will not request agree with my opinion. Its your wish.