Categories
My text

রুহ رُوح কি

রুহ ঢুকলে প্রাণের সঞ্চার ঘটে আবার রুহ বের করে নিলে মৃত্যু ঘঠে। রুহ তাহলে কি? কোথায় তাঁর অবস্থান?

এবিষয়ে বলতে চাইলেই (১৭:৮৫) আয়াতের রেফারেন্স দার করিয়ে থামিয়ে দেয়া হয় এ বলে যে,  রুহ সম্বন্ধে খুব অল্প জ্ঞান  দিয়েছেন। কেন?  তাহলে কোরানের ২১ টি আয়াতে এ-র বিবরন কেন করা হয়েছে? বুঝার জন্যই তো?

কুরআনে “رُوح” কখনো জীবনশক্তি, কখনো ওহি, কখনো জিবরাইল (আ.), আবার কখনো আল্লাহর দ্যৈব প্রেরণা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। সব ক্ষেত্রেই “রূহ” আল্লাহর আদেশাধীন, স্বাধীন সত্তা নয়।

১) بِرُوحِ الْقُدُسِ (২:৮৭) বি রূহিল কুদুস। পবিত্র রূহ = জিবরাইল (আ.)

২) بِرُوحِ الْقُدُسِ (২:২৫৩) বি রূহিল কুদুস। পবিত্র রূহ = জিবরাইল (আ.)

৩) وَرُوحٌ مِّنْهُ (৪:১৭১) ওয়া রূহুন মিনহু। তাঁর পক্ষ থেকে রূহ = দ্যৈব প্রেরণা / জীবনশক্তি

৪) بِرُوحِ الْقُدُسِ  (৫:১১০) বি রূহিল কুদুস। ঈসা (আ.)-কে সহায়তা করা রূহ = জিবরাইল (আ.)

৫) مِن رُّوحِي (১৫:২৯)মিন রূহী। আমার রূহ থেকে = জীবনসত্তা

৬) بِالرُّوحِ (১৬:২) বি ররূহ। আদেশ (ওহি) দ্বারা।

৭) رُوحُ الْقُدُسِ (১৬:১০২) রূহুল কুদুস। জিবরাইল (আ.)

৮) عَنِ الرُّوحِ (১৭:৮৫) আনির ররূহ। আত্মা / জীবনসত্তা। অজানা প্রকৃতির রূহ

৯) رُوحَنَا (১৯:১৭) রূহানা। আমাদের রূহ = জিবরাইল (আ.)

১০) مِن رُوحِنَا  (১৯:২১) মিন রূহিনা। আমাদের পক্ষ থেকে জীবন

১১) مِن رُوحِنَا  (২১:৯১) মিন রূহিনা। জীবনশক্তি / প্রাণ

১২) الرُّوحُ الْأَمِينُ  (২৬:১৯৩) আর-রূহুল আমীন। বিশ্বস্ত রূহ = জিবরাইল (আ.)

১৩) مِن رُوحِهِ  (৩১:৯) মিন রূহিহি। তাঁর রূহ থেকে।

১৪) مِن رُوحِي  (৩৮:৭২) মিন রূহী। আমার রূহ থেকে।

১৫) الرُّوحَ  (৪০:১৫) আর-রূহ। ওহি / আদেশ।

১৬) رُوحًا مِّنْ أَمْرِنَا রূহান মিন আমরিনা। আমাদের আদেশ হতে রূহ = ওহি।

১৭) بِرُوحٍ مِّنْهُ  (৫৮:২২) বি রূহিন মিনহু। ঈমানীদের প্রতি দ্যৈব অনুপ্রেরণা।

১৮) مِن رُوحِنَا  (৬৬:১২) মিন রূহিনা। জীবনসত্তা / গর্ভে প্রাণ।

১৯) وَالرُّوحُ  (৭০:৪) ওয়ার ররূহ। প্রধান ফেরেশতা (জিবরাইল)।

২০) الرُّوحُ  (৭৮:৩৮) আর-ররূহ। ফেরেশতা / মহাসত্তা।

২১) وَالرُّوحُ  (৯৭:৪) ওয়ার ররূহ। জিবরাইল (আ.) / পবিত্র আত্মা।

১. রূহ = জিবরাইল (আ.)। ফেরেশতা বা ওহি বাহক হিসাবে ব্যবহার  প্রায় ৯টি। ২:৮৭, ১৬:১০২, ১৯:১৭, ২৬:১৯৩, ৭০:৪, ৯৭:৪

২. রূহ = জীবনপ্রদ শক্তি। আদম, মারিয়াম, মানুষের প্রাণসত্তা হিসাবে ব্যবহার ৫টি ১৫:২৯, ৩২:৯, ৩৮:৭২, ২১:৯১, ৬৬:১২।

৩. রূহ = ওহি / আল্লাহর নির্দেশ। আল্লাহর বাণী হিসাবে ব্যবহার প্রায় ৩টি আয়াতে। ১৬:২, ৪০:১৫, ৪২:৫২

৪. রূহ = ঈমান/দিব্য প্রেরণা। অন্তর্নিহিত শান্তি হিসাবে ব্বহার ১টি আয়াতে। ৫৮:২২

৫. রূহ = রহস্য / অজানা আদেশ। মানুষের আত্মা সম্পর্কিত হিসাবে ব্যবহার ১টি ১৭:৮৫

রুহ “رُوح” হল স্বয়ং স্রষ্টা নিজেই তার সৃষ্টির মাঝে প্রকাশিত হওয়া।

অতঃপর তিনি তাকে (মানবকে) সুঠাম আকৃতি দিলেন এবং তার মধ্যে নিজ রূহ ফুঁকে দিলেন, আর তোমাদের জন্য শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও হৃদয় প্রদান করলেন। তবুও তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।”[সূরা-সাজদা ৩২:৯]

“অতঃপর আমি যখন তাকে যথাযথ রূপ দিই এবং তার মধ্যে আমার রূহ ফুঁকে দিই, তখন তোমরা তার উদ্দেশে সেজদায় লুটিয়ে পড়ো।” [সূরা আল-হিজর ১৫:২৯]

“অতঃপর আমি যখন তাকে (আদমকে) যথাযথ রূপে গঠন করি এবং তার মধ্যে আমার রূহ ফুঁকে দিই, তখন তোমরা তার প্রতি সেজদা করো।” [সূরা সাদ ৩৮:৭২]

সব গুলি আয়াতের মর্ম থেকে উপলব্ধি আসে –

রুহ “رُوح” হল  স্রষ্টা নিজে সৃষ্টির মাঝে প্রকাশিত হওয়া।

By Ekramul hoq

I am A.K.M Ekramul hoq MA.LLB. Rtd Bank Manager & PO of Agrani Bank Ltd. I am interested writing and reading. Lives in Bangladesh, District Jamalpur.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *