ভুমিকাঃ
ধর্মীয় বিষয়ে মানুষ জন্মগত ভাবে যে বিষয়টি সত্য জেনে আসছে তা অন্য কেউ মিথ্যা বললে সহজে মেনে নিতে পারে না। মানুষ ধর্মীয় বিষয়ে তার জানা গুলো ডাহা মিথ্যা হলেও সেগুলোকেই একমাত্র সত্য মনে করে এবং বাকি সব মিথ্যা মনে করে। একজন ব্যক্তি যখন হঠাৎ জানতে পারে তার ধর্মীয় বিষয়ে জানা গুলো অনেক কিছুই মিথ্যা তখন সে উত্তেজিত হয়। সে মেনে নিতে পারে না। যুগে যুগে এ সংঘর্ষ সকল নবী রাসুলদের সাথেও হয়ে আসছে। সেই সতর্ককারী বলিত, ‘তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ দেরকে যে পথে পাইয়াছ, আমি যদি তোমাদের জন্য তদপেক্ষা উৎকৃষ্ট পথনির্দেশ আনয়ন করি তবুও কি তোমরা তাহাদের পদাংক অনুসরণ করিবে? তাহারা বলিত, ‘তোমরা যাহা সহ প্রেরিত হইয়াছ আমরা তাহা প্রত্যাখ্যান করি।'(৪৩:২৪)
বরং উহারা বলে,’আমরা তো আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে পাইয়াছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাহাদেরই পদাংক অনুসরণ করিতেছি। (৪৩:২২) এইভাবে তোমার পূর্বে কোন জনপদে যখনই আমি কোন সতর্ককারী প্রেরণ করিয়াছি তখন উহার সমৃদ্ধিশালী ব্যক্তিরা বলিত, ‘আমরা তো আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে পাইয়াছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাহাদেরই পদাংক অনুসরণ করিতেছি।(৪৩:২৩)
*যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা তোমরা অনুসরণ কর’, তাহারা বলে, ‘না, বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহার অনুসরণ করিব।’ এমন কি, তাহাদের পিতৃ পুরুষগণ যদিও কিছুই বুঝিত না এবং তাহারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না-তৎসত্ত্বেও।(২:১৭০)
**যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহার দিকে ও রাসূলের দিকে আস’, তাহারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাহাদের পূর্বপুরুষগণ কিছুই জানিত না এবং সৎপথপ্রাপ্তও ছিল না, তবুও কি ? (৫:১০৪)
’ পৃষ্ঠা-০২
*উহাদেরকে যখন বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা অনুসরণ কর।’ উহারা বলে, ‘বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি
তাহারই অনুসরণ করিব।’ শয়তান যদি উহাদেরকে জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তির দিকে আহবান করে, তবুও কি? (৩১ঃ২১) এর পর তারা যুক্তি তুলে অধিকাংশ –
*যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬ঃ১১৬)
দীর্ঘ দিনের পালিত অভ্যাস, বাপদাদার যে ভাবে এবাদত করতে দেখে আসতেছে, অধিকাংশ লোকে যে ভাবে ধর্ম কার্যাদি সম্পাদন করতে দেখে আসতেছে তা থেকে সড়ে এসে যত সত্য কথায় উপস্থাপন করা হোক না কেন, মানুষ তা গ্রহন করতে রাজি না, যদিও কোরান থেকে দৃষ্টান্ত দেয়া হয়। আর এমন হবে তা আল্লাহ জানেন বলেই আল্লাহ বলেনঃ যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬:১১৬)
* তোমরা তাহাদের মত হইও না যাহারা তাহাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসিবার পর বিচ্ছিন্ন হইয়াছে ও নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করিয়াছে। তাহাদের জন্য মহাশাস্তি রহিয়াছে।(৩:১০৫)। আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তোমাদের নিকট বিশদ ভাবে বিবৃত করিতে, তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতি তোমাদেরকে অবহিত করিতে এবং তোমাদের ক্ষমা করিতে। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (৪:২৬)
সমাজের অধিকাংশ মুসলমান হুজুর নিকট শুনে তাদের এবাদত পরিপালন করে থাকে। অথচ সকল এবাদতের নির্দেশ কোরানে থাকলেও তা কখনো যাচাই করে দেখেন না। সে বিষয়েও আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেনঃ আল্লাহ ঈমানদারগণকে সতর্ক করে বলেনঃ অবশ্যই আলিম ও দরবেশদের অনেকেই
পৃষ্ঠা-০৩
ভূয়া কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষের সম্পদ গ্রাস করে থাকে এবং আল্লাহর পথ থেকে লোকদের নিবৃত রাখছে।(৯:৩৪অংশ)
* তাহাদের মধ্যে এমন কিছু নিরক্ষর লোক আছে যাহাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কিতাব সম্বন্ধে কোন জ্ঞান নাই,তাহারা শুধু অমূলক ধারণা পোষণ করে।(২:৭৮)
* হে ঈমানদারগণ! অধিকাংশ পীর,দরবেশের অবস্থা এই যে, তারা জনগণের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে এবং তাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে! তাদের জন্য পীড়াদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও যারা স্বর্ণ রৌপ্য জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না! (সূরা তওবা: আয়াত ৩৪)
আল্লাহ তাদের লক্ষ্য করে বলেনঃ তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও, আর নিজদেরকে বিস্মৃত হও ? অথচ তোমরা কিতাব অধ্যয়ন কর। তবে কি তোমরা বুঝ না ?
*আর আপনি তাদের অনেককে দেখবেন যে, দৌড়ে দৌড়ে পাপে, সীমালঙ্ঘনে এবং হারাম ভক্ষনে পতিত হয়। তারা অত্যন্ত মন্দ কাজ করছে। (৫:৬২)
*দরবেশ ও আলেমরা কেন তাদেরকে পাপ কথা বলতে এবং হারাম ভক্ষণ করতে নিষেধ করে না? তারা খুবই মন্দ কাজ করছে।(৫:৬৩)
অতঃপর বিচার দিবসে এ সকল আলেমের অনুসরন করে যারা জাহান্নামী হবে তাদেকে সেদিন সত্য কথা প্রকাশ করে দিবেঃ আমরা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করিয়াছিলাম, কারণ আমরা নিজেরাও ছিলাম বিভ্রান্ত।'(৩৭:৩২)
ফলে কিয়ামত দিবসে উহারা বহন করিবে উহাদের পাপভার পূর্ণ মাত্রায় এবং পাপভার তাহাদেরও যাহাদেরকে উহারা অজ্ঞতাহেতু বিভ্রান্ত করিয়াছে। দেখ, উহারা যাহা বহন করিবে তাহা কত নিকৃষ্ট!(১৬:২৫)
পৃষ্ঠা-০৪
মুসলমানদের সবচেয়ে হাস্যকর আচরণ হলো, তারা দাবী করে যে কোর’আন-ই একমাত্র ধর্ম গ্রহন্থ যা বিশুদ্ধভাবে রক্ষিত আছে, এবং যা সরাসরি আল্লাহ’র পক্ষ থেকে সমগ্র মানব জাতির জন্য পথ নির্দেশনা রূপে এসেছে। কিন্তু মানে হাদীস নামক মানব রচিত গ্রহন্থকে।
* মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবার জন্য অসার হাদীস গ্রহন করিয়া নেয় এবং আল্লাহ্-প্রদর্শিত পথ লইয়া ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। উহাদেরই জন্য রহিয়াছে অবমাননাকর শাস্তি।(৩১:৬)
দ্বিতীয়ত কোর’আন দাবী করে এটি সমগ্র মানব জাতির জন্য পথ নির্দেশনা সম্বলিত গ্রন্থ। কিন্তু মুসলমানরা নিজেরা তো কোর’আন পড়েই না,এমনকি অন্যদের পড়তে দিতেও নারাজ। এমন কি আলেম সমাজও তা থেকে মানুষকে দূরে রাখতে চায় কারন তার পেশায় ভাটা পড়বে মনে করে।
তাই আল্লাহ বলেনঃ সে বিতণ্ডা করে ঘাড় বাঁকাইয়া লোকদেরকে আল্লাহ্র পথ হইতে ভ্রষ্ট করিবার জন্য। তাহার জন্য লাঞ্ছনা আছে ইহলোকে এবং কিয়ামত দিবসে আমি তাহাকে আস্বাদ করাইব দহন-যন্ত্রণা। (২৩:৯)
* তাদের মধ্যে এমন আহম্মক লোক আছে যাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কেতাব সম্বন্ধে কোনোই জ্ঞান নেই, তারা শুধু অবাস্তব ধারণায় বিশ্বাসী। [২: ৭৮]
মানুষ আল্লাহ একমাত্র কিতাবকে রেখে আনুসাঙ্গি মানব রচিত কিতাব,হাদীস থেকে শরীয়তে বিধান পালন করতে আগ্রহী। যা আল্লাহ বলেন নাই।
অথচ আল্লাহ কঠোর ভাবে সতর্ক করে দিয়ে বলেনঃ তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমাদের নিকট যাহা অবতীর্ণ করা হইয়াছে তোমরা তাহার অনুসরণ কর এবং তাঁহাকে ছাড়া অন্য কোন ওলী-আউলিয়ার অনুসরণ করিও না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর। (৭:৩)
পৃষ্ঠা-০৫
মানুষের মধ্যে কতক অজ্ঞানতা বশত আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিতণ্ডা করে এবং অনুসরণ করে প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের।(২২:৩)
আরো স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য আল্লাহ বলেনঃ মানুষের মধ্যে কেহ কেহ আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিতণ্ডা করে; তাহাদের না আছে জ্ঞান, না আছে পথনির্দেশ, না আছে কোন দীপ্তিমান কিতাব।(২২:৮)
অধিকাংশ ঈমান এনে এবাদত করছে ঠিকই কিন্তু উল্টো পথে চলে এবং এবাদত বন্দেগী করে ভাবছে আমরা অনেক ভাল আমল করছি। প্রকৃত সব পন্ডুসার। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেনঃ বল, ‘আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দিব কর্মে বিশেষ ক্ষতিগ্রস্তদের?’ উহারাই তাহারা, ‘পার্থিব জীবনে যাহাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও
তাহারা মনে করে যে, তাহারা সৎকর্মই করিতেছে,(১৮: ১০৩-১০৪)
কারন কি সে কথাও আল্লাহ জানিয়ে দিলেনঃ তাদের অধিকাংশ আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে, কিন্তু তারা শির্ককারী। (১২:১০৬) কেহ শিয়া, কেহ সুন্নী,কেহ জামাত,কেহ পীরের এভাবে আল্লাহর একমাত্র দ্বীনকে খন্ড বিখন্ড করে নিয়েছে একমাত্র কোরান নিজ ভাষায় না পড়ার জন্য।
এ জন্য আল্লাহ বলেনঃ তারপর লোকেরা তাদের মাঝে তাদের দীনকে বহুভাগে বিভক্ত করেছে। প্রত্যেক দলই তাদের কাছে যা আছে তা নিয়ে উৎফুল্ল। (২৩:৫৩)
*যাহারা নিজেদের দীনে মতভেদ সৃষ্টি করিয়াছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হইয়াছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ লইয়া উৎফুল্ল।(৩০:৩২)
তাই আল্লাহ নবীকে জানিয়ে দিলেনঃ বলুন, যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে? চিন্তা-ভাবনা কেবল তারাই করে, যারা বুদ্ধিমান।(৯:১০)
পৃষ্ঠা-০৬
কোরানের অনুসরনে কথা বললে মানুষ বলে আমরা সব লোককে দেখতেছি একভাবে চলতে আর তুমি নতুন করে কি সব বলতে শুরু করেছে। আল্লাহ তখন বলেনঃ যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬:১১৬)
তখন বলে তাহলে আমাদের পুর্বপুরুষ যারা মরে গেছে তারা কি সবাই ভুল এবাদত করে মরেছে? এ ধরনের প্রশ্নের সন্মুখীন স্বয়ং নবীও হয়েছিলেন। তাই আল্লাহ জানিয়ে দিলেনঃ যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা তোমরা অনুসরণ কর’, তাহারা বলে, ‘না, বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহার অনুসরণ করিব।’ এমন কি, তাহাদের পিতৃ পুরুষগণ যদিও কিছুই বুঝিত না এবং তাহারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না-তৎসত্ত্বেও। (২:১৭০)
১) আমি প্রত্যেক রাসূলকেই তাহার স্বজাতির ভাষাভাষী করিয়া পাঠাইয়াছি তাহাদের নিকট পরিষ্কার ভাবে ব্যাখ্যা করিবার জন্য, আল্লাহ্ যাহাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাহাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।(১৪:৪)
২) এই কুরআন আল্লাহ্ ব্যতীত অপর কাহারও রচনা নয়। পক্ষান্তরে, ইহার পূর্বে যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে ইহা তাহার সমর্থন এবং ইহা বিধান সমূহের বিশদ ব্যাখ্যা। ইহাতে কোন সন্দেহ নাই যে, ইহা জগত সমূহের প্রতিপালকের পক্ষ হইতে। (১০:৩৭)
৩) আমি ইহা অবতীর্ণ করিয়াছি আরবী ভাষায় কুরআন, যাহাতে তোমরা বুঝিতে পার। (৪৩:৩)
৪) ইহারা কুরআনের প্রতি ঈমান আনিবে না এবং অতীতে পূর্ববর্তীদেরও এই আচরণ ছিল। (১৫:১৩)
পৃষ্ঠা-০৭
৫) বল, ‘তোমরা কুরআনে বিশ্বাস কর বা বিশ্বাস না কর, যাহাদেরকে ইহার পূর্বে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে তাহাদের নিকট যখন ইহা পাঠ করা হয় তখনই তাহারা নির্দ্বিধায় মানার জন্য উদগ্রীব হইয়া পড়ে।’ (১৭:১০৭)
৬) আমি ইচ্ছা করিলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে সৎপথে পরিচালিত করিতাম ; কিন্তু আমার এই কথা অবশ্যই সত্য : আমি নিশ্চয়ই জিন ও মানুষ উভয় দ্বারা জাহান্নাম পূর্ণ করিব। (৩২: ১৩)
৭) যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই উহার অনুসরণ করিও না; কর্ণ, চক্ষু, হৃদয়- উহাদের প্রত্যেকটি সম্পর্কেই কৈফিয়ত তলব করা হইবে।(১৭:৩৬)
৮) যাহারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ করিতে চায়, ইহা দ্বারা তিনি তাহাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং নিজ অনুমতিক্রমে অন্ধকার হইতে বাহির করিয়া আলোর দিকে লইয়া যান এবং উহাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন।
,৯) তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমাদের নিকট যাহা অবতীর্ণ করা হইয়াছে তোমরা তাহার অনুসরণ কর এবং তাঁহাকে ছাড়া অন্য কোন আউলিয়াকে অনুসরণ করিও না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর। (৭:৩)
একমাত্র কোরআনকেই অনুসরন করতে হবেঃ
১০) যাহারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ করিতে চায়, ইহা দ্বারা তিনি তাহাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং নিজ অনুমতিক্রমে অন্ধকার হইতে বাহির করিয়া আলোর দিকে লইয়া যান এবং উহাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন।(৫ঃ১৬)
বিচার দিবসে চুড়ান্ত রায় ঘোষনার পর,” জাহান্নামীরা বলিবে, ‘আমাদের কী হইল যে, আমরা যে সকল লোককে মন্দ বলিয়া গণ্য করিতাম তাহাদেরকে দেখিতে পাইতেছি না! ‘তবে কি আমরা উহাদেরকে অহেতুক ঠাট্টা-বিদ্রুপের
পৃষ্ঠা-০৮
পাত্র মনে করিতাম, না উহাদের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভ্রম ঘটিয়াছে ?’ (৩৮:৬২-৬৩)
আল্লাহ্ কাহাকেও সৎপথে পরিচালিত করিতে চাহিলে তিনি তাহার বক্ষ ইসলামের জন্য প্রশস্ত করিয়া দেন এবং কাহাকেও বিপথগামী করিতে চাহিলে তিনি তাহার বক্ষ অতিশয় সংকীর্ণ করিয়া দেন ; তাহার কাছে ইসলাম অনুসরণ আকাশে আরোহণের মতই দুঃসাধ্য হইয়া পড়ে। যাহারা বিশ্বাস করে না আল্লাহ্ তাহাদেরকে এইভাবে লাঞ্ছিত করেন। (৬:১২৫)
ইহাই আল্লাহ্র বিধান-প্রাচীন কাল হইতে চলিয়া আসিতেছে, তুমি আল্লাহ্র বিধানে কোন পরিবর্তন পাইবে না। (৪৮:২৩)
আল্লাহ্ যদি ইচ্ছা করিতেন তবে তাহারা শিরক করিত না এবং তোমাকে তাহাদের জন্য রক্ষক নিযুক্ত করি নাই; আর তুমি তাহাদের অভিভাবকও নও। (৬:১০৭) আমি অবশ্যই জানি যে, তোমাদের মধ্যে মিথ্যা আরোপকারী রহিয়াছে। (৬৯:৪৯)
আর এমন কিছু লোক রযেছে যাদের পার্থিব জীবনের কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবে। আর তারা সাক্ষ্য স্থাপন করে আল্লাহকে নিজের মনের কথার ব্যাপারে। প্রকৃতপক্ষে তারা কঠিন ঝগড়াটে লোক।(২:২০৪)
তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। আর আহলে-কিতাবরা যদি ঈমান আনতো, তাহলে তা তাদের জন্য মঙ্গলকর হতো। তাদের মধ্যে কিছু তো রয়েছে ঈমানদার আর অধিকাংশই হলো পাপাচারী। (৩:১১০)
যারা ঈমানদার, তারা এমন যে, যখন আল্লাহর নাম নেয়া হয় তখন ভীত হয়ে পড়ে তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনে পাঠ করা হয় কালাম, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা স্বীয় পরওয়ার দেগারের প্রতি ভরসা পোষণ করে।(৮ঃ২)
পৃষ্ঠা-০৯
আর অবশ্যই আমি মানুষের জন্য এই কুরআনে বিভিন্ন উপমা বিশদ ভাবে বর্ণনা করিয়াছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ কুফরীকরা ব্যতীত ক্ষান্ত হইল না।'(১৭:৮৯)
এই কোরআন এমন পথ প্রদর্শন করে, যা সর্বাধিক সরল এবং সৎকর্ম পরায়ণ মুমিনদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্যে মহা পুরস্কার রয়েছে।(১৭:৯)
আল্লাহ্র সঙ্গে অপর কোন ইলাহ্ সাব্যস্ত করিওনা; করিলে নিন্দিত ও লাঞ্ছিত হইয়া পড়িবে। (১৭:২২)
যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই উহার অনুসরণ করিও না; কর্ণ, চক্ষু, হৃদয়- উহাদের প্রত্যেকটি সম্পর্কেই কৈফিয়ত তলব করা হইবে।(১৭:৩৬)
নিশ্চয় যারা গোপন করে, আমি যেসব বিস্তারিত তথ্য এবং হেদায়েতের কথা নাযিল করেছি মানুষের জন্য কিতাবের মধ্যে বিস্তারিত বর্ণনা করার পরও; সে সমস্ত লোকের প্রতিই আল্লাহর অভিসম্পাত এবং অন্যান্য অভিসম্পাতকারীগণের ও। (২:১৫৯)
এইভাবে তোমার পূর্বে কোন জনপদে যখনই আমি কোন সতর্ককারী প্রেরণ করিয়াছি তখন উহার সমৃদ্ধিশালী ব্যক্তিরা বলিত, ‘আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পাইয়াছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাহাদেরই পদাংক অনুসরণ করিতেছি।’ (৪৩:২৩)
উহাদেরকে যখন বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা অনুসরণ কর।’ উহারা বলে, ‘বরং আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহারই অনুসরণ করিব।’ শয়তান যদি উহাদেরকে জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তির দিকে আহবান করে, তবুও কি? (৩১:২১)
তিনি পৃথিবীর সবকিছু তোমাদের জন্য সৃষ্টি করিয়াছেন, তৎপর তিনি আকাশের দিকে মনোসংযোগ করেন এবং উহাকে সপ্তাকাশে বিন্যস্ত করেন; তিনি সর্ববিষয়ে সবিশেষ অবহিত।(২:২৯)
পৃষ্ঠা-১০
বল, ‘আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দিব কর্মে বিশেষ ক্ষতিগ্রস্তদের?’উহারাই তাহারা, ‘পার্থিব জীবনে যাহাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তাহারা মনে করে যে, তাহারা সৎকর্মই করিতেছে,(১৮:১০৩-১০৪)
ইহাদের কি এমন কতকগুলি দেবতা আছে যাহারা ইহাদের জন্য বিধান দিয়াছে এমন দীনের, যাহার অনুমতি আল্লাহ্ দেন নাই? ফয়সালার ঘোষণা না থাকিলে ইহাদের বিষয়ে তো সিদ্ধান্ত হইয়াই যাইত। নিশ্চয়ই জালিমদের জন্য রহিয়াছে মর্মন্তুদ শাস্তি। (৪২:২১)
আল্লাহ্ তাঁহার সকল বান্দাকে জীবনোপকরণে প্রাচুর্য দিলে তাহারা পৃথিবীতে অবশ্যই বিপর্যয় সৃষ্টি করিত; কিন্তু তিনি তাঁহার ইচ্ছামত পরিমাণেই নাযিল করিয়া থাকেন। তিনি তাঁহার বান্দাদেরকে সম্যক জানেন ও দেখেন। (৪২ঃ২৭)
আল্লাহ্ জীবনোপকরণে তোমাদের কাহাকেও কাহারও উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়াছেন। যাহাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া হইয়াছে তাহারা তাহাদের অধীনস্থ দাস-দাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরণ হইতে এমন কিছু দেয় না যাহাতে উহারা এ বিষয়ে তাহাদের সমান হইয়া যায়। তবে কি উহারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ অস্বীকার করে?(১৬:৭১
ইহারা কি তোমার প্রতিপালকের করুণা বণ্টন করে? আমিই উহাদের মধ্যে উহাদের জীবিকা বণ্টন করি, পার্থিব জীবনে এবং একজনকে অপরের উপর মর্যাদায় উন্নত করি, যাহাতে একে অপরের দ্বারা কাজ করাইয়া লইতে পারে ; এবং উহারা যাহা জমা করে তাহা হইতে তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ উৎকৃষ্টতর।(৪৩:৩২)
আপনি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার খেয়াল-খুশীকে স্বীয় উপাস্য স্থির করেছে? আল্লাহ জেনে শুনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কান ও অন্তরে মহর এঁটে দিয়েছেন এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পর্দা। অতএব, আল্লাহর পর কে তাকে পথ প্রদর্শন করবে? তোমরা কি চিন্তাভাবনা কর না? (৪৫:২৩)
পৃষ্ঠা-১১
রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি,তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি,তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। (২:২৮৫)
শেষ নাযিল আয়াতঃ তোমাদের জন্য হারাম করা হইয়াছে মৃত জন্তু, রক্ত, শূকর-মাংস, আল্লাহ্ ব্যতীত অপরের নামে যবেহ্কৃত পশু আর শ্বাসরোধে মৃত জন্তু, প্রহারে মৃত জন্তু, পতনে মৃত জন্তু, শৃংগাঘাতে মৃত জন্তু এবং হিংস্র পশুতে খাওয়া জন্তু; তবে যাহা তোমরা যবেহ্ করিতে পারিয়াছ তাহা ব্যতীত, আর যাহা মূর্তি পূজার বেদীর উপর বলি দেওয়া হয় তাহা এবং জুয়ার তীর দ্বারা ভাগ্য নির্ণয় করা এই সব পাপ কাজ। আজ কাফিররা তোমাদের দীনের বিরুদ্ধা চরণে হতাশ হইয়াছে; সুতরাং তাহাদেরকে ভয় করিও না, শুধু আমাকে ভয় কর। আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাংগ করিলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন মনোনীত করিলাম। তবে কেহ পাপের দিকে না ঝুঁকিয়া ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হইলে তখন আল্লাহ্ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৫:৩)
তোমাদের জিহবা মিথ্যা আরোপ করে বলিয়া আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা আরোপ করিবার জন্য তোমরা বলিও না, ‘ইহা হালাল এবং উহা হারাম।’ নিশ্চয়ই যাহারা আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করিবে তাহারা সফলকাম হইবে না।(১৬:১১৬)
তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় নির্দেশে ওহীসহ ফিরিশ্তা প্রেরণ করেন এই বলিয়া যে, তোমরা সতর্ক কর, নিশ্চয়ই আমি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই; সুতরাং আমাকে ভয় কর।(১৬:২)
সরল পথ আল্লাহ্র কাছে পৌঁছায়, কিন্তু পথগুলির মধ্যে বক্র পথও আছে। তিনি ইচ্ছা করিলে তোমাদের সকলকেই সৎপথে পরিচালিত করিতেন (১৬ঃ৯)
পৃষ্ঠা-১২
তাহারা নিষ্প্রাণ, নির্জীব এবং কখন তাহাদেরকে পুনরুত্থিত করা হইবে সে বিষয়ে তাহাদের কোন চেতনা নাই।(১৬:২১)
বিচার দিবসে আল্লাহ কোন বিষয়ে জিজ্ঞেস করবেনঃ এবং যাহারা মুত্তাকী ছিল তাহাদেরকে বলা হইবে, ‘তোমাদের প্রতিপালক কী অবতীর্ণ করিয়াছিলেন?’ তাহারা বলিবে, ‘মহাকল্যাণ’। যাহারা সৎকর্ম করে তাহাদের জন্য আছে এই দুনিয়ায় মঙ্গল এবং আখিরাতের আবাস আরও উৎকৃষ্ট এবং মুত্তাকীদের আবাসস্থল কত উত্তম!-(১৬:৩০)
তোমার পূর্বে আমি ওহীসহ পুরুষই প্রেরণ করিয়াছিলাম, তোমরা যদি না জান তবে জ্ঞানীগণকে জিজ্ঞাসা কর-(১৬:৪৩)
উহারা কি লক্ষ্য করে না আল্লাহ্র সৃষ্ট বস্তুর প্রতি, যাহার ছায়া ডানে ও বামে ঢলিয়া পড়িয়া আল্লাহ্র প্রতি সিজদাবনত হয়? (১৬:৪৮)
আল্লাহ্কেই সিজদা করে যাহা কিছু আছে আকাশ মণ্ডলীতে, পৃথিবীতে যত জীবজন্তু আছে সে সমস্ত এবং ফিরিশতাগণও, উহারা অহংকার করে না। (১৬:৪৯)
আমি তো তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছি যাহারা এ বিষয়ে মতভেদ করে তাহাদেরকে সুস্পষ্ট ভাবে বুঝাইয়া দিবার জন্য এবং মু’মিনদের জন্য পথনির্দেশ ও দয়া স্বরূপ।(১৬:৬৪)
তোমার প্রতিপালক মৌমাছিকে প্রতি ওহী দ্বারা নির্দেশ দিয়াছেন, গৃহ নির্মাণ কর পাহাড়ে, বৃক্ষে ও মানুষ যে গৃহ নির্মাণ করে তাহাতে; (১৬:৬৮)
وَاَوْحٰى رَبُّكَ اِلَى النَّحْلِ اَنِ اتَّخِذِىْ مِنَ الْجِبَالِ بُيُوْتًا وَّمِنَ الشَّجَرِ وَمِمَّا يَعْرِشُوْنَۙ
আল্লাহ্ই তোমাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছেন; অতঃপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাইবেন এবং তোমাদের মধ্যে কাহাকেও কাহাকেও উপনীত করা হইবে
পৃষ্ঠা-১৩
নিকৃষ্টতম বয়সে; ফলে উহারা যাহা কিছু জানিত সে সম্বন্ধে উহারা সজ্ঞান থাকিবে না। নিশ্চয় আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।(১৬:৭০)
আল্লাহ্র নিকট তাহারা বিভিন্ন স্তরের; তাহারা যাহা করে আল্লাহ্ তাহার সম্যক দ্রষ্টা। (৩:১৬৩)
আল্লাহ্ উপমা দিতেছেন অপরের অধিকারভুক্ত এক দাসের, যে কোন কিছুর উপর শক্তি রাখে না এবং এমন এক ব্যক্তির যাহাকে তিনি নিজ হইতে উত্তম রিযিক দান করিয়াছেন এবং সে উহা হইতে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে; উহারা কি একে অপরের সমান? সকল প্রশংসা আল্লাহ্রই প্রাপ্য; অথচ উহাদের অধিকাংশই ইহা জানে না। ( ১৬:৭৫)
আল্লাহ্ আরও উপমা দিতেছেন দুই ব্যক্তিরঃ উহাদের একজন মূক, কোন কিছুরই শক্তি রাখে না এবং সে তাহার প্রভুর ভারস্বরূপ; তাহাকে যেখানেই পাঠান হউক না কেন সে ভাল কিছুই করিয়া আসিতে পারে না ; সে কি সমান হইবে ঐ ব্যক্তির, যে ন্যায়ের নির্দেশ দেয় এবং যে আছে সরল পথে? (১৬:৭৬)
সেই দিন আমি উত্থিত করিব প্রত্যেক সম্প্রদায়ে তাহাদেরই মধ্য হইতে তাহাদের বিষয়ে এক একজন সাক্ষী এবং তোমাকে আমি আনিব সাক্ষীরূপে ইহাদের বিষয়ে। আমি আত্মসমর্পণকারীদের জন্য প্রত্যেক বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা স্বরূপ, পথনির্দেশ, দয়া ও সুসংবাদ স্বরূপ তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করিলাম। (১৬:৮৯)
তোমরা সেই নারীর মত হইও না, যে তাহার সূতা মযবুত করিয়া পাকাইবার পর উহার পাক খুলিয়া নষ্ট করিয়া দেয়। তোমাদের শপথ তোমরা পরস্পরকে প্রবঞ্চনা করিবার জন্য ব্যবহার করিয়া থাক, যাহাতে একদল অন্যদল অপেক্ষা অধিক লাভবান হও। আল্লাহ্ তো ইহা দ্বারা কেবল তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন। আল্লাহ্ কিয়ামতের দিন তাহা নিশ্চয়ই স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ করিয়া দিবেন যে বিষয়ে তোমরা মতভেদ-করিতে। (১৬:৯২)
পৃষ্ঠা- ১৪
যখন কোরআন পাঠ করিবে তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আল্লাহর স্মরণ লইবে।
فَاِذَا قَرَاْتَ الْقُرْاٰنَ فَاسْتَعِذْ بِاللّٰهِ مِنَ الشَّيْطٰنِ الرَّجِيْمِ (১৬:৯৮)
বল, ‘তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে রুহুল-কুদুস জিব্রাঈল সত্যসহ কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছে, যাহারা মু’মিন তাহাদেরকে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত করিবার জন্য এবং হিদায়াত ও সুসংবাদস্বরূপ মুসলিমদের জন্য।'(১৬:১০২)
قُلْ نَزَّلَهٗ رُوْحُ الْقُدُسِ مِنْ رَّبِّكَ بِالْحَـقِّ لِيُثَبِّتَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَهُدًى وَّبُشْرٰى لِلْمُسْلِمِيْنَ
আমি তো জানি, তাহারা বলে, ‘তাহাকে শিক্ষা দেয় এক মানুষ।’ উহারা যাহার প্রতি ইহা আরোপ করে তাহার ভাষা তো আরবী নয়; কিন্তু কুরআনের ভাষা স্পষ্ট আরবী ভাষা। (১৬:১০৩)
وَلَـقَدْ نَـعْلَمُ اَنَّهُمْ يَقُوْلُوْنَ اِنَّمَا يُعَلِّمُهٗ بَشَرٌؕ لِسَانُ الَّذِىْ يُلْحِدُوْنَ اِلَيْهِ اَعْجَمِىٌّ
وَّهٰذَا لِسَانٌ عَرَبِىٌّ مُّبِيْنٌ
আল্লাহ্ তো কেবল মৃত জন্তু, রক্ত, শূকর-মাংস এবং যাহা যবেহ্কালে আল্লাহ্র পরিবর্তে অন্যের নাম লওয়া হইয়াছে তাহাই তোমাদের জন্য হারাম করিয়াছেন, কিন্তু কেহ অবাধ্য কিংবা সীমালংঘনকারী না হইয়া অন্য উপায়ে হইলে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (১৬:১১৫)
اِنَّمَا حَرَّمَ عَلَيْكُمُ الْمَيْتَةَ وَ الدَّمَ وَلَحْمَ الْخِنْزِيْرِ وَمَاۤ اُهِلَّ لِغَيْرِ اللّٰهِ بِهٖۚ فَمَنِ اضْطُرَّ غَيْرَ بَاغٍ وَّلَا عَادٍ فَاِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ
এখন আমি তোমাদের প্রতি প্রত্যাদেশ করিলাম, তুমি একনিষ্ঠ ইব্রাহীমের ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর; এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিল না।(১৬:১২৩)
পৃষ্ঠা-১৫
তুমি মানুষকে তোমার প্রতিপালকের পথে আহ্বান কর হিকমত ও সদুপদেশ দ্বারা এবং উহাদের সঙ্গে তর্ক করিবে উত্তম পন্থায়। তোমার প্রতিপালক, তাঁহার পথ ছাড়িয়া কে বিপথগামী হয়, সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত এবং কাহারা সৎপথে আছে তাহাও তিনি সবিশেষ অবহিত। (১৬:১২৫)
ReplyForward Add reaction |
পৃষ্ঠা-১৬
কোরানে বর্ণিত সালাত কি প্রচলিত নামাজকে বুঝায়??
সালাত নিয়ে আল্লাহ বলেন ” অতঃপর তাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা , তাহারা সালাত সালাত নস্ট করিল এবং লালসা পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে। (১৯:৫৯)
এখানে বলা হচ্ছে তাদের পরে প্রতিনিধি আসলো, প্রশ্ন হচ্ছে কাদের পরে প্রতিনিধি আসলো? ৫৮ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন ” এরা হচ্ছে তাঁরা যাদের উপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন নবীদের মাঝে যারা আদমের বংশধর, নুহুর সাথে যাদের নৌকায় আরোহন করা হয়েছিল, ইব্রাহিম এবং ইসমাইলের বংশধর এবং যাদের হেদায়েত করেছি এবং মনোনীত করেছি,”
তাঁরা কি করতো ঐ একই আয়াতে শেষাংশে বলা হচ্ছে ” যখন তাঁদের কাছে দয়াময়ের আয়াত পাঠ করা হয় তখন তাঁরা ক্রন্দনরত হয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে”।
৬০ নং আয়াতে বলা হচ্ছে ” তারা ব্যতিত এবং যারা ফিরে এসেছে এবং ঈমান এনেছেন এবং ভালো কাজ করেছে অতঃপর তাদের আমি জান্নাতে দাখিল করবো বিন্দু মাত্র জুলম করা হবে না”।
এ আয়াতে বুঝা যায় যারা ফিরে আসবে। কোথায় ফিরে আসবে – যখন আয়াত পাঠ শুনবে তখন ক্রন্দনরত অবস্থায় সেজদায় লুটিয়ে পড়ায়।
এখানে লক্ষ্যনীয়, আয়াত পাঠ শ্রবণ করা/ পাঠ করা এবং সেজদায় লুটিয়ে পড়া- এ দূটি আনুষ্ঠানিকতা প্রচলিত সালাতে বিদ্যমান। কিন্তু কোন সালাত আদায়কারীকে ক্রন্দন রত দেখা যায় না। ক্রন্দনরত বা উল্লসিত মানুষ তখনই হয় যখন বিষয়টি বুঝতে পারে এবং অনুধাবন করতে পারে ।
তাহলে বুঝা যাচ্ছে শ্রুত/ পঠিত আয়াতের অর্থ বুঝা এবং অনুধাবন করা জরুরী।
পৃষ্ঠা-১৭
আর সেজন্যই বলা হয়েছে ” তোমরা সালাত এর নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না যা বলছ তা বুঝতে পারো। এখান থক একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে আমরা যে প্রচলিত নামাজ পড়ি তা আমরা বুঝি না, অন্যদিকে আল্লাহ যে সালাতের কথা বলছেন তাতে পঠিতব্য বিষয় বুঝতে পারা জরুরী। তাই তো সুরা নেসার ৪৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলেনঃ “হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হইও না, যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার,(৪:৪৩)
আবার ২৯ঃ৪৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন ” তোমার প্রতি যে গ্রন্থ অহী করা হয়েছে তা পাঠ কর এবং সালাত কায়েম করো। নিশ্চয় সালাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’এই আয়াত যখন পড়ি তখন বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে আল্লাহ কি আমাদের এই নামাজ পড়তে বলেছেন? এই প্রচলিত নামাজ আজীবন পড়লেও এই আয়াতের সত্যতা প্রমাণিত হবে না। তাহলে এই নামাজ কি কোরানে বর্ণিত সালাত?
অন্যদিকে কোরআন আত্মস্থ করা মানুষ জানবে আল্লাহ কি করতে বলেছেন এবং কি কারতে নিষেধ করছেন। সে অনুযায়ী কর্ম করলে খারাপ এবং অশ্লীল কাজ সংঘটিত হবে না। তাহলে কি কোরআন জানা এবং পরিপালন করাই কি সালাত? আবার যখন অন্য আয়াতে বলে ” সালাত কায়েম করো দিনের দু’প্রান্তে এবং রাতের প্রথম প্রহরে” তাহলে এই দু’প্রান্তে এবং রাতের প্রথম প্রহরে যে সালাত কয়েম করতে বলছে সেটা কি সালাত? তবে কি দিনের দু’প্রান্তে এবং রাতের প্রথম প্রহরে কোরআনের বিধি বিধান নিয়ে আলোচনা করা এবং সেগুলি পরিপালন করার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করাই কি সালাত?
অপর আয়াত ৭০ নং সুরা মাআরিজ ২২, ২৩ বলা হচ্ছে ২২ ” ইল্লাল মুসাল্লিম” অর্থ – সালাত কারীরা ব্যাতিত। কোন সে সালাত কারী ?
” আল্লাজিনা হুম আলা সলাতিহিম দায়েমুন” অর্থ – এবং যারা তাদের সালাতে সর্বক্ষন নিয়োজিত থাকে। কিন্তু সর্বক্ষন তো কোরআন পড়ায় নিয়োজিত থাকা সম্ভব নয়? তবে হ্যা সকল কর্মে আল্লাহর বিধি বিধান মেনে
পৃষ্ঠা-১৮
চলা সম্ভব। আর সে সব বিধি বিধান মেনে চললে খারাপ এবং অশ্লীল কাজ থেকে সয়ংক্রিয় ভাবে প্রাপ্ত হবে। তাহলে কি আল্লাহর দেয়া বিধি বিধান মেনে চলাই সালাত কায়েম করা?
আবার এই আয়াতে বলছে সর্বক্ষণ সালাতে নিয়জিত থাকতে কিন্তু উপরের আয়াতে বলা হচ্ছে – সালাত কায়েম করো দিনের দু’প্রান্তে এবং রাতের প্রথম প্রহরে। তাহলে কি এই দূই সালাত দুরকম? অথবা সালাত কায়েম করা এবং সালাতে নিয়জিত থাকা ভিন্ন জিনিস?
সুরা ময়েদা (৫/৬) বলা হচ্ছে “হে মুমিনগন যখন তোমরা সালাতে দাড়াবে তখন তোমাদের মুখ, হাত…ধৌত করবে”।এই আয়াতে বলা হচ্ছে ‘যখন’ অর্থাৎ যেক্ষনে বা যে মুহূর্তে বা যে সময় সালাতে দাড়বে। তাহলে বুঝা যাচ্ছে সার্বক্ষণিক সালাতের বাহিরে ক্ষনে ক্ষনে সালাত আছে। কখন সেই ক্ষন?
উত্তর বলা হয়েছে ১৭/৭৮ আয়াতে, ২৪/৫৮, ৩০/১৭,১৮, ২/২৩৮।
এছাড়াও ৪/১০৩ আয়াতে বলা হয়েছে ” নিশ্চয় সালাত মুমিনদের জন্য ওয়াক্তের সাথে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। কোরআনের এসব বর্ণনা থেকে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, সার্বক্ষণিক সালাত বা দায়েমী সালাতের সাথে ওক্তিয় সালাতও আছে এবং সে সালাতও করা বধ্যতা মূলক।
২২ নং সুরা হাজ্জ ৭৭ আয়াত ” হে ঈমানদারগন রুকু করো, সেজদা করো এবং তোমাদের রবের দাসত্ব করো এবং ভালো কাজ করো হয়তো তোমারা সফলকাম হবে”।
এই আয়াত বিশ্লেষণ করে দেখা যায় – ঈমানদারদের সম্মোধন করা হয়েছে। ইমানদার কারা যারা কোরআন সহ অন্যন্য নির্দেশিত বিষয়ে ঈমান এনেছে। কোরআনে ঈমান আনার অর্থ কোরআনে নির্দেশিত বিষয়ে সশ্রদ্ধ চিত্তে মেনে নয়া। আয়াতের শেষ অংশে বলছে ভালো কাজ করো। তো ঈমান আনলে
পৃষ্ঠা-১৯
এবং ভালো কাজ করলে তারা জান্নাত পাবে এ কথা বহু আয়াতে উল্লেখ আছে। তাহলে এই আয়াতের মাঝখানে রুকু করো, সেজদা করো কেন বলা হয়েছে? তাহলে কি এই আয়াত থেকে এমন সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, ভালো কাজের সাথে রুকু সেজদা করার নির্দেশ রয়েছ ঈমানদারের উপর।
রুকু ও সিজদা বলতে কি মাটিতে মাথা ঠেকানো বা হাটুতে ভর দিয়ে উপুর হওয়া বুঝায়? রুকু অর্থ ঝুকে পড়া আকৃষ্ট হওয়া। সিজদা অর্থ পরিপুর্ণ মেনে নেওয়া। বৃক্ষও সিজদা করে, তার মানে রবের নির্দেশ মেনে চলে। বৃক্ষ মাটিতে মাথা ঠুকে না।
৩০ সুরা রোম আয়াত ১৭,১৮,- আল্লাহ বলেন ” তোমরা আল্লাহ্র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর সন্ধ্যায় ও প্রভাতে –
“আসমান ও জমিনের সকল প্রসংশা তার জন্য এবং যখন তোমরা এশা এবং জোহর করো”।
এদুটো আয়াত থেকে সুস্পষ্ট যে দায়েমী সালাতে সর্বক্ষণ আল্লাহর বিধি বিধান মেনে চলার পাশাপাশি সকাল, সন্ধ্যা, জোহর এবং রাত্রে বিশেষ ভাবে আল্লাহর পবিত্রতা এবং প্রসংশা করার নির্দেশ রয়েছ। এই পবিত্রতা এবং প্রসংশা করার সশরীরে প্রদর্শন হচ্ছে ওক্তিয় সালাত।
২ সুরা বাকারার ১৪৩ এবং ১৪৪ এ কিবলার কথা উল্লেখ আছে। ৪৪ আয়াতে আল্লাহ বলেন ” আকাশের দিকে তোমার মুখতোলা আমি দেখেছি, অতঃপর তোমাকে এমন এক কিবলার দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছি যা তুমি সন্তুষ্ট হও, অতএব তুমি সম্মানিত মসজিদের দিকে মুখ ফিরাবে, এবং যেখানেই থাকো সেটির দিকে মুখ ফিরাবে….. “
এ আয়াতে দেখা যায় শুধু মাত্র ওক্তিয় সালাতের সময় মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফেরায়, কিন্তু দায়েমী সালাতে সব সময় মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরায়ে থাকা অসম্ভব, আবার কোরআন তেলায়তে তা করা হয় না, তাহলে দায়েমী সালাত এবং কোরআন তেলওয়াতের বাহিরে একটি কার্যক্রম
পৃষ্ঠা-২০
আছে যখন মসজিদুল হারামে দিকে মুখ ফিরানো বাধ্যতা মূলক। তাহলে সে কার্যক্রমই কি ওক্তিয় সালাত?
পৃষ্ঠা-২১
নবী কি প্রচলিত এই নামাজ পড়তেন?
নবী মুহাম্মদ সা: আমাদের এ প্রচলিত সালাত কখনোই পড়েন নাই। পড়ার প্রশ্নই উঠে না। কারন নবীকে সালাত পড়ার জন্য প্রেরণ করা হয় নি বরং সালাত শেখানোর জন্য প্রেরন করা হয়েছিল।
সালাত পড়ার মত কোন জিনিস নয় বরং সালাত কায়েম করার জিনিস। সালাত একটি দ্বীনি ব্যবস্থা। জীবন যাপন পদ্ধতি। অথচ কোরান বিমুখ অজ্ঞরা নবী সাঃ কে রোগাক্রান্ত অবস্থাতেও কাঁধে ভর দিয়ে নিয়ে এসে সালাতের ইমামতি করার হাদীস রচনা করেছে। কতটা গর্হিত কাজ করেছে এ মুর্খের দল কোরানের আলোকে তা দেখে নেই।
প্রচলিত সালাতে সুরা ফাতিহা পড়া হয়। সুরা ফাতেহায় বলা হয়ে থাকে আপনি আমাকে সরল সঠিক পথ দেখান। আমরা সরল পথে নেই তাই আমরা বলে থাকি। প্রশ্ন হল নবী যদি বলেন হে আল্লাহ আমাকে সরল পথ দেখান। তাহলে বিষয়টা কি দ্বারায়? তিনি কি সরল সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত নন? (নাউযুবিল্লাহ)। এবার দেখি এ বিষয়ে কোরান কি বলে?
কোরআনে, সুরা হজ্জে আল্লাহ বলেনঃ ১) আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য নির্ধারিত করিয়া দিয়াছি ‘ইবাদত পদ্ধতি – যাহা উহারা অনুসরণ করে। সুতরাং উহারা যেন তোমার সঙ্গে বিতর্ক না করে এই ব্যাপারে। তুমি উহাদেরকে তোমার প্রতিপালকের দিকে আহ্বান কর, তুমি তো সরল পথেই প্রতিষ্ঠিত। (২২:৬৭)
সুরা ইয়াসিনে আল্লাহ ঘোষনা দিয়ে জানালেন রাসুলকেঃ আপনি অবশ্যই রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত; আপনি সরল পথে প্রতিষ্ঠিত। (৩৬:৪)
কোরানের সূরা যুখরফে আল্লাহ বলেনঃ সুতরাং তোমার প্রতি যাহা ওহী করা হইয়াছে তাহা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর। তুমি সরল পথেই রহিয়াছ। (৪৩:৪৩)
পৃষ্ঠা-২২
এ আঅত গুলি থেকে সুস্পষ্ট ভাবে জানা যায় রাসুল সরল পথে প্রতিষ্ঠিত এবং ওহীর মাধ্যমে রাসুল সাঃ কে তা অবহিতও করা হয়েছে। ওহী যোগে আল্লাহ নিশ্চিত করার পরও কি রাসুল সরল পথে পরিচালিত করার জন্য কি প্রার্থণা করবেন? এটা কি কোন সুস্থ মস্তিস্ক বিশ্বাস করবে?
সরল পথে প্রতিষ্ঠিত বলেই তো তার প্রতি কোরান নাযিল করা হয়েছে। নচেৎ তার উপর কোরান নাযিলই হত না।
আরেকটু লক্ষ্য করুন। আল্লাহ বলছেন অপবিত্র অবস্থায় আমার কোরান স্পর্শ করা যায় না। এখানে উপদেশ বা অনুরোধ করে বলেন নাই যে তোমরা অপবিত্র অবস্থায় কোরান স্পর্শ করো না। বলেছেন অপবিত্র অবস্থায় কোরান স্পর্শ করা যায় না। অর্থাৎ এই কাগজের কোরান স্পর্শ করার কথা বলা হয় নি। বলা হয়েছে অপবিত্র অবস্থায় অর্থাৎ ( সরলপথ প্রাপ্ত না হয়ে) কোরান কেউ ধারন করতে চাইলেও পারবে না সেটাই বুঝানো হয়েছে।
এই সরল পথে প্রতিষ্ঠিত রাসুল সাঃ কে যদি কেউ দাঁড় করিয়ে বলাতে চায় যে আমাকে সরল পথে পরিচালিত করুন। তাহলে ব্যাপারটা কত হাস্যকর ও লজ্জাস্কর ? কতটা ভয়ংকর? নবীর নামে অপবাদ ? আল্লাহর কোরানের আয়াতের অপব্যাখ্যা বলে বিবেচ্য।
যেখানে আল্লাহ স্বয়ং রাসুলকে নির্দেশ করে বলেছেন আপনি রাসুলদের অন্তর্গত, আপনি সরল পথে প্রতিষ্ঠিত, আপনাকে কিতাব দেওয়া হল, আপনি তা প্রচার করুন।
আর সেই রাসুলকে হাদীস বেত্তারা নামাজ পড়িয়ে ছাড়ছে !সরল পথ প্রাপ্তীর জন্য প্রার্থণা করাতে বাধ্য করিয়েছে।
উপসংহারে বলতে চাইঃ ১) আগে বুঝতে হবে সালাত কি? এবং কেন?
২) নবীকে সালাত পড়ার জন্য প্রেরণ করা হয়নি। সালাত শিখানোর জন্য প্রেরিত হয়েছেন।
পৃষ্ঠা-২১
৩) সালাত পড়ার বিষয় নয়। নামাজ ধারন করার বিষয়, নিজের মধ্যে কায়েম করার বিষয়।
৪) সালাত হচ্ছে দ্বীন বা আল্লাহর স্বভাব। আল্লাহর নীতি।সেই নীতির যে স্বভাব সেই স্বভাব ধারন করা হচ্ছে সালাত। সেই সালাতে আল্লাহ সর্বদা দন্ডায়মান থাকতে বলেছেন।
সূরা মাআরিজ আয়াত নং ২৩ এ আল্লাহ বলেন: যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত,
الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙ
এই ভাবে যুগে যুগে কোরানের আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছে যারা তাদেরকে কঠিন আজাবের সম্মুখিন হতে হবে একদিন।
‘যদি তোমরা তোমাদেরই মত একজন মানুষের আনুগত্য কর তবে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হইবে;(২৩;৩৪)
পৃষ্ঠা-২২
পর্ব -০২
উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা – পরবশ হইল। ১৯:৫৯
১) প্রথম প্রশ্ন এ আয়াতটি কি অতীতের জন্য শুধু ? না কি অতীত – বর্তমান এবং ভবিষ্যত সকল সময়ের জন্য প্রযোজ্য?
২) সালাত আল্লাহর মনোনীত ভাবেই চলছিল। সে সময় কালটি কখন?
৩) তাদের পরে কাহারা স্থলাভিষিক্ত হয়েছিল? তারা কোন নবীর উম্মত ছিল?
৪) কি ধরনের লালসা বা কুপ্রবৃত্তির অনুসরন করে সালাত কে বিকৃত করলো?
৫) সে বিকৃত বা নষ্ট করা সালাত পরবর্তিতে কোন নবীর সময় ঠিক করা হয়েছিল?
৬) সেই নষ্ট করা সালাত কি এখনো চলমান? না সংস্কার হয়েছে?
فَخَلَفَ مِنْۢ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ اَضَاعُوا الصَّلٰوةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوٰتِ
( ফাখালাফা মিম বাআ’দিহিম খালফুন আ’দাউস সালাতা ওততাবাউ – শ – শাহাওয়াতি।)
বাক্যে মুল শব্দ ৭ টি। তা হলঃ
১) খালাফা (خَلَفَ) = স্থলাভিশিক্ত হওয়া,
২) বাআ’দ ( بَعْدِ) = পরে।
৩) দা’ওউ ( ضَعُو) নষ্ট করা।
৪) সাললু (صَّلٰو) নামাজ/সালাত/ রবের অনুশীলন
৫) তাবাউ (بَعُو) = অনুসরন করা (ইত্তেবা থেকে)
৬) শাহাউ ( ال ) (شَّهَوٰ) কুপ্রবৃত্তি
পৃষ্ঠা-২৩
১) ফাখালাফা (فَخَلَفَ) = অতপর স্থলাভিষিক্ত হল।
মুল শব্দ খালাফ (خَلَفَ) = স্থলাভিশিক্ত হওয়া, فَ ফা অব্যয় পদ অর্থ অত:পর। সুতরাং فَخَلَفَ ফাখালাফা অর্থ অত:পর স্থলাভিসিক্ত হল।
২) মিম ( مِنْۢ) অব্যয় পদ = থেকে।
৩) বাআ’দিহিম ( بَعْدِهِمْ) = তাদের পরবর্তি।
মুল শব্দ বাআ’দ ( بَعْدِ) = পরে। হুম (هِمْ) সর্বনাম = তাদের।
৪) খালফুন ( خَلْفٌ) পরবর্তিরা। মুল শব্দ খালফা خَلْفٌ, =
বুহুবচন তাহারা।
৫) আ’দাউ ( اَضَاعُوا ) = তারা নষ্ট করলো
মুল শব্দ ( ضَعُو) নষ্ট করা।
৬) সালাতা ( الصَّلٰوةَ) নামাজকে/সালাতকে
মুল শব্দ সাললু (صَّلٰو) নামাজ/সালাত/ রবের অনুশীলন
৭) ওয়াততাবাউ ( وَاتَّبَعُوا) এবং অনুসরন করলো / পরবশ হলো
মুল শব্দ (بَعُو) তাবাউ = অনুসরন করা (ইত্তেবা থেকে)
৮) শাহাওয়াতি ( الشَّهَوٰتِ ) লালসার / কুপ্রবৃত্তির
মুল শব্দ শাহাউ ( ال ) (شَّهَوٰ) কুপ্রবৃত্তি
শব্দার্থ: فَخَلَفَ = অতঃপর স্থলাভিষিক্ত হলো , مِنْ = থেকে, بَعْدِهِمْ = পর তাদের , خَلْفٌ = পরবর্তীরা, أَضَاعُوا = তারা নষ্ট করলো, الصَّلَاةَ = সালাত, وَاتَّبَعُوا = ও অনুসরণ করলো, الشَّهَوَاتِ = কুপ্রবৃত্তির, فَسَوْفَ = সুতরাং শীঘ্রই , يَلْقَوْنَ = তারা দেখবে, غَيًّا = কুকর্মের (শাস্তি) , فَسَوْفَ = সুতরাং শীঘ্রই يَلْقَوْنَ = তারা দেখব غَيًّا = কুকর্মের (শাস্তি)
فَخَلَفَ مِنْۢ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ اَضَاعُوا الصَّلٰوةَ وَاتَّبَعُوا الشَّهَوٰتِ فَسَوْفَ يَلْقَوْنَ غَيًّا ۙ
পৃষ্ঠা-২৪
অনুবাদ: তারপর এদের পর এমন নালায়েক লোকেরা এদের স্থলাভিষিক্ত হলো যারা নামায নষ্ট করলো এবং প্রবৃত্তির কামনার দাসত্ব করলো। তাই শীঘ্রই তারা গোমরাহীর পরিণামের মুখোমুখি হবে। (১৯:৫৯)
পৃষ্ঠা-২৫
পর্ব -০৩
দীর্ঘদিন যদি কোন মিথ্যে শুনতে শুনতে অভ্যস্থ হয়ে যায় এবং তার বিপরীত কোন সত্য হাজির না হয়, তবে সে মিথ্যেটাও একদিন সত্যে পরিনত হয় এবং তা মানব হৃদয়ে মজবুদ এক ভিত গেড়ে বসে। সে তখন সে ভিত থেকে আর সড়ে আসতে পারে না, যত সত্যই তার কাছে উপস্থাপন করা হোক না কেন। এবং এই বিশ্বাসের ঘরে কেউ আঘাত করলে তা মেনে নিতে পারে না। এমনকি নিজ সন্তানকেও সে ত্যাগ করতে প্রস্তুত। বন্ধু-বান্ধব, পাড়া পড়শি, আত্মীয়- স্বজন তো দুরে থাক। তার মনে দীর্ঘ দিনের লালিত সে বিশ্বাসের বিপরীতে কোন সত্যকেও উপস্থাপন করা হলে সে আৎকে উঠে। প্রতিহত করতে চায়,বিরোধিতায় লিপ্ত হয় এমন কি জীবন দিতেও প্রস্তুত হয়ে যায়। আর সে বিশ্বাস যদি হয় ধর্মীয় – তবে তো আর কথাই নেই। ফলে অনেককে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের পরও দেখা যায় সে তার গোড়ামীর প্রাচীর ভেদ করে বেরিয়ে আসতে পারে না। তার মুল কারন সত্যটা তার সামনে শুরুতে কোন দিন উপস্থাপন করা হয়নি। ফলে পৃথিবী নামক গ্রহের বুকে জাতী একটি হলেও ধর্ম চার হাজার অধিক। কেউ কাউকে তার ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত থেকে এক বিন্দু টলাতে সক্ষম নয়। কারন জন্মগত ভাবে সে এ অনুভুতি গুলো দেখে আসতেছে। বহু পুর্ব হতে বাপ-দাদাদেরকেও এরুপই করতে দেখে এসেছে। সে যাকে,যাকে ভক্তি শ্রদ্ধা করে যাকে ইত্তেবা করে তার মুখেও এমনি শুনে এসেছে। তাই তার অন্য কোন কথা, মত কানে পৌছা মাত্র গাজ্বলে উঠে। শোনা বা তা একটু রিভিউ করে দেখা তো দূরে থাক। এমন মানুষদের নিয়ে আল্লাহ ঘোষনা দেনঃ
১] আর যখন তাদেরকে কেউ বলে যে, সে হুকুমেরই আনুগত্য কর যা আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেছেন, তখন তারা বলে কখনো না, আমরা তো সে বিষয়েরই অনুসরণ করব। যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে দেখেছি। যদি ও তাদের বাপ দাদারা কিছুই জানতো না, জানতো না সরল পথও। (২:১৭০)
পৃষ্ঠা-২৬
২) তারা বলেঃ তুমি কি আমাদের কাছে এজন্যে এসেছ যে আমরা এক আল্লাহর এবাদত করি এবং আমাদের বাপ-দাদা যাদের পূজা করত, তাদেরকে ছেড়ে দেই? আরাফ ৭০
তাদের ঈমানের ভিত শক্ত করে রেখেছে সালাতের মধ্যে। রোগ-শোক, বিসন্নতা,ঝড়,জলোচ্ছাস,যুদ্ধ-বিগ্রহ এমন কি মুমুর্ষ অবস্থাতেও নামাজ পড়তে হবে। এক ওয়াক্ত নামাজ না পড়লে ৮০ হুগবা দোজখে বাস করতে হবে। এটাই চির সত্য, বদ্ধমুল বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে।
আল্লাহ কোরানে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার আয়াত নাযিল করেছেন, যাতে আমাদের প্রধান ইবাদত যা ধনী-গরীব, সুস্থ- অসুস্থ, মৃত্যু পথ যাত্রী সকল মুসলমানের জন্য সর্ব অবস্থায় মানা ফরজ।
আসলেই কি আল্লাহ এত কঠোরতা আরোপ করেছেন মানুষের উপর? কোরানের আলোকে যাচাই করে দেখি। আমরা যাকে নামাজ বলে জানি কোরানে তা সালাত শব্দে বর্ণিত। ৮০+ জায়গায় বিভিন্ন ভাবে এ সালাত শব্দটি এসেছে। যা আমরা দৈনিক পাচ ওয়াক্ত পড়তে হয় বলে জানি এবং গুরুত্তের সাথে পড়ে থাকি। প্রকৃত কি এই যে প্রচলিত নামাজ আমরা পড়ি আল্লাহ কোরানে যে সালাত কায়েম করার কথা বলেছেন তা প্রকৃত কি এভাবেই, না অন্য কিছু? কোরানের আলোকে দেখে নেই।
আরবী সলাহ শব্দের অর্থ হলো কোন কিছু ফলো করা, বা মুখোমুখি সংযোগ স্থাপন করা এবং মুছাল্লী অর্থ ছায়ার মত অনুসরন করা,। এ বাংলা শব্দ কি ভাবে চয়ন করা হল তা ব্যাখায় জানানো হবে।
আকিমুস সলাত মানে কোরানে বর্ণিত আল্লাহর সকল বিধি নিষেধ সর্ব অবস্থায় মেনে নেওয়া,ছায়ার মত লেগে থাকা। যা অনুসরন করা বাধ্যতামুলক।
পৃষ্ঠা-২৭
সুরা কিয়ামাহ আয়াত ৩১ ও ৩২ নং লক্ষ্য করলে তা বুঝা যায়।
فَلَا صَدَّقَ وَلَا صَلّٰىۙ
وَلٰكِنْ كَذَّبَ وَتَوَلّٰىۙ
সে বিশ্বাস করে নাই এবং নামাজ আদায় করে নাই।
বরং সে মিথ্যে বলেছিল এবং মুখ ফিরাইয়া লইয়াছিল।
এখানে ছল্লা صَلّٰىۙ ( নামাজ) বিপরীত শব্দ تَوَلّٰىۙ তাওয়াল্লা (মুখ ফিরিয়ে নেওয়া) এবং সদ্দকা صَدَّقَ (সত্য) বিপরীত কাজ্জাব كَذَّبَ (মিথ্যা)
তাওয়াল্লা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়া হয়, তাহলে ছল্লা এর অর্থ মুখোমুখি হওয়া বা সংযোগ স্থাপন করা বা অনুসরন করা সঠিক। কিন্তু পারশিয়ান শব্দ নামাজ বসিয়ে বাংলা ভাষাভাষীদের মর্ম উপলব্ধিতে ব্যহত করা হয়েছে।
পুর্ব অনুমানের অনুবাদ থেকে বেরিয়ে এসে যদি সঠিক বাংলা অনুবাদ করা হয় তবে উক্ত আয়াতের অনুবাদ হয়ঃ সে সত্য বলে না, অনুসরনও করে না। বরং সে মিথ্যে বলে এবং মুখ ফিরেয়ে নেয়।
সূরা আনকাবুত, আয়াত ৪৫, এখানে সালাতের অর্থ নামাজ ধরে অনুবাদ করলে এর অর্থ দাড়ায় : ” আপনি কোরান পড়ুন এবং নামাজ আদায় করুন। নিশ্চয় নামাজ অনৈতিক ও অন্যায় কাজ হতে ফরাইয়া রাখে। ”
কিন্তু নামাজ কি নিশ্চিত অনৈতিক ও অন্যায় কাজ হতে ফিরাইয়া রাখতে সক্ষম হয়? একজন মানুষ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে একি সাথে অনৈতিক, অন্যায় কাজের সাথে জড়িত হতে পারে। একমাত্র কোরানের নিরবাচ্ছন্ন অনুসরনই একজন মানুষকে অন্যায়, অনৈতিক কাজ থেকে ফিরায়ে রাখতে পারে। তাহলে বুঝা যায় সালাতের অনুবাদ কখনোই নামাজ নয়। সালাতের অনুবাদ রবের ঐশী কমান্ড ছায়ার মত অনুসরন করা। পুর্ন মেনে চলা।
সুতরাং এ আয়াতের যৌক্তিক অনুবাদ হবেঃ ” আপনি কোরআন পড়ুন এবং সে অনুযায়ী কাজ করুন। নিশ্চয় কোরনকে নিরবিচ্ছন্ন অনুসরন অন্যায় অনৈতিক কাজ হতে ফিরাইয়া রাখে। ”
পৃষ্ঠা-২৮
উক্ত আয়াতে صَّلٰوةَ সালাত শব্দের অর্থ কখনোই নামাজ হতে পারে না। কারন নামাজ কি আসলেই অন্যায় বা অনৈতিক কাজ হতে ফিরিয়ে রাখতে
পারে? একজন মানুষ পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে আবার অন্যায়, অনৈতিক কাজও করতে পারে। কিন্তু আয়াতে আল্লাহ বলতেছেন, নিশ্চয় সলাত صَّلٰوةَ অন্যায়, অনৈতিক কাজ হতে ফিরিয়ে রাখে। তাহলে কি আয়াত মিথ্যে ? না। আসলে সালাত صَّلٰوةَ এর ফার্সী অনুবাদ পরিহার করে সঠিক বাংলা শব্দ বসালেই আয়াতের মর্ম বোধগম্য হয়ে উঠে। একমাত্র আল্লাহর আদেশের নিরবাচ্ছন্ন অনুসরন অন্যায় ও অনৈতিক কাজ থেকে একজন মানুষকে ফিরায়ে রাখতে সক্ষম। সুতরাং সালাতের صَّلٰوةَ বাংলা অর্থ আল্লাহর আদেশ ছায়ার মত অনুসরন করা,মেনে চলা বা রবের সাথে মুখোমুখি সংযোগ স্থাপন করা।
অর্থাৎ আপনি আপনার উপর যে কিতাব প্রেরন করা হয়েছে উহা পড়ুন এবং সে অনুযায়ী কাজ করুন। নিশ্চয় নিরাবচ্ছন্ন (কোরানের আদেশ) অনুসরন অন্যায় ও অনৈতিক কাজ হতে ফিরায়ে রাখে।
সালাতের صَّلٰوةَ অর্থ যদি আল্লাহর সকল আদেশ নিষেধ নিরবচ্ছন মেনে নেয়া বুঝায় তবে নিঃসন্দেহে সালাতই হবে বেহেস্তের চাবী। নামাজ অর্থে বেহেস্তের চাবী হতে পারে না। তাহলে তো কোরানে বাকী আয়াতগুলি অর্থহীন অপ্রয়োজনীয় গন্য হয়। কোন দরকার ছিল না।
উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা-পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে, কিন্তু উহারা নহে-যাহারা তওবা করিয়াছে, ঈমান আনিয়াছে ও সৎকর্ম করিয়াছে। উহারা তো জান্নাতে প্রবেশ করিবে। উহাদের প্রতি কোন জুলুম করাহইবেনা।(১৯:৫৯-৬০)
এখানে صَّلٰوةَ মানে রবের কমান্ডা অনুসরন অর্থাৎ কোরানের সকল আদেশ নিরবাচ্ছন্ন অনুসরন অনুবাদ করলে আয়াতের মর্ম সঠিক ভাবে উপলবদ্ধি করা যায়।
নচেৎ বুঝাবে আগে নামাজ একরকম ছিল পরে তা কোন দল বা গোষ্ঠি পরিবর্তন করে ফেলেছে।
পৃষ্ঠা-২৯
সূরা হাজ্জ: তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ্কে সিজদা করে যাহা কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে ও পৃথিবীতে, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্রমণ্ডলী, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সিজদা করে মানুষের মধ্যে অনেকে ? আবার অনেকের প্রতি অবধারিত হইয়াছে শাস্তি। আল্লাহ্ যাহাকে হেয় করেন তাহার সম্মানদাতা কেহই নাই; আল্লাহ্ যাহা ইচ্ছা তাহা করেন।(২২:১৮)
এ আয়াত অনুযায়ী তারকা,গাছপালা,চন্দ্র,সূর্য,পর্বতরাজী, এমন কি জীবজন্তুও আল্লাহকে সিজদা কি ভাবে করে? আল্লাহর প্রদত্ত বিধান মত কার্য সম্পাদনকেই সিজদা বুঝিয়েছে। আল্লাহকে সিজদা করা মানে আল্লাহর ইচ্ছের কাছে নিজেকে সমর্পন করা।
সূরা নাহল ৪৯ ও ৫০ নং আয়াতঃ আল্লাহ্কেই সিজদা করে যাহা কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে, পৃথিবীতে যত জীবজন্তু আছে সে সমস্ত এবং ফিরিশতাগণও, উহারা অহংকার করে না।
সূরা ফাহত ২৯ আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাহাদেরকে রুকূ ও সিজদায় অবনত দেখিবে। তাহাদের লক্ষণ তাহাদের মুখমণ্ডলে সিজদার প্রভাবে পরিস্ফুটিত থাকিবে ; তওরাতে তাহাদের বর্ণনা এইরূপ এবং ইঞ্জীলেও তাহাদের বর্ণনা এইরূপই।তাদের চেহেরায় সিজদার চিহ্ন থাকে বলতে তাদের চেহারায় বিনয়ের ছাপ থাকে। চেহারায় সিজদার চিহ্ন মানে কপালে কাল দাগ নয়।
সূরা জুমার ৯ নং আয়াতে জুমার সালাতের কথা বলা হয়েছেঃ হে মু’মিনগণ! জুমু’আর দিনে যখন সালাতের জন্য আহ্বান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহ্র স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর, ইহাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর।(৯:৬২)
এখানে জুম্মা সম্মেলন এবং সেটা নির্দিস্ট কোন দিন বুঝায় না। সেটা যে কোন দিন হতে পারে। আর সলাতের অনুবাদ রবের কমান্ড বা কোরানের বিধিনিষেধ অনুসরন করা বসিয়ে দেখুন।
পৃষ্ঠা-৩০
দায়েমী সালাত, মানে সালাত সর্বক্ষন….যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত, (৭০:২৩)
الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙ
এত্র আয়াতে সলাত সর্বক্ষন হলে আপনি তাকে পাঁচ ওয়াক্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কোন সুযোগ আছে কি? তার মানে সলাত অর্থ নামাজ নয়। সলাত অর্থ রবের সকল কমান্ড অনুসরন করা বসিয়ে দেখুন মর্ম উপলবদ্ধী সহজ হয়ে যাবে। এবার সূরা মুদ্দাসের এর ৪২ আয়াতের প্রতি খেয়াল করলে ছল্লা মুছু্ল্লীর ধারনা ও অবস্থান বৈশিষ্ট উপলব্ধি সহজ হবে। ‘তোমাদেরকে কিসে সাকার-এ নিক্ষেপ করিয়াছে? ৭৪:৪২
مَا سَلَـكَكُمْ فِىْ سَقَرَ
এর পরের আয়াতে জাহান্নামীরা উত্তরে বলিবে: উহারা বলিবে, ‘আমরা মুসল্লিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না,
قَالُوْا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّيْنَۙ
এখন মুছুল্লীর বৈশিষ্ট কি? কাকে মুছুল্লী বলে, তার পরের আয়াতে প্রধান কয়টি বৈশিষ্ট বর্ননা করেছেন:
১)’আমরা অভাবগ্রস্তকে আহার্য দান করিতাম না,৭৪:৪৪
وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِيْنَۙ
২) ‘এবং আমরা বিভ্রান্ত আলোচনাকারীদের সঙ্গে বিভ্রান্তি মূলক আলোচনায় নিমগ্ন থাকিতাম। ৭৪:৪৫
وَكُنَّا نَخُوْضُ مَعَ الْخَـآٮِٕضِيْنَۙ
৩)’আমরা কর্মফল দিবস অস্বীকার করিতাম, ৭৪:৪৬
وَ كُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ الدِّيْنِۙ
পৃষ্ঠা-৩০
পরবর্তিতে সূরা আল মাউন থেকে মুছুল্লীদের লক্ষ্য করে আল্লাহ বলেন:
তুমি কি দেখিয়াছ তাহাকে, যে দীনকে অস্বীকার করে ?
اَرَءَيْتَ الَّذِىْ يُكَذِّبُ بِالدِّيْنِؕ
( আরায়তাল্লাযি ইউ কাজ্জিবু বুদ্দীন)
সে তো সে-ই, যে ইয়াতীমকে রূঢ়ভাবে তাড়াইয়া দেয়
فَذٰلِكَ الَّذِىْ يَدُعُّ الْيَتِيْمَۙ
( ফাযালিকাল্লাযি ইউদুউল ইয়াতিম)
এবং সে অভাব গ্রস্তকে খাদ্যদানে উৎসাহ দেয় না।
وَ لَا يَحُضُّ عَلٰى طَعَامِ الْمِسْكِيْنِؕ
(ওয়ালা ইয়াহুদ্দু আলা তা,আমিল মিছকিন) খাদ্য দানে
সুতরাং দুর্ভোগ সেই সালাত আদায়কারীদের, فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّيْنَۙ
( ফাওয়াইলুল্লিন মুছাল্লিন) অতএব দূর্ভোগ
যাহারা তাহাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন,
الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُوْنَۙ
( আল্লাযিনা হুম আন সালাতিহুম ছাহুন) উদাসীন
যাহারা লোক দেখানোর জন্য উহা করে, الَّذِيْنَ هُمْ يُرَآءُوْنَۙ
( আল্লাযিনা হুম ইউরাউনা) লোক দেখানো
এবং গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোট-খাট সাহায্য দানে বিরত থাকে।وَيَمْنَعُوْنَ الْمَاعُوْنَ ( ওয়া ইয়ামনা ঊনাল মাঊন)
এখানে মুল শব্দ ছল্লা এর অনুবাদ নামজ উল্লেখ করে নাই। বা সালাত এর কথা বলে নাই। বলেছে আমরা মুছুল্লী ছিলাম না। আর মুছুল্লীর বৈশিষ্ট হলো রবের আদেশ নিরাবচ্ছন্ন অনুসরন করা। সালাত সর্বক্ষনিক বিরতি হীন। ৭০:২৩ মোতাবেক। এবং এটাকে সলাতুল দায়য়েমুন উল্লেখ করেছেন।
الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙআল্লাযিনা হুম আঁলা সালাতিহিম দাইমুন।
পৃষ্ঠা-৩১
উক্ত আলোচনা থেকে বুঝা যায় সালাত সর্বক্ষনিক। সলাত অর্থ প্রচলিত আনুষ্ঠানিক নামাজকে বুঝায় না। সলাতের ফার্সী অনুবাদ নামাজ না বসিয়ে বাংলা অনুনাদ রবের আদেশ সমুহের নিরবাচ্ছন্ন অনুসরন বসালে সব আয়াতগুলির মর্ম বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য উপলব্ধি যোগ্য হয়। তাই নামজকে কেন্দ্র করেই মুসলমানদের মধ্যে এত এত মাযহাব উপমাযহাব। কারন কোরানে তো নামাজের স্ট্রাকচারাল গাইড লাইন নাই ই, বরং সাথে হাদীসকে যুক্ত করালেও নামাজের সর্বসম্মত স্ট্রাকচার দাড় করানো সম্ভব নয়। পরিচিত নামাজের ধারাবিবরন অতটা জটিল নয় যে কোরানে এ বিষয়ে বর্ননা দিতে অনেক আয়াত লাগতো বা হাদীসেও ডিটেইল প্রচলিত এই নামাজের ধারাবাহিক ধারা বর্ননা খুজে পাওয়া যায় না।
প্রচলিত আনুষ্ঠানিক যে কোরানে নেই এ কথাও অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে তা কি ভাবে এ নিয়ে এর পর আলোচনা করা হবে। ইরান ইরাক অঞ্চলে প্রচলিত সালাত তিন ওয়াক্ত।
আমাদের প্রচলিত বা পরিচিত নামাজের যে আনুষ্ঠানিকতা তা কখনোই কোরান বিরুদ্ধ নয়। কোরানে সালাত শব্দটি প্রার্থনা অর্থেও ব্যবহৃত হয়েছে। এ ছড়া দয়া, ক্ষমা প্রার্থণা,আল্লাহর দয়া,অনুগ্রহ চাওয়া, আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ত মহিমা বর্ননা করার কথা কোরানে বহুববার বলা হয়েছে।
নামাজের প্রতি রাকাতে আমরা সূরা ফাতিহা পড়ি। সূরা ফাতিহা সবচেয়ে মহত্ত দোয়া বা প্রার্থনা। আমাদের যতরকমের চাওয়া আছে সব আমরা নামাজে মাধ্যমেই চাইতে পারি।
কিন্তু নামাজ প্রতিষ্ঠার অর্থ মানুষকে নামাজ পড়তে বাধ্য করতে হবে, এবং সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইসলামিক রাষ্ট্র কায়েম করতে হবে, পারায় মহল্লায় মাসজিদ নির্মান করতে হবে, মসজিদে জামাতে নামাজ করতে হবে, কোন অবস্থাতেই নামাজ মাফ নেই এই নির্দিষ্ট পদ্ধতিতেই নামাজ পড়তে হবে, তিন জুম্মা না পড়লে সে আর মুসলমান থাকবে না, মুসলিম আর কাফেরের মধ্য পার্থক্য হচ্ছে নামাজ, হাশরের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসা নেওয়া হবে,যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে তারা বেহস্তে যাবে, এক ওয়াক্ত নামাজ না পড়লে
পৃষ্ঠা-৩০
৮০ হোকবা দোজখের আগুনে পুড়বে, —- নামাজ নিয়ে এমন প্রচলিত ধারনা কোরান বিরুদ্ধ বা কোরান অনঅনুমোদিত।
বরং আল্লাহ বলেছেন — বিশ্বাস এবং সৎকর্মকে জান্নাতের পুর্ব শর্ত। আকিমিস সালাত বলতে আল্লাহর প্রতিটি আদেশ ও নিষেধ ছায়ার মত অনুসরন করা। অর্থাৎ ঝড়, জলোচ্ছাস,যুদ্ধ, মৃত্যু শয্যায়েও আল্লাহর বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে। নামাজ আমাদের জন্য একটি মহত্তম প্রার্থনা। নামাজে দাড়িয়ে আমরা সব আবেদন-নিবেদন,কামনা – বাসনা, রোগ-শোক, দূঃখ-বেদনা, অভাব-অনটন, জীবন- জীবিকা,সমাজ সংসারের শত শত সমস্যা সরাসরি সর্ব শক্তিমান আল্লাহর কাছে উপস্থাপন করি। যত অভিযোগ – অনুযোগ, আশা- আকাংখা,ভয়-ভীতি, অজানা আশংকা পরম করুনাময়ের কাছে সমর্পন করি। সেজদায় নত হয়ে পরম দাতা দয়ালু আল্লাহর মহত্ত,শ্রেষ্ঠত মহিমা গাই। সব ভুল-ভ্রান্তি, পাপ-তাপের ক্ষমা চাই অসীম ক্ষমাশীল স্রষ্টার কাছে। মহা জ্ঞানী মহাপ্রভুর কাছেই চাই সাহায্য, শক্তি -সাহস ও সত্য পথের দিশা। যত রকমের দোয়া দাবী আছে সবই নিবেদন করি নামাজে।
নামাজ হচ্ছে আত্মশুদ্ধির পথ, আত্ম উন্নয়নের সিড়ি। এই নামাজ বা প্রার্থনায় সবচেয়ে জরুরী হচ্ছে মনের একাগ্রতা। নামাজের মাধ্যমেই যুক্ত হচ্ছি মহাশক্তিমান, মহা প্রভুর সাথে। প্রার্থনা যোগে সর্ব শক্তিমানের সাথে সংযোগ সংস্থাপনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম নামাজ।
আমি আমাদের প্রচলিত পদ্ধতিতেই নামাজ পড়ি। কারন এতে আমি অভ্যস্থ, এতেই আমি স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। কিন্তু নামাজের এই পদ্ধতি,প্রক্রীয়া এবং নামাজের এই প্রচলিত ধারনা কোরান বিধিত,নির্ধরিত বা চুড়ান্ত নয়। কিন্তু তিন অবস্থায় নামাজ আদায় করা যাবে না তা কোরানে স্পষ্ট করে বলে দেয়া আছে।
হে ঈমানদারগন তোমরা প্রার্থনার নিকটবর্তী হয়ো না, ১) নেশা গ্রস্থ অবস্থায় ২) যতক্ষন না বুঝতে পারছো তোমরা কি বলছো ৩) অবিপ্র অবস্থায়। আল্লাহ অন্তর্যামী। তাই আল্লাহকে যা বলবেন তা হতে হবে মনের কথা।
পৃষ্ঠা-৩১
নামাজে দাড়িয়ে বলছি:সরল সঠিক পুন্যপন্থা দাও গো মোদের বলি
চালাও সে পথে যে পথে তোমার প্রিয়জন গেছে চলি এই সরল সঠিক পুন্য পন্থা হচ্ছে কোরান। কিন্তু নামাজে দাঁড়িয়েও যদি স্মরণ করি জটিল, কঠিন, ভেজাল পন্থা,তবে এ নামাজ শুধু অর্থহীনই নয় এ নামাজ আমাদের নিয়ে যাবেঃ যে পথে তার চির অভিশাপ, যে পথে ভ্রান্তি চির পরিতাপ।
এ কারনেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া অনেককেই দেখি কোরানে নিষিদ্ধ অসৎ অপকর্মে ডুবে থাকতে।
কাবাগৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর।
وَمَا كَانَ صَلَاتُهُمْ عِنْدَ الْبَيْتِ اِلَّا مُكَآءً وَّتَصْدِيَةً ؕ فَذُوْقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُوْنَ
সূরা নম্বরঃ ৮, আয়াত নম্বরঃ ৩৫
পৃষ্ঠা-৩২
পর্ব -০৪
সালাত আরবী শব্দের অনুবাদ নামজ নয়। এটি পারস্যদের অনুবাদ।
বাংলা অনুবাদ “রবের বিধি নিষেধের মনোনিবেশ “।
হে মু’মিনগণ! জুম‘আর দিনে যখন সালাতের জন্য আহ্বান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহ্র স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয় – বিক্রয় ত্যাগ কর, ইহাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর। (৬২:৯)
দারুল হরবের দেশে কোন জুম্মার সালাত নেই। এটি সার্বজনিন স্বীকূত। তাই দ্বীনি বিশেষজ্ঞগন একমত হয়ে আখেরি জহুর নামে ৪ রাকাত সুন্নত নামাজ যুক্ত করে দিয়েছন, যাতে করে জুমআ আদায় না হলেও যেন জহুরের সালাত আদায় হয়ে যায়। গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত না হয়। এটি ইস্তেহাদের মাধ্যমে সংযোজন করা হলেও সর্ব মতে গৃহীত বলে সুন্নত নামে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন দুপুরে নামাজ ফরজ ৪ রাকাত হলেও জুম্মার দিনের দূপুরের নামাজ সংক্ষিপ্ত করে ২ রাকাত ফরজ কারা হয়েছে এজন্য় যে রাষ্ট্রীয় ভাষন অর্থাৎ খুৎবা শোনার জন্য ২ রাকাতের ফরজ আদায় হয়ে থাকে। এ জন্য খুৎবায় আরবীতে বলা হয়, ” আল সুলতানু জিল্যুলাল্লাহয় ওয়াল
আরদ…………”। যার অনুবাদ: বাদশাহ বা রাষ্ট্র প্রধান আল্লাহর ছায়া স্বরুপ, সুতারং ইচ্ছা অনিচ্ছায় তাহার আদেশ মান্য কর। ”
যদিও রাসুল সাঃ বা তাঁর পড় চার খলিফার সময় এমন খুৎবা বলা হয়নি, মোয়াবিয়ার শাশ্বন আমলে এ খুৎবার প্রচলন শুরু করেন মুয়াবিয়ার রাষ্ট্রীয় নিয়োগ প্রাপ্ত আলেম গন। যার ধারা বাহিকতা আজো চলমান। আমরা এখনো মুয়াবিয়ার প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক কালচারের ছায়াতলে আছি। রাসুল সাঃ যুগে নির্দিষ্ট করে শুক্রবারে জুম্মা হত না, যখন জরুরী প্রয়োজন দেখা দিত সেদিনই জুম্মার আহ্বান করতেন। এমন দেখা গেছে জুম্মার আহ্বান করে আবহাওয়ার বৈরিতার জন্য রাসুল সাঃ সেদিনে জুম্মা বাতিল করে দিয়েছেন পুনরায় ঘোষণা দিয়ে। তার মানে কোন ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান বা তার নিয়োগ প্রাপ্ত নায়েব যখন রাষ্ট্রের জরুরী প্রয়োজনে বা মুমিনের কল্যানে কোন
পৃষ্ঠা-৩৩
বিষেশ জরুরী আলোচনা শুনার জন্য আহ্বান করা হয় (৬২:৯) এ বর্ণিত আল্লাহর ভাষায় তাকে জুম্মার সালাত বা ইমামের আহ্বানে মুমিনের গণজামাতে আল্লাহর বিধি নিশেধের সংযোগ, অনুশীলনকেই জুম্মার সালত বলেছেন আল্লাহ উক্ত আয়াতে। ইমামের এমন আহবান পাওয়া মাত্র যে যে কাজে রত থাক তা বন্ধ করে ছুটে যাওয়া ফরজ। আয়াতের শেষে তাই আল্লাহ আরো ব্যাখ্যা সহ সতর্ক করে বলেনঃ ” ইহাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর।” এ জন্য মেয়েদের জন্য এ সালাত ফরজ নয়। কারন রাষ্ট্রীয় কল্যান, যুদ্ধ দামার আয়োজন নির্দেশনায় নারী ভুমিকা অপরিহার্য আল্লাহ করেন নাই। বর্তমান বৃটিশ প্রচলিত রাষ্ট্রের সাংসদীয় অধিবেশন এই আয়াতের আলোকেই রচিত। যদি এটি কোন ইসলামিক রাষ্ট্র এবং মুমিনদের নিয়ে সাংসদ গঠিত হতো তবে ১০০% ইসলামিক রাষ্ট্রের কার্যক্রম হতো। সংসদের প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্র প্রধানের নিয়োগ প্রাপ্ত নায়েব বা ইমামা হয়ে সমাজে জুম্মা কায়েম করতো। বৃটিশ প্রথাটি ঠিকই কোরানের আয়াতের থিমে তৈরী করে দিয়ে গেছে কিন্ত তাদের আদর্শ ঢুকিয়ে রেখে দিয়েছে।
বর্তমান প্রচলিত জুমআ ৬২:৯ এর আলোকে আল্লাহর মনোনীত জুম্মা নয়। এটি মোয়াবিয়ার রচিত জুম্মার সালাতের অনুষ্ঠান মাত্র। ধর্মজীবিরা এটাকে পুঁজি করে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে নিয়েছেন। সেজন্য তারা মোয়াবিয়ার নিকট কৃতজ্ঞ এবং তার গুনগানে পঞ্চমুখ। আমজনতা কোরান নিজ ভাষায় পড়েও না তাই সত্যটা উপলব্ধি করতেও সক্ষম নয়। ধর্মজীবিদের চেখানো পদ্ধতিতেই আমিন আমিন করে গরীবের হজ্জ আদায় করে মহা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে সুবহানাল্লা তসবিহ জপে।
তাই এসব নাদানের উদ্দেশ্যে রাসুল অভিযোগ করে বলবেন, ” হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় তো এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করে।’ (২৫:৩০)
আল্লাহ রাসুলকে শান্তনা দিয়ে জানানঃ ” অচিরেই উহারা এই কোরআন সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবে “। (৪৩:৪৪ )
আদায় করার মত কোন জিনিস বা কার্যক্রম নয়। সালাত নিজের মধ্যে এবং
পৃষ্ঠা-৩২
সমাজে কায়েম বা প্রতিষ্ঠত করার এক অনুশীলন যা রবের পক্ষ থেকে বালেগ সব নর নারীর জন্য ফরজ করা হয়েছে। ইহা সৎকাজের মধ্যে উত্তম একটি সৎকাজ বটে। জুম্মা অর্থ — “একত্রিত হওয়া”।
আল্লাহ অতীত, বর্তমান,ভবিষ্যতে মানব কি করবে বা অতীতে কি করেছ তার উপমাও কোরানে বিষদ ভাবে বলেছেন। অতীত জাতীর মত মুয়াবিয়ার রাষ্ট্রীয় আলেমগণও যে লালসা পরবস হয়ে যে সালাতকে নষ্ট করবে এবং বর্তমান ধর্মজীবিগন ও একই পথের অনুসারী তা সূরা মারিয়মের ৫৯ নং আয়াতে আল্লাহ ব্যক্ত করেছেন। উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা – পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে,(১৯:৫৯)
অন্যদিকে আল্লাহর মনোনীত জুম্মার সালাতকে নিজেদের মনগড়া ভাবে পড়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবে যে, এটাও আল্লাহ অতীত, ভবিষ্যত এবং বর্তমানের জন্য প্রকাশ করে দেন সূরা আনফালের ৩৫ নং আয়াতেঃ ” কা‘বাগৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর। (৮:৩৫)
প্রকৃত জুমআর সালাত কিয়ামত পর্যন্ত কেমন হবে, এ বিষয়ে ইংগীত দিয়ে সূরাতুল মুমিনুনের ১-৩ নং আয়াতে আল্লাহ জানানঃ ” অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মু’মিনগণ- যারা নিজেদের সালাতে বিনয়, নম্র-যারা অসার ক্রিয়া-কলাপ হতে বিরত থাকে।” (মুমিনুন:১-৩)
বর্তমান মোয়াবিয়ার পৃষ্ঠপোষক আলেমদের দ্বারা রচিত প্রচলিত জুম্মা নামাজ আল্লাহর মনোনিত জুম্মা নয়, বরং সূরা মুমিনের ৩ নং আয়াতের বর্ণিত ” অসার ক্রিয়া কলাপ সমৃদ্ধ একটি জুম্মার সালাত। যাতে কোন কল্যান নেই বলে আলোচিত আয়াতের দৃষ্টিতে আমি মনে করি।
সবটুকু আলোচনা কোরআন পড়ে আমার একান্ত ব্যক্তিগত উপলব্ধি। তাই কাউকে মানার জন্য আহ্বান করছি না। ভাল লাগলে গ্রহন করবেন, খারাপ
পৃষ্ঠা-৩৩
লাগলে ডাস্টবিনে ফেলে দিবেন। আর যদি আলোআনার উপর কোন দ্বিমত থাকে রেফারেন্স সহ জানাবেন, আমি শুধরে নেব।
পরিশেষে হাদীস নির্ভরশীলদের জন্য একটি হাদীসের রেফারেন্স দিয়ে যাই। হাদীসটি হলোঃ
রাসুল সা. বলেছেনঃ কোনো ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অর্থহীন কথা বা কাজ ত্যাগ করা।’৷ (তিরমিজি: ২৩১৮)
কোরআন নিজ মাতৃভাষায় পড়ার দাওয়াত রইল। স্বয়ং রাসুলের এমন দাওয়াতের আহ্বানে মানুষ যখন মুখ ফিরিয়ে নেয় আল্লাহ তখন রাসুলের উদ্দেশ্যে বলেনঃ
” তুমি কি শোনাইতে পারিবে বধিরকে অথবা যে অন্ধ ও যে ব্যক্তি স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছে, তাহাকে কি পারিবে সৎপথে পরিচালিত করিতে? ( ৪৩:৪০)
আমি তাই হতাশ হই না কেহ আমার লিখায় মনোনিবেশ না করলে।
ReplyForward Add reaction |
পৃষ্ঠা-৩৩
পর্ব-০৫
ওহী হচ্ছে মানুষের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত নির্দেশ যা লৌহমাফুজে সংরক্ষিত মূল কিতাবের অংশ বিশেষ।ওহী জিব্রাইল ফিরিস্তার মাধ্যমে বিভিন্ন ঘটনার পরিপেক্ষিতে অল্প অল্প করে নাযিল করা হয়েছে যাতে মানুষ আল্লাহর নির্দেশ ভাল ভাবে আত্মস্থ করতে পারে।
আল্লাহ বলেনঃ আর কুরআন আমি নাযিল করেছি কিছু কিছু করে, যেন তুমি তা মানুষের কাছে পাঠ করতে পার ধীরে ধীরে এবং আমি তা নাযিল করেছি পর্যায়ক্রমে।( ১৭:১০৬)
মানুষের সাথে আল্লাহর প্রত্যক্ষ যোগাযোগের তিনটি মাধ্যম উল্লেখ করা হয়েছে—(৪২:৫১)
১. ফিরিস্তা ছাড়া বিশেষ ওহীর মাধ্যমে আল্লাহ্ মানুষের সাথে কথা বলেন। জন্মগতভাবে আল্লাহ্ সকল মানুষ কে এই বিশেষ অহী দিয়ে থাকেন, যার মাধ্যমে মানুষ সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় বুঝতে পারে। আমরা কোথায় থেকে আসলাম, কে আমাদের সৃষ্টি করলো এই সকল বিষয় নিয়ে আমরা যে মনে মনে কথা বলি তা মূলত আল্লাহর কাছে জিজ্ঞেসার অন্তরালে তার সাথে কথা বলা, কারন এই গুলি আল্লাহ্ই আমাদের অন্তরে উদ্রেক করে দেন।
২. আল্লাহ্ সরাসরি আড়ালে থেকে মানুষের সাথে কথা বলতেন এবং নির্দেশ দিতেন। ৪২ঃ৫১ আয়াতে আল্লাহ্ মানুষের সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগের ক্ষেত্রে তিনটি মাধ্যমের কথা বলা হয়েছে। আয়াতে মানুষের কথা বলা হয়েছে ফলে আল্লাহর এই বিধান শুধু নবী রাসূল নয় বরং সব মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
৩. বার্তাবাহকের মাধ্যমে কিতাবের ওহী পাঠিয়ে কথা বলাঃ কিতাবের ওহী হচ্ছে লৌহ মাহফুজে সংরক্ষিত মূল কিতাবের অংশ বিশেষ যা আল্লাহ্ বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন নবীর মাধ্যমে এই বিধান মানুষের মাঝে পৌঁছানোর ব্যবস্হা
পৃষ্ঠা-৩৪
করতেন তারা সবাই ছিল পুরুষ। আল্লাহ্ বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জিব্রাইল ফিরিস্তার মাধ্যমে নবীদের নিকট এই বিধান পৌঁছানোর ব্যবস্হা করতেন। আল্লাহ্ নবী ছাড়া এই বিধান সাধারণত মানুষের নিকট পাঠাতেন না।
আর আমি তোমার পূর্বে কেবল পুরুষদেরকেই রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছি, যাদের প্রতি আমি ওহী পাঠিয়েছি। সুতরাং জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর, যদি তোমরা না জানো।(১৬:৪৩)
পবিত্র সত্তাগণ(ফিরিস্তা) ছাড়া আর কেউ তা(লওহে মাহফুজে সংরক্ষিত মূল কিতাব) স্পর্শ করতে পারে না। (৫৬:৭৯)
আল্লাহ্ কিতাবী ওহী ছাড়াও সাধারণ মানুষ ও নবীদের নিকট আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশ পাঠাতেন। এমন কি প্রানীদের প্রতিও ওহী প্রেরন করেছেন।
তোমার প্রতিপালক মৌমাছিকে ওহীর দ্বারা নির্দেশ দিয়াছেন, ‘গৃহ নির্মাণ কর পাহাড়ে, বৃক্ষে ও মানুষ যে গৃহ নির্মাণ করে তাহাতে; (১৬:৬৮)
তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় নির্দেশে ওহীসহ ফিরিশ্তা প্রেরণ করেন এই বলিয়া যে, তোমরা সতর্ক কর, নিশ্চয়ই আমি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই; সুতরাং আমাকে ভয় কর। (১৬:২)
ওহীর বহির্ভুত এই নির্দেশ গুলি আল্লাহ্ পরবর্তীতে মূল কিতাবের ওহীতে স্হান দিয়ে আমাদের কে ঈমানী চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হতে প্রেরনা যোগানোর ব্যবস্হা করেছে যুগের পর যুগ। অপর দিকে আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাঃ এর কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কিতাবী ওহী ছাড়া যে সব নির্দেশ আসতো সেগুলি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা উল্লেখিত আয়াত গুলি নিয়ে একটু চিন্তা করলে অতি সহজেই বুঝতে পারবো।
রাসূল সাঃ এর কাছে কিতাবী ওহী ছাড়াও গোপনে আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশ পাঠাতেনঃ
পৃষ্ঠা-৩৪
প্রমান ১
আর তুমি অন্তরে যা গোপন রাখছ আল্লাহ তা প্রকাশকারী এবং তুমি মানুষকে ভয় করছ অথচ আল্লাহই অধিকতর হকদার যে, তুমি তাকে ভয় করবে; অতঃপর যায়েদ যখন তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম, যাতে পালক পুত্রদের স্ত্রীদের ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে; যখন তারা তাদের স্ত্রীদের সাথে বিবাহসম্পর্ক ছিন্ন করে। আর আল্লাহর নির্দেশ কার্যকর হয়ে থাকে। (আল-আহযাব ৩৩:৩৭)
প্রমান ২
আর যখন নবী তার এক স্ত্রীকে গোপনে একটি কথা বলেছিলেন; অতঃপর যখন সে (স্ত্রী) অন্যকে তা জানিয়ে দিল এবং আল্লাহ্ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন, তখন নবী সেই বিষয়ে স্ত্রীকে কিছু বললেন এবং কিছু বললেন না। যখন সে তাকে বিষয়টি জানাল তখন সে বলল, ‘আপনাকে এ সংবাদ কে দিল?’ সে বলল, ‘মহাজ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ আমাকে জানিয়েছেন।’( ৬৬:৩)
১.”আল্লাহ্ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন” এই জানানো বিষয়টি আল্লাহ্ নবীকে গোপন ওহীর মাধ্যমে যানিয়েছিলেন কিতাবী ওহীর মাধ্যমে নয়। কারন আমরা যানি কিতাবী ওহী জিব্রাইল ফিরিস্তা নিয়ে এসে রাসূল সাঃ কে তা বলতেন এবং রাসূল সাঃ সেই কথা শুনে ওহী লেখকদের কে বলতেন এবং তারা সাথে সাথে তা লিখতেন ফলে আসে পাশের সব মুসলিমরা তা যানতে পারতেন।
উপরের আয়াতটিতে জানানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে কিতাবী ওহীর মাধ্যমে হয়নি বলেই রাসূল সাঃ এর স্ত্রী প্রশ্ন করেছিল “আপনাকে এ সংবাদ কে দিল?’’ যদি প্রকাশ্য ওহীর মাধ্যমে যানানো হতো তবে রাসূল সাঃ এর স্ত্রী তা যানতো এবং সে এই প্রশ্ন করতো না যে “আপনাকে এ সংবাদ কে দিল?’
উপরের আয়াতটি প্রমান করে যে রাসূল সাঃ এর নিকট কিতাবী ওহী ছাড়াও গোপনে ওহী আসতো। যারা এটা বিশ্বাস করেনা তা মূলত কুরআন কেই অস্বীকারকরে।
পৃষ্ঠা-৩৫
৩. এই গোপন ওহীর কথা কিন্তু আল্লাহ্ বলেননি যে আমি ওহীর মাধ্যম যানিয়ে দিলাম, দেখুন আল্লাহ্ কি বলেছিলেন “আল্লাহ্ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন” নবী কিন্তু বলেননি যে আল্লাহ্ ওহীর মাধ্যমে আমাকে যানিয়েছেন নবী কি বলেছিল দেখুন ” সে(নবী)বলল, ‘মহাজ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ আমাকে জানিয়েছেন।’’
এ থেকে এটাই প্রমানিত হয় যে এই গোপন কথাটি আল্লাহ আড়ালে থেকে সরাসরি রাসূল সাঃ কে যানিয়েছিলেন।
প্রমান ৩
স্মরণ কর, যখন তুমি মুমিনদেরকে বলছিলে, ‘তোমাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রব তোমাদেরকে তিন হাজার নাযিলকৃত ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করবেন’?(৩ঃ১২৪)
‘স্মরন কর’ কথা বলার অর্থই হচ্ছে আল্লাহ্ গোপনে এই কথাটি বলেছিল আর যদি কিতাবী ওহীর মাধ্যমে বলা হতো তবে সাহাবীরা যানতে পারতেন ফলে রাসূল সাঃ কে এই কথা বলার প্রয়োজন পড়তো না যে, ‘তোমাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রব তোমাদেরকে তিন হাজার নাযিলকৃত ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করবেন’? আর স্মরন কর কথার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্ আগে গোপন ওহীর মাধ্যমে যানিয়েছেন, পরে সেই কথা কিতাবী ওহীতে বর্ননা করছেন।
আল্লাহ্ আরেকটি মাধ্যমে নবী-রাসুলদের নির্দেশ দিতেন
নিশ্চয়ই এই কুরআন এক সম্মানিত রাসূলের বহনকৃত বার্তা।
اِنَّهٗ لَقَوْلُ رَسُوْلٍ كَرِيْمٍۚ ۙ (৬৯:৪০)
বল, ‘তোমাদের ঊর্ধ্বদেশ অথবা পাদদেশ হইতে শাস্তি প্রেরণ করিতে, অথবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করিতে অথবা এক দলকে অপর দলের সংঘর্ষের আস্বাদ গ্রহণ করাইতে তিনিই সক্ষম।’ দেখ, আমি কিরূপে বিভিন্ন প্রকারে আয়াতসমূহ বিবৃত করি যাহাতে তাহারা অনুধাবন করে।
পৃষ্ঠা-৩৬
بَعْضَكُمْ بَاْسَ بَعْضٍ ؕ
শব্দার্থ: بَعْضَكُمْ = কাউকে তোমাদের (দিয়ে) , بَأْسَ = সংঘর্ষের (কুফল) , بَعْضٍ = অন্যকাউকে,
অনুবাদ: এক দলকে আর এক দলের শক্তির স্বাদ গ্রহণ করিয়ে দিতে সক্ষম। (৬:৬৫)
তোমার সম্প্রদায় তো উহাকে মিথ্যা বলিয়াছে অথচ উহা সত্য। বল, ‘আমি তোমাদের কার্যনির্বাহক নই।’
وَكَذَّبَ بِهٖ قَوْمُكَ وَهُوَ الْحَـقُّ ؕ قُلْ لَّسْتُ عَلَيْكُمْ بِوَكِيْلٍؕ
ওয়া কাযযাবা বিহী কাওমুকা ওয়া হুয়াল হাক্কু ক্বুল লাছতু আ’লাইকুম বিওয়াকিল। (৬:৬৬)
শব্দার্থ: وَكَذَّبَ = এবং অস্বীকার করেছে, بِهِ = সম্পর্কে সে, قَوْمُكَ = তোমার জাতি, وَهُوَ = অথচ তা (অর্থাৎআয়াত) , الْحَقُّ = সত্য, قُلْ = তুমি বলো, لَسْتُ = আমি নই, عَلَيْكُمْ = উপর তোমাদের , بِوَكِيلٍ = কর্মবিধায়ক,
১) كَذَّبَ ( কাযযাব) = মিথ্যে বলা, وَكَذَّبَ = এবং মিথ্যে বলেছে বা অস্বীকার করেছে।
২) هِ ( হু ) = সে ,(সর্বনাম), বি = স্ম্পর্কে/বিষয়ে ( অব্যয়) بِهِ (বিহী) = সে সম্পর্কে
৩) قَوْمُ (ক্বওম) = জাতি, كَ (কা) সর্বনান অর্থ আপনি/তুমি
সতরাং قَوْمُكَ ( ক্বাওমিকা) = তোমার জাতি
পৃষ্ঠা-৩৭
৪) وَهُوَ ( ওয়াহুয়া) এখানে ওয়া অব্যয় এবং হুয়া সর্বনাম। অর্থাৎ وَهُوَ = অথচ তাহা;
৫) الْحَقُّ (হাক্কু) = সত্য,
৬) قُلْ = বলো
৭) لَسْتُ ( লাছতু) = আমি নই,
৮) عَلَيْكُمْ = উপর তোমাদের , আলা অর্থ উপরে, কুম সর্বনাম, অর্থ তোমাদের
৯) بِوَكِيلٍ (বিওয়াকিল) = কর্মবিধায়ক/ উকিল
বালাগাত: তোমার জাতি সে বিষয়ে অস্বীকার করছে। অথচ তাহা সত্য। এদেরকে বলে দাও, আমাকে তোমাদের ওপর কর্ম্বিধায়ক নিযুক্ত করা হয়নি।
কোর’আনে প্রচুর সর্বনাম ব্যবহৃত হয়েছে।
সর্বনাম যখন ব্যবহৃত হয় তখন বাক্যের মূল বক্তব্য অনুধাবন করার জন্য কোন সর্বনামটি কার দিকে ইশারা দিলো, তা নির্ধারণ করার উপর নির্ভর করে বাক্যের অর্থ বুঝতে হয়।
যেমন বাক্যে আছে, “সে বললো” এখানে এই “সে” কে? ইবলিস? খোদা? নাকি অন্য কোন সত্তা?
قَالَ إِنَّكَ مِنَ ٱلْمُنظَرِينَ
শব্দার্থ: قَالَ = (আল্লাহ) বললেন , إِنَّكَ = নিশ্চয়ই তুমি , مِنَ = অন্তর্ভুক্ত, الْمُنْظَرِينَ = অবকাশ দেওয়া,
পৃষ্ঠা-৩৮
অনুবাদ: তিনি বললেনঃ “নিশ্চয় তোমাকে অবকাশ দেয়া হলো।” (৭:১৫)
মুনজরিন শব্দটি মূল কোন শব্দ থেকে এসেছে? নাজারা না? নাজারা শব্দের মূল অর্থ কী?
নাজারা অর্থ দেখা, পথ দেখা বা পথপানে তাকিয়ে থাকা, বা কোন কিছুর চূড়ান্ত পরিণতি দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করা, যেমন প্রিয়তম স্বামীর যুদ্ধ হতে বিজয়ী বেশে ফিরে আসার অপেক্ষায় পথ পানে চেয়ে বসে থাকে তার প্রিয়তমা স্ত্রী।
এই অপেক্ষার পথপানে চেয়ে থাকাটা উভয় দিক থেকেই হয়, যুদ্ধে থাকা প্রিয়তম স্বামীর যেমন, তেমন গৃহে থাকা তার পরিবারের সদস্যদেরও।
তাই আমরা সবসময় অপেক্ষার পথপানে চেয়ে বসে থাকি চূড়ান্ত পরিণতি দেখার আশায়।
পৃষ্ঠা-৩৪
আল্লাহ চরিত্রের দিক থেকে মানুষকে শ্রেনী বিন্যাসের জন্যে আল কোর’আনে ৪ টি শব্দ ব্যবহার করেছেন। যেমন –
বাশার [الْبَشَر ]
নাস [النَّاس ], এবং
ইনসান [ الْإِنْسَان ]
খলিফা –[-خَليفَةً]
উপরের এ তিনটি শব্দের অর্থই মানুষ। কিন্তু তিনটি শব্দ দ্বারা একই চরিত্রের মনুষকে বোঝানো হয় না। অর্থৎ, প্রত্যেকটি শব্দ-ই আলাদা আলাদা চরিত্রের মানুষকে নির্দেশ করে। আল কোর’আনের মুজেযা এটাই।
কোর’আনে একই জিনিসের অনেকগুলো সমর্থক শব্দ থাকলেও প্রত্যেকটি শব্দের আলাদা আলাদা সংজ্ঞা থাকে। প্রতিটি শব্দ-ই ইউনিক। ফলে, কোর’আনের একটি শব্দের স্থানে অন্য কোনো সমর্থক শব্দ বসানো যায় না।
বাশার, নাস এবং ইনসান – এ তিনটি শব্দ মানুষের তিনটি স্তরবিন্যাসকে নির্দেশ করে। মানুষের এই তিনটি স্তরবিন্যাস তাদের ধর্মের কারণে হয়নি। বরং মানুষের স্বভাব ও বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে এই তিনটি স্তরবিন্যাস করা হয়েছে।
ইনসান শব্দটি আরবি ‘নাসিয়ূন‘ উৎস-মূল থেকে সৃষ্টি হয়েছে। যার অর্থ ভুলে যাওয়া বা ভুল হওয়া। সে হিসেবে তার সাদামাটা অর্থ হল, ইনসান এমন সৃষ্টির নাম যে, বারে বারে তার অতীত ভুলে যায়, তার ওয়াদার কথা ভুলে যায়, স্বীয় প্রভুর কথা ভুলে যায়। অন্য ভাবে যার অর্থ সে বারে বারে ভুল করে। কোর’আনে যত জায়গায় ‘ইনসান’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, তত জায়গায় মানুষের নেতিবাচক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। কোর’আন থেকে এবার কয়েকটি উদাহরণ দেখুন।
পৃষ্ঠা-৩৫
قُتِلَ الۡاِنۡسَانُ مَاۤ اَکۡفَرَہٗ ۱۷ -আবাসা-১
অর্থঃ মানুষ ধ্বংস হোক! সে কত অকৃতজ্ঞ।
اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لِرَبِّہٖ لَکَنُوۡدٌ ۚ﴿۶ সূরা আদিয়াত-৬
অর্থঃ নিশ্চয় মানুষ তার রবের প্রতি বড়ই অকৃতজ্ঞ।
اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَفِیۡ خُسۡرٍ ۙ﴿۲﴾ সূরা আসর-২
অর্থঃ নিশ্চয় মানুষ ক্ষতির মাঝে নিপতিত।
এছাড়াও সূরা ইউনূসের-১২, হুদ-০৯,ইব্রাহিম -৩৪, বণী ইসরাইল-৬৭, ১০০, ঝুমার-০৮ ও ৪৯, যুখরফ-১৫, সূরা কেয়ামাহ-৩৬ নং আয়াতের মাঝে এরকম কিছু নেতিবাচক চারিত্রিক বিশিষ্টয়ের কথাই উল্লেখ আছে। কিন্তু ‘ইনসান’ স্তরের উপরেও মানুষের অনেক স্তর আছে।
এখন চলুন, সেগুলো দেখে নেয়া যাক।
মর্যাদাগতভাবে ‘ইনসানের’ উপরের স্তরে যেই মানুষেরা আছে, তাদেরকে কোর’আনে বলা হয়েছে ‘নাস’ [النَّاس ]। নাস শব্দের অর্থও মানুষ। কিন্তু ‘নাস’ স্তরের মানুষের মাঝে ভালো মানুষও আছে, আবার খারাপ মানুষও আছে।
‘নাস’ নামক ভালো মানুষের উদাহরণ।
১ – মানুষের মধ্য থেকেই আল্লাহ রাসূল মনোনীত করেন।
اللَّهُ يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ ﴿الحج: ٧٥
“আল্লাহ ফেরেশতা ও মানুষের মধ্য থেকে রাসূল মনোনীত করেন। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্ব দ্রষ্টা।” [সূরা ২২/হাজ্জ – ৭৫]
পৃষ্ঠা-৩৬
২ – ইসলামের বিজয় দেখলে যারা দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করবে, তারা ‘নাস’ স্তরের মানুষ।
وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا ﴿النصر: ٢
“এবং আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন।” [সূরা ১১০/নাসর – ২]
৩ – আল্লাহর জন্যে নিজের প্রাণ উৎসর্গকারী মানুষেরাও ‘নাস’ স্তরের মানুষ।
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْرِي نَفْسَهُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّهِ وَاللَّهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ ﴿البقرة: ٢٠٧
“আর মানুষের মাঝে এমন কিছু মানুষ রয়েছে, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভার্থে আত্ম-বিক্রয় করে থাকে। আল্লাহ হলেন তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান।” [ সূরা ২/বাকারা – ২০৭]
এখন দেখুন, ‘নাস’ নামক খারাপ মানুষদের উদাহরণ।
১ – ‘নাস’ স্তরের মানুষেরা হবে জাহান্নামের জ্বালানি।
فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا وَلَن تَفْعَلُوا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ ﴿البقرة: ٢٤
“আর যদি তোমরা (কোর’আনের অনুরূপ) কিছু না আনতে পার, অবশ্য তা তোমরা কখনও তা আনতে পারবে না, তাহলে সে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য।” [সূরা ২/বাকারা – ২৪]
পৃষ্ঠা-৩৭
২ – ‘নাস’ স্তরের মানুষদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ।
وَإِنَّ رَبَّكَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَشْكُرُونَ ﴿النمل: ٧٣
“নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তা মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ।” [সূরা ২৭/নামল – ৭৩]
৩ – ‘নাস’ স্তরের মানুষদের কেউ কেউ খুবই ঝড়গাটে ও তর্ক প্রিয়।
وَمِنَ النَّاسِ مَن يُعْجِبُكَ قَوْلُهُ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيُشْهِدُ اللَّهَ عَلَىٰ مَا فِي قَلْبِهِ وَهُوَ أَلَدُّ الْخِصَامِ ﴿البقرة: ٢٠٤
“মানুষদের মধ্যে কেউ কেউ এমন আছে, পৃথিবীর জীবন সম্পর্কে যার কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবে। সে তার অন্তরের বিষয়ে আল্লাহকে সাক্ষী রাখে। প্রকৃতপক্ষে সে কলহপ্রিয়।” [সূরা ২/বাকারা – ২০৪]
৪ – ‘নাস’ স্তরের অধিকাংশ মানুষ-ই অজ্ঞ।
قُلِ اللَّهُ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يَجْمَعُكُمْ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَا رَيْبَ فِيهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ ﴿الجاثية: ٢٦
“আপনি বলুন, আল্লাহই তোমাদেরকে জীবন দান করেন, অতঃপর তিনি মৃত্যু দেন, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্রিত করবেন, যাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বোঝে না। [সূরা ৪৫/জাছিয়া – ২৬]
লক্ষ্য করুন।
কোর’আনে ‘ইনসান’ শব্দটি যতবার ব্যবহার করা হয়েছে, ততবার-ই সকল মানুষকে একসাথে বুঝানো হয়েছে, এবং সেখানে মানুষের ভালো কোনো
পৃষ্ঠা-৩৮
চারিত্রিক গুনের কথা উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়েছে – মানুষেরা অকৃতজ্ঞ, মানুষেরা অজ্ঞ, মানুষেরা তর্ক প্রিয়, ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু কোর’আনে যখন ‘নাস’ শব্দ দিয়ে মানুষকে বুঝানো হয়েছে, তখন কিছু কিছু মানুষকে ভালো বলা হয়েছে, এবং অধিকাংশ মানুষকে-ই খারাপ বলা হয়েছে। যেমন, উপরের আয়াতগুলোতে বলা হচ্ছে – অধিকাংশ মানুষ অকৃতজ্ঞ, অধিকাংশ মানুষ অজ্ঞ, অধিকাংশ মানুষ তর্কপ্রিয়।
সুতরাং, এ থেকে বোঝা যায় যে, মানুষের স্তরবিন্যাসে ইনসানের উপরের স্তরে রয়েছে ‘নাস’ নামক স্তর।
তারপর আসুন, ‘নাস’-এর উপরের স্তরে যেসব মানুষদের রাখা হয়েছে, কোর’আনে তাদেরকে বলা হয়েছে ‘বাশার’। ‘বাশার’ শব্দের অর্থও মানুষ। কিন্তু এরা ‘নাস’ স্তরের মানুষদের মত না। কোর’আনে ‘বাশার’ শব্দটি সাধারণত উন্নত চরিত্রের মানুষদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে।
‘নাস’ স্তরের অধিকাংশ মানুষ-ই খারাপ, কিন্তু ‘বাশার’ স্তরের অধিকাংশ মানুষ-ই ভালো। ‘বাশার’ স্তরের মানুষেরা হোক মুসলিম বা অমুসলিম, তাদের চরিত্র সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক উন্নত হয়ে থাকে।
কোর’আন থেকে এবার কয়েকটি উদাহরণ দেখুন।
১ – যে মানুষকে সেজদা করার জন্যে আল্লাহ তায়ালা ইবলিসকে আদেশ দিয়েছেন, সে ছিল ‘বাশার’ স্তরের মানুষ।
قَالَ لَمْ أَكُن لِّأَسْجُدَ لِبَشَرٍ خَلَقْتَهُ مِن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ ﴿الحجر: ٣٣
“(ইবলিস) বলল: আমি এমন নই যে, একজন মানুষকে সেজদা করব, যাকে আপনি পচা কর্দম থেকে তৈরি ঠনঠনে বিশুষ্ক মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। [সূরা ১৫/হিজর – ৩৩]
পৃষ্ঠা-৩৯
২ – নবী ও রাসূলগণ ছিলেন ‘বাশার’ স্তরের মানুষ।
قَالَتْ لَهُمْ رُسُلُهُمْ إِن نَّحْنُ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ يَمُنُّ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَمَا كَانَ لَنَا أَن نَّأْتِيَكُم بِسُلْطَانٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ ﴿ابراهيم: ١١
“তাদের রাসূলগণ তাদেরকে বললেন: আমারাও তোমাদের মত মানুষ, কিন্তু আল্লাহ বান্দাদের মধ্য থেকে যার উপরে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। আল্লাহর নির্দেশ ব্যতীত তোমাদের কাছে প্রমাণ নিয়ে আসা আমাদের কাজ নয়; আল্লাহর উপর ইমানদারদের ভরসা করা উচিত।” [সূরা ১৪/ইব্রাহিম – ১১]
৩ – ঈসা (আ)-এর জন্মের সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে রুহ এসে ‘বাশার’ বা মানব আকৃতি ধারণ করে।
فَاتَّخَذَتْ مِن دُونِهِمْ حِجَابًا فَأَرْسَلْنَا إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا ﴿مريم: ١٧
“অতঃপর (লোকজন) থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্যে (মারিয়াম) পর্দা করলো। অতঃপর আমি তার কাছে আমার রূহ প্রেরণ করলাম, সে তার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল।” [সূরা ১৯/মারিয়াম – ১৭]
৪ – আল্লাহ তায়ালা ‘বাশার’ স্তরের মানুষের কাছে তাঁর বার্তা পাঠান।
وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلَّا وَحْيًا أَوْ مِن وَرَاءِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولًا فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاءُ إِنَّهُ عَلِيٌّ حَكِيمٌ ﴿الشورى: ٥١
“মানুষের এমন মর্যাদা নাই যে, আল্লাহ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন। কিন্তু ওহীর মাধ্যমে, অথবা পর্দার অন্তরাল থেকে, অথবা তিনি কোন দূত প্রেরণ করবেন, অতঃপর আল্লাহ যা চান, সে তা তাঁর অনুমতিক্রমে পৌঁছে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বোচ্চ প্রজ্ঞাময়।” [সূরা ৪২/শূরা – ৫১] দেখুন, ‘বাশার’ স্তরের মানুষেরা ‘নাস’ ও ‘ইনসান’ স্তরের মানুষ থেকে অনেক
পৃষ্ঠা-৪০
উন্নত। সকল নবী ও রাসূল ছিলেন ‘বাশার’। ‘বাশার’ স্তরের মানুষের নিকট আল্লাহ ওহী পাঠান। কোর’আনে ‘বাশার’ শব্দটি ইতিবাচক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। ‘বাশার’ শব্দমূল থেকে আসা আরেকটি শব্দ কোর’আনে প্রচুর ব্যবহার করা হয়েছে। তা হলো ‘বুশরা’। এর অর্থ সুসংবাদ।
এখানে একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন –
কেউ ‘বাশার’ হয়ে গেলেই তিনি পূর্ণ সফল হয়ে যান না। তাকে মুমিন হতে হয়, মুসলিম হতে হয়, এবং তারও উপরে আরো অনেকগুলো উন্নত ধাপ অতিক্রম করতে হয়। এ জন্যে কোর’আনে ‘বাশার’ স্তরের মানুষদের বলা হচ্ছে –
نَذِيرًا لِّلْبَشَرِ ﴿٣٦﴾ لِمَن شَاءَ مِنكُمْ أَن يَتَقَدَّمَ أَوْ يَتَأَخَّرَ ﴿المدثر: ٣٧﴾
“মানুষের জন্যে সতর্ককারী। তোমাদের মধ্যে যে সামনে অগ্রসর হতে চায়, এবং যে পিছিয়ে পড়তে চায়, তার জন্যে (সতর্ক)।” [সূরা ৭৪/মুদ্দাছছির – ৩৬, ৩৭]
দেখুন,‘বাশার’ শব্দ দিয়ে কোর’আনে নিউট্রাল মানুষদের বোঝানো হয়। অর্থাৎ, যারা ভালো ও মন্দের ঠিক মাঝামাঝিতে অবস্থান করে। ‘বাশার’ স্তরের মানুষেরা ‘ইনসান’ ও ‘নাস’ স্তরের মানুষের মত খারাপ না, আবার তারা পূর্ণ সফলও না। তারা ইচ্ছা করলে ইনসানের স্তরে নেমে যেতে পারে, আবার তারা ইচ্ছা করলে অনেক উন্নত স্তরে পৌঁছে যেতে পারে। এখনে একটি প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে যখন সৃষ্টি করেছিলেন, তখন আমরা কোন স্তরের মানুষ ছিলাম? বাশার, নাস, নাকি ইনসান? উত্তরটা কোর’আনে আছে। আল্লাহ বলছেন –
إِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِّن طِينٍ ﴿ص: ٧١
“স্মরণ করুন, যখন আপনার প্রতিপালক ফেরেশতাগণকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করব।” [সূরা ৩৮ ছোয়াদ – ৭১]
পৃষ্ঠা-৪১
এখানে যে ধরণের মানুষের সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে, তারা ছিলেন ‘বাশার’ স্তরের মানুষ। আল্লাহ তা”য়ালা মানুষকে ‘ইনসান’ বা ‘নাস’ বানিয়ে সৃষ্টি করেননি। বরং তাকে ‘বাশার’ স্তরের ভালো মানুষ হিসাবেই সৃষ্ট করেছেন। কিন্তু মানুষ তার চারিত্রিক কারণেই নাস এবং ইনসান হয়ে যায়।
এরপর আসুন, ইনসান, নাস ও বাশার – এ তিনটি স্তরের পাশাপাশি মানুষের আরেকটি স্তর আছে, যার নাম খালিফা। পৃথিবীর অন্য সকল প্রাণী ও বস্তু থেকে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে অধিক সম্মানিত করেছেন। কিন্তু শর্ত হলো, মানুষকে চরিত্রগতভাবে সুন্দর হতে হবে।
ইন্নি জায়েলুন ফিল আরদে খালিফাতুন ।
وَإِذ قالَ رَبُّكَ لِلمَلٰئِكَةِ إِنّى جاعِلٌ فِى الأَرضِ خَليفَةً ۖ
আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি।(২:৩০)
ফিরেস্তাগন অবাক হয়ে গেলেন, কারণ তারা খলিফার মর্যাদা জানতেন, যে মুল মালিকের পুর্ন ক্ষমতা প্রাপ্ত। যার ভাল মন্দ করার, শাসন বিচার,কর্তৃত্ব করার এখতিয়ার থাকবে। এর পর আল্লাহ বলেন মানুষের ভিতর হতে ছেকে তোমাদেরকে নির্বাচন করেছি তোমরা যেন আমার আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত রাখ জমিনে।
كُنتُم خَيرَ أُمَّةٍ أُخرِجَت لِلنّاسِ تَأمُرونَ بِالمَعروفِ وَتَنهَونَ عَنِ المُنكَرِ وَتُؤمِنونَ بِاللَّهِ ۗ وَلَو ءامَنَ أَهلُ الكِتٰبِ لَكانَ خَيرًا لَهُم ۚ مِنهُمُ المُؤمِنونَ وَأَكثَرُهُمُ الفٰسِقونَ
তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। ( ইমরানঃ১১০)
তোমাদের মানুষের মধ্য হতে উত্তম হিসেবে নির্বাচিত করেছি এ জন্য যে, তোমরা ভাল কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজের নিষেধ করবে।
পৃষ্ঠা-৪২
আল্লাহ্ই সৃষ্টি করিয়াছেন সপ্ত আকাশ এবং উহাদের অনুরূপ পৃথিবীও, উহাদের মধ্যে নামিয়া আসে তাঁহার নির্দেশ ; যাহাতে তোমরা বুঝিতে পার যে, আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং জ্ঞানে আল্লাহ্ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করিয়া আছেন। ১১:১০৮
ReplyForward Add reaction |
পৃষ্ঠা-৪৩
পর্ব-০৭
আমি তোমাদের মধ্যে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি তোমাদের মধ্য থেকে, যে তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে, তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়। আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয় এমন কিছু যা তোমরা জানতে না।(২:১৫১) রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও এবং আল্লাহকেই ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে কঠোর।(৫৯:৭)
হে মুমিনগণ, তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর ও আনুগত্য কর রাসূলের এবং তোমাদের মধ্য থেকে কর্তৃত্বের অধিকারীদের। অতঃপর কোন বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ কর তাহলে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যার্পণ করাও- যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখ। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর।(৪ঃ৫৯)
বল (মুহাম্মদ), ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।(৩:৩১)
যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হল, তবে আমি তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক করে প্রেরণ করিনি। (৪:৮০) যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর এটা মহা সফলতা।(৪:১৩) বল, ‘তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর’। তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফিরদেরকে ভালবাসেন না। (৩:৩২)
আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক আযাব।(৪:১৪)
পৃষ্ঠা-৪৪
রাসূল সাঃ অহী ছাড়া হিকমার আলোকে অসংখ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তার মধ্যে মাত্র ছয়টি বিষয়ে আল্লাহ্ কর্তৃক সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। ফলে বাকী বিষয় গুলি যে নির্ভুল এবং আল্লাহ্ কর্তৃক পরোক্ষভাবে অনুমদিত এবং আমাদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। সংশোধিত এই রাসূলের চারিত্রিক সনদ স্বয়ং আল্লাহ্ দিয়েছেন —
আর নিশ্চয় তুমি মহান চরিত্রের উপর অধিষ্ঠিত। (৬৮:৪)
অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। (৩৩:২১) রাসূল সাঃ এর জীবন আদর্শ হচ্ছে পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য রহমত। সেই সাথে তিনি ছিলেন মানব জাতীর সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী।
আর আমি তো তোমাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি। (২১:১০৭) আর আমি তো কেবল তোমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।
এমন এক ইসলাম মুয়াবিয়া উপহার দিয়ে গেছে
যার পতাকা এখন জষ্টি মধুর ইসলামের কাছে
যে ইসলামে গনতন্ত্রকে আলহামদুবলে বুকে টানে
মসজিদের মিনারে আযানের গর্জন বাস্তবে চলে
ReplyForward Add reaction |
পৃষ্ঠা-৪৫
হিকমাত অর্থাৎ গভীর অর্ন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমে সত্য উপলব্ধি ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করার জ্ঞান, আল্লাহ্ শুধু যে নবী রাসূলগনকে দিয়ে থাকেন তা নয় বরং তাঁর প্রিয় সাধারণ বান্দাদেরকেও দিয়ে থাকেন।
তিনি যাকে চান হিকমাত (প্রজ্ঞা) দান করেন। আর যাকে হিকমাত (প্রজ্ঞা) দেয়া হয়, তাকে অনেক কল্যাণ দেয়া হয়। আর বিবেক সম্পন্নগণই উপদেশ গ্রহণ করে। (২:২৬৯)
মানুষ সত্য উপলব্ধির জ্ঞান শুধু যে আল্লাহর কিতাবের মধ্যে পেয়ে থাকেন তা নয় বরং প্রাকৃতিক গত ভাবে আল্লাহ্ প্রতিটি মানুষকে সত্য মিথ্যা পার্থক্য সৃষ্টি করার জ্ঞান দিয়ে থাকেন। মানুষ যদি আল্লাহর সৃষ্টির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করে তবে এই সত্য উপলব্ধির জ্ঞান লাভ করতে পারবে।
یُّؤْتِی الْحِكْمَةَ مَنْ یَّشَآءُ ۚ وَ مَنْ یُّؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ اُوْتِیَ خَیْرًا كَثِیْرًا ؕ وَ مَا یَذَّكَّرُ اِلَّاۤ اُولُوا الْاَلْبَابِ
শব্দার্থ: يُؤْتِي = দেন তিনি , الْحِكْمَةَ = প্রজ্ঞা, مَنْ = যাকে , يَشَاءُ = তিনি ইচ্ছা করেন , وَمَنْ = এবং যা কে, يُؤْتَ = দেয়া হয়েছে , الْحِكْمَةَ = প্রজ্ঞা, فَقَدْ = তবে নিশ্চয়ই , أُوتِيَ = তাকে দেয়া হয়েছে , خَيْرًا = কল্যাণ, كَثِيرًا = অনেক, وَمَا = এবং না , يَذَّكَّرُ = শিক্ষানেয় (এথেকে) , إِلَّا = এছাড়া, أُولُو = সম্পন্নরা, الْأَلْبَابِ = বোধশক্তি,
অনুবাদ:তিনি যাকে চান, হিকমত দান করেন। আর যে ব্যক্তি হিকমত লাভ করে সে আসলে বিরাট সম্পদ লাভ করেছে। এই থেকে কেবলমাত্র তারাই শিক্ষা লাভ করে যারা বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী। (২ঃ২৬৯)
এদেশে জরুথিষ্টগন নিজেকে আকাবির দাবী করতে গর্ববোধ করে। কিন্তু কোরআনে আকাবির শব্দটা এসেছে সূরা আনআমের ১২৩ আয়াতে। এখানে
পৃষ্ঠা-৪৬
অপরাধীদের প্রধানকে আকাবির হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে। আমাদের জরুগন প্রকৃতই অপরাধীদের প্রধান বলেই নিজের অজান্তেই এ লকব বেছে নিয়েছে। দেখা যাক আয়াতটি-এইরূপে আমি প্রত্যেক জনপদে সেখানকার অপরাধীদের প্রধানকে( আকাবিরকে) সেখানে চক্রান্ত করার অবকাশ দিয়াছি ;৬:১২৩
وَكَذٰلِكَ جَعَلْنَا فِىْ كُلِّ قَرْيَةٍ اَكٰبِرَ مُجْرِمِيْهَا لِيَمْكُرُوْا
অনুরুপ চার প্রধান এর রুপান্তর নিয়ে ভাবলে প্রমান হয় আমাদের দেশের আকাবিরগন কত বড় মাপের আকাবির।
জিব্রাঈল- আজরাঈল- মিকাঈল -ইস্রাফিল ১৫০০ বছর
লুত -উযযা- মানত -হাবল —- ৩০০০ বছর আগে ছিল।
ব্রহ্মা – বিষ্ণু – শিব- মহেশ্বর — ৫০০০ বছর আগে ছিল।
লুহ – শিহা – শেহেম- হেরন — ১০০০০ বছর আগে ছিল। এরা পারসিয়ান।
এই লুহ শিহা-শেহেম-হেরনের অনুসারীরা আজো তাদের আগের মতাদর্শে ফিরিয়ে নিতে নানা কৌশল করে ইসলাম ধর্মে জাল পেতে রেখেছে। তাদের দেবতা আমুন কে যেন ভক্তি ভরে দৈনন্দিন স্মরন করে সে জন্য ফাতেহা পাঠ শেষে আমিন ( বিশ্বস্থ) বলার কৌশল ঢুকিয়ে দিয়েছে। সালাতকে সিয়ামকে তাদের মাতৃভাষায় রুপান্তর করে নামাজ, রোজার রুপ দিয়েছে। সূর্যের আরাধনার সাথে মিল রেখে অর্চনা করার জন্য। সিয়ামকে রোজা বলে উপবাসের মধ্যে সীমিত করে দিয়েছে।
এই আমিন জোরে না আস্তে বলা নিয়ে আবার পন্ডিত গন মহা আন্দোলনে রত। অথচ এতটুকু বোধগম্য হয় না অনুকরনকারীদের যে এই আমিন শব্দটা সূরায় আছে কি না তা যাচাই করে দেখে নি কোন দিন। আর এই আমিন শব্দের অর্থই বা কি? তাও ভাবার সুযোগ হয় নি আকাবিরদের।। আমিন কোরআনের ভাষায় বিশ্বস্ত।
পৃষ্ঠা-৪৬ জন্মচক্র বিষয়ে কোরানের ভাষ্য: প্রথম মৃত্যুর পর এবং আমাদেরকে শাস্তি দেওয়া হইবে না!’ (৩৭:৫৯) ইহা তো মহাসাফল্য। (৩৭:৬০) এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা (৩৭:৬১) মানুষ জন্মগত ভাবে কেন অন্ধ, আতুর, পুঙ্গু হয়? ; কেন অপরিণত বয়সে মৃত্যু হচ্ছে, ভালো মেয়েটির শ্লীলতাহানী হচ্ছে, কেন নিরপরাধ মানুষ জেল খাটছে,? আল্লাহ বলেনঃ পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে আমি উহা সংঘটিত করিবার পূর্বেই উহা লিপিবদ্ধ থাকে । ৫৭:২২) এর প্রত্যেকটির পিছনে একটি কারণ এবং জন্মচক্রের রহস্য লুকায়িত রয়েছে । তা না হলে বলতে হয় আল্লাহ পক্ষপাতিত্ব করছেন । কাউকে অন্ধ, খোঁড়া বানাচ্ছেন, আবার কাউকে ভালো বানাচ্ছেন, কিন্তু আল্লাহ তো নির্দোষ- নিরপেক্ষ । আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেনঃ ” যা কিছু মঙ্গল তা (আল্লাহ ) হতে আর যা কিছু মন্দ তা তোমা হতে ( সুরা নেসা ;-৭৯) অথচ আমরা বলে থাকি সবই তো আল্লাহর হুকুমে হয়েছে । আল্লাহর উপর দোষ চাপিয়ে দেই । আমার যা কিছু মন্দ তা যদি আমার কৃতকর্মের ফলই হয়ে থাকে তাহলে আমার কর্মফলে আমিই গ্রেফতার, আল্লাহ নিরপেক্ষ । এর যথাযোগ্য সদ্ব্যবহার জান্নাতের দিকে উত্তরন বা প্রমোশন,আর এর অপব্যবহার জাহান্নামের দিকে পশ্চাৎপসরন বা ডিমোশন । তাই তো রব বলেনঃ তোমাদের অবশ্যি স্তরে স্তরে এক অবস্থা থেকে আর এক অবস্থার দিকে এগিয়ে যেতে হবে।৮৪:১৯ তবে যারা মুত্তাকী তারা পৃষ্ঠা-৪৭ একবারই মৃত্যু বরন করবেন এবং রবের দিদার প্রাপ্ত হয়ে চিরকাল জান্নাতে অবস্থান করবেন। এটি আল্লাহর ঘোষণা। (সুরা দোখান, ৫৬) “প্রথম মৃত্যুর পর তাহারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করিবে না। আর তাহাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হইতে রক্ষা করিবেন”(৪৪:৫৬) অন্যত্র আরো পরিস্কার ভাবে আল্লাহ বলেনঃ আর এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা,(৩৭:৬১) এ আয়াতেই জন্ম চক্রের রহস্য লুকায়িত। কারন হলো ইচ্ছা শক্তি প্রয়োগের বেলায় আল্লাহ নিরপেক্ষ । সুরা মোমিনের ৩৩ নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেছেনঃ ” যে সময়ে তোমরা ফিরিয়া যাইবে পিছনে, আল্লাহর তরফ হইতে থাকিবে না তোমাদের জন্য কোনো সংরক্ষক এবং আল্লাহ যাহাকে ভ্রান্তিতে ফেলেন তাহার জন্য কোনো হাদী নাই। “আল্লাহ কাহাকেও ভ্রান্তির মধ্যে ফেলতে চান না । তাঁরই সৃজিত প্রাকৃতিক নিয়ম যে মানুষ মহামানবের হেদায়েতের বিরোধীতা করলে মৃত্যুর পরে পেছনের দিকে অর্থাৎ পশুকুলে জন্ম নেয় । তখন তাদের জন্য কোনো হাদী থাকে না। একেই আল্লাহর বিভ্রান্তি বলা হয়েছে । মোহাম্মদ গোষ্ঠীর সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত (মুসলমান মুত্তাকী অবস্থায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত) মানুষের মুক্তি হবে না এবং জন্মচক্রের ফেরে রুপান্তরিত হয়ে বারবার এই দুনিয়া নামক জাহান্নামে আসতে হবে । পৃষ্ঠা-৪৮ এই দুনিয়াটাই যে জাহান্নাম এটা মোমিন অর্থাৎ সত্যদ্রষ্টা ব্যতীত কারো পক্ষে উপলব্ধি করা অসম্ভব । আল্লাহপাক কোরানে ঘোষণা করেছেন- কোরানের ঘোষণা অনুযায়ী মানুষকে জাহান্নামে দেওয়া হবে বলা হয়নি। মানুষ জাহান্নামে আছে বলা হয়েছে । একটু লক্ষ্য করে দেখুন তো জীবজগৎ ও প্রানিজগতে কয়টা জীব বা প্রানী অন্ধ, আতুর,খোঁড়া ও অঙ্গহীন হয়ে জন্মাচ্ছে ? সুরা বাকারার ২৮ নং আয়াতের দিকে, আমরা একটু লক্ষ্য করিলে কিছু চিন্তায় ফেলিয়া দিবে,আল্লাহ বলেনঃ তোমরা কিরূপে আল্লাহ্কে অস্বীকার কর ? অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন, তিনি তোমাদেরকে জীবন্ত করেছেন, আবার তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন ও পুনরায় জীবন্ত করবেন, পরিণামে তাঁর দিকেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে। যদি আমরা কোরান মাজিদের বিভিন্ন ধরনের আয়াত দ্বারা আল্লাহপাক মানুষকে বুঝাতে চেয়েছেন যে ” জন্ম মৃত্যুর চক্রে আবব্ধ হইয়া থাকিলে জান্নাতের সন্ধান পাইবে না। আল্লাহ বলেনঃ আমি তোমাদের জন্য মৃত্যু নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই তোমাদের স্থলে তোমাদের সদৃশ আনয়ন করতে এবং তোমাদেরকে এমন এক আকৃতিতে সৃষ্টি করতে যা তোমরা জান না আর অবশ্যই তোমরা অবগত হয়েছ (প্রথম সৃষ্টি) সম্পর্কে??, তবে তোমরা উপদেশ গ্ৰহণ করা না কেন? (৫:ঃ৬০-৬২) প্রথম মৃত্যুর পর এবং আমাদেরকে শাস্তি দেওয়া হইবে না!ইহা তো মহাসাফল্য। আর এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা,( ৩৭:৫৯-৬১) আরেক ধাপ এগিয়ে গিয়ে আল্লাহ বলেনঃ “হে মানুষ! তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট পৌঁছা পর্যন্ত কঠোর সাধনা করিতে থাক,পরে তুমি তাঁহার সাক্ষাৎ লাভ করিবে। ( ৮৪: ৬) পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে পৃষ্ঠা-৪৯ তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে আমি উহা সংঘটিত করিবার পূর্বেই উহা লিপিবদ্ধ থাকে ; আল্লাহ্র পক্ষে ইহা খুবই সহজ।(৫:২২) তোমরা কিরূপে আল্লাহ্কে অস্বীকার কর ? অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন, তিনি তোমাদেরকে জীবন্ত করিয়াছেন, আবার তোমাদের মৃত্যু ঘটাইবেন ও পুনরায় জীবন্ত করিবেন, পরিণামে তাঁহার দিকেই তোমাদেরকে ফিরাইয়া আনা হইবে। (২:২৮) উহারা বলিবে,‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে প্রাণহীন অবস্থায় দুইবার রাখিয়াছ এবং দুইবার আমাদেরকে প্রাণ দিয়াছ। আমরা আমাদের অপরাধ স্বীকার করিতেছি; এখন নিষ্ক্রমণের কোন পথ মিলিবে কি?’ (৪০:১১) সরাসরি একবার মৃত্যুতে যেন আল্লাহর দিদার পাওয়া যায় সে জন্য আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেনঃ “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহ্কে যথার্থভাবে ভয় কর এবং তোমরা মুসলমান না হইয়া কোন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিও না। (৩ঃ১০২) আমার এ বিশ্লেষনে আপনি একমত থাকুন সে দাবী আমি করবো না, এবং আমি চুড়ান্ত বুঝেছি সে কথাও দাবী করব না। কিন্তু দ্বীমত হলে আপনি রেফারেন্স সহ তা তুলে ধরুন। আমাকে সত্য উম্মোচনে সহায়তা করুন। নচেৎ সত্যকে অস্বীকার বা মিথ্যেকে মেনে নেয়ার অপরাধে দায়ী থাকবেন আপনিও। নিশ্চয় তোমরা ধাপে ধাপে আরোহণ করিবে। (৮৪:১৯) তারকীকঃ لَتَرْكَبُنَّ = তোমরা অবশ্যই আরোহণ করবে, طَبَقًا স্তর, عَنْ = থেকে, طَبَقٍ = স্তরে, পৃষ্ঠা-৫০ বালাগাত (শব্দ বিন্যাস): তোমাদের অবশ্যি স্তরে স্তরে এক অবস্থা থেকে আর এক অবস্থার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। বর্তমানের অধিকাংশ মানুষ প্রায়শই দাবি করেন যে শুধুমাত্র মুসলমানরাই জান্নাতে যাবে, আর অন্যরা জাহান্নামে। কিন্তু এই দাবির প্রেক্ষিতে আমার কয়েকটি প্রশ্ন রয়েছে: ১) একটি শিশু যদি অমুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে যেমন: হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বা অন্য কোনো ধর্মের পরিবারে—তাহলে সেই শিশুটির অপরাধ কী? আল্লাহ কেন তাকে একটি অমুসলিম পরিবারে পাঠালেন? ২) যদি একটি শিশু পৃথিবীতে জন্ম থেকেই দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়, তাহলে সেই শিশুটির অপরাধ কী? যেখানে কোরআন বলে, “কেউ কারো বোঝা বহন করবে না।” ৩) একটি শিশু যদি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মায়, অন্যদিকে আরেকটি শিশু যদি অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করে, তাহলে সেই দরিদ্র শিশুটির অপরাধ কী? আল্লাহ কেন তাকে দরিদ্র পরিবারে পাঠালেন? কোরআন তো বলে, মানুষ তার প্রচেষ্টার ফল পায়। তাহলে এটি কি পূর্বজন্মের কর্মফল? ৪) প্রচলিত অনুবাদ অনুসারে কোরআন পুরুষ ও নারীর ব্যাপারে কথা বলে, কিন্তু হিজড়াদের সম্পর্কে কোরআন নীরব কেন? তাহলে কি কোরআন মূলত আত্মার সাথে কথা বলে? বিশেষ দ্রষ্টব্য: কোরআন তাদের জন্য, যারা গভীরভাবে চিন্তা-গবেষণা করতে সক্ষম। জান্নাত জাহান্নাম ততদিন বিদ্যমান যতদিন আসমান এবং জমিন বিদ্যমান সূরা হুদ আয়াত ১০৭ এবং ১০৮ পৃষ্ঠা-৫১ সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন ; নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক তাহাই করেন যাহা তিনি ইচ্ছা করেন। خٰلِدِيْنَ فِيْهَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَالْاَرْضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّكَ ؕ اِنَّ رَبَّكَ فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيْدُ (১১:১০৭) পক্ষান্তরে, যাহারা ভাগ্যবান তাহারা থাকিবে জান্নাতে, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে, যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন; ইহা এক নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার। وَاَمَّا الَّذِيْنَ سُعِدُوْا فَفِى الْجَـنَّةِ خٰلِدِيْنَ فِيْهَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَالْاَرْضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّكَ ؕ عَطَآءً غَيْرَ مَجْذُوْذٍ (১১:১০৮) পক্ষান্তরে, যাহারা ভাগ্যবান তাহারা থাকিবে জান্নাতে, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে, যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন; ইহা এক নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার। وَاَمَّا الَّذِيْنَ سُعِدُوْا فَفِى الْجَـنَّةِ خٰلِدِيْنَ فِيْهَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَالْاَرْضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّكَ ؕ عَطَآءً غَيْرَ مَجْذُوْذٍ (১১:১০৮) পৃথিবীতে আমাদের জীবন ই প্রথম জীবন নয়। (দলিল ২:২৮, ৭:১৭২, ১৮ :৫১,৪০:১১,৯০:৪, ১০:৪৪,৬৭:২,২:৩৮,৩৩:৭২-৭৩, ৫৬:৬০-৬২)। তিনি ইচ্ছা করিলে তোমাদেরকে অপসৃত করিতে পারেন এবং এক নূতন সৃষ্টি আনয়ন করিতে পারেন। সূরা নম্বর: ৩৫ আয়াত নম্বর: ১৬ আল্লাহ্ মানুষকে তাহাদের কৃতকর্মের জন্য শাস্তি দিলে ভূপৃষ্ঠে কোন জীব -জন্তুকেই রেহাই দিতেন না, কিন্তু তিনি এক নিদির্ষ্ট কাল পর্যন্ত তাহাদেরকে পৃষ্ঠা-৫২ অবকাশ দিয়া থাকেন। অতঃপর তাহাদের নির্দিষ্ট কাল আসিয়া গেলে আল্লাহ্ তো আছেন তাঁহার বান্দাদের সম্যক দ্রষ্টা। (সূরা ৩৫ আয়াত: ৪৫) কিন্তু যাহারা কুফরী করে তাহাদের জন্য আছে জাহান্নামের আগুন।উহাদের মৃত্যুর আদেশ দেওয়া হইবে না যে, উহারা মরিবে এবং উহাদের হইতে জাহান্নামের শাস্তিও লাঘব করা হইবে না। এইভাবে আমি প্রত্যেক অকৃতজ্ঞকে শাস্তি দিয়া থাকি। সূরা নম্বর: ৩৫ আয়াত নম্বর: ৩৬
|
পৃষ্ঠা-৫৩
সনাতনের কপি পেস্ট হাদীস:
সনাতনের আচার অনুষ্ঠানের কপি পেস্ট হল হাদীস। আর এ কাজটি পত্তন করেছে অগ্নি উপাসক পারসিয়ানরা। ইসলামকে সনতন ধর্মের সকল অনুষ্ঠানের পরিমার্জিত রুপ দিয়ে উপস্থাপন করেছে পারস্যবাসীরা। এ থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না, পারবে কি না তারও নিশ্চয়তা নেই। তাই নিজেকে নিয়ে বাঁচার চেষ্টা ছাড়া উপায় নেই।
সনাতন ধর্ম মতে জন্মান্তর মতবাদ কোরান কি সমর্থন করে? যুক্তি ও তথ্য ভিত্তিক আলোচনা করলেঃ—-
এক শ্রেনীর আলেমগণ বলে থাকেন, ফজর থেকে জোহর এবং জহর থেকে আছর এর মাঝামাঝি নফসের তাঁবেদারিতে কোনো পাপ কাজ করলে পরবর্তী ওয়াক্ত নামাজ পড়লেই আল্লাহ পাক মাফ করে দেবেন । অর্থাৎ ফজর পড়ে এসেই অন্যায়, ঘুষ, দুর্নীতি, আমানত, খেয়ানত – যত রকম অন্যায়ই হোক না জোহর পড়লেই মাফ । ওয়াক্তের নামাজে মাফ না হলে শুক্রবারের জুম্মা, জুমায় মাফ না হলে, দুই ঈদের জামাত, তা না হলে শবে বরাত, শবে কদরে মাফ তো হবেই ।
এই ধুঁয়া তুলে এক শ্রেনীর জুয়াড়ি সুলভ মনোভাব সম্পন্ন আলেম মানুষকে মোহাবিষ্ট করে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে । আর সে জন্য হালকা ঈমানের মানুষ একদিকে নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত দিচ্ছে আর ধর্মের সৌন্দর্যের উপর কালো টুপি পরিয়ে অন্যদিকে দেদারসে পাপ কাজ করে যাচ্ছে । ঐসব লোক কোরান পাঠ করছে আর চুমু খেয়ে তাকের উপর রেখে দিচ্ছে । এই আয়াত পড়লে এই সওয়াব আর এই দোয়া পড়লে একশ শহীদের সওয়াব ।
আর দোয়া পড়লেই যদি একশ শহীদের সওয়াব অর্জন করা যেত তাহলে ইমাম হোসেন (আঃ) বোধ হয় এরূপ দোয়া জানতেন না, যদি জানতেন তাহলে খামোখা কারবালার মাঠে পরিবারবর্গ নিয়ে শাহাদাত বরন করতে যেতেন না ।
পৃষ্ঠা-৫৪
যারা কোরান থেকে দোয়া,ফযিলত আর সোয়াবের সন্ধান করে তারা ধর্মের ডাস্টবীন মাত্র। এরা শয়তানের অনুসারী। হ্যা,কলম কেনা হয় লিখার জন্য, সেটা দিয়ে প্রয়োজনে কান চুলকালে দোষের কিছু নেই,কিন্তু কান চুলকানোর উদ্দেশেই যদি কেউ কলম কেনে তবে তাকে বেকুপ ছাড়া আর কি বলবে??
সনাতনের পুনর্জন্ম বিশ্বাসঃ জন্মমৃত্যু চক্রের রহস্য আল- কোরআনে কি বলে?
কর্মফল থেকে কারো রেহাই নেই । প্রতিটি কর্মফল অনুযায়ী মানুষের তকদির রচিত হচ্ছে ।
আল্লাহ বলেনঃ আমি তোমাদের জন্য মৃত্যু নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই তোমাদের স্থলে তোমাদের সদৃশ আনয়ন করতে এবং তোমাদেরকে এমন এক আকৃতিতে সৃষ্টি করতে যা তোমরা জান না আর অবশ্যই তোমরা অবগত হয়েছ (প্রথম সৃষ্টি) সম্পর্কে??, তবে তোমরা উপদেশ গ্ৰহণ করা না কেন? (৫৬:৬০-৬২)
জীব ও প্রাণি জগতের কথা বাদই দিলাম । মানুষ কেন অন্ধ, আতুর, পঙ্গু, বড়লোক, মুটে, নাস্তিক, ঠেলাওয়ালা হচ্ছে ; কেন অপরিণত বয়সে মৃত্যু হচ্ছে, ভালো মেয়েটির শ্লীলতাহানী হচ্ছে, কেন নিরপরাধ মানুষ জেল খাটছে, কেন ভদ্র ঘরের মেয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিপাকে পড়ে বেশ্যা বৃত্তিতে প্রবৃত্ত হচ্ছে, মাসুম বাচ্চাকে গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যাচ্ছে,বজ্রাঘাতে, সর্পাঘাতে, জলোচ্ছ্বাসে, ভূমিকম্পে, টাইফুনে মৃত্যু হচ্ছে নিষ্পাপ মাসুম শিশুটির। কেউ বিরাট অট্রালিকায় বাস করে নিঃসন্তান, আবার কেউ গাছের নিচে ফুটপাতে বাস করেও অসংখ্য সন্তানের জনক, কেউ কোরমা- পোলাওসহ বারো পদ দিয়ে খাচ্ছে, কেউ ডাস্টবিন থেকে উচ্ছিষ্ট তুলে কুকুরের সাথে ভাগাভাগি করে খাচ্ছে । এর প্রত্যেকটির পিছনে একটি কারণ এবং জন্মচক্রের রহস্য লুকায়িত রয়েছে । তা না হলে বলতে হয় আল্লাহ পক্ষপাতিত্ব করছেন । কাউকে অন্ধ, খোঁড়া বানাচ্ছেন, আবার কাউকে ভালো বানাচ্ছেন, কিন্তু আল্লাহতো নির্দোষ- নিরপেক্ষ, কারন আল্লাহর আরেক নাম আদেল বা ন্যায়বিচারক । MD Sahide আল্লার ঘরে মুর্তি পুজো হত, সেটা আল্লার ঘর? আল্লাহ কোরআন
পৃষ্ঠা-৫৫
হেফাযত করতে পারেন আর তাঁর ঘর রক্ষা করতে পারেন নাই মুর্তি পুজার হাত থেকে এমন প্রশ্ন উদয় হয় না তাহলে? আল্লাহ কি দুর্বল? নাউযুবিল্লাহ। যা হবার তা আল্লাহর ইশারায় হয়েছে — এ কথা বিশ্বাস করা মানে আল্লাহ মুর্তি পুজাও চেয়েছিল ?
বরং আল্লাহ বলেনঃ করেছেন যা কিছু মঙ্গল তা (আল্লাহ ) হতে আর যা কিছু মন্দ তা তোমা হতে ( সুরা নেসা ;-৭৯) । অথচ আমরা বলে থাকি সবই তো আল্লাহর হুকুমে হয়েছে । আল্লাহর উপর দোষ চাপিয়ে দেই । আমার যা কিছু মন্দ তা যদি আমার কৃতকর্মের ফলই হয়ে থাকে তাহলে আমার কর্মফলে আমিই গ্রেফতার, আল্লাহ নিরপেক্ষ । বস্ত জগতের সাথে নফস ( চিত্তবৃত্তির সামগ্রিক অভিব্যক্তি ) -এর ঘনিষ্ঠ মাখামাখির ফলে আমাদের কলব অসংখ্য তাগুত কর্তৃক পরিবেষ্টিত হয়ে আছে । চিত্তের আয়নায় জং ধরে গেছে। আমিত্বের পরদা কঠিন হয়ে গেছে, আল্লাহর রহস্য উপলব্ধি করার জ্ঞান বা ক্ষমতা নেই । অথচ একটু জ্ঞান দিয়ে অনুধাবন করার চেষ্টা করলে সব কিছু ধরা পড়বে। আল্লাহ মানুষকে সাময়িক ইচ্ছা শক্তি দান করেছেন (Limited Free Will And Choice ) যা সৃষ্টিতে ( জ্বীন ব্যাতীত) অন্য কোনো জীব বা প্রাণি জগতে দেওয়া হয়নি ।
এর যথাযোগ্য সদ্ব্যবহার জান্নাতের দিকে উত্তরন বা প্রমোশন,আর এর অপব্যবহার জাহান্নামের দিকে পশ্চাৎপসরন বা ডিমোশন । ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগের বেলায় আল্লাহ নিরপেক্ষ । সুরা মোমিনের ৩৩ নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেছেন- ” যে সময়ে তোমরা ফিরিয়া যাইবে পিছনে, আল্লাহর তরফ হইতে থাকিবে না তোমাদের জন্য কোনো সংরক্ষক এবং আল্লাহ যাহাকে ভ্রান্তিতে ফেলেন তাহার জন্য কোনো হাদী নাই ।”আল্লাহ কাহাকেও ভ্রান্তির মধ্যে ফেলতে চান না ।
এবার আসা যাক সূরা তাকাছুর ” তোমাদের যদি দিব্যচক্ষু থাকত তাহলে জান্নাত এবং জাহান্নাম দেখতে পেতে “। এ আয়াত কি বুঝায় ?
পৃষ্ঠা-৫৬
তাঁরই সৃজিত প্রাকৃতিক নিয়ম যে মানুষ মহামানবের হেদায়েতের বিরোধীতা করলে মৃত্যুর পরে পেছনের দিকে অর্থাৎ পশুকুলে জন্ম নেয়। তখন তাদের জন্য কোনো হাদী থাকে না। একেই আল্লাহর বিভ্রান্তি বলা হয়েছে। মোহাম্মদ গোষ্ঠীর সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত মানুষের মুক্তি হবে না এবং জন্মচক্রের ফেরে রুপান্তরিত হয়ে বারবার এই দুনিয়া নামক জাহান্নামে আসতে হবে । এই দুনিয়াটাই যে জাহান্নাম এটা মোমিন অর্থাৎ সত্যদ্রষ্টা ব্যতীত কারো পক্ষে উপলব্ধি করা অসম্ভব। আল্লাহপাক কোরানে ঘোষণা করেছেন ” তোমাদের যদি দিব্যচক্ষু থাকত তাহলে জান্নাত এবং জাহান্নাম দেখতে পেতে ” (সুরা তাকাচ্ছুর )। কোরানের ঘোষণা অনুযায়ী মানুষকে জাহান্নামে দেওয়া হবে বলা হয়নি । মানুষ জাহান্নামে আছে বলা হয়েছে । একটু লক্ষ্য করে দেখুন তো জীবজগৎ ও প্রানিজগতে কয়টা জীব বা প্রানী অন্ধ, আতুর, খোঁড়া ও অঙ্গহীন হয়ে জন্মাচ্ছে ? সুরা বাকারার ২৮ নং আয়াতের দিকে, আমরা একটু লক্ষ্য করিলে কিছু চিন্তায় ফেলিয়া দিবে,আল্লাহ বলেন:
کَیۡفَ تَکۡفُرُوۡنَ بِاللّٰہِ وَکُنۡتُمۡ اَمۡوَاتًا فَاَحۡیَاکُمۡ ۚ ثُمَّ یُمِیۡتُکُمۡ ثُمَّ یُحۡیِیۡکُمۡ ثُمَّ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ
তোমরা কিরূপে আল্লাহ্কে অস্বীকার কর ? অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন, তিনি তোমাদেরকে জীবন্ত করেছেন, আবার তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন ও পুনরায় জীবন্ত করবেন, পরিণামে তাঁর দিকেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।
(আলবাকারা-২৮)
যদি আমরা কোরান মাজিদের বিভিন্ন ধরনের আয়াত দ্বারা আল্লাহপাক মানুষকে বুঝাতে চেয়েছেন যে ” জন্ম মৃত্যুর চক্রে আবব্ধ হইয়া থাকিলে জান্নাতের সন্ধান পাইবে না।
নিশ্চয় তোমরা ধাপে ধাপে আরোহণ করিবে। (৮৪:১৯)
প্রথম মৃত্যুর পর এবং আমাদেরকে শাস্তি দেওয়া হইবে না!ইহা তো মহা সাফল্য। (৩৭:৫৯-৬০) আর এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা। (৩:৬১)
পৃষ্ঠা-৫৬
তার মানে প্রতিটি মানুষের জীবন দুইবার দান করেছেন এবং মৃত্যুও দুই বার।
১ম মৃত্যুর পর কোন শাস্তি নেই। কিন্তু ২য় মৃত্যুর পর বিচার হবে ও শাস্তি হবে এবং সে অনুযায়ী অনন্তকাল অবস্থান করবে । এর পর পর ৬১ নং আয়াতে আল্লাহ উপদেশ দেন ” এই সাফল্য অর্জনের জন্য সাধকের সাধনা করার। ” একমাত্র মুত্তাকীদের, “প্রথম মৃত্যুর পর তাহারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করিবে না। আর তাহাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হইতে রক্ষা করিবেন” -(৪৪:৫৬)
হে মানুষ! তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট পৌঁছা পর্যন্ত কঠোর সাধনা করিতে থাক, পরে তুমি তাঁহার সাক্ষাৎ লাভ করিবে। ( ৮৪ঃ ৬)
আমার এ বিশ্লেষনে আপনি একমত থাকুন সে দাবী আমি করবো না, কিন্তু দ্বীমত হলে আপনি রেফারেন্স সহ তা তুলে ধরুন। নচেৎ সত্যকে অস্বীকার বা মিথ্যেকে মেনে নেয়ার অপরাধে দায়ী থাকবেন রবের নিকট।
বর্তমানের অধিকাংশ মানুষ প্রায়শই দাবি করেন যে শুধুমাত্র মুসলমানরাই জান্নাতে যাবে, আর অন্যরা জাহান্নামে। কিন্তু এই দাবির প্রেক্ষিতে আমার কয়েকটি প্রশ্ন রয়েছে:
১) একটি শিশু যদি অমুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে—যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বা অন্য কোনো ধর্মের পরিবারে—তাহলে সেই শিশুটির অপরাধ কী? আল্লাহ কেন তাকে একটি অমুসলিম পরিবারে পাঠালেন?
২) যদি একটি শিশু পৃথিবীতে জন্ম থেকেই দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়, তাহলে সেই শিশুটির অপরাধ কী? যেখানে কোরআন বলে, “কেউ কারো বোঝা বহন করবে না।”
৩) একটি শিশু যদি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মায়, অন্যদিকে আরেকটি শিশু যদি অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করে, তাহলে সেই দরিদ্র শিশুটির অপরাধ
পৃষ্ঠা-৫৬
কী? আল্লাহ কেন তাকে দরিদ্র পরিবারে পাঠালেন? কোরআন তো বলে, মানুষ তার প্রচেষ্টার ফল পায়। তাহলে এটি কি পূর্বজন্মের কর্মফল?
৪) প্রচলিত অনুবাদ অনুসারে কোরআন পুরুষ ও নারীর ব্যাপারে কথা বলে, কিন্তু হিজড়াদের সম্পর্কে কোরআন নীরব কেন? তাহলে কি কোরআন মূলত আত্মার সাথে কথা বলে?
বিশেষ দ্রষ্টব্য: কোরআন তাদের জন্য, যারা গভীরভাবে চিন্তা-গবেষণা করতে সক্ষম। জান্নাত জাহান্নাম ততদিন বিদ্যমান যতদিন আসমান এবং জমিন বিদ্যমান (সূরা হুদ আয়াত ১০৭ এবং ১০৮) সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন ; নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক তাহাই করেন যাহা তিনি ইচ্ছা করেন।
خٰلِدِيْنَ فِيْهَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَالْاَرْضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّكَ ؕ اِنَّ رَبَّكَ فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيْدُ (১১:১৭)
পক্ষান্তরে, যাহারা ভাগ্যবান তাহারা থাকিবে জান্নাতে, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে, যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন; ইহা এক নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।
وَاَمَّا الَّذِيْنَ سُعِدُوْا فَفِى الْجَـنَّةِ خٰلِدِيْنَ فِيْهَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَالْاَرْضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّكَ ؕ عَطَآءً غَيْرَ مَجْذُوْذٍ (১১:১০৮)
ReplyForwardAdd reaction |
পৃষ্ঠা-৫৭
প্যারালাল অনুষ্ঠানঃ
১) কোরআনের ব্যাখ্যা হাদীস আর সনাতন ধর্মে ঋগবেদের ব্যাখ্যা মহাভারত।
২) কুমারী কুন্ত মন্ত্র সাধন করলে সূর্য দেবতা তার সামনে উপস্থিত হতে বাধ্য হন এবং দেবতার অদৃশ্য আশির্বাদে কুমারী কুন্ত গর্ভবতি হয়ে পঞ্চপান্ডবের জন্ম দেন। হিন্দু ধর্ম মতে।
অপরদিকে কুমারী মারিয়াম আ: আল্লাহর কুদরতে গর্ভপতি হন এবং ঈসা আ: এর জন্ম দেন। ইসলাম ধর্ম মতে।
৩) জমজমের পানি আল্লাহর কুদরতে ইসমাইল আঃ এর পায়ের গোড়ালীর পবিত্র উৎস হতে নিঃসৃত বলে উহা বরকতময় ও পুণ্যময়।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস গঙ্গার উৎস ভগবানের নিজ করুনা থেকে বলে গঙ্গা জল পুতঃ পবিত্র।
৪) মৃত্যুর চল্লিশদিনের দিন চল্লিসা অনুঢ্ঠান করা হয় ইসলাম ধর্ম অনুসারীর।
সনাতন ধর্মে আত্মার অবমুক্ত করনে চল্লিশ দিন পর চাদ্ধ করতে হয়।
৫) শ্রীকৃষ্ণের বামপার্শ্ব হতে সৃষ্টি “রাধা” , যার সুন্দর নিতম্ব ও পীন-পায়োধর। [ ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ]
আদমের বাম পাঁজর থেকে বিবি হাওয়ার সৃষ্টি ইসলাম ধর্মের দাবী।
৬) জন্মাষ্টমি সনাতন ধর্মে শ্রী কৃষ্নের জন্মদিন পালিত করে। অন্য দিকে ঈদে মিলাদুনবী ইসলাম ধর্মের অনুসারী রা পালন করে।
৪) কাল পাথর একটি জান্নাতী পাথর মুসলমান ধর্মের বিশ্বাস। শিব পাথর একটি স্বর্গীয় পাথর সনাতন ধর্মে বিশ্বাস।
৫) দেবতার নাম গননার জন্য জপমালার ব্যবহার হিন্দু ধর্ম অনুসারী
আল্লাহর পবিত্রতা গননার জন্য তাসবির ব্যবহার করে গাট্টিওয়ালা মুসলিম।
পৃষ্ঠা-৫৮
৬) ভগবান বিষ্ণুর শালগ্রাম শিলা বা নারায়ন শিলার উৎপত্তি নোপালের গন্ডকী নদের ইতিহাস থেকে । অপর দিকে মিশরের নীল নদের ইতিহাস মুসা: ফেরাঊনের ইতিহাস থেকে। মিসরের নীল নদ প্রতি বছর শুকিয়ে যেত। তখন উমর রাঃ চিঠি লিখে নদীতে ছেড়ে দিলে নদী পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। (সহী বুখারী)
৭) আল্লার নাম নেয়ার জন্য আল্লার ঘর মসজিদ নির্মান করে ইসলাম ধর্ম অনুসারী ।
সনাতন ধর্মের ভগবানের পুজো দেয়ার জন্য মন্দির নির্মান করে হিন্দু ধর্মের অনুসারী।
৮) আল্লার ঘরে আসার জন্য আযানের মাধ্যমে আহ্বান করা হয়। সনাতন ধর্মে মন্দিরে আসার জন্য শাখ শংখ বাঁজিয়ে ডাকা হয়।
৯) কোরবানীর পশুর গোশত আল্লাহর জন্য নয় শুধু তার নামে কোরবানীই তার সন্তুষ্টি।
সনাতন ধর্মে ভগবান পশুর রক্ত মাংশ খান না শুধু তার নামে বলি দিলেই খুশি হন।
১০) হজ্জ ব্রত পালন করে কাল পাথর চুমো খেলে পাপ মুক্ত মুসলমানের বিশ্বাস।
সনাতন ধর্ম মতে গঙ্গা জলে স্নান করলে ধরাধামে পাপ মুক্ত হয় হিন্দু ধর্ম মতে বিশ্বাস।
১১) কোরবানীর আগের তিনদিন নখ,চুল দুপায়া প্রাণী জবেহ নিষিদ্ধ। সনাতন ধর্মে শ্যাম পুজোর আগের তিনদিন নখ,চুল কাটা নিষিদ্ধ।
১২) মক্কা মদীনার মাটিতে মৃত্যু হলে জান্নাতী বলে বিশ্বাস ইসলাম ধর্ম মতে। গাট্টি ওয়ালার ঈমান।
পৃষ্ঠা-৫৯
সনাতন ধর্মে বিশ্বাস বৃন্দাবন-কাশীতে মৃত্যু হলে স্বর্গবাসী।
১৩) হজ্জের পোষাক সাদা ও সেলাই বিহীন আবশ্যক সনাতন ধর্মে গয়াকাশিতে পোষাক গেরুয়া ও সেলাই বিহীন।
১৪) তীর্থে গেলে মাথা কামায়, হজে গেলও মাথা কামায়।
১৫) একাদশি / নিশিযাপন, সিয়াম/রোজা
উপসংহারঃ—
এমন অনেক কপি পেস্ট ধর্মের মোল্লা, পুরোহিত,পাদ্রীর গেরাকলে পাপি মানুষগুলি নিজেকে মুক্তির আশায় আশ্রয় নেয়। ফলে সূচনা হয় ধর্মের ব্যবসা। তারা রবের আদেশ মেনে চলার জন্য ইবাদত করে না। এবাদত করে পাপের শাস্তির ভয়ে, নাজাত পাওয়ার আশায় নানা রকম অছিলার আশ্রয় নিয়ে পাপ মুক্ত হওয়ার জন্য। তাই আল্লাহ বলেনঃ
অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথপ্রাপ্ত।(৩৬ঃ২১)
ব্রাহ্মন – মুখ থেকে
ক্ষত্রিয় — হাত থেকে
বৈশ্য – উরু থেকে
শুদ্র – পদ থেকে।
পৃষ্ঠা-৬০
জাহেলিয়াত যুগ ও তার অবসান:
ঈশা নবীর তিরোধানের পর প্রায় ৬৫০ বছর পর্যন্ত কোন নবী বা রাসুল প্রেরন করেন নাই। এই দীর্ঘ ব্যবধানে মানুষ পথভ্রষ্ট হয়ে জাহেলিয়াতের অতল গর্ভে ডুবে যায়। এর আগে সব নবীই প্রায় ১০০ বছর ব্যবধানেই এসেছেন। দীর্ঘ বিরতির পর এই অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগে পাঠালেন নবী মুহাম্মদকে। আল্লাহ তাই বলেনঃ রাসূল প্রেরণে বিরতির পর আমার রাসূল তোমাদের নিকট আসিয়াছে। সে তোমাদের নিকট স্পষ্ট ব্যাখ্যা করিতেছে যাহাতে তোমরা বলিতে না পার, ‘কোন সুসংবাদবাহী ও সতর্ককারী আমাদের নিকট আসে নাই।(৫:১৯)
ঈশা নবীর পিতা ছিল না। কুমারী মরিয়মের গর্ভে জন্ম। এজন্য খৃষ্টানরা দাবী করে ঈশা মাসীহ আল্লাহর পুত্র। কিন্ত সুরা ইখলাসে আল্লাহ জানিয়ে দেন তিনি কোন সন্তান জন্ম দেননি এবং তিনি কারো সন্তানও নন। এখন প্রশ্ন আসে কোন পুরুষ ছাড়া তো মাতৃগর্ভে সন্তান আসতে পারে না। আল্লাহ সে প্রসঙ্গে উত্তর দেনঃ আল্লাহ্র নিকট নিশ্চয়ই ‘ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের দৃষ্টান্তসদৃশ। তিনি তাহাকে মৃত্তিকা হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন;অতঃপর তাতে রুহ ফুকিয়ে দেন। (৩:৫৯) অতঃপর দোলনায় থাকা অবস্থায় তিনি তাঁকে কথা বলতে শিখান এবং নবী হিসাবে ঘোষনা দিতে আদেশ করেন।
প্রশ্ন আসে কি কিতাব দিয়েছিলেন? সেটা কি বর্তমান কোরানেরই অংশ বিশেষ? না কি ভিন্ন বৈপরিত কোন কিতাব। সেই সাথে তাঁকে আল্লাহ আরো আদেশ করেছিলেন যাহা তা আবার হুবুহু কোরানে বর্ণিত:‘যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করিয়াছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়াছেন যত দিন জীবিত থাকি তত দিন সালাত ও যাকাত আদায় করিতে(১৯:৩১)
এখন প্রশ্ন আসে ঈশা আঃ কি ভাবে সালাত আদায় করতেন? আমাদের মত রুকু সিজদা বুকে হাত বাধা পদ্ধতিতে? দিন পাঁচ ওয়াক্ত পড়তেন? না কি তখন সালাত কায়েম বলতে অন্য কোন পদ্ধতি কায়েম ছিল? যা রহিত হয়ে
পৃষ্ঠা-৬০
এই প্রচলিত সালাত মেরাজ মোতাবেক হয়েছে?
আশ্চর্যের বিষয় এ ব্যাপারে কোন আয়াত কোরানে দেখা যায় না। আর যাকাত তিনি নির্জন পাহারে কি ভাবে কার উপর আদায় করতেন? এখন যে যাকাত দেখি তা কিভাবে এলো? আল্লাহ বলেন: এর আগে তাদের সালাত ছিল, কা‘বা গৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর। (৮:৩৫)
ঈশা নবী এসে আল্লাহর মনোনীত পদ্ধতিতে সালাত কায়েম করলেন এবং যাকাত আদায় শিক্ষা দিলেন। এই নবীর পড়ে আবার দীর্ঘ সময় নবী না আসায় সালাত কে নষ্ট করে ফেললো। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন:
উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে(১৯:৫৯)
ঈশা নবীর ৬৫০ বছর পর পুনরায় দীর্ঘ বিরতীর পর নবী মুহম্মদ কে অন্ধকার হতে আলোতে পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য প্রেরন করলেন। তিনি শরীয়তের পুর্ন জ্ঞান ও দ্বীন নিয়ে এলেন। শিক্ষা দিলেন এবং লিখিত আকারে তা রেখে গেলেন বিশ্ব মানব জাতীর জন্য। আর তা সংরক্ষনের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ গ্রহন করলেন। কারন এর পর আর কোন নবী আসবেন না কিয়ামত অব্দি। তার এই কিতাবের বর্ননা অনুযায়ী আবার নষ্ট করা সালাত ফিরে পেলাম।
আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সূরা মরিয়াম এর ১৯:৩১ নং আয়াতে সালাত কায়েম করতে বলেছেন জন্ম হইতে মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত অবিরতভাবে, নিরর্বিছিন্ন, বিরতিহীন ভাবে,সার্বক্ষণিকভাবে। যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত, (৭০:২৩)
অত:পর যার এ বিষয়ে দ্বীমত পোষন করে,তাদের জন্য কোরান ব্যক্ত করে
তুমি কি দেখিয়াছ তাহাকে, যে দীনকে অস্বীকার করে ? সুতরাং দুর্ভোগ সেই সালাত আদায়কারীদের, যাহারা তাহাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন (১০৭:১-৫)
পৃষ্ঠা-৬১
ইহাই আল্লাহ্র বিধান – প্রাচীন কাল হইতে চলিয়া আসিতেছে, তুমি আল্লাহ্র বিধানে কোন পরিবর্তন পাইবে না। (৪৮:২৩)
বিচার দিবসে রাসুল আল্লাহর নিকট অভিযোগ করবেন ” হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় তো এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করে।’ (২৫:৩০)
পৃষ্ঠা-৬২
১) ‘ঈসা তো কিয়ামতের নিশ্চিত নিদর্শন; সুতরাং তোমরা কিয়ামতে সন্দেহ করিও না এবং আমাকে অনুসরণ কর। ইহাই সরল পথ। সূরা নম্বর: ৪৩ আয়াত নম্বর: ৬১ ২) আর তাহারা চক্রান্ত করিয়াছিল আল্লাহ্ও কৌশল করিয়াছিলেন; আল্লাহ্ কৌশলীদের শ্রেষ্ঠ।সূরা নম্বর: ৩ আয়াত নম্বর: ৫৪ ৩) আল্লাহ্র নিকট নিশ্চয়ই ‘ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের দৃষ্টান্তসদৃশ। তিনি তাহাকে মৃত্তিকা হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন; অতঃপর উহাকে বলিলেন ‘হও’, ফলে সে হইয়া গেল।সূরা নম্বর: ৩ আয়াত নম্বর: ৫৯ ৪) আল্লাহ্ যখন বলিবেন, ‘হে মার্ইয়াম – তনয় ‘ঈসা! তুমি কি লোকদেরকে বলিয়াছিলে, তোমরা আল্লাহ্ ব্যতীত আমাকে ও আমার জননীকে দুই ইলাহরূপে গ্রহণ কর ?’ সে বলিবে, ‘তুমিই মহিমান্বিত! যাহা বলার অধিকার আমার নাই তাহা বলা আমার পক্ষে শোভন নয়। যদি আমি তাহা বলিতাম তবে তুমি তো তাহা জানিতে। আমার অন্তরের কথা তো তুমি অবগত আছ, কিন্তু তোমার অন্তরের কথা আমি অবগত নই ; তুমি অদৃশ্য সম্বন্ধে সম্যক পরিজ্ঞাত।’(৫:১১৬) ৫) তুমি আমাকে যে আদেশ করিয়াছ তাহা ব্যতীত তাহাদেরকে আমি কিছুই বলি নাই, তাহা এই : ‘তোমরা আমার প্রতিপালক ও তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্র ‘ইবাদত কর এবং যত দিন আমি তাহাদের মধ্যে ছিলাম তত দিন আমি ছিলাম তাহাদের কার্যকলাপের সাক্ষী; কিন্তু যখন তুমি আমাকে তুলিয়া লইলে তখন তুমিই তো ছিলে তাহাদের কার্যকলাপের তত্ত্বাবধায়ক এবং তুমিই সর্ববিষয়ে সাক্ষী।(৫ :১১৭)
পৃষ্ঠা-৬৩ ৬) ‘তুমি যদি তাহাদেরকে শাস্তি দাও তবে তাহারা তো তোমারই বান্দা, আর যদি তাহাদেরকে ক্ষমা কর তবে তুমি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’সূরা নম্বর: ৫ আয়াত নম্বর: ১১৮ ৭) উহারা কি কেবল এইজন্য অপেক্ষা করিতেছে যে, কিয়ামত উহাদের নিকট আসিয়া পড়ুক আকস্মিকভাবে? কিয়ামতের লক্ষণসমূহ তো আসিয়াই পড়িয়াছে। কিয়ামত আসিয়া পড়িলে উহারা উপদেশ গ্রহণ করিবে কেমন করিয়া!সূরা নম্বর: ৪৭ আয়াত নম্বর: ১৮ ৮) এমনকি যখন ইয়া‘জূজ ও মা‘জূজকে মুক্তি দেওয়া হইবে এবং উহারা প্রতি উচ্চভূমি হইতে ছুটিয়া আসিবে। (২১:৯৬) ৯) অমোঘ প্রতিশ্রুতি কাল আসন্ন হইলে অকস্মাৎ কাফিরদের চক্ষু স্থির হইয়া যাইবে, উহারা বলিবে, ‘হায়, দুর্ভোগ আমাদের! আমরা তো ছিলাম এ বিষয়ে উদাসীন; না, আমরা সীমালংঘনকারীই ছিলাম।’ ১০) যখন ঘোষিত শাস্তি উহাদের নিকট আসিবে তখন আমি মৃত্তিকাগর্ভ হইতে বাহির করিব এক জীব, যাহা উহাদের সঙ্গে কথা বলিবে, এইজন্য যে, মানুষ আমার নিদর্শনে অবিশ্বাসী।(২৭:৮২) তাহারা শুধু ইহারই না প্রতীক্ষা করে, তাহাদের নিকট ফিরিশতা আসিবে, কিংবা তোমার প্রতিপালক আসিবেন, কিংবা তোমার প্রতিপালকের কোন নিদর্শন আসিবে ? যেদিন তোমার প্রতিপালকের কোন নিদর্শন আসিবে সেদিন তাহার ঈমান কাজে আসিবে না, যে ব্যক্তি পূর্বে ঈমান আনে নাই কিংবা যে ব্যক্তি ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করে নাই। বল, ‘তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমরাও প্রতীক্ষায় রহিলাম।’সূরা নম্বর: ৬ আয়াত নম্বর: ১৫৮ পৃষ্ঠা-৬৪ ১) অতঃপর উহাদের হইতে সে পর্দা করিল। অতঃপর আমি তাহার নিকট আমার রূহ্কে পাঠাইলাম, সে তাহার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করিল। সূরা নম্বর: ১৯ আয়াত নম্বর: ১৭ ২) সে বলিল, ‘আমি তো আল্লাহ্র বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়াছেন, আমাকে নবী করিয়াছেন, সূরা নম্বর: ১৯ আয়াত নম্বর: ৩০ ৩) ‘আমার প্রতি শান্তি যেদিন আমি জন্মলাভ করিয়াছি, যেদিন আমার মৃত্যু হইবে এবং যেদিন জীবিত অবস্থায় আমি উত্থিত হইব।’ সূরা নম্বর: ১৯ আয়াত নম্বর: ৩৩ ৪) হে কিতাবীগণ! রাসূল প্রেরণে বিরতির পর আমার রাসূল তোমাদের নিকট আসিয়াছে। সে তোমাদের নিকট স্পষ্ট ব্যাখ্যা করিতেছে যাহাতে তোমরা বলিতে না পার, ‘কোন সুসংবাদবাহী ও সতর্ককারী আমাদের নিকট আসে নাই।’ এখন তো তোমাদের নিকট একজন সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী আসিয়াছে। আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান।(৫:১৯) ৫) উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা – পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে, সূরা নম্বর: ১৯ আয়াত নম্বর: ৫৯ ৬) যে দয়াময়ের নিকট প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করিয়াছে, সে ব্যতীত অন্য কাহারও সুপারিশ করিবার ক্ষমতা থাকিবে না। সূরা নম্বর: ১৯ আয়াত নম্বর: ৮৭ ৭) আমি তো তোমার ভাষায় কুরআনকে সহজ করিয়া দিয়াছি যাহাতে তুমি উহা দ্বারা মুত্তাকীদেরকে সুসংবাদ দিতে পার এবং বিতণ্ডাপ্রবণ সম্প্রদায়কে উহা দ্বারা সতর্ক করিতে পার।(সূরা: ১৯ আয়াত: ৯৭) পৃষ্ঠা-৬৫ ১) তাড়াতাড়ি ওহী আয়ত্ত করিবার জন্য তুমি তোমার জিহ্বা উহার সঙ্গে সঞ্চালন করিও না। ইহা সংরক্ষণ ও পাঠ করাইবার দায়িত্ব আমারই। অতঃপর ইহার বিশদ ব্যাখ্যার দায়িত্ব আমারই। ১) রুহ * ফিরিশ্তা এবং রূহ্ আল্লাহ্র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর। (৭০: ৪) ২) রুহ * অতঃপর উহাদের হইতে সে পর্দা করিল। অতঃপর আমি তাহার নিকট আমার রূহ্কে পাঠাইলাম, সে তাহার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করিল। (১৯:১৭) ৩) রুহ * তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় রুহ ও হীসহ ফেরেস্তাহ প্রেরণ করেন এই বলিয়া যে, তোমরা সতর্ক কর, নিশ্চয়ই আমি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই; সুতরাং আমাকে ভয় কর।সূরা নম্বর: ১৬ আয়াত নম্বর: ২ ৪) রুহ *তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’ সূরা নম্বর: আয়াত নম্বর: ৮৫ ৫) রুহ *জিব্রাঈল ইহা লইয়া অবতরণ করিয়াছে ৬) রুহ * তিনি সমুচ্চ মর্যাদার অধিকারী, ‘আরশের অধিপতি, তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা ওহী প্রেরণ করেন স্বীয় রুহ , যাহাতে সে সতর্ক করিতে পারে কিয়ামত দিবস সম্পর্কে। সূরা নম্বর: ৪০ আয়াত নম্বর: ১৫ ৭);রুহ * ফিরিশ্তা এবং রূহ্ আল্লাহ্র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর।সূরা নম্বর: ৭০ আয়াত নম্বর: ৪ ৮) রুহ * সেই দিন রূহ্ ও ফিরিশ্তাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াইবে ; দয়াময় যাহাকে অনুমতি দিবেন সে ব্যতীত অন্যেরা কথা বলিবে না এবং সে যথার্থ বলিবে। সূরা নম্বর: ৭৮ আয়াত নম্বর: ৩৮ ৯) রুহ ** সেই রাত্রিতে ফিরিশতাগণ ও রূহ্ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাহাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে। *** অবশ্য আমি তাহাদেরকে পৌঁছাইয়াছিলাম এমন এক কিতাব যাহা পূর্ণজ্ঞান দ্বারা বিশদ ব্যাখ্যা করিয়াছিলাম এবং যাহা ছিল মু’মিন সম্প্রদায়ের জন্য পথনির্দেশ ও দয়া। *** অতঃপর ইহার বিশদ ব্যাখ্যার দায়িত্ব আমারই। ইহাই আল্লাহ্র বিধান – প্রাচীন কাল হইতে চলিয়া আসিতেছে, তুমি আল্লাহ্র বিধানে কোন পরিবর্তন পাইবে না।( সূরা : ৪৮ আয়াত : ২৩)
পর্ব-১৪ ঈমান ও সৎকাজ
বাপ দাদা — ( বাকারা ২:১৭০) সব নবীর সালাত — না জেনে অনুসরন শয়তানের — (হাজ্জ ২২,আয়াত ৩) কেহ কাহারো বোঝা বহন করিবে না ( ১৭:১৫) সিদ্দীক ও শহীদ এর সংগা (হাদীদ : ১৯) এইভাবে আমি কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছি বিধানরূপে আরবী ভাষায়। জ্ঞান প্রাপ্তির পর তুমি যদি তাহাদের খেয়াল – খুশির অনুসরণ কর তবে আল্লাহ্র বিরুদ্ধে তোমার কোন অভিভাবক ও রক্ষক থাকিবে না। জ্ঞানীদের জন্য আমি তো আয়াতে বিশদভাবে বিবৃত করিয়াছি। (৬: ৯৭) যে ব্যক্তি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করেনা আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেনা । (১১:৫৩) আমরা আপনাকে অবিচলিত না রাখলে আপনি অবশ্যই তাদের দিকে প্রায় কিছুটা ঝুঁকে পডেছিলেন।(১৭:৭৪) যাহার ইচ্ছা বিশ্বাস করুক ও যাহার ইচ্ছা সত্য প্রত্যাখ্যান করুক।( ১৮:২৯) আমি ইচ্ছা করিলে তোমাদের মধ্য হইতে ফিরিশ্তা সৃষ্টি করিতে পারিতাম, যাহারা পৃথিবীতে উত্তরাধিকারী হইত। আর তোমার উপর যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়া না হত তবে তাদের মধ্য থেকে একদল তোমাকে পথভ্রষ্ট করার সংকল্প করেই ফেলেছিল! আর তারা নিজদের ছাড়া কাউকে পথভ্রষ্ট করে না এবং তারা তোমার কোনই ক্ষতি করতে পারে না। আর আল্লাহ তোমার প্রতি নাযিল করেছেন কিতাব ও হিকমাত এবং তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন যা তুমি জানতে না। আর তোমার উপর আল্লাহর অনুগ্রহ রয়েছে মহান। আন-নিসা -১১৩ আমি রাসূলকে কাব্য শিখাইনি এবং এটি তার জন্য শোভনীয়ও নয়। এ তো কেবল এক উপদেশ ও স্পষ্ট কুরআন মাত্র। যাতে সে জীবিতকে সতর্ক করতে পারে আর কাফিরদের বিরুদ্ধে অকাট্য দলীল হতে পারে। (ইয়াসিন–৬৯-৭০) নিশ্চয়ই এই কুরআন সম্মানিত বার্তাবহের আনীত বাণী তোমার প্রতি যাহা ওহী হয় তাহার অনুসরণ কর ; (৩০:২) তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় নির্দেশে ওহীসহ ফিরিশ্তা প্রেরণ করেন (১৬:২) নিশ্চয়ই এই কুরআন এক সম্মানিত রাসূলের বাণী। (৬৯:৪০) তিনি যাহা করেন সে বিষয়ে তাঁহাকে প্রশ্ন করা যাইবে না; বরং উহাদেরকেই প্রশ্ন করা হইবে। ২১:২৩ আমার আয়াতের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করিও না। সূরা নম্বর: ২ আয়াত নম্বর: ৪১ মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও, আর নিজদেরকে মধ্যে বেখবর। সূরা নম্বর: ২ আয়াত নম্বর: ৪৪ তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর সূরা নম্বর: ২ আয়াত নম্বর: ৪৫ নিশ্চয়ই মানবজাতির জন্য সর্বপ্রথম যে গৃহ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল তাহা তো বাক্কায়, উহা বরকতময় ও বিশ্বজগতের দিশারী। اِنَّ اَوَّلَ بَيْتٍ وُّضِعَ لِلنَّاسِ لَـلَّذِىْ بِبَكَّةَ مُبٰرَكًا وَّهُدًى لِّلْعٰلَمِيْنَ তোমরা যাহা গোপন রাখ এবং যাহা প্রকাশ কর আল্লাহ্ তাহা জানেন। সমগ্র মানব জাতীর জন্য সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী রুপে পাঠিয়েছি। (৩৪ঃ২৮) আল্লাহ বলেনঃ مَاۤ اَصَابَ مِنْ مُّصِیْبَةٍ فِی الْاَرْضِ وَ لَا فِیْۤ اَنْفُسِكُمْ اِلَّا فِیْ كِتٰبٍ مِّنْ قَبْلِ اَنْ نَّبْرَاَهَا ؕ اِنَّ ذٰلِكَ عَلَى اللّٰهِ یَسِیْرٌۚ ۖ পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে আমি উহা সংঘটিত করিবার পূর্বেই উহা লিপিবদ্ধ থাকে ; আল্লাহ্র পক্ষে ইহা খুবই সহজ। (৫৭:২২) مَاۤ اَصَابَ مِنْ مُّصِيْبَةٍ فِى الْاَرْضِ وَلَا فِىْۤ اَنْفُسِكُمْ اِلَّا فِىْ كِتٰبٍ مِّنْ قَبْلِ اَنْ نَّبْـرَاَهَا ؕ اِنَّ ذٰ لِكَ عَلَى اللّٰهِ يَسِيْرٌۚ ۖ পৃথিবীতে এবং তোমাদের নিজেদের ওপর যেসব মুসিবত আসে তার একটিও এমন নয় যে, তাকে আমি সৃষ্টি করার পূর্বে একটি গ্রন্থে লিখে রাখিনি। এমনটি করা আল্লাহর জন্য খুবই সহজ কাজ। সমান নয় অন্ধ ও চক্ষুষ্মান, وَمَا يَسْتَوِى الْاَعْمٰى وَالْبَصِيْرُ ۙ সূরা নম্বর: ৩৫ আয়াত নম্বর: ১৯ যদি তোমরা তোমাদেরই মত একজন মানুষের আনুগত্য কর তবে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হইবে;(২৩;৩৪)
পর্ব-১৫ ঈমান ও সৎকর্ম জান্নাতের চাবী আনুষ্ঠানিক সালাত নয়।
১) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহাদের আপ্যায়নের জন্য আছে ফিরদাওসের উদ্যান, সূরা নম্বরঃ ১৮, আয়াত নম্বরঃ ১০৭
২) আর যাহারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাহারাই জান্নাতবাসী, তাহারা সেখানে স্থায়ী হইবে। সূরা নম্বরঃ ২, আয়াত নম্বরঃ ৮২
৩) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে দয়াময় অবশ্যই তাহাদের জন্য সৃষ্টি করিবেন ভালবাসা। সূরা নম্বরঃ ১৯, আয়াত নম্বরঃ ৯৬
৪) ‘যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, পরম আনন্দ এবং শুভ পরিণাম তাহাদেরই।’ সূরা ১৩, আয়াত ২৯
৫) সুতরাং যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহাদের জন্য আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা; সূরা নম্বরঃ ২২, আয়াত নম্বরঃ ৫০
৬) অতএব যাহারা ঈমান আনিয়াছে ও সৎকর্ম করিয়াছে তাহারা জান্নাতে থাকিবে ; সূরা ৩০, আয়া ১৫
৭) আর যাহারা ঈমান আনিয়াছে এবং সৎকাজ করিয়াছে তিনি তাহাদের প্রতিফল পুরাপুরি ভাবে প্রদান করিবেন। আল্লাহ্ জালিমদের পছন্দ করেন না। সূরা নম্বরঃ ৩, আয়াত নম্বরঃ ৫৭
৮) যাহারা ঈমান আনয়ন করে ও সৎকর্ম করে তাহাদেরকে শুভ সংবাদ দাও যে, তাহাদের জন্য রহিয়াছে জান্নাত-যাহার নিন্মদেশে নদী প্রবাহিত। সূরা নম্বরঃ ২, আয়াত নম্বরঃ ২৫
৯) নিশ্চয়ই যাহারা ঈমান আনিয়াছে, যাহারা ইয়াহূদী হইয়াছে এবং খ্রিস্টান ও সাবিঈন-যাহারাই আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনে ও সৎকাজ করে, তাহাদের জন্য পুরস্কার আছে তাহাদের প্রতিপালকের নিকট। তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিতও হইবে না। সূরা নম্বরঃ ২, আয়াত নম্বরঃ ৬২
১০) পুরুষ অথবা নারীর মধ্যে কেহ সৎকাজ করিলে ও মু’মিন হইলে তাহারা জান্নাতে দাখিল হইবে এবং তাহাদের প্রতি অণু পরিমাণও জুলুম করা হইবে না। সূরা নম্বরঃ ৪, আয়াত নম্বরঃ ১২৪
১১) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে আল্লাহ্ তাহাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়াছেন, তাহাদের জন্য ক্ষমা এবং মহাপুরস্কার আছে। সূরা নম্বরঃ ৫, আয়াত নম্বরঃ ৯
১২) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে-আমি তো তাহার শ্রমফল নষ্ট করি না-সে উত্তম রূপে কার্য সম্পাদন করে। সূরা নম্বরঃ ১৮, আয়াত নম্বরঃ ৩০
১৩) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আমি অবশ্যই তাহাদেরকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করিব।সূরা নম্বরঃ ২৯, আয়াত নম্বরঃ ৯
১৪) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহাদের জন্য আছে সুখদ কানন ;সূরা নম্বরঃ ৩১, আয়াত নম্বরঃ ৮
১৫) নিশ্চয়ই যাহারা ঈমান আনে, সৎকাজ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়, তাহাদের পুরস্কার তাহাদের প্রতিপালকের নিকট আছে। তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিতও হইবে না। সূরা নম্বরঃ ২ নম্বরঃ ২৭৭
১৬) যাহারা ঈমান আনে ও ভাল কাজ করে তাহাদেরকে দাখিল করিব জান্নাতে যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; সেখানে তাহারা চিরস্থায়ী হইবে, সেখানে তাহাদের জন্য পবিত্র স্ত্রী থাকিবে এবং তাহাদেরকে চিরস্নিগ্ধ ছায়ায় দাখিল করিব। সূরা নম্বরঃ ৪, আয়াত নম্বরঃ ৫৭
১৭) আর যাহারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাহাদেরকে দাখিল করিব জান্নাতে, যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তাহারা চিরস্থায়ী হইবে ; আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি সত্য, কে আল্লাহ্ অপেক্ষা কথায় অধিক সত্যবাদী? সূরা নম্বরঃ ৪, আয়াত নম্বরঃ ১২২
১৮) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তিনি তাহাদেরকে পূর্ণ পুরস্কার দান করিবেন এবং নিজ অনুগ্রহে আরও বেশি দিবেন। কিন্তু যাহারা হেয় জ্ঞান করে ও অহংকার করে তাহাদেরকে তিনি মর্মন্তুদ শাস্তি দান করিবেন এবং আল্লাহ্ ব্যতীত তাহাদের জন্য তাহারা কোন অভিভাবক ও সহায় পাইবে না। সূরা নম্বরঃ ৪, নম্বরঃ ১৭৩
১৯) মু’মিনগণ, ইয়াহূদীগণ, সাবীগণ ও খ্রিস্টানগণের মধ্যে কেহ আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনিলে এবং সৎকাজ করিলে তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিত হইবে না। সূরা নম্বরঃ ৫, আয়াত নম্বরঃ ৬৯
২০) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহারা পূর্বে যাহা ভক্ষণ করিয়াছে তজ্জন্য তাহাদের কোন গুনাহ্ নাই; যদি তাহারা সাবধান হয় এবং ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, সাবধান হয় ও বিশ্বাস করে, পুনরায় সাবধান হয় ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ্ সৎকর্মপরায়ণদের ভালবাসেন। সূরা নম্বরঃ ৫, আয়াত নম্বরঃ ৯৩
২১) আমি কাহাকেও তাহার সাধ্যাতীত ভার অর্পণ করি না। যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে উহারাই জান্নাতবাসী, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে। সূরা নম্বরঃ ৭, আয়াত নম্বরঃ ৪২
২২) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহাদেরকে দাখিল করা হইবে জান্নাতে যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত। সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, তাহাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে, সেখানে তাহাদের অভিবাদন হইবে ‘সালাম’। সূরা নম্বরঃ ১৪, আয়াত নম্বরঃ ২৩
‘২৩) তবে যে ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে তাহার জন্য প্রতিদান স্বরূপ আছে কল্যাণ এবং তাহার প্রতি ব্যবহারে আমি নম্র কথা বলিব।’ সূরা নম্বরঃ ১৮, আয়াত নম্বরঃ ৮৮
২৪) বল, ‘আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষই, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহ্ একমাত্র ইলাহ্। সুতরাং যে তাহার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে ও তাহার প্রতিপালকের ‘ইবাদতে কাহাকেও শরীক না করে। সূরা নম্বরঃ ১৮, আয়াত ১১০
২৫) কিন্তু উহারা নহে-যাহারা তওবা করিয়াছে, ঈমান আনিয়াছে ও সৎকর্ম করিয়াছে। উহারা তো জান্নাতে প্রবেশ করিবে। উহাদের প্রতি কোন জুলুম করা হইবে না। সূরা নম্বরঃ ১৯, আয়াত নম্বরঃ ৬০
২৬) এবং আমি অবশ্যই ক্ষমাশীল তাহার প্রতি, যে তওবা করে, ঈমান আনে, সৎকর্ম করে ও সৎপথে অবিচলিত থাকে। সূরা নম্বরঃ ২০,নম্বরঃ ৮২
২৭) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ্ অবশ্যই তাহাদেরকে দাখিল করিবেন জান্নাতে, যাহার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত; আল্লাহ্ যাহা ইচ্ছা তাহাই করেন। সূরা নম্বরঃ ২২, আয়াত নম্বরঃ ১৪
২৮) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ্ তাহাদেরকে দাখিল করিবেন জান্নাতে যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তাহাদেরকে অলঙ্কৃত করা হইবে স্বর্ণ-কঙ্কন ও মুক্তা দ্বারা এবং সেখানে তাহাদের পোশাক-পরিচ্ছদ হইবে রেশমের। সূরা নম্বরঃ ২২, আয়াত নম্বরঃ ২৩
২৯) সেই দিন আল্লাহ্রই আধিপত্য; তিনিই তাহাদের বিচার করিবেন। সুতরাং যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহারা অবস্থান করিবে সুখদ কাননে। সূরা নম্বরঃ ২২, আয়াত নম্বরঃ ৫৬
৩০) তাহারা নয়, যাহারা তওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে। আল্লাহ্ উহাদের পাপ পরিবর্তন করিয়া দিবেন পুণ্যের দ্বারা। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। সূরা নম্বরঃ ২৫, আয়াত নম্বরঃ ৭০
৩১) যে ব্যক্তি তওবা করে ও সৎকর্ম করে সে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্র অভিমুখী হয়। সূরা নম্বরঃ ২৫, আয়াত নম্বরঃ ৭১
৩২) কিন্তু উহারা ব্যতীত, যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং আল্লাহ্ কে অধিক স্মরণ করে ও অত্যাচারিত হইবার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে। অত্যাচারীরা শীঘ্রই জানিবে কোন্ স্থলে উহারা প্রত্যাবর্তন করিবে।সূরাঃ২৬ নম্বরঃ ২২৭
৩৩) তবে যে ব্যক্তি তওবা করিয়াছিল এবং ঈমান আনিয়াছিল ও সৎকর্ম করিয়াছিল, আশা করা যায় সে সাফল্য অর্জনকারীদের অন্তর্ভুক্ত হইবে। সূরা নম্বরঃ ২৮, আয়াত নম্বরঃ ৬৭
৩৪) এবং যাহাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছিল তাহারা বলিল, ধিক তোমাদেরকে! যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহাদের জন্য আল্লাহ্র পুরস্কারই শ্রেষ্ঠ এবং ধৈর্যশীল ব্যতীত ইহা কেহ পাইবে না।’সূরা নম্বরঃ ২৮, আয়াত ৮০
৩৫) এবং যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আমি নিশ্চয়ই তাহাদের হইতে তাহাদের মন্দ কর্মগুলি মিটাইয়া দিব এবং আমি অবশ্যই তাহাদেরকে প্রতিদান দিব, তাহারা যে উত্তম কর্ম করিত তাহার। সূরা নম্বরঃ ২৯, আয়াত নম্বরঃ ৭
৩৬) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আমি অবশ্যই তাহাদের বসবাসের জন্য সুউচ্চ প্রাসাদ দান করিব জান্নাতে, যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, কত উত্তম প্রতিদান সেই সকল কর্মশীলদের জন্য, সূরা নম্বরঃ ২৯, আয়াত নম্বরঃ ৫৮
৩৭) কারণ যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ্ তাহাদেরকে নিজ অনুগ্রহে পুরস্কৃত করেন। তিনি কাফিরদেরকে পছন্দ করেন। সূরা ৩০, আয়াত ৪৫
৩৮) যাহারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে তাহাদের কৃতকর্মের ফলস্বরূপ তাহাদের আপ্যায়নের জন্য তাহাদের স্থায়ী বাসস্থান হইবে জান্নাত। সূরা নম্বরঃ ৩২,আয়াত ১৯
৩৯) তোমাদের মধ্যে যে কেহ আল্লাহ্ এবং তাঁহার রাসূলের প্রতি অনুগত হইবে ও সৎকর্ম করিবে তাহাকে আমি পুরস্কার দিব দুইবার এবং তাহার জন্য আমি প্রস্তুত রাখিয়াছি সম্মান জনক রিযিক। সূরা নম্বরঃ ৩৩, আয়াত নম্বরঃ ৩১
৪০) তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি এমন কিছু নয় যাহা তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করিয়া দিবে ; তবে যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাহারাই তাহাদের কর্মের জন্য পাইবে বহুগুণ পুরস্কার; আর তাহারা প্রাসাদে নিরাপদে থাকিবে। সূরাঃ ৩৪,আয়াত নম্বরঃ ৩৭
৪১) যাহারা কুফরী করে তাহাদের জন্য আছে কঠিন শাস্তি এবং যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহাদের জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।সূরা ৩৫, আয়াত ৭
৪২) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং যাহারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করিয়া বেড়ায়, আমি কি তাহাদেরকে সমান গণ্য করিব? আমি কি মুত্তাকীদেরকে অপরাধীদের সমান গণ্য করিব? সূরা নম্বরঃ ৩৮, আয়াত নম্বরঃ ২৮
৪৩) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং যাহারা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করিয়া বেড়ায়, আমি কি তাহাদেরকে সমান গণ্য করিব? আমি কি মুত্তাকীদেরকে অপরাধীদের সমান গণ্য করিব? সূরা নম্বরঃ ৩৮, আয়াত নম্বরঃ ২৮
৪৪) সমান নয় অন্ধ ও চক্ষুষ্মান এবং যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং যাহারা দুষ্কৃতিপরায়ণ। তোমরা অল্পই উপদেশ গ্রহণ করিয়া থাক। সূরা নম্বরঃ ৪০,আয়াত নম্বরঃ ৫৮
৪৫) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাহাদের জন্য রহিয়াছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার। সূরা নম্বরঃ ৪১, আয়াত ৮
৪৬) কথায় কে উত্তম ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা যে আল্লাহ্র প্রতি মানুষকে আহবান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত।’সূরা নম্বরঃ ৪১, আয়াত নম্বরঃ ৩৩
৪৭) তুমি জালিমদেরকে ভীত-সন্ত্রস্ত দেখিবে উহাদের কৃতকর্মের জন্য; আর ইহা আপতিত হইবেই উহাদের উপর। যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহারা থাকিবে জান্নাতের মনোরম স্থানে। তাহারা যাহা কিছু চাহিবে তাহাদের প্রতিপালকের নিকট তাহাই পাইবে। ইহাই তো মহাঅনুগ্রহ। সূরা নম্বরঃ ৪২,আয়াত নম্বরঃ ২২
৪৮) এই সুসংবাদই আল্লাহ্ দেন তাঁহার বান্দাদেরকে যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে। বল, ‘আমি ইহার বিনিময়ে তোমাদের নিকট হইতে আত্নীয়ের সৌহার্দ্য ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান চাই না।’ যে উত্তম কাজ করে আমি তাহার জন্য ইহাতে কল্যাণ বর্ধিত করি। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী।সূরা নম্বরঃ ৪২,আয়াত নম্বরঃ ২৩
৪৯) দুষ্কৃতিকারীরা কি মনে করে যে, আমি জীবন ও মৃত্যুর দিক দিয়া উহাদেরকে তাহাদের সমান গণ্য করিব, যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে? উহাদের সিদ্ধান্ত কত মন্দ। ন্সূরা নম্বরঃ ৪৫, আয়াত নম্বরঃ ২১
৫০) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাহাদের প্রতিপালক তাহাদেরকে দাখিল করিবেন স্বীয় রহমতে। ইহাই মহাসাফল্য। সূরা নম্বরঃ ৪৫, আয়াত নম্বরঃ ৩০
৫১) যাহারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে এবং মুহাম্মাদের প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহাতে বিশ্বাস করে, আর উহাই তাহাদের প্রতিপালক হইতে প্রেরিত সত্য, তিনি তাহাদের মন্দ কর্মগুলি বিদূরিত করিবেন এবং তাহাদের অবস্থা ভাল করিবেন। সূরা নম্বরঃ ৪৭, আয়াত নম্বরঃ ২
৫২) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ্ তাহাদেরকে দাখিল করিবেন জান্নাতে যাহার নিুদেশে নদী প্রবাহিত ; কিন্তু যাহারা কুফরী করে উহারা ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকে এবং জন্তু-জানোয়ারের মত উদর পূর্তি করে ; আর জাহান্নামই উহাদের নিবাস।সূরা নম্বরঃ ৪৭, আয়াত ১২
৫৩) স্মরণ কর, যেদিন তিনি তোমাদেরকে সমবেত করিবেন সমাবেশ দিবসে সেদিন হইবে লাভ-লোকসানের দিন। যে ব্যক্তি আল্লাহে বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তিনি তাহার পাপ মোচন করিবেন এবং তাহাকে দাখিল করিবেন জান্নাতে; যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তাহারা হইবে চিরস্থায়ী। ইহাই মহাসাফল্য। সূরা ৬৪, আয়াত ৯
৫৪) এক রাসূল, যে তোমাদের নিকট আল্লাহ্র সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ আবৃত্তি করে, যাহারা মু’মিন ও সৎকর্মপরায়ণ তাহাদেরকে অন্ধকার হইতে আলোতে আনিবার জন্য। যে কেহ আল্লাহ্হে বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে তিনি তাহাকে দাখিল করিবেন জান্নাতে, যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেখানে তাহারা চিরস্থায়ী হইবে; আল্লাহ্ তাহাকে উত্তম রিযিক দিবেন। সূরা নম্বরঃ ৬৫, আয়াত নম্বরঃ ১১
৫৫) কিন্তু যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহাদের জন্য রহিয়াছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার। সূরা ৮৪, আয়াত ২৫
৫৬) অবশ্যই যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাহাদের জন্য আছে জান্নাত, যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, ইহাই মহাসাফল্য। সূরা নম্বরঃ ৮৫, আয়াত নম্বরঃ ১১
৫৭) যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাহারাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ। সূরাঃ ৯৮, নম্বরঃ ৭
৫৮) কিন্তু উহারা নয়, যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্যের উপদেশ দেয়। সূরা নম্বরঃ ১০৩, আয়াত নম্বরঃ ৩
৫৯) তোমাদের মধ্যে যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ্ তাহাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিতেছেন যে, তিনি অবশ্যই তাহাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব দান করিবেন, যেমন তিনি প্রতিনিধিত্ব দান করিয়াছিলেন তাহাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাহাদের জন্য প্রতিষ্ঠিত করিবেন তাহাদের দীনকে যাহা তিনি তাহাদের জন্য পছন্দ করিয়াছেন এবং তাহাদের ভয়ভীতির পরিবর্তে তাহাদেরকে অবশ্য নিরাপত্তা দান করিবেন। তাহারা আমার ‘ইবাদত করিবে, আমার কোন শরীক করিবে না, অতঃপর যাহারা অকৃতজ্ঞ হইবে তাহারা তো সত্যত্যাগী।সূরা নম্বরঃ ২৪, আয়াত নম্বরঃ ৫৫
সাবধান!! ৯) এইগুলি আল্লাহ্র আয়াত, যাহা আমি তোমার নিকট তিলাওয়াত করিতেছি যথাযথ ভাবে। সুতরাং আল্লাহ্র এবং তাহাঁর আয়তের পরিবর্তে উহারা আর কোন হাদীসে বিশ্বাস করিবে?সূরা নম্বরঃ ৪৫, আয়াত ৬
শুধু নামাজ পড়লে জান্নাত দিবে এমন একটি আয়াতও নেই।
বরং মানুষকে যখন বলা হয় তোমরা কোরানের আলোকে ইবাদত কর, তখন তারা বলে থাকে——
যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা তোমরা অনুসরণ কর’, তাহারা বলে, ‘না, বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহার অনুসরণ করিব।’ এমন কি, তাহাদের পিতৃ পুরুষগণ যদিও কিছুই বুঝিত না এবং তাহারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না-তৎসত্ত্বেও।সূরা নম্বরঃ ২, আয়াত নম্বরঃ ১৭০ আল্লাহ সাবধান করে মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন-
১) হে মু’মিনগণ! পণ্ডিত এবং সংসার বিরাগীদের মধ্যে অনেকেই লোকের ধন-সম্পদ অন্যায় ভাবে ভোগ করিয়া থাকে এবং লোককে আল্লাহ্র পথ হইতে নিবৃত্ত করে। আর যাহারা স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে এবং আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে না উহাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তির সংবাদ দাও। সূরা নম্বরঃ তাওবাহ ৯, আয়াত ৩৪
যখন মানুষ বলে সবাই তাহলে কি ভুল করতেছে? আল্লাহ তখন জানিয়ে দেন —— ১) যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।সূরা নম্বরঃ আনআম ৬, আয়াত নম্বরঃ ১১৬
যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা তোমরা অনুসরণ কর’, তাহারা বলে, ‘না, বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহার অনুসরণ করিব।’ এমন কি, তাহাদের পিতৃ পুরুষগণ যদিও কিছুই বুঝিত না এবং তাহারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না-তৎসত্ত্বেও। সূরা নম্বরঃ ২, আয়াত নম্বরঃ ১৭০
সংকলনে এ,কে,এম একরামুল হক।
১০) বল, ‘আমার সালাত, আমার ‘ইবাদত, আমার জীবন ও আমার মরণ জগত সমূহের প্রতিপালক আল্লাহ্রই উদ্দেশ্য।’ (৬ঃ১৬২)
১১,) বল, ‘হে আমার প্রতি-পালক! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি শয়তানের প্ররোচনা হইতে,
وَقُلْ رَّبِّ اَعُوْذُ بِكَ مِنْ هَمَزٰتِ الشَّيٰطِيْنِۙ
সূরা নম্বরঃ ২৩, আয়াত নম্বরঃ ৯৭
৪) সেই ছিল এক উম্মত, তাহা অতীত হইয়াছে। তাহারা যাহা অর্জন করিয়াছে তাহা তাহাদের। তোমরা যাহা অর্জন কর তাহা তোমাদের। তাহারা যাহা করিত সে সম্বন্ধে তোমাদের কোন প্রশ্ন করা হইবে না। সূরা নম্বরঃ বাকারা ২, আয়াত ১৩৪
বাপ দাদার ধর্ম ১] আর যখন তাদেরকে কেউ বলে যে, সে হুকুমেরই আনুগত্য কর যা আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেছেন, তখন তারা বলে কখনো না, আমরা তো সে বিষয়েরই অনুসরণ করব। যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে দেখেছি। যদি ও তাদের বাপ দাদারা কিছুই জানতো না, জানতো না সরল পথও। ২ঃ১৭০
২] তারা যখন কোন মন্দ কাজ করে, তখন বলে আমরা বাপ-দাদাকে এমনি করতে দেখেছি এবং আল্লাহও আমাদেরকে এ নির্দেশই দিয়েছেন। আল্লাহ মন্দকাজের আদেশ দেন না। এমন কথা আল্লাহর প্রতি কেন আরোপ কর, যা তোমরা জান না। আরাফ ২৮ ৩] তারা বললঃ তুমি কি আমাদের কাছে এজন্যে এসেছ যে আমরা এক আল্লাহর এবাদত করি এবং আমাদের বাপ-দাদা যাদের পূজা করত, তাদেরকে ছেড়ে দেই? আরাফ ৭০ ৪] অথবা বলতে শুরু কর যে, অংশীদারিত্বের প্রথা তো আমাদের বাপ-দাদারা উদ্ভাবন করেছিল আমাদের পূর্বেই। আর আমরা হলাম তাদের পশ্চাৎবর্তী সন্তান-সন্ততি। তাহলে কি সে কর্মের জন্য আমাদেরকে ধ্বংস করবেন, যা পথভ্রষ্টরা করেছে? আরাফ ১৭৩
৫]আমাদের বাপ-দাদা যা পূজা করত তুমি কি আমাদেরকে তার পূজা করতে নিষেধ কর? কিন্তু যার প্রতি তুমি আমাদের আহবান জানাচ্ছ আমাদের তাতে এমন সন্দেহ রয়েছে যে, মন মোটেই সায় দিচ্ছে না। হুদ ৬২ ৬] তাদের পূর্ববর্তী বাপ-দাদারা যেমন পূজা উপাসনা করত, এরাও তেমন করছে। হুদ ১০৯ ৭] তারা বলতঃ তোমরা তো আমাদের মতই মানুষ! তোমরা আমাদেরকে ঐ উপাস্য থেকে বিরত রাখতে চাও, যার এবাদত আমাদের পিতৃপুরুষগণ করত। অতএব তোমরা কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ আনয়ন কর। ইব্রাহীম ১০ ৮] মরিয়ম 46] পিতা বললঃ যে ইব্রাহীম, তুমি কি আমার উপাস্যদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছ? যদি তুমি বিরত না হও, আমি অবশ্যই প্রস্তরাঘাতে তোমার প্রাণনাশ করব। তুমি চিরতরে আমার কাছ থেকে দূর হয়ে যাও। ৯] আম্বিয়া [53] তারা বললঃ আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে এদের পুজা করতে দেখেছি। ৫৪ ] তিনি বললেনঃ তোমরা প্রকাশ্য গোমরাহীতে আছ এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও। ১০] মুমেনিন ২৪ আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের মধ্যে এরূপ কথা শুনিনি। ১১] ফুরকান 43] আপনি কি তাকে দেখেন না, যে তারা প্রবৃত্তিকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে? তবুও কি আপনি তার যিম্মাদার হবেন? ১২ ] শুয়ারা [74] তারা বললঃ না, তবে আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি, তারা এরূপই করত। ১৩] লুকমান২১, তখন তারা বলে, বরং আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে বিষয়ের উপর পেয়েছি, তারই অনুসরণ করব। শয়তান যদি তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তির দিকে দাওয়াত দেয়, তবুও কি? ১৪] সাবা 43] যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ তেলাওয়াত করা হয়, তখন তারা বলে, তোমাদের বাপ-দাদারা যার এবাদত করত এ লোকটি যে তা থেকে তোমাদেরকে বাধা দিতে চায়। তারা আরও বলে, এটা মনগড়া মিথ্যা বৈ নয়। ১৫,] সাফফাত [69] তারা তাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছিল বিপথগামী [70] অতঃপর তারা তদের পদাংক অনুসরণে তৎপর ছিল। ১৬] সাদ [7] আমরা সাবেক ধর্মে এ ধরনের কথা শুনিনি। এটা মনগড়া ব্যাপার বৈ নয়। ১৭] যুখরুফ [22] বরং তারা বলে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছি এক পথের পথিক এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে পথপ্রাপ্ত।২৩ বিত্তশালীরা বলেছে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পেয়েছি এক পথের পথিক এবং আমরা তাদেরই পদাংক অনুসরণ করে চলছি।24] সে বলত, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে ন ৫০, আল্লাহর হেদায়েতের পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে?
পর্ব-১৭
আর যখন তাদেরকে কেউ বলে যে, সে হুকুমেরই আনুগত্য কর যা আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেছেন, তখন তারা বলে কখনো না, আমরা তো সে বিষয়েরই অনুসরণ করব। যাতে আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে দেখেছি। যদি ও তাদের বাপ দাদারা কিছুই জানতো না, জানতো না সরল পথও। সূরা বাকারা :১৭০
যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ তেলাওয়াত করা হয়, তখন তারা বলে, তোমাদের বাপ-দাদারা যার এবাদত করত এ লোকটি যে তা থেকে তোমাদেরকে বাধা দিতে চায়। তারা আরও বলে, এটা মনগড়া মিথ্যা বৈ নয়। সূরা সাবা আয়াত ৪৩
আর যখন বলা হয়, ” তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমাদের নিকট যাহা অবতীর্ণ করা হইয়াছে তোমরা তাহার অনুসরণ কর এবং তাঁহাকে ছাড়া অন্যান্য দরবেশ-আউলিয়ার অনুসরণ করিও না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর। (সূরা আরাফ ৭ আয়াত ৩)
আল্লাহ বলেনঃ ” মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবার জন্য মিথ্যে হাদীস ক্রয় করিয়া নেয় এবং আল্লাহ্-প্রদর্শিত পথ লইয়া ঠাট্টা বিদ্রূপ করে। উহাদেরই জন্য রহিয়াছে অবমাননাকর শাস্তি।( সূরা লোকমান ৩১, আয়াত ৬) তাহারা হাদীসের উদ্বৃতি দিয়ে বলে থাকে কোরানে সব বিস্তারিত নেই এমন কি কিভাবে নামাজ পড়তে হবে কোরানে তার বিস্তারিত নেই। ওসব এবাদত করতে আমাদের হাদীসের স্মরনাপন্ন হতেই হবে।, তাই হাদীস অনুযায়ী আমরা ইবাদত বন্দেগী করি। তখন আল্লাহ বলেনঃ ” আল্লাহ্ অবতীর্ণ করিয়াছেন উত্তম হাদীস সম্বলিত কিতাব যাহা সুসমঞ্জস এবং যাহা পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি করা হয়। ইহাতে, যাহারা তাহাদের প্রতিপালককে ভয় করে, তাহাদের গাত্র রোমাঞ্চিত হয়, অতঃপর তাহাদের দেহমন বিনম্র হইয়া আল্লাহ্র স্মরণে ঝুঁকিয়া পড়ে। ইহাই আল্লাহ্র পথনির্দেশ, তিনি উহা দ্বারা যাহাকে ইচ্ছা পথ প্রদর্শন করেন। আল্লাহ্ যাহাকে বিভ্রান্ত করেন তাহার কোন পথপ্রদর্শক ইত্যাদি নাই।” (সূরা যুমার ২৩) আর যখন তাদের কাছে একমাত্র কোরানে দেয়া বিধান অনুযায়ী সকল ইবাদত বন্দেগী করতে বলা হয় তখন তারা মুখ ভেংচিয়ে দেয়। তাদের লক্ষ্য করে আল্লাহ বলেনঃ “একমাত্র কোরানে আসা আল্লাহর কথা যখন বলা হয় তখন তাদের অন্তর সংকুচিত হয়ে যায়—আর যখন আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো কথা বলা শুরু হয় তখন তারা আনন্দে নেচে উঠে।” সুরা আল যুমার : ৪৫ আর যখন তারা বলে আমাদের হুজুরগন কি তাহলে মিথ্যে শিক্ষা দিয়ে এসেছে এত যুগ যুগ ধরে। আল্লাহ তখন বলেনঃ তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমাদের নিকট যাহা অবতীর্ণ করা হইয়াছে তোমরা তাহার অনুসরণ কর এবং তাঁহাকে ছাড়া অন্যান্য অভিভাবকের অনুসরণ করিও না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর। (৭:৩) তখন তারা প্রশ্ন তুলে তাহলে যারা ইতিপুর্বে মারা গেছেন তারা কি সবাই ভুল আমল করে চলে গেছেন? তাদের কি হবে? তারা কি সবাই জাহান্নামে যাবে? এসব কৌতুহলী প্রশ্নের প্রেক্ষিতে আল্লাহ বলেনঃ সেই ছিল এক উম্মত, তাহা অতীত হইয়াছে। তাহারা যাহা অর্জন করিয়াছে তাহা তাহাদের। তোমরা যাহা অর্জন কর তাহা তোমাদের। তাহারা যাহা করিত সে সম্বন্ধে তোমাদের কোন প্রশ্ন করা হইবে না। (২ঃ১৩৪)
পূর্বে যাহারা অতীত হইয়া গিয়াছে তাহাদের ব্যাপারে ইহাই ছিল আল্লাহ্র রীতি। তুমি কখনও আল্লাহ্র রীতিতে কোন পরিবর্তন পাইবে না। (৩৩:৬২)
আমরা যারা অজ্ঞ তারা ওলী-আওলীয়াকে অনুসরন না করে কি ভাবে ধর্মীয় আমলগুলি করবো। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেনঃ ‘অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথপ্রাপ্ত। (৩৬:২১)
পর্ব-১৮ ১) আমি উহাদের জন্য আমার নিদর্শনাবলী ব্যক্ত করিব, বিশ্বজগতে এবং উহাদের নিজেদের মধ্যে; ফলে উহাদের নিকট সুস্পষ্ট হইয়া উঠিবে যে, উহাই সত্য। ইহা কি তোমার প্রতিপালক সম্পর্কে যথেষ্ট নয় যে, তিনি সর্ববিষয়ে অবহিত? ২)উহারা বলিল, ‘হে শু’আয়ব! তোমার সালাত কি তোমাকে নির্দেশ দেয় যে, আমাদের পিতৃপুরুষেরা যাহার ‘ইবাদত করিত আমাদেরকে তাহা বর্জন করিতে হইবে অথবা আমরা আমাদের ধন-সম্পদ সম্পর্কে যাহা করি তাহাও ? তুমি তো অবশ্যই সহিষ্ণু, ভাল মানুষ!’ ৪) সুতরাং উহারা যাহাদের ইবাদত করে তাহাদের সম্বন্ধে সংশয়ে থাকিও না, পূর্বে উহাদের পিতৃপুরুষেরা যাহাদের ইবাদত করিত উহারা তাহাদেরই ইবাদত করে। অবশ্যই আমি উহাদেরকে উহাদের প্রাপ্য পুরাপুরি দিব-কিছুমাত্র কম করিব না। ৫) তুমি সালাত কায়েম কর দিবসের দুই প্রান্তভাগে ও রজনীর প্রথমাংশে। সৎকর্ম অবশ্যই অসৎকর্ম মিটাইয়া দেয়। যাহারা উপদেশ গ্রহণ করে, ইহা তাহাদের জন্য এক উপদেশ। ৬) আল্লাহ্ অবশ্যই সেইসব লোকের তওবা কবূল করিবেন যাহারা ভুল বশত মন্দ কাজ করে এবং সত্বর তওবা করে, ইহারাই তাহারা, যাহাদের তওবা আল্লাহ্ কবূল করেন। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। 7) যাহার উপর দণ্ডাদেশ অবধারিত হইয়াছে; তুমি কি রক্ষা করিতে পারিবে সেই ব্যক্তিকে, যে জাহা্ননামে আছে? সূরা নম্বরঃ ৩৯, আয়াত নম্বরঃ ১৯ ৮) আল্লাহর নিকট নিকৃষ্টতম জীব সেই, বধির ও মুক যাহারা কিছুই বোঝে না। সূরা নম্বরঃ ৮, আয়াত নম্বরঃ ২২ ৯) আর তাঁহার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রহিয়াছে আকাশ-মণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। ইহাতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই বহু নিদর্শন রহিয়াছে। সূরা নম্বরঃ ৩০, আয়াত নম্বরঃ ২২ ১০) তিনি বলিলেন, ‘আমি যখন তোমাকে আদেশ দিলাম তখন কী তোমাকে নিবৃত্ত করিল যে, তুমি সিজদা করিলে না?’ সে বলিল, ‘আমি তাহার অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ; তুমি আমাকে অগ্নি দ্বারা সৃষ্টি করিয়াছ এবং তাহাকে কর্দম দ্বারা সৃষ্টি করিয়াছ।’ সূরা নম্বরঃ ৭, আয়াত নম্বরঃ ১২. ‘হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর এবং যেথা ইচ্ছা আহার কর, কিন্তু এই বৃক্ষের নিকটবর্তী হইও না; হইলে তোমরা জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হইবে।’ অতঃপর তাহাদের লজ্জাস্থান, যাহা তাহাদের নিকট গোপন রাখা হইয়াছিল তাহা তাহাদের কাছে প্রকাশ করিবার জন্য শয়তান তাহাদেরকে কুমন্ত্রণা দিল এবং বলিল, ‘পাছে তোমরা উভয়ে ফিরিশতা হইয়া যাও কিংবা তোমরা স্থায়ী হও এইজন্যই তোমাদের প্রতিপালক এই বৃক্ষ সম্বন্ধে তোমাদেরকে নিষেধ করিয়াছেন।’ ১১) বনী ইস্রাইলরা সালাত কি ভাবে পড়ছে? ১২) কেহ রাসূলের আনুগত্য করিলে সে তো আল্লাহ্রই আনুগত্য করিল এবং কেহ মুখ ফিরাইয়া লইলে তোমাকে তাহাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক প্রেরণ করি নাই। ১৩) আল্লাহ্ অবতীর্ণ করিয়াছেন উত্তম হাদীস সম্বলিত কিতাব যাহা সুসমঞ্জস এবং যাহা পুনঃ পুনঃ আবৃত্তি করা হয়। সূরা নম্বরঃ যুমার ৩৯, আয়াত ২৩ ১৪) আলিফ-লাম-রা, এই কিতাব প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞের নিকট হইতে; ইহার আয়াত সমূহ সুস্পষ্ট, সুবিন্যস্ত ও পরে বিশদ ভাবে বিবৃত যে, সূরা নম্বরঃ ১১, আয়াত নম্বরঃ ১ ১৫) হে রাসূল! তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমার প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহা প্রচার কর ; যদি না কর তবে তো তুমি তাঁহার বার্তা প্রচার করিলে না। আল্লাহ্ তোমাকে মানুষ হইতে রক্ষা করবেন নিশ্চয়ই আল্লাহ্ কাফির সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না। ১৬) মু’মিনগণ, ইয়াহূদীগণ, সাবীগণ ও খ্রিস্টানগণের মধ্যে কেহ আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনিলে এবং সৎকাজ করিলে তাহাদের কোন ভয় নাই এবং তাহারা দুঃখিত হইবে না। সূরা নম্বরঃ ৫, আয়াত নম্বরঃ ৬৯ ১৭) অযুর ফরজ ৪ আল্লাহ বলেন, মোল্লা বলেন ৭। হে মু’মিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হইবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করিবে এবং তোমাদের মাথা মসেহ্ করিবে এবং পা গ্রন্থি পর্যন্ত ধৌত করিবে; যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে বিশেষ ভাবে পবিত্র হইবে। তোমরা যদি পীড়িত হও ১৮) সালাম পদ্ধতি ৬:৫৪ ১৯) শয়তান হতে আশ্রয় ২৩:৯৮ ২০) কেন ঐসব ওয়াজ করে না 5:63 ২৪) বহু কিতাব বহনকারী গাঁধা 62:5 ২৫) উপদেশ প্রাপ্ত তারাই হয় যারা 32:15 ২৬) হাদীস কোরানের ব্যাখ্য বলা ভুল — ২৭) বিচার দিবসে উম্মতের প্রতি রাসুলের অভিযোগ ২৮) পার্থক্য করে না 4:152 ২৯) হাদীস কি? 39:23 প্রতারক দাবী হাদীস 31:6 মানুষের বানানো হাদীস:—- ৩০) আল্লাহ তোমাদের জন্যে সব কিছু পরিষ্কার বর্ণনা করে দিতে চান, তোমাদের পূর্ববর্তীদের পথ প্রদর্শন করতে চান। এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করতে চান, আল্লাহ মহাজ্ঞানী রহস্যবিদ। (4:26) ৩১) আমি কোন কিছু লিখতে ছাড়ি নি এ কিতাবে ৩২) বুঝার জন্য কোরআন সহজ করে দিয়েছেন ৩৩) ব্যক্তি আনুগত্য নিষেধ 23:34 ৩৪) ইব্রাহীমের আদর্শ অনুসরনের নির্দেশ 35) সাদাকা ও যাকাত 36) মধ্যবর্তি পথ অনুসরন [(কাফের —— জালেম ——-ফাসেক)] আগুন খেকো :২:১৭৪. ২)- মানুষের মাল অবৈধভাবে ভক্ষনকারী : ৯ : ৩৪. ৩) কুরআনের ব্যপারে : চরম অন্ধ : ১৭: ৭২. ৪১ : ৪৪. ৪) ইসলামের নামে মিথ্যা বলে : ৫১ : ১০. ৫) আল্লাহর নামে বানোয়াট কথা বলে :৪৫:৭ ২৬:২২২ ৬) এরা মুসলিম বলে পরিচয় না দিয়ে সাম্প্রদায়িক পরিচয় দিতে পছন্দ করে! ২২:৭৮, ৪১: ৩৩.১২ :১০১,. ৭) টাকা পয়সার বিনিময়ে ইসলামের নামে শিরক ও কুফর প্রচার করে।১০:৭২, ১১:২৯, ৯:৯, ২:৪১. ৮) এরা শোনা কথা বেশি প্রচার করে : ২৬:২২১ – ২২৩. ৯) এরা দলাদলী করতে পছন্দ করে? ৬:১৫৯, ৩০:৩২, ৩:১০৫, ৪২:১৩. ১০) এরা পোশাক প্রদর্শনী করে বেড়ায়! ৬৩:৪ ১১)- এরা অনৈক্য ও বিচ্ছিন্নতা ছড়ায়! ৩:১০২, ১০৫. ৪:৮২, ৪২:১৩, ৪২:১০, ৪৩:৪৩. ১২) নিজেদেরকে গায়ের জোরে হক ও হিদায়াতপ্রাপ্ত মনে করে। ৭:৩০, ১৮:১০৪, ৫৩:৩৭ ১৩) আল্লাহর আয়াত গোপন করে : ২:৪২, ১৪৬, ১৫৯, ১৭৪, ১৪) আল্লাহর পথে তথা কুরআনের পথে বাধা প্রদান করে। ৯:৩৪. ১৫) মানুষকে আখিরাতের ব্যাপারে মিথ্যা আশ্বাস দেয়। ২:১১১,৫৭;১৪ ১৬) মু’মিন তো তাহারাই, যাহাদের হৃদয় কম্পিত হয় যখন আল্লাহ্কে স্মরণ করা হয় এবং যখন তাঁহার আয়াত তাহাদের নিকট পাঠ করা হয়, তখন উহা তাহাদের ঈমান বৃদ্ধি করে এবং তাহারা তাহাদের প্রতিপালকের উপরই নির্ভর করে। সূরা নম্বর: ৮ আয়াত নম্বর: ২
|
পর্ব-২০
… “”টাকা না নিলে হুজুর খাবে কি!!?””
অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথপ্রাপ্ত।( ইয়াসিন ৩৬ঃ২১)
বল, ‘আমি ইহার জন্য তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাই না এবং যাহারা মিথ্যা দাবি করে আমি তাহাদের অন্তর্ভুক্ত নই।’ সূরা ছোয়াদ ৩৮, আয়াতঃ ৮৬
হে মু’মিনগণ! ধর্মগুর এবং সন্যাসীদের মধ্যে অনেকেই লোকের ধন-সম্পদ অন্যায় ভাবে ভোগ করিয়া থাকে এবং লোককে আল্লাহ্র পথ হইতে নিবৃত্ত করে। (৯:৩৪)
#Khorsed আপনি যাদের অনুসরন করে ধর্ম পালন করেন তারা কি এ আয়াত এর মধ্যে আছেন?
তাবলীগহ জামাত একটা বিষয়ে অন্তত দ্বীনের উপর অটুট রয়েছে, আর তা হল তারা দ্বীনের কাজের বিনিময়ে কোন
বিনিময় গ্রহন করে না এমন কি সোয়ালের ভানও করে না।
আল্লাহ বলেনঃ
‘অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথ প্রাপ্ত।
اتَّبِعُوْا مَنْ لَّا يَسْـــَٔلُكُمْ اَجْرًا وَّهُمْ مُّهْتَدُوْنَ
ইত্তাবিউ মাল্লা ইয়াছালুকুম আঁজরাও ওয়া হুম মুহতাদুন।
(সূরা ইয়ানুস আয়াতঃ২১)
মানুষ মসজিদে ফরজ নামাজগুলি ইমামের পিছনে পড়েnl
৭) এবং তুমি তাহাদের নিকট ইহার জন্য কোন পারিশ্রমিক দাবি করিতেছ না। ইহা তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ব্যতীত কিছু নয়। সূরা ইউছুব ১২, আয়াত : ১০৪
৮) বল, ‘আমি ইহার জন্য তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাই না এবং যাহারা মিথ্যা দাবি করে আমি তাহাদের অন্তর্ভুক্ত নই।'( সূরা ছোয়াদ ৩৮,)
৯) বল, ‘আমি তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চাই না, তাহা তো তোমাদেরই ; আমার পুরস্কার তো আছে আল্লাহ্র নিকট এবং তিনি সর্ববিষয় দ্রষ্টা।’ সূরা সাবা ৩৪, আয়াত নম্বরঃ ৪৭
১০) হে আমার সম্প্রদায় ! আমি ইহার পরিবর্তে তোমাদের নিকট পারিশ্রমিক কামনা করি না। আমার পারিশ্রমিক আছে তাঁহারই নিকট, যিনি আমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। তোমরা কি তবুও অনুধাবন করিবে না ?
সূরা হুদ ১১, আয়াত নম্বরঃ ৫১
১১) এই সুসংবাদই আল্লাহ্ দেন তাঁহার বান্দাদেরকে যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে। বল, ‘আমি ইহার বিনিময়ে তোমাদের নিকট হইতে আত্নীয়ের সৌহার্দ্য ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান চাই না।’ যে উত্তম কাজ করে আমি তাহার জন্য ইহাতে কল্যাণ বর্ধিত করি। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী। সূরা আশ-শুরা ৪২, আয়াত নম্বরঃ ২৩aa
১২) ‘অতঃপর তোমরা মুখ ফিরাইয়া লইলে লইতে পার, তোমাদের নিকট আমি তো কোন পারিশ্রমিক চাই নাই, আমার পারিশ্রমিক আছে আল্লাহ্র নিকট, আমি তো আত্নসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হইতে আদিষ্ট হইয়াছি।’
সূরা ইউনুস, আয়াতঃ ৭২
১৩) হে আমার সম্প্রদায় ! ইহার পরিবর্তে আমি তোমাদের নিকট ধনসম্পদ কামনা করি না। আমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহ্রই নিকট এবং মু’মিনদেরকে তাড়াইয়া দেওয়া আমার কাজ নয় ; তাহারা নিশ্চিত ভাবে তাহাদের প্রতিপালকের সাক্ষাৎ লাভ করিবে। কিন্তু আমি তো দেখিতেছি তোমরা এক অজ্ঞ সম্প্রদায়। (সুরা হুদ১১ঃ২৮)
১৪) উহাদেরকেই আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করিয়াছেন, সুতরাং তুমি তাহাদের পথের অনুসরণ কর। বল, ‘ইহার জন্য আমি তোমাদের নিকট পারিশ্রমিক চাই না, ইহা তো শুধু বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ।’ সূরা আনআম ৬, আয়াত নম্বরঃ ৯০
১৫) আল্লাহ্ যে কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছেন যাহারা তাহা গোপন রাখে ও বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে তাহারা নিজেদের জঠরে অগ্নি ব্যতীত আর কিছুই পুরে না। কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাহাদের সঙ্গে কথা বলিবেন না এবং তাহাদেরকে পবিত্র করিবেন না। তাহাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রহিয়াছে।( বাকারা ২, আয়াত ১৭৪)
তাহলে হারাম কোন কাজকে কি কোন আবেগ ঘন যুক্তি দিয়ে হালাল করা যেতে পারে?
বিপক্ষে যুক্তি থাকলে রেফারেন্স সহ পেশ করুন।
Allah says: ‘Follow those who seek no reward from you and those who are guided.
اتَّبِعُوْا مَنْ لَّا يَسْـــَٔلُكُمْ اَجْرًا وَّهُمْ مُّهْتَدُوْنَ
Ittabiu malla yachalukum anjrao wa hum muhtadun. (Surah Yanus verse 21)
People pray the obligatory prayers behind the imam in the mosque. The rest of the prayers are to be recited by oneself. When they perform the rest of the prayers by themselves, it can be understood that they all know how to pray.
In the past, the system was like that, those who know how to give adhan will give adhan, those who know how to lead namaz will lead namaz. Such was the order of the Holy Prophet. But who changed the system? What is the reason behind it? The fear is instilled that if Sahi Shuddha is not clean, everyone will have to bear the burden of sins.
If they can pray by themselves, why can’t they pray in the mosque on a rotational basis? Then there is no need for a hired imam muezzin.
This is how fanatical emotional Muslims have been brainwashed and established professions in the name of religion. One of which is Imamat of prayers, Moazzem, Khadem etc.
Those who conceal the Book which Allah has revealed and accept a trifling price in return, fill their stomachs with nothing but fire. Allah will not speak to them on the Day of Resurrection and will not purify them. There is a grievous punishment for them. Surah number: 2, verse number: 174
ReplyForward Add reaction |
পর্ব-২১
গুরু বাক্য
“কখনও কখনও মানুষ সত্য শুনতে চায় না কারণ তারা তাদের বিভ্রান্তিগুলি ধ্বংস করতে চায় না।”
মানুষ নিজেই নিজের স্বর্গ বা নরকের সৃষ্টিকর্তা, আর তার নিজের ভুল ছাড়া অন্য কোন শয়তান নেই”।
দীর্ঘদিন যদি কোন মিথ্যে শুনতে শুনতে অভ্যস্থ হয়ে যায় এবং তার বিপরীত কোন সত্য হাজির না হয়, তবে সে মিথ্যেটাও একদিন সত্যে পরিনত হয় এবং তা মানব হৃদয়ে মজবুদ এক ভিত গেড়ে বসে। সে তখন সে ভিত থেকে আর সড়ে আসতে পারে না, যত সত্যই তার কাছে উপস্থাপন করা হোক না কেন। এবং এই বিশ্বাসের ঘরে কেউ আঘাত করলে তা মেনে নিতে পারে না। এমনকি নিজ সন্তানকেও সে ত্যাগ করতে প্রস্তুত। বন্ধু-বান্ধব, পাড়া পড়শি, আত্মীয়- স্বজন তো দুরে থাক। তার মনে দীর্ঘ দিনের লালিত সে বিশ্বাসের বিপরীতে কোন সত্যকেও উপস্থাপন করা হলে সে আৎকে উঠে। প্রতিহত করতে চায়,বিরোধিতায় লিপ্ত হয় এমন কি জীবন দিতেও প্রস্তুত হয়ে যায়। আর সে বিশ্বাস যদি হয় ধর্মীয় – তবে তো আর কথাই নেই। ফলে অনেককে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের পরও দেখা যায় সে তার গোড়ামীর প্রাচীর ভেদ করে বেরিয়ে আসতে পারে না। তার মুল কারন সত্যটা তার সামনে শুরুতে কোন দিন উপস্থাপন করা হয়নি। ফলে পৃথিবী নামক গ্রহের বুকে জাতী একটি হলেও ধর্ম চার হাজার অধিক। কেউ কাউকে তার ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত থেকে এক বিন্দু টলাতে সক্ষম নয়। কারন জন্মগত ভাবে সে এ অনুভুতি গুলো দেখে আসতেছে। বহু পুর্ব হতে বাপ-দাদাদেরকেও এরুপই করতে দেখে এসেছে। সে যাকে,যাকে ভক্তি শ্রদ্ধা করে যাকে ইত্তেবা করে তার মুখেও এমনি শুনে এসেছে। তাই তার অন্য কোন কথা, মত কানে পৌছা মাত্র গাজ্বলে উঠে। শোনা বা তা একটু রিভিউ করে দেখা তো দূরে থাক। এমন মানুষদের নিয়ে আল্লাহ ঘোষনা দেনঃ
I
*******–******************
কোরআন -কার উপর নাযিল হয়েছে- কোরআন দ্বারা- প্রমাণ করা যাবে কি?
আলোচনা পর্যালোচনায় প্রথমেই আসে:——
১) ইসলাম ধর্মের উৎপত্তিস্থল আসলে কোথায় মক্কায় না উজবিকিস্থানে?
২) কোরান কি স্বীকার করেছে মুহাম্মদ সাঃ এর জন্ম ও জীবনীর ইতিহাস, ফাতেমা, আবুবকর,উমর,উসমান, আলী, খাদিজা,হাসান,হোসাইন, হোরাইরার কল্পিত গল্প ও ইতিহাস? মুসলমানরা কোথা থেকে সংগ্রহ করেছে এ বিশ্বাসের ইতিহাস?
৩) আল্লাহ সত্যমিথ্যা যাচাই করতে বলেছেন কোরআন দিয়ে, আপনি করেন কি দিয়ে?
৮৬ঃ১৩ , ৪ঃ ১০৫, ৫ঃ ৪৯, দেখে নিতে পারেন।
আমি তো তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছি যাহাতে তুমি আল্লাহ্ তোমাকে যাহা জানাইয়াছেন সেই অনুসারে মানুষের মধ্যে বিচার মীমাংসা কর এবং তুমি বিশ্বাসভঙ্গকারীদের সমর্থনে তর্ক করিও না।(৪:১০৫)
কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছি যাহাতে তুমি আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তদনুযায়ী তাহাদের বিচার নিষ্পত্তি কর, তাহাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ না কর এবং তাহাদের সম্বন্ধে সতর্ক হও যাহাতে আল্লাহ্ যাহা তোমার প্রতি অবতীর্ণ করিয়াছেন উহারা তাহার কিছু হইতে তোমাকে বিচ্যুত না করে। যদি তাহারা মুখ ফিরাইয়া নেয় তবে জানিয়া রাখ যে, তাহাদের কোন কোন পাপের জন্য আল্লাহ্ তাহাদেরকে শাস্তি দিতে চান এবং মানুষের মধ্যে অনেকেই তো সত্যত্যাগী। সূরা নম্বর: ৫ আয়াত নম্বর: ৪৯
৪) আমি আপনাকে সমগ্র মানব জাতীর জন্য সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী রুপে পাঠিয়েছি। (৩৪ঃ২৮)
আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি যাতে আপনি মক্কা ও তার আশে পাশের লোকদের সতর্ক করেন। ( ৪২ঃ ৭)
দুটি আয়াত পাশাপাশি রেখে বুঝার চেষ্টা করুন। সিদ্ধান্ত কি দ্বারায়?
আবার কোরআন -কার উপর নাযিল হয়েছে- কোরআন দ্বারা- প্রমাণ করতে বলায় বলা যায় ঃ
কোরআন ধারাবাহিক ভাবে সকল প্রসংশিত নবীর উপরই নাজিল হয়েছে।
যাহারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে এবং মুহাম্মাদের(প্রসংশিতর) প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহাতে বিশ্বাস করে, আর উহাই তাহাদের প্রতিপালক হইতে প্রেরিত সত্য, তিনি তাহাদের মন্দ কর্মগুলি বিদূরিত করিবেন এবং তাহাদের অবস্থা ভাল করিবেন।
সূরা নম্বরঃ ৪৭, আয়াত নম্বরঃ ২
উহারা কি তাঁহাকে ব্যতীত বহু হুকুম/বিধানদাতা গ্রহণ করিয়াছে ? বল, ‘তোমরা তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর।
ইহাই, আমার সঙ্গে যাহারা আছে তাহাদের জন্য উপদেশ
এবং ইহাই উপদেশ ছিল আমার পূর্ববর্তীদের জন্য।’
কিন্তু উহাদের অধিকাংশই প্রকৃত সত্য জানে না, ফলে উহারা মুখ ফিরাইয়া নেয়। (সূরাঃ ২১, আয়াতঃ ২৪)
ReplyForward Add reaction |
গুরু বাক্য
“কখনও কখনও মানুষ সত্য শুনতে চায় না কারণ তারা তাদের বিভ্রান্তিগুলি ধ্বংস করতে চায় না।”
মানুষ নিজেই নিজের স্বর্গ বা নরকের সৃষ্টিকর্তা, আর তার নিজের ভুল ছাড়া অন্য কোন শয়তান নেই”।
দীর্ঘদিন যদি কোন মিথ্যে শুনতে শুনতে অভ্যস্থ হয়ে যায় এবং তার বিপরীত কোন সত্য হাজির না হয়, তবে সে মিথ্যেটাও একদিন সত্যে পরিনত হয় এবং তা মানব হৃদয়ে মজবুদ এক ভিত গেড়ে বসে। সে তখন সে ভিত থেকে আর সড়ে আসতে পারে না, যত সত্যই তার কাছে উপস্থাপন করা হোক না কেন। এবং এই বিশ্বাসের ঘরে কেউ আঘাত করলে তা মেনে নিতে পারে না। এমনকি নিজ সন্তানকেও সে ত্যাগ করতে প্রস্তুত। বন্ধু-বান্ধব, পাড়া পড়শি, আত্মীয়- স্বজন তো দুরে থাক। তার মনে দীর্ঘ দিনের লালিত সে বিশ্বাসের বিপরীতে কোন সত্যকেও উপস্থাপন করা হলে সে আৎকে উঠে। প্রতিহত করতে চায়,বিরোধিতায় লিপ্ত হয় এমন কি জীবন দিতেও প্রস্তুত হয়ে যায়। আর সে বিশ্বাস যদি হয় ধর্মীয় – তবে তো আর কথাই নেই। ফলে অনেককে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের পরও দেখা যায় সে তার গোড়ামীর প্রাচীর ভেদ করে বেরিয়ে আসতে পারে না। তার মুল কারন সত্যটা তার সামনে শুরুতে কোন দিন উপস্থাপন করা হয়নি। ফলে পৃথিবী নামক গ্রহের বুকে জাতী একটি হলেও ধর্ম চার হাজার অধিক। কেউ কাউকে তার ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত থেকে এক বিন্দু টলাতে সক্ষম নয়। কারন জন্মগত ভাবে সে এ অনুভুতি গুলো দেখে আসতেছে। বহু পুর্ব হতে বাপ-দাদাদেরকেও এরুপই করতে দেখে এসেছে। সে যাকে,যাকে ভক্তি শ্রদ্ধা করে যাকে ইত্তেবা করে তার মুখেও এমনি শুনে এসেছে। তাই তার অন্য কোন কথা, মত কানে পৌছা মাত্র গাজ্বলে উঠে। শোনা বা তা একটু রিভিউ করে দেখা তো দূরে থাক। এমন মানুষদের নিয়ে আল্লাহ ঘোষনা দেনঃ
I
*******–******************
কোরআন -কার উপর নাযিল হয়েছে- কোরআন দ্বারা- প্রমাণ করা যাবে কি?
আলোচনা পর্যালোচনায় প্রথমেই আসে:——
১) ইসলাম ধর্মের উৎপত্তিস্থল আসলে কোথায় মক্কায় না উজবিকিস্থানে?
২) কোরান কি স্বীকার করেছে মুহাম্মদ সাঃ এর জন্ম ও জীবনীর ইতিহাস, ফাতেমা, আবুবকর,উমর,উসমান, আলী, খাদিজা,হাসান,হোসাইন, হোরাইরার কল্পিত গল্প ও ইতিহাস? মুসলমানরা কোথা থেকে সংগ্রহ করেছে এ বিশ্বাসের ইতিহাস?
৩) আল্লাহ সত্যমিথ্যা যাচাই করতে বলেছেন কোরআন দিয়ে, আপনি করেন কি দিয়ে?
৮৬ঃ১৩ , ৪ঃ ১০৫, ৫ঃ ৪৯, দেখে নিতে পারেন।
আমি তো তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছি যাহাতে তুমি আল্লাহ্ তোমাকে যাহা জানাইয়াছেন সেই অনুসারে মানুষের মধ্যে বিচার মীমাংসা কর এবং তুমি বিশ্বাসভঙ্গকারীদের সমর্থনে তর্ক করিও না।(৪:১০৫)
কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছি যাহাতে তুমি আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তদনুযায়ী তাহাদের বিচার নিষ্পত্তি কর, তাহাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ না কর এবং তাহাদের সম্বন্ধে সতর্ক হও যাহাতে আল্লাহ্ যাহা তোমার প্রতি অবতীর্ণ করিয়াছেন উহারা তাহার কিছু হইতে তোমাকে বিচ্যুত না করে। যদি তাহারা মুখ ফিরাইয়া নেয় তবে জানিয়া রাখ যে, তাহাদের কোন কোন পাপের জন্য আল্লাহ্ তাহাদেরকে শাস্তি দিতে চান এবং মানুষের মধ্যে অনেকেই তো সত্যত্যাগী। সূরা নম্বর: ৫ আয়াত নম্বর: ৪৯
৪) আমি আপনাকে সমগ্র মানব জাতীর জন্য সুসংবাদ দাতা ও সতর্ককারী রুপে পাঠিয়েছি। (৩৪ঃ২৮)
আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি যাতে আপনি মক্কা ও তার আশে পাশের লোকদের সতর্ক করেন। ( ৪২ঃ ৭)
দুটি আয়াত পাশাপাশি রেখে বুঝার চেষ্টা করুন। সিদ্ধান্ত কি দ্বারায়?
আবার কোরআন -কার উপর নাযিল হয়েছে- কোরআন দ্বারা- প্রমাণ করতে বলায় বলা যায় ঃ
কোরআন ধারাবাহিক ভাবে সকল প্রসংশিত নবীর উপরই নাজিল হয়েছে।
যাহারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে এবং মুহাম্মাদের(প্রসংশিতর) প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহাতে বিশ্বাস করে, আর উহাই তাহাদের প্রতিপালক হইতে প্রেরিত সত্য, তিনি তাহাদের মন্দ কর্মগুলি বিদূরিত করিবেন এবং তাহাদের অবস্থা ভাল করিবেন।
সূরা নম্বরঃ ৪৭, আয়াত নম্বরঃ ২
উহারা কি তাঁহাকে ব্যতীত বহু হুকুম/বিধানদাতা গ্রহণ করিয়াছে ? বল, ‘তোমরা তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত কর।
ইহাই, আমার সঙ্গে যাহারা আছে তাহাদের জন্য উপদেশ
এবং ইহাই উপদেশ ছিল আমার পূর্ববর্তীদের জন্য।’
কিন্তু উহাদের অধিকাংশই প্রকৃত সত্য জানে না, ফলে উহারা মুখ ফিরাইয়া নেয়। (সূরাঃ ২১, আয়াতঃ ২৪)
ReplyForward Add reaction |
নাস্তিক বলে কোন শব্দ হয় না। নাস্তিক হতে চাইলেও হওয়া যায় না। লাটাইয়ের সুতোয় টান খেয়ে ফিরে আসতে বাধ্য সে। আর সেটাই মৃত্যু। ঘুড়ি নির্দিষ্ট একটা সীমায় গিয়ে আর সুতো টানে না, তার উড়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। আর সেটাই মৃত্যু, সেটাই ফিরে যাওয়া। যার একটা মালিক আছে সে নাস্তিক হতে চাইলেও পারে না, হয়তো সে নিজেকে বড় জোর নাস্তিক দাবী করতে পারে। এর বেশী কিছু না। যেহেতু তাকে এক সময় মরন কে বরন করতে হয়। মরন কে প্রতিরোধ করতে পারলে তবে সে নাস্তিক দাবী করতে পারে।
স্রষ্টাকে অস্বীকার করে নাস্তিক হওয়া যায়না।
মরন কে অস্বীকার করতে পারলে নাস্তিক হতে পারে।
এ জন্যই মরন ট্রান্সফার অর্ডার এর রোধ ক্ষমতা কাউকে তিনি দেন নাই। ওখানেই রবের একত্ববাদ প্রমান করে।
একমাত্র ইবলিশ নাস্তিক হতে পেরেছে।
তবে মেকি নাস্তিক হওয়ার তিন উপায় আছেঃ
১। আপনি যে ধর্মের মানুষ সে ধর্মের কুসংস্কার নিয়ে কথা বলবেন।
২। ধর্মীয় মিথ এবং ধর্ম ব্যবসা, উগ্রবাদীতার বিরোধিতা করে সত্য কথা বলবেন।
৩। ধর্মীয় মনস্তাত্ত্বিক এবং তাত্ত্বিক বিষয়ে ভালো ধারণা নিয়ে লেখালেখি করবেন।
এই তিনটি কাজ করলে জনসাধারণ, অন্ধবিশ্বাসী, উগ্রবাদী, যুক্তি বুদ্ধিহীন লোক গুলো আপনাকে নাস্তিক বানিয়ে দিবে। কিন্তু খোদার কাছে আপনি থাকবেন আস্তিক হয়ে জ্ঞানীর মর্যাদা নিয়ে।
নির্দিষ্ট হাতে গুনা কয়েকটি বিষয় ছাড়া সব হালাল।
হারামের এত বড় ফিরিস্তির সূচীপত্র রবের না।
এসব রবের মিথ্যে নায়েব দাবীদারদের বানানো।
তারা মানুষের কাছে রব দাবী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এসব ফিরিস্তি আচার অনুষ্ঠান পুঁজোর ডালা সাজিয়েছে।
সাধারন একটি মানুষও জাহান্নামে যাবে না, হয়ত কিছু শাস্তি পাবে হাশরের মাঠে, কিন্তু সব জান্নাতে ঢুকবে।
জাহান্নাম পুরন হবে ধর্মীয় আলেম,পুরোহিত আর সমাজের জ্ঞানপাপীদের দ্বারা। কারন তারা রবের আসনে বসার জন্য রব দাবী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এসব ফিরিস্তি আচার অনুষ্ঠান পুঁজোর ডালা সাজিয়ে সাধারন মানুষকে মুলধারা থেকে দূরে সড়িয়ে রাখার চেষ্টা করেছে। পাকড়াও হবে সেইদিন তারা। অধিকাংশ আলেম জাহান্নামী। কারন তারা গোপন কারী, কুফর করে রবের সাথে। অথচ তারা ভাল করে সব জানে। জাহান্নাম তাদের জন্য অপেক্ষামান।
মাদ্রাসায় ফোন গেছে মা অসুস্থ –
বাসায় এসে দেখে মা ডাকার মত আর মা নেই…।
*********
মানুষের ধনে বৃদ্ধি পাইবে বলিয়া তোমরা যে সুদ দিয়া থাক, আল্লাহ্র দৃষ্টিতে তাহা ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করে না। কিন্তু আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভের জন্য যে যাকাত তোমরা দিয়া থাক তাহাই বৃদ্ধি পায়; উহারাই সমৃদ্ধিশালী।
وَمَاۤ اٰتَيْتُمْ مِّنْ رِّبًا لِّيَرْبُوَا۟ فِىْۤ اَمْوَالِ النَّاسِ فَلَا يَرْبُوْا عِنْدَ اللّٰهِۚ وَمَاۤ اٰتَيْتُمْ مِّنْ زَكٰوةٍ تُرِيْدُوْنَ وَجْهَ اللّٰهِ فَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الْمُضْعِفُوْنَ
সূরা নম্বরঃ ৩০, আয়াত নম্বরঃ ৩৯
সুদ,ঘুষ, প্রতারণা করে সম্পদের পাহাড় গড়ে, অন্তরের ভয়,পাপ রাশি লুকাবার জন্য সে তখন যাকাত খুজে।
যাকাতের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে পাপমুক্ত ভাবে।
যাকাত কি কালো টাকা সাদা করার অফার?
যা দিয়ে সে হারাম সম্পদ হালাল করবে?
বছরে একবার যাকাত দিয়ে ভাবে আমি গংগায় স্নান করে সুচি হলাম। এতে লাভবান হয় —এ প্রথার প্রচলনকারীরা, আপনি বিন্দু মাত্রও না। আল্লাহর সন্তুষ্টি তো দূরে থাক।
চামড়া,দান,সদকা, ভক্ষন কারীরা যাকাত কে ২.৫% এর উৎসে কর আদায়ের তহবিল করে নিয়েছে। আল্লাহ কি কোথাও যাকাতকে এ ভাবে ২.৫% আদায়ের বর্ননা করেছেন?
হ্যা আছে, হাদীসে। যাকাত একটি গুরুত্তপুর্ন বিষয় যা সালাতের সাথে আষ্ঠে-পিষ্ঠে জড়িত। যেখানেই সালাতের উল্লেখ করেছেন আল্লাহ সেখানেই যাকাত এসেছে। কিন্তু পরিমান সম্পদের ২.৫% যদি যাকাতের নেসাব হতো অবশ্যই আল্লাহ তা কোরানে উল্লেখ করতেন। যেমন: উল্লেখ করেছেন মৃত ব্যক্তির সম্পদের উত্তরাধিকারী আইন। কে কত অংশ পাবে? মৃত ব্যক্তির সম্পদের অংশ উল্লেখ করতে পারলে, জীবিত ব্যক্তির সম্পদের কত অংশ যাকাত দিতে হবে অবশ্যই উল্লেখ করতেন মহান রব।
দান, সাদাকা,ফিতরা,উশর,যাকাত একাকার করে তালগুল পাকিয়ে ফেলা হয়েছে।
লোকে কি ব্যয় করিবে সে সম্বন্ধে তোমাকে প্রশ্ন করে। বল, যে ধন-সম্পদ তোমরা ব্যয় করিবে তাহা পিতা-মাতা, আত্নীয়-স্বজন, ইয়াতীম, মিস্কীন এবং মুসাফিরদের জন্য। উত্তম কাজের যাহা কিছু তোমার কর না কেন আল্লাহ্ তো সে সম্বন্ধে সম্যক অবহিত। (2:215)
আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। (৬৩:১০)
আরও জানিয়া রাখ, যুদ্ধে যাহা তোমরা লাভ কর তাহার এক-পঞ্চমাংশ আল্লাহ্র, রাসূলের, রাসূলের স্বজনদের, ইয়াতীমদের, মিস্কীনদের এবং মুসাফিরদের, যদি তোমরা ঈমান রাখ আল্লাহে এবং তাহাতে যাহা মীমাংসার দিন আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করিয়াছিলাম, যেই দিন দুই দল পরস্পর সম্মুখীন হইয়াছিল এবং আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে শক্তিমান।
وَاعْلَمُوْۤا اَنَّمَا غَنِمْتُمْ مِّنْ شَىْءٍ فَاَنَّ لِلّٰهِ خُمُسَهٗ وَ لِلرَّسُوْلِ وَلِذِى الْقُرْبٰى وَالْيَتٰمٰى وَالْمَسٰكِيْنِ وَابْنِ السَّبِيْلِ ۙ اِنْ كُنْتُمْ اٰمَنْتُمْ بِاللّٰهِ وَمَاۤ اَنْزَلْنَا عَلٰى عَبْدِنَا يَوْمَ الْفُرْقَانِ يَوْمَ الْتَقَى الْجَمْعٰنِ ؕ وَاللّٰهُ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ
সূরা নম্বরঃ ৮, আয়াত নম্বরঃ ৪১
যাহারা যাকাত প্রদান করে না এবং উহারা আখিরাতেও অবিশ্বাসী।
الَّذِيْنَ لَا يُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَهُمْ بِالْاٰخِرَةِ هُمْ كٰفِرُوْنَ
সূরা নম্বরঃ ৪১, আয়াত নম্বরঃ ৭
প্রত্যেক স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক মুসলমান নর-নারীকে প্রতি বছর স্বীয় আয় ও সম্পত্তির একটি নির্দিষ্ট অংশ, যদি তা ইসলামী শরিয়ত নির্ধারিত সীমা (নিসাব পরিমাণ) অতিক্রম করে তবে, গরীব-দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণের নিয়মকে যাকাত বলা হয়।
আরবী الزكاة ‘যাকাত’ শব্দের আভিধানিক অর্থ বৃদ্ধি ও উন্নতি। যাকাত শব্দের আভিধানিক আরেকটি অর্থ হয় التطهير (তাতহির), যার বাংলা অনুবাদ পবিত্র করা। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
﴿قَدۡ أَفۡلَحَ مَن زَكَّىٰهَا ٩﴾ [الشمس: 9]
“সে নিশ্চিত সফল হয়েছে যে তাকে (নফসকে) পবিত্র করেছে”। [সূরা আশ-শামস, আয়াত: ৯]
কাকে জাকাত দেওয়া যায় এবং কাকে দেওয়া যায় না, এ ব্যাপারে ইসলামে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া আছে। কোরআনে বলা হয়েছে যে ফকির, মিসকিন, জাকাত আদায় কর্মী, নও মুসলিম ও অনুরাগী, দাস-দাসী, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, মুজাহিদ ও বিপদগ্রস্ত মুসাফিরকে জাকাত দিতে হবে।
সুরা তাওবার ৬০ নম্বর আয়াত অনুযায়ী যারা জাকাত পাওয়ার উপযোগী, তারা হলেন:
১. ফকির: যার বেঁচে থাকার মতো সম্বল নেই বা খুব সামান্য। ২. মিসকিন: এমন অভাবী, যার রোজগার তার নিজের এবং তার ওপরে নির্ভরশীলদের অপরিহার্য প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ৩. জাকাত সংগ্রহ ও বিতরণকাজে নিয়োজিত কর্মচারী, যাদের আমিলিন বলে। ৪. নব্য মুসলিম যার ইমান পরিণত হওয়ার পথে আছে অথবা ইসলাম গ্রহণ করতে ইচ্ছুক কোনো অমুসলিম। ৫. মুক্তিপণ ধার্যকৃত দাস বা রিকাব। ৬. ঋণী ব্যক্তি যিনি জাকাতের অর্থে ঋণ পরিশোধ করতে চান। ৭. আল্লাহর পথে ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার কাজে সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত ব্যক্তি (মুজাহিদ)। ৮. বিপদগ্রস্ত মুসাফির।
যাদের জাকাত দেওয়া যায় না
নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক, যে ব্যক্তি অন্যূন ৮৫ গ্রাম সোনা বা ৫৯৫ গ্রাম রুপার সমপরিমাণ নগদ অর্থ বা সমমূল্যের দ্রব্যসামগ্রী বা বাণিজ্য পণ্যের মালিক, তাকে জাকাত দেওয়া যায় না। এমন ব্যক্তির জাকাত গ্রহণ নিষেধ। নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারীকে জাকাত দিলে আদায় হবে না।
নির্দিষ্ট আত্মীয়: কেউ তার আপন মা, বাবা, মাতামহ, মাতামহী, পিতামহ ও পিতামহী এবং তাদের পিতা-মাতাকে জাকাত দিতে পারবে না। একইভাবে নিজের ছেলে, মেয়ে, নাতি ও নাতনি এবং তাদের সন্তানদে জাকাত দেওয়া যায় না। আবার স্বামী স্ত্রীকে জাকাত দিতে পারবেন না। স্ত্রী স্বামীকে জাকাত দিতে পারবেন না।
সেবার প্রতিদান: পারিশ্রমিক হিসেবে কাউকে জাকাত দেওয়া যায় না ।
কর্মচারীর মজুরি: গৃহভৃত্য বা অন্য কোনো কর্মচারীকে মজুরি হিসেবে জাকাত দেওয়া যায় না। অবশ্য মজুরি ছাড়া উপহার হিসেবে তাদের জাকাত দেওয়া যায়।
আর আল্লাহ্ নিজ অনুগ্রহে যাহা তাহাদের দিয়াছেন তাহাতে যাহারা কৃপণতা করে তাহাদের জন্য উহা মঙ্গল, ইহা যেন তাহারা কিছুতেই মনে না করে। না, ইহা তাহাদের জন্য অমঙ্গল। যাহাতে তাহারা কৃপণতা করিবে কিয়ামতের দিন উহাই তাহাদের গলায় বেড়ি হইবে। আস্মান ও যমীনের স্বত্বাধিকার একমাত্র আল্লাহ্রই। তোমরা যাহা কর আল্লাহ্ তাহা বিশেষ ভাবে অবহিত।
সূরা নম্বরঃ ৩, আয়াত নম্বরঃ ১৮০
হে মু’মিনগণ! পণ্ডিত এবং সংসার বিরাগীদের মধ্যে অনেকেই লোকের ধন-সম্পদ অন্যায় ভাবে ভোগ করিয়া থাকে এবং লোককে আল্লাহ্র পথ হইতে নিবৃত্ত করে। আর যাহারা স্বর্ণ ও রৌপ্য পুঞ্জীভূত করে এবং আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে না উহাদেরকে মর্মন্তুদ শাস্তির সংবাদ দাও।
সূরা নম্বরঃ ৯, আয়াত নম্বরঃ ৩৪
যেদিন জাহান্নমের অগ্নিতে উহা উত্তপ্ত করা হইবে এবং উহা দ্বারা তাহাদের ললাট, পার্শ্বদেশ ও পৃষ্ঠদেশে দাগ দেওয়া হইবে সেদিন বলা হইবে, ‘ইহাই উহা যাহা তোমরা নিজেদের জন্য পুঞ্জীভূত করিতে। সুতরাং তোমরা যাহা পুঞ্জীভূত করিয়াছিলে তাহা আস্বাদন কর।’
সূরা নম্বরঃ ৯, আয়াত নম্বরঃ ৩৫
উহাদের সম্পদ হইতে ‘সাদাকা’ গ্রহণ করিবে। ইহার দ্বারা তুমি উহাদেরকে পবিত্র করিবে এবং পরিশোধিত করিবে। তুমি উহাদেরকে দু’আ করিবে। তোমার দু’আ তো উহাদের জন্য প্রশান্তিদায়ক। আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
সূরা নম্বরঃ ৯, আয়াত নম্বরঃ ১০
যাকাত এবং ফিতরার মধ্যে পার্থক্য কী?
ইসলামে দান-খয়রাতের নানা মাত্রিক ধরন রয়েছে। সাদাকা ইফাক ফী সাবিলিল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়। সব ধরনের দানই আল্লাহর রাস্তায় ব্যয়। দানকে ফরয করে বিধান চালু হয় হিজরতের পর। একে বলা হয় যাকাত। যাকাত শব্দের অর্থ পবিত্রতা ও বৃদ্ধি।
যাকাতও ইসলামের পঞ্চ স্তম্ভের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান। কুরআনের বহু স্থানে সালাতের আদেশের সঙ্গে যাকাতের আদেশ দেওয়া হয়েছে। যাকাত ফরয হবার বহু পূর্বে দান করার অর্থে যাকাত দেবার নির্দেশ নাযিল হয়। ইরশাদ হয়েছে, সালাত কায়েম করে যাকাত প্রদান কর এবং আল্লাহকে দাও উত্তম ঋণ (কর্যে হাসানা) তোমরা তোমাদের মঙ্গলের জন্য অগ্রিম যা কিছু প্রেরণ করবে তোমরা পাবে আল্লাহর নিকট। ওটাই উৎকৃষ্টতর এবং পুরস্কার হিসেবে মহত্তর। আর তোমরা ক্ষমা চাও আল্লাহর নিকট। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (সূরা মুয়াজ্জিম : আয়াত ২০)।
ইসলামী শরীয়াতের পরিভাষায় জীবন যাত্রার অপরিহার্য প্রয়োজন পূরণের পর সম্পদে পূর্ণ এক বছরকাল অতিক্রম করলে ওই সম্পদ থেকে নির্দিষ্ট অংশ আল্লাহর নির্ধারিত খাতে ব্যয় করাকে যাকাত বলা হয়।
সূরা তওবার ৬০ নম্বর আয়াতে যাকাত ব্যয় করার ৮টি খাত নির্ধারিত করে বিধান নাযিল করা হয়। এখানে লক্ষণীয় এতে যাকাতকে সাদাকাত বলা হয়েছে। আল্লাহ ইরশাদ করেন : সাদাকা (যাকাত) তো কেবল নিঃস্ব, অভাবগ্রস্ত ও তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য, দাসমুক্তির জন্য, ঋণভারাক্রান্তদের জন্য, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের জন্য। এটা আল্লাহর বিধান, আল্লাহ সব জানেন, প্রজ্ঞাময়। (সূরা তওবা : আয়াত ৬০)।
যাকাত আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আয়কর নয় কিংবা গরিবের প্রতি দয়ার দানও নয়। এটা ধনীর সম্পদে গরিবের অধিকার যা আল্লাহ বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন।
যাকাত দিলে দাতার অর্থ সম্পদ এবং তার নিজের আত্মা পবিত্র-পরিচ্ছন্ন হয়ে যায়। যাকাতের শরয়ী অর্থই তো, আল্লাহর সন্তোষ লাভের উদ্দেশ্যে কোনো মালদার ব্যক্তি কোনো হকদার ব্যক্তিকে তার মালের নির্ধারিত অংশ দিয়ে দেবে।
ফিতরা:
ফিতরাও এক ধরনের যাকাত, একে সাদাকাতুল ফিতরও বলা হয়। রমাদানুল মুবারকের শেষে ফিতরা ওয়াজিব হয়ে যায় শরী’আত দ্বারা। নির্দিষ্ট করে দেওয়া নির্দিষ্ট পরিমাণ ধন-সম্পদের অধিকারীর ওপর অর্থাৎ সাহিবে নিসাবের ওপর।
যাকাতের নিসাব ও ফিতরার নিসাব সমান হলেও ধন-সম্পদের স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। যাকাতের ক্ষেত্রে নিসাব পরিমাণ ধন-সম্পদ পূর্ণ এক বছরকাল স্থায়ী হলে সেই সাহিবে নিসাবের ওপরে যাকাত বাধ্যতামূলক হয়ে যায় শতকরা আড়াইভাগ হিসাব করে যাকাত দেওয়া, কিন্তু ফিতরার ক্ষেত্রে পূর্ণ এক বছরকাল স্থায়ী হবার প্রয়োজন হয় না বরং ঈদুল ফিতরের দিন সকালে নিসাব পরিমাণ ধন-সম্পদের অধিকারী হলেই তার ওপর ফিতরা ওয়াজিব হয়ে যায়।
নিসাবের পরিমাণ হচ্ছে সাড়ে সাত তোলা সোনা অর্থাৎ ৮৭.৪৫ গ্রাম সোনা অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য অর্থাৎ ৫১২.১৫ রৌপ্য অথবা ওই পরিমাণ সোনা বা রৌপ্যের দামের অর্থ অথবা সম্পদ। বর্তমানে যা প্রায় ৭৮ হাজার টাকার সমপরিমাণ সম্পদ। ফিতরার জন্য নির্ধারিত নিসাবের অধিকারীকে ফিতরার জন্য নির্ধারিত মাথাপিছু হিসেবে গরিব-মিসকিনদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে।
সাহিবে নিসাব নিজের পরিবারের নাবালিগ সন্তানাদি, গৃহভৃত্য সবার ফিতরা তিনি আদায় করবেন। এমনকি ঈদুল ফিতরের দিন সকাল বেলার পূর্বে যদি কোনো সন্তান জন্মগ্রহণ করে তারও ফিতরা আদায় করবেন। ঈদের দিন সকালে ঈদের সালাত আদায় করতে যাওয়ার পূর্বে ফিতরা দেওয়া উত্তম।
ফিতরার মাধ্যমে রমাদানের সিয়ামের মধ্যে যদি কোনো অনিচ্ছাকৃত ছোটখাটো ত্রুটিবিচ্যুতি হয়ে থাকে তার প্রায়শ্চিত্ত সঞ্চিত হয়।
সাদকাতুল ফিতর শুধু মাত্র রমজান মাসে রোজাদরদের ভুল-ত্রুটি ইত্যাদির কাফ্ফারা হিসেবে দিতে হয়। আর যাকাত অর্জিত সম্পদের বাৎসরিক হিসাবের ওপর নির্ধারিত হয়
সে তো শুধু সমাজের গন্ডি
রবের গন্ডি পেরুতে হবে না তোমার শক্তি
তুমি কি ভাব, আর কি নাটক কর,
সে সব জানে সব বুঝে
তোমার পুতুল নাচের সুতোটা যে তার হাতে
করি না লোকের ভয়
শব্দটা যে অদৃশ্যময়
দৃশ্যমানকে করেছি জয়
লজ্জার নেই আর ভয়
মানুষ অদৃশ্যকে করে না ভয়
তাই স্রষ্টা অদৃশ্যই রয়
স্রষ্টা নয় তারা সৃষ্টিকে করে ভয়
যে বুঝে তার কাছে স্রষ্টা দৃশ্যমান
চেকারের ভয়ে ট্রেনে টিকিট কাটা
সততা নয়, সততা তারে কয়
যে চেকার নেই জেনেও
টিকিটটা কেটে লয়।
কি সে এত অহং বেলাশেষে খাটে না কোন ঢং
তুমিই তো তোমার না যাকে তুমি আমি ভাব
ভালবাসা বাসি সখি লোকে বলে ভালবাসা কারে কয়
ভালবাসা মানে মুতের গাতায় গুতা দেয়া হয়।
ভালবাসা শব্দটাই একটা নোংরা শব্দ যা সমাজে
ভদ্রতার চাঁদরে জড়িয়ে ঠাই করে নিয়েছে।
রব কারো মুখাপেক্ষি নয় যে তাকে না ডাকলে তার বয়েই যাবে, তাকে সূর্যের সাথে তুলনা করে ঘটা করে পুঁজো করতে হবে। স্বস্ব হিসাব গ্রহন, সুশৃংখল জীবন যাপনই তার প্রিয়, তার নির্দেশ তাতেই রবের সন্তুষ্টি বাকি সব তোমার, তোমার পুর্বপুরুষের মনগড়া সৃজিত প্রথা। রবের নয়।
নাস্তিক বলে কোন শব্দ হয় না। নাস্তিক হতে চাইলেও হওয়া যায় না। লাটাইয়ের সুতোয় টান খেয়ে ফিরে আসতে বাধ্য সে। আর সেটাই মৃত্যু। ঘুড়ি নির্দিষ্ট একটা সীমায় গিয়ে আর সুতো টানে না, তার উড়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। আর সেটাই মৃত্যু, সেটাই ফিরে যাওয়া। যার একটা মালিক আছে সে নাস্তিক হতে চাইলেও পারে না, হয়তো সে নিজেকে বড় জোর নাস্তিক দাবী করতে পারে। এর বেশী কিছু না। যেহেতু তাকে এক সময় মরন কে বরন করতে হয়। মরন কে প্রতিরোধ করতে পারলে তবে সে নাস্তিক দাবী করতে পারে।
স্রষ্টাকে অস্বীকার করে নাস্তিক হওয়া যায়না।
মরন কে অস্বীকার করতে পারলে নাস্তিক হতে পারে।
এ জন্যই মরন ট্রান্সফার অর্ডার এর রোধ ক্ষমতা কাউকে তিনি দেন নাই। ওখানেই রবের একত্ববাদ প্রমান করে।
একমাত্র ইবলিশ নাস্তিক হতে পেরেছে।
নির্দিষ্ট হাতে গুনা কয়েকটি বিষয় ছাড়া সব হালাল।
হারামের এত বড় ফিরিস্তির সূচীপত্র রবের না।
এসব রবের মিথ্যে নায়েব দাবীদারদের বানানো।
তারা মানুষের কাছে রব দাবী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এসব ফিরিস্তি আচার অনুষ্ঠান পুঁজোর ডালা সাজিয়েছে।
সাধারন একটি মানুষও জাহান্নামে যাবে না, হয়ত কিছু শাস্তি পাবে হাশরের মাঠে, কিন্তু সব জান্নাতে ঢুকবে।
জাহান্নাম পুরন হবে ধর্মীয় আলেম,পুরোহিত আর সমাজের জ্ঞানপাপীদের দ্বারা। কারন তারা রবের আসনে বসার জন্য রব দাবী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এসব ফিরিস্তি আচার অনুষ্ঠান পুঁজোর ডালা সাজিয়ে সাধারন মানুষকে মুলধারা থেকে দূরে সড়িয়ে রাখার চেষ্টা করেছে। পাকড়াও হবে সেইদিন তারা। অধিকাংশ আলেম জাহান্নামী। কারন তারা গোপন কারী, কুফর করে রবের সাথে। অথচ তারা ভাল করে সব জানে। জাহান্নাম তাদের জন্য অপেক্ষামান।
সৎ এই নয়, নামাজ পড়লাম,যাকাত দিলাম,হজ্জ করলাম, দান সদকা সব করলাম। আমরা বনী আদম।
আদমের জন্য হজ্জ, যাকাত ফিতরা সদকা কি ছিল? হারামএর ফিরিস্তি কি ছিল?
আল্লাহ তার বিধান রচনায় পরীক্ষা মুলক দেখেছে। পারবে কি না তার বান্দা। তার পর আস্তে আস্তে এমেন্ড ম্যান্ড করে সর্বশেষ বিধান জারি করে আরশে বসেছেন।
এমন বিশ্বাসই আল্লাহর ক্ষমতাকে অস্বীকার করা হয়, আল্লাহ অতীত, বর্তমান,ভবিষ্যত সবজান্তা অস্বীকার করা হয়, কুন ফা ইয়াকুনকে অস্বীকার করা হয়। পুর্ন কুফরী আকীদায় ভ্রষ্ট তারা।
আল্লাহ একজোরা আদম সৃষ্টি করে বাকি সব সেই মেশিনে। কেন, কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ পাঠানোর ইচ্ছে তা একবারে করতে চাইলে কি পারতেন না? না কি অক্ষম ছিলেন মনে করেন? সেটারও যে নিগুঢ় রহস্য ভাবে কজনে? চার স্টেপে কিতাব না দিয়ে একবারে দিতে পারতেন না? নাকি অক্ষম ছিলেন? তাহলে কেন চার স্টেপে কিতাব? না কি বার বার পরিকল্পনা লিখে কাটা ছিড়া করে ফাইনাল করার জন্য চার স্টেপে কিতাব নাযিল মনে করেন? তাহলে তো আপনার মনে আল্লাহ কুল্লে শাইয়েন কাদীর এর বিশ্বাসই নাই। কিসে এত বক বক করেন?
আল্লার নাম স্মরন করার জন্য এত উপদেশ লাগে না, আল্লাহ চাইলেই তা বাধ্যতামুলক স্মরন করাতে পারেন।
তার প্রমান ভুমিকম্প,প্রাকৃতিক দুর্যোগ সমুহ।
‘আমিই আল্লাহ্, আমি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই। অতএব আমার ‘ইবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর।
اِنَّنِىْۤ اَنَا اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّاۤ اَنَا فَاعْبُدْنِىْ ۙ وَاَقِمِ الصَّلٰوةَ لِذِكْرِىْ
সূরা নম্বরঃ ২০, আয়াত নম্বরঃ ১৪
ইহাই আল্লাহ্র বিধান-প্রাচীন কাল হইতে চলিয়া আসিতেছে, তুমি আল্লাহ্র বিধানে কোন পরিবর্তন পাইবে না।
سُنَّةَ اللّٰهِ الَّتِىْ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلُ ۖۚ وَلَنْ تَجِدَ لِسُنَّةِ اللّٰهِ تَبْدِيْلًا
সূরা নম্বরঃ ৪৮, আয়াত নম্বরঃ ২৩
আল্লাহর পরিবর্তে যারা শয়তানের দেখানো পদ্ধতিতে ইবাদত করে তৃপ্তি বোধ করে, এমন কি যাচাই করে দেখার প্রয়োজনও বোধ করে না,তাদের সতর্ক করে আল্লাহ বলেন;
যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই উহার অনুসরণ করিও না; কর্ণ, চক্ষু, হৃদয়- উহাদের প্রত্যেকটি সম্পর্কেই কৈফিয়ত তলব করা হইবে।( বনী ঈসরাইল ১৭, আয়াত ৩৬)
অতপর শয়তানের পদাংক অনুসরনে ইবাদত করা হতে বিরত থাকার কথা, যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা তোমরা অনুসরণ কর’, তাহারা বলে, ‘না, বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহার অনুসরণ করিব।’ এমন কি, তাহাদের পিতৃ পুরুষগণ যদিও কিছুই বুঝিত না এবং তাহারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না-তৎসত্ত্বেও।
(সূরা বাকারা ২ঃ১৭০)
এরপরও যারা নিজেকে শয়তানের পদ্ধতিতেই ইবাদতে প্রতিষ্ঠিত রাখে, তাদের লক্ষ্য করে আল্লাহ বলেন;
قُلْ هَلْ نُـنَبِّئُكُمْ بِالْاَخْسَرِيْنَ اَعْمَالًا * ———.
বল, ‘আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দিব কর্মে বিশেষ ক্ষতিগ্রস্তদের?’
উহারাই তাহারা, ‘পার্থিব জীবনে যাহাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তাহারা মনে করে যে, তাহারা সৎকর্মই করিতেছে,
(সুরা কাহফ ১০৪)
” এবার মিলিয়ে দেখে নেয়া যাক কে কোন অবস্থানে আছি।”
এভাবে আল্লাহর নিদর্শনের মাধ্যমে মানুষকে সত্যের পথে আহ্বানকারীক কিছু মুমিন যখন তাবলীগ করে, তখন শয়তানের পাবন্দী করা ধর্মীয় পন্ডিতগন ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে নির্যাতনের প্রস্তুতি নেয়, এমন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আল্লাহর সাহায্য কামনা :
” সুতরাং তুমি আমার ও উহাদের মধ্যে স্পষ্ট মীমাংসা করিয়া দাও এবং আমাকে ও আমার সঙ্গে যেসব মু’মিন আছে, তাহাদেরকে রক্ষা কর।'”
فَافْتَحْ بَيْنِىْ وَبَيْنَهُمْ فَتْحًا وَّنَجِّنِىْ وَمَنْ مَّعِىَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ
(সূরা আশ শোআরা)
নাস্তিক হওয়ার তিন উপায়:
১। আপনি যে ধর্মের মানুষ সে ধর্মের কুসংস্কার নিয়ে কথা বলবেন।
২। ধর্মীয় মিথ এবং ধর্ম ব্যবসা, উগ্রবাদীতার বিরোধিতা করে সত্য কথা বলবেন।
৩। ধর্মীয় মনস্তাত্ত্বিক এবং তাত্ত্বিক বিষয়ে ভালো ধারণা নিয়ে লেখালেখি করবেন।
এই তিনটি কাজ করলে জনসাধারণ, অন্ধবিশ্বাসী, উগ্রবাদী, যুক্তিবুদ্ধিহীন লোক গুলো আপনাকে নাস্তিক বানিয়ে দিবে। কিন্তু খোদার কাছে আপনি থাকবেন আস্তিক হয়ে জ্ঞানীর মর্যাদা নিয়ে।
ReplyForward Add reaction |
আহলে হাদীস -জন্ম – ১৯০৬
গ্রুপ দুই ক) আসাদুল্লাহ আল গালীব গ্রুপ
খ) মিয়াজ নাজির হোসেন।
তাবলীগ – জন্ম – ১৯৪১ — ইলিয়াস রহ।
ক) সাদ খ) যোবায়ের
আহলে কোরআন জন্ম ৭৩৫ –
হাদিস কি বলে? আর কোরআন কি বলে?
হাদিসঃ”আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমাদের কেউ হায়য অবস্থায় থাকলে রাসূল (সাঃ) তাঁর সাথে মিশামিশি করতে চাইলে তাকে হায়যের ইযার পরার নির্দেশ দিতেন। তারপর তার সাথে মিশামিশি করতেন।”
— সহিহ্ বুখারী।
“আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের কেউ যখন ঋতুমতী হয়ে পড়ত তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নির্দেশে সে নিম্নাঙ্গের বস্ত্র ভাল করে বেধে নিত। তারপর রাসুল (সাঃ) তাঁর সাথে মেলামেশা করতেন।”
– সহিহ্ মুলিম
কোরআনঃ “আর তারা তোমাকে হায়েয সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, তা কষ্ট। সুতরাং তোমরা হায়েযকালে স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা পবিত্র হবে তখন তাদের নিকট আস, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন এবং ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।”
— সূরা বাকারা;আয়াত ২২২
উপরিউক্ত হাদিস দুটি কেবল কোরআন বিরোধী নয়, বরং রাসুল (সাঃ) এর ব্যক্তিত্বের উপর চরম আঘাত। কোন মুসলিম রাসূল (সাঃ) বিরুদ্ধে এরকম অশ্লীল, কদর্য, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে পার?
সাধারন জ্ঞানঃ একজন মানুষের যদি একাধিক স্ত্রী থাকে তাহলে হায়েযকৃত স্ত্রীর সাথে মাখামাখি, মিশামেশি বা মেলামেশা করার আদৌ দরকার আছে কি?
এই হাদিস কি সহীহ?
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি আমাদের রাখালের সাথে গমন করে (উটের) মূত্র এবং দুগ্ধ পান করতে পারবে? তখন তারা বলল, জী- হ্যাঁ। এরপর তারা বের হয়ে গেলে এবং এর ((উটের)) মূত্র ও দুগ্ধ পান করল।
সূনান নাসাঈ (ইফাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৪০২৫
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (ইফাঃ)
হাদিস নম্বরঃ ৪২০৭
গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
হাদিস নম্বরঃ ৪২৪৬
(ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৪২০৭, ইসলামিক সেন্টার ৪২০৭)
হাদিসের প্রতি আমার কেন ঘৃণা হয়, নিচে দেখুন:
ইবনে আব্বাস বলেন,
যদি কেউ তার শালির সাথে অবৈধ যৌন মিলন করে তবে তার স্ত্রী তার জন্য হারাম হয়ে যায় না।
সাবি এবং আবু জাফর বলেন, যদি কেউ কোনো বালকের সাথে সমকামে লিপ্ত হয়, তবে তার মা তার জন্য বিয়ে করা হারাম হয়ে যাবে।
ইকরামা ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যদি কেউ শাশুড়ির সঙ্গে যৌন মিলনে লিপ্ত হয়, তবে তার স্ত্রী তার জন্য হারাম হয় না।
আবু নাসর ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত তিনি বলেন হারাম হয়ে যাবে।
সহি বুখারী বিয়ে-শাদী অধ্যায়, হাদিস নং ৪৮৩৮ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ অনুবাদকৃত।
উক্ত হাদিসে প্রমাণিত হয় যে বালকের সাথে সমকামী করা শালীর সাথে অবৈধ যৌন মিলন করা এবং শাশুড়ির সাথে যৌন মিলন করা হালাল বৈধ।
ঠিক এই কারণে আমি হাদিস কে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করি।
ইসলামে যাকাত কি?
যার যাকাত নেই তার সালাতও নেই।
সালাতের সাথে যাকাত অপরিহার্য।
কোরানে যেখানেই সালাতের নির্দেশ রয়েছে সাথে যাকাত।
সালাত বিহীন যাকাত নাই, যাকাত বিহীন কোন সালাত নেই। সালাত মানে নামাজ কিন্তু যাকাত মানে কি??
প্রচলিত ধারনা থেকে বুঝাে থাকি সম্পদশালী তার সম্পদের ২.৫০% সমাজের সম্পদহীনদের মাঝে বছরে একবার প্রদান করবে। আসলে আল্লাহ কি যাকাত দ্বারা বছরে একবার এভাবে রিটার্ণ দাখিলকেই বুঝিয়েছে? আর তা সম্পদের ২.৫০%?
সালাতের প্রতিশব্দ ফার্সীতে হলেও নামাজ রাখা হয়েছে।
কিন্তু যাকাতের কোন প্রতিশব্দ বাংলা তো দূরে থাক পারসিয়ানরাও করেন নাই।
কারন সলাত যেমন ধনী,গরীব,ফকির,মিসকিন,সুস্থ, অসুস্থ সর্ব অবস্থায় সকলের জন্য ফরজ।
যাকাতও তেমন সর্ব অবস্থায় সকলের জন্য ফরজ। আর এ জন্যই আল্লাহ যখনই সালাতের কথা বলেছেন সাথে সাথে যাকাতের কথা উল্লেখ করেছেন।
দীর্ঘ দিনের প্রচলিত প্রথার সামনে কোন সত্যকে তুলে ধরতে গেলে প্রথমেই একটি হুংকার আসে নতুন ফেতনাবাজ। তার সাথে সমাজের সংখ্যা গরিষ্ঠের মতামতের চাপাবাজি কোনঠাসার চাপ। সবচেয়ে বড় ধাক্কা কিয়াস,ইজমা,ইজতেহাদের পাবন্দী আলেমদের আক্রমন। যারা সমাজে ইসলামের ধারক বাহকের তাবুতে বসে মিশনারী পাদ্রীর মত ধর্ম পরিচালনা করছেন। অন্ধ অজ্ঞরা তাদের অনুসরন করেই ধর্ম পালন করে।
ফলে প্রচলিত প্রথার সাংঘর্ষিক হয় এমন কোন সত্যকে উপস্থাপন করা দুঃসাহসিক কাজ।
তাই আমার চিন্তা মতামতকে মানার জন্য আমি কাউকে উদ্বোধ্য করবো না,শুধু আহ্বান করবো কোরাআন ও আপনার প্রজ্ঞা দিয়ে ভাবার জন্য।
……. যাকাত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
www.rbl60.com
আল আজাহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর ইসলামের গবেষণায় পিএইচডি করে আসছে শত শত শায়েখ। তারা সার্টিফিকেট এর জন্য পিএইচডি করে ইসলামকে বুঝার জন্য নয়।
………. যাকাত আরবী শব্দ যার বাংলা হয় নাঃ
আল্লাহ যাকাত দ্বারা কি বুঝিয়েছেন, আর আমরা কি বুঝে বসে আছি? কোরানে যেখানেই সালাতের কথা বলা হয়েছে তার সাথেই যাকাত শব্দটি এসেছে।
তার মানে সালাত যেমন সবার জন্য ফরজ যাকাতও তেমন সবার জন্য ফরজ।
কিন্তু প্রচলিত ধারনা ধনী ব্যক্তি যাকাত দিবে এবং সমাজের গরীব ব্যক্তি যাকাত গ্রহন করবে। এভাবে সমাজের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য যাকাতের প্রবর্তন। কিন্তু কোরান কি তাই বলে?
ঈসা আঃ যখন বললেনঃ
” আমি ‘যেখানেই থাকি না কেন তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়াছেন যত দিন জীবিত থাকিব তত দিন সালাত ও যাকাত আদায় করিতে (১৯:৩১)।
এই শিশু ঈসা কি ভাবে সালাত আদায় করেছেন এব্ং নির্জন এলাকায় কি ভাবে যাকাত আদায় করেছেন?
সে না হয় বাদ দিলাম,এবার আসা যাক ইসমাইল আঃ এর কথা। আল্লাহ সুরা মরিয়মের ৫৫ নং আয়াতে তার বর্ননা করলেনঃ
” সে তাহার পরিজনবর্গকে সালাত ও যাকাতের নির্দেশ দিত এবং সে ছিল তাহার প্রতিপালকের সন্তোষ ভাজন।
(১৯ঃ৫৫)
এবার প্রশ্ন আসে ইসমাইল আঃ কি ভাবে যাকাত আদায় করতেন সেথায়। আমাদের প্রচলিত যাকাতের ধারনা মোতাবেক তো মিলে না। তিনি তো অতি দারিদ্রতার ও কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবন জীবিকা যাপন করতেন।
তার তো ধনী হওয়ার কোন সুযোগই নাই। তিনি কোন সম্পদের উপর যাকাত দিয়েছিলেন? তাছাড়া যাকাত গ্রহন করার মত কোন মানুষও তাঁর সে সমাজে ছিল না।
তবে তিনি সালাতের পাশাপাশি যাকাত কি ভাবে আদায় করতেন। আমাদের প্রচলিত যাকাতের ধারনা মোতাবেক কি?
” যারা কোরান পড়ে, নামায কায়েম করে, এবং আমি যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা কর, যাতে কখনও লোকসান হবে না। ” (৩৫:২৯)
আসল কথা, যাকাত বিষয়ে যে ধারনা বা থিম আমাদের মগজে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে তা আল্লাহর বর্নিত যাকাতের সাথে কোন মিল নেই। আরবী শব্দ যাকাতের বাংলা ভাষার সঠিক অনুবাদ নিরুপন না করা পর্যন্ত আল্লাহর কাংখিত যাকাত আর আমাদের মোল্লাদের বানানো ২.৫% যাকাতের পার্থক্য অনুধাবন করা অসম্ভব।
যেমন: রিবা,সালাত,সিয়াম আল্লাহর দেয়া গুরুত্ত পুর্ন এ নির্দেশনা গুলিও একই ভাবে বিকৃত উপলব্ধি মগজে হেপনোটাইট করে রেখেছে কোন অজ্ঞাত অশুভ শক্তি।
সনাতন ধর্মের সেই অশুভ শক্তি অসুর কে বধ করে ধরাকে পাপমুক্ত করার জন্য প্রতি বছর না হয় মা দুর্গার আবির্ভাব ঘটে, ইসলামে তো সে সুযোগটুকুও নেই।
বরং যে ব্যক্তি এই কুসংস্কার দুর করার চেষ্টা করবে সব অশুর মিলে তাকে বধ করা যায়েজ মনে করবে।
রাসুল সা: এর প্রতিষ্ঠিত ইসলাম আলী রাঃ এর শাহাদত এর পর আমীর মোয়াবিয়া রাঃ এর হাতে বন্দী হয়ে এজিদের নিকট আহত হয়। অতপর ইরান,ইরাক,পারস্য পার হয়ে একটু একটু করে বিকৃত হয়ে এশিয়ায় তথা ভারত উপমহাদেশে এসে পৌছায়। এ উপ-মহাদেশের খৃষ্টান মিশনারীদের দ্বারা পরিচালিত মাদ্রাসা গুলিতে হাদীসের সিলিবাসে সীমাবদ্ধ রেখে আলেম নামক ইসলামী স্কলারগন তৈরী হতে থাকে। কোরানের উপর গবেষনা বিমুখ এই আলেমগন নিজেদের প্রজ্ঞা বিবেক প্রয়োগ না করে সত্য মিথ্যে যাচাই এর কোন গবেষনা না করে দরসে হাদীসের অর্জিত জ্ঞানকে তৃপ্তির সাথে সোয়াব ও জান্নাত প্রাপ্তীর আমলে সীমাবদ্ধ করে আম-জনতার মগজে ঢুকিয়ে দিতে থাকে যুগের পর যুগ । যা পালন করে সবাই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে আলেমদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে,লক্ষ্য একটাই পরকালের নাজাতের বিষয়ে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয় আলেমগন ধর্মকে জীবন জীবিকার পথ হিসেবে বেছে নেয়।
শুরু হয় মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ মাদ্রাসার গড়ার প্রতিযোগিতা। কর্মস্থলের সুযোগ বৃদ্ধি ও পরিধি প্রসারের মহা উৎসবে তারা ব্যস্ত হয়ে ইসলামকে পাচটি মৌলিক বিষয়ে সীমাবদ্ধ রেখে জনতাকে কোরান বিমুখ করে তুলে। এতেকরে মানুষ মুল ইসলাম থেকে ছিটকে পরে হুজুর ভিত্তিক দ্বীন ও ধর্ম পালনে অভ্যস্থ হয়ে পড়ে।
ফলে অবস্থা এমন একটি পর্যায়ে দাড়িয় যে সত্যটা কেউ তুলে ধরলে এই আলেম সমাজই আম জনতাকে হায়েনার মত লেলিয়ে দিয়ে ইহুদী-খৃষ্টানের দালাল,কাদেয়ানী, কাফের ইত্যাদি ইত্যাদি ফতুয়া দিয়ে ফাঁসির দাবীতে মিছিল করে। সত্য পরাভুত হয়ে নীরব অশ্রু ঝড়ায়ে নিগৃহীত।
কোফায় ইসলাম যে ভাবে নিহত হয়েছে তা আদৌ কোন দিন কোন কালে জীবিত হবে কি না সন্দেহ। তবে নতুন প্রজন্মদের ইসলাম নিয়ে গবেষনা কিছুটা আলোর স্বপ্ন দেখায়।
শুধু যাকাত নয়, রিবা, সালাত, সিয়াম, কোরবানী, এমন কি কালিমাতেও একই অবস্থা।
আমি সবকটি বিষয়ে তুলে ধরবো পর্যায় ক্রমে। কারো ভাল লাগলে বা এতটুকু উপকারে আসলে সেটাই সার্থকতা। কাউকে তা মানার জন্য বাধ্য করছি না। বিবেক ও রেফারেন্স মোতাবেক যদি সত্য বলে প্রতীয়মান হয় তবে তা মানার বিষয় নির্ভর করবে তার উপর।
প্রচলিত বনাম আল্লহর মনোনিতঃ
১) প্রকাশিত পর্ব – যাকাত
২) প্রকাশিত পর্ব – সালাত
৩) প্রকাশিত পর্ব – সিয়াম
৪) প্রকাশিত পর্ব – রিবা (গুরুত্তপুর্ন)
৫) প্রকাশিত পর্ব – কোরবানী
৬) প্রকাশিত পর্ব – হজ্জ
৭) প্রকাশিত পর্ব – কালেমা (মৌলিক)
বিঃদ্রঃ~ এ বিষয়গুলি বুঝতে হলে অবশ্যই কোরান থেকে নিন্মোক্ত শব্দগুলির ধারনা থাকতে হবে।
রিবা – বাঈয়া/ সাল্লা – তাওয়াল্লা/ হারাম-হালাল/সাদাগা-যাকাত-ফিতরা-ঊসর।
এ ধারনাও রাখতে হবে যে, নামাজ-রোযা-সুদ-ফেরেস্তা- কোরবানী-যাকাত-হজ্জ এসব বাংলা শব্দ নয়। ফার্সী ও আরবী শব্দ। এদের বাংলা শব্দ প্রতিস্থাপন না করা হলে সঠিক মর্ম অনুধাবন করা কখনোই সম্ভব হবে না।
আমার প্রার্থনাঃ
সুতরাং তুমি আমার ও উহাদের মধ্যে স্পষ্ট মীমাংসা করিয়া দাও এবং আমাকে ও আমার সঙ্গে যেসব মু’মিন আছে, তাহাদেরকে রক্ষা কর।’
فَافْتَحْ بَيْنِىْ وَبَيْنَهُمْ فَتْحًا وَّنَجِّنِىْ وَمَنْ مَّعِىَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ
সূরা নম্বরঃ ২৬, আয়াত নম্বরঃ ১১৮
ইসলামের ৬ষ্ঠ শাসক এজিদকে রাদিআল্লাহু আনহু বলার পক্ষে কে কে? হা বলে মন্তব্য করুন
এবং বিপক্ষে কে কে? তারা না বলে মন্তব্য করুন।
সুন্দর একটি সিদ্ধন্ত দলিল সহ পেশ করা হবে।।
Page Thik 01795806470
সূরা-আল মাউন/৪-৭নং আয়াত থেকে জানা যায়
যে-
সালাত পড়লেও নিশ্চিত জাহান্নাম,
কারণ -যে সালাত আদায়কারী সালাত তথা আমলের সময়,উদ্দেশ্য, নিষ্ঠা, একাগ্রতা, শিক্ষা ইত্যাদি সম্বন্ধে উদাসীনও লোক দেখানো কাজ করে এবং কৃপণতা করে তার সালাত আদায় হবেনা এবং তাকে জাহান্নামে যেতে হবে।
কারণ – ঐ সালাত আদায়কারী শুধু সালাতের অনুষ্ঠান করেছে, কিন্তু সালাত কায়েম করেননি।
এখানে মূল কথা-সালাতের মাধ্যমে শিক্ষা নিয়ে সে শিক্ষা ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে কায়েম করেননি বা প্রতিষ্ঠিত করেননি।
………..ইসলামে যাকাত কি?
যার যাকাত নেই তার সালাতও নেই।
সালাতের সাথে যাকাত অপরিহার্য।
কোরানে যেখানেই সালাতের নির্দেশ রয়েছে সাথে যাকাত।
সালাত বিহীন যাকাত নাই, যাকাত বিহীন কোন সালাত নেই। সালাত মানে নামাজ কিন্তু যাকাত মানে কি??
প্রচলিত ধারনা থেকে বুঝাে থাকি সম্পদশালী তার সম্পদের ২.৫০% সমাজের সম্পদহীনদের মাঝে বছরে একবার প্রদান করবে। আসলে আল্লাহ কি যাকাত দ্বারা বছরে একবার এভাবে রিটার্ণ দাখিলকেই বুঝিয়েছে? আর তা সম্পদের ২.৫০%?
সালাতের প্রতিশব্দ ফার্সীতে হলেও নামাজ রাখা হয়েছে।
কিন্তু যাকাতের কোন প্রতিশব্দ বাংলা তো দূরে থাক পারসিয়ানরাও করেন নাই।
কারন সলাত যেমন ধনী,গরীব,ফকির,মিসকিন,সুস্থ, অসুস্থ সর্ব অবস্থায় সকলের জন্য ফরজ।
যাকাতও তেমন সর্ব অবস্থায় সকলের জন্য ফরজ। আর এ জন্যই আল্লাহ যখনই সালাতের কথা বলেছেন সাথে সাথে যাকাতের কথা উল্লেখ করেছেন।
দীর্ঘ দিনের প্রচলিত প্রথার সামনে কোন সত্যকে তুলে ধরতে গেলে প্রথমেই একটি হুংকার আসে নতুন ফেতনাবাজ। তার সাথে সমাজের সংখ্যা গরিষ্ঠের মতামতের চাপাবাজি কোনঠাসার চাপ। সবচেয়ে বড় ধাক্কা কিয়াস,ইজমা,ইজতেহাদের পাবন্দী আলেমদের আক্রমন। যারা সমাজে ইসলামের ধারক বাহকের তাবুতে বসে মিশনারী পাদ্রীর মত ধর্ম পরিচালনা করছেন। অন্ধ অজ্ঞরা তাদের অনুসরন করেই ধর্ম পালন করে।
ফলে প্রচলিত প্রথার সাংঘর্ষিক হয় এমন কোন সত্যকে উপস্থাপন করা দুঃসাহসিক কাজ।
তাই আমার চিন্তা মতামতকে মানার জন্য আমি কাউকে উদ্বোধ্য করবো না,শুধু আহ্বান করবো কোরাআন ও আপনার প্রজ্ঞা দিয়ে ভাবার জন্য।
….. যাকাত আরবী শব্দ যার বাংলা হয় নাঃ
আল্লাহ যাকাত দ্বারা কি বুঝিয়েছেন, আর আমরা কি বুঝে বসে আছি? কোরানে যেখানেই সালাতের কথা বলা হয়েছে তার সাথেই যাকাত শব্দটি এসেছে।
তার মানে সালাত যেমন সবার জন্য ফরজ যাকাতও তেমন সবার জন্য ফরজ।
কিন্তু প্রচলিত ধারনা ধনী ব্যক্তি যাকাত দিবে এবং সমাজের গরীব ব্যক্তি যাকাত গ্রহন করবে। এভাবে সমাজের অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য যাকাতের প্রবর্তন। কিন্তু কোরান কি তাই বলে?
ঈসা আঃ যখন বললেনঃ
” আমি ‘যেখানেই থাকি না কেন তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়াছেন যত দিন জীবিত থাকিব তত দিন সালাত ও যাকাত আদায় করিতে (১৯:৩১)।
এই শিশু ঈসা কি ভাবে সালাত আদায় করেছেন এব্ং নির্জন এলাকায় কি ভাবে যাকাত আদায় করেছেন?
সে না হয় বাদ দিলাম,এবার আসা যাক ইসমাইল আঃ এর কথা। আল্লাহ সুরা মরিয়মের ৫৫ নং আয়াতে তার বর্ননা করলেনঃ
” সে তাহার পরিজনবর্গকে সালাত ও যাকাতের নির্দেশ দিত এবং সে ছিল তাহার প্রতিপালকের সন্তোষ ভাজন।
(১৯ঃ৫৫)
এবার প্রশ্ন আসে ইসমাইল আঃ কি ভাবে যাকাত আদায় করতেন সেথায়। আমাদের প্রচলিত যাকাতের ধারনা মোতাবেক তো মিলে না। তিনি তো অতি দারিদ্রতার ও কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে জীবন জীবিকা যাপন করতেন।
তার তো ধনী হওয়ার কোন সুযোগই নাই। তিনি কোন সম্পদের উপর যাকাত দিয়েছিলেন? তাছাড়া যাকাত গ্রহন করার মত কোন মানুষও তাঁর সে সমাজে ছিল না।
তবে তিনি সালাতের পাশাপাশি যাকাত কি ভাবে আদায় করতেন। আমাদের প্রচলিত যাকাতের ধারনা মোতাবেক কি?
” যারা কোরান পড়ে, নামায কায়েম করে, এবং আমি যা দিয়েছি, তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা কর, যাতে কখনও লোকসান হবে না। ” (৩৫:২৯)
আসল কথা, যাকাত বিষয়ে যে ধারনা বা থিম আমাদের মগজে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে তা আল্লাহর বর্নিত যাকাতের সাথে কোন মিল নেই। আরবী শব্দ যাকাতের বাংলা ভাষার সঠিক অনুবাদ নিরুপন না করা পর্যন্ত আল্লাহর কাংখিত যাকাত আর আমাদের মোল্লাদের বানানো ২.৫% যাকাতের পার্থক্য অনুধাবন করা অসম্ভব।
যেমন: রিবা,সালাত,সিয়াম আল্লাহর দেয়া গুরুত্ত পুর্ন এ নির্দেশনা গুলিও একই ভাবে বিকৃত উপলব্ধি মগজে হেপনোটাইট করে রেখেছে কোন অজ্ঞাত অশুভ শক্তি।
সনাতন ধর্মের সেই অশুভ শক্তি অসুর কে বধ করে ধরাকে পাপমুক্ত করার জন্য প্রতি বছর না হয় মা দুর্গার আবির্ভাব ঘটে, ইসলামে তো সে সুযোগটুকুও নেই।
বরং যে ব্যক্তি এই কুসংস্কার দুর করার চেষ্টা করবে সব অশুর মিলে তাকে বধ করা যায়েজ মনে করবে।
রাসুল সা: এর প্রতিষ্ঠিত ইসলাম আলী রাঃ এর শাহাদত এর পর আমীর মোয়াবিয়া রাঃ এর হাতে বন্দী হয়ে এজিদের নিকট আহত হয়। অতপর ইরান,ইরাক,পারস্য পার হয়ে একটু একটু করে বিকৃত হয়ে এশিয়ায় তথা ভারত উপমহাদেশে এসে পৌছায়। এ উপ-মহাদেশের খৃষ্টান মিশনারীদের দ্বারা পরিচালিত মাদ্রাসা গুলিতে হাদীসের সিলিবাসে সীমাবদ্ধ রেখে আলেম নামক ইসলামী স্কলারগন তৈরী হতে থাকে। কোরানের উপর গবেষনা বিমুখ এই আলেমগন নিজেদের প্রজ্ঞা বিবেক প্রয়োগ না করে সত্য মিথ্যে যাচাই এর কোন গবেষনা না করে দরসে হাদীসের অর্জিত জ্ঞানকে তৃপ্তির সাথে সোয়াব ও জান্নাত প্রাপ্তীর আমলে সীমাবদ্ধ করে আম-জনতার মগজে ঢুকিয়ে দিতে থাকে যুগের পর যুগ । যা পালন করে সবাই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে আলেমদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে,লক্ষ্য একটাই পরকালের নাজাতের বিষয়ে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয় আলেমগন ধর্মকে জীবন জীবিকার পথ হিসেবে বেছে নেয়।
রাতজেগে কোরআন অনুশীলন
সূরা মুজাম্মেল আয়াত ২০।
তোমার রব অবগত আছেন যে, তুমি কোরআন পাঠ করে থাকো কখনো রাতের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ, কখনো রাতের অর্ধাংশ ও কখনো রাতের এক-তৃতীয়াংশ এবং তোমার সংগে যারা আছে তাদের একটি দলও করে কিন্তু আল্লাহ নির্ধারণ করেন দিন ও রাতের পরিমাণ।
তিনি অবগত আছেন যে, তোমরা রাতের সময় সীমার হিসাব না রেখেই তেলাওয়াতে থাকো, অতএব আল্লাহ তোমাদের প্রতি ক্ষমা পরবশ হয়েছেন। সুতরাং এখন হতে কুরআনের যতটুকু আবৃত্তি করা তোমাদের জন্য সহজ ততটুকু আবৃত্তি করো।
আল্লাহ অবগত আছেন যে, তোমাদের মধ্যে কেহবা অসুস্থ হয়ে পড়বে, কেহবা আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধানে দেশ ভ্রমণ করবে এবং কেহবা আল্লাহর পথে সংগ্রামে ব্যাস্ত থাকবে। সুতরাং কুরআন হতে যতটুকু সহজসাধ্য ততটুকুই আবৃত্তি করো।
অতএব, সালাতে রতো থাকো আর যাকাতে ফিরে আসো (বা মনের বিশুদ্ধতা অর্জন করে কোরআন চর্চার কাজে আল্লার সরণে তার বন্দেগীতে মশগুল থাকো) এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ দাও। তোমরা তোমাদের নিজেদের মঙ্গলের জন্য যেটি উত্তম ও যাকিছু কর্ম অগ্রিম প্রেরণ করবে তোমরা তা পাবে আল্লাহর নিকট। উহা উৎকৃষ্টতর এবং পুরস্কার হিসাবে মহত্তর।
আর তোমরা ক্ষমা প্রার্থনা কর শুধুমাত্র আল্লাহর নিকট। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।
শুরু হয় মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ মাদ্রাসার গড়ার প্রতিযোগিতা। কর্মস্থলের সুযোগ বৃদ্ধি ও পরিধি প্রসারের মহা উৎসবে তারা ব্যস্ত হয়ে ইসলামকে পাচটি মৌলিক বিষয়ে সীমাবদ্ধ রেখে জনতাকে কোরান বিমুখ করে তুলে। এতেকরে মানুষ মুল ইসলাম থেকে ছিটকে পরে হুজুর ভিত্তিক দ্বীন ও ধর্ম পালনে অভ্যস্থ হয়ে পড়ে।
ফলে অবস্থা এমন একটি পর্যায়ে দাড়িয় যে সত্যটা কেউ তুলে ধরলে এই আলেম সমাজই আম জনতাকে হায়েনার মত লেলিয়ে দিয়ে ইহুদী-খৃষ্টানের দালাল,কাদেয়ানী, কাফের ইত্যাদি ইত্যাদি ফতুয়া দিয়ে ফাঁসির দাবীতে মিছিল করে। সত্য পরাভুত হয়ে নীরব অশ্রু ঝড়ায়ে নিগৃহীত।
কোফায় ইসলাম যে ভাবে নিহত হয়েছে তা আদৌ কোন দিন কোন কালে জীবিত হবে কি না সন্দেহ। তবে নতুন প্রজন্মদের ইসলাম নিয়ে গবেষনা কিছুটা আলোর স্বপ্ন দেখায়।
শুধু যাকাত নয়, রিবা, সালাত, সিয়াম, কোরবানী, এমন কি কালিমাতেও একই অবস্থা।
ReplyForward Add reaction |
কুরআন বুঝতে হলে..
অন্যান্য সকল ভাষার মতো, আরবি ভাষা হল একটি জীবন্ত ভাষা , যা সময়ের সাথে সাথে বিকশিত এবং পরিবর্তিত হয়েছে। যদি কুরআন না থাকত, তাহলে আরবি ভাষাটি সম্ভবত আরামাইক, সিরিয়াক বা ল্যাটিন ভাষার মতো একইভাবে মারা যেত বা অদৃশ্য হয়ে যেত। মিশরীয় এবং অন্যান্য আরব দেশের আরবি উপভাষাগুলির সাথে কুরআনের অনন্য আরবির কোনো সম্পর্ক নেই। ফলে আমরা কুরআনের পরিভাষা বোঝার জন্য বাইরের উৎস ব্যবহার করতে পারি না। উদাহরণস্বরূপ, কোরানে সুন্নাহ শব্দের অর্থ আল্লাহর পদ্ধতি, শরিয়া বা পথ: “আল্লাহ নবীর জন্যে যা নির্ধারণ করেন, তাতে তাঁর কোন বাধা নেই পূর্ববর্তীদের ক্ষেত্রেও এটাই ছিল আল্লাহর সুন্নাত (سُنَّةَ)। আল্লাহর আদেশ নির্ধারিত, অবধারিত।”(৩৩:৩৮) , যেখানে সুন্নীরা একই শব্দটি ব্যবহার করে তাদের হাদিসগুলি বোঝাতে এবং তারা এই শব্দটিকে ভুলভাবে বর্ণনা করে।
কুরআনী পরিভাষা অনুযায়ী ‘উম্মি’ অর্থ বিধর্মী (যাদের তাওরাত বা ইঞ্জিলের জ্ঞান নেই) , সেখানে আব্বাসীয় যুগের আরবি এবং আজকের আরবীতে ‘উম্মি’ শব্দের অর্থ “নিরক্ষর”। কুরআনের শব্দ ‘হাদ’ মানে আল্লাহর আইন বা অধিকার, যেখানে সুন্নীরা শব্দটিকে “দণ্ড/শাস্তি” বোঝাতে তৈরি করেছে। এইভাবে পার্থিব, মানবসৃষ্ট ধর্মগুলি মেনে চলাদের ধর্মীয় প্রভাবের কারণে কুরআনে ব্যবহৃত একটি প্রদত্ত শব্দ কখনও কখনও নির্দিষ্ট যুগের মধ্যে আরবীতে বিভিন্ন অর্থ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। যেমন, কুরানের পরিভাষায় ‘ওলী/আউলিয়া’ নশ্বর মানুষ দেবতাদেরকে বোঝায় যাদেরকে মুশরিকরা আল্লাহর সাথে পূজা করত: “… যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে আউলিয়া (أَوْلِيَاءَ ) গ্রহণ করে রেখেছে এবং বলে যে, আমরা তাদের এবাদত এ জন্যেই করি যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়।..” (৩৯:৩)। তবুও, সুফিরা তাদের সাধু/শেখ/গুরুদের বোঝাতে ‘আওলিয়া’ শব্দটি ব্যবহার করে। আরো একটি বহুল প্রচলিত ও ব্যাবহৃত শব্দ ‘মাওলানা’ কুরআনি পরিভাষায় আল্লাহকেই বোঝায়। “.. তুমিই আমাদের প্রভু (مَوْلَانَا) ..।”(২:২৮৬)। তবুও , আমাদের হুজুররা মাওলানা খেতাব দিয়ে নিজদেরকে প্রভু আল্লাহর আসনে বসিয়েছে।
তাই কুরআনের পরিভাষা বোঝার জন্য আরবি ভাষার অভিধানের উপর নির্ভর করা যায় না। কুরআনের কোন আরবি শব্দের মানে বাক্যের প্রসঙ্গে এবং অন্য আয়াতে একই শব্দের ব্যাবহারের মাঝে খুঁজতে হবে।
৬৮:৫২ আর এ কুরআন তো সৃষ্টিকুলের জন্য শুধুই উপদেশবাণী।
২৭:৭৫ আর আসমান ও যমীনে এমন কোন গোপন বিষয় নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ নেই।
২:৭৯ সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব লিখে। তারপর বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, যাতে তা তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা লিখেছে তার পরিণামে তাদের জন্য ধ্বংস, আর তারা যা উপার্জন করেছে তার কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস।
বাকারা ২,আয়াত ৭৮ আর তাদের মধ্যে আছে নিরক্ষর, তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া কিতাবের কোন জ্ঞান রাখে না এবং তারা শুধুই ধারণা করে থাকে।
১৮:৫৪ আর আমি এই কুরআনে মানুষের জন্য সকল প্রকার উপমা বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। আর মানুষ সবচেয়ে বেশি তর্ককারী।
১২:১০৩ আর তুমি আকাঙ্খা করলেও অধিকাংশ মানুষ মুমিন হবার নয়।
১৪:১ আলিফ-লাম-রা; এই কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে তুমি মানুষকে তাদের রবের অনুমতিক্রমে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আন, পরাক্রমশালী সর্বপ্রশংসিতের পথের দিকে।l
১৪:৫২ এটা মানুষের জন্য পয়গাম। আর যা দ্বারা
তাদেরকে সতর্ক করা হয় এবং তারা জানতে পারে যে, তিনি কেবল এক ইলাহ, আর যাতে বুদ্ধিমানরা উপদেশ গ্রহণ করে।
১৭:৯ নিশ্চয় এ কুরআন এমন একটি পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল এবং যে মুমিনগণ নেক আমল করে তাদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।
৩৯:৪১ নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি যথাযথভাবে কিতাব নাযিল করেছি মানুষের জন্য; তাই যে সৎপথ অবলম্বন করে, সে তা নিজের জন্যই করে এবং যে পথভ্রষ্ট হয় সে নিজের ক্ষতির জন্যই পথভ্রষ্ট হয়। আর তুমি তাদের তত্ত্বাবধায়ক নও।l
৬৮:৫২ আর এ কুরআন তো সৃষ্টিকুলের জন্য শুধুই উপদেশবাণী।
৩:১০১ আর কিভাবে তোমরা কুফরী কর, অথচ তোমাদের কাছে আল্লাহর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হচ্ছে এবং তোমাদের মধ্যে রয়েছে তাঁর রাসূল। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করবে তাকে অবশ্যই সরল পথের দিশা দেয়া হবে।
ইমরান ৩,আয়াত ১০২ হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যথাযথ ভয়। আর তোমরা মুসলমান হওয়া ছাড়া মারা যেও না।
৩:১০৩ আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিভক্ত হয়ো না। আর তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর, যখন তোমরা পরস্পরে শত্রু ছিলে। তারপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ভালবাসার সঞ্চার করেছেন। অতঃপর তাঁর অনুগ্রহে তোমরা ভাই-ভাই হয়ে গেল। আর তোমরা ছিলে আগুনের গর্তের কিনারায়, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বয়ান করেন, যাতে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হও।
৩:১০৪ আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।
৩:১০৫ আর তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা বিভক্ত হয়েছে এবং মতবিরোধ করেছে তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ আসার পর। আর তাদের জন্যই রয়েছে কঠোর আযাব।
৩:১০৬ সেদিন কতক চেহারা সাদা হবে এবং কতক চেহারা হবে কালো। আর যাদের চেহারা কালো হবে (তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা কি ঈমান আনার পর কুফরী করেছিলে? সুতরাং তোমরা আযাব আস্বাদন কর। কারণ তোমরা কুফরী করতে’।
৩:১০৭ আর যাদের চেহারা সাদা হবে, তারা তো আল্লাহর রহমতে থাকবে। তারা সেখানে স্থায়ী হবে।
৩:১০৮ এগুলো আল্লাহর নির্দশন, যা আমি তোমার উপর যথাযথভাবে তিলাওয়াত করছি। আর আল্লাহ সৃষ্টিকুলের প্রতি যুলম করতে চান না।
৩:১০৯ আর আসমানসমূহ ও যমীনে যা রয়েছে, তা আল্লাহর জন্যই এবং আল্লাহর দিকেই যাবতীয় কর্মকান্ড প্রত্যাবর্তিত হবে।
Dayal Masud 1.আর যখন তাদের সামনে আমার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টরূপে পাঠ করা হয়, তখন, যারা আমার সাক্ষাতের আশা রাখে না, তারা বলে, ‘এটি ছাড়া অন্য কুরআন নিয়ে এসো। অথবা একে বদলাও’। বল, ‘আমার নিজের পক্ষ থেকে এতে কোন পরিবর্তনের অধিকার নেই। আমিতো শুধু আমার প্রতি অবতীর্ণ ওহীর অনুসরণ করি। নিশ্চয় আমি যদি রবের অবাধ্য হই তবে ভয় করি কঠিন দিনের আযাবের’। আর তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছে। তাহলে তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (10:15,95)
2.আমি তোমার প্রতি যে ওয়াহী করেছি তাত্থেকে তোমাকে পদস্খলিত করার জন্য তারা চেষ্টার কোন ত্রুটি করেনি যাতে তুমি আমার সম্বন্ধে তার (অর্থাৎ নাযিলকৃত ওয়াহীর) বিপরীতে মিথ্যা রচনা কর, তাহলে তারা তোমাকে অবশ্যই বন্ধু বানিয়ে নিত। আর আমি যদি তোমাকে অবিচল না রাখতাম, তবে অবশ্যই তুমি তাদের দিকে কিছুটা ঝুঁকে পড়তে, তুমি ঝুঁকে পড়লে অবশ্যই তোমাকে ইহজীবনে ও পরজীবনে দ্বিগুণ শাস্তি আস্বাদন করাতাম; তখন আমার বিরুদ্ধে তোমার জন্য কোন সাহায্যকারী পেতেনা। তারা তোমাকে দেশ হতে উৎখাত করার চূড়ান্ত চেষ্টা করেছিল তোমাকে সেখান হতে বহিস্কার করার জন্য। তাহলে তোমার পর তারাও সেখানে অল্পকালই টিকে থাকত। আমার রাসূলদের মধ্যে তোমার পূর্বে যাদেরকে আমি পাঠিয়েছিলাম তাদের ক্ষেত্রেও ছিল এরূপ নিয়ম এবং তুমি আমার নিয়মের কোন পরিবর্তন দেখতে পাবেনা। (17:73-77)
3.তাহলে সম্ভবত তুমি তোমার উপর অবতীর্ণ ওহীর কিছু বিষয় ছেড়ে দেবে এবং তোমার বুক সঙ্কুচিত হবে এ কারণে যে, তারা বলে, ‘কেন তার উপর ধন-ভান্ডার অবতীর্ণ হয়নি, কিংবা তার সাথে ফেরেশতা আসেনি’? তুমি তো শুধু সতর্ককারী আর আল্লাহ সব কিছুর তত্ত্বাবধায়ক। সুতরাং যেভাবে তুমি নির্দেশিত হয়েছ সেভাবে তুমি ও তোমার সাথী যারা তাওবা করেছে, সকলে অবিচল থাক। আর সীমালঙ্ঘন করো না। তোমরা যা করছ নিশ্চয় তিনি তার সম্যক দ্রষ্টা। আর যারা যুলম করেছে তোমরা তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো না; অন্যথায় আগুন তোমাদেরকে স্পর্শ করবে এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক থাকবে না। অতঃপর তোমরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না।(11:12,112,113)
Bazlar Rahman Khan لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَـٰكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللَّـهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّائِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُوا ۖ وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ وَحِينَ الْبَأْسِ ۗ أُولَـٰئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا ۖ وَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ ﴿١٧٧﴾
১৭৭. পূর্ব বা পশ্চিমমুখী হওয়ার মধ্যে কোনো পুণ্য নেই। পুণ্য রয়েছে (এক) আল্লাহ, আখেরাত, ফেরেশতা, সকল কিতাব ও নবীদের ওপর বিশ্বাসে। (দুই) আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আত্মীয়স্বজন, এতিম, মিসকিন, অসহায়, মুসাফির ও সাহায্যপ্রার্থীকে সাহায্য এবং দাসমুক্তির জন্যে অর্থদানে। (তিন) নামাজ কায়েম ও যাকাত আদায়ের মধ্যে। (চার) ওয়াদা রক্ষায়। (পাঁচ) দুঃখকষ্ট, বালা-মুসিবত ও (সত্যের পথে যে-কোনো) দুর্যোগে ধৈর্যধারণ করায়। যারা তা করবে, তারাই প্রকৃত সত্যানুসারী ও আল্লাহ-সচেতন। (বাকারা:১৭৭)
আমাদের নিকট ইসলাম এসেছে পারস্য,তুরস্ক ঘুরে তাদের সংস্কৃতি মিশ্রিত হয়ে। নামাজ,রোজা,ফেরেস্তা এসব শব্দ তাদের ঢুকিয়ে দেওয়া। তসবীহ,জায়নামাজ,কুরবানী তাদের দেওয়া উপহার। ইসলামের মুল এবাদত নীতি-নৈতিকতার শিক্ষা বিকৃত করে আচার-অনুষ্ঠানে হয়ে আমাদের মাঝে বিরাজ মান। আলেম, মাদ্রাসা,মসজিদে মোয়াবিয়ার ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এ বেষ্ঠনী ভাংগা দুষ্কর। যতক্ষন না মানুষ কোরআন নিজ ভাষায় পড়ে বুঝতে সক্ষম হবে। ২২/০৪/২৩ রুবেল।
উহাদের সম্পদ হইতে ‘সাদাকা’ গ্রহণ করিবে। ইহার দ্বারা তুমি উহাদেরকে পবিত্র করিবে এবং পরিশোধিত করিবে। তুমি উহাদেরকে দু’আ করিবে। তোমার দু’আ তো উহাদের জন্য প্রশান্তিদায়ক। আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
خُذْ مِنْ اَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيْهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْؕ اِنَّ صَلٰوتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْؕ وَاللّٰهُ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ
সূরা নম্বরঃ ৯, আয়াত নম্বরঃ ১০৩
ReplyForward Add reaction |
২৭:৭৫ আর আসমান ও যমীনে এমন কোন গোপন বিষয় নেই যা সুস্পষ্ট কিতাবে লিপিবদ্ধ নেই।
২:৭৯ সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্য যারা নিজ হাতে কিতাব লিখে। তারপর বলে, ‘এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে’, যাতে তা তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা লিখেছে তার পরিণামে তাদের জন্য ধ্বংস, আর তারা যা উপার্জন করেছে তার কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস।
বাকারা ২,আয়াত ৭৮ আর তাদের মধ্যে আছে নিরক্ষর, তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া কিতাবের কোন জ্ঞান রাখে না এবং তারা শুধুই ধারণা করে থাকে।
১৮:৫৪ আর আমি এই কুরআনে মানুষের জন্য সকল প্রকার উপমা বিস্তারিত বর্ণনা করেছি। আর মানুষ সবচেয়ে বেশি তর্ককারী।
১২:১০৩ আর তুমি আকাঙ্খা করলেও অধিকাংশ মানুষ মুমিন হবার নয়।
১৪:১ আলিফ-লাম-রা; এই কিতাব, যা আমি তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে তুমি মানুষকে তাদের রবের অনুমতিক্রমে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আন, পরাক্রমশালী সর্বপ্রশংসিতের পথের দিকে।l
১৪:৫২ এটা মানুষের জন্য পয়গাম। আর যা দ্বারা
তাদেরকে সতর্ক করা হয় এবং তারা জানতে পারে যে, তিনি কেবল এক ইলাহ, আর যাতে বুদ্ধিমানরা উপদেশ গ্রহণ করে।
১৭:৯ নিশ্চয় এ কুরআন এমন একটি পথ দেখায় যা সবচেয়ে সরল এবং যে মুমিনগণ নেক আমল করে তাদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার।
৩৯:৪১ নিশ্চয় আমি তোমার প্রতি যথাযথভাবে কিতাব নাযিল করেছি মানুষের জন্য; তাই যে সৎপথ অবলম্বন করে, সে তা নিজের জন্যই করে এবং যে পথভ্রষ্ট হয় সে নিজের ক্ষতির জন্যই পথভ্রষ্ট হয়। আর তুমি তাদের তত্ত্বাবধায়ক নও।l
৬৮:৫২ আর এ কুরআন তো সৃষ্টিকুলের জন্য শুধুই উপদেশবাণী।
৩:১০১ আর কিভাবে তোমরা কুফরী কর, অথচ তোমাদের কাছে আল্লাহর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হচ্ছে এবং তোমাদের মধ্যে রয়েছে তাঁর রাসূল। আর যে ব্যক্তি আল্লাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করবে তাকে অবশ্যই সরল পথের দিশা দেয়া হবে।
ইমরান ৩,আয়াত ১০২ হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যথাযথ ভয়। আর তোমরা মুসলমান হওয়া ছাড়া মারা যেও না।
৩:১০৩ আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিভক্ত হয়ো না। আর তোমরা তোমাদের উপর আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর, যখন তোমরা পরস্পরে শত্রু ছিলে। তারপর আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ভালবাসার সঞ্চার করেছেন। অতঃপর তাঁর অনুগ্রহে তোমরা ভাই-ভাই হয়ে গেল। আর তোমরা ছিলে আগুনের গর্তের কিনারায়, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে তা থেকে রক্ষা করেছেন। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ বয়ান করেন, যাতে তোমরা হিদায়াতপ্রাপ্ত হও।
৩:১০৪ আর যেন তোমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহবান করবে, ভাল কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফলকাম।
৩:১০৫ আর তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা বিভক্ত হয়েছে এবং মতবিরোধ করেছে তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শনসমূহ আসার পর। আর তাদের জন্যই রয়েছে কঠোর আযাব।
৩:১০৬ সেদিন কতক চেহারা সাদা হবে এবং কতক চেহারা হবে কালো। আর যাদের চেহারা কালো হবে (তাদেরকে বলা হবে) ‘তোমরা কি ঈমান আনার পর কুফরী করেছিলে? সুতরাং তোমরা আযাব আস্বাদন কর। কারণ তোমরা কুফরী করতে’।
৩:১০৭ আর যাদের চেহারা সাদা হবে, তারা তো আল্লাহর রহমতে থাকবে। তারা সেখানে স্থায়ী হবে।
৩:১০৮ এগুলো আল্লাহর নির্দশন, যা আমি তোমার উপর যথাযথভাবে তিলাওয়াত করছি। আর আল্লাহ সৃষ্টিকুলের প্রতি যুলম করতে চান না।
৩:১০৯ আর আসমানসমূহ ও যমীনে যা রয়েছে, তা আল্লাহর জন্যই এবং আল্লাহর দিকেই যাবতীয় কর্মকান্ড প্রত্যাবর্তিত হবে।
Dayal Masud 1.আর যখন তাদের সামনে আমার আয়াতসমূহ সুস্পষ্টরূপে পাঠ করা হয়, তখন, যারা আমার সাক্ষাতের আশা রাখে না, তারা বলে, ‘এটি ছাড়া অন্য কুরআন নিয়ে এসো। অথবা একে বদলাও’। বল, ‘আমার নিজের পক্ষ থেকে এতে কোন পরিবর্তনের অধিকার নেই। আমিতো শুধু আমার প্রতি অবতীর্ণ ওহীর অনুসরণ করি। নিশ্চয় আমি যদি রবের অবাধ্য হই তবে ভয় করি কঠিন দিনের আযাবের’। আর তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করেছে। তাহলে তুমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (10:15,95)
2.আমি তোমার প্রতি যে ওয়াহী করেছি তাত্থেকে তোমাকে পদস্খলিত করার জন্য তারা চেষ্টার কোন ত্রুটি করেনি যাতে তুমি আমার সম্বন্ধে তার (অর্থাৎ নাযিলকৃত ওয়াহীর) বিপরীতে মিথ্যা রচনা কর, তাহলে তারা তোমাকে অবশ্যই বন্ধু বানিয়ে নিত। আর আমি যদি তোমাকে অবিচল না রাখতাম, তবে অবশ্যই তুমি তাদের দিকে কিছুটা ঝুঁকে পড়তে, তুমি ঝুঁকে পড়লে অবশ্যই তোমাকে ইহজীবনে ও পরজীবনে দ্বিগুণ শাস্তি আস্বাদন করাতাম; তখন আমার বিরুদ্ধে তোমার জন্য কোন সাহায্যকারী পেতেনা। তারা তোমাকে দেশ হতে উৎখাত করার চূড়ান্ত চেষ্টা করেছিল তোমাকে সেখান হতে বহিস্কার করার জন্য। তাহলে তোমার পর তারাও সেখানে অল্পকালই টিকে থাকত। আমার রাসূলদের মধ্যে তোমার পূর্বে যাদেরকে আমি পাঠিয়েছিলাম তাদের ক্ষেত্রেও ছিল এরূপ নিয়ম এবং তুমি আমার নিয়মের কোন পরিবর্তন দেখতে পাবেনা। (17:73-77)
3.তাহলে সম্ভবত তুমি তোমার উপর অবতীর্ণ ওহীর কিছু বিষয় ছেড়ে দেবে এবং তোমার বুক সঙ্কুচিত হবে এ কারণে যে, তারা বলে, ‘কেন তার উপর ধন-ভান্ডার অবতীর্ণ হয়নি, কিংবা তার সাথে ফেরেশতা আসেনি’? তুমি তো শুধু সতর্ককারী আর আল্লাহ সব কিছুর তত্ত্বাবধায়ক। সুতরাং যেভাবে তুমি নির্দেশিত হয়েছ সেভাবে তুমি ও তোমার সাথী যারা তাওবা করেছে, সকলে অবিচল থাক। আর সীমালঙ্ঘন করো না। তোমরা যা করছ নিশ্চয় তিনি তার সম্যক দ্রষ্টা। আর যারা যুলম করেছে তোমরা তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো না; অন্যথায় আগুন তোমাদেরকে স্পর্শ করবে এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক থাকবে না। অতঃপর তোমরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না।(11:12,112,113)
Bazlar Rahman Khan لَّيْسَ الْبِرَّ أَن تُوَلُّوا وُجُوهَكُمْ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَلَـٰكِنَّ الْبِرَّ مَنْ آمَنَ بِاللَّـهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالْكِتَابِ وَالنَّبِيِّينَ وَآتَى الْمَالَ عَلَىٰ حُبِّهِ ذَوِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينَ وَابْنَ السَّبِيلِ وَالسَّائِلِينَ وَفِي الرِّقَابِ وَأَقَامَ الصَّلَاةَ وَآتَى الزَّكَاةَ وَالْمُوفُونَ بِعَهْدِهِمْ إِذَا عَاهَدُوا ۖ وَالصَّابِرِينَ فِي الْبَأْسَاءِ وَالضَّرَّاءِ وَحِينَ الْبَأْسِ ۗ أُولَـٰئِكَ الَّذِينَ صَدَقُوا ۖ وَأُولَـٰئِكَ هُمُ الْمُتَّقُونَ ﴿١٧٧﴾
১৭৭. পূর্ব বা পশ্চিমমুখী হওয়ার মধ্যে কোনো পুণ্য নেই। পুণ্য রয়েছে (এক) আল্লাহ, আখেরাত, ফেরেশতা, সকল কিতাব ও নবীদের ওপর বিশ্বাসে। (দুই) আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে আত্মীয়স্বজন, এতিম, মিসকিন, অসহায়, মুসাফির ও সাহায্যপ্রার্থীকে সাহায্য এবং দাসমুক্তির জন্যে অর্থদানে। (তিন) নামাজ কায়েম ও যাকাত আদায়ের মধ্যে। (চার) ওয়াদা রক্ষায়। (পাঁচ) দুঃখকষ্ট, বালা-মুসিবত ও (সত্যের পথে যে-কোনো) দুর্যোগে ধৈর্যধারণ করায়। যারা তা করবে, তারাই প্রকৃত সত্যানুসারী ও আল্লাহ-সচেতন। (বাকারা:১৭৭)
আমাদের নিকট ইসলাম এসেছে পারস্য,তুরস্ক ঘুরে তাদের সংস্কৃতি মিশ্রিত হয়ে। নামাজ,রোজা,ফেরেস্তা এসব শব্দ তাদের ঢুকিয়ে দেওয়া। তসবীহ,জায়নামাজ,কুরবানী তাদের দেওয়া উপহার। ইসলামের মুল এবাদত নীতি-নৈতিকতার শিক্ষা বিকৃত করে আচার-অনুষ্ঠানে হয়ে আমাদের মাঝে বিরাজ মান। আলেম, মাদ্রাসা,মসজিদে মোয়াবিয়ার ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এ বেষ্ঠনী ভাংগা দুষ্কর। যতক্ষন না মানুষ কোরআন নিজ ভাষায় পড়ে বুঝতে সক্ষম হবে। ২২/০৪/২৩ রুবেল।
উহাদের সম্পদ হইতে ‘সাদাকা’ গ্রহণ করিবে। ইহার দ্বারা তুমি উহাদেরকে পবিত্র করিবে এবং পরিশোধিত করিবে। তুমি উহাদেরকে দু’আ করিবে। তোমার দু’আ তো উহাদের জন্য প্রশান্তিদায়ক। আল্লাহ্ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
خُذْ مِنْ اَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيْهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْؕ اِنَّ صَلٰوتَكَ سَكَنٌ لَّهُمْؕ وَاللّٰهُ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ
সূরা নম্বরঃ ৯, আয়াত নম্বরঃ ১০৩
ReplyForward Add reaction |
ধর্মীয় বিষয়ে মানুষ জন্মগত ভাবে যে বিষয়টি সত্য জেনে আসছে তা অন্য কেউ মিথ্যা বললে সহজে মেনে নিতে পারে না।
মানুষ ধর্মীয় বিষয়ে তার জানা গুলো ডাহা মিথ্যা হলেও তার জানা গুলোকেই একমাত্র সত্য মনে করে এবং বাকি সব মিথ্যা মনে করে।
একজন ব্যক্তি যখন হঠাৎ জানতে পারে তার ধর্মীয় বিষয়ে জানা গুলো অনেক কিছুই মিথ্যা তখন সে উত্তেজিত হয়। সে মেনে নিতে পারে না। যুগে যুগে এ সংঘর্ষ সকল নবী রাসুলদের সাথেও হয়ে আসছে।
যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা তোমরা অনুসরণ কর’, তাহারা বলে, ‘না, বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহার অনুসরণ করিব।’ এমন কি, তাহাদের পিতৃ পুরুষগণ যদিও কিছুই বুঝিত না এবং তাহারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না-তৎসত্ত্বেও। (২ঃ১৭০)
দীর্ঘ দিনের পালিত অভ্যাস, বাপদাদার যে ভাবে এবাদত করতে দেখে আসতেছে, অধিকাংশ লোকে যে ভাবে ধর্ম কার্যাদি সম্পাদন করতে দেখে আসতেছে তা থেকে সড়ে এসে যত সত্য কথায় উপস্থাপন করা হোক না কেন, মানুষ তা গ্রহন করতে রাজি না, যদিও কোরান থেকে দৃষ্টান্ত দেয়া হয়। আর এমন হবে তা আল্লাহ জানেন বলেই আল্লাহ বলেনঃ
যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬ঃ১১৬)
মানুষের মধ্যে কেহ কেহ আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিতণ্ডা করে; তাহাদের না আছে জ্ঞান, না আছে পথনির্দেশ, না আছে কোন দীপ্তিমান কিতাব।(২২ঃ৮)
সে বিতণ্ডা করে ঘাড় বাঁকাইয়া লোকদেরকে আল্লাহ্র পথ হইতে ভ্রষ্ট করিবার জন্য। তাহার জন্য লাঞ্ছনা আছে ইহলোকে এবং কিয়ামত দিবসে আমি তাহাকে আস্বাদ করাইব দহন-যন্ত্রণা। (মুমিনুন ২৩,আয়াত ৯)
তোমরা তাহাদের মত হইও না যাহারা তাহাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসিবার পর বিচ্ছিন্ন হইয়াছে ও নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করিয়াছে। তাহাদের জন্য মহাশাস্তি রহিয়াছে।
(ইমরান ৩,আয়াত ১০৫)
তারপর লোকেরা তাদের মাঝে তাদের দীনকে বহুভাগে বিভক্ত করেছে। প্রত্যেক দলই তাদের কাছে যা আছে তা নিয়ে উৎফুল্ল। (মুমিনিন ২৩,আয়াত ৫৩)
মানুষের মধ্যে কতক অজ্ঞানতা বশত আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিতণ্ডা করে এবং অনুসরণ করে প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের(২২ঃ৩)
আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তোমাদের নিকট বিশদ ভাবে বিবৃত করিতে, তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতি তোমাদেরকে অবহিত করিতে এবং তোমাদের ক্ষমা করিতে। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। – (সূরা নম্বরঃ ৪, আয়াত নম্বরঃ ২৬)
তাদের মধ্যে এমন আহম্মক লোক আছে যাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কেতাব সম্বন্ধে কোনোই জ্ঞান নেই, তারা শুধু অবাস্তব ধারণায় বিশ্বাসী। – [২: বাকারা-৭৮]
অধিকাংশ ঈমান এনে এবাদত করছে ঠিকই কিন্তু উল্টো পথে এবং তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে ভাবছে আমরা অনেক ভাল আমল করছি। প্রকৃত সব পন্ডুসার।
যেমন আমরা আস সালামু আলাইকুম বলে সালাম বিনিময় করি অথচ আল্লাহ বলতে বলেন সালামুন আলাইকুম”
আর যারা আমার আয়াতসমূহের উপর ঈমান আনে, তারা যখন তোমার কাছে আসে, তখন তুমি বলবে, ‘সালামুন আলাইকুম ’। তোমাদের প্রতিপালক তাঁর নিজের উপর লিখে নিয়েছেন দয়া, নিশ্চয় যে তোমাদের মধ্য থেকে না জেনে খারাপ কাজ করে তারপর তাওবা করে এবং শুধরে নেয়, তবে তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৬ঃ৫৪)
যারা মুত্তাকী, তাদের জন্য দুনিয়াতে মঙ্গল, পরকালে জান্নাত তাদের প্রান হরনের সময় মালা-ইকাগণ বলবে “সালামুন আলাইকুম ৷” (১৬ঃ৩১)
সূরা ফাতেহার পর আমিন বলি, এ আমিন শব্দ টা আদৌ কি কোরানে আছে? নাই। আমিন অর্থ বিশ্বস্ত। কে সংযোজন করলো এ অতিরিক্ত শব্দ আল্লাহর কিতাবের সাথে??
এমন আরো অনেক, আল্লাহ বলতে শিখিয়েছেন একভাবে আর আমরা আমরা করে চলছি আরেক ভাবে। যেমন কোরান পাঠের আগে আমরা বলি, ” আউয়ুযুবিল্লাহে মিনাশ শায়তানের রাজিম ” অথচ আল্লাহ বলতে শিখিয়েছেন, ” রাব্বি আউয়ুযুবিকা মিন হামাযাতিশ শায়তান। ”
وَقُل رَّبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَٰتِ ٱلشَّيَٰطِينِ
আর বল : ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি শয়ত্বানের কুমন্ত্রণা হতে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (২৩ঃ৯৭)
আল্লাহ্ বলিলেন, ‘তোমরা দুই ইলাহ্ গ্রহণ করিও না; তিনিই তো একমাত্র ইলাহ্। সুতরাং আমাকেই ভয় কর।'(১৬ঃ৫১)
আল্লাহ মানুষকে অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। (৯১ঃ৮) সে যেটি ইচ্ছে করতে পারে।
অতএব তুমি যখনই অবসর পাও একান্তে ইবাদত করিও। ৯৪ঃ৭
তাদের অধিকাংশ আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখে, কিন্তু তারা শির্ককারী। (ইউছুফ ১২,আয়াত ১০৬)
প্রতেক ব্যাক্তিই নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী হবে। কেউ কারো বোঝা বহন করবে না। (৬:১৬৪)
বল, ‘আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দিব কর্মে বিশেষ ক্ষতিগ্রস্তদের?’ উহারাই তাহারা, ‘পার্থিব জীবনে যাহাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তাহারা মনে করে যে, তাহারা সৎকর্মই করিতেছে,(১৮ঃ ১০৩-১০৪)
আল্লাহ্ই প্রাণ হরণ করেন জীবসমূহের তাহাদের মৃত্যুর সময় এবং যাহাদের মৃত্যু আসে নাই তাহাদের প্রাণও নিদ্রার সময়। অতঃপর তিনি যাহার জন্য মৃত্যুর সিদ্ধান্ত করেন তাহার প্রাণ তিনি রাখিয়া দেন এবং অপরগুলি ফিরাইয়া দেন, এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। ইহাতে অবশ্যই নিদর্শন রহিয়াছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য। (৩৯ঃ৪২)
যাহারা নিজেদের দীনে মতভেদ সৃষ্টি করিয়াছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হইয়াছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ লইয়া উৎফুল্ল। (30:32)
তারা মুসলমান হয়ে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। বলুন, তোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না। বরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যনিষ্ঠ হয়ে থাক। (৪৯ঃ১৭)
বলুন, যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে? চিন্তা-ভাবনা কেবল তারাই করে, যারা বুদ্ধিমান। সুরা জুমার আয়াত ৯ ও ১০
কবর একটি সাময়িক অবকাশ স্থল মাত্রঃ
তাহারা নিষ্প্রাণ, নির্জীব এবং কখন তাহাদেরকে পুনরুত্থিত করা হইবে সে বিষয়ে তাহাদের কোন চেতনা নাই।(১৬ঃ২১)
বিচার দিবসে সালাত নিয়ে জবাব দিহী নয়ঃ
তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’ (১৭ঃ১৪)
হে ঈমানদারগণ! অধিকাংশ পীর,দরবেশের অবস্থা এই যে, তারা জনগণের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে এবং তাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে! তাদের জন্য পীড়াদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও যারা স্বর্ণ রৌপ্য জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না! (সূরা তওবা: আয়াত ৩৪)
মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবার জন্য অসার হাদীস গ্রহন করিয়া নেয় এবং আল্লাহ্-প্রদর্শিত পথ লইয়া ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। উহাদেরই জন্য রহিয়াছে অবমাননাকর শাস্তি।( 31:6)
যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬ঃ১১৬)
আল্লাহকে রহমান ও রহিম কেন বলা হয়, কারন —– ৪ঃ৩১ ভাবলেই বুঝ এসে যায়।
তোমাদেরকে যাহা নিষেধ করা হইয়াছে তাহার মধ্যে যাহা গুরুতর তাহা হইতে বিরত থাকিলে তোমাদের লঘুতর পাপ গুলি মোচন করিব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে দাখিল করিব।(৪ঃ৩১)
মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবার জন্য অসার হাদীস গ্রহন করিয়া নেয় এবং আল্লাহ্-প্রদর্শিত পথ লইয়া ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। উহাদেরই জন্য রহিয়াছে অবমাননাকর শাস্তি।( 31:6)
যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে। (৬ঃ১১৬)
তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমাদের নিকট যাহা অবতীর্ণ করা হইয়াছে তোমরা তাহার অনুসরণ কর এবং তাঁহাকে ছাড়া অন্ঢ় কোন ওলী-আউলিয়ার অনুসরণ করিও না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর।
তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’
اِقْرَاْ كِتٰبَك َؕ كَفٰى بِنَفْسِكَ الْيَوْمَ عَلَيْكَ حَسِيْبًا ؕ
সূরা নম্বরঃ ১৭, আয়াত নম্বরঃ ১৪
২) ‘আমরা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করিয়াছিলাম, কারণ আমরা নিজেরাও ছিলাম বিভ্রান্ত।’
فَاَغْوَيْنٰكُمْ اِنَّا كُنَّا غٰوِيْنَ
সূরা নম্বরঃ ৩৭, আয়াত নম্বরঃ ৩২
৩) যাহারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ করিতে চায়, ইহা দ্বারা তিনি তাহাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং নিজ অনুমতিক্রমে অন্ধকার হইতে বাহির করিয়া আলোর দিকে লইয়া যান এবং উহাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন।( ৫ঃ১৬)
৪) যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই উহার অনুসরণ করিও না; কর্ণ, চক্ষু, হৃদয়- উহাদের প্রত্যেকটি সম্পর্কেই কৈফিয়ত তলব করা হইবে।(১৭ঃ৩৬)
৫) আল্লাহ ঈমানদারগণকে সতর্ক করে বলেনঃ অবশ্যই আলিম ও দরবেশদের অনেকেই ভূয়া কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষের সম্পদ গ্রাস করে থাকে এবং আল্লাহর পথ থেকে লোকদের নিবৃত রাখছে। (৯ঃ৩৪ অংশ)
৬) ইহারা কুরআনের প্রতি ঈমান আনিবে না এবং অতীতে পূর্ববর্তীদেরও এই আচরণ ছিল।
لَا يُؤْمِنُوْنَ بِهٖۚ وَقَدْ خَلَتْ سُنَّةُ الْاَوَّلِيْنَ
সূরা নম্বরঃ ১৫, আয়াত নম্বরঃ ১৩
৭) একমাত্র কোরআনকেই অনুসরন করতে হবেঃ
তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমাদের নিকট যাহা অবতীর্ণ করা হইয়াছে তোমরা তাহার অনুসরণ কর এবং তাঁহাকে ছাড়া অন্য কোন আউলিয়াকে অনুসরণ করিও না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর।( ৭ঃ৩)
গুরুত্তপুর্ন কিছু আয়াতঃ
আল্লাহ মানুষকে অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। (৯১ঃ৮) সে যেটি ইচ্ছে করতে পারে।
এই কুরআন আল্লাহ্ ব্যতীত অপর কাহারও রচনা নয়। পক্ষান্তরে, ইহার পূর্বে যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে ইহা তাহার সমর্থন এবং ইহা বিধান সমূহের বিশদ ব্যাখ্যা। ইহাতে কোন সন্দেহ নাই যে, ইহা জগত সমূহের প্রতিপালকের পক্ষ হইতে। (১০ঃ৩৭)
‘আমরা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করিয়াছিলাম, কারণ আমরা নিজেরাও ছিলাম বিভ্রান্ত।’
(৩৭ঃ৩২)
আমি অবশ্যই জানি যে, তোমাদের মধ্যে মিথ্যা আরোপকারী রহিয়াছে। (৬৯ঃ৪৯)
যাহারা আল্লাহ্র সন্তুষ্টি লাভ করিতে চায়, ইহা দ্বারা তিনি তাহাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং নিজ অনুমতিক্রমে অন্ধকার হইতে বাহির করিয়া আলোর দিকে লইয়া যান এবং উহাদেরকে সরল পথে পরিচালিত করেন।
(৫ঃ১৬)
যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই উহার অনুসরণ করিও না; কর্ণ, চক্ষু, হৃদয়- উহাদের প্রত্যেকটি সম্পর্কেই কৈফিয়ত তলব করা হইবে।(১৭ঃ৩৬)
ইহারা কুরআনের প্রতি ঈমান আনিবে না এবং অতীতে পূর্ববর্তীদেরও এই আচরণ ছিল।
(১৫ঃ১৩)
[ পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।( ৫৭ঃ২২)
অন্য অনুবাদঃ
পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগত ভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে আমি উহা সংঘটিত করিবার পূর্বেই ইহা লিপিবদ্ধ থাকে; আল্লাহর পক্ষে ইহা খুব সহজ।
দূটি অনুবাদ থেকে কি একই মর্ম হৃদয়ে অনুভুত হয়??]
সে যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করিয়া চালাইতে চেষ্টা করিত, আমি অবশ্যই তাহার দক্ষিণ হস্ত ধরিয়া ফেলিতাম, এবং কাটিয়া দিতাম তাহার জীবন-ধমনী, অতঃপর তোমাদের মধ্যে এমন কেহই নাই, যে তাহাকে রক্ষা করিতে পারে। (৬৯ঃ৪৪- ৪৭)
তোমাদের জিহবা মিথ্যা আরোপ করে বলিয়া আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা আরোপ করিবার জন্য তোমরা বলিও না, ‘ইহা হালাল এবং উহা হারাম।’ নিশ্চয়ই যাহারা আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করিবে তাহারা সফলকাম হইবে না।(১৬ঃ১১৬)
বিচার দিবসে চুড়ান্ত রায় ঘোষনার পর,
‘ ” জাহান্নামীরা বলিবে, ‘আমাদের কী হইল যে, আমরা যে সকল লোককে মন্দ বলিয়া গণ্য করিতাম তাহাদেরকে দেখিতে পাইতেছি না!
‘তবে কি আমরা উহাদেরকে অহেতুক ঠাট্টা-বিদ্রুপের পাত্র মনে করিতাম, না উহাদের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিবিভ্রম ঘটিয়াছে ?’ (৩৮ঃ৬২-৬৩
দুনিয়ার জীবনে বিভ্রন্তিতে তারাই যারা বাপ দাদা পুর্ব পুরুষ এমন করে আসছে বলে অনুসরন করে এবাদত করে থাকে। আল্লাহ কোরানে বলেনঃ
১) বরং উহারা বলে, ‘আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পাইয়াছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাহাদেরই পদাংক অনুসরণ করিতেছি।'(৪৩ঃ২২)
২) এইভাবে তোমার পূর্বে কোন জনপদে যখনই আমি কোন সতর্ককারী প্রেরণ করিয়াছি তখন উহার সমৃদ্ধিশালী ব্যক্তিরা বলিত, ‘আমরা তো আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে পাইয়াছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাহাদেরই পদাংক অনুসরণ করিতেছি।(৪৩ঃ২৩)
৩) সেই সতর্ককারী বলিত, ‘তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ দেরকে যে পথে পাইয়াছ, আমি যদি তোমাদের জন্য তদপেক্ষা উৎকৃষ্ট পথনির্দেশ আনয়ন করি তবুও কি তোমরা তাহাদের পদাংক অনুসরণ করিবে? তাহারা বলিত, ‘তোমরা যাহা সহ প্রেরিত হইয়াছ আমরা তাহা প্রত্যাখ্যান করি।'(৪৩ঃ২৪)
৪) যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহার দিকে ও রাসূলের দিকে আস’, তাহারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাহাদের পূর্বপুরুষগণ কিছুই জানিত না এবং সৎপথপ্রাপ্তও ছিল না, তবুও কি ? (৫ঃ১০৪)
যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই উহার অনুসরণ করিও না; কর্ণ, চক্ষু, হৃদয়- উহাদের প্রত্যেকটি সম্পর্কেই কৈফিয়ত তলব করা হইবে।(১৭ঃ৩৬)
৫) যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা তোমরা অনুসরণ কর’, তাহারা বলে, ‘না, বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহার অনুসরণ করিব।’ এমন কি, তাহাদের পিতৃ পুরুষগণ যদিও কিছুই বুঝিত না এবং তাহারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না-তৎসত্ত্বেও। ( ২ঃ১৭০)
৬) উহাদেরকে যখন বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা অনুসরণ কর।’ উহারা বলে, ‘বরং আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহারই অনুসরণ করিব।’ শয়তান যদি উহাদেরকে জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তির দিকে আহবান করে, তবুও কি? (৩১ঃ২১)
আল্লাহ বলেন,
Aal-e-Imran 3:19)
إِنَّ ٱلدِّينَ عِندَ ٱللَّهِ ٱلْإِسْلَٰمُۗ
নিশ্চয় আল্লাহর নিকট দীন হচ্ছে ইসলাম।
Yunus 10:105)
وَأَنْ أَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًا وَلَا تَكُونَنَّ مِنَ ٱلْمُشْرِكِينَ
আর যে, ‘তুমি নিজেকে দীনের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখ একনিষ্ঠভাবে এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না’।
Ar-Rum 30:30)
فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ حَنِيفًاۚ فِطْرَتَ ٱللَّهِ ٱلَّتِى فَطَرَ ٱلنَّاسَ عَلَيْهَاۚ لَا تَبْدِيلَ لِخَلْقِ ٱللَّهِۚ ذَٰلِكَ ٱلدِّينُ ٱلْقَيِّمُ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
অতএব, একনিষ্ঠ হয়ে নিজেকে দীনে প্রতিষ্ঠিত কর। আল্লাহর স্বাভাবিক রীতি (মেনে চল), যে অনুযায়ী তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির কোন পরিবর্তন নেই। এটাই সঠিক দ্বীন; তবে অধিকাংশ মানুষ জানে না।
Ar-Rum 30:32)
مِنَ ٱلَّذِينَ فَرَّقُوا۟ دِينَهُمْ وَكَانُوا۟ شِيَعًاۖ كُلُّ حِزْبٍۭ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ
যারা নিজেদের দ্বীনকে বিভক্ত করে ফেলেছে এবং বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে গেছে। প্রত্যেক দল নিজেদের কাছে যা আছে তাই নিয়ে উল্লসিত।
Ar-Rum 30:43)
فَأَقِمْ وَجْهَكَ لِلدِّينِ ٱلْقَيِّمِ مِن قَبْلِ أَن يَأْتِىَ يَوْمٌ لَّا مَرَدَّ لَهُۥ مِنَ ٱللَّهِۖ يَوْمَئِذٍ يَصَّدَّعُونَ
তাই তুমি নিজকে দীনে,প্রতিষ্ঠিত রাখো, আল্লাহর পক্ষ থেকে সে দিন আসার পূর্বে, যা ফেরানো যাবে না। সেদিন তারা বিভক্ত হয়ে পড়বে।
Ghafir 40:14)
فَٱدْعُوا۟ ٱللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ وَلَوْ كَرِهَ ٱلْكَٰفِرُونَ
অতএব, দ্বীনকে কেবল তাঁর জন্য নিবেদিত করে তোমরা আল্লাহকে ডাক, যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।
Az-Zumar 39:2)
إِنَّآ أَنزَلْنَآ إِلَيْكَ ٱلْكِتَٰبَ بِٱلْحَقِّ فَٱعْبُدِ ٱللَّهَ مُخْلِصًا لَّهُ ٱلدِّينَ
আমি তোমার কাছে সত্যসহ কিতাব নাযিল করেছি। অতএব, দ্বীনকে কেবল আল্লাহর জন্য নিবেদিত করে তুমি তাঁর ইবাদত কর।
Az-Zumar 39:3)
أَلَا لِلَّهِ ٱلدِّينُ ٱلْخَالِصُۚ
জেনে রাখ, খাঁটি দ্বীন কেবল আল্লাহরই।
Al-Bayyinah 98:5)
وَمَآ أُمِرُوٓا۟ إِلَّا لِيَعْبُدُوا۟ ٱللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ ٱلدِّينَ حُنَفَآءَ وَيُقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَيُؤْتُوا۟ ٱلزَّكَوٰةَۚ وَذَٰلِكَ دِينُ ٱلْقَيِّمَةِ
আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর ‘ইবাদাত করে তাঁরই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে, সালাত কায়েম করে এবং যাকাত দেয়; আর এটিই হল সঠিক দীন।
Ash-Shura 42:13)
তিনি তোমাদের জন্য সেই দ্বীনই বিধিবদ্ধ করেছেন যার আদেশ দিয়েছিলেন নূহকে, যা আমি তোমার কাছে নাযিল করেছি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকেও; এই বলে যে, “তোমরা দ্বীন প্রতিষ্ঠিত করো এবং তাতে বিভেদ সৃষ্টি করো না।” তুমি মুশরিকদেরকে যা করতে বল তা তাদের কাছে বড় (কঠিন) মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা এই দ্বীনের জন্য মনোনীত করেন এবং যে (তাঁর দিকে) ফিরে আসে তাকেই তাঁর পথ প্রদর্শন করেন।
قُلْ هَلْ نُـنَبِّئُكُمْ بِالْاَخْسَرِيْنَ اَعْمَالًا * اَ لَّذِيْنَ ضَلَّ سَعْيُهُمْ فِى الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا وَهُمْ يَحْسَبُوْنَ اَنَّهُمْ يُحْسِنُوْنَ صُنْعًا
বল, ‘আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দিব কর্মে বিশেষ ক্ষতিগ্রস্তদের?’
উহারাই তাহারা, ‘পার্থিব জীবনে যাহাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তাহারা মনে করে যে, তাহারা সৎকর্মই করিতেছে,
(সূরা নম্বরঃ ১৮, আয়াত নম্বরঃ ১০৩ ও ১০৪)
যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই উহার অনুসরণ করিও না; কর্ণ, চক্ষু, হৃদয়- উহাদের প্রত্যেকটি সম্পর্কেই কৈফিয়ত তলব করা হইবে।(১৭ঃ৩৬)
৫) যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা তোমরা অনুসরণ কর’, তাহারা বলে, ‘না, বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহার অনুসরণ করিব।’ এমন কি, তাহাদের পিতৃ পুরুষগণ যদিও কিছুই বুঝিত না এবং তাহারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না-তৎসত্ত্বেও। ( ২ঃ১৭০)
ReplyForward Add reaction |
ReplyForward Add reaction |
জন্ম ও মৃত্যু চক্র (পর্ব ৫)
কিয়ামত ও বিচার দিবস:
কিয়ামত বলতে সাধারণত আমরা একটি মহাপ্রলয় বা ধ্বংসের দিন বুঝি যেদিন এই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী তথাকথিত পৃথিবী ধ্বংসের নামে কিয়ামতের অস্তিত্বই নেই আলামত তো দূরের কথা।
আরবদের দৈনন্দিন জীবনে কেয়ামত শব্দটি ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন আরবি আইনি পরিভাষা “قيمة الفائدة” অর্থ সুদের পরিমাণ এবং “قيمة التداول التجاري” লেনদেনের মূল্য বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। আরব রাজস্ব বিভাগের পরিভাষা “له قيمة” অর্থ “যা মূল্যবান (be of value)”, “قيمة اجتماعية” অর্থ “সামাজিক মান (socoal value) “, আর্থিক পরিভাষা “قيمة اسمية” অর্থ অভিহিত মূল্য (face value) ইত্যাদি।
মূলত আরবি শব্দ “قِيْمَة” একটি বিশেষ্য (noun) যা আদি মূল “ق م” (কাফ, মিম) হতে উৎপন্ন যার অর্থ; মূল্য/ মান (value), পরিমাণ (amount), দর (rate), মূল্যায়ন (assessment), বিচার (judgement) ইত্যাদি। সুতরাং “قيامة” এর সঠিক অর্থ হল এমন একটি ঘটনা যখন বিচার (judgment) সংঘটিত হয়, যা মূল্যায়ন (assessmentl ঘটায় অথবা যা পূনঃমূল্যায়ন (evaluation) করে। তাহলে يَوْمَ الْقِيَامَةِ অর্থ হল বিচার দিবস/বিচারের সময় , মূল্যায়নের দিন/সময়।
আমাদের বহুল পরিচিত আরেকটি শব্দ হলো হাশর (حْشر) যার ভুল অর্থ আমাদের মাঝে প্রচলিত। আল কুরআনের প্রায় সব অনুবাদে হাশরের অর্থ করা হয়েছে সমবেত করা/একত্র করা। যেমন
ثُمَّ اِلٰی رَبِّہِمۡ یُحۡشَرُوۡن
অতঃপর তাদেরকে তাদের রবের কাছে সমবেত করা হবে (৬:৩৮) (বায়ান ফাউন্ডেশন)
وَ یَوۡمَ نَحۡشُرُہُمۡ جَمِیۡعًا
আর যেদিন আমি তাদের সকলকে সমবেত করব (৬:২২) (বায়ান ফাউন্ডেশন)
কিন্তু আরবি হাশর শব্দের অর্থ একত্র করন নয়। আরবীতে “حْشر” কে “بَعَثَ منَ المَوْت” বলা হয় যার অর্থ “মৃত্যুর পরে পুনরুজ্জীবতকরণ”, “মৃত্যু থেকে পুনরুত্থান”, “মৃত্যুর পর পুনরুৎপাদন”, “পুনরায় জীবন দান করা” ইত্যাদি। আরবী بَعَثَ শব্দের অর্থ পুনরুত্থান (raise), পুনরুৎপাদন /পুনরুজ্জীবিত করা (regenerate) ইত্যাদি।
যদিও উপরোক্ত আয়াতগুলো বর্তমান কালবাচক কিন্তু প্রায় সব অনুবাদেই বিচার দিবস বা পুনরুত্থান দিবস ভবিষ্যতে সংগঠিত হবে ধরে নিয়ে এই আয়াতগুলোকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভবিষ্যৎ কাল হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে। অথচ বিচার এবং পুনরুত্থান একটি চলমান প্রক্রিয়া। ثُمَّ اِلٰی رَبِّہِمۡ یُحۡشَرُوۡن এর সঠিক অর্থ হলো “অতঃপর তাদের রবের কাছে তারা পুনরুজ্জীবিত /পুনরুত্থিত হয়” (৬:৩৮)।
কেয়ামতের দিন কথিত হাশরের মাঠে পৃথিবীর শুরু হতে শেষ পর্যন্ত সকল মানুষকে একত্রিত করা হবে এই ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করতে جَمِیۡعًا অর্থ করা হয়েছে সকলকে বা একসাথে। কিন্তু ৬:২২ এ جَمِیۡعًا এর অর্থ হল “একটি সংগ্রহ/সংগৃহীত কোন কিছু (a collection), একত্র করা (putting together)”। যা তাদের আত্মা এবং শরীরের সংগ্রহ/ একত্র করা বুঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।
তাহলে وَ یَوۡمَ نَحۡشُرُہُمۡ جَمِیۡعًا এর সঠিক অর্থ দাঁড়ায়
“আর একত্র করার দিনে, আমরা তাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করি। ” (৬:২২)।
“And day of collection, we bring them into life” (6:22)
কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী মূল্যায়নের দিন ( يَوْمَ الْقِيَامَةِ) মানুষের পুনরুত্থান হবে।
ثُمَّ اِنَّكُمْ بَعْدَ ذٰلِكَ لَمَيِّتُوْنَ ؕ
এরপর অবশ্যই তোমরা মৃত্যু বরণ করবে। (২৩:১৫)
ثُمَّ اِنَّكُمْ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ تُبْعَثُوْنَ
তারপর কিয়ামাতের দিন তোমাদেরকে পুনরুত্থিত করা হবে। (২৩:১৬) (তাইসিরুল কোরআন)
সুতরাং মৃত্যুর পর পুনরুত্থিত করে মানুষের মূল্যায়ন তথা কেয়ামত শুরু হয় এবং এই মূল্যায়ন অনুযায়ী মানুষের অবস্থান নির্ধারিত হয়। লোকটি যদি সৎকর্মশীল হয় পুনরুত্থানের পর তার অবস্থান হবে জান্নাত। আর না হলে জাহান্নামের কঠিন শাস্তির মাধ্যমে তার আকৃতি পরিবর্তন করে যখন পুনর্জন্ম হবে, তখন তার পূর্বের কৃতকর্মের উপর নির্ভর করে সে একটি নতুন পরিবেশে নতুন পরিস্থিতিতে একটি নিম্নমানের জীবন (জাহান্নাম) লাভ করবে, যার মধ্যে সে তার পরবর্তী জীবন পার করবে। কৃতকর্মের কারণে সে যে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে তা মোকাবেলা করে সে যদি সৎ মানুষের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে তাহলে সে জান্নাত লাভ করতে পারবে, অন্যথায় এই প্রক্রিয়া চলতে থাকবে।
এখন প্রশ্ন হল মৃত্যুর পর পরই কি মানুষের মূল্যায়ন হয়? নাকি অনন্তকাল পরে যখন পৃথিবীর কথিত ধ্বংস সম্পন্ন হবে তখন?
ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে Justice Delayed is Justice Denied বিচারকে প্রলম্বিত করা মানে বিচারকে অগ্রাহ্য করা বা বিচার না হওয়া, যা অন্যায়ের আওতায় পড়ে। কিন্তু আল্লাহ অন্যায়কারী নন তাই আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী “ان اللہ سریع الحساب”
কুরআনের শিক্ষা কখনই বলে না যে আমরা যখন মারা যাব, তখন আমরা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য আমাদের কবরে শান্তিতে ঘুমাব। এই পৌত্তলিক বিশ্বাসের বিপরীতে, কুরআন আমাদের মৃত্যুর পরে দ্রুত জবাবদিহিতা এবং অবিলম্বে প্রতিদানের কথা বারবার উল্লেখ করেছে।
অনুগ্রহ করে কুরআনের সূরা গাফিরের ৪০:১৭ নং আয়াতটি দেখুন:
الْيَوْمَ تُجْزَى كُلُّ نَفْسٍ بِمَا كَسَبَتْ لَا ظُلْمَ الْيَوْمَ إِنَّ اللَّهَ سَرِيعُ الْحِسَابِ (40:17)
Today recompensing everyone with what they earned, no injustice today that Allah is fast reckoner” – 40:17.
আজ প্রত্যেককে তারা যা অর্জন করেছে তার প্রতিদান দেয়া হচ্ছে, আজ কোন অন্যায় নয়, আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী। – ৪০:১৭।
উপরোক্ত ৪০:১৭ নং আয়াতে “الْيَوْمَ” শব্দটি সুনির্দিষ্ট আকারে মৃত্যুর দিনকে বোঝায় কারণ এই আয়াতের প্রেক্ষাপট বিচার দিবস নয়, বরং ৪০:১১ নং আয়াতের “قَالُوا رَبَّنَا أَمَتَّنَا” অংশটি প্রেক্ষাপট হিসাবে, মৃত্যুর কথা এবং মৃত্যুর দিনে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনা পরবর্তী আয়াতে বলা হচ্ছে।
উল্লিখিত আয়াতের “لَا ظُلْمَ” শব্দগুচ্ছের অর্থ ” বিচারকে অগ্রাহ্য নয় (no justice denied) ” বা “কোন অবিচার নয় (no injustice)”, যেটি নিজেই বিচার অগ্রাহ্য করার পৌত্তলিক ধারণার বিরুদ্ধে কারণ বিচারকে প্রলম্বিত করা মানে বিচারকে অগ্রাহ্য করা।
আমাদের প্রচলিত বিশ্বাসের বিপরীতে, কুরআন আমাদেরকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে মৃত্যুর পর পরই জবাবদিহিতা সম্পন্ন করা হয়। এবং বারজাখের (যা পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সম্ভাব্য জীবনকে পৃথক করে) আবরণে তার কৃতকর্মের মূল্যায়ন অনুসারে পুনরুত্থানের পর মানুষকে জাহান্নাম বা জান্নাতের পরিবেশে ফেরত পাঠানো হয়।
حَتّٰۤي اِذَا جَآءَ اَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُوْنِ ۙ
until, when death comes to one of them, he says, “My Lord, send me back (23:99)
অবশেষে যখন তাদের কারো মৃত্যু আসে, সে বলে, ‘হে আমার রব, আমাকে ফেরত পাঠান’। (২৩:৯৯)
لَعَلِّي أَعْمَلُ صَالِحًا فِيمَا تَرَكْتُ كَلَّا إِنَّهَا كَلِمَةً هُوَ قَائِلُهَا وَمِن وَرَائِهِم بَرْزَخٌ إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ
‘In order that I may do righteous deeds in the life that I have left behind.” Never, it is but a word that he utters. And from behind them there is a barrier to the day, when they are raised again. (23:100)
‘যাতে আমি পেছনে ফেলে আসা জীবনে সৎকাজ করতে পারি।’ কখনোই নয়, এটি কেবল একটি শব্দ যা সে উচ্চারণ করে। আর তাদের পিছন দিক থেকে সেই দিনের জন্য বাধা রয়েছে, যেদিন তারা পুনরুত্থিত হয়। (২৩:১০০)
(২৩:৭৪) নং আয়াতে উল্লিখিত যারা পরকালে বিশ্বাস করে না এবং সরল পথ হতে বিচ্যুত, মৃত্যুকালে তারা আবার পূর্বের জীবনে ফেরত পাঠানোর আকুতি জানায়, যাতে তারা সৎকাজ করতে পারে। আল্লাহ জানিয়ে দিলেন যে, পূর্বের জীবনে ফেরত যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। কারণ পিছনে রয়েছে একটি মৃত্যু নামক বাধা/অন্তরায় (separator – بَرْزَخٌ) যা তাদের দুই জীবনকে আলাদা করেছে। তারা আবার সৎ কাজ করার সুযোগ পাবে কেবল যখন তাদেরকে মূল্যায়নের পর পুনর্জ্জীবিত করা হবে।
২৩:১০০ আয়াতে رَائِهِم অর্থ “তাদের পিছনে”। অথচ
সকল বাংলা অনুবাদে رَائِهِم অর্থ করা হয়েছে “তাদের সামনে”, যাতে বোঝানো যায়, মৃত্যুর পর কবরে একটি বারজাখী জীবনের সম্মুখীন হতে হবে। তাতে আল্লাহর নাযিলকৃত শব্দের বিপরীত হলেও অসুবিধা নেই!
আরবি بَرْزَخٌ (বারজাখ) শব্দের অর্থ পর্দা, পৃথায়ক, আড়াল, অন্তরায়, অন্তরাল, প্রতিবন্ধক, বাধা ইত্যাদি। অথচ আমাদেরকে বোঝানো হয়েছে বার্জাখ নামে একটি জগত রয়েছে! সূরা আর রহমান এর ২০ নং আয়াতটি দেখুন যেখানে একই বার্জাখের কথা উল্লেখ রয়েছে।
بَیۡنَہُمَا بَرۡزَخٌ لَّا یَبۡغِیٰنِ (55:20)
তাদের (দুই সাগরের) মাঝখানে একটি অন্তরাল আছে, যা তারা অতিক্রম করতে পারে না। (৫৫:২০) (ফজলুর রহমান)
মৃত্যুর পরপরই জবাবদিহিতা ও প্রতিদানের কথা কুরআন স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে।
قِيلَ ادْخُلِ الْجَنَّةَ قَالَ يَا لَيْتَ قَوْمِي يَعْلَمُونَ
It was said to him, Enter paradise, he said: Would that my people knew (36/26)
তাকে বলা হল, জান্নাতে প্রবেশ কর, সে বলল: হায় আমার সম্প্রদায় যদি জানত (৩৬/২৬)
بِمَا غَفَرَ لِي رَبِّي وَجَعَلَنِي مِنَ الْمُكْرَمِينَ
“For that my Lord has granted me Forgiveness and placed me among those held in honour!” (36/27)
যে আমার রব আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং আমাকে সম্মানিত ব্যক্তিদের মধ্যে স্থান দিয়েছেন! (৩৬/২৭)
কুরআনের উপরোক্ত আয়াতে মৃত্যুর সময় অর্থাৎ কথিত কিয়ামত প্রতিষ্ঠার পূর্বে জান্নাতে প্রবেশের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়াও এই আয়াতগুলির ব্যাকরণগত কাঠামো কোনও ভবিষ্যত ক্রিয়াকে নির্দেশ করে না, প্রকৃতপক্ষে উভয় আয়াতই অতীত কালের। এমনকি, মৃত্যুর ঠিক পরে তাৎক্ষণিক একটি হিসাব হয়ে গেছে, যা মৃত্যু থেকে কথিত কিয়ামত পর্যন্ত তথাকথিত ঘুমের রাজ্যের ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করে। কেউ যুক্তি দিতে পারে যে উপরের আয়াতগুলিতে মৃত্যুর সময় উল্লেখ করা হয়নি এবং একইভাবে জবাবদিহিতার কথা বলা হয়নি। তবে এটি একটি সাধারণ জ্ঞান যে ‘জান্নাতে প্রবেশ’ মৃত্যু এবং জবাবদিহির বিষয়। যাইহোক, নিম্নলিখিত আয়াতগুলি এই দৃশ্যটিকে আরও স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করে যেখানে মৃত্যুর সময় জবাবদিহিতা এবং শাস্তির কথা বলা হয়েছে।
وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَرَىٰ عَلَى اللَّهِ كَذِبًا أَوْ قَالَ أُوحِيَ إِلَيَّ وَلَمْ يُوحَ إِلَيْهِ شَيْءٌ وَمَن قَالَ سَأُنزِلُ مِثْلَ مَا أَنزَلَ اللَّهُ وَلَوْ تَرَى إِذِ الظَّالِمُونَ فِي غَمَرَاتِ الْمَوْتِ وَالْمَلَائِكَةُ بَاسِطُو أَيْدِيهِمْ أخْرِجُوا أَنفُسَكُمُ الْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الْهُونِ بِمَا كُنتُمْ تَقُولُونَ عَلَى اللَّهِ غَيْرَ الْحَقِّ وَكُنتُمْ عَنْ آيَاتِهِ تَسْتَكْبِرُونَ
আর তার চেয়ে বড় জালেম আর কে, যে আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করে অথবা বলে, এটা আমার প্রতি ওহী করা হয়েছে; অথচ তার প্রতি কোন কিছুই নাযিল করা হয়নি, আর যে বলে: আল্লাহ যা নাযিল করেছেন আমিও তার মত নাযিল করতে পারি? এবং তুমি যদি দেখতে যখন জালেমরা মৃত্যুর যন্ত্রণার মধ্যে থাকবে এবং ফেরেশতারা তাদের হাত বাড়িয়ে দেবে: তোমাদের আত্মা ছেড়ে দাও; আজ তোমাদেরকে লজ্জাজনক শাস্তি দেওয়া হবে কারণ তোমরা সত্য ব্যতীত আল্লাহর বিরুদ্ধে কথা বলেছিলে এবং তাঁর বাণীর প্রতি অহংকার করেছিলে। (৬/৯৩)
الَّذِينَ تَتَوَفَّاهُمُ الْمَلَائِكَةُ طَيِّبِينَ يَقُولُونَ سَلَامٌ عَلَيْكُمُ ادْخُلُوا الْجَنَّةَ بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
যাদেরকে ফেরেশতারা শুদ্ধ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করায়। তারা বলে: ‘তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক! তোমরা যা করতে তার জন্য জান্নাতে প্রবেশ কর।” (১৬:৩২)
وَلَوْ تَرَى إِذْ يَتَوَفَّى الَّذِينَ كَفَرُوا الْمَلائِكَةُ يَضْرِبُونَ وُجُوهَهُمْ وَأَدْبَارَهُمْ وَذُوقُوا عَذَابَ الْحَرِيقِ
এবং তুমি যদি দেখতে যে, মৃত্যুর সময় যখন ফেরেশতারা অবিশ্বাসীদের আত্মা কেড়ে নেয়, তারা তাদের মুখ এবং তাদের পিঠে আঘাত করে এবং [বলে], “জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি আস্বাদন কর”। (৮:৫০)
ثُمَّ رُدُّوا إِلَى اللَّهِ مَوْلَاهُمُ الْحَقِّ أَلَا لَهُ الْحُكْمُ وَهُوَ أَسْرَعُ الْحَاسِبِينَ
অতঃপর তারা, তাদের প্রকৃত রব আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তিত হয়। বিচার একমাত্র তাঁরই। তিনি হিসাব গ্রহণে দ্রুততম। (৬/৬২)
সূরা ওয়াকিয়ায় ডান দিকবর্তী ও বাম দিকবর্তী লোকের মৃত্যুকালীন ধারাবাহিক বর্ণনা এসেছে –
فَلَوْلَا إِذَا بَلَغَتِ الْحُلْقُومَ
Then why not, when the soul at death reaches the throat. (56/83)
তাহলে কেন নয়, যখন মৃত্যুর সময় আত্মা কণ্ঠাগত হয় । (৫৬/৮৩)
وَأَنتُمْ حِينَئِذٍ تَنظُرُونَ
And at that moment you look around.(56/84)
এবং সেই মুহুর্তে তোমরা তাকিয়ে থাক। (৫৬/৮৪)
(56/84) وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنكُمْ وَلَكِن لَّا تُبْصِرُونَ
And We are nearer to him than you, but you do not see us. (56/85)
আর আমরা তোমাদের চেয়ে তার নিকটবর্তী, কিন্তু তোমরা আমাদের দেখতে পাও না। (৫৬/৮৫)
فَلَوْلَا إِن كُنتُمْ غَيْرَ مَدِينِينَ
Then why do you not, if you are not to be recompensed.(56/86)
তাহলে কেন নয়? যদি তোমাদের প্রতিদান দেয়া না হয়। (56/86)
تَرْجِعُونَهَا إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ
Bring it back, if you are truthful? (56/87)
ইহাকে ফিরিয়ে আনো যদি তোমরা সত্যবাদী হও? (৫৬/৬৭)
فَأَمَّا إِن كَانَ مِنَ الْمُقَرَّبِينَ
So, if he is one of those who are made near to Allah (56/88)
অতঃপর সে যদি আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দাদের একজন হয় (৫৬/৮৮)
فَرَوْحٌ وَرَيْحَانٌ وَجَنَّتْ نَعِيمٍ
Then happiness and bounty and a garden of pleasure. (56/89)
তখন সুখ এবং অনুগ্রহ এবং আনন্দময় জান্নাত। (৫৬/৮৯)
وَأَمَّا إِن كَانَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِينِ
And if he was of the companions of the right.(56/90)
আর সে যদি ডান দিকবর্তীদের অন্তর্ভুক্ত হয় (৫৬/৯০)
فَسَلَامٌ لَّكَ مِنْ أَصْحَابِ الْيَمِينِ
Then peace to you from those on the right hand. (৫৬/৯১)
তাহলে তোমার জন্য শান্তি যারা ডান দিকবর্তী (৫৫/৯১)
وَأَمَّا إِن كَانَ مِنَ الْمُكَذِّبِينَ الضَّالِّينَ
But if he was of the deniers [who were] astray, (56/92)
কিন্তু সে যদি পথভ্রষ্ট মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হয়, (৫৬/৯২)
فَنُزُلٌ مِنْ حَمِيمٍ
Then the welcome will be boiling water (56/92)
তখন স্বাগত জানানো হবে ফুটন্ত পানি দিয়ে (৫৬/৯২)
وَتَصْلِيَةُ جَحِيمٍ
And burning in Hellfire (56/94)
এবং জাহান্নামের আগুনে জ্বালিয়ে (৫৬/৯৪)
إِنَّ هَذَا لَهُوَ حَقَّ الْيَقِينِ
Indeed, this is the true certainty, (56/95)
নিঃসন্দেহে এটাই নিশ্চিত সত্য, (৫৬/৯৫)
সূরা ফজরে বলা হয়েছে
يَا أَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ
“O reassured soul (89/27)
হে আশ্বস্ত আত্মা (৮৯:২৭)
ارْجِعِي إِلَى رَبِّكِ رَاضِيَةً مَّرْضِيَّةً
return to your lord having satisfied him satisfactorily (89/28)
তোমার রবের কাছে ফিরে যাও তাকে সন্তোষজনকভাবে সন্তুষ্ট করে। (৮৯/২৮)
فَادْخُلِي فِي عِبَادِي
So enter among My devotees (89/29)
সুতরাং আমার আনুগত্যদের মধ্যে প্রবেশ কর (৮৯/২৯)
وَادْخُلِي جَنَّتِي
And enter My Paradise.” (89/30)
এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর (৮৯/৩০)
উপরের আয়াতগুলি নিশ্চিত করে যে যখন সৎকর্মশীলদের পূর্বনির্ধারিত জীবন শেষ হয়ে যায়, তখন মৃত্যুর ফেরেশতা কেবল তাদের পার্থিব দেহ ছেড়ে স্বর্গে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। কথিত কিয়ামত প্রতিষ্ঠার আগে এটি ঘটে কারণ এই কর্মের জন্য উল্লেখিত সময়সীমার কোন শর্ত নেই এবং এই আয়াতগুলি (৮৯/২৭-৩০) ভবিষ্যতের কালের নয়। সুতরাং, (৮৯/২৭-৩০) আয়াতগুলোতে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) সন্তুষ্ট আত্মাদের তাঁর জান্নাতে প্রবেশের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। অন্যদিকে আমরা এটাও পড়েছি যে, অন্যায়কারীরা তাদের মৃত্যুর মুহুর্তে জানে যে তারা জাহান্নামের জন্য নির্ধারিত। ফেরেশতারা তাদের মুখে এবং পিছনে মারধর করে (৮/৫০ এবং ৪৭/২৭), এবং তাদের আত্মাকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেয় (৬/৯৩), তারপর “তাদের আত্মা ছিনিয়ে নেয়” (৭৯/১)।
অনুগ্রহ করে উপসংহার হিসেবে কুরআনের নিচের আয়াতটি দেখুন।
فَرِحِينَ بِمَا آتَاهُمُ اللهُ مِن فَضْلِهِ وَيَستَبْشِرُونَ بِالَّذِينَ لَمْ يَلْحَقُوا بِهِم مَنْ خَلْفِهم الا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُونَ
আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে যা দিয়েছেন তা লাভ করে তারা আনন্দিত আর যে সব ঈমানদার লোক তাদের পেছনে (পৃথিবীতে) রয়ে গেছে, এখনও তাদের সাথে এসে মিলিত হয়নি, তাদের কোন ভয় ও চিন্তা নেই জেনে তারা আনন্দিত। (৩/১৭০) (তাইসিরুল কোরান)
এই আয়াতের তাৎপর্য সত্যিই মহান। এখানে বলা হয়েছে যে, আমরা পৃথিবীতে থাকাকালীন অবস্থায় কিছু সৎকর্মশীল আছেন যারা ইতিমধ্যেই আল্লাহর কৃপায় জান্নাতে আনন্দ করেছেন এবং বাকি বিশ্বাসীদের তাদের সাথে যোগ দেয়ার জন্য অপেক্ষায় আছেন। এর অর্থ হল জবাবদিহিতা মৃত্যুর পরেই সম্পন্ন হয় এবং কিছু লোক পরবর্তী পর্যায়ে অগ্রসর হয়, যখন আমরা এখনও পৃথিবীতে বাস করছি।
শুভেচ্ছান্তে
আবদুল্লাহিল কাউছার
সতর্কীকরণ ঃ এই লেখাটি শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা তাদের প্রচলিত বিশ্বাসের বিপরীত হলেও, আল কুরানে বর্নিত আল্লাহর প্রকৃত বিধানের আনুসরন করতে চায়।এবং তাদের অর্জিত বিশ্বাসকে সত্যের মানদণ্ডে যাচাই করার সাহস রাখে। আর যারা ভিন্নমত পোষণ করেন তাদের প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। আপনাদেরকে সালাম।
ReplyForward Add reaction |
জন্ম ও মৃত্যু চক্র (পর্ব ৭)
পুনর্জন্ম বিষয়ে কোরআনের বিবরণ ঃ
গত পর্বগুলো হতে আমরা জেনেছি যে যারা বিশ্বাসী মৃত্যুর পর তারা জান্নাতে অনন্ত জীবন লাভ করে, আর অবিশ্বাসীদের পুনরায় পৃথিবীতে ফেরত পাঠানো হয়। সূরা আনামের ১২২ নং আয়াত হতে ১২৮ আয়াত পর্যন্ত অবিশ্বাসীদেরকে পুনরায় পৃথিবীতে ফেরত পাঠানো সংক্রান্ত বর্ণনার বিবরণ পাওয়া যায়। আগামী পর্বগুলোতে এ আয়াতগুলোর সঠিক অনুবাদ নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।
আপনি যদি ৬:১২২ নং আয়াতের প্রচলিত অনুবাদটি ভালোভাবে লক্ষ্য করেন তাহলে এই অনুবাদের গুজামিল সহজেই ধরতে পারবেন। যেখানে এই আয়াতটিকে একটি উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করে প্রশ্ন করা হয়েছে যে, “যেই মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করে আলো অর্থাৎ হেদায়েত দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে সে মানুষের মধ্যে চলাচল করতে পারে, সে কি তার মত যে ঘোর অন্ধকারের মধ্যে রয়েছে, যেখান থেকে সে বের হতে পারেনা?” আমাদের উত্তর কি হবে? না তারা সমান নয়। আল্লাহ তাআলা মৃতকে জীবিত করে তারপর তাকে আলো দেওয়ার ব্যাখ্যায় বা তাফসীরে বলা হয়েছে যে আল্লাহ তা’আলা কাফেরদের কে মৃত এবং ঈমানদারগণকে জীবিত বলে গণ্য করেছেন। এইটুকু না হয় বোঝা গেল, তবে আমি নিশ্চিত প্রচলিত অনুবাদ থেকে কেউই এই উদাহরণের প্রয়োগ হিসাবে পরের অংশে আল্লাহ যা বলেছেন তা প্রথম অংশের সাথে মিলাতে পারবেন না। যেখানে অনুবাদ করা হয়েছে “এভাবেই কাফেরদের দৃষ্টিতে তাদের নিজেদের কাজ শোভন করা হয়েছে”। এখানে “এভাবেই” বলতে আগের অংশে উল্লেখিত প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আগের অংশে উল্লিখিত প্রশ্ন বা এর উত্তর কি সেই প্রক্রিয়ার বর্ণনা দেয়?
অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন কেন/কিভাবে আমি কোরআনের সঠিক অনুবাদ প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত হলাম? মূলত এই ধরনের গোজামিল দেওয়া অনুবাদের সঠিক অর্থ খুঁজতে গিয়ে, আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তাআলা আমাকে এই পথে এনেছেন।
আপনি যদি আপনার প্রচলিত বিশ্বাস, মতবাদ এবং আমাদের বিখ্যাত আলেমদের অনুবাদকে একপাশে রেখে ৬:১২২ নং আয়াতের শব্দগুলির প্রতি দয়া করে মনোযোগ দেন তবে আপনি স্পষ্ট দেখতে পাবেন যে এই শব্দগুলি বলছে مَن كَانَ مَيْتًا “যে ছিল মৃত/ যে প্রাণহীন অবস্থায় থাকে”। কোরআনের প্রচলিত অনুবাদে আরবি ফা (فَ) অব্যয়টির অর্থ নেওয়া হয় “অতঃপর”, “তারপর” “ফলে” ইত্যাদি। অর্থাৎ এটিকে পূর্ব বাক্যের সাথে সংযুক্ত করে পরের বাক্যটিকে পূর্ব বাক্যের ফলাফল/উপসংহার হিসেবে নেওয়া হয়। কিন্তু ফা (فَ) শব্দের সঠিক অর্থ হলো বস্তুতঃ (indeed), কার্যত (in fact), আসলে (really), প্রকৃতপক্ষে (actually) ইত্যাদি। মূলত ফা শব্দটি দ্বারা বোঝায় যে পরবর্তী বাক্যটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বাস্তব সত্য, কিংবা এটি একটি চিরন্তন সত্য কথা। فَأَحْيَيْنَاهُ অর্থ “কার্যত/ বস্তুত আমরা তাকে জীবিত করেছি/আমরা তাকে জীবন দিয়েছি” অর্থাৎ মৃতকে জীবিত করাই চিরন্তন নিয়ম। وَجَعَلْنَا لَهُ نُورًا এবং তার জন্য আমাদের দ্বারা একটি আলো তৈরি করা হয়েছে /এবং আমরা তার জন্য তৈরি করেছি একটি আলো। এখনে نُورًا (একটি আলো) দ্বারা মানুষকে দেওয়া আল্লাহর নির্দেশনা বা গাইডলাইনকে বুঝানো হয়েছে। يَمْشِي “সে অগ্রসর হয় /হাটে /বয়ে চলে” অথবা “তাকে অগ্রসর করতে/ বয়ে নিতে (to march/carry him)” بِهِ “উহার দ্বারা (with it)/ যার দ্বারা (by which)”। فِي النَّاسِ “মানুষের মাঝে” كَمَن “অনুরূপ যারা” مَّثَلُهُ “তার মত” فِي الظُّلُمَاتِ “অন্ধকারের মধ্যে আছে” لَيْسَ بِخَارِجٍ مِّنْهَا “তা (অন্ধকার) থেকে বের হতে পারেনি”। کَذٰلِکَ “উহার মত/ তেমনিভাবে/ একইভাবে” زُیِّنَ لِلۡکٰفِرِیۡنَ “অবিশ্বাসীদের জন্য সজ্জিত করা হয়েছে”। অতীত কালের শব্দ “كَانُوا” এর পূর্বে “مَا” উপসর্গটির না বোধক (“ماالنافیہ”) অর্থ হবে। পরবর্তী শব্দ “یَعۡمَلُوۡنَ” দ্বারা তাদেরকে বোঝায় যারা কর্ম সম্পাদন করে। অতএব, “مَا كَانُوا یَعۡمَلُوۡنَ” অর্থ “তারা যাদেরকে কর্ম সম্পাদনকারী পাওয়া যায়নি (those who are not found performing action)” বা “ঐ সকল লোক যারা কর্ম সম্পাদন করে না (those who do not performing action)”।
أَوَ مَن كَانَ مَيْتًا فَأَحْيَيْنَاهُ وَجَعَلْنَا لَهُ نُورًا يَمْشِي بِهِ فِي النَّاسِ كَمَن مَّثَلُهُ فِي الظُّلُمَاتِ لَيْسَ بِخَارِجٍ مِّنْهَا کَذٰلِکَ زُیِّنَ لِلۡکٰفِرِیۡنَ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ
Or who was dead, indeed We made him alive, and a light (guideline) was made by Us for him, by which to carry/march him among the people like him, who similarly are in the darkness could not come out of it (darkness). Like that, (same procedure) it was appliqued/ decorated for the infidels, who are not found performing actions. (6:122)
অথবা যে ছিল মৃত, কার্যত আমরা তাকে জীবিত করেছি এবং আমরা তার জন্য তৈরি করেছি একটি আলো (নির্দেশনা), যার দ্বারা তাকে চালনা/ অগ্রসর করতে তার মত মানুষের মাঝে, যারা অনুরুপভাবে অন্ধকারে আছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। তেমনিভাবে, (একই প্রক্রিয়া) নকশা/সজ্জিত করা হয়েছে অবিশ্বাসীদের জন্য, যারা কর্ম সম্পাদনকারী নয়। (৬:১২২) (শব্দে শব্দে অনুবাদ)
“যে ছিল মৃত, কার্যত আমরা তাকে জীবিত করেছি এবং আমরা তার জন্য তৈরি করেছি একটি আলো (নির্দেশনা), যার দ্বারা সে অগ্রসর হয় তার মত মানুষের মাঝে, যারা অনুরুপভাবে মৃত্যুর অন্ধকার হতে বেরিয়ে আসতে পারেনি। একইভাবে সজ্জিত করা হয়েছে অবিশ্বাসীদের জন্য, যারা কর্ম সম্পাদনকারী নয়।” (৬:১২২) (সরল অনুবাদ)
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন, যে অবিশ্বাসী আল্লাহর কথা বাস্তবায়নে সচেষ্ট নয়, তার মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করে তাদের মাঝে ফেরত পাঠানো হয় অর্থাৎ পৃথিবীতে ফেরত পাঠানো হয়, যারা মৃত্যু চক্র থেকে বের হতে পারেনি। পরবর্তী আয়াতেও এই আয়াতের ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে, যা পরবর্তী পর্বে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
সতর্কীকরণ ঃ এই লেখাটি শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা তাদের প্রচলিত বিশ্বাসের বিপরীত হলেও, আল কুরানে বর্নিত আল্লাহর প্রকৃত বিধানের আনুসরন করতে চায়। এবং তাদের অর্জিত বিশ্বাসকে সত্যের মানদণ্ডে যাচাই করার সাহস রাখে। আর যারা ভিন্নমত পোষণ করেন তাদের প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। আপনাদেরকে সালাম।
৩) জন্ম ও মৃত্যু চক্র (পর্ব ৩)
গত ২ পর্ব থেকে আমরা জেনেছি যে সৎকর্মশীলদের মৃত্যু একবারই হয়। কিন্তু যারা অবিশ্বাসী ও সৎকর্মশীল নয় তাদের মৃত্যুর পর শাস্তির মাধ্যমে আকৃতি পরিবর্তিত হয়ে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসে। পৃথিবীতে আসার পর নতুন জীবনে তার আকৃতি অর্থাৎ আর্থিক সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা কিরুপ হবে এবং এই চক্র থেকে মুক্তির উপায় কি তা জানব এই পর্বে।
অতীত কর্ম এবং বর্তমান জীবন
মানুষের মধ্যে শারীরিক, আর্থিক বা সামাজিক পার্থক্য, এমনকি কোন ভালো বা খারাপ পরিবেশে জন্ম হয় তাদের অতীত কর্ম অর্থাৎ অতীত জীবনে করা কর্মের কারণে। উদাহরণস্বরূপ, যদি একটি শিশু সুস্থভাবে জন্মগ্রহণ করে এবং অন্যটি প্রতিবন্ধী বা অন্ধ হয়, তবে এই পার্থক্যগুলি পূর্ববর্তী জীবনে করা তাদের কাজের জন্য দায়ী। একইভাবে, পরিস্থিতি, পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা এবং একজন ব্যক্তি যেখানে জন্মগ্রহণ করেন তার মধ্যে পার্থক্য তার অতীত জীবনের কর্মের উপর নির্ভর করে।
অনুগ্রহ করে দেখুন কুরআন তাদের সম্পর্কে কি বলে:
আর যে ব্যক্তি আমার বাণী থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার জন্য রয়েছে কঠিন অর্থনৈতিক মন্দা জীবন, আর আমি তাকে কিয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উঠাই।” (২০/১২৪)
সে বলে, হে আমার পালনকর্তা, কেন আপনি আমাকে অন্ধ করে তুলেছেন অথচ আমি দেখতে পাচ্ছিলাম? (২০/১২৫)
বলা হয়েছিল, “কারণ আমাদের নিদর্শনগুলি যখন তোমার কাছে এসেছিল তখন তুমি উপেক্ষা করেছিলে এবং একইভাবে আজ তুমি উপেক্ষিত।” (20/126)
প্রকৃতপক্ষে,নিয়তি বা ভাগ্য নির্ভর করে পূর্ববর্তী জীবনের কর্মের উপর, যা পরবর্তী জীবনে ভৌত দেহ এবং তার পরিবেশে পরিণত হয়।
আর আমরা তাদের প্রতি অন্যায় করিনি, বরং তারা নিজেরাই অন্যায়কারী ছিল।’ (৪৩/৭৬)
তোমরা কি দেখেছ তোমরা কি বুনেছ (কর্ম করেছ)?
ইহা (কর্মফল) তোমরা ফলিয়েছো না আমরা ফলিয়েছি? (৫৬:৬৪)
তোমরা কি আগুনটি দেখেছ যা তোমরা জ্বালিয়েছ? (৫৬/৭১)
এর গাছ (জ্বালানী) কি তোমরা জন্মিয়েছো না আমরা জন্মিয়েছি? (৫৬:৭২)
এবং প্রতিটি আত্মা যা করেছে তার জন্য পূর্ণ মূল্য দেওয়া হয়েছে। তারা যা করে সে সম্বন্ধে তিনি সম্যক অবগত। (৩৯:৭০)
‘এটা তার জন্যই যা তোমাদের হাত আগে পাঠিয়েছে (কৃতকর্ম) এবং জেনে রাখ যে, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি মোটেও অন্যায়কারী নন।’ (৮:৫১)
তারা যা উপার্জন করেছে তার কারণে তাদের বাসস্থান হল আগুন (10:8)
আল্লাহর অনুগ্রহ তাদের সাথে থাকবে যদি তারা পরবর্তী জীবনের জন্য তাদের আমল সংশোধন করে।
এবং তার প্রচেষ্টা দেখা হবে (53/40)
পুনর্জন্মের চক্র থেকে মুক্তি:
কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে আল্লাহ তা’আলা মানুষকে বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে তার কাছেই তাদেরকে ফিরে যেতে হবে।
যারা বিশ্বাস করে যে তাদের প্রভুর সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ হবে এবং তারা তারই কাছে ফিরে যাবে। (২:৪৬)
যারা বিপদকালে বলে থাকে আমরা আল্লারই আর আমরা তারই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী (২:১৫৬)
তোমরা সেদিনের ভয় করো যেদিন তোমাদেরকে আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। অতঃপর প্রত্যেক লোককে তার কৃতকর্মের বিনিময়ে দেওয়া হবে এবং তারা কিছু মাত্র অত্যাচারিত হবে না। (২:২৮১) (তাইসিরুল কোরআন)
তারাই সাড়া দেয় যারা শুনে। আর মৃতদেরকে আল্লাহ জীবিত করেন। অতঃপর তার দিকেই তারা প্রত্যাবর্তিত হয়। (৬:৩৬)
তিনিই তোমাদের রব এবং তাঁরই কাছে তোমাদেরকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। (১১:৩৪)
জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে; আর আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভালো দ্বারা বিশেষভাবে পরীক্ষা করি এবং আমারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।(২১৩৫) (মুজিবুর রহমান)
এবং কর্তৃত্ব তারই, আর তোমরা তারই দিকে প্রত্যাবর্তনশীল (২৮:৭০)
তোমরা আল্লাহ ব্যতীত যাদের পূজা কর তারা তোমাদের জীবনোপকরনের মালিক নয়। সুতরাং তোমরা জীবনোপকরণ কামনা করো আল্লাহর নিকট এবং তার ইবাদত কর ও তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর তোমরা তারই নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। (২৯:১৭) (মুজিবুর রহমান)
আমি কেন সেই মহান সত্তার ইবাদত করব না, যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন? আর তোমাদেরকেও তো তার কাছেই ফিরে যেতে হবে। (৩৬:২২) (ফজলুর রহমান)
অতএব পবিত্র মহান তিনি যার হাতে রয়েছে সকল কিছুর রাজত্ব এবং তারই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। (৩৬:৮৩) (বায়ান ফাউন্ডেশন)
তিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন এবং তারই প্রতি তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে (৪১:২১)
যে সৎ কাজ করে সে তার কল্যাণের জন্যই তা করে এবং কেহ মন্দ কাজ করলে ওর প্রতিফল সে’ই ভোগ করবে, অতঃপর তোমরা তোমাদের রবের নিকট প্রত্যাবর্তিত হবে। (৪৫:১৫) (মুজিবুর রহমান)
এটা নিশ্চিত যে, তোমার প্রতিপালকের কাছেই সকলকে ফিরে যেতে হবে। (৯৬:৮) (মুফতি ত্বকী উসমানী)
আল্লাহর দিকেই তোমাদের সবার প্রত্যাবর্তনস্থল। (৫:৪৮) (৫:১০৫)
তারপর তাদের রবের কাছে তাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তিনি জানিয়ে দিবেন তাদেরকে, যা তারা করত (৬:১০৮)
অতঃপর তোমাদের রবের নিকটই তোমাদের প্রত্যাবর্তন স্থল। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে সেই সংবাদ দিবেন যা নিয়ে তোমারা মতভেদ করতে।(৬:১৬৪)
পরে আমাদেরই কাছে তোমাদের প্রত্যাবর্তন। তখন আমরা তোমাদেরকে জানিয়ে দেব তোমরা যা করতে। (১০:২৩)
এই জীবনে মানুষের করণীয় হল স্রষ্টার নিকটে ফিরে যাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা। আত্মার পরিপূর্ণ বিকাশের মাধ্যমে স্রষ্টার সন্তোষভাজন হয়ে তার নিকট ফিরে যাওয়ার জন্য তিনি মানুষকে আহ্বান করছেন
হে আশ্বস্ত আত্মা (৮৯:২৭)
তোমার রবের কাছে ফিরে যাও তাকে সন্তোষজনকভাবে সন্তুষ্ট করে। (৮৯/২৮)
সুতরাং আমার আনুগত্যদের মধ্যে প্রবেশ কর (৮৯/২৯)
এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর (৮৯/৩০)
মানুষের জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল একদিন পুনর্জন্মের চক্র শেষ হবে এবং মানুষকে আর পুনর্জন্ম নিতে হবে না। এটি কেবল তখনই ঘটতে পারে যখন আমাদের আত্মা পরবর্তী স্তর জান্নাতে উন্নীত হওয়ার জন্য পরিপূর্ণ এবং পর্যাপ্ত সক্ষমতা প্রাপ্ত হয়।
৪) জন্ম ও মৃত্যু চক্র (পর্ব ৪)
ইসরাফিলের শিঙা
কেয়ামত ও বিচার দিবসের আলোচনার পূর্বে “ইসরাফিলের শিঙা” এর রহস্য ভেদ করতে চাই। ইসলামের প্রচলিত মতবাদ অনুসারে পৃথিবীর সৃষ্টির পর থেকে ইসরাফিল নামক ফেরেস্তা মুখে শিঙ্গা নিয়ে আল্লাহর নির্দেশের অপেক্ষায় বসে আছেন। যখনই নির্দেশ আসবে তিনি সিঙ্গায় ফুঁ দিবেন এবং মহাবিশ্বের ধ্বংস শুরু হয়ে যাবে। তারপর একটি বড় মাঠে পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল মানুষকে একত্রিত করে বিচার শুরু হবে। মৃত্যুর পর থেকে কথিত কেয়ামত পর্যন্ত সময়টাকে তারা নাম দিয়েছে কবরের জীবন বা বারজাখের জীবন। এই কবরের জীবন নিয়েও মতভেদ আছে।
যারা হাদিসে বিশ্বাসী তারা মনে করে মানুষের কৃতকর্ম অনুযায়ী কবরের জীবনেও শাস্তি বা শান্তির ব্যবস্থা আছে। তাই তারা মৃত ব্যক্তির শাস্তি মওকুফ কিংবা শান্তির জন্য মৃত্যুর তৃতীয় দিন অথবা চল্লিশতম দিন কিংবা প্রতি বছর নবীর ওয়ারিশ দাবিকারী ধর্মীয় প্রতিনিধিদেরকে দিয়ে তাদের মাগফেরাতের জন্য দোয়ার ব্যবস্থা করে।
অপরদিকে যারা শুধু কোরআন মানতে চায় তাদের অধিকাংশই মনে করে মৃত্যুর পর কেয়ামত পর্যন্ত কবরের জীবনে কোন শান্তি কিংবা শাস্তি নাই। কবরে অথবা বারজাখে তারা ঘুমিয়ে থাকবে এবং কেয়ামতের পর ঘুম থেকে জেগে হাশরের মাঠে উপস্থিত হবে। অর্থাৎ পৃথিবীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যত মানুষ এমনকি নবীগন কিংবা নমরুদ, ফেরাউনের মত দাগী আসামিরাও কবরে ঘুমিয়ে আছে! তারা শুধুমাত্র কোরআন অনুসারী হলেও তাদের এই অযৌক্তিক মতবাদের কারণ হচ্ছে হাদিসবিদদের করা কোরআনের ভুল অনুবাদের জাল ছিন্ন করতে না পারা।
কবরের জীবন নিয়ে হাদিস মান্যকারী ও শুধুমাত্র কোরআন বিশ্বাসীদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও ইসরাফিলের শিঙায় ফুৎকারের মধ্য দিয়ে এই মহাবিশ্বের ধ্বংস হবে এ ব্যাপারে উভয় দলই প্রায় একমত। এর সমর্থনে তারা সাধারণত ৩৬:৫১ ও ৩৬:৫২ নং আয়াত দুটি প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে।
আর যখন সিংগায় ফুক দেওয়া হবে তখনই তারা কবর থেকে তাদের পালনকর্তা দিকে ছুটে আসবে। (৩৬:৫১) ( তাইসিরুল কোরআন)
তারা বলবে, ‘হায় আমাদের দুর্ভোগ! আমাদেরকে আমাদের ঘুমের জায়গা থেকে কে উঠালো? (তাদেরকে জবাব দেয়া হবে) ‘‘এটা হল তাই দয়াময় আল্লাহ যার ওয়াদা দিয়েছিলেন, আর রসূলগণও সত্য কথাই বলেছিলেন।” (৩৬/৫২) (তাইসিরুল কোরআন)
তাদের কাছে আমার প্রশ্ন হল –
১- এই আয়াতগুলির মূল আরবিতে কোন ব্যাকরণগত কাল ব্যবহার করা হয়েছে যেমন অতীত, বর্তমান বা ভবিষ্যত?
২- এই আয়াতে কাদের সম্বোধন করা হয়েছে?
শব্দের অযৌক্তিক কুটকৌশল দ্বারা এখান থেকে সেখানে বা এক আয়াত থেকে অন্য আয়াতে ব্যাকরণগত নিয়ম উপেক্ষা করে কিছু দুর্বল যুক্তি উপস্থাপন ছাড়া, স্পষ্টতই তাদের কাছে কোন যথাযথ উত্তর নেই। ৩৬/৫২ আয়াতটি ‘কালু’ (قَالُو) দিয়ে শুরু হয়ছে যা একটি ‘অতীত কাল’ এবং প্রকৃতপক্ষে ‘তারা বলেছে’ হিসাবে অনুবাদ করা উচিত কিন্তু এই আয়াতে আমাদের পণ্ডিতরা ‘কালু’ (قَالُو) কে ‘তারা বলবে’ অর্থে অনুবাদ করেছেন।
অতীতে ঘটে যাওয়া একটি কর্মের ধারাবাহিকতা নির্ধারণের জন্য সেই অতীত ক্রিয়াকে বর্তমান হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে, তবে এটিকে পরম ‘ভবিষ্যতে’ হিসেবে অনুবাদ করা যায় না। উল্লিখিত আয়াতগুলোর আগে ও পরের আয়াতগুলো খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে এই আয়াতগুলি কেবল অবিশ্বাসীদের জন্য এবং এগুলি সেই মুমিনদের জন্য প্রযোজ্য নয় যারা আল্লাহ তায়ালার নিদর্শন এবং নবী (সাঃ) এর নিকট প্রেরিত বাণী গ্রহণ করেছে।
যদি তাই হয়, তাহলে আমরা কিভাবে এই আয়াতগুলো সমগ্র মানবজাতির জন্য উল্লেখ করতে পারি এবং একটি সাধারণ নিয়ম হিসেবে বলতে পারি যে, সবাই মৃত্যুর পর ঘুমিয়ে যাবে এবং ক্বিয়ামতের দিন তাদের কবর থেকে উঠানো হবে? কিছু অতি পণ্ডিত যুক্তি দেয় যে এই কবরগুলি আখেরাতের রাজ্যে অর্থাৎ বারজাখের মধ্যে আছে, যেখানে মানব আত্মাগুলিকে কিয়ামাত পর্যন্ত সংকুচিত আকারে রাখা হয়েছে। এটি পরকাল সম্পর্কে তাদের কোরআন বিরোধী বিশ্বাসকে রক্ষা করার একটি বানোয়াট চেষ্টা, কারণ কুরআন শুধুমাত্র আত্মাকে নয়, ‘দেহ’কেও নির্দেশ করে।
কুরআনের অধিকাংশ আয়াত যেখানে ‘মৃত্যুর পরের জীবন’, ‘পরকাল’ এবং বিচার দিবসের কথা বলা হয়েছে সেগুলোকে প্রচলিত পৌত্তলিক মতবাদের কথিত কেয়ামতের বিশ্বাসের দিকে পাঠকের মনোযোগ সরিয়ে দিতে অসাধুভাবে ভবিষ্যত কাল হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে যাতে কুরআন পাঠকারীরা বিভ্রান্ত হতে পারে যে কিয়ামতের আগে কিছুই হবে না। অন্য কথায় তারা কুরআনের বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যার মাধ্যমে প্রচার করে আসছে যে, মানুষ তার মৃত্যুর পর ঘুমিয়ে যাবে এবং কিয়ামতের দিন তার জবাবদিহির জন্য তাকে পুনরুত্থিত করা হবে এবং তারপর তাকে প্রতিদান দেওয়া হবে। এই অযৌক্তিক ধারণা শুধু কুরআন শিক্ষার পরিপন্থী নয়, আমাদের পরকালের অপরিহার্য ‘বিশ্বাসের’ও পরিপন্থী।
যাইহোক, বিষয়টিতে আরও এগিয়ে যাওয়ার আগে আমি আরবি ভবিষ্যৎ কালের বাক্য গঠনের নিয়মগুলি সংক্ষেপে উল্লেখ করতে চাই যাতে আমরা কুরআনের বিশেষ করে আমাদের বিষয়ের সাথে প্রাসঙ্গিক আয়াতগুলি আরও ভাল করে উপলব্ধি করতে পারি।
অন্যান্য ভাষার মতো, আরবি ভাষাও একটি বাক্যের সঠিক অর্থ প্রকাশ করার জন্য ক্রিয়া, ক্রিয়াবিশেষণ, অব্যয়, সংযোজন অব্যয় এবং উপসর্গ সহ বিভিন্ন মৌলিক পদ ব্যবহার করে। রূপক বাক্যের ক্ষেত্রেও একই ব্যাকরণ ব্যবহার করা হয়।
আরবি ভাষায় ‘সা’ (س) বা ‘সউফা (سوف) উপসর্গ যোগ করে ভবিষ্যৎ কাল গঠন করা হয়। এই উপসর্গ গুলো বাদ দিয়ে ভবিষ্যৎ কালের বাক্য গঠন করা যায় না। তখন আপনাকে উল্লেখ করে দিতে হবে যে বাক্যটি ভবিষ্যৎ কালের। আরবিতে, রূপক বা উপমা এমনকি কথোপকথনে ব্যবহৃত বিভিন্ন রুপ যেমন বাগধারা, শব্দগুচ্ছ, ঘরোয়া কিংবা কথ্য ভাষার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের একটি নির্দেশক থাকা উচিত, কারণ আরবি ভবিষ্যৎ ক্রিয়ার রুপটি বর্তমান ক্রিয়ার মতোই। যেমন: اكتب (আকতুবু) অর্থ ‘আমি লিখি’। ساكتب (সাআকতুবু) অথবা سوف اكتب (সাওফা আকতুবু) অর্থ আমি লিখব।
অতএব, ভবিষ্যত কালের বাক্য গঠনের জন্য, আমাদের হয় সা (س) অথবা সাউফা (سوف) প্রয়োজন। অদূর ভবিষ্যতের জন্য ‘সাউফা’ এবং অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতের জন্য ‘সা’ ব্যবহৃত হয়। সাউফা উপসর্গটি “খুব শীঘ্রই ” এর মতো অর্থ দেয়। যেমন: سوف أدخل إلى هذه الغرفة আমি (শীঘ্রই) শ্রেণিকক্ষে যাব। أكل تفاحاً অর্থ আমি আপেল খাই। سأكل تفاحا আমি আপেল খাব।
ভবিষ্যৎ ক্রিয়াকে না বোধক করার বা আরবীতে ভবিষ্যৎ কালের নেতিবাচক বাক্য গঠনের ব্যাপক সাধারণ উপায় হল উপসর্গ “لن (লান)” ব্যবহার করা যেমন: لن أدخل إلى هذه الغرفة এই শ্রেণিকক্ষে আমি যাব না।
কখনও কখনও বাক্যে “قد (ক্কাদ)” এর ব্যবহার ভবিষ্যতের ধারণা প্রকাশ করে। প্রকৃতপক্ষে উপসর্গ قد + অসমাপিকা ক্রিয়া (imperfect tense) “সম্ভবত” অর্থ দেয়, যা ভবিষ্যতের ক্রিয়া বা ঘটনাকে সম্ভাবনা হিসাবেও বোঝায় যেমন: قد يكتب সম্ভবত, সে লিখবে।
আরবিতে ভবিষ্যৎ কালের বাক্য গঠন করার প্রক্রিয়া অনেকটা ইংরেজিতে ভবিষ্যৎ কালের বাক্য গঠন করার মতো। কারণ ইংরেজি ক্রিয়া পদের ভবিষ্যৎ কালবাচক রূপ নেই। ভবিষ্যৎ কালের বাক্য গঠন করার জন্য ইংরেজি ক্রিয়া পদের পূর্বে shall বা will ব্যবহার করা হয়। একইভাবে আরবিতে সা অথবা সাউফা ব্যবহার করা হয়। “পরবর্তীতে”, “পরবর্তী বছর” বা “আগামীকাল” ইত্যাদির মতো অস্থায়ী ক্রিয়াবিশেষণ ব্যবহার করেও ভবিষ্যতের অভিব্যক্তি প্রসঙ্গ বা সময়সীমার দ্বারা প্রকাশ করা যায়।
কখনও কখনও একটি ঘটনার সময়কে, বর্তমান মুহূর্ত (কথা বলার মুহূর্ত) এর সাপেক্ষে নয় বরং রেফারেন্সের সময়ের সাপেক্ষে, অতীত বা ভবিষ্যত হিসাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়, যা নিজে বর্তমান সময়ের সাপেক্ষে অতীত বা ভবিষ্যত হতে পারে। এইভাবে একটি ঘটনাকে “ভবিষ্যতের অতীত”, “অতীতের ভবিষ্যত” ইত্যাদিতে সংঘটিত হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। যেমন “করিম বলেছিল, রহিম আসবে” বাক্যটিতে রহিম আসবে বাক্যটি ভবিষ্যৎ কালের হলেও এটি মূলত অতীতের কোন একটি ঘটনা।
ইংরেজি বাক্যে modal verb এর ব্যবহার অনেক সময় ভবিষ্যতের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। যেমন : “I must do this (আমাকে অবশ্যই এটি করতে হবে)”, “We should help him (আমাদের তাকে সাহায্য করা উচিত)”; “I can get out of here (আমি এখান থেকে যেতে পারি)”; “We may win (আমরা জিততে পারি)”; “You might succeed (আপনি সফল হতে পারেন)” ইত্যাদি। একই ধরনের modal verb-এর ব্যবহার কোরআনেও রয়েছে যেমন قد أفلح
কেউ কেউ বলে যে, কোরআন হল রুপক, এবং তারা সম্পূর্ণ কোরআনকে রুপক তথা ভাবার্থ দিয়েই বুঝতে চায়। শুধুমাত্র যেখানে আল্লাহ তায়ালা নিজেই রুপক ব্যবহার করেছেন তা ছাড়া কোরআনের কোন অংশই রুপক নয়। এমনই একটি উদাহরণ হলো কুরআনে প্রদত্ত নরকের বর্ণনা।
এটা হল আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত আগুন (১০৪:৬)
যা অন্তরে উদিত হয় (১০৪:৭)
তারা যা উপার্জন করত তার দরুন তাদের বাসস্থান হল আগুন (১০:৮)
উপরের আয়াতগুলিতে ‘আগুন’কে রুপক হিসেবে নেয়া যাবে কারণ আল্লাহ তায়ালা ইতিমধ্যেই ‘আগুন’-এর প্রকৃতি ব্যাখ্যা করেছেন এবং কুরআনের আয়াতে যেখানেই ‘আগুন’ এবং মানুষের উপর এর প্রভাব উল্লেখ করেছেন সেখানে তিনি কী বলতে চান তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
এখন ৩৬:৫১ নং আয়াতের সঠিক অনুবাদ করা যাক, যেখানে ইসরাফিলের শিঙার (الصُّورِ) কথা আছে, তাহলে ইসরাফিলের শিঙা আসলে কি সেই রহস্য জানা যাবে।
এই আয়াতের প্রেক্ষাপট ও কাদের কথা বলা হয়েছে তা বোঝার জন্য ৩৬:৪১ নং আয়াত থেকে লক্ষ করি। এই সূরায় বিজ্ঞানময় কোরানকে যারা অস্বীকার করে তাদের সতর্ক করে আল্লাহ তায়ালা পূর্ববর্তী বিভিন্ন জাতীর পরিণতি বর্ণনা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৩৬:৪১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাদের পূর্ববর্তী বংশধরদের (ذُرِّیَّتَہُمۡ) কথা উল্লেখ করেছেন।
৩৬:৪৫ ও ৩৬:৪৬ এ বলা হয়েছে যে, যখন তাদেরকে (কোরআন অস্বীকারকারীদের বংশধর) তাদের কৃতকর্মের জন্য সতর্ক করা হয়েছিল তখন তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়। এরপর ৩৬:৪৭ ও ৩৬:৪৮ এ বলা হয়েছে, যখন তাদেরকে (বংশধর) আল্লাহর দেয়া রিজিক হতে দান করতে বলা হয়েছিল তখন তারা তাচ্ছিল্য করে প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং বলেছিল কখন সেই ওয়াদা (দান করার পুরস্কার) পূরণ হবে? পরবর্তী আয়াতগুলোতে তাদের (বংশধর) মৃত্যু এবং এর পরবর্তী অবস্থা বর্ণিত হয়েছে।
আমাদের আলেমগন কুরানের বক্তব্যকে “মৃত্যু” থেকে পৌত্তলিক বিশ্বাসের “কেয়ামত”-এর দিকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য পরবর্তী ৩৬:৪৯ নং আয়াতের বিভ্রান্তিকর অনুবাদ করেছেন।
বর্তমান কালের ক্রিয়া “يَنظُرُونَ” অর্থ হল: পর্যবেক্ষক (observant), প্রত্যক্ষদর্শী (watcher) বা যারা ইতিমধ্যেই কিছু ঘটতে দেখে বা পর্যবেক্ষণ করে।
আরবী صَیۡحَۃً অর্থ: ভয়ে তীক্ষ্ণ শব্দ করা/ ক্যাঁচ করে ওঠা (Screech), তীব্র চিৎকার/আর্তনাদ করা (yell), অনেক জোরে একটি ছোট্ট শব্দ করা (hooting), চিৎকার করে ওঠা (Exclaiming), জোরে তীক্ষ্ণ কান্না করা (loud shrill piercing cry), চিৎকার/ চেঁচানি(shout) ইত্যাদি।
এবং یَخِصِّمُوۡنَ অর্থ ঐ সকল লোক যারা বিচ্ছন্ন হয়ে যায় (cut), বিয়োগ হয়ে যায় (subtract/deduct), বাদ হয়ে যায় (rebate), কমে যায় (reduce), বাতিল হয়ে যায় (discard) ইত্যাদি
অতএব আয়াতটির সঠিক অনুবাদ হল
যা তারা প্রত্যক্ষ করে, শুধুমাত্র একটি আর্তনাদ/ আর্তচিৎকার তাদেরকে সরিয়ে নেয় এবং তারা পৃথক/ বিয়োগ হয়ে যায়। (৩৬:৪৯)
বাস্তবে, বর্তমান কালবাচক “يَنظُرُونَ” (ইয়ানজুরুনা) শব্দটি “صَیۡحَۃً” (চাইহাতান) কে নিত্যদিনের একটি বিষয়ে পরিনত করেছে, যা তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রত্যক্ষ করে। যদি “صَیۡحَۃً” (চাইহাতান) কে কথিত কেয়ামতের দিনের একটি বিকট আওয়াজ হিসাবে নেওয়া হয় তাবে তা কেয়ামতের দিনে একবারই ঘটবে যা এখনও আসেনি। তাহলে তা প্রতিদিনের ঘটনা হিসেবে তারা কিভাবে প্রত্যক্ষ (“يَنظُرُونَ”) করেছিল?
মূলত চাইহাতান (صَیۡحَۃً) কোন বিকট আওয়াজ নয়। এটা দ্বারা মৃত্যু কালে মানুষের দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তের শেষ আওয়াজকে বুঝানো হয়েছে। প্রতিটি মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনে অহরহই এরকম ঘটনা প্রত্যক্ষ করে।
পরবর্তী ৩৬:৫০ আয়াতে বলা হয়েছে যে, মৃত্যুর পরে তারা তাদের পরিবারকে কোন অছিয়ত করতে পারেনা এবং তাদের পরিবারের কাছেও ফিরে আসতে পারে না। এ কথা থেকেও স্পষ্ট যে পূর্ববর্তী আয়াতে তাদের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। ঘটনাটি কেয়ামতের সময়ে হলে তারা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে আসার কথা আসতো না, কারণ কিয়ামতের সময় তাদের পরিবারও ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কথা।
৩৬:৫১ নং আয়াতে তাদের মৃত্যু পরবর্তী পুনর্জীবনের কথা বলা হয়েছে।
আরবি نُفِخَ (নুফিখা) শব্দের অর্থ কোন কিছুকে ফোলানো (make swollen), স্ফীত করা (distend/inflate), শ্বাস প্রশ্বাস (breathe), ফুঁ দেওয়া (bloating) ইত্যাদি। অতএব نُفِخَ فِي এর অর্থ হল “কোন কিছুতে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া (to breathe in something)” মানে “কোন কিছুর জীবন দেওয়া (to give life in something)”
পৌত্তলিক বিশ্বাস অনুযায়ী একটি বাঁশিতে ফুৎকারের মাধ্যমে মহাপ্রলয় তথা কেয়ামত শুরু হবে। আর এই গল্পকে ইসলামে অভিযোজিত করতে জালিয়াতি করে কোরআনের الصُّورِ শব্দের অর্থ করা হয়েছে বাঁশি বা শিঙা যা ইসরাফিল নামক ফেরেশতা ফুঁ দেওয়ার জন্য মুখে নিয়ে বসে আছেন।
কিন্তু নির্দিষ্ট বাচক বিশেষ্য الصُّورِ (আচচুর) শব্দের অর্থ : ফটো (photo), ছবি (picture), প্রতিচ্ছবি (image), প্রতিকৃতি (portrait), কাঠামো (framework), পুনরুৎপাদন/ পুনর্গঠন (reproduction), ফটোকপি, নকল/ প্রতিলিপি (duplicate), অনুলিপি (copy), রুপ (form), ইত্যাদি। اِلْتِقاطُ الصُّوَر মানে “ফটোগ্রাফি”, اختيار الصور অর্থ “ছবি বাছাইকরা”। শব্দটির শুরুতে নির্দিষ্ট বাচক নির্দেশক ال দ্বারা পূর্বে উল্লেখিত ব্যক্তিদেরকে নির্দেশ করে। অতএব الصُّورِ শব্দের অর্থ “তাদের প্রতিচ্ছবি/অবয়ব (their image)”
আরবি أَجْدَاثِ (আজদাছ) শব্দের অর্থ সমাধি (sepulchres), যা মানব জীবনের সমাপ্তিকে বুঝায়। কবর এর সাথে أَجْدَاثِ (আজদাছ) এর পার্থক্য হল কবরে মৃতদেহ রাখা হয়, কিন্তু أَجْدَاثِ (আজদাছ) মৃত দেহের সাথে সম্পর্কিত নয়।
আর তাদের অবয়বে/ প্রতিচ্ছবিতে শ্বাস-প্রশ্বাস/ জীবন দেওয়া হয়েছিল, যখনই তারা সমাধি থেকে তাদের প্রভুর কাছে পুনরুত্থিত হয়েছিল। (৩৬:৫১)
হঠাৎ বা অপ্রত্যাশি কোন ঘটনাকে প্রকাশ করতে আরবি বাক্যে সংযোজন অব্যয় إِذَا (ইযা) ব্যবহৃত হয়। এবং যেকোনো শব্দের শুরুতে “ف” (ফা) অক্ষরটি আসলে বোঝা যায় যে এর পরবর্তী বিবৃতিটি সর্বজনীন সত্য এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপরোক্ত আয়াতে فَإِذَا দ্বারা বুঝা যায় যে, মৃত্যুর পরপরই মানুষ স্রষ্টার কাছে উপস্থিত হয় এটাই চিরন্তন সত্য আর যখনই সে স্রষ্টার কাছে উপস্থিত হয় তখন তাকে আবার জীবন দেয়া হয়। এখানে কালক্ষেপণের কোন অবকাশ নেই।
পরবর্তী ৩৬:৫২ আয়াতটি শুরু হয়েছে قَالُوا (ক্কালু) দিয়ে যার অর্থ “তারা বলেছিল”। بَعَثَ (বাআছ) শব্দের অর্থ পূনর্জ্জীবিত করা। আর مَّرْقَدِ (মারকাদ) অর্থ সমাধিস্থল (mausoleum), পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন সম্বলিত সমাধি/ দেহাবশেষের আধার (shrine) অর্থাৎ মৃত্যুর পর মানুষ যে অবস্থায় থাকে।
তারা বলেছিল হায়রে আমাদের সর্বনাশ! আমাদের সমাধিস্থল থেকে কে আমাদের পুনজ্জীবিত করল? এটাই পরম করুণাময়ের প্রতিশ্রুতি এবং যা রসূলদের দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছিল। (৩৬:৫২)
অতএব ৩৬:৫১ নং আয়াতে অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতে সংগঠিত কথিত কেয়ামতের সময় ইসরাফিলের সিঙ্গায় ফুৎকারের কথা বলা হয়নি। বরং অতীতকালের কিছু মানুষের মৃত্যুর পর তাদের পুনরুত্থানের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। মৃত্যুর পরপরই মানুষের বিচার সংঘটিত হয়, ঘুমানোর কোন অবকাশ নেই। আগামী পর্বে কিয়ামত ও বিচার দিবসের আলোচনায় এই সকল বিষয়ের বর্ণনা থাকবে ইনশাআল্
ReplyForward Add reaction |
১) জন্ম ও মৃত্যু চক্র (পর্ব ১)
এই পৃথিবীতে মানুষের করণীয় কি? মৃত্যুর পর মানুষের কি হয় বা কোথায় যায়? ভালো মানুষ ও মন্দ মানুষের পরিণতি কি একই? মানুষের কেন মন্দ কাজ ছেড়ে দিয়ে ভালো কাজ করা উচিত?
এই সকল নানান প্রশ্নের উত্তরে বিভিন্ন ধর্ম বিভিন্ন মতবাদ প্রকাশ করেছে। ইসলাম ধর্মের বহুল প্রচলিত মতবাদ অনুসারে, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একজন মানুষের সকল কৃতকর্মের হিসাব লিখে রাখা হয়। মৃত্যুর পর সে আরেকটি জগতে প্রবেশ করে যার নাম আলমে বার্জাখ এবং এর সময়কাল কেয়ামত পর্যন্ত । সেটি আবার দুই ভাগে বিভক্ত একটি হল ইল্লিন অপরটি সিজ্জিন। এখানে তাকে তিনটি প্রশ্ন করা হবে। সে ভালো মানুষ হলে সহজেই তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ইল্লিনের অধিবাসী হবে। আর যদি সে তুলনামূলক খারাপ মানুষ হয় তাহলে পৃথিবীতে থাকাকালীন এই প্রশ্নের উত্তরগুলো তার মুখস্থ থাকলেও সে কিছুতেই এই তিনটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারবে না। ফলে তার অবস্থান হবে সিজ্জিন। ইল্লিনের অধিবাসীরা আরাম আয়েশে কেয়ামত পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেবে। আর সিজ্জিনের অধিবাসীরা বিভিন্ন ধরনের আজাব ভোগ করতে থাকবে। যখন এই পৃথিবীতে আর কোন বিশ্বাসী মানুষ অবশিষ্ট থাকবে না তখন ইসরাফিল নামক ফেরেশতা সিঙ্গায় ফুৎকার দিবে এবং সাথে সাথে কেয়ামত সংগঠিত হবে। একটি মহাপ্রলয়ের মধ্য দিয়ে এই পৃথিবীর সমাপ্তি ঘটবে। তারপর পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল মানুষকে পুনরত্থিত করে একটি বড় মাঠে সমাগত করা হবে যার নাম হাশরের মাঠ। তথায় আল্লাহ তায়ালা একটি আরশ বা সিংহাসনে আরোহন করে, তার ফেরেশতাদেরকে নিয়ে সকল মানুষের বিচারের জন্য উপস্থিত হবেন। আল্লাহ তাআলা সেখানে একটি দাঁড়িপাল্লা স্থাপন করবেন । এক এক করে প্রত্যেক মানুষকে ডাকা হবে এবং তাদের ভালো ও মন্দ কাজ দুই পাল্লার মধ্যে রাখা হবে। যার ভালো কাজের ওজন বেশি হবে সে এক নিমিষে পুলসিরাত পার হয়ে ঝর্না প্রবাহিত বাগান তথা জান্নাতে প্রবেশ করে অনন্ত নেয়ামতের মাঝে আরাম-আয়েশে দিনাতিপাত করবে। আর যার মন্দ কাজের ওজন বেশি হবে সে পুলসিরাতে কাটা পড়ে আগুন বিশিষ্ট জাহান্নামে নানান ধরনের শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। সংক্ষেপে এই হল মানুষের জীবন চক্র। এই সিনেমাটিক বর্ণনার বিভিন্ন ধাপে আরো অনেক চমকপ্রদ কল্প কাহিনীর বর্ণনা পাওয়া যায়। যেমন কেয়ামতের আলামত ও মহা প্রলয়ের বর্ণনা, কবরে সওয়াল জওয়াব, হাশরের মাঠে আল্লাহর আরশের নিচের ছায়া, হাউজে কাউসারের পানি, নবীর শাফায়েত, জান্নাতের নদী বা ঝর্নার বর্ণনা ইত্যাদি।
ইসলাম ধর্মের প্রচলিত জীবন চক্রের এই বর্ণনার সাথে কোরআনের বর্ণনার কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। কোরান মৃত্যুর পরের জীবনকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে, যা রৈখিক (সরাসরি) এবং চক্রাকার (পুনর্জন্মের মাধ্যমে) জীবনের সমন্বয়। কিন্তু, এই বিষয়টি নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে কারণ আমাদের প্রচলিত মতের পটভূমিতে ধর্মীয় পণ্ডিতদের পরকাল সম্পর্কে তাদের ব্যক্তিগত ধারণার মিশ্রণ রয়েছে। যা প্রায়শই মৃত্যুর পরবর্তী জীবন সম্পর্কে কুরআন যা শিক্ষা দেয় তার বিরোধিতা করে।
মৃত্যু হল দেহ থেকে আত্মার বিচ্ছেদ যা কোন নির্দিষ্ট মেয়াদে জীবনের একটি অপরিবর্তনীয় সমাপ্তি। দেহ থেকে আত্মা বিচ্ছিন্ন হওয়ার সাথে সাথেই মানুষ মৃত। মৃত্যু একটি অনিবার্য ঘটনা, যার সঠিক সময়টি কেবল অপ্রত্যাশিতই নয়, মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরেও। এটি একটি ঋণ যা প্রত্যেক ব্যক্তিকে পরিশোধ করতে হবে।
کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ
প্রতিটি জীবন মৃত্যুর আস্বাদ গ্রহন করবে। (৩:১৮৫, ২১:৩৫) (তাইসিরুল কোরান)
আল্লাহ প্রত্যেক জীবের আয়ু নির্ধারণ করে রেখেছেন। আল্লাহ বলেন
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن طِينٍ ثُمَّ قَضَى أَجَلًا وَأَجَلٌ مُسَمًّى عِندَهُ، ثُمَّ أَنتُمْ
تَمْتَرُونَ (6:2
তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন কাদা মাটি থেকে তারপর নির্ধারণ করেছেন একটি কাল, আর তাঁর কাছে আছে একটি নির্দিষ্ট কাল, তারপরও তোমরা সন্দেহ কর। (৬:২) (বায়ান ফাউন্ডেশন)
وَمَا كَانَ لِنَفْسٍ أَن تَمُوتَ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ كِتَبًا مُؤَجَلًا
আর কোন প্রাণী একটি নির্ধারিত ফরমানে লিখিত আল্লাহর অনুমতি ছাড়া মারা যায় না। (৩:১৪৫)।
উল্লেখ্য যে, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনকারীদের মৃত্যু একবারই ঘটে। আল্লাহ সুস্পষ্ট, দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন
لَا يَذُوقُونَ فِيهَا الْمَوْتَ إِلَّا الْمَوْتَةَ الْأُولَى وَوَقَتَهُمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ
“তারা সেখানে প্রথম মৃত্যু ব্যতীত মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে না এবং তিনি তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করবেন” (৪৪/৫৬)।
فَضۡلًا مِّنۡ رَّبِّکَ ؕ ذٰلِکَ ہُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ
আপনার রবের অনুগ্রহস্বরূপ। এটাই তো মহাসাফল্য (৪৪:৫৭)।
অন্য আয়াতে বলা হয়েছে
أَفَمَا نَحْنُ بِمَيِّتِينَ
তাহলে আমাদের কি মৃত্যু হবে না? (৩৭/৫৮)
إِلَّا مَوۡتَتَنَا الْأُولَى وَمَا نَحْنُ بِمُعَذِّبِينَ
আমাদের প্রথম মৃত্যু ব্যতীত, এবং আমাদের শাস্তি দেওয়া হবে না?” (৩৭/৫৯)
إِنَّ هَذَا لَهُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
নিঃসন্দেহে এটিই মহা সাফল্য। (৩৭/৬০)
মূলত, ‘প্রথম মৃত্যুর’ এই আদেশ শুধুমাত্র সৎকর্মশীল ও তাদের সঙ্গীদের জন্য। এবং এটাকে মহাসাফল্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অবিশ্বাসী এবং যারা সৎকর্মশীল নয় তারা এই সৌভাগ্যবানদের অন্তর্ভুক্ত নয়। কারণ একক মৃত্যু শর্তসাপেক্ষ শুধুমাত্র যারা আল্লাহর শাস্তি মুক্ত তারাই কেবল এই দলের অন্তর্ভুক্ত। যারা এই দলের অন্তর্ভুক্ত আছেন তাদের সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন
وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَالرَّسُولَ فَأُوْلَيْكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ النَّبِينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّلِحِينَ وَحَسُنَ أُولَيك رَفِيقًا
আর যারা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করে- তারা তাদের সাথে থাকবে যাদের উপর আল্লাহ অনুগ্রহ দান করেছেন, তারা হলেন নবীগণ,সত্যের অটল ঘোষণাকারী, শহীদ এবং সৎকর্মশীল। এবং সঙ্গী হিসেবে তারাই উত্তম। (৪/৬৯)
জবাবদিহিতার ভিত্তিতে কোরআনে তিন শ্রেণীর লোকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
وَكُنتُمْ أَزْوَاجًا ثَلَاثَةً
আর তোমরা তিন শ্রেণীতে বিভক্ত হয়ে যাবে। (56/7)
এই শ্রেণীগুলির কথা কুরআনে বিভিন্নভাবে বারবার উল্লেখ করা হয়েছে
১- অগ্রবর্তিগণ السّٰبِقُوۡنَ (৫৬:১০) । যারা আল্লাহর নিকটবর্তী اُولٰٓئِکَ الۡمُقَرَّبُوۡنَ (৫৬:১১)। নবীগণ, তাদের সঙ্গী ও শহীদগণ এই শ্রেণীতে পড়তে পারেন।
২- ডান দিকবর্তি اَصۡحٰبُ الۡمَیۡمَنَۃِ (৫৬:৮)/ اَصۡحٰبُ الۡیَمِیۡنِ (৫৬:২৭) যারা সৎকর্মশীল মানুষ
৩- বামদিকবর্তী اَصۡحٰبُ الشِّمَالِ (৫৬:৪১)/ اَصۡحٰبُ الۡمَشۡـَٔمَۃِ (৫৬:৯) যারা অবিশ্বাসী ও অন্যায়কারী।
যারা ১ম এবং ২য় শ্রেণীর অন্তর্গত তারা তাদের প্রথম মৃত্যুর পর পরবর্তী জীবনে জান্নাতে উন্নীত হবে। কিন্তু, ৩য় ক্যাটাগরির লোকেদেরকে তাদের কৃতকর্ম অনুযায়ী প্রকৃতির চিরন্তন নিয়ম ‘কারণ এবং ফলাফল (cause and effect)’ অনুসারে শাস্তি প্রদানের পর আরও একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ (বয়স) দিয়ে পুনরায় পৃথিবীতে ফেরত পাঠানো (পুনর্জন্ম) হবে। পরবর্তী পার্থিব জীবনে পাঠানোর পূর্বে প্রদেয় শাস্তি তাদের অন্যায় কাজের পরিধি অনুযায়ী তাদের রূপ পরিবর্তনের জন্য প্রসারিত হতে পারে।
عَلٰۤی اَنۡ نُّبَدِّلَ اَمۡثَالَکُمۡ وَ نُنۡشِئَکُمۡ فِیۡ مَا لَا تَعۡلَمُوۡنَ
এতে আমরা তোমাদের প্রতিরুপ পরিবর্তন করব এবং তোমাদেরকে সেই আকারে তৈরি করব যা তোমরা জান না। (৫৬/৬১)
যদি তারা তাদের নেক আমলের দ্বারা সৎকর্মশীল ব্যক্তির মর্যাদা লাভ করে তবে তারা আবার মৃত্যুর পর জান্নাতে প্রবেশ করবে। যদি না হয় তাহলে জান্নাতে উন্নতির কাঙ্খিত স্তর অর্জন না করা পর্যন্ত আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) তাদের দুইবার মৃত্যু ঘটাবেন এবং তিনি তাদের দুইবার পুনরুজ্জীবিত করবেন যা মূলত অগণিত মৃত্যু ও জন্মের চক্র। অতএব, একাধিক মৃত্যু এবং পুনরুজ্জীবন যা নিম্নলিখিত ৪০:১১ আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে সেই সমস্ত লোকদের সম্পর্কে যারা তাদের কৃতকর্মের কারণে পরবর্তী স্তরে উন্নতি করতে পারবেনা।
قَالُوا رَبَّنَا أَمَتَّنَا اثْنَتَيْنِ وَأَحْيَيْتَنَا اثْنَتَيْنِ فَاعْتَرَفْنَا بِذُنُوبَنَا فَهَلْ إِلَى خُرُوجٍ مِّن سَبِيلٍ(40:11)
তারা বলেছেঃ হে আমাদের রব! আপনি আমাদেরকে দুবার মৃত্যু দিয়েছেন এবং দুবার জীবন দিয়েছেন, সুতরাং আমরা আমাদের পাপ স্বীকার করে নিলাম। তা থেকে, বের হওয়ার কোন উপায় আছে কি? (40/11)
স্বীকারোক্তি اعْتَرَفْنَا এর সাথে ফা’ যোগ করা হয়েছে যা এটিকে একটি অত্যন্ত বিনীত স্বীকারোক্তিতে পরিণত করেছে। এই বিবৃতিটি প্রকৃতপক্ষে, পরবর্তী স্তরে উন্নীত হতে অক্ষম আত্মাদের দ্বারা আল্লাহর কাছে বিনীত নিবেদন।
আল্লাহ তায়ালা বামদিকবর্তী মানুষের জন্য কোন বড় তেলের কুপ বা গভীর কড়াই এর মত তেল শোধনাগারের কথা উল্লেখ করেননি যার মধ্যে তাদেরকে ভাজা হবে কিন্তু “এটি (জাহান্নাম) আল্লাহর প্রজ্বলিত আগুন যা হৃদয়ে/অন্তরে প্রজ্জলিত হয় ।” (১০৪/৬-৭)
(104/7) الَّتِي تَطَّلِعُ عَلَى الْأَفْئِدَةِ (104/6) نَارُ اللَّهِ الْمُوقَدَةُ
হৃৎপিণ্ড আমাদের পার্থিব দেহের একটি অঙ্গ। উপরোক্ত আয়াতে বেশ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এতে জাহান্নামের আগুন স্থাপন করা হয়েছে।
অতএব, বামদিকবর্তী লোকেরা পরবর্তী জীবনে সাধারনত প্রচুর মানসিক চাপ, মানসিক আঘাত, হতাশা, মানসিক ও শারীরিক নিপীড়ন সহ্য করার জন্য রক্তমাংসের দেহে পুনর্জন্ম পাবে। তাদের জীবনকালে তারা এই যন্ত্রণা নিয়ে থাকবে। তবে, তাদের ‘স্বাধীন ইচ্ছা’ ব্যবহার করে পুনরায় মৃত্যুর পর পরবর্তী জীবনের জন্য তাদের কাজ সংশোধন করতে পারবে। এটি দয়াময় আল্লাহর রহমত যে, তিনি তাদের পুনরায় জীবন দিবেন, যা তাদের আত্মার বিকাশের জন্য একটি বিবর্তনের প্রক্রিয়া। আল্লাহ তায়ালা নিম্নলিখিত (৭/৪০)আয়াতে এই সম্ভাবনাকে নিশ্চিত করেছেন
إِنَّ الَّذِينَ كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا وَاسْتَكْبَرُوا عَنْهَا لَا تُفَتَّحُ لَهُمْ أَبْوَابُ السَّمَاءِ وَلَا يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّىٰ يلج الْجَمَلُ فِي سَمَ الْخِيَاطِ وَكَذَلِكَ نَجْزِي الْمُجْرِمِينَ
নিশ্চয় যারা আমার নিদর্শনাবলীকে অস্বীকার করে এবং অহংকারে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাদের জন্য আকাশের দরজা খোলা হবে না এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ না সুচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করে । আর এভাবেই আমরা অপরাধীদেরকে পুরস্কৃত করি (৭/৪০)
উপরোক্ত (৭:৪০) নং আয়াতের অংশ, حَتَّى يَلِجَ الْجَمَلُ فِي سَمَّ الْخِيَاطِ যতক্ষণ না সুচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করে, ‘বামদিকবর্তী লোকদের’ আত্মাকে একটি পুনর্জন্ম চক্র দ্বারা টেনে নেওয়ার বিষয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইংগিত। যা পুনর্জন্ম চক্রের কোন একটি জীবনের বয়স সীমায় প্রয়োজনীয় মানদণ্ড পূরণ করে উচ্চস্তরে তাদের অগ্রগতির সুস্পষ্ট সম্ভাবনা দেখায় যে, তারা সম্ভবত পুনর্জন্মের চক্র থেকে মুক্তি পাবে এবং জান্নাতে যেতে পারবে । একটি সূচের ছিদ্র দিয়ে উট প্রবেশ করানো যেমন একটি অসম্ভব কাজ তাদের মুক্তির জন্য এরকমই একটি অসম্ভব/ দুরূহ কাজ তাদের করতে হবে। আল্লাহ তায়ালার পক্ষে কি এই অংশটি ছাড়া উক্ত আয়াতটি শেষ করা সম্ভব ছিল না বা এখানে কঠোরভাবে স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করা যেত না যে এটি আদৌ সম্ভব নয়? কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, শুধুমাত্র তাদের পূর্বলব্ধ ধারণার প্রচারের জন্য, আমাদের অনুবাদকরা আয়াতের এই অংশের পরে বন্ধনীতে “(যা অসম্ভব)” উল্লেখ করে আমাদেরকে বিভ্রান্ত করছেন।
আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে আল্লাহ তায়ালা নিজেই বলেছেন,
الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا ةٌ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْغَفُورُ
“তিনিই মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি পরীক্ষা করতে পারেন কে তোমাদের মধ্যে কর্মে সর্বোত্তম, এবং তিনি মহান, ক্ষমাশীল।” (৬৭/২)
অনুগ্রহ করে কুরআনের নিম্নলিখিত (৮৪:১৯) আয়াতটি দেখুন যেখানে আল্লাহ তায়ালা নিজেই পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়াটিকে নিশ্চিত করেছেন যে তারা অবশ্যই এক পর্যায় থেকে অন্য পর্যায়ে চলে যাবে।
لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَن طَبَقٍ
তোমরা এক ধাপ থেকে অন্য ধাপে আরোহন করতে থাকবে (৮৪:১৯) (মুফতি ত্বকী উসমানী)
এই জীবনের উদ্দেশ্য হল আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের বিবর্তনীয় প্রক্রিয়ার এক একটি পর্যায় অতিক্রম করা । আমাদের কর্ম এবং স্বাধীন ইচ্ছার মাধ্যমে আমরা পরকালের কোন পর্যায়ে প্রবেশ করব তা অর্জন করার সক্ষমতা আছে। কারণ আমাদের কর্মের দ্বারা পরবর্তী জীবনে আমরা কোন স্তরে উন্নিত হব তা নির্ধারিত হয়। পার্থিব জীবনের সাথে পরকালের পার্থক্য হল তখন আমাদের উন্নতির জন্য কিছু উপার্জন করার কোন উপায় নেই। এটি শুধুমাত্র আল্লাহর রহমতের মাধ্যমেই নির্ধারিত হয় এবং তিনিই সিদ্ধান্ত দেন যে আমরা আগের জীবনে যা অর্জন করেছি তা আমাদের মুক্তির জন্য যথেষ্ট কিনা, যা পরবর্তী জীবনে পুরষ্কার বা শাস্তির সময়কাল এবং মাত্রা হিসাবে বিবেচিত হয়।
২) জন্ম ও মৃত্যু চক্র (পর্ব ২)
প্রথম পর্বে আমরা দেখেছি যে সৎকর্মশীলদের মৃত্যু একবারই হয়। কিন্তু যারা অবিশ্বাসী ও কাফের তাদের মৃত্যু হলে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করার পর তাদেরকে আবার একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ দিয়ে পুনরায় পৃথিবীতে ফেরত পাঠানো (পুনর্জন্ম) হয়। মৃত্যু ও পুনর্জীবনের এই চক্রটি বুঝার জন্য আল কুরআনের (২/২৮) নং আয়াতটি লক্ষ করি
کَیۡفَ تَکۡفُرُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ کُنۡتُمۡ اَمۡوَاتًا فَاَحۡیَاکُمۡ ۚ ثُمَّ یُمِیۡتُکُمۡ ثُمَّ یُحۡیِیۡکُمۡ ثُمَّ اِلَیۡہِ تُرۡجَعُوۡنَ
তোমরা কিভাবে আল্লাহকে অস্বীকার করছো? অথচ তোমরা ছিলে মৃত এবং তিনি তোমাদেরকে জীবন দিয়েছেন। আবার তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন এবং আবার তোমাদের জীবন দিবেন; অতঃপর তোমরা তার কাছেই ফিরে যাবে। (২:২৮)
এই আয়াতে কাদের সম্বোধন করা হয়েছে? প্রথম পর্বে আলোচিত তিনটি শ্রেণীর মধ্যে দুটি শ্রেণী ১) বিশ্বাসে অগ্রগণ্য এবং ২) যারা ডান দিকবর্তী তারা ইতিমধ্যেই সাফল্যের সাথে তাদের লক্ষ্য অর্জন করেছে এবং তারা উচ্চস্তরে সর্বোচ্চ অগ্রগতি অর্জন করেছে। সুতরাং, প্রাথমিক মৃত্যুর পরে তাদের আর কোন মৃত্যুর প্রয়োজন নেই। তাহলে ২/২৮ আয়াতের শুরুতে উল্লেখিত ব্যক্তিরা হল তৃতীয় শ্রেণীভুক্ত আরেকটি দল ৩) যারা বামদিকবর্তী, যারা ছিল মৃত তারা যখন জীবিত ছিল তখন তাদের কৃতকর্মের কারনে পরবর্তী ধাপে উন্নীত হতে পারেনি এবং দয়াময় আল্লাহর ইচ্ছা ও করুণার উপর নির্ভর করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলনা। পরবর্তীতে তাদের জীবিত করা হয়েছে এবং পুনরায় তাদের মৃত্যু ঘটানো হবে। তারা যদি পরবর্তী ধাপে উন্নীত হতে না পারে তাদেরকে আবার জীবিত করা হবে এবং এই চক্র চলতে থাকবে যতক্ষণ না তারা রবের কাছে ফিরে যাওয়ার উপযুক্ত হয়। এই ২:২৮ আয়াতের শুরুতে স্পষ্টভাবে উল্লেখিত অংশ কি তা বোঝায় না যে, তাদের প্রাথমিক মৃত্যুর পরে তাদেরকে আবার জীবন চক্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে?
২:২৮ আয়াতটি মনোযোগ সহকারে পড়লে যে কেউ এই উপসংহারে আসতে পারেবে যে, আয়াতটি বিশুদ্ধভাবে কেবলমাত্র সেই হতভাগ্য এবং অসহায় আত্মাদের সম্বোধন করে বলা হয়েছে, যারা ‘বামদিকবর্তী’। প্রকৃতপক্ষে এটিই আসল পর্যায় যেখানে কোন সুপারিশ আসবে না এবং তখন শুধুমাত্র আল্লাহর ইচ্ছা বা অনুগ্রহই থাকবে যার উপর তারা নির্ভর করবে।
আমরা যদি ‘পরকাল’ সম্পর্কে কুরআনের এই বিশুদ্ধ ধারণাটি বুঝতে পারি তবে নিশ্চিতভাবেই আমাদের নিকট ‘ভাগ্য (fate)’, ‘শাফায়াত (intercession) এবং ‘স্বাধীন ইচ্ছা’ ইত্যাদির মতো বিষয়গুলি আর দীর্ঘ আলোচনা ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে বোধগম্য হবে।
এই ২:২৮ নং আয়াতে পুনর্জন্মের কথাটি বেশ স্পষ্ট। “তোমরা ছিলে মৃত” বাক্যাংশের অর্থ দাঁড়ায় যে তারা মৃত হওয়ার আগে বেঁচে ছিল। এবং শেষের বাক্যাংশ “এবং আবার তোমরা তাঁর কাছে ফিরে আসবে” এর অর্থ হতে পারে যে জান্নাতে বা পরবর্তী উচ্চ স্তরে প্রবেশের জন্য তাদের নিজেদের বা আত্মার প্রয়োজনীয় বিকাশ অর্জন করা।
যারা দ্বিমত পোষণ করেন, তারা দাবি করেন যে “মৃত” খুব সাধারণভাবে নির্জীব বস্তুর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় তাই আমাদের জীবন দেওয়ার আগে আমরা মৃত ছিলাম।
আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) জানাচ্ছেন যে তিনি তাদেরকে মৃত থেকে জীবন দিয়েছেন। একজনের মৃত হওয়ার একমাত্র উপায় হল আগে বেঁচে থাকা, এবং তারপরে মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করা। আগে জন্ম না থাকলে মৃত্যু কিভাবে সম্ভব? কেউ জন্মায়নি কিভাবে মরে? একজনকে আগে জীবিত থাকতে হবে পরে মৃত হতে হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাদের মৃত থেকে জীবন দান করার মাধ্যমে স্পষ্টভাবে পূর্বজন্ম এবং পরবর্তী মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছেন। একই ব্যক্তিকে আবার জীবিত করা, এবং তারপরে আবার মৃত্যু ঘটানো, আরেকটি জীবন বা পুনর্জন্ম নিশ্চিত করে। এই আয়াতে একই আত্মা তিনটি মৃত্যু এবং তিনটি পুনর্জন্মের মধ্য দিয়ে গেছে এবং পূর্ববর্তী কতগুলি পুনর্জন্ম ছিল বা কখন এই চক্র শেষ হবে তার কোনও ইঙ্গিত নেই। আসলে “এবং আবার তোমাদেরকে তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে” বাক্যাংশটি দৃঢ়ভাবে ইঙ্গিত দেয় যে প্রক্রিয়াটি অব্যাহত থাকবে।
সূরা আনামের নিন্মুক্ত আয়াতটি লক্ষ্য করুন
اِنَّمَا یَسۡتَجِیۡبُ الَّذِیۡنَ یَسۡمَعُوۡنَ ؕؔ وَ الۡمَوۡتٰی یَبۡعَثُہُمُ اللّٰہُ ثُمَّ اِلَیۡہِ یُرۡجَعُوۡنَ
তারাই সাড়া দেয় যারা শুনে। আর মৃতদেরকে আল্লাহ পুনর্জ্জীবিত করেন। অতঃপর তার দিকেই তারা প্রত্যাবর্তিত হয়। (৬:৩৬)
এই (৬:৩৬) নং আয়াতটি বর্তমান কালবাচক। কিন্তু পুনরুত্থানকে ভবিষ্যৎ ঘটনা ধরে নিয়ে সকল অনুবাদে এটিকে ভবিষ্যৎ কাল হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে। আসলে মৃতদেরকে জীবিত করা একটি চলমান প্রক্রিয়া। ثُمَّ اِلَیۡہِ یُرۡجَعُوۡنَ “অতঃপর তার দিকেই তারা প্রত্যাবর্তিত হয়” এই বাক্যাংশ দ্বারা বুঝা যায় যে, এই প্রক্রিয়া চলমান থাকে যতক্ষণ না তারা স্রষ্টার কাছে ফিরে যাওয়ার সক্ষমতা অর্জন করে।
আরবি مَوْتَ শব্দের অর্থ হল অবস্থার পরিবর্তন বা স্থানান্তর (displaced), যার মাধ্যমে একটি আত্মা পরবর্তী জীবনে স্থানান্তরিত হয়। আল কোরআনে তাই মৃত্যুকে বার্জাখ বলা হয়েছে যা দুই জীবনের মধ্যবর্তী পর্দা বা অন্তরাল। কোন ব্যক্তি সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার পর অর্থাৎ সৎকর্মশীল অবস্থায় তার ‘প্রাথমিক মৃত্যুর’ পর আর মৃত্যু হয় না এটাই তার ‘শেষ মৃত্যু’ । যখন পৃথিবীতে তাদের জীবন শেষ হয় তখন মূল্যায়নের (قيامة) পর পুনরুজ্জীবিত হয়ে তারা সরাসরি জান্নাত লাভ করে।
এই পর্বটি শেষ করার আগে আমি কুরআনের আরও কিছু আয়াতের প্রতি আপনাদেরর সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যেগুলি উপরোক্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত স্পষ্ট ধারনা দিবে।
وَاللَّهُ أَنبَتَكُم مِّنَ الْأَرْضِ نَبَاتًا
আর আল্লাহ একটি সৃষ্টি হিসেবে তোমাদেরকে পৃথিবী/মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন (৭১/১৭)
ثُمَّ يُعِيدُكُمْ فِيهَا وَيُخْرِجُكُمْ إِخْرَاحًا
অতঃপর তিনি তোমাদেরকে এতে ফিরিয়ে দেন এবং তোমাদেরকে বারবার পুনরুত্পাদন করেন (৭১/১৮)
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেন এবং বারবার ফেরত পাঠান। অনুগ্রহ করে يُعِيدُ (ইউয়িদ) শব্দটি প্রতি লক্ষ করুন, যা عيد এর একটি ডেরিভেটিভ। একইভাবে কুরআনের এই বা অন্যান্য আয়াতে ব্যবহৃত عيد (ঈদ) এর মানে হল পুনরাবৃত্তি যেমন একটি উৎসব বারবার ফিরে আসে।
আপনি এই عيد শব্দটি সম্বলিত বেশিরভাগ আয়াতে عيد এর এমন একটি অর্থ পাবেন যেখানে একটি ক্রিয়া বারবার পুনরাবৃত্তি হয়েছে।
قُلۡ هَلْ مِنۡ شُرَکَآئِکُمۡ مَّنۡ یَّبۡدَؤُا الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ ؕ قُلِ اللّٰہُ یَبۡدَؤُا الۡخَلۡقَ ثُمَّ یُعِیۡدُہٗ فَاَنّٰی تُؤۡفَکُوۡنَ (10:34)
বলুন, ‘তোমাদের কোন শরীক-দেবতা আছে কি যে সৃষ্টির সূচনা করে অতঃপর পুনরুত্পাদন করে?’ বলুন, একমাত্র আল্লাহই সৃষ্টির সূচনা করেন এবং তারপর পুনরুত্পাদন করেন। তাহলে তোমরা কোথায় ফিরে আছ?’ (১০:৩৪)
مِنْهَا خَلَقْنَاكُمْ وَفِيهَا نُعِيدُكُمْ وَمِنْهَا نُخْرِجُكُمْ تَارَةً أُخْرَى (20/55
ইহা (পৃথিবী) থেকে আমরা তোমাদের সৃষ্টি করেছি এবং তাতেই তোমাদের ফিরিয়ে দেই এবং সেখান থেকেই আবার তোমাদের বের করে আনি। ২০/৫৫)
أَمَّن يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ وَمَن يَرْزُقُكُم مِّنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ أَإِلَهُ مَّعَ
اللَّهِ قُلْ هَاتُوا بُرْهَانَكُمْ إِن كُنتُمْ صَادِقِينَ (27:64)
অথবা, কে সৃষ্টির সূচনা করেন, অতঃপর তার পুনরাবৃত্তি করেন এবং কে তোমাদেরকে আসমান ও জমিন থেকে রিযিক দান করেন? আল্লাহর সাথে কোন দেবতা আছে কি? বল, ‘তোমরা যদি সত্যবাদী হও তবে প্রমাণ পেশ কর।’ [27:64]
إِنَّهُ هُوَ يُبْدِئُ وَيُعِيدُ
নিঃসন্দেহে তিনিই উদ্ভব ও পুনরাবৃত্তি করেন। (৮৫:১৩)
إِلَيْهِ مَرْجِعُكُمْ جَمِيعًا وَعْدَ اللَّهِ حَقًّا إِنَّهُ يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ لِيَجْزِيَ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ بِالْقِسْطِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا لَهُمْ شَرَابٌ مِّنْ حَمِيمٍ وَعَذَابٌ أَلِيمٌ بِمَا كَانُوا يَكْفُرُونَ
তাঁর কাছেই তোমাদের সকলকে প্রত্যাবর্তন করতে হয়। আল্লাহর ওয়াদা সত্য। নিশ্চয় তিনি সৃষ্টির সূচনা করেন; অতঃপর তিনি তা পুনরুত্পাদন করেন, যাতে তিনি তাদেরকে পুরস্কৃত করেন যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে। আর যারা কাফের, তাদের জন্য রয়েছে ফুটন্ত পানি এবং যন্ত্রণাদায়ক আযাব, কারণ তারা অবিশ্বাস করেছিল।[১০:২]
اللهُ يَبْدَأُ الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيدُهُ ثُمَّ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ
আল্লাহ সৃষ্টি শুরু করেন; অতঃপর তিনি তা পুনরাবৃত্তি করেন। অতঃপর তাঁর কাছেই তোমারা প্রত্যাবর্তন কর।[৩০:১১]
আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) নিজেই এই চক্রের ধারাবাহিকতাকে ‘দিন ও রাত’-এর একটি নিয়মিত চক্রের সুস্পষ্ট উদাহরণ দিয়ে সংজ্ঞায়িত ও ব্যাখ্যা করেছেন যাতে আল্লাহ রাত্রিকে দিনে এবং দিনকে রাত্রিতে প্রবেশ করান অর্থাৎ আল্লাহ মানুষকে একইভাবে পুনরুত্পাদন করেন যেভাবে তিনি দিনরাত্রি পুনরুত্পাদন করেন।
تُولِجُ اللَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَتُولِجُ النَّهَارَ فِي اللَّيْلِ وَتُخْرِجُ الْحَيَّ مِنَ الْمَيِّتِ وَتُخْرِجُ الْمَيِّتَ مِنَ الْحَيِّ
You cause the night to enter the day, and You cause the day to enter the night; and You bring the living out of the dead and You bring the dead out of the living. [3:27]
তুমিই রাত্রিকে দিনের মধ্যে প্রবেশ করিয়েছ এবং দিনকে রাত্রির মধ্যে প্রবেশ করিয়েছ। আর তুমি জীবিতকে মৃতের মধ্য থেকে বের করে আন, আর তুমি মৃতকে জীবিত থেকে বের করে আন।[৩:২৭]
প্রতিটি মৃত্যুই মানুষকে আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে আনে এবং যাদের চূড়ান্ত উন্নতি হয়েছে তারা মুক্তিপ্রাপ্ত হয় কিন্তু বাকিদের উন্নয়ন ও শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে শাস্তি দিয়ে তাদের কাঠামো (পরিবেশ, পরিস্থিতি, অবস্থান ইত্যাদি) পরিবর্তন করে ফেরত পাঠানো হয়। জীবন, মৃত্যু, জীবন, মৃত্যু, জীবন, মৃত্যুর এই প্রক্রিয়া নিরলসভাবে চলতে থাকে যতক্ষণ না ব্যক্তির চরিত্র তাকে উচ্চতর স্তরে উন্নীত করার জন্য গড়ে তোলে এবং সে নিজেকে জান্নাতে দীর্ঘস্থায়ী জীবনের জন্য যোগ্য করে তোলে।
ReplyForward Add reaction |
হাদীস
প্রচলিত হাদিসবাদীরা প্রচার করে প্রত্যেক রসুল নবী কিন্তু প্রত্যেক নবী রসুল না! এখন তাদেরকে যদি প্রশ্ন করেন জিবরাইল আঃ তো রসুল তাহলে তাঁকে কি নবী বলা যায়? Al-Hajj ২২:৭৫
আল্লাহ ফেরেশতা ও মানুষের মধ্য থেকে রাসূল মনোনীত করেন। অবশ্যই আল্লাহ সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা।
এবার তারা চিন্তায় পড়ে যায়! আমতা আমতা করে তারা বলবে, না তিনি নবী নয়। তাহলে যে বললেন সকল রসুল-ই নবী। এখন স্বীকার করুন আপনাদের এই মতবাদ ভুল।
এবার মুখস্ত বিদ্যা শুরু করে বলবে হারুন, নূহ তো নবী, তারা কি রসুল? আপনি বেশি বুঝেন? এই দেখুন আয়াত-
Maryam ১৯:৫৩
আর আমি স্বীয় অনুগ্রহে তার জন্য তার ভাই হারূনকে নবীরূপে দান করলাম।
তাদের কথা শুনে আপনিও চিন্তিত হবেন কারণ আপনিও বড় বড় হুজুরদের কাছ থেকে শুনেছেন এমন কথা। কিন্তু আপনি কুরআন গবেষক হলে বুঝবেন একটি আয়াত দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। আরও আয়াত চেক করলে দেখবেন আল্লাহ হারুনকে যেমন নবী বলেছেন আবার তাকে রসুলও বলেছেন।
Ash-Shu’ara’ ২৬:১৬
‘সুতরাং তোমরা উভয়ে ফির‘আউনের কাছে গিয়ে বল, নিশ্চয় আমরা বিশ্বজগতের রবের রাসূল’।
এখানে উভয় দ্বারা মুসা ও হারুনকে বুঝানো হয়েছে। সন্দেহ হলে ২৬:১৪-১৬ পড়ুন।
অর্থাৎ হারুন আঃ সম্পর্কে সমাজে প্রচলিত ধারণা একটি গুজব। কুরআন মতে তিনি নবী ও রসুল।
এখন আসুন রসুল হলেই যে নবী হয় না তা বুঝতে ১২:৫০ আয়াত পড়ি। এখানে যে রসুলের কথা বলা হয়েছে তিনি রসুল কিন্তু নবী নয়।
Yusuf ১২:৫০
আর বাদশাহ বলল, ‘তোমরা তাকে আমার কাছে নিয়ে আস’। অতঃপর যখন দূত(রসুল) তার কাছে আসল তখন, সে বলল, তুমি তোমার মনিবের নিকট ফিরে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা কর, যে সব মহিলা নিজ নিজ হাত কেটে ফেলেছিল তাদের অবস্থা কী? নিশ্চয় আমার রব তাদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত’।
আবার ৩৬:১৪ আয়াতে তিন জন রসুলের কথা বলা হয়েছে। এই তিন জন যে নবী এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না কিন্তু তারা যে রসুল তা কুরআন দ্বারা প্রমাণিত।
এই আয়াত আমাদের শিক্ষা দেয় যারা আল্লাহর বানী প্রচার করেন এবং তারা যদি আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত হন তবে তারা-ই আল্লাহর রসুল।
Ya Sin ৩৬:১৪
যখন আমি তাদের কাছে দু’জন রাসূল পাঠিয়েছিলাম, তখন তারা তাদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। তারপর আমি তাদেরকে তৃতীয় একজনের মাধ্যমে শক্তিশালী করেছিলাম। অতঃপর তারা বলেছিল, ‘নিশ্চয় আমরা তোমাদের প্রতি প্রেরিত রাসূল’।
প্রত্যেক নবী-ই আল্লাহ প্রেরিত এবং তারা প্রত্যেকেই আল্লাহর বানী প্রচার করেছেন তাই তারা প্রত্যেকেই রসুল।
তাই আসুন সমাজে প্রচলিত ধারণা পরিহার করে বলি প্রত্যেক নবী রসুল কিন্তু প্রত্যেক রসুল নবী নয়।
(ভুল হলে সংশোধনে সহযোগিতার আহ্বান রইলো)।
Collected
নবী মুহাম্মদ সা: আমাদের এ প্রচলিত সালাত কখনোই পড়েন নাই। পড়ার প্রশ্নই উঠে না। কারন নবীকে সালাত পড়ার জন্য প্রেরণ করা হয় নি বরং সালাত শেখানোর জন্য প্রেরন করা হয়েছ।
সালাত পড়ার মত কোন জিনিস নয় বরং সালাত কায়েম করার জিনিস। সালাত একটি দ্বীনি ব্যবস্থা। জীবন যাপন পদ্ধতি। অথচ কোরান বিমুখ অজ্ঞরা নবী সাঃ কে রোগাক্রান্ত অবস্থাতেও কাঁধে ভর দিয়ে নিয়ে এসে সালাতের ইমামতি করার হাদীস রচনা করেছে। কতটা গর্হিত কাজ করেছে এ মুর্খের দল কোরানের আলোকে তা দেখে নেই।
প্রচলিত সালাতে সুরা ফাতিহা পড়া হয়। সুরা ফাতেহায় বলা হয়ে থাকে আপনি আমাকে সরল সঠিক পথ দেখান। আমরা সরল পথে নেই তাই আমরা বলে থাকি। প্রশ্ন হল নবী যদি বলেন হে আল্লাহ আমাকে সরল পথ দেখান। তাহলে বিষয়টা কি দ্বারায়? তিনি কি সরল সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত নন? (নাউযুবিল্লাহ)। এবার দেখি এ বিষয়ে কোরান কি বলে?
কোরআনে, সুরা হজ্জে আল্লাহ বলেনঃ
১) আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য নির্ধারিত করিয়া দিয়াছি ‘ইবাদত পদ্ধতি – যাহা উহারা অনুসরণ করে। সুতরাং উহারা যেন তোমার সঙ্গে বিতর্ক না করে এই ব্যাপারে। তুমি উহাদেরকে তোমার প্রতিপালকের দিকে আহ্বান কর, তুমি তো সরল পথেই প্রতিষ্ঠিত। (২২:৬৭)
সুরা ইয়াসিনে আল্লাহ ঘোষনা দিয়ে জানালেন রাসুলকেঃ
আপনি অবশ্যই রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত; আপনি সরল পথে প্রতিষ্ঠিত। (৩৬:৪)
কোরানের সূরা যুখরফে আল্লাহ বলেনঃ
২) সুতরাং তোমার প্রতি যাহা ওহী করা হইয়াছে তাহা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর। তুমি সরল পথেই রহিয়াছ। (৪৩:৪৩)
কোরানের সুরা ফাতহায় আল্লাহ বলেনঃ
৩) তিনিই তাঁহার রাসূলকে পথনির্দেশ ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করিয়াছেন, অপর সমস্ত দীনের উপর ইহাকে জয়যুক্ত করিবার জন্য। আর সাক্ষী হিসাবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট।(৪৮:২৮)
এ আঅত গুলি থেকে সুস্পষ্ট ভাবে জানা যায় রাসুল সরল পথে প্রতিষ্ঠিত এবং ওহীর মাধ্যমে রাসুল সাঃ কে তা অবহিতও করা হয়েছে। ওহী যোগে আল্লাহ নিশ্চিত করার পরও কি রাসুল সরল পথে পরিচালিত করার জন্য কি প্রার্থণা করবেন? এটা কি কোন সুস্থ মস্তিস্ক বিশ্বাস করবে?
সরল পথে প্রতিষ্ঠিত বলেই তো তার প্রতি কোরান নাযিল করা হয়েছে। নচেৎ তার উপর কোরান নাযিলই হত না।
আরেকটু লক্ষ্য করুন। আল্লাহ বলছেন অপবিত্র অবস্থায় আমার কোরান স্পর্শ করা যায় না। এখানে উপদেশ বা অনুরোধ করে বলেন নাই যে তোমরা অপবিত্র অবস্থায় কোরান স্পর্শ করো না। বলেছেন অপবিত্র অবস্থায় কোরান স্পর্শ করা যায় না। অর্থাৎ এই কাগজের কোরান স্পর্শ করার কথা বলা হয় নি। বলা হয়েছে অপবিত্র অবস্থায় অর্থাৎ ( সরলপথ প্রাপ্ত না হয়ে) কোরান কেউ ধারন করতে চাইলেও পারবে না সেটাই বুঝানো হয়েছে।
এই সরল পথে প্রতিষ্ঠিত রাসুল সাঃ কে যদি কেউ দাঁড় করিয়ে বলাতে চায় যে আমাকে সরল পথে পরিচালিত করুন। তাহলে ব্যাপারটা কত হাস্যকর ও লজ্জাস্কর ? কতটা ভয়ংকর? নবীর নামে অপবাদ? আল্লাহর কোরানের আয়াতের অপব্যাখ্যা বলে বিবেচ্য।
যেখানে আল্লাহ স্বয়ং রাসুলকে নির্দেশ করে বলেছেন আপনি রাসুলদের অন্তর্গত, আপনি সরল পথে প্রতিষ্ঠিত, আপনাকে কিতাব দেওয়া হল, আপনি তা প্রচার করুন।
আর সেই রাসুলকে মুর্খ পন্ডিতরা নামাজ পড়িয়ে ছাড়ছে ! সরল পথ প্রাপ্তীর জন্য প্রার্থণা করাতে বাধ্য করাচ্ছে !! ককতবড় অপবাদ রাসুলের শানে?
উপসংহারে বলতে চাইঃ
১) আগে বুঝতে হবে নামাজ কি? এবং কেন?
২) নবীকে নামাজ পড়ার জন্য প্রেরণ করা হয়নি। নামাজ শিখানোর জন্য প্রেরিত হয়েছেন।
৩) নামাজ পড়ার বিষয় নয়। নামাজ ধারন করার বিষয়, নিজের মধ্যে কায়েম করার বিষয়।
৪) নামজ হচ্ছে দ্বীন বা আল্লাহর স্বভাব। আল্লাহর নীতি।
সেই নীতির যে স্বভাব সেই স্বভাব ধারন করা হচ্ছে সালাত।
সেই সালাতে আল্লাহ সর্বদা দন্ডায়মান থাকতে বলেছেন।
সূরা নম্বরঃ মাআরিজ ৭০,আয়াত ২৩ এ আল্লাহ বলেন:
যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত,
الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙ
এই ভাবে যুগে যুগে কোরানের আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছে যারা তাদেরকে কঠিন আজাবের সম্মুখিন হতে হবে একদিন।
‘যদি তোমরা তোমাদেরই মত একজন মানুষের আনুগত্য কর তবে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হইবে;(২৩;৩৪)
ReplyForward Add reaction |
নবীর সালাত
নবী মুহাম্মদ সা: আমাদের এ প্রচলিত সালাত কখনোই পড়েন নাই। পড়ার প্রশ্নই উঠে না। কারন নবীকে সালাত পড়ার জন্য প্রেরণ করা হয় নি বরং সালাত শেখানোর জন্য প্রেরন করা হয়েছ।
সালাত পড়ার মত কোন জিনিস নয় বরং সালাত কায়েম করার জিনিস। সালাত একটি দ্বীনি ব্যবস্থা। জীবন যাপন পদ্ধতি। অথচ কোরান বিমুখ অজ্ঞরা নবী সাঃ কে রোগাক্রান্ত অবস্থাতেও কাঁধে ভর দিয়ে নিয়ে এসে সালাতের ইমামতি করার হাদীস রচনা করেছে। কতটা গর্হিত কাজ করেছে এ মুর্খের দল কোরানের আলোকে তা দেখে নেই।
প্রচলিত সালাতে সুরা ফাতিহা পড়া হয়। সুরা ফাতেহায় বলা হয়ে থাকে আপনি আমাকে সরল সঠিক পথ দেখান। আমরা সরল পথে নেই তাই আমরা বলে থাকি। প্রশ্ন হল নবী যদি বলেন হে আল্লাহ আমাকে সরল পথ দেখান। তাহলে বিষয়টা কি দ্বারায়? তিনি কি সরল সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত নন? (নাউযুবিল্লাহ)। এবার দেখি এ বিষয়ে কোরান কি বলে?
কোরআনে, সুরা হজ্জে আল্লাহ বলেনঃ
১) আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য নির্ধারিত করিয়া দিয়াছি ‘ইবাদত পদ্ধতি – যাহা উহারা অনুসরণ করে। সুতরাং উহারা যেন তোমার সঙ্গে বিতর্ক না করে এই ব্যাপারে। তুমি উহাদেরকে তোমার প্রতিপালকের দিকে আহ্বান কর, তুমি তো সরল পথেই প্রতিষ্ঠিত। (২২:৬৭)
সুরা ইয়াসিনে আল্লাহ ঘোষনা দিয়ে জানালেন রাসুলকেঃ
আপনি অবশ্যই রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত; আপনি সরল পথে প্রতিষ্ঠিত। (৩৬:৪)
কোরানের সূরা যুখরফে আল্লাহ বলেনঃ
২) সুতরাং তোমার প্রতি যাহা ওহী করা হইয়াছে তাহা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর। তুমি সরল পথেই রহিয়াছ। (৪৩:৪৩)
কোরানের সুরা ফাতহায় আল্লাহ বলেনঃ
৩) তিনিই তাঁহার রাসূলকে পথনির্দেশ ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করিয়াছেন, অপর সমস্ত দীনের উপর ইহাকে জয়যুক্ত করিবার জন্য। আর সাক্ষী হিসাবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট।(৪৮:২৮)
এ আঅত গুলি থেকে সুস্পষ্ট ভাবে জানা যায় রাসুল সরল পথে প্রতিষ্ঠিত এবং ওহীর মাধ্যমে রাসুল সাঃ কে তা অবহিতও করা হয়েছে। ওহী যোগে আল্লাহ নিশ্চিত করার পরও কি রাসুল সরল পথে পরিচালিত করার জন্য কি প্রার্থণা করবেন? এটা কি কোন সুস্থ মস্তিস্ক বিশ্বাস করবে?
সরল পথে প্রতিষ্ঠিত বলেই তো তার প্রতি কোরান নাযিল করা হয়েছে। নচেৎ তার উপর কোরান নাযিলই হত না।
আরেকটু লক্ষ্য করুন। আল্লাহ বলছেন অপবিত্র অবস্থায় আমার কোরান স্পর্শ করা যায় না। এখানে উপদেশ বা অনুরোধ করে বলেন নাই যে তোমরা অপবিত্র অবস্থায় কোরান স্পর্শ করো না। বলেছেন অপবিত্র অবস্থায় কোরান স্পর্শ করা যায় না। অর্থাৎ এই কাগজের কোরান স্পর্শ করার কথা বলা হয় নি। বলা হয়েছে অপবিত্র অবস্থায় অর্থাৎ ( সরলপথ প্রাপ্ত না হয়ে) কোরান কেউ ধারন করতে চাইলেও পারবে না সেটাই বুঝানো হয়েছে।
এই সরল পথে প্রতিষ্ঠিত রাসুল সাঃ কে যদি কেউ দাঁড় করিয়ে বলাতে চায় যে আমাকে সরল পথে পরিচালিত করুন। তাহলে ব্যাপারটা কত হাস্যকর ও লজ্জাস্কর ? কতটা ভয়ংকর? নবীর নামে অপবাদ? আল্লাহর কোরানের আয়াতের অপব্যাখ্যা বলে বিবেচ্য।
যেখানে আল্লাহ স্বয়ং রাসুলকে নির্দেশ করে বলেছেন আপনি রাসুলদের অন্তর্গত, আপনি সরল পথে প্রতিষ্ঠিত, আপনাকে কিতাব দেওয়া হল, আপনি তা প্রচার করুন।
আর সেই রাসুলকে মুর্খ পন্ডিতরা নামাজ পড়িয়ে ছাড়ছে ! সরল পথ প্রাপ্তীর জন্য প্রার্থণা করাতে বাধ্য করাচ্ছে !! ককতবড় অপবাদ রাসুলের শানে?
উপসংহারে বলতে চাইঃ
১) আগে বুঝতে হবে নামাজ কি? এবং কেন?
২) নবীকে নামাজ পড়ার জন্য প্রেরণ করা হয়নি। নামাজ শিখানোর জন্য প্রেরিত হয়েছেন।
৩) নামাজ পড়ার বিষয় নয়। নামাজ ধারন করার বিষয়, নিজের মধ্যে কায়েম করার বিষয়।
৪) নামজ হচ্ছে দ্বীন বা আল্লাহর স্বভাব। আল্লাহর নীতি।
সেই নীতির যে স্বভাব সেই স্বভাব ধারন করা হচ্ছে সালাত।
সেই সালাতে আল্লাহ সর্বদা দন্ডায়মান থাকতে বলেছেন।
সূরা নম্বরঃ মাআরিজ ৭০,আয়াত ২৩ এ আল্লাহ বলেন:
যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত,
الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙ
এই ভাবে যুগে যুগে কোরানের আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছে যারা তাদেরকে কঠিন আজাবের সম্মুখিন হতে হবে একদিন।
‘যদি তোমরা তোমাদেরই মত একজন মানুষের আনুগত্য কর তবে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হইবে;(২৩;৩৪)
ReplyForward Add reaction |
ব্যবধান
স্রষ্টা ও দ্রষ্টার ব্যবধান। স্রষ্টা বিচার করে না দ্রষ্টা নিজেই বিচার করে স্রষ্টার উপর দোষ চাপায়।
স্বপ্নে আপনি টক মিষ্টি বড়ই খাচ্ছেন। জিহ্বায় তা লাগছে না তবু তার হুবুহু স্বাদ পাচ্ছেন কেন? ঘুমে আপনার চোখ বন্ধ। কিন্তু স্বপ্নে সব পরিস্কার রাস্তা ঘাট দাদীর সাথে কথা বলা দাদীর পড়নের কাপড়ের রঙটাও দেখছেন। কিভাবে দেখছেন? আপনারা চোখ তো বন্ধ। সব কিছুর ঘ্রাণ, স্বাদ, স্পর্স সব অনুভুতি পাচ্ছেন কিভাবে? তার মানে আপনার ভভতরে আরেকটা সত্তা আছে। যে দেহ থেকে আলাদা অশরীরীয় এক আমি। ঐ সত্তার যখন সন্ধান পাবেন তখন জগতের কোন কিছু আপনাকে দুঃখ, কস্ট,ক্রোধ, হিংসা , ভালবাসা দিতে পারবে না। আপনি তখন শুধু জগতের খেলাটা দেখবেন উপভোগ করবেন এবং পরম আনন্দে অবস্থান করবেন। আপনি আপনার দেহে নিজেকে আমি ভাবছেন। কস্ট পেয়ে ব্যাথা পেয়ে বলছেন আমি ব্যাথা পেয়েছি। না ! আপনি বরং ব্যাথা দিয়েছেন ঐ দেহ সত্তাকে।
রাজার চোখে সব লাল দেখার গল্পের মত।
আমরা নিজের অনুভব করি না। করি বহি দৃশ্যপটকে।
একটা শিশু যখন প্রথম এ জগতে আসে তখন কি পৃথিবীর সব কিছু বুঝে? ভাষাটাই তো সে জানে না। আস্তে আস্তে ভাষা শিখে, জগত সমাজের সব বুঝতে শিখে। শশুটির জ্ঞান এবং উপলব্ধি আর প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষের উপলব্ধি কিন্তু এক না। আমরা যে ভাবে জগৎটা দেখতেছি শিশুটি সে ভাবে উপলব্ধি করতে পারছে না। সে আস্তে আস্তে বড় হয়ে দুঃখ বেদনা, প্রেম, ঘাত, প্রতিঘাত, সমাজ,অর্থনীতি সংসার জাগতিক বিষয় গুলি বুঝে উঠবে। যতই বড় হবে জ্ঞান অর্জন করবে ততই তার উপলব্ধি বেড়ে যাবে। আপনে স্বপ্নে যে আম খাচ্ছেন তার স্বাদ আর বাস্তবের স্বাদ কোন পার্থক্য নেই। একই। অথচ জিহ্বায় স্পর্শ না পেয়েও কিন্ত। অনুরুপ বাস্তবে যখন সে আমটি খান মনে করেন জিহ্বার জন্য এ স্বাদ। না আসলে মোটেও তা না।
বাস্তব জিনিস আপনাকে কোন কিছু দেয় না। আপনকে যা কিছু দেয় স্বাদ-গন্ধ,সুখ-দুখ, স্পর্শ-অনুভুতি তা সব কিছু আপনার ভিতর থেকেই দেয়। ভিতরেই আছে, শুধু আপনাকে চিন্তে হবে। যখনি আপনি এ বিষয়গুলি চিনবেন
নীরবে নিভৃতিতে একাকী গভীর ভাবে ধৈর্যের সাথে ভাবতে শুরু করবেন তখনি আপনি আপনার ভিতরে থাকা আমিকে চিনতে সক্ষম হবেন। আর এটা বড় কঠিন ও ধৈর্যের কাজ।
এ জিনিসটাকেই কোরানে সালাত শব্দটির মুল গুরুত্ব আরোপ করেছে।। সুরা বাকারা
তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর এবং ইহা বিনীতগণ ব্যতীত আর সকলের নিকট নিশ্চিতভাবে কঠিন। (২:৪৫)
وَاسْتَعِيْنُوْا بِالصَّبْرِ وَالصَّلٰوةِ ؕ وَاِنَّهَا لَكَبِيْرَةٌ اِلَّا عَلَى الْخٰشِعِيْنَۙ
একনিষ্ঠ যারা তারা ব্যাতীত সালাত অনেক কঠিন।
যারা একনিষ্ঠ ও ধৈর্যের মাধ্যমে চিন্তা ভাভনা গবেষনা করেছে তারাই এ জগতের লীলা উপভোগ করে। তখন সে অন্য মানুষে রুপান্তর হয়ে যায়। জগতটা তার কাছে অন্যরকম লাগে।
ঐ জগত সম্বন্ধে জখন আপনার জ্ঞান হবে প্রতিদিন যখন ঐ জগতে হাটতে থাকবেন, প্রতিদিন ঐ জগতের ভাষা শিখবেন, স্ট্রাগল করবেন তখন ঐ জগতটা আপনাকে অন্য একটা ডায়ামানসনে নিয়ে যাবে।
মানুষ দুরের জিনিস নিয়ে অনেক গবেষনা করে কিন্তু নিজে দেখা সত্য স্বপ্নকে অস্বীকার করে।
অনুরুপ বাস্তবে আপনাকে কোন কিছুই দেয় না। আপনাকে স্পর্শ,গন্ধ,রাগ, ক্ষোপ, দুঃখ, সুখ যা কিছু দেয় সব কিছু আপনার ভিতরেই আছে। শুধু আপনাকে চিনতে হবে। স্হুল দেহ থেকে একটু দুরে সরে ভাবুন, আপনার খেলাটা আপনি নিজেই দেখুন স্বয়ং নিজে অনুভব করুন।
স্রষ্টা কিন্তু বিচারক নন। যখন আপনি নিজে বিচার করতেছেন তখন আপনি আর দ্রষ্টা না।
আপনি যেটাকে সর্বচ্চো ভালবাসা মনে করেন সেটা আসলে বিন্দু মাত্রও না। যেমন সুরা নেসার ৭৫ নং আয়াতটি আপনার কাছে খুব ভাল লাগে। এই ভাল লাগাটা অনুভব করতেছে কে? এই যে মনটা সেখানে সব কিছু ভাসে। এই যে অনুভব করছেন, সেই অনুভব কারী একজন আর যাকে অনুভব করছেন সে আর এক জিনিস । দুটো এক না পৃথক।
সুখ বাড়ছে দুঃখ বাড়ছে এই যে আনন্দ বেদনা আপনি স্বয়ং অনুভব করছেন। আপনাকে কিন্তু কেউ স্পর্শ করে নাই। তার মানে বাস্তব দৃশ্য পটের সাথে যখন আপনি সম্পর্ক স্থাপন করছেন তখনি কিন্তু আপনার দৃশ্য পটে এসে গেছে। যেমন তোমার দুঃখ তুমি অনুভব করছ কিন্তু তুমি দেখতে পাচ্ছ না। তার মানে তুমি একজিনিষ আর স্রষ্টা রুহু আরেক জিনিস। তুমিটা দ্রষ্টা। আর দুঃখটা তোমার দৃষ্টি গোচর হয়েছে। তাহলে তুমি এক জিনিস আর দুঃখটা দ্রষ্টা আরেক জিনিস। দুঃখ কিন্তু তোমাকে স্পর্শ করে নাই। আমি তো দুঃখ অনুভব করতেছি। আমি স্বয়ং দ্রষ্টা। দুঃখটাও যেমন তোমার ছিল না সুখটাও তোমার না।
সুখের বা দুখের তুমি শুধু দ্রষ্টা। কোন মানুষ যখন কোন খারাপ কাজ করে তখন তার মনের ভিতরেই একটা বিরোধিতা শক্তি কাজ করে। তার মানে তার ভিতর আরেকটা সত্তা আছে যে বলে এটা ভাল না। কেন আমি স্বং নিজে সে খারাপ কাজটি করার সময় আমার ভিতর হতেই আবার এমন অনুভুতি আসে? আমারই ভিতরে কোন সে আমি? যেটা আমাকে গাইড লাইন করতে চায়।
ঐ যে আমার ভিতরে থেকে আমাকেই যে গাইড করতে চায় সেটাই প্রকৃত আমি। তার কোন ভয় নেই। লোভ নেই। হিংসা নেই। দুঃখ নেই। ক্রোধ নেই। নেই কোন চাওয়া পাওয়া। সেটা খান্নাস মুক্ত আমি রুপি নফস। এটাই প্রকৃত আমি। এই আমিকেই খুজে পাওয়াই প্রতিটি মানুষে লক্ষ্য হওয়া উচিত। তবেই তারা সফলকাম এবং জীবন্ত অবস্থায় জান্নাতের নাগাল পেল। এই আমিকে জগতের কোন কিছু স্পর্শ করতে পারে না। সব সময় সে চরম আনন্দে থাকে, জান্নাতে বিচরন করে।
এই আমি উপলব্ধি যখন আপনার মাঝে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে তখন জগতের কোন কিছুই আপনাকে মোহগ্রস্থ করতে পারবে না, রাগান্বিত করতে পারবে না, দুঃখ কষ্ট দিতে পারবে না। সে তখন অসীমের মাঝে বিলীন হয়ে যায়। ***** অনন্তের স্পর্শ পেয়ে যায়।
মানুষের দুঃখের কারন সে অল্প পরিসরে স্বপ্ন দেখে। তার চাওয়াপায়া সীমিত করে চায়। অথচ তার স্বপ্ন অসীম অনন্ত। যেমন প্রথমে একটি ছেলে স্বপ্ন দেখে আমি যদি এ + পাই এবং ভাল একটা ভার্সিটিতে চানচ পাই জীবনে আর কিছু চাই না। সেটা পুরন হলে ভাল একটি সরকারী চাকরী বা বলে সিএস ক্যাডারের স্বপ্ন। সেটা পুরন হলে ভাল একটা গাড়ী একটা বাড়ীর। সেটা পুরন হলে সে ভাল একটা বিয়ের স্বপ্ন দেখে। সেটা পুরন হলে যখন কোন সন্তান আদি না হয় তখন একটাই স্বপ্ন ছেলে হোক মেয়ে হোক একটা সন্তান না হলে দুঃখের অন্ত নেই। সেটা পুরন হলে ছেলেটাকে ভালভাবে মানুষ করার স্বপ্নে বিভোর। ছেলেটা যদি বখে যায় তার কস্টের শেষ নেই। সেটা যদি পুরন হয় তখন নতুন স্বপ্ন আবার এসে হাজির স্তরীর প্যারালাইসিসটা ভাল হলে আমার আর কোন কস্ট নেই।
সেটাও যদি হয় আহা ছেলের ঘরে একটা নাতীর মুখ যদি দেখতে পেতাম সে স্বপ্ন তাকে পীড়া দিতে থাকে। এভাবে মানুষ একটার পর একটা স্বপ্ন রচনা করে আর কস্টের সাগরে নিজে নিজেই ডুবে থাকে। মানুষ একসাথে তার সব স্বপ্ন গুলো দেখতে পায় না তাই তার জীবনের কস্টের অবসান কখনো হয় না। নতুন নতুন স্বপ্ন বা চাওয়া পাওয়াই মানুষকে কস্ট দেয়। আর সে কস্টের রচয়িতা সপ নিজেই। মানুষের চাহিদা অসীম সম্ভবনার চাহিদা স্পর্শ করা।
এবার ভাবুন আপনাকে এমন এক অসীম তলা বিহীন গর্তে ফেলে দেয়া হল যার তলদেশ পৌছতে কয়েক লক্ষ বছর লাগবে। সেখানে না পৌছা পর্যন্ত আপনার মৃত্যু হচ্ছে না।
এই যে আপনি গর্তের ভিতর পড়ন্ত অবস্থায় কোন আঘাত ব্যাথা পাচ্ছেন না তবু কেন আপনার এত কস্ট লাগবে
ReplyForwardAdd reaction
|
প্রথম মৃত্যু
প্রথম মৃত্যুর পর এবং আমাদেরকে শাস্তি দেওয়া হইবে না!’( ৩৭:৫৯) ইহা তো মহাসাফল্য। (৩৭:৬০) এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা,( ৩৭:৬১)
মানুষ জন্মগত ভাবে কেন অন্ধ, আতুর, পুঙ্গু হয়? ; কেন অপরিণত বয়সে মৃত্যু হচ্ছে, ভালো মেয়েটির শ্লীলতাহানী হচ্ছে, কেন নিরপরাধ মানুষ জেল খাটছে,?
আল্লাহ বলেনঃ পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে আমি উহা সংঘটিত করিবার পূর্বেই উহা লিপিবদ্ধ থাকে ;।( 57:22)
এর প্রত্যেকটির পিছনে একটি কারণ এবং জন্মচক্রের রহস্য লুকায়িত রয়েছে । তা না হলে বলতে হয় আল্লাহ পক্ষপাতিত্ব করছেন । কাউকে অন্ধ, খোঁড়া বানাচ্ছেন, আবার কাউকে ভালো বানাচ্ছেন, কিন্তু আল্লাহ তো নির্দোষ- নিরপেক্ষ । আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেনঃ
” যা কিছু মঙ্গল তা (আল্লাহ ) হতে আর যা কিছু মন্দ তা তোমা হতে ( সুরা নেসা ;-৭৯) ।
অথচ আমরা বলে থাকি সবই তো আল্লাহর হুকুমে হয়েছে । আল্লাহর উপর দোষ চাপিয়ে দেই । আমার যা কিছু মন্দ তা যদি আমার কৃতকর্মের ফলই হয়ে থাকে তাহলে আমার কর্মফলে আমিই গ্রেফতার, আল্লাহ নিরপেক্ষ ।
এর যথাযোগ্য সদ্ব্যবহার জান্নাতের দিকে উত্তরন বা প্রমোশন,আর এর অপব্যবহার জাহান্নামের দিকে পশ্চাৎপসরন বা ডিমোশন । তাই তো রব বলেনঃ
তোমাদের অবশ্যি স্তরে স্তরে এক অবস্থা থেকে আর এক অবস্থার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ৮৪:১৯
তবে যারা মুত্তাকী তারা একবারই মৃত্যু বরন করবেন এবং রবের দিদার প্রাপ্ত হয়ে চিরকাল জান্নাতে অবস্থান করবেন। এটি আল্লাহর ঘোষণা। সুরা দোখান, আয়াত ৫৬
” প্রথম মৃত্যুর পর তাহারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করিবে না। আর তাহাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হইতে রক্ষা করিবেন” -(৪৪:৫৬)
আর যারা অস্বীকার কারী অবাধ্য তার দুইবার কিংবা বারবার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করবে যতক্ষন না জান্নাতে যাওয়ার মত পরিশুদ্ধ না হবে। এ বিষয়ে সূরা ইনশিকাকে আল্লাহ বলেনঃ
নিশ্চয় তোমরা ধাপে ধাপে আরোহণ করিবে। (৮৪:১৯)
অন্যত্র আরো পরিস্কার ভাবে আল্লাহ বলেনঃ
আর এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা,( ৩৭:৬১)
এ আয়াতেই জন্ম চক্রের রহস্য লুকায়িত। কারন হলো
ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগের বেলায় আল্লাহ নিরপেক্ষ ।
সুরা মোমিনের ৩৩ নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেছেনঃ
” যে সময়ে তোমরা ফিরিয়া যাইবে পিছনে, আল্লাহর তরফ হইতে থাকিবে না তোমাদের জন্য কোনো সংরক্ষক এবং আল্লাহ যাহাকে ভ্রান্তিতে ফেলেন তাহার জন্য কোনো হাদী নাই ।”
আল্লাহ কাহাকেও ভ্রান্তির মধ্যে ফেলতে চান না ।
কারণ আল্লাহ সূরা হুদে বলে দিয়েছেনঃ “যে ব্যক্তি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করেনা আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেনা । (১১ঃ৫৩)
তাঁরই সৃজিত প্রাকৃতিক নিয়ম যে মানুষ মহামানবের হেদায়েতের বিরোধীতা করলে মৃত্যুর পরে পেছনের দিকে অর্থাৎ পশুকুলে জন্ম নেয় । তখন তাদের জন্য কোনো হাদী থাকে না । একেই আল্লাহর বিভ্রান্তি বলা হয়েছে ।
মোহাম্মদ গোষ্ঠীর সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত (মুসলমান মুত্তাকী অবস্থায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ) মানুষের মুক্তি হবে না এবং জন্মচক্রের ফেরে রুপান্তরিত হয়ে বারবার এই দুনিয়া নামক জাহান্নামে আসতে হবে ।
এই দুনিয়াটাই যে জাহান্নাম এটা মোমিন অর্থাৎ সত্যদ্রষ্টা ব্যতীত কারো পক্ষে উপলব্ধি করা অসম্ভব । আল্লাহপাক কোরানে ঘোষণা করেছেন-
” তোমাদের যদি দিব্যচক্ষু থাকত তাহলে জান্নাত এবং জাহান্নাম দেখতে পেতে ” (সুরা তাকাচ্ছুর ) ।
কোরানের ঘোষণা অনুযায়ী মানুষকে জাহান্নামে দেওয়া হবে বলা হয়নি । মানুষ জাহান্নামে আছে বলা হয়েছে । একটু লক্ষ্য করে দেখুন তো জীবজগৎ ও প্রানিজগতে কয়টা জীব বা প্রানী অন্ধ, আতুর, খোঁড়া ও অঙ্গহীন হয়ে জন্মাচ্ছে ? সুরা বাকারার ২৮ নং আয়াতের দিকে, আমরা একটু লক্ষ্য করিলে কিছু চিন্তায় ফেলিয়া দিবে,আল্লাহ বলেনঃ
তোমরা কিরূপে আল্লাহ্কে অস্বীকার কর ? অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন, তিনি তোমাদেরকে জীবন্ত করেছেন, আবার তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন ও পুনরায় জীবন্ত করবেন, পরিণামে তাঁর দিকেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।
(আল বাকারা – ২৮)
যদি আমরা কোরান মাজিদের বিভিন্ন ধরনের আয়াত দ্বারা আল্লাহপাক মানুষকে বুঝাতে চেয়েছেন যে ” জন্ম মৃত্যুর চক্রে আবব্ধ হইয়া থাকিলে জান্নাতের সন্ধান পাইবে না।
আল্লাহ বলেনঃ আমি তোমাদের জন্য মৃত্যু নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই— তোমাদের স্থলে তোমাদের সদৃশ আনয়ন করতে এবং তোমাদেরকে এমন এক আকৃতিতে সৃষ্টি করতে যা তোমরা জান না আর অবশ্যই তোমরা অবগত হয়েছ (প্রথম সৃষ্টি) সম্পর্কে??, তবে তোমরা উপদেশ গ্ৰহণ করা না কেন? (৫৬ঃ৬০-৬২)
প্রথম মৃত্যুর পর এবং আমাদেরকে শাস্তি দেওয়া হইবে না!ইহা তো মহাসাফল্য। আর এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা,( ৩৭:৫৯-৬১)
আরেক ধাপ এগিয়ে গিয়ে আল্লাহ বলেনঃ “হে মানুষ! তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট পৌঁছা পর্যন্ত কঠোর সাধনা করিতে থাক,পরে তুমি তাঁহার সাক্ষাৎ লাভ করিবে। ( ৮৪ঃ ৬)
পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে আমি উহা সংঘটিত করিবার পূর্বেই উহা লিপিবদ্ধ থাকে ; আল্লাহ্র পক্ষে ইহা খুবই সহজ।(৫৭ঃ২২)
উহারা বলিবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে প্রাণহীন অবস্থায় দুইবার রাখিয়াছ এবং দুইবার আমাদেরকে প্রাণ দিয়াছ। আমরা আমাদের অপরাধ স্বীকার করিতেছি; এখন নিষ্ক্রমণের কোন পথ মিলিবে কি?’ (৪০:১১)
সরাসরি একবার মৃত্যুতে যেন আল্লাহর দিদার পাওয়া যায় সে জন্য আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেনঃ “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহ্কে যথার্থভাবে ভয় কর এবং তোমরা মুসলমান না হইয়া কোন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিও না। (৩ঃ১০২)
জান্নাত জাহান্নাম ততদিন বিদ্যমান যতদিন আসমান এবং জমিন বিদ্যমান সূরা হুদ আয়াত 107 এবং 108
সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন ; নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক তাহাই করেন যাহা তিনি ইচ্ছা করেন। সূরা নম্বর: ১১ আয়াত ১০৭
পক্ষান্তরে, যাহারা ভাগ্যবান তাহারা থাকিবে জান্নাতে, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে, যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন; ইহা এক নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।
সূরা নম্বর: ১১ আয়াত নম্বর: ১০৮
ReplyForward Add reaction |
জন্ম ও মৃত্যু চক্র (পর্ব ৪)
ইসরাফিলের শিঙা
কেয়ামত ও বিচার দিবসের আলোচনার পূর্বে “ইসরাফিলের শিঙা” এর রহস্য ভেদ করতে চাই। ইসলামের প্রচলিত মতবাদ অনুসারে পৃথিবীর সৃষ্টির পর থেকে ইসরাফিল নামক ফেরেস্তা মুখে শিঙ্গা নিয়ে আল্লাহর নির্দেশের অপেক্ষায় বসে আছেন। যখনই নির্দেশ আসবে তিনি সিঙ্গায় ফুঁ দিবেন এবং মহাবিশ্বের ধ্বংস শুরু হয়ে যাবে। তারপর একটি বড় মাঠে পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল মানুষকে একত্রিত করে বিচার শুরু হবে। মৃত্যুর পর থেকে কথিত কেয়ামত পর্যন্ত সময়টাকে তারা নাম দিয়েছে কবরের জীবন বা বারজাখের জীবন। এই কবরের জীবন নিয়েও মতভেদ আছে।
যারা হাদিসে বিশ্বাসী তারা মনে করে মানুষের কৃতকর্ম অনুযায়ী কবরের জীবনেও শাস্তি বা শান্তির ব্যবস্থা আছে। তাই তারা মৃত ব্যক্তির শাস্তি মওকুফ কিংবা শান্তির জন্য মৃত্যুর তৃতীয় দিন অথবা চল্লিশতম দিন কিংবা প্রতি বছর নবীর ওয়ারিশ দাবিকারী ধর্মীয় প্রতিনিধিদেরকে দিয়ে তাদের মাগফেরাতের জন্য দোয়ার ব্যবস্থা করে।
অপরদিকে যারা শুধু কোরআন মানতে চায় তাদের অধিকাংশই মনে করে মৃত্যুর পর কেয়ামত পর্যন্ত কবরের জীবনে কোন শান্তি কিংবা শাস্তি নাই। কবরে অথবা বারজাখে তারা ঘুমিয়ে থাকবে এবং কেয়ামতের পর ঘুম থেকে জেগে হাশরের মাঠে উপস্থিত হবে। অর্থাৎ পৃথিবীর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত যত মানুষ এমনকি নবীগন কিংবা নমরুদ, ফেরাউনের মত দাগী আসামিরাও কবরে ঘুমিয়ে আছে! তারা শুধুমাত্র কোরআন অনুসারী হলেও তাদের এই অযৌক্তিক মতবাদের কারণ হচ্ছে হাদিসবিদদের করা কোরআনের ভুল অনুবাদের জাল ছিন্ন করতে না পারা।
কবরের জীবন নিয়ে হাদিস মান্যকারী ও শুধুমাত্র কোরআন বিশ্বাসীদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও ইসরাফিলের শিঙায় ফুৎকারের মধ্য দিয়ে এই মহাবিশ্বের ধ্বংস হবে এ ব্যাপারে উভয় দলই প্রায় একমত। এর সমর্থনে তারা সাধারণত ৩৬:৫১ ও ৩৬:৫২ নং আয়াত দুটি প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে।
وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَإِذَا هُم مِّنَ الْأَجْدَاثِ إِلَى رَبِّهِمْ يَنسِلُونَ (36:51)
আর যখন সিংগায় ফুক দেওয়া হবে তখনই তারা কবর থেকে তাদের পালনকর্তা দিকে ছুটে আসবে। (৩৬:৫১) ( তাইসিরুল কোরআন)
قَالُوا يَا وَيْلَنَا مَن بَعَثَنَا مِن مَّرْقَدِنَا هذا ما وَعَدَ الرَّحْمَنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُونَ (36:52)
তারা বলবে, ‘হায় আমাদের দুর্ভোগ! আমাদেরকে আমাদের ঘুমের জায়গা থেকে কে উঠালো? (তাদেরকে জবাব দেয়া হবে) ‘‘এটা হল তাই দয়াময় আল্লাহ যার ওয়াদা দিয়েছিলেন, আর রসূলগণও সত্য কথাই বলেছিলেন।” (৩৬/৫২) (তাইসিরুল কোরআন)
তাদের কাছে আমার প্রশ্ন হল –
১- এই আয়াতগুলির মূল আরবিতে কোন ব্যাকরণগত কাল ব্যবহার করা হয়েছে যেমন অতীত, বর্তমান বা ভবিষ্যত?
২- এই আয়াতে কাদের সম্বোধন করা হয়েছে?
শব্দের অযৌক্তিক কুটকৌশল দ্বারা এখান থেকে সেখানে বা এক আয়াত থেকে অন্য আয়াতে ব্যাকরণগত নিয়ম উপেক্ষা করে কিছু দুর্বল যুক্তি উপস্থাপন ছাড়া, স্পষ্টতই তাদের কাছে কোন যথাযথ উত্তর নেই। ৩৬/৫২ আয়াতটি ‘কালু’ (قَالُو) দিয়ে শুরু হয়ছে যা একটি ‘অতীত কাল’ এবং প্রকৃতপক্ষে ‘তারা বলেছে’ হিসাবে অনুবাদ করা উচিত কিন্তু এই আয়াতে আমাদের পণ্ডিতরা ‘কালু’ (قَالُو) কে ‘তারা বলবে’ অর্থে অনুবাদ করেছেন।
অতীতে ঘটে যাওয়া একটি কর্মের ধারাবাহিকতা নির্ধারণের জন্য সেই অতীত ক্রিয়াকে বর্তমান হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে, তবে এটিকে পরম ‘ভবিষ্যতে’ হিসেবে অনুবাদ করা যায় না। উল্লিখিত আয়াতগুলোর আগে ও পরের আয়াতগুলো খেয়াল করলে দেখতে পাবেন যে এই আয়াতগুলি কেবল অবিশ্বাসীদের জন্য এবং এগুলি সেই মুমিনদের জন্য প্রযোজ্য নয় যারা আল্লাহ তায়ালার নিদর্শন এবং নবী (সাঃ) এর নিকট প্রেরিত বাণী গ্রহণ করেছে।
যদি তাই হয়, তাহলে আমরা কিভাবে এই আয়াতগুলো সমগ্র মানবজাতির জন্য উল্লেখ করতে পারি এবং একটি সাধারণ নিয়ম হিসেবে বলতে পারি যে, সবাই মৃত্যুর পর ঘুমিয়ে যাবে এবং ক্বিয়ামতের দিন তাদের কবর থেকে উঠানো হবে? কিছু অতি পণ্ডিত যুক্তি দেয় যে এই কবরগুলি আখেরাতের রাজ্যে অর্থাৎ বারজাখের মধ্যে আছে, যেখানে মানব আত্মাগুলিকে কিয়ামাত পর্যন্ত সংকুচিত আকারে রাখা হয়েছে। এটি পরকাল সম্পর্কে তাদের কোরআন বিরোধী বিশ্বাসকে রক্ষা করার একটি বানোয়াট চেষ্টা, কারণ কুরআন শুধুমাত্র আত্মাকে নয়, ‘দেহ’কেও নির্দেশ করে।
কুরআনের অধিকাংশ আয়াত যেখানে ‘মৃত্যুর পরের জীবন’, ‘পরকাল’ এবং বিচার দিবসের কথা বলা হয়েছে সেগুলোকে প্রচলিত পৌত্তলিক মতবাদের কথিত কেয়ামতের বিশ্বাসের দিকে পাঠকের মনোযোগ সরিয়ে দিতে অসাধুভাবে ভবিষ্যত কাল হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে যাতে কুরআন পাঠকারীরা বিভ্রান্ত হতে পারে যে কিয়ামতের আগে কিছুই হবে না। অন্য কথায় তারা কুরআনের বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যার মাধ্যমে প্রচার করে আসছে যে, মানুষ তার মৃত্যুর পর ঘুমিয়ে যাবে এবং কিয়ামতের দিন তার জবাবদিহির জন্য তাকে পুনরুত্থিত করা হবে এবং তারপর তাকে প্রতিদান দেওয়া হবে। এই অযৌক্তিক ধারণা শুধু কুরআন শিক্ষার পরিপন্থী নয়, আমাদের পরকালের অপরিহার্য ‘বিশ্বাসের’ও পরিপন্থী।
যাইহোক, বিষয়টিতে আরও এগিয়ে যাওয়ার আগে আমি আরবি ভবিষ্যৎ কালের বাক্য গঠনের নিয়মগুলি সংক্ষেপে উল্লেখ করতে চাই যাতে আমরা কুরআনের বিশেষ করে আমাদের বিষয়ের সাথে প্রাসঙ্গিক আয়াতগুলি আরও ভাল করে উপলব্ধি করতে পারি।
অন্যান্য ভাষার মতো, আরবি ভাষাও একটি বাক্যের সঠিক অর্থ প্রকাশ করার জন্য ক্রিয়া, ক্রিয়াবিশেষণ, অব্যয়, সংযোজন অব্যয় এবং উপসর্গ সহ বিভিন্ন মৌলিক পদ ব্যবহার করে। রূপক বাক্যের ক্ষেত্রেও একই ব্যাকরণ ব্যবহার করা হয়।
আরবি ভাষায় ‘সা’ (س) বা ‘সউফা (سوف) উপসর্গ যোগ করে ভবিষ্যৎ কাল গঠন করা হয়। এই উপসর্গ গুলো বাদ দিয়ে ভবিষ্যৎ কালের বাক্য গঠন করা যায় না। তখন আপনাকে উল্লেখ করে দিতে হবে যে বাক্যটি ভবিষ্যৎ কালের। আরবিতে, রূপক বা উপমা এমনকি কথোপকথনে ব্যবহৃত বিভিন্ন রুপ যেমন বাগধারা, শব্দগুচ্ছ, ঘরোয়া কিংবা কথ্য ভাষার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের একটি নির্দেশক থাকা উচিত, কারণ আরবি ভবিষ্যৎ ক্রিয়ার রুপটি বর্তমান ক্রিয়ার মতোই। যেমন: اكتب (আকতুবু) অর্থ ‘আমি লিখি’। ساكتب (সাআকতুবু) অথবা سوف اكتب (সাওফা আকতুবু) অর্থ আমি লিখব।
অতএব, ভবিষ্যত কালের বাক্য গঠনের জন্য, আমাদের হয় সা (س) অথবা সাউফা (سوف) প্রয়োজন। অদূর ভবিষ্যতের জন্য ‘সাউফা’ এবং অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতের জন্য ‘সা’ ব্যবহৃত হয়। সাউফা উপসর্গটি “খুব শীঘ্রই ” এর মতো অর্থ দেয়। যেমন: سوف أدخل إلى هذه الغرفة আমি (শীঘ্রই) শ্রেণিকক্ষে যাব। أكل تفاحاً অর্থ আমি আপেল খাই। سأكل تفاحا আমি আপেল খাব।
ভবিষ্যৎ ক্রিয়াকে না বোধক করার বা আরবীতে ভবিষ্যৎ কালের নেতিবাচক বাক্য গঠনের ব্যাপক সাধারণ উপায় হল উপসর্গ “لن (লান)” ব্যবহার করা যেমন: لن أدخل إلى هذه الغرفة এই শ্রেণিকক্ষে আমি যাব না।
কখনও কখনও বাক্যে “قد (ক্কাদ)” এর ব্যবহার ভবিষ্যতের ধারণা প্রকাশ করে। প্রকৃতপক্ষে উপসর্গ قد + অসমাপিকা ক্রিয়া (imperfect tense) “সম্ভবত” অর্থ দেয়, যা ভবিষ্যতের ক্রিয়া বা ঘটনাকে সম্ভাবনা হিসাবেও বোঝায় যেমন: قد يكتب সম্ভবত, সে লিখবে।
আরবিতে ভবিষ্যৎ কালের বাক্য গঠন করার প্রক্রিয়া অনেকটা ইংরেজিতে ভবিষ্যৎ কালের বাক্য গঠন করার মতো। কারণ ইংরেজি ক্রিয়া পদের ভবিষ্যৎ কালবাচক রূপ নেই। ভবিষ্যৎ কালের বাক্য গঠন করার জন্য ইংরেজি ক্রিয়া পদের পূর্বে shall বা will ব্যবহার করা হয়। একইভাবে আরবিতে সা অথবা সাউফা ব্যবহার করা হয়। “পরবর্তীতে”, “পরবর্তী বছর” বা “আগামীকাল” ইত্যাদির মতো অস্থায়ী ক্রিয়াবিশেষণ ব্যবহার করেও ভবিষ্যতের অভিব্যক্তি প্রসঙ্গ বা সময়সীমার দ্বারা প্রকাশ করা যায়।
কখনও কখনও একটি ঘটনার সময়কে, বর্তমান মুহূর্ত (কথা বলার মুহূর্ত) এর সাপেক্ষে নয় বরং রেফারেন্সের সময়ের সাপেক্ষে, অতীত বা ভবিষ্যত হিসাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়, যা নিজে বর্তমান সময়ের সাপেক্ষে অতীত বা ভবিষ্যত হতে পারে। এইভাবে একটি ঘটনাকে “ভবিষ্যতের অতীত”, “অতীতের ভবিষ্যত” ইত্যাদিতে সংঘটিত হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। যেমন “করিম বলেছিল, রহিম আসবে” বাক্যটিতে রহিম আসবে বাক্যটি ভবিষ্যৎ কালের হলেও এটি মূলত অতীতের কোন একটি ঘটনা।
ইংরেজি বাক্যে modal verb এর ব্যবহার অনেক সময় ভবিষ্যতের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে। যেমন : “I must do this (আমাকে অবশ্যই এটি করতে হবে)”, “We should help him (আমাদের তাকে সাহায্য করা উচিত)”; “I can get out of here (আমি এখান থেকে যেতে পারি)”; “We may win (আমরা জিততে পারি)”; “You might succeed (আপনি সফল হতে পারেন)” ইত্যাদি। একই ধরনের modal verb-এর ব্যবহার কোরআনেও রয়েছে যেমন قد أفلح
কেউ কেউ বলে যে, কোরআন হল রুপক, এবং তারা সম্পূর্ণ কোরআনকে রুপক তথা ভাবার্থ দিয়েই বুঝতে চায়। শুধুমাত্র যেখানে আল্লাহ তায়ালা নিজেই রুপক ব্যবহার করেছেন তা ছাড়া কোরআনের কোন অংশই রুপক নয়। এমনই একটি উদাহরণ হলো কুরআনে প্রদত্ত নরকের বর্ণনা।
نَارُ اللَّهِ الْمُوقَدَةُ (1046)
This is the fire kindled by Allah (104/6)
এটা হল আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত আগুন (১০৪:৬)
(104/7) الَّتِي تَطَّلِعُ عَلَى الْأَفْئِدَةِ
Which rises over the hearts (104/7)
যা অন্তরে উদিত হয় (১০৪:৭)
أولئك مَأْوَاهُمُ النَّارُ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ (10/8)
Their home is in the Fire because of what they used to earn (10:8)
তারা যা উপার্জন করত তার দরুন তাদের বাসস্থান হল আগুন (১০:৮)
উপরের আয়াতগুলিতে ‘আগুন’কে রুপক হিসেবে নেয়া যাবে কারণ আল্লাহ তায়ালা ইতিমধ্যেই ‘আগুন’-এর প্রকৃতি ব্যাখ্যা করেছেন এবং কুরআনের আয়াতে যেখানেই ‘আগুন’ এবং মানুষের উপর এর প্রভাব উল্লেখ করেছেন সেখানে তিনি কী বলতে চান তাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
এখন ৩৬:৫১ নং আয়াতের সঠিক অনুবাদ করা যাক, যেখানে ইসরাফিলের শিঙার (الصُّورِ) কথা আছে, তাহলে ইসরাফিলের শিঙা আসলে কি সেই রহস্য জানা যাবে।
এই আয়াতের প্রেক্ষাপট ও কাদের কথা বলা হয়েছে তা বোঝার জন্য ৩৬:৪১ নং আয়াত থেকে লক্ষ করি। এই সূরায় বিজ্ঞানময় কোরানকে যারা অস্বীকার করে তাদের সতর্ক করে আল্লাহ তায়ালা পূর্ববর্তী বিভিন্ন জাতীর পরিণতি বর্ণনা করেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৩৬:৪১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাদের পূর্ববর্তী বংশধরদের (ذُرِّیَّتَہُمۡ) কথা উল্লেখ করেছেন।
৩৬:৪৫ ও ৩৬:৪৬ এ বলা হয়েছে যে, যখন তাদেরকে (কোরআন অস্বীকারকারীদের বংশধর) তাদের কৃতকর্মের জন্য সতর্ক করা হয়েছিল তখন তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়। এরপর ৩৬:৪৭ ও ৩৬:৪৮ এ বলা হয়েছে, যখন তাদেরকে (বংশধর) আল্লাহর দেয়া রিজিক হতে দান করতে বলা হয়েছিল তখন তারা তাচ্ছিল্য করে প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং বলেছিল কখন সেই ওয়াদা (দান করার পুরস্কার) পূরণ হবে? পরবর্তী আয়াতগুলোতে তাদের (বংশধর) মৃত্যু এবং এর পরবর্তী অবস্থা বর্ণিত হয়েছে।
আমাদের আলেমগন কুরানের বক্তব্যকে “মৃত্যু” থেকে পৌত্তলিক বিশ্বাসের “কেয়ামত”-এর দিকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য পরবর্তী ৩৬:৪৯ নং আয়াতের বিভ্রান্তিকর অনুবাদ করেছেন।
مَا یَنۡظُرُوۡنَ اِلَّا صَیۡحَۃً وَّاحِدَۃً تَاۡخُذُہُمۡ وَہُمۡ یَخِصِّمُوۡنَ (৩৬:৪৯)
বর্তমান কালের ক্রিয়া “يَنظُرُونَ” অর্থ হল: পর্যবেক্ষক (observant), প্রত্যক্ষদর্শী (watcher) বা যারা ইতিমধ্যেই কিছু ঘটতে দেখে বা পর্যবেক্ষণ করে।
আরবী صَیۡحَۃً অর্থ: ভয়ে তীক্ষ্ণ শব্দ করা/ ক্যাঁচ করে ওঠা (Screech), তীব্র চিৎকার/আর্তনাদ করা (yell), অনেক জোরে একটি ছোট্ট শব্দ করা (hooting), চিৎকার করে ওঠা (Exclaiming), জোরে তীক্ষ্ণ কান্না করা (loud shrill piercing cry), চিৎকার/ চেঁচানি(shout) ইত্যাদি।
এবং یَخِصِّمُوۡنَ অর্থ ঐ সকল লোক যারা বিচ্ছন্ন হয়ে যায় (cut), বিয়োগ হয়ে যায় (subtract/deduct), বাদ হয়ে যায় (rebate), কমে যায় (reduce), বাতিল হয়ে যায় (discard) ইত্যাদি
অতএব আয়াতটির সঠিক অনুবাদ হল
مَا یَنۡظُرُوۡنَ اِلَّا صَیۡحَۃً وَّاحِدَۃً تَاۡخُذُہُمۡ وَہُمۡ یَخِصِّمُوۡنَ (৩৬:৪৯)
What they watch/observe, a single screech takes them away and they become deducted/ subtracted.(36:49)
যা তারা প্রত্যক্ষ করে, শুধুমাত্র একটি আর্তনাদ/ আর্তচিৎকার তাদেরকে সরিয়ে নেয় এবং তারা পৃথক/ বিয়োগ হয়ে যায়। (৩৬:৪৯)
বাস্তবে, বর্তমান কালবাচক “يَنظُرُونَ” (ইয়ানজুরুনা) শব্দটি “صَیۡحَۃً” (চাইহাতান) কে নিত্যদিনের একটি বিষয়ে পরিনত করেছে, যা তারা তাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রত্যক্ষ করে। যদি “صَیۡحَۃً” (চাইহাতান) কে কথিত কেয়ামতের দিনের একটি বিকট আওয়াজ হিসাবে নেওয়া হয় তাবে তা কেয়ামতের দিনে একবারই ঘটবে যা এখনও আসেনি। তাহলে তা প্রতিদিনের ঘটনা হিসেবে তারা কিভাবে প্রত্যক্ষ (“يَنظُرُونَ”) করেছিল?
মূলত চাইহাতান (صَیۡحَۃً) কোন বিকট আওয়াজ নয়। এটা দ্বারা মৃত্যু কালে মানুষের দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তের শেষ আওয়াজকে বুঝানো হয়েছে। প্রতিটি মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনে অহরহই এরকম ঘটনা প্রত্যক্ষ করে।
পরবর্তী ৩৬:৫০ আয়াতে বলা হয়েছে যে, মৃত্যুর পরে তারা তাদের পরিবারকে কোন অছিয়ত করতে পারেনা এবং তাদের পরিবারের কাছেও ফিরে আসতে পারে না। এ কথা থেকেও স্পষ্ট যে পূর্ববর্তী আয়াতে তাদের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। ঘটনাটি কেয়ামতের সময়ে হলে তারা তাদের পরিবারের কাছে ফিরে আসার কথা আসতো না, কারণ কিয়ামতের সময় তাদের পরিবারও ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কথা।
৩৬:৫১ নং আয়াতে তাদের মৃত্যু পরবর্তী পুনর্জীবনের কথা বলা হয়েছে।
وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَإِذَا هُم مِّنَ الْأَجْدَاثِ إِلَى رَبِّهِمْ يَنسِلُونَ (36:51)
আরবি نُفِخَ (নুফিখা) শব্দের অর্থ কোন কিছুকে ফোলানো (make swollen), স্ফীত করা (distend/inflate), শ্বাস প্রশ্বাস (breathe), ফুঁ দেওয়া (bloating) ইত্যাদি। অতএব نُفِخَ فِي এর অর্থ হল “কোন কিছুতে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া (to breathe in something)” মানে “কোন কিছুর জীবন দেওয়া (to give life in something)”
পৌত্তলিক বিশ্বাস অনুযায়ী একটি বাঁশিতে ফুৎকারের মাধ্যমে মহাপ্রলয় তথা কেয়ামত শুরু হবে। আর এই গল্পকে ইসলামে অভিযোজিত করতে জালিয়াতি করে কোরআনের الصُّورِ শব্দের অর্থ করা হয়েছে বাঁশি বা শিঙা যা ইসরাফিল নামক ফেরেশতা ফুঁ দেওয়ার জন্য মুখে নিয়ে বসে আছেন।
কিন্তু নির্দিষ্ট বাচক বিশেষ্য الصُّورِ (আচচুর) শব্দের অর্থ : ফটো (photo), ছবি (picture), প্রতিচ্ছবি (image), প্রতিকৃতি (portrait), কাঠামো (framework), পুনরুৎপাদন/ পুনর্গঠন (reproduction), ফটোকপি, নকল/ প্রতিলিপি (duplicate), অনুলিপি (copy), রুপ (form), ইত্যাদি। اِلْتِقاطُ الصُّوَر মানে “ফটোগ্রাফি”, اختيار الصور অর্থ “ছবি বাছাইকরা”। শব্দটির শুরুতে নির্দিষ্ট বাচক নির্দেশক ال দ্বারা পূর্বে উল্লেখিত ব্যক্তিদেরকে নির্দেশ করে। অতএব الصُّورِ শব্দের অর্থ “তাদের প্রতিচ্ছবি/অবয়ব (their image)”
আরবি أَجْدَاثِ (আজদাছ) শব্দের অর্থ সমাধি (sepulchres), যা মানব জীবনের সমাপ্তিকে বুঝায়। কবর এর সাথে أَجْدَاثِ (আজদাছ) এর পার্থক্য হল কবরে মৃতদেহ রাখা হয়, কিন্তু أَجْدَاثِ (আজদাছ) মৃত দেহের সাথে সম্পর্কিত নয়।
وَنُفِخَ فِي الصُّورِ فَإِذَا هُم مِّنَ الْأَجْدَاثِ إِلَى رَبِّهِمْ يَنسِلُونَ
And it was breathed in their image, indeed when they were raised again from the sepultres to their Lord. (36:51)
আর তাদের অবয়বে/ প্রতিচ্ছবিতে শ্বাস-প্রশ্বাস/ জীবন দেওয়া হয়েছিল, যখনই তারা সমাধি থেকে তাদের প্রভুর কাছে পুনরুত্থিত হয়েছিল। (৩৬:৫১)
হঠাৎ বা অপ্রত্যাশি কোন ঘটনাকে প্রকাশ করতে আরবি বাক্যে সংযোজন অব্যয় إِذَا (ইযা) ব্যবহৃত হয়। এবং যেকোনো শব্দের শুরুতে “ف” (ফা) অক্ষরটি আসলে বোঝা যায় যে এর পরবর্তী বিবৃতিটি সর্বজনীন সত্য এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপরোক্ত আয়াতে فَإِذَا দ্বারা বুঝা যায় যে, মৃত্যুর পরপরই মানুষ স্রষ্টার কাছে উপস্থিত হয় এটাই চিরন্তন সত্য আর যখনই সে স্রষ্টার কাছে উপস্থিত হয় তখন তাকে আবার জীবন দেয়া হয়। এখানে কালক্ষেপণের কোন অবকাশ নেই।
পরবর্তী ৩৬:৫২ আয়াতটি শুরু হয়েছে قَالُوا (ক্কালু) দিয়ে যার অর্থ “তারা বলেছিল”। بَعَثَ (বাআছ) শব্দের অর্থ পূনর্জ্জীবিত করা। আর مَّرْقَدِ (মারকাদ) অর্থ সমাধিস্থল (mausoleum), পবিত্র স্মৃতিচিহ্ন সম্বলিত সমাধি/ দেহাবশেষের আধার (shrine) অর্থাৎ মৃত্যুর পর মানুষ যে অবস্থায় থাকে।
قَالُوا يَا وَيْلَنَا مَن بَعَثَنَا مِن مَّرْقَدِنَا هذا ما وَعَدَ الرَّحْمَنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُونَ (36:52)
They said alas our destruction! who regenerated us from our shrine? this is what the Most Merciful was promised and confirmed by the messengers. (36:52)
তারা বলেছিল হায়রে আমাদের সর্বনাশ! আমাদের সমাধিস্থল থেকে কে আমাদের পুনজ্জীবিত করল? এটাই পরম করুণাময়ের প্রতিশ্রুতি এবং যা রসূলদের দ্বারা নিশ্চিত করা হয়েছিল। (৩৬:৫২)
অতএব ৩৬:৫১ নং আয়াতে অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতে সংগঠিত কথিত কেয়ামতের সময় ইসরাফিলের সিঙ্গায় ফুৎকারের কথা বলা হয়নি। বরং অতীতকালের কিছু মানুষের মৃত্যুর পর তাদের পুনরুত্থানের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। মৃত্যুর পরপরই মানুষের বিচার সংঘটিত হয়, ঘুমানোর কোন অবকাশ নেই। আগামী পর্বে কিয়ামত ও বিচার দিবসের আলোচনায় এই সকল বিষয়ের বর্ণনা থাকবে ইনশাআল্লাহ।
শুভেচ্ছান্তে
আবদুল্লাহিল কাউছার
সতর্কীকরণ ঃ এই লেখাটি শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা তাদের প্রচলিত বিশ্বাসের বিপরীত হলেও, আল কুরানে বর্নিত আল্লাহর প্রকৃত বিধানের আনুসরন করতে চায়।এবং তাদের অর্জিত বিশ্বাসকে সত্যের মানদণ্ডে যাচাই করার সাহস রাখে। আর যারা ভিন্নমত পোষণ করেন তাদের প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। আপনাদেরকে সালাম।
ReplyForward Add reaction |
জন্ম ও মৃত্যু চক্র (পর্ব ৮)
অপরাধী ও প্রতারকদের ব্যবস্থাপনা ঃ
গত পর্বে ৬:১২২ নং আয়াত থেকে আমরা জেনেছি যে আল্লাহ তায়ালা মৃতদেরকে জীবিত করে আবার পৃথিবীতে ফেরত পাঠান। মূলত পৃথিবীর অপরাধী ও প্রতারকদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অংশ হিসাবে তাদেরকে পুনরায় পৃথিবীতে ফেরত পাঠানো হয়, যা ৬:১২৩ নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রচলিত অনুবাদে ৬:১২৩ নং আয়াতের অনুবাদ শুধু ভুলই নয়, বরং এই আয়াতের বিভ্রান্তিকর অনুবাদে আমাদের আলেমগণ আল্লাহকে জঘন্যভাবে দোষারোপ করেছেন যে, তিনি প্রত্যেক জনপদে অপরাধীদেরকে নেতা বানিয়েছেন যেন তারা সেখানে একটি চক্রান্ত করতে পারে! এই আয়াতটিও শুরু হয়েছে کَذٰلِکَ শব্দ দ্বারা অর্থাৎ “একইভাবে”। কিভাবে? প্রচলিত অনুবাদে, পূর্বের ৬:১২২ নং আয়াতে কি তার বর্ণনা পাওয়া যায়?
বাস্তবে “وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا فِي كُلِّ قَرْيَةٍ” “এবং একইভাবে বিশ্বের সমস্ত অঞ্চল/ জনপদ আমাদের দ্বারা তৈরি করা হয়েছে”। যেখানে قَرْيَةٍ অর্থ একটি এলাকা/ বিভাগ/অঞ্চল/জনপদ। كَذَلِكَ অর্থ অনুরূপভাবে (likewise), একইভাবে (same way)। “جَعَلْنَا” অর্থ “আমাদের দ্বারা তৈরি করা হয়েছে/ আমরা তৈরি করেছি”। শুরুতে সংযোজন অব্যয় “و” টি মৃত্যুর পরে জীবন দেওয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহর নির্ধারিত পদ্ধতির ধারাবাহিকতায় পূর্ববর্তী ৬:১২২ নং আয়াতের বক্তব্যকে নির্দেশ করে। অতএব, ৬:১২৩ নং আয়াতের “وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا فِي كُلِّ قَرْيَةٍ”- অংশ আমাদের স্পষ্টভাবে বলছে যে, মৃত্যু পরবর্তী জীবন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া আর আল্লাহ পৃথিবীর সমস্ত জনপদ একই প্রক্রিয়ায় তৈরি করেছেন অর্থাৎ “পৃথিবীর সমস্ত গ্রাম শহর বা অঞ্চলকে একইভাবে মানুষকে মৃত্যুর পর জীবন দানের মাধ্যমে জনবহুল করা হয়েছে”।
আল্লাহ্র এই বাণীগুলো আমাদের প্রচলিত কেয়ামতের ভ্রান্ত বিশ্বাসকে প্রত্যাখ্যান করছে, যাতে বলা হয় মানুষ শুধুমাত্র হাশরের দিনে একবার এবং চিরতরে জীবিত হবে। অথচ কোরআনে আল্লাহ বলেছেন মানুষের কৃতকর্ম অনুযায়ী মৃত্যু পরবর্তী জীবন ইতিমধ্যে চলমান। “أَكَابِرَ” শব্দটি আরবি ভাষায় বিশেষ্য হিসেবে পাওয়া যায় না,কিন্তু এটি “كَابِرَ” এর একটি ক্রিয়াপদ যার অর্থ: “عانَدَ, চাপিয়ে দেওয়া (impose), জেদ করা (insist), বিরোধ করা (contend), কোন কিছুকে শক্তভাবে নিয়ন্ত্রণ করা (strictly deal with something), কোন একটি কঠিন পরিস্থিতি বা ব্যক্তিকে যথাযথভাবে সামলানো (strictly cope with), চূড়ান্তভাবে প্রবল পদক্ষেপ গ্রহণ করা (taking an extremely violent action), বর্বরতা (brutality) বা মহা অন্যায় (enormity)।
কুরআনের প্রকৃত বার্তাকে আড়াল করার জন্য আমাদের পন্ডিতগণ আরবি “أَكَابِرَ” শব্দটি পার্সি বিশেষ্য “اکابرين” (আকাবিরীন) দ্বারা প্রতিস্থাপন করেছেন। যার মাধ্যমে একটি ভুল তথ্য উপস্থাপিত হয়েছে যে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর প্রতিটি এলাকায় একজন দুষ্ট, পাপী বা অপরাধীকে নেতা বা শীর্ষ ব্যক্তি করেছেন। কারণ পার্সি শব্দ “اکابرين” (আকাবিরীন) অর্থ মুরুব্বী, শীর্ষ ব্যক্তি বা নেতা। যদিও, ফার্সি “اکابرین” শব্দটি উচ্চপদস্থ ব্যক্তি, বড় ব্যক্তি বা নেতা বোঝাতে ব্যবহৃত হয় যখন এটি সম্পূর্ণ বানান সহ পূর্ণ রূপে লেখা হয়। কিন্তু অর্ধেক শব্দ “أَكَابِرَ” এমনকি ফার্সি ভাষায়ও নেতা বা শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের বোঝায় না কারণ এতে “اکابرین” এর “ین” অনুপস্থিত। সুতরাং কুরআনের এই “أَكَابِرَ” শব্দটির অর্থ নেতা বা শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি নেওয়ার কোন উপায় নেই। যাইহোক, “كَابِرَ” আরবী ভাষায় একটি ক্রিয়াপদ যার পূর্বে “আলিফ” যোগ করে ক্রিয়াটি সংঘটিত করানো অর্থে ব্যবহৃত হয়। অতএব, আরবি “أَكَابِرَ” শব্দটি মূলত অপরাধী এবং ধূর্ত প্রতারকদের (“مُجْرِمِيهَا لِيَمْكُرُواْ فِيهَا”) যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ/ সামলানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে।
আরবি مُجْرِمِ শব্দের অর্থ অপরাধী (criminal)। এই “مُجْرِمِيهَا” বাক্যাংশের “ی” অক্ষরটি “مُجْرِمِ” শব্দটিকে বহুবচনে পরিণত করেছে এবং স্ত্রীলিঙ্গ বাচক সর্বনাম “هَا” হল একটি বহুবচন সর্বনাম (ضمیر الجمع) যা “كُلِّ قَرْيَةٍ” অর্থাৎ সকল গ্রাম, শহর বা জনপদের সর্বনাম হিসাবে “উহার (their)” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সুতরাং “مُجْرِمِيهَا” অর্থ “উহার অপরাধীরা” অর্থাৎ “সকল জনপদের অপরাধীরা”। পরবর্তী শব্দগুচ্ছ “لِيَمْكُرُواْ” যেখনে অব্যয় “لِ” এর অর্থ হল “জন্য (for)/প্রতি (to)” এবং “يَمْكُرُوا” অর্থ যারা তাদের ধূর্ত কৌশলে মানুষকে ধোঁকা দেয়, প্রতারণা করে বা ঠকায়। “فِيهَا” অর্থ “উহার মধ্যে” অর্থাৎ সকল গ্রাম, শহর বা জনপদের মধ্যে। অতএব “أَكَابِرَ مُجْرِمِيهَا لِيَمْكُرُواْ فِيهَا” অর্থ “উহার (জনপদের) অপরাধী ও এর (জনপদের) মধ্যে যারা ধূর্ত প্রতারক তাদেরকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে” “caused to strictly deal with / strictly cope with their criminals and to those who are crafty deceivers in them”.
সুতরাং ৬:১২২ নং আয়াতের ধারাবাহিকতায় “وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا فِي كُلِّ قَرْيَةٍ أَكَابِرَ مُجْرِمِيهَا لِيَمْكُرُواْ فِيهَا ” আয়তাংশটি আমাদের বলছে যে, সমস্ত শহর, গ্রাম বা এলাকা জনবহুল করা হয়েছে একইভাবে তাদের অপরাধী এবং ধূর্ত প্রতারকদেরকে মৃত্যুর পর পুনরায় জীবিত করার মাধ্যমে এবং তাদের নতুন জীবনে তাদেরকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। “وَمَا يَمْكُرُونَ” “এবং তারা যা প্রতারণা করে”। “إِلاَّ بِأَنفُسِهِمْ” “কেবল তাদের নিজের সাথে”। “وَمَا يَشْعُرُونَ” “এবং তারা তা স্বীকার করে /তারা তা অনুভব করে /তারা তা অবহিত হয়েছে”।
প্রচলিত অনুবাদে অর্থ করা হয়েছে “وَمَا يَشْعُرُونَ” তারা বোঝে না /অনুভব/উপলব্ধি করে না ইত্যাদি। অথচ কোরআনের অন্য জায়গায় এই অর্থ বুঝাতে “لاَ يَشْعُرُونَ” ব্যবহৃত হয়েছে। অধিকন্তু, যদি আমরা এই “وَمَا يَشْعُرُونَ” শব্দগুচ্ছের প্রচলিত অনুবাদ গ্রহণ করি মানে তাদের কোন “شعور” বা বোধ নেই তাহলে তারা তাদের ভুল কাজের জন্য শাস্তি পেতে দায়বদ্ধ নয়, যেহেতু তারা জানে না তারা কী করছে। এছাড়া তাদের কোন বিচার হবে না যাদের চেতনা বা বোধশক্তি নেই। অথচ বর্তমানকাল বাচক শব্দ يَشْعُرُونَ অর্থ যাদের চেতনা/বোধ আছে, যারা বোঝে/ অবলোকন করে।
সুতরাং ৬:১২৩ নং আয়াতের সঠিক অনুবাদ হলো
“وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا فِي كُلِّ قَرْيَةٍ أَكَابِرَ مُجْرِمِيهَالِيَمْكُرُواْ فِيهَا وَمَا يَمْكُرُونَ إِلاَّ بِأَنفُسِهِمْ وَمَا يَشْعُرُونَ ”
And in the same way all cities/towns/villages/divisions (of the world) made by us are caused to strictly deal with/ strictly cope with their criminals and cunning deceivers in them, and what they deceive is only themselves and what they acknowledge receipt/what they experience. (6:123)
এবং একইভাবে আমাদের দ্বারা (পৃথিবীর) সমস্ত শহর/গ্রাম/অঞ্চল তৈরি করা হয়েছে যাতে উহার (জনপদের) অপরাধী ও উহার মধ্যে যারা ধূর্ত প্রতারক তাদেরকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এবং তারা (প্রতারকরা) যে প্রতারণা করে তা কেবল তাদের নিজেদের সাথে এবং তারা তা বুঝে/উপলব্ধি করে। (৬:১২৩)
এবং একইভাবে (মৃতকে জীবিত করার মাধ্যমে) আমরা পৃথিবীর সমস্ত গ্রাম/শহর তৈরি করেছি যাতে এর অপরাধী ও এর মধ্যে যারা ধূর্ত প্রতারক তাদেরকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এবং তারা (প্রতারকরা) কেবল তাদের নিজেদের সাথে প্রতারণা করে যা তারা উপলব্ধি করে । ৬:১২৩ (সরল অনুবাদ)
পরবর্তী ৬:১২৪ নং আয়াত বর্ণনা করে যে, তারা আল্লাহর প্রমাণ/আয়াত/নিদর্শনগুলিকে গ্রহণ করে না এই অজুহাতে যে তাদেরকে পূর্বে অনুরূপ কিছু জানানো/নাযিল করা হয়নি।
কুরআনের সুস্পষ্ট আয়াত দেখেও কি আমরা একই কথা বলি না যে আমাদের আলেমরা এসব কথা আমাদের কাছে পৌঁছে দেননি?
যাইহোক, এই আয়াতে স্পষ্ট করা হয়েছে যে এই ধরনের দুষ্ট লোকেরা তাদের সমস্ত প্রতারণামূলক কাজের জন্য অপমান এবং কঠোর শাস্তি পায়।
পরবর্তী ৬:১২৫ নং আয়াতে বর্তমান ক্রিয়াপদ “يُرِدِ” এর অর্থ হল সাড়া দেয়া (respond), জবাব দেয়া (reply), উত্তর দেয়া (answer), প্রত্যাবর্তন (return), পাল্টা জবাব (counter), পরিশোধ করা (repay) , প্রত্যুত্তর দেত্তয়া (riposte), ফেরত দেওয়া (pay back), পুনরুদ্ধার করা (restore), পুনঃপ্রবর্তন করা (reintroduce) ইত্যাদি। “صَدْرَ” শব্দটি মানবদেহের একটি প্রধান অঙ্গ “বুক/বক্ষ” অর্থে ব্যবহৃত হলেও এর দ্বারা মন, উপলব্ধি ক্ষমতা, দূরদৃষ্টি এবং হৃদয়ে সৃষ্ট অনুভূতি বুঝায়।
৬:১২৫ নং আয়াত আমাদের বলছে, যে আল্লাহর সনদ বা তাঁর সংবিধানের দিকে ফিরে যায় বা যে তাঁর নির্দেশনার প্রতি সাড়া দেয় সে খোলা মনের অধিকারী হয় এবং যে তাকে (নিজেকে) ধোঁকা দেয় সে সংকীর্ণ মনের হয়ে যায়। “حَرَجًا كَأَنَّمَا يَصَّعَّدُ فِي السَّمَاءِ ” যেন সে নিশ্চিতভাবে আকাশে আরোহণ করে, অর্থাৎ সে মনে করে সে উঠছে বা উঁচুতে যাচ্ছে কিন্তু বাস্তবে সবই তার ধোঁকা ।
৬:১২৫ নং আয়াতের সঠিক অনুবাদ নিম্নরূপ
“فَمَن يُرِدِ اللّهُ أَن يَهْدِيَهُ يَشْرَحْ صَدْرَهُ لِلْإِسْلاَمِ وَمَن يُرِدْ أَن يُضِلَّهُ يَجْعَلْ صَدْرَهُ ضَيِّقًا حَرَجًا كَأَنَّمَا يَصَّعَّدُ فِي السَّمَاءِ كَذَلِكَ يَجْعَلُ اللّهُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِينَ لاَ يُؤْمِنُونَ”
In fact who responds/answers/replies God’s charter/instruction his chest is broadened/opened for freedom/friendship/harmony/humanity/kindness/compassion/generosity/benevolence/ philanthropy and who responds that deceives him his chest becomes/is made narrow as if he decisively climbing in the sky, in this way God makes this abomination/ horror/outrage /disgrace on those who refuse to believe or refuse to accept. (true translation of the verse 6:125)
প্রকৃতপক্ষে, যে আল্লাহর বিধান/নির্দেশনায় সাড়া দেয়, তার বক্ষ স্বাধীনতা/ বন্ধুত্ব/ সম্প্রীতি/ মানবতা/ দয়া/ মমতা/ বদান্যতা/ উদারতা/ পরোপকারীতার জন্য প্রশস্ত/উন্মুক্ত হয়, আর যে সাড়া দেয়, যা তাকে প্রতারণা করে, তার বক্ষ সরু হয়ে যায়/সঙ্কুচিত হয়, যেন সে নিশ্চিতভাবে আকাশে আরোহণ করেছে। এভাবেই আল্লাহ এই কদর্যতা/ বিভীষিকা/ নির্মমতা/ অসম্মান নির্ধারণ করেন তাদের উপর যারা বিশ্বাস করতে/ মেনে নিতে অস্বীকার করে। (৬:১২৫)
“وَهَـذَا صِرَاطُ رَبِّكَ مُسْتَقِيمًا قَدْ فَصَّلْنَا الْآيَاتِ لِقَوْمٍ يَذَّكَّرُونَ” (6:126)
This is the straight path of your Lord, Our breakdown of verses/ evidences/ signs had always been there for those people who remember them. (6:126)
এটি তোমার প্রভুর সরল পথ, আমাদের আয়াত/প্রমাণ/নিদর্শনের বিশ্লেষণ সর্বদা সেই লোকেদের জন্য রয়েছে যারা সেগুলো মনে রাখে। (৬:১২৬)
“لَهُمْ دَارُ السَّلاَمِ عِندَ رَبِّهِمْ وَهُوَ وَلِيُّهُمْ بِمَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ” 6:127
For those there is welcoming/ friendly/ full of freedom/ harmonious survival at their Lord Who is their guardian through their work done/through their earned deeds. (6:127)
তাদের জন্য তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে সাদর সম্ভাষণপূর্ণ/ বন্ধুত্বপূর্ণ/ স্বাধীনতা পূর্ণ/সম্প্রীতিপূর্ণ বেঁচে থাকার ব্যবস্থা, যিনি তাদের কৃতকর্ম /সম্পাদিত কর্মের কারনে তাদের অভিভাবক। (৬:১২৭)
পারসি ভাষায় “دَارُ” অর্থ ঘর/বাড়ি যেমন “دارالماھی” মানে “মাছের ঘর (fish house)”। দারুস সাফাকাত (دار الشفقت), দারুল আমান (دار الامان), দারুল উলুম (دار العلوم), দারুল খালিফাহ “دارالخلافہ” এই সবগুলোই পার্সি শব্দগুচ্ছ যেখানে “دَارُ” শব্দটি বাড়ি/ঘর অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু আরবিতে বাড়ি বা ঘরকে “المنزل” বলা হয়।
প্রকৃতপক্ষে আরবি “دار” শব্দটি بَلَد অর্থে কোন ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠীর জন্মস্থানকে বুঝায়। (تَحَرَّكَ) আবর্তিত বা স্থানান্তরিত হওয়া (move in or around), নির্দিষ্ট ক্রমে পুনরাবৃত্তি করা, কক্ষপথে দ্রুত ভ্রমণ, প্রচুর পরিমাণে পাওয়া, পর্যাপ্ত পরিমাণের চেয়ে বেশি, অঢেল, (مُتَدَفِّق) আনন্দ ও উত্তেজনায় উপচে পড়া, (مُغِلّ) উপকারী, ফলপ্রসূ, লাভজনক, অনেক কিছু অর্জন করা, লাভজনক বা দরকারী ফলাফল, কল্যাণ অব্যাহত থাকা (continuation of benefits), বেঁচে/টিকে থাকার সুব্যবস্থা (happy survival)
আরবি শব্দ “السَّلاَمِ” এর প্রকৃত অর্থ হল “স্বাধীন অবস্থায় থাকা (state of freedom) “, “স্বাধীনতা (liberty)”, “সম্প্রীতি (harmony)”, “পরোপকারী (philanthropy)”, “উদারতা (benevolence)”, “দয়া (kindness)”, “মানবতা (humanity)”, “বদান্যতা (generosity) “, “সহানুভূতি (compassion)” এবং “বন্ধুত্ব (friendship)” ইত্যাদি।
উপরোক্ত ৬:১২৭ নং আয়াতে আমরা দেখেছি যারা ভাল কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে টিকে খাকার সুব্যবস্থা (Happy survival)। পরের আয়াতে তার বিপরীত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যা আগামী পর্বে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
শুভেচ্ছান্তে
আবদুল্লাহিল কাউছার
সতর্কীকরণ ঃ এই লেখাটি শুধুমাত্র তাদের জন্য যারা তাদের প্রচলিত বিশ্বাসের বিপরীত হলেও, আল কুরানে বর্নিত আল্লাহর প্রকৃত বিধানের আনুসরন করতে চায়। এবং তাদের অর্জিত বিশ্বাসকে সত্যের মানদণ্ডে যাচাই করার সাহস রাখে। আর যারা ভিন্নমত পোষণ করেন তাদের প্রতি আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা রয়েছে। আপনাদেরকে সালাম।
ReplyForward Add reaction |
মানুষকে বুঝানোর জন্যে আল কোর’আনে অনেকগুলো শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন –
বাশার [الْبَشَر ]
নাস [النَّاس ], এবং
ইনসান [ الْإِنْسَان ]
খলিফা –[-خَليفَةً]
উপরের এ তিনটি শব্দের অর্থই মানুষ। কিন্তু তিনটি শব্দ দ্বারা একই চরিত্রের মনুষকে বোঝানো হয় না। অর্থৎ, প্রত্যেকটি শব্দ-ই আলাদা আলাদা চরিত্রের মানুষকে নির্দেশ করে। আল কোর’আনের মুজেযা এটাই।
কোর’আনে একই জিনিসের অনেকগুলো সমর্থক শব্দ থাকলেও প্রত্যেকটি শব্দের আলাদা আলাদা সংজ্ঞা থাকে। প্রতিটি শব্দ-ই ইউনিক। ফলে, কোর’আনের একটি শব্দের স্থানে অন্য কোনো সমর্থক শব্দ বসানো যায় না।
বাশার, নাস এবং ইনসান – এ তিনটি শব্দ মানুষের তিনটি স্তরবিন্যাসকে নির্দেশ করে। মানুষের এই তিনটি স্তরবিন্যাস তাদের ধর্মের কারণে হয়নি। বরং মানুষের স্বভাব ও বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে এই তিনটি স্তরবিন্যাস করা হয়েছে।
ইনসান শব্দটি আরবি ‘নাসিয়ূন‘ উৎস-মূল থেকে সৃষ্টি হয়েছে। যার অর্থ ভুলে যাওয়া বা ভুল হওয়া। সে হিসেবে তার সাদামাটা অর্থ হল, ইনসান এমন সৃষ্টির নাম যে, বারে বারে তার অতীত ভুলে যায়, তার ওয়াদার কথা ভুলে যায়, স্বীয় প্রভুর কথা ভুলে যায়।
আরেক ভাবে যার অর্থ সে বারে বারে ভুল করে।
কোর’আনে যত যায়গায় ‘ইনসান’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, তত যায়গায় মানুষের নেতিবাচক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কথা বর্ণনা করা হয়েছ। কোর’আন থেকে এবার কয়েকটি উদাহরণ দেখুন।
قُتِلَ الۡاِنۡسَانُ مَاۤ اَکۡفَرَہٗ ﴿ؕ۱۷﴾ -আবাসা-১
অর্থঃ মানুষ ধ্বংস হোক! সে কত অকৃতজ্ঞ।
اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لِرَبِّہٖ لَکَنُوۡدٌ ۚ﴿۶﴾ সূরা আদিয়াত-৬
অর্থঃ নিশ্চয় মানুষ তার রবের প্রতি বড়ই অকৃতজ্ঞ।
اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَفِیۡ خُسۡرٍ ۙ﴿۲﴾ সূরা আসর-২
অর্থঃ নিশ্চয় মানুষ ক্ষতির মাঝে নিপতিত।
এছাড়াও সূরা ইউনূসের-১২, হুদ-০৯,ইব্রাহিম -৩৪, বণী ইসরাইল-৬৭, ১০০, ঝুমার-০৮ ও ৪৯, যুখরফ-১৫, সূরা কেয়ামাহ-৩৬ নং আয়াতের মাঝে এরকম কিছু নেতিবাচক চারিত্রিক বিশিষ্টয়ের কথাই উল্লেখ আছে। কিন্তু ‘ইনসান’ স্তরের উপরেও মানুষের অনেক স্তর আছে।
এখন চলুন, সেগুলো দেখে নেয়া যাক।
মর্যাদাগতভাবে ‘ইনসানের’ উপরের স্তরে যেই মানুষেরা আছে, তাদেরকে কোর’আনে বলা হয়েছে ‘নাস’ [النَّاس ]। নাস শব্দের অর্থও মানুষ। কিন্তু ‘নাস’ স্তরের মানুষের মাঝে ভালো মানুষও আছে, আবার খারাপ মানুষও আছে।
‘নাস’ নামক ভালো মানুষের উদাহরণ।
১ – মানুষের মধ্য থেকেই আল্লাহ রাসূল মনোনীত করেন।
اللَّهُ يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ ﴿الحج: ٧٥﴾
“আল্লাহ ফেরেশতা ও মানুষের মধ্য থেকে রাসূল মনোনীত করেন। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্ব দ্রষ্টা।” [সূরা ২২/হাজ্জ – ৭৫]
২ – ইসলামের বিজয় দেখলে যারা দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করবে, তারা ‘নাস’ স্তরের মানুষ।
وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا ﴿النصر: ٢﴾
“এবং আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন।” [সূরা ১১০/নাসর – ২]
৩ – আল্লাহর জন্যে নিজের প্রাণ উৎসর্গকারী মানুষেরাও ‘নাস’ স্তরের মানুষ।
وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْرِي نَفْسَهُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّهِ وَاللَّهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ ﴿البقرة: ٢٠٧﴾
“আর মানুষের মাঝে এমন কিছু মানুষ রয়েছে, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভার্থে আত্ম-বিক্রয় করে থাকে। আল্লাহ হলেন তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান।” [ সূরা ২/বাকারা – ২০৭]
এখন দেখুন, ‘নাস’ নামক খারাপ মানুষদের উদাহরণ।
১ – ‘নাস’ স্তরের মানুষেরা হবে জাহান্নামের জ্বালানি।
فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا وَلَن تَفْعَلُوا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ ﴿البقرة: ٢٤﴾
“আর যদি তোমরা (কোর’আনের অনুরূপ) কিছু না আনতে পার, অবশ্য তা তোমরা কখনও তা আনতে পারবে না, তাহলে সে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য।” [সূরা ২/বাকারা – ২৪]
২ – ‘নাস’ স্তরের মানুষদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ।
وَإِنَّ رَبَّكَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَشْكُرُونَ ﴿النمل: ٧٣﴾
“নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তা মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ।” [সূরা ২৭/নামল – ৭৩]
৩ – ‘নাস’ স্তরের মানুষদের কেউ কেউ খুবই ঝড়গাটে ও তর্কপ্রিয়।
وَمِنَ النَّاسِ مَن يُعْجِبُكَ قَوْلُهُ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيُشْهِدُ اللَّهَ عَلَىٰ مَا فِي قَلْبِهِ وَهُوَ أَلَدُّ الْخِصَامِ ﴿البقرة: ٢٠٤﴾
“মানুষদের মধ্যে কেউ কেউ এমন আছে, পৃথিবীর জীবন সম্পর্কে যার কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবে। সে তার অন্তরের বিষয়ে আল্লাহকে সাক্ষী রাখে। প্রকৃতপক্ষে সে কলহপ্রিয়।” [সূরা ২/বাকারা – ২০৪]
৪ – ‘নাস’ স্তরের অধিকাংশ মানুষ-ই অজ্ঞ।
قُلِ اللَّهُ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يَجْمَعُكُمْ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَا رَيْبَ فِيهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ ﴿الجاثية: ٢٦﴾
“আপনি বলুন, আল্লাহই তোমাদেরকে জীবন দান করেন, অতঃপর তিনি মৃত্যু দেন, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্রিত করবেন, যাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বোঝে না। [সূরা ৪৫/জাছিয়া – ২৬]
লক্ষ্য করুন।
কোর’আনে ‘ইনসান’ শব্দটি যতবার ব্যবহার করা হয়েছে, ততবার-ই সকল মানুষকে একসাথে বুঝানো হয়েছে, এবং সেখানে মানুষের ভালো কোনো চারিত্রিক গুনের কথা উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়েছে – মানুষেরা অকৃতজ্ঞ, মানুষেরা অজ্ঞ, মানুষেরা তর্ক প্রিয়, ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু কোর’আনে যখন ‘নাস’ শব্দ দিয়ে মানুষকে বুঝানো হয়েছে, তখন কিছু কিছু মানুষকে ভালো বলা হয়েছে, এবং অধিকাংশ মানুষকে-ই খারাপ বলা হয়েছে। যেমন, উপরের আয়াতগুলোতে বলা হচ্ছে – অধিকাংশ মানুষ অকৃতজ্ঞ, অধিকাংশ মানুষ অজ্ঞ, অধিকাংশ মানুষ তর্কপ্রিয়।
সুতরাং, এ থেকে বোঝা যায় যে, মানুষের স্তরবিন্যাসে ইনসানের উপরের স্তরে রয়েছে ‘নাস’ নামক স্তর।
তারপর আসুন, ‘নাস’-এর উপরের স্তরে যেসব মানুষদের রাখা হয়েছে, কোর’আনে তাদেরকে বলা হয়েছে ‘বাশার’। ‘বাশার’ শব্দের অর্থও মানুষ। কিন্তু এরা ‘নাস’ স্তরের মানুষদের মত না। কোর’আনে ‘বাশার’ শব্দটি সাধারণত উন্নত চরিত্রের মানুষদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে।
‘নাস’ স্তরের অধিকাংশ মানুষ-ই খারাপ, কিন্তু ‘বাশার’ স্তরের অধিকাংশ মানুষ-ই ভালো। ‘বাশার’ স্তরের মানুষেরা হোক মুসলিম বা অমুসলিম, তাদের চরিত্র সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক উন্নত হয়ে থাকে।
কোর’আন থেকে এবার কয়েকটি উদাহরণ দেখুন।
১ – যে মানুষকে সেজদা করার জন্যে আল্লাহ তায়ালা ইবলিসকে আদেশ দিয়েছেন, সে ছিল ‘বাশার’ স্তরের মানুষ।
قَالَ لَمْ أَكُن لِّأَسْجُدَ لِبَشَرٍ خَلَقْتَهُ مِن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ ﴿الحجر: ٣٣﴾
“(ইবলিস) বলল: আমি এমন নই যে, একজন মানুষকে সেজদা করব, যাকে আপনি পচা কর্দম থেকে তৈরি ঠনঠনে বিশুষ্ক মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। [সূরা ১৫/হিজর – ৩৩]
২ – নবী ও রাসূলগণ ছিলেন ‘বাশার’ স্তরের মানুষ।
قَالَتْ لَهُمْ رُسُلُهُمْ إِن نَّحْنُ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ يَمُنُّ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَمَا كَانَ لَنَا أَن نَّأْتِيَكُم بِسُلْطَانٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ ﴿ابراهيم: ١١﴾
“তাদের রাসূলগণ তাদেরকে বললেন: আমারাও তোমাদের মত মানুষ, কিন্তু আল্লাহ বান্দাদের মধ্য থেকে যার উপরে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। আল্লাহর নির্দেশ ব্যতীত তোমাদের কাছে প্রমাণ নিয়ে আসা আমাদের কাজ নয়; আল্লাহর উপর ইমানদারদের ভরসা করা উচিত।” [সূরা ১৪/ইব্রাহিম – ১১]
৩ – ঈসা (আ)-এর জন্মের সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে রুহ এসে ‘বাশার’ বা মানব আকৃতি ধারণ করে।
فَاتَّخَذَتْ مِن دُونِهِمْ حِجَابًا فَأَرْسَلْنَا إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا ﴿مريم: ١٧﴾
“অতঃপর (লোকজন) থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্যে (মারিয়াম) পর্দা করলো। অতঃপর আমি তার কাছে আমার রূহ প্রেরণ করলাম, সে তার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল।” [সূরা ১৯/মারিয়াম – ১৭]
৪ – আল্লাহ তায়ালা ‘বাশার’ স্তরের মানুষের কাছে তাঁর বার্তা পাঠান।
وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلَّا وَحْيًا أَوْ مِن وَرَاءِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولًا فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاءُ إِنَّهُ عَلِيٌّ حَكِيمٌ ﴿الشورى: ٥١﴾
“মানুষের এমন মর্যাদা নাই যে, আল্লাহ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন। কিন্তু ওহীর মাধ্যমে, অথবা পর্দার অন্তরাল থেকে, অথবা তিনি কোন দূত প্রেরণ করবেন, অতঃপর আল্লাহ যা চান, সে তা তাঁর অনুমতিক্রমে পৌঁছে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বোচ্চ প্রজ্ঞাময়।” [সূরা ৪২/শূরা – ৫১]
দেখুন, ‘বাশার’ স্তরের মানুষেরা ‘নাস’ ও ‘ইনসান’ স্তরের মানুষ থেকে অনেক উন্নত। সকল নবী ও রাসূল ছিলেন ‘বাশার’। ‘বাশার’ স্তরের মানুষের নিকট আল্লাহ ওহী পাঠান। কোর’আনে ‘বাশার’ শব্দটি ইতিবাচক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে।
‘বাশার’ শব্দমূল থেকে আসা আরেকটি শব্দ কোর’আনে প্রচুর ব্যবহার করা হয়েছে। তা হলো ‘বুশরা’। এর অর্থ সুসংবাদ।
এখানে একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন –
কেউ ‘বাশার’ হয়ে গেলেই তিনি পূর্ণ সফল হয়ে যান না। তাকে মুমিন হতে হয়, মুসলিম হতে হয়, এবং তারও উপরে আরো অনেকগুলো উন্নত ধাপ অতিক্রম করতে হয়। এ জন্যে কোর’আনে ‘বাশার’ স্তরের মানুষদের বলা হচ্ছে –
نَذِيرًا لِّلْبَشَرِ ﴿٣٦﴾ لِمَن شَاءَ مِنكُمْ أَن يَتَقَدَّمَ أَوْ يَتَأَخَّرَ ﴿المدثر: ٣٧﴾
“মানুষের জন্যে সতর্ককারী। তোমাদের মধ্যে যে সামনে অগ্রসর হতে চায়, এবং যে পিছিয়ে পড়তে চায়, তার জন্যে (সতর্ক)।” [সূরা ৭৪/মুদ্দাছছির – ৩৬, ৩৭]
দেখুন,
‘বাশার’ শব্দ দিয়ে কোর’আনে নিউট্রাল মানুষদের বোঝানো হয়। অর্থাৎ, যারা ভালো ও মন্দের ঠিক মাঝামাঝিতে অবস্থান করে। ‘বাশার’ স্তরের মানুষেরা ‘ইনসান’ ও ‘নাস’ স্তরের মানুষের মত খারাপ না, আবার তারা পূর্ণ সফলও না। তারা ইচ্ছা করলে ইনসানের স্তরে নেমে যেতে পারে, আবার তারা ইচ্ছা করলে অনেক উন্নত স্তরে পৌঁছে যেতে পারে।
এখনে একটি প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে যখন সৃষ্টি করেছিলেন, তখন আমরা কোন স্তরের মানুষ ছিলাম? বাশার, নাস, নাকি ইনসান?
উত্তরটা কোর’আনে আছে। আল্লাহ বলছেন –
إِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِّن طِينٍ ﴿ص: ٧١﴾
“স্মরণ করুন, যখন আপনার প্রতিপালক ফেরেশতাগণকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করব।” [সূরা ৩৮/সাদ – ৭১]
এখানে যে ধরণের মানুষের সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে, তারা ছিলেন ‘বাশার’ স্তরের মানুষ। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে ‘ইনসান’ বা ‘নাস’ বানিয়ে সৃষ্টি করেননি। বরং তাকে ‘বাশার’ স্তরের ভালো মানুষ হিসাবে-ই সৃষ্ট করেছেন। কিন্তু মানুষ তার চারিত্রিক কারণে-ই নাস এবং ইনসান হয়ে যায়।
এরপর আসুন,
ইনসান, নাস ও বাশার – এ তিনটি স্তরের পাশাপাশি মানুষের আরেকটি স্তর আছে, যার নাম খালিফা। পৃথিবীর অন্য সকল প্রাণী ও বস্তু থেকে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে অধিক সম্মানিত করেছেন। কিন্তু শর্ত হলো, মানুষকে চরিত্রগতভাবে সুন্দর হতে হবে।
ইন্নি জায়েলুন খালিফাতে ফিল আরদ।
وَإِذ قالَ رَبُّكَ لِلمَلٰئِكَةِ إِنّى جاعِلٌ فِى الأَرضِ خَليفَةً ۖ
আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতাদিগকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি।(২ঃ৩০)
ফিরেস্তাগন অবাক হয়ে গেলেন, কারন তারা খলিফার মর্যদা জানতেন। যে মুল মালিকের পুর্ন ক্ষমতা প্রাপ্ত। যার ভাল মন্দ করার, শাসন বিচার,কর্তৃত্ব করার এখতিয়ার থাকবে।
এর পর আল্লাহ বলেন মানুষের ভিতর হতে ছেকে তোমাদেরকে নির্বাচন করেছি তোমরা যেন আমার আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত রাখ জমিনে।
كُنتُم خَيرَ أُمَّةٍ أُخرِجَت لِلنّاسِ تَأمُرونَ بِالمَعروفِ وَتَنهَونَ عَنِ المُنكَرِ وَتُؤمِنونَ بِاللَّهِ ۗ وَلَو ءامَنَ أَهلُ الكِتٰبِ لَكانَ خَيرًا لَهُم ۚ مِنهُمُ المُؤمِنونَ وَأَكثَرُهُمُ الفٰسِقونَ
তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। ( ইমরানঃ১১০)
তোমাদের মানুষের মধ্য হতে উত্তম হিসেবে নির্বাচিত করেছি এ জন্য যে, তোমরা ভাল কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজের নিষেধ করবে।
এখানে ভাল কাজে উপদেশ করা কথা বলেন নাই বা মন্দ কাজে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করতে বলেন নাই।
আদেশ এবং নিষেধ এমন শব্দ যা না মানলে শাস্তুির ব্যবস্থা থাকবে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে এ শাস্তি প্রদানের অনুমোদন খলিফাকে, উখরিজাতিননাসকে দেয়া হলো।
সুতরাং,
ইনসান, নাস, বাশার ও খলিফা – আমরা যেখানেই বা যে স্তরেই থাকি না কেন, আমাদেরকে আরো উপরের স্তরে যেতে হবে। এক-এক করে, মুমিন, মুসলিম এবং তারও উপরের স্তরগুলোতে পৌঁছাতে হবে।
আমরা ইচ্ছা করলে ইনসান, এবং অধিকাংশ ‘নাস’-এর মত নিম্নস্তরে চলে যেতে পারি, আবার ইচ্ছা করলেই আমাদের ‘বাশার’ স্তর থেকে অনেক উপরের স্তরে চলে যেতে পারি। কারন আমাদের খলিফা আখ্যায়িত করে সে ক্ষমতা আমাদের নিকট ন্যাস্ত করেছেন। প্রয়োজন – আমাদের ইচ্ছার।
এ বিষয় গুলি না বুঝার জন্য তকদীর নিয়ে অনেক বিভ্রাটে পড়তে হয়।
ReplyForward Add reaction |
পক্ষান্তরে, যাহারা ভাগ্যবান তাহারা থাকিবে জান্নাতে, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে, যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন; ইহা এক নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।
وَاَمَّا الَّذِيْنَ سُعِدُوْا فَفِى الْجَـنَّةِ خٰلِدِيْنَ فِيْهَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَالْاَرْضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّكَ ؕ عَطَآءً غَيْرَ مَجْذُوْذٍ
সূরা নম্বর: ১১ আয়াত নম্বর: ১০৮
সূর্য হেলিয়া পড়িবার পর হইতে রাত্রির ঘন অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম করিবে এবং কায়েম করিবে ফজরের সালাত। নিশ্চয়ই ফজরের সালাত উপস্থিতির সময়।
اَقِمِ الصَّلٰوۃَ لِدُلُوۡکِ الشَّمۡسِ اِلٰی غَسَقِ الَّیۡلِ وَ قُرۡاٰنَ الۡفَجۡرِ ؕ اِنَّ قُرۡاٰنَ الۡفَجۡرِ کَانَ مَشۡہُوۡدًا ﴿۷۸﴾
English – Sahih International Establish prayer at the decline of the sun [from its meridian] until the darkness of the night and [also] the Qur’an of dawn. Indeed, the recitation of dawn is ever witnessed.
اَقِمِ الصَّلٰوۃَ لِدُلُوۡکِ الشَّمۡسِ اِلٰی غَسَقِ الَّیۡلِ وَ قُرۡاٰنَ الۡفَجۡرِ ؕ اِنَّ قُرۡاٰنَ الۡفَجۡرِ کَانَ مَشۡہُوۡدً ( ১৭ঃ৭৮)
১) أَقِمِ = প্রতিষ্ঠা করো
২) ٱلصَّلَوٰةَ = সালাত
৩) لِدُلُوكِ = ঢেলে পড়ার সময় থেকে
৪) ٱلشَّمْسِ = সুর্য
৫) إِلَىٰ = পর্যন্ত
,৬) غَسَقِ = ঘন অন্ধকার
৭) ٱلَّيْلِ = রাতের
৮) وَقُرْءَانَ = এবং কোরান পাঠ
৯) ٱلْفَجْرِۖ = ফজরে
১০) إِنَّ = নিশ্চয়
১১) قُرْءَانَ = কোরান পাঠ
১২) ٱلْفَجْرِ = ফজরে
১৩) كَانَ = হলো
১৪) مَشْهُودًا = উপস্থিতির / সাক্ষ্য দেয়ার
মুল শব্দ شْهُدً (শাহুদ) সাক্ষ্য দেয়া। Passive form مَشْهُودًا
এবার অনুবাদটি নিজে সাজিয়ে দেখুন কি দাঁড়ায়। আর প্রচলিত অনুবাদ মিলিয়ে দেখুন কি পার্থক্য দেখায়।
অনুবাদঃ সূর্য ঢলে পরার সময় থেকে রাতের ঘন অন্ধকার পর্যন্ত সালাত প্রতিষ্ঠিত করো। এবং নিশ্চয় ফজরের কোরান পাঠ হলো সাক্ষ্য দেয়ার সময়।
*****-
পঞ্চ স্তম্ভে সীমাবদ্ধ রাখা একটি কৌশলঃ
এজিদের পঞ্চ স্তম্ভ থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে তুমি এজিদের মনোনীত ইসলামের আনুগত্য করে চল। ইসলামের আবির্ভাব পঞ্চ স্তম্ভের জন্য ছিল না। বরং জমিনে ন্যায়ের হুকামাত প্রতিষ্ঠার জন্য এসেছিল। আল্লাহ বলেনঃ কুন্তুম খাইরি উখরিজাতি মিনান নাস, তামারুনা বিল মারুফ ওয়া নাহিয়ানিল মুনকার। (তোমাদের মানুষের মধ্য হতে ছেঁকে শ্রেষ্ঠ জাতি হিসাবে নির্বাচন কর হলো এজন্য যে, তোমরা সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎ কাজে বাধা প্রোয়গ করবে)
আয়াতে অনুরোধ করতে বলেন নাই। অর্থাৎ আদেশ বা নিষেধ না মানলে শাস্তি প্রয়োগে বাঁধা দান করতে বলেছেন। তার মানে হুকুমাত এসে যায়।
এজিদ কিন্তু____>>>
১) কালেমা মানতো
২) নামাজ পড়তো
৩) রোজা পালন করতো
৪) হজ্জব্রতও করতো এমন কি
৫) যাকাত ও আদায় করতো।
শুধু জমিনে হুকুমাত কায়েম ছিল অবিশ্বাসী। সে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলকে জিহাদ মনে করত।
হোসেনী ইসলাম আর এজিদী ইসলামের পার্থক্য এতটুকই। দুজনেই মুসলমান। আপনি কোন তাবুর মুসলমান নিজেই সনাক্ত করে নিন নিজেকে। এজিদের তাবু আহেও বড় ছিল এখনো বড়। এ জন্য এজিদের অনুসারীকে মুস্তাকবীর আর হোসেনের তাবুর অনুসারীদের মুস্তাদআফ বলা হয়।
কোরানে আল্লাহ নিজে মুস্তাদআফদের ভালবাসার কথা জানান সর্বত্র।
রিবা- কি প্রচলিত সুদ?
“রিবা” সম্পর্কে আল কুরআনের প্রকৃত বার্তাটা কি?
রিবা শব্দটি আল্লাহ পজেটিভ ও নেগেটিভ দুই অর্থেই কোরানে ব্যবহার করেছেন।
রিবা শব্দের অর্থ বিভিন্ন আয়াতে করেছে “Increase” বা বৃদ্ধি /Growth/rise যেমনঃ
১) وَرَبَتْ ও ফুলেফেঁপে ওঠে 22:5:64
২) لِّيَرْبُوَا۟ যেনবৃদ্ধিপায় 30:39:5
৩) يَرْبُوا۟ বৃদ্ধিপায় 30:39:10
৪) وَرَبَتْ ওস্ফীত হয় (আর শস্য জন্মে) 41:39:12
৫) وَيُرْبِى ও বর্ধিত করেন 2:276:4
৬) أَرْبَىٰ বেশী লাভবান 16:92:18
৪১ঃ৩৯ “তাঁর এক নিদর্শন এই যে, তুমি ভূমিকে দেখবে অনুর্বর পড়ে আছে। অতঃপর আমি যখন তার উপর বৃষ্টি বর্ষণ করি, তখন সে শস্যশ্যামল ও স্ফীত (রাবাত) হয়। নিশ্চয় যিনি একে জীবিত করেন, তিনি জীবিত করবেন মৃতদেরকেও। নিশ্চয় তিনি সবকিছু করতে সক্ষম।”
এই আয়াতে “রাবা” শব্দের অর্থ “সুদ” বসান তো?
কুরানে ”রিবা” শব্দের ব্যবহার থেকে আমরা দেখতে পাই এর মূল (root) অর্থ হলো শ্বাসরোধ/choke। শ্বাসরোধ হলে কি হয়? আপনার ফুসফুসে বাতাস প্রবেশ বাধাগ্রস্হ হয়। আপনার হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ রিবা শব্দের অর্থ দুটি হলেও তারা সমার্থক।
১) শ্বাসরোধ/বাধা/অতিমূল্যায়ন/Over charging। মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগে/গলা চেপে ধরে অতিরিক্ত মূল্য আদায় হলো রিবা। এটি নেগেটিভ অর্থ।
২) বৃদ্ধি পাওয়া/স্ফিত হওয়া/increase/growth। এটি পজিটিভ অর্থ।
একই আয়াতে আল্লাহ “রিবা” শব্দকে দুইটি অর্থেই (পজিটিভ ও নেগেটিভ) ব্যবহার করেছেন। যেমন
২ঃ২৭৬ “আল্লাহ আল-রাবা (প্রচলিত অনুবাদ সুদ) নিশ্চিহ্ন করেন এবং সাদাকাকে বর্ধিত (ইউরবি, পজিটিভ অর্থ) করেন। আল্লাহ পছন্দ করেন না কোন অবিশ্বাসী পাপীকে”
উক্ত আয়াতে আল-রাবা এর সঠিক অনুবাদ হবে “বাধা/obstacles”।
কাজেই ২ঃ২৭৬ এ “আল্লাহ বাধাকে নিশ্চিহ্ন/অপসারণ করেন” অনুবাদটাই বেশি যুক্তিযুক্ত।
এবার দেখি আর কোন্ কোন্ আয়াত রিবাকে “সুদ/usury নাম দিয়ে অর্থবিকৃত করেছে। আয়াতগুলো হলো ২ঃ২৭৫, ২ঃ২৭৮, ৩ঃ১৩০
প্রচলিত অনুবাদঃ
২ঃ২৭৫ “যারা সুদ (আল-রাবা) খায়/consume (ইয়াকুলু) তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলে ব্যবসাও (বাইয়ু) তো সুদ (আল-রাবা) নেয়ারই মত! অথচ আল্লাহ ব্যবসাকে বৈধ করেছেন এবং সুদ (আল-রাবা) হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার।
তাহলে দেখা যাচ্ছে আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল করেছেন আর আল-রাবাকে হারাম করেছেন।
ব্যবসা কি আগে সেটা বুঝতে হবে। ব্যবসায় পণ্যের মূল্য নির্ধারিত হয় সাপ্লাই (যোগান) ও ডিমান্ড (চাহিদা) এর ভিত্তিতে। যে প্রক্রিয়ায় ন্যায্যমূল্যে পণ্যের ক্রয়বিক্রয়ের মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই লাভবান হয়, সন্তুষ্ট হয়, উভয়েরই growth/প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়। এটি পজিটিভ রিবা যা সমাজের অর্থনীতিকে স্ফিত করে।
কিন্তু আপনি যদি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কিংবা পণ্য মজুদ করে কৃত্তিম সংকট তৈরি করেন যথেষ্ট যোগান থাকা সত্বেও, তাহলে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। ক্রেতার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে, গলা চেপে ধরে যদি অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করা হয়, তাহলে সেটা ব্যবসা নয়। সেটাই হলো নেগেটিভ রিবা বা শ্বাসরোধ করা। এতে ক্রেতা ক্ষতিগ্রস্হ হয়। আল্লাহ এই নেগেটিভ রিবাকে হারাম করেছেন। রমজান মাস আসলেই ব্যবসায়ীরা পণ্য মজুদ করে বা সিন্ডিকেট করে পন্যের দাম কৃত্তিমভাবে বাড়িয়ে দেয়।এটিই হলো নেগেটিভ রিবা, যা আল্লাহ হারাম করেছেন। ফাইল আটকে রেখে ঘুষ নেয়াটাও নেগেটিভ রিবা, যা হারাম। এই যে ডাক্তারবাবুরা প্রয়োজন না হলেও একগাদা টেস্ট করতে দিয়ে ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকে কমিশন খান, সেটিও নেগেটিভ রিবা। এখানে রুগীর অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছেন আপনারা। যে মুনাফা/সম্পদ উপার্জন মানুষের শ্বাসরোধ করে অর্জন করেন, সেটাই নেগেটিভ রিবা বা হারাম।
২ঃ২৭৫ আয়াতে রিবা অর্থ কোন ভাবেই সুদ নয়। ব্যাংকে টাকা জমা রাখলে আপনার অর্থ বছরে বৃদ্ধি পায়। এটি পজিটিভ রিবা। এটি ব্যবসা, যা হালাল। কারণ এতে ব্যাংক ও গ্রাহক কারোরই শ্বাসরোধ হচ্ছে না। কোনেপক্ষই কারো অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছে না। বরং চুক্তির শর্ত অনুসারে ব্যবসায়িক লেনদেন হচ্ছে।
এখন আপনি যদি ব্যবসা করার জন্য ব্যাংকের কাছে ঋণ নেন ১০% সুদে, সেটি রিবা নয়। সেটি ব্যাংকের সাথে আপনার চুক্তি যা মাসে মাসে কিস্তি আকারে পরিশোধ করার ব্যাপারে আপনি চুক্তিবদ্ধ। ব্যাংকের কর্মাচারিদের বেতন হয় এই মুনাফা থেকে। আপনি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে সফল হলেন আবার ব্যাংকেরও লাভ হলো। উভয়েই লাভবান হলেন। এটি পজিটিভ রিবা/Growth/অর্থনীতি স্ফিত হওয়া/সম্পদ বৃদ্ধি পাওয়া।
এখন আপনি যদি চুক্তি অনুসারে ঠিকমত মাসিক কিস্তি দিতে না পারেন, তাহলে ব্যাংক আপনাকে সময় দেয় কিস্তি পরিশোধের।
২ঃ২৮০ তে ঋণ গ্রহিতার জন্য কিস্তি পরিশোধের সময় বৃদ্ধির কথা বলছেন আল্লাহ। সেই সময় অতিবাহিত হলে সুদটা চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়তে থাকে। এটিও নেগেটিভ রিবা বা হারাম নয় যদি এসব শর্তগুলো চুক্তিপত্রে লেখা থাকে যে ডিফল্টার হলে কি হারে সুদ বাড়বে। অর্থাৎ চুক্তি অনুসারে যে সুদ বৃদ্ধি পায়, সেটি নেগেটিভ রিবা বা হারাম নয়। অর্থাৎ সকল তথ্য জেনেই আপনি ব্যবসায়িক ঝুঁকি নিয়ে ব্যাংক থেকে এই ঋণ নিয়েছেন।
তবে কেউ যদি কোনো মুমিনের কাছ থেকে ঋণ নেয় এবং সে ব্যবসায় লস খেয়ে অসহায় অবস্থায় পড়ে, তাহলে ঋণদাতা মুমিনের উচিত সেটিকে সাদাকা করা। এই উপদেশও দিচ্ছেন আল্লাহ ২ঃ২৮০ তে। সে কারণেই ২ঃ২৮২ তে ঋণ সংক্রান্ত চুক্তি লিপিবদ্ধ/উকতুব বা কিতাব আকারে সংকলিত করতে বলেছেন আল্লাহ। এই চু্ক্তিপত্র/কিতাব এর বাইরে ব্যাংক যদি চক্রবৃদ্ধি হারে তাদের ইচ্ছামত সুদের হার বৃদ্ধি করে, তাহলে সেটা হবে নেগেটিভ রিবা, কারণ এতে ঋণগ্রহিতার অসহায়ত্বের সুযোগ নিচ্ছে ব্যাংক।
৩ঃ১৩০ সঠিক অনুবাদ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা দূর্বল/ অসহায়দের (জয়িফ) কাছ থেকে সীমাহীন ভাবে (মুজা’ফাতা) আল-রাবা খেয়ো (তাকুলু/consume) না। আর আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপন (ইত্তাকু) করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো।”
প্রচলিত অনুবাদে জয়িফ শব্দটার অর্থ করছে “চক্রবৃ্দ্ধি হারে সুদ” – যা পুরাই ভুয়া অনুবাদ। “জয়িফ হাদিস” মানে দূর্বল হাদিস অনুবাদ করে মোল্লারা। এই জয়িফ শব্দটা আরো আয়াত আছে ৩ঃ১৪৬, ২ঃ২৬৬, ৪ঃ২৮, ৪ঃ৭৫, ৪ঃ৭৬ ইত্যাদি। সবখানেই জয়িফ মানে দূর্বল/অসহায়/শোষিত, কিছু আয়াতে প্রসংগ অনুসারে এর অর্থ হলো অসীম/সীমাহীন/লাগামহীন।
যেমন ৫৭ঃ১১“কে সেই ব্যক্তি, যে আল্লাহকে উত্তম (হাসানা) ধার (ক্বর্য) দিবে, এরপর তিনি তার জন্যে তা বহুগুণে/সীমাহীনভাবে (ইউজায়িফাহু) বৃদ্ধি করবেন এবং তার জন্যে রয়েছে সম্মানিত পুরস্কার।”
অর্থাৎ ৩ঃ১৩০ এ দূর্বল/শোষিত/অসহায়দের কাছ থেকে সহ্যের সীমা ছাড়ানো/লাগামহীনভাবে আল-রাবা (নেগেটিভ রিবা) গ্রহণ না করতে উপদেশ দেয়া হচ্ছে মুমিনদের, যে কাজটা আমাদের ব্যবসায়ীরা রমজান মাস আসলেই করে থাকে। পন্যের দাম বৃ্দ্ধির কারণে গরীবরা খাবার কিনতে পারেনা। এই ৩ঃ১৩০ আয়াতে জয়িফ শব্দটারে “চক্রবৃদ্ধি সুদের হার” অনুবাদ করে ঘোল খাওয়াইতেছে সবাইকে।
হে মু’মিনগণ ! তোমরা সুদ খাইও না চক্রবৃদ্ধিহারে এবং আল্লাহ্কে ভয় কর যাহাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার।
يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَاْكُلُوا الرِّبٰٓوا اَضْعَافًا مُّضٰعَفَةً وَاتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَۚ (২:১৩০)
এ আয়তের এমন অনুবাদে বুঝায় সুদ খাওয়া জায়েজ তবে চক্রবৃদ্ধি হারে খেতে নিষেধ করেছেন।
রেফারেন্স গুলো ভেরিফাই করুন। আর ফতোয়ার উপর ভরসা করে হালালকে হারাম মনে করে জীবন পার করলে সেটা হয়ে যাবে শিরক। কারণ কুরানে আল্লাহ যা হালাল করেছেন (পজিটিভ রিবা/প্রবৃদ্ধি/ব্যবসা),সেটা সুদ নাম দিয়ে করে দিয়েছে হারাম।
আর আল্লাহ যা হারাম করেছেন (নেগেটিভ রিবা/শ্বাসরোধ/choke/অসহায়ত্বের সুযোগে কৃত্তিম সংকট তৈরি করে অতিরিক্ত মুনাফা আদায়), সেটা নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নাই, কারণ ওয়াজের হাদিয়া/লিল্লার একটা বড় অংশ আসে এই অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।
এজিদী আলেম ইসলামের মুল ধারাকে বিকৃত করে ধর্ম অনুরাগী মানুষের মগজ ধোলাই করে রেখেছে ভুল অনুবাদ উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে।
********
বিদায় দেন সেনা ভাই বিদায় দেন গো
এ জাতীরে শাসন করতে পারবো না।
আপনার ডান্ডা ছাড়া আমি
এদের শাসন যোগ্য না।
***********
দে লাড়া !!
এটা কতটুকু সত্য? আমার বন্ধু তালিকার বন্ধুদের কাছে শুধু জানতে চাওয়ার জন্য এই পোস্ট। আর সঠিক কোনটি?
পথিক বললেন, ৫১ দলে বিভক্ত বাংলাদেশের আলেম সমাজ!
“””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””””
(ক-) দেওবন্দী ১৩ গ্রুপ
(খ-) আহলে হাদিস ১৫ গ্রুপ
(গ-) ব্রেলভী ১৬ গ্রুপ
(ঘ-) জঙ্গী ৬ গ্রুপ
(ঙ-)জামায়াতে ইসলামী- ১ গ্রুপ।
মোট ৫১ গ্রুপ।
(ক) দেওবন্দী ১৩ গ্রুপ
১. তাবলিগ জামায়াত (দেওবন্দপন্থী)
২. তাবলিগ জামায়াত (সাদ কান্দলভিপন্থী)
৩. ইসলামী আন্দোলন (চরমোনাই)
৪. জমিয়তে ইসলাম (ওয়াক্কাস)
৫. জমিয়তে ইসলাম (নূর হোসেন)
৬. খেলাফত আন্দোলন
৭. খেলাফত মজলিস
৮. ইসলামী ঐক্যজোট (আজিজুল হক)
৯. ইসলামী ঐক্যজোট (আমিনি)
১০. ইসলামী ঐক্যজোট (মেসবাহুর রহমান)
১১. ইসলামী ঐক্যজোট (ইজহারুল ইসলাম)
১২. নেজামে ইসলাম ও
১৩. হেফাজতে ইসলাম।
(খ) আহলে হাদিস ১৫ গ্রুপ।
১. জমিয়তে আহলে হাদিস
২. শুরাবায়ে আহলে হাদিস
৩. আহলে হাদিস আন্দোলন (গালিব)
৪. আহলে হাদিস আন্দোলন (আ: রাজ্জাক)
৫. আহলে হাদিস তাবলিগে ইসলাম
৬. জমিয়তে শুব্বানে আহলে হাদিস
৭. আহলে হাদিস যুব সংঘ (মুজাফফর)
৮. মাদখালে আহলে হাদিস (আকরামুজ্জামান)
৯. অল ইন্ডিয়া আহলে হাদিস
১০. আঞ্জুমানে আহলে হাদিস
১১. বঙ্গ ও আসাম জমিয়তে আহলে হাদিস
১২. সালাফি আহলে হাদিস
১৩. কুতুবি সালাফি আহলে হাদিস
১৪. সুরুলি সালাফি আহলে হাদিস
১৫. জামিয়াহ আহলে হাদিস।
(গ) ব্রেলভি ১৬ গ্রুপ।
১. আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত (চট্টগ্রাম)
২. ফুলতলী (সিলেট)
৩. দেওয়ানবাগী
৪. রাজারবাগী
৫. ফুলেশ্বরী
৬. সুরেশ্বরী;
৭. চন্দ্রপুরী
৮. এনায়েতপুরী
৯. আটরশী
১০. মাইজভাণ্ডারী
১১. ইসলামিক ফ্রন্ট (মতিন)
১২. ইসলামিক ফ্রন্ট (জুবাইর)
১৩. দাওয়াতুল ইসলাম
১৪. মুনিরিয়া তাবলিগ কমিটি
১৫. তরিকত ফেডারেশন ও
১৫. গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ।
(ঘ) অন্যান্য ৬ গ্রুপ
১. জেএমবি
২. আনসারুল্লাহ বাংলা টিম
৩. হেজবুত তাহরির
৪. হেজবুত তাওহিদ
৫. হরকাতুল জিহাদ ও
৬. আইএস।
(ঙ) জামায়াতে ইসলাম ১ গ্রুপ।
এই পরিসংখ্যানটা নিয়ে একটু ভাবুন। সবার কোরান এক, রাসুল এক, এত ভাগে কেন বিভক্ত?
আনুষ্ঠানিক নামাজ কেন ?
১. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ (হাদিসভিত্তিক নামাজ) কুরআনের সালাতের সমান হতো, তবে কেন কুরআন এমন নামাজের সমালোচনা করে, যেখানে মনোযোগহীনতা, Robotic আচরণ এবং লোক দেখানোর প্রবণতা রয়েছে? কুরআন তো সালাতের সময় সজ্ঞানে থাকা এবং বাণী বুঝে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেয় (৪:৪৩, ৪:১৪২, ৫:৯১, ৮:৩৫)।
২. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, এবং সালাতের উদ্দেশ্য আল্লাহর স্মরণ (dhikr Allah) বাস্তব জীবনে কার্যকর করা হয়, তাহলে কেন আনুষ্ঠানিক নামাজে কুরআনের বাইরে থাকা বিভিন্ন দোয়া ও প্রশংসা উচ্চারণ করতে হয়?
৩. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন জোহর, আসর, মাগরিব ইত্যাদি নামাজের নাম কুরআনে নেই?
৪. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন বিতর নামাজ, যা বাধ্যতামূলক বলা হয়, কুরআনে উল্লেখ নেই?
৫. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন বর্তমানে প্রচলিত আযানের ধরণ কুরআনে নেই?
৬. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন ওজুর সময় তিনবার করে অঙ্গ ধোয়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
৭. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন নামাজের সময় পুরুষ ও নারীদের মাথা ঢাকার বাধ্যবাধকতা কুরআনে নেই?
৮. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন নামাজের জন্য নামাজের Mat ব্যবহারের নির্দেশনা কুরআনে নেই?
৯. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন একটি পাথরের ঘরের দিকে এবং meteorite (The Black Stone) দিকে সিজদা করা কুরআনে নেই?
১০. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন “আল্লাহু আকবার” শব্দটি, যা বারবার উচ্চারণ করা হয়, কুরআনে নেই? (কুরআনে আল্লাহকে বলা হয়েছে আল-কাবির, আকবার নয়)।
১১. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন সানা পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১২. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৩. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন ফাতিহা পড়ার পর “আমিন” বলার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৪. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন জোহর এবং আসরের নামাজ নীরবে পড়া হয়, যা ১৭:১১০ আয়াতের পরিপন্থী?
১৫. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন “সুবহানা রাব্বি আল-আ’লা” এবং “সুবহানা রাব্বি আল-আযিম” বলার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৬. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন “সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৭. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন রাকাত, রাকাতের সংখ্যা এবং নামাজের অবস্থানের ক্রম কুরআনে উল্লেখ নেই?
১৮. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন নামাজের শেষে আততাহিয়াত পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৯. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন তাশাহহুদ পড়ার সময় তর্জনী উঠানোর নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২০. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন নামাজে ইবরাহিম, মুহাম্মদ এবং তাঁদের পরিবারকে দুরুদ পাঠানোর নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২১. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন দোয়া মাসুরা পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২২. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন বিতরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২৩. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন নামাজ শেষে ডান ও বাম দিকে সালাম দেওয়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২৪. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন কুরআন কাজা নামাজের ধারণা প্রত্যাখ্যান করে? বরং কুরআন বলে, missed সালাত শুধুমাত্র সংশোধনীমূলক কাজের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা যায়, নামাজ আদায়ের মাধ্যমে নয় (১৯:৫৯-৬০)।
টীকা ১
দুঃখজনকভাবে, আজকের ঐতিহ্যগত মুসলিম নামাজ একটি মনমরা যান্ত্রিক রূপে পরিণত হয়েছে, যা মূল কুরআনি সালাতের অনুকরণ করার জন্য বিভিন্ন প্রথাগত ক্রিয়া-কলাপ এবং যান্ত্রিক উচ্চারণ যুক্ত করে গড়ে উঠেছে। এতে নামাজের প্রকৃত তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য হারিয়ে গেছে। এমনকি হাদিসেও দেখা যায়, কীভাবে নবীর সাহাবিদের পরবর্তীতে সালাত পরিবর্তিত হয়েছিল। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন: আনাস বিন মালিক (রা.) বলেছেন, “আমি এখনকার দিনগুলিকে নবীর যুগের সাথে তুলনা করতে পারি না। কেউ একজন বললেন, “নামাজ (তেমনই আছে)।” আনাস (রা.) বললেন, “তোমরা নামাজে যা করছ, তা কি নবীর যুগে ছিল?” (সহিহ বুখারি ৫২৯, ভলিউম ১, বই ১০, হাদিস ৫০৭; sunnah.com)। অন্য এক হাদিসে উল্লেখ রয়েছে: আজ-জুহরি বর্ণনা করেছেন, তিনি আনাস বিন মালিক (রা.)-এর কাছে দামেস্কে গিয়ে তাকে কাঁদতে দেখলেন এবং তার কান্নার কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, “আমি নবীর জীবদ্দশায় যা জানতাম, তার মধ্যে এই নামাজ ছাড়া আর কিছুই জানি না, যা আজ হারিয়ে যাচ্ছে (যেমনভাবে পড়া উচিত তা আর পড়া হচ্ছে না)” (সহিহ বুখারি ৫৩০, ভলিউম ১, বই ১০, হাদিস ৫০৭; sunnah.com)।
টীকা ২
ঐতিহ্যগত মুসলিম স্লোগান “আল্লাহু আকবার” মূলত কুরআনের বাইরে তৈরি একটি মন্ত্র, যা প্রথম প্রচলিত হয়েছিল উমাইয়া শাসনামলে, মুসলিম সাম্রাজ্য বিস্তারের সময় সামরিক স্লোগান হিসেবে। আমরা যদি ‘আকবার’ শব্দটিকে ‘কবির’-এর তুলনামূলক বা অতুলনীয় রূপ হিসেবে বিবেচনা করি, তবে উভয় ক্ষেত্রেই আল
ReplyForward Add reaction
শব্দার্থ: وَأَمَّا = আর, الَّذِينَ = যারা, سُعِدُوا = সৌভাগ্য বান হবে , فَفِي = তখন মধ্যে, الْجَنَّةِ = জান্নাতের, خَالِدِينَ = স্থায়ী বসবাসকারী, فِيهَا = তার মধ্যে (তারা থাকবে) , مَا = যতক্ষণ , دَامَتِ = বিদ্যমানথাকবে, السَّمَاوَاتُ = আকাশ সমূহ , وَالْأَرْضُ = ওপৃথিবী, অনুবাদ: আর যারা ভাগ্যবান হবে, তারা জান্নাতে যাবে এবং সেখানে চিরকাল থাকবে, যতদিন পৃথিবী ও আকাশ প্রতিষ্ঠিত থাকবে,। সাতটি আকাশ ও অনুরুপ সাতটি জমিনের কথা ঘোষণা রয়েছে কোরানে। আমরা একটি আকাশ ও একটি জমিনের অনুসন্ধান পেয়েছি মাত্র। অনুরুপ বাকি ছয়টির অস্তিত্ত কোথায়? خٰلِدِیْنَ فِیْهَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَ الْاَرْضُ শব্দার্থ: خَالِدِينَ = তারা স্থায়ী হবে , فِيهَا = তার মধ্যে , مَا = যতক্ষণ , دَامَتِ = বিদ্যমান থাকবে, السَّمَاوَاتُ = আকাশ সমূহ , وَالْأَرْضُ = এবং পৃথিবী,। অনুবাদ: আর সেখানে তারা চিরকাল থাকবে যতদিন আকাশ ও পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত থাকবে। (১১:১০৭) নিশ্চয় তোমরা ধাপে ধাপে আরোহণ করিবে। (৮৪:১৯) প্রথম মৃত্যুর পর এবং আমাদেরকে শাস্তি দেওয়া হইবে না!ইহা তো মহাসাফল্য। (৩৭:৫৯-৬০) আর এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা। (৩৭ঃ৬১) তার মানে প্রতিটি মানুষের জীবন দুইবার দান করেছেন এবং মৃত্যুও দুই বার। ১ম মৃত্যুর পর কোন শাস্তি নেই। কিন্তু ২য় মৃত্যুর পর বিচার হবে ও শাস্তি হবে এবং সে অনুযায়ী অনন্তকাল অবস্থান করবে । হে মানুষ! তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট পৌঁছা পর্যন্ত কঠোর সাধনা করিতে থাক, পরে তুমি তাঁহার সাক্ষাৎ লাভ করিবে। ( ৮৪ঃ ৬) (14:48) শব্দার্থ: يَوْمَ = সেদিন, تُبَدَّلُ = পরিবর্তিত হবে , الْأَرْضُ = (এই) পৃথিবী, غَيْرَ = অন্য, الْأَرْضِ = পৃৃথিবীতে, وَالسَّمَاوَاتُ = এবং আকাশমন্ডলী, وَبَرَزُوا = এবং উপস্থিত হবে (উন্মোচিত হবে ) , لِلَّهِ = আল্লাহর কাছে , الْوَاحِدِ = (যিনি) এক, الْقَهَّارِ = পরাক্রমশালী, অনুবাদ: তাদেরকে সেই দিনের ভয় দেখাও যেদিন পৃথিবী ও আকাশকে পরিবর্তিত করে অন্য রকম করে দেয়া হবে এবং সবাই এক মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর সামনে উন্মুক্ত হয়ে হাযির হবে। এ আয়াতে পৃথিবী ও আকাশ ধংসের কথা বলেছে। নতুন করে আবার সৃষ্টির কোন শব্দের উল্লেখ আছে কি? وَ هُوَ الَّذِیْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ فِیْ سِتَّةِ اَیَّامٍ
নবীকে আল্লাহ বললেনঃ ‘তুমি অন্তরে যা গোপন করছিলে আল্লাহ তা প্রকাশ করে দিলেন (৩৩ঃ৩৭)” নবী কি এমন মনে মনে গোপন করছিলেন যা আল্লাহ প্রকাশ করে দিলেন ? তৎকালীন আরবের লোকেরা পালিত পুত্রদের কে আপন পুত্রদের মতো মনে করতো এবং তাদের নামে পালিত পুত্রদের কে ডাকা হতো এমকি তারা তালাক প্রাপ্ত পালিত পুত্র বধু কে বিয়ে করতো না। আল্লাহ্ তাদের এই কুসংস্কার গুলি উল্লেখিত আয়াত গুলি নাজিলের মাধ্যমে বাতিল করে দিলেন। এবার আসুন মূল প্রসঙ্গে যাই। যায়েদ রাঃ ছিল রাসূল সাঃ এর পালিত পুত্র। রাসূল সাঃ নিজে আগ্রহী হয়ে তাঁর আপন ফুপাত বোন জয়নব রাঃ কে জায়েদের সাথে বিয়ে দেন। কিন্তু তাদের বৈবাহিক জীবন সুখকর ছিলনা। ফলে আল্লাহ্ সিদ্ধান্ত নিলেন যায়েদ রাঃ সাথে জয়নব রাঃ বিবাহ বিচ্ছেদে ঘটিয়ে জয়নব রাঃ কে রাসূল সাঃ এর সাথে বিয়ে দিয়ে আরবের কুসংস্কারটি বাতিল করা, কারন এর পর আর নবী আসবেনা তাই আল্লাহ্ নবীর মাধ্যমে এই কুসংস্কারটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিলেন। রাসূল সাঃ কে আল্লাহ্ গোপনে জয়নব রাঃ সাথে তাঁর বিয়ের কথা যানালেন। কিন্তু প্রচলিত সামাজিকতার কারনে বিষয়টি তাঁর কাছে বিব্রতকর মনে হলো। ফলে যায়েদ রাঃ যখন রাসূল সাঃ এর কাছে এসে জয়নব রাঃ কে তালাক দেওয়ার কথা যানাল তখন রাসূল সাঃ প্রচলিত সামাজিকতার বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বল্লেন “তোমার স্ত্রীকে নিজের কাছে রেখে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর’'(৩৩ঃ৩৭) কারন যদি যায়েদ রাঃ জয়নব কে তালাক না দেয় তবে তাকে আর জয়নব রাঃ কে বিয়ে করতে হবে না, ফলে সমাজের লোকদের কটু কথা শুনতে হবে না। কিন্তু রাসূল সাঃ এর এমন আচরনে জবাবে বল্লেন “হে নবী, আল্লাহকে ভয় কর এবং কাফির ও মুনাফিকদের আনুগত্য করো না(৩৩ঃ১)। আল্লাহ আরো যানিয়ে দিলেন যে সকল নবীরা তার বিধান পালনে অঙ্গীকারা বদ্ধ ফলে আল্লাহ্ রাসূল সাঃ কে সেই অঙ্গীকারা বদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন “আর স্মরণ কর, যখন আমি অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম নবীদের থেকে এবং তোমার থেকে, নূহ, ইবরাহীম,মূসা ও মারইয়াম পুত্র ঈসা থেকে। আর আমি তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম। (৩৩:৭)
আল্লাহ্ যখন দেখল রাসূল সাঃ তাঁর গোপন নির্দেশটি পাশকাটিয়ে যায়েদ রাঃ কে বুঝাচ্ছে তখন আল্লাহ্ গোপন নির্দেশটি কিতাবী ওহীর মাধ্যমে প্রকাশ করে দিলেন।—-
তুমি অন্তরে যা গোপন রাখছ আল্লাহ তা প্রকাশকারী এবং তুমি মানুষকে ভয় করছ অথচ আল্লাহই অধিকতর হকদার যে, তুমি তাকে ভয় করবে; অতঃপর যায়েদ যখন তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম, যাতে পালক পুত্রদের স্ত্রীদের ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে; যখন তারা তাদের স্ত্রীদের সাথে বিবাহসম্পর্ক ছিন্ন করে। আর আল্লাহর নির্দেশ কার্যকর হয়ে থাকে।(আহযাব ৩৩:৩৭) ফুফাতো বোন জয়নবের প্রতি আসক্তি ছিল কি নবীর? না কি পুত্র বধুর রুপে প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছিল? হাদীস বেত্তারা এমনি বুঝাতে চেয়েছে অন্তরে গোপন রাখার বিষয়কে। এতে করে অনুমানের ভিত্তিতে রাসুলের চরিত্রে তারা কালিমা লেপন করেছে বরং। প্রকৃত ঘটনা রাসুল তাঁর সুন্দরী ফুফাত বোন কে পালিত পুত্রের সাথে নিজে বিয়ে দেন। এই বিয়ে যখন কোন ক্রমেই টিকতেছিল না তখন রাসুল হতবিহ্বল হয়ে পড়লেন এ ভেবে যে লোকে কি বলবে? আমি রাসুল হয়ে যে বিয়ের প্রস্তাব কারী সে বিয়ে যদি ভেঙে যায় আমি কি জবাব দিব সমাজের কাছে? সমাজের লোকেরাই বা কি মনে করবে তবে কি আমি আল্লাহর সত্য নবী নই? এমন প্রশ্ন গুলোই তিনি অন্তরে গোপন করতেছিলেন।
|
ওহী হচ্ছে মানুষের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত নির্দেশ যা লৌহমাফুজে সংরক্ষিত মূল কিতাবের অংশ বিশেষ। ওহী জিব্রাইল ফিরিস্তার মাধ্যমে বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অল্প অল্প করে নাযিল করা হয়েছে যাতে মানুষ আল্লাহর নির্দেশ ভাল ভাবে আত্মাস্থ করতে পারে।
কাফিরেরা বলেঃ সমগ্র কুরআন তার নিকট একবারেই অবতীর্ণ হলনা কেন? এভাবেই অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমার হৃদয় ওর দ্বারা মযবূত হয় এবং তা সম্পূর্ণ রুপে আস্তে আস্তে আত্মস্থ করতে পার।(২৫:৩২)
আর কুরআন আমি নাযিল করেছি কিছু কিছু করে, যেন তুমি তা মানুষের কাছে পাঠ করতে পার ধীরে ধীরে এবং আমি তা নাযিল করেছি পর্যায়ক্রমে।(১৭:১০৬)
আসুন প্রথমে যেনে নেই মানুষের নিকট আল্লাহর ওহী অর্থাৎ নির্দেশ পাঠানোর পদ্ধতি।
কোন মানুষই এ মর্যাদার অধিকারী নয় যে, আল্লাহ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন। তিনি কথা বলেন হয় অহীর মাধ্যমে, অথবা পর্দার আড়াল থেকে, কিংবা তিনি কোন বার্তাবাহক (ফেরেশতা) পাঠান এবং সে তাঁর হুকুমে তিনি যা চান অহী হিসেবে দেয়। তিনি সুমহান ও সুবিজ্ঞ।( ৪২:৫১)
উপরের আয়াত থেকে বুঝা যায়ঃ
মানুষ আল্লাহ্ কে দেখবে এবং এই অবস্হায় আল্লাহ্ মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলবে এমন মর্যাদা বা যোগ্যতা মানুষের নেই। এই আয়াতে মানুষের সাথে আল্লাহর প্রত্যক্ষ যোগাযোগের তিনটি মাধ্যম উল্লেখ করা হয়েছে—
১. ফিরিস্তা ছাড়া বিশেষ ওহীর মাধ্যমে আল্লাহ্ মানুষের সাথে কথা বলেন। জন্মগতভাবে আল্লাহ্ সকল মানুষ কে এই বিশেষ অহী দিয়ে থাকেন, যার মাধ্যমে মানুষ সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় বুঝতে পারে। আমরা কোথায় থেকে আসলাম, কে আমাদের সৃষ্টি করলো এই সকল বিষয় নিয়ে আমরা যে মনে মনে কথা বলি তা মূলত আল্লাহর কাছে জিজ্ঞেসার অন্তরালে তার সাথে কথা বলা, কারন এই গুলি আল্লাহ্ই আমাদের অন্তরে উদ্রেক করে দেন। যেমনই ভাবে নবী ইব্রাহীম আঃ এর অন্তরে সৃষ্টি কর্তা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উদ্রেক করে দেওয়া হয়েছিল যখন তিনি নবী ছিলেন না।—-
আর এভাবেই আমি ইবরাহীমকে আসমান সমূহ ও যমীনের রাজত্ব দেখাই এবং যাতে সে দৃঢ় বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়। অতঃপর যখন রাত তার উপর আচ্ছন্ন হল, সে তারকা দেখল, বলল, ‘এ আমার রব’। অতঃপর যখন তা ডুবে গেল, তখন সে বলল, ‘যারা ডুবে যায় আমি তাদেরকে ভালবাসি না’। অতঃপর যখন সে চাঁদ উজ্জ্বলরূপে উদীয়মান দেখল, বলল, ‘এ আমার রব’। পরে যখন তা ডুবে গেল, বলল, ‘যদি আমার রব আমাকে হিদায়াত না করেন, নিশ্চয় আমি পথহারা কওমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব’। অতঃপর যখন সে সূর্য উজ্জ্বলরূপে উদীয়মান দেখল, বলল, ‘এ আমার রব, এ সবচেয়ে বড়’। পরে যখন তা ডুবে গেল, তখন সে বলল, ‘হে আমার কওম, তোমরা যা শরীক কর, নিশ্চয় আমি তা থেকে মুক্ত’।‘নিশ্চয় আমি নিবিষ্ট করেছি আমার চেহারা একনিষ্ঠভাবে তাঁর জন্য, যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই’। (সূরা আল-আন‘আম ৬:৭৫-৭৯) এই বিশেষ অহী সম্পর্কে পরে আবার আলোচনা করবো।
২. আল্লাহ্ সরাসরি আড়ালে থেকে মানুষের সাথে কথা বলতেন এবং নির্দেশ দিতেন।
৪২ঃ৫১ আয়াতে আল্লাহ্ মানুষের সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগের ক্ষেত্রে তিনটি মাধ্যমের কথা বলা হয়েছে। লক্ষ্য করুন আয়াতে মানুষের কথা বলা হয়েছে ফলে আল্লাহর এই বিধান শুধু নবী রাসূল নয় বরং সব মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পবিত্র কুরআনে পৃথিবীতে নবীদের মধ্যে শুধু মূসা আঃ এর সাথে আল্লাহর আড়ালে থেকে কথা বলার সুস্পষ্ট বর্ননা পাওয়া যায় তার অর্থ এই নয় যে আল্লাহ্ শুধু মূসা আঃ এর সাথে আড়াল থেকে কথা বলেছেন অন্য নবী বা সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে বলেন নি। বরং কুরআনের অনেক আয়াত আছে যে গুলির বর্ননা ভঙ্গিতে বুঝা যায় আল্লাহ সরাসরি আড়ালে থেকে অনেক নবী ও সাধারন মানুষের সাথে কথা বলেছেন। ফেরাউন পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার বর্ননা কুরআনে যে ভাবে বর্নিত হয়েছে তাতে বুঝা যায় আল্লাহ ঐ সময়ে আড়ালে থেকে ফেরাউনের সাথে কথা বলেছিলেন।
এ রসূলগণ এরূপ যে, তাদের মধ্যে কাউকে অন্য কারও উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। তাদের মধ্যে কেউ এমন আছে যে, তাদের সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং তাদের কাউকে পদমর্যাদায় উচ্চ করেছেন। ( ২:২৫৩)
লক্ষ্য করুন “তাদের সাথে” বহু বচন শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে “তাদের মধ্যে কেউ এমন আছে যে, তাদের সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন”। আল্লাহর সাথে মূসা আঃ এর কথোপকথন —
যখন মূসা তাঁর পরিবারবর্গকে বললেনঃ আমি অগ্নি দেখেছি, এখন আমি সেখান থেকে তোমাদের জন্যে কোন খবর আনতে পারব অথবা তোমাদের জন্যে জ্বলন্ত অঙ্গার নিয়ে আসতে পারব যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পার।(২৭:৭)
যখন সে তার কাছে পৌছল, তখন পবিত্র ভূমিতে অবস্থিত উপত্যকার ডান প্রান্তের বৃক্ষ থেকে তাকে আওয়াজ দেয়া হল, হে মূসা! আমি আল্লাহ, বিশ্ব পালনকর্তা।(২৮:৩০)
অতঃপর যখন তিনি আগুনের কাছে আসলেন তখন আওয়াজ হল ধন্য তিনি, যিনি আগুনের স্থানে আছেন এবং যারা আগুনের আশেপাশে আছেন। বিশ্ব জাহানের পালনকর্তা আল্লাহ পবিত্র ও মহিমান্বিত।
হে মূসা, আমি আল্লাহ, প্রবল পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
(২৭:৮-৯)
নিশ্চয় আমি তোমার রব; সুতরাং তোমার জুতা জোড়া খুলে ফেল, নিশ্চয় তুমি পবিত্র ‘তুওয়া’ উপত্যকায় রয়েছ’।‘আর আমি তোমাকে মনোনীত করেছি, সুতরাং যা ওহীরূপে পাঠানো হচ্ছে তা মনোযোগ দিয়ে শুন’।‘নিশ্চয় আমি আল্লাহ, আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই; সুতরাং আমার ইবাদাত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর’।( ২০:১২-১৪)
আর যখন আমার নির্ধারিত সময়ে মূসা এসে গেল এবং তার রব তার সাথে কথা বললেন। সে বলল, ‘হে আমার রব, আপনি আমাকে দেখা দিন, আমি আপনাকে দেখব।’ তিনি বললেন, তুমি আমাকে কখনো দেখবে না। বরং তুমি পাহাড়ের দিকে তাকাও, অতঃপর তা যদি নিজ স্থানে স্থির থাকে তবে তুমি অচিরেই আমাকে দেখবে। অতঃপর যখন তার রব পাহাড়ের উপর নূর প্রকাশ করলেন তখন তা তাকে চূর্ণ করে দিল এবং মূসা বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেল। অতঃপর যখন তার হুঁশ আসল তখন সে বলল, ‘আপনি পবিত্র মহান, আমি আপনার নিকট তাওবা করলাম এবং আমি মুমিনদের মধ্যে প্রথম।’(৭:১৪৩)
ইব্রাহীম আঃ এর সাথে আল্লাহর কথপোকথন —
আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহীমকে তার রব কয়েকটি বাণী দিয়ে পরীক্ষা করলেন, অতঃপর সে তা পূর্ণ করল। তিনি বললেন, ‘আমি তোমাকে মানুষের জন্য নেতা বানাব’। সে বলল, ‘আমার বংশধরদের থেকেও’? তিনি বললেন, ‘যালিমরা আমার ওয়াদাপ্রাপ্ত হয় না।(২ঃ১২৪)
নূহ আঃ এর সাথে আল্লাহর কথপোকথন —
আর নূহ তার রবকে ডাকল এবং বলল, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমার সন্তান আমার পরিবারভুক্ত এবং আপনার ওয়াদা নিশ্চয় সত্য। আর আপনি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিচারক’।তিনি বললেন, ‘হে নূহ, সে নিশ্চয় তোমার পরিবারভুক্ত নয়। সে অবশ্যই অসৎ কর্মপরায়ণ। সুতরাং যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, আমার কাছে তা চেয়ো না। আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি, যেন মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত না হও’।সে বলল, ‘হে আমার রব, যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই তা চাওয়া থেকে আমি অবশ্যই আপনার আশ্রয় চাই। আর যদি আপনি আমাকে মাফ না করেন এবং আমার প্রতি দয়া না করেন, তবে আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব’।(১১:৪৫-৪৭)
ফেরাউনের সাথে আল্লাহর কথপোকথন —-
আর বনী-ইসরাঈলকে আমি পার করে দিয়েছি নদী। তারপর তাদের পশ্চাদ্ধাবন করেছে ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী, দুরাচার ও বাড়াবাড়ির উদ্দেশে। এমনকি যখন তারা ডুবতে আরম্ভ করল, তখন বলল, এবার বিশ্বাস করে নিচ্ছি যে, কোন মা’বুদ নেই তাঁকে ছাড়া যাঁর উপর ঈমান এনেছে বনী-ইসরাঈলরা। বস্তুতঃ আমিও তাঁরই অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত।এখন একথা বলছ! অথচ তুমি ইতিপূর্বে না-ফরমানী করছিলে। এবং পথভ্রষ্টদেরই অন্তর্ভুক্ত ছিলে।সুতরাং আজ আমি তোমার দেহটি রক্ষা করব, যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক। আর নিশ্চয় অনেক মানুষ আমার নিদর্শনসমূহের ব্যাপারে গাফেল’।( ১০:৯০-৯২)
যেখানে আল্লাহ্ ফেরাউনের মতো একজন কাফেরের সাথে আড়ালে থেকে কথা বলেছেন, সেখানে রাসূল সাঃ এর সাথে আল্লাহ্ আড়ালে থেকে কথা বলেনি নির্দেশ দেয়নি, যারা এই সমস্ত কথা বলে ও বিস্বাস করে তারা কি গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত নয়???
৩. বার্তাবাহকের মাধ্যমে কিতাবের ওহী পাঠিয়ে কথা বলাঃ কিতাবের ওহী হচ্ছে লৌহ মাহফুজে সংরক্ষিত মূল কিতাবের অংশ বিশেষ যা আল্লাহ্ বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন নবীর মাধ্যমে এই বিধান মানুষের মাঝে পৌঁছানোর ব্যবস্হা করতেন তারা সবাই ছিল পুরুষ। আল্লাহ্ বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জিব্রাইল ফিরিস্তার মাধ্যমে নবীদের নিকট এই বিধান পৌঁছানোর ব্যবস্হা করতেন। আল্লাহ্ নবী ছাড়া এই বিধান সাধারণত মানুষের নিকট পাঠাতেন না।
আর তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল আমি পাঠাইনি যার প্রতি আমি এই ওহী নাযিল করিনি যে, ‘আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই; সুতরাং তোমরা আমার ইবাদাত কর।(২১:২৫)
নিশ্চয় আমি তোমার নিকট ওহী পাঠিয়েছি, যেমন ওহী পাঠিয়েছি নূহ ও তার পরবর্তী নবীগণের নিকট এবং আমি ওহী পাঠিয়েছি ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব, তার বংশধরগণ, ঈসা, আইয়ূব, ইউনুস, হারূন ও সুলায়মানের নিকট এবং দাঊদকে প্রদান করেছি যাবূর।(৪:১৬৩)
আমি তোমার নিকট সুন্দরতম কাহিনী বর্ণনা করছি, এ কুরআন আমার ওহী হিসেবে তোমার কাছে প্রেরণ করার মাধ্যমে। যদিও তুমি এর পূর্বে অনবহিতদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে।(১২:৩)
আর আমি তোমার পূর্বে কেবল পুরুষদেরকেই রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছি, যাদের প্রতি আমি ওহী পাঠিয়েছি। সুতরাং জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর, যদি তোমরা না জানো।(১৬:৪৩)
আর অবশ্যই তোমার পূর্বে আমি রাসূলদের প্রেরণ করেছি এবং তাদেরকে দিয়েছি স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি। আর কোন রাসূলের জন্য এটা সম্ভব নয় যে, আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোন নিদর্শন নিয়ে আসবে। প্রতিটি সুনির্দিষ্ট সময়ের জন্য রয়েছে লিপিবদ্ধ বিধান।
আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন মিটিয়ে দেন এবং যা ইচ্ছা করেন স্থির রাখেন, আর তাঁর কাছেই রয়েছে মূল কিতাব।(১৩:৩৮-৩৯)
আর যমীনে বিচরণকারী প্রতিটি প্রাণীর রিয্কের দায়িত্ব আল্লাহরই এবং তিনি জানেন তাদের আবাসস্থল ও সমাধিস্থল। সব কিছু আছে স্পষ্ট কিতাবে।(১১ঃ৬)
বরং এটা মহান কুরআন। লওহে মাহফুজে লিপিবদ্ধ। (৮৫:২১-২২)
নিশ্চয় আমি তো একে আরবী কুরআন বানিয়েছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার।আর নিশ্চয় তা(কুরআন) আমার কাছে উম্মুল কিতাবে(লওহে মাহফুজে সংরক্ষিত মূল কিতাবে) সুউচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন, প্রজ্ঞাপূর্ণ।( ৪৩:৩-৪)
নিশ্চয় এটি মহিমান্বিত কুরআন,যা আছে সুরক্ষিত (মূল) কিতাবে।(৫৬:৭৭-৭৮)
পবিত্র সত্তাগণ(ফিরিস্তা) ছাড়া আর কেউ তা(লওহে মাহফুজে সংরক্ষিত মূল কিতাব) স্পর্শ করতে পারে না।
(৫৬:৭৯)
আল্লাহ্ কিতাবী ওহী ছাড়াও সাধারণ মানুষ ও নবীদের নিকট আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশ পাঠাতেন।
আসুন আমরা প্রথমে দেখি নবী ছাড়া সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে আল্লাহর নির্দেশ। আমি পুরুষদের কথা বল্লামনা কারন পুরুষদের কথা বল্লে হয়তো আপনারা এক লক্ষ চব্বিশ হাজার পয়গাম্বরের অন্তর্ভুক্ত মনে করবেন। তাই আমি নারীদের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ সমূহের বর্ননা দিচ্ছি। আর এটা কুরআন থেকেই প্রমানিত যে আল্লাহ্ কোন নারী কে নবী করে পাঠাননি ফলে সব নারীরা ছিল সাধারন নারী।
আর আমি মূসার মায়ের প্রতি নির্দেশ পাঠালাম, ‘তুমি তাকে দুধ পান করাও। অতঃপর যখন তুমি তার ব্যাপারে আশঙ্কা করবে, তখন তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ করবে। আর তুমি ভয় করবে না এবং চিন্তা করবে না। নিশ্চয় আমি তাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দেব এবং তাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করব’।( ২৮:৭)
‘যখন আমি তোমার মাতাকে জানিয়ে দিয়েছিলাম যা জানাবার ছিল যে, তুমি তাঁকে সিন্ধুকের মধ্যে রেখে দাও। তারপর তা দরিয়ায় ভাসিয়ে দাও। যেন দরিয়া তাকে তীরে ঠেলে দেয়। ফলে তাকে আমার শত্রু ও তার শত্রু নিয়ে নেবে। আর আমি আমার পক্ষ থেকে তোমার প্রতি ভালবাসা ঢেলে দিয়েছিলাম, যাতে তুমি আমার চোখের সামনে প্রতিপালিত হও’।(২০:৩৯)
আল্লাহ্ মূসা আঃ এর মার নিকট গোপনে নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন। কারন প্রকাশ্যে যদি নির্দেশ পাঠাতেন তবে নিশ্চয়ই ফেরাউনের লোকজন তা যেনে শিশু মূসা আঃ কে হত্যা করতো। আর মূসা আঃ এর মা আল্লাহর এই গোপন নির্দেশ তার নিকট আত্মীয় স্বজনদের কে বলেছিলেন যার প্রমান নিচের আয়াত থেকে যানা যায়।
যখন তোমার বোন (সিন্দুকের সাথে সাথে) চলছিল। অতঃপর সে গিয়ে বলল, ‘আমি কি তোমাদেরকে এমন একজনের সন্ধান দেব, যে এর দায়িত্বভার নিতে পারবে’? অতঃপর আমি তোমাকে তোমার মায়ের নিকট ফিরিয়ে দিলাম; যাতে তার চোখ জুড়ায় এবং সে দুঃখ না পায়। আর তুমি এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে। তখন আমি তোমাকে মানোবেদনা থেকে মুক্তি দিলাম এবং তোমাকে আমি বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করেছি। অতঃপর তুমি কয়েক বছর মাদইয়ানবাসীদের মধ্যে অবস্থান করেছ। হে মূসা, তারপর নির্ধারিত সময়ে তুমি এসে উপস্থিত হলে’।(২০ঃ৪০)
এবার আসুন দেখি মারিয়াম আঃ কাছে আল্লাহ্ কি নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন।
আর স্মরণ কর এই কিতাবে মারইয়ামকে যখন সে তার পরিবারবর্গ থেকে পৃথক হয়ে পূর্ব দিকের কোন এক স্থানে চলে গেল।আর সে তাদের নিকট থেকে (নিজকে) আড়াল করল। তখন আমি তার নিকট আমার রূহ (জিবরীল) কে প্রেরণ করলাম। অতঃপর সে তার সামনে পূর্ণ মানবের রূপ ধারণ করল।মারইয়াম বলল, ‘আমি তোমার থেকে পরম করুণাময়ের আশ্রয় চাচ্ছি, যদি তুমি মুত্তাকী হও’।
সে বলল, ‘আমি তো কেবল তোমার রবের বার্তাবাহক, তোমাকে একজন পবিত্র পুত্রসন্তান দান করার জন্য এসেছি’।মারইয়াম বলল, ‘কিভাবে আমার পুত্র সন্তান হবে? অথচ কোন মানুষ আমাকে স্পর্শ করেনি। আর আমি তো ব্যভিচারিণীও নই’।সে বলল, ‘এভাবেই। তোমার রব বলেছেন, এটা আমার জন্য সহজ। আর যেন আমি তাকে করে দেই মানুষের জন্য নিদর্শন এবং আমার পক্ষ থেকে রহমত। আর এটি একটি সিদ্ধান্তকৃত বিষয়’।(১৯:১৬-২১)
কিতাবের ওহীর বহির্ভুত এই নির্দেশ গুলি আল্লাহ্ পরবর্তীতে মূল কিতাবের ওহীতে স্হান দিয়ে আমাদের কে ঈমানী চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হতে প্রেরনা যোগানোর ব্যবস্হা করেছে যুগের পর যুগ। অপর দিকে আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাঃ এর কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কিতাবী ওহী ছাড়া যে সব নির্দেশ আসতো সেগুলি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা উল্লেখিত আয়াত গুলি নিয়ে একটু চিন্তা করলে অতি সহজেই বুঝতে পারবো।
রাসূল সাঃ এর কাছে কিতাবী ওহী ছাড়াও গোপনে আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশ পাঠাতেনঃ
প্রমান ১
হে নবী, আল্লাহকে ভয় কর এবং কাফির ও মুনাফিকদের আনুগত্য করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সম্যক জ্ঞানী, মহাপ্রজ্ঞাময়। আর তোমার রবের কাছ থেকে তোমার প্রতি যা ওহী করা হয় তুমি তার অনুসরণ কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত।আর তুমি নির্ভর কর আল্লাহর উপর, কর্ম সম্পাদনে আল্লাহই যথেষ্ট।তোমাদের পালিত পুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন।তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত। যদি তোমরা তাদের পিতৃ-পরিচয় না জান, তবে তারা তোমাদের ধর্মীয় ভাই ও বন্ধুরূপে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (আল-আহযাব ৩৩:১-৫)
আর স্মরণ কর, যখন আমি অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম নবীদের থেকে এবং তোমার থেকে, নূহ, ইবরাহীম, মূসা ও মারইয়াম পুত্র ঈসা থেকে। আর আমি তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম।(৩৩:৭)
আর স্মরণ কর, আল্লাহ যার উপর নিআমত দিয়েছিলেন এবং তুমিও যার প্রতি অনুগ্রহ করেছিলে, তুমি যখন তাকে বলেছিলে ‘তোমার স্ত্রীকে নিজের কাছে রেখে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর’। আর তুমি অন্তরে যা গোপন রাখছ আল্লাহ তা প্রকাশকারী এবং তুমি মানুষকে ভয় করছ অথচ আল্লাহই অধিকতর হকদার যে, তুমি তাকে ভয় করবে; অতঃপর যায়েদ যখন তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম, যাতে পালক পুত্রদের স্ত্রীদের ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে; যখন তারা তাদের স্ত্রীদের সাথে বিবাহসম্পর্ক ছিন্ন করে। আর আল্লাহর নির্দেশ কার্যকর হয়ে থাকে। (আল-আহযাব ৩৩:৩৭)
মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।(৩৩:৪০)
উল্লেখিত আয়াত গুলি থেকে আমাদের আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এই কথাটি “তুমি অন্তরে যা গোপন রাখছ আল্লাহ তা প্রকাশকারী (৩৩ঃ৩৭)” এই প্রসঙ্গে যাবার আগে আসুন উল্লেখিত আয়াত গুলি নাজিলের সার সংক্ষেপ জেনে নেই।
তৎকালীন আরবের লোকেরা পালিত পুত্রদের কে আপন পুত্রদের মতো মনে করতো এবং তাদের নামে পালিত পুত্রদের কে ডাকা হতো এমকি তারা তালাক প্রাপ্ত পালিত পুত্র বধু কে বিয়ে করতো না। আল্লাহ্ তাদের এই কুসংস্কার গুলি উল্লেখিত আয়াত গুলি নাজিলের মাধ্যমে বাতিল করে দিলেন।
এবার আসুন মূল প্রসঙ্গে যাই। যায়েদ রাঃ ছিল রাসূল সাঃ এর পালিত পুত্র। রাসূল সাঃ নিজে আগ্রহী হয়ে তাঁর আপন ফুপাত বোন জয়নব রাঃ কে জায়েদের সাথে বিয়ে দেন। কিন্তু তাদের বৈবাহিক জীবন সুখকর ছিলনা। ফলে আল্লাহ্ সিদ্ধান্ত নিলেন যায়েদ রাঃ সাথে জয়নব রাঃ বিবাহ বিচ্ছেদে ঘটিয়ে জয়নব রাঃ কে রাসূল সাঃ এর সাথে বিয়ে দিয়ে আরবের কুসংস্কারটি বাতিল করা, কারন এর পর আর নবী আসবেনা তাই আল্লাহ্ নবীর মাধ্যমে এই কুসংস্কারটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিলেন। রাসূল সাঃ কে আল্লাহ্ গোপনে জয়নব রাঃ সাথে তাঁর বিয়ের কথা যানালেন। কিন্তু প্রচলিত সামাজিকতার কারনে বিষয়টি তাঁর কাছে বিব্রতকর মনে হলো। ফলে যায়েদ রাঃ যখন রাসূল সাঃ এর কাছে এসে জয়নব রাঃ কে তালাক দেওয়ার কথা যানাল তখন রাসূল সাঃ প্রচলিত সামাজিকতার বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বল্লেন “তোমার স্ত্রীকে নিজের কাছে রেখে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর’'(৩৩ঃ৩৭) কারন যদি যায়েদ রাঃ জয়নব কে তালাক না দেয় তবে তাকে আর জয়নব রাঃ কে বিয়ে করতে হবে না, ফলে সমাজের লোকদের কটু কথা শুনতে হবে না। কিন্তু রাসূল সাঃ এর এমন আচরনে জবাবে বল্লেন “হে নবী, আল্লাহকে ভয় কর এবং কাফির ও মুনাফিকদের আনুগত্য করো না(৩৩ঃ১)। আল্লাহ আরো যানিয়ে দিলেন যে সকল নবীরা তার বিধান পালনে অঙ্গীকারা বদ্ধ ফলে আল্লাহ্ রাসূল সাঃ কে সেই অঙ্গীকারা বদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন “আর স্মরণ কর, যখন আমি অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম নবীদের থেকে এবং তোমার থেকে, নূহ, ইবরাহীম,মূসা ও মারইয়াম পুত্র ঈসা থেকে। আর আমি তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম। (৩৩:৭)
আল্লাহ্ যখন দেখল রাসূল সাঃ তাঁর গোপন নির্দেশটি পাশকাটিয়ে যায়েদ রাঃ কে বুঝাচ্ছে তখন আল্লাহ্ গোপন নির্দেশটি কিতাবী ওহীর মাধ্যমে প্রকাশ করে দিলেন।—-
তুমি অন্তরে যা গোপন রাখছ আল্লাহ তা প্রকাশকারী এবং তুমি মানুষকে ভয় করছ অথচ আল্লাহই অধিকতর হকদার যে, তুমি তাকে ভয় করবে; অতঃপর যায়েদ যখন তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম, যাতে পালক পুত্রদের স্ত্রীদের ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে; যখন তারা তাদের স্ত্রীদের সাথে বিবাহসম্পর্ক ছিন্ন করে। আর আল্লাহর নির্দেশ কার্যকর হয়ে থাকে।(আহযাব ৩৩:৩৭)
প্রমান ২
আর যখন নবী তার এক স্ত্রীকে গোপনে একটি কথা বলেছিলেন; অতঃপর যখন সে (স্ত্রী) অন্যকে তা জানিয়ে দিল এবং আল্লাহ্ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন, তখন নবী সেই বিষয়ে স্ত্রীকে কিছু বললেন এবং কিছু বললেন না। যখন সে তাকে বিষয়টি জানাল তখন সে বলল, ‘আপনাকে এ সংবাদ কে দিল?’ সে বলল, ‘মহাজ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ আমাকে জানিয়েছেন।’( ৬৬:৩)
উপরের আয়াত আমরা যা যানতে পারছি তা নিম্নরূপ —
১.”আল্লাহ্ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন” এই জানানো বিষয়টি আল্লাহ্ নবীকে গোপন ওহীর মাধ্যমে যানিয়েছিলেন কিতাবী ওহীর মাধ্যমে নয়। কারন আমরা যানি কিতাবী ওহী জিব্রাইল ফিরিস্তা নিয়ে এসে রাসূল সাঃ কে তা বলতেন এবং রাসূল সাঃ সেই কথা শুনে ওহী লেখকদের কে বলতেন এবং তারা সাথে সাথে তা লিখতেন ফলে আসে পাশের সব মুসলিমরা তা যানতে পারতেন।
উপরের আয়াতটিতে জানানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে কিতাবী ওহীর মাধ্যমে হয়নি বলেই রাসূল সাঃ এর স্ত্রী প্রশ্ন করেছিল “আপনাকে এ সংবাদ কে দিল?’’ যদি প্রকাশ্য ওহীর মাধ্যমে যানানো হতো তবে রাসূল সাঃ এর স্ত্রী তা যানতো এবং সে এই প্রশ্ন করতো না যে “আপনাকে এ সংবাদ কে দিল?’
২. যদি বলেন যানানোর বিষয়টি কিতাবী ওহীর মাধ্যমে যানানো হয়েছে। যদি তাই হয় তবে কুরআনে সেই যানানোর বনর্নাটি নেই কেন??? “কিছু বললেন এবং কিছু বললেন না” প্রশ্ন হচ্ছে ” কিছু বললেন না” এই না বলা বর্ননাটি কুরআনের কোথায় আছে???
উপরের আয়াতটি প্রমান করে যে রাসূল সাঃ এর নিকট কিতাবী ওহী ছাড়াও গোপনে ওহী আসতো। যারা এটা বিশ্বাস করেনা তা মূলত কুরআন কেই অস্বীকার করে।
৩. এই গোপন ওহীর কথা কিন্তু আল্লাহ্ বলেননি যে আমি ওহীর মাধ্যম যানিয়ে দিলাম, দেখুন আল্লাহ্ কি বলেছিলেন “আল্লাহ্ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন” নবী কিন্তু বলেননি যে আল্লাহ্ ওহীর মাধ্যমে আমাকে যানিয়েছেন নবী কি বলেছিল দেখুন ” সে(নবী)বলল, ‘মহাজ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ আমাকে জানিয়েছেন।’’
এ থেকে এটাই প্রমানিত হয় যে এই গোপন কথাটি আল্লাহ আড়ালে থেকে সরাসরি রাসূল সাঃ কে যানিয়েছিলেন।
(৩৩ঃ৩৭ ও ৬৬ঃ৩) আয়াতের লোকে আমরা বুঝতে পারছি যে কিতাবী ওহী ছাড়াও গোপনে আল্লাহ্ সরাসরি আড়ালে থেকে নির্দেশ দিতেন অথবা তাঁর ফিরিস্তা রাসূল সাঃ এর নিকট গোপনে তাঁর নির্দেশ পৌঁছে দিতেন। তার আরেকটি প্রমান নিচে দেওয়া হলো।
প্রমান ৩
স্মরণ কর, যখন তুমি মুমিনদেরকে বলছিলে, ‘তোমাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রব তোমাদেরকে তিন হাজার নাযিলকৃত ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করবেন’?(৩ঃ১২৪)
‘স্মরন কর’ কথা বলার অর্থই হচ্ছে আল্লাহ্ গোপনে এই কথাটি বলেছিল আর যদি কিতাবী ওহীর মাধ্যমে বলা হতো তবে সাহাবীরা যানতে পারতেন ফলে রাসূল সাঃ কে এই কথা বলার প্রয়োজন পড়তো না যে, ‘তোমাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রব তোমাদেরকে তিন হাজার নাযিলকৃত ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করবেন’? আর স্মরন কর কথার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্ আগে গোপন ওহীর মাধ্যমে যানিয়েছেন, পরে সেই কথা কিতাবী ওহীতে বর্ননা করছেন।
আল্লাহ্ আরেকটি মাধ্যমে নবী-রাসুলদের নির্দেশ দিতেন সেটি হচ্ছে স্বপ্নে।
অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম তাকে বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে দেখিযে, তোমাকে যবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি দেখ। সে বললঃ পিতাঃ! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাহে তো আপনি আমাকে সবরকারী পাবেন। যখন পিতা-পুত্র উভয়েই আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইব্রাহীম তাকে যবেহ করার জন্যে শায়িত করল।তখন আমি তাকে ডেকে বললামঃ হে ইব্রাহীম,তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালে! আমি এভাবেই সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।(৩৭:১০২-১০৫)
নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁহার রাসূলকে স্বপ্নটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করিয়া দেখাইয়াছেন, আল্লাহ চাহেন তো তোমরা অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে মস্তকমুন্ডিত অবস্থায় এবং কেশ কর্তিত অবস্থায়। তোমরা কাউকে ভয় করবে না। অতঃপর তিনি জানেন যা তোমরা জান না। এছাড়াও তিনি দিয়েছেন তোমাদেরকে একটি আসন্ন বিজয়। (৪৮:২৭)
ReplyForward Add reaction
|
পক্ষে বিপক্ষে যুক্তিঃ
আল-কোর’আনের বেশ কিছু সূরার প্রারম্ভ হয়েছে, কোন শব্দ বা বাক্যের পরিবর্তে হরফ দিয়ে যেমন: ক্বফ, ছোয়াদ; অথবা আরবী কিছু সুনির্দিষ্ট অক্ষরের বিন্যাস দিয়ে, যেমন: আলিফ লাম মীম, হা মীম, ত্বোয়া সীন মীম, ইয়া সীন ইত্যাদি।
এসকল অক্ষর বা অক্ষরসমূহের বিন্যাসকে সাধারণভাবে হরফ-এ-মুক্বাত্ত্বায়াত বলা হয়।
প্রচলিত মত হলো, এসব অক্ষর ও বিন্যাসিত অক্ষরসমূহের অর্থ আল্লাহ ছাড়া কেউ জানেন না।
মানবজাতির জন্য প্রেরিত কিতাবের অংশ হিসাবে সংযোজিত, তবুও আল্লাহ ছাড়া অপরকোন সত্তার পক্ষে এসব অক্ষরের প্রকৃত অর্থ না জানা হলো আল-কোর’আনের একটি বিশেষ অলৌকিকত্ব।
ফকির, দরবেশ এবং ওলী-আউলিয়াগণ প্রচলিত এই মতের সাথে দ্বিমত করেন।
তাদের দাবী হলো: যেহেতু কোর’আন দাবী করে এটি আরবী ভাষায় অবতীর্ণ, এবং আরবী একটি মানবীয় ভাষা, তাই মানুষের ভাষায় অবতীর্ণ একটি কিতাবের কোন অংশে আল্লাহ এমন কোনকিছু সংযোজন করতে পারেন না, যা মানবীয় বোধে বোধগম্য নয়।
যদি এমন দাবী করা হয় যে, এসব অক্ষরের জ্ঞান আল্লাহ ছাড়া অপরকোন সত্তার পক্ষে অনুধাবনীয় নয়, তবে এর অর্থ দাঁড়ায়, আল্লাহ মানুষের কাছে এমন বার্তা প্রেরণ করেছেন, যা মানুষের বোধগম্যতার অতীত।
দ্বিতীয়ত, এমন দাবীতে পরোক্ষভাবে আল্লাহর উপর অর্থহীন প্রগলভতার অভিযোগ আনা হয়।
তৃতীয়ত, ভাষাকে ভাষা হতে হলে, অবশ্যই তা একেঅপরের নিকট কোন বার্তা বহনের উপযুক্ত হতে হবে, নয়তো তা ভাষা বলে গণ্য হতে পারে না।
যে অক্ষর বা অক্ষরসমূহের অর্থ শুধু একক একটি সত্তা-ই অনুধাবন করতে পারেন, অন্যঅপর কোন সত্তা না, তা কোন ভাষা নয়, কারণ তা ভাষা হওয়ার প্রাথমিক শর্ত পূরণ করে না।
বিপক্ষে যুক্তিঃ
১. বার্তাবাহক হলেন জিবরাইল আঃ। আর মুহাম্মদ সাঃ হলেন বার্তা গ্রাহক।
২. হরফে মুতাওয়াত্তির সম্পর্কে কোরআনে আল্লাহ তা-য়ালা বলেছেনঃ “তিনিই তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছেন, তার মধ্যে আছে মুহকাম আয়াতসমূহ। সেগুলো কিতাবের মূল, আর অন্যগুলো মুতাশাবিহ্। ফলে যাদের অন্তরে রয়েছে সত্যবিমুখ প্রবণতা, তারা ফিতনার উদ্দেশ্যে এবং ভুল ব্যাখ্যার অনুসন্ধানে মুতাশাবিহ্ আয়াতগুলোর পেছনে লেগে থাকে। অথচ আল্লাহ ছাড়া কেউ এর ব্যাখ্যা জানে না। আর যারা জ্ঞানে পরিপক্ক, তারা বলে, আমরা এগুলোর প্রতি ঈমান আনলাম, সবগুলো আমাদের রবের পক্ষ থেকে। আর বিবেকসম্পন্নরাই উপদেশ গ্রহণ করে। (আল-ইমরান,৭)
সো হরফে মুতায়াত্তির আয়াতের মনগড়া ব্যাখ্যা করার ইন্টেশন থেকে সতর্ক হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ এব্যাপারে স্বয়ং আল্লাহ সতর্ক করছেন।
ফী আমানিল্লাহ!
তবে বেশ কিছু আয়াতের ইংগিত থেকে এ হরফ গুলো র সাংকেতিক কারন অবশ্যই জানা জায়। তবে গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছাড়া তা কখনোই বুঝার সক্ষম হবেন না।
যেমনঃ ১) যদি পুর্ব নির্ধারিত না হত তবে আমি সবাইকে এক দলের অন্তরভুক্ত করে দিতাম।
২) ভাগ্য পুর্ব নির্ধারিত।
৩) বাম পাশের দল
৪) ইহাতে প্রবেশ করতে পারে না মিথ্যে সন্মুখ ও পিছন দিক হতে।
৫) আমি যাকে ইচ্ছে হেদায়েত দেই, যাকে ইচ্ছে গোমরাহ করি।
@@ তাহলে মানুষের দোষ কোথায়, বিচার কেন?
দুনিয়া যদি পরীক্ষা ক্ষেত্রই হয় তবে পড়াশুনার প্রস্তুতি কোথায় হয়েছিল।
লৌহ মাহফুজে তা সংরক্ষিত আছে।
এ রুপ বেশ কিছু আয়াত আছে যা আলিম – লাম- মীম, এমন মুতাসাববির শব্দ সমুহের ব্যাখ্যা সুস্পষ্ট ভাবে দেয়। তবে সেখানে কোন প্রোগ্রাম লুকিয়ে রেখেছেন রব তা মানুষ তো দূরে থাক আরশ সংরক্ষনকারী ফিরেস্তারাও জানেন না।
ReplyForward Add reaction |
কোরানে ৮২ বার সালাতে কথা বলে গুরুত্ত আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু প্রচলিত আনুষ্ঠানিক সালাতকে নয়। বরং প্রচলিত আনুষ্ঠানিক নামাজ কোরানে বর্ণিত সালাতকে নিন্মোক্ত ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে। যাচাই করে একটু দেখে নেই কি সেগুলি।
১. যদি প্রচলিত হাদিস ভিত্তিক নামাজ কুরআনের সালাতের মত হতো, তবে কেন কুরআন এমন নামাজের সমালোচনা করে, যেখানে মনোযোগহীনতা, Robotic আচরণ এবং লোক দেখানোর প্রবণতা রয়েছে? কুরআন তো সালাতের সময় সজ্ঞানে থাকা এবং বাণী বুঝে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেয় (৪:৪৩, ৪:১৪২, ৫:৯১, ৮:৩৫)।
২.সালাতের উদ্দেশ্য আল্লাহর স্মরণ এবং বাস্তব জীবনে তা কার্যকর করা , তাহলে কেন প্রচলিত নামাজে কুরআনের বাইরে থাকা বিভিন্ন দোয়া ও প্রশংসা উচ্চারণ করতে হয়?
৩. জোহর, আসর, মাগরিব ইত্যাদি নামাজের নাম কুরআনে নেই কেন?
৪. বিতর নামাজকে বাধ্যতামূলক বলা হয়, অথচ কুরআনে তার কোন উল্লেখ নেই কেন?
৫. নামাযের পুর্বে প্রচলিত আযানের ধরণ কুরআনে নেই?
৬. ওজুর সময় তিনবার করে অঙ্গ ধোয়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
৭. নামাজের সময় পুরুষ ও নারীদের মাথা ঢাকার বাধ্যবাধকতা কুরআনে নেই?
৮. নামাজের জন্য জায়নামাজ ব্যবহারের নির্দেশনা কুরআনে নেই?
৯. কাবা ঘরের দিকে সিজদা করার কথা কুরআনে নেই?
১০. “আল্লাহু আকবার” শব্দটি, যা বারবার উচ্চারণ করা হয়, কুরআনে তা নেই? (কুরআনে আল্লাহকে বলা হয়েছে আল-কাবির, আকবার নয়)।
১১. প্রচলিত নামাজে যে সানা পড়া হয় কুরআনে তার কোন নির্দেশনা নেই?
১২. প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৩. সূরা ফাতিহা পড়ার পর “আমিন” বলার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৪. জোহর এবং আসরের নামাজ নীরবে পড়া হয়, যা ১৭:১১০ আয়াতের পরিপন্থী?
১৫. “সুবহানা রাব্বি আল-আ’লা” এবং “সুবহানা রাব্বি আল-আযিম” বলার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৬. “সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলার নির্দেশনাও কুরআনে নেই?
১৭. রাকাত, রাকাতের সংখ্যা এবং নামাজের অবস্থানের ক্রম কুরআনে উল্লেখ নেই?
১৮. প্রচলিত নামাজের শেষে আত্তাহিয়াতু পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৯. তাশাহহুদ পড়ার সময় তর্জনী উঠানোর নির্দেশনা কুরআনে নেই এটি বানানো।
২০. নামাজে ইবরাহিম, মুহাম্মদ এবং তাঁদের পরিবারকে দুরুদ পাঠানোর নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২১.প্রচলিত নামাজে যে দোয়া মাসুরা পড়া হয় কুরআনে তার কোন নির্দেশনা নেই?
২২. বিতরের নামাজে যে দোয়া কুনুত পড়া হয় কুরআনে তার কোন নির্দেশ নেই?
২৩.নামাজ শেষে ডান ও বাম দিকে সালাম দেওয়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২৪. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের মতই হতো, তাহলে কেন কুরআন কাজা নামাজের ধারণা প্রত্যাখ্যান করে? বরং কুরআন বলে, missed সালাত শুধুমাত্র সংশোধনী মূলক কাজের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা যায়, নামাজ আদায়ের মাধ্যমে নয় (১৯:৫৯-৬০)।
তবে এই আনুষ্ঠানিক সালাতের ফরমেট যেই প্রচলন করুক না কেন তা উড়িয়ে দিচ্ছি না, এভাবে সালাত আদায়ে একটি দীর্ঘদিনের এবং বাপ দাদাদের নিকট হতে দেখে আসছি বলে একটি প্রশান্তিও মিলে নিজের মধ্যে।
কিন্তু কোরানে বর্নিত রবের সন্তুষ্টির জন্য সালাত এটি নয় তা কোরান থেকে প্রমান হয়। তাই আমি নিজে প্রচলিত প্রথার সরাসরি বিরোধিতা না করে পাশাপাশি রবের বর্নিত সালাতকে নিজের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করার আহ্বান জানাই।
মুমিনের সালাত সর্বক্ষন। যাহারা তাহাদের সালাতে সর্বক্ষণ প্রতিষ্ঠিত, (৭০ঃ২৩) الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَ
এত্র আয়াতে সলাত সর্বক্ষন হলে আপনি তাকে পাঁচ ওয়াক্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কোন সুযোগ আছে কি?
সালাত কোরান পাঠের একটি অনুষ্ঠান। তাই সে সালাতে যে বিষয় পাঠ করবে বাস্তব জীবনে সে অনুযায়ী চলতে হবে। এটিই রবের নির্দেশিত সালাত। তাই আল্লাহ বলেনঃ
হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হইও না, যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার, (৪:৪৩)
এবার আল্লাহ তিরস্কার করে এমন সব সালাত আদায়কাীদের উদ্দেশ্যে বলেনঃ
কাবাগৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর। (৭:৩৫)
এদের পর এমন নালায়েক লোকেরা এদের স্থলাভিষিক্ত হলো যারা নামায নষ্ট করলো এবং প্রবৃত্তির কামনার দাসত্ব করলো। তাই শীঘ্রই তারা গোমরাহীর পরিণামের মুখোমুখি হবে। (১৯:৫৯)
কুরআনে সালাত শব্দটির প্রয়োগ এবং আরবি ভাষারীতি অনুসারে সালাত শব্দটির যেসব অর্থ পাওয়া যায় তা হলো:
(0) তাপন (heat)
(১) নিবিড় অনুসরণ – To Follow Closely
(২) সংযোগ – Connection
(৩) যোগাযোগ – ইত্যাদি।
শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ‘তাওয়াক্কুল কারমান’-কে হিজাব পরা সম্পর্কে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন। তিনি উত্তর দিলেন সুন্দরভাবে পরিষ্কার ভাষায়, যা পৃথিবীর সভ্য মানুষকে করেছে মুগ্ধ।
তাঁর উত্তরটা ছিল এরকম:
“আদিকালে মানুষ প্রায় নগ্ন ছিল এবং মানুষের বুদ্ধির বিকাশের সাথে সাথে সে পোশাক পরতে শুরু করে। আমি আজ যে অবস্থানে আছি এবং আমি যা পরেছি তা মানুষের উচ্চতর চিন্তা ও সভ্যতার প্রতিনিধিত্ব করে, যা মানুষ অনেক বছর সাধনা করে অর্জন করেছে। এটি পশ্চাদমুখিতা নয়; বরং পোশাকের অপসারণ করাই পশ্চাদমুখিতা এবং প্রাচীন যুগের অসভ্য আচরণে আবার ফিরে যাওয়া।”
আল্লাহ্ই সৃষ্টি করিয়াছেন সপ্ত আকাশ এবং উহাদের অনুরূপ পৃথিবীও, উহাদের মধ্যে নামিয়া আসে তাঁহার নির্দেশ ; যাহাতে তোমরা বুঝিতে পার যে, আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান এবং জ্ঞানে আল্লাহ্ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করিয়া আছেন। (৬৫:১২)
اَللّٰهُ الَّذِىْ خَلَقَ سَبْعَ سَمٰوٰتٍ وَّمِنَ الْاَرْضِ مِثْلَهُنَّ ؕ يَتَنَزَّلُ الْاَمْرُ بَيْنَهُنَّ لِتَعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ عَلٰى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيْرٌ ۙ وَّاَنَّ اللّٰهَ قَدْ اَحَاطَ بِكُلِّ شَىْءٍ عِلْمًا
সূরা নম্বর: ৬৫ আয়াত নম্বর: ১২
‘
ReplyForward Add reaction
|
কবর একটি সাময়িক অবকাশ স্থল মাত্রঃ
اَمْوَاتٌ غَيْرُ اَحْيَآءٍ ۚ وَمَا يَشْعُرُوْنَ اَيَّانَ يُبْعَثُوْنَ
১) তাহারা নিষ্প্রাণ, নির্জীব এবং কখন তাহাদেরকে পুনরুত্থিত করা হইবে সে বিষয়ে তাহাদের কোন চেতনা নাই।( সুরা নহল, আয়াত ২১)
শব্দার্থ: أَمْوَاتٌ = (তারা ) মৃত, غَيْرُ = নয়, أَحْيَاءٍ = জীবিত , وَمَا = এবং না , يَشْعُرُونَ = চেতনা রাখে, أَيَّانَ = কবে, يُبْعَثُونَ = উঠানো হবে তাদের ,
এখানে খেয়াল করেন وَمَا = এবং না , يَشْعُرُونَ = চেতনা রাখে,
২) উহারা বলিবে, ‘হায় ! দুর্ভোগ আমাদের ! কে আমাদেরকে আমাদের নিদ্রাস্থল হইতে উঠাইল ? দয়াময় আল্লাহ্ তো ইহারই প্রতিশ্রুতি দিয়াছিলেন এবং রাসূলগণ সত্যই বলিয়াছিলেন।’ ( ইয়াসিন, আয়াত ৫২)
قَالُوْا یٰوَیْلَنَا مَن ۢ ْ بَعَثَنَا مِنْ مَّرْقَدِنَا ؐ ٚۘ هٰذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمٰنُ وَ صَدَقَ الْمُرْسَلُوْنَ
১) قَالُوا = তারা বলবে,
২) يَاوَيْلَنَا = হায় আমাদের দুর্ভোগ
৩) مَن ۢ ْ بَعَثَنَ = কে আমাদের উঠালো
৪) مِنْ مَّرْقَدِنَا = আমাদের ঘুমের স্থান হতে
কবরে যদি শাস্তি হত তবে এভাবে আফসোস করে বলতো না,’ হায়! কে আমাদের ঘুমের স্থান হতে উঠালো?
পড়ে অন্যত্র বলতেছে এর চেয়ে যদি মাটি হয়ে যেতাম?
তার মানে বিচার হলেই তো হয় শাস্তি না হয় শান্তি ভোগের সময় এসে যাবে। এটির ভয় কাজ করছিল শিংগায় ফু দেয়ার সাথে সাথে। ” বিচারের আগে কি কোন শাস্তি হয়?
৩) তাই স্মরন রাখতে হবে আলেমদেরঃ
যে ব্যক্তি আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে অথবা আল্লাহ্র নিদর্শনকে অস্বীকার করে তাহার অপেক্ষা অধিক জালিম আর কে ? নিশ্চয়ই অপরাধিগণ সফলকাম হয় না। (১০:১৭)
فَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَـرٰى عَلَى اللّٰهِ كَذِبًا اَوْ كَذَّبَ بِاٰيٰتِهٖ ؕ اِنَّهٗ لَا يُفْلِحُ الْمُجْرِمُوْنَ
সূরা নম্বর: ১০ আয়াত নম্বর: ১৭
উহাদের অধিকাংশ অনুমানেরই অনুসরণ করে, সত্যের পরিবর্তে অনুমান কোন কাজে আসে না, উহারা যাহা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।
وَمَا يَتَّبِعُ اَكْثَرُهُمْ اِلَّا ظَنًّا ؕاِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِىْ مِنَ الْحَـقِّ شَيْــًٔا ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِيْمٌۢ بِمَا يَفْعَلُوْنَ
সূরা নম্বর: ১০ আয়াত নম্বর: ৩৬
উহাদের মধ্যে কেহ ইহাতে বিশ্বাস করে এবং কেহ ইহাতে বিশ্বাস করে না এবং তোমার প্রতিপালক অশান্তি সৃষ্টিকারীদের সম্বন্ধে সম্যক অবহিত।
وَ مِنْهُمْ مَّنْ يُّؤْمِنُ بِهٖ وَمِنْهُمْ مَّنْ لَّا يُؤْمِنُ بِهٖؕ وَرَبُّكَ اَعْلَمُ بِالْمُفْسِدِيْنَ
সূরা নম্বর: ১০ আয়াত নম্বর: ৪০
قَالُوْا یٰوَیْلَنَا مَن ۢ ْ بَعَثَنَا مِنْ مَّرْقَدِنَا ؐ ٚۘ هٰذَا مَا وَعَدَ الرَّحْمٰنُ وَ صَدَقَ الْمُرْسَلُوْنَ
শব্দার্থ: قَالُوا = (ভীতহয়ে) তারা বলবে, يَاوَيْلَنَا = আমাদের দুর্ভোগ হায়, مَنْ = কে, بَعَثَنَا = আমাদেরকে উঠালো, مِنْ = হতে, مَرْقَدِنَا = আমাদের ঘুমের স্হান, هَٰذَا = এটাই, مَا = (তাই) যার, وَعَدَ = প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, الرَّحْمَٰنُ = দয়াময়, وَصَدَقَ = এবং সত্যই বলেছিলেন , الْمُرْسَلُونَ = রাসূলগণ,
অনুবাদ: ভীত হয়ে বলবে, “আরে কে আমাদেরকে আমাদের নিঁদমহল থেকে উঠিয়ে দাঁড় করালো?” —-“এটা সে জিনিস যার প্রতিশ্রুতি দয়াময় আল্লাহ দিয়েছিলেন এবং রসূলদের কথা সত্য ছিল।”
مَنْ = কে, بَعَثَنَا = হতেমাদেরকে উঠাল = , مَرْقَدِنَا = আমাদের ঘুমের স্হান, هَٰذَا = এটাই, مَا = (তাই) যার, وَعَدَ = প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, الرَّحْمَٰنُ = দয়াময়, وَصَدَقَ = এবং সত্যই বলেছিলেন , الْمُرْسَلُونَ = রাসূলগণ,
অনুবাদ: ভীত হয়ে বলবে, “আরে কে আমাদেরকে আমাদের নিঁদমহল থেকে উঠিয়ে দাঁড় করালো?” —-“এটা সে জিনিস যার প্রতিশ্রুতি দয়াময় আল্লাহ দিয়েছিলেন এবং রসূলদের কথা সত্য ছিল।”
সূরা নম্বর: ৩৬ আয়াত নম্বর: ৫২
ReplyForward Add reaction |
সূরা ফাতেহার সে আয়াতটি
আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর,(১ঃ৬)
@ সরল, পথ কি এবং কোনটি ?
যাহারা অদৃশ্যে ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে ও তাহাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করিয়াছি তাহা হইতে ব্যয় করে,(২ঃ৩)এবং তোমার প্রতি যাহা নাযিল হইয়াছে ও তোমার পূর্বে যাহা নাযিল হইয়াছে তাহাতে যাহারা ঈমান আনে ও আখিরাতে যাহারা নিশ্চিত বিশ্বাসী,(২ঃ৪) তাহারাই তাহাদের প্রতিপালক-নির্দেশিত পথে রহিয়াছে এবং তাহারাই সফলকাম।(২ঃ৫)
@ সরল পথ কি ভাবে পাওয়া যায়?
যাহারা মনোযোগ সহকারে (কোরানের) কথা শুনে এবং উহার মধ্যে যাহা উত্তম তাহা গ্রহণ করে। উহারাই বোধশক্তি সম্পন্ন, এবিং উহাদেরকে আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করেন (৩৯ঃ১৮)
অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথপ্রাপ্ত।(৩৬ঃ২১)
@ ঈমান কিসের উপর আনতে হবে ?
তোমরা বল, ‘আমরা আল্লাহ্তে ঈমান রাখি, এবং যাহা আমাদের প্রতি এবং ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাহার বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হইয়াছে; এবং যাহা তাহাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীকে দেওয়া হইয়াছে ;'(২ঃ১৩৬)
অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ কেহ আল্লাহ্, পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে।(২ঃ১৭৭)
অতঃপর আল্লাহ বলেনঃ যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ কর তারাই সৃষ্টির সেরা,তারাই সফলকাম এবং তাদের জন্যই জান্নাত নির্ধারিত।
যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাহারাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ। (৯৮ঃ৭) আর যাহারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাহারাই জান্নাতবাসী, তাহারা সেখানে স্থায়ী হইবে।(২ঃ৮২) ” যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, পরম আনন্দ এবং শুভ পরিণাম তাহাদেরই।’ ১৩ঃ২৯
@ সৎকর্ম কোনগুলি কি কি?
পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোতে কোন পুণ্য নাই; কিন্তু পুণ্য আছে কেহ আল্লাহ্, পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে এবং আল্লাহ্ প্রেমে আত্নীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, পর্যটক, সাহায্য প্রার্থিগণকে এবং দাস-মুক্তির জন্য অর্থ দান করিলে, সালাত কায়েম করিলে ও যাকাত প্রদান করিলে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়া তাহা পূর্ণ করিলে, অর্থ-সংকটে দুঃখ-ক্লেশে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য ধারণ করিলে। ইহারাই তাহারা যাহারা সত্যপরায়ণ এবং ইহারাই মুত্তাকী। ২ঃ১৭৭
@ সালাত অবশ্যই আল্লাহর স্মরনে জিকির। তাহলে সালাত কি এবং কি ভাবে কায়েম করতে হবে ?
নামাজ হচ্ছে নির্দিষ্ট ফরমেটে বুঝে বা না বুঝে একটা নির্ধারিত সময়ে সালামের মাধ্যমে সমাপ্ত করার নাম। আর সালাত হলো- পঠিত কুরআনের বিধানকে নিজ, পরিবার এবং সমাজ জীবনে বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে কুরআনে বর্ননা সুপ্রতিষ্ঠিত পথে (সিরাতুম মুস্তাকিম) অটল থাকার নাম।
সালাত হল কোরান তেলোয়াতের অনুষ্ঠান। সালাতে যা বলছি বাস্তব জীবনে সালাতের বাহিরেও তার বাস্তব প্রতিফলন ঘঠানোকেই সালাত কায়েম করা বুঝায়। সালাত পুঁজা মন্ডবে কিছু মন্ত্র পাঠ করার মত কোন অনুষ্ঠান নয়।
যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত, ৭০ঃ২৩
যাহারা দাঁড়াইয়া, বসিয়া ও শুইয়া আল্লাহ্কে স্মরণ করে এবং আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্ত করে ও বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি ইহা নিরর্থক সৃষ্টি কর নাই, তুমি পবিত্র, তুমি আমাদেরকে দোজখের শাস্তি হইতে রক্ষা কর। ( ৩ঃ১৯১)
আল্লাহ মানুষকে অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। (৯১ঃ৮) সে যেটি ইচ্ছে করতে পারে।
অতএব তুমি যখনই অবসর পাও একান্তে ইবাদত করিও। ৯৪ঃ৭
প্রতেক ব্যাক্তিই নিজ কৃতকর্মের জন্য দায়ী হবে। কেউ কারো বোঝা বহন করবে না। (৬:১৬৪)
আর যারা আমার আয়াতসমূহের উপর ঈমান আনে, তারা যখন তোমার কাছে আসে, তখন তুমি বলবে, ‘সালামুন আলাইকুম ’। তোমাদের প্রতিপালক তাঁর নিজের উপর লিখে নিয়েছেন দয়া, নিশ্চয় যে তোমাদের মধ্য থেকে না জেনে খারাপ কাজ করে তারপর তাওবা করে এবং শুধরে নেয়, তবে তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (৬ঃ৫৪)
যারা মুত্তাকী, তাদের জন্য দুনিয়াতে মঙ্গল, পরকালে জান্নাত তাদের প্রান হরনের সময় মালা-ইকাগণ বলবে “সালামুন আলাইকুম ৷” (১৬ঃ৩১)
সূরা ফাতেহার পর আমিন বলি, এ আমিন শব্দ টা আদৌ কি কোরানে আছে? নাই। আমিন অর্থ বিশ্বস্ত। কে সংযোজন করলো এ অতিরিক্ত শব্দ আল্লাহর কিতাবের সাথে??
এমন আরো অনেক, আল্লাহ বলতে শিখিয়েছেন একভাবে আর আমরা আমরা করে চলছি আরেক ভাবে। যেমন কোরান পাঠের আগে আমরা বলি, ” আউয়ুযুবিল্লাহে মিনাশ শায়তানের রাজিম ” অথচ আল্লাহ বলতে শিখিয়েছেন, ” রাব্বি আউয়ুযুবিকা মিন হামাযাতিশ শায়তান। ”
وَقُل رَّبِّ أَعُوذُ بِكَ مِنْ هَمَزَٰتِ ٱلشَّيَٰطِينِ
আর বল : ‘হে আমার প্রতিপালক! আমি শয়ত্বানের কুমন্ত্রণা হতে তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (২৩ঃ৯৭)
আল্লাহ্ বলিলেন, ‘তোমরা দুই ইলাহ্ গ্রহণ করিও না; তিনিই তো একমাত্র ইলাহ্। সুতরাং আমাকেই ভয় কর।'(১৬ঃ৫১)
আল্লাহ্ই প্রাণ হরণ করেন জীবসমূহের তাহাদের মৃত্যুর সময় এবং যাহাদের মৃত্যু আসে নাই তাহাদের প্রাণও নিদ্রার সময়। অতঃপর তিনি যাহার জন্য মৃত্যুর সিদ্ধান্ত করেন তাহার প্রাণ তিনি রাখিয়া দেন এবং অপরগুলি ফিরাইয়া দেন, এক নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। ইহাতে অবশ্যই নিদর্শন রহিয়াছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য। (৩৯ঃ৪২)
তারা মুসলমান হয়ে আপনাকে ধন্য করেছে মনে করে। বলুন, তোমরা মুসলমান হয়ে আমাকে ধন্য করেছ মনে করো না। বরং আল্লাহ ঈমানের পথে পরিচালিত করে তোমাদেরকে ধন্য করেছেন, যদি তোমরা সত্যনিষ্ঠ হয়ে থাক। (৪৯ঃ১৭)
কবর একটি সাময়িক অবকাশ স্থল মাত্রঃ
তাহারা নিষ্প্রাণ, নির্জীব এবং কখন তাহাদেরকে পুনরুত্থিত করা হইবে সে বিষয়ে তাহাদের কোন চেতনা নাই। সূরা নম্বরঃ ১৬, আয়াত নম্বরঃ ২১
সালাত নিয়ে জবাব্দিহী নয়ঃ
তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’ (১৭ঃ১৪)
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১১৬
আল্লাহকে রহমান ও রহিম কেন বলা হয়, কারন —– ৪ঃ৩১ ভাবলেই বুঝ এসে যায়।
তোমাদেরকে যাহা নিষেধ করা হইয়াছে তাহার মধ্যে যাহা গুরুতর তাহা হইতে বিরত থাকিলে তোমাদের লঘুতর পাপ গুলি মোচন করিব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে দাখিল করিব।
اِنْ تَجْتَنِبُوْا كَبٰٓٮِٕرَ مَا تُنْهَوْنَ عَنْهُ نُكَفِّرْ عَنْكُمْ سَيِّاٰتِكُمْ وَنُدْخِلْـكُمْ مُّدْخَلًا كَرِيْمًا
সূরা নম্বরঃ ৪, আয়াত নম্বরঃ ৩১
অনুভুতিঃ১০২
সালাত নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না।
তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’
৫)
৬) ইহারা কুরআনের প্রতি ঈমান আনিবে না এবং অতীতে পূর্ববর্তীদেরও এই আচরণ ছিল।
لَا يُؤْمِنُوْنَ بِهٖۚ وَقَدْ خَلَتْ سُنَّةُ الْاَوَّلِيْنَ
সূরা নম্বরঃ ১৫, আয়াত নম্বর
অনুভুতিঃ১১০
গুরুত্তপুর্ন কিছু আয়াতঃ
আল্লাহ মানুষকে অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। (৯১ঃ৮) সে যেটি ইচ্ছে করতে পারে।
[ পৃথিবীতে এবং ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর কোন বিপদ আসে না; কিন্তু তা জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। নিশ্চয় এটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।( ৫৭ঃ২২)
অন্য অনুবাদঃ
পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগত ভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে আমি উহা সংঘটিত করিবার পূর্বেই ইহা লিপিবদ্ধ থাকে; আল্লাহর পক্ষে ইহা খুব সহজ।
দূটি অনুবাদ থেকে কি একই মর্ম হৃদয়ে অনুভুত হয়??]
সে যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করিয়া চালাইতে চেষ্টা করিত, আমি অবশ্যই তাহার দক্ষিণ হস্ত ধরিয়া ফেলিতাম, এবং কাটিয়া দিতাম তাহার জীবন-ধমনী, অতঃপর তোমাদের মধ্যে এমন কেহই নাই, যে তাহাকে রক্ষা করিতে পারে। (৬৯ঃ৪৪- ৪৭)
তোমাদের জিহবা মিথ্যা আরোপ করে বলিয়া আল্লাহ্র প্রতি মিথ্যা আরোপ করিবার জন্য তোমরা বলিও না, ‘ইহা হালাল এবং উহা হারাম।’ নিশ্চয়ই যাহারা আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা উদ্ভাবন করিবে তাহারা সফলকাম হইবে না।(১৬ঃ১১৬
যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে দয়াময় অবশ্যই তাহাদের জন্য সৃষ্টি করিবেন ভালবাসা।
اِنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ سَيَجْعَلُ لَهُمُ الرَّحْمٰنُ وُدًّا
সূরা নম্বরঃ ১৯, আয়াত নম্বরঃ ৯৬
যে ব্যক্তি মৃত ছিল, যাহাকে আমি পরে জীবিত করিয়াছি এবং যাহাকে মানুষের মধ্যে চলিবার জন্য আলোক দিয়াছি, সেই ব্যক্তি কি ঐ ব্যক্তির ন্যায়, যে অন্ধকারে রহিয়াছে এবং সেই স্থান হইতে বাহির হইবার নয় ? এইরূপে কাফিরদের দৃষ্টিতে তাহাদের কৃতকর্ম শোভন করিয়া দেওয়া হইয়াছে।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১২২
আমি তাহাদের নিকট ফিরিশতা প্রেরণ করিলেও এবং মৃতেরা তাহাদের সঙ্গে কথা বলিলেও এবং সকল বস্তুকে তাহাদের সম্মুখে হাযির করিলেও যদি না আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তবে তাহারা ঈমান আনিবে না; কিন্তু তাহাদের অধিকাংশই অজ্ঞ। সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১১১
তওবা তাহাদের জন্য নহে যাহারা আজীবন মন্দ কাজ করে, অবশেষে তাহাদের কাহারও মৃত্যু উপস্থিত হইলে সে বলে, ‘আমি এখন তওবা করিতেছি’ এবং তাহাদের জন্যও নহে, যাহাদের মৃত্যু হয় কাফির অবস্থায়। ইহারাই তাহারা যাহাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তির ব্যবস্থা করিয়াছি। (সূরা নেসাঃ ১৮)
মুখে যা আসে হারাম বলে,অথচ আল্লাহ কি বলেনঃ
বল, ‘আমার প্রতি যে ওহী হইয়াছে তাহাতে, লোকে যাহা আহার করে তাহার মধ্যে আমি কিছুই হারাম পাই না-মৃত, বহমান রক্ত ও শূকরের মাংস ব্যতীত। কেননা এইগুলি অবশ্যই অপবিত্র অথবা যাহা অবৈধ, আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গের কারণে।’ তবে কেহ অবাধ্য না হইয়া এবং সীমালংঘন না করিয়া নিরুপায় হইয়া উহা আহার করিলে তোমার প্রতিপালক তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(৬ঃ১৪৫)
আমি ইয়াহূদীদের জন্য নখর যুক্ত সমস্ত পশু হারাম করিয়াছিলাম এবং গরু ও ছাগলের চর্বিও তাহাদের জন্য হারাম করিয়াছিলাম; তবে এই গুলির পিঠের অথবা অন্ত্রের কিংবা অস্থি সংলগ্ন চর্বি ব্যতীত, তাহাদের অবাধ্যতার দরুন তাহাদেরকে এই প্রতিফল দিয়াছিলাম। নিশ্চয়ই আমি সত্যবাদী। (৬ঃ১৪৬)
……………………. নামাজ ও সালাত
সালাত অবশ্যই আল্লাহর স্মরনে জিকির। তাহলে সালাত কি এবং কি ভাবে কায়েম করতে হবে ?
নামাজ হচ্ছে নির্দিষ্ট ফরমেটে বুঝে বা না বুঝে একটা নির্ধারিত সময়ে সালামের মাধ্যমে সমাপ্ত করার নাম। আর সালাত হলো- পঠিত কুরআনের বিধানকে নিজ, পরিবার এবং সমাজ জীবনে বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে কুরআনে বর্ননা সুপ্রতিষ্ঠিত পথে (সিরাতুম মুস্তাকিম) অটল থাকার নাম।
সালাত হল কোরান তেলোয়াতের অনুষ্ঠান। সালাতে যা বলছি বাস্তব জীবনে সালাতের বাহিরেও তার বাস্তব প্রতিফলন ঘঠানোকেই সালাত কায়েম করা বুঝায়। সালাত পুঁজা মন্ডবে কিছু মন্ত্র পাঠ করার মত কোন অনুষ্ঠান নয়।
সবাইকে জামাতে পরতে বাধ্যকরার সিস্টেম প্রতিষ্ঠিত করার নাম কায়েম করা নয়। কায়েম করা বিষয়ে আল্লাহ বলেনঃ
যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত, ৭০ঃ২৩
আপনি সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত কি ভাবে থাকেন? ৫ ওয়াক্ত নমাজ পড়ে কি সার্বক্ষনিক প্রতিষ্ঠিত থাকা যায়?
৭০ঃ৭৩ আয়াতের সার্বক্ষনিক সালাতের ব্যাখ্যায় বলেনঃ
যাহারা দাঁড়াইয়া, বসিয়া ও শুইয়া আল্লাহ্কে স্মরণ করে এবং আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্ত করে ও বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি ইহা নিরর্থক সৃষ্টি কর নাই, তুমি পবিত্র, তুমি আমাদেরকে দোজখের শাস্তি হইতে রক্ষা কর। ( ৩ঃ১৯১)
বিচার দিবসে সালাত নিয়ে জবাবদিহী করবে না, করবে কোরান পাঠ নিয়ে।
তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’ (১৭ঃ১৪)
তার মানে এই নয় আনুষ্ঠানিক সালাত অস্বীকার করা। গুরুত্ত অনুধাবেনের দিক থেকে আলোচনা, নামাজ ও সালাতের পার্থক্য বুঝাতে। আল্লাহ সূরা নেসায় বলেনঃ
হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হইও না, যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার, ——- ( ৪ঃ ৪৩)
যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আমি নিশ্চয়ই তাহাদের হইতে তাহাদের মন্দ কর্মগুলি মিটাইয়া দিব
(২৯ঃ৭)
সালাত অবশ্যই বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কার্য হইতে। (২৯ঃ৪৫)
আনুষ্ঠানিক সালাতে আমরা দিনে অন্তত ১৭ বার বলে থাকিঃ “আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর,(১ঃ৬) এই সরল পথ কি এবং কেমন, জানা না থাকলে আল্লাহ প্রদর্শন করলেও তো আপনি গ্রহন করে নিতে পারবেন না।
@ সরল, পথ কি এবং কোনটি ?
যাহারা অদৃশ্যে ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে ও তাহাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করিয়াছি তাহা হইতে ব্যয় করে,(২ঃ৩)এবং তোমার প্রতি যাহা নাযিল হইয়াছে ও তোমার পূর্বে যাহা নাযিল হইয়াছে তাহাতে যাহারা ঈমান আনে ও আখিরাতে যাহারা নিশ্চিত বিশ্বাসী,(২ঃ৪) তাহারাই তাহাদের প্রতিপালক-নির্দেশিত সরল পথে রহিয়াছে এবং তাহারাই সফলকাম।(২ঃ৫)
@ সরল পথ কি ভাবে পাওয়া যায়?
যাহারা মনোযোগ সহকারে (কোরানের) কথা শুনে এবং উহার মধ্যে যাহা উত্তম তাহা গ্রহণ করে। উহারাই বোধশক্তি সম্পন্ন, এবিং উহাদেরকে আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করেন (৩৯ঃ১৮)
অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথপ্রাপ্ত।(৩৬ঃ২১)
@ ঈমান কিসের উপর আনতে হবে ?
তোমরা বল, ‘আমরা আল্লাহ্তে ঈমান রাখি, এবং যাহা আমাদের প্রতি এবং ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাহার বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হইয়াছে; এবং যাহা তাহাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীকে দেওয়া হইয়াছে ‘(২ঃ১৩৬)
অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ কেহ আল্লাহ্, পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে।(২ঃ১৭৭)
অতঃপর আল্লাহ বলেনঃ যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ কর তারাই সৃষ্টির সেরা,তারাই সফলকাম এবং তাদের জন্যই জান্নাত নির্ধারিত।
যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাহারাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ। (৯৮ঃ৭) আর যাহারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাহারাই জান্নাতবাসী, তাহারা সেখানে স্থায়ী হইবে।(২ঃ৮২)
@ সৎকর্ম কোনগুলি কি কি?
পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোতে কোন পুণ্য নাই; কিন্তু পুণ্য আছে কেহ আল্লাহ্, পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে এবং আল্লাহ্ প্রেমে আত্নীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, পর্যটক, সাহায্য প্রার্থিগণকে এবং দাস-মুক্তির জন্য অর্থ দান করিলে, সালাত কায়েম করিলে ও যাকাত প্রদান করিলে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়া তাহা পূর্ণ করিলে, অর্থ-সংকটে দুঃখ-ক্লেশে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য ধারণ করিলে। ইহারাই তাহারা যাহারা সত্যপরায়ণ এবং ইহারাই মুত্তাকী। ২ঃ১৭৭
মুলত বুঝতে হবে সালাত পড়ার জিনিষ নয়। সালাত কায়েম করার আদেশ, সালাতে দাড়িয়ে যে আয়াত তেলোয়াত করি সে অনুযায়ী বাস্তব জীবনে প্রতিষ্ঠা করাকেই সালাত কায়েম বুঝায়। মুখে মসজিদে পড়ে বলে উচ্চারন করে আসলাম অথচ বাহিরে এসে তা নিজের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করার উপলব্ধিই করলাম না এটাকে নামাজ বললেও আল্লাহর কাংক্ষিত সালাত কায়েম
বলা হয় না। এসব বিষয় নিয়ে ঘটনা ঘটবে তা আল্লাহ ভাল করে জানেন বলেই আয়াত রয়ে গেছে…..
উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা-পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে,( ১৯ঃ৫৯)
আর যখন তাহারা সালাতে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সঙ্গে দাঁড়ায়-কেবল লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহ্কে তাহারা অল্পই স্মরণ করে; দোটানায় দোদুল্যমান-না ইহাদের দিকে, না উহাদের দিকে! (৪:১৪২ ও ১৪৩)
কবর একটি সাময়িক অবকাশ স্থল মাত্রঃ
তাহারা নিষ্প্রাণ, নির্জীব এবং কখন তাহাদেরকে পুনরুত্থিত করা হইবে সে বিষয়ে তাহাদের কোন চেতনা নাই। সূরা নম্বরঃ ১৬, আয়াত নম্বরঃ ২১
তাহারা নিষ্প্রাণ, নির্জীব এবং কখন তাহাদেরকে পুনরুত্থিত করা হইবে সে বিষয়ে তাহাদের কোন চেতনা নাই।( সুরা নহল, আয়াত ২১)
اَمْوَاتٌ غَيْرُ اَحْيَآءٍ ۚ وَمَا يَشْعُرُوْنَ اَيَّانَ يُبْعَثُوْنَ
শব্দার্থ: أَمْوَاتٌ = (তারা ) মৃত, غَيْرُ = নয়, أَحْيَاءٍ = জীবিত , وَمَا = এবং না , يَشْعُرُونَ = চেতনা রাখে, أَيَّانَ = কবে, يُبْعَثُونَ = উঠানো হবে তাদের ,
এখানে খেয়াল করেন وَمَا = এবং না , يَشْعُرُونَ = চেতনা রাখে,
অতঃপর আমি উহাদের পর পৃথিবীতে তোমাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করিয়াছি, তোমরা কিরূপ কর্ম কর তাহা দেখিবার জন্য।
ثُمَّ جَعَلْنٰكُمْ خَلٰٓٮِٕفَ فِى الْاَرْضِ مِنْۢ بَعْدِهِمْ لِنَـنْظُرَ كَيْفَ تَعْمَلُوْنَ
সূরা নম্বর: ১০ আয়াত নম্বর: ১৪
যে ব্যক্তি আল্লাহ্ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে অথবা আল্লাহ্র নিদর্শনকে অস্বীকার করে তাহার অপেক্ষা অধিক জালিম আর কে ? নিশ্চয়ই অপরাধিগণ সফলকাম হয় না।
فَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنِ افْتَـرٰى عَلَى اللّٰهِ كَذِبًا اَوْ كَذَّبَ بِاٰيٰتِهٖ ؕ اِنَّهٗ لَا يُفْلِحُ الْمُجْرِمُوْنَ
সূরা নম্বর: ১০ আয়াত নম্বর: ১৭
উহাদের অধিকাংশ অনুমানেরই অনুসরণ করে, সত্যের পরিবর্তে অনুমান কোন কাজে আসে না, উহারা যাহা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।
وَمَا يَتَّبِعُ اَكْثَرُهُمْ اِلَّا ظَنًّا ؕاِنَّ الظَّنَّ لَا يُغْنِىْ مِنَ الْحَـقِّ شَيْــًٔا ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِيْمٌۢ بِمَا يَفْعَلُوْنَ
সূরা নম্বর: ১০ আয়াত নম্বর: ৩৬
উহাদের মধ্যে কেহ ইহাতে বিশ্বাস করে এবং কেহ ইহাতে বিশ্বাস করে না এবং তোমার প্রতিপালক অশান্তি সৃষ্টিকারীদের সম্বন্ধে সম্যক অবহিত।
وَ مِنْهُمْ مَّنْ يُّؤْمِنُ بِهٖ وَمِنْهُمْ مَّنْ لَّا يُؤْمِنُ بِهٖؕ وَرَبُّكَ اَعْلَمُ بِالْمُفْسِدِيْنَ
সূরা নম্বর: ১০ আয়াত নম্বর: ৪০
ReplyForward Add reaction |
আনুষ্ঠানিক নামাজ কেন ?
১. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ (হাদিসভিত্তিক নামাজ) কুরআনের সালাতের সমান হতো, তবে কেন কুরআন এমন নামাজের সমালোচনা করে, যেখানে মনোযোগহীনতা, Robotic আচরণ এবং লোক দেখানোর প্রবণতা রয়েছে? কুরআন তো সালাতের সময় সজ্ঞানে থাকা এবং বাণী বুঝে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেয় (৪:৪৩, ৪:১৪২, ৫:৯১, ৮:৩৫)।
২. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, এবং সালাতের উদ্দেশ্য আল্লাহর স্মরণ (dhikr Allah) বাস্তব জীবনে কার্যকর করা হয়, তাহলে কেন আনুষ্ঠানিক নামাজে কুরআনের বাইরে থাকা বিভিন্ন দোয়া ও প্রশংসা উচ্চারণ করতে হয়?
৩. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন জোহর, আসর, মাগরিব ইত্যাদি নামাজের নাম কুরআনে নেই?
৪. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন বিতর নামাজ, যা বাধ্যতামূলক বলা হয়, কুরআনে উল্লেখ নেই?
৫. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন বর্তমানে প্রচলিত আযানের ধরণ কুরআনে নেই?
৬. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন ওজুর সময় তিনবার করে অঙ্গ ধোয়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
৭. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন নামাজের সময় পুরুষ ও নারীদের মাথা ঢাকার বাধ্যবাধকতা কুরআনে নেই?
৮. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন নামাজের জন্য নামাজের Mat ব্যবহারের নির্দেশনা কুরআনে নেই?
৯. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন একটি পাথরের ঘরের দিকে এবং meteorite (The Black Stone) দিকে সিজদা করা কুরআনে নেই?
১০. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন “আল্লাহু আকবার” শব্দটি, যা বারবার উচ্চারণ করা হয়, কুরআনে নেই? (কুরআনে আল্লাহকে বলা হয়েছে আল-কাবির, আকবার নয়)।
১১. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন সানা পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১২. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৩. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন ফাতিহা পড়ার পর “আমিন” বলার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৪. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন জোহর এবং আসরের নামাজ নীরবে পড়া হয়, যা ১৭:১১০ আয়াতের পরিপন্থী?
১৫. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন “সুবহানা রাব্বি আল-আ’লা” এবং “সুবহানা রাব্বি আল-আযিম” বলার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৬. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন “সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৭. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন রাকাত, রাকাতের সংখ্যা এবং নামাজের অবস্থানের ক্রম কুরআনে উল্লেখ নেই?
১৮. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন নামাজের শেষে আততাহিয়াত পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
১৯. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন তাশাহহুদ পড়ার সময় তর্জনী উঠানোর নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২০. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন নামাজে ইবরাহিম, মুহাম্মদ এবং তাঁদের পরিবারকে দুরুদ পাঠানোর নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২১. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন দোয়া মাসুরা পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২২. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন বিতরের নামাজে দোয়া কুনুত পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২৩. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন নামাজ শেষে ডান ও বাম দিকে সালাম দেওয়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?
২৪. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের সমান হতো, তাহলে কেন কুরআন কাজা নামাজের ধারণা প্রত্যাখ্যান করে? বরং কুরআন বলে, missed সালাত শুধুমাত্র সংশোধনীমূলক কাজের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা যায়, নামাজ আদায়ের মাধ্যমে নয় (১৯:৫৯-৬০)।
টীকা ১
দুঃখজনকভাবে, আজকের ঐতিহ্যগত মুসলিম নামাজ একটি মনমরা যান্ত্রিক রূপে পরিণত হয়েছে, যা মূল কুরআনি সালাতের অনুকরণ করার জন্য বিভিন্ন প্রথাগত ক্রিয়া-কলাপ এবং যান্ত্রিক উচ্চারণ যুক্ত করে গড়ে উঠেছে। এতে নামাজের প্রকৃত তাৎপর্য ও উদ্দেশ্য হারিয়ে গেছে। এমনকি হাদিসেও দেখা যায়, কীভাবে নবীর সাহাবিদের পরবর্তীতে সালাত পরিবর্তিত হয়েছিল। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন: আনাস বিন মালিক (রা.) বলেছেন, “আমি এখনকার দিনগুলিকে নবীর যুগের সাথে তুলনা করতে পারি না। কেউ একজন বললেন, “নামাজ (তেমনই আছে)।” আনাস (রা.) বললেন, “তোমরা নামাজে যা করছ, তা কি নবীর যুগে ছিল?” (সহিহ বুখারি ৫২৯, ভলিউম ১, বই ১০, হাদিস ৫০৭; sunnah.com)। অন্য এক হাদিসে উল্লেখ রয়েছে: আজ-জুহরি বর্ণনা করেছেন, তিনি আনাস বিন মালিক (রা.)-এর কাছে দামেস্কে গিয়ে তাকে কাঁদতে দেখলেন এবং তার কান্নার কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন, “আমি নবীর জীবদ্দশায় যা জানতাম, তার মধ্যে এই নামাজ ছাড়া আর কিছুই জানি না, যা আজ হারিয়ে যাচ্ছে (যেমনভাবে পড়া উচিত তা আর পড়া হচ্ছে না)” (সহিহ বুখারি ৫৩০, ভলিউম ১, বই ১০, হাদিস ৫০৭; sunnah.com)।
টীকা ২
ঐতিহ্যগত মুসলিম স্লোগান “আল্লাহু আকবার” মূলত কুরআনের বাইরে তৈরি একটি মন্ত্র, যা প্রথম প্রচলিত হয়েছিল উমাইয়া শাসনামলে, মুসলিম সাম্রাজ্য বিস্তারের সময় সামরিক স্লোগান হিসেবে। আমরা যদি ‘আকবার’ শব্দটিকে ‘কবির’-এর তুলনামূলক বা অতুলনীয় রূপ হিসেবে বিবেচনা করি, তবে উভয় ক্ষেত্রেই আল্লাহকে অন্যান্য সত্তার সাথে তুলনা করা হয়, যা আল্লাহর স্বরূপের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এজন্যই কুরআনে ‘আকবার’ শব্দটি আল্লাহর গুণবাচক হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি। এমনকি সেই আয়াতগুলোতেও না, যেখানে ‘আল্লাহ’-এর পরপর ‘আকবার’ শব্দটি দেখা যায়: “কিন্তু আল্লাহর সন্তুষ্টি এর চেয়ে মহৎ” (৯:৭২); “কিন্তু আল্লাহর স্মরণ এর চেয়ে মহৎ” (২৯:৪৫); “নিশ্চয়ই, আল্লাহর ঘৃণা তোমাদের নিজেদের প্রতি ঘৃণার চেয়ে বড়” (৪০:১০)। এই কোন আয়াতেই ‘আকবার’ শব্দটি আল্লাহর গুণবাচক রূপে ব্যবহৃত হয়নি। কুরআনে সব গুণবাচক নাম ‘আল’ (অর্থাৎ ‘দ্য’) দিয়ে শুরু হয়, যেমন: আল-কাবির (অত্যন্ত মহান; ১৩:৯, ২২:৬২, ৩৪:২৩, ৪০:১২, ৩১:৩০) এবং আল-মুতাকাব্বির (সব মহত্বের অধিকারী, ৫৯:২৩)।
টীকা ৩
কিছু মানুষ ‘নামাজ শেষে ডান ও বাম দিকে সালাম দেওয়া’কে বৈধতা দিতে ১০:১০ আয়াত উদ্ধৃত করেন। তবে যদি এটি সত্যিই সালাতের অংশ হতো, তাহলে কুরআন স্পষ্টভাবে এই কাজের কথা উল্লেখ করতো। অনুগ্রহ করে আয়াতটি পড়ুন: “তাদের প্রার্থনা (দুয়া) সেখানে হবে: ‘হে আল্লাহ! তুমি পবিত্র।’ এবং তাদের অভিবাদন সেখানে হবে: ‘শান্তি!’ এবং তাদের প্রার্থনার (দুয়া) শেষ হবে: ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, সকল সৃষ্টির প্রতিপালক।’” (১০:১০)।
ReplyForward Add reaction |
সমগ্র কোরাআনে যত শব্দ আছে তা তিনটি শ্রেনীতে বিভক্ত।
১) ইশেম (বিষেশ্য)
২) ফা’আল (ক্রিয়া) এবং
৩) হরফ ( অব্যয়)
হরফ এবং ফাল বাদ দিলে বাকি সব এসেম।
যে শব্দ গুলি দ্বারা কোন কিছুর নাম বুঝায় তাকে এসেম বলে। যে শব্দ গুলি দ্বারা কোন কাজ বুঝায় তাকে ফাল বলে। যে শব্দগুলির কোন অবস্থায় কোন পরিবর্তন নাই তাকে হরফ বলে। হরফের সংখ্যা খুব সামান্য। এগুলি মুখস্থ রাখতে হবে।
১) ইসেমঃ যে শব্দ দ্বারা কোন কিছুর নামকে বুঝায় তাকে ইশেম বলে। অন্যভাবে বললে হরফ এবং ফাল বাদ দিয়ে আরবী যত শব্দ আসবে সব ইসেম।
এখন কথা হল ইংরেজী শিক্ষিত একজন মানুষ অর্থ না জেনেও শুধু আরবী শব্দ দেখে কি ভাবে ইসেম কোন শব্দটি তা সনাক্ত করতে পারবে তার সহজ উপায় বা আলামতঃ
ক) কোন শব্দের শুরুতে আলিফ লাম থাকা।
খ) কোন শব্দের শেষে তানভিন থাকলে। অর্থাৎ দুই যবর ,দুইপেশ, বা দুই যের থাকলে সেটি ইসেম বুঝতে হবে।
গ) কোন শব্দের শেষে গোল তা থাকলে
** ২) অনুরুপ ভাবে অর্থ না জেনেও কিভাবে বাক্যে কোন শব্দটি ফাল তা সহজে সনাক্ত করতে পারবে তার উপায়ঃ
তার আগে একটু জানা থাকা দরকার ফেল চার প্রকার। যথাঃ ফেলে মাদি,ফেলে মুদারে,ফেলে আমল, ফেলে নাহি।
আরবীতে অধিকাংশ ফাল তিন অক্ষরের হয়। ফাল চার অক্ষরের বেশী হয় না।
ক) শব্দের শুরুতে যজম (যের,যবর,পেশ) প্রদানকারী অক্ষর হবে।
** ৩) অনুরপ ভাবে অর্থ না জেনেও হরফ চেনার উপায়ঃ
হরফ বা অব্যয় সুচক শব্দের শুরুতে ব্যবহার হয়। যেমনঃ
নিন্মে বহুল ব্যবহৃত কিছু হরফ উল্লেখ করা হল। অবশ্য হরফ গুলি মুখস্থ রাখতে হবে।
(বা) – ب (সাথে) সবসময় যের যোগে ব্যবহার হবে। বিসমিল্লাহ
( তা ) – ت (এবং) যবর দিয়ে। যেমন তাবারাকাছমুকা
(কাফ) – ك (মত) যবর দিয়ে। কানাবদু
(লাম) -ل (জন্য) যের দিয়ে। লিল্লাহে মা ফীসসামাওয়াতে
(ওয়া )- و (এবং) ওয়া রাহ্মাতুল্লিল আলামিনল।
(মুনজা )- منز (যাবৎ)
(মুজা) – مذ (এবং)
(খলা)- خلا (ব্যতিত)
(রুবা) رب ( অল্প)
( হাশা) حسا (ব্যতিত)
( মিন) من ( হতে)
( আ’দা) عدا (ব্যতিত)
( ফী) في ( মধ্যে)
(আ’ন) عن (হতে)
( আ’লা) عاي (উপরে)
(হাত্তা) حتي (পর্যন্ত)
( ইলা) الي (দিকে)
(ইন্না) ان
(আন্না) ان
(কানা) كان
(লাইতা) ليت
(লাকিন্না) لقن
(লায়াল্লা) لعل
( ওয়াও) و ( এবং /কসম)
(আও) او
(আম) ام
(ফা) ف
(ছুম্মা) ثم
(আম) ام
(লাকিন) لكن
( আম্মা) اما
(ইম্মা) اما
(আন) ان
(লান) لن
(কানা) كن
(আন্না) انن
(আন ) ان
(লাম) لم
(লাম্মা) لما
(লা) لا (না)
(মা) ما
হরফে যার ১৭ টি। এরা বাক্যের সামনে বসে পড়ের শব্দকে যার দেয়।
উপসংহারঃ সূরা এখলাস থেকে কয়টি এসেম কয়টি ফেল এবং কয়টি হরফ আছে তা নিজে নিজে নির্নয় করি। অর্থ জানার প্রয়োজন নেই। যেহেতু আমি ইংরেজী শিক্ষিত, আরবী জ্ঞান নেই বললেই চলে।
بِسمِ اللَّهِ الرَّحمٰنِ الرَّحيمِ
বে ইসেম আল্লাহ হু আর রহ্মান আর রাহিম
قُل —— — هُوَ ——– اللَّهُ —— أَحَدٌ
ক্বুল – হু – ওয়া – আল্লা – হু – আহাদ
اللَّهُ- ————— الصَّمَد
আল্লা – হু – সামাদ
لَم —— يَلِد —- وَلَم —— يولَد
লাম – ইয়ালিদ – ওয়া – লাম — ইউলাদ
وَلَم —- يَكُلَهُ ——– كُفُوًا —- أَحَدٌ
ওয়া – লাম — ইয়া কুল্লা – হু – কুফুয়ান –আহাদ।
*******************
প্রাথমিক আরবী গ্রামার পর্ব-০৯
তারকীব শিখতে যে বিষয় গুলোর উপর ধারনা রাখা জরুরী তার মধ্যে মুকতাদা এবং খবর বিষয়ে প্রথম।
মুকতাদাঃ বাক্যে মুকতাদা এমন একটি ইশেম যার ব্যাপারে সংবাদ দেওয়া হয় তাকেই বলে মুকতাদা।
খবরঃ যার দ্বারা খবর দেয়া হয় তাকে বলে খবর এবং যাকে খবর দেয়া হয় তাকে মুকতাদা বলে।
যেমনঃ আল কিতাবু খায়েরুন। কিতাবটি উত্তম। এখানে উত্তম সংবাদ দেয়া হচ্ছে কিতাবের বিষয়ে। তাই কিতাব মুকতাদা এবং খায়রুন খবর।
মুকতাদা বা খবর চিনতে হলে কয়েকটি উপায় জানা জরুরী।
১) মুকতাদা সর্বদা মারেফা হবে। অর্থাৎ বাক্যের শুরুতে যদি
ক) আলিফ লাম থাকে তাকে মারেফা বুঝতে হবে।
খ) যদি ইসমে ইশারা দেখতে পাই। হাজা, হাজিহী
গ) ইসমে মুনছু দেখতে পাই। আল্লাজি,আল্লাজিনা
ঘ) যদি জামির থাকে। হুয়া, হিয়া,হুন্না, আন্তা,আন্তু,আন্তুম
ঙ) হুরফে নেদা থাকলে
চ) নির্দিষ্ট কোন নাম থাকলে। যায়েদ,
এরুপ যদি দেখা যায় বাক্য মারেফা দ্বারা শুরু হয় তবে তাহা মুকতাদা নিশ্চিত। তার মানে মুকতাদা সর্বদা মারেফা হবে।
১) মুকতাদা সবসময় মারেফা হবে এবং খবর নাকেরা হবে। শব্দের শুরুতে আলিফ লাম না থাকলে তাকে নাকারা বলে।
২) উভয়টি রফা হবে।মুকতাদা এবং খবর দূটিই পেশ হবে।
৩) মুকতাদা যদি মুযাককার হয় তাহলে খবরও মুযাককার হবে। আর যদি মুকতাদা মুয়ান্নাস হয় তবে খবরও মুয়ান্নাস আনতে হবে।
যেমনঃ আল তিরমিজু ওয়াকিফুন।
১- তিরমিজু শবদ আলিফ লাম দিয়ে বুঝায় মারেফা, তাই এটি মুকতাদা।ওয়াকিফুন নাকারা। তাই এটি খবর।
২- তিরমিজু (মুকতাদা)শব্দে দুই পেশ আছে অনুরপ ওয়াকিফুন (নাকারা) শব্দে দুই পেশ আছে।
৩- তিরমিজু (মুকতাদা) শব্দটি মুযাককার এবং ওয়াকিফুন (নাকারা) শব্দটিও মুযাককার।
অনুরপ আল তিরমিজাতু ওয়াকিফাতুন
এখানে মুকতাদা ও খবর মুয়ান্নেস।
অর্থ করতে গেলে মুকতাদার অনুবাদ আগে করতে হবে পড়ে খবরের অনুবাদ হবে।
মুকতাদা এবং খবরের মুতাবেকাত ৪ জিনিসের উপর হয়।
ক) যদি মুকতাদা উফরাত হয় খবরও উফরাত হবে। অর্থাত মুকতাদা ওয়াহেদ হলে খবর ওয়াহেদ হবে।
খ) মুকতাদা তাসনিয়া হলে খবর তাসনিয়া হবে।
গ) মুকতাদা জমাহ হলে খবরও জমাহ হবে।
ঘ) মুকতাদা মুয়ান্নাস হলে খবরও মুয়ান্নাস হবে।
প্রাথমিক আরবী গ্রামার পর্ব-১০
জমির (সর্বনাম)ঃ ইসিম এর পরিবর্তে যে পদ ব্যবহার হয় তাকেই জমির বলে।
জমির তিন প্রকার।
১) মারফু ২) মানছুব ৩) মাজরুর।
১) মারফু (কর্তৃবাচ্য) কর্তার পরিবর্তে যেখানে বসে সেটা মারফু। পেশ থাকলে হয়। মারফুকে দূই ভাগে ভাগ করা যায়। ক) মুনতাছিল ( যুক্ত থাকলে) খ) মুনফাছিল। (আলাদা বা পৃথক থাকলে)
২) মানছুব (কর্মবাচ্য) কর্মের স্থানে যেটি বসে সেটি মানছুব জমির। মানছুবকেও দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
ক) মুত্তাছিল ( কর্মের সাথে যুক্ত থাকলে) খ) মুন্তাছিল ( কর্মের সাথে আলাদা থাকলে)
৩) মাজরুর (সম্বন্ধবাচক সর্বনাম) সম্বন্ধ সূচক সর্বনাম। এটি সর্বদা যুক্ত থাকবে।
সুতরাং জমির পাঁচ প্রকার। যথাঃ
১) জমিরে মারফু মুনতাছিল।
২) জমিরে মারফু মুনফাছিল।
৩) জমিরে মানছুব মুনতাছিল।
৪) জমিরে মানছুব মুনফাছিল।
৫) জমিরে মাজরুর মুনতাছিল।
আরবীতে মোট ৭০ টি জমির আছে। এই ৭০টি জমিরকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। পাচ চৌদদ সততুর।
জমিরে মারফু মুনতাছিল ১৪টি।
মূল শব্দ نصر (নাছার) সাহায্য করা।
১) নাছারা نصر (নাছারা),=সে সাহায্য করেছিল। পুং
২) نصا — ا (নাছারা)=তারা ২জন সাহায্য করেছিল।পুং
৩)نصروا—وا (নাছারু) তাহারা সকলে সাহায্য করেছিল।পুং
৪) نصرت —- ت নাছারাত- সে স্ত্রী সাহায্য করেছিল।
৫) نصرتا — تا নাছারনা- তারা ২ জন স্ত্রী সাহায্য করেছিল।
৬) نصرن — ن নাছারনা – তারা সকল স্রী সাহাযয করেছিল।
৭) نصرت — ت নাছারাত – তুমি পুং সাহায্য করেছিলে।
৮) نصزتما — تما নাছারানমা- তোমরা ২ জন পুং সাহায্য
৯) نصزتم — نم নাছারতুম – তোমরা সকল পুং সাহায্য —
১০) نصرت — ت নাছারতে তুমি একজন স্ত্রী সাহায্য
১১) نصرتما — تما নাছারতুমা তোমরা স্ত্রী ২ জন সাহায্য
১২) نصزتن — تن নাছারতুন তোমরা সকল স্ত্রী সাহায্য
১৩) نصرت —- ت নাছারতু আমি সাহায্য করেছিলাম
১৪) نصرنا — نا নাছারনা আমরা সাহায্য করেছিলাম।
এবার জানব জমিরে মারফু মুনফাছিল ১৪ টি। যা শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে বসে না। পৃথকভাবে বসে।
১। হুয়া (هو) সে (পুরুষ)
২। হুমা (هما) তারা (২জন পুরুষ)
৩। (হুম) هم তারা (সকল পুরুষ)
৪। (হিয়া) هي সে (স্ত্রী)
৫। هما (হমা) তারা স্রী
৬। هن (হুন্না) সকল স্ত্রী
৭। (আনতা) انت তুমি একজন পুরুষ
৮। (আনতামা) انتما তোমরা ২ জন পুরুষ
৯। (আনতুম) انتم তোমরা সকল পুরুষ
১০। اِنْتِ — তোমরা স্ত্রী
১১। انتما (আনতুমা) তোমরা ২জন স্ত্রী
১২। انتن (আনতান) তোমরা সকল স্ত্রী
১৩। (আনা) انا আমি
১৪। (নাহনু) نحن আমরা
উদাহরন هو طالب (হুয়া তালিবু) হুয়া মুকতাদা তালিবু খবর। সে একজন ছাত্র। দুটি মিলে যুমলায়ে ইসেম।
এটি যদি হিয়া তালেবুন হলে হবে সে একজন ছাত্রী।
এবার তারকিব করি نصرت নাছারতু এর।
নাছার نصر হল ফেল বা ক্রিয়া = সাহায্য করা।
তু ت হবে ফায়েল বা কর্তা। = আমি করেছিলাম।
দুইটা মিলে যুমলায় ফেলিয়া।
তাহলে نصرت নাছারতু অর্থ হবে = আমি সাহায্য করেছিলাম।
**************
প্রাথমিক আরবী গ্রামার পর্ব-১১
মাফুউল (কর্ম/Object) – معفول — Plural المعاقععيل
বাক্যে অবস্থিত কর্মকেই মাফুউল বলে। অর্থাত কর্তার কাজ যার উপর সংগঠিত হবে তাকে معفول বলে।
Sentsnce = Subject + Verb + Object + Extention
Verb + Subject + Object ( قعل + فاعل + مفعل )
Fel +fayel+maful
(Akala Jayed Rujja ) اكل زير رزا
اكل + زيد + رزا
فعل + فاعل + مفعل
মাফুউলের শেষ অক্ষরে যবর থাকবে আর যদি দুই যবর হয় তখন শেষে একটি অতিরিক্ত আলিফ বসাতে হয়।
মাফুউল কত প্রকার ও কি কি?
মাফউল বা কর্ম ৫ প্রকার।
১) মাফুউল মুতলাক (مفعول مطلق)
২) মাফুউল বিহী (مقعول به)
৩) মাফউল ফাহি (مفعول فيه)
৪) মাফউল লিহি (مقعول له)
৫) মাফউল মা’আ (مفعول معه)
***************
রব ( رب ) শব্দ থেকে
ربك —
রব্বুকা (ربك ) — তোমার রব।
রব্বাকা (زبك ) – – তোমার রবকে।
রব্বিকা (ربك ) – – তোমার রবের।
এ শব্দগুলির মধ্যে পার্থক্য কি?
রাব্বুকা ربك এর তারকিব
মুল শব্দ رب রব, ك – তোমার। ربك — তোমার রব।
এখানে রব মুকতাদা কা সর্বনাম খবর। বা সংযুক্ত কারী অব্যয়। বি ইসিম আল্লাহ = বিসমিল্লাহ।
রব্বুকা ( ربك ) – তোমার রব (পেশের জন্য)
রব্বাকা (ربك ) – তোমার রবকে ( যবরের জন্য)
রব্বিকা (ربك ) তোমার রবের (যেরের জন্য)
১। ক্বলা রব্বুকা (قال زبك) = তোমার রব বলেছিল। قَلَز ফেল এবং مودف আর مودف ا اليه ইলাই মিলে রব্বুকা ফায়েল হয়েছে। যুমলায় ফেলিয়া। এ জন্য পেশ হয়েছে।
২। ক্বলা মুহাম্মাদু রব্বাকা (قال محمد زبك) = মুহাম্মদ তোমার রবকে বলেছিল। মাফউল হওয়ার কারনে যবর হয়েছে।
৩। মারারতু বিরব্বিকা ( مررت بربك ) = আমি তোমার রবের পাশ দিয়ে অতিক্রম করেছিলাম। হরফে যের এর জন্য যের। হয়েছে।
**********************
আল কুরানুল কারিম
القران الكرام .
প্রথম শব্দ আলকোরান ২য় শব্দ কারিম। দুটি শব্দই আলিফ লাম যুক্ত। সুতরাং দুটোই মারিফা। আর যদি আলিফ লাম যুক্ত না হত তাহলে নাকারা হত। এখন মারিফার পর মারিফা হলে মাওছুফ সিফাত। আলকোরানুল মাউছুফ এবং কারিম সব্দটি সিফাত।
বাংলা অনুবাদ করার সময় উলটো দিক থেকে করতে হবে। অর্থাৎ সিফাতের অনুবাদ আগে করতে হবে এবং পড়ে মাউছুফের অনুবাদ। তাই অনুবাদ লিখার সময় লিখতে হবে সন্মানিত কোরান। নুনে পেশ তাই মিম এ পেশ।
কোরআনে পুনারাবৃত্তি সহ মোট শব্দ সংখ্যা প্রায় ৭৮,০০০ টি। এর মধ্যে ১০ টি অব্যয় পদ সূচক শব্দ জানা হলে ২৩,০০০ শব্দ জানা হয়ে যায় এবং ১১ টি হা/না বাচক শব্দ জানতে পারলে ৫৭০০ টি কোরানের শব্দ আয়ত্ত হয়ে যায়। তার মানে ৫০℅ কোরআনের শব্দ আয়ত্ত হয়ে যায় ৭৮,০০০ – ( ২৩,০০০ + ৫৭০০) = ৫০,০০০ শব্দ বাকি থাকে। এই ৫০,০০০ শব্দ থেকে ৬টি সর্বনাদ পদ সূচক শব্দ জানতে পারলে আরো ৫০০০ শব্দ আয়ত্ত হয়ে যাবে। এখন বাকি থাকবে অজানা মাত্র ( ৫০,০০০ – ৫০০০) = ৪৫,০০০ শব্দ অজানা। এই ৪৫,০০০ শব্দের মধ্যে ক্রিয়া পদ ২০ হাজার এবং বিশেষ্য ২৫ হাজার মিলে মাত্র ২৫০টি মুল শব্দ জানতে পারলে পুরা কোরআনের ৭৮ হাজার শব্দ আয়ত্ত হয়ে যাবে। তখন কোরআন বুঝতে ও অনুবাদ অনুভব করতে মজাই আলাদা। আরবী ব্যকারনের মত কোরআনের ব্যকারনের জন্য অত বিশাল ব্যকারন জানার
প্রয়োজন হয় না। ইংরেজী শিক্ষিতগণ খুব সহজেই (১০+১১+৬+২৫০) = ২৭৮ টি শব্দ রপ্ত করলেই নিজে মাদ্রাসায় আরবী না পড়েও কোরানের ভাষা সরল ভাবে বুঝতে ও অনুধাবন করতে সক্ষম হবেন। হয়তো বিশাল পন্ডিত হবেন না কিন্তু পুরো কোরানের ভাষা আপনার আয়ত্তে এসে যাবে। যে কোন সূরা হতে যে কোন আয়াত পাঠ করলে তার ভাবার্থ বা সরল অনুবাদ উপলব্ধি করতে আপনি সক্ষম হবেন। এর জন্য মাত্র ১৫ টি পাঠ ক্রম অনুশীলন করলেই আয়ত্তে এসে যাবে। যারা নবীন এবং ইংরেজী এবং বাংলায় দক্ষ তারা ৩০ দিনেই আয়ত্ত করে নিতে পারবেন। বছরের প্রয়োজন হবে না। তবে পাঠ অনুশীলনের সাথে সাথে আপনাকে কোরানের সাথে তা মিলিয়ে দেখতে হবে এবং এই বিশেষ্য, বিশেষন, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া পদের মোট ২৭৮ টি শব্দ অর্থ সহ মুখস্থ রাখতে হবে। আমি ২৭৮ টি শব্দ মোট ৩০ টি পর্বে পাঠ অনুশীলন রুপে প্রকাশ করে যাব। কোন প্রশ্ন বা জটিলতা বোধ করলে কমেন্ট করে জানালে সমাধান দিব। আমি আবার বলে রাখছি এতে আরবী ভাষার পন্ডিত হবেন না তবে পুরো কোরান অনুধাবনের এবং সরল অর্থ করার যোগ্যতা অর্জন করবেন ইনশাআল্লাহ। এটি আরবী গ্রামের প্রাথমিক শিক্ষা মাত্র। যা গবেষনা করে কোরানকে সহজ ভাবে বুঝার জন্য সাধারন শিক্ষিতদের জন্য উপস্থাপন মাত্র। কোরআনের ব্যকারন সাধারন আরবী ভাষার ব্যকারন হতে ভিন্ন। আরবী ভাষা জানার জন্য ব্যাপক ব্যাকারন জানতে হয়। কিন্তু কোরআনের গ্রামিটিক্যাল জানার জন্য আরবী ব্যকারনের মাত্র ৬০টি বিষয়ে জানা থাকলেই যথেষ্ট। যা অধিকতর আগ্রহীদের জানার জন্য তুলে ধরা হলো। তা হলোঃ
নিজে আরবী ভাষায় পারদর্শী হয়ে নিজে অনুবাদ করে কোরানকে বুঝতে চায় যারা, তাদের আরবী গ্রামারের নিন্ম বিষয় গুলোর উপর জ্ঞান অর্জন আবশ্যক।
কালাম – যুমলাহ বা মুরাক্কাব -জুলমাহ খাবরিয়াহ – জুলমাহ ইনশাইয়াহ – ইলমে সরফ – ইলমে নাহু – মাসদার – মাসদার সিয়ামি – মাসদার কিয়াসি – ইশেম – ফেল – হরফ – মুযাক্কার – মুয়ান্নাস – ওয়াহেদ – তাসনিয়া – জামাআ – মাঝি – হাল – মুসতাকবিল – জামির- ফায়েল – মাফউল – আদল – আদদ – মুবতাদাহ – খবর – মাউসুত -সিফাত – সীগাহ – বালাগাত – মুদফ – মুদফ ইলাইহী – মুসনাদ ইলাইহী – মারেফা – নাকেরা – ফেল – ফায়েল – জুমলায় ফেলিয়া – জুমলায় ইশমিয়া – মুতাআল্লিম – মাফুলে বিহি –
হরফুল যার – হরফে নেদা – আমর – মুতাআ’ল্লিক –
মাআ’দুফ – মাউসুফ – সিফাত – মুদব – মুদব ইলাইহী –
গায়েব – হাজির- মুস্তাকবিল- ফা’লে মারুফ – ফা’লে মাজহুল – ফা’লে ইসবাতু – ফা’লে নাফি – জিনস – গায়েব – হাজির – মুতাকাল্লিম – মাসদার – বাব – ইবারত – বাহছ – ওজন ইত্যাদি বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন আবশ্যক।
সর্বপোরি এত কঠিন ভাবে এত কিছু ব্যাকারন আপনার জানার সক্ষমতা না থাকলে বাদ দিন। ২৭৮ টি শব্দ অর্থ সহ মুখস্থ করে কোরানের ৭০% শব্দ ভান্ডার আয়ত্ত করুন এবং কোরআনকে নিজ ভাষায় বুঝতে উপলব্ধি করতে নিজেকে গড়ে তুলুন। তার জন্য আমি ৩০ টি পর্বে ভাগ করে এই শব্দ গুলি অর্থ সহ তুলে ধরবো। একবার আগ্রহের সাথে আল্লাহর সাহায্য কামনা করে চেষ্টা করে দেখুন, আপনিও পারবেন। আমি একজন ইংরেজী শিক্ষিত কেমেষ্ট্রিতে অনার্স মাষ্টারস হয়ে যদি সাধনা করে এতদুর আসতে পারি আপনিও পারবেন। শুধু চাই একাগ্রতা, আগ্রহ, ধৈর্য এবং আল্লাহর নিকট সাহায্য কামনা। মাত্র ৩০ থেকে ৯০ দিনেই আপনি কোরআনের যে কোন আয়াতের সরল অনুবাদ সহ উপলব্ধি করতে সক্ষম হবেন ইনশাআল্লাহ। কোরান পড়া আগে জানা থাকতে হবে।
ইংরেজী শিক্ষিতদের ১ম পর্ব
কোরআনের ৭৮ হাজাট শব্দের মধ্যে নিন্মের ১০ টি শব্দ অর্থ সহ শিখতে পারলে কোরানের ২৩ হাজার শব্দ আয়ত্ত হবে। অর্থাৎ কোরানের মোট শব্দের ৩০% আয়ত্ত হয়ে যাবে। শব্দ ১০ টিঃ —–
هم – من – الله – ما –ان – لا – في– قل– عل– الذي
١) হুম ( هم) – তারা/য়ারা। ( সূরা মাউনঃ ৬)
٢) মিন ( من )= থেকে/হতে (আলাকঃ২)
٣) আল্লাহ ( الله ) = আল্লাহ ( ফাতেহাঃ ১)
٤) মা ( ما ) = কি/যা ( উদাহরন ফালাকঃ২)
٥) ইন্না ( ان ) = নিশ্চয় ( মায়েদাঃ ২)
٦) লা ( لا ) = নয়/ নেই ( বাকারাঃ ২)
٧) ফী ( في ) = মাঝে/ভিতরে ( বাকারাঃ ২)
٨) ক্বলা ( قل )= বলা/বলেছে (যিলযালঃ৩)
٩ ) আ’লা ( عل ) = উপরে ( ফাতেহাঃ ৭)
١٠) আল্লাযি(الذي )= যারা/যাদের (ফাতেহাঃ৭)
এই ১০টি শব্দ শিখলে কোরানের ২৩০০০ শব্দ শিখা হল। বাকি থাকে (৭৮০০০ – ২৩০০০) = ৫৫,০০০ মাত্র। ২য় পর্বে ১১টি শব্দ দ্বারা শিখবো কোরআনের ৫৭০০ টি শব্দ।
এবার কোরআন থেকে উদাহরনে উল্লেখিত প্রতিটি আয়াত বের করে একবার মিলিয়ে নিন এবং শব্দ ১০ টি মুখস্থ করে ফেলুন।
****************
_______ ইংরেজী শিক্ষিতদের কোরান চর্চা পর্ব-০২
কোরআনের হা ও না বাচক ১১টি শব্দ শিখলে কোরআনের মোট ৭৭৫০০ শব্দ হতে ৫৭০০ শব্দ শিখা হয়ে যাবে।
হা বাচক শব্দকে বলে الاثبات ( আল ইসবাত )
এবং নাবাচক শব্দকে বলে النفي ( আল নাফি )
১) লা ( لا ) নেই/না। যেমন: لَا رَيْبَۛۚۖ فِيْهِۛۚ هُدًى لِّلْمُتَّقِيْنَۙ
ইহাতে কোন সন্দেহ নাই, ( বাকারা – ২)
২) নাআ’ম ( نعم ) আছে/হা যেমনঃ ( আরাফ -১১৪ ) قَالَ نَـعَمْ সে বলিল হ্যা,
৩) ইল্লা ( ا لا ) ছাড়া/ব্যতিত যেমনঃ ( বাকারাঃ২৬)
৪) কাল্লা ( كلا ) কখনো না। ** এটি Verb এর সাথে ব্যবহার হয় না। যেমনঃ ( মাআ’রিজ-৩৯)
৫) লান ( لن ) কিছুতেই না । এটি Verb এর সাথে ব্যবহার হয়ে থাকে। যেমনঃ (ইনশিকাক -১৪)
৬) লাম ( لم ) নাই/ না। ভবিষ্যৎ শব্দের সামনে বসে এটি শব্দটিকে Past করে দেয়। যেমনঃ (এখলাসঃ ৩)
لَمْ يَلِدْ ۙ وَلَمْ يُوْلَدْ
৭) মা ( ما ) যা/না। যেমনঃ (২ঃ৮)
৮) লাইসা ( ليس ) না/নয় । যেমন – (ত্বীনঃ৮)
৯) বালা ( بلى ) অবশ্যই । যেমনঃ ( ইনশিকাকঃ ১৫)
৷ بَلٰٓى ۛۚ اِنَّ رَبَّهٗ ؕ- অবশ্যই ফিরিয়া যাইবে;
১০) গাইর ( غير ) অবশ্যই না। যেমনঃ (ফাতেহাঃ৭)
১১) দুনা ( دون ) ব্যতীত/ছাড়া। যেমনঃ (২ঃ২৩)
مِّنْ دُوْنِ اللّٰهِ
আল্লাহকে ছাড়া।
#এভাবে ১০ টি পর্বের অনুসরন করলে মাত্র ৫০ টি শব্দ শিখে কোরানের মোট শব্দ ভান্ডারের (৭৭৫০০) ৫১% শব্দ আয়ত্ত করা হয়ে যাবে এবং কোরান বুঝা সহজ হয়ে উঠবে।
*********************
______ ইংরেজী শিক্ষিতদের কোরান চর্চা পর্ব-০৩
১ম ও ২য় পর্বে মোট (২৩০০০+৭৫০০) = ৩০৫০০ শব্দ জানা হয়েছে। এ পর্বে মাত্র ১১ টি অব্যয় বাচক শব্দ শিখে কোরানের ১০,০০০ শব্দ জেনে নিব। যদিও এর মধ্য হতে তিনটি অব্যয় বাচক শব্দ ইতিপুর্বে জেনেছি।
অব্যয়ব ব্যচক এই শব্দ গুলি একা একা কোন অর্থ প্রকাশ করতে পারে না। অন্য শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে অর্থ প্রকাশ করে থাকে।
এই ১০,০০০ জানা হলে কোরানের ৭৭৫০০ শব্দ ভান্ডারের মধ্য হতে (৩০৫০০+ ১০০০০) = ৪০,৫০০ শব্দ শেখা হয়ে যাবে। যা কোরানের মোট শব্দ ভান্ডারের ৫২% শিখা হবে।
১) من (মিন) = থেকে/হতে/চেয়ে/দ্বারা। ( আলাক্ব-২)
২) فى (ফী) = তে/এ/মধ্যে। যেমনঃ (বাকারা-২)
৩) على ( আ’লা) = উপরে/কারনে। (ফাতেহা-৭)
৪) ل (লি) = জন্য/এ কারনে। ( বাকারা-২৮৪)
৫) الى (ইলা) = দিকে/অভিমুখে। ( ইনশিরাহ -৮)
৬) ب (বি) = সাথে/তে / নিকট। ( নামল- ৩০)
৭) عن (আ’ন) = থেকে/ব্যাপারে। ( মাউন -৫)
৮) مع ( মা’আ ) = সাথে। ( ইনশিরাহ -৬)
৯) حتى (হাত্তা) = যতক্ষন পর্যন্ত না। ( তাকাছুর-২)
১০) لدى ( লাদা ) = নিকট/সামনে। ( ক্বাফ -২৮)
১১) لدن ( লাদূন ) = নিকট/সাথে। ( ত্বহা-৯৯ )
১) কোরআন থেকে উদাহরন দেখি من (মিন) এর
খলাক্বাল ইনসানা মা আ’লাক্ব k١) خلق الا نسان من عا
শব্দার্থঃ خَلَقَ = সৃষ্টি করেছেন , الْإِنْسَانَ = মানুষকে, مِنْ = থেকে, عَلَقٍ = জমাট রক্ত পিণ্ড,
অনুবাদঃ সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত পিন্ড হতে।
২) কোরআন থেকে উদাহরন দেখি فى (ফী) এর
(যালিকাল কিতাবু লা রাইবা ফিহী ) زلك ااكتب لا ريل فيه
শব্দার্থ: ذَٰلِكَ = (এটা) সেই, الْكِتَابُ = মহাগ্রন্থ, لَا = নেই, رَيْبَ = কোনো সন্দেহ, فِيهِ = তাঁর মধ্যে,
অনুবাদ: এই সে কিতাব, এতে কোন সন্দেহ নেই।
৩) কোরআন থেকে উদাহরন দেখি على ( আ’লা) এর
ছেরাতল লাযিনা আনআ’মতা আ’লাইহীম ) صراط الذ ين انعمت علبهم এখানে আলা হুম সর্বনামের সাথে যুক্ত হয়ে অর্থ প্রকাশ করেছে।
শব্দার্থ: صِرَاطَ = (সেই) পথে, الَّذِينَ = যাদেরকে, أَنْعَمْتَ = আপনি অনুগ্রহ দান করেছেন , عَلَيْهِمْ = তাদের উপর ,
অনুবাদ: তাদের পথ যাদের প্রতি তুমি অনুগ্রহ করেছ,
৪) কোরআন থেকে উদাহরন দেখি ل (লি) এর
٤) لله ما فى السمؤت ؤ ما قى الارص
(লিল্লাহে মা ফীসসামওয়াতে ওয়া মা ফিল আরদ)
শব্দার্থ: لِلَّهِ = আল্লাহরজন্য, مَا = যা কিছু , فِي = মধ্যে (আছে) , السَّمَاوَاتِ = আকাশ সমূহের , وَمَا = ও যা কিছু , فِي = মধ্যে (আছে) , الْأَرْضِ = পৃথিবীর,
অনুবাদ: আকাশসমূহে ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর।
৫) কোরআন থেকে উদাহরন দেখি الى (ইলা) এর
( ওয়া ইলা রাব্বিকা ফারগাব) ؤ الى ربك فرغب
শব্দার্থ: وَإِلَىٰ = এবং প্রতি, رَبِّكَ = তোমার রবের, فَارْغَبْ = তখন মনোনিবেশ করো,
অনুবাদ: এবং নিজের রবেরই প্রতি মনোযোগ দাও।
৬) কোরআন থেকে উদাহরন দেখি ب (বি) এর
( বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ) بسم الله الرحمن الرحيم
শব্দার্থ: بِسْمِ = নামে, اللَّهِ = আল্লাহ(র), الرَّحْمَٰنِ = পরমকরুণাময়, الرَّحِيمِ = অসীমদয়ালু
অনুবাদ: পরম করুণাময় মেহেরবান আল্লাহর নামে।
৭) কোরআন থেকে উদাহরন দেখি عن (আ’ন) এর
٧) الذن هم عن صلاتهظ ساهؤن
( আল্লাযিনা হুম আ’ন সলাতিহিম সাহুউন)
শব্দার্থ: الَّذِينَ = যাদের (বৈশিষ্ট্য হলো ) , هُمْ = তারা , عَنْ = সম্বন্ধে, صَلَاتِهِمْ = তাদের সালাত, سَاهُونَ = উদাসীন,
অনুবাদ: যারা নিজেদের সলাতের ব্যাপারে উদাসীন।
৮) কোরআন থেকে উদাহরন দেখি مع ( মা’আ ) এর
( ইন্না মা ‘আল উ’সরি ইউসরান) ان مع العسر يسرا
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়ই, مَعَ = সাথে , الْعُسْرِ = কষ্টের, يُسْرًا = স্বস্তি (আছে) ,
অনুবাদ: আসলে কষ্টের সাথে আছে স্বস্থির।
৯) কোরআন থেকে উদাহরন দেখি حتى (হাত্তা) এর
( হাত্তা জুরতুমুল মাক্বাবির) حَتّٰى زُرْتُمُ الْمَقَابِرَؕ
শব্দার্থ: حَتَّىٰ = যতক্ষণ না, زُرْتُمُ = তোমরা উপস্থিত হও, الْمَقَابِرَ = কবর সমূহে,
অনুবাদ: যতক্ষন না তোমরা কবরে উপনিত হও।
১০) কোরআন থেকে উদাহরন দেখি لدى ( লাদা ) এর
( ক্বলা লা তাজতাছিমুউ লাদাইয়া) قَالَ لَا تَخْتَصِمُوْا لَدَیَّ
শব্দার্থ: قَالَ = (আল্লাহ) বলবেন, لَا = না, تَخْتَصِمُوا = তোমরা তর্কাতর্কিকরো, لَدَيَّ = আমার কাছে ,
অনুনাদঃ আল্লাহ বলবেন আমার সামনে বাক বিতান্ডা কর না।
১১) কোরআন থেকে উদাহরন দেখি لدن ( লাদূন ) এর
١١) ؤقد اتينك من لدنا ذكرا
( ফাক্বাদ আতাইনাকা মিনাল লাদুন্না জিকরা)
শব্দার্থঃ وَقَدْ = এবং নিশ্চয়ই , آتَيْنَاكَ = তোমাকে আমরা দিয়েছি, مِنْ = হতে, لَدُنَّا = আমার নিকট, ذِكْرًا = উপদেশ ,
অনুবাদ: এবং নিশ্চয় আমরা নিকট হতে তোমাকে দিয়েছি উপদেশ।
অনুগ্রহ করে কোরান খুলে মিলিয়ে দেখুন একবার।।
**-****&*****************
(ইন্না) ان নিশ্চয় / অবশ্যয়।
মা ( ما ) = একটি অব্যয় পদ। যার অর্থ (যা / কি /না)
কখন ما এর অর্থ ” যা” হয়? কখন ما এর অর্থ “কি ” হয়? আর কখন এই একই শব্দ ما এর অর্থ “না” হয় বলেন তো। ? নীচে কোরানের আয়াত থেকে এদের অর্থের ব্যবহারের উদাহরন দেয়া হল।
১) ما = ” যা ” অর্থে ما এর ব্যবহার। ( ২:২৭,১৫১,১৫৯)
২) ما = ” কি ” অর্থে ما এর ব্যবহার। (২:১৪৪, ১৪৮,১৫০)
৩) ما = ” না ” অর্থে ما এর ব্যবহার। (২:১৬,১৭৪,২৫৩)
এখন আপনি নিজে বিভ্রান্তীতে থেকে আপনার অজ্ঞতার জন্য সবাইকে বিভ্রান্ত মনে করলে তো হবে না। প্রচলিত ধার করা অনুবাদে আপনি নিজেই বিভ্রান্তীতে পড়ে আছেন। কোরানের আয়াতগুলি খুলে অর্থ মিলিয়ে দেখে নিন।
ReplyForward Add reaction |
2nd
Part
2nd
Part
আছে তাহলে গাছ বিহীন মহাশূন্য এবং চাদঁকে শীতল রাখলো
কে যে নভোচারীরা মহাশূন্যে নভোযানকে নিয়ন্ত্রণ রেখে সেখানে যেতে পারে ? এবং নভোযান গুলো কিসের উপর ভর করে বা ধাক্কা দিয়ে উপরে উঠতে পারে যেমনটা মাছ পাখি বিমান হেলিকপ্টার উড়তে পারে ? শুধু মহা শূন্য এবং পৃথিবী স্থীর । মোট কথা, “সেন্টার বুঝতে ভূল হয়েছে,সূর্য নয় বরং সেন্টারে আছে পৃথিবী এবং সব কিছু পৃথিবীকে ঘিরেই ঘুরছে।মহান আল্লাহ পৃথিবী সহ সৌরজগতের সূর্য চন্দ্র গ্রহ তারা সব কিছু সৃষ্টি করেছে ৬ দিনে তারমধ্যে পৃথিবীতেই সময় লাগিয়েছেন ২ দিন, বাকী সব ৪দিনে, মানে এক তৃতীয়াংশ সময় লাগিয়েছে শুধু উনার প্রীয় পৃথিবীর জন্য। অতএব আপনাকে বুঝতে হবে পৃথিবী হচ্ছে স্পেশাল।
এই পৃথিবীকে কিছু গবেষক দাড়ঁ করিয়েছেন অন্য সব গ্রহের লাইনে। এতে পৃথিবীর মান যায়। পৃথিবীর সেবায়ই চন্দ্র সূর্য আলোক সজ্জা সব কিছু, অতএব পৃথিবীই আছে সৌরজগতের কেন্দ্র বিন্দুতে,কেন্দ্রবিন্দুতে।আল্লাহর আরশ ফেরেশতাগন জ্বীন দোজখ জান্নাত বিচার শাস্তি সব কিছুই এই মানুষে ঘিরে আর এই মানুষই হচ্ছেন পৃথিবীর বাসিন্দা, অতএব পৃথিবী স্পেশাল, মানুষই সৃষ্টির সেরা জীব। এখন প্রশ্ন সুরা তালাকের শেষ এবং শেষের আগের আয়াত কি বলছে,ঐ সব পৃথিবীতে কারা আছে? আরশ হচ্ছে আরশের অধিপতি আল্লাহররাজ দরবারের মতো যেখানে জান্নাত দোজখ নেই।তিনি প্রথম আসমানে সূর্য চন্দ্র গ্রহ তারা স্হাপিত করেছেন পৃথিবীর জন্য।বাকী গুলোতে নেই কেন? বাকী গুলো জান্নাত যাহা আরশে স্হাপিত নয় বলে মনে করি।পৃথিবীর যাবতীয় সুখ শান্তি চাওয়া পাওয়া পূরণ হবার জায়গা ঐ সব পৃথিবী।শেষ আয়াতের আগের আয়াত এমনটাই মনে হচ্ছে।
★★★ আসমানি কিতাব তাওরাত এবং ইন্জিল একই আল্লাহর বাণী। তাই এগুলিতেও সূর্য এবং পৃথিবী ঘুরার বিয়য়ে মত পার্থক্য নেই। ততকালীন সময়ে সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরার মতপার্থক্য এবং বিরোধীতা করায় আসমানী কিতাব অবমাননার দ্বায়ে কিছু ইহুদী এবং খৃষ্টানরা জ্যোতির্বিদ জিওর্দানো ব্রোনোকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে যিনি কিনা পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরার থিউরির সর্ব প্রথম জনক।
★★★ বিজ্ঞান বলেনি যে,-“পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরছে, বরং কিছু গবেষক বলেছে যে,-“পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরছে”। কারো মতামত প্রকাশ বিজ্ঞান নয়। বিষয়টি ল্যাবে টেষ্টযোগ্য নয়। আমিও একজন তাদের মতো গবেষক তবে মহান আল্লাহর দেয়া পবিত্র কোরআন পড়ুয়া। পার্থক্য এতটুকু।
আপনি এ ট্রপিকসটা পড়তে বড় জোর আধা ঘন্টা সময় ব্যায় করলেন ! আর আমার এটি লিখতে অর্ধ বছর সময় তন্য তন্য করে কোরআন পড়তে হয়েছে।।
Edit
কখনও কখনও মানুষ সত্য শুনতে চায় না কারণ তারা তাদের বিভ্রান্তিগুলি ধ্বংস করতে চায় না।”
ধর্মীয় বিষয়ে মানুষ জন্মগত ভাবে যে বিষয়টি সত্য জেনে আসছে তা অন্য কেউ মিথ্যা বললে সহজে মেনে নিতে পারে না।
মানুষ ধর্মীয় বিষয়ে তার জানা গুলো ডাহা মিথ্যা হলেও তার জানা গুলোকেই একমাত্র সত্য মনে করে এবং বাকি সব মিথ্যা মনে করে।
একজন ব্যক্তি যখন হঠাৎ জানতে পারে তার ধর্মীয় বিষয়ে জানা গুলো অনেক কিছুই মিথ্যা তখন সে উত্তেজিত হয়। সে মেনে নিতে পারে না। যুগে যুগে এ সংঘর্ষ সকল নবী রাসুলদের সাথেও হয়ে আসছে।
যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা তোমরা অনুসরণ কর’, তাহারা বলে, ‘না, বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহার অনুসরণ করিব।’ এমন কি, তাহাদের পিতৃ পুরুষগণ যদিও কিছুই বুঝিত না এবং তাহারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না-তৎসত্ত্বেও। (২ঃ১৭০)
দীর্ঘ দিনের পালিত অভ্যাস, বাপদাদার যে ভাবে এবাদত করতে দেখে আসতেছে, অধিকাংশ লোকেকে যে ভাবে ধর্ম কার্যাদি সম্পাদন করতে দেখে আসতেছে তা থেকে সড়ে এসে যত সত্য কথায় উপস্থাপন করা হোক না কেন, মানুষ তা গ্রহন করতে রাজি না, যদিও কোরান থেকে দৃষ্টান্ত দেয়া হয়। আর এমন হবে তা আল্লাহ জানেন বলেই নবী ও তার পরবর্তি অনুসারীদের লক্ষ্য করে আল্লাহ বলেনঃ
যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬ঃ১১৬)
মানুষের মধ্যে কেহ কেহ আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিতণ্ডা করে; তাহাদের না আছে জ্ঞান, না আছে পথ নির্দেশ, না আছে কোন দীপ্তিমান কিতাব।(২২ঃ৮)
সে বিতণ্ডা করে ঘাড় বাঁকাইয়া লোকদেরকে আল্লাহ্র পথ হইতে ভ্রষ্ট করিবার জন্য। তাহার জন্য লাঞ্ছনা আছে ইহলোকে এবং কিয়ামত দিবসে আমি তাহাকে আস্বাদ করাইব দহন-যন্ত্রণা। (মুমিনুন ২৩,আয়াত ৯)
তোমরা তাহাদের মত হইও না যাহারা তাহাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসিবার পর বিচ্ছিন্ন হইয়াছে ও নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করিয়াছে। তাহাদের জন্য মহাশাস্তি রহিয়াছে।
(ইমরান ৩,আয়াত ১০৫)
তারপর লোকেরা তাদের মাঝে তাদের দীনকে বহুভাগে বিভক্ত করেবে। প্রত্যেক দলই তাদের কাছে যা আছে তা নিয়ে উৎফুল্ল থাকবে । (মুমিনিন ২৩,আয়াত ৫৩)
বরং মানুষের মধ্যে কতক অজ্ঞানতা বশত আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিতণ্ডা করে এবং অনুসরণ করে প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের(২২ঃ৩)
আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তোমাদের নিকট বিশদ ভাবে বিবৃত করিতে, তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতি তোমাদেরকে অবহিত করিতে এবং তোমাদের ক্ষমা করিতে। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। – (সূরা নম্বরঃ ৪, আয়াত নম্বরঃ ২৬)
তাদের মধ্যে এমন আহম্মক লোক আছে যাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কেতাব সম্বন্ধে কোনোই জ্ঞান নেই, তারা শুধু অবাস্তব ধারণায় বিশ্বাসী। – [২: বাকারা-৭৮]
অধিকাংশ ঈমান এনে এবাদত করছে ঠিকই কিন্তু উল্টো পথে এবং তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে ভাবছে আমরা অনেক ভাল আমল করছি। প্রকৃত সব পন্ডুসার।
দীর্ঘদিন যদি কোন মিথ্যে শুনতে শুনতে অভ্যস্থ হয়ে যায় এবং তার বিপরীত কোন সত্য হাজির না হয়, তবে সে মিথ্যেটাও একদিন সত্যে পরিনত হয় এবং তা মানব হৃদয়ে মজবুদ এক ভিত গেড়ে বসে। সে তখন সে ভিত থেকে আর সড়ে আসতে পারে না, যত সত্যই তার কাছে উপস্থাপন করা হোক না কেন। এবং এই বিশ্বাসের ঘরে কেউ আঘাত করলে তা মেনে নিতে পারে না। এমনকি নিজ সন্তানকেও সে ত্যাগ করতে প্রস্তুত। বন্ধু-বান্ধব, পাড়া পড়শি, আত্মীয়- স্বজন তো দুরে থাক। তার মনে দীর্ঘ দিনের লালিত সে বিশ্বাসের বিপরীতে কোন সত্যকেও উপস্থাপন করা হলে সে আৎকে উঠে। প্রতিহত করতে চায়,বিরোধিতায় লিপ্ত হয় এমন কি জীবন দিতেও প্রস্তুত হয়ে যায়। আর সে বিশ্বাস যদি হয় ধর্মীয় – তবে তো আর কথাই নেই। ফলে অনেককে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের পরও দেখা যায় সে তার গোড়ামীর প্রাচীর ভেদ করে বেরিয়ে আসতে পারে না। তার মুল কারন সত্যটা তার সামনে শুরুতে কোন দিন উপস্থাপন করা হয়নি। ফলে পৃথিবী নামক গ্রহের বুকে জাতী একটি হলেও ধর্ম চার হাজার অধিক। কেউ কাউকে তার ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত থেকে এক বিন্দু টলাতে সক্ষম নয়। কারন জন্মগত ভাবে সে এ অনুভুতি গুলো দেখে আসতেছে। বহু পুর্ব হতে বাপ-দাদাদেরকেও এরুপই করতে দেখে এসেছে। সে যাকে,যাকে ভক্তি শ্রদ্ধা করে যাকে ইত্তেবা করে তার মুখেও এমনি শুনে এসেছে। তাই তার অন্য কোন কথা, মতামত কানে পৌছা মাত্র গা জ্বলে উঠে। শোনা বা তা একটু রিভিউ করে দেখা তো দূরে থাক। এমন মানুষদের নিয়ে আল্লাহ ঘোষনা দেনঃ
মানুষ নিজেই নিজের স্বর্গ বা নরকের সৃষ্টিকর্তা, আর তার নিজের ভুল ছাড়া অন্য কোন শয়তান নেই”।
অন্যদিকে যে বাণী গুলোকে আপনি নবীর বাণী বলে মনে করেন মুলত সে গুলি শয়তানের বাণী, নবীর নামে প্রচার করা হয়েছে। নবী কখনো অশ্লীল, অবৈজ্ঞানিক, অবাস্তব, অসামাঞ্জস্য কোন কথা কখোনই বলেন নাই বা বলতে পারেন না। কারন তিনি স্বয়ং রব দ্বারা সার্বক্ষন কন্ট্রোলিত ছিলেন। তার প্রমাণ নীচের আয়াতটি পড়লেই বুঝতে পারবেন।
“আমি যদি আপনাকে সতর্ক না করিতাম তবে আপনিতো প্রায় তাদের প্রতি ঝুকেই পড়েছিলেন।”
এ উপ-মহাদেশের খৃষ্টান মিশনারীদের দ্বারা পরিচালিত মাদ্রাসা গুলিতে হাদীসের সিলেবাসে সীমাবদ্ধ রেখে আলেম নামক ইসলামী স্কলারগন তৈরী হতে থাকে। কোরানের উপর গবেষনা বিমুখ এই আলেমগন নিজেদের প্রজ্ঞা বিবেক প্রয়োগ না করে সত্য মিথ্যে যাচাই এর কোন গবেষনা না করে দরসে হাদীসের অর্জিত জ্ঞানকে তৃপ্তির সাথে সোয়াব ও জান্নাত প্রাপ্তীর আমলে সীমাবদ্ধ করে আম-জনতার মগজে ঢুকিয়ে দিতে থাকে যুগের পর যুগ । যা পালন করে সবাই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে আলেমদের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে,লক্ষ্য একটাই পরকালের নাজাতের বিষয়ে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয় আলেমগন ধর্মকে জীবন জীবিকার পথ হিসেবে বেছে নেয়।
শুরু হয় মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ মাদ্রাসার গড়ার প্রতিযোগিতা। কর্মস্থলের সুযোগ বৃদ্ধি ও পরিধি প্রসারের মহা উৎসবে তারা ব্যস্ত হয়ে ইসলামকে পাচটি মৌলিক বিষয়ে সীমাবদ্ধ রেখে জনতাকে কোরান বিমুখ করে তুলে। এতেকরে মানুষ মুল ইসলাম থেকে ছিটকে পরে হুজুর ভিত্তিক দ্বীন ও ধর্ম পালনে অভ্যস্থ হয়ে পড়ে। এর পেছনে কারন ও রয়েছে।
মাত্র ৬৫০ বছর নবী প্রেরনে বিরতি হওয়ায় মানুষ জাহেলিয়াতের অতল গর্ভে তলিয়ে গিয়েছিল। আগে এক দেরশো বছর ব্যবধানেই মানুষকে সঠিক পথে চলার জন্য নবী প্রেরণ করতেন।
ঈশা নবীর তিরোধানের পর প্রায় ৬৫০ বছর পর্যন্ত কোন নবী বা রাসুল প্রেরন করেন নাই। এই দীর্ঘ ব্যবধানে মানুষ পথভ্রষ্ট হয়ে জাহেলিয়াতের অতল গর্ভে ডুবে যায়। এর আগে সব নবীই প্রায় ১০০ বছর ব্যবধানেই এসেছেন। দীর্ঘ বিরতির পর এই অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগে পাঠালেন নবী মুহাম্মদ সা: কে। আল্লাহ তাই বলেনঃ
রাসূল প্রেরণে বিরতির পর আমার রাসূল তোমাদের নিকট আসিয়াছে। সে তোমাদের নিকট স্পষ্ট ব্যাখ্যা করিতেছে যাহাতে তোমরা বলিতে না পার, ‘কোন সুসংবাদবাহী ও সতর্ককারী আমাদের নিকট আসে নাই।’ (৫:১৯) মায়েদাহ
কিন্তু নবী মুহাম্মদ সা: কে শেষ নবী রুপে প্রেরনের পর আর কোন নবী প্রেরণ করবেন না বলে ঘোষণা করা হলো। কারন ছিল অন্য কোন নবীর উপর নাযিল করা কিতাব সংরক্ষন করা হয় নি। কিন্তু শেষ নবীর উওপ্র না্যিল কৃত কিতাব আল কোরআন সংরক্ষনের দায়িত্ত আল্লাহ নিজে নিলেন। তাই কিয়ামত অব্দী আর কোন নবী প্রেরণ করা হবে না। এই কোরানই নবীর দায়িত্ব পালন করবে সঠিক পথ নির্দেশ দিবে মানব সমাজকে।
ঘঠনার বিপর্যয় ঘটল যখন মানুষকে শয়তান কোরান বিমুখ করতে সফল হল। কোরানকে তেলোয়াত আর সোয়াব অর্জনের জন্য ব্যবহার শুরু হল তখন মানুষ সঠিক পথ নির্দেশনা হতে আস্তে আস্তে দুরে সড়ে পড়ে
পুনরায় নব্য জাহেলিয়াতে ডুবে গেল। আর এ কাজটি করতে কোরানের পাশাপাশি মানব রচিত হাদীস নামক একাধিক কিতাব রচনা করা হলো। যা মানুষকে কোরানের নির্দেশনার চেয়ে অধিক গুরুত্ত দিতে শিক্ষা দিল
মাদ্রাসাগুলিতে কোরানের পরিবর্তে হাদীসের পাঠ্যসুচী প্রধান্য দিয়ে পাঠ্যক্রম করা হলো।
ফলে অবস্থা এমন একটি পর্যায়ে দাড়িয় যে সত্যটা কেউ তুলে ধরলে এই আলেম সমাজই আম জনতাকে হায়েনার মত লেলিয়ে দিয়ে ইহুদী-খৃষ্টানের দালাল,কাদেয়ানী, কাফের ইত্যাদি ইত্যাদি ফতুয়া দিয়ে ফাঁসির দাবীতে মিছিল করে। সত্য পরাভুত হয়ে নীরব অশ্রু ঝড়ায়ে নিগৃহীত।
“হাদিস” শব্দটা কুরআনে বহুল ব্যবহৃত। এর অর্থ কথা, বাণী, কেচ্ছা, সংবাদ। “আল্লাহু নাযযালা আহসানাল হাদিসা–!” আল্লাহ না্যিল করেছেন উত্তম বাণী।(সুরা যুমার, আয়াত ২৩)। “হাল আতাকা হাদিসুল গাশিয়াহ?” –“তোমার কাছে কি কেয়ামতের সংবাদ এসেছে?”(সুরা গাশিয়াহ, আয়াত ১)।
খুব অল্প লোকেই এই সত্যটা জানে যে সহীহ সিত্তাহ বা সুন্নিদের যে ছয়টি হাদীস গ্রন্থ আছে , এদের সঙ্কলক কারো বাড়ি সৌদি আরব বা আরব দেশে না এবং এদের কারো মাতৃভাষা আরবি ও না। এরা সকলেই ফার্সি ভাষী ইরানি বংশোদ্ভূত। মজার ব্যাপার হল, এই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বগুলি অন্যান্য শত শত ইরানী পণ্ডিতদের মধ্যে মাত্র ছয়জন , যারা সুন্নি ধর্মীয় ও বুদ্ধিবৃত্তিক ঐতিহ্য গঠনের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন।
কারো কি খটকা লাগে না আরব বা আরবি ভাষীরা কেনো হাদীসের সঙ্কলন করে নি? ইরানে কেনো হাদীসের এই সব বড় বড় আলেমদের আগমন? হাজার বছর আগে যখন উট ও ঘোড়াই ছিল যানবাহনের একমাত্র উপায় , তখন তারা শত শত মাইল পাড়ি দিয়ে কিভাবে হাদীস জোগাড় করেছেন ও সত্যাসত্য পরীক্ষা করেছেন? আমার তো খটকা লাগে। চিন্তা করে কুল কিনারা পাই না।
হিকমাত অর্থাৎ গভীর অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমে সত্য উপলব্ধি ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করার জ্ঞান, আল্লাহ্ শুধু যে নবী রাসূলগন কে দিয়ে থাকেন তা নয় বরং তাঁর প্রিয় সাধারণ বান্দাদেরকেও দিয়ে থাকেন।
তিনি যাকে চান হিকমাত (প্রজ্ঞা) দান করেন। আর যাকে হিকমাত (প্রজ্ঞা) দেয়া হয়, তাকে অনেক কল্যাণ দেয়া হয়। আর বিবেক সম্পন্নগণই উপদেশ গ্রহণ করে। (২:২৬৯)
মানুষ সত্য উপলব্ধির জ্ঞান শুধু যে আল্লাহর কিতাবের মধ্যে পেয়ে থাকেন তা নয় বরং প্রাকৃতিক গত ভাবে আল্লাহ্ প্রতিটি মানুষকে সত্য মিথ্যা প্রার্থক্য সৃষ্টি করার জ্ঞান দিয়ে থাকেন। মানুষ যদি আল্লাহর সৃষ্টির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করে তবে এই সত্য উপলব্ধির জ্ঞান লাভ করতে পারবে। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেনঃ
یُّؤْتِی الْحِكْمَةَ مَنْ یَّشَآءُ ۚ وَ مَنْ یُّؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ اُوْتِیَ خَیْرًا كَثِیْرًا ؕ وَ مَا یَذَّكَّرُ اِلَّاۤ اُولُوا الْاَلْبَابِ
অনুবাদ: তিনি যাকে চান, হিকমত দান করেন। আর যে ব্যক্তি হিকমত লাভ করে সে আসলে বিরাট সম্পদ লাভ করেছে। এই থেকে কেবলমাত্র তারাই শিক্ষা লাভ করে যারা বুদ্ধিমান ও জ্ঞানী। (২ঃ২৬৯)
———————– ২য় অধ্যায় —————————–
কোরআন বিমুখ মানুষকে সতর্ক করার জন্য আল্লাহ বলেনঃ
নিশ্চয়ই এই কুরআন হিদায়াত করে সেই পথের দিকে যাহা সুদৃঢ় এবং সৎকর্মপরায়ণ মু’মিনদেরকে সুসংবাদ দেয় যে, তাহাদের জন্য রহিয়াছে মহাপুরস্কার। (১৭:৯)
তাহাদের মধ্যে এমন কিছু নিরক্ষর লোক আছে যাহাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কিতাব সম্বন্ধে কোন জ্ঞান নাই, তাহারা শুধু অমূলক ধারণা পোষণ করে।(২ঃ৭৮)
এরা বিচার দিবসে বলবে……
আমরা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করিয়াছিলাম, কারণ আমরা নিজেরাও ছিলাম বিভ্রান্ত।’ (৩৭:৩২)
ইসলামের জ্ঞান সবাই পাবে না, আল্লাহর ওয়াদাঃ
আল্লাহ্ কাহাকেও সৎপথে পরিচালিত করিতে চাহিলে তিনি তাহার বক্ষ ইসলামের জন্য প্রশস্ত করিয়া দেন এবং কাহাকেও বিপথগামী করিতে চাহিলে তিনি তাহার বক্ষ অতিশয় সংকীর্ণ করিয়া দেন ; তাহার কাছে ইসলাম অনুসরণ আকাশে আরোহণের মতই দুঃসাধ্য হইয়া পড়ে। যাহারা বিশ্বাস করে না আল্লাহ্ তাহাদেরকে এইভাবে লাঞ্ছিত করেন।( আনআম ৬,আয়াত ১২৫)
আমি তাহাদের নিকট ফিরিশতা প্রেরণ করিলেও এবং মৃতেরা তাহাদের সঙ্গে কথা বলিলেও এবং সকল বস্তুকে তাহাদের সম্মুখে হাযির করিলেও যদি না আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তবে তাহারা ঈমান আনিবে না; কিন্তু তাহাদের অধিকাংশই অজ্ঞ।(৬ঃ১১১)
আমরা প্রতিদিনের প্রার্থনায় বলে থাকি —-
আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর,(১ঃ৬)
পৃথিবীর সমস্ত বৃক্ষ যদি কলম হয় আর সমুদ্র হয় কালি এবং ইহার সঙ্গে আরও সাত সমুদ্র যুক্ত হয়, তবুও আল্লাহর বাণী নিঃশেষ হইবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।( ৩১ঃ২৭)
প্রশ্ন আসে সরল পথ কি এবং কোনটি ?
যাহারা অদৃশ্যে ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে ও তাহাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করিয়াছি তাহা হইতে ব্যয় করে,(২ঃ৩)এবং তোমার প্রতি যাহা নাযিল হইয়াছে ও তোমার পূর্বে যাহা নাযিল হইয়াছে তাহাতে যাহারা ঈমান আনে ও আখিরাতে যাহারা নিশ্চিত বিশ্বাসী,(২ঃ৪) তাহারাই তাহাদের প্রতিপালক-নির্দেশিত পথে রহিয়াছে এবং তাহারাই সফলকাম।(২ঃ৫)
এবার বলা যাক সরল পথ কি ভাবে পাওয়া যায়?
যাহারা মনোযোগ সহকারে (কোরানের) কথা শুনে এবং উহার মধ্যে যাহা উত্তম তাহা গ্রহণ করে। উহাদেরকে আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করেন এবং উহারাই বোধশক্তি সম্পন্ন। (যুমার ৩৯,আয়াত ১৮)
এবার আসি যাক ঈমান কিসের উপর আনতে হবে ?
তোমরা বল, ‘আমরা আল্লাহ্তে ঈমান রাখি, এবং যাহা আমাদের প্রতি এবং ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাহার বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হইয়াছে; এবং যাহা তাহাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীকে দেওয়া হইয়াছে (২ঃ১৩৬)
অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ কেহ আল্লাহ্, পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে।(২ঃ১৭৭)
অতঃপর আল্লাহ বলেনঃ যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ কর তারাই সৃষ্টির সেরা,তারাই সফলকাম এবং তাদের জন্যই জান্নাত নির্ধারিত।
যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাহারাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ। (৯৮ঃ৭) আর যাহারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে তাহারাই জান্নাতবাসী, তাহারা সেখানে স্থায়ী হইবে।(২ঃ৮২) ” যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, পরম আনন্দ এবং শুভ পরিণাম তাহাদেরই।’ ১৩ঃ২৯
কোরান বলে সৎকর্ম কোন গুলি কি কি?
পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোতে কোন পুণ্য নাই; কিন্তু পুণ্য আছে কেহ আল্লাহ্, পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে এবং আল্লাহ্ প্রেমে আত্নীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, পর্যটক, সাহায্য প্রার্থিগণকে এবং দাস-মুক্তির জন্য অর্থ দান করিলে, সালাত কায়েম করিলে ও যাকাত প্রদান করিলে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়া তাহা পূর্ণ করিলে, অর্থ-সংকটে দুঃখ-ক্লেশে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য ধারণ করিলে। ইহারাই তাহারা যাহারা সত্যপরায়ণ এবং ইহারাই মুত্তাকী। ২ঃ১৭৭
@ সালাত অবশ্যই সৎকর্মের অংশ। তাহলে সালাত কি এবং কি ভাবে কায়েম করতে হবে ?
নামাজ হচ্ছে নির্দিষ্ট ফরমেটে বুঝে বা না বুঝে একটা নির্ধারিত সময়ে সালামের মাধ্যমে সমাপ্ত করার নাম। আর সালাত হলো- পঠিত কুরআনের বিধানকে নিজ, পরিবার এবং সমাজ জীবনে বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে কুরআনে বর্ননা সুপ্রতিষ্ঠিত পথে (সিরাতুম মুস্তাকিম) অটল থাকার নাম।
সালাত হল কোরান তেলোয়াতের অনুষ্ঠান। সালাতে যা বলছি বাস্তব জীবনে সালাতের বাহিরেও তার বাস্তব প্রতিফলন ঘঠানোকেই সালাত কায়েম করা বুঝায়। সালাত পুঁজা মন্ডবে কিছু মন্ত্র পাঠ করার মত কোন অনুষ্ঠান নয়।
যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত, ৭০ঃ২৩
যাহারা দাঁড়াইয়া, বসিয়া ও শুইয়া আল্লাহ্কে স্মরণ করে এবং আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্ত করে ও বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি ইহা নিরর্থক সৃষ্টি কর নাই, তুমি পবিত্র, তুমি আমাদেরকে দোজখের শাস্তি হইতে রক্ষা কর। ( ৩ঃ১৯১)
মুসলমানদের সবচেয়ে হাস্যকর আচরণ হলো, তারা দাবী করে যে কোর’আন-ই একমাত্র ধর্ম গ্রহন্থ যা বিশুদ্ধভাবে রক্ষিত আছে, এবং যা সরাসরি আল্লাহ’র পক্ষ থেকে সমগ্র মানবজাতির জন্য পথ নির্দেশনা রূপে এসেছে। কিন্তু মানে হাদীস নামক মানব রচিত গ্রহন্থকে।
দ্বিতীয়ত কোর’আন দাবী করে এটি সমগ্র মানবজাতির জন্য পথ নির্দেশনা সম্বলিত গ্রন্থ। কিন্তু মুসলমানরা নিজেরা তো কোর’আন পড়েই না,এমনকি অন্যদের পড়তে দিতেও নারাজ।
দু’ব্যক্তিকে আল্লাহ অতিশয় ঘৃণা করেন। এদের একজন হল সে — ” যাকে মুর্খতা অজ্ঞতা ঘিরে আছে। সে অজ্ঞদের মাঝেই চলাফেরা করে। । সে কোরআন ও সুন্নাহকে পরিত্যাগ পুর্বক নিজের ইচ্ছামত বিধি নিষেধ জারি করে। এভাবে তার অনুরাগীর একটা পরিমন্ডল তৈরী করে নেয় এবং তাদের নিজেদের বানানো ধর্মীয় বিধান জনপ্রিয় করে তুলে। প্রকৃত
সে দুষিত পানি দ্বারা তৃষ্ণা নিবারন করে এবং যা অর্জন করে তা অর্থহীন। সাধারন মানুষ তাকে পরহেজগার পন্ডিত মনে করে কিন্তু আসলে সে তা নয়। সত্য জানার মানার তাদের আর কোন আগ্রহ থাকে না। অন্যকেও এপথ অনুসরনের জন্য লোকদের আমন্ত্রন করে থাকে। ভ্রান্তি ও বিপথ সৃষ্টির হোতা এসব মানুষগুলো অন্যদের পাপের বোঁঝাও বহন করবে মর্মে আল্লাহ কোরআনে বলেনঃ ” নিশ্চয় তারা তাদের পাপের বোঁঝা বহন করবে এবং নিজেদের বোঝার সাথে অন্যের বোঝাও। (২৯ঃ১৩)
ইসলাম প্রচারের শুরুতে বিরোধিতায় সাধারন জনতা অংশ গ্রহন করে নাই। করেছিল মক্কার তদানিন্তন প্রসিদ্ধ আলেমগন। বর্তমানেও তাই হবে এবং ভবিষ্যতেও একই ধারা অব্যহত থাকবে এবং এটাই স্বাভাবিক। এটাই রবের আকাংখা বাতিলের সাথে হকের লড়াই এর মাধ্যমে দ্বীনকে সমুন্নত রাখা।
আমরা মিল্লাদে ইব্রাহীম এবং ইব্রাহীমের সুন্নতের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার নির্দেশ রয়েছে কোরআনে। তার মানে এই নয় ইব্রাহীম আঃ যে জীবন ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠিত ছিলেন আমাকে অনুরুপ অনুসরন করতে হবে।
কারন, ইব্রাহীম আঃ মুর্তি ভেঙ্গে দেশান্তর হয়েছিলেন। পক্ষান্তরে মুহাম্মদ সাঃ দেশ ত্যাগ করে ক্ষমতা অর্জন করে এসে….. পরে মুর্তি ভেঙ্গেছিলেন।
ReplyForward Add reaction |
আমার কিছু সহজ প্রশ্ন।পারলে উত্তর দেন।অবস্য উত্তর না দিতে পারলেও সমস্যা নেই।
কারা যেন ঈমাম আবু হানিফা (রঃ) কে ফেরকা বলেছিলো?
কারা যেন জালালউদ্দিন রুমি (রঃ) কে কাফের ফতোয়া দিয়েছিলো?
কারা যেন ঈমাম গাজ্জালি (রঃ) কে কাফের ফতোয়া দিয়েছিলো?
কারা যেন মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানী ইবনে সিনা’কে কাফের ফতোয়া দিয়েছিলো?
কারা যেন নাসিরউদ্দিন আলবানী (রঃ) কে কাফের ফতোয়া দিয়েছিলো?
কারা যেন মাওলানা মওদুদী (রঃ) কে কাফের ফতোয়া দিয়েছিলো?
কবি কাজি নজরুল ইসলামকে কারা যেন কাফের ফতোয়া দিয়েছিলো?
কারা যেন ডাঃ জাকির নায়েককে কাফের ফতোয়া দিয়েছে?
কারা যেন আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ,মুজাফ্ফর বিন মহসিনকে ফেতনাবাজ বলে গালি দেয়।
কারা যেন এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী,তাহেরি, চরমোনাই,রাজারবাগী,দেওয়ান বাগী,আটরশি এঁদেরকে ‘পীর পূজারি,মাজার পূজারি বলে গালি দেয়।
এভাবেই যুগ যুগ ধরে হাদিসের গ্যারাকলে পরে এক শায়েখ আরেক শায়েখকে কাফের,মাজার পূজারি, পীর পূজারি বলে ফতোয়া দিচ্ছে। সবাই অন্যকে বা অন্যের মতাদর্শকে ভুল এবং নিজেরটা সহিহ্ মনে করে।ধর্মের কল এভাবেই চলছে হাজার বছর ধরে আর কিয়ামত পর্যন্ত তা চলবে।
ReplyForward Add reaction |
সুতরাং কোরআনের পরে আর কোন হাদীসে বিশ্বাস স্থাপন করিবে?
فَبِاَىِّ حَدِيْثٍۢ بَعْدَهٗ يُؤْمِنُوْنَنَ
১) فَبِأَيِّ (ফাবেআইয়ে) = সুতরাং আর কোন
২)حَدِيْثٍۢ (হাদীসিন) = হাদীসে
৩) بَعْدَهُ (বাআ’দাহু) = তারপরও ( এখানে কোরআন)
৪) يُؤْمِنُونَ (ইউমেনুন) = তারা বিশ্বাস করবে
সরল অনুবাদ: সুতরাং আর কোন হাদীসে তারপরও বিশ্বাস স্থাপন করিবে?( ৭৭:৫০)
বালাগাত অনুযায়ীঃ সুতরাং কোরআনের পরে আর কোন হাদীসে বিশ্বাস স্থাপন করিবে?
বাক্যটির চারটি শব্দের তারকিবঃ
১) فَبِاَىِّ ( ফা – বে – আইয়ে) فَ অব্যয়= সুতরাং/অতপর
বা بِ সংযুক্ত অব্যয় = সাথে,হতে,দ্বারা। আইয়ে اَىِّ = কোন। অতএব فَبِاَىِّ = সুতরাং আর কোন।
২) حَدِيْثٍۢ হাদিসীন – মুল শব্দ হাদীস। হাদীস মানে বানী বা কথা। এখানে শব্দের শেষ অক্ষর ثٍۢ এর সাথে দুই যের।
তাই حَدِيْثٍۢ = হাদীসের।
৩) بَعْدَهٗ ( বাআ’দা – হু) بَعْدَ বাআ’দা = তারপরও,
হু هٗ নির্দেশ বাচক জমির বা সর্বনান। যা এখানে কোরআন।
৪) يُؤْمِنُوْنَ ( ইউ – ইমান – উন) মুল শব্দ ইমান =বিশ্বাস
সমন্ধপদ তারা, ইউ প্রশ্নবোধক অব্যয় মিলে يُؤْمِنُوْنَ = তারা বিশ্বাস করিবে?
ReplyForward Add reaction |
___ইংরেজী শিক্ষিতদের জন্য আরবী গ্রামার পর্ব-০৮
‘অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথপ্রাপ্ত। (৩৬:২১)
اتَّبِعُوْا مَنْ لَّا يَسْـــَٔلُكُمْ اَجْرًا وَّهُمْ مُّهْتَدُوْنَ
(ইত্তাবিউ মান লা ইয়াসআলুকুম আজরাওঁ ওয়া হুম মুহতাদুন।)
শব্দার্থ: اتَّبِعُوا = তোমরা অনুসরণ করো, مَنْ = (তার) যে, لَا = না, يَسْأَلُكُمْ = তোমাদের কাছে চায়, أَجْرًا = কোনো বিনিময়, وَهُمْ = এবং তারা , مُهْتَدُونَ = সৎ পথপ্রাপ্ত ,
ইত্তাবিউ ( اتَّبِعُوْا) একটি ফাল বা ক্রিয়া পদ। এর মুল শব্দ تَّبِعُ (তাবেউ) যার অর্থ অনুসরন করা।
মান (مَنْ) সর্বনাম,অর্থ = তার বা যে।
লা (لَّا) অব্যয় পদ, অর্থ = না।
ইয়াসআলুকুম (يَسْـــَٔلُكُمْ) মুল শব্দ سْـــَٔلُ সোয়াল = চাওয়া, আসআলুকুম = তোমাদের কাছে চায়
ইায়সআলু বর্তমান/ ভবিষ্যত কাল বুঝাতে। কুম অর্থ তোমাদের। ইয়াছআলুকুম = তোমাদের নিকট চায়।
আঁজরান (اَجْرًا) মুল শব্দ اَجْرً আজর = বিনিময়, আজরান = কোন বিনিময়।
ওয়া হুম (وَّهُمْ) সমন্ধ বাচক সর্বনাম। ওয়া = এবং, ওয়া হুম = এবং তারা।
মুহতাদুন (مُّهْتَدُوْنَ) ইশম বা বিশেষ্য। এর মুল শব্দ هْتَدُ হাদী = পথ, সুতরাং মুহতাদুন অর্থ সৎপথ প্রাপ্ত।
বালাগাতঃ অনুসরন কর তাদের যারা কোন বিনিময় চায় না তোমাদের নিকট এবং তারা সৎপথ প্রাপ্ত।
উপসংহারঃ আল্লাহ উক্ত আয়াতে হেদায়াত বা সৎপথপ্রাপ্ত মানুষের পরিচয় জানালেন এবং তাদের অনুসরন করতে আদেশ দিলেন। আর হেদায়েত প্রাপ্ত কে তাও জানিয়ে দিলেন — ” যারা ধর্ম পালনে সহ্যোগিতা করে বা প্রচার কাজ করে বিনিময়ে কোন অর্থ বা কোন প্রকার প্রতিদান নেয় না।
এবার ভাবুন মসজিদের ইমাম বা ওয়াজকারীগন কি সৎপথ প্রাপ্ত? তাদের অনুসরনের কথা কি আল্লাহ বলেছেন? তারা নিজেরাই আল্লাহর এ আয়াত না মেনে গোমরাহীতে আছে, তাকে ইত্তেবা করলে আপনিও তদ্রুপ হলেন। প্রচলিত মোল্লা মুন্সি পীর ইমাম বিনিময় ছাড়া কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে না, এমন কি মসজিদের ইমামগণ।
অত্র আয়াত থেকে যে শব্দ গুলি জানলাম
১) তাবেউ = অনুসরন করা (ক্রিয়া পদ)
২) সোয়াল = চাওয়া।
৩) আজর = বিনিময়
৪) হাদী = হেদায়েত প্রাপ্ত বা সৎপথপ্রাপ্ত।
লক্ষ্য করে দেখুন প্রতিটা শব্দ তিন অক্ষরে গঠিত। আরবীতে অধিকাংশ মুল শব্দই তিন অক্ষরে হয় এবং এদের প্রায় গুলি আমরা বলে থাকি কিন্তু অনুধাবন করি না। যেমন হেদায়েত, সোয়াল, নিয়ামত, ইনসাব,কিতাব, কালাম…..
-**************-*;*****-****-**
আরবী অনুবাদ পর্ব -০৯ সূরা মাআরিজ আয়াত ২৩
যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত,
الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙ
(আল্লাজিনা হুম আ’লা সালাতিহিম দাইমুন)
মাত্র ৫টি শব্দ নিয়ে এ আয়াতটি। গ্রামার জানার আগে প্রথমে আমাদের কোন শব্দের আদল বা মুল শব্দ নিরুপন করা শিখতে হবে। তাতে অনুবাদ করার ৭০℅ যোগ্যতা অর্জন হবে। এ আয়াতে শব্দ মাত্র ৫টিঃ
১) আল্লাযিনা (الَّذِيْنَ) = যারা [ সর্বনাম পদ ]
২) হুম (هُمْ) = তারা [ ব্যক্তিবাচক সর্বনাম ]
৩) আ’লা (عَلٰى) = উপর [ হরফে যের বা অব্যয় পদ ]
৪) সালাতিহিম (صَلَاتِهِمْ) মুল শব্দ সাল্লু /সালাত [বিশেষ্য]
বাংলা অর্থ রবের সাথে সংযোগ।
৫) দাইমুন (دَآٮِٕمُوْنَ) মুল শব্দ دوم দম যার অর্থ সদা। ইসমে ফেল / কর্তা বাচকে دَائِمْ দাইমু। আর বর্তমান/ভবিষ্যত কালের জন্য دَآٮِٕمُوْنَ দাইমুন। যার অর্থ সার্বক্ষনিক বা সদা প্রতিষ্ঠিত।
উপসংহারঃ উক্ত আয়াতে আল্লাহ তার বান্দাকে সার্বক্ষনিক তাঁর নির্দেশ মেনে চলাকে সালাতুল দাইমুন বলে উল্লেখ করেছেন। সালাত বান্দার জন্য সার্বক্ষন। এর পর ১৭:৭৮ অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক সালাত দিবসের অংশ সমুহে রবের সাথে সংযোগ স্থাপনের মনোনিবেশ করতে হবে। দাইমি সালাত ব্যতিত কায়েমি সালাত অন্তসার শুন্য।
সালাতে কোরান তেলোয়াতের মাধ্যমে যে অনুশীলন করা হয় বাস্তব জীবনে সে অনুযায়ী কর্ম পরিচালনা করাকেই সালাত প্রতিষ্ঠিত বলেছেন আল্লাহ। নামাজ প্রকৃত মন্ত্র পড়ার মত কোন অনুষ্ঠান নয়। এটি রবের সাথে সংযোগ বা অঙ্গিকার অনুষ্ঠান যা বাস্তব জীবনে প্রতিটি কর্মে পদক্ষেপে রবের নির্দেশনা মেনে চলাকে সালাত কায়েম বুঝিয়েছেন। আমাদের সমাজে সালাত কায়েম বলতে বুঝে থাকি মোয়াজ্জেম আজান দিয়ে ডাকবে মসজিদে যাওয়ার জন্য মুসুল্লিরা একত্র হবে একজন ইমাম মুসুল্লিদের জামাত বদ্ধ করে সালাত পড়বে, সমাজের সর্বত্র এ ব্যবস্থা চালু হলেই নামাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলা হবে। যার জন্য পাড়ায় পাড়ায় মহল্লায় মহল্লায় যত পার মসজিদ গড়ে তুলো তবেই সালাত কায়েম হবে।
আচ্ছা একটু ভাবুন তো সে সময় মক্কা বা মদীনায় তাহলে কয়টি মসজিদ ছিল?? বেতন ভুক্ত কজন ইমাম বা মোয়াজ্জেম ছিল?
**–*********:::
নিশ্চয় তোমরা ধাপে ধাপে আরোহণ করবে।
لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَنْ طَبَقٍؕ
( লাতারকাবুন্না তাবাকান আন তাবাক।)
শব্দার্থ: لَتَرْكَبُنَّ = তোমরা অবশ্যই আরোহণ করবে, طَبَقًا = ধাপ, عَنْ = থেকে, طَبَقٍ = ধাপে।
লাতাকরাবুন لَتَرْكَبُنَّ এর মুল শব্দ رْكَبُ রাকাব। রাকাব মানে আরোহন করা। এটি ক্রিয়াপদ। আর لَتَرْكَبُنَّ মানে তোমরা আরোহন করবে।
মানব জীবন চক্রের রহস্য এ আয়াতে ইংগীত করে।
মোরা আর জনমে হংস মিথুল ছিলাম।
নতুন শব্দ শিখলামঃ
১) رْكَبُ রাকাব = আরোহন করা।
২) طَبَقٍؕ তাবাক = ধাপ বা সিড়ি বা স্তর।
********;;;;******;*****
তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির মধ্য হতে নির্বাচন করা হইয়াছে এ জন্য, তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে এবং অসৎকাজে নিষেধ করবে। (৩:১১০)
كُنْتُمْ خَيْرَ اُمَّةٍ اُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَاْمُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ
(কুনতুম খাইরা উম্মাতিন উখরিজাত লি-ন্নাসি তা’মারুনা বিল মারুফ ওয়া তানহাও না-আনিল মুনকার)
১) কুনতুম (كُنْتُمْ) ব্যক্তিবাচক সর্বনাম। মুল শব্দ কুন (كون), ক্রিয়া। যার বাংলা= হওয়া। সুতরাং كُنْتُمْ অর্থ
তোমরা হও।
২) খায়রান (خَيْرَ) বিষেশ্য। মুল শব্দ খায়ের خَيْرَ যার অর্থ = ঊত্তম।
৩) উম্মাতিন (اُمَّةٍ) বিষেশ্য। মুল শব্দ উম্মা। যার অর্থ জাতি।
৪) উখরিজাত (اُخْرِجَتْ) ক্রিয়া বাচক। মুল শব্দ (خْرِجَ) খারিজ। যার অর্থ পৃথক করা। সুতরাং উখরিজাত اُخْرِجَتْ অর্থ তোমাদের পৃথক করা হয়েছে।
৫) লি-ন্নাসি (لِلنَّاسِ) বিশেষ্য। মুল শব্দ নাস (نَّاسِ) যার অর্থ মানুষ। সুতরাং লি-ন্নাস لِلنَّاسِ অর্থ মানুষের জন্য।
৬) তা’মারুনা (تَاْمُرُوْنَ) ক্রিয়া। মুল শব্দ আমর (تَاْمُرُ) অর্থ নির্দেশ দেয়া। সুতরাং تَاْمُرُوْنَ অর্থ তোমরা নির্দেশ দাও।
৭) বিল মারুফ (بِالْمَعْرُوْفِ) বিযেশ্য, মুল শব্দ আরাফ (عْرُوْفِ) যার অর্থ ভাল কাজ। সুতরাংبِالْمَعْرُوْفِ অর্থ ভাল কাজের জন্য। অর্থ ভাল কাজের জন্য।
৮) ওয়া তানহাও (وَتَنْهَوْنَ) ওয়া অব্যয় এবং তানহাও ক্রিয়া। মুল শব্দ নেহি। যার অর্থ নিষেধ করা। সুতরাং ওয়া তানহাও وَتَنْهَوْنَ অর্থ হবে এবং তোমরা নিষেধ কর।
৯) আন ( عَنِ) অব্যয়। যার অর্থ হতে।
১০) মুনকার (الْمُنْكَرِ) বিশেষ্য। মুল শব্দ নাকর نْكَرِ যার অর্থ নিষেধ করা।
যে শব্দগুলি এ আয়াতে পেলাম তার প্রায় সব পরিচিত আমাদের। শুধু খেয়াল করি না বলে অজানা মনে হয়।
১) খায়ের – ভাল / উত্তম
২) উম্মাহ – জাতি
৩) খারিজ – পৃথক করা / বাহির করা
৪) নাস –মানুষ
৫) আমর – আদেশ বা নির্দেশ করা।
৬) আরাফ – ভাল বা সৎকাজ
৭) নেহি -নিশেধ করা
৮) নাকর –মন্দ বা খারাপ কাজ।
উপসংহারঃ মানুষকে আল্লাহ মানুষের মধ্যে হতে ছেকে নির্বাচন করেছেন এ জন্য যে তারা কল্যানের নির্দেশ দিবে মানুষকে এবং মন্দ কাজ করতে বাধা দিবে। এটাই উদ্দেশ্য আল্লাহর। এখানে উপদেশ বা অনুরোধের কথা বলেন নাই। আদেশ ও নিষেধের শব্দ ব্যবহার করেছেন এ জন্য যে যদি আদেশ বা নিষেধ না মানে তবে বল প্রয়োগ করতে হবে।
নচেৎ উপদেশ বা অনুরোধ শব্দ ব্যবহার করতেন।
**************
১) لَا رَيْبَ فِيْهِؕ وَمَنْ اَصْدَقُ مِنَ اللّٰهِ حَدِيْثًا
অর্থ: হাদীস বর্ননায় আল্লাহর চেয়ে কে অধিক সত্যবাদী?
সূরা নম্বর: ৪ আয়াত নম্বর: ৮৭
২) ۚفَبِاَىِّ حَدِيْثٍۢ بَعْدَهٗ يُؤْمِنُوْنَ
(অর্থঃ সুতরাং এরপর তারা আর কোন হাদীসের প্রতি ঈমান আনিবে।) (৭ঃ১৮৫)
৩) لِّاُولِى الْاَلْبَابِؕ مَا كَانَ حَدِيْثًا
(অর্থঃ এগুলো মন গড়া বানানো কোন হাদীস নয়। বরং পুর্ববর্তী কিতাবের সত্যায়নকারী)
সূরা নম্বর: ১২ আয়াত নম্বর: ১১১
৪)
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّشْتَرِىْ لَهْوَ الْحَدِيْثِ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِ بِغَيْرِ عِلْمٍۖ
একশ্রেণীর লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে গোমরাহ করার উদ্দেশে অবান্তর হাদীস সংগ্রহ করে অন্ধভাবে। সূরা নম্বর: ৩১ আয়াত নম্বর: ৬
৫) ۚ فَبِاَىِّ حَدِيْثٍۢ بَعْدَ اللّٰهِ وَاٰيٰتِهٖ يُؤْمِنُوْنَ
সুতরাং আল্লাহর হাদীসের পরে তারা আর কোন হাদীসে বিশ্বাস করবে। সূরা নম্বর: ৪৫ আয়াত নম্বর: ৬
৬) فَبِاَىِّ حَدِيْثٍۢ بَعْدَهٗ يُؤْمِنُوْنَ
সুতরাং আল্লাহর হাদীসের পরে তারা আর কোন হাদীসে বিশ্বাস করবে। সূরা নম্বর: ৭৭ আয়াত নম্বর: ৫০
৭) اَللّٰهُ نَزَّلَ اَحْسَنَ الْحَدِيْثِ كِتٰبًا مُّتَشَابِهًا مَّثَانِىَ ۖ
আল্লাহ্ অবতীর্ণ করিয়াছেন উত্তম হাদীস সম্বলিত কিতাব যাহা সুসমঞ্জস সূরা নম্বর: ৩৯ আয়াত নম্বর: ২৩
৮)
উহারা এই বাণী বিশ্বাস না করিলে সম্ভবত উহাদের পিছনে ঘুরিয়া তুমি দুঃখে আত্মবিনাশী হইয়া পড়িবে।
فَلَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّـفْسَكَ عَلٰٓى اٰثَارِهِمْ اِنْ لَّمْ يُؤْمِنُوْا بِهٰذَا الْحَـدِيْثِ اَسَفًا
সূরা নম্বর: ১৮ আয়াত নম্বর: ৬
৯)
তোমরা কি এই হাদীসে বিস্ময় বোধ করিতেছ!
اَفَمِنْ هٰذَا الْحَدِيْثِ تَعْجَبُوْنَۙ
সূরা নম্বর: ৫৩ আয়াত নম্বর: ৫৯
১০) তবুও কি তোমরা এই হাদীসেকে তুচ্ছ গণ্য করিবে?
اَفَبِهٰذَا الْحَـدِيْثِ اَنْتُمْ مُّدْهِنُوْنَۙ
সূরা নম্বর: ৫৬ আয়াত নম্ব
কাবা গৃহ মানুষের জন্য তৈরী।
নিশ্চয়ই মানুষের জন্য সর্ব প্রথম যে গৃহ তৈরী হইয়েছিল তাহা অবশ্যই বাক্কায়, উহা বরকতময় ও বিশ্বজগতের জন্য পথ-নিদর্শন । (৩:৯৬)
اِنَّ اَوَّلَ بَیْتٍ وُّضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِیْ بِبَكَّةَ مُبٰرَكًا وَّ هُدًى لِّلْعٰلَمِیْنَۚ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়, أَوَّلَ = প্রথম, بَيْتٍ = ঘর, وُضِعَ = তৈরি করা হয়েছিল, لِلنَّاسِ = মানুষের জন্য, لَلَّذِي = যা অবশ্যই , بِبَكَّةَ = বাক্কায়, مُبَارَكًا = বরকতময়, وَهُدًى = পথ-নির্দেশ/নিশানা, لِلْعَالَمِينَ = বিশ্ব জগতের,
( الااصل) هدي
( زمن الفعل المضا ) Perfect : هَدَى
Imperfect : يَهْدِي
Imperative : اِهْدِ
ActiveParticiple : هَادٍ
PassiveParticiple : مَهْدِيّ
VerbalNoun : هُدًى/هِدَايَة
فَبِاَیِّ حَدِیْثٍۭ بَعْدَهٗ یُؤْمِنُوْنَ۠
শব্দার্থ: فَبِأَيِّ = আরকোনতাহলে, حَدِيثٍ = হাদীস (থাকতেপারে) , بَعْدَهُ = তারপর (কুরআনের) , يُؤْمِنُونَ = তারা ইমান (যার উপর ) আনবে,
অনুবাদ: এখন এ কুরআন ছাড়া আর কোন হাদীস এমন হতে পারে যার ওপর এরা ঈমান আনবে?
ReplyForward Add reaction |
বাক্যে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি অর্থবোধক একক শব্দকে كلمة বলা হয়। এক কথায়- অর্থপূর্ণ শব্দই কালিমা।
আরবীতে কালিমা ৩ প্রকারঃ
১ ইসমঃ যে শব্দ নিজের অর্থ নিজে প্রকাশ করতে পারে এবং তিন কালের কোন কাল পাওয়া যায় না তাকে ইসম বলে। যেমনঃ خالد – খালেদ।
২) ফেলঃ যে শব্দ নিজের অর্থ নিজে প্রকাশ করতে পারে এবং তিন কালের কোন এক কাল পাওয়া যায় তাকে ফেল বলে। যেমনঃ ضرب – সে মেরেছিল।
৩) হরফঃ যে শব্দ নিজের অর্থ নিজে প্রকাশ করতে পারে না এবং তিন কালের কোন এক কাল পাওয়া যায় না তাকে হরফ বলে। যেমনঃ في – মধ্যে
আরবিতে বচন তিন প্রকারঃ ১) ওয়াহিদ বা একবচন, ২) তাসনিয়াহ বা দ্বিবচন, ও ৩) জমআ বা বহুবচন।
আরবিতে ক্রিয়াপদ তিন প্রকারঃ
১) মাঝি বা অতীত,
২) হাল বা বর্তমানকাল এবং
৩) মুসতাকবিল বা ভবিষ্যত।
আরবি ব্যাকরণে লিঙ্গ দুই প্রকারঃ (একে বাবও বলে)
১) মুযাক্কার বা পুংলিঙ্গ,
২) মুয়ান্নাস বা স্ত্রীলিঙ্গ।
—***********—-
সরফের প্রধান অংশ হলো কালিমা বা শব্দ বা পদ। কালিমা তিন প্রকার বা তিন বাবঃ ইসম বা নাম (বিশেষ্য, বিশেষণ ও সর্বনাম), ফেল বা ক্রিয়া, হরফ বা অব্যয়।
যে জ্ঞান শিক্ষা করলে আরবি শব্দের রূপান্তর ও গঠন প্রণালী সম্পর্কে জানা যায় তাকে علم صرف বা ইলমুস সরফ বলে।আর صرف বা সরফ শব্দের অর্থ — পরিবর্তন করা,রুপান্তর করা,ঘুরানো,To change –علم صرف বা ইলমে সরফ শব্দের ব্যবহারিক অর্থ হলঃ রূপান্তর বিদ্যা বা শব্দ প্রকরণ।
দুই বা ততোধিক শব্দ নিয়ে গঠিত বাক্যকে আরবীতে জুমলাহ বা মুরাক্কাব বলে। বাক্যের গঠন অনুযায়ী জুমলাহ বা বাক্যকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১) জুমলাহ খাবারিয়াহ ২) জুলমাহ ইনশাইয়াহ। জুলমাহ খাবারিয়াহ সে সকল বাক্যকে বলে যে বাক্যের বক্তাকে ” সত্য অথবা মিথ্যা ” উভয় দিক থেকে বিবেচনা করা যায় তাকে জুমলাহ খাবারিয়াহ বলে। এটি এমন একটি বাক্য যা মূলত সংবাদ/ খবর এবং সংবাদটি সত্য কি মিথ্যা উভয়টিরই সম্ভবনা রাখে। অপরদিকে কোন বাক্য যদি ইশম বা বিশেষ্য দ্বারা শুরু হয় তখন তাকে জুমলাহ ইনশাইয়াহ বলে। যেমনঃ যায়েদ হয় একজন আলেম। এসব বাক্যের প্রথম অংশে ইশম এবং দ্বীতীয় অংশে খবর থাকে।
ইলমুস সরফ বা শব্দতত্ত্ব। ইসম বা নাম ইসমকে ক্রিয়ার সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে অর্থাৎ কারক হিসেবে এবং তুলনীয় আধিক্যবাচকতার ভিত্তিতে পাচ প্রকারে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। …না’ত বা বিশেষণ …বচন …জিন্স বা লিঙ্গ …পদাশ্রিত নির্দেশক …ফেল বা ক্রিয়াপদ ..—সংখ্যা বা আদদ।
ইলমে নাহু কি? যে বিষয় অধ্যয়ন করলে আরবী (Language) বা ভাষার শব্দাবলীর শেষ অক্ষরের اعراب তথা হরকত প্রদান পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারা যায়, তাকে علم النحو বা আরবী ব্যাকরণ বলা হয়। অথবা- যে সকল পদ্ধতির মাধ্যমে معرب(পরিবর্তনশীল পদ) ও مبنى(অপরিবর্তনশীল পদ) হওয়ার দিক দিয়ে اسم(বিশেষ্য), فعل(ক্রিয়া) ও حرف(অব্যয়)-এর حرف এর অবস্থা ও হরকত অথবা ইরাব পরিবর্তন হওয়ার কারণ জানা যায় এবং বাক্যে ব্যাবহৃত শব্দগুলিকে পরস্পরের সাথে সাজানোর পদ্ধতি স্পর্কে অবহিত হওয়া যায়, তাকে علم النحو বলা হয়। আর আমরা আলোচনা মূলত علم النحو থেকেই শুরু করব। এক কথায় আরবী ব্যাকরণকেই علم النحو বলা হয়। সহজ ভাবে বলা যায়, যে জ্ঞানের মাধ্যমে বাক্যে ব্যবহৃত আরবি শব্দ সমূহ এর বিন্যাস পদ্ধতি এবং শেষ বর্ণের অবস্থা জানা যায়, তাকে ইলমে নাহু বলে।
মাসদার কাকে বলে? মাসদার ( مصدر ) একটি আরবি শব্দ। এটি একবচন। বহুবচনে মাসা-দির ( مصادر )। মাসদার শব্দের অর্থ – মূল, উৎপত্তিস্থল বা ক্রিয়ামূল।ব্যাকরণের পরিভাষায় – যে ইসম কোন কাজ করা বা হওয়া বুঝায় তাকে মাসদার বলে। যেমন –অন্যভাবে বলা যায় – যে ইসম অন্য কোন ইসম থেকে গঠিত নয় বরং তার থেকে অন্য সকল ফেল ও ইসমে মুশতাক গঠিত হয় তাকে ইসমে মাসদার বলে।মাসদার কত প্রকার কি কি?মাসদার প্রথমত ২ প্রকার। যথা –সিমায়ি ( سماعي ) কিয়াসি ( قياسي )
মাউসুফ (مو صوف) একটি ইসম যার শাব্দিক অর্থ হল যার সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়। মাউসুফ সিফাহ বাক্যাংশে মাউসুফ হল যার দোষ গুণ বর্ণনা করা হয়। অন্যদিকে যেসব শব্দ (ইসম) ব্যবহার করে মাউসুফের দোষ গুণ বর্ণনা করা হয়, ওই শব্দ(সমূহ) কে সিফাত (صفة) বলে।
**************
আরবি ব্যাকরণ তথা ইলমে নাহুর ভাষায় তারকিব কাকে বলে?কীভবে সহজে আরবি তারকিব করা যায় তা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।প্রথমে আমাদের জানা দরকার আরবি তারকিবের শাব্দিক পরিচয়।তারকিব:- تـركــيب
তারকীব শব্দের অর্থ গঠন করা। অর্থাৎ বাক্য গঠনের প্রক্রিয়াকে আরবিতে তারকিব বলা হয়। অন্যকথায় বলা যায়, একটি বাক্য কোন কোন কালিমা বা শব্দ নিয়ে গঠিত হয়েছে এবং বাক্যটির অর্থ কেমন হবে এসব বিষয় বিশ্লেষণ করাকে আরবি গ্রামারের পরিভাষায় তারকিব বলা হয়।যেমন- جَـاءَ زَيـْد জা’আ যাইদুন অর্থ যায়েদ এলো। এখানে জা’আ َجَاء ক্রিয়া আর যাইদুন শব্দটি ইসম বা বিশেষ্য হয়ে ক্রিয়াটির কর্তা হিসেবে এসেছে। উক্ত ক্রিয়া আর কর্তা মিলে একটি ক্রিয়াবাচক বাক্য গঠিত হয়েছে। সুতরাং এখানে যাইদ লোকটির মাধ্যমে কাজটি হয়েছে তাই তাকে কর্তা হিসেবে অর্থ করতে হবে। অর্থ হবে যায়েদ এলো। আবার, المسجدٌ بيتُ الله আল-মাসজিদু বাইতুল্লাহ। অর্থ মসজিদ আল্লাহর ঘর। এখানে, মাসজিদ শব্দটি মুবতাদা কারণ মাসজিদ শব্দটির উপর অন্য শব্দের অর্থ নির্ভর করছে। এটা মারফুআত এর একটি প্রকার। আর বাইতুন শব্দটি মুদাফ অর্থাৎ যে শব্দকে অন্য শব্দের সাথে সম্বন্ধ করা হয় তাকে মুদাফ বলে। আর আল্লাহ শব্দটি মুদাফ ইলাইহি অর্থাৎ যার সাথে অন্য শব্দ সম্বন্ধ বা যুক্ত করা হয় তাকে বলা হয়। মুদাফ মুদাফ ইলাইহি মিলে হয়েছে খবর। কারণ আল্লাহর কিতাব এট একটি সংবাদ যা মু্বতাদার সমন্বয়ে পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করতে পারে। মুদাফ মুদাফ ইলাইহ এর অর্থ করার সময় সাধারণত মাঝে র বা এর হয়।সুতারাং অর্থ হবে, মসজিদ আল্লাহর ঘর। তারকিব করার পদ্ধতি ও তারকীব এর কিছু পরিভাষা। তারকিব করার আগে আমাদের তারকিবের কিছু পরিভাষার নাম জানা দরকার অন্যথায় তারকিব করার সময় এদের পরিচয় জানতে হবে তাই আগেই জেনে নেওয়া ভালো। তাহলে চলুন আগে তারকিবের কিছু টার্ম জেনে নেই।।৷ খবর (خبر) কাকে বলে?৷ ১) খবর (خبر) যার মাধ্যমে কোনো সংবাদ দেওয়া হয় তাকে খবর বলে। যেমন ; خالد طالب
খালেদ একজন ছাত্র। এখানে খালিদ মুবতাদা আর ছাত্র শব্দটি খবর। মুবতাদা (مــبتدأ) কাকে বলে? ২) মুবতাদা (مــبتدأ) যার সম্পর্কে সংবাদ দেওয়া হয় তাকে মুবতাদা বলে।যেমন ; خالد طالب
খালেদ একজন ছাত্র।এখানে খালিদ শব্দটি মুবতাদা।মুসনাদ ইলাহি (مـسند إلـيه) কাকে বলে? ৩)মুসনাদ ইলাহি (مـسند إلـيه) যার উপর হুকুম দেওয়া হয় তাকে মুসনাদ ইলাহি বলে। যেমন “زَيد عالم
যায়েদ একজন আলেম। এখানে আলিম শব্দটি মুসনাদ।
,আরবি ব্যাকরণে লিঙ্গকে জিন্স বলে। আরবি ব্যাকরণে লিঙ্গ দুই প্রকার বা দুই বাব, মুযাক্কার বা পুংলিঙ্গ, মুয়ান্নাস বা স্ত্রীলিঙ্গ।
যে শব্দ দ্বারা পুরুষ জাতীয় ব্যাক্তি, বস্তু বা প্রাণী বুঝায় তাকে মুঝাক্কার مُذَكَّر বলে। জিনস বা লিঙ্গ দুই প্রকার। যথাঃ ১) মুজাক্কার ২) মুয়ান্নাস।
উদাহরণ- اَبٌ (পিতা), كتاب (বই), ثور (বলদ) ইত্যাদি।
যে শব্দ দ্বারা স্ত্রী জাতীয় ব্যাক্তি, বস্তু বা প্রাণী বুঝায় তাকে مُؤَنَّث বলে। উদাহরণ- اُمُّ (মা), اُخْتٌ (বোন), دجاجة (মুরগী) ইত্যাদি।
সাধারণতঃ প্রানী বাচক স্ত্রীলিঙ্গ নির্নয়ের জন্য কোন (চিহ্ন) এর প্রয়োজন হয় না। যেমন- ام (মাতা), بنت (কন্যা), اخت (বোন) ইত্যাদি।
যে সমস্ত اسم এর শেষে التاء المربوطة (গোল ة) থাকে; সাধারণতঃ সেগুলো مؤنث (স্ত্রিী লিঙ্গ)। যেমন- مدرسة (বিদ্যালয়), بيت (বাড়ী), دراجة (মটর সাইকেল), مروحة (পাখা) ইত্যাদি।
যে সমস্ত اسم এর শেষে الف مقصورة (হ্রস্ব আলিফ) থাকে সেগুলো مؤنث (স্ত্রিী লিঙ্গ)। যেমন- بشرى( সংবাদ), حسنى (সুন্দরী), كبرى (বড়), صغرى (ছোট) ইত্যাদি।
যে সমস্ত اسم এর শেষে الف ممدودة (দীর্ঘ আলিফ) থাকে সেগুলো مؤنث (স্ত্রিী লিঙ্গ)। যেমন- حمراء(m¡m), صحراء (মরুভূমি), عذراء (কুমারী), بيضاء (সাদা) ইত্যাদি।
সীগাহ কি বা সীগাহ ( صيغة ) কাকে বলে।সীগাহ ( صيغة ) শব্দটি আরবি। সিগাহ শব্দের অর্থ – গঠন, রূপ, আকৃতি ইত্যাদি।পরিভাষায় – কাংখিত অর্থের জন্য গঠিত শব্দের বিভিন্ন রূপকে সীগাহ ( صيغة ) বা শব্দরূপ বলে।আরও সহজে বলা যায়, আরবি শব্দের বিভিন্ন রূপকে সীগাহ ( صيغة ) বলে।উদাহরণের সাহায্যে আরও স্পষ্ট হই। সকল ভাষায়ই লিঙ্গ, পুরুষ ও সংখ্যা ভেদে শব্দের পরিবর্তন হয়। যেমন – আমি করেছি। সে করেছে। আরবিতে শব্দের এই পরিবর্তনকেই সিগাহ বলা হয়। যেমন – كتب – সে ( পুরুষ ) লিখেছে। كتبت – আমি লিখেছি।كتبتم – তোমরা সবাই ( পুরুষ ) লিখেছো
***********
আরবি সীগাহ কয়টি ও কি কি?পুরুষ, লিঙ্গ ও বচন ভেদে আরবি ভাষায় শব্দরূপ সর্বমোট ১৮ টি। কিন্তু ২ টি ছিগা একাধিক রুপের জন্য ব্যবহৃত হয়। তাই, আরবি সিগাহ ১৪ টি।
“ইলমুল বালাগাত ঐ ইলমকে বলে, যাতে বুলাগা বা অলংকার শাস্ত্রবিশারদদের অবস্থার চাহিদা অনুসারে ব্যবহৃত বাক্য গঠনের অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।”আল-বালাগাত ( اَلْبَلَاغَة ) : (অলঙ্কারশাস্ত্র) যা শৈলীগত গুণ বা স্পষ্টতাকে বিশদ করে। সংজ্ঞাঃ بلاغت শব্দের আভিধানিক অর্থ- কোন কিছুর চূড়ান্তে পৌঁছা।
____________ কালেমা তাইয়্যাবাঃ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।
কোরানে বা হাদীসে এভাবে কোন কালেমার অস্তিত্ত পাওয়া যায় না। সহী বুখারী শরীফে আছে আরবীতে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। ” কিন্তু বাংলা অনুবাদ করতে গিয়ে অব্যয় পদ “ওয়া আন্না” এর অনুবাদ না করে, ” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ লিখা হয়েছে। ওয়া আন্না মানে এবং। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ একটি বাক্য এবং মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ একটি বাক্য। একটি তাওহীদ ও আরেকটি রেসালত বিষয়ক। এ দুটি বাক্য একত্রে একটি বাক্য আকারে প্রকাশ করতে হলে অবশ্যই মাঝখানে একটি অব্যয় পদ ব্যবহার করতে হবে, নচেৎ অর্থ বিগরিয়ে যাবে এবং শিরক হতে পারে।
এবার গ্রামারের দিক থেকে তারকিব ও বালাগাত অনুযায়ী একটি উদাহরন দিয়ে যদি বুঝানো যায় বিষয়টি ক্লিয়ার হবে। যেমনঃ
১) আমি ও মামুন আজ ঢাকা যাব।
২) আমি মামুন আজ ঢাকা যাব।
১ম বাক্যে দুইজন মানুষকে বুঝায়, ২য় বাক্যে একজন মাত্র ব্যক্তিকে বুঝায়।
আরবী গ্রামার অনুযায়ী ১ম বাক্যে আমি মুকতাদা এবং মামুন খবর — দুইজনকে বুঝায়।
২য় বাক্যে “ও ” হরফ বা অব্যয় পদ না থাকায় — মুকতাদা এবং খবর এক হয়ে একজনকেই বুঝায়। অর্থাৎ যেই মামুন সেই আমি।
একটি অব্যয় পদের অনুপস্থিতির জন্য পুরা বাক্যের বালাগাত ভিন্ন হয়ে যায়।
তাই বাক্যে এই অব্যয় পদের অনুপস্থিতির জন্য অনেকে দাবী করে থাকেন
” রাসুল খোদা নেহি লেকিন খোদাছে জুদা নেহি।”
আপনার কালেমা তাইয়্যাবাতেই যদি গলদ থাকে তবে আপনি কেমন মুসলিম। দুঃখের বিষয় স্বয়ং সৌদি পতাকাতেও এই একই ভাবে কালেমা লিখা। প্রশ্ন আসে ইসলামের চারন ভুমি যেখান থেকে ইসলামের যাত্রা তারাও কি এ ভুল বুঝে না। উত্তরে বলবো না তারা তো বুঝেই না বরং বাংলাদেশ থেকে ইমাম নিয়ে কাবার মতুয়াল্লী করায়।
من- ( মিন) – হতে
لا – (লা) – না
في -( ফী) – মধ্যে
ان – (ইন্না) – নিশ্চয়
عاا -( আলা) উপরে
ل – (লাম) – জন্য
كان -( কানা) – হয়েছিল
ما -( মা) – যা
من -( মান) – যার
ب -( বা) – সাথে
الي -( ইলা) – দিকে, পর্যন্ত
ان -( আন) – যে
الا -( ইল্লা) – তাছাড়া
ان- ( ইন) যদি
عن -( আন) – সম্পর্কে
هو -( হুয়া) – সে
اذا -( ইযা) – যখন
قد -( কাদ) – নিঃসন্দেহে
هم- (হুম) – তারা
لم -( লাম) – নাই
ثم -(সুম্ম) – অতপর
او -( আও) -অথবা
لو -(লাও) – যদিও
اذ – ( ইজা) – পৌছা
কালাম – যুমলাহ বা মুরাক্কাব -জুলমাহ খাবরিয়াহ – জুলমাহ ইনশাইয়াহ – ইলমে সরফ – ইলমে নাহু – মাসদার – মাসদার সিয়ামি – মাসদার কিয়াসি – ইশেম – ফেল – হরফ – মুযাক্কার – মুয়ান্নাস – ওয়াহেদ – তাসনিয়া – জামাআ – মাঝি – হাল – মুসতাকবিল – জামির- ফায়েল – মাফউল – আদল – আদদ – মুবতাদাহ – খবর – মাউসুত -সিফাত – সীগাহ – বালাগাত – মুদফ – মুদফ ইলাইহী – মুসনাদ ইলাইহী – মারেফা – নাকেরা – ফেল – ফায়েল – জুমলায় ফেলিয়া – জুমলায় ইশমিয়া – মুতাআল্লিম – মাফুলে বিহি –
হরফুল যার – হরফে নেদা – আমর – মুতাআ’ল্লিক –
মাআ’দুফ – মাউসুফ – সিফাত – মুদব – মুদব ইলাইহী –
গায়েব – হাজির- মুস্তাকবিল- ফা’লে মারুফ – ফা’লে মাজহুল – ফা’লে ইসবাতু – ফা’লে নাফি – জিনস – গায়েব – হাজির – মুতাকাল্লিম – মাসদার – বাব – ইবারত – বাহছ – ওজন –
ReplyForward Add reaction |
ইংরেজী শিক্ষিতদের জন্য আরবী গ্রামার পর্ব-০৭
নিজে গ্রামার বুঝে ছোট্ট একটি আয়াতের অনুবাদ করি।
(সূরা নং ৬৯ আয়াত নং ৪০)
اِنَّهٗ لَقَوْلُ رَسُوْلٍ كَرِیْمٍۚۙ
( ইন্নাহু লা ক্বাউলু রাসুলিন কারিম)
অনুবাদ: অবশ্য অবশ্যই ইহা (কুরআন) একজন সম্মানিত রসূলের বাণী।
শব্দার্থ: إِنَّهُ = নিশ্চয়তা, لَقَوْلُ = নিশ্চয় বানী, رَسُولٍ = একজন রসূল (এর) , كَرِيمٍ = সম্মানিত,
প্রথমে আদল বা মুল শব্দ নির্নয় করতে হবে। তাহলে অনুবাদ করতে সহজ হবে। পড়ে গ্রামারের দিকে নজর। আরবীতে অধিকাংশ মুল শব্দ তিন অক্ষরের হয়।
এবার বাক্যে চারটি শব্দ ১) ইন্নাহ ২) ক্বাউলু ৩) রাসুলিন ও ৪) কারিম — এর আদল বা মুলশব্দ নির্নয় করবো প্রথমে।
শুরুতে ইন্নাহ إِنَّهُ শব্দটি ব্যক্তিবাচক সর্বনাম। তাই এর মুল শব্দের প্রয়োজন নেই। আমরা إِنَّ ইন্না অব্যয় পদ জানি। যার অর্থ নিশ্চয়। إِنَّهُ এর অর্থ দ্বারায়
হরফে নসব /ব্যক্তিবাচক সর্বনাম إِنَّهُۥ (ইন্নাহু) নিশ্চয় ইহা।
এবার আসি আয়াতের ২য় শব্দ ( লাক্বাউলু) لَقَوْلُ নিশ্চয় বানী বা কথা।
ক্বাউল অর্থ- বানী। লাম অব্যয় – নিশ্চয়। ( আর এই لا (লা) অর্থ না) সুতরাং লা ক্বাউলু – নিশ্চয় বানী।
মুল শব্দ/ (আদল): قول কাউল ( বানী, কথা)
লাক্বাউল – لَقَوْلُ অর্থ নিশ্চয় বানী।
অতীত কাল হলে হত قَالَ ( কালা)
ভবিষ্যত কাল/বর্তমান হলে হত : يَقُوْلُ (ইয়াকুলু)
আদেশ মুলক হলে হত : قُلْ (কুল)
ইশমে ফাল / কর্তা হলে হত : قَائِل
ইশমে মাফউল /কর্ম হলে হত : مَقُوْل
মাসদার / ক্রিয়া বাচক বিষেশ্য হলে হত : قَوْل
এবার আসি ৩য় শব্দ (রাসুলিন) رَسُوْلٍ – রাসুলের
মুল শব্দ বা আদল : رسل (রাসুল)
(রাসুলিন) رَسُوْلٍ অর্থ দ্বারায় রাসুলের।
গ্রামার যদি দেখি তবেঃ
অতীতকাল হলে হত : أَرْسَلَ (আরসাল)
ভবিষ্যত /বর্তমান কাল হলে হত : يُرْسِلُ ( উরসিলু)
আদেশ মুলক হলে হত أَرْسِلْ (আরসেলু)
ইশমে ফায়েল /কর্তা হলে হত : مُرْسِل ( মুরসিল)
ইসমে মাফাউল / কর্ম হলে হত : مُرْسَل ( মুরসাল)
মাসদার/ক্রিয়াবাচক বিষেশ্য হলে হত : إِرْسَال (ইরসাল)
এবার আসি আয়াতে বর্নিত ৪র্থ শব্দ كَرِیْمٍۚۙ। এখানে
আদল বা মুল : كرم (কারিম) সন্মানিত
যামানা ফায়াল মাঝি /অতীত কাল হলে হত : كَرَّمَ (কাররামা)
যামানা ফায়াল মাযরু / ভবিষ্যতকাল হলে হত : يُكَرِّمُ (ইউকাররামু)
সিফাতে আমর/ আদেশ মুলক হলে হত : كَرِّمْ (কাররামু)
ইশমে ফাল/কর্তা বাচ্য হলে হত : مُكَرِّم ( মুকাররাম)
ইশমে মাফাউল/ কর্ম হলে হত مُكَرَّم মুকাররাম
মাসদার /ক্রিয়া বাচক বিশেয্য হলে হত : تَكْرِيْم ( তাকরিম)
আয়াতের সরল অনুবাদ নিজে বুঝে করে দেখা যায় যে রাসুলের বানীই কোরআন। সুতরাং রাসুল কোরআন ছাড়া আর কোন বানী কখনো কোথাও বলেন নাই বা লিপিবদ্ধ করারও সুযোগ নেই। তাই রাসুল কতৃক প্রচারীত বানী সংরক্ষনের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ নিয়েছেন। তাতে কোন বিষয়ে সাংঘর্ষিক বক্তব্য খুজে পাওয়া যাবে না।
তাই মানব রচিত/সংকলিত কোন বানীকে রাসুলের বাণী বিবেচনা করা হলে ভুল ও ভ্রষ্টতা হবে। লাফিল খুছরে।
************
নিশ্চয়ই মানুষের জন্য সর্বপ্রথম যে গৃহ প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল তাহা তো বাক্কায়, উহা বরকতময় ও বিশ্বজগতের পথ-নির্দশন। (৩:৯৬)
اِنَّ اَوَّلَ بَيْتٍ وُّضِعَ لِلنَّاسِ لَـلَّذِىْ بِبَكَّةَ مُبٰرَكًا وَّهُدًى لِّلْعٰلَمِيْنَ
শব্দার্থ: إِنَّ = নিশ্চয়, أَوَّلَ = প্রথম, بَيْتٍ = ঘর, وُضِعَ = তৈরি করা হয়েছিল, لِلنَّاسِ = লোকদেরজন্য, لَلَّذِي = যা অবশ্যই , بِبَكَّةَ = বাক্কায় , مُبَارَكًا = বরকতময়, وَهُدًى = পথ-নির্দেশের , لِلْعَالَمِينَ = বিশ্বজগতের।
ReplyForward Add reaction |
বাক্যে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি অর্থবোধক একক শব্দকে كلمة বলা হয়। এক কথায়- অর্থপূর্ণ শব্দই কালিমা।
আরবীতে কালিমা ৩ প্রকারঃ
১ ইসমঃ যে শব্দ নিজের অর্থ নিজে প্রকাশ করতে পারে এবং তিন কালের কোন কাল পাওয়া যায় না তাকে ইসম বলে। যেমনঃ خالد – খালেদ।
২) ফেলঃ যে শব্দ নিজের অর্থ নিজে প্রকাশ করতে পারে এবং তিন কালের কোন এক কাল পাওয়া যায় তাকে ফেল বলে। যেমনঃ ضرب – সে মেরেছিল।
৩) হরফঃ যে শব্দ নিজের অর্থ নিজে প্রকাশ করতে পারে না এবং তিন কালের কোন এক কাল পাওয়া যায় না তাকে হরফ বলে। যেমনঃ في – মধ্যে
আরবিতে বচন তিন প্রকারঃ ১) ওয়াহিদ বা একবচন, ২) তাসনিয়াহ বা দ্বিবচন, ও ৩) জমআ বা বহুবচন।
আরবিতে ক্রিয়াপদ তিন প্রকারঃ
১) মাঝি বা অতীত,
২) হাল বা বর্তমানকাল এবং
৩) মুসতাকবিল বা ভবিষ্যত।
আরবি ব্যাকরণে লিঙ্গ দুই প্রকারঃ (একে বাবও বলে)
১) মুযাক্কার বা পুংলিঙ্গ,
২) মুয়ান্নাস বা স্ত্রীলিঙ্গ।
—***********—-
সরফের প্রধান অংশ হলো কালিমা বা শব্দ বা পদ। কালিমা তিন প্রকার বা তিন বাবঃ ইসম বা নাম (বিশেষ্য, বিশেষণ ও সর্বনাম), ফেল বা ক্রিয়া, হরফ বা অব্যয়।
যে জ্ঞান শিক্ষা করলে আরবি শব্দের রূপান্তর ও গঠন প্রণালী সম্পর্কে জানা যায় তাকে علم صرف বা ইলমুস সরফ বলে।আর صرف বা সরফ শব্দের অর্থ — পরিবর্তন করা,রুপান্তর করা,ঘুরানো,To change –علم صرف বা ইলমে সরফ শব্দের ব্যবহারিক অর্থ হলঃ রূপান্তর বিদ্যা বা শব্দ প্রকরণ।
দুই বা ততোধিক শব্দ নিয়ে গঠিত বাক্যকে আরবীতে জুমলাহ বা মুরাক্কাব বলে। বাক্যের গঠন অনুযায়ী জুমলাহ বা বাক্যকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১) জুমলাহ খাবারিয়াহ ২) জুলমাহ ইনশাইয়াহ। জুলমাহ খাবারিয়াহ সে সকল বাক্যকে বলে যে বাক্যের বক্তাকে ” সত্য অথবা মিথ্যা ” উভয় দিক থেকে বিবেচনা করা যায় তাকে জুমলাহ খাবারিয়াহ বলে। এটি এমন একটি বাক্য যা মূলত সংবাদ/ খবর এবং সংবাদটি সত্য কি মিথ্যা উভয়টিরই সম্ভবনা রাখে। অপরদিকে কোন বাক্য যদি ইশম বা বিশেষ্য দ্বারা শুরু হয় তখন তাকে জুমলাহ ইনশাইয়াহ বলে। যেমনঃ যায়েদ হয় একজন আলেম। এসব বাক্যের প্রথম অংশে ইশম এবং দ্বীতীয় অংশে খবর থাকে।
ইলমুস সরফ বা শব্দতত্ত্ব। ইসম বা নাম ইসমকে ক্রিয়ার সাথে সম্পর্কের ভিত্তিতে অর্থাৎ কারক হিসেবে এবং তুলনীয় আধিক্যবাচকতার ভিত্তিতে পাচ প্রকারে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। …না’ত বা বিশেষণ …বচন …জিন্স বা লিঙ্গ …পদাশ্রিত নির্দেশক …ফেল বা ক্রিয়াপদ ..—সংখ্যা বা আদদ।
ইলমে নাহু কি? যে বিষয় অধ্যয়ন করলে আরবী (Language) বা ভাষার শব্দাবলীর শেষ অক্ষরের اعراب তথা হরকত প্রদান পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারা যায়, তাকে علم النحو বা আরবী ব্যাকরণ বলা হয়। অথবা- যে সকল পদ্ধতির মাধ্যমে معرب(পরিবর্তনশীল পদ) ও مبنى(অপরিবর্তনশীল পদ) হওয়ার দিক দিয়ে اسم(বিশেষ্য), فعل(ক্রিয়া) ও حرف(অব্যয়)-এর حرف এর অবস্থা ও হরকত অথবা ইরাব পরিবর্তন হওয়ার কারণ জানা যায় এবং বাক্যে ব্যাবহৃত শব্দগুলিকে পরস্পরের সাথে সাজানোর পদ্ধতি স্পর্কে অবহিত হওয়া যায়, তাকে علم النحو বলা হয়। আর আমরা আলোচনা মূলত علم النحو থেকেই শুরু করব। এক কথায় আরবী ব্যাকরণকেই علم النحو বলা হয়। সহজ ভাবে বলা যায়, যে জ্ঞানের মাধ্যমে বাক্যে ব্যবহৃত আরবি শব্দ সমূহ এর বিন্যাস পদ্ধতি এবং শেষ বর্ণের অবস্থা জানা যায়, তাকে ইলমে নাহু বলে।
মাসদার কাকে বলে? মাসদার ( مصدر ) একটি আরবি শব্দ। এটি একবচন। বহুবচনে মাসা-দির ( مصادر )। মাসদার শব্দের অর্থ – মূল, উৎপত্তিস্থল বা ক্রিয়ামূল।ব্যাকরণের পরিভাষায় – যে ইসম কোন কাজ করা বা হওয়া বুঝায় তাকে মাসদার বলে। যেমন –অন্যভাবে বলা যায় – যে ইসম অন্য কোন ইসম থেকে গঠিত নয় বরং তার থেকে অন্য সকল ফেল ও ইসমে মুশতাক গঠিত হয় তাকে ইসমে মাসদার বলে।মাসদার কত প্রকার কি কি?মাসদার প্রথমত ২ প্রকার। যথা –সিমায়ি ( سماعي ) কিয়াসি ( قياسي )
মাউসুফ (مو صوف) একটি ইসম যার শাব্দিক অর্থ হল যার সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়। মাউসুফ সিফাহ বাক্যাংশে মাউসুফ হল যার দোষ গুণ বর্ণনা করা হয়। অন্যদিকে যেসব শব্দ (ইসম) ব্যবহার করে মাউসুফের দোষ গুণ বর্ণনা করা হয়, ওই শব্দ(সমূহ) কে সিফাত (صفة) বলে।
**************
আরবি ব্যাকরণ তথা ইলমে নাহুর ভাষায় তারকিব কাকে বলে?কীভবে সহজে আরবি তারকিব করা যায় তা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।প্রথমে আমাদের জানা দরকার আরবি তারকিবের শাব্দিক পরিচয়।তারকিব:- تـركــيب
তারকীব শব্দের অর্থ গঠন করা। অর্থাৎ বাক্য গঠনের প্রক্রিয়াকে আরবিতে তারকিব বলা হয়। অন্যকথায় বলা যায়, একটি বাক্য কোন কোন কালিমা বা শব্দ নিয়ে গঠিত হয়েছে এবং বাক্যটির অর্থ কেমন হবে এসব বিষয় বিশ্লেষণ করাকে আরবি গ্রামারের পরিভাষায় তারকিব বলা হয়।যেমন- جَـاءَ زَيـْد জা’আ যাইদুন অর্থ যায়েদ এলো। এখানে জা’আ َجَاء ক্রিয়া আর যাইদুন শব্দটি ইসম বা বিশেষ্য হয়ে ক্রিয়াটির কর্তা হিসেবে এসেছে। উক্ত ক্রিয়া আর কর্তা মিলে একটি ক্রিয়াবাচক বাক্য গঠিত হয়েছে। সুতরাং এখানে যাইদ লোকটির মাধ্যমে কাজটি হয়েছে তাই তাকে কর্তা হিসেবে অর্থ করতে হবে। অর্থ হবে যায়েদ এলো। আবার, المسجدٌ بيتُ الله আল-মাসজিদু বাইতুল্লাহ। অর্থ মসজিদ আল্লাহর ঘর। এখানে, মাসজিদ শব্দটি মুবতাদা কারণ মাসজিদ শব্দটির উপর অন্য শব্দের অর্থ নির্ভর করছে। এটা মারফুআত এর একটি প্রকার। আর বাইতুন শব্দটি মুদাফ অর্থাৎ যে শব্দকে অন্য শব্দের সাথে সম্বন্ধ করা হয় তাকে মুদাফ বলে। আর আল্লাহ শব্দটি মুদাফ ইলাইহি অর্থাৎ যার সাথে অন্য শব্দ সম্বন্ধ বা যুক্ত করা হয় তাকে বলা হয়। মুদাফ মুদাফ ইলাইহি মিলে হয়েছে খবর। কারণ আল্লাহর কিতাব এট একটি সংবাদ যা মু্বতাদার সমন্বয়ে পূর্ণ অর্থ প্রকাশ করতে পারে। মুদাফ মুদাফ ইলাইহ এর অর্থ করার সময় সাধারণত মাঝে র বা এর হয়।সুতারাং অর্থ হবে, মসজিদ আল্লাহর ঘর। তারকিব করার পদ্ধতি ও তারকীব এর কিছু পরিভাষা। তারকিব করার আগে আমাদের তারকিবের কিছু পরিভাষার নাম জানা দরকার অন্যথায় তারকিব করার সময় এদের পরিচয় জানতে হবে তাই আগেই জেনে নেওয়া ভালো। তাহলে চলুন আগে তারকিবের কিছু টার্ম জেনে নেই।।৷ খবর (خبر) কাকে বলে?৷ ১) খবর (خبر) যার মাধ্যমে কোনো সংবাদ দেওয়া হয় তাকে খবর বলে। যেমন ; خالد طالب
খালেদ একজন ছাত্র। এখানে খালিদ মুবতাদা আর ছাত্র শব্দটি খবর। মুবতাদা (مــبتدأ) কাকে বলে? ২) মুবতাদা (مــبتدأ) যার সম্পর্কে সংবাদ দেওয়া হয় তাকে মুবতাদা বলে।যেমন ; خالد طالب
খালেদ একজন ছাত্র।এখানে খালিদ শব্দটি মুবতাদা।মুসনাদ ইলাহি (مـسند إلـيه) কাকে বলে? ৩)মুসনাদ ইলাহি (مـسند إلـيه) যার উপর হুকুম দেওয়া হয় তাকে মুসনাদ ইলাহি বলে। যেমন “زَيد عالم
যায়েদ একজন আলেম। এখানে আলিম শব্দটি মুসনাদ।
,আরবি ব্যাকরণে লিঙ্গকে জিন্স বলে। আরবি ব্যাকরণে লিঙ্গ দুই প্রকার বা দুই বাব, মুযাক্কার বা পুংলিঙ্গ, মুয়ান্নাস বা স্ত্রীলিঙ্গ।
যে শব্দ দ্বারা পুরুষ জাতীয় ব্যাক্তি, বস্তু বা প্রাণী বুঝায় তাকে মুঝাক্কার مُذَكَّر বলে। জিনস বা লিঙ্গ দুই প্রকার। যথাঃ ১) মুজাক্কার ২) মুয়ান্নাস।
উদাহরণ- اَبٌ (পিতা), كتاب (বই), ثور (বলদ) ইত্যাদি।
যে শব্দ দ্বারা স্ত্রী জাতীয় ব্যাক্তি, বস্তু বা প্রাণী বুঝায় তাকে مُؤَنَّث বলে। উদাহরণ- اُمُّ (মা), اُخْتٌ (বোন), دجاجة (মুরগী) ইত্যাদি।
সাধারণতঃ প্রানী বাচক স্ত্রীলিঙ্গ নির্নয়ের জন্য কোন (চিহ্ন) এর প্রয়োজন হয় না। যেমন- ام (মাতা), بنت (কন্যা), اخت (বোন) ইত্যাদি।
যে সমস্ত اسم এর শেষে التاء المربوطة (গোল ة) থাকে; সাধারণতঃ সেগুলো مؤنث (স্ত্রিী লিঙ্গ)। যেমন- مدرسة (বিদ্যালয়), بيت (বাড়ী), دراجة (মটর সাইকেল), مروحة (পাখা) ইত্যাদি।
যে সমস্ত اسم এর শেষে الف مقصورة (হ্রস্ব আলিফ) থাকে সেগুলো مؤنث (স্ত্রিী লিঙ্গ)। যেমন- بشرى( সংবাদ), حسنى (সুন্দরী), كبرى (বড়), صغرى (ছোট) ইত্যাদি।
যে সমস্ত اسم এর শেষে الف ممدودة (দীর্ঘ আলিফ) থাকে সেগুলো مؤنث (স্ত্রিী লিঙ্গ)। যেমন- حمراء(m¡m), صحراء (মরুভূমি), عذراء (কুমারী), بيضاء (সাদা) ইত্যাদি।
সীগাহ কি বা সীগাহ ( صيغة ) কাকে বলে।সীগাহ ( صيغة ) শব্দটি আরবি। সিগাহ শব্দের অর্থ – গঠন, রূপ, আকৃতি ইত্যাদি।পরিভাষায় – কাংখিত অর্থের জন্য গঠিত শব্দের বিভিন্ন রূপকে সীগাহ ( صيغة ) বা শব্দরূপ বলে।আরও সহজে বলা যায়, আরবি শব্দের বিভিন্ন রূপকে সীগাহ ( صيغة ) বলে।উদাহরণের সাহায্যে আরও স্পষ্ট হই। সকল ভাষায়ই লিঙ্গ, পুরুষ ও সংখ্যা ভেদে শব্দের পরিবর্তন হয়। যেমন – আমি করেছি। সে করেছে। আরবিতে শব্দের এই পরিবর্তনকেই সিগাহ বলা হয়। যেমন – كتب – সে ( পুরুষ ) লিখেছে। كتبت – আমি লিখেছি।كتبتم – তোমরা সবাই ( পুরুষ ) লিখেছো
***********
আরবি সীগাহ কয়টি ও কি কি?পুরুষ, লিঙ্গ ও বচন ভেদে আরবি ভাষায় শব্দরূপ সর্বমোট ১৮ টি। কিন্তু ২ টি ছিগা একাধিক রুপের জন্য ব্যবহৃত হয়। তাই, আরবি সিগাহ ১৪ টি।
“ইলমুল বালাগাত ঐ ইলমকে বলে, যাতে বুলাগা বা অলংকার শাস্ত্রবিশারদদের অবস্থার চাহিদা অনুসারে ব্যবহৃত বাক্য গঠনের অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।”আল-বালাগাত ( اَلْبَلَاغَة ) : (অলঙ্কারশাস্ত্র) যা শৈলীগত গুণ বা স্পষ্টতাকে বিশদ করে। সংজ্ঞাঃ بلاغت শব্দের আভিধানিক অর্থ- কোন কিছুর চূড়ান্তে পৌঁছা।
____________ কালেমা তাইয়্যাবাঃ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ।
কোরানে বা হাদীসে এভাবে কোন কালেমার অস্তিত্ত পাওয়া যায় না। সহী বুখারী শরীফে আছে আরবীতে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়া আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ। ” কিন্তু বাংলা অনুবাদ করতে গিয়ে অব্যয় পদ “ওয়া আন্না” এর অনুবাদ না করে, ” লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ লিখা হয়েছে। ওয়া আন্না মানে এবং। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ একটি বাক্য এবং মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ একটি বাক্য। একটি তাওহীদ ও আরেকটি রেসালত বিষয়ক। এ দুটি বাক্য একত্রে একটি বাক্য আকারে প্রকাশ করতে হলে অবশ্যই মাঝখানে একটি অব্যয় পদ ব্যবহার করতে হবে, নচেৎ অর্থ বিগরিয়ে যাবে এবং শিরক হতে পারে।
এবার গ্রামারের দিক থেকে তারকিব ও বালাগাত অনুযায়ী একটি উদাহরন দিয়ে যদি বুঝানো যায় বিষয়টি ক্লিয়ার হবে। যেমনঃ
১) আমি ও মামুন আজ ঢাকা যাব।
২) আমি মামুন আজ ঢাকা যাব।
১ম বাক্যে দুইজন মানুষকে বুঝায়, ২য় বাক্যে একজন মাত্র ব্যক্তিকে বুঝায়।
আরবী গ্রামার অনুযায়ী ১ম বাক্যে আমি মুকতাদা এবং মামুন খবর — দুইজনকে বুঝায়।
২য় বাক্যে “ও ” হরফ বা অব্যয় পদ না থাকায় — মুকতাদা এবং খবর এক হয়ে একজনকেই বুঝায়। অর্থাৎ যেই মামুন সেই আমি।
একটি অব্যয় পদের অনুপস্থিতির জন্য পুরা বাক্যের বালাগাত ভিন্ন হয়ে যায়।
তাই বাক্যে এই অব্যয় পদের অনুপস্থিতির জন্য অনেকে দাবী করে থাকেন
” রাসুল খোদা নেহি লেকিন খোদাছে জুদা নেহি।”
আপনার কালেমা তাইয়্যাবাতেই যদি গলদ থাকে তবে আপনি কেমন মুসলিম। দুঃখের বিষয় স্বয়ং সৌদি পতাকাতেও এই একই ভাবে কালেমা লিখা। প্রশ্ন আসে ইসলামের চারন ভুমি যেখান থেকে ইসলামের যাত্রা তারাও কি এ ভুল বুঝে না। উত্তরে বলবো না তারা তো বুঝেই না বরং বাংলাদেশ থেকে ইমাম নিয়ে কাবার মতুয়াল্লী করায়।
من- ( মিন) – হতে
لا – (লা) – না
في -( ফী) – মধ্যে
ان – (ইন্না) – নিশ্চয়
عاا -( আলা) উপরে
ل – (লাম) – জন্য
كان -( কানা) – হয়েছিল
ما -( মা) – যা
من -( মান) – যার
ب -( বা) – সাথে
الي -( ইলা) – দিকে, পর্যন্ত
ان -( আন) – যে
الا -( ইল্লা) – তাছাড়া
ان- ( ইন) যদি
عن -( আন) – সম্পর্কে
هو -( হুয়া) – সে
اذا -( ইযা) – যখন
قد -( কাদ) – নিঃসন্দেহে
هم- (হুম) – তারা
لم -( লাম) – নাই
ثم -(সুম্ম) – অতপর
او -( আও) -অথবা
لو -(লাও) – যদিও
اذ – ( ইজা) – পৌছা
কালাম – যুমলাহ বা মুরাক্কাব -জুলমাহ খাবরিয়াহ – জুলমাহ ইনশাইয়াহ – ইলমে সরফ – ইলমে নাহু – মাসদার – মাসদার সিয়ামি – মাসদার কিয়াসি – ইশেম – ফেল – হরফ – মুযাক্কার – মুয়ান্নাস – ওয়াহেদ – তাসনিয়া – জামাআ – মাঝি – হাল – মুসতাকবিল – জামির- ফায়েল – মাফউল – আদল – আদদ – মুবতাদাহ – খবর – মাউসুত -সিফাত – সীগাহ – বালাগাত – মুদফ – মুদফ ইলাইহী – মুসনাদ ইলাইহী – মারেফা – নাকেরা – ফেল – ফায়েল – জুমলায় ফেলিয়া – জুমলায় ইশমিয়া – মুতাআল্লিম – মাফুলে বিহি –
হরফুল যার – হরফে নেদা – আমর – মুতাআ’ল্লিক –
মাআ’দুফ – মাউসুফ – সিফাত – মুদব – মুদব ইলাইহী –
গায়েব – হাজির- মুস্তাকবিল- ফা’লে মারুফ – ফা’লে মাজহুল – ফা’লে ইসবাতু – ফা’লে নাফি – জিনস – গায়েব – হাজির – মুতাকাল্লিম – মাসদার – বাব – ইবারত – বাহছ – ওজন –
ReplyForward Add reaction |
আরবী ভাষায় একটি শব্দকে ইবারত,লিঙ্গ, বচন, কাল প্রয়োগে কত ভাবে রুপান্তর করা যায়, তার একটি উদাহরন পেশ করা হল। ২৫০ থেকে ৩০০ মুল শব্দ জানা থাকলে পুরো কোরানকে অনুধাবন করা সক্ষম।
পরবর্তি পর্বে মুল শব্দ গুলি জানাব। মজার বিষয় হল এর মাঝে এক দেরশো শব্দ আমরা প্রত্যেকে জানি এবং ব্যবহার করে থাকি। বিষেশ করে আরবী ভাষার হরফ বা অব্যয় পদ ৩০/৪০ টি জানা থাকলে অর্ধেক আয়ত্তে এসে যাবে। তাই অব্যয় পদের শব্দগুলি আগে আলোচনা করবো।
كتال (Kitab) -Book বই
كتب(Kataba) = He wrote, সে লিখেছিল
كتتب (Kitatub) =Book Self, বইয়ের তাক
مكتب ( Maktab)= School, বিদ্যালয়
كاتب (Katib) = Writer, লিখক
مكتوب(Maktub)= যা লিখা হয়েছে
كتبب=( Kutuiba)Book, পুস্তিকা
تكاتب (Takatub)= Written communication
مكاتبة (Mukatabat) Corrospondence
استكتب (Ishtaktab) Dictation
اكتتاب (Iktitab) Copy
مكتبة (Maktabat) Library
আমি রাসূলকে কাব্য শিখাইনি এবং এটি তার জন্য শোভনীয়ও নয়। এ তো কেবল এক উপদেশ ও স্পষ্ট কুরআন মাত্র।
ReplyForward Add reaction |
وَ مَاۤ اَرْسَلْنَا مِنْ رَّسُوْلٍ اِلَّا بِلِسَانِ قَوْمِهٖ لِیُبَیِّنَ لَهُمْ١ؕ فَیُضِلُّ اللّٰهُ مَنْ یَّشَآءُ وَ یَهْدِیْ مَنْ یَّشَآءُ١ؕ وَ هُوَ الْعَزِیْزُ الْحَكِیْمُ
শব্দার্থ: وَمَا = এবং নি, أَرْسَلْنَا = আমরা পাঠাই, مِنْ = কোনো, رَسُولٍ = রাসূলকে, إِلَّا = ছাড়া, بِلِسَانِ = দিয়েভাষা, قَوْمِهِ = তার জাতির , لِيُبَيِّنَ = যেনসুস্পষ্টকরে বর্ণনা করেন , لَهُمْ = তাদের কে, فَيُضِلُّ = অতঃপর পথভ্রষ্ট করেন , اللَّهُ = আল্লাহ, مَنْ = যাকে , يَشَاءُ = ইচ্ছে করেন , وَيَهْدِي = ওসৎপথদেখান, مَنْ = যাকে , يَشَاءُ = ইচ্ছে করেন , وَهُوَ = এবং তিনি , الْعَزِيزُ = পরাক্রমশালী, الْحَكِيمُ = প্রজ্ঞাময়,
আমি প্রত্যেক রাসূলকেই তাহার স্বজাতির ভাষাভাষী করিয়া পাঠাইয়াছি তাহাদের নিকট পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করিবার জন্য, আল্লাহ যাহাকে ইচ্ছা বিভ্রান্ত করেন এবং যাহাকে ইচ্ছা সৎপথে পরিচালিত করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (১৪:৪)
ReplyForward Add reaction |
হায়! হায় !!! আল্লহ ছাড়া কোন উপসস্য নাই।
আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নাই, তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক। (৩:২)
اللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَۙ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُؕ
আল্লাহ কি উপাস্য নাকি হুকুম দাতা (ইলাহ)?
আল্লাহ কুরআন এ বলেন আল্লাহ ইলাহ হুকুম দাতা।
মানুষ আল্লাহকে বানাইল উপাস্য।
ইসলাম এ কোন উপাসনা নাই। আছে কর্মপদ্ধতি।
আল্লাহ সালাত দিল যেন মানুষ নিয়ম করে সালাতে কুরআন পাঠ করে, আল্লাহর হুকুমের ব্যাপারে যেন বেখেয়াল হয়ে না পড়ে। মানুষ বানিয়ে নিল না বুজে পড়া, উঠা, বসার রিচুয়াল উপাসনা। প্রত্যহ পাঁচ বেলা সালাত আদায় করে। কিন্তু একটিও কুরআনের শিক্ষা গ্রহন করে না। তাই নামাজ অশ্লিল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখেও না।
আল্লাহ হজ্ব কে করল মুসলিম দের সম্মেলনস্থল। এখানেও মানুষ শুধু রিচুয়াল রেখে, মৌলিক বিষয় সম্মেলনে কে বাদ দিল। হজ্বের রিচুয়াল পালন হয়। কিন্তু কোন সম্মেলন হয় না।শুধু রিচুয়াল ই যদি হজ্ব হত তাহলে বিদায় হজ্ব এ রাসুলুল্লাহ মুসলিম দের উদ্দেশ্য বক্তৃতা দিল কেন? যা পরিচিত বিদায় হজ্বের ভাষন নামে ? আজ মুসলমানদের কোন নেতাও নাই, কোন সম্মেলন ও নাই।
রোযা দেয়া হল, আত্মসংযমের মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করার পদ্ধতি হিসেবে। এটাকে বানিয়ে নিল না খেয়ে থাকার রিচুয়াল।
দুনিয়ার সব অপকর্ম সব করে রোযা থেকেও।
সব কাজে মুসলমানরা আজ ইসলামের মৌলিক শিক্ষা বাদ দিয়ে কিছু রিচুয়ালের মধ্যে ইসলাম কে বন্দি করল। যার সাথে অন্য ধর্মের উপাসনার মাঝে মৌলিক কোন পার্থক্য থাকে না।
মুসলমানরা ইসলামের কর্মপদ্ধতি কে উপাসনা বানিয়ে আল্লাহর সাথে প্রতারণা করল। আল্লাহ ও মুসলমানদের নামিয়ে দিল অধপতনের নিম্ন সীমায়।
উপাস্য আর ইলাহ বা হুকুম দাতার পার্থক্য কি?
ইদলামে অন্য ধর্ম থেকে ব্যতিক্রম এ জন্যই যে ইসলামে উপাসনা নেই। আছে বিধান মেনে জীবন চলার নির্দেশ। আর এই বিধান দাতা একমাত্র আল্লাহ।
কোরান নাযিলের আগেও নামাজ, রোযা, হজ্জ,যাকাত ছিল? জাহেলরা আজো সেই ধারাতেই তা পালন করে, নবীর আনিত কিতাবের পদ্ধতিতে নয়। সংস্কার কি করে গেলেন আর কি চলছে??
***********
আল্লাহ কোরান নাজিল করে যেমন একে হেফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন—তেমনি কোরানকে বুঝাও তিনিই সহজ করে দিয়েছেন। কোরানকে আরবী নাহু-ছরফের সাহায্যে বুঝতে গেলে শিক্ষিত লোক ছাড়া বুঝতে পারবে না। তাই মহান আল্লাহ যিনি আলিমুল হাকিম —- তিনি কোরানের মেছাল, আমাদের পারিপার্শ্বিক অগনিত আয়াত-নিদর্শন দিয়ে কোরান বুঝার ব্যবস্থা করেছেন।
খলিফা ওমর (রাঃ) এ দীন যেমন বুঝে ছিলেন—তেমনি অক্ষর জ্ঞানহীন হাবশী ক্রীতদাস বেলাল (রাঃ)সহ হাজার হাজার সাহাবী এ দীন বুঝে, দীনকে বিজয়ী করার জন্য তাদের জীবন ও সম্পদ আল্লাহর জন্য কোরবান করে ছিলেন।
কোরান বুঝা অর্থ—হাফেজ, কারী, মোহাদ্দেস, মোফাসসের, ফকিহ, মুজতাহিত হওয়া নয়। কোরানের কেন্দ্রীয় বিষয় অর্থাৎ — সমগ্র সৃষ্টি জগতের মালিক, পালনকর্তা, হুকুম-বিধানদাতা ইলাহ হলেন একমাত্র আল্লাহ তা বুঝতে পারা। আল্লাহ ছাড়া আসমান-জমিনের সব কিছু নশ্বর, আল্লাহর মোহতাজ এ উপলব্ধি না আসলে কোরান বুঝা যাবে না।
কোরানে দুনিয়ায় মানুষের জীবন-যাপনের জন্য আয়াতে মুহকামাত ( হুকুম,হারাম-হালাল, আদেশ-নিষেধ, ফরজ-ওয়াজিব)বিষয়ক আয়াত আছে। হারামের তালিকা হাতে গোনা কয়েকটি। হালালের তালিকা আল্লাহ দেন নাই — কারন হারামের তালিকার বাইরে সবকিছু মহা জ্ঞানী আল্লাহ হালাল করে দিয়েছেন।
কোরানে কিছু আয়াত আছে–“আয়াতে মুতাশাবিয়া ” বা রূপক অর্থবোধক। আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন–এগুলো বুঝতে পারলে ভালো, না বুঝতে পারলে অসুবিধা নেই। এগুলোর উপর হেদায়েত নির্ভর
করে না। তবে এগুলো নিয়ে আলোচনা, তর্কবিতর্ক করা ইমানের রোগের লক্ষন।
সমগ্র মানবজাতিকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ বলেন—
” আমি এ কোরানকে বুঝার জন্য সহজ করে দিয়েছি — অতএব, তা বুঝার জন্য কোনো চিন্তাশীল আছো কি? ” ——সুরা কমরঃ১৭
২৫ শে বিদ্যা ৪০ শে ধন
বয়স যখন ৪০ পার হয়-
তখন উচ্চ শিক্ষিত আর নিম্ন শিক্ষিত সবাই সমান।
বয়স যখন ৫০ পার হয়-
তখন কালো ফর্সা সবই সমান, কার চেহারা দেখতে কতটুকু সুন্দর, দেখতে কে স্মার্ট, এটা নিয়ে আর কেউ ভাবেনা…
বয়স যখন ৬০ পার হয়-
তখন উচ্চ পজিশনে চাকুরী আর নিম্ন পজিশনে চাকুরী এটা আর কোন ব্যাপার নয়।
এমনকি একজন পিয়নও অবসরে যাওয়া বসের দিকে তাকায় না…
বয়স যখন ৭০-
তখন আপনার বড় ফ্ল্যাট, বড় বাসা কোন গর্বের বিষয় নয়। বরং বাসা বড় হলে সেটা মেইনটেইন করাই কঠিন, ছোট একটি রুম হলেই আপনার চলে…
বয়স যখন ৮০-
তখন আপনার টাকা থাকলে যা, না থাকলেও তা। আপনার টাকা খরচ করার ইচ্ছা হলে সেটা খরচ করার জায়গাও খুঁজে পাবেন না…
বয়স যখন ৯০-
আপনার ঘুমানো আর জেগে থাকা একই,
আপনি জেগে ওঠার পর কি করবেন, আপনি নিজেও জানেননা…
বয়স যখন ১০০-
তখন আপনার বেঁচে থাকা আর বেঁচে না থাকা এতে কিছুই যায় আসে না। পৃথিবীবাসী আপনাকে নিয়ে আর ভাবে না…
জীবনের মানে টা এতটুকুই…
এর বেশি কিছুই না… এতো চাপ নিয়ে, লোভ করে, মানুষের ক্ষতি করে লাভ কি???
নিজ নিজ জায়গা থেকে জীবনটা উপভোগ করতে শিখুন, অন্যের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকুন।
সময়টা ভালো কাজে লাগান, পৃথিবীটা সবার জন্য সুন্দর হবে।…
ReplyForward Add reaction |
আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
লিগ্যাল নোটিশ
প্রেরক: মো: আমিরুল ইসলাম, পিতা- মৃত আব্দুর রহমান, প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক, দারুস সালাম অনলাইন মডেল স্কুল, নিমতলা, মিরপুর, কুষ্টিয়া। মোবাইল- 01716 300 226.
প্রাপক: ১. জনাব মাও: আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান, পিতা: মৃত শাহাদ মালিথা, গ্রাম- নওদাপাড়া, মিরপুর, কুষ্টিয়া।
২. জনাব মাও: মো: নূরুল ইসলাম, পিতা: মৃত রুস্তম মালিথা, গ্রাম- নওদাপাড়া, মিরপুর, কুষ্টিয়া।
৩. জনাব মাও: মো: কাজল, পিতা: খন্দকার সফি আহমেদ, ইমাম, নওদাপাড়া জামে মসজিদ, মিরপুর, কুষ্টিয়া।
৪. জনাব মুফতি আ: হান্নান, পিতা: আকবার আলী, গ্রাম- লক্ষ্নীপুর, পো: খয়েরপুর, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া।
মহোদয়গণ,
সালামুন আলাইকুম। আমি নিম্নস্বাক্ষরকারীকে আপনারা অত্র এলাকায় বিগত প্রায় ২০ বছর ধরে মিথ্যা খ্রিস্টান হিসেবে পরিচিত করে রেখেছেন। প্রমাণ ০৩/০১/২০০৬ সত্যের মুখপত্র দৈনিক কুষ্টিয়া, ২৩/১০/২০০৭ ‘আজকের আলো’ এবং ২০/১০/২০০৭ দৈনিক বজ্রপাত’ (ফটোকপি সংযুক্ত)। গত ঈদ-উল-ফিতরের দিন ১১/০৪/২০২৪ তারিখে আপনারা নওদাপাড়া গ্রামের ঈদগাহ মাঠে আমাকে ইসলাম বিরোধী ও খ্রিস্ট ধর্ম প্রতিষ্ঠা করার প্রতিবাদ করে কয়েকশত মুসল্লিকে উত্তেজিত করেছেন। গত ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে নতুন করে ‘দারুস সালাম অনলাইন মডেল স্কুল’ প্রতিষ্ঠিত হলে আপনারা স্কুলটিকে ‘খ্রিস্টান স্কুল’ বলে প্রচার করেন। আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক অনুদিত আল-কুরআনুল করীম প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় ‘সত্য কখনো গোপন থাকে না’ ফেসবুক পেইজে লাইভ প্রচার করি। আল-কুরআনুল করীম (৫৮তম মুদ্রণ, জুন ২০১৮), বাংলা অনুবাদ ইঞ্জিল শরীফ (বি,বি,এস- ১৯৮০, দ্বিতীয় সংস্করণ, Published by The Bangladesh Bible Society, 390, New Eskaton, Dhaka-1217), তৌরাত শরীফ (বি, বি, এস- ২০০৬) এবং জবুর শরীফ (বি, বি,এস-২০০৬)। কুরআনের সূরা ও আয়াত নং এবং অন্যান্য গ্রন্থের পৃষ্ঠা নং উল্লেখ করে আপনাদেরকে নিম্মলিখিত আকারে ও প্রকারে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করা হলো:-
১. আল-কুরআনুল করীম (১০:৩৭, ১০৮; ৩৯:৪১; ৪২:১৫)-এর ৬:৫৪; ৭:৪৬; ১৩:২৪; ১৬:৩২; ২৮:৫৫; ৩৯:৭৩; ৪৩:৮৯ আয়াত অনুসারে সম্ভাষণ ‘সালামুন আলাইকুম। আপনারা ইঞ্জিল শরীফের ৫৯, ৬৫, ১৭৫; ২২৬, ২২৬ ও ২২৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত সম্ভাষণ ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
২. আমি আল-কুরআনুল করীমের (২:১৮৩, ১৮৭, ১৯৬; ৪:৯২; ৫:৮৯, ৯৫; ৫৮:৪) অনুসরণ করে সিয়াম সাধনা করি। পক্ষান্তরে আপনারা ‘ইঞ্জিল শরীফের’ ৬, ১১, ১৭, ৩৭, ৭০, ১২২, ২৫৬, ১৬১, ২৬১ পৃষ্ঠায় এবং জবুর শরীফের ৫৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত রোজা রাখেন। ‘ইঞ্জিল শরীফের’ প্রেরিত ২৭:৯ (পৃ: ২৮৯) আয়াত অনুসারে রোজা-ঈদ করেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
৩. আল-কুরআনুল করীমে (৭:৬৮; ১২:৫৪; ২৬:১০৭, ১২৫, ১৪৩, ১৬২, ১৭৮; ২৭:৩৯; ২৮:২৬; ৪৪:১৮; ৮১:২১) আমিন অর্থ বিশ্বস্ত। আমি নবি ইবরাহীমের মত (২:১৩০; ৩:৬৮; ৬:১৬১; ১৬:১২৩) প্রার্থনা শেষে ১৪:৪০ আয়াত অনুসারে বলি ‘রাব্বানা ওয়া তা ক্বাব্বাল্ দুয়া-য়ি’। আপনারা ইঞ্জিল শরীফের ৩০৯, ৩২০, ৩২২, ৩৭৭-৩৭৮, ৩৮৩, ৩৯৫-৩৯৬, ৪১৬, ৪২৮, ৪৭৯, ৪৯৪, ৪৯৬, ৫০৩, ৫০৫, ৫২০, ৫২৫-৫২৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত আমিন, তৌরাত শরীফের ২৯০ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত আমিন এবং জবুর শরীফের ৩৫, ৬২, ৮১, ৯৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত আমিনের মত প্রার্থনা শেষে আমিন আমিন বলেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
৪. আমি কুরআন অনুসারে ছোট ছোট প্রার্থনা করি (২:২৫০-২৫১; ৩:১৪-১৬; ৩:১৪৭-১৪৮; ৩:১৯০-১৯৫; ৫:৮৩-৮৫; ২৩:১০৯-১১১; ২৫:৭৪-৭৬; ৩৮:৩৫-৪০; ৪৬:১৫-১৬)। আপনারা ইঞ্জিল শরীফের ৪৯, ৯৬, ৪১৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত মুনাজাতের মত দু’হাত তুলে লম্বা লম্বা মুনাজাত করেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
৫. কুরআনের ২:১৭৪, ৯:৫৩-৫৪ ও ১৬:১১৬ আয়াত অনুসারে ‘ফাসিকদের দান গ্রহণ’ গ্রহণ নিষেধ। আপনারা ইঞ্জিল শরীফের মার্ক-৭:৮-১৯ (পৃ: ৮১); তীমথিয় ৪:১-৫ (পৃ: ৪১৯) আয়াত অনুসারে আল্লাহর কালাম ও মুনাজাতের মধ্য দিয়ে অ-মুসল্লীর, সুদ-খোর, ঘুষখোর, মদখোর, মদ তৈরি কারখানার, মদ্য ব্যবসায়ীর, ছিনতাইকারীর, হত্যা ও লুণ্ঠনকারীর, চোরের, ডাকাতের, চাঁদাবাজের, ভেজালকারীর, ওজনে কমদাতার, ভিখারীর, যৌনকর্মীর অর্থ পাক-সাফ করেন ও গ্রহণ করেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
৬. কুরআনের ৭:১৬৯; ৩:১৮৭-১৮৮; ২:১৭৪-১৭৬ আয়াত অনুসারে কুরআন প্রচারের বিনিময় গ্রহন করলে শাস্তি। কোন রাসুলই আল্লাহর আয়াত প্রচারের বিনিময় গ্রহণ করেন নি (৬:৯০; ১০:৭২; ১১:২৯, ৫১; ১২:১০৪; ২৫:৫৭; ৩৬:২০-২১; ২৬:১০৯, ১২৭, ১৪৫, ১৬৪, ১৮০; ৩৪:৪৭; ৩৮:৮৬)। আপনারা ইঞ্জিল শরীফের ৩৩৫, ৩২০ ও ৩৬১ পৃষ্ঠা অনুসরণে মজলিসে কুরআন প্রচার, দান গ্রহণ ও এবাদত-খানার কাজ-কর্ম করে সংসার চালান এবং জাগতিক খাওয়া-পরা জোগাড় করেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
৭. আমি কুরআনের ৭:২৬; ৭:৩১ ও ১৬:৮১ আয়াত অনুসারে লজ্জাস্থান ঢাকবার ও বেশ-ভূষার জন্য, তাপ হতে রক্ষা এবং মসজিদে সুন্দর পোষাক পরিধান করি। আপনারা ইঞ্জিল শরীফের ২২৫, ৫০০, ৫০৫ পৃষ্ঠা অনুসরণে সাদা কাপড় এবং ১৯, ৯৬, ১২২, ১৫২, ১৬৪ ও ৪৯৭ পৃষ্ঠা অনুসরণে লম্বা লম্বা জুব্বা, কোর্তা ও পা পর্যন্ত লম্বা পোষাক পরেন। ১৯ ও ১৫২ পৃষ্ঠা অনুসরণে থলে, লাঠি, হাতে আংটি ও পায়ে জুতা পরেন। আপনারা ‘তৌরাত শরীফের’ ১২১, ১২২, ১২৩, ১৪০, ১৪১, ১৫০, ১৫৩, ১৫৬, ১৬৭ পৃষ্ঠা অনুসরনে মাথায় টুপি, পাগড়ী, লম্বা কোর্তা, আলখাল্লা ও জাংগিয়া পরেন এবং মাথা কামান ও দাড়ির আগা ছাঁটেন (৩২৩ পৃ:)। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
৮. আমি কুরআনের ২:৪৩, ১৭৭, ২৭৭; ৯:১১, ১৮, ৭১; ২১:৭৩; ২৪:৩৭, ৫৬; ২৭:৩; ৩১:৪; ৯৮:৫ আয়াত অনুসারে যাকাত দেই; ২:২৭১ ও ৯:৫৮-৬০, ৭৯, ৯৯, ১০২-১০৪ আয়াত অনুসারে সদকা দেই। আর ৯:৬০, ১০৩; ৬২:১০; ৬৭:১৫; ৭৩:৭ এবং ৭৮:১১ আয়াত অনুসারে বিভিন্ন ধরনের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। আপনারা ইঞ্জিল শরীফের ৩৭৭ পৃষ্ঠা অনুসরণে আল্লাহর কালাম শিক্ষা দিয়ে ভালো জিনিষের ভাগ নেন। ৩৬০-৩৬১ পৃষ্ঠা অনুসরণে মানুষকে দান করতে বলেন। ৯৬ ও ১৬৪ পৃষ্ঠা অনুসরণে মসজিদে দান বাক্স রাখেন। ৩৪৭ পৃষ্ঠা অনুসরণে মুষ্টির চাল তোলেন এবং ৩২০ পৃষ্ঠা অনুসরণে চাঁদা তুলে ধর্মানুষ্ঠান করেন ও সংসার চালান। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
৯. আমি কুরআন অনুসারে বলি ‘সালামুন আলা নূহিন ফিল আলামিন (৩৭:৭৯); ‘সালামুন আলা ইবরাহিম (৩৭:১০৯)। ‘সালামুন আলা মূসা ওয়া হারুণ (৩৭:১২০)। আপনারা ইঞ্জিল শরীফ অনুসারে বলেন, হযরত নূহ (আঃ) [৫৩৫ পৃ:] ‘হযরত ইবরাহিম (৫৩১ পৃষ্ঠা), হযরত ইবরাহিম (আঃ) [৩০০, ৫৩২, ৫৪৩, ৫৭৩ পৃ:] ও হযরত মুসা (৪৩৬ পৃ:), হযরত মুসা (আঃ) [৪৩৯, ৪৩৯, ৫৪২ পৃ:]। তৌরাত শরীফ অনুসারে বলেন, হযরত নূহ (আঃ) [৮, ১২, ৩০৭, ৩০৯, ৩১২, ৩১৩ পৃ:] ‘হযরত ইবরাহিম (আঃ) [১, ১৪-১৮, ১৯, ২১, ২২, ২৬-২৯, ৩৪, ৩০৭-৩০৯, ৩১১, ৩১৩, ৩১৫, ৩১৮-৩২০ পৃ:] এবং হযরত মূসা (আঃ) [IV, V, VII, ৮০-৮৬, ১০২, ১০৬, ১১৫, ১১৬, ১৩০, ১৩২, ২১১, ২১৪, ২৪৯, ২৯৪, ২৯৭, ২৯৯, ৩০২, ৩০৪, ৩০৭, ৩০৯, ৩১৫, ৩১৬, ৩১৮, ৩১৯ পৃ:], হযরত হারুন (আঃ) [৮৮, ৮৯, ১৫২, ২১৭, ২২২, ৩০৭ পৃ:]। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
১০. আমি কুরআনের ২:২৮, ১২৬; ৩:৫৬, ১৮৫; ৫:৩৬-৩৭; ৬:২; ৭:২৫; ১০:১৫; ১১:১০৩; ১৩:৩৪; ১৪:৪১, ৪৪; ১৬:২১; ১৬:১২৪; ১৭:১৩, ৯৭; ১৮:৪৯, ১০৫-১০৬; ১৯:১৫, ৩৩; ২০:১৫-১৬, ৫৫, ১০০-১০২, ১২৪; ২১:৪৭, ১০৪; ২২:৭, ১৭, ৫৫-৫৬, ৬৬, ৬৯; ২৭:৮৩; ২৩:১২-১৬; ২৫:১১-১৩ ২৬:৮১-৮২; ২৮:৪১-৪২, ৬১; ২৯:১৩, ২৫; ৩০:১১-১২; ৩০:৪০, ৫৫; ৩২:২৫; ৩৬:৫১-৫২; ৩৯:১৫, ২৪, ৪৭, ৬০, ৬৮; ৪০:১১; ৪১:৪০; ৪৫:১৭, ২৬; ৪৫:২৭-২৮; ৪৬:৬; ৫০:২০-২৫; ৫৪:৬-৮, ৪৬; ৫৬:৫০-৫৬; ৬০:৩; ৬৯:১৮-৩১; ৭৮:৩৮-৪০; ৮০:১৭-২২, ৩৩-৪০; ৮৩:৪-২০; ৮৮:১-১৬ আয়াত অনুসারে কবর আযাব বিশ্বাস করি না। আপনারা ইঞ্জিল শরীফের লূক ১৬:১৯-২৮ (পৃ: ১৫৪) অনুসারে মাটির কবরে শাস্তি হবে, তা বিশ্বাস করেন এবং প্রচারও করেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
১১. কুরআন অনুসারে মূসার ও ইব্রাহীমের কিতাবে আছে, ‘কোন বহনকারী অপরের বোঝা বহন করবে না (৫৩:৩৬-৩৮)। অনুরূপ কথা বলা হয়েছে কুরআনে (২:৪৮, ১২৩, ২৫৪, ২৮১; ৩:১০, ৯১; ৫:৩৬; ৬:৭০; ১০:৫৪; ১৩:১৮; ১৪:৩১; ১৭:১৩-১৪, ৭১-৭২; ১৮:৪৮-৪৯; ৩১:৩৩; ৩৫:১৮; ৩৯:৭; ৪৫:২৮-২৯; ৪৭:৩৪; ৫৮:১৭; ৬০:৩; ৭০:১১-১৪; ৮০:৩৪-৩৭; ৮২:১৯)। তাই আমি নিজে বাঁচার জন্য কুরআন অনুসারে সৎকর্ম করি। আপনারা তৌরাত শরীফের ২০৯, ৪৮৩, ২৪৮-৪৯ পৃষ্ঠা অনুসরণে বলেন ‘পাপ-পুণ্যের ভাগ অন্যেরা পায় এবং একজন কুরআনের হাফেজ হলে চৌদ্দপুরুষ জান্নাতে যাবে। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
১২. কুরআনের ২৪:২ আয়াত অনুসারে ‘ব্যভিচারের শাস্তি ১০০ বেত্রাঘাত। দাস-দাসীদের অর্ধেক (৪:২৫) এবং নবির স্ত্রীদের দ্বিগুণ শাস্তি (৩৩:৩০)। আপনারা ইঞ্জিল শরীফের ১৯৬, ৩২১, ৫২৬-৫২৭ পৃষ্ঠা অনুসরণে জেনাকারী এবং জেনাকারিণী দুইজনকেই হত্যা এবং পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলতে বলেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
১৩. কুরআন অনুসারে নবিদের নাম এক শব্দে। যেমন- ইবরাহীম, ইসহাক, ইয়াকুব, নূহ, দাঊদ, সুলায়মান, আইউব, ইউসুফ, মুসা, হারূন, যাকারিয়া, ইয়াহইয়া, ঈসা, ইলয়াস, ইসমাইল, আল-য়াসা, ইউনুস, লূত (৬:৮৩-৮৬); ইদরীস (১৯:৫৬)। ইঞ্জিল শরীফ অনুসারে আপনারা বলেন- হযরত ইবরাহিম (৫২৮, ৫৩১, ৫৪০ পৃ:), হযরত ইবরাহিম (আঃ) [৩০০, ৫৩১, ৫৩৫, ৫৩৭, ৫৪০, ৫৪১, ৫৪২,৫৪৩ পৃ); হযরত ইসহাক (৫২৮, ৫৩১ পৃ:), হযরত ইসহাক (আঃ) [৫৩০, ৫৩১ পৃ:] হযরত ইয়াকুব (৯০, ৪৫৮, ৫২৮, ৫৩১, ৫৪০, ৫৪৩ পৃ:), হযরত ইয়াকুব (আঃ) [৫৩১, ৫৪৩ পৃ:] হযরত ঈসা (১-৬, ১৯, ২১, ২২, ২৪, ২৬, ২৯, ৩৪, ৩৫, ৪০, ৪৩, ৪৪, ৪৮, ৪৯, ৫২, ৫৩, ৫৬, ৫৯, ৬১, ৬৩, ৬৪, ৬৫, ৬৭, ৭০-৭২, ৭৭, ৮৯, ৮০, ৮৫, ৮৯, ৯০, ৯২, ৯৩, ৯৬, ৯৮, ৯৯-১০১, ১০৩, ১০৪-১০৭, ১০৯, ১১২, ১১৬-১১৮, ১২২, ১২৪, ১২৭, ১২৮, ১৩৫, ১৩৭, ১৪০, ১৪২, ১৪৫, ১৫৫, ১৫৭, ১৫৮, ১৬২, ১৬৪, ১৬৮, ১৭০, ১৭২, ১৭৩, ১৭৫, ১৭৬, ১৭৭, ১৮১, ১৯৩, ১৯৪, ১৯৭, ১৯৮, ২০২, ২০৩, ২০৮, ২১২, ২১৪, ২১৯, ২২৩-২২৭, ২২৯, ২৪৫, ২৬৬, ২৭১, ২৭২, ২৭৫, ২৯৩, ৩০১-৩০৩, ৩০৫, ৩০৯, ৩১৭, ৩২৪, ২২৫, ৩২৮, ৩২৯, ৩৩০, ৩৩৯, ৩৪৪, ৩৪৬, ৩৪৭, ৩৪৯, ৩৫০, ৩৫২, ৩৫৪, ৩৬৭, ৩৭৫, ৩৭৯, ৩৮০, ৩৮১, ৩৮৩, ৩৮৮, ৩৮৯, ৩৯২-৩৯৪-৩৯৮, ৪০০, ৪০১, ৪০২, ৪০৪-৪১৫, ৪২১, ৪২৩, ৪৩৩, ৪৩৫, ৪৩৬, ৪৩৮, ৪৪১, ৪৪৪-৪৪৯, ৪৫৮, ৪৬০, ৪৬৬, ৪৬৭, ৪৭৫, ৪৭৬, ৪৭৮, ৪৮০, ৪৮১, ৪৮৬, ৪৯২, ৪৯৩-৪৯৫, ৫২৫, ৫২৭-৫৩১, ৫৩৪-৫৩৬, ৫৪২, ৫৪৪ পৃ:), হযরত নূহ (আঃ) [৫৩৫ পৃ:] হযরত আইয়ুব (আঃ) [৫২৭ পৃ:], হযরত ইসমাইল (৫৩০ পৃ:), হযরত জাকারিয়া (১১১, ১৩৮, ১৪৩ পৃ:), হযরত ইয়াহিয়া (১, ৪, ২১, ১২৭, ১৭৭, ১৭৮, ৫২৮, ৫৩৬ পৃষ্ঠা); হযরত মূসা (৩৬৮, ৪৩৬ পৃ:), হযরত মূসা (আঃ) [৪৩৯, ৫৩৭, ৫৪০, ৫৪২, ৫৪৫ পৃ:]। হযরত হারুন (৫৩০ পৃ:)। হযরত ইয়াহিয়া (আঃ) (২৯, ৬৬, ৭৮, ১০৮, ১১১, ১১৫, ১৮৩, ৫৩১, ৫৪৫। হযরত ইদ্রিস (৫৩৭ পৃ:), হযরত দাউদ (৫৪১ পৃ:)। তৌরাত শরীফ অনুসারে বলেন- ‘হযরত ইবরাহিম (আঃ)-১, ১৪-১৮, ১৯, ২১, ২২, ২৬-২৯, ৩৪, ৩০৭-৩০৯, ৩১১, ৩১৩, ৩১৫, ৩১৮-৩২০ পৃ:। হযরত ইসহাক (আঃ)-১, ২২, ৩০, ৩১, ৩৩, ৫৩, ৩০৭, ৩০৮, ৩১০, ৩১১ পৃ:]। হযরত ইয়াকুব (আঃ)- ১, ৩৪, ৩৮-৪১, ৪৪-৪৬, ৪৮-৫০, ৫২, ৫৩, ৭১, ৭২, ৭৪, ৭৬, ৭৭, ৩০৭-৩০৯, ৩১১, ৩১৫ পৃ:। হযরত নূহ (আঃ) [১, ৮, ১২, ৩০৭, ৩০৯, ৩১২, ৩১৩ পৃ:। হযরত মূসা (আঃ) [IV, V, VII, ৮০-৮৬, ১০২, ১০৬, ১১৫, ১১৬, ১৩০, ১৩২, ২১১, ২১৪, ২৪৯, ২৯৪, ২৯৭, ২৯৯, ৩০২, ৩০৪, ৩০৭, ৩০৯, ৩১৫, ৩১৬, ৩১৮, ৩১৯ পৃ:। হযরত ঈসা মসীহ (৩১০, ৩১৬ পৃ:)। হযরত হারুন (আঃ)-১৫২, ২১৭, ২২২, ৩০৭ পৃ:। হযরত ইউসুফ (আঃ)-১, ৫৫, ৫৬, ৫৮, ৫৯, ৬২, ৬৩, ৬৯, ৭২, ৭৪, ৭৮, ৭৯, ৩০৭, ৩১৭ পৃ:। হযরত লুত (আঃ) [১৫, ১৭, ২৩, ৩০৭, ৩০৯ পৃ:। হযরত ইদ্রিস (আঃ) [IV পৃ:], হযরত শু’আইব (আঃ) [৩০৭ পৃ:]। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
১৪. আমি কুরআনের (১০:১০৮; ৩৯:২৭, ৪১; ৪২:১৫) সকল আয়াত বিশ্বাস করি, সালাত প্রতিষ্ঠা করি এবং যাকাত দানের মাধ্যমে মুসলিম (২২:৭৮; ২৭:৮১ ও ৩০:৫৩) এবং মু’মিন (৪:৬৪-৬৫; ৮:২-৪, ৭৪; ৯:৭১-৭২; ২৪:৫১, ৬২; ২৭:২-৩; ৪৯:১৫)। ইঞ্জিল শরীফেরে ১১১, ২৪২, ২৬২, ২৯৮, ৩৩২, ৩৭৫, ৩৭৬, ৩৭৭, ৩৮১, ৪০০, ৪০১ পৃষ্ঠায় খৎনার করার কথা উল্লেখ আছে। তৌরাত শরীফের- ২১, ২৬, ৫১, ৮৫, ৯৮, ১৫৯, ২৬৭ ও ২৯৬ পৃষ্ঠায় খৎনার কথা উল্লেখ আছে। আপনারা ইঞ্জিল ও তৌরাত শরীফ অনুসারে খৎনা করেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
১৫. কুরআন অনুসারে অর্জিত সম্পদের (২:২৬৭; ৫৭:৭) নির্দিষ্ট হক (৭০:২৪; ৬:১৪১) এক-পঞ্চমাংশ (৮:৪১; ৫৯:৭) ব্যয় করার নির্দেশ। ইঞ্জিলে শরীফ অনুসারে সমস্ত আয়ের ও সকল প্রকার ফসলের এক-দশমাংশ আল্লাহকে দিতে হয়; দেখুন- ৫০, ১৪২, ১৫৭ পৃষ্ঠা। তৌরাত শরীফের ১৮৭, ২১৯, ২৭০, ২৭৩ ও ২৭৪ পৃষ্ঠা। আপনারাই জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
১৬. রাসূলদের কওম ছিল (২:৫৪; ৫:২০, ২১; ৬:৭৮, ১৩৫; ৭:৫৯, ৬১, ৬৫, ৬৭, ৭৩, ৭৯, ৮০, ৮৫, ৯৩, ১৪২; ১০:৭১, ৮৪; ১১:২৮, ২৯, ৩০, ৫০, ৫১, ৫২, ৬১, ৬৩, ৬৪, ৭৮, ৮৪, ৮৫, ৮৮, ৮৯, ৯২, ৯৩; ২০:৯০; ২৩:২৩; ২৫:৩০; ২৬:১১৭; ২৭:৪৬; ৩৯:৩৯; ৭১:২)। আল্লাহর উম্মত (২:১৪৩; ৭:১৮১)। সকলেই উম্মত (৬:৩৮)। তোমাদের মধ্যে উম্মত (৩:১০৪)। কিতাবিদের মধ্যে উম্মত (৩:১১৩)। তাদের মধ্যে উম্মত (৫:৬৬)। বহু উম্মতের নিকট রাসূল পাঠানো হয়েছিল (৬:৪২; ১০:৪৭; ১৩:৩০; ১৬:৩৬, ৬৩; ৩৫:২৪)। ইঞ্জিল শরীফে দেখুন- ৭, ১৭, ১৯, ২৩, ২৬, ২৯-৩৬, ৩৯-৪৪, ৫১, ৫৭-৫৯, ৬৪, ৬৫, ৭০, ৭১, ৭৫, ৭৭-৮০, ৮৩-৮৫, ৮৭-৯৩, ৯৬, ৯৯-১০১, ১০৫, ১০৬, ১২২, ১২৩, ১২৬, ১২৭, ১২৯-১৩১, ১৩৩, ১৩৫-১৩৭, ১৩৯, ১৪০, ১৪৩, ১৫০, ১৫৬, ১৫৮, ১৬১, ১৬৪-১৬৯, ১৭৪-১৭৬, ১৭৯-১৮৫, ১৮৯, ১৯০, ১৯২, ১৯৩, ১৯৮, ২০১, ২০৪-২০৬, ২১০, ২১১, ২১৫-২২১, ২২৩-২২৮, ২৩১, ২৩৩, ২৪৭-২৪৯, ২৫৪, ২৬১, ২৭১, ২৭২, ২৭৪ পৃষ্ঠায় ঈসার উম্মতের উল্লেখ আছে এবং ইঞ্জিল শরীফেই সাহাবী শব্দ দেখুন- ১২৩, ১৪২, ১৬৭, ১৭৪, ২৩১, ২৩০, ২৩৩, ২৩৭-২৩৯, ২৪০, ২৪৬, ৩৪৯, ২৬৩, ৩১৩, ৩২১, ৩২৩, ৩৪৫, ৩৪৯, ৩৬৩, ৩৬৫, ৩৬৮, ৩৬৯, ৩৭০, ৪১৭, ৪২৯, ৪৬৬, ৪৯৭, ৫১৯, ৫২৪ পৃষ্ঠায়। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
১৭. আল-কুরআনুল করীম আল্লাহর উত্তম নামসমূহ রয়েছে (৫৯:২৩-২৪)। আল্লাহর নাম এবং তাঁর আয়াত বিকৃত করলে শাস্তি (৭:১৮০; ৪১:৪০)। আমি কুরআন থেকে ‘রাব্বুনআল্লাহ (২২:৪০; ৪১:৩০-৩৩; ৪৬:১৩-১৪), হাসবুনআল্লাহ (৩:১৭৩; ৯:৫৯, ১২৯; ৩৯:৩৮); আল্লাহু আহাদ ও আল্লাহুসসামাদ (১১২:১-২); আল্লাহু কাদির (৬০:৭) এবং আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নাম (২:২৪৭, ২৫৯; ১২:৩৯; ৩১:১৬ … …) বলি। আপনারা ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামীন’ বলেন দেখুন-ইঞ্জিল শরীফের ৩৫৭, ৪৬৪ পৃষ্ঠা এবং জবুর শরীফের ১৯, ৩৯, ৪০, ৪৯, ৭২, ৭৫, ৭৯ পৃষ্ঠা। ইঞ্জিল শরীফের- ৭৫, ১০৯, ১১২, ১২৫, ১৩১, ২৪৪, ২৬৫, ৪৩১, ৪৩৭, ৪৪৪, ৪৪৬, ৫২৯, ৫৩৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত ‘আল্লাহতা’লা’ এবং ৫১৬, ৫২৮, ৫৩০ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত ‘আল্লাহ্ পাক’ বলেন। তৌরাত শরীফের ১৭, ২৩০, ২৬৩, ২৬৭ ও ২৯৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত ‘আল্লাহতা’লা’ বলেন। জবুর শরীফের ৬, ১৬, ৩৯, ৪৭, ৬৩, ৬৮, ৬৯, ৭৪, ৭৫, ৭৭, ৮২, ৮৪, ৮৬, ৮৭, ৯৭, দেখুন আল্লাহতা’লা এবং ৭৯ পৃষ্ঠায় ‘আল্লাহ পাক’ শব্দ রয়েছে। আপনারা ইঞ্জিল শরীফ থেকে ২-৬, ৪৬, ৪৮, ৫১, ৬৬, ৯২, ৯৪, ৯৬, ৯৭, ১০৮, ১০৯, ১১০-১১৫, ১১৯, ১৩৮, ১৬১, ১৬৪, ১৭৯, ২০৮, ২০৯, ২৩১, ২৩৩, ২৩৫, ২৩৭, ২৩৮, ২৪৩, ২৪৪, ২৪৬, ২৪৭, ২৫৫, ২৫৬, ২৫৭, ২৫৯, ২৬৩, ২৬৪, ২৭২, ৩১২, ৩১৭, ৩১৯, ৩২৫, ৩২৬, ৩৩৭, ৪০৫, ৪১২, ৪৪৬, ৪৫৪, ৪৭১, ৫১০, ৫১৫, ৫১৬, ৫১৯, ৫২৪, ৫২৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত মাবুদ, মাবুদ আল্লাহ ও আল্লাহ মাবুদ’ বলেন এবং তৌরাত শরীফের ৩-৮, ১০-১৩, ১৫-২২, ২৪, ২৬, ২৮-৩৪, ৩৬-৩৮, ৪০-৪২, ৪৪, ৪৭, ৪৮, ৫৭, ৫৮-৬০, ৭৭, ৮৩-১১০, ১১৩, ১১৫, ১১৬, ১২১-১৩৪, ১৩৯-১৫৯, ১৬২-১৯৯, ২০২-২৩১, ২৩৩-২৩৭, ২৪০-৩০৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত ‘মাবুদ, আল্লাহ মাবুদ ও ‘মাবুদ আল্লাহ’ বলেন। জবুর শরীফের ২-৩৫, ৩৯-৪১, ৪৫, ৪৬, ৪৮, ৪৯, ৫৫-৬০, ৬২, ৬৪, ৬৬, ৬৭, ৭১-৯৮, ১০০-১১৯, ১২১-১৩০ পৃষ্ঠার অনুরূপ বলেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন-আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
১৮. সমাজে ব্যপকভাবে ব্যবহৃত ‘হযরত, হুজুর ও ওস্তাদ’ শব্দ আমি কুরআনে পাইনি। নবি-রাসূলদের নাম এক শব্দে (২:১৩৬; ৪:১৬৩; ৬:৮৪-৯০; ৪২:১৩)। ‘‘হযরত’’ শব্দটির অর্থ প্রভু (দেখুন- কয়েকটি কথা, ইঞ্জিল শরীফ)। হযরত ঈসা (ইঞ্জিল শরীফের ১, ৪-৬, ২১, ২২, ২৪, ২৬, ২৯, ৩৪, ৪০, ৪৩, ৪৪, ৫২, ৫৩, ৫৬, ৫৯, ৬১, ৬৩, ৬৫, ৭০-৭২, ৮৫, ৮৯, ৯০, ৯৩, ৯৬, ৯৮-১০১, ১০৩-১০৫, ১০৬, ১০৯, ১১২, ১১৭, ১১৯, ১২২, ১২৪, ১২৭, ১২৮, ১৩৫, ১৩৭, ১৪০, ১৪২, ১৪৫, ১৪৭, ১৫৭, ১৫৮, ১৬৪, ১৬৮, ১৬৯, ১৭০, ১৭৩, ১৭৫, ১৭৬, ১৮১, ১৮৮, ১৯৩, ১৯৪, ১৯৮, ২০২, ২০৩, ২১২, ২১৪, ২১৯, ২২৪-২২৭, ২২৯, ২৪৫, ২৫৪, ২৬৬, ২৭১, ২৭২, ২৭৫, ২৯৩, ৩০১, ৩০২, ৩০৩, ৩০৫, ৩০৯, ৩১৭, ৩২৪, ২২৫, ৩২৯, ৩৩০, ৩৩৯, ৩৪৪, ৩৪৬, ৩৪৭, ৩৪৯, ৩৫০, ৩৫২, ৩৫৪, ৩৬৭, ৩৭৫, ৩৭৯, ৩৮০, ৩৮১, ৩৮৩, ৩৮৮, ৩৮৯, ৩৯২-৩৯৪, ৩৯৬, ৩৯৮, ৪০২, ৪০৬-৪০৯, ৪১০-৪১৪, ৪২১, ৪২২, ৪৩৩, ৪৩৫, ৪৩৮, ৪৪১, ৪৪৪, ৪৪৫, ৪৪৭, ৪৪৯, ৪৫৯, ৪৬০, ৪৬৭, ৪৭৫, ৪৭৬, ৪৭৮, ৪৮১, ৪৮৬, ৪৯৩, ৪৯৪, ৫২৫ পৃষ্ঠা দেখুন)। হুজুর শব্দটির অর্থ মহাশয়; মহামান্যবর; সম্মানীয় জন (ইঞ্জিল শরীফের ১৪-১৬, ১৮, ২৫, ৩১, ৩২, ৩৫, ৩৬, ৩৮, ৪০, ৪৩, ৪৭, ৪৮, ৫৭, ৬৪, ৭৫, ৭৭, ৮২, ৮৫-৮৭, ৯১, ৯৩-৯৫, ৯৬, ৯৯, ১১৬, ১২০, ১২১, ১২৬, ১২৮, ১৩০, ১৩২, ১৩৫, ১৩৬-১৩৯, ১৪২, ১৪৫, ১৪৭, ১৪৮, ১৫০, ১৫৫, ১৫৬, ১৫৭, ১৫৯-১৬১, ১৬৩, ১৬৪, ১৬৫, ১৬৭, ১৬৮, ১৮১, ১৮২, ১৮৯, ১৯১, ১৯৩, ১৯৬, ২০০, ২০১, ২০৪, ২০৫, ২১০-২১৩, ২২৫, ২২৬, ২২৭, ২২৮, ২৫০ পৃষ্ঠায়)। তৌরাত শরীফে ‘হুজুর’ শব্দ দেখুন ৬৪, ৬৭, ৬৮, ৬৯, ৭৩, ৭৪ পৃষ্ঠায়। ইঞ্জিল শরীফে ওস্তাদ শব্দ দেখুন ৩৬, ৪৯. ৮৯, ১৩২, ২১১, ২২৫, ৩২৭, ৩৪১, ৩৭৭, ৪১৪, ৪১৬, ৪১৭, ৪২৪, ৪২৭, ৪৪২, ৪৬১ পৃষ্ঠায়। তৌরাত শরীফে ওস্তাদ শব্দ দেখুন- ১১৮, ১২১, ১৩৫, ১৩৯ পৃষ্ঠায়। জবুর শরীফে ওস্তাদ শব্দ দেখুন ৪৮ পৃষ্ঠায়। কুরআনের ২৫:৪৩-৪৪ ও ৪৫:২৩ আয়াত এবং ইঞ্জিল শরীফের থিষলনীকীয় ২:৪ (পৃ: ৪১২) আয়াত অনুসারে আপনারা ‘আল্লাহর এবাদত-খানায় বসে নিজেকে আল্লাহ (হযরত, মাওলানা, মুফতি, আল্লামা .. ..) বলে দাবি করেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
১৯. কুরআনে আল্লাহই ওলী (২:২৫৭; ৩:৬৮, ১২২; ৫:৫৫; ৭:১৯৬; ১২:১০১), ওলী-মুর্শিদ (১৮:১৭), মাওলা (৮:৪০), মাওলানা (২:২৮৬; ৯:৫১), হাফিজ (১২:৬৪; ১১:৫৭; ৩৪:২১; ২১:৮২); মুফতি (৪:১২৭, ১৭৬), আল্লাহ-মাওলা (৪৭:১১; ৬৬:২), আল্লামা (৫৫:২, ৪; ৯৬:৪-৫), উকিল (৬:১০২; ১১:১২, ৩৩:৩, ৪৮; ৩৯:৬২; ৭৩:৯) ইত্যাদি। ‘‘হযরত’’ শব্দটির অর্থ প্রভু। আল্লাহ আমাদের প্রভু। অথচ আপনারা ইঞ্জিল শরীফ অনুসারে ‘হযরত’ শব্দের মতই ওলী, মাওলা, মাওলানা, হাফেজ, মুফতি, আল্লামা, উকিল ইত্যাদি শব্দগুলোর ব্যবহার করেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
২০. কুরআনে আব্বা (৮০:৩১) অর্থ গবাদি খাদ্য/ঘাস, ইঞ্জিল শরীফের রোমীয় ৮:১৫ (পৃ: ৩০৭) আয়াত অনুসারে খ্রীষ্টানগণ ‘আল্লাহকে আব্বা, অর্থাৎ পিতা’ বলে ডাকেন। কুরআন অনুসারে মৃত দেহের গায়ে যা থাকে সেই অবস্থায় মাটি দিতে হয় (৫;৩০-৩১)। আপনারা ইঞ্জিল শরীফের ১৭৩, ২০৬, ২০৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত আতরের ব্যবহার ও লাশ কাফন দিয়ে জড়িয়ে কবরের মধ্যে দাফন করেন সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
২১. কুরআনে শিশুর জন্মের দিনে (৩:৩৬) তার নাম রাখতে এবং অভিশপ্ত শয়তান হতে শিশু ও তার বংশধরদের জন্য আল্লাহর শরণ নিতে হয়। স্ত্রী সহবাসে বীর্যপাত হলে (৪:৪৩; ৫:৬) প্রসব-পায়খানার মত ধৌত করতে হয়। আপনারা ইঞ্জিল শরীফের ৭৯ পৃষ্ঠার অনুসরণে জন্ম দিনে ভোজসহ নাচ-গানের আয়োজন করেন। আপনারা তৌরাত শরীফের ১৬৬ পৃষ্ঠা অনুসরণে স্ত্রীর সাথে সহবাসে বীর্যপাত হলে গোসল করেন। সুতরাং আপনারা জবাব দিন- আমি খ্রিস্টান, না আপনারা খ্রিস্টান?
২২. আমি কুরআন পূর্ববর্তী কিতাবে বিশ্বাস করি (২:৪; ৩:৩; ৪:১৩৬; ৫:৪৮, ৬৮; ৭:২-৩; ১০:৩৭; ৪১:৪০-৪৩; ৫০:৪৫)। কুরআন অনুসারে জান্নাতে যাওয়ার জন্য আমি ঈমান এনে সৎকর্ম করি (২:২৫; ২:৮২; ৭:৪২; ১০:৯; ১১:২৩; ১৪:২৩; ১৮:৩০-৩১; ১৮:১০৭-১০৮; ২২:১৪; ২২:২৩; ২২:৫৬; ২৯:৫৮; ৩০:১৫; ৩১:৮; ৩২:১৯; ৪০:৪০; ৪২:২২; ৪৭:১২; ৬৪:৯; ৬৫:১১; ৮৫:১১; ৯৮:৭-৮)। আপনারা (ক) কুরআনের সূরাসহ একটি আয়াত উল্লেখ করুন- পাঁচ ওয়াক্ত সালাত পড়লে বা না খেয়ে এক মাস সিয়াম সাধনা করলে অথবা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে মক্কায় গিয়ে হজ্জ্ব করলে জান্নাতে যাওয়া যাবে। (খ) ধর্ম হিসেবে জান্নাতে যাওয়ার জন্য আপনারা যে ধর্মগ্রন্থের অনুসরণ করেন তার নাম কি?
২৩. কুরআন বিশ্বের সকল মানুষের গ্রন্থ (২:২১, ১৬৮; ৪:১, ১৭০, ১৭৪; ৭:১৫৮; ১০:৫৭, ১০৪, ১০৮; ২২:৪৯, ৭৩; ৩১:৩৩; ৩৫:৩, ৫, ১৫; ৪৯:১৩; ৮২:৬)। আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত ইসালিম ফাউন্ডেশন কর্তৃক অনুদিত ‘আল-কুরআনুল করীম’ ১৯৮২ খ্রী: থেকে পাঠ করছি এবং প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় ফেসবুক পেইজ ‘সত্য কখনো গোপন থাকে না’–এ লাইফ পাঠ করে শোনায়। এজন্য আপনারা এলাকায় আমাকে গত প্রায় ২০ বছর খ্রীস্টান বলেন এবং আমার প্রতিষ্ঠিত স্কুলকে খ্রীস্টান স্কুল বলেন। সুতরাং জবাব দিন- আমি খ্রীস্টান হলে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর অনুসারি যারা ‘আল-কুরআনুল করীম’ পড়েন তারাও খ্রীস্টান নয় কি?
২৪. এ বছরই (২০২৪) প্রথম ১২ জন শিক্ষার্থী বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চতর গণিতসহ এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। তার মধ্যে ৮ জন জিপিএ ৫ অর্জন করে। অন্য ৪ জনের জিপিএ ৪.৮৯, ৪.৮৯. ৪.২২ ও ৪.১৭। উপজেলায় ফলাফলে প্রথম হওয়ার পরেও কি কারণে আপনারা ‘দারুস সালাম অনলাইন মডেল স্কুল’ বন্ধ করতে চান? যুক্তিসহ লিখুন।
আল-কুরআনুল করীম অনুসারে ধর্মের নামে কোন কিতাব লেখা ও তার অনুসরণ করা যাবে না (২:৭৯; ৩:৭৮; ৬:১১২; ৬২:৫)। কুরআন পরবর্তী কোন কিতাবে ঈমান আনা (৪:১৩৬; ১০:১৫; ৩৯:২৭), কুরআনের সাথে কিছু যোগ করা (৪১:৪০-৪২) ও দুনিয়ার অধিকাংশের অনুসরণ করা যাবে না (৬:১১৫-১১৬)। রাসূল একমাত্র ওহির অনুসরণ করেছেন (৬:৫০; ৭:২০৩; ১০:১৫; ৪৬:৯)। আপনারা গত ২০০৬ সালে ‘নিমতলা মডেল স্কুল’টি বন্ধ করে বিগত প্রায় ২০ বছর আমাকে খ্রীস্টান হিসেবে প্রচার (পত্রিকার ফটোকপি সংযুক্ত) করছেন। ঈদ-উল-ফিতরের দিন ১২/০৪/২০২৪ তারিখে নওদাপাড়া ঈদগাহ মাঠে আমাকে খ্রীস্টান হিসেবে প্রচার করে দারুস সালাম অনলাইন মডেল স্কুলের শিক্ষার্থীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে ২০ জন শিক্ষার্থীকে স্কুলে আসা থেকে বিরত রেখেছেন। ঢাকার তিনজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক ‘নাজমূল হক’ সাহেবকে ভাড়া বাসা থেকে স্বপরিবারে ঈদের পরের দিন পুলিশের সহযোগীতায় রাত ১২টার সময় গাড়ীভাড়া করে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন।
অতএব নোটিশ প্রাপ্তির ১০ (দশ) দিনের মধ্যে জবাব দিতে ব্যর্থ হলে আপনাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ধন্যবাদান্তে
আমিরুল ইসলাম
অবগতির জন্য প্রেরণ করা হলো:
১. শেখ হাসিনা, প্রধান মন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, ঢাকা। প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক
২. জনাব আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা। দারুস সালাম অনলাইন মডেল স্কুল
৩. জনাব আনিসুল ইসলাম, মন্ত্রী, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাকা। নিমতলা, মিরপুর, কুষ্টিয়া।
৪. জনাব মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ঢাকা। মোবাইল: ০১৭১৬ ৩০০ ২২৬
৫. জনাব মোঃ ফরিদুল হক খান, ধর্ম মন্ত্রী, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাকা।
৬. ব্যারিষ্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, হবিগঞ্জ–৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি)।
৭. জনাব সোলেমান খান, শিক্ষা সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, ঢাকা।
৮. মহাপরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ।
৯. চেয়ারম্যান, মাদরাস
ReplyForward Add reaction |
আর এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা,( ৩৭:৬১) এ আয়াতেই জন্ম চক্রের রহস্য লুকায়িত।
মোহাম্মদ গোষ্ঠীর সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত (মুসলমান মুত্তাকী অবস্থায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ) মানুষের মুক্তি হবে না এবং জন্মচক্রের ফেরে রুপান্তরিত হয়ে বারবার এই দুনিয়া নামক জাহান্নামে আসতে হবে ।
যে সময়ে তোমরা ফিরিয়া যাইবে পিছনে, আল্লাহর তরফ হইতে থাকিবে না তোমাদের জন্য কোনো সংরক্ষক এবং আল্লাহ যাহাকে ভ্রান্তিতে ফেলেন তাহার জন্য কোনো হাদী নাই ।”
আল্লাহ কাহাকেও ভ্রান্তির মধ্যে ফেলতে চান না ।
কারণ আল্লাহ সূরা হুদে বলে দিয়েছেনঃ “যে ব্যক্তি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করেনা আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেনা । (১১ঃ৫৩)
তাঁরই সৃজিত প্রাকৃতিক নিয়ম যে মানুষ মহামানবের হেদায়েতের বিরোধীতা করলে মৃত্যুর পরে পেছনের দিকে অর্থাৎ পশুকুলে জন্ম নেয় । তখন তাদের জন্য কোনো হাদী থাকে না । একেই আল্লাহর বিভ্রান্তি বলা হয়েছে ।
নিশ্চয় তোমরা ধাপে ধাপে আরোহণ করিবে। (৮৪:১৯)
لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَنْ طَبَقٍؕ
লাতারকাবুন্না তাবাক্কান আন তাবাক।
তারকীকঃ لَتَرْكَبُنَّ = তোমরা অবশ্যই আরোহণ করবে, طَبَقًا = স্তর, عَنْ = থেকে, طَبَقٍ = স্তরে,
বালাগাত (শব্দ বিন্যাস)ঃ তোমাদের অবশ্যি স্তরে স্তরে এক অবস্থা থেকে আর এক অবস্থার দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
________ হাদীস মানার সীমারেখাঃ
বেশিরভাগ মানুষ হাদিস বলতে বুঝেন নবীজির (সঃ) বাণী। একারণেই হাদিস মানাকে নবীজির অনুসরণের সমার্থক মনে করেন। হাদিস মানে না মানে নবী মানে না, কত বড় কথা !! হাদিস শব্দের অর্থ কথা বা বর্ণনা। কোরআন হচ্ছে আল্লাহর হাদিস মানে আল্লাহর বাণী। নবীজির কথা মানে নবীজির (সঃ) হাদিস, সাহাবীদের হাদিস মানে সাহাবীদের কথা,আবু জেহেলের হাদিস মানে আবু জেহেলের বাণী, শয়তানের হাদিস মানে শয়তানের কথা। লাহওয়াল হাদিস মানে ফালতু কথা। আমি নবীজির হাদিস মানি (মেনে নিয়েছি অর্থে) কিন্তু আবু জেহেলের হাদিস বা লাহওয়াল হাদিস মানি না।
হাদিসের একাডেমিক পরিভাষা হচ্ছে ‘খবর’। খবর মানে ‘নিউজ’। হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবীকে ইংরেজিতে বলে রিপোর্টার, হাদিস সংকলক ইমাম অনেকটা সম্পাদকের মত যিনি খবরের সত্যতা যাচাই বাছাই করে প্রকাশ করেন। কিন্তু সবকিছুর পরও খবর সত্য,মিথ্যা, উদ্দেশ্য প্রনোদিত যেকোন কিছুই হতে পারে| হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবী বা সংকলনকারী ইমামদের নাম বা অনুমোদন কোরআনে নাই। বরং কোরআনে আল্লাহ বলেছেন “মদীনাবাসীদের মধ্যে অনেক মুনাফিক আছে, তুমি তাদেরকে চিন না,
আমি তাদেরকে চিনি”। নবীজির (সঃ) এর সাহাবীদের মধ্যে কে বা কাহারা মুনাফিক ছিলো তা নবীজীও জানতেন না।
হাদিস আমাদের দরকার। হাদিস,ইতিহাস, সীরাত সাহিত্য কোরআনের কনটেক্সট বুঝা সহজ করে তুলে।
কিন্তু লোকমুখে শোনা, কোরআন বিরোধী ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত হাদিস ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মত ইসলাম ধর্মের ঘাড়ে চেপে বসেছে। মুসলমানদের আশেকে রাসূলের নামে আশেকে আবু জেহেল বানানো হচ্ছে। নবীজির নামে প্রচলিত হাদিসের বেশিরভাগই নবীজির কথা নয়। নবীজির নামে বানোয়াট কথা। আমি ঢালাও সব হাদীসের কথা বলছি না। কোনটি বানোয়াট কোনটি নবীজীর তা কোরান জানলে সহজেই বুঝা যায়। তাই নিজ মাতৃভাষায় কোরানের মর্ম বুঝে পড়া একান্ত প্রয়োজন।
সজল রওশন এটিকে আরো সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন।
ReplyForward Add reaction |
১] সালাত ( প্রচলিত অনুবাদ নামাজ) (প্রকৃত বাংলা রবের আদেশের অনুশীলন)
২] সিয়াম ( প্রচলিত অনুবাদ রোজা) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ সকল বিষয়ে রবের নির্দেশে সংযম)
৩] হজ্জ ( প্রচলিত অনুবাদ হজ্জ) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ মুসলিম মহা সম্মেলন)
৪] যাকাত ( প্রচলিত অনুবাদ যাকাত) ( প্রকৃত বাংলা ভোগকৃত সকল অনুদানের পরিশুদ্ধ করন)
৫] রিবা ( প্রচলিত অনুবাদ সুদ) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ নৈরাজ্য সৃষ্টি করে অনাচার)
৬] ইবাদত ( প্রচলিত অনুবাদ ইবাদত) (প্রকৃত বাংলা স্রষ্ষ্টার নির্দেশনা পরিপালন)
৭] ] ঈমান ( প্রচলিত অনুবাদ বিশ্বাস) ( প্রকৃত বাংলা আল্লাহর মনেনীত বিষয়ের উপর বিশ্বাস)
৮] একিন (প্রচলিত অনুবাদ একিন) ( ঈমানের পরিপুর্ণতা)
৯] রুহ ( প্রচলিত অনুবাদ আল্লাহর আদেশ) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ আল্লার উপস্থিতি বা অস্তিত্ব)
১০] নাফস ( প্রচলিত অনুবাদ নাফস) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ ভাল মন্দের মিশ্রিত প্রবৃত্তি)
১১] দ্বীন ( প্রচলিত অনুবাদ ধর্ম) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ মনোনীত জীবন ব্যবস্থা)
১২] ইসলাম ( প্রচলিত অনুবাদ শান্ত) (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ আত্মসমর্পন)
১৩] মুসলমান ( প্রচলিত অনুবাদ ইসলামে দাখিল) ( প্রকৃত বাংলা ঈমান অনুযায়ী বাস্তব জীবন গঠনকারী)
১৪] মুমিন ( প্রচলিত অনুবাদ মুমিন) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ ঈমান অনুযায়ী জীবন প্রতিষ্ঠিত কারী)
১৫] রুহল কদ্দূস ( প্রচলিত অনুবাদ জিব্রাইল) ( প্রকৃত বাংলা আল্লাহর স্বীয় ঊপস্থিতি।)
১৬] মালাইকা ( প্রচলিত অনুবাদ ফেরেস্তা) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ রবের আজ্ঞাবাহী সত্তা)
১৭] রুকু ( প্রচলিত অনুবাদ রুকু বা ঝুঁকে পড়া) ( প্রকত বাংলা অনুবাদ প্রভুর আদেশের প্রতি অবনত হওয়া)
১৮] সিজদাহ ( প্রচলিত অনুবাদ সিজদা বা মাটিতে মাথা নত) (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ প্রভুর আদেশ পালনে লুটিয়ে পড়া)
১৯] উম্মি ( প্রচলিত অনুবাদ মুর্খ বা অজ্ঞ) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ অজ্ঞাত)
২০] লৌহে মাহফুজ ( প্রচলিত অনুবাদ শিলা খন্ড) (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ পুর্ব নির্ধারিত সকল প্রোগ্রাম গোপন সংরক্ষনাগার।)
২১] কিয়ামত ( প্রচলিত অনুবাদ মহাপ্রলয় ) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ যেকোন বিষয়ে চূরান্ত সময়)
২৩] নিয়ামত (প্রচলিত অনুবাদ নিয়ামত বা কল্যান) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ প্রভুর বিনিময় বিহীন অনুদান)
২৪] বাঈয়া (প্রচলিত অনুবাদ ব্যবসা) ( অনুশাসন মেনে জীবিকা)
২৫] সুন্নত (প্রচলিত অনুবাদব নবীর আদর্শ) (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ প্রভুর দেখানো রিতী অনুসরন করা)
২৬] হাদীস ( প্রচলিত অনুবাদ বানী বা কথা) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ আল্লাহর বাক্য)
২৭] আয়াত ( প্রচলিত অনুবাদ কোরানের বাক্য) (প্রকৃত অনুবাদ আল্লাহর যে কোন নিদর্শন)
২৮] নাযিল ( প্রচলিত অনুবাদ অবতীর্ন) (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ প্রেরণ)
২৯) ছাকুরা ( প্রচলিত অনুবাদ নেশা) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ মোহ) নেশা মাদকতাকে বুঝায়, যা সাময়িক মস্তিস্ক বিকৃত হয়, পক্ষান্তরে মোহ টাকা পয়সা,সংসার, সন্তান, ব্যবসা ইত্যাদীতে হয়ে অন্য মনস্ক হয়ে পড়ে। সালাতে বসে সব হিসাব মিলায়, কয় রাকাত পড়ছে সেটাও মনে থাকে না অন্যমনস্কতার জন্য। অথচ প্রচলিত অনুবাদে মর্ম দাড়ায় নেশা করা যায়েজ তবে নামাজের সময় নেশা করা যাবে না। (৪:৪৩ মতে)
অনুরপ হে ঈমানদার গন তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। প্রচলিত এ অনুবাদ থেকে মর্ম দ্বারায় সুদ খাওয়া যায়েজ তবে চক্রবৃদদ্ধী আকারে নয়। ইসলামী ব্যাংক।
২৯] তাকওয়া ( প্রচলিত অনুবাদ খোদা ভীতি) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ আল্লাহর নির্দেশ পালনে কঠোর) আল্লাকে ভয় করা নয়। সৎ কর্মচারী মালিককে ভয় পায়না বরং শ্রদ্ধা করে। ভয় পাওয়া আর শ্রদ্ধা করা এক নয়। অসৎ কর্মচারী ভয় পাবে, তার অসততার দুর্বলতায়।
এমন আরো ১১ টি আরবী শব্দ রয়েছে যার বাংলা অনুবাদ এখনো করতে পারি নাই। কারন সেগুলির অনুরুপ আয়াত দ্বীতিয় নেই বলে। তবু চেষ্টা অব্যহত রেখেছি। এ অনুবাদ গুলি কোন অভিধান বা বাংলা একাডেমি থেকে গ্রহন করা হয় নি। সম্পুর্ণ নিজস্ব চিন্তা গবেষনায় কোরানের বিভিন্ন আয়াতের অনুবাদ থেকে গৃহীত নির্যাস হতে অনুবাদগুলি উপস্থাপন করা হলো। এর চেয়ে ভাল আরো কিছু হয়ত পরবর্তি প্রজন্ম আবিস্কার করবে। তাই এ অনুবাদ আমি কাউকে মানতে দৃঢ় প্রত্যয় করবো না।
তবে এতটুকু নিশ্চয়তা দিচ্ছি কোরআনে বর্ণিত এই আরবী শব্দ গুলির পিছনে এই বাংলা অনুবাদ গুলি বসিয়ে একবার পুরো কোরানটা পড়লে সে সত্যিকারই কোরানের মর্ম বুঝতে সক্ষম হবে এবং কোরানের প্রেমে পড়ে হাবুডুবু খাবে।
যারা কোরান বিমুখী এবং কোরানকে মানে কিন্তু অনুবাদ পড়তে রাজি নয়, ফলে প্রচলিত ইবাদতেই তৃপ্ত তাদের এমন অবস্থার প্রধান কারন এই ৪১ টি শব্দের ভুল বা বিদেশী অনুবাদ।
কোরানের মাত্র এই ৪১টি শব্দের সঠিক বাংলা অনুবাদ বসিয়ে কোরান নিজ ভাষায় পড়লে সে প্রচলিত এবাদতের অধিকাংশই পন্ডু সার মনে করবে। তাই আল্লাহ বলেনঃ
উহারাই তাহারা, ‘পার্থিব জীবনে যাহাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তাহারা মনে করে যে, তাহারা সৎকর্মই করিতেছে,
(১৮:১০৪)
তাই সব না হলেও অন্তত দু-চারটি অনুরুপ আয়াতের আরবী শব্দ গুলির অনুবাদে এই বাংলা অনুবাদ বসিয়ে যাচাই করে দেখার অনুরোধ।
অনুরুপ আরবী শব্দের ৪১ টি আয়াত আমি পরিবেশন করবো কোরআন থেকে। আপনি অনুবাদগুলি বসিয়ে দেখেন আল্লাহ কত সহজ ও প্রান্জল ভাবে আমাদের নির্দেশ উপদেশ দিয়েছেন আর আমরা অনুবাদ বিভ্রাটে কি বুঝে বসে আছি।
যেমন: হে ঈমানদারগন! তোমরা নেশা গ্রস্থ অবস্থায় নামাজের ধারে কাছে যেওনা, যতক্ষন না বুঝতে পার তোমরা কি বলছো।( ৪:৪৩)
উক্ত আয়াতে সালাতের বাংলা বসিয়ে দেখুন মর্ম কি দাড়ায়।
হে বিশ্বাসী গন! তোমরা মোহ গ্রস্থ অবস্থায় রবের নির্দেশ অনুশীলনে ব্রতী হইও না, যতক্ষন না বুঝতে পার তোমরা কি বলছো? (৪:৪৩)
এবার নিজেই ভাবুন কোন অনুবাদটি শ্রেয় মনে হয় বিবেকের কাছে। কারন আরবী আমাদের ভাষা নয়। তাই এভাষাকে নিজ মাতৃভাষায় রুপান্তর না করে কিভাবে রবের নির্দেশনা আমাদের প্রতি উপদেশ সমুহ আমরা বুঝবো? আর কোরআনকে আরবী ভাষায় কেন নাযিল করেছেন তার কারনও আল্লাহ বলে দিয়েছেন।
আমি যদি ‘আজমী ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ করিতাম তবে উহারা অবশ্যই বলিত, ‘ইহার আয়াতগুলি বিশদভাবে বিবৃত হয় নাই কেন ?’ কী আশ্চর্য যে, ইহার ভাষা ‘আজমী, অথচ রাসূল আরবীয়! (৪১:৪৪)
বড় দূঃখ হয় আলেম সমাজের প্রতি। কেন তারা সত্য সঠিক প্রকাশে মনোনিবেশ করে না। তাই মনে হয় আল্লাহ বলেছেনঃ
আলেমগণ ও পণ্ডিতগণ কেন পাপ কথা বলিতে ও অবৈধ ভক্ষণে নিষেধ করে না ? ইহারা যাহা করে নিশ্চয় তাহা নিকৃষ্ট । (৫:৬৩) আরো একধাপ এগিয়ে আল্লাহ বলেনঃ
তবে কি উহারা কুরআন সম্বন্ধে গভীর চিন্তা করে না? না উহাদের অন্তর তালাবদ্ধ? (৪৭:২৪)
এই লিখার উপর কোন আলেম কোন বাক্যে বা অনুবাদে দ্বীমত পোষন করলে মন্তব্যে জানানোর অনুরোধ রইল, আমি সংশোধন করে নেব।
************************:::::******************;;**
সালাত,সিয়াম,হজ্জ,যাকাত,ইবাদত,একিন, রুহ, রিবা,
নাফস,উম্মি,লৌহে মাহফুজ,নিয়ামত,সুন্নাত,হাদীস ইত্যাদী
আরবী শব্দ গুলির সঠিক বাংলা অনুবাদ না থাকায় পারস্য অনুবাদের উপর ভর করে চলতে হয়। ফলে বাংলা ভাষাভাষির মানুষ কোরানে এ শব্দগুলি সমন্বিত আয়াত গুলির সঠিক মর্ম উপলব্ধিতে ব্যার্থ হয়ে গতানুগতিক অনুবাদ পড়ে আল্লাহর নির্দেশনা সঠিক ভাবে বুঝতে সক্ষম না হয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয় এবং সঠিক উপলব্ধি থেকে দূরে সরে যায়। আমাদের আলেমগনও এ নিয়ে কোন চিন্তা গবেষনা কখনো করার প্রয়োজন বোধ করেন নাই। তারাও আরবী তেলোয়াতে নেকির হিস্যা নিয়ে আমজনতার নিকট প্রিয় ভাজন হয়ে আছেন। ধর্মকে জীবিকা হিসেব বেছে নিয়েছেন তারা। অথচ আরবী উর্দু ফারসী ইংরেজী ভাষার এমন কোন শব্দ নেই যার প্রতিস্থাপিত বাংলা শব্দ নেই।
প্রথমত,বিষেশ করে কোরানের আরবী শব্দগুলির সঠিক বাংলা অনুবাদ করতে হলে সেই আরবী শব্দটি কোরানের কত যায়গায় আছে তা আগে সংগ্রহ করতে হয়। অতপর ঐ শব্দটির বাংলা অনুবাদ কি কি ব্যবহার করা হয়েছে তা অনুসন্ধান করতে হয়।
দ্বীতিয়ত আরবী শব্দটির বিপরীত আরবী কি কোরানের কোন কোন আয়াতে আছে তা নির্বাচন করতে হয়। সেখান থেকে একটি শব্দের সঠিক অনুবাদ ধরতে পারলে বিপরীত শব্দটির বাংলা অনুবাদ সঠিক কি হবে তা নিরুপন করা সহজ হয়। যেমন লাইল এর বিপরীত নাহার শব্দটি কোরানের ১১টি আয়াতে আছ। এখন লাইল এর অর্থ জানা থাকলে নাহার দিবস সহজে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। এই দূইটি নচ্চ প্রয়োগ করে ফারসী অনুবাদ বাদ দিয়ে বাংলা শাব্দিক অনুবাদ সৃজন করা সম্ভব এবং তখন কোরানের সঠিক মর্ম বাংলাভাষার মানুষের উপলব্ধি করা সম্ভব।
যেমন রুহ একটি আরবী শব্দ, যার বাংলা অনুবাদ রহুই জানি, একটু বেশী হলে রুহ মানে আত্মা বা প্রাণ বুঝি। আরকটু এগিয়ে বুঝলে রুহ এর অনুবাদ ” আল্লাহর আদেশ ” ধরে থাকি। ব্যাস এর বেশী কিছু না। এর বেশী কিছু জানতে চাইলে আলেমগন একটি আয়াত তুলে ধরে খামুস হতে বলেনঃ
“তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’ আয়াত : ৮৫
রুহুর বিপরীত কোন শব্দ কোরানে প্রয়োগ করা হয় নি। তাই দ্বীতিয় পদ্ধতিতে এর বাংলা অনুবাদ করা সম্ভব নয়। প্রথম পদ্ধতি এপ্লাই করেই রুহের বাংলা অনুবাদ বের করে আনতে হবে।
তাই প্রথমে রুহ সংক্রান্ত সকল আয়াত গুলি কালেকশন করি।কোরানে রুহ নিয়ে মোট ৯টি আয়াত আছে। যেমনঃ
১) রুহ *** ফিরিশ্তা এবং রূহ্ আল্লাহ্র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর। সূরা নম্বর: ৭০ আয়াত নম্বর: ৪
২) রুহ *** অতঃপর উহাদের হইতে সে পর্দা করিল। অতঃপর আমি তাহার নিকট আমার রূহ্কে পাঠাইলাম, সে তাহার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করিল।
সূরা নম্বর: ১৯ আয়াত নম্বর: ১৭
৩) রুহ ** তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় রুহ ওহী সহ ফেরেস্তাহ প্রেরণ করেন এই বলিয়া যে, তোমরা সতর্ক কর, নিশ্চয়ই আমি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই; সুতরাং আমাকে ভয় কর।সূরা নম্বর: ১৬ আয়াত নম্বর: ২
৪) রুহ ** তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’ সূরা নম্বর: আয়াত নম্বর: ৮৫
৫) রুহ **জিব্রাঈল ইহা লইয়া অবতরণ করিয়াছে
সূরা নম্বর: ২৬ আয়াত নম্বর: ১৯৩
৬) রুহ *** তিনি সমুচ্চ মর্যাদার অধিকারী, ‘আরশের অধিপতি, তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা ওহী প্রেরণ করেন স্বীয় রুহ , যাহাতে সে সতর্ক করিতে পারে কিয়ামত দিবস সম্পর্কে। সূরা নম্বর: ৪০ আয়াত নম্বর: ১৫
৭);রুহ * ফিরিশ্তা এবং রূহ্ আল্লাহ্র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর।সূরা নম্বর: ৭০ আয়াত নম্বর: ৪
৮) রুহ * সেই দিন রূহ্ ও ফিরিশ্তাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াইবে ; দয়াময় যাহাকে অনুমতি দিবেন সে ব্যতীত অন্যেরা কথা বলিবে না এবং সে যথার্থ বলিবে। সূরা নম্বর: ৭৮ আয়াত নম্বর: ৩৮
৯) রুহ ** সেই রাত্রিতে ফিরিশতাগণ ও রূহ্ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাহাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।
সূরা নম্বর: ৯৭ আয়াত নম্বর: ৪
এবার দেখুন ১ নং আয়াতে রুহুর অনুবাদ “রুহ” লিখেছে
২) নং এ “আমার রুহ ” লিখেছে অনুবাদে
৩) নং এ রুহর অনুবাদে স্বীয় রুহ লিখেছে
৪) নং এ রুহ এর অনুবাদ রুহ ই করেছে
৫) নং এ রুহ এর অনুবাদ ” জিব্রাঈল ” লিখেছে অনুবাদ
৬) নং এ রুহের অনুবাদ “স্বীয় রুহ ” অনুবাদ করেছে
৭) নং আয়াতে রুহ এর অনুবাদ রুহ করেছে
৮) নং আয়াতে রুহ এর অনুবাদ রুহ লিখা হয়েছে
৯) নং আয়াতে একটু ব্তিক্রম রুহ এর অনুবাদ আল্লাহর অনুমতি ক্রমে রুহ লিখেছে
*** সব কটি আয়াত পর্যালোচনা করে রুহ এর বাংলা অনুবাদ ” আল্লাহর অস্তিত্ব ” বুঝায়।
এবার আপনি রুহ শব্দের বাংলা অনুবাদ”আল্লাহর অস্তিত্ব” বসিয়ে অনুবাদ করে দেখুন, প্রতিটি আয়াতের মর্ম আপনার নিকট কত সহজ ও বোধগম্য হয়ে হৃদয়ে উপলব্ধি আসে।
এভাবে সালাত, হজ্জ, সিয়াম, যাকাত, রিবা, ইবাদত, একিন,নিয়ামত, আয়াত,উম্মি,দ্বীন,সিজদাহ, রুকু ইত্যাদি আরবী শব্দগুলির বাংলা অনুবাদ সৃষ্টি করে বসিয়ে দেখুন আল্লাহ কড প্রান্জল ভাষায় আমাদের কি বুঝাতে চেয়েছেন আর আমরা কি বুঝে বসে আছি, শুধু সঠিক অনুবাদের অভাবে।
ReplyForward Add reaction |
সালাত,সিয়াম,হজ্জ,যাকাত,ইবাদত,একিন,রুহ, রিবা,নাফস,উম্মি,লৌহেমাহফুজ,নিয়ামত,সুন্নাত,হাদীস ইত্যাদী আরবী শব্দ গুলির সঠিক বাংলা অনুবাদ না থাকায় পারস্য অনুবাদের উপর ভর করে চলতে হয়। ফলে বাংলা ভাষাভাষির মানুষ কোরানে এ শব্দগুলি সমন্বিত আয়াত গুলির সঠিক মর্ম উপলব্ধিতে ব্যার্থ হয়ে গতানুগতিক অনুবাদ পড়ে আল্লাহর নির্দেশনা সঠিক ভাবে বুঝতে সক্ষম না হয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয় এবং সঠিক উপলব্ধি থেকে দূরে সরে যায়। আমাদের আলেমগনও এ নিয়ে কোন চিন্তা গবেষনা কখনো করার প্রয়োজন বোধ করেন নাই। তারাও আরবী তেলোয়াতে নেকির হিস্যা নিয়ে আমজনতার নিকট প্রিয় ভাজন হয়ে আছেন। ধর্মকে জীবিকা হিসেব বেছে নিয়েছেন তারা। অথচ আরবী উর্দু ফারসী ইংরেজী ভাষার এমন কোন শব্দ নেই যার প্রতিস্থাপিত বাংলা শব্দ নেই।
প্রথমতঃ বিষেশ করে কোরানের আরবী শব্দগুলির সঠিক বাংলা অনুবাদ করতে হলে সেই আরবী শব্দটি কোরানের কত যায়গায় আছে তা আগে সংগ্রহ করতে হয়। অতপর ঐ শব্দটির বাংলা অনুবাদ কি কি ব্যবহার করা হয়েছে তা অনুসন্ধান করতে হয়।
দ্বীতিয়তঃ আরবী শব্দটির বিপরীত আরবী কি কোরানের কোন কোন আয়াতে আছে তা নির্বাচন করতে হয়। সেখান থেকে একটি শব্দের সঠিক অনুবাদ ধরতে পারলে বিপরীত শব্দটির বাংলা অনুবাদ সঠিক কি হবে তা নিরুপন করা সহজ হয়। যেমন লাইল এর বিপরীত নাহার শব্দটি কোরানের ১১টি আয়াতে আছ। এখন লাইল এর অর্থ জানা থাকলে নাহার দিবস সহজে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। এই দূইটি নচ্চ প্রয়োগ করে ফারসী অনুবাদ বাদ দিয়ে বাংলা শাব্দিক অনুবাদ সৃজন করা সম্ভব এবং তখন কোরানের সঠিক মর্ম বাংলাভাষার মানুষের উপলব্ধি করা সম্ভব।
যেমন রুহ একটি আরবী শব্দ, যার বাংলা অনুবাদ রহুই জানি, একটু বেশী হলে রুহ মানে আত্মা বা প্রাণ বুঝি। আরকটু এগিয়ে বুঝলে রুহ এর অনুবাদ ” আল্লাহর আদেশ ” ধরে থাকি। ব্যাস এর বেশী কিছু না। এর বেশী কিছু জানতে চাইলে আলেমগন একটি আয়াত তুলে ধরে খামুস হতে বলেনঃ
“তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’ আয়াত : ৮৫
রুহুর বিপরীত কোন শব্দ কোরানে প্রয়োগ করা হয় নি। তাই দ্বীতিয় পদ্ধতিতে এর বাংলা অনুবাদ করা সম্ভব নয়। প্রথম পদ্ধতি এপ্লাই করেই রুহের বাংলা অনুবাদ বের করে আনতে হবে।
তাই প্রথমে রুহ সংক্রান্ত সকল আয়াত গুলি কালেকশন করি।কোরানে রুহ নিয়ে মোট ৯টি আয়াত আছে। যেমনঃ
১) রুহ * ফিরিশ্তা এবং রূহ্ আল্লাহ্র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর।(৭০ঃ৪)
২) রুহ* অতঃপর উহাদের হইতে সে পর্দা করিল। অতঃপর আমি তাহার নিকট আমার রূহ্কে পাঠাইলাম, সে তাহার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করিল।(১৯:১৭)
৩) রুহ * তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় রুহ ওহী সহ ফেরেস্তাহ প্রেরণ করেন এই বলিয়া যে, তোমরা সতর্ক কর, নিশ্চয়ই আমি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই; সুতরাং আমাকে ভয় কর।( ১৬: ২)
৪) রুহ * তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’ সূরা নম্বর: আয়াত নম্বর: ৮৫
৫) রুহ* জিব্রাঈল ইহা লইয়া অবতরণ করিয়াছে (২৬:১৯৩)
৬) রুহ * তিনি সমুচ্চ মর্যাদার অধিকারী, ‘আরশের অধিপতি, তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা ওহী প্রেরণ করেন স্বীয় রুহ , যাহাতে সে সতর্ক করিতে পারে কিয়ামত দিবস সম্পর্কে। (৪০: ১৫)
৭);রুহ * ফিরিশ্তা এবং রূহ্ আল্লাহ্র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর।(৭০: ৪)
৮) রুহ* সেই দিন রূহ্ ও ফিরিশ্তাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াইবে ; দয়াময় যাহাকে অনুমতি দিবেন সে ব্যতীত অন্যেরা কথা বলিবে না এবং সে যথার্থ বলিবে।(৭৮:৩৮)
৯) রুহ * সেই রাত্রিতে ফিরিশতাগণ ও রূহ্ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাহাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।(৯৭:৪)
এবার দেখুন ১ নং আয়াতে রুহুর অনুবাদ “রুহ” লিখেছে
২) নং এ “আমার রুহ ” লিখেছে অনুবাদে
৩) নং এ রুহর অনুবাদে স্বীয় রুহ লিখেছে
৪) নং এ রুহ এর অনুবাদ রুহ ই করেছে
৫) নং এ রুহ এর অনুবাদ ” জিব্রাঈল ” লিখেছে অনুবাদ
৬) নং এ রুহের অনুবাদ “স্বীয় রুহ ” অনুবাদ করেছে
৭) নং আয়াতে রুহ এর অনুবাদ রুহ করেছে
৮) নং আয়াতে রুহ এর অনুবাদ রুহ লিখা হয়েছে
৯) নং আয়াতে একটু ব্তিক্রম রুহ এর অনুবাদ আল্লাহর অনুমতি ক্রমে রুহ লিখেছে
*** সব কটি আয়াত পর্যালোচনা করে রুহ এর বাংলা অনুবাদ ” আল্লাহর অস্তিত্ব ” বুঝায়।
এবার আপনি রুহ শব্দের বাংলা অনুবাদ “আল্লাহর অস্তিত্ব” বসিয়ে অনুবাদ করে দেখুন, প্রতিটি আয়াতের মর্ম আপনার নিকট কত সহজ ও বোধগম্য হয়ে হৃদয়ে উপলব্ধি আসে।
এভাবে সালাত, হজ্জ, সিয়াম, যাকাত, রিবা, ইবাদত, একিন,নিয়ামত, আয়াত,উম্মি,দ্বীন, সিজদাহ, রুকু ইত্যাদি আরবী শব্দগুলির বাংলা অনুবাদ সৃষ্টি করে বসিয়ে দেখুন আল্লাহ কত প্রাঞ্জল ভাষায় আমাদের কি বুঝাতে চেয়েছেন আর আমরা কি বুঝে বসে আছি, শুধু সঠিক অনুবাদের অভাবে।
ReplyForward Add reaction |
কোরবানি বিষয়ে – সংক্ষিপ্ত
ওয়া লিকুল্লি উম্মাতিন জা‘আলনা মানছাকাল লিইয়াযকুরুছমাল্লা-হি ‘আলা-মা-রাঝাকাহুম মিম বাহীমাতিল আন‘আ-ম ফাইলা-হুকুম ইলা-হুওঁ ওয়া-হিদুন ফালাহূআছলিমূ ওয়া বাশশিরিল মুখবিতীন। [22:34]
২২:৩৪ এর সঠিক অনুবাদ: আর প্রত্যেক উম্মাতের জন্য
(ওয়ালিকুল্লি উম্মাতিন) নির্ধারণ (জাআলনা) করেছি
সংশোধনের বিধান/পথ (মানসাকান) যাতে তারা স্মরণ করে (লিইয়াজকুরু) আল্লাহর গুণাবলি (ইসমাআল্লাহি)
যার মাধ্যমে তারা রিযিক গ্রহণ করে (আলা মারাযাক্বাহুম)
বোবা প্রাণীদের নিয়ামত/অনুগ্রহ/থেকে (মিন বাহিমাতিল আনামি) তোমাদের প্রতিপালক এক আল্লাহই (ফা ইলাহুকুম ইলাহুন ওয়াহিদুন) তোমরা তাঁর প্রতি সমর্পন করো (ফালাহু আসলিমু) এবং বিনীত অবনতদের সুসংবাদ দাও (ওয়া বাশিরিন মুখবিতিনা)
সুতরাং এই আয়াতের অর্থ একেবারেই পানির মত পরিষ্কার।
অর্থাৎ আল্লাহ এখানে প্রত্যেক মানুষকে নিজেকে সংশোধন করে আল্লাহর নিয়ম নীতিতে তার গুণাবলি স্মরণ/অর্জন ও যিকর করতে বলেছেন এবং তার অনুগ্রহে পাওয়া বোবা প্রাণীদের রিযিক হিসেবে পাবার জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকারের মাধ্যমে উপভোগ্য জীবন ধারণ করে বিনীত অবনত হবার উপদেশ দিচ্ছেন। কারণ আয়াতের শেষ অংশেই আছে “বিনীত অবনতদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।” বা ইহাতে নিবেদিত- উৎসর্গিতগণই (আছলাম) শান্তিবাদী মানুষ হয়।
এখানে কোথাও পশু জবাই/কোরবানি এর কথা বলা হচ্ছেনা।
গরুটির বয়স ২ বছর প্লাস। দাত পড়েনি বলে মোল্লার ফতোয়া কোরবানী চলবে না। ৯১ হাজারে বিক্রী করে দিল। হাট হতে ৯৩ হাজারে দুই দাত পড়েছে এমন একটি গরু কিনে আনা হল। মোল্লা বলেছেন কান কাটা বা লেজ কাটা এমন খোদ থাকলে কোরবানী হবে না। তাই খুব ভাল করে যাচাই বাছাই করে একটি নিখুত গরু কিনা হলো।
গরুটি খাসি করা বলে খুব দ্রুত বেরে উঠেছে এবং সুঠামো দেহে গড়ে উঠেছে। আমি বললাম অঙ্গ কর্তন করা আল্লাহর বিধানে নেই। তাই খাসি করা গরুটিই কোরবানীর জন্য ত্রুটি যুক্ত রয়ে গেল। মোল্লা নির্ভর কোরবানী দাতা এবার বিপাকে। মোল্লা বলিল ফতুয়ায়ে শামিলের রেফারেন্সে পশুদের খাসি করা জায়েজ। আমি রেফারেন্স দিয়েছিলাম কোরান থেকে পশুর অঙ্গ হানি নিষিদ্ধ। হেরে গেল কোরান মোল্লার ফতুয়ায়ে শামিলের নিকট। উপস্থিত সবাই সমস্বরে বলে উঠলো হুজুর যা বলেছে তাহাই সঠিক। আপনি মাদ্রাসায় পড়েছেন কি? কয়টি হাদীস আরবীতে পড়তে পারবেন? আমরা বাপ দাদা পুর্ব পুরুষদের নিকট এভাবেই এ নিয়মেই কোরবানী করতে দেখে এসেছি। আমি কোরানের এ আয়াত তুলে ধরলাম এ প্রেক্ষিতে।
যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহার দিকে ও রাসূলের দিকে আস’, তাহারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাহাদের পূর্ব পুরুষগণ কিছুই জানিত না এবং সৎপথ প্রাপ্তও ছিল না, তবুও কি ? (৫ঃ১০৪)
প্রতি উত্তর এলো এ আয়াত তখনকার সময়ের কাফেরদের জন্য নাযিল। আমরা কি কাফের? মোল্লা মুচকী হাসি দিয়ে জনতার পক্ষে সমর্থন জানালো।
এবার আমি আরেকটি আয়াত তুলে ধরলাম।
* উহাদেরকে যখন বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা অনুসরণ কর।’ উহারা বলে, ‘বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহারই অনুসরণ করিব।’ শয়তান যদি উহাদেরকে জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তির দিকে আহবান করে, তবুও কি? (৩১ঃ২১)
প্রতি উত্তর এল সারা দুনিয়ার মানুষ যেভাবে কোরবানী দিয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে আপনি একা তার বিপক্ষে আপনার নতুন মত পেশ করছেন কেন? আমি এবারও আরেকটি আয়াত পেশ করলাম এ বিষয়ে।
যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।” (৬ঃ১১৬)
এবার যুক্তি তুলে ধরলো সব আলেম গন কি তা হলে ভুলের মধ্যে আছে আপনি মনে করেন, আর আপনি একা সঠিক বুঝতেছেন? সবার মতামতকে আপনি প্রাধান্যই দিচ্ছেন না। যদি ভুলও হয় কোন সিদ্ধান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেম সমাজ যদি তা সঠিক মনে করে আল্লাহও তা কবুল করেন। মোল্লা এবার দাড়িতে পাচ আঙ্গুল প্রবেস করিয়ে চিরুনী আচড়া করতে করতে হেসে বললেন মাশআল্লাহ!! আমি এর উত্তরে কোরানের এ আয়াতগুলি পেশ করলাম।
তোমার প্রতিপালক হইতে তোমার প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহা যে ব্যক্তি সত্য বলিয়া জানে আর যে অন্ধ তাহারা কি সমান? উপদেশ গ্রহণ করে শুধু বিবেক শক্তি সম্পন্নগণই,(১৩ঃ১৯)
উহাদের অধিকাংশ অনুমানেরই অনুসরণ করে, সত্যের পরিবর্তে অনুমান কোন কাজে আসে না উহারা যাহা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।(১০ঃ৩৬)
মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবার জন্য অসার হাদীস গ্রহন করিয়া নেয় এবং আল্লাহ্-প্রদর্শিত পথ লইয়া ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। উহাদেরই জন্য রহিয়াছে অবমাননাকর শাস্তি।( 31:6)
তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশ্রিত করিও না এবং জানিয়া-শুনিয়া সত্য গোপন করিও না।(২ঃ৪২)
মোল্লাজী এবার নিজেই মুখ খুলে বলে উঠলেন, এ আয়াত জাহেলী যুগের জনতার উদ্দেশ্য নাযিল। আপনি আয়াত নাযিলের শানেনুযুল জানেন। আমাকে কুপোকাত করার জন্য। আমি সহজে ক্ষান্ত হবার নই। এবার পেশ করলামঃ
অনুসরণ কর তাদের বিনিময় কামনা করে না সুরা ইয়াছিন আয়াত নং –২১। পেশাদার ইমাম আগুনখোর অপবিত্র জাহান্নামি ২ঃ১৭৪।
এবার মোল্লাজী তার শেষ হাতিয়ার হাদীসের কারামতি পেশ করে বললেন: কোরান আপনি সরাসরি নবীকে ছাড়া কি বুঝবেন? নবী কোরানের সব মর্ম বুঝিয়ে গেছেন তার হাদীসের মাধ্যমে। আপনি কয়টি হাদীস পড়েছেন?
আমি একটি মাত্র হাদীস ভালভাবে পড়েছি। তা হলোঃ
জাবির বিন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত থাকা অবস্থায় তিনি একটি সরল রেখা টানলেন এবং তাঁর ডান দিকে দু’টি সরল রেখা টানলেন এবং বাম দিকেও দু’টি সরল রেখা টানলেন। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী রেখার উপর তাঁর হাত রেখে বলেনঃ এটা আল্লাহ্র রাস্তা। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলওয়াত করেন (অনুবাদ) : ‘’এবং এ পথই আমার সরল পথ। অতএব তোমরা এ পথেরই অনুসরণ করো এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, অন্যথায় তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। (৬:১৫৪) তিরমিজি হাদীস নং ১১
মোল্লা এবার ক্ষেপে বললেন জনতাকে লক্ষ্য করে নতুন ফেতনা সৃষ্টি হবে এটাও হাদীসে আছে। আপনি সেই ফেতনা আমি আশংকা করছি। উপস্থিত সব মোল্লারকে সমর্থন জানালো। আমার বুঝতে আর বাকি রইল না।
এখানে আর অবস্থান করলে তায়েফের মাটি হয়ে যাবে।
আলোচনার সারমর্ম উপলব্ধি করতে আমার বাকি রইল না আর। হাদীসের একটি সুবিধা অনুকুলে হলে মেনে নেয়া, আর অনুকুলে না হলে অস্বীকার করলেও কাফের হয় না। কিন্তু কোরানের একটি আয়াত অস্বীকার করলে সরাসরি কাফের কোন সন্দেহ নাই।
দীর্ঘ দিনের পালিত অভ্যাস, বাপদাদার যে ভাবে এবাদত করতে দেখে আসতেছে, অধিকাংশ লোকে যে ভাবে ধর্ম কার্যাদি সম্পাদন করতে দেখে আসতেছে তা থেকে সড়ে এসে যত সত্য কথাই উপস্থাপন করা হোক না কেন, মানুষ তা গ্রহন করতে রাজি না, যদিও কোরআন থেকে সুস্পষ্ট দৃষ্টান্ত দেয়া হয়।
আর এমন হবে তা আল্লাহ জানেন বলেই আল্লাহ বলেনঃ ” যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।” (৬ঃ১১৬)
সুস্পষ্ট প্রমাণিক ঐশী কিতাব থাকার পরেও যারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং দলে দলে বিভক্ত হয়ে গেছে, তারাই আহলে কিতাবদের মধ্যে কাফির।
ReplyForward Add reaction |
আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণরেখা হইতে ঊষার শুভ্র রেখা স্পষ্ট রূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর সিয়াম পূর্ণ কর রাত্রী পর্যন্ত । (২:১৮৭ এ)
উক্ত আয়াতে রোজা, সাহেরী ও ইফতারের বর্ণনা করা হয়েছে। সিয়াম পুর্ণ করতে বলেছেন রাত্রি পর্যন্ত। অর্থাৎ ইফতার করার সময় মাগরিবের নামাজের পর রাত্রি হলে।
অনেকে বলে থাকেন কোরআনকে বুঝতে হলে ব্যাখ্যা স্বরুপ হাদীসকে অনুসরন করতে হবে। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় হাদীস কি বলেঃ ~
হাদীস নং ৬২৪ মুয়াত্তা ইবনে মালিক হতে ——
হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান (র) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইবনে খাত্তাব (রা) এবং উসমান ইবনে আফফান (রা) দু’জনে মাগরিবের নামায আদায় করতেন, এমন সময় তখন তাঁরা রাত্রির অন্ধকার দেখতে পেতেন। আর এটা হত ইফতার করার পূর্বে। অতঃপর তাঁরা দু’জনে ইফতার করতেন। আর এটা হতো রমযান মাসে।
এ ব্যাখা অনুযায়ীও যখন মনপুত না হয় তখনঃ ~
“যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহার দিকে ও রাসূলের দিকে আস’, তাহারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাহাদের পূর্ব পুরুষগণ কিছুই জানিত না এবং সৎপথ প্রাপ্তও ছিল না, তবুও কি ? ” (৫ঃ১০৪)
তারমানে দীর্ঘ দিনের পালিত অভ্যাস, বাপদাদার যে ভাবে এবাদত করতে দেখে আসতেছে, অধিকাংশ লোকে যে ভাবে ধর্ম কার্যাদি সম্পাদন করতে দেখে আসতেছে তা থেকে সড়ে এসে যত সত্য কথাই উপস্থাপন করা হোক না কেন, মানুষ তা গ্রহন করতে রাজি না, যদিও কোরান থেকে দৃষ্টান্ত দেয়া হয়।
আর এমন হবে তা আল্লাহ জানেন বলেই আল্লাহ বলেনঃ
” যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।” (৬ঃ১১৬)
***********************
হাদীসের একটি সুবিধা অনুকুলে হলে মেনে নেয়া, আর অনুকুলে না হলে অস্বীকার করলেও কাফের হয় না। কিন্তু কোরানের একটি আয়াত অস্বীকার করলে সরাসরি কাফের কোন সন্দেহ নাই। এ হাদীস ও কোরানের আলোকে আমাদের অবস্থান কোথায়?
সুস্পষ্ট প্রমাণিক ঐশী কিতাব থাকার পরেও যারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং দলে দলে বিভক্ত হয়ে গেছে, তারাই আহলে কিতাবদের মধ্যে কাফির।
পূর্ববর্তী ও পরবর্তী আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা কাফির এবং মুশরিকরা– জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে। আর তারাই সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্ট।
সূরা আল-বাইয়িনাহ ১-৬
তিরমিজি হাদীস নং ১১
জাবির বিন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত থাকা অবস্থায় তিনি একটি সরল রেখা টানলেন এবং তাঁর ডান দিকে দু’টি সরল রেখা টানলেন এবং বাম দিকেও দু’টি সরল রেখা টানলেন। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী রেখার উপর তাঁর হাত রেখে বলেনঃ এটা আল্লাহ্র রাস্তা। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলওয়াত করেন (অনুবাদ) : ‘’এবং এ পথই আমার সরল পথ। অতএব তোমরা এ পথেরই অনুসরণ করো এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, অন্যথায় তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। (সূরাহ আনআম ৬:১৫৪)
অনুসরণ কর তাদের বিনিময় কামনা করে না সুরা ইয়াছিন আয়াত নং –২১। পেশাদার ইমাম আগুনখোর অপবিত্র জাহান্নামি ২ঃ১৭৪।
গ্রন্থঃ সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ২১/ পানীয় দ্রব্য (كتاب الأشربة)
হাদিস নম্বরঃ ৩৬৭১
১. মদ হারাম হওয়ার বর্ণনা
৩৬৭১। আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা আনসার গোত্রের এক লোক তাকে ও আব্দুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ)-কে দা‘ওয়াত করে উভয়কে মদ পান করালেন তা হারাম হওয়ার পূর্বে। অতঃপর মাগরিবের সালাতে আলী (রাঃ) তাদের ইমামতি করলেন। তিনি সূরা ‘‘কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরূন’’ পাঠ করতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন। অতঃপর এ আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ ‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন মাতাল অবস্থায় থাকো তখন সালাতের কাছেও যেও না। সালাত তখনই পড়বে, যখন তোমরা কি বলছো তা সঠিকরূাপ বুঝতে পারো।’’ (সূরা আন-নিসাঃ ৪৩)[1]
সহীহ।
তোমার প্রতিপালক হইতে তোমার প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহা যে ব্যক্তি সত্য বলিয়া জানে আর যে অন্ধ তাহারা কি সমান? উপদেশ গ্রহণ করে শুধু বিবেক শক্তি সম্পন্নগণই,(১৩ঃ১৯)
২) উহাদের অধিকাংশ অনুমানেরই অনুসরণ করে, সত্যের পরিবর্তে অনুমান কোন কাজে আসে না উহারা যাহা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।(১০ঃ৩৬)
৩) অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথপ্রাপ্ত।
অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথ প্রাপ্ত।(৩৬ঃ২১)
৪) যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬ঃ১১৬)
৫) মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবার জন্য অসার হাদীস গ্রহন করিয়া নেয় এবং আল্লাহ্-প্রদর্শিত পথ লইয়া ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। উহাদেরই জন্য রহিয়াছে অবমাননাকর শাস্তি।( 31:6)
৬) তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশ্রিত করিও না এবং জানিয়া-শুনিয়া সত্য গোপন করিও না।(২ঃ৪২)
যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহার দিকে ও রাসূলের দিকে আস’, তাহারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাহাদের পূর্ব পুরুষগণ কিছুই জানিত না এবং সৎপথ প্রাপ্তও ছিল না, তবুও কি ? (৫ঃ১০৪)
** উহাদেরকে যখন বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা অনুসরণ কর।’ উহারা বলে, ‘বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহারই অনুসরণ করিব।’ শয়তান যদি উহাদেরকে জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তির দিকে আহবান করে, তবুও কি? (৩১ঃ২১)
এর পর তারা যুক্তি তুলে অধিকাংশ —-
* * যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬ঃ১১৬)
দীর্ঘ দিনের পালিত অভ্যাস, বাপদাদার যে ভাবে এবাদত করতে দেখে আসতেছে, অধিকাংশ লোকে যে ভাবে ধর্ম কার্যাদি সম্পাদন করতে দেখে আসতেছে তা থেকে সড়ে এসে যত সত্য কথাই উপস্থাপন করা হোক না কেন, মানুষ তা গ্রহন করতে রাজি না, যদিও কোরান থেকে দৃষ্টান্ত দেয়া হয়। আর এমন হবে তা আল্লাহ জানেন বলেই আল্লাহ বলেনঃ
যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে। (৬ঃ১১৬)
ReplyForward Add reaction |
শক্তিশালী ব্যালেস্ট আবিস্কার হওয়ার পরও পাথর ছুড়ে শয়তান মারতে হয়! এ কেমন নির্বোধের কান্ড??
নির্বোধের সমাজে জ্ঞানীর বসবাস জাহান্নামের আজাবের সমতুল্য।
সত্য প্রকাশে নির্বোধরা অন্তরায়। নির্বোধরা ধংস হোক।
নির্বোধের জন্য জাহেলিয়াত মর্তে নেমে আসে। পৃথিবী ধংসও হবে এই নির্বোধদের জন্য।
ReplyForward Add reaction |
কোরবানি বিষয়ে – সংক্ষিপ্ত
ওয়া লিকুল্লি উম্মাতিন জা‘আলনা মানছাকাল লিইয়াযকুরুছমাল্লা-হি ‘আলা-মা-রাঝাকাহুম মিম বাহীমাতিল আন‘আ-ম ফাইলা-হুকুম ইলা-হুওঁ ওয়া-হিদুন ফালাহূআছলিমূ ওয়া বাশশিরিল মুখবিতীন। [22:34]
২২:৩৪ এর সঠিক অনুবাদ: আর প্রত্যেক উম্মাতের জন্য
(ওয়ালিকুল্লি উম্মাতিন) নির্ধারণ (জাআলনা) করেছি
সংশোধনের বিধান/পথ (মানসাকান) যাতে তারা স্মরণ করে (লিইয়াজকুরু) আল্লাহর গুণাবলি (ইসমাআল্লাহি)
যার মাধ্যমে তারা রিযিক গ্রহণ করে (আলা মারাযাক্বাহুম)
বোবা প্রাণীদের নিয়ামত/অনুগ্রহ/থেকে (মিন বাহিমাতিল আনামি) তোমাদের প্রতিপালক এক আল্লাহই (ফা ইলাহুকুম ইলাহুন ওয়াহিদুন) তোমরা তাঁর প্রতি সমর্পন করো (ফালাহু আসলিমু) এবং বিনীত অবনতদের সুসংবাদ দাও (ওয়া বাশিরিন মুখবিতিনা)
সুতরাং এই আয়াতের অর্থ একেবারেই পানির মত পরিষ্কার।
অর্থাৎ আল্লাহ এখানে প্রত্যেক মানুষকে নিজেকে সংশোধন করে আল্লাহর নিয়ম নীতিতে তার গুণাবলি স্মরণ/অর্জন ও যিকর করতে বলেছেন এবং তার অনুগ্রহে পাওয়া বোবা প্রাণীদের রিযিক হিসেবে পাবার জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকারের মাধ্যমে উপভোগ্য জীবন ধারণ করে বিনীত অবনত হবার উপদেশ দিচ্ছেন। কারণ আয়াতের শেষ অংশেই আছে “বিনীত অবনতদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ।” বা ইহাতে নিবেদিত- উৎসর্গিতগণই (আছলাম) শান্তিবাদী মানুষ হয়।
এখানে কোথাও পশু জবাই/কোরবানি এর কথা বলা হচ্ছেনা।
ReplyForward
Add reaction |
আর তাঁহার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রহিয়াছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। ইহাতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই বহু নিদর্শন রহিয়াছে।
وَمِنْ اٰيٰتِهٖ خَلْقُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَاخْتِلَافُ اَلْسِنَتِكُمْ وَاَلْوَانِكُمْؕ اِنَّ فِىْ ذٰلِكَ لَاٰيٰتٍ لِّلْعٰلِمِيْنَ
সূরা নম্বর: ৩০ আয়াত নম্বর: ২২
আবেগ যখন কাজ করে বিবেক তখন ঘুমিয়ে থাকেঃ
হযরত ওমর (রাঃ) কে শহীদ করেছে মুসলমানরা, আমেরিকা- রাশিয়া,ইসরাঈলীরা নয়।
২। হযরত ওসমান রাঃকে যারা শহীদ করেছে, ৪০ দিন তাঁর বাড়ির সামনে আযান দিয়ে জামাত করে নামাজ পড়েছে এরাও ছিল মুসলমান,ইসরাইলের ইহুদী না।
৩। হযরত আলী রাঃকে যে শহীদ করেছে, হযরত আব্দুর রহমান ইবনে মুজলিম, ইনি এমন মুসলমান যে, তার আমল দেখে সাহাবীরা পর্যন্ত লজ্জা পেত, তার চেহারা দিয়া নূর চমকাইতো, ঘুমাইলে জিহবা যিকির করতো। অথচ তিনি বলেছিলেন যে, আলীর চেয়ে বড় কাফের আর কেউ নেই। এরাও নামাজী ছিলো, কপালে দাগও ছিল।
৪। হযরত হুসাইনকে যারা শহীদ করেছে তারা খুনের পর আযান দিয়ে জুম্মার নামাজ পড়েছিল। হুসাইনকে শহীদ করার পর নিস্প্রান দেহের পাশে দাঁড়িয়ে আছরের নামাজ পড়েছে। হুসাইনের দেহের উপর দিয়ে তারা ঘোড়া চালিয়ে দিলো, তাতে মৃতদেহ থ্যাতলিয়ে গেলো কিন্তু কোনো মুসলমানের চোখে পানি আসলো না। এরাও নামাজী, এরাও দাড়িওয়ালা, এরাও কপালে দাগওয়ালা ছিল।
৫। আল্লার ঘর বাইতুল্লাহ শরীফে কোনো কাফের-মুশরিক আগুন দেয়নি, দিয়েছিলো মুসলমানরাই। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়েরকে তীর দিয়ে শহীদ করা হলো, পা দু’টো উল্টা দিক করে ঝুলিয়ে রাখা হলো। এই নির্মম কাজটাও করলো মুসলমানরাই।
৬। মসজিদে নববীতে ৭ দিন গাধা এবং ঘোড়া বাঁধলো, গাধা-ঘোড়া পেশাব- পায়খানা করলো, আযান-একামত বন্ধ করে দিলো। এসব কিন্তু আমেরিকা- রাশিয়া- ইজরাইল করেনি, করেছে মুসলমান। যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, তারাই এক কাজগুলি করেছে। সেই কাতারের মুসলমানকেই নাগরিকত্বহীন দাবীদার মুসলমান বলছি। আর এদের উত্তর সূরী আজো সংখ্যা গরিষ্ঠ।
এদের উত্তর সূরীরা আজো,উমরের মত,উসমানের মত, জুবায়েরের মত, হোসাইনের মত ঈমান পোষনকারীদের ইহুদী,নাসারা,খৃষ্টান বলে গালি দিয়ে থাকে।
এগুলি আমার কথা নয় ইসলামের ইতিহাস, হাদীস, নাহাজাল বালাগ, বিদায়া ওয়াল নেহায়ায় বর্নিত। আয়েশা রাঃ এর ক্রন্দন।
ReplyForward
Add reaction |
আর তাঁহার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রহিয়াছে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। ইহাতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই বহু নিদর্শন রহিয়াছে।
وَمِنْ اٰيٰتِهٖ خَلْقُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَاخْتِلَافُ اَلْسِنَتِكُمْ وَاَلْوَانِكُمْؕ اِنَّ فِىْ ذٰلِكَ لَاٰيٰتٍ لِّلْعٰلِمِيْنَ
সূরা নম্বর: ৩০ আয়াত নম্বর: ২২
আবেগ যখন কাজ করে বিবেক তখন ঘুমিয়ে থাকেঃ
হযরত ওমর (রাঃ) কে শহীদ করেছে মুসলমানরা, আমেরিকা- রাশিয়া,ইসরাঈলীরা নয়।
২। হযরত ওসমান রাঃকে যারা শহীদ করেছে, ৪০ দিন তাঁর বাড়ির সামনে আযান দিয়ে জামাত করে নামাজ পড়েছে এরাও ছিল মুসলমান,ইসরাইলের ইহুদী না।
৩। হযরত আলী রাঃকে যে শহীদ করেছে, হযরত আব্দুর রহমান ইবনে মুজলিম, ইনি এমন মুসলমান যে, তার আমল দেখে সাহাবীরা পর্যন্ত লজ্জা পেত, তার চেহারা দিয়া নূর চমকাইতো, ঘুমাইলে জিহবা যিকির করতো। অথচ তিনি বলেছিলেন যে, আলীর চেয়ে বড় কাফের আর কেউ নেই। এরাও নামাজী ছিলো, কপালে দাগও ছিল।
৪। হযরত হুসাইনকে যারা শহীদ করেছে তারা খুনের পর আযান দিয়ে জুম্মার নামাজ পড়েছিল। হুসাইনকে শহীদ করার পর নিস্প্রান দেহের পাশে দাঁড়িয়ে আছরের নামাজ পড়েছে। হুসাইনের দেহের উপর দিয়ে তারা ঘোড়া চালিয়ে দিলো, তাতে মৃতদেহ থ্যাতলিয়ে গেলো কিন্তু কোনো মুসলমানের চোখে পানি আসলো না। এরাও নামাজী, এরাও দাড়িওয়ালা, এরাও কপালে দাগওয়ালা ছিল।
৫। আল্লার ঘর বাইতুল্লাহ শরীফে কোনো কাফের-মুশরিক আগুন দেয়নি, দিয়েছিলো মুসলমানরাই। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়েরকে তীর দিয়ে শহীদ করা হলো, পা দু’টো উল্টা দিক করে ঝুলিয়ে রাখা হলো। এই নির্মম কাজটাও করলো মুসলমানরাই।
৬। মসজিদে নববীতে ৭ দিন গাধা এবং ঘোড়া বাঁধলো, গাধা-ঘোড়া পেশাব- পায়খানা করলো, আযান-একামত বন্ধ করে দিলো। এসব কিন্তু আমেরিকা- রাশিয়া- ইজরাইল করেনি, করেছে মুসলমান। যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, তারাই এক কাজগুলি করেছে। সেই কাতারের মুসলমানকেই নাগরিকত্বহীন দাবীদার মুসলমান বলছি। আর এদের উত্তর সূরী আজো সংখ্যা গরিষ্ঠ।
এদের উত্তর সূরীরা আজো,উমরের মত,উসমানের মত, জুবায়েরের মত, হোসাইনের মত ঈমান পোষনকারীদের ইহুদী,নাসারা,খৃষ্টান বলে গালি দিয়ে থাকে।
এগুলি আমার কথা নয় ইসলামের ইতিহাস, হাদীস, নাহাজাল বালাগ, বিদায়া ওয়াল নেহায়ায় বর্নিত। আয়েশা রাঃ এর ক্রন্দন।
ReplyForward
Add reaction |
১) তিনিই তোমাদেরকে মৃত্তিকা হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন, অতঃপর এক কাল নির্দিষ্ট করিয়াছেন এবং আর একটি নির্ধারিত কাল আছে যাহা তিনিই জ্ঞাত, এতদ্সত্ত্বেও তোমরা সন্দেহ কর।সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ২
২) আমি যদি তোমার প্রতি কাগজে লিখিত কিতাবও নাযিল করিতাম আর তাহারা যদি উহা হস্ত দ্বারা স্পর্শও করিত তবুও কাফিরগণ বলিত, ইহা স্পষ্ট জাদু ব্যতীত আর কিছুই নয়।’ সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৭
৩) যদি তাহাকে ফিরিশ্তা করিতাম তবে তাহাকে মানুষের আকৃতিতেই প্রেরণ করিতাম; আর তাহাদেরকে সেরূপ বিদ্রুপ ফেলিতাম, যেরূপ বিভ্রমে তাহারা এখন রহিয়াছে।সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৯
৪) বল, ‘সাক্ষ্যতে সর্বশ্রেষ্ঠ বিষয় কী ?’ বল, ‘আল্লাহ্ আমার ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষী এবং এই কুরআন আমার নিকট প্রেরিত হইয়াছে যেন তোমাদেরকে এবং যাহার নিকট ইহা পৌঁছিবে তাহাদেরকে এতদ্দ্বারা আমি সতর্ক করি। তোমরা কি এই সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ্র সঙ্গে অন্য ইলাহ্ও আছে ? বল, ‘আমি সে সাক্ষ্য দেই না।’ বল, ‘তিনি তো এক ইলাহ্ এবং তোমরা যে শরীক কর তাহা হইতে আমি অবশ্যই নির্লিপ্ত।’
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১৯
৫) আমি যাহাদেরকে কিতাব দিয়াছি তাহারা তাহাকে সেইরূপ চেনে যেই রূপ চেনে তাহাদের সন্তানগণকে। যাহারা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি করিয়াছে, তাহারা বিশ্বাস করিবে না। সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ২০
৬) তাহাদের মধ্যে কতক তোমার দিকে কান পাতিয়া রাখে, কিন্তু আমি তাহাদের অন্তরের উপর আবরণ দিয়াছি যেন তাহারা তাহা উপলব্ধি করিতে না পারে; তাহাদেরকে বধির করিয়াছি এবং সমস্ত নিদর্শন প্রত্যক্ষ করিলেও তাহারা উহাতে ঈমান আনিবে না; এমনকি তাহারা যখন তোমার নিকট উপস্থিত হইয়া বিতর্কে লিপ্ত হয় তখন কাফিরগণ বলে, ‘ইহা তো পূর্ববর্তীদের উপকথা ব্যতীত আর কিছুই নয়।’সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ২৫
৭) তুমি যদি দেখিতে পাইতে যখন তাহাদেরকে দোজখের পার্শ্বে দাঁড় করান হইবে এবং তাহারা বলিবে, ‘হায়! যদি আমাদের প্রত্যাবর্তন ঘটিত তবে আমরা আমাদের প্রতিপালকের নিদর্শনকে অস্বীকার করিতাম না এবং আমরা মু’মিনদের অন্তর্ভুক্ত হইতাম!’
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ২৭
*** ৮) তুমি যদি দেখিতে পাইতে তাহাদেরকে যখন তাহাদের প্রতিপালকের সম্মুখে দাঁড় করান হইবে এবং তিনি বলিবেন, ইহা কি প্রকৃত সত্য নয় ?’ তাহারা বলিবে, ‘আমাদের প্রতিপালকের শপথ! নিশ্চয়ই সত্য।’ তিনি বলিবেন, ‘তবে তোমরা যে কুফরী করিতে তজ্জন্য তোমরা এখন শাস্তি ভোগ কর।’সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৩০
৯) আমি অবশ্য জানি যে, তাহারা যাহা বলে তাহা তোমাকে নিশ্চিতই কষ্ট দেয়; কিন্তু তাহারা তোমাকে তো মিথ্যাবাদী বলে না; বরং জালিমেরা আল্লাহ্র আয়াতকে অস্বীকার করে।সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৩৩
১০) আল্লাহ্র আদেশ কেহ পরিবর্তন করিতে পারে না, সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৩৪
১১) যদি তাহাদের উপেক্ষা তোমার নিকট কষ্টকর হয় তবে পারিলে ভূগর্ভে সুড়ঙ্গ অথবা আকাশের সোপান অন্বেষণ কর এবং তাহাদের নিকট কোন নিদর্শন আন। আল্লাহ্ ইচ্ছা করিলে তাহাদের সকলকে অবশ্যই সৎপথে একত্র করিতেন। সুতরাং তুমি মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হইও না।সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৩৫
১২) যাহারা শ্রবণ করে শুধু তাহারাই ডাকে সাড়া দেয়। আর মৃতকে আল্লাহ্ পুনর্জীবিত করিবেন; অতঃপর তাঁহার দিকেই তাহারা প্রত্যানীত হইবে।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৩৬
****১৩) ভূপৃষ্ঠে বিচরণশীল জীব এবং নিজ ডানার সাহায্যে উড়ন্তপাখি-তাহারা সকলে তোমাদের মতই এক-একটি জাতি। কিতাবে কোন কিছুই আমি বাদ দেই নাই; অতঃপর স্বীয় প্রতিপালকের দিকে তাহাদেরকে একত্র করা হইবে। সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৩৮
১৪) যাহারা আমার আয়াত সমূহকে অস্বীকার করে তাহারা বধির ও মূক, অন্ধকারে রহিয়াছে। যাহাকে ইচ্ছা আল্লাহ্ বিপথগামী করেন এবং যাহাকে ইচ্ছা তিনি সরল পথে স্থাপন করেন। সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৩৯
১৫) তোমার পূর্বেও আমি বহু জাতির নিকট রাসূল প্রেরণ করিয়াছি; অতঃপর তাহাদেরকে অর্থসংকট ও দুঃখ-ক্লেশ দ্বারা পীড়িত করিয়াছি, যাহাতে তাহারা বিনীত হয়। সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৪২
***১৬) বল, ‘আমি তোমাদেরকে ইহা বলি না যে, আমার নিকট আল্লাহ্র ধন ভাণ্ডার আছে, অদৃশ্য সম্বন্ধেও আমি অবগত নই; এবং তোমাদেরকে ইহাও বলি না যে, আমি ফিরিশ্তা; আমার প্রতি যাহা ওহী হয় আমি শুধু তাহারই অনুসরণ করি। বল, ‘অন্ধ ও চক্ষুষ্মান কি সমান ?’ তোমরা কি অনুধাবন কর না? সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৫০
১৭) যাহারা তাহাদের প্রতিপালককে প্রাতে ও সন্ধ্যায় তাঁহার সন্তুষ্টি লাভার্থে ডাকে তাহাদেরকে তুমি বিতাড়িত করিও না। তাহাদের কর্মের জবাবদিহির দায়িত্ব তোমার নয় এবং তোমার কোন কর্মের জবাবদিহির দায়িত্ব তাহাদের নয় যে, তুমি তাহাদেরকে বিতাড়িত করিবে; করিলে তুমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হইবে।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৫২
১৮) যাহারা আমার আয়াত সমূহে ঈমান আনে তাহারা যখন তোমার নিকট আসে তখন তাহাদেরকে তুমি বলিও : ‘তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হউক’, তোমাদের প্রতিপালক দয়া করা তাঁহার কর্তব্য বলিয়া স্থির করিয়াছেন। তোমাদের মধ্যে কেহ অজ্ঞতা বশত যদি মন্দ কাজ করে, অতঃপর তওবা করে এবং সংশোধন করে তবে তো আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৫৪
১৯) বল, অবশ্যই আমি আমার প্রতিপালকের স্পষ্ট প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত ; অথচ তোমরা উহাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছ। তোমরা যাহা সত্বর চাহিতেছ তাহা আমার নিকট নাই। কর্তৃত্ব তো আল্লাহ্রই; তিনি সত্য বিবৃত করেন এবং ফয়সালাদানকারীদের মধ্যে তিনি শ্রেষ্ঠ।’সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৫৭
২০) অদৃশ্যের কুঞ্জি তাঁহারই নিকট রহিয়াছে, তিনি ব্যতীত অন্য কেহ তাহা জানে না। জলে ও স্থলে যাহা কিছু আছে তাহা তিনিই অবগত, তাঁহার অজ্ঞাতসারে একটি পাতাও পড়ে না। মৃত্তিকার অন্ধকারে এমন কোন শস্যকণাও অংকুরিত হয় না অথবা রস যুক্ত কিংবা শুষ্ক এমন কোন বস্তু নাই যাহা সুস্পষ্ট কিতাবে নাই।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৫৯
২১) তিনিই রাত্রিকালে তোমাদের মৃত্যু ঘটান এবং দিবসে তোমরা যাহা কর তাহা তিনি জানেন। অতঃপর দিবসে তোমাদেরকে তিনি পুনর্জাগরিত করেন যাহাতে নির্ধারিত কাল পূর্ণ হয়। অতঃপর তাঁহার দিকেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন। অনন্তর তোমরা যাহা কর সে সম্বন্ধে তোমাদেরকে তিনি অবহিত করিবেন।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৬০
২২) বল, ‘তোমাদের ঊর্ধ্বদেশ অথবা পাদদেশ হইতে শাস্তি প্রেরণ করিতে, অথবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করিতে অথবা এক দলকে অপর দলের সংঘর্ষের আস্বাদ গ্রহণ করাইতে তিনিই সক্ষম।’ দেখ, আমি কিরূপে বিভিন্ন প্রকারে আয়াত সমূহ বিবৃত করি যাহাতে তাহারা অনুধাবন করে। সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৬৫
২৩) স্মরণ কর, ইব্রাহীম তাহার পিতা আযরকে বলিয়াছিল, আপনি কি মূর্তিকে ইলাহ্ রূপে গ্রহণ করেন ? আমি তো আপনাকে ও আপনার সম্প্রদায়কে স্পষ্ট ভ্রান্তিতে দেখিতেছি।’ সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৭৪
২৪) ‘আমি একনিষ্ঠ ভাবে তাঁহার দিকে মুখ ফিরাইতেছি যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করিয়াছেন এবং আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।’সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৭৯
২৫) আর আমি তাহাকে দান করিয়াছিলাম ইসহাক ও ইয়াকূব, ইহাদের প্রত্যেককে সৎপথে পরিচালিত করিয়াছিলাম; পূর্বে নূহ্কেও সৎপথে পরিচালিত করিয়াছিলাম এবং তাহার বংশধর দাঊদ, সুলায়মান ও আইউব, ইউসুফ, মূসা ও হারূনকেও; আর এইভাবেই সৎকর্মপরায়ণদের পুরস্কৃত করি;
এবং যাকারিয়া, ইয়াহ্ইয়া, ঈসা এবং ইলিয়াসকেও সৎপথে পরিচালিত করিয়াছিলাম। ইহারা সকলে সজ্জনদের অন্তর্ভুক্ত;
আরও সৎপথে পরিচালিত করিয়াছিলাম ইস্মাঈল, আল্-য়াসাআ, ইয়ূনুস্ ও লূতকে; এবং শ্রেষ্ঠত্ব দান করিয়াছিলাম বিশ্বজগতের উপর প্রত্যেককে-
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৮৪- ৮৬
২৬) । বল, ‘ইহার জন্য আমি তোমাদের নিকট পারিশ্রমিক চাই না, ইহা তো শুধু বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ।’
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৯০
২৭) আমি এই কল্যাণময় কিতাব নাযিল করিয়াছি যাহা উহার পূর্বেকার কিতাবের প্রত্যায়নকারী এবং যাহা দ্বারা তুমি মক্কা ও উহার চতুষ্পার্শ্বের লোকদেরকে সতর্ক কর। যাহারা আখিরাতে বিশ্বাস করে তাহারা উহাতে বিশ্বাস করে এবং তাহারা তাহাদের সালাতের হিফাযত করে।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৯২
২৮) আল্লাহ্ই শস্য-বীজ ও আঁটি অংকুরিত করেন, তিনিই প্রাণহীন হইতে জীবন্তকে বাহির করেন এবং জীবন্ত হইতে প্রাণহীনকে বাহির করেন। তিনিই তো আল্লাহ্; সুতরাং তোমরা কোথায় ফিরিয়া যাইবে?
তিনিই ঊষার উন্মেষ ঘটান, তিনিই বিশ্রামের জন্য রাত্রি এবং গণনার জন্য সূর্য ও চন্দ্র সৃষ্টি করিয়াছেন; এ সবই পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নিরূপণ।
তিনিই তোমাদের জন্য নক্ষত্র সৃষ্টি করিয়াছেন যেন তদ্দ্বারা স্থলের ও সমুদ্রের অন্ধকারে তোমরা পথ পাও। জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য আমি তো নিদর্শন বিশদ ভাবে বিবৃত করিয়াছি।
তিনিই তোমাদেরকে একই ব্যক্তি হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন এবং তোমাদের জন্য দীর্ঘ ও স্বল্পকালীন বাসস্থান রহিয়াছে। অনুধাবনকারী সম্প্রদায়ের জন্য আমি তো নিদর্শন সমূহ বিশদ ভাবে বিবৃত করিয়াছি।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ৯৫-৯৮
*** ২৯) তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমাদের নিকট স্পষ্ট প্রমাণ অবশ্যই আসিয়াছে। সুতরাং কেহ উহা দেখিলে উহা দ্বারা সে নিজেই লাভবান হইবে; আর কেহ না দেখিলে তাহাতে সে নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হইবে। আমি তোমাদের সংরক্ষক নই।সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১০৪
***৩০) তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমার প্রতি যাহা ওহী হয় তুমি তাহারই অনুসরণ কর, তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নাই এবং মুশরিকদের হইতে মুখ ফিরাইয়া লও। সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১০৬
৩১) আল্লাহ্কে ছাড়িয়া যাহাদেরকে তাহারা ডাকে তাহাদেরকে তোমরা গালি দিও না। কেননা তাহারা সীমালংঘন করিয়া অজ্ঞানতা বশত আল্লাহ্কেও গালি দিবে। এইভাবে আমি প্রত্যেক জাতির দৃষ্টিতে তাহাদের কার্যকলাপ সুশোভন করিয়াছি; অতঃপর তাহাদের প্রতিপালকের নিকট তাহাদের প্রত্যাবর্তন। অনন্তর তিনি তাহাদেরকে তাহাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবহিত করিবেন।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১০৮
৩২) বল, ‘তবে কি আমি আল্লাহ্ ব্যতীত অন্যকে সালিস মানিব-যদিও তিনিই তোমাদের প্রতি সুস্পষ্ট কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছেন!’ আমি যাহাদেরকে কিতাব দিয়াছি তাহারা জানে যে, উহা তোমার প্রতিপালকের নিকট হইতে সত্যসহ অবতীর্ণ হইয়াছে। সুতরাং তুমি সন্দিহানদের অন্তর্ভুক্ত হইও না।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১১৪
৩৩) যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১১৬
৩৪) যে ব্যক্তি মৃত ছিল, যাহাকে আমি পরে জীবিত করিয়াছি এবং যাহাকে মানুষের মধ্যে চলিবার জন্য আলোক দিয়াছি, সেই ব্যক্তি কি ঐ ব্যক্তির ন্যায়, যে অন্ধকারে রহিয়াছে এবং সেই স্থান হইতে বাহির হইবার নয় ? এইরূপে কাফিরদের দৃষ্টিতে তাহাদের কৃতকর্ম শোভন করিয়া দেওয়া হইয়াছে।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১২২
৩৫) আল্লাহ্ কাহাকেও সৎপথে পরিচালিত করিতে চাহিলে তিনি তাহার বক্ষ ইসলামের জন্য প্রশস্ত করিয়া দেন এবং কাহাকেও বিপথগামী করিতে চাহিলে তিনি তাহার বক্ষ অতিশয় সংকীর্ণ করিয়া দেন ; তাহার কাছে ইসলাম অনুসরণ আকাশে আরোহণের মতই দুঃসাধ্য হইয়া পড়ে। যাহারা বিশ্বাস করে না আল্লাহ্ তাহাদেরকে এইভাবে লাঞ্ছিত করেন।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১২৫
৩৬) বল, ‘আমার প্রতি যে ওহী হইয়াছে তাহাতে, লোকে যাহা আহার করে তাহার মধ্যে আমি কিছুই হারাম পাই না-মৃত, বহমান রক্ত ও শূকরের মাংস ব্যতীত। কেননা এইগুলি অবশ্যই অপবিত্র অথবা যাহা অবৈধ, আল্লাহ্ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গের কারণে।’ তবে কেহ অবাধ্য না হইয়া এবং সীমালংঘন না করিয়া নিরুপায় হইয়া উহা আহার করিলে তোমার প্রতিপালক তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১৪৫
৩৭) যাহারা দীন সম্বন্ধে নানা মতের সৃষ্টি করিয়াছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হইয়াছে তাহাদের কোন দায়িত্ব তোমার নয়; তাহাদের বিষয় আল্লাহ্র ইখ্তিয়ারভুক্ত। আল্লাহ্ তাহাদেরকে তাহাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবহিত করিবেন।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১৫৯
**** ৩৮) বল, ‘আমার সালাত, আমার ‘ইবাদত, আমার জীবন ও আমার মরণ জগত সমূহের প্রতিপালক আল্লাহ্রই উদ্দেশ্য।’ সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১৬২
৩৯) তিনিই তোমাদেরকে দুনিয়ার প্রতিনিধি করিয়াছেন এবং যাহা তিনি তোমাদেরকে দিয়াছেন সে সম্বন্ধে পরীক্ষার উদ্দেশ্যে তোমাদের কতককে কতকের উপর মর্যাদায় উন্নীত করিয়াছেন। তোমার প্রতি-পালক তো শাস্তি প্রদানে দ্রুত আর তিনি অবশ্যই ক্ষমাশীল, দয়াময়।
সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১৬৫
ReplyForward
Add reaction |
অনুসরণ কর তাদের বিনিময় কামনা করে না সুরা ইয়াছিন আয়াত নং –২১। পেশাদার ইমাম আগুনখোর অপবিত্র জাহান্নামি ২ঃ১৭৪।
তাহাদেরকে তাহাদের ঘর-বাড়ি হইতে অন্যায় ভাবে বহিষ্কার করা হইয়াছে শুধু এই কারণে যে, তাহারা বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্।’ আল্লাহ্ যদি মানব জাতির এক দলকে অন্য দল দ্বারা প্রতিহত না করিতেন, তাহা হইলে বিধ্বস্ত হইয়া যাইত খ্রিস্টান সংসার বিরাগীদের উপাসনা স্থান, গির্জা, ইয়াহূদীদের উপাসনালয় এবং মসজিদ সমূহ-যাহাতে অধিক স্মরণ করা হয় আল্লাহ্র নাম। আল্লাহ্ নিশ্চয়ই তাহাকে সাহায্য করেন যে তাঁহাকে সাহায্য করে। আল্লাহ্ নিশ্চয়ই শক্তিমান, পরাক্রমশালী।
সূরা নম্বরঃ ২২, আয়াত নম্বরঃ ৪০
তাফসীর :
এ আয়াত থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছে যে, সূরা হজ্জের এ অংশটি অবশ্যই হিজরতের পরে নাযিল হয়েছে।
এদের ওপর যে ধরনের অত্যাচার করে বের করে দেয়া হয় তা অনুমান করার জন্য নিম্নোক্ত কয়েকটি ঘটনা সামনে রাখতে হবেঃ
হযরত সোহাইব রুমী (রা.) যখন হিজরত করতে থাকেন তখন কুরাইশ বংশীয় কাফেররা তাঁকে বলে, তুমি এখানে এসেছিলে খালি হাতে। এখন অনেক ধনী হয়ে গেছো। যেতে চাইলে তুমি খালি হাতে যেতে পারো। নিজের ধন-সম্পদ নিয়ে যেতে পারবে না। অথচ তিনি নিজে পরিশ্রম করেই এ ধন-সম্পদ উপার্জন করেছিলেন। কারো দান তিনি খেতেন না। ফলে বেচারা হাত-পা ঝেড়ে উঠে দাঁড়ান এবং সবকিছু ঐ জালেমদের হাওয়ালা করে দিয়ে এমন অবস্থায় মদীনায় পৌঁছেন যে, নিজের পরনের কাপড়গুলো ছাড়া তাঁর কাছে আর কিছুই ছিল না।
হযরত উম্মে সালামাহ (রা.) ও তাঁর স্বামী আবু সালামাহ (রা.) নিজেদের দুধের বাচ্চাটিকে নিয়ে হিজরত করার জন্য বের হয়ে পড়েন। বনী মুগীরাহ (উম্মে সালামাহর পরিবারের লোকেরা) তাদের পথ রোধ করে দাঁড়ায়। তারা আবু সালামাহকে বলে, তোমার যেখানে ইচ্ছা যেতে পারো কিন্তু আমাদের মেয়েকে নিয়ে যেতে পারো না। বাধ্য হয়ে তিনি স্ত্রীকে রেখে দিয়ে চলে যান। এরপর বনী আবদুল আসাদ (আবু সালামাহর বংশের লোকেরা) এগিয়ে আসে এবং তারা বলে, শিশুটি আমাদের গোত্রের। তাকে আমাদের কাছে দিয়ে দাও। এভাবে মা ও বাপ উভয়ের কাছ থেকে শিশু সন্তানকেও ছিনিয়ে নেয়া হয়। প্রায় এক বছর পর্যন্ত হযরত উম্মে সালামাহ (রা.) স্বামী ও সন্তানদের শোকে ছটফট করতে থাকেন এবং শেষ পর্যন্ত বড়ই কঠিন বিপদের মধ্যদিয়ে নিজের শিশু সন্তানটি পুনরুদ্ধার করে মক্কা থেকে এমন অবস্থায় বের হয়ে পড়েন যে, একজন নিসঙ্গ স্ত্রীলোক কোলে একটি ছোট বাচ্চা নিয়ে উটের পিঠে বসে আছেন। এমন পথ দিয়ে তিনি চলছেন যেখান দিয়ে সশস্ত্র কাফেলা যেতে ভয় পেতো।
আইয়াশ ইবনে রাবীআহ আবু জেহেলের বৈপিত্রেয় ভাই ছিলেন। হযরত উমরের (রা.) সাথে হিজরত করে মদীনায় পৌঁছে যান। পিছে পিছে আবু জেহেল নিজের এক ভাইকে সাথে নিয়ে সেখানে পৌঁছে যায়। সে মায়ের নামে মিথ্যা বানিয়ে বলে, আম্মাজান কসম খেয়েছেন আইয়াশের চেহারা না দেখা পর্যন্ত রোদ থেকে ছায়ায় যাবেন না এবং মাথায় চিরুনীও লাগাবেন না। কাজেই তুমি গিয়ে একবার শুধু তাঁকে চেহারা দেখিয়ে দাও তারপর চলে এসো। তিনি মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও মাতৃভক্তির আতিশয্যে তাদের সঙ্গ নেন। পথে দুই ভাই মিলে তাকে বন্দী করে এবং তাকে নিয়ে মক্কায় এমন অবস্থায় প্রবেশ করে যখন তার আষ্টেপৃষ্ঠে দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল এবং দুই ভাই চিৎকার করে যাচ্ছিল, “হে মক্কাবাসীরা! নিজেদের নালায়েক ছেলেদেরকে এমনিভাবে শায়েস্তা করো যেমন আমরা করেছি।” দীর্ঘদিন পর্যন্ত তিনি বন্দী থাকেন এবং শেষ পর্যন্ত একজন দুঃসাহসী মুসলমান তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসতে সক্ষম হন।
মক্কা থেকে মদীনায় যারাই হিজরত করেন তাদের প্রায় সবাইকেই এ ধরনের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হতে হয়। ঘর-বাড়ি ছেড়ে চলে আসার সময়ও জালেমরা তাদেরকে নিশ্চিন্তে ও নিরাপদে বের হয়ে আসতে দেয়নি।
মূলে صَوَامِعُ ও بِيَعٌ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। صَلَوَاتٌ এমন জায়গাকে বলা হয় যেখানে খৃস্টান রাহেব যোগী, সন্ন্যাসী, সংসার বিরাগী সাধুরা থাকেন। صومعة শব্দটি আরবী ভাষায় খৃস্টানদের ইবাদাতগাহের জন্য ব্যবহার করা হয়। بيعة শব্দের অর্থ হচ্ছে ইহুদীদের নামায পড়ার জায়গা। ইহুদীরা নিজেদের ভাষায় একে বলে صلوات “সালওয়াতা।” এটি আরামীয় ভাষার শব্দ। বিচিত্র নয় যে, ইংরেজী ভাষার (Salute ও Salutation) শব্দ এর থেকে বের হয়ে প্রথম ল্যাটিন ও পরে ইংরেজী ভাষায় পৌঁছে গেছে।
অর্থাৎ আল্লাহ কোন একটি গোত্র বা জাতিকে স্থায়ী কর্তৃত্ব দান করেননি, এটি তাঁর বিরাট অনুগ্রহ। বরং বিভিন্ন সময় দুনিয়ায় একটি দলকে দিয়ে তিনি অন্য একটি দলকে প্রতিহত করতে থেকেছেন। নয়তো কোন এটি নির্দিষ্ট দল যদি কোথাও স্থায়ী কর্তৃত্ব লাভ করতো তাহলে শুধু দূর্গ, প্রাসাদ এবং রাজনীতি, শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানই ধ্বংস করে দেয়া হতো না বরং ইবাদাতগাহগুলোও বিধ্বস্ত হওয়ার হাত থেকে রেহাই পেতো না। সূরা বাকারায় এ বিষয়বস্তুকে এভাবে বলা হয়েছেঃ وَلَوْلَا دَفْعُ اللَّهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَفَسَدَتِ الْأَرْضُ وَلَكِنَّ اللَّهَ ذُو فَضْلٍ عَلَى الْعَالَمِينَ
“যদি আল্লাহ লোকদেরকে একজনের সাহায্যে অন্যজনকে প্রতিহত না করতে থাকতেন তাহলে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়ে যেতো। কিন্তু আল্লাহ দুনিয়াবাসীদের প্রতি বড়ই করুণাময়।” ( ২৫১ আয়াত )
এ বক্তব্যটি কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় উপস্থাপিত হয়েছে। বলা হয়েছে, যারা আল্লাহর বান্দাদেরকে তাওহীদের দিকে আহ্বান করে এবং সত্য দ্বীন কায়েম ও মন্দের জায়গায় ভালোকে বিকশিত করার জন্য প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম চালায় তারা আসলে আল্লাহর সাহায্যকারী। কারণ এটি আল্লাহর কাজ। এ কাজটি করার জন্য তারা আল্লাহর সাথে সহযোগিতা করে। আরো বেশী ব্যাখ্যার জন্য দেখুন তাফহীমুল কুরআন, সূরা আলে ইমরান ৫০ টীকা।
সুরা: আলে-ইমরান
আয়াত নং :-50
টিকা নং:46, 47,
وَ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیَّ مِنَ التَّوْرٰىةِ وَ لِاُحِلَّ لَكُمْ بَعْضَ الَّذِیْ حُرِّمَ عَلَیْكُمْ وَ جِئْتُكُمْ بِاٰیَةٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ١۫ فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوْنِ
আমি সেই শিক্ষা ও হিদায়াতের সত্যতা ঘোষণা করার জন্য এসেছি, যা বর্তমানে আমার যুগে তাওরাতে আছে।৪৬ আর তোমাদের জন্য যেসব জিনিস হারাম ছিল তার কতকগুলো হালাল করার জন্য আমি এসেছি।৪৭ দেখো, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে আমি নিশানী নিয়ে এসেছি। কাজেই আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।
তাফসীর :
টিকা:৪৬) অর্থাৎ আমি যে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত হয়েছি এটি তার আর একটি প্রমাণ। যদি আমি তাঁর পক্ষ থেকে প্রেরিত না হতাম বরং একজন মিথ্যা দাবীদার হতাম, তাহলে আমি নিজেই একটি ধর্ম তৈরী করে ফেলতাম এবং দক্ষতা সহকারে তোমাদের আগের পুরাতন ধর্ম থেকে বিচ্যুত করে নিজের নতুন উদ্ভাবিত ধর্মের দিকে টেনে আনার প্রচেষ্টা চালাতাম। কিন্তু আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর নবীরা আমার পূর্বে যেসব দ্বীন এনেছিলেন আমি তো সেই আসল দ্বীনকে মানি এবং তার শিক্ষাকে সঠিক গণ্য করি। বর্তমানে প্রচলিত ইঞ্জিল থেকেও একথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, মূসা আলাইহিস সালাম ও অন্যান্য নবীগণ যে দ্বীনের প্রচার করেছিলেন হযরত ঈসা আলাইহিস সালামও সেই একই দ্বীনের প্রচারক ছিলেন। যেমন মথির বর্ণনা মতে পাহাড় থেকে প্রদত্ত ভাষণে ঈসা আলাইহিস সালাম পরিষ্কার বলেনঃ “একথা মনে করো না যে, আমি তাওরাত বা নবীদের কিতাব রহিত করতে এসেছি। রহিত করতে নয় বরং সম্পূর্ণ করতে এসেছি।” (৫: ১৭) । একজন ইহুদী আলেম হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে জিজ্ঞেস করলেন, দ্বীনের বিধানের মধ্যে সর্বাগ্রগণ্য হুকুম কোনটি? জবাবে তিনি বললেনঃ “তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করবে। এটি মহৎ ও প্রথম হুকুম। আর দ্বিতীয়টি এর তুল্য; তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালোবাসবে। এই দু’টি হুকুমের ওপরই সমস্ত তাওরাত ও নবী রসূলদের সহীফা ও গ্রন্থসমূহ নির্ভরশীল।” (মথি ২২: ৩৭-৪০) আবার হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তাঁর শিষ্যদের বলেনঃ “ধর্মগুরু ও ফরীসীরা মূসার আসনে বসেছে। তারা তোমাদের যা কিছু বলে তা পালন করো ও মানো। কিন্তু তাদের মতো কাজ করো না। কারণ তারা বলে কিন্তু করে না।” (মথি ২৩: ২-৩) ।
টিকা:৪৭) অর্থাৎ তোমাদের মূর্খদের কাল্পনিক বিশ্বাস, ফকীহদের আইনের চুলচেরা বিশ্লেষণ, বৈরাগ্যবাদীদের কৃচ্ছ্রসাধনা এবং অমুসলিম জাতিদের তোমাদের ওপর প্রাধান্য ও শাসন প্রতিষ্ঠার কারণে তোমাদের আল্লাহ প্রদত্ত আসল শরীয়াতের ওপর যেসব বিধি বন্ধনের বাড়তি বোঝা আরোপিত হয়েছে, আমি সেগুলো রহিত করবো এবং আল্লাহ যেগুলো হালাল বা হারাম গণ্য করেছেন সেগুলোই আমি তোমাদের জন্য হালাল ও হারাম গণ্য করবো।
সুরা: আলে-ইমরান
আয়াত নং :-50
টিকা নং:46, 47,
وَ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیَّ مِنَ التَّوْرٰىةِ وَ لِاُحِلَّ لَكُمْ بَعْضَ الَّذِیْ حُرِّمَ عَلَیْكُمْ وَ جِئْتُكُمْ بِاٰیَةٍ مِّنْ رَّبِّكُمْ١۫ فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَ اَطِیْعُوْنِ
আমি সেই শিক্ষা ও হিদায়াতের সত্যতা ঘোষণা করার জন্য এসেছি, যা বর্তমানে আমার যুগে তাওরাতে আছে।৪৬ আর তোমাদের জন্য যেসব জিনিস হারাম ছিল তার কতকগুলো হালাল করার জন্য আমি এসেছি।৪৭ দেখো, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে আমি নিশানী নিয়ে এসেছি। কাজেই আল্লাহকে ভয় করো এবং আমার আনুগত্য করো।
তাফসীর :
টিকা:৪৬) অর্থাৎ আমি যে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত হয়েছি এটি তার আর একটি প্রমাণ। যদি আমি তাঁর পক্ষ থেকে প্রেরিত না হতাম বরং একজন মিথ্যা দাবীদার হতাম, তাহলে আমি নিজেই একটি ধর্ম তৈরী করে ফেলতাম এবং দক্ষতা সহকারে তোমাদের আগের পুরাতন ধর্ম থেকে বিচ্যুত করে নিজের নতুন উদ্ভাবিত ধর্মের দিকে টেনে আনার প্রচেষ্টা চালাতাম। কিন্তু আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর নবীরা আমার পূর্বে যেসব দ্বীন এনেছিলেন আমি তো সেই আসল দ্বীনকে মানি এবং তার শিক্ষাকে সঠিক গণ্য করি। বর্তমানে প্রচলিত ইঞ্জিল থেকেও একথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, মূসা আলাইহিস সালাম ও অন্যান্য নবীগণ যে দ্বীনের প্রচার করেছিলেন হযরত ঈসা আলাইহিস সালামও সেই একই দ্বীনের প্রচারক ছিলেন। যেমন মথির বর্ণনা মতে পাহাড় থেকে প্রদত্ত ভাষণে ঈসা আলাইহিস সালাম পরিষ্কার বলেনঃ “একথা মনে করো না যে, আমি তাওরাত বা নবীদের কিতাব রহিত করতে এসেছি। রহিত করতে নয় বরং সম্পূর্ণ করতে এসেছি।” (৫: ১৭) । একজন ইহুদী আলেম হযরত ঈসা আলাইহিস সালামকে জিজ্ঞেস করলেন, দ্বীনের বিধানের মধ্যে সর্বাগ্রগণ্য হুকুম কোনটি? জবাবে তিনি বললেনঃ “তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করবে। এটি মহৎ ও প্রথম হুকুম। আর দ্বিতীয়টি এর তুল্য; তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালোবাসবে। এই দু’টি হুকুমের ওপরই সমস্ত তাওরাত ও নবী রসূলদের সহীফা ও গ্রন্থসমূহ নির্ভরশীল।” (মথি ২২: ৩৭-৪০) আবার হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তাঁর শিষ্যদের বলেনঃ “ধর্মগুরু ও ফরীসীরা মূসার আসনে বসেছে। তারা তোমাদের যা কিছু বলে তা পালন করো ও মানো। কিন্তু তাদের মতো কাজ করো না। কারণ তারা বলে কিন্তু করে না।” (মথি ২৩: ২-৩) ।
টিকা:৪৭) অর্থাৎ তোমাদের মূর্খদের কাল্পনিক বিশ্বাস, ফকীহদের আইনের চুলচেরা বিশ্লেষণ, বৈরাগ্যবাদীদের কৃচ্ছ্রসাধনা এবং অমুসলিম জাতিদের তোমাদের ওপর প্রাধান্য ও শাসন প্রতিষ্ঠার কারণে তোমাদের আল্লাহ প্রদত্ত আসল শরীয়াতের ওপর যেসব বিধি বন্ধনের বাড়তি বোঝা আরোপিত হয়েছে, আমি সেগুলো রহিত করবো এবং আল্লাহ যেগুলো হালাল বা হারাম গণ্য করেছেন সেগুলোই আমি তোমাদের জন্য হালাল ও হারাম গণ্য করবো।
ReplyForward
Add reaction |
কুরআন বুঝতে হলে..(১৭)
মানুষ মাত্রই দুর্বল এবং ভুল করে। “মানুষ দুর্বল সৃজিত হয়েছে” (৪:২৮)। মুহাম্মদ ও এই নিয়মের ব্যতিক্রম নন , কারন মুহাম্মদ আমাদের মতোই মানুষ। “বলুন, আমিও তোমাদের মতই মানুষ..”(৪১:৬)। নবী মুহাম্মদের কিছু কথা এবং কাজ ইসলামী চেতনা থেকে দূরে, কিন্তু কুরআনের মধ্যে লিপিবদ্ধ। তেমনই একটি গল্প কুরআন থেকে:
মুহাম্মাদ বিচারক হিসাবে কিছু বিশ্বাস ঘাতকের পক্ষ নিয়েছিলেন , যদিও তারা ছিল দোষী পক্ষ। কুরআনের এই গল্প থেকে নাম, পরিস্থিতি, অবস্থান ইত্যাদি উপাদানগুলিকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এগুলো জানা গুরুত্বপূর্ণ নয় বলে। ন্যায়বিচার প্রয়োগের ক্ষেত্রে মানুষের দুর্বলতার সমস্যা সম্পর্কে সকল যুগে সকল কুরআন-বিশ্বাসী মানুষকে সংবেদনশীল করার উদ্দেশ্যে আল্লাহ মুহাম্মদকে কুরআন ব্যবহার করে বিচার করার আদেশ দেওয়ার সময় তাকে তিরস্কার করেছেন এবং যেহেতু তিনি তা ভুলে গেছেন, এজন্য তাকে অবশ্যই আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে : “আমরা আপনার প্রতি সত্য সহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি আল্লাহ আপনাকে যা দেখিয়েছেন সে অনুসারে আপনি মানুষের মধ্যে বিচার করতে পারেন। এবং বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষে বিতর্ককারী হবেন না।। এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। এবং যারা নিজেদেরকে প্রতারণা করে তাদের পক্ষে তর্ক করবেন না। আল্লাহ প্রতারক পাপীকে ভালবাসেন না। … যে কেউ পাপ করে, সে নিজের পক্ষেই করে।.. আপনি বর্তমান জীবনে তাদের পক্ষে তর্ক করছেন, কিন্তু কেয়ামতের দিন তাদের পক্ষে আল্লাহর সাথে কে তর্ক করবে? বা তাদের প্রতিনিধি কে হবে?… যদি আপনার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও করুণা না হত, তবে তাদের একদল আপনাকে পথভ্রষ্ট করার সংকল্প করেই ফেলেছিল।…” ( ৪:১০৫-১১৩) এইভাবে, আল্লাহ সেই প্রতারকদের প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ করেছেন এবং ন্যায়বিচারকে সমুন্নত রেখেছেন। একজন বিচারক হিসেবে মুহাম্মদ কুরআনের বাইরে কিছুই ব্যবহার করেননি; প্রত্যেকেই নিজের পাপের জন্য দায়ী এবং শেষ দিনে কেউ কারো পক্ষে সুপারিশ করবে না: “…অপরাধীদের কোন অন্তরঙ্গ বন্ধু থাকবে না এবং আনুগত্য করার জন্য কোন সুপারিশকারী থাকবে না।” (৪০:১৮)।
মুহাম্মদের উপর অবতীর্ণ নূরের অনুসরণ:
নশ্বর মুহাম্মাদের উপরে বিশ্বাসের অর্থ হল তার কাছে আল্লাহর ওহী আসে , তার এই দাবীকে বিশ্বাস করা এবং মুহাম্মদের উপর যা অবতীর্ণ হয়েছে অর্থাৎ কুরআনকে বিশ্বাস করা। “আর যারা বিশ্বাস স্থাপন করে, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে মুহাম্মদের প্রতি অবতীর্ণ সত্যে বিশ্বাস করে, আল্লাহ তাদের মন্দ কর্মসমূহ মার্জনা করেন এবং তাদের অবস্থা ভাল করে দেন।” (৪৭:২)। সুতরাং, মুহাম্মাদ নয় বরং তাঁর উপর অবতীর্ণ নূরে অর্থাৎ কুরআনকে ঐশী প্রত্যাদেশ হিসাবে বিশ্বাস করাটাই গুরুত্বপূর্ণ। “…যারা তাকে বিশ্বাস করে, তাকে সম্মান করে, তাকে সমর্থন করে এবং তার সাথে নেমে আসা আলোকে অনুসরণ করে , শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে।” (৭:১৫৭)।
*****
যাহারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মী নবীর, যাহার উল্লেখ তাওরাত ও ইন্জীল, যাহা তাহাদের নিকট আছে তাহাতে লিপিবদ্ধ পায়, যে তাহাদেরকে সৎকাজের নির্দেশ দেয় ও অসৎকাজে বাধা দেয়, যে তাহাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে ও অপবিত্র বস্তু হারাম করে এবং যে মুক্ত করে তাহাদেরকে তাহাদের গুরুভার হইতে এবং শৃংখল হইতে- যাহা তাহাদের উপর ছিল। সুতরাং যাহারা তাহার প্রতি ঈমান আনে তাহাকে সম্মান করে, তাহাকে সাহায্য করে এবং যে নূর তাহার সঙ্গে অবতীর্ণ হইয়াছে উহার অনুসরণ করে তাহারাই সফলকাম।
اَ لَّذِيْنَ يَتَّبِعُوْنَ الرَّسُوْلَ النَّبِىَّ الْاُمِّىَّ الَّذِىْ يَجِدُوْنَهٗ مَكْتُوْبًا عِنْدَهُمْ فِى التَّوْرٰٮةِ وَالْاِنْجِيْلِ يَاْمُرُهُمْ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهٰٮهُمْ عَنِ الْمُنْكَرِ وَيُحِلُّ لَهُمُ الطَّيِّبٰتِ وَيُحَرِّمُ عَلَيْهِمُ الْخَبٰۤٮِٕثَ وَيَضَعُ عَنْهُمْ اِصْرَهُمْ وَالْاَغْلٰلَ الَّتِىْ كَانَتْ عَلَيْهِمْ ؕ فَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِهٖ وَعَزَّرُوْهُ وَنَصَرُوْهُ وَ اتَّبَـعُوا النُّوْرَ الَّذِىْۤ اُنْزِلَ مَعَهٗ ۤ ۙ اُولٰۤٮِٕكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
সূরা নম্বরঃ ৭, আয়াত নম্বরঃ ১৫৭
যাহারা ঈমান আনে, সৎকর্ম করে এবং মুহাম্মাদের প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহাতে বিশ্বাস করে, আর উহাই তাহাদের প্রতিপালক হইতে প্রেরিত সত্য, তিনি তাহাদের মন্দ কর্মগুলি বিদূরিত করিবেন এবং তাহাদের অবস্থা ভাল করিবেন।
وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَاٰمَنُوْا بِمَا نُزِّلَ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّهُوَ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّهِمْۙ كَفَّرَ عَنْهُمْ سَيِّاٰتِهِمْ وَاَصْلَحَ بَالَهُمْ
সূরা নম্বরঃ ৪৭, আয়াত নম্বরঃ ২
উহাদেরকে সতর্ক করিয়া দাও আসন্ন দিন সম্পর্কে যখন দুঃখ-কষ্টে উহাদের প্রাণ কণ্ঠাগত হইবে। জালিমদের জন্য কোন অন্তরংগ বন্ধু নাই, যাহার সুপারিশ গ্রাহ্য হইবে এমন কোন সুপারিশকারীও নাই।
وَاَنْذِرْهُمْ يَوْمَ الْاٰزِفَةِ اِذِ الْقُلُوْبُ لَدَى الْحَـنَاجِرِ كٰظِمِيْنَ ؕ مَا لِلظّٰلِمِيْنَ مِنْ حَمِيْمٍ وَّلَا شَفِيْعٍ يُّطَاعُ ؕ
সূরা নম্বরঃ ৪০, আয়াত নম্বরঃ ১৮
আল্লাহ্ তোমাদের ভার লঘু করিতে চাহেন, মানুষ সৃষ্টি করা হইয়াছে দুর্বল রূপে।
يُرِيْدُ اللّٰهُ اَنْ يُّخَفِّفَ عَنْكُمْۚ وَخُلِقَ الْاِنْسَانُ ضَعِيْفًا
সূরা নম্বরঃ ৪, আয়াত নম্বরঃ ২৮
[ [ আমি তো তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছি যাহাতে তুমি আল্লাহ্ তোমাকে যাহা জানাইয়াছেন সেই অনুসারে মানুষের মধ্যে বিচার মীমাংসা কর এবং তুমি বিশ্বাসভঙ্গকারীদের সমর্থনে তর্ক করিও না।
আর আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
যাহারা নিজেদেরকে প্রতারিত করে তাহাদের পক্ষে বাদ-বিসম্বাদ করিও না, নিশ্চয়ই আল্লাহ্ বিশ্বাসভঙ্গকারী পাপীকে পছন্দ করেন না।
তাহারা মানুষ হইতে গোপন করিতে চাহে কিন্তু আল্লাহ্ হইতে গোপন করে না; অথচ তিনি তাহাদের সঙ্গেই আছেন রাত্রে যখন তাহারা, তিনি যাহা পছন্দ করেন না-এমন বিষয়ে পরামর্শ করে এবং তাহারা যাহা করে তাহা সর্বতোভাবে আল্লাহ্র জ্ঞানায়ত্ত।
দেখ, তোমরাই ইহজীবনে তাহাদের পক্ষে বিতর্ক করিতেছ; কিন্তু কিয়ামতের দিন আল্লাহ্র সম্মুখে কে তাহাদের পক্ষে বিতর্ক করিবে অথবা কে তাহাদের উকীল হইবে?
কেহ কোন মন্দ কাজ করিয়া অথবা নিজের প্রতি জুলুম করিয়া পরে আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করিলে আল্লাহ্কে সে ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু পাইবে।
কেহ পাপ কাজ করিলে সে উহা নিজের ক্ষতির জন্যই করে। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
কেহ কোন দোষ বা পাপ করিয়া পরে উহা কোন নির্দোষ ব্যক্তির প্রতি আরোপ করিলে সে তো মিথ্যা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে।
তোমার প্রতি আল্লাহ্র অনুগ্রহ ও দয়া না থাকিলে তাহাদের একদল তোমাকে পথভ্রষ্ট করিতে চাহিতই। কিন্তু তাহারা নিজেদেরকে ব্যতীত আর কাহাকেও পথভ্রষ্ট করে না এবং তোমার কোনই ক্ষতি করিতে পারে না। আল্লাহ্ তোমার প্রতি কিতাব ও হিকমত অবতীর্ণ করিয়াছেন এবং তুমি যাহা জানিতে না তাহা তোমাকে শিক্ষা দিয়াছেন; তোমার প্রতি আল্লাহ্র মহা অনুগ্রহ রহিয়াছে।]] (৪ঃ১০৫-১১৩)
ReplyForward
Add reaction |
অনেক শিক্ষনীয় বিষয়ে রয়েছে বিশেষ করে ১৬/৬৭
আমি তো তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছি যাহারা এ বিষয়ে মতভেদ করে তাহাদেরকে সুস্পষ্টভাবে বুঝাইয়া দিবার জন্য এবং মু’মিনদের জন্য পথনির্দেশ ও দয়াস্বরূপ। (১৬ঃ৬৪)
অবশ্যই গবাদিপশুর মধ্যে তোমাদের জন্য শিক্ষা রহিয়াছে। উহাদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য হইতে তোমাদেরকে পান করাই বিশুদ্ধ দুগ্ধ, যাহা পানকারীদের জন্য সুস্বাদু। (১৬ঃ৬৭)
এবং খর্জুর – বৃক্ষের ফল ও আঙ্গুর হইতে তোমরা মাদক ও উত্তম খাদ্য গ্রহণ করিয়া থাক; ইহাতে অবশ্যই বোধশক্তিসম্পন্ন সম্প্রদায়ের জন্য রহিয়াছে নিদর্শন। (১৬ঃ৬৮)
তোমার প্রতিপালক মৌমাছিকে উহার অন্তরে ওহী দ্বারা নির্দেশ দিয়াছেন, ‘গৃহ নির্মাণ কর পাহাড়ে, বৃক্ষে ও মানুষ যে গৃহ নির্মাণ করে তাহাতে; (১৬ঃ৬৮)
আল্লাহ্ই তোমাদেরকে সৃষ্টি করিয়াছেন; অতঃপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাইবেন এবং তোমাদের মধ্যে কাহাকেও কাহাকেও উপনীত করা হইবে নিকৃষ্টতম বয়সে; ফলে উহারা যাহা কিছু জানিত সে সমন্ধে উহারা স্বজ্ঞান থাকিবে না। নিশ্চই আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ সর্বশক্তিমান। (১৬ঃ৭০)
16-71 : আল্লাহ্ জীবনোপকরণে তোমাদের কাহাকেও কাহারও উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়াছেন। যাহাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেওয়া হইয়াছে তাহারা তাহাদের অধীনস্থ দাস – দাসীদেরকে নিজেদের জীবনোপকরণ হইতে এমন কিছু দেয় না যাহাতে উহারা এ বিষয়ে তাহাদের সমান হইয়া যায়। তবে কি উহারা আল্লাহ্র অনুগ্রহ অস্বীকার করে?
️16-74 : সুতরাং তোমরা আল্লাহ্র কোন সদৃশ স্থির করিও না। আল্লাহ্ জানেন এবং তোমরা জান না।
ReplyForward
Add reaction |
সুরা: nohol
আয়াত নং :-67
টিকা নং:55,
وَ مِنْ ثَمَرٰتِ النَّخِیْلِ وَ الْاَعْنَابِ تَتَّخِذُوْنَ مِنْهُ سَكَرًا وَّ رِزْقًا حَسَنًا١ؕ اِنَّ فِیْ ذٰلِكَ لَاٰیَةً لِّقَوْمٍ یَّعْقِلُوْنَ
(অনুরূপভাবে) খেজুর গাছ ও আংগুর লতা থেকেও আমি একটি জিনিস তোমাদের পান করাই, যাকে তোমরা মাদকেও পরিণত করো এবং পবিত্র খাদ্যেও।৫৫ বুদ্ধিমানদের জন্য এর মধ্যে রয়েছে একটি নিশানী।
তাফসীর :
টিকা:৫৫) এখানে আনুসঙ্গিকভাবে এ ব্যাপারেও একটি পরোক্ষ আভাস দেয়া হয়েছে যে, ফলের এ রসের মধ্যে এমন উপাদানও রয়েছে যা মানুষের জন্য জীবনদায়ী খাদ্য পরিণত হতে পারে, আবার এমন উপাদানও আছে যা পচে মাদক দ্রব্যে পরিণত হয়। এখন মানুষ এ উৎসটি থেকে পাক-পবিত্র রিযিক গ্রহণ করবে, না বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তিকে বিনষ্টকারী মদ গ্রহণ করবে, তা তার নিজের নির্বাচন ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। শরাব বা মদ যে পাক-পবিত্র রিযিক নয়, এখানে তাও জানা গেলো এবং এটি তার হারাম হওয়ার দিকে আর একটি পরোক্ষ ইঙ্গিত।
পবিত্র কুরআনে বিশ্বাসের দিক নির্দেশনার উপাদান:
৩) কুরআনই একমাত্র হাদিস যা আমাদের বিশ্বাস করা উচিত। আল্লাহ কুরআনকে “হাদিস/حَدِيثٍ” শব্দের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন এবং এটিই একমাত্র এবং সর্বোত্তম “হাদিস” , যা আমাদের অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। কারণ এতে ধর্মের সম্পূর্ণ এবং নিখুঁত সত্য রয়েছে: “বা তারা বলেঃ এই কোরআন সে নিজে রচনা করেছে? বরং তারা অবিশ্বাসী। যদি তারা সত্যবাদী হয়ে থাকে, তবে এর অনুরূপ কোন হাদিস উপস্থিত করুক। (৫২:৩৩-৩৪); “আল্লাহ সর্বোত্তম হাদিস তথা কিতাব নাযিল করেছেন, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ, পূনঃ পূনঃ পঠিত। এতে তাদের লোম কাঁটা দিয়ে উঠে চামড়ার উপর, যারা তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে, এরপর তাদের চামড়া ও অন্তর আল্লাহর স্মরণে বিনম্র হয়। এটাই আল্লাহর পথ নির্দেশ,….” ( ৩৯:২৩); “…এবং আল্লাহর চেয়ে সত্য কথা কে বলে?” (৪:৮৭); “সুতরাং যারা এই হাদিস প্রত্যাখ্যান করে , তাদেরকে আমার হাতে ছেড়ে দিন। আমি এমন ধীরে ধীরে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাব যে, তারা জানতে পারবে না।” (৬৮:৪৪); “এর বাইরে কোন হাদিসে তারা বিশ্বাস করবে?” (৭৭:৫০); “তারা কি প্রত্যক্ষ করেনি আকাশ ও পৃথিবীর রাজ্য সম্পর্কে এবং যা কিছু সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ বস্তু সামগ্রী থেকে এবং এ ব্যাপারে যে, তাদের সাথে কৃত ওয়াদার সময় নিকটবর্তী হয়ে এসেছে? বস্তুতঃ এরপর কোন হাদিসে তারা বিশ্বাস করবে?” (৭:১৮৫)
বস্তুত উদ্ধৃত আয়াতগুলিতে প্রশ্নের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের মৃত্যুর অনিবার্য নির্ধারিত সময়টি ঘটানোর আগে চিন্তা করার আমন্ত্রন জানিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ একমাত্র কুরআনে বিশ্বাসকে তাঁর প্রতি বিশ্বাস করার সমান করেছেন। কুরআনের হাদিস ছাড়া অন্য কোন হাদিসে যেমন বিশ্বাস করা উচিত নয়, তেমনি আল্লাহকে একমাত্র এবং সত্য ইলাহ ছাড়া অন্য কিছুতে বিশ্বাস করা উচিত নয়। প্রকৃত বিশ্বাসীদের জন্য আল্লাহ এবং তাঁর বাক্যই যথেষ্ট এবং এই কথাগুলিই এই আয়াতগুলিতে জানানো হয়েছে: “এগুলো আল্লাহর আয়াত, যা আমি আপনার কাছে আবৃত্তি করি যথাযথরূপে। অতএব, আল্লাহ ও তাঁর আয়াতের পর তারা কোন হাদিসে বিশ্বাস স্থাপন করবে। প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপাচারীর দুর্ভোগ। সে আল্লাহর আয়াতসমূহ শুনে, অতঃপর অহংকারী হয়ে জেদ ধরে, যেন সে আয়াত শুনেনি। অতএব, তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন।” (৪৫:৬-৮)
এই আয়াতগুলি উল্লেখ করে সেই সকল মানুষকে , যারা আল্লাহর বাণী কুরআন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং এর পরিবর্তে অন্যান্য হাদিস, বর্ণনা এবং রচনাগুলিকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখে। প্রকৃতপক্ষে, এই ধরনের মানুষ সব যুগে এবং সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্যমান: “মানুষের মধ্যে এমন ব্যক্তি আছে যারা ইচ্ছা করে বিভ্রান্তিকর গল্পের (লাহুয়াল হাদিস) ব্যবসা করে কোন জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহর পথ থেকে দূরে নিয়ে যেতে এবং এটিকে উপহাস করার জন্য। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি। আর যখন তার কাছে আমার আয়াতগুলো পাঠ করা হয়, তখন সে অহংকারে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন সে শুনতে পায়নি, যেন তার কানে বধিরতা রয়েছে। অতএব তাকে যন্ত্রণাদায়ক আযাবের খবর দাও।” (৩১:৬-৭)।
ReplyForward
Add reaction |
আর তোমরা পানাহার কর যতক্ষণ রাত্রির কৃষ্ণরেখা হইতে ঊষার শুভ্র রেখা স্পষ্ট রূপে তোমাদের নিকট প্রতিভাত না হয়। অতঃপর সিয়াম পূর্ণ কর রাত্রী পর্যন্ত । (২:১৮৭ এ)
উক্ত আয়াতে রোজা, সাহেরী ও ইফতারের বর্ণনা করা হয়েছে। সিয়াম পুর্ণ করতে বলেছেন রাত্রি পর্যন্ত। অর্থাৎ ইফতার করার সময় মাগরিবের নামাজের পর রাত্রি হলে।
অনেকে বলে থাকেন কোরআনকে বুঝতে হলে ব্যাখ্যা স্বরুপ হাদীসকে অনুসরন করতে হবে। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় হাদীস কি বলেঃ ~
হাদীস নং ৬২৪ মুয়াত্তা ইবনে মালিক হতে ——
হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান (র) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইবনে খাত্তাব (রা) এবং উসমান ইবনে আফফান (রা) দু’জনে মাগরিবের নামায আদায় করতেন, এমন সময় তখন তাঁরা রাত্রির অন্ধকার দেখতে পেতেন। আর এটা হত ইফতার করার পূর্বে। অতঃপর তাঁরা দু’জনে ইফতার করতেন। আর এটা হতো রমযান মাসে।
এ ব্যাখা অনুযায়ীও যখন মনপুত না হয় তখনঃ ~
“যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহার দিকে ও রাসূলের দিকে আস’, তাহারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাহাদের পূর্ব পুরুষগণ কিছুই জানিত না এবং সৎপথ প্রাপ্তও ছিল না, তবুও কি ? ” (৫ঃ১০৪)
তারমানে দীর্ঘ দিনের পালিত অভ্যাস, বাপদাদার যে ভাবে এবাদত করতে দেখে আসতেছে, অধিকাংশ লোকে যে ভাবে ধর্ম কার্যাদি সম্পাদন করতে দেখে আসতেছে তা থেকে সড়ে এসে যত সত্য কথাই উপস্থাপন করা হোক না কেন, মানুষ তা গ্রহন করতে রাজি না, যদিও কোরান থেকে দৃষ্টান্ত দেয়া হয়।
আর এমন হবে তা আল্লাহ জানেন বলেই আল্লাহ বলেনঃ
” যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।” (৬ঃ১১৬)
***********************
হাদীসের একটি সুবিধা অনুকুলে হলে মেনে নেয়া, আর অনুকুলে না হলে অস্বীকার করলেও কাফের হয় না। কিন্তু কোরানের একটি আয়াত অস্বীকার করলে সরাসরি কাফের কোন সন্দেহ নাই। এ হাদীস ও কোরানের আলোকে আমাদের অবস্থান কোথায়?
সুস্পষ্ট প্রমাণিক ঐশী কিতাব থাকার পরেও যারা তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং দলে দলে বিভক্ত হয়ে গেছে, তারাই আহলে কিতাবদের মধ্যে কাফির।
পূর্ববর্তী ও পরবর্তী আহলে কিতাবদের মধ্যে যারা কাফির এবং মুশরিকরা– জাহান্নামের আগুনে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে। আর তারাই সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্ট।
সূরা আল-বাইয়িনাহ ১-৬
তিরমিজি হাদীস নং ১১
জাবির বিন আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট উপস্থিত থাকা অবস্থায় তিনি একটি সরল রেখা টানলেন এবং তাঁর ডান দিকে দু’টি সরল রেখা টানলেন এবং বাম দিকেও দু’টি সরল রেখা টানলেন। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী রেখার উপর তাঁর হাত রেখে বলেনঃ এটা আল্লাহ্র রাস্তা। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলওয়াত করেন (অনুবাদ) : ‘’এবং এ পথই আমার সরল পথ। অতএব তোমরা এ পথেরই অনুসরণ করো এবং বিভিন্ন পথ অনুসরণ করো না, অন্যথায় তা তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। (সূরাহ আনআম ৬:১৫৪)
অনুসরণ কর তাদের বিনিময় কামনা করে না সুরা ইয়াছিন আয়াত নং –২১। পেশাদার ইমাম আগুনখোর অপবিত্র জাহান্নামি ২ঃ১৭৪।
গ্রন্থঃ সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত)
অধ্যায়ঃ ২১/ পানীয় দ্রব্য (كتاب الأشربة)
হাদিস নম্বরঃ ৩৬৭১
১. মদ হারাম হওয়ার বর্ণনা
৩৬৭১। আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা আনসার গোত্রের এক লোক তাকে ও আব্দুর রাহমান ইবনু আওফ (রাঃ)-কে দা‘ওয়াত করে উভয়কে মদ পান করালেন তা হারাম হওয়ার পূর্বে। অতঃপর মাগরিবের সালাতে আলী (রাঃ) তাদের ইমামতি করলেন। তিনি সূরা ‘‘কুল ইয়া আয়্যুহাল কাফিরূন’’ পাঠ করতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন। অতঃপর এ আয়াত অবতীর্ণ হলোঃ ‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন মাতাল অবস্থায় থাকো তখন সালাতের কাছেও যেও না। সালাত তখনই পড়বে, যখন তোমরা কি বলছো তা সঠিকরূাপ বুঝতে পারো।’’ (সূরা আন-নিসাঃ ৪৩)[1]
সহীহ।
তোমার প্রতিপালক হইতে তোমার প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে তাহা যে ব্যক্তি সত্য বলিয়া জানে আর যে অন্ধ তাহারা কি সমান? উপদেশ গ্রহণ করে শুধু বিবেক শক্তি সম্পন্নগণই,(১৩ঃ১৯)
২) উহাদের অধিকাংশ অনুমানেরই অনুসরণ করে, সত্যের পরিবর্তে অনুমান কোন কাজে আসে না উহারা যাহা করে নিশ্চয়ই আল্লাহ্ সে বিষয়ে সবিশেষ অবহিত।(১০ঃ৩৬)
৩) অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথপ্রাপ্ত।
অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথ প্রাপ্ত।(৩৬ঃ২১)
৪) যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬ঃ১১৬)
৫) মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবার জন্য অসার হাদীস গ্রহন করিয়া নেয় এবং আল্লাহ্-প্রদর্শিত পথ লইয়া ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। উহাদেরই জন্য রহিয়াছে অবমাননাকর শাস্তি।( 31:6)
৬) তোমরা সত্যকে মিথ্যার সঙ্গে মিশ্রিত করিও না এবং জানিয়া-শুনিয়া সত্য গোপন করিও না।(২ঃ৪২)
যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহার দিকে ও রাসূলের দিকে আস’, তাহারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাহাদের পূর্ব পুরুষগণ কিছুই জানিত না এবং সৎপথ প্রাপ্তও ছিল না, তবুও কি ? (৫ঃ১০৪)
** উহাদেরকে যখন বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা অনুসরণ কর।’ উহারা বলে, ‘বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহারই অনুসরণ করিব।’ শয়তান যদি উহাদেরকে জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তির দিকে আহবান করে, তবুও কি? (৩১ঃ২১)
এর পর তারা যুক্তি তুলে অধিকাংশ —-
* * যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬ঃ১১৬)
দীর্ঘ দিনের পালিত অভ্যাস, বাপদাদার যে ভাবে এবাদত করতে দেখে আসতেছে, অধিকাংশ লোকে যে ভাবে ধর্ম কার্যাদি সম্পাদন করতে দেখে আসতেছে তা থেকে সড়ে এসে যত সত্য কথাই উপস্থাপন করা হোক না কেন, মানুষ তা গ্রহন করতে রাজি না, যদিও কোরান থেকে দৃষ্টান্ত দেয়া হয়। আর এমন হবে তা আল্লাহ জানেন বলেই আল্লাহ বলেনঃ
যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে। (৬ঃ১১৬)
ReplyForward
Add reaction |
সালাত,সিয়াম,হজ্জ,যাকাত,ইবাদত,একিন,রুহ, রিবা,নাফস,উম্মি,লৌহেমাহফুজ,নিয়ামত,সুন্নাত,হাদীস ইত্যাদী আরবী শব্দ গুলির সঠিক বাংলা অনুবাদ না থাকায় পারস্য অনুবাদের উপর ভর করে চলতে হয়। ফলে বাংলা ভাষাভাষির মানুষ কোরানে এ শব্দগুলি সমন্বিত আয়াত গুলির সঠিক মর্ম উপলব্ধিতে ব্যার্থ হয়ে গতানুগতিক অনুবাদ পড়ে আল্লাহর নির্দেশনা সঠিক ভাবে বুঝতে সক্ষম না হয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয় এবং সঠিক উপলব্ধি থেকে দূরে সরে যায়। আমাদের আলেমগনও এ নিয়ে কোন চিন্তা গবেষনা কখনো করার প্রয়োজন বোধ করেন নাই। তারাও আরবী তেলোয়াতে নেকির হিস্যা নিয়ে আমজনতার নিকট প্রিয় ভাজন হয়ে আছেন। ধর্মকে জীবিকা হিসেব বেছে নিয়েছেন তারা। অথচ আরবী উর্দু ফারসী ইংরেজী ভাষার এমন কোন শব্দ নেই যার প্রতিস্থাপিত বাংলা শব্দ নেই।
প্রথমতঃ বিষেশ করে কোরানের আরবী শব্দগুলির সঠিক বাংলা অনুবাদ করতে হলে সেই আরবী শব্দটি কোরানের কত যায়গায় আছে তা আগে সংগ্রহ করতে হয়। অতপর ঐ শব্দটির বাংলা অনুবাদ কি কি ব্যবহার করা হয়েছে তা অনুসন্ধান করতে হয়।
দ্বীতিয়তঃ আরবী শব্দটির বিপরীত আরবী কি কোরানের কোন কোন আয়াতে আছে তা নির্বাচন করতে হয়। সেখান থেকে একটি শব্দের সঠিক অনুবাদ ধরতে পারলে বিপরীত শব্দটির বাংলা অনুবাদ সঠিক কি হবে তা নিরুপন করা সহজ হয়। যেমন লাইল এর বিপরীত নাহার শব্দটি কোরানের ১১টি আয়াতে আছ। এখন লাইল এর অর্থ জানা থাকলে নাহার দিবস সহজে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। এই দূইটি নচ্চ প্রয়োগ করে ফারসী অনুবাদ বাদ দিয়ে বাংলা শাব্দিক অনুবাদ সৃজন করা সম্ভব এবং তখন কোরানের সঠিক মর্ম বাংলাভাষার মানুষের উপলব্ধি করা সম্ভব।
যেমন রুহ একটি আরবী শব্দ, যার বাংলা অনুবাদ রহুই জানি, একটু বেশী হলে রুহ মানে আত্মা বা প্রাণ বুঝি। আরকটু এগিয়ে বুঝলে রুহ এর অনুবাদ ” আল্লাহর আদেশ ” ধরে থাকি। ব্যাস এর বেশী কিছু না। এর বেশী কিছু জানতে চাইলে আলেমগন একটি আয়াত তুলে ধরে খামুস হতে বলেনঃ
“তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’ আয়াত : ৮৫
রুহুর বিপরীত কোন শব্দ কোরানে প্রয়োগ করা হয় নি। তাই দ্বীতিয় পদ্ধতিতে এর বাংলা অনুবাদ করা সম্ভব নয়। প্রথম পদ্ধতি এপ্লাই করেই রুহের বাংলা অনুবাদ বের করে আনতে হবে।
তাই প্রথমে রুহ সংক্রান্ত সকল আয়াত গুলি কালেকশন করি।কোরানে রুহ নিয়ে মোট ৯টি আয়াত আছে। যেমনঃ
১) রুহ * ফিরিশ্তা এবং রূহ্ আল্লাহ্র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর।(৭০ঃ৪)
২) রুহ* অতঃপর উহাদের হইতে সে পর্দা করিল। অতঃপর আমি তাহার নিকট আমার রূহ্কে পাঠাইলাম, সে তাহার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করিল।(১৯:১৭)
৩) রুহ * তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় রুহ ওহী সহ ফেরেস্তাহ প্রেরণ করেন এই বলিয়া যে, তোমরা সতর্ক কর, নিশ্চয়ই আমি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই; সুতরাং আমাকে ভয় কর।( ১৬: ২)
৪) রুহ * তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’ সূরা নম্বর: আয়াত নম্বর: ৮৫
৫) রুহ* জিব্রাঈল ইহা লইয়া অবতরণ করিয়াছে (২৬:১৯৩)
৬) রুহ * তিনি সমুচ্চ মর্যাদার অধিকারী, ‘আরশের অধিপতি, তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা ওহী প্রেরণ করেন স্বীয় রুহ , যাহাতে সে সতর্ক করিতে পারে কিয়ামত দিবস সম্পর্কে। (৪০: ১৫)
৭);রুহ * ফিরিশ্তা এবং রূহ্ আল্লাহ্র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর।(৭০: ৪)
৮) রুহ* সেই দিন রূহ্ ও ফিরিশ্তাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াইবে ; দয়াময় যাহাকে অনুমতি দিবেন সে ব্যতীত অন্যেরা কথা বলিবে না এবং সে যথার্থ বলিবে।(৭৮:৩৮)
৯) রুহ * সেই রাত্রিতে ফিরিশতাগণ ও রূহ্ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাহাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।(৯৭:৪)
এবার দেখুন ১ নং আয়াতে রুহুর অনুবাদ “রুহ” লিখেছে
২) নং এ “আমার রুহ ” লিখেছে অনুবাদে
৩) নং এ রুহর অনুবাদে স্বীয় রুহ লিখেছে
৪) নং এ রুহ এর অনুবাদ রুহ ই করেছে
৫) নং এ রুহ এর অনুবাদ ” জিব্রাঈল ” লিখেছে অনুবাদ
৬) নং এ রুহের অনুবাদ “স্বীয় রুহ ” অনুবাদ করেছে
৭) নং আয়াতে রুহ এর অনুবাদ রুহ করেছে
৮) নং আয়াতে রুহ এর অনুবাদ রুহ লিখা হয়েছে
৯) নং আয়াতে একটু ব্তিক্রম রুহ এর অনুবাদ আল্লাহর অনুমতি ক্রমে রুহ লিখেছে
*** সব কটি আয়াত পর্যালোচনা করে রুহ এর বাংলা অনুবাদ ” আল্লাহর অস্তিত্ব ” বুঝায়।
এবার আপনি রুহ শব্দের বাংলা অনুবাদ “আল্লাহর অস্তিত্ব” বসিয়ে অনুবাদ করে দেখুন, প্রতিটি আয়াতের মর্ম আপনার নিকট কত সহজ ও বোধগম্য হয়ে হৃদয়ে উপলব্ধি আসে।
এভাবে সালাত, হজ্জ, সিয়াম, যাকাত, রিবা, ইবাদত, একিন,নিয়ামত, আয়াত,উম্মি,দ্বীন, সিজদাহ, রুকু ইত্যাদি আরবী শব্দগুলির বাংলা অনুবাদ সৃষ্টি করে বসিয়ে দেখুন আল্লাহ কত প্রাঞ্জল ভাষায় আমাদের কি বুঝাতে চেয়েছেন আর আমরা কি বুঝে বসে আছি, শুধু সঠিক অনুবাদের অভাবে।
ReplyForward
Add reaction |
প্রাণীকুলের সালাত বনাম মানুষের
কুকুরও নামাজ পড়ে।
জমিনে বিচরনকারী সকলে এমন কি কুকুর এবং আকাশে উড্ডিয়মান পক্ষীকুলও নামাজ পড়ে। আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। আসমান ও জমিনে বিচরনকারী সকল প্রানীই নামাজ পড়ে তসবীহ করে। বিশ্বাস হচ্ছে না? দেখে নিন আল্লাহ কি বলেনঃ
“তুমি কি দেখনা, আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করেছে যারা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে আছে তারা সবাই এবং যে পাখিরা ডানা বিস্তার করে আকাশে ওড়ে? প্রত্যেকেই জানে তার নামাযের ও পবিত্রতা বর্ণনা করার পদ্ধতি। আর এরা যা কিছু করে আল্লাহ তা জানেন। ( সূরা আন-নুরঃ ৪১)
মানুষ কি মনে করে শুধু তারাই সালাত করে। না, বরং আসমান ও জমিনে যত প্রাণী আছে সবাই সালাত করে। তবে মানুষের নামাজের মধ্যে তিনটি শর্ত যা প্রাণীকুলের
নামাজ থেকে মানুষের নামাজকে পৃথক করে দেয়।
আকাশে উড্ডিয় মান পাখিরা তাদের সালাত করে রবের নির্দেশ পালন করার মধ্য দিয়ে। মানুষের সালাতও রবের নির্দেশ পরিপালনের মধ্য দিয়েই। তবে মানুষেকে সালাতের
৩ টি শর্ত পরিপালন করতে হয় অতিরিক্ত।
১) মানুষের সালাত তাকে অশ্লীল ও অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখে।
اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنْهٰى عَنِ الْفَحْشَآءِ وَالْمُنْكَرِؕ
( নিশ্চয় সালাত বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কার্য হইতে।)
সূরা আনকাবুতঃ ৪৫)
২) মানুষের সালাত মোহ গ্রস্থ্য অবস্থায় নিষিদ্ধ।
لَا تَقْرَبُوا الصَّلٰوةَ وَاَنْـتُمْ سُكَارٰى
অর্থঃ তোমরা মোহগ্রস্থ্য অবস্থায় সালাতের নিকটবর্তী হইও না, ( সূরা নেসা – ৪৩ )
৩) মানুষ সালাতে কি বলে তা না বুঝা পর্যন্ত সালাত করে না।
حَتّٰى تَعْلَمُوْا مَا تَقُوْلُوْنَ
অর্থঃ যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার,
পশুপাখির সালাত, তাসবীহ রিতী আর মানুষের সালাত ও তাসবিহ পদ্ধতির পার্থক্য এটাই। নচেৎ আসমান ও জমিনের সকল প্রানী ও পক্ষীকুল মানুষের মতই পড়ে।
২ ও ৩ নং শর্ত পরিপালনের মাধ্যমো সালাগ আদায় করেও যদি ১নং শর্তটির বাস্তবায়ন নিজের মধ্যে পরিলক্ষিত না হয় তবে বুঝে নিতে হবে আপনার সালাত আর সেই পশুর সালাত একই হচ্ছে।
সে সত্য বলে নাই এবং সালাত আদায় করে নাই।
فَلَا صَدَّقَ وَلَا صَلّٰىۙ
বরং সে সত্য প্রত্যাখ্যান করিয়াছিল ও মুখ ফিরাইয়া লইয়াছিল।
وَلٰكِنْ كَذَّبَ وَتَوَلّ
সুতরাং দুর্ভোগ সেই সালাত আদায়কারীদের,
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّيْنَۙ
যাহারা তাহাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন,
الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُوْنَۙ
সূরা নম্বরঃ ১০৭, আয়াত নম্বরঃ ৫
তবে তারা নয় —
যাহারা তাহাদের সালাতে সর্বক্ষন প্রতিষ্ঠিত,
الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙ
সূরা নম্বরঃ মাআরিজ ৭০,আয়াত ২৩
ReplyForward
Add reaction |