Categories
My text

মানুষের প্রকারঃ

মানুষকে বুঝানোর জন্যে আল কোর’আনে অনেক গুলো শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যেমনঃ

বাশার [الْبَشَر ]
নাস [النَّاس ], এবং
ইনসান [ الْإِنْسَان ]
খলিফা –[-خَليفَةً]

উপরের এ চারটি শব্দের অর্থই মানুষ। কিন্তু তিনটি শব্দ দ্বারা একই চরিত্রের মনুষকে বোঝানো হয় না। অর্থৎ, প্রত্যেকটি শব্দ-ই আলাদা আলাদা চরিত্রের মানুষকে নির্দেশ করে। আল কোর’আনের মুজেযা এটাই।

বাশার, নাস এবং ইনসান – এ তিনটি শব্দ মানুষের তিনটি স্তর বিন্যাসকে নির্দেশ করে। মানুষের এই তিনটি স্তর বিন্যাস তাদের ধর্মের কারণে হয়নি। বরং মানুষের স্বভাব ও বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে এই তিনটি স্তর বিন্যাস করা হয়েছে।

ইনসান শব্দটি আরবি ‘নাসিয়ূন‘ উৎস-মূল থেকে সৃষ্টি হয়েছে। যার অর্থ ভুলে যাওয়া বা ভুল হওয়া। সে হিসেবে তার সাদামাটা অর্থ হল, ইনসান এমন সৃষ্টির নাম যে, বারে বারে তার অতীত ভুলে যায়, তার ওয়াদার কথা ভুলে যায়, স্বীয় প্রভুর কথা ভুলে যায়। আরেক ভাবে যার অর্থ সে বারে বারে ভুল করে।

কোর’আনে যত যায়গায় ‘ইনসান’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, তত যায়গায় মানুষের নেতিবাচক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কথা বর্ণনা করা হয়েছ। কোর’আন থেকে এবার কয়েকটি উদাহরণ দেখুন।

قُتِلَ الۡاِنۡسَانُ مَاۤ اَکۡفَرَہٗ ﴿ؕ۱۷﴾ -আবাসা-১
অর্থঃ মানুষ ধ্বংস হোক! সে কত অকৃতজ্ঞ।

اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لِرَبِّہٖ لَکَنُوۡدٌ ۚ﴿۶﴾ সূরা আদিয়াত-৬
অর্থঃ নিশ্চয় মানুষ তার রবের প্রতি বড়ই অকৃতজ্ঞ।

اِنَّ الۡاِنۡسَانَ لَفِیۡ خُسۡرٍ ۙ﴿۲﴾ সূরা আসর-২
অর্থঃ নিশ্চয় মানুষ ক্ষতির মাঝে নিপতিত।

এছাড়াও সূরা ইউনূসের-১২, হুদ-০৯,ইব্রাহিম -৩৪, বণী ইসরাইল-৬৭, ১০০, ঝুমার-০৮ ও ৪৯, যুখরফ-১৫, সূরা কেয়ামাহ-৩৬ নং আয়াতের মাঝে এরকম কিছু নেতিবাচক চারিত্রিক বিশিষ্টয়ের কথাই উল্লেখ আছে। কিন্তু ‘ইনসান’ স্তরের উপরেও মানুষের অনেক স্তর আছে। এখন চলুন, সেগুলো দেখে নেয়া যাক।

মর্যাদাগত ভাবে ‘ইনসানের’ উপরের স্তরে যেই মানুষেরা আছে, তাদেরকে কোর’আনে বলা হয়েছে ‘নাস’ [النَّاس ]। নাস শব্দের অর্থও মানুষ। কিন্তু ‘নাস’ স্তরের মানুষের মাঝে ভালো মানুষও আছে, আবার খারাপ মানুষও আছে।

‘নাস’ নামক ভালো মানুষের উদাহরণ।

১ – মানুষের মধ্য থেকেই আল্লাহ রাসূল মনোনীত করেন।

اللَّهُ يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ إِنَّ اللَّهَ سَمِيعٌ بَصِيرٌ ﴿الحج: ٧٥﴾

“আল্লাহ ফেরেশতা ও মানুষের মধ্য থেকে রাসূল মনোনীত করেন। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্ব দ্রষ্টা।” [সূরা ২২/হাজ্জ – ৭৫]

২ – ইসলামের বিজয় দেখলে যারা দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করবে, তারা ‘নাস’ স্তরের মানুষ।

وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُونَ فِي دِينِ اللَّهِ أَفْوَاجًا ﴿النصر: ٢﴾

“এবং আপনি মানুষকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন।” [সূরা ১১০/নাসর – ২]

৩ – আল্লাহর জন্যে নিজের প্রাণ উৎসর্গকারী মানুষেরাও ‘নাস’ স্তরের মানুষ।

وَمِنَ النَّاسِ مَن يَشْرِي نَفْسَهُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّهِ وَاللَّهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ ﴿البقرة: ٢٠٧﴾

“আর মানুষের মাঝে এমন কিছু মানুষ রয়েছে, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভার্থে আত্ম-বিক্রয় করে থাকে। আল্লাহ হলেন তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান।” [ সূরা ২/বাকারা – ২০৭]

এখন দেখুন, ‘নাস’ নামক খারাপ মানুষদের উদাহরণ।

১ – ‘নাস’ স্তরের মানুষেরা হবে জাহান্নামের জ্বালানি।

فَإِن لَّمْ تَفْعَلُوا وَلَن تَفْعَلُوا فَاتَّقُوا النَّارَ الَّتِي وَقُودُهَا النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ أُعِدَّتْ لِلْكَافِرِينَ ﴿البقرة: ٢٤﴾

“আর যদি তোমরা (কোর’আনের অনুরূপ) কিছু না আনতে পার, অবশ্য তা তোমরা কখনও তা আনতে পারবে না, তাহলে সে দোযখের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা কর, যার জ্বালানী হবে মানুষ ও পাথর। যা প্রস্তুত করা হয়েছে কাফেরদের জন্য।” [সূরা ২/বাকারা – ২৪]

২ – ‘নাস’ স্তরের মানুষদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ।

وَإِنَّ رَبَّكَ لَذُو فَضْلٍ عَلَى النَّاسِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَشْكُرُونَ ﴿النمل: ٧٣﴾

“নিশ্চয়ই আপনার পালনকর্তা মানুষের প্রতি অনুগ্রহশীল, কিন্তু তাদের অধিকাংশই অকৃতজ্ঞ।” [সূরা ২৭/নামল – ৭৩]

৩ – ‘নাস’ স্তরের মানুষদের কেউ কেউ খুবই ঝড়গাটে ও তর্কপ্রিয়।

وَمِنَ النَّاسِ مَن يُعْجِبُكَ قَوْلُهُ فِي الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَيُشْهِدُ اللَّهَ عَلَىٰ مَا فِي قَلْبِهِ وَهُوَ أَلَدُّ الْخِصَامِ ﴿البقرة: ٢٠٤﴾

“মানুষদের মধ্যে কেউ কেউ এমন আছে, পৃথিবীর জীবন সম্পর্কে যার কথাবার্তা তোমাকে চমৎকৃত করবে। সে তার অন্তরের বিষয়ে আল্লাহকে সাক্ষী রাখে। প্রকৃতপক্ষে সে কলহপ্রিয়।” [সূরা ২/বাকারা – ২০৪]

৪ – ‘নাস’ স্তরের অধিকাংশ মানুষ-ই অজ্ঞ।

قُلِ اللَّهُ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يَجْمَعُكُمْ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَا رَيْبَ فِيهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ ﴿الجاثية: ٢٦﴾

“আপনি বলুন, আল্লাহই তোমাদেরকে জীবন দান করেন, অতঃপর তিনি মৃত্যু দেন, অতঃপর তিনি তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্রিত করবেন, যাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বোঝে না। [সূরা ৪৫/জাছিয়া – ২৬]

লক্ষ্য করুন।

কোর’আনে ‘ইনসান’ শব্দটি যতবার ব্যবহার করা হয়েছে, ততবার-ই সকল মানুষকে একসাথে বুঝানো হয়েছে, এবং সেখানে মানুষের ভালো কোনো চারিত্রিক গুনের কথা উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়েছে – মানুষেরা অকৃতজ্ঞ, মানুষেরা অজ্ঞ, মানুষেরা তর্ক প্রিয়, ইত্যাদি ইত্যাদি।

কিন্তু কোর’আনে যখন ‘নাস’ শব্দ দিয়ে মানুষকে বুঝানো হয়েছে, তখন কিছু কিছু মানুষকে ভালো বলা হয়েছে, এবং অধিকাংশ মানুষকে-ই খারাপ বলা হয়েছে। যেমন, উপরের আয়াতগুলোতে বলা হচ্ছে – অধিকাংশ মানুষ অকৃতজ্ঞ, অধিকাংশ মানুষ অজ্ঞ, অধিকাংশ মানুষ তর্কপ্রিয়।

সুতরাং, এ থেকে বোঝা যায় যে, মানুষের স্তর বিন্যাসে ইনসানের উপরের স্তরে রয়েছে ‘নাস’ নামক স্তর।

তারপর আসুন, ‘নাস’-এর উপরের স্তরে যেসব মানুষদের রাখা হয়েছে, কোর’আনে তাদেরকে বলা হয়েছে ‘বাশার’। ‘বাশার’ শব্দের অর্থও মানুষ। কিন্তু এরা ‘নাস’ স্তরের মানুষদের মত না। কোর’আনে ‘বাশার’ শব্দটি সাধারণত উন্নত চরিত্রের মানুষদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে।

‘নাস’ স্তরের অধিকাংশ মানুষ-ই খারাপ, কিন্তু ‘বাশার’ স্তরের অধিকাংশ মানুষ-ই ভালো। ‘বাশার’ স্তরের মানুষেরা হোক মুসলিম বা অমুসলিম, তাদের চরিত্র সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক উন্নত হয়ে থাকে।

কোর’আন থেকে এবার কয়েকটি উদাহরণ দেখুন।

১ – যে মানুষকে সেজদা করার জন্যে আল্লাহ তায়ালা ইবলিসকে আদেশ দিয়েছেন, সে ছিল ‘বাশার’ স্তরের মানুষ।

قَالَ لَمْ أَكُن لِّأَسْجُدَ لِبَشَرٍ خَلَقْتَهُ مِن صَلْصَالٍ مِّنْ حَمَإٍ مَّسْنُونٍ ﴿الحجر: ٣٣﴾
“(ইবলিস) বলল: আমি এমন নই যে, একজন মানুষকে সেজদা করব, যাকে আপনি পচা কর্দম থেকে তৈরি ঠনঠনে বিশুষ্ক মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। [সূরা ১৫/হিজর – ৩৩]

২ – নবী ও রাসূলগণ ছিলেন ‘বাশার’ স্তরের মানুষ।

قَالَتْ لَهُمْ رُسُلُهُمْ إِن نَّحْنُ إِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ وَلَٰكِنَّ اللَّهَ يَمُنُّ عَلَىٰ مَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَمَا كَانَ لَنَا أَن نَّأْتِيَكُم بِسُلْطَانٍ إِلَّا بِإِذْنِ اللَّهِ وَعَلَى اللَّهِ فَلْيَتَوَكَّلِ الْمُؤْمِنُونَ ﴿ابراهيم: ١١﴾

“তাদের রাসূলগণ তাদেরকে বললেন: আমারাও তোমাদের মত মানুষ, কিন্তু আল্লাহ বান্দাদের মধ্য থেকে যার উপরে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। আল্লাহর নির্দেশ ব্যতীত তোমাদের কাছে প্রমাণ নিয়ে আসা আমাদের কাজ নয়; আল্লাহর উপর ইমানদারদের ভরসা করা উচিত।” [সূরা ১৪/ইব্রাহিম – ১১]

৩ – ঈসা (আ)-এর জন্মের সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে রুহ এসে ‘বাশার’ বা মানব আকৃতি ধারণ করে।

فَاتَّخَذَتْ مِن دُونِهِمْ حِجَابًا فَأَرْسَلْنَا إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا ﴿مريم: ١٧﴾

“অতঃপর (লোকজন) থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্যে (মারিয়াম) পর্দা করলো। অতঃপর আমি তার কাছে আমার রূহ প্রেরণ করলাম, সে তার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করল।” [সূরা ১৯/মারিয়াম – ১৭]

৪ – আল্লাহ তায়ালা ‘বাশার’ স্তরের মানুষের কাছে তাঁর বার্তা পাঠান।

وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلَّا وَحْيًا أَوْ مِن وَرَاءِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولًا فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاءُ إِنَّهُ عَلِيٌّ حَكِيمٌ ﴿الشورى: ٥١﴾

“মানুষের এমন মর্যাদা নাই যে, আল্লাহ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন। কিন্তু ওহীর মাধ্যমে, অথবা পর্দার অন্তরাল থেকে, অথবা তিনি কোন দূত প্রেরণ করবেন, অতঃপর আল্লাহ যা চান, সে তা তাঁর অনুমতিক্রমে পৌঁছে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বোচ্চ প্রজ্ঞাময়।” [সূরা ৪২/শূরা – ৫১]

দেখুন, ‘বাশার’ স্তরের মানুষেরা ‘নাস’ ও ‘ইনসান’ স্তরের মানুষ থেকে অনেক উন্নত। সকল নবী ও রাসূল ছিলেন ‘বাশার’। ‘বাশার’ স্তরের মানুষের নিকট আল্লাহ ওহী পাঠান। কোর’আনে ‘বাশার’ শব্দটি ইতিবাচক অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে।

‘বাশার’ শব্দমূল থেকে আসা আরেকটি শব্দ কোর’আনে প্রচুর ব্যবহার করা হয়েছে। তা হলো ‘বুশরা’। এর অর্থ সুসংবাদ।

এখানে একটা কথা মনে রাখা প্রয়োজন –

কেউ ‘বাশার’ হয়ে গেলেই তিনি পূর্ণ সফল হয়ে যান না। তাকে মুমিন হতে হয়, মুসলিম হতে হয়, এবং তারও উপরে আরো অনেকগুলো উন্নত ধাপ অতিক্রম করতে হয়। এ জন্যে কোর’আনে ‘বাশার’ স্তরের মানুষদের বলা হচ্ছে –

نَذِيرًا لِّلْبَشَرِ ﴿٣٦﴾ لِمَن شَاءَ مِنكُمْ أَن يَتَقَدَّمَ أَوْ يَتَأَخَّرَ ﴿المدثر: ٣٧﴾

“মানুষের জন্যে সতর্ককারী। তোমাদের মধ্যে যে সামনে অগ্রসর হতে চায়, এবং যে পিছিয়ে পড়তে চায়, তার জন্যে (সতর্ক)।” [সূরা ৭৪/মুদ্দাছছির – ৩৬, ৩৭]

দেখুন,

‘বাশার’ শব্দ দিয়ে কোর’আনে নিউট্রাল মানুষদের বোঝানো হয়। অর্থাৎ, যারা ভালো ও মন্দের ঠিক মাঝামাঝিতে অবস্থান করে। ‘বাশার’ স্তরের মানুষেরা ‘ইনসান’ ও ‘নাস’ স্তরের মানুষের মত খারাপ না, আবার তারা পূর্ণ সফলও না। তারা ইচ্ছা করলে ইনসানের স্তরে নেমে যেতে পারে, আবার তারা ইচ্ছা করলে অনেক উন্নত স্তরে পৌঁছে যেতে পারে।

এখনে একটি প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে যখন সৃষ্টি করেছিলেন, তখন আমরা কোন স্তরের মানুষ ছিলাম? বাশার, নাস, নাকি ইনসান?

উত্তরটা কোর’আনে আছে। আল্লাহ বলছেন –

إِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي خَالِقٌ بَشَرًا مِّن طِينٍ ﴿ص: ٧١﴾

“স্মরণ করুন, যখন আপনার প্রতিপালক ফেরেশতাগণকে বললেন, আমি মাটির মানুষ সৃষ্টি করব।” [সূরা ৩৮/সাদ – ৭১]

এখানে যে ধরণের মানুষের সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে, তারা ছিলেন ‘বাশার’ স্তরের মানুষ। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে ‘ইনসান’ বা ‘নাস’ বানিয়ে সৃষ্টি করেননি। বরং তাকে ‘বাশার’ স্তরের ভালো মানুষ হিসাবে-ই সৃষ্ট করেছেন। কিন্তু মানুষ তার চারিত্রিক কারণে-ই নাস এবং ইনসান হয়ে যায়।

এরপর আসুন,

ইনসান, নাস ও বাশার – এ তিনটি স্তরের পাশাপাশি মানুষের আরেকটি স্তর আছে, যার নাম খালিফা। পৃথিবীর অন্য সকল প্রাণী ও বস্তু থেকে আল্লাহ তায়ালা মানুষকে অধিক সম্মানিত করেছেন। কিন্তু শর্ত হলো, মানুষকে চরিত্রগতভাবে সুন্দর হতে হবে।

ইন্নি জায়েলুন খালিফাতে ফিল আরদ।
وَإِذ قالَ رَبُّكَ لِلمَلٰئِكَةِ إِنّى جاعِلٌ فِى الأَرضِ خَليفَةً ۖ
আর তোমার পালনকর্তা যখন ফেরেশতা দিগকে বললেনঃ আমি পৃথিবীতে একজন প্রতিনিধি বানাতে যাচ্ছি।(২ঃ৩০)

ফিরেস্তাগন অবাক হয়ে গেলেন, কারন তারা খলিফার মর্যদা জানতেন। যে মুল মালিকের পুর্ন ক্ষমতা প্রাপ্ত। যার ভাল মন্দ করার, শাসন বিচার,কর্তৃত্ব করার এখতিয়ার থাকবে।

এর পর আল্লাহ বলেন মানুষের ভিতর হতে ছেকে তোমাদেরকে নির্বাচন করেছি তোমরা যেন আমার আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত রাখ জমিনে।

كُنتُم خَيرَ أُمَّةٍ أُخرِجَت لِلنّاسِ تَأمُرونَ بِالمَعروفِ وَتَنهَونَ عَنِ المُنكَرِ وَتُؤمِنونَ بِاللَّهِ ۗ وَلَو ءامَنَ أَهلُ الكِتٰبِ لَكانَ خَيرًا لَهُم ۚ مِنهُمُ المُؤمِنونَ وَأَكثَرُهُمُ الفٰسِقونَ
তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। ( ইমরানঃ১১০)

তোমাদের মানুষের মধ্য হতে উত্তম হিসেবে নির্বাচিত করেছি এ জন্য যে, তোমরা ভাল কাজের আদেশ করবে এবং মন্দ কাজের নিষেধ করবে।

এখানে ভাল কাজে উপদেশ করা কথা বলেন নাই বা মন্দ কাজে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করতে বলেন নাই।
আদেশ এবং নিষেধ এমন শব্দ যা না মানলে শাস্তুির ব্যবস্থা থাকবে এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে এ শাস্তি প্রদানের অনুমোদন খলিফাকে, উখরিজাতিননাসকে দেয়া হলো।

সুতরাং,
ইনসান, নাস, বাশার ও খলিফা – আমরা যেখানেই বা যে স্তরেই থাকি না কেন, আমাদেরকে আরো উপরের স্তরে যেতে হবে। এক-এক করে, মুমিন, মুসলিম এবং তারও উপরের স্তরগুলোতে পৌঁছাতে হবে।

আমরা ইচ্ছা করলে ইনসান, এবং অধিকাংশ ‘নাস’-এর মত নিম্নস্তরে চলে যেতে পারি, আবার ইচ্ছা করলেই আমাদের ‘বাশার’ স্তর থেকে অনেক উপরের স্তরে চলে যেতে পারি। কারন আমাদের খলিফা আখ্যায়িত করে সে ক্ষমতা আমাদের নিকট ন্যাস্ত করেছেন। প্রয়োজন – আমাদের ইচ্ছার।

এ বিষয় গুলি না বুঝার জন্য তকদীর নিয়ে অনেক বিভ্রাটে পড়তে হয়।

Categories
Adventure

তিব্বতের নির্বাসিত সরকার দালালাইমঃ

নির্বাসিত সরকার ও পাহাড়ী সহিংসতাঃ

আওয়ামী সরকার পালিয়ে ভারতে স্বেচ্ছায় নির্বাসন এবং সমসাময়িক পাহাড়ী সহিংসতা ১৯৫০ সালের তিব্বতের লামাইমার নির্বাসিত সরকার গঠনের ইতিহাসকে হাতছানী দেয় কি? এ বিষয়ে ভাবতে গেলে পিছন ফিরে তিব্বতের ইতিহাস জানা আবশ্যক।

১৯৫০ সাল পর্যন্ত তিব্বত ধর্মীয় নেতা দালাইলামা দ্বারা শাসিত ছিল তিব্বত।

১৯৫০ সালের শেষের দিকে চীনের মুল ভুখন্ডে সফল বিপ্লবের আয়োজন করে কমিউনিস্ট পার্টির স্বসশ্র নেতারা। ঐ সময় তিব্বতের দালাইলামার সাথে একটি  চুক্তি হয় চীনের। প্রাক চয়নিক সভ্যতার নিদর্শন তিব্বত মালভুমি। যার বর্তমান রাজধানী লাসা। এরা বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী।

চুক্তি অনুযায়ী তিব্বতের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রন  চীনের হাতে থাকলেও স্বায়ত্ত শাসনের ক্ষমতা ও প্রসাশনিক কেন্দ্র দালায়লামের নিকট প্রদান করা হয় ।  তিব্বত বাসীরা এ চুক্তিতে সম্মত না হয়ে ১৯৫৯ সনে চীন সরকারের বিরুদ্ধে  বিদ্রোহ ঘোষণা করে। যার ফলে তিব্বতের দালায়লামা পালিয়ে ভারতের হিমাচল প্রদেশে সেচ্ছা নির্বাসনে চলে যান। সেখানে তিনি নির্বাসিত  সরকার ব্যবস্থা নামে একটি সরকার ব্যাবস্থাও গঠন করেন। দালায়লামার এই সেচ্ছা নির্বাসনকে পুঁজি কর পুরো তিব্বত জুড়ে আগ্রাসী সংস্কার চালায় চীনের কমিউনিস্ট পার্টি। যার ধারাবাকিকতায় প্রায় ছয় হাজার উপসানালয় ভেঙে ফেলা হয়।  চীনা সৈন্যদের হাতে প্রায় ১২ হাজার তিব্বত অধিবাসী নিহত হয়। ভারতের হিমাচলে আশ্রয় নেয়া দালায়লামের উপর চীনের আগ্রাসনের জন্য  এই তিব্বত ইস্যুতে ১৯৬২ সনে চীন ও ভারত স্বসশ্র  যুদ্ধের মুখোমুখি হয়ে ছিল।

এটি এখন সরাসরি আঞ্চলিক সরকারের এখতিয়ারের অধীনে লাসা যার রাজধানী। যার সীমান্তে চীন, ভারত, বার্মা ও পাকিস্তান।

রাঙামাটি, খাগড়াছরি, বান্দর বনে আদীবাসী দাবীদারদের অধিকাংশ চীন ও বার্মা ও ত্রিপুরার অনুপ্রবেশ কারী উপজাতী গোষ্ঠী। তাদের অস্ত্র সরবরাহও রাখাইন, চীন ও ত্রিপুরা।  তারা নিজেকে তাই আদিবাসী দাবী করে। বাঙালী স্বীকার করে না। রুহীঙা অনুপ্রবেশ মাস্টার পরিকল্পনা সে ধারাবাহিক তারই একটি অধ্যায়। আমাদের প্রকৃত পাহাড়ী উপজাতী গোষ্ঠিরা হিংস্র নয় এমন কি বাঙালী হতে আলাদা দাবীও করে না। তাদের উস্কানী দেয় চীনা, রাখাইন ও ত্রিপুরা হতে অনুপ্রেবেশ কারী উপজাতী গোষ্ঠি।

এবার যদি এমন হয় বাংলাদেশের পালিয়ে যাওয়া এবং স্বেচ্ছায় নির্বাসীত আওয়ামী সরকার তিব্বতের দালাইলামের মত অরুনাচলে নির্বাসিত না হয়ে ত্রিপুরায় নির্বাসিত অস্থায়ী সরকার গঠন করে বার্মার পৃষ্ঠ পোষকতায় রাখাইন হয়ে রাঙ্গামাটি বান্দরবন খাগরাছড়ি কক্সবাজার নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থায় একটি স্বায়ত্ব সাশিত প্রদেশিক রাজ্য গঠনের পরিকল্পনা করে তখন বাংলার নতুন এক অধ্যায় মানচিত্রে স্থান করে নিবে।

এসব কিছু তিব্বতের ইতিহাস থেকে লিখা মাত্র।  নির্ভরযোগ্য কোন তথ্য বা সূত্রের সংশ্লিষ্টতা  নেই এতে।

Categories
My text

অন্তরে যা গোপন

নবীকে আল্লাহ বললেনঃ ‘তুমি অন্তরে যা গোপন করছিলে আল্লাহ তা প্রকাশ করে দিলেন (৩৩ঃ৩৭)” নবী কি এমন মনে মনে গোপন করছিলেন যা আল্লাহ প্রকাশ করে দিলেন ?
তৎকালীন আরবের লোকেরা পালিত পুত্রদের কে আপন পুত্রদের মতো মনে করতো এবং তাদের নামে পালিত পুত্রদের কে ডাকা হতো এমকি তারা তালাক প্রাপ্ত পালিত পুত্র বধু কে বিয়ে করতো না। আল্লাহ্ তাদের এই কুসংস্কার গুলি উল্লেখিত আয়াত গুলি নাজিলের মাধ্যমে বাতিল করে দিলেন।
এবার আসুন মূল প্রসঙ্গে যাই। যায়েদ রাঃ ছিল রাসূল সাঃ এর পালিত পুত্র। রাসূল সাঃ নিজে আগ্রহী হয়ে তাঁর আপন ফুপাত বোন জয়নব রাঃ কে জায়েদের সাথে বিয়ে দেন। কিন্তু তাদের বৈবাহিক জীবন সুখকর ছিলনা। ফলে আল্লাহ্ সিদ্ধান্ত নিলেন যায়েদ রাঃ সাথে জয়নব রাঃ বিবাহ বিচ্ছেদে ঘটিয়ে জয়নব রাঃ কে রাসূল সাঃ এর সাথে বিয়ে দিয়ে আরবের কুসংস্কারটি বাতিল করা, কারন এর পর আর নবী আসবেনা তাই আল্লাহ্ নবীর মাধ্যমে এই কুসংস্কারটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিলেন। রাসূল সাঃ কে আল্লাহ্ গোপনে জয়নব রাঃ সাথে তাঁর বিয়ের কথা যানালেন। কিন্তু প্রচলিত সামাজিকতার কারনে বিষয়টি তাঁর কাছে বিব্রতকর মনে হলো। ফলে যায়েদ রাঃ যখন রাসূল সাঃ এর কাছে এসে জয়নব রাঃ কে তালাক দেওয়ার কথা যানাল তখন রাসূল সাঃ প্রচলিত সামাজিকতার বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বল্লেন “তোমার স্ত্রীকে নিজের কাছে রেখে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর’'(৩৩ঃ৩৭) কারন যদি যায়েদ রাঃ জয়নব কে তালাক না দেয় তবে তাকে আর জয়নব রাঃ কে বিয়ে করতে হবে না, ফলে সমাজের লোকদের কটু কথা শুনতে হবে না। কিন্তু রাসূল সাঃ এর এমন আচরনে জবাবে বল্লেন “হে নবী, আল্লাহকে ভয় কর এবং কাফির ও মুনাফিকদের আনুগত্য করো না(৩৩ঃ১)। আল্লাহ আরো যানিয়ে দিলেন যে সকল নবীরা তার বিধান পালনে অঙ্গীকারা বদ্ধ ফলে আল্লাহ্ রাসূল সাঃ কে সেই অঙ্গীকারা বদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন “আর স্মরণ কর, যখন আমি অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম নবীদের থেকে এবং তোমার থেকে, নূহ, ইবরাহীম,মূসা ও মারইয়াম পুত্র ঈসা থেকে। আর আমি তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম। (৩৩:৭)

আল্লাহ্ যখন দেখল রাসূল সাঃ তাঁর গোপন নির্দেশটি পাশকাটিয়ে যায়েদ রাঃ কে বুঝাচ্ছে তখন আল্লাহ্ গোপন নির্দেশটি কিতাবী ওহীর মাধ্যমে প্রকাশ করে দিলেন।—-

তুমি অন্তরে যা গোপন রাখছ আল্লাহ তা প্রকাশকারী এবং তুমি মানুষকে ভয় করছ অথচ আল্লাহই অধিকতর হকদার যে, তুমি তাকে ভয় করবে; অতঃপর যায়েদ যখন তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম, যাতে পালক পুত্রদের স্ত্রীদের ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে; যখন তারা তাদের স্ত্রীদের সাথে বিবাহসম্পর্ক ছিন্ন করে। আর আল্লাহর নির্দেশ কার্যকর হয়ে থাকে।(আহযাব ৩৩:৩৭)
ফুফাতো বোন জয়নবের প্রতি আসক্তি ছিল কি নবীর? না কি পুত্র বধুর রুপে প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছিল? হাদীস বেত্তারা এমনি বুঝাতে চেয়েছে অন্তরে গোপন রাখার বিষয়কে। এতে করে অনুমানের ভিত্তিতে রাসুলের চরিত্রে তারা কালিমা লেপন করেছে বরং।

প্রকৃত ঘটনা রাসুল তাঁর সুন্দরী ফুফাত বোন কে পালিত পুত্রের সাথে নিজে বিয়ে দেন। এই বিয়ে যখন কোন ক্রমেই টিকতেছিল না তখন রাসুল হতবিহ্বল হয়ে পড়লেন এ ভেবে যে লোকে কি বলবে? আমি রাসুল হয়ে যে বিয়ের প্রস্তাব কারী সে বিয়ে যদি ভেঙে যায় আমি কি জবাব দিব সমাজের কাছে? সমাজের লোকেরাই বা কি মনে করবে তবে কি আমি আল্লাহর সত্য নবী নই? এমন প্রশ্ন গুলোই তিনি অন্তরে গোপন করতেছিলেন।

Categories
My text

রাসুল সাঃ কে কটুক্তি

রাসুলের অপমানে দিল্লী মার্চ শয়তানের ইন্দনঃ

শেষ নবীর জীবদ্দশায় নবীকে বহুভাবে আক্রমন করা হয়েছে, সমালোচনা ও কটুক্তি করা হয়েছে – কুরআন কোথাও বলে না এজন্যে রাসূলকে কোন প্রতিশোধ নিতে ।

বরং বলা হয়েছে, তোমাকে যেমন মিথ্যা প্রতিপন্ন করা হচ্ছে, একই ভাবে পূর্ববর্তী নবী-রাসূলগণকেও মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করা হয়েছিল তুমি ধৈর্য্য ধারণ কর। ” আর তারা যদি তোমার প্রতি মিথ্যারোপ করে তবে বলো – আমার কাজ আমার জন্য, আর তোমাদের কাজ তোমাদের জন্য, তোমরা দায়ী নও আমি যা করি সে বিষয়ে আর আমিও দায়ী নই তোমরা যা করো সে বিষয়ে।(১০:৪১)

অতএব তুমি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও এবং অপেক্ষা করো, তারাও অপেক্ষা করুক।(৩২ঃ৩০)

নিশ্চয় তোমার পূর্বেও রাসুলদের নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ/সমালোচনা ও কুটোক্তি করা হয়েছিল, তারপর তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করতো তাই তাদেরকে পরিবেষ্টন করলো।’ (২১/৪১)

সুতরাং কিতাবাল্লাহ্ অনুযায়ী আমরা দেখতে পাচ্ছি সকল যুগেই রাসূলগণ ঠাট্টা-বিদ্রুপ, সমালোচনা ও কুটোক্তি, মিথ্যারোপ আর অসঙ্গত আচরণের সম্মুখীন হয়েছিলেন।

নবী-রাসুলদের নিয়ে সমালোচনা ও কুটোক্তি সম্পর্কে কুর’আনের অনেক আয়াত আছে, তবে সমালোচনা ও কুটক্তির জন্য শাস্তির কোনো বিধান দেয়া হয়নি, একটি আয়াতও নেই।

সমালোচনা ও কুটোক্তির জবাবে নবী ও বিশ্বাসীদের প্রতি উপদেশ ছিলো যুক্তি ও ন্যায়বিচারের সাথে কথা বলার, অজ্ঞদের উপেক্ষা করার, শত্রুর প্রতিও শান্তি সূচক সম্বোধনের, ধৈর্যধারণের ও সর্বোপরি আল্লহ’র উপর সোপর্দ করার।

পরিতাপের বিষয় অন্ধ মোল্লাতন্ত্র কুর’আনের শিক্ষা ভুলে নবীর নামে নানা বিভ্রান্তিকর হাদিসের রেফারেন্স দেখিয়ে ইসলাম ও নবীর সম্মান হেফাজতের কথা বলে পালটা ঘৃণা ও সহিংস বিক্ষোভকে বৈধতা দিয়ে থাকে, যা কিনা কুর’আনের শিক্ষা তথা আল্লহ’র নির্দেশের পরিপন্থী।

রাসূলের প্রতি আপনার যে ভালোবাসা – এমন তো না যে তা আল্লাহর চেয়ে বেশী। তাকে সে সময়েও মানুষ গালি দিয়েছে, কুটোক্তি করেছে -এখনো দেয়। তো হয়েছেটা কী ?

আপনি যদি তাকে ভালোবেসে তার শিক্ষা জীবনে ইমপ্লিমেন্ট করতে পারেন – তাহলে তাকে গালি দেওয়া মানুষটাও একদিন তার ভুল বুঝবে – এই বিশ্বাস যদি আপনার মধ্যে না থাকে – আপনি সম্ভবত রসূলকে চিনতেই পারেন নি।

রাসূল সাঃ এর কটুক্তিকারীকে হত্যার বিধান কে দিল? আল্লাহ্ অমুসলিদের দেবতা কে গালি দিতে নিষেধ করেছেন। করান এর ফলে তারা অজ্ঞতাবশত আল্লাহ্ কে গালি দিবে। কিন্তু আল্লাহ্ বলেননি যদি তারা গালি দেয় তবে হত্যা করো।

কুরআনের এতোসব সুস্পষ্ট বিধান বিবৃত থাকার পরও কেউ আল্লাহর রাসূলের নাম ভাঙ্গিয়ে ‘বুখারির সহিহ হাদিসের’ দোহাই দিয়ে বলে উঠবে – মুরতাদকে হত্যা করার দলিল হচ্ছে – নবী (সা:) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ধর্ম ত্যাগ করে তাকে হত্যা কর” – এর সবই বাতিল – এগুলো শয়তানি চক্রের তৈরি করা মনগড়া কথা মালা। এসব জমিনে ফ্যাসাত সৃষ্টিকারী শয়তানের অপকৌশল।

Categories
Innovator

আকাবির

এদেশে জরুথিষ্টগন নিজেকে আকাবির দাবী করতে গর্ববোধ করে। কিন্তু কোরানে আকাবির শব্দটা এসেছে সূরা আনআমের ১২৩ আয়াতে। এখানে অপরাধীদের প্রধানকে আকাবির হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছে।

আমাদের জরুগন প্রকৃতই অপরাধীদের প্রধান বলেই নিজের অজান্তেই এ লকব বেছে নিয়েছে।  দেখা যাক আয়াতটি।

এইরূপে আমি প্রত্যেক জনপদে সেখানকার অপরাধীদের প্রধানকে( আকাবিরকে)  সেখানে চক্রান্ত করার অবকাশ দিয়াছি ;৬:১২৩
وَكَذٰلِكَ جَعَلْنَا فِىْ كُلِّ قَرْيَةٍ اَكٰبِرَ مُجْرِمِيْهَا لِيَمْكُرُوْا

অনুরুপ চার প্রধান এর রুপান্তর নিয়ে ভাবলে  প্রমান হয় আমাদের দেশের আকাবিরগন কত বড় মাপের আকাবির।

জিব্রাঈল- আজরাঈল- মিকাঈল -ইস্রাফিল  ১৫০০ বছর
লুত -উযযা- মানত -হাবল  —- ৩০০০ বছর আগে ছিল।
ব্রহ্মা – বিষ্ণু – শিব- মহেশ্বর  — ৫০০০ বছর আগে ছিল।
লুহ – শিহা – শেহেম- হেরন — ১০০০০ বছর আগে ছিল।

এরা পারসিয়ান। এই লুহ শিহা-শেহেম-হেরনের অনুসারীরা  আজো তাদের আগের মতাদর্শে ফিরিয়ে নিতে নানা কৌশল করে ইসলাম ধর্মে জাল পেতে রেখেছে। তাদের দেবতা আমুন কে যেন ভক্তি ভরে দৈনন্দিন স্মরন করে  সে জন্য ফাতেহা পাঠ শেষে আমিন (বিশ্বস্থ) বলার কৌশল ঢুকিয়ে দিয়েছে। সালাতকে সিয়ামকে তাদের মাতৃভাষায় রুপান্তর করে  নামাজ, রোজার রুপ দিয়েছে। সূর্যের আরাধনার সাথে মিল রেখে অর্চনা করার  জন্য। সিয়ামকে রোজা বলে উপবাসের মধ্যে সীমিত করে দিয়েছে।

এই আমিন জোরে না আস্তে বলা নিয়ে আবার পন্ডিত গন মহা আন্দোলনে রত। অথচ এতটুকু বোধগম্য হয় না অনুকরনকারীদের যে এই আমিন শব্দটা সূরায় আছে কি না তা যাচাই করে দেখে নি কোন দিন। আর এই আমিন শব্দের অর্থই বা কি?  তাও ভাবার সুযোগ হয় নি আকাবিরদের।।আমিন কোরানের ভাষায় বিশ্বস্ত।

Categories
My text

হাদীসের সালাত

কোরানে ৮২ বার সালাতে কথা বলে গুরুত্ত আরোপ করা হয়েছে।কিন্তু প্রচলিত আনুষ্ঠানিক সালাতকে নয়। বরং প্রচলিত আনুষ্ঠানিক  নামাজ কোরানে বর্ণিত সালাতকে নিন্মোক্ত ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে। যাচাই করে একটু দেখে নেই কি সেগুলি।

১. যদি প্রচলিত হাদিস ভিত্তিক নামাজ কুরআনের সালাতের মত হতো, তবে কেন কুরআন এমন নামাজের সমালোচনা করে, যেখানে মনোযোগহীনতা, Robotic আচরণ এবং লোক দেখানোর প্রবণতা রয়েছে? কুরআন তো সালাতের সময় সজ্ঞানে থাকা এবং বাণী বুঝে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দেয় (৪:৪৩, ৪:১৪২, ৫:৯১, ৮:৩৫)।

২.সালাতের উদ্দেশ্য আল্লাহর স্মরণ এবং বাস্তব জীবনে তা কার্যকর করা , তাহলে কেন প্রচলিত নামাজে কুরআনের বাইরে থাকা বিভিন্ন দোয়া ও প্রশংসা উচ্চারণ করতে হয়?

৩. জোহর, আসর, মাগরিব ইত্যাদি নামাজের নাম কুরআনে নেই কেন?

৪. বিতর নামাজকে বাধ্যতামূলক বলা হয়, অথচ কুরআনে তার কোন উল্লেখ নেই কেন?

৫. নামাযের পুর্বে প্রচলিত আযানের ধরণ কুরআনে নেই?

৬. ওজুর সময় তিনবার করে অঙ্গ ধোয়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?

৭. নামাজের সময় পুরুষ ও নারীদের মাথা ঢাকার বাধ্যবাধকতা কুরআনে নেই?

৮. নামাজের জন্য জায়নামাজ ব্যবহারের নির্দেশনা কুরআনে নেই?

৯. কাবা ঘরের দিকে সিজদা করার কথা  কুরআনে নেই?

১০. “আল্লাহু আকবার” শব্দটি, যা বারবার উচ্চারণ করা হয়, কুরআনে তা নেই? (কুরআনে আল্লাহকে বলা হয়েছে আল-কাবির, আকবার নয়)।

১১. প্রচলিত নামাজে যে সানা পড়া হয়  কুরআনে তার কোন নির্দেশনা নেই?

১২. প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?

১৩. সূরা ফাতিহা পড়ার পর “আমিন” বলার নির্দেশনা কুরআনে নেই?

১৪. জোহর এবং আসরের নামাজ নীরবে পড়া হয়, যা ১৭:১১০ আয়াতের পরিপন্থী?

১৫.”সুবহানা রাব্বি আল-আ’লা” এবং “সুবহানা রাব্বি আল-আযিম” বলার নির্দেশনা কুরআনে নেই?

১৬. “সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলার নির্দেশনাও কুরআনে নেই?

১৭. রাকাত, রাকাতের সংখ্যা এবং নামাজের অবস্থানের ক্রম কুরআনে উল্লেখ নেই?

১৮. প্রচলিত  নামাজের শেষে আত্তাহিয়াতু পড়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?

১৯. তাশাহহুদ পড়ার সময় তর্জনী উঠানোর নির্দেশনা কুরআনে নেই এটি বানানো।

২০.  নামাজে ইবরাহিম, মুহাম্মদ এবং তাঁদের পরিবারকে দুরুদ পাঠানোর নির্দেশনা কুরআনে নেই?

২১.প্রচলিত নামাজে যে দোয়া মাসুরা পড়া হয়  কুরআনে তার কোন নির্দেশনা নেই?

২২. বিতরের নামাজে যে দোয়া কুনুত পড়া হয়  কুরআনে তার কোন নির্দেশ নেই?
২৩.নামাজ শেষে ডান ও বাম দিকে সালাম দেওয়ার নির্দেশনা কুরআনে নেই?

২৪. যদি আনুষ্ঠানিক নামাজ কুরআনের সালাতের মতই  হতো, তাহলে কেন কুরআন কাজা নামাজের ধারণা প্রত্যাখ্যান করে? বরং কুরআন বলে, missed সালাত শুধুমাত্র সংশোধনী মূলক কাজের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা যায়, নামাজ আদায়ের মাধ্যমে নয় (১৯:৫৯-৬০)।

তবে এই আনুষ্ঠানিক সালাতের ফরমেট যেই প্রচলন করুক না কেন তা উড়িয়ে দিচ্ছি না, এভাবে সালাত আদায়ে একটি দীর্ঘদিনের এবং বাপ দাদাদের নিকট হতে দেখে আসছি বলে একটি প্রশান্তিও মিলে নিজের মধ্যে।

কিন্তু কোরানে বর্নিত রবের সন্তুষ্টির জন্য সালাত এটি নয় তা কোরান থেকে প্রমান হয়।  তাই আমি নিজে প্রচলিত প্রথার সরাসরি বিরোধিতা না করে পাশাপাশি রবের বর্নিত সালাতকে নিজের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করার আহ্বান জানাই।মুমিনের সালাত সর্বক্ষন।

যাহারা তাহাদের সালাতে সর্বক্ষণ প্রতিষ্ঠিত, (৭০ঃ২৩) الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ  دَآٮِٕمُوْنَ

এত্র আয়াতে সলাত সর্বক্ষন হলে আপনি তাকে পাঁচ ওয়াক্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কোন সুযোগ আছে কি?

সালাত কোরান পাঠের একটি অনুষ্ঠান। তাই  সে সালাতে যে বিষয় পাঠ করবে বাস্তব জীবনে সে অনুযায়ী চলতে হবে। এটিই রবের নির্দেশিত সালাত। তাই আল্লাহ বলেনঃ

হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হইও না, যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার, (৪:৪৩)

এবার আল্লাহ তিরস্কার করে এমন সব সালাত আদায়কাীদের উদ্দেশ্যে বলেনঃ

কাবাগৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর। (৭:৩৫)

এদের পর এমন নালায়েক লোকেরা এদের স্থলাভিষিক্ত হলো যারা নামায নষ্ট করলো এবং প্রবৃত্তির কামনার দাসত্ব করলো। তাই শীঘ্রই তারা গোমরাহীর পরিণামের মুখোমুখি হবে। (১৯:৫৯)

কুরআনে সালাত শব্দটির প্রয়োগ এবং আরবি ভাষারীতি অনুসারে সালাত শব্দটির যেসব অর্থ পাওয়া যায় তা হলো:

(১) নিবিড় অনুসরণ – To Follow Closely
(২) সংযোগ – Connection
(৩) যোগাযোগ –

৪) প্রার্থণা /দোয়া – Prayer

Categories
Adventure

প্রশ্ন জাগে বাংলাদেশ

 Nine Question ?

১) শেখ হাসিনা পদত্যাগ পত্র কার বরাবর জমা দিয়েছেন, সেনা প্রধান না রাষ্ট্রপতি ?

২) রাষ্ট্রপতি বরাবর জমা দিলে জাতীর উদ্দেশ্যে পদত্যাগের বিষয় রাষ্ট্রপতি ভাষনে জানানোর কথা। চুপ কেন?

৩) হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর সরকারিভাবে সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান প্রথম দেশ বাসীকে জানান বাংলাদেশ টেলিভিশনে ভাষণ দিয়ে।

৪) সেনা প্রধান আবার মার্কিন সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার খবর আমার জানা ছিল না।

৫) পদত্যাগের কথা রাষ্ট্রপতির ভাষনে বলার কথা। তিনি আজো কিছু বলেন নাই।

৬) হাসিনা যদি পদত্যাগ করেই থাকেন তাহলে তাঁকে দেশ ছাড়ার অনুমতি কে দিল? তিনি পদত্যাগ করে থাকলে প্রশাসনের আর তাঁর নির্দেশ শোনার কথা নয়।

৭) না কি হাসিনা পদত্যাগ না করে প্রধানমন্ত্রী হিসাবেই সেনা প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে ভারতে পৌঁছে দিতে। তাই সেনা প্রাধান সেই নির্দেশ পালন করতে বাধ্য হয়েছেন?

৮) পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ সেনা প্রশাসন মানতে বাধ্য নয়। তাহলে হাসিনাকে বিমান বাহিনীর বিমানে দেশ ছাড়ার অনুমতি কে দিয়েছিল?

৯) হাসিনাকে বহনকারী বিমানটি বাংলাদেশের আকাশ সীমায় থাকাকালে সেটির ট্রান্সপন্ডার বন্ধ করা ছিল কেন?

Categories
Innovator

পঞ্চ স্তম্ভ

পঞ্চ স্তম্ভে সীমাবদ্ধ রাখা একটি কৌশলঃ 

এজিদের পঞ্চ স্তম্ভ থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে তুমি এজিদের মনোনীত ইসলামের আনুগত্য করে চল। ইসলামের আবির্ভাব পঞ্চ স্তম্ভের জন্য ছিল না। বরং জমিনে ন্যায়ের হুকামাত প্রতিষ্ঠার জন্য এসেছিল। আল্লাহ বলেনঃ কুন্তুম খাইরি উখরিজাতি মিনান নাস, তামারুনা বিল মারুফ ওয়া নাহিয়ানিল মুনকার। (তোমাদের মানুষের মধ্য হতে ছেঁকে শ্রেষ্ঠ জাতি হিসাবে নির্বাচন কর হলো এজন্য যে,  তোমরা সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎ কাজে বাধা প্রোয়গ করবে)  

আয়াতে অনুরোধ করতে বলেন নাই। অর্থাৎ আদেশ বা নিষেধ না মানলে শাস্তি প্রয়োগে বাঁধা দান করতে বলেছেন।  তার মানে হুকুমাত এসে যায়।

এজিদ কিন্তু____>>>

১) কালেমা মানতো
২) নামাজ পড়তো
৩) রোজা পালন করতো
৪) হজ্জব্রতও করতো এমন কি
৫) যাকাত ও আদায় করতো।

শুধু জমিনে হুকুমাত কায়েমে ছিল বিরোধীতা। সে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলকেই জিহাদ মনে করত।

হোসেনী ইসলাম আর এজিদী ইসলামের পার্থক্য এতটুকই। দুজনেই মুসলমান। আপনি কোন তাবুর মুসলমান নিজেই সনাক্ত করে নিন নিজেকে। এজিদের তাবু আগেও বড় ছিল এখনো বড়। এ জন্য এজিদের অনুসারীকে মুস্তাকবীর আর হোসেনের তাবুর অনুসারীদের মুস্তাদআফ বলা হয়।

কোরানে আল্লাহ নিজে মুস্তাদআফদের ভালবাসার কথা জানান সর্বত্র।

Categories
Innovator

৯ অক্টোবর ৬৮০ খৃঃ

৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী হোসেনের ক্যাম্পের দিকে অগ্রসর হয়। হুসাইন আব্বাসকে পাঠালেন ইবনে সা’দকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে, যাতে তারা বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। ইবনে সা’দ এই অবকাশ দিতে রাজি হলেন।

হুসেন তার লোকদের বলেছিলেন যে তারা সবাই তার পরিবারের সাথে রাতের আড়ালে চলে যেতে। , কারণ তাদের বিরোধীরা কেবল তাকেই চায়। খুব কম লোকই এই সুযোগটি উপভোগ করেছে।

প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা করা হয়েছিল: তাঁবুগুলিকে একত্রিত করে একে অপরের সাথে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল এবং তাঁবুর পিছনে একটি খাদ খনন করা হয়েছিল এবং আক্রমণের ক্ষেত্রে আগুন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত কাঠ দিয়ে ভরা হয়েছিল। এরপর হুসাইন ও তার অনুসারীরা বাকি রাত নামাজে কাটিয়ে দেন।

হুসাইনকে কুফা শহরের বাসিন্দারা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, একটি শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর, সেখানে এসে উমাইয়াদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মান উত্থাপন করতে। কিছু অনুকূল ইঙ্গিত পাওয়ার পর, হুসাইন আত্মীয় ও অনুসারীদের একটি ছোট দল নিয়ে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা হন।, তিনি পথিমধ্যে কবি আল-ফরাজদাকের সাথে দেখা করেছিলেন এবং তাকে বলা হয়েছিল যে ইরাকিদের হৃদয় তার জন্য, কিন্তু তাদের তলোয়ার গুলি উমাইয়াদের জন্য।

খলিফার পক্ষ থেকে ইরাকের গভর্নর হুসাইন ও তার ছোট দলকে গ্রেফতার করতে ৪,০০০ লোক পাঠান।

তারা কারবালা (অক্টোবর ৬৮০) নামক স্থানে ইউফ্রেটিস নদীর তীরের কাছে হুসাইনকে আটকে রাখে । হোসাইন আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করলে তাকে এবং তার সহকারীদের হত্যা করা হয় এবং হুসাইনের মাথা দামেস্কে ( বর্তমানে সিরিয়ায়) ইয়াজিদের কাছে পাঠানো। হয়। এজিদের তাবুতে তখন ত্রিশ হাজার সৈন্য। হোসেনর তাবুতে ৭২ জন। নারী বৃদ্ধ শিশু সহ ১৫০ জনের মত।

৬৮০ খৃঃ এ কারবালার যুদ্ধে আলেমগন দুই ভাগে বিভক্ত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ সব আলেম এজিদের তাবুতে হাতে গুনা নাম মাত্র কয়েকজন হোসেনের তাবুতে। হোসেনের বাহিনী পরাজিত হয়, এজিদের বাহিনী বিজিত হয়। এর পর আজ পর্যন্ত হোসেনের তাবুর কোন আলেম গড়ে উঠতে পারেনি।

এজিদের আলেম সমাজ আজো সারা বিশ্বে সায়লব হয়ে আছে। সে সময়ে আপনি বেচে থাকলে কোন তাবুতে অংশ গ্রহন করতেন ? নিশ্চয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দলে।। যা এখনো করছেন।।হোসনের খন্ডিত মস্তক সামনে রেখে এজিদ বলেছিল,

” আজ যদি আমার পুর্ব পুরুষরা বেঁচে থাকত তবে তারা দেখে খুশি হত বদর প্রান্তের প্রতিশোধ আমি কি ভাবে নিয়েছি।

হোসেনের তাবুর আলেম আজ পর্যন্ত জমিনে আর দেখা যায়নি, যা আছে সব এজিদের পৃষ্ঠপোষক আলেম।। এজিদ যেমন ইসলামী দল দাবী করে কারবালার যুদ্ধ করেছে বর্তমান ইসলামী দলের দাবীদারও তেমনি ইসলাম কায়েমের দাবী তুলে জনতাকে ধোকা দিয়ে নিজ ক্ষমতা দখলে প্রহসন করে চলছে।।

Categories
Innovator

এজিদের তাবু

এজিদের তাবু ৬৮০ খৃস্টাব্দ

৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী হোসেনের ক্যাম্পের দিকে অগ্রসর হয়। হুসাইন আব্বাসকে পাঠালেন ইবনে সা’দকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে, যাতে তারা বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। ইবনে সা’দ এই অবকাশ দিতে রাজি হলেন।

হুসেন তার লোকদের বলেছিলেন যে তারা সবাই তার পরিবারের সাথে রাতের আড়ালে চলে যেতে। , কারণ তাদের বিরোধীরা কেবল তাকেই চায়। খুব কম লোকই এই সুযোগটি উপভোগ করেছে।

প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা করা হয়েছিল: তাঁবুগুলিকে একত্রিত করে একে অপরের সাথে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল এবং তাঁবুর পিছনে একটি খাদ খনন করা হয়েছিল এবং আক্রমণের ক্ষেত্রে আগুন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত কাঠ দিয়ে ভরা হয়েছিল। এরপর হুসাইন ও তার অনুসারীরা বাকি রাত নামাজে কাটিয়ে দেন।

হুসাইনকে কুফা শহরের বাসিন্দারা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, একটি শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর, সেখানে এসে উমাইয়াদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মান উত্থাপন করতে। কিছু অনুকূল ইঙ্গিত পাওয়ার পর, হুসাইন আত্মীয় ও অনুসারীদের একটি ছোট দল নিয়ে কুফার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ঐতিহ্যগত বিবরণ অনুসারে, তিনি পথিমধ্যে কবি আল-ফরাজদাকের সাথে দেখা করেছিলেন এবং তাকে বলা হয়েছিল যে ইরাকিদের হৃদয় তার জন্য, কিন্তু তাদের তলোয়ারগুলি উমাইয়াদের জন্য।

খলিফার পক্ষ থেকে ইরাকের গভর্নর হুসাইন ও তার ছোট দলকে গ্রেফতার করতে ৪,০০০ লোক পাঠান। তারা কারবালা (অক্টোবর ৬৮০) নামক স্থানে ইউফ্রেটিস নদীর তীরের কাছে হুসাইনকে আটকে রাখে।হোসাইন আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকার করলে তাকে এবং তার সহকারীকে হত্যা করা হয় এবং হুসাইনের মাথা দামেস্কে (বর্তমানে সিরিয়ায়) ইয়াজিদের কাছে পাঠানো। হয়। এজিদের তাবুতে তখন ত্রিশ হাজার সৈন্য। হোসেনর তাবুতে ৭২ জন। নারী বৃদ্ধ শিশু সহ ১৫০ জনের মত।

৬৮০ খৃঃ এ কারবালার যুদ্ধে আলেমগন দুই ভাগে বিভক্ত হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ সব আলেম এজিদের তাবুতে হাতে গুনা নাম মাত্র কয়েকজন হোসেনের তাবুতে। হোসেনের বাহিনী পরাজিত হয়, এজিদের বাহিনী বিজিত হয়। এর পর আজ পর্যন্ত হোসেনের তাবুর কোন আলেম গড়ে উঠতে পারেনি।

এজিদের আলেম সমাজ আজো সারা বিশ্বে সায়লব হয়ে আছে। সে সময়ে আপনি বেচে থাকলে কোন তাবুতে অংশ গ্রহন করতেন ? নিশ্চয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দলে।। যা এখনো করছেন।।

en_USEnglish
Powered by TranslatePress
Verified by MonsterInsights