Categories
My text

শর্ট নোট দাওয়াতের জন্য

বাপ দাদা — ( বাকারা ২:১৭০)
অধিকাংশ — (আনআম ৬:১১৬)
হুজুরগন — (আরাফ ৭ আয়াত ৩)
মুমিনগন সাবধান –(তাওবাহ ৯, আয়াত ৩৪)
হাদীসের — (জাসিয়া ৪৫:৬)
অসার হাদীস — (লোকমান ৩১:৬)
উত্তম হাদীস – (যুমার ৩৯, আয়াত ২৩)
মিথ্যে হাদীসে কেন বলে — ( লোকমান ৩১, আয়াত ৬)
যারা চলে গেছ- (বাকারা ২ঃ১৩৪)(আহযাব ৩৩ঃ ৬২)
ইহুদী খৃষ্টান ও জান্নাত ( মায়িদা ৫ আয়াত ৬৯)
কোরান সহজ -(ক্বামার ৫৪ঃ১৭) (৫৪:২২,৫৪ঃ৩২, ৫৪:৪০)
কেন আরবীতে — (হামীম সেজদাহ ৪১,আয়াত ৪৪)
কোরান হেদায়েতের পথ — (বনী ইসরাঈল ১৭, আয়াত ৯)
যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চায় — (মায়িদাহ ৫ঃ১৬)
অনুসরন কাকে করবে – ( ইয়াসিন ৩৬ আয়াত ২১)
বিচার দিবসে অভিযোগ — (ফুরকান ২৫, আয়াত ৩০)
যে বিষয়ে জ্ঞান নেই — (বনী ঈসরাইল ১৭, আয়াত ৩৬)
কোরান একমাত্র — [ আলে ইমরান, ১৯]
গভীর চিন্তা করা – (মুহাম্মদ ৪৭,আয়াত ২৪)
কিতাবের কোন জ্ঞান নেই – (বাকারা ২,আয়াত ৭৮)
মুসলমান হয়ে কবরে- (ইমরান ৩,আয়াত ১০২)
সৎকর্ম জান্নাত — (বাকারা ২:৮২) (১৮:১০৭)
পাখিরাও সালাত – (আন নূর২৪, আয়াত ৪১)
পুর্ব পশ্চিমে — ( বাকারা ২,আয়াত ১৭৭)
সালাত সর্বক্ষন- (মাআরিজ ৭০,আয়াত ২৩)
সালাত ছিল কাবায় শিশ– (আনফাল ৮,আয়াত ৩৫)
সালাত নষ্ট করল — ( মারিয়ম ১৯,আয়াত ৫৯)
সালাত কখন হতে — মিরাজ ভ্রমণ (১৭ঃ১)
ইব্রাহীম নবীর সালাত — ১৪:৪০
হে আমার প্রতিপালক! আমাকে সালাত কায়েমকারী কর এবং আমার বংশধরদের মধ্য হইতেও। হে আমাদের প্রতিপালক! আমার প্রার্থনা কবূল কর। ১৪:৪০

সব নবীর সালাত —
নেশা গ্রস্থ — ( নিসা ৪, আয়াত ৪৩)
বিভ্রান্ত করার জন্য –( লোকমান ৩১:৬)
বিভিন্ন উপমা দ্বারা –(কাহাফ ১৮, আয়াত ৫৪)
সরল পথ কাকে দেখাবে – (যুমার ৩৯,আয়াত ১৮)
সবাই ক্ষতির মধ্যে-
ঈমান কিসে — ( বাকারা ২, আয়াত ১৭৭)
আমরা বলি সরল পথ দেখাও – (ফাতেহা, আয়াত ৬)
সরল পথ কাকে বলে – (বাকারা ২, আয়াত ৩-৬)
সরল পথ কাদের দেখান – ( আনআম ৬,আয়াত ১২৫)
কাদের প্রতি দয়া পরবস হবেন –(আনআম ৬ঃ ১৫৫)
এই পথই আমার সরল পথ -(আনআম ৬,আয়াত ১৫৩)
বিচার দিবসে বলবে –( সাফফাত ৩৭ আয়াত ৩২)
আল্লাহর ভালবাসেন কাদের -( মরিয়ম ১৯,আয়াত ৯৬)
হারাম হালাল – (আরাফ ৭ঃ ৩৩)
গন্ধম কি –(আরাফ ৭, আয়াত ২০)
পর্দার —(নুর ২৪:৩১) (আহযাব ৩৩ঃ৫৯)
আল্লাহ সম্বন্ধে বিতান্ডা করে — ( হাজ্জ ২২, আয়াত,২৮)
ঘার বাঁকায়ে ঝগড়া করে — (
তোমরা তাহাদের মত হয়ো না –(ইমরান ৩,আয়াত ১০৫)
কাদের প্রতি দয়া পরবস হবেন –(আনআম ৬ঃ ১৫৫)
দুনিয়াতে অন্ধ —
না জেনে অনুসরন শয়তানের — (হাজ্জ ২২,আয়াত ৩)
মানুষ খলিফা —
কোরান তাদের জন্য — (যুমার ৩৯,আয়াত ১৮)
মুমিনের লক্ষন —( যুমার ৩৯, আয়াত ২৩)
কোরানের অনুসারী –(সেজদাহ ৩২, আয়াতঃ ১৫)
কাফেরের লক্ষন — ( যুমার ৩৯,আয়াত ৪৫)
কোরান বিমুখ — (জাসিয়া ৪৫,আয়াত ৮)
সমান নয় অন্ধ আর (মুমিন ৪০ আয়াত:৫৮)
দুই দল — (আরাফ ৭, আয়াত: ৩০)
প্রত্যেক দলই নিজকে — (মুমিনিন ২৩,আয়াত ৫৩)
নিজ মতবাদে উৎফুল্ল — (রুম ৩০,আয়াত ৩২,)
মিথ্যে আশা ব্যাতিত কোরানের জ্ঞান –[ ২: বাকারা-৭৮]
যদিও তারা মনে করে — (কাহফ ১৮,আয়াত ১০৪ )
আল্লাহর নামে মিথ্যে– (নিসা ৪ঃ৫০)
সালাতে কি বলবো —( আনকাবুত ২৯ঃ১০৬)
তারা ঈমান এনে শিরক করে –(ইউছুফ ১২,আয়াত ১০৬)
তুমি আবৃত্তি কর কিতাব হইতে যাহা (আনকাবুত২৯ঃ৪৫)
সালাত জান্নাতের চাবি — মিথ্যে এক হাদীস।
রাব্বানীগন কেন সত্য — (মায়িদাহ ৫, আয়াত ৬৩)
ঐ আলেম জাহান্নমী-
আগুনখোর — (বাকারা ২, আয়াত ১৭৪)
কেউ কারো বোঝা । – (আনআম ৬,আয়াত ১৬৪)
মানুষকে অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান (৯১ঃ৮)
বিচার দিবসে সালাত নয় ,– (১৭ঃ১৪)
যারা জানে এবং যারা জানে না;( জুমার আয়াত ৯ -১০)
তোমাদের মধ্যে মিথ্যা আরোপকারী রহিয়াছে। (৬৯ঃ৪৯)
আমরা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করিয়াছিলাম,(৩৭ঃ৩২)
ইহারা কুরআনের প্রতি ঈমান আনিবে না ( ১৫:১৩)
যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নাই — (১৭ঃ৩৬)
যে কোরান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়- (সাজদাহ- ৩২ঃ ২২)
রাসুল অভিযোগ করবেন — ( ফুরকান ২৫ঃ ৩০)
আল্লাহ স্যমক অবগত কে সৎপথে — ( কলম ৬৮ঃ৭)
কোরানের কথা শুনলে অন্যমনস্ক -(কলম ৬৮ঃ৫১)
তুমি যখন উহাদের পোষাক — ( মুনাফিকুন ৬৩ঃ ৪)
কেবল কাফিররাই আল্লাহ্‌র আয়াত সম্বন্ধে–। (৪০ঃ৪)
মরুবাসীদের মাঝে মুনাফেক — (তাওবাহ ৯ঃ১০১)
তাহারা তাই বলে – যাহা তাহারা করে না। (২৬:২২৬)
সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু? (ইয়াসন ৩৬:৬০)
সালাত বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কার্য হইতে।(২৯ঃ৪৫)
মানুষ কি মনে করে যে,( আনকাবুত ২৯ঃ ২)
সাজ সজ্জা — (আরাফ ৭ঃ ৩২)
এমন এক কিতাব যাহা পূর্ণজ্ঞান দ্বারা বিশদ ব্যাখ্যা । 7;52
অতঃপর ইহার বিশদ ব্যাখ্যার দায়িত্ব আমারই। 75:19
নিজেদের বোঝার সাথে অন্যের বোঝাও। (২৯ঃ১৩)
যদি কোন ফাসেক তোমাদের কাছে ( ৪৯ঃ ৬)
আজ তোমাদের জন্য দীন পূর্ণাংগ করিলাম (৫:৩)
আমি অজ্ঞদের অন্তভূুক্ত হওয়া থেকে “(২:৬৭)
তওবা তাহাদের জন্য নহে যাহারা (সূরা নেসাঃ ১৮)
যারা বিবেক বুদ্ধি খাটায় না,{১০:১০০}
যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই তার …{১৭:৩৬}
হে প্রশান্ত চিত্ত ! সূরা নম্বরঃ ৮৯, আয়াত নম্বরঃ ২৭
মানুষ মনে করে তাহারা সৎপথে পরিচালিত ৪৩:৩৭
আল্লাহ্‌কে ছাড়িয়া শয়তানকে অভিবাবক (৭:৩০)
তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও (২:৪৪)
আল্লাহ্ জ্ঞাত আছেন এবং তোমরা জ্ঞাত নও। (৩ঃ৬৬)
কেহ কাহারো বোঝা বহন করিবে না ( ১৭:১৫)
মেরাজ বিষয়ে (১৭:১)
তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর (১৭:১৪)
নবীদের মধ্যে মর্যদার তারত্ম্য (১৭:
রুহ সম্পর্কে প্রস্ন করে (১৭:৮৫)
একিন পর্যন্ত ইবাদত ( হিজর ৯৯)
দায়েমী সালাত (৭০: ২৩)
রাসুল প্রেরনের বিরতির পর এই রাসুল (৫:১৯)
সেদিন পিতা সন্তানের কোন উপকারে আসবে না
সন্তানও পিতার কোন উপকারে আসিবে না। (৩১:৩৩)
দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য; এরা একে অপরকে সকল বিষয়ে সমর্থন করে । (২৪:২৬)
কোন ফাসেক যদি ( ৪৯ :৬)
অচিরেই তোমাদেরকে এ কোরান বিষয়ে ( ৪৩:৪৪)
সালাম, কেমন হবে (৩৬:৫৮)
আমি যাহাকে দীর্ঘ জীবন দান করি (৩৬:৬৮)
তিনি উহাকে বলেন, ‘হও’, ফলে উহা হইয়া যায়।(৩৬:৮২)
যাহারা নিজেদের নিকট কোন দলীল – প্রমাণ ,(৪০:৩৫)
তুমি ফিরে আস তুমার রবের দিকে সন্তুষ্টু চিত্তে। (৮৯:২৮)
কুরআন আমি সহজ করিয়া দিয়াছি উপদেশ (৫৪:১৭)
অতঃপর ইহার বিশদ ব্যাখ্যার দায়িত্ব আমারই। (৭৫:১৯)
কোরআন মুমিনদের জন্য রহমত (১৭:৮২)
আমি কি উহাদেরকে কুরআনের পূর্বে কোন কিতা (৪৩:২১
ইহা তো আছে পূর্ববর্তী গ্রন্থে (৮৭:১৮)
ইব্‌রাহীম ও মূসার গ্রন্থে। (৮৭:১৯)
তোমাদের জন্য হারাম করা হইয়াছে মৃত জন্তু, (৫:৩)
আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাংগ (৫:৩)
আমার পক্ষ হইতে রূহ্ সঞ্চার করিব তখন তোমরা উহার প্রতি সিজ্‌দাবনত হইও’, ( 15:29)
প্রথম মৃত্যুর পর এবং আমাদেরকে শাস্তিও দেওয়া হইবে না!’ (37:59)
তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে পূর্বেই উহা লিপিবদ্ধ থাকে ; ( 57:22)
তোমরা ছিলে প্রাণহীন, তিনি তোমাদেরকে জীবন্ত করিয়াছেন,(2:28)
তোমার প্রতিপালক আদমসন্তানের পৃষ্ঠদেশ হতে’(7:172)
প্রত্যেককে সৃষ্টি করিয়াছেন জোড়া জোড়া করিয়া।৩৬:৩৬
যিনি সকল প্রকারের জোড়া যুগল সৃষ্টি করেন (৪৩:১২)
তোমাদের মধ্য হইতে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করিয়াছেন (৪২:১১)
তুমি আমাদেরকে প্রাণহীন অবস্থায় দুইবার রাখিয়াছ (৪০:১১)
প্রথম মৃত্যুর পর তাহারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করিবে না। -(৪৪:৫৬)
নিশ্চয় তোমরা ধাপে ধাপে আরোহণ করিবে। (৮৪:১৯)
তাহারা নিষ্প্রাণ, নির্জীব এবং কখন তাহাদেরকে পুনরুত্থিত করা হইবে সে বিষয়ে তাহাদের কোন চেতনা নাই। সূরা (১৬: ২১)
আল্লাহ্ই প্রাণ হরণ করেন জীবসমূহের তাহাদের মৃত্যুর সময় এবং যাহাদের মৃত্যু আসে নাই তাহাদের প্রাণও নিদ্রার সময়। (৩৯ঃ৪২)
তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’ (১৭ঃ১৪)
আল্লাহর নিকট নিকৃষ্টতম জীব সেই, বধির ও মুক যাহারা কিছুই বোঝে না। (৮: ২২)
এমন কিছু নিরক্ষর লোক আছে যাহাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কিতাব সম্বন্ধে কোন জ্ঞান নাই, (২:৭৮)
মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতাবশত আল্লাহ্‌র পথ হইতে বিচ্যুত করিবার জন্য। ৩১:৬
বরং আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহারই অনুসরণ করিব।’? ৩১:২৩
ঈমান, কেহ আল্লাহ্, পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে।(২ঃ১৭৭)
আল্লাহ মানুষকে অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। (৯১ঃ৮) সে যেটি ইচ্ছে করতে পারে।
কেউ কারো বোঝা বহন করবে না। (৬:১৬৪)
যারা মুত্তাকী, তাদের জন্য দুনিয়াতে মঙ্গল, পরকালে জান্নাত তাদের প্রান হরনের সময় মালা-ইকাগণ বলবে “সালামুন আলাইকুম ৷” (১৬ঃ৩১)
রাব্বি আউয়ুযুবিকা মিন হামাযাতিশ শায়তান। ” ২৩:৯৭
জগত সৃষ্টির পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে। ( ৫৭ঃ২২)
উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা,( ১৯ঃ৫৯)
সমগ্র কুরআন তার নিকট একবারেই অবতীর্ণ হলনা কেন?(২৫:৩২)
আর কুরআন আমি নাযিল করেছি কিছু কিছু (১৭:১০৬)
ইহা সংরক্ষণ ও পাঠ করাইবার দায়িত্ব আমারই। ৭৫:১৭
অতঃপর ইহার বিশদ ব্যাখ্যার দায়িত্ব আমারই। ৭৫:১৯
সুস্পষ্ট বর্ণনা এবং পথনির্দেশ মানুষের জন্য (২:১৫৯)।
ইহা আল্লাহ্‌র বিধান – প্রাচীন কাল হইতে (৪৮:২৩)
যাহারা অনুসরণ করে ব উম্মী নবীর, যাহার উল্লেখ তাওরাত ও ইন্‌জীল (৭:১৫৭),
উহারা কুরআন সম্বন্ধে গভীর চিন্তা করে না(৪৭:২৪)
অভিশপ্ত হউক মিথ্যাচারীরা, ৫১:১০
সমান নয় অন্ধ ও চক্ষুষ্মান, ৩৫:১৯
যদি কোন ফাসেক তোমাদের কাছে কোন খবর(৪৯:৬)
উহারা কুরআনের পরিবর্তে আর কোন্ কথায় বিশ্বাস স্থাপন করিবে ?(৭৭ঃ৫০)
উপদেশ গ্রহণ করে শুধু বিবেক শক্তি সম্পন্নগণই,(১৩ঃ১৯)
কাফিররা যখন কুরআন শ্রবণ করে তখন উহারা (৬৮:৫১)
কুরআন তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ। ৬৮:৫২
পশ্চাতে নিন্দাকারী, যে একের কথা অপরের নিকট লাগাইয়া বেড়ায়,৬৮:১১
তোমার প্রতি যে কিতাব ওহী করা হয়েছে,তা থেকে পাঠ করে শুনাও।”(২৯:৪৫)
রাসূল প্রেরণে বিরতির পর আমার রাসূল (৫:১৯)
আল্লাহ্‌র নিকট নিশ্চয়ই ‘ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের দৃষ্টান্তসদৃশ। ( ৩: ৫৯)
যখন ইয়া‘জূজ ও মা‘জূজকে মুক্তি দেওয়া( ২১:৯৬)
যত দিন আমি তাহাদের মধ্যে ছিলাম (৫: ১১৭)
অতঃপর উহাদের হইতে সে পর্দা করিল। অতঃপর আমি তাহার নিকট আমার রূহ্কে পাঠাইলাম, (১৯: ১৭)
এইভাবে আমি কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছি বিধানরূপে আরবী ভাষায়। জ্ঞান প্রাপ্তির পর তুমি যদি তাহাদের খেয়াল – খুশির অনুসরণ কর তবে আল্লাহ্‌র বিরুদ্ধে তোমার কোন অভিভাবক ও রক্ষক থাকিবে না।
সূরা নম্বর: ১৩ আয়াত নম্বর: ৩৭

কুনতুম খাইরে উখরেজাতি মিনান নাস (৩:১১০)

Categories
My text

শয়তানও শানে নুযুল বর্ণনা করেঃ

কতিপয় হাদীস ও শানে- নুযুল শয়তানের পক্ষ থেকে বর্নিত যা কোরানের তাফসীরেও স্থান করে নিয়েছে। যেমনঃ
মদ হারাম হওয়ার বিষয়ে হযরত ওমর, হযরত মায়াজ ও অন্যান্য সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহুম এর আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন পর্যায়ে মদ হারাম হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে একেবারে নিষিদ্ধ করা হয় নি। নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তখনও চূড়ান্ত নির্দেশ কামনা করেছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে নামাজে যাওয়ার আগে মদের ধারে কাছেও যাবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এরপরও হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু চূড়ান্ত ফায়সালার আবেদন জানালে চিরতরে মদ হারামের ঘোষণা আসে। এখানে আয়াতের শানে নুযূল এটাই।
হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হইও না, যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার,(৪:৪৩)

শান-ই-নুযুলঃ
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু মদ হারাম হওয়ার পূর্বে মদপান করে নামাজের সূরা তিলাওয়াতে উল্টাপাল্টা করেছেন বলে হাদিসের কিতাবে ও কোরানে আয়াত নাযিলের শানে-নুযুলে পাওয়া যায়। যদি তাকে মদপানকারী সাব্যস্ত করা হয় তাহলে কুরআনের আয়াতে তাতহীরের খেলাফ হচ্ছে। কারনঃ
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু মওলুদে কা’বা। জন্ম থেকে প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর ইন্তেকাল পর্যন্ত তাঁরই তত্তবধানে লালিত হয়েছেন। বালেগ হওয়ার পূর্বেই ১০ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। দ্বীনে হানিফে যারা জাহেলী যুগে ইবাদত-বন্দেগী করতেন তাদের মধ্যে যারা মূর্তিপুজা করেন নি এবং কোনরূপ গর্হিত কাজে লিপ্ত হননি তাদের মধ্যে হযরত আবু তালেব একজন। তার সন্তানদের ইতিহাসে মদপান পাওয়া যায় না। হযরত মাওলা আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু এর মাধ্যমেই প্রিয় নবীজীর বংশধারা, বেলায়তের ধারা, ইলমের ধারা প্রসারিত ও প্রতিষ্ঠিত। যদি তিনি মদপান করেছেন সাব্যস্ত হয় তাহলে এই মদের অংশ ও প্রভাব সমস্ত আওলাদে রাসূলগণের মধ্যে রয়েছে সাব্যস্ত হয়। অথচ মহান আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন :
إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا
হে নবীর পরিবার! আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণ পবিত্র করতে। [সূরা আহযাব-আয়াত- ৩৩]
কুরআনের এ আয়াতের ঘোষণা হল আহলে বায়ত জাহেরী-বাতেনী সকল প্রকার রিযস বা নাপাকি থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু আহলে বায়তের অন্যতম সদস্য।

Categories
My text

রিবার বাংলা নৈরাজ্য/যুলুম /অতিরিক্ত

আরবী শব্দ রিবার বাংলা “জুলুম/নৈরাজ্য/অরজগতা/অতিরিক্ত” পারসিয়ান অনুবাদ বর্জন করে একবার রিবা সংক্রান্ত আয়াত গুলির বাংলা অনুবাদ করে দেখুন??

রিবা বা সুদ কি? কেউ বলেন আসলের অতিরিক্ত কোন মুনাফা বা পণ্য গ্রহন করাই সুদ। আবার অনেকে মনে করেন বিনিয়োগকৃত মুলধনের অতিরিক্ত কিছু গ্রহন করাই সুদ।
এভাবে নয় ছয় করে সুদের সঙা দিয়ে থাকে। অতরিক্তের আরনী হল জিয়াদ। তাই সুদের অর্থ যদি অতিরিক্ত গ্রহন করা হয় সেটা নির্ঘাত ভুল হবে। কারন আয়াতে জিয়াদা শব্দ ব্যবহার করা হয় নাই, ব্যবহার করা হয়েছে রিবা।

সুদ বলতে আমাদের প্রচলিত ধারনা তার সাথে আল্লাহর বর্নিত রিবার কোন মিল নেই। রিবার সঠিক বাংলা অনুবাদ না হওয়ায় আমাদের ধারনাটা অন্যদিকে টার্ন নিয়ে বসে আছে।

কারন রিবার বাংলা যদি সুদ হয়,আর সুদ শব্দ থেকে আমরা বাঙালীরা যা বুঝি, তা থেকে আমরা কেউ তো সুদ থেকে মুক্ত নই। যেহেতু রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক চাকাটা ঘুরে সুদের উপর। সেক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক আর সোনালী ব্যাংকের মধ্যে পার্থক্য খুজা মানে শুকরের পেটে খাসির কলিজা তালাশ করা। এমন কি মাদ্রাসা মসজিদ গুলোর শিক্ষক কর্মচারীর বেতন ভাতাও সুদ মুক্ত নয়। যেহেতু তা রাষ্ট্রীয় গোষাগার হতে প্রদত্ত। আর রাষ্ট্রীয় গোষাগারে ব্যাংক বীমা এনজিও এর সুদের একটি অংশ জমা দিতে হয় এমন কি পতিতালয়ের ট্যাক্স ও রাজস্ব খাতে জমা করা হয়। আর সুদ গ্রহন কারী, দাতা, হবে সাবকারী সবাই সমান অপরাধী। সুদে নিমজ্জিত থাকা কোন কোন ব্যক্তির এবাদত আল্লাহর নিকট গ্রহন যোগ্য নয়।

প্রশ্ন আসে, আচ্ছা ! আল্লাহ কি আমাদের জীবন ব্যবস্থা এত কঠিন করে দিয়েছেন? যেখানে সুদের মত হারাম ব্যবস্থার সাথে প্রতিটি মানুষ কোন না কোন ভাবে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় জড়িত। না কখনোই আল্লাহ জুলুম করেন নাই।
বরং আল্লাহ বলেন,” আমি তোমাদের জন্য দ্বীনকে সহজ করে দিয়েছি।”

সুদকে ইংরেজীতে Interest বলা হয়। যার অর্থ আনন্দ । আবার এই Interest এর আরবী কিন্ত ইহতামিম (স্বার্থ)।রিবার বাংলা সুদ নয়। সুদ পারসিয়ান শব্দ। তাই রিবার সঠিক বাংলা নিরুপন করতে সক্ষম হলেই বিষয়টি ক্লিয়ার হবে। এবার রিবার বাংলা নির্নয় করার চেষ্টা করুন কোরান থেকেই। সুরা বাকারাঃ

আহাল্লাল্লাহ বাঈয়া ওয়া হাররামা রিবা।
অর্থ: আল্লাহ হালাল করেছেন ব্যবসা এবং হারাম করেছেন রিবা।
এখানে হালালের বিপরীত হারাম এবং বাঈয়ার বিপরীত রিবা।হালাল মানে বৈধ, হারাম মানে অবৈধ।
বাঈয়া মানে ব্যবসা, তাহলে রিবা মানে কি?
আরবী শব্দ রিবার অনুবাদ সুদ ব্যবহার করে সঠিক মর্ম উপলব্ধিতে বাধাগ্রস্থ করা হচ্ছে। কারন সুদ শব্দটি ভিন দেশীয় ভাষা থেকে ধার করে নেয়া।

রিবা দ্বারা আল্লাহ আসলে কি বুঝাতে চেয়েছেন তা কোরান থেকে নির্নয় করতে কোরানের ভাষার একটি মুল নীতি অনুসরন করা যেতে পারে। আর তা হল কোরানে প্রত্যেকটি শব্দের একটি বিপরীত শব্দ কোন না কোন জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন:
লাইল(রাত্রী)— বিপরীত শব্ধ — নাহার (দিবস)
শিতাঈ (শীত)—- বিপরীত —– সাইফ (গ্রীষ্ম)
সামাউ (আকাশ)– বিপরীত— আরদ (জমিন)
নার (আগুন)—— বিপরীত— আলমা (পানি)
সদ্দকা (সত্যবলা)- বিপরীত– কজ্জাব (মিথ্যা বলা)

বিপরীত শব্দ গুলির একটির বাংলা অর্থ জানা থাকলে অন্য শব্দটির বাংলা না জানা থাকলেও সহজে করা যায়। তখন অন্যদেশের ভাষার উপর আর নির্ভর করতে হয় না।

সূরা বাকারার উক্ত আয়াতে হালালের বিপরীতে হারাম এবং ব্যবসার বিপরীত শব্দ রিবা ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যবসার বিপরীত শব্দ নিরুপন করতে পারলেই রিবার সঠিক বাংলা নিরুপন হয়ে যাবে।

এজন্য আরেকটি আয়াতের প্রতি লক্ষ্য করা যেতে পারে।
” তোমরা যখন লেন দেন কর তখন লিখিত ভাবে কর এবং সাক্ষী রাখ, আর তা এজন্য যে, একে অপরের প্রতি যেন জুলুম, নৈরাজ্য সংঘঠিত না হয়।

এ আয়াত থেকে স্পষ্ট হয় ব্যবসার বিপরীত শব্দ জুলুম, নৈরাজ্য বা জোর জবরদস্তি।

সুতরাং রিবার ( সুদ) বাংলা অতিরক্ত, নৈরাজ্য বা জুলুম বা জবরদস্তি হবে।

ব্যবসার বিপরীত কাজ হল নৈরাজ্যতা, অনৈতিকতা।তার মানে সুদ শব্দের পরিবর্তে বিবার বাংলা নৈরাজ্যকতা বসালে উক্ত আয়াতের অনুবাদ দাড়ায়ঃ

আহাল্লাল বাঈয়া ওয়া হাররামা রিবা।
আল্লাহ ব্যবসাকে বৈধ করেছেন এবং নৈরাজ্য কতা কে অবৈধ করেছেন।

এ নৈরাজ্যকতা ব্যক্তি পর্যায়ে হতে পারে, সমাজ পর্যায়ে হতে পারে, রাষ্ট্র পর্যায়ে হতে পারে। সেটা ব্যবসায়েও হতে পারে, কৃষি কাজেও হতে পারে,শ্রমের ক্ষেত্রেও হতে পারে।

কোন ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার লক্ষে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে কোন পণ্য বিক্রী করলে সে নৈরাজ্যকতা সৃষ্টি করল। এটাই রেবা। কোন কর্মকর্তা তার দায়িত্ত পালনে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে তার কাজ কর্ম যথাযথ সম্পাদন না করে জনগনকে ভোতান্তিতে ফেললে সে নৈরাজ্যকতা সৃষ্টি করল। এটাই রেবা বা সুদ। রাষ্ট্র প্রধান তার অর্পিত দায়িত্ত যথাযথ পালন না করে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে নৈরাজ্যকতা সৃষ্টি করলে সেটাকেও রিবা বলা হয়।

অথচ রেবার অর্থ সুদ বলে তাকে আমরা ব্যাংকের লেন-দেন, মহাজনী লেন দেনকে বুঝে থাকি। বড় জোর আসলের অতিরিক্ত কোন কিছু গ্রহন করাকে বুঝে থাকি।

একটু চিন্তা করেও দেখতে চাই না আসলে আল্লাহ রিবা দিয়ে কি বুঝাতে চেয়েছেন, আর আমরা কি বুঝে বসে আছি। কোরআনকে নিজের মাতৃভাষায় আয়ত্ত না করায় আজ এ দৈন্যতা। আরেকটু পিছন ফিরে যদি দেখি ——-
যখন রেবার আয়াত নাযিল হয়েছিল তখন কি ব্যাংকিং প্রথা ছিল ? অনেকে বলতে পারেন ব্যাকিং প্রথা না থাকলেও মহাজনী প্রথা ছিল। না, কোরানের আয়াত নাজিল কালে ব্যাকিং বা মহাজনী প্রথা ছিল না।

দ্বিতীয়ত প্রশ্ন আসতে পারে এ আয়াত নাযিলের পর আব্বাস রাঃ কে রিবা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন রাসুল সাঃ হাদীসে বর্নিত। মেনে নিলাম হাদীস বিশুদ্ধ ও সহী। অসুবিধা কোথায়, আব্বাস রাঃ ইসলাম গ্রহন পুর্বে সামাজিক যে প্রভাব ও নৈরাজ্য চলমান ছিল, সেটাকে বন্ধ করার জন্য রাসুল সাঃ তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

তার মহাজনী কোন লেনদেন বন্ধ করার জন্য না। সে সময়ে আসল টাকা বিনোয়গ করে বর্তমান সময়ের মত মুনাফা অর্জনের হাদীস তো দুরের কথা ইতিহাসও পাওয়া যাবে না।
” যাহার নিকট তাহার প্রতিপালকের উপদেশ আসিয়াছে এবং সে বিরত হইয়াছে, তবে অতীতে যাহা হইয়াছে তাহা তাহারই; এবং তাহার ব্যাপার আল্লাহ্‌র ইখ্তিয়ারে। আর যাহারা পুনরায় আরম্ভ করিবে তাহারাই দোজখবাসী, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে। (২ঃ২৭৫)

” আল্লাহ্ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দানকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ্ কোন অকৃতজ্ঞ পাপীকে ভালবাসেন না।(২ঃ২৭৬)

বড় জোর তিনি মদ মজুদ রাখতেন এবং সংকটে নৈরাজ্যতার মাধ্যমে স্বাভাবিকের অতিরিক্ত মুল্য নিতেন।এ মর্মে হাদীসে ইংগীত পাওয়া যায়।

” হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয় কর এবং সুদের বকেয়া যাহা আছে তাহা ছাড়িয়া দাও যদি তোমরা মু’মিন হও। (২ঃ২৭৮)
যদি তোমরা না ছাড় তবে আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। ইহাতে তোমরা অত্যাচার করিবে না এবং অত্যাচারিতও হইবে না। (২ঃ২৭৯)

” তার মানে ব্যক্তি,পরিবার,সমাজ বা রাষ্টৃ পর্যায়ে যে কোন প্রকার নৈরাজ্য সৃষ্টি করাই রিবা বা সুদ। আর এটাকেই আল্লাহ মানব কল্যানে নিষিদ্ধ বা হারাম করেছেন।
তাই অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ

” হে মুমিন গন! তোমরা সুদ খাইওনা চক্রবৃদ্ধি হারে এবং আল্লাহকে ভয় কর যাহাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার।”

এ আয়াতে রিবার বাংলা নৈরাজ্যতা বসিয়ে দেখেন মর্ম কি দাড়ায়। আর সুদ বসালে মর্ম কি দাড়ায়? সুদ বসালে ভাবার্থ দাড়ায় সুদ খাওয়া যাবে, তবে চক্রবৃদ্ধি হারে না। ইসলামী ব্যাংকের শরীয়া বোর্ড যাকে মুদারাফা নাম দিয়ে শুকরের পেটে খাসির কলিজা বানিয়েছে।
রিবার বাংলা নৈরাজ্য বসালে আয়াতের বঙানুবাদ হয়ঃ
” হে মুমিনগন! তোমরা নৈরাজকতা করিও না ক্রমবর্ধমান ভাবে এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাহাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার।

ব্যাংক বীমা,মহাজনী নৈরাজ্যকতাও সুদ এর বহির্ভুত এটা অস্বীকার করছি না। তবে সুদ বলতে অর্থলগ্নী প্রথা এ ধারনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। আল্লাহ রিবা বলতে যাকে বুঝিয়েছেন তা সঠিক ভাবে উপলব্ধি করতে হবে।
হে মু’মিনগণ! তোমরা যখন একে অন্যের সঙ্গে নির্ধারিত সময়ের জন্য ঋণের কারবার কর তখন উহা লিখিয়া রাখিও; তোমাদের মধ্যে কোন লেখক যেন ন্যায্য ভাবে লিখিয়া দেয়; লেখক লিখিতে অস্বীকার করিবে না। যেমন আল্লাহ্ তাহাকে শিক্ষা দিয়াছেন, সুতরাং সে যেন লিখে এবং ঋণ গ্রহীতা যেন লেখার বিষয়বস্তু বলিয়া দেয় এবং তাহার প্রতিপালক আল্লাহ্‌কে ভয় করে, আর উহার কিছু যেন না কমায়; কিন্তু ঋণ গ্রহীতা যদি নির্বোধ অথবা দুর্বল হয় অথবা লেখার বিষয়বস্তু বলিয়া দিতে না পারে তবে যেন তাহার অভিভাবক ন্যায্য ভাবে লেখার বিষয়বস্তু বলিয়া দেয়। সাক্ষীদের মধ্যে যাহাদের উপর তোমরা রাযী তাহাদের মধ্যে দুইজন পুরুষ সাক্ষী রাখিবে, যদি দুইজন পুরুষ না থাকে তবে একজন পুরুষ ও দুইজন স্ত্রীলোক ; স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুল করিলে তাহাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করাইয়া দিবে। সাক্ষীগণকে যখন ডাকা হইবে তখন তাহারা যেন অস্বীকার না করে। ইহা ছোট হউক অথবা বড় হউক, মেয়াদসহ লিখিতে তোমরা কোনরূপ বিরক্ত হইও না। আল্লাহ্‌র নিকট ইহা ন্যায্যতর ও প্রমাণের জন্য দৃঢ়তর এবং তোমাদের মধ্যে সন্দেহ উদ্রেক না হওয়ার নিকটতর; কিন্তু তোমরা পরস্পর যে ব্যবসায় নগদ আদান-প্রদান কর তাহা তোমরা না লিখিলে কোন দোষ নাই। তোমরা যখন পরস্পরের মধ্যে বেচাকেনা কর তখন সাক্ষী রাখিও, লেখক এবং সাক্ষী যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। যদি তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত কর তবে ইহা তোমাদের জন্য পাপ। তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয় কর এবং তিনি তোমাদেরকে শিক্ষা দেন আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে অবহিত।(২ঃ২৮২)

আল-বাকারা ১৭৩-২৮৩
যাহারা সুদ খায় তাহারা সেই ব্যক্তিরই ন্যায় দাঁড়াইবে যাহাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে। ইহা এইজন্য যে, তাহারা বলে, ক্রয়-বিক্রয় তো সুদের মতই।’———- —-
অথচ আল্লাহ্ ব্যবসাকে হালাল ও সুদকে হারাম করিয়াছেন। ————————————

হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহ্‌কে ভয় কর এবং সুদের বকেয়া যাহা আছে তাহা ছাড়িয়া দাও যদি তোমরা মু’মিন হও। সূরা নম্বরঃ ২, আয়াত নম্বরঃ ২৭৮
যদি তোমরা না ছাড় তবে আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। ইহাতে তোমরা অত্যাচার করিবে না এবং অত্যাচারিতও হইবে না।(২:২৭৯)

যদি খাতক অভাবগ্রস্ত হয় তবে সচ্ছলতা পর্যন্ত তাহাকে অবকাশ দেওয়া বিধেয়। আর যদি তোমরা ছাড়িয়া দাও তবে উহা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জানিতে।
(২ঃ২৮০)

হে মু’মিনগণ ! তোমরা সুদ খাইও না চক্রবৃদ্ধী হারে এবং আল্লাহ্‌কে ভয় কর যাহাতে তোমরা সফলকাম হইতে পার।
(৩:১৩০) এ আয়াত থেকে এমন অনুভুতি জাগবে যে, সুদ খাওয়া যায়েজ তবে চক্রবৃদ্ধী আকারে খাওয়া যাবেনা।

হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সূদের যা বকেয়া আছে তা বর্জন কর; যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।

আর যদি তোমরা (সূদ বর্জন) না কর, তাহলে আল্লাহ ও তার রসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধ সুনিশ্চিত জানো।[1] কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর, তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। তোমরা কারো উপর অত্যাচার করবে না এবং নিজেরাও অত্যাচারিত হবে না। [2]

যদি (খাতক) অভাবী হয়, তাহলে তাকে সচ্ছল হওয়া পর্যন্ত অবকাশ দাও। আর যদি ঋণ মাফ করে দাও, তাহলে তা তোমাদের জন্য আরও উত্তম;[1] যদি তোমরা উপলব্ধি কর।

আর তোমরা ভয় কর সেই দিনকে, যেদিনে তোমাদেরকে আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে। অতঃপর প্রত্যেককে তার কর্মের ফল পূর্ণভাবে প্রদান করা হবে, আর তাদের প্রতি কোনরূপ অন্যায় করা হবে না

মানুষের ধনে বৃদ্ধি পাইবে বলিয়া তোমরা যে সুদ দিয়া থাক, আল্লাহ্‌র দৃষ্টিতে তাহা ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করে না। কিন্তু আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভের জন্য যে যাকাত তোমরা দিয়া থাক তাহাই বৃদ্ধি পায়; উহারাই সমৃদ্ধিশালী। (৩০:৩৯)

আমাদের সুদ সম্পর্কে প্রচলিত যে ধারনা জন্মে আছে তা মুলত “রিবা” এর ভুল অনুবাদের জন্য।

এবার রিবার বাংলা অনুবাদ বসিয়ে দেখূন আল্লাহ রিবা বলতে কি বুঝয়েছেন আর আমরা রিবার অনুবাদ সুদ বসিয়ে কি বুঝে আসতেছি। নিজ ভাষায় কোরান পড়ুন, কোরান আপনার নিকট প্রিয় হয়ে উঠবে তখন সুরা কাহাফের ১০৪ আয়াতটি বার বার হৃদয়ে জাগবে।

তবে দীর্ঘ দিন যাবৎ শুনে অভ্যস্থ শব্দটিকে এত্তাড়াতাড়ি উল্টিয়ে দিতে মন চাইবে না, সে আমি জানি। চেয়ারের বাংলাই আমাদের নিকট গ্রহন যোগ্য যখন হতে চায় না।
ভাল লাগলে গ্রহন করবেন এবং নিজে আরো গবেষনা যুক্ত করে এগিয়ে যাবেন। ভাল না লাগলে ডাস্টবিনে ফেলে দিবেন।

Categories
My text

সঠিক বাংলা অনুবাদ

১] সালাত ( প্রচলিত অনুবাদ নামাজ) (প্রকৃত বাংলা রবের আদেশের অনুশীলন)
২] সিয়াম ( প্রচলিত অনুবাদ রোজা) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ সকল বিষয়ে রবের নির্দেশে সংযম)
৩] হজ্জ ( প্রচলিত অনুবাদ হজ্জ) (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ মুসলিম মহা সম্মেলন)
৪] যাকাত (প্রচলিত অনুবাদ যাকাত)  ( প্রকৃত বাংলা ভোগকৃত সকল অনুদানের পরিশুদ্ধ করন)
৫] রিবা (প্রচলিত অনুবাদ সুদ)  ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ নৈরাজ্য সৃষ্টি করে অনাচার)
৬] ইবাদত (প্রচলিত অনুবাদ ইবাদত)    (প্রকৃত বাংলা স্রষ্ষ্টার নির্দেশনা পরিপালন)
৭] ঈমান (প্রচলিত অনুবাদ বিশ্বাস) ( প্রকৃত বাংলা আল্লাহর মনেনীত বিষয়ের উপর বিশ্বাস)
৮] একিন (প্রচলিত অনুবাদ একিন) ( ঈমানের পরিপুর্ণতা)
৯] রুহ (প্রচলিত অনুবাদ আল্লাহর আদেশ)     (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ আল্লার উপস্থিতি বা অস্তিত্ব)
১০] নাফস ( প্রচলিত অনুবাদ নাফস) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ ভাল মন্দের মিশ্রিত প্রবৃত্তি)
১১] দ্বীন ( প্রচলিত অনুবাদ ধর্ম) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ মনোনীত জীবন ব্যবস্থা)

১২] ইসলাম ( প্রচলিত অনুবাদ শান্ত) (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ আত্মসমর্পন)
১৩] মুসলমান ( প্রচলিত অনুবাদ ইসলামে দাখিল) ( প্রকৃত বাংলা ঈমান অনুযায়ী বাস্তব জীবন গঠনকারী)
১৪] মুমিন ( প্রচলিত অনুবাদ মুমিন) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ ঈমান অনুযায়ী জীবন প্রতিষ্ঠিত কারী)
১৫] রুহল কদ্দূস ( প্রচলিত অনুবাদ জিব্রাইল) ( প্রকৃত বাংলা আল্লাহর স্বীয় ঊপস্থিতি।)
১৬] মালাইকা ( প্রচলিত অনুবাদ ফেরেস্তা) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ রবের আজ্ঞাবাহী সত্তা)
১৭] রুকু ( প্রচলিত অনুবাদ রুকু বা ঝুঁকে পড়া) ( প্রকত বাংলা অনুবাদ প্রভুর আদেশের প্রতি অবনত হওয়া)
১৮] সিজদাহ ( প্রচলিত অনুবাদ সিজদা বা মাটিতে মাথা নত) (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ প্রভুর আদেশ পালনে লুটিয়ে পড়া)
১৯] উম্মি ( প্রচলিত অনুবাদ মুর্খ বা অজ্ঞ) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ অজ্ঞাত)
২০] লৌহে মাহফুজ ( প্রচলিত অনুবাদ শিলা খন্ড) (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ পুর্ব নির্ধারিত সকল প্রোগ্রাম গোপন সংরক্ষনাগার।)
২১] কিয়ামত ( প্রচলিত অনুবাদ মহাপ্রলয় ) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ যেকোন বিষয়ে চূরান্ত সময়)
২৩] নিয়ামত (প্রচলিত অনুবাদ নিয়ামত বা কল্যান) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ প্রভুর বিনিময় বিহীন অনুদান)
২৪] বাঈয়া (প্রচলিত অনুবাদ ব্যবসা) ( অনুশাসন মেনে জীবিকা)
২৫] সুন্নত (প্রচলিত অনুবাদব নবীর আদর্শ) (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ প্রভুর দেখানো রিতী অনুসরন করা)
২৬] হাদীস ( প্রচলিত অনুবাদ বানী বা কথা) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ আল্লাহর বাক্য)
২৭] আয়াত ( প্রচলিত অনুবাদ কোরানের বাক্য) (প্রকৃত অনুবাদ আল্লাহর যে কোন নিদর্শন)
২৮] নাযিল (প্রচলিত অনুবাদ অবতীর্ন) (প্রকৃত বাংলা অনুবাদ প্রেরণ)

২৯) ছাকুরা ( প্রচলিত অনুবাদ নেশা) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ মোহ) নেশা মাদকতাকে বুঝায়, যা সাময়িক মস্তিস্ক বিকৃত হয়, পক্ষান্তরে মোহ টাকা পয়সা,সংসার, সন্তান, ব্যবসা ইত্যাদীতে হয়ে অন্য মনস্ক হয়ে পড়ে। সালাতে বসে সব হিসাব মিলায়, কয় রাকাত পড়ছে সেটাও মনে থাকে না অন্যমনস্কতার জন্য। অথচ প্রচলিত অনুবাদে মর্ম দাড়ায় নেশা করা যায়েজ তবে নামাজের সময় নেশা করা যাবে না। (৪:৪৩ মতে)
অনুরপ হে ঈমানদার গন তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। প্রচলিত এ অনুবাদ থেকে মর্ম দ্বারায় সুদ খাওয়া যায়েজ তবে চক্রবৃদদ্ধী আকারে নয়। ইসলামী ব্যাংক।

২৯] তাকওয়া ( প্রচলিত অনুবাদ খোদা ভীতি) ( প্রকৃত বাংলা অনুবাদ আল্লাহর নির্দেশ পালনে কঠোর) আল্লাকে ভয় করা নয়। সৎ কর্মচারী মালিককে ভয় পায়না বরং শ্রদ্ধা করে। ভয় পাওয়া আর শ্রদ্ধা করা এক নয়। অসৎ কর্মচারী ভয় পাবে, তার অসততার দুর্বলতায়।

এমন আরো ১১ টি আরবী শব্দ রয়েছে যার বাংলা অনুবাদ এখনো করতে পারি নাই। কারন সেগুলির অনুরুপ আয়াত দ্বীতিয় নেই বলে। তবু চেষ্টা অব্যহত রেখেছি। এ অনুবাদ গুলি কোন অভিধান বা বাংলা একাডেমি থেকে গ্রহন করা হয় নি। সম্পুর্ণ নিজস্ব চিন্তা গবেষনায় কোরানের বিভিন্ন আয়াতের অনুবাদ থেকে গৃহীত নির্যাস হতে অনুবাদগুলি উপস্থাপন করা হলো। এর চেয়ে ভাল আরো কিছু হয়ত পরবর্তি প্রজন্ম আবিস্কার করবে। তাই এ অনুবাদ আমি কাউকে মানতে দৃঢ় প্রত্যয় করবো না।

যারা কোরান বিমুখী এবং কোরানকে মানে কিন্তু অনুবাদ পড়তে রাজি নয়, ফলে প্রচলিত ইবাদতেই তৃপ্ত তাদের এমন অবস্থার প্রধান কারন এই ৪১ টি শব্দের ভুল বা বিদেশী অনুবাদ।
কোরানের মাত্র এই ৪১টি শব্দের সঠিক বাংলা অনুবাদ বসিয়ে কোরান নিজ ভাষায় পড়লে সে প্রচলিত এবাদতের অধিকাংশই পন্ডু সার মনে করবে। তাই আল্লাহ বলেনঃ

উহারাই তাহারা, ‘পার্থিব জীবনে যাহাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তাহারা মনে করে যে, তাহারা সৎকর্মই করিতেছে,(১৮:১০৪)

তাই সব না হলেও অন্তত দু-চারটি অনুরুপ আয়াতের আরবী শব্দ গুলির অনুবাদে এই বাংলা অনুবাদ বসিয়ে যাচাই করে দেখার অনুরোধ।
অনুরুপ আরবী শব্দের ৪১ টি আয়াত আমি পরিবেশন করবো কোরআন থেকে। আপনি অনুবাদগুলি বসিয়ে দেখেন আল্লাহ কত সহজ ও প্রান্জল ভাবে আমাদের নির্দেশ উপদেশ দিয়েছেন আর আমরা অনুবাদ বিভ্রাটে কি বুঝে বসে আছি।
যেমন: হে ঈমানদারগন! তোমরা নেশা গ্রস্থ অবস্থায় নামাজের ধারে কাছে যেওনা, যতক্ষন না বুঝতে পার তোমরা কি বলছো।( ৪:৪৩)
উক্ত আয়াতে সালাতের বাংলা বসিয়ে দেখুন মর্ম কি দাড়ায়।

হে বিশ্বাসী গন! তোমরা মোহ গ্রস্থ অবস্থায় রবের নির্দেশ অনুশীলনে ব্রতী হইও না, যতক্ষন না বুঝতে পার তোমরা কি বলছো? (৪:৪৩)
এবার নিজেই ভাবুন কোন অনুবাদটি শ্রেয় মনে হয় বিবেকের কাছে। কারন আরবী আমাদের ভাষা নয়। তাই এভাষাকে নিজ মাতৃভাষায় রুপান্তর না করে কিভাবে রবের নির্দেশনা আমাদের প্রতি উপদেশ সমুহ আমরা বুঝবো? আর কোরআনকে আরবী ভাষায় কেন নাযিল করেছেন তার কারনও আল্লাহ বলে দিয়েছেন।
আমি যদি ‘আজমী ভাষায় কুরআন অবতীর্ণ করিতাম তবে উহারা অবশ্যই বলিত, ‘ইহার আয়াতগুলি বিশদভাবে বিবৃত হয় নাই কেন ?’ কী আশ্চর্য যে, ইহার ভাষা ‘আজমী, অথচ রাসূল আরবীয়! (৪১:৪৪)

বড় দূঃখ হয় আলেম সমাজের প্রতি। কেন তারা সত্য সঠিক প্রকাশে মনোনিবেশ করে না। তাই মনে হয় আল্লাহ বলেছেনঃ
আলেমগণ ও পণ্ডিতগণ কেন পাপ কথা বলিতে ও অবৈধ ভক্ষণে নিষেধ করে না ? ইহারা যাহা করে নিশ্চয় তাহা নিকৃষ্ট । (৫:৬৩) আরো একধাপ এগিয়ে আল্লাহ বলেনঃ
তবে কি উহারা কুরআন সম্বন্ধে গভীর চিন্তা করে না? না উহাদের অন্তর তালাবদ্ধ? (৪৭:২৪)

এই লিখার উপর কোন আলেম কোন বাক্যে বা অনুবাদে দ্বীমত পোষন করলে মন্তব্যে জানানোর অনুরোধ রইল, আমি সংশোধন করে নেব।

Categories
My text

আরবী থেকে বাংলা অনুবাদঃ

সালাত,সিয়াম,হজ্জ,যাকাত,ইবাদত,একিন, রুহ,রিবা,নাফস,উম্মি,লৌহেমাহফুজ,নিয়ামত, সুন্নাত,হাদীস ইত্যাদী আরবী শব্দ গুলির সঠিক বাংলা অনুবাদ না থাকায় পারস্য অনুবাদের উপর ভর করে চলতে হয়। ফলে বাংলা ভাষাভাষির মানুষ কোরানে এ শব্দগুলি সমন্বিত আয়াত গুলির সঠিক মর্ম উপলব্ধিতে ব্যার্থ হয়ে গতানুগতিক অনুবাদ পড়ে আল্লাহর নির্দেশনা সঠিক ভাবে বুঝতে সক্ষম না হয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয় এবং সঠিক উপলব্ধি থেকে দূরে সরে যায়। আমাদের আলেমগনও এ নিয়ে কোন চিন্তা গবেষনা কখনো করার প্রয়োজন বোধ করেন নাই। তারাও আরবী তেলোয়াতে নেকির হিস্যা নিয়ে আমজনতার নিকট প্রিয় ভাজন হয়ে আছেন। ধর্মকে জীবিকা হিসেব বেছে নিয়েছেন তারা। অথচ আরবী উর্দু ফারসী ইংরেজী ভাষার এমন কোন শব্দ নেই যার প্রতিস্থাপিত বাংলা শব্দ নেই।
প্রথমত,বিষেশ করে কোরানের আরবী শব্দ গুলির সঠিক বাংলা অনুবাদ করতে হলে সেই আরবী শব্দটি কোরানের কত যায়গায় আছে তা আগে সংগ্রহ করতে হয়। অতপর ঐ শব্দটির বাংলা অনুবাদ কি কি ব্যবহার করা হয়েছে তা অনুসন্ধান করতে হয়।

দ্বীতিয়ত আরবী শব্দটির বিপরীত আরবী কি কোরানের কোন কোন আয়াতে আছে তা নির্বাচন করতে হয়। সেখান থেকে একটি শব্দের সঠিক অনুবাদ ধরতে পারলে বিপরীত শব্দটির বাংলা অনুবাদ সঠিক কি হবে তা নিরুপন করা সহজ হয়। যেমন লাইল এর বিপরীত নাহার শব্দটি কোরানের ১১টি আয়াতে আছ। এখন লাইল এর অর্থ জানা থাকলে নাহার দিবস সহজে সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। এই দূইটি নচ্চ প্রয়োগ করে ফারসী অনুবাদ বাদ দিয়ে বাংলা শাব্দিক অনুবাদ সৃজন করা সম্ভব এবং তখন কোরানের সঠিক মর্ম বাংলাভাষার মানুষের উপলব্ধি করা সম্ভব।

যেমন রুহ একটি আরবী শব্দ, যার বাংলা অনুবাদ রহুই জানি, একটু বেশী হলে রুহ মানে আত্মা বা প্রাণ বুঝি। আরকটু এগিয়ে বুঝলে রুহ এর অনুবাদ ” আল্লাহর আদেশ ” ধরে থাকি। ব্যাস এর বেশী কিছু না। এর বেশী কিছু জানতে চাইলে আলেমগন একটি আয়াত তুলে ধরে খামুস হতে বলেনঃ
“তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’ আয়াত : ৮৫

রুহুর বিপরীত কোন শব্দ কোরানে প্রয়োগ করা হয় নি। তাই দ্বীতিয় পদ্ধতিতে এর বাংলা অনুবাদ করা সম্ভব নয়। প্রথম পদ্ধতি এপ্লাই করেই রুহের বাংলা অনুবাদ বের করে আনতে হবে।
তাই প্রথমে রুহ সংক্রান্ত সকল আয়াত গুলি কালেকশন করি।কোরানে রুহ নিয়ে মোট ৯টি আয়াত আছে। যেমনঃ
১) রুহ *** ফিরিশ্‌তা এবং রূহ্ আল্লাহ্‌র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর। সূরা নম্বর: ৭০ আয়াত নম্বর: ৪

২) রুহ *** অতঃপর উহাদের হইতে সে পর্দা করিল। অতঃপর আমি তাহার নিকট আমার রূহ্কে পাঠাইলাম, সে তাহার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করিল। (১৯:১৭)

৩) রুহ ** তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় রুহ ওহী সহ ফেরেস্তাহ প্রেরণ করেন এই বলিয়া যে, তোমরা সতর্ক কর, নিশ্চয়ই আমি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই; সুতরাং আমাকে ভয় কর।( ১৬ : ২)

৪) রুহ ** তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’  নম্বর: ৮৫

৫) রুহ **জিব্‌রাঈল ইহা লইয়া অবতরণ করিয়াছে (২৬:১৯৩)

৬) রুহ *** তিনি সমুচ্চ মর্যাদার অধিকারী, ‘আরশের অধিপতি, তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা ওহী প্রেরণ করেন স্বীয় রুহ , যাহাতে সে সতর্ক করিতে পারে কিয়ামত দিবস সম্পর্কে। (৪০:১৫)

৭);রুহ * ফিরিশ্‌তা এবং রূহ্ আল্লাহ্‌র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর।( ৭০ : ৪)

৮) রুহ * সেই দিন রূহ্ ও ফিরিশ্‌তাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াইবে ; দয়াময় যাহাকে অনুমতি দিবেন সে ব্যতীত অন্যেরা কথা বলিবে না এবং সে যথার্থ বলিবে।( ৭৮: ৩৮)

৯) রুহ ** সেই রাত্রিতে ফিরিশতাগণ ও রূহ্ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাহাদের প্রতি পালকের অনুমতিক্রমে।(৯৭:৪)

এবার দেখুন

১) নং আয়াতে রুহুর অনুবাদ “রুহ” লিখেছে
২) নং এ “আমার রুহ ” লিখেছে অনুবাদে
৩) নং এ রুহর অনুবাদে স্বীয় রুহ লিখেছে
৪) নং এ রুহ এর অনুবাদ রুহ ই করেছে
৫) নং এ রুহ এর অনুবাদ ” জিব্রাঈল ” লিখেছে অনুবাদ
৬) নং এ রুহের অনুবাদ “স্বীয় রুহ ”
৭) নং আয়াতে রুহ এর অনুবাদ রুহ করেছে
৮) নং আয়াতে রুহ এর অনুবাদ রুহ লিখা
৯) নং আয়াতে একটু ব্তিক্রম রুহ এর অনুবাদ আল্লাহর অনুমতি ক্রমে রুহ লিখেছে

*** সব কটি আয়াত পর্যালোচনা করে রুহ এর বাংলা অনুবাদ ” আল্লাহর অস্তিত্ব “ বুঝায়।

এবার আপনি রুহ শব্দের বাংলা অনুবাদ “আল্লাহর অস্তিত্ব” বসিয়ে অনুবাদ করে দেখুন, প্রতিটি আয়াতের মর্ম আপনার নিকট কত সহজ ও বোধগম্য হয়ে হৃদয়ে উপলব্ধি আসে।
এভাবে সালাত, হজ্জ, সিয়াম, যাকাত, রিবা, ইবাদত, একিন,নিয়ামত, আয়াত,উম্মি,দ্বীন, সিজদাহ, রুকু ইত্যাদি আরবী শব্দগুলির বাংলা অনুবাদ সৃষ্টি করে বসিয়ে দেখুন আল্লাহ কড প্রান্জল ভাষায় আমাদের কি বুঝাতে চেয়েছেন আর আমরা কি বুঝে বসে আছি, শুধু সঠিক অনুবাদের অভাবে।

Categories
My text

ঘুম ও মৃত্যুর পার্থক্য কোনটি?

ঘুম ও মৃত্যুর মধ্যে প্রধান পার্থক্য কোনটি?
অপশন:
ক) ঘুমে রুহ হরন করে আবার ফিরিয়ে দেয়। মৃত্যুতে রুহ আর কখনো ফিরে দেয়া হয় না বিচার দিবসের পুর্বে।

খ) ঘুমে শ্বাস প্রশ্বাস চলে,যেহেতু নফস থাকে, মৃত্যুতে তা বন্ধ থাকে যেহেতু নফস ধংস করে রুহুকে নিয়ে যাওয়া হয়।

গ) ঘুমে নফস ও দেহ পড়ে থাকে, মৃত্যুতে নফসের মৃত্যু হয়, রুহু রবের নির্দেশে ইল্লিন অথবা সিজ্জিলিনে চলে যায়, দেহ স্বস্থানে পড়ে থাকে। [ Ekramul ]

রুহু নিয়ে আয়াত গুলি লক্ষ্য করুনঃ

১) রুহ *** ফিরিশ্‌তা এবং রূহ্ আল্লাহ্‌র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর।( ৭০ : ৪)

২) রুহ *** অতঃপর উহাদের হইতে সে পর্দা করিল। অতঃপর আমি তাহার নিকট আমার রূহ্কে পাঠাইলাম, সে তাহার নিকট পূর্ণ মানবাকৃতিতে আত্মপ্রকাশ করিল।(১৯:১৭)

৩) রুহ ** তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা স্বীয় রুহ ওহী সহ ফেরেস্তাহ প্রেরণ করেন এই বলিয়া যে, তোমরা সতর্ক কর, নিশ্চয়ই আমি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই; সুতরাং আমাকে ভয় কর।( ১৬ : ২)

৪) রুহ ** তোমাকে উহারা রূহ্ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ্ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত এবং তোমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া হইয়াছে সামান্যই।’ সূরা নম্বর: আয়াত নম্বর: ৮৫

৫) রুহ **জিব্‌রাঈল রুহু লইয়া অবতরণ করিয়াছে (২৬:১৯৩)

৬) রুহ *** তিনি সমুচ্চ মর্যাদার অধিকারী, ‘আরশের অধিপতি, তিনি তাঁহার বান্দাদের মধ্যে যাহার প্রতি ইচ্ছা ওহী প্রেরণ করেন স্বীয় রুহ , যাহাতে সে সতর্ক করিতে পারে কিয়ামত দিবস সম্পর্কে।(৪০ : ১৫)

৭);রুহ * ফিরিশ্‌তা এবং রূহ্ আল্লাহ্‌র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয় এমন এক দিনে, যাহার পরিমাণ পার্থিব পঞ্চাশ হাযার বৎসর।(৭০ : ৪)

৮) রুহ * সেই দিন রূহ্ ও ফিরিশ্‌তাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াইবে ; দয়াময় যাহাকে অনুমতি দিবেন সে ব্যতীত অন্যেরা কথা বলিবে না এবং সে যথার্থ বলিবে।( ৭৮ : ৩৮)

৯) রুহ ** সেই রাত্রিতে ফিরিশতাগণ ও রূহ্ অবতীর্ণ হয় প্রত্যেক কাজে তাহাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে।( ৯৭ : ৪)

Categories
My text

ঈশা নবীর পর নবী প্রেরনে বিরতি

প্রশ্ন- ১) কিয়ামত পর্যন্ত আর নবী প্রেরণ করবেন না কেন?

প্রশ্ন- ২) ঈসা নবীকে প্রেরণের পুর্বে নবী প্রেরণে এত দীর্ঘ বিরতি কেন?

আল্লাহর এ কৌশলের পেছনে কারন কি?  কোরান থেকে জানুনঃ —–

২) উত্তরঃ বনী  ঈসরাইলের জন্য ঘন ঘন নবী প্রেরন করার পরও  যখন এ অবাধ্য কওম নবীদের অনুসরন করতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলো উপরুন্ত নবীদের হত্যা করা সহ বিভিন্ন অনাচারে লিপ্ত হল তখন আল্লাহ অভিশপ্ত জাতিকে নিজেরা নিজেদের মধ্যে অনাচার সৃষ্টির মাধ্যমে   ধংসের অতল গহব্বরে পতিত করে শাস্তি দিতে শুরু করলেন। ঈসা নবীর তিরোধানের পর এভাবে প্রায় ৬৫০ বছর অভিবাহীত হওয়ার পর মানব সভ্যতা যখন জাহেলিয়াতের চরম অন্ধকারে পতিত হয়ে মানব জাতি ধংসের মুখোমুখি তখন দীর্ঘ বিরতির পর নবী মুহাম্মদকে কোন নির্দিষ্ট কওম নয় সমগ্র মানব জাতীর জন্য প্রেরণ করলেন বিষেষ নেয়ামত আল কোরআন সহ।   আল্লাহ তাই বলেনঃ

রাসূল প্রেরণে বিরতির পর আমার রাসূল তোমাদের নিকট আসিয়াছে। সে তোমাদের নিকট স্পষ্ট ব্যাখ্যা করিতেছে যাহাতে তোমরা বলিতে না পার, ‘কোন সুসংবাদবাহী ও সতর্ককারী আমাদের নিকট আসে নাই।’ (৫:১৯)

অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ

আল্লাহ্‌ বলেন, এইভাবেই প্রত্যেক নবীর শত্রু করিয়াছিলাম আমি অপরাধীদেরকে। তোমার জন্য তোমার প্রতিপালকই পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারীরূপে যথেষ্ট।(  ২৫ঃ ৩১)

ঈশা নবীর পিতা ছিল না। কুমারী মরিয়মের গর্ভে জন্ম। এজন্য খৃষ্টানরা দাবী করে ঈশা মাসীহ আল্লাহর পুত্র। কিন্ত সুরা ইখলাসে আল্লাহ জানিয়ে দেন তিনি কোন সন্তান জন্ম দেননি এবং তিনি কারো সন্তানও নন। এখন প্রশ্ন আসে কোন পুরুষ ছাড়া তো মাতৃগর্ভে সন্তান আসতে পারে না। আল্লাহ সে প্রসঙ্গে উত্তর দেনঃ
আল্লাহ্‌র নিকট নিশ্চয়ই ‘ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের দৃষ্টান্তসদৃশ। তিনি তাহাকে মৃত্তিকা হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন;অতঃপর তাতে রুহ ফুকিয়ে দেন।  (৩:৫৯)
অতঃপর দোলনায় থাকা অবস্থায় তিনি তাঁকে কথা বলতে শিখান এবং নবী হিসাবে ঘোষনা দিতে আদেশ করেন।
সে বলিল, ‘আমি তো আল্লাহ্‌র বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়াছেন, আমাকে নবী করিয়াছেন,(১৯:৩০)
প্রশ্ন আসে কি কিতাব দিয়েছিলেন? সেটা কি বর্তমান কোরানেরই অংশ বিশেষ? না কি ভিন্ন বৈপরিত কোন কিতাব। সেই সাথে তাঁকে আল্লাহ আরো আদেশ করেছিলেন যাহা তা আবার হুবুহু কোরানে বর্ণিত:
‘যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করিয়াছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়াছেন যত দিন জীবিত থাকি তত দিন সালাত ও যাকাত আদায় করিতে -(১৯:৩১)

এখন প্রশ্ন আসে ঈশা আঃ কি ভাবে সালাত আদায় করতেন? আমাদের মত রুকু সিজদা বুকে হাত বাধা পদ্ধতিতে? দিন পাঁচ ওয়াক্ত পড়তেন? না কি তখন সালাত কায়েম বলতে অন্য কোন পদ্ধতি কায়েম ছিল? যা রহিত হয়ে এই প্রচলিত সালাত মেরাজ মোতাবেক হয়েছে?
আশ্চর্যের বিষয় এ ব্যাপারে কোন আয়াত কোরানে দেখা যায় না। আর যাকাত তিনি নির্জন পাহারে কি ভাবে কার উপর আদায় করতেন? এখন যে যাকাত দেখি তা কিভাবে এলো? আল্লাহ বলেন: এর আগে তাদের সালাত ছিল, “কা‘বাগৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর।(৮:৩৫)

ঈশা নবী এসে আল্লাহর মনোনীত পদ্ধতিতে সালাত কায়েম করলেন এবং যাকাত আদায় শিক্ষা দিলেন।এই নবীর পড়ে আবার দীর্ঘ সময় নবী না আসায় সালাত কে নষ্ট করে ফেললো। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন:

“উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা – পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে,(১৯:৫৯)
ঈশা নবীর ৬৫০ বছর পর পুনরায় দীর্ঘ বিরতীর পর নবী মুহম্মদ কে অন্ধকার হতে আলোতে পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য প্রেরন করলেন। তিনি শরীয়তের পুর্ন জ্ঞান ও দ্বীন নিয়ে এলেন। শিক্ষা দিলেন এবং লিখিত আকারে তা রেখে গেলেন বিশ্ব মানব জাতীর জন্য। আর তা সংরক্ষনের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ গ্রহন করলেন। কারন এর পর আর কোন নবী আসবেন না কিয়ামত অব্দি। তার এই কিতাবের বর্ননা অনুযায়ী আবার নষ্ট করা সালাত ফিরে পেলাম।
আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সূরা মরিয়াম এর ১৯:৩১ নং আয়াতে সালাত কায়েম করতে বলেছেন জন্ম হইতে মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত সার্বক্ষনিক, নিরর্বিছিন্ন, বিরতিহীন ভাবে।

যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত,
الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙ
সূরা নম্বরঃ মাআরিজ ৭০,আয়াত ২৩

অত:পর যার এ বিষয়ে দ্বীমত পোষন করে,তাদের জন্য কোরান ব্যক্ত করে,

তুমি কি দেখিয়াছ তাহাকে, যে দীনকে অস্বীকার করে ?
اَرَءَيْتَ الَّذِىْ يُكَذِّبُ بِالدِّيْنِؕ
সূরা নম্বরঃ ১০৭, আয়াত নম্বরঃ ১
সুতরাং দুর্ভোগ সেই সালাত আদায়কারীদের,
فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّيْنَۙ
সূরা নম্বরঃ ১০৭, আয়াত নম্বরঃ ৪
যাহারা তাহাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন,
الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُوْنَۙ
সূরা নম্বরঃ ১০৭, আয়াত নম্বরঃ ৫
ফয়সালা দিবসে যখন জিজ্ঞাসিত হবে,
উহারা বলিবে, ‘আমরা মুসল্লিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না,
قَالُوْا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّيْنَۙ
সূরা নম্বরঃ ৭৪, আয়াত নম্বরঃ ৪৩
ইহাই আল্লাহ্‌র বিধান – প্রাচীন কাল হইতে চলিয়া আসিতেছে, তুমি আল্লাহ্‌র বিধানে কোন পরিবর্তন পাইবে না। সূরা নম্বর: ৪৮ আয়াত নম্বর: ২৩

১ নং প্রশ্নের ঊত্তরঃ কোন নবীর উপর নাযিলকৃত কিতাব আল্লাহ সংরক্ষনের দায়িত্ত নেন নাই, তার কারন ছিল সেগুলি অপুর্নাঙ্গ কোরানেরই অংশ বিশেষ। নবী মুহাম্মদের উপর যখন পুর্নাঙ্গ কিতাব নাযিল করা হল এবং তাহা কিয়ামত পর্যন্ত সংরক্ষনের দায়িত্ত নিলেন তখন আর নবী প্রেরণের প্রয়োজন নেই।  কোরানই সব যুগের জন্য  নবীর ভমিকা পালন করবে বিধায় কিয়ামতের পুর্ব পর্যন্ত আর কোন নবী প্রেরণ করবেন না বা প্রেরণের কোন প্রয়োজন নেই।  সর্ব যুগে সর্ব ঘরে ঘরে নবী কোরানের মাধ্যমে বিরাজমান থাকবে এবং আছে। এজন্য কোরানের গুরুত্ত নবীর মত।  যে কোন সমস্যায় নবীকে জিজ্ঞেস  কর, অর্থাৎ কোরানের সাহায্য নাও। তবেই তুমি নবীর অনুসারী হয়ে জীবন ব্যবস্থা পরিচালিত করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হয়ে সফল৷ কামদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

তাই কিয়ামত পর্যন্ত আর কোন নবী প্রেরণ করবেন না।

কুরআন তো তোমার ও তোমার সম্প্রদায়ের জন্যে সম্মানের বস্তু ; তোমাদেরকে অবশ্যই এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। 43:44

সেদিন রাসূল অভিযোগ এনে বলবেন, ‘হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় তো এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করে।’ 25:30

Categories
My text

ধর্ম – রাষ্ট্রের জন্য সৃষ্টিঃ

ধর্ম এবং রাজনীতি হলো কোন রাষ্ট্রের প্রধান দু’টি দর্শনগত অবকাঠামো, যার উপর নির্ভর করে কল্যাণ রাষ্ট্র এবং ব্যর্থ রাষ্ট্রর ভিত্তি তৈরী হয়।

ধর্মের দুইটি রুপ রয়েছে। এক ঐশীতন্ত্র দুই মোল্লাতন্ত্র। ঐশীতন্ত্রের মুল লক্ষ্য হলো ঐশী ইচ্ছা, অর্থাৎ ধর্মের এই ধরণে মানুষ চালিত হয় স্রষ্টার ইচ্ছার কাছে নিজের ইচ্ছা আত্মসমর্পণ করার মধ্য দিয়ে।

অন্যদিকে, মোল্লাতন্ত্রের মুল লক্ষ্য হলো কতিপয় মোল্লা পুরোহিত পাদ্রীর ইচ্ছা। এখানে মোল্লারা যে কোন ধর্মের অনুসারীদের ইচ্ছা, স্বপ্ন, কল্পনা, আশা, ভয়, হতাশা, যৌনতা এমন কি মানবীয় প্রায় সকল অনুভূতি গুলোকে একটা নির্দিষ্ট ছকে এঁকে দেয়। এই ছকটা আঁকে মূলত তাদের স্বার্থ রক্ষার তাগিদে। স্বার্থের উপর নির্ভর করে ধর্মের কিতাব গুলোকে তারা নিজেদের মতো ব্যাখ্যা করে। আর এই ব্যাখ্যাকে পাক কিতাব বলে সাধারণ ধর্মাবলম্বীদের উপর চাপিয়ে দেয়। সেটা কি হিন্দু,কি মুসলিম,কি খৃষ্টান কি বৌদ্ধ সব ধর্মের বেলায় একই নীতি অনুসরন করা হয়।

এবার ভাবা যাক রাজনীতির বিষয়ে। রাজনীতির ক্ষেত্রেও দু’টি নীতি অনুসরন করা হয়। এক গনতন্ত্র/খলিফাতন্ত্র দুই স্বৈরতন্ত্র/জাহেলিয়াত।

গনতন্ত্র/খলিফাতন্ত্রের মূল স্পিরিট হলো সকল মানুষই রবের খলিফা বা প্রতিনিধি। (কোরান) তারা নিজেদের স্বাধীন ইচ্ছার মাধ্যমে নিজেদের মধ্য থেকে একজনকে বা একটা দলকে রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নির্বাচিত করে।

আর স্বৈরতন্ত্রের মূল স্পিরিট হলো একজনই কেবল ভ্রহ্মার প্রতিনিধি, বাদবাকি সকল মানুষ তার দাস বা গোলাম। (সনাতন)

এই তন্ত্রে যেহেতু অধিকাংশ মানুষের খলিফাত্বকে অস্বীকার করা হয়, তাই এই তন্ত্রে মানুষের বাক স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং স্বাধীন ইচ্ছা শক্তিকেও নাকচ করা হয়। দেব কূল আর দাস কূলে বল ভাজন করা হয়। ফলে ঐ একজন শাসক তার ইচ্ছা স্বপ্ন কল্পনা আশা ভয় সবকিছু সাধারণ জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়। সে কয়েকটা ছকে মানুষকে বিভাজিত করে মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করে। এখানে একমাত্র শাসকই স্বাধীন, বাদবাকি সবাই পরাধীন।

স্বৈরতন্ত্রের সাথে মোল্লাতন্ত্রের সারগত জায়গা থেকে সাদৃশ্য আছে বিধায় তারা নিজেদের মধ্যে ধর্ম এবং রাজনীতির মৈত্রী স্থাপন করে মানুষের ইহকাল এবং পরকাল নিয়ন্ত্রণ করে। রাষ্ট্র পরিচালনায় স্বৈরতন্ত্র বাই নেচার মোল্লাতন্ত্রের সাথে আঁতাত করে ঘাকে। একই সাথে মোল্লাতন্ত্র তার ব্যবসা এবং কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বাই নেচার রাষ্ট্র ক্ষমতায় সবসময় স্বৈরতন্ত্রের সহযোগী হয়ে থাকে। মোয়াবিয়া শাশন আমল তার অনন্য দৃষ্টান্ত।

এই ধরণের রাষ্ট্র কাঠামোকে বলা হয় ব্যর্থ রাষ্ট্র বা জুলুমের হাতিয়ার রাষ্ট্র। অন্যদিকে কল্যাণ রাষ্ট্র তৈরী করতে হলে ঐশীতন্ত্রের সাথে গনতন্ত্র বা খলিফাতন্ত্রের মৈত্রী তৈরী করতে হয়( মদীনা মনোয়ারা)।

যারা কল্যাণ রাষ্ট্র তৈরী করতে চান, তাদেরকে অবশ্যই একই সাথে মোল্লাতন্ত্র এবং স্বৈরতন্ত্রের বিরোধিতা করতে হবে, নতুবা একটা বিরোধিতা করে অন্যটায় চুপ থাকলে, এই বিরোধিতা আদতে কোন ফল দেয় না। বরং নীরবতাটা সমর্থনের সূচক হয়। যা হয়েছিল সিফফিনে, কুফায়।

Ekramul hoq

Categories
My text

ওহী কি ?

ওহী হচ্ছে মানুষের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত নির্দেশ যা লৌহমাফুজে সংরক্ষিত মূল কিতাবের অংশ বিশেষ।ওহী জিব্রাইল ফিরিস্তার মাধ্যমে বিভিন্ন ঘটনার পরিপেক্ষিতে অল্প অল্প করে নাযিল করা হয়েছে যাতে মানুষ আল্লাহর নির্দেশ ভাল ভাবে আত্মস্থ করতে পারে।

কাফিরেরা বলেঃ সমগ্র কুরআন তার নিকট একবারেই অবতীর্ণ হলনা কেন? এভাবেই অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমার হৃদয় ওর দ্বারা মযবূত হয় এবং তা সম্পূর্ণ রুপে আস্তে আস্তে আত্মস্থ করতে পার।(২৫:৩২)

আর কুরআন আমি নাযিল করেছি কিছু কিছু করে, যেন তুমি তা মানুষের কাছে পাঠ করতে পার ধীরে ধীরে এবং আমি তা নাযিল করেছি পর্যায়ক্রমে।(১৭:১০৬)

আসুন প্রথমে যেনে নেই মানুষের নিকট আল্লাহর ওহী অর্থাৎ নির্দেশ পাঠানোর পদ্ধতি।

কোন মানুষই এ মর্যাদার অধিকারী নয় যে, আল্লাহ‌ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন। তিনি কথা বলেন হয় অহীর মাধ্যমে, অথবা পর্দার আড়াল থেকে, কিংবা তিনি কোন বার্তাবাহক (ফেরেশতা) পাঠান এবং সে তাঁর হুকুমে তিনি যা চান অহী হিসেবে দেয়। তিনি সুমহান ও সুবিজ্ঞ।( ৪২:৫১)
উপরের আয়াত থেকে আমরা যা যানতে পারছি তা হচ্ছে —
মানুষ আল্লাহ্ কে দেখবে এবং এই অবস্হায় আল্লাহ্ মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলবে এমন মর্যাদা বা যোগ্যতা মানুষের নেই। এই আয়াতে মানুষের সাথে আল্লাহর প্রত্যক্ষ যোগাযোগের তিনটি মাধ্যম উল্লেখ করা হয়েছে—

১. ফিরিস্তা ছাড়া বিশেষ ওহীর মাধ্যমে আল্লাহ্ মানুষের সাথে কথা বলেন। জন্মগতভাবে আল্লাহ্ সকল মানুষ কে এই বিশেষ অহী দিয়ে থাকেন, যার মাধ্যমে মানুষ সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায় বুঝতে পারে। আমরা কোথায় থেকে আসলাম, কে আমাদের সৃষ্টি করলো এই সকল বিষয় নিয়ে আমরা যে মনে মনে কথা বলি তা মূলত আল্লাহর কাছে জিজ্ঞেসার অন্তরালে তার সাথে কথা বলা, কারন এই গুলি আল্লাহ্ই আমাদের অন্তরে উদ্রেক করে দেন। যেমনই ভাবে নবী ইব্রাহীম আঃ এর অন্তরে সৃষ্টি কর্তা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উদ্রেক করে দেওয়া হয়েছিল যখন তিনি নবী ছিলেন না।—-

আর এভাবেই আমি ইবরাহীমকে আসমানসমূহ ও যমীনের রাজত্ব দেখাই এবং যাতে সে দৃঢ় বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়।অতঃপর যখন রাত তার উপর আচ্ছন্ন হল, সে তারকা দেখল, বলল, ‘এ আমার রব’। অতঃপর যখন তা ডুবে গেল, তখন সে বলল, ‘যারা ডুবে যায় আমি তাদেরকে ভালবাসি না’।অতঃপর যখন সে চাঁদ উজ্জ্বলরূপে উদীয়মান দেখল, বলল, ‘এ আমার রব’। পরে যখন তা ডুবে গেল, বলল, ‘যদি আমার রব আমাকে হিদায়াত না করেন, নিশ্চয় আমি পথহারা কওমের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব’।অতঃপর যখন সে সূর্য উজ্জ্বলরূপে উদীয়মান দেখল, বলল, ‘এ আমার রব, এ সবচেয়ে বড়’। পরে যখন তা ডুবে গেল, তখন সে বলল, ‘হে আমার কওম, তোমরা যা শরীক কর, নিশ্চয় আমি তা থেকে মুক্ত’।‘নিশ্চয় আমি নিবিষ্ট করেছি আমার চেহারা একনিষ্ঠভাবে তাঁর জন্য, যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই’।(সূরা আল-আন‘আম ৬:৭৫-৭৯) এই বিশেষ অহী সম্পর্কে পরে আবার আলোচনা করবো

২. আল্লাহ্ সরাসরি আড়ালে থেকে মানুষের সাথে কথা বলতেন এবং নির্দেশ দিতেন।

৪২ঃ৫১ আয়াতে আল্লাহ্ মানুষের সাথে প্রত্যক্ষ যোগাযোগের ক্ষেত্রে তিনটি মাধ্যমের কথা বলা হয়েছে। লক্ষ্য করুন আয়াতে মানুষের কথা বলা হয়েছে ফলে আল্লাহর এই বিধান শুধু নবী রাসূল নয় বরং সব মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পবিত্র কুরআনে পৃথিবীতে নবীদের মধ্যে শুধু মূসা আঃ এর সাথে আল্লাহর আড়ালে থেকে কথা বলার সুস্পষ্ট বর্ননা পাওয়া যায় তার অর্থ এই নয় যে আল্লাহ্ শুধু মূসা আঃ এর সাথে আড়াল থেকে কথা বলেছেন অন্য নবী বা সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে বলেন নি। বরং কুরআনের অনেক আয়াত আছে যে গুলির বর্ননা ভঙ্গিতে বুঝা যায় আল্লাহ সরাসরি আড়ালে থেকে অনেক নবী ও সাধারন মানুষের সাথে কথা বলেছেন। ফেরাউন পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার বর্ননা কুরআনে যে ভাবে বর্নিত হয়েছে তাতে বুঝা যায় আল্লাহ ঐ সময়ে আড়ালে থেকে ফেরাউনের সাথে কথা বলেছিলেন।

এ রসূলগণ এরূপ যে, তাদের মধ্যে কাউকে অন্য কারও উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। তাদের মধ্যে কেউ এমন আছে যে, তাদের সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন এবং তাদের কাউকে পদমর্যাদায় উচ্চ করেছেন। ( ২:২৫৩)

লক্ষ্য করুন “তাদের সাথে” বহু বচন শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে “তাদের মধ্যে কেউ এমন আছে যে, তাদের সাথে আল্লাহ কথা বলেছেন”। আল্লাহর সাথে মূসা আঃ এর কথোপকথন —
যখন মূসা তাঁর পরিবারবর্গকে বললেনঃ আমি অগ্নি দেখেছি, এখন আমি সেখান থেকে তোমাদের জন্যে কোন খবর আনতে পারব অথবা তোমাদের জন্যে জ্বলন্ত অঙ্গার নিয়ে আসতে পারব যাতে তোমরা আগুন পোহাতে পার।(২৭:৭)

যখন সে তার কাছে পৌছল, তখন পবিত্র ভূমিতে অবস্থিত উপত্যকার ডান প্রান্তের বৃক্ষ থেকে তাকে আওয়াজ দেয়া হল, হে মূসা! আমি আল্লাহ, বিশ্ব পালনকর্তা।(২৮:৩০)

অতঃপর যখন তিনি আগুনের কাছে আসলেন তখন আওয়াজ হল ধন্য তিনি, যিনি আগুনের স্থানে আছেন এবং যারা আগুনের আশেপাশে আছেন। বিশ্ব জাহানের পালনকর্তা আল্লাহ পবিত্র ও মহিমান্বিত।
হে মূসা, আমি আল্লাহ, প্রবল পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
(২৭:৮-৯)

নিশ্চয় আমি তোমার রব; সুতরাং তোমার জুতা জোড়া খুলে ফেল, নিশ্চয় তুমি পবিত্র ‘তুওয়া’ উপত্যকায় রয়েছ’।‘আর আমি তোমাকে মনোনীত করেছি, সুতরাং যা ওহীরূপে পাঠানো হচ্ছে তা মনোযোগ দিয়ে শুন’।‘নিশ্চয় আমি আল্লাহ, আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই; সুতরাং আমার ইবাদাত কর এবং আমার স্মরণার্থে সালাত কায়েম কর’।( ২০:১২-১৪)

আর যখন আমার নির্ধারিত সময়ে মূসা এসে গেল এবং তার রব তার সাথে কথা বললেন। সে বলল, ‘হে আমার রব, আপনি আমাকে দেখা দিন, আমি আপনাকে দেখব।’ তিনি বললেন, তুমি আমাকে কখনো দেখবে না। বরং তুমি পাহাড়ের দিকে তাকাও, অতঃপর তা যদি নিজ স্থানে স্থির থাকে তবে তুমি অচিরেই আমাকে দেখবে। অতঃপর যখন তার রব পাহাড়ের উপর নূর প্রকাশ করলেন তখন তা তাকে চূর্ণ করে দিল এবং মূসা বেহুঁশ হয়ে পড়ে গেল। অতঃপর যখন তার হুঁশ আসল তখন সে বলল, ‘আপনি পবিত্র মহান, আমি আপনার নিকট তাওবা করলাম এবং আমি মুমিনদের মধ্যে প্রথম।’(৭:১৪৩)

ইব্রাহীম আঃ এর সাথে আল্লাহর কথপোকথন —
আর স্মরণ কর, যখন ইবরাহীমকে তার রব কয়েকটি বাণী দিয়ে পরীক্ষা করলেন, অতঃপর সে তা পূর্ণ করল। তিনি বললেন, ‘আমি তোমাকে মানুষের জন্য নেতা বানাব’। সে বলল, ‘আমার বংশধরদের থেকেও’? তিনি বললেন, ‘যালিমরা আমার ওয়াদাপ্রাপ্ত হয় না।(২ঃ১২৪)

নূহ আঃ এর সাথে আল্লাহর কথপোকথন —
আর নূহ তার রবকে ডাকল এবং বলল, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমার সন্তান আমার পরিবারভুক্ত এবং আপনার ওয়াদা নিশ্চয় সত্য। আর আপনি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ বিচারক’।তিনি বললেন, ‘হে নূহ, সে নিশ্চয় তোমার পরিবারভুক্ত নয়। সে অবশ্যই অসৎ কর্মপরায়ণ। সুতরাং যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, আমার কাছে তা চেয়ো না। আমি তোমাকে উপদেশ দিচ্ছি, যেন মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত না হও’।সে বলল, ‘হে আমার রব, যে বিষয়ে আমার জ্ঞান নেই তা চাওয়া থেকে আমি অবশ্যই আপনার আশ্রয় চাই। আর যদি আপনি আমাকে মাফ না করেন এবং আমার প্রতি দয়া না করেন, তবে আমি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব’।(১১:৪৫-৪৭)

ফেরাউনের সাথে আল্লাহর কথপোকথন —-
আর বনী-ইসরাঈলকে আমি পার করে দিয়েছি নদী। তারপর তাদের পশ্চাদ্ধাবন করেছে ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী, দুরাচার ও বাড়াবাড়ির উদ্দেশে। এমনকি যখন তারা ডুবতে আরম্ভ করল, তখন বলল, এবার বিশ্বাস করে নিচ্ছি যে, কোন মা’বুদ নেই তাঁকে ছাড়া যাঁর উপর ঈমান এনেছে বনী-ইসরাঈলরা। বস্তুতঃ আমিও তাঁরই অনুগতদের অন্তর্ভুক্ত।এখন একথা বলছ! অথচ তুমি ইতিপূর্বে না-ফরমানী করছিলে। এবং পথভ্রষ্টদেরই অন্তর্ভুক্ত ছিলে।সুতরাং আজ আমি তোমার দেহটি রক্ষা করব, যাতে তুমি তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হয়ে থাক। আর নিশ্চয় অনেক মানুষ আমার নিদর্শনসমূহের ব্যাপারে গাফেল’।( ১০:৯০-৯২)

যেখানে আল্লাহ্ ফেরাউনের মতো একজন কাফেরের সাথে আড়ালে থেকে কথা বলেছেন, সেখানে রাসূল সাঃ এর সাথে আল্লাহ্ আড়ালে থেকে কথা বলেনি নির্দেশ দেয়নি, যারা এই সমস্ত কথা বলে ও বিস্বাস করে তারা কি গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত নয়???

৩. বার্তাবাহকের মাধ্যমে কিতাবের ওহী পাঠিয়ে কথা বলাঃ কিতাবের ওহী হচ্ছে লৌহ মাহফুজে সংরক্ষিত মূল কিতাবের অংশ বিশেষ যা আল্লাহ্ বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন নবীর মাধ্যমে এই বিধান মানুষের মাঝে পৌঁছানোর ব্যবস্হা করতেন তারা সবাই ছিল পুরুষ। আল্লাহ্ বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জিব্রাইল ফিরিস্তার মাধ্যমে নবীদের নিকট এই বিধান পৌঁছানোর ব্যবস্হা করতেন। আল্লাহ্ নবী ছাড়া এই বিধান সাধারণত মানুষের নিকট পাঠাতেন না।

আর তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল আমি পাঠাইনি যার প্রতি আমি এই ওহী নাযিল করিনি যে, ‘আমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই; সুতরাং তোমরা আমার ইবাদাত কর।(২১:২৫)

নিশ্চয় আমি তোমার নিকট ওহী পাঠিয়েছি, যেমন ওহী পাঠিয়েছি নূহ ও তার পরবর্তী নবীগণের নিকট এবং আমি ওহী পাঠিয়েছি ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়া‘কূব, তার বংশধরগণ, ঈসা, আইয়ূব, ইউনুস, হারূন ও সুলায়মানের নিকট এবং দাঊদকে প্রদান করেছি যাবূর।(৪:১৬৩)

আমি তোমার নিকট সুন্দরতম কাহিনী বর্ণনা করছি, এ কুরআন আমার ওহী হিসেবে তোমার কাছে প্রেরণ করার মাধ্যমে। যদিও তুমি এর পূর্বে অনবহিতদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে।(১২:৩)

আর আমি তোমার পূর্বে কেবল পুরুষদেরকেই রাসূল হিসেবে প্রেরণ করেছি, যাদের প্রতি আমি ওহী পাঠিয়েছি। সুতরাং জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর, যদি তোমরা না জানো।(১৬:৪৩)

আর অবশ্যই তোমার পূর্বে আমি রাসূলদের প্রেরণ করেছি এবং তাদেরকে দিয়েছি স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি। আর কোন রাসূলের জন্য এটা সম্ভব নয় যে, আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোন নিদর্শন নিয়ে আসবে। প্রতিটি সুনির্দিষ্ট সময়ের জন্য রয়েছে লিপিবদ্ধ বিধান।
আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন মিটিয়ে দেন এবং যা ইচ্ছা করেন স্থির রাখেন, আর তাঁর কাছেই রয়েছে মূল কিতাব।(১৩:৩৮-৩৯)

আর যমীনে বিচরণকারী প্রতিটি প্রাণীর রিয্কের দায়িত্ব আল্লাহরই এবং তিনি জানেন তাদের আবাসস্থল ও সমাধিস্থল। সব কিছু আছে স্পষ্ট কিতাবে।(১১ঃ৬)
বরং এটা মহান কুরআন। লওহে মাহফুজে লিপিবদ্ধ। (৮৫:২১-২২)

নিশ্চয় আমি তো একে আরবী কুরআন বানিয়েছি, যাতে তোমরা বুঝতে পার।আর নিশ্চয় তা(কুরআন) আমার কাছে উম্মুল কিতাবে(লওহে মাহফুজে সংরক্ষিত মূল কিতাবে) সুউচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন, প্রজ্ঞাপূর্ণ।( ৪৩:৩-৪)
নিশ্চয় এটি মহিমান্বিত কুরআন,যা আছে সুরক্ষিত (মূল) কিতাবে।(৫৬:৭৭-৭৮)

পবিত্র সত্তাগণ(ফিরিস্তা) ছাড়া আর কেউ তা(লওহে মাহফুজে সংরক্ষিত মূল কিতাব) স্পর্শ করতে পারে না।
(৫৬:৭৯)
আল্লাহ্ কিতাবী ওহী ছাড়াও সাধারণ মানুষ ও নবীদের নিকট আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশ পাঠাতেন।

আসুন আমরা প্রথমে দেখি নবী ছাড়া সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে আল্লাহর নির্দেশ। আমি পুরুষদের কথা বল্লামনা কারন পুরুষদের কথা বল্লে হয়তো আপনারা এক লক্ষ চব্বিশ হাজার পয়গাম্বরের অন্তর্ভুক্ত মনে করবেন। তাই আমি নারীদের প্রতি আল্লাহর নির্দেশ সমূহের বর্ননা দিচ্ছি। আর এটা কুরআন থেকেই প্রমানিত যে আল্লাহ্ কোন নারী কে নবী করে পাঠাননি ফলে সব নারীরা ছিল সাধারন নারী।

আর আমি মূসার মায়ের প্রতি নির্দেশ পাঠালাম, ‘তুমি তাকে দুধ পান করাও। অতঃপর যখন তুমি তার ব্যাপারে আশঙ্কা করবে, তখন তাকে দরিয়ায় নিক্ষেপ করবে। আর তুমি ভয় করবে না এবং চিন্তা করবে না। নিশ্চয় আমি তাকে তোমার কাছে ফিরিয়ে দেব এবং তাকে রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত করব’।( ২৮:৭)

‘যখন আমি তোমার মাতাকে জানিয়ে দিয়েছিলাম যা জানাবার ছিল যে, তুমি তাঁকে সিন্ধুকের মধ্যে রেখে দাও। তারপর তা দরিয়ায় ভাসিয়ে দাও। যেন দরিয়া তাকে তীরে ঠেলে দেয়। ফলে তাকে আমার শত্রু ও তার শত্রু নিয়ে নেবে। আর আমি আমার পক্ষ থেকে তোমার প্রতি ভালবাসা ঢেলে দিয়েছিলাম, যাতে তুমি আমার চোখের সামনে প্রতিপালিত হও’।(২০:৩৯)

আল্লাহ্ মূসা আঃ এর মার নিকট গোপনে নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন। কারন প্রকাশ্যে যদি নির্দেশ পাঠাতেন তবে নিশ্চয়ই ফেরাউনের লোকজন তা যেনে শিশু মূসা আঃ কে হত্যা করতো। আর মূসা আঃ এর মা আল্লাহর এই গোপন নির্দেশ তার নিকট আত্মীয় স্বজনদের কে বলেছিলেন যার প্রমান নিচের আয়াত থেকে যানা যায়।

যখন তোমার বোন (সিন্দুকের সাথে সাথে) চলছিল। অতঃপর সে গিয়ে বলল, ‘আমি কি তোমাদেরকে এমন একজনের সন্ধান দেব, যে এর দায়িত্বভার নিতে পারবে’? অতঃপর আমি তোমাকে তোমার মায়ের নিকট ফিরিয়ে দিলাম; যাতে তার চোখ জুড়ায় এবং সে দুঃখ না পায়। আর তুমি এক ব্যক্তিকে হত্যা করেছিলে। তখন আমি তোমাকে মানোবেদনা থেকে মুক্তি দিলাম এবং তোমাকে আমি বিভিন্নভাবে পরীক্ষা করেছি। অতঃপর তুমি কয়েক বছর মাদইয়ানবাসীদের মধ্যে অবস্থান করেছ। হে মূসা, তারপর নির্ধারিত সময়ে তুমি এসে উপস্থিত হলে’।(২০ঃ৪০)

এবার আসুন দেখি মারিয়াম আঃ কাছে আল্লাহ্ কি নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন।

আর স্মরণ কর এই কিতাবে মারইয়ামকে যখন সে তার পরিবারবর্গ থেকে পৃথক হয়ে পূর্ব দিকের কোন এক স্থানে চলে গেল।আর সে তাদের নিকট থেকে (নিজকে) আড়াল করল। তখন আমি তার নিকট আমার রূহ (জিবরীল) কে প্রেরণ করলাম। অতঃপর সে তার সামনে পূর্ণ মানবের রূপ ধারণ করল।মারইয়াম বলল, ‘আমি তোমার থেকে পরম করুণাময়ের আশ্রয় চাচ্ছি, যদি তুমি মুত্তাকী হও’।
সে বলল, ‘আমি তো কেবল তোমার রবের বার্তাবাহক, তোমাকে একজন পবিত্র পুত্রসন্তান দান করার জন্য এসেছি’।মারইয়াম বলল, ‘কিভাবে আমার পুত্র সন্তান হবে? অথচ কোন মানুষ আমাকে স্পর্শ করেনি। আর আমি তো ব্যভিচারিণীও নই’।সে বলল, ‘এভাবেই। তোমার রব বলেছেন, এটা আমার জন্য সহজ। আর যেন আমি তাকে করে দেই মানুষের জন্য নিদর্শন এবং আমার পক্ষ থেকে রহমত। আর এটি একটি সিদ্ধান্তকৃত বিষয়’।(১৯:১৬-২১)

পাঠক লক্ষ করুন কিতাবের ওহীর বহির্ভুত এই নির্দেশ গুলি আল্লাহ্ পরবর্তীতে মূল কিতাবের ওহীতে স্হান দিয়ে আমাদের কে ঈমানী চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হতে প্রেরনা যোগানোর ব্যবস্হা করেছে যুগের পর যুগ। অপর দিকে আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাঃ এর কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কিতাবী ওহী ছাড়া যে সব নির্দেশ আসতো সেগুলি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা উল্লেখিত আয়াত গুলি নিয়ে একটু চিন্তা করলে অতি সহজেই বুঝতে পারবো।

রাসূল সাঃ এর কাছে কিতাবী ওহী ছাড়াও গোপনে আল্লাহ্ তাঁর নির্দেশ পাঠাতেনঃ
প্রমান ১
হে নবী, আল্লাহকে ভয় কর এবং কাফির ও মুনাফিকদের আনুগত্য করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সম্যক জ্ঞানী, মহাপ্রজ্ঞাময়।আর তোমার রবের কাছ থেকে তোমার প্রতি যা ওহী করা হয় তুমি তার অনুসরণ কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত।আর তুমি নির্ভর কর আল্লাহর উপর, কর্ম সম্পাদনে আল্লাহই যথেষ্ট।তোমাদের পালিত পুত্রদেরকে তোমাদের পুত্র করেননি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র। আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন এবং পথ প্রদর্শন করেন।তোমরা তাদেরকে তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক। এটাই আল্লাহর কাছে ন্যায়সঙ্গত। যদি তোমরা তাদের পিতৃ-পরিচয় না জান, তবে তারা তোমাদের ধর্মীয় ভাই ও বন্ধুরূপে গণ্য হবে। এ ব্যাপারে তোমাদের কোন বিচ্যুতি হলে তাতে তোমাদের কোন গোনাহ নেই, তবে ইচ্ছাকৃত হলে ভিন্ন কথা। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।(আল-আহযাব ৩৩:১-৫)

আর স্মরণ কর, যখন আমি অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম নবীদের থেকে এবং তোমার থেকে, নূহ, ইবরাহীম, মূসা ও মারইয়াম পুত্র ঈসা থেকে। আর আমি তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম।(৩৩:৭)

আর স্মরণ কর, আল্লাহ যার উপর নিআমত দিয়েছিলেন এবং তুমিও যার প্রতি অনুগ্রহ করেছিলে, তুমি যখন তাকে বলেছিলে ‘তোমার স্ত্রীকে নিজের কাছে রেখে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর’। আর তুমি অন্তরে যা গোপন রাখছ আল্লাহ তা প্রকাশকারী এবং তুমি মানুষকে ভয় করছ অথচ আল্লাহই অধিকতর হকদার যে, তুমি তাকে ভয় করবে; অতঃপর যায়েদ যখন তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম, যাতে পালক পুত্রদের স্ত্রীদের ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে; যখন তারা তাদের স্ত্রীদের সাথে বিবাহসম্পর্ক ছিন্ন করে। আর আল্লাহর নির্দেশ কার্যকর হয়ে থাকে। (আল-আহযাব ৩৩:৩৭)

মুহাম্মদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।(৩৩:৪০)
উল্লেখিত আয়াত গুলি থেকে আমাদের আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এই কথাটি “তুমি অন্তরে যা গোপন রাখছ আল্লাহ তা প্রকাশকারী (৩৩ঃ৭)” এই প্রসঙ্গে যাবার আগে আসুন উল্লেখিত আয়াত গুলি নাজিলের সার সংক্ষেপ জেনে নেই।
তৎকালীন আরবের লোকেরা পালিত পুত্রদের কে আপন পুত্রদের মতো মনে করতো এবং তাদের নামে পালিত পুত্রদের কে ডাকা হতো এমকি তারা তালাক প্রাপ্ত পালিত পুত্র বধু কে বিয়ে করতো না। আল্লাহ্ তাদের এই কুসংস্কার গুলি উল্লেখিত আয়াত গুলি নাজিলের মাধ্যমে বাতিল করে দিলেন।
এবার আসুন মূল প্রসঙ্গে যাই। যায়েদ রাঃ ছিল রাসূল সাঃ এর পালিত পুত্র। রাসূল সাঃ নিজে আগ্রহী হয়ে তাঁর আপন ফুপাত বোন জয়নব রাঃ কে জায়েদের সাথে বিয়ে দেন। কিন্তু তাদের বৈবাহিক জীবন সুখকর ছিলনা। ফলে আল্লাহ্ সিদ্ধান্ত নিলেন যায়েদ রাঃ সাথে জয়নব রাঃ বিবাহ বিচ্ছেদে ঘটিয়ে জয়নব রাঃ কে রাসূল সাঃ এর সাথে বিয়ে দিয়ে আরবের কুসংস্কারটি বাতিল করা, কারন এর পর আর নবী আসবেনা তাই আল্লাহ্ নবীর মাধ্যমে এই কুসংস্কারটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিলেন। রাসূল সাঃ কে আল্লাহ্ গোপনে জয়নব রাঃ সাথে তাঁর বিয়ের কথা যানালেন। কিন্তু প্রচলিত সামাজিকতার কারনে বিষয়টি তাঁর কাছে বিব্রতকর মনে হলো। ফলে যায়েদ রাঃ যখন রাসূল সাঃ এর কাছে এসে জয়নব রাঃ কে তালাক দেওয়ার কথা যানাল তখন রাসূল সাঃ প্রচলিত সামাজিকতার বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বল্লেন “তোমার স্ত্রীকে নিজের কাছে রেখে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর’'(৩৩ঃ৩৭) কারন যদি যায়েদ রাঃ জয়নব কে তালাক না দেয় তবে তাকে আর জয়নব রাঃ কে বিয়ে করতে হবে না, ফলে সমাজের লোকদের কটু কথা শুনতে হবে না। কিন্তু রাসূল সাঃ এর এমন আচরনে জবাবে বল্লেন “হে নবী, আল্লাহকে ভয় কর এবং কাফির ও মুনাফিকদের আনুগত্য করো না(৩৩ঃ১)। আল্লাহ আরো যানিয়ে দিলেন যে সকল নবীরা তার বিধান পালনে অঙ্গীকারা বদ্ধ ফলে আল্লাহ্ রাসূল সাঃ কে সেই অঙ্গীকারা বদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন “আর স্মরণ কর, যখন আমি অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম নবীদের থেকে এবং তোমার থেকে, নূহ, ইবরাহীম,মূসা ও মারইয়াম পুত্র ঈসা থেকে। আর আমি তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম। (৩৩:৭)

আল্লাহ্ যখন দেখল রাসূল সাঃ তাঁর গোপন নির্দেশটি পাশকাটিয়ে যায়েদ রাঃ কে বুঝাচ্ছে তখন আল্লাহ্ গোপন নির্দেশটি কিতাবী ওহীর মাধ্যমে প্রকাশ করে দিলেন।—-

তুমি অন্তরে যা গোপন রাখছ আল্লাহ তা প্রকাশকারী এবং তুমি মানুষকে ভয় করছ অথচ আল্লাহই অধিকতর হকদার যে, তুমি তাকে ভয় করবে; অতঃপর যায়েদ যখন তার স্ত্রীর সাথে বিবাহ সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে তোমার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম, যাতে পালক পুত্রদের স্ত্রীদের ব্যাপারে মুমিনদের কোন অসুবিধা না থাকে; যখন তারা তাদের স্ত্রীদের সাথে বিবাহসম্পর্ক ছিন্ন করে। আর আল্লাহর নির্দেশ কার্যকর হয়ে থাকে।(আহযাব ৩৩:৩৭)

প্রমান ২
আর যখন নবী তার এক স্ত্রীকে গোপনে একটি কথা বলেছিলেন; অতঃপর যখন সে (স্ত্রী) অন্যকে তা জানিয়ে দিল এবং আল্লাহ্ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন, তখন নবী সেই বিষয়ে স্ত্রীকে কিছু বললেন এবং কিছু বললেন না। যখন সে তাকে বিষয়টি জানাল তখন সে বলল, ‘আপনাকে এ সংবাদ কে দিল?’ সে বলল, ‘মহাজ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ আমাকে জানিয়েছেন।’( ৬৬:৩)

উপরের আয়াত আমরা যা যানতে পারছি তা নিম্নরূপ —
১.”আল্লাহ্ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন” এই জানানো বিষয়টি আল্লাহ্ নবীকে গোপন ওহীর মাধ্যমে যানিয়েছিলেন কিতাবী ওহীর মাধ্যমে নয়। কারন আমরা যানি কিতাবী ওহী জিব্রাইল ফিরিস্তা নিয়ে এসে রাসূল সাঃ কে তা বলতেন এবং রাসূল সাঃ সেই কথা শুনে ওহী লেখকদের কে বলতেন এবং তারা সাথে সাথে তা লিখতেন ফলে আসে পাশের সব মুসলিমরা তা যানতে পারতেন।

উপরের আয়াতটিতে জানানোর বিষয়টি প্রকাশ্যে কিতাবী ওহীর মাধ্যমে হয়নি বলেই রাসূল সাঃ এর স্ত্রী প্রশ্ন করেছিল “আপনাকে এ সংবাদ কে দিল?’’ যদি প্রকাশ্য ওহীর মাধ্যমে যানানো হতো তবে রাসূল সাঃ এর স্ত্রী তা যানতো এবং সে এই প্রশ্ন করতো না যে “আপনাকে এ সংবাদ কে দিল?’
২. যদি বলেন যানানোর বিষয়টি কিতাবী ওহীর মাধ্যমে যানানো হয়েছে। যদি তাই হয় তবে কুরআনে সেই যানানোর বনর্নাটি নেই কেন??? “কিছু বললেন এবং কিছু বললেন না” প্রশ্ন হচ্ছে ” কিছু বললেন না” এই না বলা বর্ননাটি কুরআনের কোথায় আছে???

উপরের আয়াতটি প্রমান করে যে রাসূল সাঃ এর নিকট কিতাবী ওহী ছাড়াও গোপনে ওহী আসতো। যারা এটা বিশ্বাস করেনা তা মূলত কুরআন কেই অস্বীকার করে।
৩. এই গোপন ওহীর কথা কিন্তু আল্লাহ্ বলেননি যে আমি ওহীর মাধ্যম যানিয়ে দিলাম, দেখুন আল্লাহ্ কি বলেছিলেন “আল্লাহ্ নবীকে তা জানিয়ে দিলেন” নবী কিন্তু বলেননি যে আল্লাহ্ ওহীর মাধ্যমে আমাকে যানিয়েছেন নবী কি বলেছিল দেখুন ” সে(নবী)বলল, ‘মহাজ্ঞানী ও সর্বজ্ঞ আল্লাহ আমাকে জানিয়েছেন।’’

এ থেকে এটাই প্রমানিত হয় যে এই গোপন কথাটি আল্লাহ আড়ালে থেকে সরাসরি রাসূল সাঃ কে যানিয়েছিলেন।
(৩৩ঃ৩৭ ও ৬৬ঃ৩) আয়াতের লোকে আমরা বুঝতে পারছি যে কিতাবী ওহী ছাড়াও গোপনে আল্লাহ্ সরাসরি আড়ালে থেকে নির্দেশ দিতেন অথবা তাঁর ফিরিস্তা রাসূল সাঃ এর নিকট গোপনে তাঁর নির্দেশ পৌঁছে দিতেন। তার আরেকটি প্রমান নিচে দেওয়া হলো।

প্রমান ৩
স্মরণ কর, যখন তুমি মুমিনদেরকে বলছিলে, ‘তোমাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রব তোমাদেরকে তিন হাজার নাযিলকৃত ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করবেন’?(৩ঃ১২৪)
‘স্মরন কর’ কথা বলার অর্থই হচ্ছে আল্লাহ্ গোপনে এই কথাটি বলেছিল আর যদি কিতাবী ওহীর মাধ্যমে বলা হতো তবে সাহাবীরা যানতে পারতেন ফলে রাসূল সাঃ কে এই কথা বলার প্রয়োজন পড়তো না যে, ‘তোমাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, তোমাদের রব তোমাদেরকে তিন হাজার নাযিলকৃত ফেরেশতা দ্বারা সাহায্য করবেন’? আর স্মরন কর কথার অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্ আগে গোপন ওহীর মাধ্যমে যানিয়েছেন, পরে সেই কথা কিতাবী ওহীতে বর্ননা করছেন।
আল্লাহ্ আরেকটি মাধ্যমে নবী-রাসুলদের নির্দেশ দিতেন সেটি হচ্ছে স্বপ্নে।
অতঃপর সে যখন পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল, তখন ইব্রাহীম তাকে বললঃ বৎস! আমি স্বপ্নে দেখিযে, তোমাকে যবেহ করছি; এখন তোমার অভিমত কি দেখ। সে বললঃ পিতাঃ! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাহে তো আপনি আমাকে সবরকারী পাবেন। যখন পিতা-পুত্র উভয়েই আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইব্রাহীম তাকে যবেহ করার জন্যে শায়িত করল।তখন আমি তাকে ডেকে বললামঃ হে ইব্রাহীম,তুমি তো স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করে দেখালে! আমি এভাবেই সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।(৩৭:১০২-১০৫)

আল্লাহ তাঁর রসূলকে সত্য স্বপ্ন দেখিয়েছেন। আল্লাহ চাহেন তো তোমরা অবশ্যই মসজিদে হারামে প্রবেশ করবে নিরাপদে মস্তকমুন্ডিত অবস্থায় এবং কেশ কর্তিত অবস্থায়। তোমরা কাউকে ভয় করবে না। অতঃপর তিনি জানেন যা তোমরা জান না। এছাড়াও তিনি দিয়েছেন তোমাদেরকে একটি আসন্ন বিজয়।
(৪৮:২৭)

হিকমা কাকে বলে?
জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ কে হিকমাত বলে। যাকে বাংলায় প্রজ্ঞা বলা হয়।

আল্লাহ্ ফিরিস্তা,জীন,মানুষ এমন কি সমস্ত প্রানীদের কে জ্ঞান/আকল/কমনসেন্স দিয়ে থাকেন। আবার আল্লাহ্ সেই জ্ঞান কে স্বাধীন ভাবে প্রয়োগ করার স্বাধীন ইচ্ছা শক্তি দিয়েছেন। যারা গভীর অন্তর দৃষ্টি দিয়ে এই জ্ঞান কে সঠিক ভাবে ব্যবহার করে তারা সফল হয়, যারা সঠিক প্রয়োগ করতে পারেনা তারা ব্যর্থ হয়। এই জ্ঞান আল্লাহ্ কিতাব পাঠিয়ে দেন না আল্লাহ তার এক বিশেষ পদ্ধতিতে সবাইকে জন্মগত ভাবে দিয়ে থাকেন। এই জ্ঞানের কারনেই অনেক প্রানীদের আচরনে নিতী জ্ঞান লক্ষ্য করা যায়।

ফিরিস্তারা আদম সৃষ্টির বিরোধীতা করেছিল। তাদের এই বিরুধীতার জ্ঞান কিন্তু আল্লাহ্ শিখিয়ে দেননি, তারা বিরুধীতা করেছিল তাদের জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ না করতে পারার কারনে। আবার যখন বুঝতে পারলো তাদের কথা ভুল হয়েছে, তখন আবার জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ ঘটিয়ে আল্লাহর জ্ঞানের প্রশংসা করেছে, যাতে হিকমাতের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।

আর স্মরণ কর, যখন তোমার রব ফেরেশতাদেরকে বললেন, ‘নিশ্চয় আমি যমীনে একজন খলীফা সৃষ্টি করছি’, তারা বলল, ‘আপনি কি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে তাতে ফাসাদ করবে এবং রক্ত প্রবাহিত করবে? আর আমরা তো আপনার প্রশংসায় তাসবীহ পাঠ করছি এবং আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। তিনি বললেন, নিশ্চয় আমি জানি যা তোমরা জান না।আর তিনি আদমকে নামসমূহ সব শিক্ষা দিলেন তারপর তা ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। সুতরাং বললেন, ‘তোমরা আমাকে এগুলোর নাম জানাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’।তারা বলল, ‘আপনি পবিত্র মহান। আপনি আমাদেরকে যা শিখিয়েছেন, তা ছাড়া আমাদের কোন জ্ঞান নেই। নিশ্চয় আপনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়’।(২:৩০-৩২)

শয়তান জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। আবার যখন আল্লাহ্ তার উপর রাগান্বিত হলো তখন সে জ্ঞানের সঠিক প্রয়োগ ঘটিয়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়ার আবেদন করার পরিবর্তে কু-কর্ম চালিয়ে যাওয়ার আবেদন করলো। ফলে সে অভিসপ্তের অন্তর্ভুক্ত হলো।

‘যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তার মধ্যে আমার রূহ সঞ্চার করব, তখন তোমরা তার উদ্দেশ্যে সিজদাবনত হয়ে যাও’।ফলে ফেরেশতাগণ সকলেই সিজদাবনত হল।ইবলীস ছাড়া, সে অহঙ্কার করল এবং কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ল।আল্লাহ বললেন, ‘হে ইবলীস, আমার দু’হাতে আমি যাকে সৃষ্টি করেছি তার প্রতি সিজদাবনত হতে কিসে তোমাকে বাধা দিল? তুমি কি অহঙ্কার করলে, না তুমি অধিকতর উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন?’সে বলল, ‘আমি তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন অগ্নি থেকে আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে।’তিনি বললেন, ‘তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও। কেননা নিশ্চয় তুমি বিতাড়িত।আর নিশ্চয় বিচার দিবস পর্যন্ত তোমার প্রতি আমার লা‘নত বলবৎ থাকবে।সে বলল, ‘হে আমার রব, আমাকে সে দিন পর্যন্ত অবকাশ দিন যেদিন তারা পুনরুত্থিত হবে।(৩৮:৭২-৭৯)

আল্লাহ্ হচ্ছেন মোহা জ্ঞানী ফলে তার কিতাব নিঃসন্দেহে নির্ভুল জ্ঞানের উৎস। আর এই কারনেই আল্লাহ্ তার কিতাব কে হিকমাত বলেছেন।

তোমার রাব্ব অহীর দ্বারা তোমাকে যে হিকমাত দান করেছেন এগুলি উহার (হিকমতের) অন্তর্ভুক্ত; তুমি আল্লাহর সাথে কোন ইলাহ স্থির করনা, তাহলে তুমি নিন্দিত ও (আল্লাহর) অনুগ্রহ হতে দূরীকৃত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।(সূরা বানু ইসরাঈল ১৭:৩৯)

আল্লাহ্ নবী রাসূলগন কে শুধু কিতাবের জ্ঞান দেননি সাথে দিয়েছিলেন পরোক্ষভাবে ওহীর জ্ঞান।

সুতরাং আল্লাহ মহান যিনি সত্যিকার অধিপতি; তোমার প্রতি ওহী সম্পূর্ণ হওয়ার পূর্বে তুমি কুরআন পাঠে তাড়াহুড়া করো না এবং তুমি বল, ‘হে আমার রব, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন।’(২০:১১৪)

লক্ষ্য করুন ‘হে আমার রব, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দিন।’ এখানে কিন্তু পত্যক্ষ ভাবে অবতীর্ণ কিতাবী ওহীর জ্ঞানের কথা বলা হয়নি, বলা হয়েছে পরোক্ষভাবে ভাবে অবতীর্ণ জ্ঞানের কথা। যে জ্ঞান অবতীর্ণ হলে রাসূল সাঃ যাতে কুরআন মনে রাখতে পারে। এই চাওয়ার জ্ঞান শুধু কুরআন মনে রাখতেই সীমাবদ্ধ নয় বরং সব ক্ষেত্রে আল্লাহর এই জ্ঞান দানের অন্তর্ভুক্ত।

আল্লাহ্ দাউদ আঃ ও সুলাইমান আঃ কে কিতাবী জ্ঞান ছাড়াও সাধারণ জ্ঞান দান করেছিলেন। দেখুন সেই দানকৃত জ্ঞানের আলোকে তার কি সুন্দর কথা বলেছিল।

আর অবশ্যই আমি দাঊদ ও সুলাইমানকে জ্ঞান দান করেছি এবং তারা উভয়ে বলল, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্যই, যিনি তাঁর অনেক মুমিন বান্দাদের উপর আমাদেরকে মর্যাদা দান করেছেন’।(২৭:১৫)

নবী রাসূল ছাড়াও আল্লাহ্ সাধারন মানুষদের মধ্য থেকে তার প্রিয় মুমিন বান্দদের কে এই সাধারণ জ্ঞান দান করে থাকে।

অতঃপর তারা আমার বান্দাদের মধ্য থেকে এক বান্দাকে পেল, যাকে আমি আমার পক্ষ থেকে রহমত দান করেছি এবং তাকে আমার পক্ষ থেকে জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছি।(১৮:৬৫)

হিকমাত অর্থাৎ গভীর অন্তর্দৃষ্টির মাধ্যমে সত্য উপলব্ধি ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করার জ্ঞান, আল্লাহ্ শুধু যে নবী রাসূলগন কে দিয়ে থাকেন তা নয় বরং তাঁর প্রিয় সাধারণ বান্দাদেরকেও দিয়ে থাকেন।

তিনি যাকে চান হিকমাত (প্রজ্ঞা) দান করেন। আর যাকে হিকমাত (প্রজ্ঞা) দেয়া হয়, তাকে অনেক কল্যাণ দেয়া হয়। আর বিবেক সম্পন্নগণই উপদেশ গ্রহণ করে।
(২:২৬৯)

লোকমান আঃ নবী ছিলেন না কিন্তু আল্লাহ্ তাকে হিকমাত দান করেছিলেন।
আমি অবশ্যই লুকমানকে হিকমাত (প্রজ্ঞা) দান করেছিলাম এবং বলেছিলামঃ আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সেতো তা করে নিজের জন্য এবং কেহ অকৃতজ্ঞ হলে আল্লাহতো অভাবমুক্ত, প্রশংসা।(৩১:১২)

মানুষ সত্য উপলব্ধির জ্ঞান শুধু যে আল্লাহর কিতাবের মধ্যে পেয়ে থাকেন তা নয় বরং প্রাকৃতিকগত ভাবে আল্লাহ্ প্রতিটি মানুষকে সত্য মিথ্যা প্রার্থক্য সৃষ্টি করার জ্ঞান দিয়ে থাকেন। মানুষ যদি আল্লাহর সৃষ্টির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করে তবে এই সত্য উপলব্ধির জ্ঞান লাভ করতে পারবে।

তুমি কি দেখ না, আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন, অতঃপর যমীনে তা প্রস্রবন হিসেবে প্রবাহিত করেন তারপর তা দিয়ে নানা বর্ণের ফসল উৎপন্ন করেন, তারপর তা শুকিয়ে যায়। ফলে তোমরা তা দেখতে পাও হলুদ বর্ণের তারপর তিনি তা খড়-খুটায় পরিণত করেন। এতে অবশ্যই উপদেশ রয়েছে বুদ্ধিমানদের জন্য।(৩৯:২১)

যিনি তোমাদের জন্য যমীনকে করেছেন বিছানা, আসমানকে ছাদ এবং আসমান থেকে নাযিল করেছেন বৃষ্টি। অতঃপর তাঁর মাধ্যমে উৎপন্ন করেছেন ফল-ফলাদি, তোমাদের জন্য রিয্কস্বরূপ। সুতরাং তোমরা জেনে-বুঝে আল্লাহর জন্য সমকক্ষ নির্ধারণ করো না।
(২:২২) রূহের জগতে আল্লাহ্ সমস্ত মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলেছিলেন।
যখন তোমার রাব্ব বানী আদমের পৃষ্ঠদেশ হতে তাদের বংশধরদেরকে বের করলেন এবং তাদেরকেই তাদের উপর সাক্ষী বানিয়ে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমি কি তোমাদের রাব্ব (পালনকর্তা-বিধান দাতা) নই? তারা সমস্বরে উত্তর দিলঃ ‘হ্যাঁ! আমরা সাক্ষী থাকলাম।’ (এ অঙ্গীকার এই জন্য নেয়া হয়েছিল যে) যাতে তোমরা কিয়ামাত দিবসে বলতে না পার, ‘‘ এ বিষয়টি আমাদের যানাছিলনা”।(৭:১৭২)

পৃথিবীতে আল্লাহ সাধারণ ভাবে সব মানুষের সাথে বিশেষ অনুভূতি বা ইঙ্গিতের মাধ্যমে কথা বলেন।
وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلَّا وَحْيًا أَوْ مِن وَرَآئِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولًا فَيُوحِىَ بِإِذْنِهِۦ مَا يَشَآءُ ۚ إِنَّهُۥ عَلِىٌّ حَكِيمٌ
কোন মানুষই এ মর্যাদার অধিকারী নয় যে, আল্লাহ‌ তার সাথে সরাসরি কথা বলবেন। তিনি কথা বলেন হয়
(১)অহীর মাধ্যমে, অথবা
(২) পর্দার আড়াল থেকে, কিংবা
(৩) তিনি কোন বার্তাবাহক (ফেরেশতা) পাঠান এবং সে তাঁর হুকুমে তিনি যা চান অহী হিসেবে দেয়। তিনি সুমহান ও সুবিজ্ঞ।(৪২ঃ৫১)

কুরআনের এই বিস্ময়কর আয়াতটিতে আল্লাহ্ দুইবার ‘অহী’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। প্রথমে আল্লাহর সাথে মানুষের কথা বলার মাধ্য হিসাবে শুধু ওহীর কথা বলা হয়েছে, ফেরেস্তার মাধ্যমে অহী প্রেরনের কথা বলা হয়নি। কিন্তু পরে যখন অহীর কথা বলা হয়েছে তখন বলা হচ্ছে “তিনি কোন বার্তাবাহক (ফেরেশতা) পাঠান এবং সে তাঁর হুকুমে তিনি যা চান অহী হিসেবে দেয়।”
আল্লাহর আড়ালে থেকে কথা বলা এবং ফিরিস্তা দিয়ে অহী পাঠানোর মাধ্যমে কথা বলা সম্পর্কে পূর্বেই আলোচনা করা হয়েছে সেই আলোচনা করা এখানে নিস্প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আল্লাহ্ ফিরিস্তা ছাড়া অহীর মাধ্যমে কি ভাবে মানুষের সাথে কথা বলেন?

এর উত্তর যানতে হলে প্রথমে আমাদেরকে মোল্লা-মৌলভীদের কাছ থেকে এতকাল শুনে আশা অহী মানে শুধু মাত্র কুরআন ও হাদিসের বই এই ধারনা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কারন আল্লাহ্ মৌমাছিকে নির্দেশ দেয়ার ক্ষেত্রে অহী শব্দটি ব্যবহার করেছেন।

তোমার প্রতিপালক মৌমাছির প্রতি অহী করেছেন যে, পাহাড়ে, বৃক্ষে আর উঁচু চালে বাসা তৈরি কর।(১৬:৬৮)
এখানে ওহী মানে ফিরিস্তার মাধ্যমে মৌমাছি কে যানিয়ে দেয়ার অহী নয়, যদি তাই হতো তবে আল্লাহ্ ফিরিস্তার কথা উল্লেখ করতেন। এখানে অহী বলতে আল্লাহ কতৃক বিশেষ পদ্ধতি বা ইঙ্গিতের মাধ্যমে তার নির্দেশ পাঠানো কে বুঝিয়েছেন।

অাবার প্রতারনার উদ্দেশ্যে জ্বীন বা মানুষরূপী শয়তানদের চিত্তাকর্ষণ কথা কে আল্লাহ্ ওহী বলেছেন।
এভাবে আমি প্রত্যেক নাবীর জন্য মানুষ আর জ্বীন শয়তানদের মধ্য হতে শত্রু বানিয়ে দিয়েছি, প্রতারণা করার উদ্দেশে তারা একে অপরের কাছে চিত্তাকর্ষক (অহী) কথাবার্তা বলে। তোমার প্রতিপালক ইচ্ছে করলে তারা তা করত না, কাজেই তাদেরকে আর তাদের মিথ্যে চর্চাকে উপেক্ষা করে চল।(৬:১১২)

সরাসরি আল্লাহ্ কর্তৃক এই বিশেষ অহীর মাধ্যমে আল্লাহ্ তার নির্দেশ সাত আসমানেও প্রেরন করে থাকেন। মূলত আল্লাহর কর্তৃক এই বিশেষ ওহীর মাধ্যমে আল্লাহ্ তাঁর বিশ্বভ্রমান্ড পররিচালনার নির্দেশ প্রধান করে থাকেন।

অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে সাত আকাশে বিন্যস্ত করলেন দু’দিনে আর প্রত্যেক আকাশকে তার বিধি-ব্যবস্থা ওয়াহীর মাধ্যমে প্রদান করলেন। আমি আলোকমালার সাহায্যে দুনিয়ার আকাশের শোভাবর্ধন করলাম আর সুরক্ষার (ও ব্যবস্থা করলাম)। এ হল মহা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর সুনির্ধারিত (ব্যবস্থাপনা)।
(৪১:১২)
আল্লাহর এই বিশেষ অহী সবচেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারনেই ৪২ঃ৫১ আয়াতে মানুষের সাথে আল্লাহর কথা বলার মাধ্যম হিসাবে সর্বপ্রথম এই অহীর কথা উল্লেখ করেছেন। এই অহীর কারনেই মানুষের মন অবচেতন ভাবে ধারনা করতে পারে কোনটি ইসলাম অনুযায়ী সঠিক আর কোনটি ভুল। মানুষ যখন কোন মানুষকে অন্যায় ভাবে খুন করে, তখন সে যদি রাতের অন্ধকারে নিজেকে প্রশ্ন করে তার এই কাজটি কি সঠিক হয়েছে? তখন তার বিবেক প্রচন্ড ভাবে তাকে ধিক্কার দিবে এই জঘন্য কাজের জন্য। তার এই অনুভূতি পরোক্ষভাবে আল্লাহর সাথে কথোপকথন ছাড়া আর কিছুই নয়।

আল্লাহ্ জন্মগত ভাবে ইলহামের মাধ্যমে মুমিন কাফের সবাই কে সাধারণত জ্ঞান দিয়ে থাকে। এই সাধারণত জ্ঞান ব্যবহার করে মানুষ স্রষ্টা, সত্য মিথ্যা, সঠিক পথ, ভুল পথ সম্পর্কে যানতে পারে।
মানুষের নফসের ও সেই সত্তার কসম যিনি তাকে ঠিকভাবে গঠন করেছেন।তারপর তার পাপ ও তার তাকওয়া তার প্রতি ইলহাম করেছেন।নিঃসন্দেহে সফল হয়ে গেছে সেই ব্যক্তি যে নফসকে পরিশুদ্ধ করেছে এবং যে তাকে অনবদমিত করেছে সে ব্যর্থ হয়েছে।( ৯১ঃ৭-১০)আমি তাকে রাস্তা দেখিয়ে দিয়েছি। এরপর হয় সে শোকরগোজার হবে নয়তো হবে কুফরের পথ অনুসরণকারী।(৭৬ঃ৩)
মানুষের অন্তর সিদ্ধান্ত নেয় সে কি করবে।

যদি তুমি আমাকে হত্যা করতে আমার দিকে হস্ত প্রসারিত কর, তবে আমি তোমাকে হত্যা করতে তোমার দিকে হস্ত প্রসারিত করব না। কেননা, আমি বিশ্বজগতের পালনকর্তা আল্লাহকে ভয় করি।
আমি চাই যে, আমার পাপ ও তোমার পাপ তুমি নিজের মাথায় চাপিয়ে নাও। অতঃপর তুমি দোযখীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাও। এটাই অত্যাচারীদের শাস্তি।
অতঃপর তার অন্তর তাকে ভ্রাতৃহত্যায় উদুদ্ধ করল। অনন্তর সে তাকে হত্যা করল। ফলে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।(৫:২৮-৩০)

মানুষ কে শয়তান কুমন্ত্রণা দেয় খারাপ কাজ করার জন্য।
(আমি আশ্রয় চাচ্ছি) আত্মগোপনকারী কু-মন্ত্রণাদাতার অনিষ্টতা হতে।যে কু-মন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জিনের মধ্য হতে অথবা মানুষের মধ্য হতে।(১১৪:৬)

অতঃপর তাদের লজ্জাস্থান যা পরস্পরের কাছে গোপন রাখা হয়েছিল তা প্রকাশ করার জন্য শাইতান তাদেরকে কুমন্ত্রণা দিল, সে বললঃ তোমাদের রাব্ব এই বৃক্ষের কাছে যেতে নিষেধ করেছেন, এর কারণ এ ছাড়া কিছুই নয় যে, তোমরা যেন মালাইকা/ফেরেশতা হয়ে না যাও, অথবা এখানে (এই জান্নাতে) চিরন্তন জীবন লাভ করতে না পার।( ৭:২০)

অতঃপর শয়তান তাকে কুমন্ত্রণা দিল, বলল, ‘হে আদম, আমি কি তোমাকে বলে দিব অনন্ত জীবনপ্রদ গাছ এবং অক্ষয় রাজত্ব সম্পর্কে? (২০:১২০)

ইলম /জ্ঞান গ্রহন করে আকল/ বিবেক/Common sense এই কারনেই আল্লাহ্ বার বার বিবেকের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছেন।

নিশ্চয় আমি তোমাদের প্রতি এক কিতাব নাযিল করেছি, যাতে তোমাদের জন্য উপদেশ রয়েছে, তবুও কি তোমরা (বিবেক দিয়ে) বুঝবে না? (২১:১০)
আর তারা বলবে, ‘যদি আমরা শুনতাম অথবা (বিবেক দিয়ে) বুঝতাম, তাহলে আমরা জ্বলন্ত আগুনের অধিবাসীদের মধ্যে থাকতাম না।( ৬৭:১০)
তোমরা কি মানুষকে ভাল কাজের আদেশ দিচ্ছ আর নিজদেরকে ভুলে যাচ্ছ? অথচ তোমরা কিতাব তিলাওয়াত কর। তোমরা কি (বিবক দিয়ে তা) বুঝ না?(২:৪৪)
নিশ্চয় আসমানসমূহ ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে, সে নৌকায় যা সমুদ্রে মানুষের জন্য কল্যাণকর বস্ত্ত নিয়ে চলে এবং আসমান থেকে আল্লাহ যে বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন অতঃপর তার মাধ্যমে মরে যাওয়ার পর যমীনকে জীবিত করেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সকল প্রকার বিচরণশীল প্রাণী ও বাতাসের পরিবর্তনে এবং আসমান ও যমীনের মধ্যবর্তী স্থানে নিয়োজিত মেঘমালায় রয়েছে নিদর্শনসমূহ এমন কওমের জন্য, যারা বিবেকবান।
(২:১৬৪)
আর দুনিয়ার জীবন খেলাধুলা ও তামাশা ছাড়া কিছু না। আর যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্য আখিরাতের আবাস উত্তম। অতএব তোমরা কি (বিবেক দিয়ে তা) বুঝবে না?(৬:৩২)
তিনিই তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছেন। তারপর শুক্রবিন্দু থেকে, তারপর ‘আলাকা’ থেকে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে শিশুরূপে বের করে আনেন। তারপর যেন তোমরা তোমাদের যৌবনে পদার্পণ কর, অতঃপর যেন তোমরা বৃদ্ধ হয়ে যাও। আর তোমাদের কেউ কেউ এর পূর্বেই মারা যায়। আর যাতে তোমরা নির্ধারিত সময়ে পৌঁছে যাও। আর যাতে তোমরা (বিবেক দিয়ে) অনুধাবন কর।(গাফির ৪০:৬৭)
মানুষ যখন বিবেককে সঠিক পথে পরিচালিত না করতে পারার কারনে কোন ভুল কাজ করে তখন তার নফসকে ভৎসনাকারী বিবেক “আল-লাওয়ামা” নফসকে তিরস্কার করে। এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারছি যে বিবেকের রায় সব সময় সঠিক হয়না। যার প্রমান রাসূল সাঃ কে আল্লাহ্ ছয়টি বিষয়ে সংশোধন করেছিলেন। এই ছয়টি বিষয়ে রাসূল সাঃ বিবেক দিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। নবী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিবেকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রার্থক্য হচ্ছে আমরা বিবেক দিয়ে কোন ভুল সিদ্ধান্ত নিলে আল্লাহ্ সেই ভুল সংশোধনের জন্য ওহী পাঠান না, কিন্তু নবীদের বেলায় পাঠাতেন। ফলে নবীদের বিবেকের সিদ্ধান্ত সব সঠিক।
আমি আরো কসম করছি নফ্সকে-ভৎর্সনাকারী আল-লাওয়ামার (বিবেকের)!(সূরা কিয়ামাহ ৭৫:২)
লোকমান আঃ নবী ছিলেননা কিন্তু আল্লাহ্ তাকে হিকমাত দান করেছিল(৩১ঃ১২)। আল্লাহর দানকৃত সেই হিমাতের আলোকে তিনি তাঁর পুত্রদের কে উপদেশ দিয়েছিল। এই উপদেশ আল্লাহর কাছে এতটাই পছন্দ হয়েছে যে আল্লাহ্ তাঁর নামে একটি আলাদা সূরা নাজিল করে সেখানে তার উপদেশ গুলি আমাদের জন্য অনুসরণীয় আদর্শ হিসাবে উপস্থাপন করছেন।
ভাবনার বিষয় হচ্ছে লোকমান আঃ এর এই উপদেশ বানী গুলি কিন্তু আল্লাহ্ জিবরাইল ফিরিস্তার মাধ্যমে অহি করে পাঠাননি। ওনি আল্লাহর দানকৃত হিকমাতের আলোকে এই উপদেশ গুলি দিয়েছিলেন। প্রশ্ন হচ্ছে লোকমান আঃ এর উপদেশ যদি আল্লাহর নিকট এতোটা গুরুত্বপূর্ণ হয় তবে তাঁর সর্বশেষ রাসূল হিকামাতের আলোকে আমাদের জন্য যে উপদেশ রেখে গেছেন সেটা কি লোকমান আঃ এর উপদেশের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ? মোটেই তা নয় কারন আল্লাহ্ তার রাসূল কে হিকমাতের আলোকে দাওয়াত দিতে বলেছেন। ফলে হিকমাতের আলোকে আল্লাহর বিধান বুঝার জন্য রাসূল সাঃ আমাদেরকে যে সমস্ত উপদেশ, উপমা, উদাহরণ দিতেন তা আমাদের জন্য লোকমান আঃ এর উপদেশের মতই গুরুত্বপূর্ণ বরং তাঁর চেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ণ কারন কারন লোকমান আঃ কে নবী করে পাঠানো হয়নি অপর দিকে রাসূল সাঃ কে নবী করে পাঠানো হয়েছে।
তুমি তোমরা রবের পথে হিকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহবান কর এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর। নিশ্চয় একমাত্র তোমার রবই জানেন কে তার পথ থেকে ভ্রষ্ট হয়েছে এবং হিদায়াতপ্রাপ্তদের তিনি খুব ভাল করেই জানেন (১৬:১২৫)
আল্লাহ্ কুরআনে তাঁর বিধান বুঝাতে সুন্দর সুন্দর উপমা-উদাহরণ পেশ করেছেন।

তুমি কি দেখ না, আল্লাহ কীভাবে উপমা পেশ করেছেন? কালিমা তাইয়েবা, যা একটি ভাল বৃক্ষের ন্যায়, যার শিকড় মজবুত আর শাখা-প্রশাখা আকাশে।
(১৪:২৪)

হে মুমিনগণ, তোমরা খোঁটা ও কষ্ট দেয়ার মাধ্যমে তোমাদের সদাকা বাতিল করো না। সে ব্যক্তির মত, যে তার সম্পদ ব্যয় করে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে এবং বিশ্বাস করে না আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি। অতএব তার উপমা এমন একটি মসৃণ পাথর, যার উপর রয়েছে মাটি। অতঃপর তাতে প্রবল বৃষ্টি পড়ল, ফলে তাকে একেবারে পরিষ্কার করে ফেলল। তারা যা অর্জন করেছে তার মাধ্যমে তারা কোন কিছু করার ক্ষমতা রাখে না। আর আল্লাহ কাফির জাতিকে হিদায়াত দেন না।আর যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ও নিজদেরকে সুদৃঢ় রাখার লক্ষ্যে সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা উঁচু ভূমিতে অবস্থিত বাগানের মত, যাতে পড়েছে প্রবল বৃষ্টি। ফলে তা দ্বিগুণ ফল-ফলাদি উৎপন্ন করেছে। আর যদি তাতে প্রবল বৃষ্টি নাও পড়ে, তবে হালকা বৃষ্টি (যথেষ্ট)। আর আল্লাহ তোমরা যা আমল কর, সে ব্যাপারে সম্যক দ্রষ্টা।(২ঃ২৬৪-২৬৫)
যারা তাদের রবের সাথে কুফরী করে তাদের আমলসমূহের দৃষ্টান্ত হল এমন ছাইয়ের মত, প্রবল ঘুর্ণিঝড়ের দিনে বাতাস প্রচন্ড বেগে যা বহন করে নিয়ে যায়। তারা যা অর্জন করেছে, তার মাধ্যমে কিছুই করতে পারে না। এ তো ঘোরতর বিভ্রান্তি।(১৪:১৮)
রাসূল সাঃ কে আল্লাহ্ তাঁর বিধান স্পষ্ট করে মানুষকে বুঝাতে বলেছেন অর্থাৎ হিকমাতের আলোকে বিভিন্ন উপমা,উদাহরণ ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের মাধ্যমে আল্লাহর বিধান মানুষকে বুঝাতে বলেছেন।
(অতীতের রসূলদেরকে পাঠিয়েছিলাম) স্পষ্ট প্রমাণাদি আর কিতাব দিয়ে; আর এখন তোমার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ করছি মানুষকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য যা তাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে আর যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। (সূরা নাহ্‌ল ১৬:৪৪)
আমি তোমার প্রতি কিতাব এজন্য নাযিল করেছি যাতে তুমি সে সকল বিষয় স্পষ্ট করে দিতে পার যে বিষয়ে তারা মতভেদ করেছিল, আর (এ কিতাব) বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথপ্রদর্শক ও রহমাত স্বরূপ।
(১৬:৬৪)
নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সমস্ত নবীদের কে অহী ছাড়াও হিকমাত দান করেছিলেন। এর আলোকে তারা বুদ্ধিদীপ্ত কথা বলতেন। এই কথা গুলি বলার জন্য আল্লাহ্ জিব্রাইল ফিরিস্তা পাঠাননি। আল্লাহ্ তাদের এই হিকমাতের আলোকে ঈমানদীপ্ত কথা গুলি কুরআনে স্হান দিয়ে আমাদের কে সেই চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হতে উৎসাহ যুগিয়েছেন।
আর স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম বলল, হে আমার পালনকর্তা আমাকে দেখাও, কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত করবে। বললেন; তুমি কি বিশ্বাস কর না? বলল, অবশ্যই বিশ্বাস করি, কিন্তু দেখতে এজন্যে চাইছি যাতে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করতে পারি। বললেন, তাহলে চারটি পাখী ধরে নাও। পরে সেগুলোকে নিজের পোষ মানিয়ে নাও, অতঃপর সেগুলোর দেহের একেকটি অংশ বিভিন্ন পাহাড়ের উপর রেখে দাও। তারপর সেগুলোকে ডাক; তোমার নিকট দৌড়ে চলে আসবে। আর জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, অতি জ্ঞান সম্পন্ন।(২ঃ২৬০)
তুমি কি সে লোককে দেখনি, যে পালনকর্তার ব্যাপারে বাদানুবাদ করেছিল ইব্রাহীমের সাথে এ কারণে যে, আল্লাহ সে ব্যাক্তিকে রাজ্য দান করেছিলেন? ইব্রাহীম যখন বললেন, আমার পালনকর্তা হলেন তিনি, যিনি জীবন দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান। সে বলল, আমি জীবন দান করি এবং মৃত্যু ঘটিয়ে থাকি। ইব্রাহীম বললেন, নিশ্চয়ই তিনি সুর্যকে উদিত করেন পূর্ব দিক থেকে এবার তুমি তাকে পশ্চিম দিক থেকে উদিত কর। তখন সে কাফের হতভম্ব হয়ে গেল। আর আল্লাহ সীমালংঘণকারী সম্প্রদায়কে সরল পথ প্রদর্শন করেন না।(২ঃ২৫৮)
যখন উভয় দল পরস্পরকে দেখল, তখন মূসার সঙ্গীরা বলল, আমরা যে ধরা পড়ে গেলাম।মূসা বলল, কখনই নয়, আমার সাথে আছেন আমার পালনকর্তা। তিনি আমাকে পথ বলে দেবেন।অতঃপর আমি মূসাকে আদেশ করলাম, তোমার লাঠি দ্বারা সমূদ্রকে আঘাত কর। ফলে, তা বিদীর্ণ হয়ে গেল এবং প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতসদৃশ হয়ে গেল।(২৬ঃ৬১-৬৩)

মদিনায় হিজরতের উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় গুহায় অবস্থান কালে শত্রুরা যখন একেবারে নিকটে চলে আসে তখন আল্লাহর রাসূল সাঃ কি বলেছেন দেখুন।
এই কথা বলার জন্য আল্লাহ্ কিন্তু রাসূল সাঃ এর নিকট ফিরিস্তার মাধ্যমে অহী পাঠাননি।
যদি তোমরা তাকে (রসূলকে) সাহায্য না কর, তবে মনে রেখো, আল্লাহ তার সাহায্য করেছিলেন, যখন তাকে কাফেররা বহিষ্কার করেছিল, তিনি ছিলেন দু’জনের একজন, যখন তারা গুহার মধ্যে ছিলেন। তখন তিনি আপন সঙ্গীকে বললেন বিষন্ন হয়ো না, আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। অতঃপর আল্লাহ তার প্রতি স্বীয় সান্তনা নাযিল করলেন এবং তাঁর সাহায্যে এমন বাহিনী পাঠালেন, যা তোমরা দেখনি। বস্তুতঃ আল্লাহ কাফেরদের মাথা নীচু করে দিলেন আর আল্লাহর কথাই সদা সমুন্নত এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।(৯ঃ৪০)
এরপরও কি বলবেন রাসূল সাঃ ওহী ছাড়া আল্লাহর দানকৃত হিকমাতের আলোকে যে সমস্ত আদেশ ও উপদেশ মুলক কথা বলতেন তা গুরুত্বপূর্ণ নয়?

নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সমস্ত নবী-রাসুলগনকে অহী ছাড়াও হিকমা দান করেছিলেন ফলে রাসূলগনের আনুগত্য বলতে শুধু কিতাব নয় বরং আল্লাহর দানকৃত হিকমার আলোকে তাঁরা যে সকল উপদেশ, আদেশ-নিষেধ করতেন এবং মৌন সম্মতি যানাতেন তা সবই রাসূলগনের আনুগত্যের শর্তে অন্তর্ভুক্ত।
সে(নূহ্) বলল, ‘হে আমার কওম! নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য এক স্পষ্ট সতর্ককারী যে, তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদাত কর, তাঁকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর’।(৭১:২-৩)
(লুত বল্লো)‘নিশ্চয় আমি তোমাদের জন্য এক বিশ্বস্ত রাসূল’। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর।(২৬:১৬৩)
তোমরা সালাত কায়েম কর, যাকাত দাও এবং রাসূলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হতে পার।(২৪ঃ৫৬)
আমি(মুহাম্মদ) তোমাদের নিকট এসেছি তোমাদের রবের পক্ষ থেকে নিদর্শন নিয়ে। অতএব, আল্লাহ্ কে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর’।(৩ঃ৫০)
আল্লাহ তোমার প্রতি নাযিল করেছেন কিতাব ও হিকমাত এবং তোমাকে শিক্ষা দিয়েছেন যা তুমি জানতে না। আর তোমার উপর আল্লাহর অনুগ্রহ রয়েছে মহান।(৪ঃ১১৩)

আমি তোমাদের মধ্যে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি তোমাদের মধ্য থেকে, যে তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে, তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়। আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয় এমন কিছু যা তোমরা জানতে না।(২:১৫১)
ُরাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও এবং আল্লাহকেই ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে কঠোর।(৫৯ঃ৭)

হে মুমিনগণ, তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর ও আনুগত্য কর রাসূলের এবং তোমাদের মধ্য থেকে কর্তৃত্বের অধিকারীদের। অতঃপর কোন বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ কর তাহলে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যার্পণ করাও- যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখ। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর।(৪ঃ৫৯)

বল (মুহাম্মদ), ‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমার অনুসরণ কর, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।(৩:৩১)
যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হল, তবে আমি তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক করে প্রেরণ করিনি।(৪:৮০)
যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে আল্লাহ তাকে প্রবেশ করাবেন জান্নাতসমূহে, যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর এটা মহা সফলতা।(৪:১৩)
বল, ‘তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর’। তারপর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ কাফিরদেরকে ভালবাসেন না।  (৩ঃ৩২)
আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করে এবং তাঁর সীমারেখা লঙ্ঘন করে আল্লাহ তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আর তার জন্যই রয়েছে অপমানজনক আযাব।(৪:১৪)
রাসূল সাঃ অহী ছাড়া হিকমার আলোকে অসংখ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তার মধ্যে মাত্র ছয়টি বিষয়ে আল্লাহ্ কর্তৃক সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। ফলে বাকী বিষয় গুলি যে নির্ভুল এবং আল্লাহ্ কর্তৃক পরোক্ষভাবে অনুমদিত এবং আমাদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। সংশোধিত এই রাসূলের চারিত্রিক সনদ স্বয়ং আল্লাহ্ দিয়েছেন —
আর নিশ্চয় তুমি মহান চরিত্রের উপর অধিষ্ঠিত। (৬৮:৪)
অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। (৩৩:২১)
রাসূল সাঃ এর জীবন আদর্শ হচ্ছে পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য রহমত। সেই সাথে তিনি ছিলেন মানব জাতীর সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী।
আর আমি তো তোমাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি।(২১:১০৭)
আর আমি তো কেবল তোমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না।

en_USEnglish
Powered by TranslatePress
Verified by MonsterInsights