Categories
My text

ভয়টা শাস্তির, রবের না

ঈশ্বরের শাস্তির ভয়ে যারা ভালো মানুষ, তারা সত্যিকারের ভালো মানুষ নয়।
সত্যিকারের ভালো মানুষ তারা, যারা ঈশ্বর নেই জেনেও খারাপ কাজ করে না।

Categories
My text

চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শন

কোরআন বিজ্ঞানময় আর এতে রয়েছে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শনঃ

আল্লাহ আল কোরানে মানুষের ইহকালীন এবং পরকালীন কল্যানের কথা যেমন আলোচনা করেছেন তেমনি আলোচনা করেছেন জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং তার সৃষ্টি কুলের নিগূঢ় রহস্যের কথা। আর এই নিগূঢ় রহস্যের কথা একমাত্র তারাই বুঝতে বা অনুধাবন করতে পারেন, যারা জ্ঞানী এবং আল্লাহর সৃষ্টি জগত নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা ভাবনা করেন। আল্লাহ তাঁর সৃষ্টি জগতের এত এত বস্তু থাকতে, কেন তিনি তাঁর বাণীর বিশেষ বিশেষ স্থানে বিশেষ বিশেষ কিছু বিষয় নিয়ে শপথ করেছেন? নিশ্চয় এর মাঝে আছে কোন বিশেষ কোন রহস্য বা সুপ্ত নিদর্শন। তেমনি একটি আয়াত সূরা ওয়াকিয়ার ৭৫।

” আমি শপথ করিতেছি সেই স্থানের যেখানে নক্ষত্র সমুহ পতিত হয়।”(৫৬ঃ৭৫)

উক্ত আয়াতে আল্লাহ নক্ষত্র সমুহ পতনের স্থানের কথা উল্লেখ করেছেন। অর্থাৎ নক্ষত্র সমুহ পতিত হওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। যে স্থানে এসে নক্ষত্র সমুহ পতিত হয়, শেষ হয়,বা ধংস হয়ে যায় এবং তাদের পরিসমাপ্তি ঘটে।
তাহলে এই স্থানটিই কি সেই স্থান, যা বর্তমানে আধুনিক বিজ্ঞানীগন ” ব্লাক হোল ” নামে আবিস্কার করেছেন?
রাতের আকাশে ঝিঁকিমিকি করতে থাকে অসংখ্য অগনিত নক্ষত্র। কিন্তু আকাশ ভরা অগনিত এই নক্ষত্রের মাঝে অন্ধকার অদৃশ্যের মত ঘুরে বেড়ায় এক ধরনের ভয়ংকর দানব!! এইসব দানবেরা চলার পথে যাই পায় মহাজাগতিক যে কোন বস্তু, গ্রহ, নক্ষত্র সব কিছুই গোগ্রাসে গিলতে থাকে। ভয়ংকর এসব দানবের নামই হলো ” ব্লাক হোল “। ব্লাক হোলের গ্রাভেটি বা আকর্ষন বল এত তীব্র যে তার কাছে থেকে আলোও পালাতে পারে না। এই ব্লাক হোল – ই হলো বর্তমান বিজ্ঞানের প্রদত্ত তথ্য অনুসারে মহান আল্লাহর শপথকৃত —” নক্ষত্র পতনের স্থান।”

পরবর্তি আয়াতেই আল্লাহ সেই শপথে কথা স্মরন করিয়ে আবারও বলেন — ” এ এক গুরুতর শপথ, যদি তোমরা জানতে।” (৫৬ঃ৭৬)

গুরুতর শপথ, যদি তোমরা জানতে। কি এমন গভীর রহস্যে পরিপুর্ন এ বাক্য। এ আয়াতে আল্লাহ সেই ব্লাক হোলের গঠন,সৃষ্টির রহস্য তার কার্যপ্রণালীর কথাই বলেছেন। যা আমাদের অজানা বলেই বলেছেন, যদি তোমরা জানতে?
বিজ্ঞান বলেঃ মহাকাশে নক্ষত্রের বিষ্ফোরনের মাধ্যমে যে সুপারনোভার সৃষ্টি হয় তা থেকে ব্লাক হোলের সৃষ্টি।
মহাকাশে ছোট বড় অসংখ্য ব্লাক হোল ঘুরে বেড়াচ্ছে। ব্ল্যাক হোল হলো মহাশূন্যের এমন কিছু জায়গা, যেখানে মহাকর্ষবল আশপাশের সবকিছু টেনে তার কেন্দ্রে নিয়ে যায়। এমনকি আলোও টেনে নেয়। সামান্য জায়গায় অনেক বেশি পদার্থ ঘনীভূত হয় বলে এর বিরাট আকর্ষণশক্তি থাকে। কোনো বড় তারা (নক্ষত্র) দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে পড়ে নিজের কেন্দ্রে জড়ো হয়ে ব্ল্যাক হোলের উদ্ভব ঘটে। এ সময় সুপারনোভার সৃষ্টি হয়। সুপারনোভা হলো মহাশূন্যে নক্ষত্রের বিস্ফোরণ।

একটি ছোট আকারের ব্লাক হোলের ব্যসার্ধ প্রায় এক আলোক বর্ষ বা ৯৫ হাজার কোটি কিলোমিটার। ব্লাক হোল প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ নক্ষত্রকে মৃত্যুর দুয়ারে পাঠিয়ে দেয়। সূর্য আমাদের গ্রহের চেয়ে ১৩ লক্ষগুন বড়। এই সূর্যের চেয়েও হাজার গুন বড় শত শত নক্ষত্র ব্লাক হোলের কাছে কিছুই না।

তাহলে দেখা যাচ্ছে আধুনিক বিজ্ঞান সুদীর্ঘ সময় পরিক্ষা -নিরীক্ষা ও গবেষনার মাধ্যমে যে তথ্যগুলো আজ উপস্থাপন করেছে, পবিত্র কোরান ১৫০০ বছর আগেই তা ঘোষনা করেছে। তাই তো আল্লাহ তাআলা বলেন, ” তিনি তোমাদের তাঁহার নিদর্শন সমুহ দেখিয়ে থাকেন, তার পরেও তোমরা আল্লাহর কোন নিদর্শনকে অস্বীকার করবে? ” (৪০ঃ৮১)

অথচ আমাদের অধিকাংশ শায়েখরা কোরআনকে ব্যবহার করেন বিবি তালাকের ফতূয়ার জন্য। আবার আরেক দল রয়েছেন, যারা কোরআন দিয়ে প্রচলিত ইবাদতের ভুল নিরুপন মহা ব্যস্ততায় মগ্ন।

ফলে কোরানের প্রতি শ্রদ্ধা, ভাবগাম্ভীর্যতা অনেকাংশে হ্রাস পাচ্ছে, পক্ষান্তরে নাস্তিকতার পরিধি প্রসারিত হচ্ছে। কোরানের আয়াতকে তর্ক- বিতর্কের উপদান হিসেবে প্রয়োগ করছে।

আল্লাহ মুমিনদের উদ্দ্যেশে বলেনঃ

তোমরা যদি তাহাদের দল বিশেষের আনুগত্য কর, তবে তাহারা তোমাদেরকে ঈমান আনার পর আবার কাফির বানাইয়া ছাড়িবে।( ৩ঃ১০৩)

Categories
My text

উড়োখবর পরিহার

হে মু’মিনগণ! যদি কোন ফাসেক তোমাদের কাছে কোন খবর নিয়ে আসে তাহলে তা অনুসন্ধান করে দেখ। এমন যেন না হয় যে, না জেনে শুনেই তোমরা কোন গোষ্ঠীর ক্ষতি করে বসবে এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে। (সূরাঃ ৪৯ আয়াতঃ ৬)

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اِنْ جَآءَكُمْ فَاسِقٌ  ۢ بِنَبَاٍ فَتَبَيَّنُوْۤا اَنْ تُصِيْبُوْا قَوْمًا  ۢ بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوْا عَلٰى مَا فَعَلْتُمْ نٰدِمِيْنَ
ইয়া আইয়ূহাল্লাযিনা আমানু ইন জাআকুম ফাসিকুম
বিনাবাইন ফাতাবাইয়ানুআন তুসিবুকাওমাম বিজাহালাতিন ফাতুসবিহু আলা মা ফাআলতুম নাদিমিন।

শব্দার্থ: يَاأَيُّهَا = হে, الَّذِينَ = যারা, آمَنُوا = ঈমান এনেছ, إِنْ = যদি, جَاءَكُمْ = তোমাদের কাছে আসে,فَاسِقٌ = কোনো সত্য ত্যাগী, بِنَبَإٍ = কোনো খবর নিয়ে, فَتَبَيَّنُوا = তোমরা তখন পরীক্ষা করো, أَنْ = (এমন না হয়) যে, تُصِيبُوا = তোমরা ক্ষতি করে বস, قَوْمًا = সম্প্রদায়কে, بِجَهَالَةٍ = অজ্ঞতার কারণে, فَتُصْبِحُوا = তাহলে, عَلَىٰ = জন্য, مَا = যা, فَعَلْتُمْ = তোমরা করেছ, نَادِمِينَ = অনুতাপকারী লজ্জিত,

Categories
My text

উপসানালয়-বালাখানা

ধর্মীয় উপাসনালয়কে চাকচিক্য করে, নীতি নৈতিকতা ভুলে গিয়ে এই কোন ধর্মে পতিত হচ্ছে পৃথিবীর সব হিন্দু, মুসলিম, ইহুদী, খৃষ্টান?

ইসলাম প্রচারের গোড়ার দিকে প্রতিষ্ঠিত মসজিদগুলি মানবতার কল্যাণে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে অনেক জনপদের পুরো চিত্রই পাল্টে দিয়েছিল। মসজিদ কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা, বালাখানা প্রতিষ্ঠা করে, সাধারন মানুষের শিক্ষা গ্রহন থেকে, অসহায় মানুষের বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ এমনকি মুসাফিরদের অন্তত ঘুমিয়ে একটা রাত পার করার সুযোগ ইসলাম ধর্মকে বিশেষত্ব দান করেছিল।

বিশেষ করে সুফি সাধকদের খানকাহ সংলগ্ন মসজিদে সে সময়ে একটি লঙ্গরখানা সব সময় থাকতো।
সেখানে হিন্দু মুসলিম তথা জাতি-ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার প্রবেশাধিকার এবং খাবার খাওয়ার সুযোগ ছিল।

সময়ের আবর্তে সেই মসজিদের চাকচিক্য বেড়েছে বহুগুণে। তবুও প্রতিদিন চলে নানাভাবে চাঁদা আদায়।

আর এইভাবে একটা পর্যায়ে গণমানুষের সঙ্গে তৈরি হয়ে গেছে মসজিদের দূরত্ব। নামাজের সময় প্রথম ছাড়া বাকি পুরোটা সময় মসজিদগুলো তালা মারা থাকে।

কিন্ত আমার আপনার অর্থায়নে নির্মিত মসজিদের গেইটে যদি তালা ঝুলতে থাকে সব সময় তবে লাভ কি হলো?

ওয়াক্ত শেষ হতে না হতেই দেখি বেশিরভাগ মসজিদের গেইটে তালা ঝুলে!!

নতুন প্রজন্ম ফিরে যাক আবার মুলের দিকে, ফিরিয়ে আনুক প্রকৃত ইসলামিক সমাজ ব্যবস্থাকে।

ধর্মকে যখন হতে জীবকা হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে তখন থেকেই ধর্ম তার স্বকীয়তা হারিয়ে বিশেষ স্তম্ভের আচার-অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে।

Categories
My text

আমাদের নামাজ

দীর্ঘদিন যদি কোন মিথ্যে শুনতে শুনতে অভ্যস্থ হয়ে যায় এবং তার বিপরীত কোন সত্য হাজির না হয়, তবে সে মিথ্যেটাও একদিন সত্যে পরিনত হয় এবং তা মানব হৃদয়ে মজবুদ এক ভিত গেড়ে বসে। সে তখন সে ভিত থেকে আর সড়ে আসতে পারে না, যত সত্যই তার কাছে উপস্থাপন করা হোক না কেন। এবং এই বিশ্বাসের ঘরে কেউ আঘাত করলে তা মেনে নিতে পারে না। এমনকি নিজ সন্তানকেও সে ত্যাগ করতে প্রস্তুত। বন্ধু-বান্ধব, পাড়া পড়শি, আত্মীয়- স্বজন তো দুরে থাক। তার মনে দীর্ঘ দিনের লালিত সে বিশ্বাসের বিপরীতে কোন সত্যকেও উপস্থাপন করা হলে সে আৎকে উঠে। প্রতিহত করতে চায়,বিরোধিতায় লিপ্ত হয় এমন কি জীবন দিতেও প্রস্তুত হয়ে যায়। আর সে বিশ্বাস যদি হয় ধর্মীয় – তবে তো আর কথাই নেই। ফলে অনেককে উচ্চ শিক্ষা অর্জনের পরও দেখা যায় সে তার গোড়ামীর প্রাচীর ভেদ করে বেরিয়ে আসতে পারে না। তার মুল কারন সত্যটা তার সামনে শুরুতে কোন দিন উপস্থাপন করা হয়নি। ফলে পৃথিবী নামক গ্রহের বুকে জাতী একটি হলেও ধর্ম চার হাজার অধিক। কেউ কাউকে তার ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত থেকে এক বিন্দু টলাতে সক্ষম নয়। কারন জন্মগত ভাবে সে এ অনুভুতি গুলো দেখে আসতেছে। বহু পুর্ব হতে বাপ-দাদাদেরকেও এরুপই করতে দেখে এসেছে। সে যাকে,যাকে ভক্তি শ্রদ্ধা করে যাকে ইত্তেবা করে তার মুখেও এমনি শুনে এসেছে। তাই তার অন্য কোন কথা, মত কানে পৌছা মাত্র গাজ্বলে উঠে। শোনা বা তা একটু রিভিউ করে দেখা তো দূরে থাক।
যার জন্য যুগে যুগে আল্লাহ নবী-রাসুল, পথ প্রদর্শক, জ্ঞান বিজ্ঞানে সামৃদ্ধ বহু মনষীদের পৃথিবীর বুকে প্রেরন করেছেন এবং সাথে দিয়েছেন ঐশী গ্রন্থ। পাশাপাশি দিয়েছেন মানুষকে সভ্যতার ক্রম বিকাশের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞান ভান্ডারের কিছু মানুষ। যারা সভ্যতা সাংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে তুলে পৃথিবীকে সুন্দর বসবাস উপোযোগী করে তুলতে সহায়ক হয়েছেন। প্রযুক্তি যেমন যুগের চাহীদায় ক্রম পরিবর্তন হয়ে আসছে, মহান আল্লাহও বিভিন্ন ঐশী গ্রন্থগুলিও তেমনে মুলনীতি অপরবর্তনীয় রেখে যুগ ও সময়ের চাহীদায় সর্বশেষ সংস্কারকৃত এবং পুর্ণাঙ্গ ঐশী গ্রন্থ আল কোরআনকে উপহার দিয়ে মানবের জীবন বিধানের গাইড লাইন দিয়ে দিয়েছেন এবং এটাই শেয ও চুড়ান্ত বলে ঘোষণা করে জানিয়ে দিলেন পুর্ববর্তি তোমাদের কাছে যা কিছুই থাকুক না কেন এ কোরান পৌছার পর এটিই চুড়ান্ত ও সর্বশেষ এটির বাহককে সহ এই কিতাবের ইত্তেবা করতে যে কিনা তোমাদের কাছে ইতিপুর্বে যা দেয়া হয়েছে তারও সত্যায়ন করতে সক্ষম। সূরা ইমরান, আয়াত ৮১…..
স্মরণ কর, যখন আল্লাহ্ নবীদের অঙ্গীকার লইয়াছিলেন যে, তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত যাহা কিছু দিয়াছি, অতঃপর তোমাদের কাছে যাহা আছে তাহার প্রত্যায়ন কারীরূপে যখন একজন রাসূল আসিবে তখন তোমরা অবশ্যই তাহার প্রতি ঈমান আনিবে এবং তাহাকে সাহায্য করিবে।’ তিনি বলিবেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করিলে ? এবং এই সম্পর্কে আমার অঙ্গীকার কি তোমরা গ্রহণ করিলে ?’ তাহারা বলিল, ‘আমরা স্বীকার করিলাম।’ তিনি বলিলেন, ‘তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সঙ্গে সাক্ষী রহিলাম।’ (৩ঃ ৮১)
মানুষের জন্মগত ভাবে পোষনকৃত এই পুর্ববর্তি ধর্মীয় অনুভুতি সত্য – না মিথ্যে তা যাচাই করে বিশ্বাসের পরিশুদ্ধতা অর্জনের জন্য এই কোরানই একমাত্র উপদেশ গ্রন্থ। তাই এই কোরানের প্রতি যার পরিপুর্ণ ঈমান রয়েছে সেই একমাত্র সৌভাগের সরল পথ ও বিশ্বাসের সন্ধান পাবে।
এ আলোচনার মুল প্রতিপাদ্য আমি আমার ধর্মীয় অনুভুতি, এবাদত বন্দেগী এবং আমার জীবন ব্যবস্থাকে কোরানের আলোকে যাচাই বাছাই করে নিয়ে পরিপালন করবো, এর বাহিরে যা তা আমার জীবন বিধান হিসেবে পরিত্যাজ্য। অবশিষ্ট যেসকল গ্রন্থ হতে পারে তা আমার শিক্ষা-সাংস্কৃতি,জ্ঞান বিজ্ঞানের সহায়ক হিসেবে গ্রহনীয় কিন্তু আল্লাহ প্রদত্ত জীবন বিধান হিসাবে প্রয়োগের জন্য নয়। এ বিষয়ে দ্বীমত থাকলে তবে পরবর্তি আলোচনায় না যাওয়ার অনুরোধ। আমি আমার এ চিন্তা একমাত্র সঠিক এবং তা অন্যকেও অনুসরনের পরামর্শ দেব না। কারন রিলিজিয়াস সেন্টিমেন্ট একটি সংবেদনশীল সাবজেক্ট যা অনস্বীকার্য।

রোগ-শোক,বিসন্নতা,ঝড়,জলোচ্ছাস,যুদ্ধ-বিগ্রহ এমন কি মুমুর্ষ অবস্থাতেও নামাজ পড়তে হবে। এক ওয়াক্ত নামাজ না পড়লে ৮০ হুগবা দোজখে বাস করতে হবে। এটাই চির সত্য, বদ্ধমুল বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে।
আল্লাহ কোরানে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার আয়াত নাযিল করেছেন, যাতে আমাদের প্রধান ইবাদত যা ধনী-গরীব, সুস্থ- অসুস্থ, মৃত্যু পথ যাত্রী সকল মুসলমানের জন্য সর্ব অবস্থায় মানা ফরজ।
আসলেই কি আল্লাহ এত কঠোরতা আরোপ করেছেন মানুষের উপর? কোরানের আলোকে যাচাই করে দেখি। আমরা যাকে নামাজ বলে জানি কোরানে তা সালাত শব্দে বর্ণিত। ৮০+ জায়গায় বিভিন্ন ভাবে এ সালাত শব্দটি এসেছে। যা আমরা দৈনিক পাচ ওয়াক্ত পড়তে হয় বলে জানি এবং গুরুত্তে সাথে পড়ে থাকি। প্রকৃত কি এই যে প্রচলিত নামাজ আমরা পড়ি আল্লাহ কোরানে যে সালাত কায়েম করার কথা বলেছেন তা প্রকৃত কি এভাবেই, না অন্য কিছু? কোরানের আলোকে দেখে নেই।

তার আগে সুরা আরাফের একটি আয়াত স্মরন করিয়ে বলবোঃ
যখন কুরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগের সঙ্গে উহা শ্রবণ করিবে এবং নিশ্চুপ হইয়া থাকিবে, যাহাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়। (৭ঃ২০৪)
অর্থাৎ যখন কোরান থেকে কোন আলোচনা হবে তখন অন্য কোন গ্রন্থ বা কথা দ্বারা রেফারেন্স দেয়া আল্লার সাথে চ্যালেঞ্জ করার সামিল। সেক্ষেত্রে আল্লাহর রহমতের আশা করা যাবে না।
তাই নামাজ সম্বন্ধে যে কোন পুর্ব অনুমানকে, হাদীস, কিয়াস,তাফসীর নামক মানব রচিত যে কোন গ্রন্থকো বোতল বন্দী করে বুঝার চেষ্টা করতে হবে। অন্যথায় বুঝা সম্ভব নয়, দয়াময়ের রহমতেরও আশা করা যায় না। যেহেতু কোরানের আলোচনা শুধু। তবে হ্যা কোন তথ্যে দ্বিমত হলে তা কোরানের আয়াতের রেফারেন্স দিয়ে বা গ্রামিটিক্যালল উপাত্ত উপস্থাপন করা যেতে পারে।

আরবী সলাহ শব্দের অর্থ হলো কোন কিছু ফলো করা, বা মুখোমুখি সংযোগ স্থাপন করা এবং মুছাল্লী অর্থ ছায়ার মত অনুসরন করা, নামাজ নয়। এ বাংলা শব্দ কি ভাবে চয়ন করা হল তা ব্যাখায় জানানো হবে।
আকিমুস সলাত মানে কোরানে বর্ণিত আল্লাহর সকল বিধি নিষেধ সর্ব অবস্থায় মেনে নেওয়া,ছায়ার মত লেগে থাকা। যা অনুসরন করা বাধ্যতামুলক।
সুরা কিয়ামাহ আয়াত ৩১ ও ৩২ নং লক্ষ্য করলে তা বুঝা যায়।
فَلَا صَدَّقَ وَلَا صَلّٰىۙ
وَلٰكِنْ كَذَّبَ وَتَوَلّٰىۙ
সে বিশ্বাস করে নাই এবং নামাজ আদায় করে নাই।
বরং সে মিথ্যে বলেছিল এবং মুখ ফিরাইয়া লইয়াছিল।
এখানে ছল্লা صَلّٰىۙ ( নামাজ) বিপরীত শব্দ تَوَلّٰىۙ তাওয়াল্লা (মুখ ফিরিয়ে নেওয়া) এবং সদ্দকা صَدَّقَ (সত্য) বিপরীত কাজ্জাব كَذَّبَ (মিথ্যা)
তাওয়াল্লা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়া হয়, তাহলে ছল্লা এর অর্থ মুখোমুখি হওয়া বা সংযোগ স্থাপন করা বা অনুসরন করা সঠিক। কিন্তু পারশিয়ান শব্দ নামাজ বসিয়ে বাংলা ভাষাভাষীদের মর্ম উপলব্ধিতে ব্যহত করা হয়েছে।
পুর্ব অনুমানের অনুবাদ থেকে বেরিয়ে এসে যদি সঠিক বাংলা অনুবাদ করা হয় তবে উক্ত আয়াতের অনুবাদ হয়ঃ
সে সত্য বলে না, অনুসরনও করে না। বরং সে মিথ্যে বলে এবং মুখ ফিরেয়ে নেয়।

সূরা আনকাবুত, আয়াত ৪৫, এখানে সালাতের অর্থ নামাজ ধরে অনুবাদ করলে এর অর্ঘ দাড়ায় :” আপনি কোরান পড়ুন এবং নামাজ আদায় করুন। নিশ্চয় নামাজ অনৈতিক ও অন্যায় কাজ হতে ফরাইয়া রাখে। ”
কিন্তু নামাজ কি নিশ্চিত অনৈতিক ও অন্যায় কাজ হতে ফিরাইয়া রাখতে সক্ষম হয়? একজন মানুষ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে একি সাথে অনৈতিক, অন্যায় কাজের সাথে জড়িত হতে পারে। একমাত্র কোরানের নিরবাচ্ছন্ন অনুসরনই একজন মানুষকে অন্যায়, অনৈতিক কাজ থেকে ফিরায়ে রাখতে পারে। তাহলে বুঝা যায় সালাতের অনুবাদ কখনোই নামাজ নয়। সালাতের অনুবাদ রবের ঐশী কমান্ড ছায়ার মত অনুসরন করা। পুর্ন মেনে চলা।
সুতরাং এ আয়াতের যৌক্তিক অনুবাদ হবেঃ
” আপনি কোরআন পড়ুন এবং সে অনুযায়ী কাজ করুন। নিশ্চয় কোরনকে নিরবিচ্ছন্ন অনুসরন অন্যায় অনৈতিক কাজ হতে ফিরাইয়া রাখে। ”

উক্ত আয়াতে صَّلٰوةَ সালাত শব্দের অর্থ কখনোই নামাজ হতে পারে না। কারন নামাজ কি আসলেই অন্যায় বা অনৈতিক কাজ হতে ফিরিয়ে রাখতে পারে? একজন মানুষ পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে আবার অন্যায়, অনৈতিক কাজও করতে পারে। কিন্তু আয়াতে আল্লাহ বলতেছেন, নিশ্চয় সলাত صَّلٰوةَ অন্যায়, অনৈতিক কাজ হতে ফিরিয়ে রাখে। তাহলে কি আয়াত মিথ্যে ? না। আসলে সালাত صَّلٰوةَ এর ফার্সী অনুবাদ পরিহার করে সঠিক বাংলা শব্দ বসালেই আয়াতের মর্ম বোধগম্য হয়ে উঠে। একমাত্র আল্লাহর আদেশের নিরবাচ্ছন্ন অনুসরন অন্যায় ও অনৈতিক কাজ থেকে একজন মানুষকে ফিরায়ে রাখতে সক্ষম। সুতরাং সালাতের صَّلٰوةَ বাংলা অর্থ আল্লাহর আদেশ ছায়ার মত অনুসরন করা,মেনে চলা বা রবের সাথে মুখোমুখি সংযোগ স্থাপন করা।
অর্থাৎ আপনি আপনার উপর যে কিতাব প্রেরন করা হয়েছে উহা পড়ুন এবং সে অনুযায়ী কাজ করুন। নিশ্চয় নিরাবচ্ছন্ন (কোরানের আদেশ) অনুসরন অন্যায় ও অনৈতিক কাজ হতে ফিরায়ে রাখে।
সালাতের صَّلٰوةَ অর্থ যদি আল্লাহর সকল আদেশ নিষেধ নিরবচ্ছন মেনে নেয়া বুঝায় তবে নিঃসন্দেহে সালাতই হবে বেহেস্তের চাবী। নামাজ অর্থে বেহেস্তের চাবী হতে পারে না। তাহলে তো কোরানে বাকী আয়াতগুলি অর্থহীন অপ্রয়োজনীয় গন্য হয়। কোন দরকার ছিল না।

উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা-পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে, কিন্তু উহারা নহে-যাহারা তওবা করিয়াছে, ঈমান আনিয়াছে ও সৎকর্ম করিয়াছে। উহারা তো জান্নাতে প্রবেশ করিবে। উহাদের প্রতি কোন জুলুম করা হইবে না। (১৯:৫৯-৬০)
এখানে صَّلٰوةَ মানে রবের কমান্ডা অনুসরন অর্থাৎ কোরানের সকল আদেশ নিরবাচ্ছন্ন অনুসরন অনুবাদ করলে আয়াতের মর্ম সঠিক ভাবে উপলবদ্ধি করা যায়।
নচেৎ বুঝাবে আগে নামাজ একরকম ছিল পরে তা কোন দল বা গোষ্ঠি পরিবর্তন করে ফেলেছে।

অনুরুপ সুরা মায়েদা ৫৫ নং আয়াত,তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ্, তাঁহার রাসূল ও মু’মিনগণ-যাহারা বিনত হইয়া সালাত কায়েম করে ও যাকাত দেয়।
সূরা বাকারাঃ৪৩ তোমরা সালাত কায়েম কর ও যাকাত দাও এবং যাহারা রুকূ’ করে তাহাদের সঙ্গে রুকূ’ কর। (২:৪৩)
وَاَقِيْمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّكٰوةَ وَارْكَعُوْا مَعَ الرّٰكِعِيْنَ
এখানে রুকু অর্থ নুইয়ে পড়া,ঝুকে পড়া। যার আরেক মিনিং স্বচ্ছল অবস্থা থেকে আর্থিক ভাবে নুয়ে পড়া।
এখানে যারা সালাত কায়েম করে, যাকাত আদায় করে রুকু অবস্থায়। এই রুকু অবস্থায় মানে নামাজে রুক ধরলে সালাতের অর্থ নামাজ নয়। এই আয়াতে বিনীত ভাবে বা আর্থিক ভাবে পতিত অবস্থাতেও যাকাত দিতে বলেছেন। এর পড়ের আয়াতে তা স্পষ্ট।
তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও, আর নিজদেরকে বিস্মৃত হও ? অথচ তোমরা কিতাব অধ্যয়ন কর। তবে কি তোমরা বুঝ না ? (২:৪৪)
اَتَاْمُرُوْنَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنْسَوْنَ اَنْفُسَكُمْ وَاَنْتُمْ تَتْلُوْنَ الْكِتٰبَ‌ؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ
‘হে মারইয়াম! তোমার প্রতিপালকের অনুগত হও ও সিজদা কর এবং যাহারা রুকূ’ করে তাহাদের সঙ্গে রুকূ’ কর।’ ( সূরা ইমরান আয়াত ৪৩)
يٰمَرْيَمُ اقْنُتِىْ لِرَبِّكِ وَاسْجُدِىْ وَارْكَعِىْ مَعَ الرّٰكِعِيْنَ
এখানে সালাতে কোন উল্লেখই নাই। সিজদা রুকু বলতে তাহলে কি বুঝিয়েছেন। সিজদা শব্দের আভিধানিক অর্থ সমর্পন করা একটা সিস্টেমর আনুগত্য করা্। সিজদা শব্দের অনুবাদ সুরা রহমান, আয়ত, ৫ ও ৬ আয়াত লক্ষ্য করলে স্পস্ট হবে।
সূর্য ও চন্দ্র আবর্তন করে নির্ধারিত কক্ষপথে,
নক্ষত্ররাজী ও বৃক্ষাদি তাঁহারই সিজদায় রত রহিয়াছে,
وَّالنَّجْمُ وَالشَّجَرُ يَسْجُدٰنِ
اَلشَّمْسُ وَالْقَمَرُ بِحُسْبَانٍ
সূরা হাজ্জ:
তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ্‌কে সিজদা করে যাহা কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে ও পৃথিবীতে, সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্রমণ্ডলী, পর্বতরাজি, বৃক্ষলতা, জীবজন্তু এবং সিজদা করে মানুষের মধ্যে অনেকে ? আবার অনেকের প্রতি অবধারিত হইয়াছে শাস্তি। আল্লাহ্ যাহাকে হেয় করেন তাহার সম্মানদাতা কেহই নাই; আল্লাহ্ যাহা ইচ্ছা তাহা করেন। সূরা নম্বরঃ ২২, আয়াত নম্বরঃ ১৮
এ আয়াত অনুযায়ী তারকা,গাছপালা,চন্দ্র,সূর্য,পর্বতরাজী, এমন কি জীবজন্তুও আল্লাহকে সিজদা কি ভাবে করে? আল্লাহর প্রদত্ত বিধান মত কার্য সম্পাদনকেই সিজদা বুঝিয়েছে। আল্লাহকে সিজদা করা মানে আল্লাহর ইচ্ছের কাছে নিজেকে সমর্পন করা।

সূরা নাহল ৪৯ ও ৫০ নং আয়াতঃ আল্লাহ্‌কেই সিজদা করে যাহা কিছু আছে আকাশমণ্ডলীতে, পৃথিবীতে যত জীবজন্তু আছে সে সমস্ত এবং ফিরিশতাগণও, উহারা অহংকার করে না।
وَلِلّٰهِ يَسْجُدُ مَا فِى السَّمٰوٰتِ وَمَا فِى الْاَرْضِ مِنْ دَآبَّةٍ وَّالْمَلٰۤٮِٕكَةُ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُوْنَ
পরের ৫০ নং আয়াতে এ সিজদার ব্যাখ্যা এসে যায় অটোমেটেকলি।
উহারা ভয় করে উহাদের উপর উহাদের প্রতিপালককে এবং উহাদেরকে যাহা আদেশ করা হয় উহারা তাহা করে।
يَخَافُوْنَ رَبَّهُمْ مِّنْ فَوْقِهِمْ وَيَفْعَلُوْنَ مَا يُؤْمَرُوْنَ ۩
সূরা নম্বরঃ ১৬, আয়াত নম্বরঃ ৫০

এখানে সিজদা অর্থ বলতেছে তারা তাদের রবকে ভয় করে এবং তার নির্দেশ অনুযায়ী কর্ম সম্পাদন করে। মাটিতে কপাল ঠুকিয়ে সিজদাকে বুখানো হয় নি।

সূরা ফাহত ২৯
আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় তুমি তাহাদেরকে রুকূ ও সিজদায় অবনত দেখিবে। তাহাদের লক্ষণ তাহাদের মুখমণ্ডলে সিজদার প্রভাবে পরিস্ফুটিত থাকিবে ; তওরাতে তাহাদের বর্ণনা এইরূপ এবং ইঞ্জীলেও তাহাদের বর্ণনা এইরূপই।
তাদের চেহেরায় সিজদার চিহ্ন থাকে বলতে তাদের চেহারায় বিনয়ের ছাপ থাকে। চেহারায় সিজদার চিহ্ন মানে কপালে কাল দাগ নয়।

সূরা জুমার ৯ নং আতে জুমার সালাতের কথা বলা হয়েছেঃ
হে মু’মিনগণ! জুমু’আর দিনে যখন সালাতের জন্য আহ্বান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহ্‌র স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর, ইহাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর।(৯:৬২)
এখানে জুম্মা সম্মেলন এবং সেটা নির্দিস্ট কোন দিন বুঝায় না। সেটা যে কোন দিন হতে পারে। আর সলাতের অনুবাদ
রবের কমান্ড বা কোরানের বিধিনিষেধ অনুসরন করা বসিয়ে দেখুন।

দায়েমী সালাত, মানে সালাত সর্বক্ষন……
যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত, (৭০ঃ২৩)
الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙ
এত্র আয়াতে সলাত সর্বক্ষন হলে আপনি তাকে পাঁচ ওয়াক্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার কোন সুযোগ আছে কি?
তার মানে সলাত অর্থ নামাজ নয়। সলাত অর্থ রবের সকল কমান্ড অনুসরন করা বসিয়ে দেখুন মর্ম উপলবদ্ধী সহজ হয়ে যাবে।
এবার সূরা মুদ্দাসের এর ৪২ আয়াতের প্রতি খেয়াল করলে ছল্লা মুছু্ল্লীর ধারনা ও অবস্থান বৈশিষ্ট উপলব্ধি সহজ হবে।
‘তোমাদেরকে কিসে সাকার-এ নিক্ষেপ করিয়াছে?’৭৪:৪২
مَا سَلَـكَكُمْ فِىْ سَقَرَ
এর পরের আয়াতে জাহান্নামীরা উত্তরে বলিবে:
উহারা বলিবে, ‘আমরা মুসল্লিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না,
قَالُوْا لَمْ نَكُ مِنَ الْمُصَلِّيْنَۙ
এখন মুছুল্লীর বৈশিষ্ট কি? কাকে মুছুল্লী বলে, তার পরের আয়াতে প্রধান কয়টি বৈশিষ্ট বর্ননা করেছেন:
১)’আমরা অভাবগ্রস্তকে আহার্য দান করিতাম না,৭৪:৪৪
وَلَمْ نَكُ نُطْعِمُ الْمِسْكِيْنَۙ
২) ‘এবং আমরা বিভ্রান্ত আলোচনাকারীদের সঙ্গে বিভ্রান্তি মূলক আলোচনায় নিমগ্ন থাকিতাম। ৭৪:৪৫
وَكُنَّا نَخُوْضُ مَعَ الْخَـآٮِٕضِيْنَۙ
৩)’আমরা কর্মফল দিবস অস্বীকার করিতাম, ৭৪:৪৬
وَ كُنَّا نُكَذِّبُ بِيَوْمِ الدِّيْنِۙ

পরবর্তিতে সূরা আল মাউন থেকে মুছুল্লীদের লক্ষ্য করে আল্লাহ বলেন:
তুমি কি দেখিয়াছ তাহাকে, যে দীনকে অস্বীকার করে ?
اَرَءَيْتَ الَّذِىْ يُكَذِّبُ بِالدِّيْنِؕ
( আরায়তাল্লাযি ইউ কাজ্জিবু বুদ্দীন)
সে তো সে-ই, যে ইয়াতীমকে রূঢ়ভাবে তাড়াইয়া দেয়
فَذٰلِكَ الَّذِىْ يَدُعُّ الْيَتِيْمَۙ
( ফাযালিকাল্লাযি ইউদুউল ইয়াতিম)
এবং সে অভাব গ্রস্তকে খাদ্যদানে উৎসাহ দেয় না।
وَ لَا يَحُضُّ عَلٰى طَعَامِ الْمِسْكِيْنِؕ
(ওয়ালা ইয়াহুদ্দু আলা তা,আমিল মিছকিন) খাদ্য দানে
সুতরাং দুর্ভোগ সেই সালাত আদায়কারীদের, فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّيْنَۙ
( ফাওয়াইলুল্লিন মুছাল্লিন) অতএব দূর্ভোগ
যাহারা তাহাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন,
الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُوْنَۙ
( আল্লাযিনা হুম আন সালাতিহুম ছাহুন) উদাসীন

যাহারা লোক দেখানোর জন্য উহা করে, الَّذِيْنَ هُمْ يُرَآءُوْنَۙ
( আল্লাযিনা হুম ইউরাউনা) লোক দেখানো
এবং গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় ছোট-খাট সাহায্য দানে বিরত থাকে।وَيَمْنَعُوْنَ الْمَاعُوْنَ ( ওয়া ইয়ামনা ঊনাল মাঊন)

এখানে মুল শব্দ ছল্লা এর অনুবাদ নামজ উল্লেখ করে নাই। বা সালাত এর কথা বলে নাই। বলেছে আমরা মুছুল্লী ছিলাম না। আর মুছুল্লীর বৈশিষ্ট হলো রবের আদেশ নিরাবচ্ছন্ন অনুসরন করা। সালাত সর্বক্ষনিক বিরতি হীন। ৭০:২৩ মোতাবেক। এবং এটাকে সলাতুল দায়য়েমুন উল্লেখ করেছেন।
الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙ
আল্লাযিনা হুম আঁলা সালাতি হিম দাইমুন।
উক্ত আলোচনা থেকে বুঝা যায় সালাত সর্বক্ষনিক। সলাত অর্থ প্রচলিত আনুষ্ঠানিক নামাজকে বুঝায় না। সলাতের ফার্সী অনুবাদ নামাজ না বসিয়ে বাংলা অনুনাদ রবের আদেশ সমুহের নিরবাচ্ছন্ন অনুসরন বসালে সব আয়াতগুলির মর্ম বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য উপলব্ধি যোগ্য হয়। তাই নামজকে কেন্দ্র করেই মুসলমানদের মধ্যে এত এত মাযহাব উপমাযহাব। কারন কোরানে তো নামাজের স্ট্রাকচারাল গাইড লাইন নাই ই, বরং সাথে হাদীসকে যুক্ত করালেও নামাজের সর্বসম্মত স্ট্রাকচার দাড় করানো সম্ভব নয়। পরিচিত নামাজের ধারাবিবরন অতটা জটিল নয় যে কোরানে এ বিষয়ে বর্ননা দিতে অনেক আয়াত লাগতো বা হাদীসেও ডিটেইল প্রচলিত এই নামাজের ধারাবাহিক ধারা বর্ননা খুজে পাওয়া যায় না।
প্রচলিত আনুষ্ঠানিক যে কোরানে নেই এ কথাও অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তবে তা কি ভাবে এ নিয়ে এর পর আলোচনা করা হবে। ইরান ইরাক অঞ্চলে প্রচলিত সালাত তিন ওয়াক্ত।
আমাদের প্রচলিত বা পরিচিত নামাজের যে আনুষ্ঠানিকতা তা কখনোই কোরান বিরুদ্ধ নয়। কোরানে সালাত শব্দটি প্রার্থনা অর্থেও ব্যবহৃত হয়েছে। এ ছড়া দয়া, ক্ষমা প্রার্থণা,আল্লাহর দয়া,অনুগ্রহ চাওয়া, আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ত মহিমা বর্ননা করার কথা কোরানে বহুববার বলা হয়েছে।
নামাজের প্রতি রাকাতে আমরা সূরা ফাতিহা পড়ি। সূরা ফাতিহা সবচেয়ে মহত্ত দোয়া বা প্রার্থনা। আমাদের যতরকমের চাওয়া আছে সব আমরা নামাজে মাধ্যমেই চাইতে পারি।
কিন্তু নামাজ প্রতিষ্ঠার অর্থ মানুষকে নামাজ পড়তে বাধ্য করতে হবে, এবং সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইসলামিক রাষ্ট্র কায়েম করতে হবে, পারায় মহল্লায় মাসজিদ নির্মান করতে হবে, মসজিদে জামাতে নামাজ করতে হবে, কোন অবস্থাতেই নামাজ মাফ নেই এই নির্দিষ্ট পদ্ধতিতেই নামাজ পড়তে হবে, তিন জুম্মা না পড়লে সে আর মুসলমান থাকবে না, মুসলিম আর কাফেরের মধ্য পার্থক্য হচ্ছে নামাজ, হাশরের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসা নেওয়া হবে,যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে তারা বেহস্তে যাবে, এক ওয়াক্ত নামাজ না পড়লে ৮০ হোকবা দোজখের আগুনে পুড়বে, —- নামাজ নিয়ে এমন প্রচলিত ধারনা কোরান বিরুদ্ধ বা কোরান অনঅনুমোদিত।

বরং আল্লাহ — বিশ্বাস এবং সৎকর্মকে জান্নাতের পুর্ব শর্ত বলেছেন। আকিমিস সালাত বলতে আল্লাহর প্রতিটি আদেশ ও নিষেধ ছায়ার মত অনুসরন করা। অর্থাৎ ঝড়, জলোচ্ছাস,যুদ্ধ, মৃত্যু শয্যায়েও আল্লাহর বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে। নামাজ আমাদের জন্য একটি মহত্তম প্রার্থনা। নামাজে দাড়িয়ে আমরা সব আবেদন-নিবেদন,কামনা – বাসনা, রোগ-শোক, দূঃখ-বেদনা, অভাব-অনটন, জীবন- জীবিকা,সমাজ সংসারের শত শত সমস্যা সরাসরি সর্ব শক্তিমান আল্লাহর কাছে উপস্থাপন করি। যত অভিযোগ – অনুযোগ, আশা- আকাংখা,ভয়-ভীতি, অজানা আশংকা পরম করুনাময়ের কাছে সমর্পন করি। সেজদায় নত হয়ে পরম দাতা দয়ালু আল্লাহর মহত্ত,শ্রেষ্ঠত মহিমা গাই। সব ভুল-ভ্রান্তি, পাপ-তাপের ক্ষমা চাই অসীম ক্ষমাশীল স্রষ্টার কাছে। মহা জ্ঞানী মহাপ্রভুর কাছেই চাই সাহায্য, শক্তি -সাহস ও সত্য পথের দিশা। যত রকমের দোয়া দাবী আছে সবই নিবেদন করি নামাজে।
নামাজ হচ্ছে আত্মশুদ্ধির পথ, আত্ম উন্নয়নের সিড়ি। এই নামাজ বা প্রার্থনায় সবচেয়ে জরুরী হচ্ছে মনের একাগ্রতা। নামাজের মাধ্যমেই যুক্ত হচ্ছি মহাশক্তিমান, মহা প্রভুর সাথে। প্রার্থনা যোগে সর্ব শক্তিমানের সাথে সংযোগ সংস্থাপনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম নামাজ।
আমি আমাদের প্রচলিত পদ্ধতিতেই নামাজ পড়ি। কারন এতে আমি অভ্যস্থ, এতেই আমি স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। কিন্তু নামাজের এই পদ্ধতি,প্রক্রীয়া এবং নামাজের এই প্রচলিত ধারনা কোরান বিধিত,নির্ধরিত বা চুড়ান্ত নয়। কিন্তু তিন অবস্থায় নামাজ আদায় করা যাবে না তা কোরানে স্পষ্ট করে বলে দেয়া আছে।
হে ঈমানদারগন তোমরা প্রার্থনার নিকটবর্তী হয়ো না, ১) নেশা গ্রস্থ অবস্থায় ২) যতক্ষন না বুঝতে পারছো তোমরা কি বলছো ৩) অবিপ্র অবস্থায়। আল্লাহ অন্তর্যামী। তাই আল্লাহকে যা বলবেন তা হতে হবে মনের কথা।
নামাজে দাড়িয়ে বলছি:
সরল সঠিক পুন্যপন্থা দাও গো মোদের বলি
চালাও সে পথে যে পথে তোমার প্রিয়জন গেছে চলি
এই সরল সঠিক পুন্য পন্থা হচ্ছে কোরান। কিন্তু নামাজে দাঁড়িয়েও যদি স্মরণ করি জটিল, কঠিন, ভেজাল পন্থা
তবে এ নামাজ শুধু অর্থহীনই নয় এ নামাজ আমাদের নিয়ে যাবেঃ —
যে পথে তার চির অভিশাপ, যে পথে ভ্রান্তি চির পরিতাপ।
এ কারনেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া অনেককেই দেখি কোরানে নিষিদ্ধ অসৎ অপকর্মে ডুবে থাকতে।

কাবাগৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর।
وَمَا كَانَ صَلَاتُهُمْ عِنْدَ الْبَيْتِ اِلَّا مُكَآءً وَّتَصْدِيَةً‌  ؕ فَذُوْقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُوْنَ
সূরা নম্বরঃ ৮, আয়াত নম্বরঃ ৩৫

Categories
My text

নামাজ পড়া

* নামাজ পড়া* বনাম “সালাত কায়েম রাখা”

সালাত অবশ্যই আল্লাহর স্মরনে উত্তম জিকির, যা প্রতিটি ঈমানদারের উপর ফরজ।

আপনি নামাজ পড়বেন ?, না সালাত কায়েম করবেন?

নামাজ হচ্ছে নির্দিষ্ট ফরমেটে বুঝে বা না বুঝে একটা নির্ধারিত সময়ে সালামের মাধ্যমে সমাপ্ত করার নাম। আর সালাত হলো- পঠিত কুরআনের বিধানকে নিজ, পরিবার এবং সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে সিরাতুম মুস্তাকিমে অটল থাকার নাম।

সালাত হল কোরান তেলওয়াতের অনুষ্ঠান। সালাতে যা বলছি বাস্তব জীবনে সালাতের বাহিরেও তার বাস্তব প্রতিফলন ঘঠানোকেই সালাত কায়েম করা বুঝায়। সালাত পুঁজা মন্ডবে কিছু মন্ত্র পাঠ করার মত কোন অনুষ্ঠান নয়।

সবাইকে জামাতে নামাজ পরতে বাধ্যকরারকে নামাজ প্রতিষ্ঠিত করা বা কায়েম করা বুঝায় না। কায়েম করা কাকে বলে সে বিষয়ে আল্লাহ বলেনঃ

الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَۙ

অর্থঃ যাহারা তাহাদের সালাতে সার্বক্ষনিক প্রতিষ্ঠিত,৭০ঃ২৩

পাঁচ ওয়াক্ত নমাজ পড়ে কি সার্বক্ষনিক সালাতে প্রতিষ্ঠিত থাকা বলা যায়?

(৭০ঃ৭৩) আয়াতের সার্বক্ষনিক সালাতের ব্যাখ্যায় আল্লাহ বলেনঃ

যাহারা দাঁড়াইয়া, বসিয়া ও শুইয়া আল্লাহ্‌কে স্মরণ করে এবং আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি সম্বন্ধে চিন্ত করে ও বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি ইহা নিরর্থক সৃষ্টি কর নাই, তুমি পবিত্র, তুমি আমাদেরকে দোজখের শাস্তি হইতে রক্ষা কর। ( ৩ঃ১৯১)

কোরআন বলে বিচার দিবসে সালাত নিয়ে জবাবদিহী করা হবে না, করা হবে কোরান পাঠ নিয়ে। সেদিন আল্লাহ বলবেনঃ

তুমি তোমার কিতাব পাঠ কর, আজ তুমি নিজেই তোমার হিসাব-নিকাশের জন্য যথেষ্ট।’ (১৭ঃ১৪)

তার মানে এই নয় আনুষ্ঠানিক সালাত অস্বীকার করা। গুরুত্ত অনুধাবেনের দিক থেকে আলোচনা, নামাজ ও সালাতের পার্থক্য বুঝাতে। আল্লাহ সূরা নিসায় বলেনঃ

হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হইও না, যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার, ——- ( ৪ঃ ৪৩)
(এই নেশা মদ, গাঁজার নেশার কথা বলেন নাই। দুনিয়াবি, সংসার জগতের মোহকে নেশা অনুবাদ করা হয়েছে। যা অন্যমনস্কা করে রাখে।)

আনুষ্ঠানিক সালাতে আমরা দিনে অন্তত ১৭ বার বলে থাকিঃ “আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর,(১ঃ৬)
এই সরল পথ কি এবং কেমন, জানা না থাকলে আল্লাহ প্রদর্শন করলেও তো আপনি গ্রহন করে নিতে পারবেন না।

@ সরল, পথ কি এবং কোনটি ?
যাহারা অদৃশ্যে ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে ও তাহাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করিয়াছি তাহা হইতে ব্যয় করে,(২ঃ৩)এবং তোমার প্রতি যাহা নাযিল হইয়াছে ও তোমার পূর্বে যাহা নাযিল হইয়াছে তাহাতে যাহারা ঈমান আনে ও আখিরাতে যাহারা নিশ্চিত বিশ্বাসী,(২ঃ৪) তাহারাই তাহাদের প্রতিপালক-নির্দেশিত সরল পথে রহিয়াছে এবং তাহারাই সফলকাম।(২ঃ৫)

@ সরল পথ কি ভাবে পাওয়া যায়?

১) যাহারা মনোযোগ সহকারে (কোরানের) কথা শুনে এবং উহার মধ্যে যাহা উত্তম তাহা গ্রহণ করে। উহারাই বোধশক্তি সম্পন্ন, এবিং উহাদেরকে আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করেন (৩৯ঃ১৮)

২) অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথপ্রাপ্ত।(৩৬ঃ২১)

@ ঈমান কিসের উপর আনতে হবে ?

১) তোমরা বল, ‘আমরা আল্লাহ্তে ঈমান রাখি, এবং যাহা আমাদের প্রতি এবং ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাহার বংশধরগণের প্রতি অবতীর্ণ হইয়াছে; এবং যাহা তাহাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে মূসা, ঈসা ও অন্যান্য নবীকে দেওয়া হইয়াছে ‘(২ঃ১৩৬)

২) অন্যত্র আল্লাহ বলেনঃ কেহ আল্লাহ্, পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে।(২ঃ১৭৭)

অতঃপর আল্লাহ বলেনঃ যারা ঈমান আনে এবং সৎকাজ কর তারাই সৃষ্টির সেরা,তারাই সফলকাম এবং তাদের জন্যই জান্নাত নির্ধারিত। (২ঃ৮২) (৯৮ঃ৭)

@ সৎকর্ম কোনগুলি কি কি?

পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফিরানোতে কোন পুণ্য নাই; কিন্তু পুণ্য আছে কেহ আল্লাহ্, পরকাল, ফিরিশ্তাগণ, সমস্ত কিতাব এবং নবীগণে ঈমান আনয়ন করিলে এবং আল্লাহ্ প্রেমে আত্নীয়-স্বজন, পিতৃহীন, অভাবগ্রস্ত, পর্যটক, সাহায্য প্রার্থিগণকে এবং দাস-মুক্তির জন্য অর্থ দান করিলে, সালাত কায়েম করিলে ও যাকাত প্রদান করিলে এবং প্রতিশ্রুতি দিয়া তাহা পূর্ণ করিলে, অর্থ-সংকটে দুঃখ-ক্লেশে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য ধারণ করিলে। ইহারাই তাহারা যাহারা সৎকর্মশীল এবং ইহারাই মুত্তাকী। ২ঃ১৭৭

মুলত বুঝতে হবে সালাত পড়ার জিনিষ নয়। সালাত কায়েম করার আদেশ।

সালাতে দাড়িয়ে যে আয়াত তেলোয়াত করি সে অনুযায়ী বাস্তব জীবনে প্রতিষ্ঠা করাকেই সালাত কায়েম বুঝায়। মুখে মসজিদে পড়ে বলে উচ্চারন করে আসলাম অথচ বাহিরে এসে তা নিজের মাঝে প্রতিষ্ঠিত করার উপলব্ধিই করলাম না এটাকে নামাজ বললেও আল্লাহর কাংক্ষিত সালাত কায়েম বলা হয় না। এসব বিষয় নিয়ে ঘটনা ঘটবে তা আল্লাহ ভাল করে জানেন বলেই আয়াত রয়ে গেছে…..

উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা-পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে,( ১৯ঃ৫৯)

আর যখন তাহারা সালাতে দাঁড়ায় তখন শৈথিল্যের সঙ্গে দাঁড়ায়-কেবল লোক দেখানোর জন্য এবং আল্লাহ্কে তাহারা অল্পই স্মরণ করে; দোটানায় দোদুল্যমান-না ইহাদের দিকে, না উহাদের দিকে! (৪:১৪২ ও ১৪৩)

আমি আমার উপলব্ধি প্রকাশ করলাম মাত্র, কাউকে মানতে আহ্বান করি না। আলোচনা আমার সিদ্ধান্তটা আপনার।
কোন দ্বীমত থাকলে রেফারেন্স সহ জানাবেন আমি আমার চিন্তাকে পরিশুদ্ধ করে নেব।
( কোরান থেকে আলোচনায় —– একরামুল হক)

Categories
My text

দ্বীন প্রচারে বিনিময় গ্রহন

…… “”টাকা না নিলে হুজুর খাবে কি!!?

তাবলীহ জামাত একটা বিষয়ে অন্তত দ্বীনের উপর অটুট রয়েছে, আর তা হল তারা দ্বীনের কাজের বিনিময়ে কোন
বিনিময় গ্রহন করে না এমন কি সোয়ালের ভানও করে না।

আল্লাহ বলেনঃ
‘অনুসরণ কর তাহাদের, যাহারা তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চায় না এবং যাহারা সৎপথ প্রাপ্ত।
اتَّبِعُوْا مَنْ لَّا يَسْـــَٔلُكُمْ اَجْرًا وَّهُمْ مُّهْتَدُوْنَ
ইত্তাবিউ মাল্লা ইয়াছালুকুম আঁজরাও ওয়া হুম মুহতাদুন।
(সূরা ইয়ানুস আয়াতঃ২১)

মানুষ মসজিদে ফরজ নামাজগুলি ইমামের পিছনে পড়ে। বাকি নামাজগুলি নিজে নিজে পড়তে হয়। বাকি নামাজ গুলি নিজে নিজে যখন আদায় করে তাতে বুঝা যায় তারা সবাই কিন্তু নামাজ পড়তে জানেন।

পুর্বে সিস্টেমটা এমনই ছিল,যারা আযান দিতে জানে তারা আজান দিবে যারা নামাজ পড়াতে জানে বতারা নামাজ পড়াবে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু সালামের এমনটাই নির্দেশ ছিল। কিন্তু সিস্টেমটা বদলালো কে? কি তার পিছনে সার্থ জড়িত? ভয় ঢুকিয়ে দেয়া হল সহী শুদ্ধ না হলে সবার পাপের ভার নিতে হবে।

যদি নিজের নামাজ নিজে পড়তে পারে তবে রোটেশনালি তারা কেন মসজিদে নামাজ পড়াতে পারবে না? তাহলে তো ভাড়া করা ইমাম মুয়াজ্জিনের দরকার হয় না।

কিন্তু কে শোনে কার কথা ধর্ম ব্যবসায়ীরা ৫০ মিটার পর মসজিদ ও মাদ্রাসা তৈরি করাচ্ছে তাদের ব্যবসাটা চালু রাখার জন্য ধর্মকে প্রসারের জন্য নয়। সাধারন মানুষের মগজে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে এতে সোয়াবের বন্যা। এসব সত্যকে তুলে ধরলে নাস্তিক, ইহুদী খৃষ্টানের দালাল লকবে ভুষিত করা হয়।

ধর্মান্ধ আবেগী মুসলমানকে এভাবেই মগজ ধুলাই করে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে ধর্মের নামে পেশা। যার মধ্যে অন্যতম নামাজের ইমামতি, মোয়াজ্জেম,খাদেম ইত্যাদী।
এজতেমায় যে ইমাম একমাস ব্যাপী নামাজ পড়ায় ওয়াজ করেন তারা কি বিনিময় নেন? এক কথায় বিনিময় নিয়ে যারা নামাজ পড়ান তাদের নামাজ কে পড়িয়ে দেয়, এ প্রশ্ন আসে না কি? সতীদাহ প্রথার মত এ প্রথাও উঠিয়ে দেয়া সময়ের দাবী মাত্র।

যারা দাবী করেন “”টাকা না নিলে হুজুর খাবে কি!!?””
তারা কিয়াস,ইজমা,ইজতিহাত দিয়ে আল্লার বিধানের সাথে কুফরি করে। তারা কোরানের এ আয়াত গুলি অস্বীকার কারী।
দ্বীন প্রচার করে কোন ধরনের কোন মজুরি চেয়ে নেয়ার বিষয়ে কোরআনে স্পষ্ট ভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোরানে বর্নিত ১৪ টি আয়াত একত্রে তুলে ধরা হলো।

১) ‘আমি তোমাদের নিকট ইহার জন্য কোন প্রতিদান চাহি না, আমার পুরস্কার তো জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট আছে। সূরা আশ-শোআরা ২৬, আয়াত নম্বরঃ ১২৭

২) ‘আমি তোমাদের নিকট ইহার জন্য কোন প্রতিদান চাহি না, আমার পুরস্কার তো জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকটই আছে। সূরা নম্বরঃ ২৬, আয়াত নম্বরঃ ১৪৫

৩) আমি ইহার জন্য তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাহি না, আমার পুরস্কার তো জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকটই আছে। সূরা নম্বরঃ ২৬, আয়াত নম্বরঃ ১৬৪

৪) আমি তোমাদের নিকট ইহার জন্য কোন প্রতিদান চাহি না। আমার পুরস্কার তো জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকটই আছে। সূরা নম্বরঃ ২৬, আয়াত নম্বরঃ ১৮০

৫) আমি তোমাদের নিকট ইহার জন্য কোন প্রতিদান চাহি না ; আমার পুরস্কার তো জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকটই আছে। (সূরা শোআরা ২৬ঃ ১০৯)

৬) বল, আমি তোমাদের নিকট ইহার জন্য কোন প্রতিদান চাহি না, তবে যে ইচ্ছা করে সে তাহার প্রতিপালকের দিকের পথ অবলম্বন করুক।’সূরা ফরকান ২৫, আয়াত নম্বরঃ ৫৭

৭) এবং তুমি তাহাদের নিকট ইহার জন্য কোন পারিশ্রমিক দাবি করিতেছ না। ইহা তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ব্যতীত কিছু নয়। সূরা ইউছুব ১২, আয়াত নম্বরঃ ১০৪

৮) বল, ‘আমি ইহার জন্য তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাই না এবং যাহারা মিথ্যা দাবি করে আমি তাহাদের অন্তর্ভুক্ত নই।’ সূরা ছোয়াদ ৩৮, আয়াতঃ ৮৬

৯) বল, ‘আমি তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চাই না, তাহা তো তোমাদেরই ; আমার পুরস্কার তো আছে আল্লাহ্‌র নিকট এবং তিনি সর্ববিষয় দ্রষ্টা।’ সূরা সাবা ৩৪, আয়াত নম্বরঃ ৪৭

১০) হে আমার সম্প্রদায় ! আমি ইহার পরিবর্তে তোমাদের নিকট পারিশ্রমিক কামনা করি না। আমার পারিশ্রমিক আছে তাঁহারই নিকট, যিনি আমাকে সৃষ্টি করিয়াছেন। তোমরা কি তবুও অনুধাবন করিবে না ?
সূরা হুদ ১১, আয়াত নম্বরঃ ৫১

১১) এই সুসংবাদই আল্লাহ্ দেন তাঁহার বান্দাদেরকে যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে। বল, ‘আমি ইহার বিনিময়ে তোমাদের নিকট হইতে আত্নীয়ের সৌহার্দ্য ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান চাই না।’ যে উত্তম কাজ করে আমি তাহার জন্য ইহাতে কল্যাণ বর্ধিত করি। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, গুণগ্রাহী। সূরা আশ-শুরা ৪২, আয়াত নম্বরঃ ২৩

১২) ‘অতঃপর তোমরা মুখ ফিরাইয়া লইলে লইতে পার, তোমাদের নিকট আমি তো কোন পারিশ্রমিক চাই নাই, আমার পারিশ্রমিক আছে আল্লাহ্‌র নিকট, আমি তো আত্নসমর্পণকারীদের অন্তর্ভুক্ত হইতে আদিষ্ট হইয়াছি।’
সূরা ইউনুস, আয়াতঃ ৭২

১৩) হে আমার সম্প্রদায় ! ইহার পরিবর্তে আমি তোমাদের নিকট ধনসম্পদ কামনা করি না। আমার পারিশ্রমিক তো আল্লাহ্‌রই নিকট এবং মু’মিনদেরকে তাড়াইয়া দেওয়া আমার কাজ নয় ; তাহারা নিশ্চিত ভাবে তাহাদের প্রতিপালকের সাক্ষাৎ লাভ করিবে। কিন্তু আমি তো দেখিতেছি তোমরা এক অজ্ঞ সম্প্রদায়। (সুরা হুদ১১ঃ২৮)

১৪) উহাদেরকেই আল্লাহ্ সৎপথে পরিচালিত করিয়াছেন, সুতরাং তুমি তাহাদের পথের অনুসরণ কর। বল, ‘ইহার জন্য আমি তোমাদের নিকট পারিশ্রমিক চাই না, ইহা তো শুধু বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ।’ সূরা আনআম ৬, আয়াত নম্বরঃ ৯০

১৫) আল্লাহ্ যে কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছেন যাহারা তাহা গোপন রাখে ও বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য গ্রহণ করে তাহারা নিজেদের জঠরে অগ্নি ব্যতীত আর কিছুই পুরে না। কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাহাদের সঙ্গে কথা বলিবেন না এবং তাহাদেরকে পবিত্র করিবেন না। তাহাদের জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রহিয়াছে।সূরা নম্বরঃ ২, আয়াত নম্বরঃ ১৭৪

তাহলে হারাম কোন কাজকে কি কোন আবেগঘন যুক্তি দিয়ে হালাল করা যেতে পারে?
বিপক্ষে যুক্তি থাকলে রেফারেন্স সহ পেশ করুন।

Categories
My text

যাকাত সদাকা ফিতরা

সুদ,ঘুষ, প্রতারণা করে সম্পদের পাহাড় গড়ে, অন্তরের ভয়,পাপ রাশি লুকাবার জন্য সে  তখন যাকাত খুজে। যাকাতের আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে পাপমুক্ত ভাবে।

যাকাত কি কালো টাকা সাদা করার অফার?
যা দিয়ে সে হারাম সম্পদ হালাল করবে?

en_USEnglish
Powered by TranslatePress