Categories
My text

জুম্মা মোবারক

সালাত আরবী শব্দের অনুবাদ নামজ নয়। এটি পারস্যদের অনুবাদ।বাংলা অনুবাদ “রবের বিধি নিষেধের সংযোগ সাধন “। rbl

হে মু’মিনগণ! জুম‘আর দিনে যখন সালাতের জন্য আহ্‌বান করা হয় তখন তোমরা আল্লাহ্‌র স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয় – বিক্রয় ত্যাগ কর, ইহাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর। (৬২:৯)
দারুল হরবের দেশে কোন জুম্মার সালাত নেই। এটি সার্বজন স্বীকৃত। তাই দ্বীনি বিশেষজ্ঞগন একমত হয়ে আখেরি জহুর নামে ৪ রাকাত সুন্নত নামাজ যুক্ত করে দিয়েছন, যাতে করে জুমআ আদায় না হলেও যেন জহুরের সালাত আদায় হয়ে যায়। গাফেলদের অন্তর্ভুক্ত না হয়। এটি ইস্তেহাদের মাধ্যমে সংযোজন করা হলেও সর্ব মতে গৃহীত বলে সুন্নত নামে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন দুপুরে নামাজ ফরজ ৪ রাকাত হলেও  জুম্মার দিনের দূপুরের নামাজ সংক্ষিপ্ত করে ২ রাকাত ফরজ কারা হয়েছে এজন্য যে রাষ্ট্রীয় ভাষন অর্থাৎ খুৎবা শোনার জন্য ২ রাকাতের ফরজ আদায় হয়ে থাকে।  এ জন্য খুৎবায় আরবীতে বলা হয়, ” আল সুলতানু জিল জিল্যুলাল্লা  ওয়াল আরদ…………”। যার অনুবাদ: বাদশাহ বা রাষ্ট্র প্রধান আল্লাহর ছায়া স্বরুপ, সুতারং ইচ্ছা অনিচ্ছায় তাহার আদেশ মান্য কর।”

যদিও রাসুল সাঃ বা  তাঁর পড় চার খলিফার সময় এমন খুৎবা বলা হয়নি, মোয়াবিয়ার শাশ্বন আমলে এ খুৎবার প্রচলন শুরু করেন মুয়াবিয়ার রাষ্ট্রীয় নিয়োগ প্রাপ্ত আলেম গন।  যার ধারা বাহিকতা আজো চলমান। আমরা এখনো মুয়াবিয়ার প্রতিষ্ঠিত  ইসলামিক কালচারের ছায়াতলে আছি। রাসুল সাঃ যুগে নির্দিষ্ট করে শুক্রবারে জুম্মা হত না,
যখন জরুরী প্রয়োজন দেখা দিত সেদিনই জুম্মার আহ্বান করতেন। এমনও দেখা গেছে জুম্মার আহ্বান করে আবহাওয়ার বৈরিতার জন্য রাসুল সাঃ সেদিনে জুম্মা বাতিল করে দিয়েছেন পুনরায় ঘোষণা দিয়ে।
তার মানে কোন ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্র প্রধান বা তার নিয়োগ প্রাপ্ত নায়েব যখন রাষ্ট্রের জরুরী প্রয়োজনে বা মুমিনের কল্যানে কোন বিষেশ জরুরী আলোচনা শুনার জন্য আহ্বান করা হয় (৬২:৯) এ বর্ণিত আল্লাহর ভাষায়
তাকে জুম্মার সালাত বলা হয়।  অর্থাত  ইমামের আহ্বানে গণজামাতে আল্লাহর বিধি নিশেধের সংযোগ, অনুশীলনকেই জুম্মার সালত বলেছেন আল্লাহ উক্ত আয়াতে। ইমামের এমন আহবান পাওয়া মাত্র যে যে কাজে রত থাক তা বন্ধ করে ছুটে যাওয়া ফরজ।  আয়াতের শেষে তাই আল্লাহ আরো ব্যাখ্যা সহ সতর্ক করে বলেনঃ ” ইহাই তোমাদের জন্য শ্রেয় যদি তোমরা উপলব্ধি কর।”
এ জন্য মেয়েদের জন্য এ সালাত ফরজ নয়। কারন রাষ্ট্রীয় কল্যান, যুদ্ধ দামার আয়োজন নির্দেশনায় নারী ভুমিকা অপরিহার্য আল্লাহ করেন নাই।
বর্তমান বৃটিশ প্রচলিত রাষ্ট্রের  সাংসদীয় অধিবেশন এই আয়াতের আলোকেই রচিত। যদি এটি কোন ইসলামিক রাষ্ট্র এবং মুমিনদের নিয়ে সাংসদ গঠিত হতো তবে ১০০% ইসলামিক রাষ্ট্রের কার্যক্রম হতো। সংসদের প্রতিটি সদস্য রাষ্ট্র প্রধানের নিয়োগ প্রাপ্ত নায়েব বা ইমামা হয়ে সমাজে জুম্মা কায়েম করতো। বৃটিশ প্রথাটি ঠিকই কোরানের আয়াতের থিমে তৈরী করে দিয়ে গেছে কিন্ত তাদের আদর্শ ঢুকিয়ে রেখে দিয়েছে।
বর্তমান প্রচলিত জুমআ ৬২:৯ এর আলোকে আল্লাহর মনোনীত জুম্মা নয়। এটি মোয়াবিয়ার রচিত জুম্মার সালাতের অনুষ্ঠান মাত্র ধর্মজীবিরা এটাকে পুঁজি করে তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে নিয়েছেন। সেজন্য তারা মোয়াবিয়ার নিকট কৃতজ্ঞ এবং তার গুনগানে পঞ্চমুখ।
আমজনতা কোরান নিজ ভাষায় পড়েও না তাই সত্যটা উপলব্ধি করতেও সক্ষম নয়। ধর্মজীবিদের দেখানো পদ্ধতিতেই আমিন আমিন করে গরীবের হজ্জ আদায় করে মহা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে সুবহানাল্লা তসবিহ জপে।
তাই এসব নাদানের উদ্দেশ্যে রাসুল অভিযোগ করে বলবেন,  ” হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় তো এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করে।’ (২৫:৩০)

আল্লাহ রাসুলকে শান্তনা দিয়ে জানানঃ  ” অচিরেই উহারা এই কোরআন সম্বন্ধে জিজ্ঞাসিত হবে “। (৪৩:৪৪ )

সালাত -অর্থঃ  “আল্লাহর নির্দেশনার অনুশীলন।” সালাত পড়ার মত বা আদায় করার মত কোন জিনিস বা কার্যক্রম নয়। সালাত নিজের মধ্যে এবং সমাজে কায়েম বা প্রতিষ্ঠত করার এক অনুশীলন যা রবের পক্ষ থেকে বালেগ সব নর নারীর জন্য ফরজ করা হয়েছে। ইহা সৎকাজের মধ্যে উত্তম একটি সৎকাজ বটে। জুম্মা অর্থ — “একত্রিত হওয়া”।

আল্লাহ অতীত, বর্তমান,ভবিষ্যতে মানব কি করবে বা অতীতে কি করেছ তার উপমাও কোরানে বিষদ ভাবে বলেছেন।  অতীত জাতীর মত মুয়াবিয়ার রাষ্ট্রীয় আলেমগণও যে লালসা পরবস হয়ে যে সালাতকে নষ্ট করবে এবং বর্তমান ধর্মজীবিগন ও একই পথের অনুসারী তা সূরা মারিয়মের ৫৯ নং আয়াতে আল্লাহ ব্যক্ত করেছেন।
উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা – পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে,(১৯:৫৯)

মনোনীত জুম্মার সালাতকে নিজেদের মনগড়া ভাবে পড়ে মর্মেই অন্যত্র   সূরা আনফালের ৩৫ নং আয়াতে আল্লাহ বলেনঃ
” কা‘বাগৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর। (৮:৩৫)
প্রকৃত জুমআর সালাত কিয়ামত পর্যন্ত কেমন হবে, এ বিষয়ে ইংগীত দিয়ে সূরাতুল মুমিনুনের ১-৩ নং আয়াতে আল্লাহ জানানঃ
” অবশ্যই সফলকাম হয়েছে মু’মিনগণ- যারা নিজেদের সালাতে বিনয়, নম্র-যারা অসার ক্রিয়া-কলাপ হতে বিরত থাকে।” (মুমিনুন:১-৩)
বর্তমান মোয়াবিয়ার পৃষ্ঠপোষক আলেমদের দ্বারা রচিত প্রচলিত জুম্মা নামাজ আল্লাহর মনোনিত জুম্মা নয়, বরং সূরা মুমিনের ৩ নং আয়াতের বর্ণিত ” অসার ক্রিয়া কলাপ সমৃদ্ধ একটি জুম্মার সালাত।  যাতে কোন কল্যান নেই বলে আলোচিত আয়াতের দৃষ্টিতে আমি মনে করি।
সবটুকু আলোচনা কোরআন পড়ে আমার একান্ত ব্যক্তিগত উপলব্ধি। তাই কাউকে মানার জন্য আহ্বান করছি না। ভাল লাগলে গ্রহন করবেন, খারাপ লাগলে ডাস্টবিনে ফেলে দিবেন। আর যদি আলোচনার উপর কোন দ্বিমত থাকে রেফারেন্স সহ জানাবেন, আমি শুধরে নেব।
পরিশেষে হাদীস নির্ভরশীলদের জন্য একটি হাদীসের রেফারেন্স দিয়ে যাই। হাদীসটি হলোঃ
রাসুল সা. বলেছেনঃ কোনো ব্যক্তির ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য হলো অর্থহীন কথা বা কাজ ত্যাগ করা।(তিরমিজি: ২৩১৮)
কোরআন নিজ মাতৃভাষায় পড়ার দাওয়াত রইল।

Categories
My text

সহজ আরবী গ্রামার

__ সাধারনের জন্য আরবী গ্রামার পর্ব-০৮

সমগ্র কোরাআনে যত শব্দ আছে তা তিনটি শ্রেনীতে বিভক্ত।
১) ইশেম (বিষেশ্য)
২) ফা’আল (ক্রিয়া) এবং
৩) হরফ ( অব্যয়)
হরফ এবং ফাল বাদ দিলে বাকি সব ইসিম।

যে শব্দ গুলি দ্বারা কোন কিছুর নাম বুঝায় তাকে এসেম বলে। যে শব্দ গুলি দ্বারা কোন কাজ বুঝায় তাকে ফাল বলে। যে শব্দগুলির কোন অবস্থায় কোন পরিবর্তন নাই তাকে হরফ বলে। হরফের সংখ্যা খুব সামান্য। এগুলি মুখস্থ রাখতে হবে।

১) ইসিমঃ যে শব্দ দ্বারা কোন কিছুর নামকে বুঝায় তাকে ইশেম বলে। অন্যভাবে বললে হরফ এবং ফাল বাদ দিয়ে আরবী যত শব্দ আসবে সব ইসেম।

এখন কথা হল ইংরেজী শিক্ষিত একজন মানুষ অর্থ না জেনেও শুধু আরবী শব্দ দেখে কি ভাবে ইসেম কোন শব্দটি তা সনাক্ত করতে পারবে তার সহজ উপায় বা আলামতঃ

ক) কোন শব্দের শুরুতে আলিফ লাম থাকা।
খ) কোন শব্দের শেষে তানভিন থাকলে। অর্থাৎ দুই যবর ,দুইপেশ, বা দুই যের থাকলে সেটি ইসেম বুঝতে হবে।
গ) কোন শব্দের শেষে গোল তা থাকলে

** ২) অনুরুপ ভাবে অর্থ না জেনেও কিভাবে বাক্যে কোন শব্দটি ফাল তা সহজে সনাক্ত করতে পারবে তার উপায়ঃ
তার আগে একটু জানা থাকা দরকার ফেল চার প্রকার। যথাঃ ফেলে মাদি,ফেলে মুদারে,ফেলে আমল, ফেলে নাহি।
আরবীতে অধিকাংশ ফাল তিন অক্ষরের হয়। ফাল চার অক্ষরের বেশী হয় না।
ক) শব্দের শুরুতে যজম (যের,যবর,পেশ) প্রদানকারী অক্ষর হবে।

** ৩) অনুরপ ভাবে অর্থ না জেনেও হরফ চেনার উপায়ঃ
হরফ গুলো শব্দের শুরুতে ব্যবহার হয়। যেমনঃ
নিন্মে বহুল ব্যবহৃত কিছু হরফ উল্লেখ করা হল। অবশ্য হরফ গুলি মুখস্থ রাখতে হবে।

(বা) – ب (সাথে) সবসময় যের যোগে ব্যবহার হবে। বিসমিল্লাহ
( তা ) – ت (এবং) যবর দিয়ে। যেমন তাবারাকাছমুকা
(কাফ) – ك (মত) যবর দিয়ে। কানাবদু
(লাম) -ل (জন্য) যের দিয়ে। লিল্লাহে মা ফীসসামাওয়াতে
(ওয়া )- و (এবং) ওয়া রাহ্মাতুল্লিল আলামিনল।
(মুনজা )- منز (যাবৎ)
(মুজা) – مذ (এবং)
(খলা)- خلا (ব্যতিত)
(রুবা) رب ( অল্প)
( হাশা) حسا (ব্যতিত)
( মিন) من ( হতে)
( আ’দা) عدا (ব্যতিত)
( ফী) في ( মধ্যে)
(আ’ন) عن (হতে)
( আ’লা) عاي (উপরে)
(হাত্তা) حتي (পর্যন্ত)
( ইলা) الي (দিকে)
(ইন্না) ان
(আন্না) ان
(কানা) كان
(লাইতা) ليت
(লাকিন্না) لقن
(লায়াল্লা) لعل
( ওয়াও) و ( এবং /কসম)
(আও) او
(আম) ام
(ফা) ف
(ছুম্মা) ثم
(আম) ام
(লাকিন) لكن
( আম্মা) اما
(ইম্মা) اما
(আন) ان
(লান) لن
(কানা) كن
(আন্না) انن
(আন ) ان
(লাম) لم
(লাম্মা) لما
(লা) لا (না)
(মা) ما
হরফে যার ১৭ টি। এরা বাক্যের সামনে বসে পড়ের শব্দকে যার দেয়।

উপসংহারঃ সূরা এখলাস থেকে কয়টি ইসিম, কয়টি ফেল এবং কয়টি হরফ আছে তা নিজে নিজে নির্নয় করি। অর্থ জানার প্রয়োজন নেই। যেহেতু আমরা ইংরেজী শিক্ষিত, আরবী জ্ঞান নেই বললেই চলে।

بِسمِ اللَّهِ الرَّحمٰنِ الرَّحيمِ
বে ইসেম আল্লাহ হু আর রহমান আর রাহিম
قُل —— — هُوَ ——– اللَّهُ —— أَحَدٌ
ক্বুল – হু – ওয়া – আল্লা – হু – আহাদ

اللَّهُ- ————— الصَّمَد
আল্লা – হু – সামাদ

لَم —— يَلِد —- وَلَم —— يولَد
লাম – ইয়ালিদ – ওয়া – লাম — ইউলাদ

وَلَم —- يَكُلَهُ ——– كُفُوًا —- أَحَدٌ
ওয়া – লাম — ইয়া কুল্লা – হু – কুফুয়ান –আহাদ।

Categories
My text

মিরাজের  বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাঃ

  মিরাজের  বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাঃ

কাফেররা যখন বিজ্ঞানের জয়যাত্রার পথে নতুন নতুন আবিস্কারের স্বপ্ন দেখছে, বিজ্ঞানময় এই কোরান ভিত্তিক ইংরেজী, গণিত বাদ দিয়ে আমাদের এই আলেমরা তখন সাপ,ব্যাঙের বানোয়াট ব্যঙামা ব্যঙামীর কিচ্ছা শিখিয়ে  তৈরী করছেন মসজিদের ইমাম আর মাদ্রাসার শিক্ষক। যাদের আয়ের একমাত্র উৎস মানুষের যাকাত, ফিতরা, মিলাত আর কোরবানীর চামড়ার টাকা।

আমরা কোরান থেকে বিজ্ঞানকে আলাদা করে দেয়ার সুযোগে আমাদের দেশে ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিকেরাও  বিজ্ঞান থেকে কোরানকেও সরিয়ে দিয়েছে।

মিরাজ বিষয়ে সূরা বিনী ইসরাইলের শুরুতে বির্নিতঃ পবিত্র ও মহিমময় তিনি যিনি তাঁহার বান্দাকে রজনীতে ভ্রমণ করাইয়াছিলেন আল-মসজিদুল হারাম হইতে আল-মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যাহার পরিবেশ আমি করিয়াছিলাম বরকতময়, তাহাকে আমার নিদর্শন দেখাইবার জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। (১৭ঃ১)

সুরা ওয়াকিয়ার ৭৫ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে “আমি শপথ করছি সেই স্থানের যেখানে নক্ষত্রগুলি পতিত হয়।”

— আচ্ছা বিজ্ঞান ছাড়া কি এই আয়াতের ব্যখ্যা করা সম্ভব? প্রথম টেলিস্কোপের আবিস্কারক আরব বিজ্ঞানী আবুল হাসান আজ থেকে প্রায় এক হাজার বছর আগে বিলেছিলেন এ আয়াত দ্বারা ব্লাক হোলের ইংগীত দেয়া হয়োছে। কিন্তু বিজ্ঞানের গবেষনার বিরোধিতা করা ঐ আলেমদের যদি বলা হয় ব্লাকহোল কি? তারা কি উত্তর দিতে পারবেন?
এই ধরুন পুরো শবে মেরাজটাই বিজ্ঞানের এক বাস্তবায়ন। বলা হয়েছে পৃথিবীর সময়ের মাত্র কয়েক সেকেন্ডে মুহাম্মদ সাঃ ২৭ বছর সময় পার করে এসেছেন।  বিষয়টা একজন নাস্তিকের কাছে হাস্যকর মনে হবে।  কারন আমরা তাদের কাছে কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে পারিনি। কিন্তু আল বিরুনীর কথা কাফেররা বিশ্বাস করেছিলেন, কারন তিনি একাধারে পদার্থবিদ,জ্যোতির্বিদ এবং দার্শনিক ছিলেন। তিনিই প্রথম পৃথিবীর ব্যাসার্ধ পরিমাপের একটি সূত্র আবিস্কার করেছিলেন।  কোরানের সূরা আম্বিয়ার ৩৩ নম্বার সূরায় বলা হয়েছে,  ” চন্দ্র-সূর্য প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব গতিতে নিজ নিজ অক্ষে বিচরন করছে। এ আয়াতকে বিশ্লেষন করতে গিয়েই তিনি প্রথম আবিস্কার করছিলেন পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে। সেই বিজ্ঞানী আল বেরুনী মেরাজ সম্পর্কে ১০২৩ খৃষ্টাব্দে বলে গেছেন,  মেরাজের ঘটনা কোন অলৌকিক বিষয় নয়।  বরং আল্লাহ সেই রাতে পুরো পৃথিবীর সময়কে নিয়ন্ত্রন করে দিয়েছিলেন।

আজকের আধুনিক বিজ্ঞানীরা যার নাম দিয়েছেন ডায়মানসন। আমাদের বর্রতমান পৃথিবী হচ্ছে ডায়মানসনাল বা ত্রিমাত্রিক।  ফোর্থ ডায়মানসন আমাদের জীবনে থাকলেও আমরা পুরোপরি সুবিধা এখনো ভোগ করতে পারি নাই। যেমন থার্ড ডায়মানসনের কারনে আমরা উপরে নীচে ডানে-বামে সব দিকে চলাচল করতে পারি। কিন্তু টাইম ডায়মানসনের ক্ষেত্রে তা এককেন্দ্রিক অর্থাৎ সময় সব সময় ভবিষ্যেতর দিকে চলমান, আমরা চাইলেই সময়কে থামিয়ে দেয়া কিংবা সামনে পেছনে যেতে পারি না।
কিন্তু বিজ্ঞানীদের মতে আমাদের আসপাশে হয়ত এমন গ্রহ আছে যেখনকার প্রাণীরা অতীত ভবিষ্যত যেখানে ইচ্ছে বিচরন করতে পারে। থিওরী অনুসারে পৃথিবীতে ১১টি ডায়মানসন আছে। স্টিন থিওরী অনুযায়ী ২৬টি ডায়মানসন থাকতে পারে আমাদের এ মহাবিশ্বে। এর মধ্যে আমরা যদি ৫ম ডায়মানসন পর্যন্ত বাস্তব রুপ দিতে পারতাম তাহলে আমরা আমাদের ভবিষ্যতে চলে যেতে পারতাম, সময়কে থামিয়ে দিতে পারতাম এমন কি একজন মানুষ আলাদা হয়ে দুইজন মানুষের মত বিচরন করতে পারতাম।
এবার চিন্তা করুন বিজ্ঞানীরা যদি ২৬টি ডায়মান্সনের গাণিতিক রুপ দিতে পারে তাহলে যিনি এ মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন তার পক্ষে কততম ডায়মানসনের রুপ দেওয়া সম্ভব।
ইস্রীর থিওরী অনুযায়ী ১০ম ডায়মানসনে অবস্থান করার কালে কোন প্রাণী তার গ্রহের বাইরেও অন্য গ্রহে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। অর্থাত সে চাইলে অন্য গ্রহের সময়কে আটকে দিয়ে তার নিজের গ্রহের সময় চলমান রাখতে পারেন। অর্থাত আমরা যদি ধরে নেই আল্লাহ ১০ ডায়মানসনে অবস্থান করছেন তবে তার পক্ষে পৃথিবীর সময়কে ২৭ বছরের জন্য আটকে দেয়া সম্ভব। কিংবা হতে পারে যেখানে রাসুল সাঃ কে সেদিন যেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেখানের ২৭ বছরের সাথে পৃথিবীর সময়ের অনুপাত মাত্র কয়েক সেকেন্ড।
যেমন আমাদের সৌরজগতের একদিন সমান আমাদের পৃথিবীর ১১৬ দিন ১৮ ঘন্টা, অর্থাৎ শুক্র গ্রহে আপনি একদিন কাটিয়ে আসলেন, আপনার পৃথিবীর জীবন থেকে ১১৬ দিন শেষ হয়ে যাবে। তার মানে একি সময়ে বিভিন্ন গ্রহে যদি পার্থক্য থাকতে পারে তাহলে আরশে আজমের সাথে পৃথিবীর সময়ের পার্থক্য কত সেটা আমাদের মানুষের পক্ষে জানা কখনই সম্ভব না।

তবে যেহেতু রাসুল সাঃ আল্লাহর কাছে যাবার আগে মসজিদুল হারাম থেকে বায়তুল মোকাদ্দস পর্যন্ত যাবার সময় পর্যন্ত পৃথিবীতেই ছিলেন,  ঐ সময়ে মক্কা থেকে জেরুজালেমে যেতে দীর্ঘ সময় কেটে যেত সেই কারনে
অনুমান করা যায় আল্লাহ হয়ত এখানে তাঁর হায়াত ডায়মানসনের ক্ষমতা ব্যবহার করে পৃথিবীর সময়কে ২৭বছরের জন্য আটকে দিয়েছিলেন। অতএব রাসুল সাঃ এর মেরাজ কোন কল্পনা প্রসুত নয় বরং বৈজ্ঞানিক থিওরীর প্রতিফলন। মেরাজে ঘটনায় কিভাবে বিজ্ঞানের প্রোয়গ ঘটেছে তা বুঝার জন্য উৎকৃষ্ট উদাহরন হতে পারে এপিক্স সাইন্সফ্রিকশন মুভির। এই ছবিটিতে টাইম ট্রাভেলের বিষয়টি নিখুতভাবে ফুটিয়ে তুলা হয়েছে। মুভির শেষদিকে কোপারের সাথে তার মেয়ে মারফের যখন সাক্ষাত হয় তখন বাবার চেয়ে তার মেয়ের বয়স অনেক বেশী দেখানো হয়েছে। কারন বাবা পমথিবী থেকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বিভিন্ন গ্রহে অবস্থান করেছেন। মুভেতে ব্লাকহোলের পাশাপাশি ওয়াবহোলের বাস্তব ব্যবহার দেখানো হয়েছে, যা আমাদের এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে সর্টকাট ওয়েতে নিয়ে যেতে সক্ষম।

মেরাজের নবীজীকে দ্রুতগামী নিয়ে যাওয়ার যে বাহনের কথা বলা হয়েছে হতে পারে সেটাও ছিল শক্তিশালী মধ্যাকর্ষণ শক্তির সর্ব্বোচ্চ ব্যবহার। মিথুর মিলা মেরাজকে অস্বীকার করলেও ইন্টারেস্ট টিলালা মুভিকে বলেছেন বৈজ্ঞানিক। কারন এই মুভিতে স্টিন থিওরী, রিলেটিভিটি এস্ট্রো ফিজিক্স এবং টাইম ডায়মানসন সহ বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক সুত্রের বাস্তবিক রুপ দেওয়া হয়েছে। তবে বাস্তবে তা করতে হলে বিজ্ঞানকে আরো অনেকদুরে এগিয়ে যেতে হবে। তা হয়ত কখনোই সম্ভব নাও হতে পারে।

Categories
My text

জীবন চক্র রহস্যঃ

প্রথম মৃত্যুর পর এবং আমাদেরকে শাস্তি দেওয়া হইবে না!’( ৩৭:৫৯) ইহা তো মহাসাফল্য। (৩৭:৬০) এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা,( ৩৭:৬১)

মানুষ জন্মগত ভাবে কেন অন্ধ, আতুর, পুঙ্গু হয়?  কেন অপরিণত বয়সে মৃত্যু হচ্ছে, ভালো মেয়েটির শ্লীলতাহানী হচ্ছে, কেন নিরপরাধ মানুষ জেল খাটছে,?

আল্লাহ বলেনঃ পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে আমি উহা সংঘটিত করিবার পূর্বেই উহা লিপিবদ্ধ থাকে ;।( 57:22)

এর প্রত্যেকটির পিছনে একটি কারণ এবং জন্মচক্রের রহস্য লুকায়িত রয়েছে । তা না হলে বলতে হয় আল্লাহ পক্ষপাতিত্ব করছেন । কাউকে অন্ধ, খোঁড়া বানাচ্ছেন, আবার কাউকে ভালো বানাচ্ছেন, কিন্তু আল্লাহ তো নির্দোষ- নিরপেক্ষ । আল্লাহ পাক ঘোষণা করেছেনঃ
” যা কিছু মঙ্গল তা (আল্লাহ ) হতে আর যা কিছু মন্দ তা তোমা হতে ( সুরা নেসা ;-৭৯) ।
অথচ আমরা বলে থাকি সবই তো আল্লাহর হুকুমে হয়েছে । আল্লাহর উপর দোষ চাপিয়ে দেই । আমার যা কিছু মন্দ তা যদি আমার কৃতকর্মের ফলই হয়ে থাকে তাহলে আমার কর্মফলে আমিই গ্রেফতার, আল্লাহ নিরপেক্ষ ।

এর যথাযোগ্য সদ্ব্যবহার জান্নাতের দিকে উত্তরন বা প্রমোশন,আর এর অপব্যবহার জাহান্নামের দিকে পশ্চাৎপসরন বা ডিমোশন । তাই তো রব বলেনঃ তোমাদের অবশ্যি স্তরে স্তরে এক অবস্থা থেকে আর এক অবস্থার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ৮৪:১৯

তবে যারা মুত্তাকী তারা একবারই মৃত্যু বরন করবেন এবং রবের দিদার প্রাপ্ত হয়ে চিরকাল জান্নাতে অবস্থান করবেন। এটি আল্লাহর ঘোষণা। সুরা দোখান, আয়াত ৫৬
” প্রথম মৃত্যুর পর তাহারা সেখানে আর মৃত্যু আস্বাদন করিবে না। আর তাহাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি হইতে রক্ষা করিবেন(৪৪:৫৬)

আর যারা অস্বীকার কারী অবাধ্য তার দুইবার কিংবা বারবার মৃত্যুর স্বাদ গ্রহন করবে যতক্ষন না জান্নাতে যাওয়ার মত পরিশুদ্ধ না হবে। এ বিষয়ে সূরা ইনশিকাকে আল্লাহ বলেনঃ নিশ্চয় তোমরা ধাপে ধাপে আরোহণ করিবে।(৮৪:১৯)

অন্যত্র আরো পরিস্কার ভাবে আল্লাহ বলেনঃ
আর এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা,( ৩৭:৬১)

এ আয়াতেই জন্ম চক্রের রহস্য লুকায়িত।

কারন হলো ইচ্ছা শক্তি প্রয়োগের বেলায় আল্লাহ নিরপেক্ষ ।

সুরা মোমিনের ৩৩ নং আয়াতে আল্লাহপাক বলেছেনঃ ” যে সময়ে তোমরা ফিরিয়া যাইবে পিছনে, আল্লাহর তরফ হইতে থাকিবে না তোমাদের জন্য কোনো সংরক্ষক এবং আল্লাহ যাহাকে ভ্রান্তিতে ফেলেন তাহার জন্য কোনো হাদী নাই ।”
আল্লাহ কাহাকেও ভ্রান্তির মধ্যে ফেলতে চান না । কারণ আল্লাহ সূরা হুদে বলে দিয়েছেনঃ “যে ব্যক্তি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করেনা আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেনা । (১১ঃ৫৩)

তাঁরই সৃজিত প্রাকৃতিক নিয়ম যে মানুষ মহামানবের হেদায়েতের বিরোধীতা করলে মৃত্যুর পরে পেছনের দিকে অর্থাৎ পশুকুলে জন্ম নেয় । তখন তাদের জন্য কোনো হাদী থাকে না । একেই আল্লাহর বিভ্রান্তি বলা হয়েছে । মোহাম্মদ গোষ্ঠীর সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত (মুসলমান মুত্তাকী অবস্থায় উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ) মানুষের মুক্তি হবে না এবং জন্মচক্রের ফেরে রুপান্তরিত হয়ে বারবার এই দুনিয়া নামক জাহান্নামে আসতে হবে ।

এই দুনিয়াটাই যে জাহান্নাম এটা মোমিন অর্থাৎ সত্যদ্রষ্টা ব্যতীত কারো পক্ষে উপলব্ধি করা অসম্ভব । আল্লাহপাক কোরানে ঘোষণা করেছেন- ” তোমাদের যদি দিব্যচক্ষু থাকত তাহলে জান্নাত এবং জাহান্নাম দেখতে পেতে ” (সুরা তাকাচ্ছুর ) ।

কোরানের ঘোষণা অনুযায়ী মানুষকে জাহান্নামে দেওয়া হবে বলা হয়নি । মানুষ জাহান্নামে আছে বলা হয়েছে । একটু লক্ষ্য করে দেখুন তো জীবজগৎ ও প্রানিজগতে কয়টা জীব বা প্রানী অন্ধ, আতুর, খোঁড়া ও অঙ্গহীন হয়ে জন্মাচ্ছে ? সুরা বাকারার ২৮ নং আয়াতের দিকে, আমরা একটু লক্ষ্য করিলে কিছু চিন্তায় ফেলিয়া দিবে,আল্লাহ বলেনঃ তোমরা কিরূপে আল্লাহ্কে অস্বীকার কর ? অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন, তিনি তোমাদেরকে জীবন্ত করেছেন, আবার তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন ও পুনরায় জীবন্ত করবেন, পরিণামে তাঁর দিকেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে। ( ২ঃ ২৮)

যদি আমরা কোরান মাজিদের বিভিন্ন ধরনের আয়াত দ্বারা আল্লাহপাক মানুষকে বুঝাতে চেয়েছেন যে ” জন্ম মৃত্যুর চক্রে আবব্ধ হইয়া থাকিলে জান্নাতের সন্ধান পাইবে না।

আল্লাহ বলেনঃ  আমি তোমাদের জন্য মৃত্যু নির্ধারিত করেছি এবং আমি অক্ষম নই— তোমাদের স্থলে তোমাদের সদৃশ আনয়ন করতে এবং তোমাদেরকে এমন এক আকৃতিতে সৃষ্টি করতে যা তোমরা জান না আর অবশ্যই তোমরা অবগত হয়েছ (প্রথম সৃষ্টি) সম্পর্কে।  তবে তোমরা উপদেশ গ্ৰহণ করা না কেন? (৫৬ঃ৬০-৬২)

প্রথম মৃত্যুর পর এবং আমাদেরকে শাস্তি দেওয়া হইবে না! ইহা তো মহাসাফল্য। আর এইরূপ সাফল্যের জন্য সাধকদের উচিত সাধনা করা,( ৩৭:৫৯-৬১)

আরেক ধাপ এগিয়ে গিয়ে আল্লাহ বলেনঃ “হে মানুষ! তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট পৌঁছা পর্যন্ত কঠোর সাধনা করিতে থাক,পরে তুমি তাঁহার সাক্ষাৎ লাভ করিবে। ( ৮৪ঃ ৬)

পৃথিবীতে অথবা ব্যক্তিগতভাবে তোমাদের উপর যে বিপর্যয় আসে আমি উহা সংঘটিত করিবার পূর্বেই উহা লিপিবদ্ধ থাকে ; আল্লাহ্‌র পক্ষে ইহা খুবই সহজ।(৫৭ঃ২২)

তোমরা কিরূপে আল্লাহ্‌কে অস্বীকার কর ? অথচ তোমরা ছিলে প্রাণহীন, তিনি তোমাদেরকে জীবন্ত করিয়াছেন, আবার তোমাদের মৃত্যু ঘটাইবেন ও পুনরায় জীবন্ত করিবেন, পরিণামে তাঁহার দিকেই তোমাদেরকে ফিরাইয়া আনা হইবে। (2:28)

উহারা বলিবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি আমাদেরকে প্রাণহীন অবস্থায় দুইবার রাখিয়াছ এবং দুইবার আমাদেরকে প্রাণ দিয়াছ। আমরা আমাদের অপরাধ স্বীকার করিতেছি; এখন নিষ্ক্রমণের কোন পথ মিলিবে কি?’ (৪০:১১)

সরাসরি একবার মৃত্যুতে যেন আল্লাহর দিদার পাওয়া যায় সে জন্য আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেনঃ “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহ্‌কে যথার্থভাবে ভয় কর এবং তোমরা মুসলমান না হইয়া কোন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিও না। (৩ঃ১০২)

আমার এ বিশ্লেষনে আপনি একমত থাকুন সে দাবী আমি করবো না, এবং আমি চুড়ান্ত বুঝেছি সে কথাও দাবী করব না। কিন্তু দ্বীমত হলে আপনি রেফারেন্স সহ তা তুলে ধরুন। আমাকে সত্য উম্মোচনে সহায়তা করুন। নচেৎ সত্যকে অস্বীকার বা মিথ্যেকে মেনে নেয়ার অপরাধে দায়ী থাকবেন আপনিও।
*******************************

এতদ্ববিষয়ে কোরানে বর্নিত নিন্মোক্ত আয়াতগুলি পড়ে নিতে পারেন।

নিশ্চয় তোমরা ধাপে ধাপে আরোহণ করিবে। (৮৪:১৯)
لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَنْ طَبَقٍؕ
লাতারকাবুন্না  তাবাক্কান  আন  তাবাক।
অনুবাদঃ নিশ্চয় তোমরা ধাপে ধাপে আরোহণ করবে।

তারকীকঃ    لَتَرْكَبُنَّ =   তোমরা  অবশ্যই আরোহণ করবে,     طَبَقًا =  স্তর,   عَنْ =  থেকে,     طَبَقٍ =  স্তরে,

বালাগাত (শব্দ বিন্যাস)ঃ তোমাদের অবশ্যি স্তরে স্তরে এক অবস্থা থেকে আর এক অবস্থার দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

বর্তমানের অধিকাংশ মানুষ প্রায়শই দাবি করেন যে শুধুমাত্র মুসলমানরাই জান্নাতে যাবে, আর অন্যরা জাহান্নামে। কিন্তু এই দাবির প্রেক্ষিতে আমার কয়েকটি প্রশ্ন রয়েছে:

1. একটি শিশু যদি অমুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে—যেমন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বা অন্য কোনো ধর্মের পরিবারে—তাহলে সেই শিশুটির অপরাধ কী? আল্লাহ কেন তাকে একটি অমুসলিম পরিবারে পাঠালেন?

2. যদি একটি শিশু পৃথিবীতে জন্ম থেকেই দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়, তাহলে সেই শিশুটির অপরাধ কী? যেখানে কোরআন বলে, “কেউ কারো বোঝা বহন করবে না।”

3. একটি শিশু যদি সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মায়, অন্যদিকে আরেকটি শিশু যদি অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করে, তাহলে সেই দরিদ্র শিশুটির অপরাধ কী? আল্লাহ কেন তাকে দরিদ্র পরিবারে পাঠালেন? কোরআন তো বলে, মানুষ তার প্রচেষ্টার ফল পায়। তাহলে এটি কি পূর্বজন্মের কর্মফল?

4. প্রচলিত অনুবাদ অনুসারে কোরআন পুরুষ ও নারীর ব্যাপারে কথা বলে, কিন্তু হিজড়াদের সম্পর্কে কোরআন নীরব কেন? তাহলে কি কোরআন মূলত আত্মার সাথে কথা বলে?

বিশেষ দ্রষ্টব্য: কোরআন তাদের জন্য, যারা গভীরভাবে চিন্তা-গবেষণা করতে সক্ষম।

জান্নাত জাহান্নাম ততদিন বিদ্যমান যতদিন আসমান এবং জমিন বিদ্যমান সূরা হুদ আয়াত 107 এবং 108
সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন ; নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক তাহাই করেন যাহা তিনি ইচ্ছা করেন।

خٰلِدِيْنَ فِيْهَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَالْاَرْضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّكَ‌  ؕ اِنَّ رَبَّكَ فَعَّالٌ لِّمَا يُرِيْدُ

সূরা নম্বর: ১১ আয়াত নম্বর: ১০৭

পক্ষান্তরে, যাহারা ভাগ্যবান তাহারা থাকিবে জান্নাতে, সেখানে তাহারা স্থায়ী হইবে, যত দিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকিবে, যদি না তোমার প্রতিপালক অন্যরূপ ইচ্ছা করেন; ইহা এক নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার।

وَاَمَّا الَّذِيْنَ سُعِدُوْا فَفِى الْجَـنَّةِ خٰلِدِيْنَ فِيْهَا مَا دَامَتِ السَّمٰوٰتُ وَالْاَرْضُ اِلَّا مَا شَآءَ رَبُّكَ‌  ؕ عَطَآءً غَيْرَ مَجْذُوْذٍ

সূরা নম্বর: ১১ আয়াত নম্বর: ১০৮

Categories
My text

এ বাঁধ ভাঙ্গতে হবেঃ

ধর্মীয় বিষয়ে মানুষ জন্মগত ভাবে যে বিষয়টি সত্য জেনে আসছে তা অন্য কেউ মিথ্যা বললে সহজে মেনে নিতে পারে না। মানুষ ধর্মীয় বিষয়ে তার জানা গুলো ডাহা মিথ্যা হলেও সেগুলোকেই একমাত্র সত্য মনে করে  এবং বাকি সব  মিথ্যা মনে করে। একজন ব্যক্তি যখন হঠাৎ জানতে পারে তার ধর্মীয় বিষয়ে জানা গুলো অনেক কিছুই মিথ্যা  তখন সে উত্তেজিত হয়। সে মেনে নিতে পারে না।  যুগে যুগে এ সংঘর্ষ সকল নবী রাসুলদের সাথেও হয়ে আসছে। সেই সতর্ককারী বলিত, ‘তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ দেরকে যে পথে পাইয়াছ, আমি যদি তোমাদের জন্য তদপেক্ষা উৎকৃষ্ট পথনির্দেশ আনয়ন করি তবুও কি তোমরা তাহাদের পদাংক অনুসরণ করিবে? তাহারা বলিত, ‘তোমরা যাহা সহ প্রেরিত হইয়াছ আমরা তাহা প্রত্যাখ্যান করি।'(৪৩:২৪)

কোরানের অনুসরনে কথা বললে মানুষ বলে আমরা সব লোককে দেখতেছি একভাবে চলতে আর তুমি নতুন করে কি সব বলতে শুরু করেছে।  আল্লাহ তখন বলেনঃ  যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্‌র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬:১১৬)

তখন বলে তাহলে আমাদের পুর্বপুরুষ যারা মরে গেছে তারা কি সবাই ভুল এবাদত করে মরেছে?  এ ধরনের প্রশ্নের সন্মুখীন স্বয়ং নবীও হয়েছিলেন। তাই আল্লাহ জানিয়ে দিলেনঃ যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা তোমরা অনুসরণ কর’, তাহারা বলে, ‘না, বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহার অনুসরণ করিব।’ এমন কি, তাহাদের পিতৃ পুরুষগণ যদিও কিছুই বুঝিত না এবং তাহারা সৎপথেও পরিচালিত ছিল না-তৎসত্ত্বেও। (২:১৭০)

বরং উহারা বলে,’আমরা তো আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে পাইয়াছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাহাদেরই পদাংক অনুসরণ করিতেছি। (৪৩:২২) এইভাবে তোমার পূর্বে কোন জনপদে যখনই আমি কোন সতর্ককারী প্রেরণ করিয়াছি তখন উহার সমৃদ্ধিশালী ব্যক্তিরা বলিত, ‘আমরা তো আমাদের পূর্ব পুরুষদেরকে পাইয়াছি এক মতাদর্শের অনুসারী এবং আমরা তাহাদেরই পদাংক অনুসরণ করিতেছি।(৪৩:২৩)

কোরআনের অন্যত্র আবার আল্লাহ বলেনঃ যখন তাহাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহার দিকে ও রাসূলের দিকে আস’, তাহারা বলে, ‘আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহাই আমাদের জন্য যথেষ্ট।’ যদিও তাহাদের পূর্বপুরুষগণ কিছুই জানিত না এবং সৎপথপ্রাপ্তও ছিল না, তবুও কি ? (৫:১০৪)

অনুরুপ সূরা লোকমানে বলেনঃ  “ উহাদেরকে যখন বলা হয়, “ আল্লাহ্ যাহা অবতীর্ণ করিয়াছেন তাহা অনুসরণ কর।’ উহারা বলে, ‘বরং আমরা আমাদের পিতৃ পুরুষদেরকে যাহাতে পাইয়াছি তাহারই অনুসরণ করিব।’ শয়তান যদি উহাদেরকে জ্বলন্ত অগ্নির শাস্তির দিকে আহবান করে, তবুও কি? (৩১ঃ২১) এর পর তারা যুক্তি তুলে অধিকাংশ মানুষের অনুসরনের কথা বলে, তখন আল্লাহ জানন –

*যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্‌র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬ঃ১১৬)

তার মানে দীর্ঘ দিনের পালিত অভ্যাস, বাপদাদার যে ভাবে এবাদত করতে দেখে আসতেছে, অধিকাংশ লোকে যে ভাবে ধর্ম কার্যাদি সম্পাদন করতে দেখে আসতেছে তা থেকে সড়ে এসে যত সত্য কথায় উপস্থাপন করা হোক না কেন, মানুষ তা গ্রহন করতে রাজি না, যদিও কোরান থেকে দৃষ্টান্ত দেয়া হয়। আর এমন হবে তা আল্লাহ জানেন বলেই আল্লাহ বলেনঃ যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তাহারা তোমাকে আল্লাহ্‌র পথ হইতে বিচ্যুত করিবে। তাহারা তো শুধু অনুমানের অনুসরণ করে ; আর তাহারা শুধু অনুমান ভিত্তিক কথা বলে।(৬:১১৬)

* তোমরা তাহাদের মত হইও না যাহারা তাহাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন আসিবার পর বিচ্ছিন্ন হইয়াছে ও নিজেদের মধ্যে মতান্তর সৃষ্টি করিয়াছে। তাহাদের জন্য মহাশাস্তি রহিয়াছে।(৩:১০৫)। আল্লাহ্ ইচ্ছা করেন তোমাদের নিকট বিশদ ভাবে বিবৃত করিতে, তোমাদের পূর্ববর্তীদের রীতিনীতি তোমাদেরকে অবহিত করিতে এবং তোমাদের ক্ষমা করিতে। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (৪:২৬)

সমাজের অধিকাংশ মুসলমান হুজুর নিকট শুনে তাদের এবাদত পরিপালন করে থাকে। অথচ সকল এবাদতের নির্দেশ কোরানে থাকলেও তা কখনো যাচাই করে দেখেন না। সে বিষয়েও আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেনঃ  আল্লাহ ঈমানদারগণকে সতর্ক করে বলেনঃ “অবশ্যই আলিম ও দরবেশদের অনেকেই ভূয়া কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষের সম্পদ গ্রাস করে থাকে এবং আল্লাহর পথ থেকে লোকদের নিবৃত রাখছে।” (৯:৩৪অংশ)

* তাহাদের মধ্যে এমন কিছু নিরক্ষর লোক আছে যাহাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কিতাব সম্বন্ধে কোন জ্ঞান নাই,তাহারা শুধু অমূলক ধারণা পোষণ করে।(২:৭৮)

* হে ঈমানদারগণ! অধিকাংশ পীর,দরবেশের অবস্থা এই যে, তারা জনগণের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করে এবং তাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে! তাদের জন্য পীড়াদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও যারা স্বর্ণ রৌপ্য জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না! (সূরা তওবা: আয়াত ৩৪)

আল্লাহ তাদের লক্ষ্য করে বলেনঃ তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও, আর নিজদেরকে বিস্মৃত হও ? অথচ তোমরা কিতাব অধ্যয়ন কর। তবে কি তোমরা বুঝ না ?

*আর আপনি তাদের অনেককে দেখবেন যে, দৌড়ে দৌড়ে পাপে, সীমালঙ্ঘনে এবং হারাম ভক্ষনে পতিত হয়। তারা অত্যন্ত মন্দ কাজ করছে। (৫:৬২)

*দরবেশ ও আলেমরা কেন তাদেরকে পাপ কথা বলতে এবং হারাম ভক্ষণ করতে নিষেধ করে না? তারা খুবই মন্দ কাজ করছে।(৫:৬৩)

অতঃপর বিচার দিবসে এ সকল আলেমের অনুসরন করে যারা জাহান্নামী হবে তাদেকে সেদিন সত্য কথা প্রকাশ করে দিবেঃ আমরা তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করিয়াছিলাম, কারণ আমরা নিজেরাও ছিলাম বিভ্রান্ত।'(৩৭:৩২)

ফলে কিয়ামত দিবসে উহারা বহন করিবে উহাদের পাপভার পূর্ণ মাত্রায় এবং পাপভার তাহাদেরও যাহাদেরকে উহারা অজ্ঞতাহেতু বিভ্রান্ত করিয়াছে। দেখ, উহারা যাহা বহন করিবে তাহা কত নিকৃষ্ট!(১৬:২৫)

মুসলমানদের সবচেয়ে হাস্যকর আচরণ হলো, তারা দাবী করে যে  কোর’আন-ই একমাত্র ধর্ম গ্রহন্থ যা বিশুদ্ধভাবে রক্ষিত আছে, এবং যা সরাসরি আল্লাহ’র পক্ষ থেকে সমগ্র মানব জাতির জন্য পথ নির্দেশনা রূপে এসেছে।  কিন্তু মানে হাদীস নামক মানব রচিত গ্রহন্থকে।

* মানুষের মধ্যে কেহ কেহ অজ্ঞতা বশতঃ আল্লাহ্‌র পথ হইতে বিচ্যুত করিবার জন্য অসার হাদীস গ্রহন করিয়া নেয় এবং আল্লাহ্-প্রদর্শিত পথ লইয়া ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে। উহাদেরই জন্য রহিয়াছে অবমাননাকর শাস্তি।(৩১:৬)

দ্বিতীয়ত কোর’আন দাবী করে এটি সমগ্র মানব জাতির জন্য পথ নির্দেশনা সম্বলিত গ্রন্থ। কিন্তু মুসলমানরা নিজেরা তো কোর’আন পড়েই না,এমনকি অন্যদের পড়তে দিতেও নারাজ। এমন কি আলেম সমাজও তা থেকে মানুষকে দূরে রাখতে চায় কারন তার পেশায় ভাটা পড়বে মনে করে।

তাই আল্লাহ বলেনঃ  সে বিতণ্ডা করে ঘাড় বাঁকাইয়া লোকদেরকে আল্লাহ্‌র পথ হইতে ভ্রষ্ট করিবার জন্য। তাহার জন্য লাঞ্ছনা আছে ইহলোকে এবং কিয়ামত দিবসে আমি তাহাকে আস্বাদ করাইব দহন-যন্ত্রণা। (২৩:৯)

* তাদের মধ্যে এমন আহম্মক লোক আছে যাদের মিথ্যা আশা ব্যতীত কেতাব সম্বন্ধে কোনোই জ্ঞান নেই, তারা শুধু অবাস্তব ধারণায় বিশ্বাসী। [২: ৭৮]

মানুষ আল্লাহর একমাত্র কিতাবকে রেখে আনুসাঙ্গিক মানব রচিত কিতাব,হাদীস থেকে শরীয়তে বিধান পালন করতে আগ্রহী। যা আল্লাহ বলেন নাই।

অথচ আল্লাহ কঠোর ভাবে সতর্ক করে দিয়ে বলেনঃ তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হইতে তোমাদের নিকট যাহা অবতীর্ণ করা হইয়াছে তোমরা তাহার অনুসরণ কর এবং তাঁহাকে ছাড়া অন্য কোন ওলী-আউলিয়ার অনুসরণ করিও না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ কর। (৭:৩)

মানুষের মধ্যে কতক অজ্ঞানতা বশত আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিতণ্ডা করে এবং অনুসরণ করে প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তানের।(২২:৩)

আরো স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য আল্লাহ বলেনঃ মানুষের মধ্যে কেহ কেহ আল্লাহ্ সম্বন্ধে বিতণ্ডা করে; তাহাদের না আছে জ্ঞান, না আছে পথনির্দেশ, না আছে কোন দীপ্তিমান কিতাব।(২২:৮)

অধিকাংশ ঈমান এনে এবাদত করছে ঠিকই কিন্তু উল্টো পথে চলে এবং এবাদত বন্দেগী করে  ভাবছে আমরা অনেক ভাল আমল করছি।  প্রকৃত সব পন্ডুসার। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেনঃ বল, ‘আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দিব কর্মে বিশেষ ক্ষতি গ্রস্তদের ?’ উহারাই তাহারা, ‘পার্থিব জীবনে যাহাদের প্রচেষ্টা পণ্ড হয়, যদিও তাহারা মনে করে যে, তাহারা সৎকর্মই করিতেছে,(১৮: ১০৩-১০৪)

কারন কি সে কথাও আল্লাহ জানিয়ে দিলেনঃ  তাদের অধিকাংশ আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে, কিন্তু তারা শির্ককারী। (১২:১০৬) কেহ শিয়া, কেহ সুন্নী,কেহ জামাত,কেহ পীরের এভাবে আল্লাহর একমাত্র দ্বীনকে খন্ড বিখন্ড করে নিয়েছে একমাত্র কোরান নিজ ভাষায় না পড়ার জন্য।

এ জন্য আল্লাহ বলেনঃ তারপর লোকেরা তাদের মাঝে তাদের দীনকে বহুভাগে বিভক্ত করেছে। প্রত্যেক দলই তাদের কাছে যা আছে তা নিয়ে উৎফুল্ল। (২৩:৫৩)

*যাহারা নিজেদের দীনে মতভেদ সৃষ্টি করিয়াছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হইয়াছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ লইয়া উৎফুল্ল।(৩০:৩২)

তাই আল্লাহ নবীকে জানিয়ে দিলেনঃ বলুন, যারা জানে এবং যারা জানে না; তারা কি সমান হতে পারে ? চিন্তা-ভাবনা কেবল তারাই করে, যারা বুদ্ধিমান।(৯:১০)

এ হলো প্রতিটি মানুষের বর্তমান ধর্ম পরিপালনের চিত্র। কোরানে উল্লেখিত বর্ণনা অনুযায়ী নিজেকেও একবার যাচাই করে দেখে নিন ,আপনি কেমন ধর্ম পপিালন করে চলছেন ? আল্লার মনোনিত ধর্ম না মোল্লার আবিস্কৃত ধর্ম  ?

Categories
My text

রোমান বা ইটালী বাসীর পুর্ব পরিচয়।

রোমান বা ইটালী বাসীর পুর্ব পরিচয়
——————————–
(সূরা রুম আয়াত ২)

রোমকরা ইসহাক নবীর বংশোদ্ভোত, তারকা পুজারী। এরা সাতটি তারকার উপসনা করত। উত্তর দিক হয়ে সালাত পরতো। এদের দ্বারাই দামেস্ক শহরের পত্তন হয়েছিল। ঈসা আঃ এর নবুয়্যতের পর তিনশত বছর পর্যন্ত রোমকরা তাদের পুর্ব মতবাদের উপর অটল ছিল। তাদের মধ্যে যে বাদশাহ হত তাকে সিজার      ( কাইসার) বলতো। তাদের যে বাদশাহ সর্বপ্রথম খৃস্টান ধর্ম গ্রহন করেন তার নাম কনস্টানটাইন ইবন কসতাস। বহু খৃস্টান পাদরী তার দরবারে হাজির হতো,তাদের মাঝে প্রায়সঃ ধর্ম নিয়ে তর্ক,মতানৈক্য হত। বাদশাহ তা সমাধানের জন্য ৩১৮ জন ধর্মীয় আলেমের সমন্বয়ে এক খানা কিতাব রচনা করেন —
যেখানে বাদশাহের আকীদহ ও মতাদর্শকে স্বীকৃতি দেয়া হয়। এই কিতাবকে আমানতে কুবরা বা সমঝোতা চুক্তি কিতাব বলা হত। এটিকে তাদের নিয়ম নীতির কিতাব বলে মানা হত এবং তাতে হারাম/হালালসহ অনেক কিছু বর্ননা করা হয়। তাদের আলেমরা মনের আনন্দে যা খুশী তাই লিখে তাতে যুক্ত করে এবং দ্বীনে মসীহকে তারা কম বেশী পরিবর্তন করে। ফলে আসল দ্বীন পরিবর্তিত, পরিবর্ধিত ও পরিকল্পিত হয়ে যায়। তারা পুর্বদিকে মুখ করে সালাত আদায় করা শুরু করে এবং শনিবারের পরিবর্তে রবিবারকে তারা বড়দিন ধার্য্য করে। তারা ক্রুসের উপাসনা শুরু করে। শুকরকে তারা হালাল করে নেয়। নতুন নতুন উৎসব তারা আবিস্কার করে।
যেমন ঈদ,ক্রুস,নৈশ ভোজের উৎসব,ইস্টার সান ডে ইত্যাদি ইত্যাদি। তারপর তাদের আলেমদের মর্যদার স্তর তারা নির্ধারন করে নিয়েছে এবং তাদের একজন বড় পাদরী হয়ে থাকে। তার অধীনে ছোট ছোট আলেমদের ক্রমিক পর্যায়ে স্তর বন্টন করে দেয়া হয়।
তারা রুহাবানিয়াত বা বৈরাগ্যের নতুন বিদআত আবষ্কার করে নেয়। তাদের জন্যই বাদশাহ বহু গীর্যা,মন্দির তৈরী করে দেয়। বাদশাহ একটি নতুন শহরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে, যে শহরের নামকরন করা হয় কনস্টানটিনোপল। সেখানে তার মা ও যীশুর নামে একটি পুণ্য সমাধী ( কামাকিমা) তৈরী করে দেয়। তারা সবাই বাদশাহর দীনের উপর ছিল। এ ভাবে একের পর এক সিজার (কাইসার) হয়ে আসছিল। সর্বশেষ সিজার ( কাইসার) হিরাক্লিয়াস হন। ইনিই ছিলেন সমস্ত বাদশাহদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা অধিক বুদ্ধিমান। তার রাজ্য বহুদুর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে পড়েছিল। তার প্রতিদ্বন্দিতায় পারস্য সম্রাট কিসরা উঠে পরে লাগে। কিসরা ছিল অগ্নি উপাসক। তার রাজ্য রোম সম্রাট সিজারের চেয়ে অনেক বড় ছিল। যুদ্ধের এক পর্যায়ে রোম সম্রাট সিজার অবরোদ্ধ হয়। কিসরা কনস্টনটিনোপল দখল করে সেখানের যুবকদের হত্যা ও নারীদের বন্দী করে। দির্ঘদিন অবরোধ চলা অবস্থায় রোম সম্রাট সিজার রোমকদের তার অনুপস্থিতে দায়িত্ব পালনের পরামর্শ দিয়ে ছোট্ট একটি সেনা বাহিনী সাথে নিয়ে যুদ্ধের দিক পরিবর্তন করে উল্টো দিকে কিসরার এলাকা পারস্যে গিয়ে পৌছেন। সেখানে তখন খুব কম সংখ্যক সৈন্যই অবস্থান করছিল, যেহেতু সবাই কিসরার সাথে যুদ্ধে চলে গিয়েছিল। রোম সম্রাট সিজার কিসরার রাজধানীর রক্ষীবাহীনিকে পরাজিত করে কিসরার সিংহাসন দখল করে নেন এবং তার ছেলেকে বন্দী করেন। তার ছেলের মাথা মুন্ডন করে গাধায় চড়িয়ে পরিবারের মহিলাদের অবমাননাকর অবস্থায় কিসরার কাছে পাঠিয়ে দিলেন। কিসরা পরিবারের সদস্যদের এমন অবমাননাকর অবস্থা দেখে ক্রোধে ফেটে পরেন এবং কঠিন আক্রমনের প্রস্তুতি নেন। রোম সম্রাট সিজার এটা জানতে পেরে কৌশল অবলম্বন করলেন। সিজার যাইহুন নদী অতিক্রম করে পথ পরিবর্তন করে কনস্টানটিনোপল রোম সম্রাজ্যে পৌঁছে গেলেন।।

যেদিন তিনি রাজধানীতে পৌঁছলেন সেই দিন খৃস্টানেরা আনন্দোৎসবে মেতে উঠল। কিসরা যখন এ খবর জানতে পারলো, সে বিষ্ময়কর ও হতাশ হয়ে পড়লো। তার না রোম বিজিত হলো – না পারস্য টিকে থাকল। রোমকরা জয়লাভ করল। পারস্যের নারী ও ধন সম্পদ তাদের অধিকারে এসে গেল। এ সব ঘটনা নয় বছরের মধ্যে সংঘটিত হলো। পরাজয়ের পর পুনরায় তারা বিজয় মাল্যে ভূষিত হলো।
একই সময়ে রোমানরা যেমন পারসিকদের পরাজিত করে ঠিক বদর প্রান্তে মুসলমানরা মক্কার পৌত্তলিকদের পরাজিত করে।।

Categories
My text

উম্মী

  • কুরআন বুঝতে হলে..

অন্যান্য সকল ভাষার মতো, আরবি ভাষা হল একটি জীবন্ত ভাষা , যা সময়ের সাথে সাথে বিকশিত এবং পরিবর্তিত হয়েছে। যদি কুরআন না থাকত, তাহলে আরবি ভাষাটি সম্ভবত আরামাইক, সিরিয়াক বা ল্যাটিন ভাষার মতো একইভাবে মারা যেত বা অদৃশ্য হয়ে যেত। মিশরীয় এবং অন্যান্য আরব দেশের আরবি উপভাষাগুলির সাথে কুরআনের অনন্য আরবির কোনো সম্পর্ক নেই। ফলে আমরা কুরআনের পরিভাষা বোঝার জন্য বাইরের উৎস ব্যবহার করতে পারি না। উদাহরণস্বরূপ, কোরানে সুন্নাহ শব্দের অর্থ আল্লাহর পদ্ধতি, শরিয়া বা পথ: “আল্লাহ নবীর জন্যে যা নির্ধারণ করেন, তাতে তাঁর কোন বাধা নেই পূর্ববর্তীদের ক্ষেত্রেও এটাই ছিল আল্লাহর সুন্নাত (سُنَّةَ)। আল্লাহর আদেশ নির্ধারিত, অবধারিত।”(৩৩:৩৮) , যেখানে সুন্নীরা একই শব্দটি ব্যবহার করে তাদের হাদিসগুলি বোঝাতে এবং তারা এই শব্দটিকে ভুলভাবে বর্ণনা করে।

কুরআনী পরিভাষা অনুযায়ী ‘উম্মি’ অর্থ বিধর্মী (যাদের তাওরাত বা ইঞ্জিলের জ্ঞান নেই) , সেখানে আব্বাসীয় যুগের আরবি এবং আজকের আরবীতে ‘উম্মি’ শব্দের অর্থ “নিরক্ষর”। কুরআনের শব্দ ‘হাদ’ মানে আল্লাহর আইন বা অধিকার, যেখানে সুন্নীরা শব্দটিকে “দণ্ড/শাস্তি” বোঝাতে তৈরি করেছে। এইভাবে পার্থিব, মানবসৃষ্ট ধর্মগুলি মেনে চলাদের ধর্মীয় প্রভাবের কারণে কুরআনে ব্যবহৃত একটি প্রদত্ত শব্দ কখনও কখনও নির্দিষ্ট যুগের মধ্যে আরবীতে বিভিন্ন অর্থ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। যেমন, কুরানের পরিভাষায় ‘ওলী/আউলিয়া’ নশ্বর মানুষ দেবতাদেরকে বোঝায় যাদেরকে মুশরিকরা আল্লাহর সাথে পূজা করত: “… যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে আউলিয়া (أَوْلِيَاءَ ) গ্রহণ করে রেখেছে এবং বলে যে, আমরা তাদের এবাদত এ জন্যেই করি যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়।..” (৩৯:৩)। তবুও, সুফিরা তাদের সাধু/শেখ/গুরুদের বোঝাতে ‘আওলিয়া’ শব্দটি ব্যবহার করে। আরো একটি বহুল প্রচলিত ও ব্যাবহৃত শব্দ ‘মাওলানা’ কুরআনি পরিভাষায় আল্লাহকেই বোঝায়। “.. তুমিই আমাদের প্রভু (مَوْلَانَا) ..।”(২:২৮৬)। তবুও , আমাদের হুজুররা মাওলানা খেতাব দিয়ে নিজদেরকে প্রভু আল্লাহর আসনে বসিয়েছে।

তাই কুরআনের পরিভাষা বোঝার জন্য আরবি ভাষার অভিধানের উপর নির্ভর করা যায় না। কুরআনের কোন আরবি শব্দের মানে বাক্যের প্রসঙ্গে এবং অন্য আয়াতে একই শব্দের ব্যাবহারের মাঝে খুঁজতে হবে।৬৮:৫২ আর এ কুরআন তো সৃষ্টিকুলের জন্য শুধুই উপদেশবাণী।

 

Categories
My text

ওয়াক্তিয়া সালাতঃ

ওয়াক্তিয়া সালাত বনাম কোরানের সালাতঃ

সুরা মরিয়ম, আয়াত ৫৯ এ আল্লাহ বলেন ” অতঃপর তাদের পরে প্রতিনিধি আসলো তারা সালাত বরবাদ করলো এবং লোভলালোসার অনুসরণ করলো, ফলে সত্তর গোমরাহিতে নিক্ষিপ্ত হলো”

এখানে বলা হচ্ছে তাদের পরে প্রতিনিধি আসলো, প্রশ্ন হচ্ছে কাদের পরে প্রতিনিধি আসলো?  ৫৮ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন ” এরা হচ্ছে তাঁরা যাদের উপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন নবীদের মাঝে যারা আদমের বংশধর, নুহুর সাথে যাদের নৌকায় আরোহন করা হয়েছিল, ইব্রাহিম এবং ইসমাইলের বংশধর এবং যাদের হেদায়েত করেছি এবং মনোনীত করেছি,”

তাঁরা কি করতো ঐ একই আয়াতে শেষাংশে বলা হচ্ছে ” যখন তাঁদের  কাছে দয়াময়ের আয়াত পাঠ করা হয় তখন তাঁরা ক্রন্দনরত হয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে”।

৬০ নং আয়াতে বলা হচ্ছে ” তারা ব্যতিত এবং যারা ফিরে এসেছে এবং  ইমান এনেছেন এবং ভালো কাজ করেছে অতঃপর তাদের আমি জান্নাতে দাখিল করবো বিন্দু মাত্র জুলম করা হবে না”।এ আয়াতে বুঝা যায় যারা ফিরে আসবে।  কোথায় ফিরে আসবে – যখন আয়াত পাঠ শুনবে তখন ক্রন্দনরত অবস্থায় সেজদায় লুটিয়ে পড়ায়।

এখানে লক্ষ্যনীয়, আয়াত পাঠ শ্রবণ করা/ পাঠ করা  এবং সেজদায় লুটিয়ে পড়া- এদূটি আনুষ্ঠানিকতা প্রচলিত সালাতে বিদ্যমান। কিন্তু কোন সালাতিকে ক্রন্দন রত দেখা যায় না। ক্রন্দনরত বা উল্লসিত  মানুষ তখনই হয় যখন বিষয়টি বুঝতে পারে এবং অনুধাবন করতে পারে । তাহলে বুঝা যাচ্ছে শ্রুত/ পঠিত আয়াতের অর্থ বুঝা এবং অনুধাবন করা জরুরী। তবে কি এজন্যই বলা হয়েছে ” তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হবে না, যতক্ষণ না যা বলছ তা বুঝতে পারো। এখান থেক একটি প্রাথমিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে আমরা যে প্রচলিত নামাজ পড়ি তা আমরা বুঝি না, অন্যদিকে আল্লাহ যে সালাতের কথা বলছেন তাতে পঠিতব্য বিষয় বুঝতে পারা জরুরী।তাই তো সুরা নেসার ৪৩ নং আয়াতে আল্লাহ বলেনঃ “হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হইও না, যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার,(৪:৪৩)

আবার ২৯ঃ৪৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন ” তোমার প্রতি যে গ্রন্থ অহী করা হয়েছে তা পাঠ কর এবং সালাত কায়েম করো। নিশ্চয় সালাত  অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে।’এই আয়াত যখন পড়ি তখন বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে আল্লাহ কি আমাদের এই নামাজ পড়তে বলেছেন? এই প্রচলিত  নামাজ আজীবন পড়লেও এই আয়াতের সত্যতা প্রমাণিত হবে না। তাহলে এই নামাজ কি সালাত?

অন্যদিকে কোরআন আত্মস্থ করা মানুষ জানবে আল্লাহ কি করতে বলেছেন এবং কি কারতে নিষেধ করছেন। সে অনুযায়ী কর্ম করলে খারাপ এবং অশ্লীল কাজ সংঘটিত হবে না। তাহলে কি কোরআন জানা এবং পরিপালন করাই কি সালাত? আবার যখন অন্য  আয়াতে বলে ” সালাত কায়েম করো দিনের দু’প্রান্তে এবং রাতের প্রথম প্রহরে” তাহলে এই দু’প্রান্তে এবং রাতের প্রথম প্রহরে যে সালাত কয়েম করতে বলছে সেটা কি সালাত?  তবে কি দিনের দু’প্রান্তে এবং রাতের প্রথম প্রহরে কোরআনের বিধি বিধান নিয়ে আলোচনা করা এবং সেগুলি পরিপালন করার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করাই কি সালাত?

অপর আয়াত ৭০ নং সুরা মাআরিজ ২২, ২৩ বলা হচ্ছে ২২ ” ইল্লাল মুসাল্লিম” অর্থ – সালাতিরা ব্যাতিত। কোন সে সালাতি?” আল্লাজিনা হুম আলা সলাতিহিম দায়েমুন” অর্থ – এবং যারা তাদের সালাতে সর্বক্ষন নিয়োজিত থাকে। কিন্তু সর্বক্ষন তো কোরআন পড়ায় নিয়োজিত থাকা সম্ভব নয়? কিন্তু সকল কর্মে আল্লাহর বিধি বিধান মেনে চলা সম্ভব। আর সেসব বিধি বিধান মেনে চল্লে খারাপ এবং অশ্লীল কাজ থেকে সয়ংক্রিয় ভাবে বাধাপ্রাপ্ত হবে। তাহলে কি আল্লাহর দেয়া বিধি বিধান মেনে চলাই সালাত কায়েম করা?

আবার এই আয়াতে বলছে সর্বক্ষণ সালাতে নিয়জিত থাকতে কিন্তু উপরের আয়াতে বলা হচ্ছে – সালাত কায়েম করো দিনের দু’প্রান্তে এবং রাতের প্রথম প্রহরে। তাহলে কি এই দূই সালাত দুরকম? অথবা সালাত কায়েম করা এবং সালাতে নিয়জিত থাকা ভিন্ন জিনিস?

সুরা ময়েদা (৫/৬) বলা হচ্ছে “হে মুমিনগন যখন তোমরা সালাতে দাড়াবে তখন তোমাদের মুখ, হাত…ধৌত করবে”।এই আয়াতে বলা হচ্ছে ‘যখন’ অর্থাৎ যেক্ষনে বা যে মুহূর্তে বা যে সময় সালাতে দাড়বে। তাহলে বুঝা যাচ্ছে সার্বক্ষণিক সালাতের বাহিরে ক্ষনে ক্ষনে সালাত  আছে। কখন সেই ক্ষন? উত্তর বলা হয়েছে ১৭/৭৮ আয়াতে, ২৪/৫৮, ৩০/১৭,১৮, ২/২৩৮। এছাড়াও ৪/১০৩ আয়াতে বলা হয়েছে ” নিশ্চয় সালাত মুমিনদের জন্য ওয়াক্তের সাথে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। কোরআনের এসব বর্ণনা থেকে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, সার্বক্ষণিক সালাত বা দায়েমী সালাতের সাথে ওক্তিয় সালাতও আছে এবং সে সালাতও করা  বধ্যতা মূলক।

২২ নং সুরা হাজ্জ ৭৭ আয়াত ” হে ইমানদারগন রুকু করো, সেজদা করো এবং তোমাদের রবের দাসত্ব করো এবং ভালো কাজ করো হয়তো তোমারা সফলকাম হবে”।

এই আয়াত বিশ্লেষণ করে দেখা যায় – ইমানদারদের সম্মোধন করা হয়েছে। ইমানদার কারা যারা কোরআন সহ অন্যন্য নির্দেশিত বিষয়ে ইমান এনেছেন। কোরআনে ইমান আনার অর্থ কোরআনে নির্দেশিত বিষয়ে সশ্রদ্ধ চিত্তে মেনে নয়া। আয়াতের শেষ অংশে বলছে ভালো কাজ করো। তো ইমান আনলে এবং ভালো কাজ করলে তারা জান্নাত পাবে এ কথা বহু আয়াতে উল্লেখ আছে। তাহলে এই আয়াতের মাঝখানে রুকু করো, সেজদা করো কেন বলা হয়েছে? তাহলে কি এই আয়াত থেকে এমন সিদ্ধান্তে আসা যায় যে, ভালো কাজের সাথে রুকু সেজদা করার নির্দেশ রয়েছ ইমানদারের উপর।

অনেকে বলেন রুকু সেজদা কেমনে করবেন তা তো কোরআনে নাই, তার মানে এই রুকু সেজদা দিয়ে আমরা যে ওক্তিয় সালাতে রুকু সেজদা করি সেটা বুঝানো হয়েছে কি? উত্তর পাওয়া যায় সুরা হজ্জের ২৬ আয়াতে ” যখন আমি নির্ধারণ করে দিলাম ইব্রাহিমের জন্য ঘরের অবস্থান, যেন আমার সাথে কোন কিছুর শরীক করো না এবং আমার ঘর পবিত্র রাখ পরিভ্রমণ কারীদের জন্য, দাড়ানোদের জন্য এবং রুকু সেজদা করিদের জন্য”। এ আয়াতে দেখা যায় রুকু সেজদা করার নির্দেশ আছে,  এবং তা ইব্রাহিম আঃ এর সময় এবং তার আগে পরের নবীদের থেকে ধারা বাহিক ভাবে চলে আসছে। সেই ভাবে তখন থেকে আজ পর্যন্ত সব ইমানদারের জানা আছে রুকু সেজদা কি বা কেমন। এই জন্য আবার নতুন করে কোরআনে বিশদ প্রদর্শনীর প্রয়োজন পড়ে না। বিশ্বাস করতে হবে কোরআন পূর্বের আসমানী কিতাবের ধারা বাহিকতায় সর্বশেষ নাজিল কৃত আসমানী কিতাব। ছোট্ট একটা উদাহরণ দেয়া যেতে পারে, যেমন আমরা ক্লাস ফাইভে যা অধ্যায়ন করি ক্লাস সিক্সে তা হুবহু পড়ি না, তবে ক্লাস ফাইভে এর জ্ঞান নিয়ে ক্লাস সিক্সে উচ্চতর জ্ঞানের বই পড়ি। আসমানী কিতাবের ক্ষেত্রে বিষয়টি তেমনই। কোরআন স্টেজে এসে আমাদের যতটুকু জানানো প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই নাজিল করা হয়েছ।

৩০ সুরা রোম আয়াত ১৭,১৮,- আল্লাহ বলেন ” তোমরা আল্লাহ্‌র পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর সন্ধ্যায় ও প্রভাতে –

“আসমান ও জমিনের সকল প্রসংশা তার জন্য এবং যখন তোমরা এশা এবং জোহর করো”।

এদুটো আয়াত থেকে সুস্পষ্ট যে দায়েমী সালাতে সর্বক্ষণ আল্লাহর বিধি বিধান মেনে চলার পাশাপাশি সকাল, সন্ধ্যা, জোহর এবং রাত্রে বিশেষ ভাবে আল্লাহর  পবিত্রতা এবং প্রসংশা করার নির্দেশ রয়েছ। এই পবিত্রতা এবং প্রসংশা করার সশরীরে প্রদর্শন হচ্ছে ওক্তিয় সালাত।

২ সুরা বাকারার ১৪৩ এবং ১৪৪ এ কিবলার কথা উল্লেখ আছে। ৪৪ আয়াত আল্লাহ বলেন ” আকাশের দিকে তোমার মুখতোলা আমি দেখেছি, অতঃপর তোমাকে এমন এক কিবলার দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছে যা তুমি সন্তুষ্ট হও, অতএব তুমি সম্মানিত মসজিদের দিকে মুখ ফিরাবে, এবং যেখানেই থাকো সেটির দিকে মুখ ফিরাবে….. “

এ আয়াতে দেখা যায় শুধু মাত্র ওক্তিয় সালাতের সময় মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফেরায়, কিন্তু দায়েমী সালাতে সব সময় মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরায়ে থাকা অসম্ভব, আবার কোরআন তেলায়তে তা করা হয় না, তাহলে দায়েমী সালাত এবং কোরআন তেলওয়াতের বাহিরে একটি কার্যক্রম আছে যখন মসজিদুল হারামে দিকে মুখ ফিরানো বাধ্যতা মূলক। তাহলে সে কার্যক্রমই কি ওক্তিয় সালাত?</p>

Categories
My text

নবী প্রচলিত সালাত পড়েন নাই

নবী মুহাম্মদ সা: আমাদের এ প্রচলিত সালাত কখনোই পড়েন নাই। পড়ার প্রশ্নই উঠে না। কারন নবীকে সালাত পড়ার  জন্য প্রেরণ করা হয় নি বরং সালাত শেখানোর জন্য প্রেরন করা হয়েছ।

সালাত পড়ার মত কোন জিনিস নয় বরং সালাত কায়েম করার জিনিস। সালাত একটি দ্বীনি ব্যবস্থা। জীবন যাপন পদ্ধতি। অথচ কোরান বিমুখ অজ্ঞরা নবী সাঃ কে  রোগাক্রান্ত অবস্থাতেও কাঁধে ভর দিয়ে নিয়ে এসে সালাতের ইমামতি করার  হাদীস রচনা করেছে। কতটা গর্হিত কাজ করেছে এ মুর্খের দল কোরানের আলোকে তা দেখে নেই।

প্রচলিত সালাতে সুরা ফাতিহা পড়া হয়। সুরা ফাতেহায় বলা হয়ে থাকে আপনি আমাকে সরল সঠিক পথ দেখান। আমরা সরল পথে নেই তাই আমরা বলে থাকি।  প্রশ্ন হল নবী যদি বলেন হে আল্লাহ আমাকে সরল পথ দেখান। তাহলে বিষয়টা কি দ্বারায়? তিনি কি সরল সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত নন?  (নাউযুবিল্লাহ)। এবার দেখি এ বিষয়ে কোরান কি বলে?

কোরআনে, সুরা হজ্জে আল্লাহ বলেনঃ
১) আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য নির্ধারিত করিয়া দিয়াছি ‘ইবাদত পদ্ধতি – যাহা উহারা অনুসরণ করে। সুতরাং উহারা যেন তোমার সঙ্গে বিতর্ক না করে এই ব্যাপারে। তুমি উহাদেরকে তোমার প্রতিপালকের দিকে আহ্‌বান কর, তুমি তো সরল পথেই প্রতিষ্ঠিত। (২২:৬৭)

সুরা ইয়াসিনে আল্লাহ ঘোষনা দিয়ে জানালেন রাসুলকেঃ
আপনি  অবশ্যই রাসূলদের অন্তর্ভুক্ত; আপনি সরল পথে প্রতিষ্ঠিত। (৩৬:৪)

কোরানের সূরা যুখরফে আল্লাহ বলেনঃ
২) সুতরাং তোমার প্রতি যাহা ওহী করা হইয়াছে তাহা দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর। তুমি সরল পথেই রহিয়াছ। (৪৩:৪৩)

কোরানের সুরা ফাতহায় আল্লাহ বলেনঃ
৩) তিনিই তাঁহার রাসূলকে পথনির্দেশ ও সত্য দীনসহ প্রেরণ করিয়াছেন, অপর সমস্ত দীনের উপর ইহাকে জয়যুক্ত করিবার জন্য। আর সাক্ষী হিসাবে আল্লাহ্‌ই যথেষ্ট।(৪৮:২৮)

এ আঅত গুলি থেকে সুস্পষ্ট ভাবে জানা যায় রাসুল সরল পথে প্রতিষ্ঠিত এবং ওহীর মাধ্যমে রাসুল সাঃ কে তা অবহিতও করা হয়েছে। ওহী যোগে আল্লাহ  নিশ্চিত করার পরও কি রাসুল সরল পথে পরিচালিত করার জন্য কি প্রার্থণা করবেন?  এটা কি কোন সুস্থ মস্তিস্ক  বিশ্বাস করবে?
সরল পথে প্রতিষ্ঠিত বলেই তো তার প্রতি কোরান নাযিল করা হয়েছে। নচেৎ তার উপর কোরান নাযিলই  হত না।

আরেকটু লক্ষ্য করুন। আল্লাহ বলছেন অপবিত্র অবস্থায় আমার কোরান স্পর্শ করা যায় না। এখানে উপদেশ বা অনুরোধ করে বলেন নাই যে তোমরা অপবিত্র অবস্থায় কোরান স্পর্শ করো না। বলেছেন অপবিত্র অবস্থায় কোরান স্পর্শ করা যায় না। অর্থাৎ এই কাগজের কোরান স্পর্শ করার কথা বলা হয় নি।  বলা হয়েছে অপবিত্র অবস্থায়  অর্থাৎ ( সরলপথ প্রাপ্ত না হয়ে) কোরান কেউ ধারন করতে চাইলেও পারবে না সেটাই বুঝানো হয়েছে।

এই সরল পথে প্রতিষ্ঠিত রাসুল সাঃ কে যদি কেউ  দাঁড় করিয়ে বলাতে চায় যে  আমাকে সরল পথে পরিচালিত করুন।তাহলে ব্যাপারটা কত হাস্যকর ও লজ্জাস্কর ?  কতটা ভয়ংকর?  নবীর নামে অপবাদ ? আল্লাহর কোরানের আয়াতের অপব্যাখ্যা বলে বিবেচ্য।

যেখানে আল্লাহ স্বয়ং রাসুলকে নির্দেশ করে বলেছেন আপনি রাসুলদের অন্তর্গত, আপনি সরল পথে প্রতিষ্ঠিত, আপনাকে কিতাব দেওয়া হল,  আপনি তা প্রচার করুন।

আর সেই রাসুলকে মুর্খ পন্ডিতরা নামাজ পড়িয়ে ছাড়ছে !সরল পথ প্রাপ্তীর জন্য প্রার্থণা করাতে বাধ্য করাচ্ছে !! কতবড় অপবাদ রাসুলের শানে?

উপসংহারে বলতে চাইঃ
১) আগে বুঝতে হবে নামাজ কি? এবং কেন?

২) নবীকে নামাজ পড়ার জন্য প্রেরণ করা হয়নি। নামাজ শিখানোর জন্য প্রেরিত হয়েছেন।

৩) নামাজ পড়ার বিষয় নয়।  নামাজ ধারন করার বিষয়, নিজের মধ্যে কায়েম করার বিষয়।

৪) নামজ হচ্ছে দ্বীন বা আল্লাহর স্বভাব। আল্লাহর নীতি।সেই নীতির যে স্বভাব সেই স্বভাব ধারন করা হচ্ছে সালাত। সেই সালাতে আল্লাহ সর্বদা দন্ডায়মান থাকতে বলেছেন।

সূরা মাআরিজ আয়াত নং ২৩ এ আল্লাহ বলেন: যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত,
الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ  دَآٮِٕمُوْنَۙ

এই ভাবে যুগে যুগে কোরানের আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে আসছে যারা তাদেরকে কঠিন আজাবের সম্মুখিন হতে হবে একদিন।

যদি তোমরা তোমাদেরই মত একজন মানুষের আনুগত্য কর তবে তোমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হইবে;(২৩;৩৪)

Categories
My text

নারীর পর্দা

নারীদের প্রচলিত হিজাব বা পর্দা প্রথার প্রচলন ভাবিয়ে তুলে —–

————–****—————–

“ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে/সতীত্ব বজায় রাখে। তারা যেন, যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া, তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে”। তারা যেন তাদের বুকগুলি তাদের ‘খিমার’ দিয়ে ঢেকে রাখে। [ ২৪ঃ৩১] They shall cover their chests with their ‘khimar’.

২৪;৩১ নং আয়াতে উল্লেখিত ‘খিমার’ শব্দের প্রকৃত অর্থ কি?

বেশীরভাগ অনুবাদক হাদিসের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এই আয়াতে উল্লেখিত ‘খিমার’ শব্দের অনুবাদ করেছেন ‘ঘোমটা’ যার ফলে তারা মহিলদের মাথা ঢাকতে বা ঘোমটা দিতে বলেন। কেউ কেউ তো আবার মহিলাদের মুখও ঢাকতে বলেন!

কিন্তু সত্য হল এই যে ‘খিমার’ কথার সরল অর্থ হল ‘আবরণ’। আরবিতে যে কোন আবরণকে ‘খিমার’ বলা হয়। যেমন;- পর্দা একটি খিমার, টেবিল ক্লথ যা একটি টেবিলের উপরে পাতা থাকে, অর্থাৎ এটা টেবিলকে আচ্ছাদিত করে, এটি হল একটি খিমার, কম্বলকে একটি খিমার বলা যেতে পারে এবং আরও অনেক আছে।

একইভাবে, বিভিন্ন রকম পোশাক যেমন ব্লাউজ, কোর্ট, শাল, চাদর, শার্ট, বা অন্য যে কোন পোশাককে খিমার বলা যেতে পারে, কারণ এটি শরীরকে ঢেকে রাখে। খামার এবং খিমার একই রুটের শব্দ। খামার শব্দটি মাদকদ্রব্যের জন্য কুরআনে ব্যবহৃত হয়। যেহেতু মাদক দ্রব্য সেবনকারীর মনকে ইহা(মাদক দ্রব্য) আচ্ছাদিত করে রাখে, সেইজন্য খামার শব্দের ব্যবহার হয়।

আল্লাহ মহিলাদেরকে তাদের খিমার (ঢাকনা / পোশাক) ব্যবহার করতে বলছেন, যা একটি পোশাক, কোট, শাল, ব্লাউজ, স্ক্কারফ ইত্যাদি ব্যবহার করে তাদের বক্ষকে ঢেকে রাখতে হবে। তাদের মাথা, মাথার চুল বা মুখ ঢাকার কথা এখানে বলা হয় নি। যদি আল্লাহ্‌ চাইতেন যে মহিলারা যেন তাদের মাথা, মাথার চুল, মুখ ইত্যাদি ঢেকে রাখে, তাহলে তিনি খুব সহজেই তা বলতে পারতেন, কেননা আল্লাহ্‌র stock of word- এর কোন কমতি নেই।

বাংলায় ‘বক্ষ’, তার আরবি শব্দ হল ‘jayb’, যা কিনা এই আয়াতে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু ‘মাথা কিংবা মাথার চুল’ অর্থাৎ ‘ras(মাথা), shaar(চুল)’ এই সমস্ত আরবি শব্দ এখানে ব্যবহৃত হয় নি।

কাজেই, এই আয়াতের আদেশ একদম পরিস্কার অর্থাৎ ‘বক্ষকে ঢাকতে হবে’ এবং শুধুমাত্র বক্ষকে ঢাকার নির্দেশ এটাও প্রমাণ করে যে বক্ষের উপরের অংশ(গলা, মুখ, মাথা, চুল) ইত্যাদিকে ঢাকার কোন বাধ্যবাধকতা নেই।

এই ২৪;৩১ নং আয়াতে উল্লেখিত “যা সাধারণতঃ প্রকাশমান,” বলতে কি বোঝায়?

২৪;৩১ নং আয়াতে ‘জিনাত’ শব্দের অর্থ বোঝায় ‘সজ্জা বা ভূষণ’ যা মহিলদের সৌন্দর্য বাড়ায়। এটা সত্য যে মহিলাদের মাথার চুল তাদের সৌন্দর্য বাড়ায়। অন্যান্য অংশও আছে যেমন;- মহিলাদের চোখ, অধর(ঠোঁট) ইত্যাদি ইত্যাদি। কাজেই তাহলে মহিলারা কি তাদের মুখসহ সমস্ত শরীর ঢেকে রাখবে?

২৪;৩১ আয়াতে আল্লাহ্‌ কিন্তু তা বলেন নি। আল্লাহ্‌ বলেছেন যে মহিলাদের ‘সাধারণত প্রকাশমান সৌন্দর্য’ যেটা তারা সেটা দেখাতে পারে।

বিশেষ একটি জামাত এখন নারীর এ পর্দাকে আরো জটিল করে আল্লাহর বিধান পরিত্যাগ করে নিজেদের মতাদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করে বসে আছেন।

নারীর পর্দা বিষয়ক এ আলোচনায় যদি কোন দ্বীমত পোষন হয় তবে দলিল সহ অবহিত করার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
*********

en_USEnglish
Powered by TranslatePress