কেমন আছে পাকিস্তানে বাঙালীরা
পাকিস্তানে প্রায় ত্রিশ লাখ বাঙালীর বসবাস। তার মধ্যে রাজধানী করচীতেই প্রায় ২০ লাখ। যাদের প্রতিনিয়তই সেখানকার অধিবাসীরা লাঞ্চনা গঞ্জনা দিয়ে থাকে। তাদের বিশ্বাস ঘাতক, জালীম বলেও শুনতে হয় অপমান।
বৃটিশ আমলে বাঙালীরা প্রথম করাচীতে পা রাখে। উরাঙ্গী টাউন, ইব্রাহীম কোলনী, হায়দরী কোলনী, বিলাল কোলনী, জিয়াউল হক কোলনী, মুসা কলোনী, চিটাগাং কোলনী এবং বাঙালী পাড়ায় বাঙালী বসতি সবচেয়ে বেশী।
১৯৪৭ সনে ভারত বিভাগের পর পাকিস্তানে চলে যাওয়ার পর বাঙালীদের কিছুটা আপন করে নিয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানীরা। ভারত বিদ্বেষীর জন্য। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কপাল পুড়ে পাকিস্তানে বসবাসরত বাঙালীদের। সেই থেকে তারা হয়ে উঠে পাকিস্তানী মীরজাফর। ঘৃণা, বৈষম্য-নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে পাকিস্তানকে আপন ভেবে সেখানে পাড়ি জমানো বাঙালীরা।
বংশ পরম্পরায় পাকিস্তানে থেকেও এখনো কপালে জোটেনি তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র। কাজ করতে হচ্ছে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে। সেটিও নিতে হচ্ছে ঘুষ দিয়ে। জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় মিলে না শিক্ষা। কেনা যায় না জমি বা বাড়ী।
নোংরা ঘিঞ্চি বস্তিতে থাকতে হচ্ছে বাঙলা ভাষা ভাসীদের। দিনের প্রায় ২০ ঘন্টা সেখানে থাকে না বিদ্যুৎ। দিনে একবার খাবার পানির যোগান আসে। নির্দিষ্ট এলাকার বাহিরে গেলে পুলিশী ঝামেলায় পড়তে হয়। কেউ কেউ গোপনে কাজ করলেও পুলিশের হাতে ধরা পড়লে থাকতে হয় কারাগারে।
শিক্ষা বঞ্চিত হওয়ায় শিশুরা ছোট বেলা থেকেই বিভিন্ন ছোটখাট কাজে নেমে পড়ে। নাম মাত্র মজুরী নিয়ে তাদের কাজ করতে হয়। অনেকে জীবনের ঝুকি নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। মাছ ব্যবসা মুলত বাঙালীদের হাতেই সীমাবদ্ধ। সে জন্য তারা চায় না বাঙালীরা পাকিস্তান থেকে চলে যাক। কিন্তু বাঙালীদের নাগরিকত্বা বা মান উনয়ন নিয়ে তাদের কোন পরিকল্পনা নেই।
এভাবেই যুগের পর যুগ শোসিত নিপীরিত হয়ে বসবাস করছে পাকিস্তানে বসবাসরত বাঙালী জনগোষ্ঠিরা মানবতর জীবন যাপন করছে। অথচ তাদের পাশে দাড়ানোর মত কেউ নেই।
বাঙালীদের পাকিস্তান প্রীতি আমায় ভাবায়।