অখন্ড বাংলা
বৃটিশ শাসন আমলে কলকাতা ছিল ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের রাজধানী। এক কথায় বৃটিস সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল কলকাতা। কলকাতা থেকে বৃটিশরা ঢাকা টু দিল্লী শাসন করতো। বৃটিশ শাসন আমলে কলকাতা ছিল সবচেয়ে ধনী ও সমৃদ্ধ একটি শহর এবং শিক্ষা, অর্থনীতির কেন্দ্র বিন্দু।
এই কলকাতা শহরটি একসময় অখন্ড বাংলার অংশ ছিল। ভারত বর্ষ ভাগের সময় পাকিস্তানী রাজনীতি বিদদের ষড়যন্ত্রের রোশানলে পড়ে কলকাতা শহরটিকে বাংলাদেশের মুল ভুখন্ড হতে হারাতে হয়।
১৮৫৪ সালে বৃটিশরা ভারত বর্ষে প্রথম রেল যোগাযোগ স্থাপন করে। ১৮৯৫ সালে বৃটিশদের অবদানে প্রথম বৈদ্যতিক বাতি জ্বলে উঠে।
এই কলকাতা যদি বাংলাদেশের অংশ হত তবে বাংলাদেশ কতটা উন্নত হত ভাবা যায় না। ভারত বিভাজনের পর এই কলকাতা যতটা পিছিয়েছে বাংলাদেশ ততটা এগুয়েছে। বৃটিশদের কাছ থেকে ভারত পাকিস্তান ভাগ হওয়ার সময় পাকিস্তানী রাজনৈতিক ব্যক্তি জিন্নহ সাহেবের ষড়যন্ত্রের স্বীকারে কলকাতা আজ বাংলেদশ হতে বিচ্ছিন্ন। কি ছিল সে ষড়যন্ত্রের পেছনে রহস্য ?
জিন্নাহ সাহেব ভাবলেন কলকাতা যদি পুর্ব পাকিস্তানের সাথে থাকে তবে পুরো পশ্চিম পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রন চলে যাবে পুর্ব পাকিস্তানের হাতে। কারন কলকাতা ও পুর্ব পাকিস্তান এর জনসংখ্যা মিলে হত পশ্চিম পাকিস্তানের জনসংখ্যার তিনগুন। গনতন্ত্রের তোপের মুখে পশ্চিম পাকিস্তান তাহলে বরাবর পরাজিত হবে। দূরদর্শী জিন্নাহ তখনি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন এ বিশাল জনসংখার কাছে পশ্চিম পাকস্তান টিকে থাকতে পারবে না। পুর্ব পাকিস্তানের বাঙালীরাই সব সময় প্রধান মন্ত্রী হবে আর কলকাতা হবে তাদের রাজধানী। তাই তিনি কৌশল করেই কলকাতা কে পুর্ব পাকিস্তান হতে আলাদা করে ভারতের সাথে যুক্ত করে দেন।
মোহম্মদ আলী জিন্নাহ জহরুল লাল নেহেরুর সাথে দেখা করে কলকাতার পরিবর্তে পান্জাব কে পাকিস্তানের অংশ ভুক্ত করতে প্রস্তাব করে। ভারতের কংগ্রেস নেতারা জিন্নার এ প্রস্তাবে সঙ্গে সঙ্গে রাজী হয়ে যায়। কারন কলকাতা শিক্ষা সাংস্কৃতি রাস্তা ঘাট প্রশাসন ভবন সবকিছুতে ছিল সমৃদ্ধ। তাই জিন্নাহর কাছ থেকে এ লোভনীয় প্রস্তাব পাওয়ার সাথে সাথে কংগ্রেস নেতারা তা লুফে নিতে বিন্দু মাত্র দেরী করেনি। জিন্নাহ নিজ সার্থ চরিতার্থ করতে সোনার কলকাতার বিনীময়ে পাঞ্জাবকে নিয়ে তুষ্ট রইল।
কংগ্রেস পাঞ্জাবের কিছু অংশ পশ্চিম পাকিস্তানকে ছেড়ে দেয়ার বিনীময়ে কলকাতা শহরটিকে বাংলার ভুখন্ড থেকে চিরদিনের জন্য ছিনিয়ে নেয়। পুর্ব বাংলার নেতারা কলকাতার বিনীময়ে পশ্চিম পাকিস্তানের ভুমি বাড়ানোর প্রস্তাকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখান করে। তৎকালীন পুর্ব বাংলার নেতা হোসেন সোরওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ,কে ফজলুল হক
কলকাতাকে পুর্ব বাংলা হতে আলাদা করার ঘোর বিরোধিতা করেন।
এ সময় মাওলানা ভাসানী জোর দাবী তুলে আন্দোলন করেন পশ্চিম বংগ আমার, আসাম আমার, ত্রিপুরাও আমার। এ গুলো ভারতের কবল থেকে ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মানচিত্র পুর্ণ হতে পারে না।
পশ্চিম বাংলার মূখ্য মন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীও চায় পশ্চিম বাংলাদেশ নাম স্ঘাপিত হোক। দিল্লী থেকে দিনদিন পশ্চিম বাংলার দূরত্ব বাড়ছে আর ঢাকা মুখী সম্প্রীতি বাড়ছে। এটি পশ্চিম বাংলার সংবাদ গুলোতেও প্রকাশ পাচ্ছে। তাই স্বৈরশাসন ভারত প্রীতির অবসানে অভ্যন্তরে দাঙা সৃষ্টি না করে বৃহত্তর স্বার্থে মনোনিবেশ জরুরী।
পাকিস্তান আমাদের পুর্ব পুরুষের আমল হতেই স্বার্থপর ও চির শত্রু। কোনদিন আপন ছিল না।
যতটুকু ভালবাসা দেখায় তা ভারতের সাথে প্রতিশোধের আগুন নেভানো ও নিজ সার্থ হাসিলের জন্য।
মাওলানা ভাসানীর প্রাণের আকুতি তার সাগরেত শেখ মুজিবুরও পুরন করার সামান্য চেষ্টাও করেন নাই। নিজ ক্ষমতায় টিকে থাকা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ভারতের তাবেদারীই করে গেছেন বলে আমি মনে করি।