সিজদা মানে মাটিতে মাথা লাগানো নয়। বরং তার মানে যথাযথ হুকুম বা বিধান মেনে চলে। (22:18)
তুমি কি দেখনা যে, আল্লাহকে সাজদাহ করে যা কিছু আছে আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে – সূর্য, চাঁদ, নক্ষত্রমন্ডলী, পবর্তরাজি, বৃক্ষলতা, জীব-জন্তু এবং সাজদাহ করে মানুষের মধ্যে অনেকে? (২২:১৮)
কিন্তু আমরা ত কোনো দিন দেখিনি যে গাছপালা, জীবজন্তু ইত্যাদি মাথা লাগায়া সিজদা দিতে! তাহলে কি কুরআন ভুল? না আমাদের বুঝতে ও অনুবাদ করতে ভুল হয়েছে?
আমরা দেখিনি কোনো দিন গাছপালা জীবজন্তু ইত্যাদি কে আল্লাহ যে কর্তব্য বা বিধান দিয়েছে তা হতে সরে গেছে বরং তাদের বিধান তারা যথার্থ পালন করছে। তাহলে এ আয়াতের অনুবাদ হবে –
তুমি কি দেখনা যে, আল্লাহর বিধান বা হুকুম মেনে চলে যা কিছু আছে আকাশমন্ডলীতে ও পৃথিবীতে – সূর্য, চাঁদ, নক্ষত্রমন্ডলী, পবর্তরাজি, বৃক্ষলতা, জীব-জন্তু এবং বিধান মান্য করে মানুষের মধ্যে অনেকে? (৮৪:২১)
وَإِذَا قُرِئَ عَلَيْهِمُ ٱلْقُرْءَانُ لَا يَسْجُدُونَ
যখন তাদের কাছে কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তারা সেজদা করে না। (৮৪:২১)
এর সঠিক অনুবাদ।
যখন তাদের কাছে কোরআন আবৃত্তি করা হয়, তখন তারা (কুরআনের বিধান) অনুসরণ করে না।
আল্লাহকেই সাজদাহ করে যা কিছু সৃষ্টি রয়েছে আকাশ মন্ডলীতে এবং পৃথিবীতে এবং মালাইকাগণও; তারা অহংকার করেনা। (১৬:৪৯)
আয়াতের সঠিক অনুবাদ,
আল্লাহরই হুকুম মান্য করে যা কিছু সৃষ্টি রয়েছে আকাশমন্ডলীতে এবং পৃথিবীতে এবং মালাইকাগণও; তারা অহংকার করেনা।
আল্লাহর প্রতি সাজদাহবনত হয় আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এবং তাদের ছায়াগুলিও সকাল-সন্ধ্যায়। (১৩:১৫)
আয়াতের সঠিক অনুবাদ,
আল্লাহর বিধান মান্য করে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে, ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায় এবং তাদের ছায়াগুলিও সকাল-সন্ধ্যায়।
তাহলে জানা গেল সিজদাহ মানে, আল্লাহর বিধান মেনে চলা আর আমাদের জন্য কুরআনের বিধান মেনে চলা।
আবার আমরা মাটিতে মাথা ঠুকিয়ে আনুগত্যের যে অভিব্যক্তি প্রকাশ করি সেটাও কিন্তু সেজদাহ। তবে এটাকেই একমাত্র সিজদাহ মনে করা ভুল হবে।
আর রুকু মানে বিধান মেনে নেওয়া, বিনত হওয়া, আনুগত্য থাকা ইত্যাদি।
যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ ‘আল্লাহর প্রতি নত হও’, তারা নত হয়না। ( ৭৭:৪৮)
আর তোমরা সালাত প্রতিষ্ঠিত কর ও যাকাত প্রদান কর এবং আনুগকারীদের সাথে আনুগত্য কর। (২:৪৩)
মূলভাবঃ
কুরআনের বিধান গুলো মেনে চললে। যেমন, মিথ্যা না বলা, চুরি,যেনা,সুদ,ঘুস ইত্যাদি নিষিদ্ধ কাজ হতে বিরত থাকা আর ভাল আচার-আচরণ, ন্যায়বিচার, কর্তব্যপরায়ণ, ওয়াদা রক্ষাকারী ইত্যাদি করণীয় কাজ গুলো করলে তার সালাত, সিজদাহ্, রুকু ইত্যাদি হয়ে যায়।
এ সমস্ত কিছু ব্যাক্তি, সমাজ ও রাস্ট্র জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার নাম হচ্ছে আক্বিমুস সলাহ।
আমি আমার চিন্তার প্রকাশ করলাম মাত্র। এর চেয়েও বিশুদ্ধ মত থাকতে পারে।