১) ( ফালা সদ্দাকা ওয়ালা সাল্লু ) فَلَا صَدَّقَ وَلَا صَلّٰىۙ
সে সত্য বলে নাই এবং সালাত আদায় করে নাই।
২) وَلٰكِنْ كَذَّبَ وَتَوَلّ (ওয়া লাকিন কাজ্জাবা ওয়া তাওয়াল্লু)
বরং সে সত্য প্রত্যাখ্যান করিয়াছিল ও মুখ ফিরাইয়া লইয়াছিল।
৩) فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّيْنَۙ ( ফাওয়াই লুল্লে মুসাল্লিন)
সুতরাং দুর্ভোগ সেই সালাত আদায়কারীদের,
৪) الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَاتِهِمْ سَاهُوْنَۙ
যাহারা তাহাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন,
তবে তারা নয় -الَّذِيْنَ هُمْ عَلٰى صَلَاتِهِمْ دَآٮِٕمُوْنَ
(আল্লাযিনা হুম আন সালাতিহিম দায়য়েমুন)
যাহারা তাহাদের সালাতে সর্বক্ষন প্রতিষ্ঠিত,মাআরিজঃ ২৩
আমরা কায়েমী সালাত করি, দায়েমী সালাতের আশে পাশেও নাই। অথচ আল্লাহ সর্বক্ষন সালাতে থাকতে বললেন। তার মানে সালাত অর্থ প্রচলিত নামাজ নয়।
নুহ, ঈসা,মুসা আঃ গনও সালাত করতেন। তারাও কি আমাদের মত ধরা বান্দা ৫ ওয়াক্ত সালাত করতেন?
এ জন্য আল্লাহ সূরা নেসার ৪৩:আয়াতে বলেছেন তোমরা যতক্ষন না বুঝতে পার সালাতে কি বলছো ততক্ষন সালাতের ধারে কাছে যেও না।
অর্থাত সালাত হলো কোরানের মর্ম বুঝে কোরআন তেলওয়াতের অনুষ্ঠান। যেখানে রবের আদেশ নিষেধ গুলি কায় মনোবাক্যে মেনে নিয়ে সে অনুযায়ী সর্বক্ষন চলা। এটাই হল সালাতুল দায়য়েমুন।
আপনি আনুষ্ঠানিক যে সালাত করছেন, সেটা করুন। নিষেধ নেই। কিন্তু দায়েমী সালাত পরিহার করে আপনার সেই আনুষ্ঠানিক কায়েমী সালাত পন্ডুসার। কোন কল্যাণ নেই তাতে। অনেকে আনুষ্ঠানিক সালাতকে পুর্ণ অস্বীকার করেন, আমি তাদের সাথে একমত নই। কারন এটি একটি উত্তম প্রাক্টিস, যা দায়েমী সালাতকে আরো সমৃদ্ধ করে তুলে। মুল কথা সালাতে যা বলা হয় তার মর্ম বুঝতে হবে এবং সালাতের বাহিরের সময় গুলিতে সে অনুযায়ী জীবন অতিবাহিত করতে হবে।
সালাতকে আল্লাহর মনোনীত পদ্ধতির বাহিরে যাহারা বিভিন্ন মনগড়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করতো তাদের লক্ষ্য করে বলেন:
“কাবাগৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর।”
সূরা নম্বরঃ আনফাল ৮,আয়াত ৩৫
উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা-পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে, ( মারিয়ম ১৯,আয়াত ৫৯)
পক্ষান্তরে আল্লাহর সালাত বিষয়ে আল্লাহর নির্দেশনাঃ
হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হইও না, যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার, ——- ( নিসা ৪, আয়াত ৪৩)
মানুষ কি মনে করে শুধু তারাই সালাত করে। না, বরং আসমান ও জমিনে যত প্রাণী আছে সবাই সালাত করে। তবে মানুষের নামাজের মধ্যে তিনটি শর্ত যা প্রাণীকুলের
নামাজ থেকে মানুষের নামাজকে পৃথক করে দেয়।
আকাশে উড্ডিয় মান পাখিরা তাদের সালাত করে রবের নির্দেশ পালন করার মধ্য দিয়ে। মানুষের সালাতও রবের নির্দেশ পরিপালনের মধ্য দিয়েই। তবে মানুষেকে সালাতের
৩ টি শর্ত পরিপালন করতে হয় অতিরিক্ত।
১) মানুষের সালাত তাকে অশ্লীল ও অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখে।
اِنَّ الصَّلٰوةَ تَنْهٰى عَنِ الْفَحْشَآءِ وَالْمُنْكَرِؕ
( নিশ্চয় সালাত বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কার্য হইতে।) সূরা আনকাবুতঃ ৪৫
২) মানুষের সালাত মোহ গ্রস্থ্য অবস্থায় নিষিদ্ধ।
لَا تَقْرَبُوا الصَّلٰوةَ وَاَنْـتُمْ سُكَارٰى
অর্থঃ তোমরা মোহগ্রস্থ্য অবস্থায় সালাতের নিকটবর্তী হইও না, ( সূরা নেসা – ৪৩ )
৩) মানুষ সালাতে কি বলে তা না বুঝা পর্যন্ত সালাত করতে বারন।
حَتّٰى تَعْلَمُوْا مَا تَقُوْلُوْنَ
অর্থঃ যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার,
পশুপাখির সালাত, তাসবীহ রিতী আর মানুষের সালাত ও তাসবিহ পদ্ধতির পার্থক্য এটাই। নচেৎ আসমান ও জমিনের সকল প্রানী ও পক্ষীকুল মানুষের মতই পড়ে।
২ ও ৩ নং শর্ত পরিপালনের মাধ্যমো সালাগ আদায় করেও যদি ১নং শর্তটির বাস্তবায়ন নিজের মধ্যে পরিলক্ষিত না হয় তবে বুঝে নিতে হবে আপনার সালাত আর সেই পশুর সালাত একই হচ্ছে।