আরবী গ্রামার পর্ব-০৭
নিজে গ্রামার বুঝে ছোট্ট একটি আয়াতের অনুবাদ করি। (সূরা নং ৬৯ আয়াত নং ৪০)
اِنَّهٗ لَقَوْلُ رَسُوْلٍ كَرِیْمٍۚۙ
( ইন্নাহু লা ক্বাউলু রাসুলিন কারিম)
অনুবাদ: অবশ্য অবশ্যই ইহা (কুরআন) একজন সম্মানিত রসূলের বাণী।
শব্দার্থ: إِنَّهُ = নিশ্চয়তা, لَقَوْلُ = নিশ্চয় বানী, رَسُولٍ = একজন রসূল (এর) , كَرِيمٍ = সম্মানিত,
অনুবাদ করতে প্রথমে আদল বা মুল শব্দ নির্নয় করতে হবে। তাহলে অনুবাদ করতে সহজ হবে। পড়ে গ্রামারের দিকে নজর। একটা বিষয় জেনে রাখা দরকার আরবীতে অধিকাংশ মুল শব্দ তিন অক্ষরের হয়।
উক্ত আয়াতে/ বাক্যে চারটি শব্দ ১) ইন্নাহ ২) ক্বাউলু ৩) রাসুলিন ও ৪) কারিম।
এর আদল বা মুলশব্দ প্রথমে নির্নয় করবো।
শুরুতে ইন্নাহ إِنَّهُ শব্দটি ব্যক্তিবাচক সর্বনাম। তাই এর মুল শব্দের প্রয়োজন নেই। আমরা إِنَّ ইন্না অব্যয় পদ জানি। যার অর্থ নিশ্চয়। إِنَّهُ এর অর্থ দ্বারায় হরফে নসব /ব্যক্তিবাচক সর্বনাম إِنَّهُۥ (ইন্নাহু) নিশ্চয় ইহা।
**************
এবার আসি আয়াতের ২য় শব্দ ( লাক্বাউলু) لَقَوْلُ নিশ্চয় বানী বা কথা।
ক্বাউল অর্থ- বানী। লাম অব্যয় – নিশ্চয়। ( আর এই لا (লা) অর্থ না) সুতরাং লা ক্বাউলু – নিশ্চয় বানী।
মুল শব্দ/ (আদল): قول কাউল ( বানী, কথা)
লাক্বাউল – لَقَوْلُ অর্থ নিশ্চয় বানী।
গ্রামারের কথা ভাবলে অতীত কাল হলে হত قَالَ ( কালা)
ভবিষ্যত কাল/বর্তমান হলে হত : يَقُوْلُ (ইয়াকুলু)
আদেশ মুলক হলে হত : قُلْ (কুল)
ইশমে ফাল / কর্তা হলে হত : قَائِل
ইশমে মাফউল /কর্ম হলে হত : مَقُوْل
মাসদার / ক্রিয়া বাচক বিষেশ্য হলে হত : قَوْل
**************
এবার আসি ৩য় শব্দ (রাসুলিন) رَسُوْلٍ – রাসুলের মুল শব্দ বা আদল : رسل (রাসুল) (রাসুলিন) رَسُوْلٍ অর্থ দ্বারায় রাসুলের।
গ্রামার যদি দেখি তবেঃ
অতীতকাল হলে হত : أَرْسَلَ (আরসাল)
ভবিষ্যত /বর্তমান কাল হলে হত : يُرْسِلُ ( উরসিলু)
আদেশ মুলক হলে হত أَرْسِلْ (আরসেলু)
ইশমে ফায়েল /কর্তা হলে হত : مُرْسِل ( মুরসিল)
ইসমে মাফাউল / কর্ম হলে হত : مُرْسَل ( মুরসাল)
মাসদার/ক্রিয়াবাচক বিষেশ্য হলে হত : إِرْسَال (ইরসাল)
******************
এবার আসি আয়াতে বর্নিত ৪র্থ শব্দ كَرِیْمٍۚۙ। এখানেআদল বা মুল : كرم (কারিম) সন্মানিত।
গ্রামারের দিক থেকে ভাবলে, যামানা ফায়াল মাঝি /অতীত কাল হলে হত : كَرَّمَ (কাররামা)
যামানা ফায়াল মাযরু / ভবিষ্যতকাল হলে হত : يُكَرِّمُ (ইউকাররামু)
সিফাতে আমর/ আদেশ মুলক হলে হত : كَرِّمْ (কাররামু)
ইশমে ফাল/কর্তা বাচ্য হলে হত : مُكَرِّم ( মুকাররাম)
ইশমে মাফাউল/ কর্ম হলে হত مُكَرَّم মুকাররাম
মাসদার /ক্রিয়া বাচক বিশেয্য হলে হত : تَكْرِيْم ( তাকরিম)
উপসংহারঃ আয়াতের সরল অনুবাদ নিজে বুঝে করে দেখা যায় যে রাসুলের বানীই কোরআন। সুতরাং রাসুল কোরআন ছাড়া আর কোন বানী কখনো কোথাও বলেন নাই বা লিপিবদ্ধ করারও সুযোগ নেই। তাই রাসুল কতৃক প্রচারীত বানী সংরক্ষনের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ নিয়েছেন। তাতে কোন বিষয়ে সাংঘর্ষিক বক্তব্য খুজে পাওয়া যাবে না।
তাই মানব রচিত/সংকলিত কোন বানীকে রাসুলের বাণী বিবেচনা করা হলে ভুল ও ভ্রষ্টতা হবে। লাফিল খুছরে।