উমাইয়াহ বংশ বাস্তবতায় ছিলো রাসুল সাঃএর বংশের জাত শত্রু।প্রকৃত পক্ষে রাসুল সাঃ এর সময় থেকে তাদের শত্রুতা শুরু হয়নি বরং শত্রুতার শুরু আরো কয়েক জেনারেশন পুর্ব থেকে হয়েছিলো।যদিও হাশিমী বংশ এবং উমাইয়াহ বংশ উভয়ই কুরাইশ বংশ উদ্ভুত।
আদম সন্তান হাবিল-কাবিলের মত এই দুইটি বংশের হাশিম বংশ ছিল সৎ পথের অনুসারী এবং উমাইয়াহ বংশ ছিল অন্যায় অত্যাচারী অসৎ পথের অনুসারী।
ফলশ্রুতিতে আল্লাহ সুবহানাল্লাহু তা’য়ালা পবিত্র ক্বাবা শরীফের তথ্যাবধানসহ মক্কার বিভিন্ন গোত্রের নেতুত্বের দায়িত্য বরাবরই হাশেমী বংশের উপর দিয়েছিলেন।
হাশেমী ও উমাইয়া বংশ একই কুরাইশ বংশ সম্ভুত হওয়া স্বত্ত্বেও ক্বাবা শরীফের তত্বাবধন সহ সকল পর্যায়ে হাশেমী বংশের নেতৃত্ব বা কর্তৃত্ব কোন প্রকারেই উমাইয়াগন মেনে নিতে পারছিল না।
অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাঃ এর জন্মের অনেক আগে থেকেই এই দুইটি বংশের মধ্যে আধিপাত্যের লড়াই চলে আসছিল।
রাসুলুল্লাহ সাঃ পৃথিবীতে আগমনেরর অব্যাহতি পুর্বেও ক্বাবা শরীফের তত্বাবধানে দায়িত্বে ছিলেন রাসুল সাঃ এর দাদা আব্দুল মুত্তালেব এবং পর্বর্তীতে আব্দুল মুত্তালেব ছেলে অর্থাৎ রাসুল সাঃ এর আপন চাচা আবু তালেব সে দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন।
যোগ্যতার বিচারে আধিপাত্য ও নেতৃত্বের লড়াই একই কুরাইশ বংশ উদ্ভুদ্ধ হওয়া স্বত্ত্বেও তারা একে অপরের প্রতি শত্রুতা বংশপরম্পরা চলে আসছিল।
এই শক্রুতার সুত্র ধরেই পরবর্তীতে আব্দুল মুত্তালেবের ঔরশজাত সন্তান আব্দুল্লাহর স্ত্রী আমেনার গর্ভে মোহাম্মদ সাঃ এর মত এমন নির্মল চরিত্রের অধিকারী একজনকে উমাইয়াহ বংশের নেতৃস্হানীয় কেহই মেনে নিতেপারেনি।
সেজন্যই চল্লিশ বছর বয়সে মোহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ অফিসিয়ালি বা আনুষ্ঠানিক ভাবে আল্লাহর একত্বতা ঘোষনার মাধ্যমে তাঁর নবুয়তের সংবাদ প্রচার করলে উমাইয়াদের অস্বীকৃতির মাধ্যমে তাদের শত্রুতার কৌশলের গতি আরো বৃদ্ধি পায়।
এই উমাইয়াহ বংশের শত্রুতা,যুলুম,অত্যাচার এবং ইসলাম প্রচারে বাধা বিঘ্নতার কারনেই রাসুল সাঃ কে মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করতে হয়েছিল।
রাসুল সাঃ মদীনায় ইসলাম প্রচারকালেও তিনি নির্বিগ্নে ইসলাম প্রচারে নিরলস ভাবে মনোযোগী হতে পারেন নাই।
সুদীর্ঘ সাড়ে চৌদ্দশত বছর পুর্বে প্রায় পাঁচ শতাধিক কিলোমিটার দুরত্বেও রাসুল সাঃ কে উমাইয়াহ বংশের সদস্যগন ইসলাম প্রচারে বাধা প্রদানে বদর,ওহুদ,খন্দকের যুদ্ধে অংশ গ্রহন করে তাদের প্রতিহত করতে হয়েছে।
উমাইয়াহ বংশ ইসলাম গ্রহন না করে শত প্রচেষ্টা এবং নানা প্রকার ষড়যন্ত্র এবং যুদ্ধ বিগ্রহে ফলপ্রসু কোন রেজাল্ট না পেয়ে তারা প্রায় হতাশা গ্রস্থ হয়ে পড়েছিল।এমতাবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাঃ মক্কা বিজয়ের পর সাধারন ক্ষমা ঘোষনা করলে উমাইয়াহ গোত্রের নেতা আবু সুফিয়ান এবং তার পুত্র মোয়াবিয়াহসহ তার গোত্রের লোকেরা রাসুলের হাতে বায়াত গ্রহন করে।
যুলুম,অত্যাচার,ষড়যন্ত্র এবং যুদ্ধ বিগ্রহের মাধ্যমে রাসুল সাঃ এর বিরুদ্ধে যে সফলতা তারা পায় নাই মুনাফেকি ভাবে ইসলাম গ্রহন করে শত বছর ব্যাপি ক্ষমতা অবস্থানের মাধ্যমে ইসলামের মুখে যে কালিমা ওরা লেপন করে গেছে ইসলামের সেই কালো অন্ধকার ইতিহাস থেকে আজও আমরা বাহির হয়ে আসতে পারিনি।
ইসলামিক খেলাফতের উমাইয়াহ বংশের পারিবারিক রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর হতেই ইসলামকে ধ্বংশ করার জন্য উমাইয়াহ শাসক গৌষ্ঠি ইসলামের ঐতিহ্যকে ধ্বংশ করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছিলো, তারমধ্যে প্রধান পদক্ষেপ ছিলো রাসুল/নবী মোহাম্মদের নামে হাদিস রচনা করে খেলাফতের অধিনস্থ মসজিদ গুলিতে সেসব প্রচার করা এবং সেগুলি সংরক্ষনের ব্যবস্থা করা এবং তাঁরই ফলশ্রুতিতে রাসুলের নামে, কুরআনের ব্যাখ্যা নামে খ্যাত অসংখ্য হাদিস গ্রন্থে লক্ষ লক্ষ কুরআন বিরোধী মিথ্যা হাদিসের প্রচার ও প্রসার।
প্রচললিত তাবলীগ এই উমাইয়া বংশের উত্তর সূরী হিসাবে আজো আমাদের মাঝে লেংটি গুজে কাজ করে যাচ্ছে।