ঈশা নবীর পর রাসুল প্রেরণে এত বিরতি কেন ছিল??
ঈশা নবীর তিরোধানের পর প্রায় ৬৫০ বছর পর্যন্ত কোন নবী বা রাসুল প্রেরন করেন নাই। এই দীর্ঘ ব্যবধানে মানুষ পথভ্রষ্ট হয়ে জাহেলিয়াতের অতল গর্ভে ডুবে যায়। এর আগে সব নবীই প্রায় ১০০ বছর ব্যবধানেই এসেছেন। দীর্ঘ বিরতির পর এই অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগে পাঠালেন নবী মুহাম্মদকে। আল্লাহ তাই বলেনঃ
” রাসূল প্রেরণে বিরতির পর আমার রাসূল তোমাদের নিকট আসিয়াছে। সে তোমাদের নিকট স্পষ্ট ব্যাখ্যা করিতেছে যাহাতে তোমরা বলিতে না পার, ‘কোন সুসংবাদবাহী ও সতর্ককারী আমাদের নিকট আসে নাই।’ (৫:১৯)
ঈশা নবীর পিতা ছিল না। কুমারী মরিয়মের গর্ভে জন্ম। এজন্য খৃষ্টানরা দাবী করে ঈশা মাসীহ আল্লাহর পুত্র। কিন্ত সুরা ইখলাসে আল্লাহ জানিয়ে দেন তিনি কোন সন্তান জন্ম দেননি এবং তিনি কারো সন্তানও নন। এখন প্রশ্ন আসে কোন পুরুষ ছাড়া তো মাতৃগর্ভে সন্তান আসতে পারে না। আল্লাহ সে প্রসঙ্গে উত্তর দেনঃ
“আল্লাহ্র নিকট নিশ্চয়ই ‘ঈসার দৃষ্টান্ত আদমের দৃষ্টান্তসদৃশ। তিনি তাহাকে মৃত্তিকা হইতে সৃষ্টি করিয়াছেন;অতঃপর তাতে রুহ ফুকিয়ে দেন। ( ৩:৫৯)
প্রশ্ন আসে কি কিতাব দিয়েছিলেন? সেটা কি বর্তমান কোরানেরই অংশ বিশেষ? না কি ভিন্ন বৈপরিত কোন কিতাব। সেই সাথে তাঁকে আল্লাহ আরো আদেশ করেছিলেন যাহা তা আবার হুবুহু কোরানে বর্ণিত:
‘যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করিয়াছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়াছেন যত দিন জীবিত থাকি তত দিন সালাত ও যাকাত আদায় করিতে -(১৯:৩১)
এখন প্রশ্ন আসে ঈশা আঃ কি ভাবে সালাত আদায় করতেন? আমাদের মত রুকু সিজদা বুকে হাত বাধা পদ্ধতিতে? দিন পাঁচ ওয়াক্ত পড়তেন? না কি তখন সালাত কায়েম বলতে অন্য কোন পদ্ধতি কায়েম ছিল? যা রহিত হয়ে এই প্রচলিত সালাত মেরাজ মোতাবেক হয়েছে?
আশ্চর্যের বিষয় এ ব্যাপারে কোন আয়াত কোরানে দেখা যায় না। আর যাকাত তিনি নির্জন পাহারে কি ভাবে কার উপর আদায় করতেন? এখন যে যাকাত দেখি তা কিভাবে এলো?
আল্লাহ বলেন: এর আগে তাদের সালাত ছিল,কা‘বা গৃহের নিকট শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই তাহাদের সালাত, সুতরাং কুফরীর জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ কর।(৮:৩৫)
ঈশা নবী এসে আল্লাহর মনোনীত পদ্ধতিতে সালাত কায়েম করলেন এবং যাকাত আদায় শিক্ষা দিলেন।
এই নবীর পড়ে আবার দীর্ঘ সময় নবী না আসায় সালাত কে নষ্ট করে ফেললো। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন:
“উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা – পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে,(১৯:৫৯)
ঈশা নবীর ৬৫০ বছর পর পুনরায় দীর্ঘ বিরতীর পর নবী মুহম্মদ কে অন্ধকার হতে আলোতে পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য প্রেরন করলেন। তিনি শরীয়তের পুর্ন জ্ঞান ও দ্বীন নিয়ে এলেন। শিক্ষা দিলেন এবং লিখিত আকারে তা রেখে গেলেন বিশ্ব মানব জাতীর জন্য। আর তা সংরক্ষনের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ গ্রহন করলেন। কারন এর পর আর কোন নবী আসবেন না কিয়ামত অব্দি। তার এই কিতাবের বর্ননা অনুযায়ী আবার নষ্ট করা সালাত ফিরে পেলাম।
আল্লাহ পবিত্র কোরআনে সূরা মরিয়াম এর ১৯:৩১ নং আয়াতে সালাত কায়েম করতে বলেছেন জন্ম হইতে মৃত্যুর আগ মুহুর্ত পর্যন্ত অবিরতভাবে, নিরর্বিছিন্ন, বিরতিহীন ভাবে,সার্বক্ষণিকভাবে।
যাহারা তাহাদের সালাতে সদা প্রতিষ্ঠিত, (৭০:২৩)
অত:পর যার এ বিষয়ে দ্বীমত পোষন করে,তাদের জন্য কোরান ব্যক্ত করেন, তুমি কি দেখিয়াছ তাহাকে, যে দীনকে অস্বীকার করে ? সুতরাং দুর্ভোগ সেই সালাত আদায় কারীদের , যাহারা তাহাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন (১০৭:১-৫)
ইহাই আল্লাহ্র বিধান – প্রাচীন কাল হইতে চলিয়া আসিতেছে, তুমি আল্লাহ্র বিধানে কোন পরিবর্তন পাইবে না। ( ৪৮:২৩)
বিচার দিবসে রাসুল আল্লাহর নিকট অভিযোগ করে বলবেনঃ
” হে আমার প্রতিপালক! আমার সম্প্রদায় তো এই কুরআনকে পরিত্যাজ্য মনে করে।’ (২৫:৩০)