কতিপয় হাদীস ও শানে- নুযুল শয়তানের পক্ষ থেকে বর্নিত যা কোরানের তাফসীরেও স্থান করে নিয়েছে। যেমনঃ
মদ হারাম হওয়ার বিষয়ে হযরত ওমর, হযরত মায়াজ ও অন্যান্য সাহাবী রাদিয়াল্লাহু আনহুম এর আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন পর্যায়ে মদ হারাম হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে একেবারে নিষিদ্ধ করা হয় নি। নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তখনও চূড়ান্ত নির্দেশ কামনা করেছেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে নামাজে যাওয়ার আগে মদের ধারে কাছেও যাবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এরপরও হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু চূড়ান্ত ফায়সালার আবেদন জানালে চিরতরে মদ হারামের ঘোষণা আসে। এখানে আয়াতের শানে নুযূল এটাই।
হে মু’মিনগণ! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হইও না, যতক্ষণ না তোমরা যাহা বল তাহা বুঝিতে পার,(৪:৪৩)
শান-ই-নুযুলঃ
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু মদ হারাম হওয়ার পূর্বে মদপান করে নামাজের সূরা তিলাওয়াতে উল্টাপাল্টা করেছেন বলে হাদিসের কিতাবে ও কোরানে আয়াত নাযিলের শানে-নুযুলে পাওয়া যায়। যদি তাকে মদপানকারী সাব্যস্ত করা হয় তাহলে কুরআনের আয়াতে তাতহীরের খেলাফ হচ্ছে। কারনঃ
হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু মওলুদে কা’বা। জন্ম থেকে প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এর ইন্তেকাল পর্যন্ত তাঁরই তত্তবধানে লালিত হয়েছেন। বালেগ হওয়ার পূর্বেই ১০ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। দ্বীনে হানিফে যারা জাহেলী যুগে ইবাদত-বন্দেগী করতেন তাদের মধ্যে যারা মূর্তিপুজা করেন নি এবং কোনরূপ গর্হিত কাজে লিপ্ত হননি তাদের মধ্যে হযরত আবু তালেব একজন। তার সন্তানদের ইতিহাসে মদপান পাওয়া যায় না। হযরত মাওলা আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহু এর মাধ্যমেই প্রিয় নবীজীর বংশধারা, বেলায়তের ধারা, ইলমের ধারা প্রসারিত ও প্রতিষ্ঠিত। যদি তিনি মদপান করেছেন সাব্যস্ত হয় তাহলে এই মদের অংশ ও প্রভাব সমস্ত আওলাদে রাসূলগণের মধ্যে রয়েছে সাব্যস্ত হয়। অথচ মহান আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেন :
إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا
হে নবীর পরিবার! আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণ পবিত্র করতে। [সূরা আহযাব-আয়াত- ৩৩]
কুরআনের এ আয়াতের ঘোষণা হল আহলে বায়ত জাহেরী-বাতেনী সকল প্রকার রিযস বা নাপাকি থেকে সম্পূর্ণ পবিত্র। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু আহলে বায়তের অন্যতম সদস্য।