সকল নবী-রাসূলগনের কমন কলেমা তাইয়িবায় উল্লেখিত “ইলাহ ” এর কর্তৃত্ব ভাগ করে দ্বিতীয় কোনো কর্তৃপক্ষকে (নবী,ফকিহ, মাযহাবের ইমাম) দেয়া যায় না। এবার আপনি বলুন—ইসলামী শরীয়তে আইনের একাধিক উৎস স্বীকার করলে উলুহিয়াত বা sovereignty ভাগ হয়ে যায় কি ? এই ভাগ হয়ে যাওয়াই তো আল্লাহর ক্ষমার অযোগ্য শিরকের ভয়াবহ অপরাধ।
আপনার-আমার মধ্যে স্বয়ং আল্লাহর আমর/রূহ/হুকম-আদেশ রয়েছে(সুরা হিজর), আকল-বিবেক নামক আমানত রয়েছে, সাদা কালো, বড় ছোট, উচু নীচু, ন্যায়-অন্যায় বুঝার জ্ঞান রয়েছে।
jurisprudence এর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আইন প্রনয়নয়নের একজন sovereign authority অবশ্যই থাকবে, একাধিক sovereign authority থাকার সুযোগ নেই—এটা নিয়ে কখনো ভেবে দেখার সময় পেয়েছেন কি ?
আল্লাহ আসমান-জমিনের দিকে দিকে আদম সন্তানের— সর্বত্র আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এবং একক হুকুম-বিধানগত কর্তৃত্বের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। সকল নবী-রাসূলও শুধু আল্লাহকে উলুহিয়াত বা sovereignty সম্পন্ন ইলাহ হিসেবে declaration দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
সালাত, সিয়াম, হজজ, জাকাত উলুহিয়াতের ঘোষনার পরের বিষয়। এক মহাশক্তিমান সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের উলুহিয়াত বা sovereignty মেনে নেয়ার পর জীবনের সকল কাজ এই সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের sovereignty মোতাবেক করার ঘোষনা না দিয়ে ইসলামের ঘরে প্রবেশ করা যাবে না।
হাল আমলে নয়–রাসূল (সাঃ) দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার ১০০ বছরের মধ্যে কালেমা তাইয়িবার মাধ্যমে আল্লাহর উলুহিয়াতের ঘোষনার গুরুত্ব মুসলমান নামক জনগোষ্ঠীর বিবেচনা থেকে হারিয়ে গেছে। তারা ইসলামের ঘরে/দেশে প্রবেশ না করেই, নাগরিক না হয়েই নাগরিকত্ব দাবী করছে এবং নাগরিক অধিকার চাইছে।
লক্ষ্য করে দেখুন সকল ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে মুসলমানগন সবচেয়ে বেশী নিগৃহীত। কলেমায় বর্নিত “ইলাহ ” এর সাথে built in উলুহিয়াত বা sovereignty অস্বীকার করায় এরা আল্লাহ, সকল মালায়েক এবং সমগ্র মানবজাতির পক্ষ থেকে লা’নত প্রাপ্ত একটি জাতি। লক্ষ-কোটি মুসলমান নারী, শিশু,বৃদ্ধের ফরিয়াদ-আহাজারি আল্লাহর আরশকে কাঁপিয়ে তুলছে না।
কিছু মনে করবেন না, আমি একটি শক্ত কথা বলছি। এটা বলছি— আপনার চিন্তার দরোওয়াজা খোলার জন্য। কলাপাতা আর শুকনা ঘাস খেয়ে তো Higher education লাভ করা যায় না। আমাদের বিশেষ করে আপনার বিবেক এবং একমাত্র আল্লাহকে একমাত্র ইলাহ হিসেবে মেনে নেয়ার মতো জ্ঞান আছে, শুধু আছে বললে ভুল হবে, যথেষ্ট পরিমানে আছে। অভাব শুধু কাজে লাগানোর সৎ সাহস। সেটা হলো পাছে লোকে কিছু বলে !
আসমান-জমিনে যেমনি আল্লাহর একক সার্বভৌম কর্তৃত্ব বিরাজমান—তেমনি মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক কাজেও আল্লাহকে একক sovereign authority মেনে তার নাজিলকৃত হুকুম-বিধানগুলো মেনে চলার নাম তাওহীদ। প্রথমটা হলো প্রাকৃতিক জগতের তাওহীদ এবং পরেরটা হলো–সামাজিক তাওহীদ।
আল্লাহর নাজিলকৃত হুকুম-বিধানের পাশাপাশি কোনো মরনশীল মাখলুকের ( নবীও মাখলুক, আল্লাহর আবদ-গোলাম এবং রাসূল-সংবাদ বাহক,মাযহাবের ইমামগনও মাখলুক, ফকিহ এবং মুফতিগনও আল্লাহর তুলনায় অতি নগন্য মাখলুক) হুকুম বিধানের আনুগত্যের বৈধতা দিলে—তখন আল্লাহর একক সার্বভৌমত্ব- sovereignty বা উলুহিয়াত কি আর থাকে ? কারন sovereignty কে devide করা যায় না।
আল্লাহ মানবজাতির কাছে এতোটুকুই চেয়েছেন যে, তাদেরকে স্বাধীন ইচ্ছা শক্তি দেয়ার পরও তারা আকল-বিবেক কাজে লাগিয়ে—একমাত্র আল্লাহর উলুহিয়াতকে মেনে নিবে, নবী-রাসূল বা অন্য কোনো মাখলুকের হুকুম-বিধানের আনুগত্য করে উলুহিয়াত এর সম্পূর্ন বিপরীত শিরকের মহা ভয়াবহতম অপরাধ করবে না। আল্লাহর চাওয়া শুধু এতোটুকুই। জান্নাত-জাহান্নামের, ফায়সালার মানদণ্ড এটাই।