এগুলি হল সুস্পষ্ট কিতাবের আয়াত:
কুরআনের আয়াতগুলি একে অপরের উপর আলোকপাত করে এবং ব্যাখ্যা করে: “যারা আমার নাযিলকৃত সুস্পষ্ট বর্ণনা এবং পথ নির্দেশ মানুষের জন্য কিতাবে সুস্পষ্ট করার পরও গোপন করে, তাদের উপর আল্লাহর লানত এবং অভিসম্পাত কারীগণের ও অভিসম্পাত।” (২:১৫৯)। কিতাবকে আল্লাহ নিজেই সুস্পষ্ট করেছেন। আমাদের মানুষদের একটাই কাজ – কিতাব পড়া এবং গভীরভাবে চিন্তা করা। আল্লাহ কুরআন সম্পর্কে নিম্ন লিখিত বলেছেন: “আমরা কোরআনকে স্মরণ করার জন্য সহজ করে দিয়েছি। কেউ কি আছে যে স্মরণ করবে?” (৫৪:২২); ধার্মিকদের সুসংবাদ দেওয়ার জন্য এবং শত্রুদেরকে সতর্ক করার জন্য আমরা এটিকে আপনার ভাষায় সহজ করে দিয়েছি। (১৯:৯৭); “আমরা এটি সহজ করেছি আপনার জিহ্বায় , যাতে তারা মনে রাখতে পারে।” (৪৪:৫৮)।
আহলে কিতাব সম্পর্কে আল্লাহ বলেনঃ “আল্লাহ তাদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলেন যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল “তোমরা এটা লোকদের কাছে প্রচার করবে, গোপন করবে না।” কিন্তু তারা তাদের পিঠের পিছনে তা ফেলে রাখল এবং সামান্য মূল্যে তা বিনিময় করেছে। কী নিকৃষ্ট বিনিময় তারা করেছে।” (৩:১৮৭)। এই আয়াতটিতে আহলে কিতাবদের অর্থাৎ ইহুদি খৃষ্টানদের কথা বলে আল্লাহ আমাদের , যাদেরকে কুরআন (কিতাব) দেয়া হয়েছে , সাবধান করছেন । আমাদের হুজুররা কি এই সাবধান বাণী স্মরনে রেখেছেন বা এই আয়াত থেকে কোন শিক্ষা নিয়েছেন?
কুরআনের আয়াতগুলি অস্পষ্ট এবং এর ব্যাখ্যার জন্য হাদীসের প্রয়োজন যারা বলে থাকে , কুরআনের এই আয়াত দ্বারা তা খণ্ডন করা হয়েছে: “তারা আপনার কাছে যে যুক্তিই নিয়ে আসুক না কেন, আমরা আপনাকে সত্য এবং আরও ভাল ব্যাখ্যা (তাফসির تَفْسِيرًا ) প্রদান করি।” (২৫:৩৩)। কুরআনের সর্বোত্তম ব্যাখ্যাটি এর পাঠ্যের মধ্যেই রয়েছে, কারণ এর আয়াতগুলি একে অপরের উপর আলোকপাত করে এবং একে অপরের বিশদ বর্ণনা প্রদান করে। কুরআনিক এই সত্যটি এই আয়াত দ্বারা দৃঢ় করা হয়েছে: “…আমরা আপনার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যা সমস্ত কিছুর ব্যাখ্যা এবং হেদায়েত, রহমত ও সুসংবাদ তাদের জন্য যারা আনুগত্য করে।” (১৬:৮৯)। সুতরাং, যেহেতু কোরানের আয়াতগুলি একে অপরকে ব্যাখ্যা করে এবং আমাদের আল্লাহর ধর্ম সম্পর্কে যা জানা দরকার তা স্পষ্টভাবে বলে , সেহেতু কোরানের পাঠে ছলচাতুরী, অপ্রয়োজনীয়তা, শব্দচ্যুতি বা শব্দচয়নের কোন স্থান নেই এবং কুরআনের ‘ব্যাখ্যা’ করার জন্য আমাদের কখনই বাইরের উৎসের প্রয়োজন হয় না। এই আয়াত অনুসারে কুরআনই আমাদের গাইড করার জন্য আল্লাহর রহমতের অংশ। যারা প্রভু আল্লাহর কাছ থেকে নির্দেশনা অন্বেষণ করে আন্তরিকভাবে কুরআন অধ্যয়ন করে , তারা করুণা লাভ করবে এবং হেদায়েত পাবে।
আর এভাবে আমরা আপনার প্রতি আমাদের নির্দেশ থেকে রূহকে ওহী করেছি; আপনি তো জানতেন না কিতাব কি এবং ঈমান কি! কিন্তু আমরা এটাকে করেছি নূর, যা দ্বারা আমরা আমাদের বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছে হেদায়াত দান করি; আর আপনি তো অবশ্যই সরল পথের দিকে দিকনির্দেশ করেন—৪২:৫২
আমি মানুষের জন্য এই কুরআনে বিভিন্ন উপমার দ্বারা আমার বাণী বিশদ ভাবে বর্ণনা করিয়াছি। মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্ক প্রিয়। সূরা নম্বরঃ ১৮, আয়াত নম্বরঃ ৫৪