Shamsun Nahar Shelly বেহস্ত পবিত্র এবং সেখানে কোন প্রকার অবিত্রতার স্পর্শ নেই। আল্লাহর ঘোষণা। সেখানে হতে ইবলিশ কে বের করে দেয়ার পর ইবলিশের আর ঢুকার কোন সুযোগ নেই। তাহলে ইবলিশ নামক আলাদা কোন সত্তার আদমকে কুমন্ত্রনা দেয়ার সুযোগ আছে কি? এটা ভাবলে বা বুঝতে পারলেই আল্লাহর বর্ণিত আয়াতের ভাবার্থ বুঝতে সক্ষম হবেন। ইবলিশকে বের করে দেয়ার সময় ইবলিশ রবের কাছ থেকে একটি ক্ষমতা চেয়ে নিয়েছিল যে, আমি যেন তোমার আদমের শিরায় শিরায় প্রবেশ করতে পারি। আল্লাহ তার আবেদন মঞ্জুর করে শর্ত দিয়েছিলেন তবে আমার অনুগত বান্দদের ব্যাতিত। ফলে ইবলিশ আদমের শিরায় অর্থাৎ নফসে আম্মারায় অবস্থান নিল। প্রতিটি মানুষেরর এই নফসের অবস্থান আছে। তাই প্রতিটি মানুষের মধ্যে শয়তান তার জন্ম লগ্ন হতেই বিরাজ করে। তবে আল্লাহর নির্দেশ আদেশ মত চলতে পারলে সে আল্লাহর অনুগত বান্দা হয়ে যায়। তার সে অবস্থান নফসে লাতামাউ বা নফসে মুতাম্মাইনে উন্নিত থাকে। ইবলিশ তখন পরাভুত হয় কুমন্ত্রনা দিতে। আদম যখন আল্লাহর একটি পরীক্ষামুলক আদেশ অমান্য করে বসল, তখন তার নফসে আম্মারা শয়তানের অনুরুপ কাজ করে বসল। সে আল্লাহর অনুগত বান্দা আর রইল না। বেহস্ত থেকে বাহিরে নিক্ষিপ্ত হল এবং আল্লাহ বলে দিলেন আমার তরফ হতে হেদায়েতের নির্দেশ গেলে এবং তুমি তা অনুসরন করলে আবার তোমার পুর্ব অবস্থায় আসতে পারবে। তাই যে কোরান আজ পড়ছেন তা প্রথম নাযিল সূচনা হয় আদমের নিকট। আদম তা অনুসরন করায় আবার পরিশুদ্ধ হয় এবং আমরা মানুষ একই ধারায় চলছি।
আদম আঃ এর উপর প্রথম কোরানের নির্দেশ নাযিল হয়েছিলঃ
➡️ ‘যখন আমার পক্ষ হতে তোমাদের নিকট সৎপথের কোন নির্দেশ আসবে তখন যারা আমার সৎপথের নির্দেশ অনুসরণ করবে তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না (২:৩৮)।
‘হে বনী আদম! যদি তোমাদের মধ্য হতে কোন রাসূল তোমাদের নিকট এসে আমার আয়াত বিবৃত করে তখন যারা সাবধান হবে এবং নিজেদের সংশোধন করবে, হলে তাদের কোন ভয় থাকবে না এবং তারা দুঃখিতও হবে না (৭:৩৫)।
‘আমার পক্ষ হতে তোমাদের নিকট সৎপথের নির্দেশ আসলে যে আমার পথ অনুসরণ করবে সে বিপথগামী হবে না ও দুঃখ-কষ্ট পাবে না ( ২০:১২৩)।
প্রকৃত শয়তান নামে আলাদা কোন দেহ অবায়ব বিশিষ্ট শয়তান নাই। জীনদের ক্ষেত্রেও অনুরুপ। তাই বলা হয় কোরানে আমি জীন ও মানব শয়তানের নিকট হতে পানা চাই।
নিষিদ্ধ বৃক্ষ বলতেও কোন আম জাম তেতুল গাছের মত বৃক্ষ বেহেস্তে নাই। এটা একটি নিষেধাজ্ঞার উপমা মাত্র। যেমন বৃক্ষ,পর্বত, জীবজন্তু, চন্দ্র- সূর্য আল্লাহকে সিজদা করে। তার মানে এই নয় মাথা মাটিতে ঠুকে সেজদাহ করে। এই সিজদা হল আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলা। অর্থাত স্রষ্টা যাকে যেভাবে, যে উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করে প্রোগ্রাম সেট করে দিয়েছেন সেভাবেই চলাকে সিজদা বুঝায়াছেন। আজাজিলকেও বেহেস্তে আদী মানব আদম আঃ কে এই সিজদাই করতে বলেছিলেন। তুমি আদমকে মেনে নাও আমার হুকুম, অনুগত হও।
মাটিতে মাথা ঠুকিয়ে সিজদা নয়। মাটিতে মাথা ঠুকিয়ে সিজদার মালিক একমাত্র রব নিজে।