১২৫ টি শব্দের অর্থ জানলে কুরআন বুঝা অনেকটা-ই সহজ হবে!
1st day:
1.هَذَا[হাযা](this(male-এটা
2.هَـذِهِ -[হাযিহি]this(female এটা)
3.هَـؤُلآءِ -[হা-উলা-ই]these (এইসকল)
4.ذَلِكَ -[যালিকা]that(male যাহা, যে)
5.تِلْكَ -[তিলকা]that(female যাহা,যে)
2nd day :
6.أُولَئِكَ -[উলাইকা]those(যাহারা,সেগুলো)
7.اَلَّذِىْ -[আল্লাযি]who(male যে)
8.اَلَّتِىْ -[আল্লাতি]who (female)
9.اَلَّذِيْنَ -[আল্লাযিনা]those who(তোমরা যারা)
10.تَحْتَ -[তাহতা]under(তলদেশে,নিচে)
3rd day :
11.فَوْقَ -[ফাওক্বা]above(উপর)
12.قَبْلَ -[ক্ববলা](before -(সামনে,আগে
13.ﺑَﻌْدَ -[বা’দা]after(পরে,পরবর্তী কালে,)
14.بَيْنَ -[বাইনা]between(মধ্যবর্তী স্থানে)
15.دُونَ -[দুনা]besides(তুলনায়,পার্শ্বে)
4th day :
16.عِنْدَ -[‘ইন্দা]near (নিকটবর্তী, প্রায়)
17.يَمِيْنْ -[ইয়ামিন]right(ন্যায়,ঠিক,সত্য)
18.شِمَالْ -[শিমাল]left(বাদিকে)
19.ٱللَّه -Allah
20.رَب -রব
5th day :
21.أَرْض -[আরদ্বা](পৃথিবী (World
22.قَوْم -[ক্বওম]nation জাতি
23.ءَايَة -[আয়াহ]চিহ্ন /আায়াত
24.كُل -[কুল্লু]every (প্রত্যেক, সব)
25.رَسُول -[রসূল]messenger (দূত)
6th day :
26.يَوْم -[ইয়াওম] day (দিন)
27.عَذَاب – [‘আযাব] punishment (আজাব)
28.سَمَآء -[সামা’] sky(আকাশ)
29.شَىْء -[শাইই্] thing(জিনিস,ঘটনা,ব্যাপার)
30.كِتَاب -[কিতাব
7th day :
31.حَق -[হাক্ব] truth (সত্য)
32.نَاس – [নাস] people (সম্প্রদায়)
33.مِن – [মিন] from (হতে, থেকে)
34.فِى -[ফী] in (অভ্যন্তরে, মধ্যে)
35.عَلَى -[‘আলা] upon (সন্নিকটে)
8th day :
36.اِلَى -[ইলা] to (কাছে, প্রতি)
37.عَن -[‘আন] about (সম্পর্কিত,সম্পর্ক)
38.حَتَّی -[হাঁত্তা] until (যতক্ষণ না)
39.مَعَ -[মা’আ]with(একত্রে, সঙ্গে)
40.بِ -[বি]with(সাথে)
9th day:
41.كَ -[কা]like (মত,প্রায়)
42.لِ -[লি] for (জন্য)
43.مَن -[মান] who (যে)
44.مَا / مَاذَا -[মা যা] (what (কী, যাহা
45.أَيْنَ -[আইনা] where (যেথায়,কোথায়)
10 the day :
46.مَتى -[মাতা] when(কখন,তখন)
47.لِمَ / لِمَاذَا -[লিমা/লিমা যা] why(কেন,কী জন্য)
48.كَيْفَ -[কাইফা] how (কেমন,কিভাবে)
49.هَلْ -[হাল] are (হয়)
50.أَيُّ -[আইয়্যু] which (যেটি, যেগুলো)
11 the day :
51.كَمْ -[কামা] how much (কতোটুকু)
52.لَا -[লা] no(না)
53.مَا -[মা] not (মোটেই নয়)
54.لَمْ -[লাম] not (নয়)
55.لَنْ -[লান] never (কখনোও না)
12 th day :
56 .كَلَّا -[কুল্লা] nay (বস্তুত)
57.لَيْسَ -[লাইসা] it is not (মতো নয়)
58.بَلَى -[বালা] of course (নিশ্চয়ই)
59.نَعَمْ [নাআ’ম]-yes
60.مُؤْمِن -[মু’মিন] believer(বিশ্বাসী)
13 th day :
61.سَبِيل -[সাবিল] way (পথ,উপায়)
62.أَمْر -[আম্র]command (আজ্ঞা, নির্দেশ)
63.بَعْض -[বা’দ] some (কেহ,কিছু)
64.خَيْر -[খইর] better (উত্তম, শ্রেষ্ঠ)
65.إِلَٰه -ইলাহ
14 th day :
66.آخِر -[আখির] last ( শেষ)
67.جَنَّة -[জান্নাহ] বাগান
68.نَار -[নার] fire ( আগুন)
69.غَيْر -[গইর] without (ব্যতিরেকে,ব্যতীত)
70.قَلْب -[ক্বলব] heart ( অন্তর)
15th day :
71.عَبْد -[আব্দ]slave (গোলাম)
72.أَهْل -[আহল] family (দল,পরিবার)
73.يَد -[ইয়াদ] hand(আয়ত্তে,হাত)
74.قَالَ -[ক্বলা] he said (বলেছেন)
75.كَانَ [কানা] -he was
16th day :(verbal)
76.ءَامَنَ- [আমানা-he believed (তিনি বিশ্বাস করেছিলেন)
77.عَلِمَ -[আলিমা]he knew (তিনি জানতেন)
78.جَعَلَ -[জা’আলা]he made (তৈরী করেছেন)
79.كَفَرَ -[কাফার] he disbelieved (অবিশ্বাস করেছিলো)
80.جَآءَ [জাআ]-he came
17th day :
81.عَمِلَ -[আমিলা]he did (করেছিলেন)
82.آتَى -[আ—তা] he gave (তিনি দিয়েছেন/লেন)
83.رَءَا -[—রআ]he saw (তিনি দেখেছিলেন)
84.أَتَى -[আতা]he came (তিনি এসেছিলেন)
85.شَآءَ -[শা—আ] he wished (ইচ্ছে পোষণ করেছিলেন)
18th day :
86.خَلَقَ -[খলাক্ব] he created (তিনি তৈরী করেছেন)
87.أَنزَلَ -[আংযালা]he sent down(তিনি প্রেরণ করলেন)
88.كَذَّبَ -[কাযযাবা] he denied (মিথ্যে বলা অর্থে ব্যবহৃতও হয়,অস্বীকার করা অর্থেও)
89.دَعَا -[দা’আা] he invoked (প্রার্থনা করা অর্থে)
90.ٱتَّقَى -[আত্তাক্বা] he feared (ভয়)
19th day :
91.هَدَى -[হাদা] he guided (পরিচালিত করলেন)
92.هُوَ -[হুয়া] he (তিনি,সে)
93.هُمَا -[হুমা] they both (উভয়েই)
94.هُمْ -[হুম] they (male -তারা)
95.هِيَ -[হিয়া] she (এটা স্ত্রীবাচক)(সে)
20 th day :
96.هُنَّ -[হুন্না] they (female তারা)
97.أَنْتَ -[আংতা] you (male,তুমি)
98.أَنْتُمَا -[আংতুমা] you both (তোমরা উভয়েই)
99.أَنَا -[আনা] I (আমি)
100.نَحْنُ -[নাহঁনু] we (আমরা)
উপরিউক্ত শব্দগুলোর সম্ভাব্য বাংলা অর্থ আমি দেয়ার চেষ্টা করেছি,তবে বিভিন্ন আয়াতে শব্দগুলোর অর্থ ভিন্ন হতে পারে সে ব্যাপারে ইনশাআল্লাহ খেয়াল রাখবেন।
যেহেতু কোরআনে কারিম আমাদের জীবনের সঠিক গাইড লাইন দেয়। সে জন্যে অর্থ বুঝে পড়ার চেষ্টা করতে হবে। সকাল, কিংবা রাতে অথবা সাহরির আগে-পরে তাফসির চর্চার কাজ করতে পারেন। কোরআনে কারিমকে বুক সেলফে সাজিয়ে রেখে লাভ নেই। অনুবাদসহ বাংলা তাফসির গ্রন্থ কিনে ঘরের শোভা বাড়িয়ে লাভ নেই। কোরআন শরিফ এবং তাফসিরগুলোকে সেলফ থেকে নামিয়ে পড়ার টেবিলে আনতে হবে, নিয়মিত পড়তে হবে।
আল্লাহ্ কোরআনে ৪ বার বলেছেন–
আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে । অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি ? (সূরা কামার ৫৪:১৭, ২২, ৩২, ৪০)
তাই চলুন কোরআনকে কোরআনের ভাষাতেই বুঝার চেষ্ঠা করি ।
নিম্নোক্ত ৬৫টি আরবী শব্দ ও তার অর্থ গুলো…
√কুরআন সঠিকভাবে বুঝতে সাহায্য করবে,
√মতভেদ ও বিশৃঙ্খলা দূর করবে ও
শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সংঘবদ্ধ হওয়া ও একত্রিত থাকা সহজ করবে।
[আরবী একই শব্দের একাধিক সমার্থক অর্থ হতে পারে কিন্তু ভিন্নার্থক একটি অর্থও হতে পারে না বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জানা ও বুঝার অনুরোধ করছি।]
১) ইবাদত= মান্য করা।
২) দ্বীন= জীবন ব্যবস্থা
৩) আল’আমীন= শুধু জ্ঞানীদের
৪) আমীন= বিশ্বাসভাজন
৫) সালাম = শান্তি
৬) ইসলাম= যেখানে শান্তি বিদ্যমান
৭) মুসলিম= যারা শান্তির জন্য আত্নসমর্পণকারী
৮) ঈমান = বিশ্বাস (অন্ধভাবে)
৯) ঈমানদার = বিশ্বাসী।
১০) মুত্তাকী = যারা আত্নবিশ্বাসী (আল্লাহ সচেতন)// যারা বিশ্বাস+পরিশোধিত কর্ম করে।
১১) মুমিন= যারা পরিপূর্ণভাবে আত্নবিশ্বাসী// আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দা, যারা মুত্তাকীদের ঈমাম।
১২) সালাত= দায়িত্ব কর্তব্য সমূহ
১৩) যাকাত= পরিশুদ্ধতা অর্জন করা
১৪) সিয়াম= বিরত থাকা (পানাহার ও অসার কথা বলা থেকে)
১৫) কালিমা= আল্লাহর বানীসমূহ (সম্পূর্ণ আল কিতাব বা আল কুরআন)
১৬) হাদিস= বানী (আল্লাহ বানীসমূহ আল্লাহর মনোনীত রাসুলের মাধ্যমে প্রচার করা হলে তখন তা হাদিস)
১৭) বয়ান= কথা বা বানীর মাধ্যমে বর্ণনা (ইনসানদের মাধ্যমে আল্লাহর বানী প্রচার করা হলে আল্লাহর সেই বানী সমূহই বয়ান)
১৮)নবী= সংবাদ বাহক।
১৯) রাসুল= বার্তাবাহক।
২০) কিতাব= লিখিত বস্তু
২১) কুরআন =যা বার বার পাঠ করা হয়।
২২) তাওরাত = আইন বা বিধান
২৩) যাবুর= খন্ড খন্ড (কিতবের অংশ)
২৪) ইঞ্জিল =সুসংবাদ ও সতর্ক বাণী (আল কিতাবের অংশ)
২৫) রুকু= মেনে নেয়া বা নত হওয়া
২৬) সিজদা= মেনে নিয়ে মনে রাখা বা মেনে চলা
২৭) জিহাদ = সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা
২৮) কতল= প্রতিহত করা ( প্রতিহত করার চেষ্টা করলে প্রতিরোধ বা আহত বা নিহত হতে পারে)
২৯) কালব= অন্তর, যা দিয়ে চিন্তা গবেষণা করা, স্মৃতি বা স্মরণ বা জ্ঞানভান্ডার বা জ্ঞানবুদ্ধি সংরক্ষণ করা হয়।
৩০) নাফস = অন্তর, যা দিয়ে বিবেচনা ও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
৩১) রুহ= অন্তর, যা দিয়ে আল্লাহর নির্ধারিত সময়ের জন্য আদেশ ঘটিত কাজ সম্পাদন করা হয়।
৩২) কিবলা= দিক (ভালো ও মন্দ দুটি দিক আছে)
৩৩) হজ্জ= মহা সম্মেলন
৩৪) জুমআ= একত্রিত হওয়া
৩৫) শহীদ= সাক্ষী
৩৬) কিয়াম= দাড় করানো বা প্রতিষ্ঠা করা।
৩৭) সাদাকা= দান করা
৩৮) ইউনফিকুন= ব্যয় করা।
৩৯) মাসজিদ= সিজদার স্থান বা আল্লাহর আদেশ, উপদেশ, নিষেধ, বিধান মেনে নেয়া ও বাস্তবায়নের স্থান।
৪০) মুহাম্মাদ = প্রশংসিত।
৪১) খাতাম= সীল বা অংকিত
৪২) আখির= শেষ
৪৩) হাশর= বিচার দিবস
৪৪) মিযান= ন্যায় বিচারের মানদণ্ড
৪৫) হুদা= পথ
৪৬) নাস = সাধারণ মানুষ (ঈমানদার)
৪৭) ইনসান= মধ্যম পন্থার মানুষ (মুত্তাকী)
৪৮) বাসার = উত্তম মানুষ (মুমিন, নবী, রাসুল, শহীদ, সিদ্দিক ইত্যাদি)
৪৯) ঈমাম= নেতা
৫০) তাসবিহ = পুনরাবৃত্তি করা
৫১) যিকির= স্মরণ করা
৫২) ওহী= জীবন ব্যবস্থাপনার যাবতীয় জ্ঞান,যা কিতাব থেকে স্মরণে আসে।
৫৩) নাযিল= অবতীর্ণ হওয়া, কিতাব পড়ার সময় “জ্ঞান” যেভাবে কালবে স্থানান্তরিত হয়।
৫৪) আদম= মানুষ
৫৫) শয়তান= দূরত্ব সৃষ্টিকারী
৫৬) আমল = কাজ বা কর্ম
৫৭) আমলে সালেহ= পরিশোধিত কাজ, ভেজাল মুক্ত কাজ।
৫৮) হালাল= বৈধ
৫৯) হারাম= অবৈধ বা নিষিদ্ধ
৬০) হুর= সংগী
৬১) কাফির = যারা অবিশ্বাস করে, অমান্য করে, অস্বীকার করে, গোপন করে।
৬২) মুনাফিক=যারা প্রতারক, ভন্ড, মুখোশধারী, মুখে বলে এক কথা আর অন্তরে অন্য কথা, আমানতের খিয়ানতকারি, প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে না।
৬৩) মুশরিক= যারা আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার করে ও আল কিতাবের সাথে অন্য অন্য কিতাবকে অংশীদার সাব্যস্ত করে।
৬৪) যালিম= সীমালঙ্ঘনকারী, অত্যাচারী।
৬৫) ফাসিক= ফ্যাতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী।
একটু যোগ করতে চাই। যেমন ক্রমিক নং ১৮- নবী শব্দের মুল অর্থ হলো অদৃশ্যের সংবাদদাতা। ক্রমিক নং ৫২- “ওহী” মহান রবের ইচ্ছায় তাঁর যে কোন প্রিয় বান্দা /বান্দির নিকট যে কোন সময় আসতে পারে। যেমন সালামুন আলা মুসা এর মায়ের কাছে আল্লাহ ওহী করেছেন (সুরাতুন কাসাস আয়াত নং ০৭)। ক্রমিক নং ৫৩- “নাজিল” শব্দের মুল অর্থ যাহা রবের ইচ্ছায় উপর থেকে নিচের দিকে আসে। যেমন আল্লাহ বৃষ্টি নাজিল করেন। ক্রমিক নং ৫৪- “আদম” প্রথম মানুষ।
“আপনি বলুনঃ তোমরা কসম খেয়ো না। সঠিক আনুগত্য করো, তোমরা যা আমল করো নিশ্চয় আল্লাহ সেটা জ্ঞাত।” — কুরআন ২৪ঃ৫৩
★★★ শয়তান কুরআনের সরল পথে বসে, মানবষরূপী শয়তানদের মাধ্যমে মুমিনদের কে বিভ্রান্ত করার জন্য কুরআনের যে সকল শব্দ সমূহের বিকৃত ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে ‘আনুগত্য’।
وَمَن يُطِعِ ٱللَّهَ وَٱلرَّسُولَ فَأُو۟لَٰٓئِكَ مَعَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمَ ٱللَّهُ عَلَيْهِم مِّنَ ٱلنَّبِيِّۦنَ وَٱلصِّدِّيقِينَ وَٱلشُّهَدَآءِ وَٱلصَّٰلِحِينَۚ وَحَسُنَ أُو۟لَٰٓئِكَ رَفِيقًا
যারা আল্লাহ ও রসূলের আনুগত্য করবে তারা আল্লাহর অনুগ্রহভাজন নবী, সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তি, শহীদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিদের সঙ্গী হবে। আর সঙ্গী হিসেবে তারাই উত্তম। (আন-নিসা ৪:৬৯)*
* এখানে আল্লাহর আনুগত্য বলতে কুরআন কে বুঝানো হয়েছে আর রাসূলের আনুগত্য বলতে বার্তা বাহকের বার্তার আনুগত্য কে বুঝানো। উভয় ক্ষেত্রে কুরআন কে বুঝানো হয়েছে। وَ অব্যয়টি দিয়ে একই বিষয়কে দুই ভিন্ন রূপে বুঝাতে ব্যবহার হয়েছে। وَ অব্যয়টি যে একই বিষয়কে দুই ভিন্ন রূপে বুঝাতে ব্যবহার হয় তার প্রমানে নিচের আয়াত দুইটি লক্ষ্য করুন।
يَٰٓأَهْلَ ٱلْكِتَٰبِ قَدْ جَآءَكُمْ رَسُولُنَا يُبَيِّنُ لَكُمْ كَثِيرًا مِّمَّا كُنتُمْ تُخْفُونَ مِنَ ٱلْكِتَٰبِ وَيَعْفُوا۟ عَن كَثِيرٍۚ قَدْ جَآءَكُم مِّنَ ٱللَّهِ نُورٌ وَكِتَٰبٌ مُّبِينٌ
হে কিতাবীগণ, তোমাদের নিকট আমার রাসূল এসেছে, কিতাব থেকে যা তোমরা গোপন করতে, তার অনেক কিছু তোমাদের নিকট সে প্রকাশ করছে এবং অনেক কিছু ছেড়ে দিয়েছে। অবশ্যই তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে আলো ও স্পষ্ট কিতাব এসেছে।(আল-মা’য়েদা ৫:১৫)
يَهْدِى بِهِ ٱللَّهُ مَنِ ٱتَّبَعَ رِضْوَٰنَهُۥ سُبُلَ ٱلسَّلَٰمِ وَيُخْرِجُهُم مِّنَ ٱلظُّلُمَٰتِ إِلَى ٱلنُّورِ بِإِذْنِهِۦ وَيَهْدِيهِمْ إِلَىٰ صِرَٰطٍ مُّسْتَقِيمٍ
‘এর’ দ্বারা তিনি তাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন, তাদেরকে নিরাপত্তার পথ প্রদর্শন করেন এবং তাদেরকে স্বীয় নির্দেশ দ্বারা অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে আনয়ন করেন এবং সরল পথে পরিচালনা করেন।(আল-মা’য়েদা ৫:১৬)
# দেখুন (نُورٌ وَّكِتَابٌ مُبِين ৫:১৫) এই আয়াতে আল্লাহ্ ‘নূর ও কিতা-বুম মুবীন’ (জ্যোতি ও সুস্পষ্ট গ্রন্থ) একই সাথে উল্লেখ করেছেন এবং এই দুইয়েরই উদ্দেশ্য হচ্ছে কুরআন। কেননা এই দুইয়ের মধ্যে وَ সংযোজক অব্যয়টি পাশাপাশি দুই বিশেষ্যের ভিন্নতা বুঝাতে ব্যবহূত হয়নি; বরং ভিন্ন রূপে একই বিষয়কে বুঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। এই অব্যয়টি আসলে একই বিষয়ের দুই ভিন্ন রূপের সংযোজক অব্যয়। যার স্পষ্ট প্রমাণ কুরআনের পরবর্তী (৫:১৬) আয়াত, যেখানে বলা হচ্ছে يَهدِي بِهِ الله অর্থাৎ এর দ্বারা আল্লাহ হিদায়াত করেন বা সুপথ দেখান। যদি نور ও كتاب আলাদা আলাদা জিনিস হত, তাহলে কুরআনের এই বাক্যটি এইরূপ হত, يَهدِي بِهِمَا الله অর্থাৎ, সর্বনামটি একবচন না হয়ে দ্বিবচন হত (ه) একবচন না হয়ে هما দ্বিবচন হত এবং অনুবাদ ‘এর’ দ্বারা তিনি তাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন’ না হয়ে ‘উভয়’ দ্বারা তিনি তাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন’ হত। কুরআনের এই বাক্য থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত হলো যে, ‘নূর’ ও ‘কিতা-বুম মুবীন’ উভয় থেকে উদ্দেশ্য ‘কুরআন’। وَ অব্যয়টি একই বিষয়কে বুঝানোর দুই ভিন্ন রূপের সংযোজন হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। আর ‘নূর’ বলতে যে কুরআনকে বুঝানো হয়েছে, তার প্রমাণে সূরা তাগাবুনের ৮ নাম্বার আয়াতটি দেখুন।
فَـَٔامِنُوا۟ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ وَٱلنُّورِ ٱلَّذِىٓ أَنزَلْنَاۚ وَٱللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
অতএব তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের এবং আমি যে নূর অবতীর্ণ করেছি তার প্রতি ঈমান আন। আর তোমরা যে আমল করছ আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।(আত-তাগাবুন ৬৪:৮)
# অনুরূপ ভাবে আসুন আমরা এবার গভীর ভাবে অনুধাবনের চেষ্টা করি সূরা নূরের ৫৪ নাম্বার আয়াতটি। আয়াতের শুরুতে বলা হয়েছে “আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রসূলের আনুগত্য কর” আয়াতের পরের অংশে تُطِيعُو শব্দের পরে এক বচনে অব্যয় হিসাবে এসেছে هُ। এতে প্রমান হয় আল্লাহ ও রাসূল সত্তাগত ভিন্ন কিন্তু আনুগত্যের ক্ষেত্রে অভিন্ন। এই জন্যই এখানে একবচনের অব্যয় هُ ব্যবহার করা হয়েছে। আর সেই অভিন্ন বিষয়টি হচ্ছে আল্লাহর নাজিলকৃত কিতাবের আনুগত্য করা। যারা এই আনুগত্যের বিষয়টির মধ্যে পার্থক্য করে তারাই কুফরীতে লিপ্ত।
قُلْ أَطِيعُوا۟ ٱللَّهَ وَأَطِيعُوا۟ ٱلرَّسُولَۖ فَإِن تَوَلَّوْا۟ فَإِنَّمَا عَلَيْهِ مَا حُمِّلَ وَعَلَيْكُم مَّا حُمِّلْتُمْۖ وَإِن تُطِيعُوهُ تَهْتَدُوا۟ۚ وَمَا عَلَى ٱلرَّسُولِ إِلَّا ٱلْبَلَٰغُ ٱلْمُبِينُ
বলুনঃ আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রসূলের আনুগত্য কর। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তার উপর ন্যস্ত দায়িত্বের জন্যে সে দায়ী এবং তোমাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্বের জন্যে তোমরা দায়ী। তোমরা যদি তাঁর আনুগত্য কর, তবে সৎ পথ পাবে। রসূলের দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টরূপে পৌছে দেয়া।(আন-নূর ২৪:৫৪)
إِنَّ ٱلَّذِينَ يَكْفُرُونَ بِٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَيُرِيدُونَ أَن يُفَرِّقُوا۟ بَيْنَ ٱللَّهِ وَرُسُلِهِۦ وَيَقُولُونَ نُؤْمِنُ بِبَعْضٍ وَنَكْفُرُ بِبَعْضٍ وَيُرِيدُونَ أَن يَتَّخِذُوا۟ بَيْنَ ذَٰلِكَ سَبِيلًا
নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের সাথে কুফরী করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলগণের মধ্যে পার্থক্য করতে চায় এবং বলে, ‘আমরা কতককে বিশ্বাস করি আর কতকের সাথে কুফরী করি’ এবং তারা এর মাঝামাঝি একটি পথ গ্রহণ করতে চায়।(আন-নিসা ৪:১৫০)