পবিত্র কুরআনে বিশ্বাসের দিকনির্দেশনার উপাদান:
৩) কুরআনই একমাত্র হাদিস যা আমাদের বিশ্বাস করা উচিত। আল্লাহ কুরআনকে “হাদিস/حَدِيثٍ” শব্দের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন এবং এটিই একমাত্র এবং সর্বোত্তম “হাদিস” , যা আমাদের অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। কারণ এতে ধর্মের সম্পূর্ণ এবং নিখুঁত সত্য রয়েছে: “বা তারা বলেঃ এই কোরআন সে নিজে রচনা করেছে? বরং তারা অবিশ্বাসী। যদি তারা সত্যবাদী হয়ে থাকে, তবে এর অনুরূপ কোন হাদিস উপস্থিত করুক। (৫২:৩৩-৩৪); “আল্লাহ সর্বোত্তম হাদিস তথা কিতাব নাযিল করেছেন, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ, পূনঃ পূনঃ পঠিত। এতে তাদের লোম কাঁটা দিয়ে উঠে চামড়ার উপর, যারা তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে, এরপর তাদের চামড়া ও অন্তর আল্লাহর স্মরণে বিনম্র হয়। এটাই আল্লাহর পথ নির্দেশ,….” ( ৩৯:২৩); “…এবং আল্লাহর চেয়ে সত্য কথা কে বলে?” (৪:৮৭); “সুতরাং যারা এই হাদিস প্রত্যাখ্যান করে , তাদেরকে আমার হাতে ছেড়ে দিন। আমি এমন ধীরে ধীরে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাব যে, তারা জানতে পারবে না।” (৬৮:৪৪); “এর বাইরে কোন হাদিসে তারা বিশ্বাস করবে?” (৭৭:৫০); “তারা কি প্রত্যক্ষ করেনি আকাশ ও পৃথিবীর রাজ্য সম্পর্কে এবং যা কিছু সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ বস্তু সামগ্রী থেকে এবং এ ব্যাপারে যে, তাদের সাথে কৃত ওয়াদার সময় নিকটবর্তী হয়ে এসেছে? বস্তুতঃ এরপর কোন হাদিসে তারা বিশ্বাস করবে?” (৭:১৮৫)
বস্তুত উদ্ধৃত আয়াতগুলিতে প্রশ্নের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের মৃত্যুর অনিবার্য নির্ধারিত সময়টি ঘটানোর আগে চিন্তা করার আমন্ত্রন জানিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে, সর্বশক্তিমান আল্লাহ একমাত্র কুরআনে বিশ্বাসকে তাঁর প্রতি বিশ্বাস করার সমান করেছেন। কুরআনের হাদিস ছাড়া অন্য কোন হাদিসে যেমন বিশ্বাস করা উচিত নয়, তেমনি আল্লাহকে একমাত্র এবং সত্য ইলাহ ছাড়া অন্য কিছুতে বিশ্বাস করা উচিত নয়। প্রকৃত বিশ্বাসীদের জন্য আল্লাহ এবং তাঁর বাক্যই যথেষ্ট এবং এই কথাগুলিই এই আয়াতগুলিতে জানানো হয়েছে: “এগুলো আল্লাহর আয়াত, যা আমি আপনার কাছে আবৃত্তি করি যথাযথরূপে। অতএব, আল্লাহ ও তাঁর আয়াতের পর তারা কোন হাদিসে বিশ্বাস স্থাপন করবে। প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপাচারীর দুর্ভোগ। সে আল্লাহর আয়াতসমূহ শুনে, অতঃপর অহংকারী হয়ে জেদ ধরে, যেন সে আয়াত শুনেনি। অতএব, তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন।” (৪৫:৬-৮)
এই আয়াতগুলি উল্লেখ করে সেই সকল মানুষকে , যারা আল্লাহর বাণী কুরআন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং এর পরিবর্তে অন্যান্য হাদিস, বর্ণনা এবং রচনাগুলিকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখে। প্রকৃতপক্ষে, এই ধরনের মানুষ সব যুগে এবং সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্যমান: “মানুষের মধ্যে এমন ব্যক্তি আছে যারা ইচ্ছা করে বিভ্রান্তিকর গল্পের (লাহুয়াল হাদিস) ব্যবসা করে কোন জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহর পথ থেকে দূরে নিয়ে যেতে এবং এটিকে উপহাস করার জন্য। এদের জন্য রয়েছে অবমাননাকর শাস্তি। আর যখন তার কাছে আমার আয়াতগুলো পাঠ করা হয়, তখন সে অহংকারে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন সে শুনতে পায়নি, যেন তার কানে বধিরতা রয়েছে। অতএব তাকে যন্ত্রণাদায়ক আযাবের খবর দাও।” (৩১:৬-৭)।