কেন শুধু কোরআনকে বিধান মেনে নেব? হাদীসে বিশ্বাস করি যদি তা কোরানে থাকে অথবা কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক না হয়।
“নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের জন্য একমাত্র কোরআন কে করেছেন বিধান । নিশ্চয় নির্ধারিত সময়ে তারই কাছে ফিরে যেতে হবে । এটাই সেই একমাত্র কিতাব যাহাতে কোনই সন্দেহ নাই । যাহারা আল্লাহ কে প্রকৃত ভয় করে কেবলমাত্র তাদেরকেই পথ দেখান ।”(কাসাস, ২৮/৮৫, বাকারা, ২/২)
“তাদের জন্য কি আল্লাহর শরিক আছে , যে দ্বীনের ব্যাপারে তারা বিধান রচনা করে? না, এই অনুমতি আল্লাহ কাউকে দেন নাই ।” ( আশশুরা, ৪২/২১)
“তুমি কি ঐ ব্যাক্তি কে দেখেছ, যে তার খেয়াল খুশিকে বিধাতা হিসেবে গ্রহণ করেছে ?” (আল- ফুরকান, ২৫/৪৩)
“নিশ্চয়ই শয়তান তাদের আওলিয়াদের কাছে ওহী করে । যা দ্বারা তারা তোমাদের সাথে বিতর্ক করে। যদি তুমি তাদের ওহীর অনুসরণ করো, তাহলে অবশ্যই মুশরিক বলে গণ্য হবে ।” (আনআম, ৬/১২১)
“আল্লাহ তার সাথে শরিক করাকে নিষিদ্ধ করেছেন, যার সপক্ষে তিনি কোনোরূপ দলিল-প্রমাণ অবতীর্ন করেন নাই; অথচ তোমরা আল্লাহ সম্পর্কে এমন কথা বলো, যা আল্লাহ তোমাদেরকে জানান নাই ।” (আরআফ, ৭/৩৩)
“ইতোপূর্বে আল্লাহ এমন কোনো রসুলই প্রেরণ করেন নাই এই ওহী ব্যাতিত যে, আল্লাহ ব্যাতিত কারো হুকুম গৃহীত নয়, তাই দাসত্ব শুধু তারই হুকুমে ।” ( আম্বিয়া, ২১/২৫)
“তাদেরকে দেখনা, যাদের ভাগ্যে আল্লাহ একখানা কিতাব দিয়েছেন ? তাদেরকে আল্লাহর এক কিতাবের দিকে ডাকা হয়। যা তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে মিমাংসা বাণী হুকুম। অথচ তাদের অধিকাংশই ফিরে যায় আর তাঁরাই পরমুখী । আর তা এই কারণে যে, তাদের অপরাধ বশতঃ তারা ধারণা করে বলে, জাহান্নামের আগুনের শাস্তি অল্প কয়েকদিন ব্যতীত আমাদেরকে ভোগ করতে হবে না । আসলে, তারা নিজ হাতে যা রচনা করেছে, সেই রচনায় দ্বীন সম্পর্কে তাদের ধোকায় ফেলেছে ।” (আল ইমরান, ৩/২৩,২৪)
“যখন তাদের পথভ্রষ্টরা তাদের রবের সাথে শরিক স্বাব্যস্ত করে, তা এই জন্য যে- আমি তাদেরকে যে বিধান দিয়েছি, তা প্রত্যাখ্যান করার জন্য, অতঃপর দুনিয়াবী ভোগ বিলাসে তারা ঝুকে পড়ে, তাই ক্ষণকাল পরেই এর পরিণাম তারা বুঝতে পারবে ।” (রুম, ৩০/৩৩,৩৪)
“বলো, আমিতো কেবলমাত্র আল্লাহর দাসত্ব করতেই নির্দেশ প্রাপ্ত হয়েছি । যেন তাঁর দাসত্বে কাউকে শরিক না করি । নির্দেশ প্রাপ্ত হয়েছি এই বিষয়েই মানুষকে আহবান করতে । আর সকলেরই প্রত্যাবর্তন হবে তো তাঁরই কাছে । আর এজন্যেই আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন তাঁর হুকুম সমূহ আরবি ভাষায় । এরপরেও যদি অন্যান্যদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো, সত্য জ্ঞান এসে যাবার পরেও, তাহলে তোমার জন্য থাকবে না কোনো অভিভাবক আর না থাকবে কোন রক্ষা কর্তা ।“ (রাদ্ব, ১৩/৩৬,৩৭)
“তুমি শক্ত করে আঁকড়ে ধরে থাকো ওই বিষয়, যা আল্লাহ তোমার কাছে ওহী পাঠিয়েছেন । তাহলে নিশ্চয়ই তুমি সরল সঠিক পথেই থাকবে । নিশ্চয়ই এ কোরআন তোমার জন্য আর তোমার সমস্ত মানব সম্প্রদায়ের জন্য মহা উপদেশ । সাবধান অল্প কিছুদিন পরেই (কিয়ামতে) এ কোরআনের ব্যাপারেই তোমাদেরকে প্রশ্ন করা হইবে । সকলকে জিজ্ঞাসা করো, তোমার পূর্বেও তো অনেক রসূল অতীত হয়েছে, তারা কি রহমান আল্লাহর ধর্মতত্ত্ব ব্যতীত অন্য আর কিছুর দাসত্ব করেছে ?” (যখরূফ, ৪৩/৪৩,৪৪,৪৫)
আল্লাহ বলেন,
وَ اُوۡحِیَ اِلَیَّ هٰذَا الۡقُرۡاٰنُ ﴿ۘ۱۹
“বলো, আমার কাছে (সর্বকালের জন্য সংরক্ষিত স্থায়ী বিধান হিসাবে) যা ওহী হয়, তাহাতো কেবলমাত্র এই কোরআন ।“ (আনআম,৬/১৯)
আল্লাহ বলেন,
“যখন তাদের কাছে আমার আয়াত সুস্পষ্ট ভাবে উপস্থাপন করা হয় । তখন আসলে যারা আমার সাক্ষাতে বিশ্বাসী নয়, কেবল তারাই বলবে যে, এ কোরআনের পাশে অন্য কিছু গ্রহণ করো, অন্যথায় কোরআন বদলাও । তুমি বলে দাও, এমনটি হওয়া আমার জন্য কখনোই সম্ভব নয় । আমার কাছে যা ওহী হয়, তা ব্যতীত যদি আমি অন্য কোনো বিধানের অনুসরণ করি, তাহলে ভয়াবহ সেই শাস্তির দিনে মহা আযাবের ভয় আমি রসূল আমিও করি ।“ (ইউনুস, ১০/১৫)
আল্লাহ বলেন,
“তাদের জন্য কি যথেষ্ট নয় যে, মহান আল্লাহ তাদের জন্য একখানা মহান কিতাব অবতীর্ণ করেছেন ? যা তাদের সামনে পাঠ করা হয় ! নিশ্চয় এ কিতাবে রয়েছে মহা অনুগ্রহ ও মহা উপদেশ বাণী প্রকৃত বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য ।“ (আনকাবুত, ২৯/৫১)
“নিশ্চয় তোমাদের সবার জন্য এসে গেছে এক মহান কিতাব। যাহা বিচারের মানদণ্ড জ্ঞানে পরিপূর্ণ। বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য পথনির্দেশ ও রহমত ।”(আরাফ, ৭/৫২)
اِنَّ الَّذِیۡ فَرَضَ عَلَیۡکَ الۡقُرۡاٰنَ ﴿۸۵
“নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহ একমাত্র কোরআনকে করেছেন বিধান ।“ (কাসাস, ২৮/৮৫)
হে বিশ্ববাসী, হে মানুষ, হে কিতাবের অধিকারীগন।তোমরা যদি শিরক থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহর স্নেহ ভাজন হতে চাও । তাহলে দ্বীনের ব্যাপারে গয়রুল্লাহ,তথা মানব রচিত সমস্ত কিতাব বর্জন করো আর আল্লাহর রচিত একমাত্র ” আল-কোরআন” আঁকড়ে ধরো । বর্জন করো লাহওয়াল হাদিস আর আঁকড়ে ধরো আহসানাল হাদিস। বিশ্বাস করো—-কোরআন’ই হাদিস, কোরআন’ই তাফসির, কোরআন’ই মাছালা, কোরআন’ই নূর, কোরআন ফুরকান, কোরআন মিজান,কোরআন পরিপূর্ণ, কোরআন যথেষ্ট, কোরআন একমাত্র…
فَبِأَيِّ حَدِيثٍ بَعْدَهُ يُؤْمِنُونَ ﴿٥٠
“তারা কোরআন ব্যাতিত কোন হাদিসে বিশ্বাস করে ?” (মুরসালাত,৭৭/৫০)
সমস্ত নবীগণ এবং তাদের সাহাবীগণ আল্লাহ থেকে অবতীর্ণ এক কিতাবের অনুসরণ করেই তারা হয়েছিলেন পূর্ববর্তীদের অনুসারী আর তাই তারা মুসলিম। সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট ।
হে আমার জাতি, ভিন্ন ভিন্ন বহু ইলাহ উত্তম ,না-কি এক আল্লাহ ? ভিন্ন ভিন্ন অনেক কিতাব সহজ, না-কি সহজ এক কোরআন ?
“তারা যে অনেক কিতাব অধ্যায়ন করে তা আল্লাহ দেন নাই, ইতোপূর্বে ঐ কিতাবগুলো যারা রচনা করেছে তারা আল্লাহর প্রেরিত কোন সতর্ককারী নবী রসুল ছিলেন না, আর যারা তাদের পূর্বপুরুষ তারাই এ মিথ্যা রচনা করেছে, সেখানে সত্যর এক দশমাংশও পৌছে নাই, যা আমি তাদেরকে দিয়েছিলাম । তাই তারা আমার রসুলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। তাই দেখ তাদের জন্য আমার শাস্তি ছিলো কেমন ভয়ংকর ।“ (সাবা, ৩৪/৪৪-৪৫)
হে আমার জাতি, ভয়ংকর শাস্তি তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। উদ্ধ্যত হয়ো না।
وَقُلْ آمَنْتُ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ مِنْ كِتَابٍ ﴿١٥
“বল আমি একটি মাত্র কিতাবে ঈমান আনয়ন করলাম ।” (শুরা,৪২/১৫)
আল্লাহ বলেন,
“বলো, আমি নির্দেশপ্রাপ্ত হয়েছি, একমাত্র আল্লাহর হুকুম মান্য করতে, তাঁর হুকুমে কোনো শরিক না করতে, উহার দিকেই আহবান করতে আর উহাতেই প্রত্যাবর্তন করতে । আর এভাবেই আল্লাহ অবতীর্ন করেছেন তাঁর হুকুম সমূহ আরবি ভাষায় ।”(রাদ, ১৩/৩৬,৩৭)
আল-কোরআন” সন্দেহমুক্ত, ভুলত্রুটির উর্ধে, ইহাতে কোনো গরমিল নাই । কোরআন ব্যতীত বর্তমান বিশ্বে দ্বীন বা বিধানের ব্যাপারে আর যা কিছু আছে, তাহা অবশ্যই সন্দেহযুক্ত । কখনোই তাহা জ্বাল-জয়িফ বা ভুলত্রুটির উর্ধে হতে পারে না । আল্লাহ বলেন,
اَفَلَا یَتَدَبَّرُوۡنَ الۡقُرۡاٰنَ ؕ وَ لَوۡ کَانَ مِنۡ عِنۡدِ غَیۡرِ اللّٰہِ لَوَجَدُوۡا فِیۡہِ اخۡتِلَافًا کَثِیۡرًا ﴿۸۲
“তাহারা কি কোরআন সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে না ? এ কোরআন যদি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো থেকে রচিত হতো, তাহলে অবশ্যই ইহাতে অনেক গরমিল থাকতো ।” নিসা ৪/৮২)
“এ সেই একমাত্র কিতাব, যাহাতে কোনোই সন্দেহ নাই, যাঁহারা প্রকৃতই আল্লাহকে ভয় করে, ইহা তাঁদের জন্য হেদায়েত ।” (বাকারা, ২/২)
আল্লাহ বলেন,
﴿ قُلْ إِنَّ هُدَى اللّهِ هُوَ الْهُدَى
“নিশ্চয় আল্লাহর অবতীর্ন কিতাবই একমাত্র পথনির্দেশ ।”(বাকারা, ২/১৪০)
আল্লাহ বলেন,
﴿ اِنَّ الَّذِیۡ فَرَضَ عَلَیۡکَ الۡقُرۡاٰنَ لَرَآدُّکَ اِلٰی مَعَادٍ
“নিশ্চয় আল্লাহ তোমদের জন্য বিধান করেছেন, তা একমাত্র আল-কোরআন । নিশ্চয় নির্ধারিত সময়ে তাঁরই কাছে ফিরে যেতে হবে ।
“(কাসাস, ২৮/৮৫)
আল্লাহ বলেন,
ہُوَ الَّذِیۡۤ اَرۡسَلَ رَسُوۡلَہٗ بِالۡہُدٰی وَ دِیۡنِ الۡحَقِّ لِیُظۡہِرَہٗ عَلَی الدِّیۡنِ کُلِّہٖ ۙ وَ لَوۡ کَرِہَ الۡمُشۡرِکُوۡنَ ﴿۳۳
“তিনিই আল্লাহ, যিনি পাঠিয়েছেন তাঁর রাসুলকে সন্দেহমুক্ত এক মহান কিতাব আর সত্য দ্বীনসহ; অন্য সকল দ্বীনের উপর প্রচার-প্রকাশ করার জন্য । যদিও তা মুশরিকদের পছন্দ নয় ।
(তওবা, ৯/৩৩)
শিরক থেকে বাঁচতে হলে একমাত্র কোরআন ব্যতীত দ্বীনের ব্যাপারে নিশ্চয় আর কনো কিতাব গৃহীত হবে না । কোনো নবী-রসুল আর তাঁর সঙ্গীসাথীগণ, কখনই তা গ্রহণ করেন নাই । আর এটাই হলো মুসলিম বনাম মুশরিকদের মাঝে শত্রুতা-দ্বন্দের চীরচারিত প্রধান বিষয় । আর আজও ঠিক তাই হচ্ছে, ভবিষ্যতেও তাহাই হবে । যাহার কোনো ব্যতিক্রম নাই ।