إِنَّهُ لَقَولُ رَسولٍ كَريمٍ
ইন্নাহ লা কাওলু রাসুলুন কারীম
নিশ্চয়ই এই কুরআন এক সম্মানিত রাসূলের বহনকৃত বার্তা।
اِنَّهٗ لَقَوْلُ رَسُوْلٍ كَرِيْمٍۚ ۙ
সূরা নম্বরঃ ৬৯, আয়াত নম্বরঃ ৪০
যাহারা আল্লাহ্কে অস্বীকার করে ও তাঁহার রাসূলদেরকেও এবং আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের মধ্যে ঈমানের ব্যাপারে তারতম্য করিতে চায় এবং বলে, ‘আমরা কতককে বিশ্বাস করি ও কতককে অবিশ্বাস করি’; আর তাহারা মধ্যবর্তী কোন পথ অবলম্বন করিতে চায়,
اِنَّ الَّذِيْنَ يَكْفُرُوْنَ بِاللّٰهِ وَرُسُلِهٖ وَيُرِيْدُوْنَ اَنْ يُّفَرِّقُوْا بَيْنَ اللّٰهِ وَرُسُلِهٖ وَيَقُوْلُوْنَ نُؤْمِنُ بِبَعْضٍ وَّنَكْفُرُ بِبَعْضٍۙ وَّيُرِيْدُوْنَ اَنْ يَّتَّخِذُوْا بَيْنَ ذٰ لِكَ سَبِيْلًا ۙ
সূরা নম্বরঃ ৪, আয়াত নম্বরঃ ১৫০
ইহারাই প্রকৃত কাফির, এবং কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রাখিয়াছি।
اُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الْـكٰفِرُوْنَ حَقًّا ۚ وَ اَعْتَدْنَا لِلْكٰفِرِيْنَ عَذَابًا مُّهِيْنًا
সূরা নম্বরঃ ৪, আয়াত নম্বরঃ ১৫১
অতঃপর দলগুলি নিজেদের মধ্যে মতানৈক্য সৃষ্টি করিল, সুতরাং দুর্ভোগ কাফিরদের জন্য মহাদিবস আগমনকালে।
فَاخْتَلَفَ الْاَحْزَابُ مِنْۢ بَيْنِهِمْۚ فَوَيْلٌ لِّـلَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْ مَّشْهَدِ يَوْمٍ عَظِيْمٍ
সূরা নম্বরঃ ১৯, আয়াত নম্বরঃ ৩৭
ইসলামে মানুশকে আল্লাহর খলিফা তথা প্রতিনিধি হিসেবে দেখার একটা ধারণা আছে। কুরআনে আল্লাহ বলেন: “আইজ ক্বালা রাব্বুকা লিল মালাইকাতি ইন্নি জা-ইলুন ফিল আর্দ্বি খালীফাহ।”
“স্মরণ কর, তোমার প্রতিপালক তাঁর ফেরেস্তাদেরকে বললেন, আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করতে যাচ্ছি।”
এক্ষেত্রে ইসমুজ-জাত শব্দ ব্যবহার না করে ইসমুস-সিফাত—’রব’ শব্দটি ব্যবহার করা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহ্তা’লা মানুষকে নিজের পূর্ণ সত্তার খলিফা রূপে সৃষ্টি করেন নাই। আল্লাহ অসীম এবং মানুষ সসীম। আল্লাহ স্রষ্টা, মানুষ সৃষ্টি। সুতরাং সসীম সত্তা অসীম সত্তার খলিফা হতে পারে না এবং সৃষ্টি স্রষ্টার পূর্ণ সত্তার প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না।
উদ্ধৃত আয়াতে ‘রব’ এই গুণবাচক নামের ব্যবহার অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলে দেয় যে, আল্লাহ তাঁর রবুবিয়ত অর্থাৎ পালন-নীতির প্রতিনিধিত্ব করার জন্য মানুষ সৃষ্টি করেছেন। বিশ্ব প্রকৃতি, কুরআন ও রাসুলুল্লাহ (সঃ)-এর বাক্য ও কর্ম আল্লাহর নীতি কি তাঁর পরিচয় বহন করে।
যার চিন্তা, অনুভূতি ও কর্ম আল্লাহর এই পালন-নীতির সাথে সামঞ্জস্য রাখে, তাকে রব্বানী বলা যেতে পারে। কুরআনে সুরা আল ইমরানে আল্লাহ মানুষকে রব্বানি হয়ে উঠার আহ্বান করেন। ইসলামের শিক্ষা ও ইসলামি জীবন, শাসন ও শোষণ ভিত্তিক নয়, পালন ভিত্তিক। যে ভাগ্যবান নিজকে ও আল্লাহর সৃষ্ট প্রাণ ও প্রকৃতিকে আল্লাহর পালন-নীতি অনুসারে পালন করতে পারে, সেই-ই রব্বানী।
সৈয়দ মনসুর আহমেদ
ভূমিকা : ইসলামের মর্মকথা / আবুল হাশিম
ইষৎ সম্পাদিত
আল্লাহ্র অনুমতি ব্যতীত ঈমান আনা কাহারও সাধ্য নয় এবং যাহারা অনুধাবন করে না আল্লাহ্ তাহাদেরকে কুলষলিপ্ত করেন।
وَمَا كَانَ لِنَفْسٍ اَنْ تُؤْمِنَ اِلَّا بِاِذْنِ اللّٰهِؕ وَيَجْعَلُ الرِّجْسَ عَلَى الَّذِيْنَ لَا يَعْقِلُوْنَ
সূরা নম্বরঃ ১০, আয়াত নম্বরঃ ১০০
৪ঃ৫৯)
يٰأَيُّهَا الَّذينَ ءامَنوا ওহে যারা ঈমান এনেছ
أَطيعُوا اللَّهَ وَأَطيعُوا الرَّسولَ
তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর ও আনুগত্য কর রাসুলের
وَأُولِى الأَمرِ (ওয়া উলিল আমরে)
এবং আদেশ প্রদান করার মত অভিভাবকের
مِنكُم ۖ ( মিনকুম) তোমাদের মধ্য হতে
হে মু’মিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ্ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ্র আনুগত্য কর রাসূলের এবং তাহাদের, যাহারা তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারী——— সূরা নম্বরঃ ৪, আয়াতঃ ৫৯
তোমরা কি বেআকল – আফালা তা’কিলুন?
*****
أَتَأْمُرُونَ النَّاسَ بِالْبِرِّ وَتَنْسَوْنَ أَنْفُسَكُمْ وَأَنْتُمْ تَتْلُونَ الْكِتَابَ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও এবং নিজেরা নিজেদেরকে ভূলে যাও, অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর? তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না? -২:৪৪
وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلَّا لَعِبٌ وَلَهْوٌ وَلَلدَّارُ الْآَخِرَةُ خَيْرٌ لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
আর এই দুনিয়ার জীবন ছেলেখেলা ও কৌতুক বই আর কিছুই নয়। আর পরকালের আবাসই শ্রেষ্ঠ তাদের জন্য যারা ধর্মপরায়ণতা পালন করে। তবে কি তোমরা অনুধাবন করো না? -৬:৩২
فَخَلَفَ مِنْ بَعْدِهِمْ خَلْفٌ وَرِثُوا الْكِتَابَ يَأْخُذُونَ عَرَضَ هَذَا الْأَدْنَى وَيَقُولُونَ سَيُغْفَرُ لَنَا وَإِنْ يَأْتِهِمْ عَرَضٌ مِثْلُهُ يَأْخُذُوهُ أَلَمْ يُؤْخَذْ عَلَيْهِمْ مِيثَاقُ الْكِتَابِ أَنْ لَا يَقُولُوا عَلَى اللَّهِ إِلَّا الْحَقَّ وَدَرَسُوا مَا فِيهِ وَالدَّارُ الْآَخِرَةُ خَيْرٌ لِلَّذِينَ يَتَّقُونَ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
তারপর তাদের পেছনে এসেছে কিছু অপদার্থ, যারা উত্তরাধিকারী হয়েছে কিতাবের; তারা নিকৃষ্ট পার্থিব উপকরণ আহরণ করছে এবং বলছে, আমাদের ক্ষমা করে দেয়া হবে। বস্তুতঃ এমনি ধরনের উপকরণ যদি আবারো তাদের সামনে উপস্থিত হয়, তবে তাও তুলে নেবে। তাদের কাছথেকে কিতাবে কি অঙ্গীকার নেয়া হয়নি যে, আল্লাহর প্রতি সত্য ছাড়া কিছু বলবে না? অথচ তারা সে সবই পাঠ করেছে, যা তাতে লেখা রয়েছে। বস্তুতঃ আখেরাতের আলয় ভীতদের জন্য উত্তম – তোমরা কি তা বোঝ না? -৭:১৬৯
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي إِلَيْهِمْ مِنْ أَهْلِ الْقُرَى أَفَلَمْ يَسِيرُوا فِي الْأَرْضِ فَيَنْظُرُوا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَدَارُ الْآَخِرَةِ خَيْرٌ لِلَّذِينَ اتَّقَوْا أَفَلَا تَعْقِلُونَ
আর তোমার পূর্বে জনপদবাসীদের মধ্যে থেকে মানুষ ছাড়া অন্য কাউকে আমরা পাঠাই নি যাঁদের কাছে আমরা প্রত্যাদেশ দিয়েছিলাম। কাজেই তারা কি পৃথিবীতে পর্যটন করে নি এবং দেখে নি কেমন হয়েছিল তাদের পরিণাম যারা ছিল তাদের অগ্রগামী? আর পরকালের আবাসস্থল অবশ্যই অধিকতর ভাল তাদের জন্য যারা ধর্মভীরুতা অবলন্বন করে। তোমরা কি তবে বোঝ না? -১২:১০৯
لَقَدْ أَنْزَلْنَا إِلَيْكُمْ كِتَابًا فِيهِ ذِكْرُكُمْ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
আমরা অবশ্যই তোমাদের কাছে অবতারণ করেছি এক গ্রন্থ যাতে রয়েছে তোমাদের মহত্ত্ব (তোমাদের যিকর)। তোমরা কি তবে বুঝবে না?-২১:১০
وَهُوَ الَّذِي يُحْيِي وَيُمِيتُ وَلَهُ اخْتِلَافُ اللَّيْلِ وَالنَّهَارِ أَفَلَا تَعْقِلُونَ
তিনিই প্রাণ দান করেন এবং মৃত্যু ঘটান এবং দিবা-রাত্রির বিবর্তন তাঁরই কাজ, তবু ও কি তোমরা বুঝবে না? -২৩:৮০
وَمَا أُوتِيتُمْ مِنْ شَيْءٍ فَمَتَاعُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا وَزِينَتُهَا وَمَا عِنْدَ اللَّهِ خَيْرٌ وَأَبْقَى أَفَلَا تَعْقِلُونَ
তোমাদেরকে যা কিছু দেয়া হয়েছে, তা পার্থিব জীবনের ভোগ ও শোভা বৈ নয়। আর আল্লাহর কাছে যা আছে, তা উত্তম ও স্থায়ী। তবুও তোমরা কি বোঝ না?-২৮:৬০
——-
এবং শপথ তাহাদের যাহারা মানুষের অন্তরে পৌঁছাইয়া দেয় উপদেশ-
فَالْمُلْقِيٰتِ ذِكْرًا ۙ
সূরা নম্বরঃ ৭৭, আয়াত নম্বরঃ ৫
যারা আল্লাহ ও তার রসূলের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপনকারী এবং আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলের মধ্যে ঈমানের ব্যাপারে তারতম্য করিতে চায় এবং বলে, ‘আমরা কতককে বিশ্বাস করি ও কতককে অবিশ্বাস করি’;এবং এরই মধ্যবর্তী কোন পথ অবলম্বন করিতে চায়, ইহারাই প্রকৃত কাফির, এবং কাফিরদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত রাখিয়াছ সূরা নম্বরঃ ৪, আয়াত নম্বরঃ ১৫০-১৫১
Indeed, those who disbelieve in Allah and His messengers and wish to discriminate between Allah and His messengers and say, “We believe in some and disbelieve in others,” and wish to adopt a way in between -Those are the disbelievers, truly. And We have prepared for the disbelievers a humiliating punishment.
তারিখ: 21.01.2023-Saturday-07.14 আম ৪ঃ১৫০
إِنَّ = নিশ্চয়
الَّذِينَ = যারা
يَكْفُرُونَ = অমান্য করে
بِاللَّهِ = আল্লাহকে
وَرُسُلِهِ = ও তাঁর রাসূলকে
وَيُرِيدُونَ = ও তারা চায়
أَنْ = যে
يُفَرِّقُوا = তারা পার্থক্য করবে
بَيْنَ = মাঝে
اللَّهِ আল্লাহর (প্রতি ঈমান ে)
وَرُسُلِهِ = এবং তাঁর রাসূলদের ে)
وَيَقُولُونَ = ও তারা বলে
نُؤْمِنُ = ঈমান আনবআমরা
بِبَعْضٍ = কাউকে
وَنَكْفُرُ = ও অস্বীকার করবআমরা
بِبَعْضٍ = কাউকে
وَيُرِيدُونَ = ও তারা চায়
أَنْ = যে
يَتَّخِذُوا = তারা গ্রহণ করবে
بَيْنَ = মধ্যবর্তী
ذَٰلِكَ = এর
سَبِيلًا = পথ
৪ঃ১৫১——/+
أُولَٰئِكَ = ঐসবলোক
هُمُ = তারা ই
الْكَافِرُونَ = কাফির
حَقًّا = যথার্থ
وَأَعْتَدْنَا = এবং আমরা প্রস্তুতকরেরেখেছি
لِلْكَافِرِينَ = কাফিরদের জন্য
عَذَابًا = শাস্তি
مُهِينًا = লাঞ্ছনাদায়ক