Categories
My text

জমীদারীর অবসানের পেছনের কথা

হামিদুর রহমান বড় মিয়ার—–

জমি যেভাবে খাস হলোঃ

সংগ্রহে : এ,কে,এম,একরামুল হক
যে জমিগুলো সাধারণত সরাসরি সরকারের মালিকানাধীন থাকে সেগুলো খাস জমি হিসেবে পরিচিত। অর্থাৎ যে জমিগুলো কালেক্টরের নামে রেকর্ড থাকে সেগুলোই খাস জমি।

জেলা প্রশাসক বা ডিসি যখন জমি জমার বিষয়ে কাজ করেন তখন তাকে কালেক্টর বলে। অন্যন্য সংস্থার জমি সরকারের মালিকানায় থাকলে তাকে খাস জমি বলা হয় না। কারণ জমিগুলো যে সংস্থার মালকানায় থাকে সেই সংস্থার জমি বলেই ধরা হয়-যেমন রেলের জমি।

খাস জমির কোনো ভূমি উন্নয়ন কর দিতে হয় না কিন্তু সংস্থার জমির জন্য ভূমি উন্নয়ন করে দিতে হয়।

আইনে বলা আছে, কোনো জমি যদি সরকারের হাতে ন্যস্ত থাকে ও সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে সেইগুলোই খাস জমি। সরকার এজমিগুলো বন্দোবস্ত দিতে পারেন।

১৯৫০ সালের স্টেট একুইজিশন এন্ড টেনান্সি এক্টের ৭৬ ধারায় খাস জমির বর্ণনা দেয়া হয়েছে। উক্ত ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো ভূমি যদি সরকারের হাতে ন্যস্ত হয় এবং সেই জমিগুলি যদি সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে তাহলে সরকার,এই ভূমিগুলি সরকার কর্তৃক প্রণীত পদ্ধতি অনুযায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন, অথবা অন্য কোনো ভাবে ব্যবহার করতে পারেন, সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন উপরোক্ত ভূমিগুলিকে খাস জমি হিসাবে বুঝাবে।

খাস ফার্সি শব্দ। এর অর্থ একান্ত আপন বা নিজস্ব বা নিজের।

মুঘল আমলে খালিসা ও জায়গির- এই দুই ধরনের জমি ছিল। মোগল সম্রাট খালিসা জমি নিজেই নিয়ন্ত্রণে রাখতেন।

এই জমি সম্রাটের ইচ্ছানুযায়ী জায়গির দেয়া হতো। সম্রাটের ব্যক্তিগত খরচ মেটানো জন্য কিছু আলাদা করে রাখা হতে যা সির্ফ-ই-খাস বা একান্ত নিজের হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

সম্রাট সাধারণত উর্বর জমি নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতেন। ১৭৫৭ সালে পলাশির আম্র কাননে বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পতনের পর এদেশে ইংরেজ শাসন কায়েম হয়। ইংরেজরা ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত চালু করে।

চিরস্থায় বন্দোবস্ত ব্যবস্থা প্রর্বতনের পর জমিদাররা কিছু জমি সারাসরি তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতেন। এগুলোকে তারা খাস জমি বলতেন।

১৯৫১ সালে জমি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন জারির পর জমিদারী উচ্ছেদ করা হয়।

এ আইনে জমিদারদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি নিজস্ব নিয়ন্ত্রণে রেখে বাকি জমি সরকারের কাছ অর্পন করার আদেশ দেয়া হয়। এই জমি গুলোই পরবর্তীকালে কালেক্টরের ১ নং খাস খতিয়ানে নেয়া হয় যা খাস জমি হিসেবে পরিচিত।

কারেক্টর ছাড়া অন্যান্য সংস্থার নামের রেকর্ডির খাস জমি হিসেব পরিচিত।

ভূমিহীন ব্যক্তিরা খাস জমি বন্দোবস্ত পাবার অধিকারী।

 

হিন্দু কুসুমবালাকে বিয়ে করে পয়রবিবি নাম রেখে সেই যে বর্ধমান থেকে নিয়ে এসেছিলেন জমীদার কেবরাতুল্লাহ মিয়া বাকি জীবনে আর তাকে পিতৃ পরিবারে সাক্ষাত করতে যেতে দেন নি। কি জানি তার এ দীর্ঘশ্বাসের বিচারের দায় পরবর্তি প্রজন্মকে পোহাতে হয়ছিল কি না, তা সৃষ্টি কর্তাই ভাল জানেন। তিনি নজরুলের সেই গানটির মধ্য দিয়ে তার হৃদয়ের আকুতি মাঝে মাঝেই ব্যক্ত করতেন।  মা বাবা, ভাই বোন, সকল স্বজনদের তাকে ত্যাগ করতে হয়েছিল প্রতাপশালী জমিদারের কঠোর আদেশে

গানটি – চিরদিন কাহারো সমান নাহি রয়।

পরবর্তি প্রজন্মকে অভিশাপ থেকে মুক্তি দানের আবেদন মহান আল্লাহর নিকট।

By Ekramul hoq

I am A.K.M Ekramul hoq MA.LLB. Rtd Bank Manager & PO of Agrani Bank Ltd. I am interested writing and reading. Lives in Bangladesh, District Jamalpur.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

en_USEnglish
Powered by TranslatePress