Categories
My text

প্রচলিত সালাত আর আল্লাহর নির্দেশিত

আমাদের প্রচলিত বা পরিচিত নামাজের যে আনুষ্ঠানিকতা তা কখনোই কোরান বিরুদ্ধ নয়। কোরানে সালাত শব্দটি প্রার্থনা অর্থেও ব্যবহৃত হয়েছে। এ ছড়া দয়া, ক্ষমা প্রার্থণা,আল্লাহর দয়া, অনুগ্রহ চাওয়া, আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ত মহিমা বর্ননা করার কথা কোরানে বহুববার বলা হয়েছে।

নামাজের প্রতি রাকাতে আমরা সূরা ফাতিহা পড়ি। সূরা ফাতিহা সবচেয়ে মহত্ত দোয়া বা প্রার্থনা। আমাদের যতরকমের চাওয়া আছে সব আমরা নামাজে মাধ্যমেই চাইতে পারি।
কিন্তু নামাজ প্রতিষ্ঠার অর্থ মানুষকে নামাজ পড়তে বাধ্য করতে হবে, এবং সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য ইসলামিক রাষ্ট্র কায়েম করতে হবে, পারায় মহল্লায় মাসজিদ নির্মান করতে হবে, মসজিদে জামাতে নামাজ করতে হবে, কোন অবস্থাতেই নামাজ মাফ নেই এই নির্দিষ্ট পদ্ধতিতেই নামাজ পড়তে হবে, তিন জুম্মা না পড়লে সে আর মুসলমান থাকবে না, মুসলিম আর কাফেরের মধ্য পার্থক্য হচ্ছে নামাজ, হাশরের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে,যারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে তারা বেহস্তে যাবে, এক ওয়াক্ত নামাজ না পড়লে ৮০ হোগবা দোজখের আগুনে পুড়বে, —- নামাজ নিয়ে এমন প্রচলিত ধারনা কোরান বিরুদ্ধ বা কোরান অনঅনুমোদিত।

বরং আল্লাহ — বিশ্বাস এবং সৎকর্মকে জান্নাতের পুর্ব শর্ত বলেছেন। আকিমিস সালাত বলতে আল্লাহর প্রতিটি আদেশ ও নিষেধ ছায়ার মত অনুসরন করা। অর্থাৎ ঝড়, জলোচ্ছাস, যুদ্ধ, মৃত্যু শয্যায়েও আল্লাহর বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে। নামাজ আমাদের জন্য একটি মহত্তম প্রার্থনা। নামাজে দাড়িয়ে আমরা সব আবেদন-নিবেদন,কামনা – বাসনা, রোগ-শোক, দূঃখ-বেদনা, অভাব-অনটন, জীবন- জীবিকা, সমাজ সংসারের শত শত সমস্যা সরাসরি সর্ব শক্তিমান আল্লাহর কাছে উপস্থাপন করি। যত অভিযোগ – অনুযোগ, আশা- আকাংখা,ভয়-ভীতি, অজানা আশংকা পরম করুনাময়ের কাছে সমর্পন করি। সেজদায় নত হয়ে পরম দাতা দয়ালু আল্লাহর মহত্ত,শ্রেষ্ঠত মহিমা গাই। সব ভুল-ভ্রান্তি, পাপ-তাপের ক্ষমা চাই অসীম ক্ষমাশীল স্রষ্টার কাছে। মহা জ্ঞানী মহাপ্রভুর কাছেই চাই সাহায্য, শক্তি -সাহস ও সত্য পথের দিশা। যত রকমের দোয়া দাবী আছে সবই নিবেদন করি নামাজে।

নামাজ হচ্ছে আত্মশুদ্ধির পথ, আত্ম উন্নয়নের সিড়ি। এই নামাজ বা প্রার্থনায় সবচেয়ে জরুরী হচ্ছে মনের একাগ্রতা। নামাজের মাধ্যমেই যুক্ত হচ্ছি মহাশক্তিমান, মহা প্রভুর সাথে। প্রার্থনা যোগে সর্ব শক্তিমানের সাথে সংযোগ সংস্থাপনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম নামাজ।

আমি আমাদের প্রচলিত পদ্ধতিতেই নামাজ পড়ি। কারন এতে আমি অভ্যস্থ, এতেই আমি স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। কিন্তু নামাজের এই পদ্ধতি,প্রক্রীয়া এবং নামাজের এই প্রচলিত ধারনা কোরান বিধিত,নির্ধরিত বা চুড়ান্ত নয়। কিন্তু তিন অবস্থায় নামাজ আদায় করা যাবে না তা কোরানে স্পষ্ট করে বলে দেয়া আছে।

হে ঈমানদারগন তোমরা প্রার্থনার নিকটবর্তী হয়ো না, ১) নেশা গ্রস্থ অবস্থায় ২) যতক্ষন না বুঝতে পারছো তোমরা কি বলছো ৩) অপবিত্র অবস্থায়। আল্লাহ অন্তর্যামী। তাই আল্লাহকে যা বলবেন তা হতে হবে মনের কথা।

নামাজে দাড়িয়ে বলছি:
সরল সঠিক পুন্যপন্থা দাও গো মোদের বলি
চালাও সে পথে যে পথে তোমার প্রিয়জন গেছে চলি….। এই সরল সঠিক পুন্য পন্থা হচ্ছে কোরান। কিন্তু নামাজে দাঁড়িয়েও যদি স্মরণ করি জটিল, কঠিন, ভেজাল পন্থা তবে এ নামাজ শুধু অর্থহীনই নয় এ নামাজ আমাদের নিয়ে যাবেঃ —
যে পথে তার চির অভিশাপ, যে পথে ভ্রান্তি চির পরিতাপ।
এ কারনেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া অনেককেই দেখি কোরানে নিষিদ্ধ অসৎ অপকর্মে ডুবে থাকতে।

কোরানে তাই বর্ণিত হয়েছেঃ
উহাদের পরে আসিল অপদার্থ পরবর্তীরা, তাহারা সালাত নষ্ট করিল ও লালসা-পরবশ হইল। সুতরাং উহারা অচিরেই কুকর্মের শাস্তি প্রত্যক্ষ করিবে, (১৯ঃ৫৯)

By Ekramul hoq

I am A.K.M Ekramul hoq MA.LLB. Rtd Bank Manager & PO of Agrani Bank Ltd. I am interested writing and reading. Also innovator of history of Islam. Lives in Bangladesh, District Jamalpur.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

en_USEnglish
Verified by MonsterInsights