কোরআনে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ, ফেরেশতা ও দেব-দেবীর নাম এসেছে। আল্লাহ ভালো ও মন্দ দৃষ্টান্ত হিসেবে তাদের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে মনে রাখতে হবে, উল্লিখিত ব্যক্তিদের নাম কোরআনে আসার ব্যাপারে কোনো মতভিন্নতা না থাকলেও তাদের নাম কতবার উল্লেখ করা হয়েছে তা নিয়ে মতভিন্নতা আছে। এখানে বেশির ভাগ তাফসিরবিদের মতামত অনুসরণ করা হয়েছে
যাদের নাম এসেছে তাদের শ্রেণিবিন্যাস
কোরআনে আল্লাহ তাআলা পাঁচ শ্রেণির নাম উল্লেখ করেছেন। তারা হলো—১. নবী-রাসুল, ২. ফেরেশতা, ৩. পুণ্যবান মানুষ, ৪. পাপী মানুষ, ৫. দেব-দেবী, ৬. শয়তান।
👉নবী-রাসুল : পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ২৫ জন নবী ও রাসুলের নাম উল্লেখ করেছেন।
তাঁরা হলেন—১. মুসা (আ.)-এর নাম ১৩৬ বার,
২. ইবরাহিম (আ.)-এর নাম ৬৯ বার,
৩. নুহ (আ.)-এর নাম ৪৩ বার,
৪. লুত (আ.)-এর নাম ২৭ বার,
৫. ইউসুফ (আ.)-এর নাম ২৭ বার,
৬. আদম (আ.)-এর নাম ২৫ বার,
৭. হুদ (আ.)-এর নাম সাতবার,
৮. ঈসা (আ.)-এর নাম ২৫ বার,
৯. হারুন (আ.)-এর নাম ২০ বার,
১০. ইসহাক (আ.)-এর নাম ১৭ বার,
১১. সুলাইমান (আ.)-এর নাম ১৭ বার,
১২. দাউদ (আ.)-এর নাম ১৬ বার,
১৩. ইয়াকুব (আ.)-কে ‘ইয়াকুব’ নামে ১৬ বার এবং ‘ইসরাইল’ নামে ৪৩ বার উল্লেখ করা হয়েছে,
১৪. ইসমাইল (আ.)-এর নাম ১২ বার,
১৫. শোয়াইব (আ.)-এর নাম ১১ বার,
১৬. সালেহ (আ.)-এর নাম ৯ বার,
১৭. জাকারিয়া (আ.)-এর নাম সাতবার,
১৮. মুহাম্মদ (সা.)-এর নাম মোট পাঁচবার এসেছে। চারবার মুহাম্মদ নামে এবং একবার আহমদ নামে,
১৯. আইয়ুব (আ.)-এর নাম চারবার,
২০. ইউনুস (আ.)-এর নাম পাঁচবার এসেছে। চারবার ইউনুস নামে এবং একবার জুননুন নামে,
২১. ইয়াহইয়া (আ.)-এর নাম পাঁচবার,
২২. ইয়াসা (আ.)-এর নাম দুইবার,
২৩. জুলকিফিল (আ.)-এর নাম দুইবার,
২৪. ইলিয়াস (আ.)-এর নাম এসেছে তিনবার। দুইবার ইলিয়াস নামে এবং একবার ইয়াসিন নামে,
২৫. ইদরিস (আ.)-এর নাম দুইবার।
তবে কোনো ইতিহাসবেত্তা মনে করেন জুনজুন ও ইয়াসিন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি। সেই হিসাবে কোরআনে উল্লিখিত নবীদের সংখ্যা ২৭ জন।
👉ফেরেশতা : পবিত্র কোরআনে পাঁচজন ফেরেশতার নাম এসেছে। তাঁর মধ্যে—
১. জিবরাইল (আ.)-এর নাম তিনবার।
২. মিকাইল (আ.)-এর নাম একবার।
৩. হারুত (আ.)-এর নাম একবার।
৪. মারুত (আ.)-এর নাম একবার।
৫. জাহান্নামের দ্বাররক্ষক মালিক (আ.)-এর নাম একবার।
👉পুণ্যবান ব্যক্তি : নবী বা রাসুল নন তবে তাঁরা আল্লাহর অনুগত ছিলেন, এমন সাত ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন। তাঁরা হলেন—
১. মারিয়াম (রহ.)-এর নাম ৩৪ বার।
২. জুলকারনাইন (রহ.)-এর নাম তিনবার।
৩. লোকমান (রহ.)-এর নাম দুইবার।
৪. উজাইর (রহ.)-এর আলোচনা দুইবার এসেছে। একবার নাম উল্লেখ করে, অন্যবার নাম উল্লেখ না করে ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে।
৫. জায়েদ ইবনে হারিসা (রা.)-এর নাম একবার।
৬. তালুত (রহ.)-এর নাম দুইবার।
৭. ইমরান (রহ.)-এর নাম তিনবার।
👉পাপী ব্যক্তি : পবিত্র কোরআনে আটজন পাপীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলো—
১. ফেরাউনের নাম ৭৪ বার। ফেরাউন মিসরের শাসকের উপাধি হলেও কোরআনে বর্ণিত ফেরাউন দ্বারা মুসা (আ.)-এর সমসাময়িক মিসরের শাসক উদ্দেশ্য।
২. তুব্বার নাম দুইবার। ইয়েমেনের শাসকের উপাধি।
৩. হামানের নাম ছয়বার। মিসরের নির্মাণমন্ত্রীর উপাধি। কোরআনে বর্ণিত হামান দ্বারা মুসা (আ.)-এর সমসাময়িক মিসরের নির্মাণমন্ত্রী উদ্দেশ্য।
৪. কারুনের নাম চারবার।
৫. সামেরির নাম তিনবার।
৬. জালুতের নাম তিনবার।
৭. আবু লাহাবের নাম একবার।
৮. আজরের নাম একবার।
👉দেব-দেবী ও মিথ্যা উপাস্য : পবিত্র কোরআনে আটজন দেব-দেবী ও মিথ্যা উপাস্যের নাম এসেছে। তারা হলো লাত, মানাত, উজ্জা, সুওয়া, ইয়াগুস, নাসর, বাআল ও ইয়াউক।
👉শয়তান : কোরআনে শয়তানকে ১১ বার ইবলিস নামে উল্লেখ করা হয়েছে।