মহা জগতের গৃহ নক্ষত্রের সৃষ্টি হঠাৎ এক প্রচন্ড শব্দের বিস্ফোরনে মাধ্যমে সংঘঠিত হয় বলে বিজ্ঞানের দাবী। আর এটাকেই বিগ ব্যা্ঙ থিওরী বলে।
পক্ষান্তরে কোরান বলে না, মহাজগতের অধিপতি একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে ধীরে ধীরে তা সুবিন্যস্ত করেন। অতঃপর তাকে বসবাসের উপযোগি করে প্রাণের সৃষ্টি করেছেন।
আসমানী বাণী থেকে জানা যায়ঃ
তিনিই ছয় দিবসে আকাশ মণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করিয়াছেন ; অতঃপর আরশে সমাসীন হইয়াছেন। তিনি জানেন যাহা কিছু ভূমিতে প্রবেশ করে ও যাহা কিছু উহা হইতে বাহির হয় এবং আকাশ হইতে যাহা কিছু নামে ও আকাশে যাহা কিছু উত্থিত হয়। তোমরা যেখানেই থাক না কেন তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন, তোমরা যাহা কিছু কর আল্লাহ্ তাহা দেখেন। (৫৭ঃ৪)
উক্ত আয়াতে আকাশ বলে নি, আকাশ সমুহের উল্লেখ করেছেন। বিজ্ঞান কি বলে সেটাও দেখবো।
অন্যত্র তিনি মহান রব বলেনঃ
আল্লাহ্ই ঊর্ধ্বদেশে আকাশ মণ্ডলী স্থাপন করিয়াছেন স্তম্ভ ব্যতীত তোমরা ইহা দেখিতেছ। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হইলেন এবং সূর্য ও চন্দ্রকে নিয়মাধীন করিলেন; প্রত্যেকে নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত আবর্তন করে। তিনি সকল বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন এবং নিদর্শন সমূহ বিশদ ভাবে বর্ণনা করেন, যাহাতে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাস করিতে পার। (১৩ঃ২)
অত্র আয়াতে তিনি স্তম্ভ ছাড়া আকাশকে স্থাপনের কথা উল্লেখ করেছেন। পক্ষান্তরে বিজ্ঞান কি বলে সেটাও জানবো।
উক্ত আয়াত অনুযায়ী তিনি আরো সকল বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে, কি ভাবে সব নিয়ন্ত্রন করেন এবং একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর যে তা ধংস করে, আবার অন্য এক অনন্ত জগতের পরিকল্পনা রেখেছেন তার প্রতি ঈমান আনার জন্য শেষ অংশে জানিয়ে দিয়েছেন।
তিনি কি ভাবে তা বসবাস উপযোগী করেছেন তার বর্ননা দিতে গিয়ে বলেনঃ
আমি আকাশে গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টি করিয়াছি এবং উহাকে সুশোভিত করিয়াছি দর্শকদের জন্য; (১৫;১৬)
আর পৃথিবী, উহাকে আমি বিস্তৃত করিয়াছি, উহাতে পর্বতমালা স্থাপন করিয়াছি; এবং আমি উহাতে প্রত্যেক বস্তু উদ্গত করিয়াছি সুপরিমিতভাবে,(১৫ঃ১৯) এবং উহাতে জীবিকার ব্যবস্থা করিয়াছি তোমাদের জন্য, আর তোমরা যাহাদের জীবিকা দাতা নও তাহাদের জন্যও। (১৫ঃ২৩)
আমি বৃষ্টি-গর্ভ বায়ু প্রেরণ করি, অতঃপর আকাশ হইতে বারি বর্ষণ করি এবং উহা তোমাদেরকে পান করিতে দেই; আর তোমরা উহার ভাণ্ডার রক্ষক নও। আমিই জীবন দান করি ও মৃত্যু ঘটাই এবং আমিই চূড়ান্ত মালিকানার অধিকারী। (১৫ঃ ২২ ও ২৩)
আমারই নিকট আছে প্রত্যেক বস্তুর ভাণ্ডার এবং আমি উহা পরিজ্ঞাত পরিমাণেই সরবরাহ করিয়া থাকি। ২১
এসব কিছু সৃষ্টির পুর্বে তাঁর মহাজগত কি অবস্থায় ছিল, তা বর্ননা করতে গিয়ে আল্লাহ জানানঃ
আসমান ও জমিন সৃষ্টির পুর্বে আরশ ছিল পানির উপর। আর তিনিই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন, তখন তাঁহার আরশ ছিল পানির উপর (১১ঃ৭)
এই মহাজগতের গ্রহ নক্ষত্র আকাশ বাতাস পানি সৃষ্টির পর প্রাণের বসবাস উপযোগির জন্য তিনি মনোনিবেস দিলেন এবং কুরসীতে সমাসীন হলেন।
তাঁহার কুরসী’ আকাশ ও পৃথিবীময় পরিব্যাপ্ত; ইহাদের রক্ষণাবেক্ষণ তাঁহাকে ক্লান্ত করে না; আর তিনি মহান, শ্রেষ্ঠ। (২ঃ২৫৫)
এবার তিনি তাঁর সৃষ্টির নীতি ও উদ্দ্যেশের ঘোষনা দিয়ে জানালেনঃ
মহিমান্বিত আল্লাহ্ যিনি প্রকৃত মালিক, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ্ নাই; সম্মানিত আরশের তিনি অধিপতি।
(২৩ঃ১১৬)
সেই সাথে তিনি পরবর্তি অনন্ত জগতের বিষয়ে সতর্ক করে সেদিন তার অবস্থানের কথা জানিয়ে দিলেন।
ফিরিশতাগণ আকাশের প্রান্তদেশে থাকিবে এবং সেই দিন আটজন ফিরিশতা তোমার প্রতিপালকের আরশকে ধারণ করিবে তাহাদের ঊর্ধ্বে। (৬৯ঃ১৭)
এই জাগতিক জীবনে ভুল ত্রুটির অনুশোচনাকারীদের জন্য এক মহা উপদেশ ও সতর্ক বানী জানিয়ে দিলেনঃ
যাহারা ‘আরশ ধারণ করিয়া আছে এবং যাহারা ইহার চতুষ্পার্শ্ব ঘিরিয়া আছে, তাহারা তাহাদের প্রতিপালকের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে প্রশংসার সঙ্গে এবং তাঁহার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং মু’মিনদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিয়া বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! তোমার দয়া ও জ্ঞান সর্বব্যাপী। অতএব যাহারা তওবা করে ও তোমার পথ অবলম্বন করে তুমি তাহাদেরকে ক্ষমা কর এবং জাহান্নামের শাস্তি হইতে রক্ষা কর।(‘৪০ঃ৭)৷
সব শেষে তিনি কোথায় অবস্থান করছেন জানালেন।
(তাঁর আরশ সমগ্র আলম ব্যপ্তি,দ্রষ্টব্য ২ঃ২৫৫)
দয়াময় আরশে সমাসীন। (২০ঃ৫)
তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্ যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন, অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হন। তিনি সকল বিষয় পরিচালনা করেন।(১০ঃ৩)
কোরানের এ আয়াতগুলির প্রতিটি কথা বিজ্ঞান যে সমর্থন করে এ বিষয়ে পরবর্তিতে আলোচনা করবো ধারাক্রম অনুযায়ী, ইনশাআল্লাহ! যেমনঃ
ছয়দিনের কথা কেন আসল?
স্তম্ভ বিহীন কি ভাবে আকাশকে স্থাপন করেছেন?
সৃষ্টির শুরুতে মহাবিশ্ব কেমন ছিল বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে।
আরশ এবং কুরসীর বিষয়ে বিজ্ঞানের ভাষ্য?
কিয়ামত হবে সে বিষয়ে বিজ্ঞানের প্রমাণ?
পুনরায় অনন্ত জগত সৃষ্টি বিষয়ে বিজ্ঞানের দৃষ্টি?
একরামুল হক ১৮-০৯-২৩