পবিত্র ও মহিমময় তিনি যিনি তাঁহার বান্দাকে রজনীতে ভ্রমণ করাইয়াছিলেন আল-মসজিদুল হারাম হইতে আল-মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যাহার পরিবেশ আমি করিয়াছিলাম বরকতময়, তাহাকে আমার নিদর্শন দেখাইবার জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা। ” (১৭ঃ১)
সুরা ওয়াকিয়ার ৭৫ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছেঃ
“আমি শপথ করছি সেই স্থানের যেখানে নক্ষত্রগুলি পতিত হয়।” — আচ্ছা বিজ্ঞা ছাড়া কি এই আয়াতের ব্যখ্যা করা সম্ভব? প্রথম টেলিস্কোপের আবিস্কারক আরব বিজ্ঞানী আবুল হাসান আজ থেকে প্রায় এক হাজার বছর আগে বিলেছিলেন এ আয়াত দ্বারা ব্লাক হোলের ইংগীত দেয়া হয়োছে। কিন্তু বিজ্ঞানের গবেষনার বিরোধিতা করা ঐ আলেমদের যদি বলা হয় ব্লাকহোল কি? তারা কি উত্তর দিতে পারবেন?
এই ধরুন পুরো শবে মেরাজটাই বিজ্ঞানের এক বাস্তবায়ন। বলা হয়েছে পৃথিবীর সময়ের মাত্র কয়েক সেকেন্ডে মুহাম্মদ সাঃ ২৭ বছর সময় পার করে এসেছেন। বিষয়টা একজন নাস্তিকের কাছে হাস্যকর মনে হবে। কারন আমরা তাদের কাছে কোন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে পারিনি। কিন্তু আল বিরুনীর কথা কাফেররা বিশ্বাস করেছিলেন, কারন তিনি একাধারে পদার্থবিদ,জ্যোতির্বিদ এবং দার্শনিক ছিলেন। তিনিই প্রথম পৃথিবীর ব্যাসার্ধ পরিমাপের একটি সূত্র আবিস্কার করেছিলেন। কোরানের সূরা আম্বিয়ার ৩৩ নম্বার সূরায় বলা হয়েছে, ” চন্দ্র-সূর্য প্রত্যেকে তাদের নিজস্ব গতিতে নিজ নিজ অক্ষে বিচরন করছে। এ আয়াতকে বিশ্লেষন করতে গিয়েই তিনি প্রথম আবিস্কার করছিলেন পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে। সেই বিজ্ঞানী আল বেরুনী মেরাজ সম্পর্কে ১০২৩ খৃষ্টাব্দে বলে গেছেন, মেরাজের ঘটনা কোন অলৌকিক বিষয় নয়। বরং আল্লাহ সেই রাতে পুরো পৃথিবীর সময়কে নিয়ন্ত্রন করে দিয়েছিলেন।
আজকের আধুনিক বিজ্ঞানীরা যার নাম দিয়েছেন টাইম ট্রাভেল ডায়মানসন। আমাদের বর্রতমান পৃথিবী হচ্ছে ডায়মানসনাল বা ত্রিমাত্রিক। ফোর্থ ডায়মানসন আমাদের জীবনে থাকলেও আমরা পুরোপরি সুবিধা এখনো ভোগ করতে পারি নাই। যেমন থার্ড ডায়মানসনের কারনে আমরা উপরে নীচে ডানে-বামে সব দিকে চলাচল করতে পারি। কিন্তু টাইম ডায়মানসনের ক্ষেত্রে তা এককেন্দ্রিক অর্থাৎ সময় সব সময় ভবিষ্যেতর দিকে চলমান, আমরা চাইলেই সময়কে থামিয়ে দেয়া কিংবা সামনে পেছনে যেতে পারি না।
কিন্তু বিজ্ঞানীদের মতে আমাদের আসপাশে হয়ত এমন গ্রহ আছে যেখনকার প্রাণীরা অতীত ভবিষ্যত যেখানে ইচ্ছে বিচরন করতে পারে। থিওরী অনুসারে পৃথিবীতে ১১টি ডায়মানসন আছে। স্টিন থিওরী অনুযায়ী ২৬টি ডায়মানসন থাকতে পারে আমাদের এ মহাবিশ্বে। এর মধ্যে আমরা যদি ৫ম ডায়মানসন পর্যন্ত বাস্তব রুপ দিতে পারতাম তাহলে আমরা আমাদের ভবিষ্যতে চলে যেতে পারতাম, সময়কে থামিয়ে দিতে পারতাম এমন কি একজন মানুষ আলাদা হয়ে দুইজন মানুষের মত বিচরন করতে পারতাম।
এবার চিন্তা করুন বিজ্ঞানীরা যদি ২৬টি ডায়মান্সনের গাণিতিক রুপ দিতে পারে তাহলে যিনি এ মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন তার পক্ষে কততম ডায়মানসনের রুপ দেওয়া সম্ভব।
ইস্রীর থিওরী অনুযায়ী ১০ম ডায়মানসনে অবস্থান করার কালে কোন প্রাণী তার গ্রহের বাইরেও অন্য গ্রহে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। অর্থাত সে চাইলে অন্য গ্রহের সময়কে আটকে দিয়ে তার নিজের গ্রহের সময় চলমান রাখতে পারেন। অর্থাত আমরা যদি ধরে নেই আল্লাহ ১০ ডায়মানসনে অবস্থান করছেন তবে তার পক্ষে পৃথিবীর সময়কে ২৭ বছরের জন্য আটকে দেয়া সম্ভব। কিংবা হতে পারে যেখানে রাসুল সাঃ কে সেদিন যেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেখানের ২৭ বছরের সাথে পৃথিবীর সময়ের অনুপাত মাত্র কয়েক সেকেন্ড।
যেমন আমাদের সৌরজগতের একদিন সমান আমাদের পৃথিবীর ১১৬ দিন ১৮ ঘন্টা, অর্থাৎ শুক্র গ্রহে আপনি একদিন কাটিয়ে আসলেন, আপনার পৃথিবীর জীবন থেকে ১১৬ দিন শেষ হয়ে যাবে। তার মানে একি সময়ে বিভিন্ন গ্রহে যদি পার্থক্য থাকতে পারে তাহলে আরশে আজমের সাথে পৃথিবীর সময়ের পার্থক্য কত সেটা আমাদের মানুষের পক্ষে জানা কখনই সম্ভব না।
তবে যেহেতু রাসুল সাঃ আল্লাহর কাছে যাবার আগে মসজিদুল হারাম থেকে বায়তুল মোকাদ্দস পর্যন্ত যাওয়ার সময় পর্যন্ত পৃথিবীতেই ছিলেন, ঐ সময়ে মক্কা থেকে জেরুজালেমে যেতে দীর্ঘ সময় কেটে যেত সেই কারনে
অনুমান করা যায় আল্লাহ হয়ত এখানে তাঁর হায়াত ডায়মানসনের ক্ষমতা ব্যবহার করে পৃথিবীর সময়কে ২৭বছরের জন্য আটকে দিয়েছিলেন। অতএব রাসুল সাঃ এর মেরাজ কোন কল্পনা প্রসুত নয় বরং বৈজ্ঞানিক থিওরীর প্রতিফলন। মেরাজে ঘটনায় কিভাবে বিজ্ঞানের প্রোয়গ ঘটেছে তা বুঝার জন্য উৎকৃষ্ট উদাহরন হতে পারে এপিক্স সাইন্সফ্রিকশন মুভির। এই ছবিটিতে টাইম ট্রাভেলের বিষয়টি নিখুতভাবে ফুটিয়ে তুলা হয়েছে। মুভির শেষদিকে কোপারের সাথে তার মেয়ে মারফের যখন সাক্ষাত হয় তখন বাবার চেয়ে তার মেয়ের বয়স অনেক বেশী দেখানো হয়েছে। কারন বাবা পমথিবী থেকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বিভিন্ন গ্রহে অবস্থান করেছেন। মুভেতে ব্লাকহোলের পাশাপাশি ওয়াবহোলের বাস্তব ব্যবহার দেখানো হয়েছে, যা আমাদের এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে সর্টকাট ওয়েতে নিয়ে যেতে সক্ষম।
মেরাজের নবীজীকে দ্রুতগামী নিয়ে যাওয়ার যে বাহনের কথা বলা হয়েছে হতে পারে সেটাও ছিল শক্তিশালী মধ্যাকর্ষণ শক্তির সর্ব্বোচ্চ ব্যবহার। মিথুর মিলা মেরাজকে অস্বীকার করলেও ইন্টারেস্ট টিলালা মুভিকে বলেছেন বৈজ্ঞানিক। কারন এই মুভিতে স্টিন থিওরী, রিলেটিভিটি এস্ট্রো ফিজিক্স এবং টাইম ডায়মানসন সহ বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক সুত্রের বাস্তবিক রুপ দেওয়া হয়েছে। তবে বাস্তবে তা করতে হলে বিজ্ঞানকে আরো অনেকদুরে এগিয়ে যেতে হবে। তা হয়ত কখনোই সম্ভব নাও হতে পারে।
কাফেররা যখন বিজ্ঞানের জয়যাত্রার পথে নতুন নতুন আবিস্কারের স্বপ্ন দেখছে, বিজ্ঞানময় এই কোরান ভিত্তিক ইংরেজী, গণিত বাদ দিয়ে আমাদের এই আলেমরা তখন সাপ,ব্যাঙের বানোয়াট ব্যঙামা ব্যঙামীর কিচ্ছা শিখিয়ে তৈরী করছেন মসজিদের ইমাম আর মাদ্রাসার শিক্ষক। যাদের আয়ের একমাত্র উৎস মানুষের যাকাত, ফিতরা, মিলাত আর কোরবানীর চামড়ার টাকা।
আমরা কোরান থেকে বিজ্ঞানকে আলাদা করে দেয়ার সুযোগে আমাদের দেশে ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিকেরাও বিজ্ঞান থেকে কোরানকেও সরিয়ে দিয়েছে।