আলেমদের চাতুরতা – ফারুক হোসেন
সহী বুখারি বইটি আদৌ বুখারির লেখা নয় .
কোরানের পরেই যে বইটিকে আমাদের সুন্নি আলেম সমাজ সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে সেটা হলো সহী বুখারি। মজার ব্যপার হলো এই বইটি যে বুখারি লিখেছেন তারো কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য আমাদের আলেমরা দিতে পারেন না বা মূল বুখারি বই বা তার কোন অনুলিপি কেউ দেখাতে পারবেন না। কারন বুখারির বই , একটি একক বই হিসাবে আসেনি। বেশিরভাগ আলেম কতৃক গৃহীত ইমাম ইবনে হাজার আল-আসকালানির(মৃত্যু ৮৫২ হিজরী) বুখারির হাদীসের উপর লিখিত টীকা বা মন্তব্য মূলক বই ‘ফাথ আল বারি’ র উপর ভিত্তি করেই বর্তমান বুখারি হাদীস গুলিকে একটি বইয়ের আকার দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ আমরা যাকে সহী বুখারি বলে জানি , সেটি সঙ্কলিত হয়েছে রাসুলের মৃত্যুর প্রায় ৮০০ বছর পরে।
ইবনে হাজার আল-আসকালানি আবার তার টীকা টিপ্পনির জন্য নির্ভর করেছিলেন আল-কুশাইমানির (মৃত্যু ৩৮৯ হিজরি) লিখিত অনেকগুলো খন্ডের (রিওয়াইয়াত) উপর , যেগুলো বুখারির ছাত্র আল-ফিরাব্রির উদ্ধৃতি দিয়ে লেখা। আসকালানি বা কুশাইমানি কারো সাথে বুখারির(মৃত্যু ২৫৬ হিজরী) দেখা হওয়ার সম্ভাবনা যেমন ছিলনা , তেমনি উনারা সরাসরি বুখারী কতৃক সঙ্কলিত হাদীসের বই ও পড়েন নি। একেই বলে আলেমদের চতুরতা। তাদের কাছে বুখারি লিখিত একক কোন গ্রন্থ নেই। যার অস্তিত্ব নেই তা থাকারো কথা না। যা আছে তা বুখারির মৃত্যর পরের ৬০০ বছর এখান থেকে কিছু ওখান থেকে কিছু , এমনি করেই হাদীস সংগ্রহ করে কথিত বুখারির একক বইয়ের আকার দেয়া হয়। হাদীসে যে ‘সানাদ’ বা ইসনাদ নিয়ে এত মাতামাতি , সেই ইসনাদেরি কোন ঠিক ঠিকানা নেই বুখারির মৃত্যুর পরের ৬০০ বছর।