Categories
My text

শয়তান প্রকাশ্য শত্রু

কেমন ধুকায় ফেলে রেখেছে  দীর্ঘদিন যাবৎঃ~
সাধারন ভাবে আমাদের জন্মগত ভাবে ধারনা শয়তান এক আলাদা সৃষ্টি কিছু। যে আমাদের রগে রগে মিশে থাকে, সকল পাপ কর্ম করায়নল এবং আমাদের পথভ্রষ্ট করে। তাই শয়তানকে পরাভুত করার জন্য আল্লাহর সাহায্য চাই। না জানি কেমন দেখতে সেই শয়তান। ইত্যাদি ইত্যাদি। অথচ আল্লাহ বলেনঃ “নিশ্চয় শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।”

হে মু’মিনগণ! তোমরা সর্বাত্মক ভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করিও না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (সুরা বাকারা, আয়াত ২০৮)
এখানে আল্লাহ অদৃশ্য শত্রু বলেন নাই। বলেছেন প্রকাশ্য।

তার মানে তার উপস্থিতি দেখা যায়, তাকে ধরা যায়, অনুভব করা যায় এমন কি চিহ্নিত করা যায় এটা শয়তান।

যেহেতু সে প্রকাশ্য। প্রকাশ্য শত্রু কি ভাবে তা বুঝাতে শয়তানের বর্ননা বিষয়ক আয়াত গুলি পড়লেই বুঝা যায় শয়তান কোন আলাদা সৃষ্টি সত্তা নয়। আল্লাহর নির্দেশ অমান্যকারী যে কোন জীন ও মানুষই প্রকাশ্য শয়তান।

১) সে বলিল, ‘হে আমার বৎস! তোমার স্বপ্ন-বৃত্তান্ত তোমার ভ্রাতাদের নিকট বর্ণনা করিও না; করিলে তাহারা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করিবে। শয়তান তো মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। সূরা নম্বরঃ ১২, আয়াত নম্বরঃ ৫

২) আমার বান্দাদেরকে যাহা উত্তম তাহা বলিতে বল। নিশ্চয়ই শয়তান উহাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উস্কানি দেয়; শয়তান তো মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। ( 17:53)

৩) তাহার সহচর শয়তান বলিবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমি তাহাকে অবাধ্য করি নাই। বস্তুত সে-ই ছিল ঘোর বিভ্রান্ত। (সূরা নম্বরঃ ৫০, আয়াত নম্বরঃ ২৭)

৪) এইরূপে আমি মানব ও জিনের মধ্যে শয়তানদেরকে প্রত্যেক নবীর শত্রু করিয়াছি, প্রতারণার উদ্দেশ্যে তাহাদের একে অন্যকে চমকপ্রদ বাক্য দ্বারা প্ররোচিত করে। যদি তোমার প্রতিপালক ইচ্ছা করিতেন তবে তাহারা ইহা করিত না; সুতরাং তুমি তাহাদেরকে ও তাহাদের মিথ্যা রচনাকে বর্জন কর।(সূরা নম্বরঃ ৬, আয়াত নম্বরঃ ১১২)

৫) যখন তাহারা মু’মিনগণের সংস্পর্শে আসে তখন বলে, ‘আমরা ঈমান আনিয়াছি’; আর যখন তাহারা নিভৃতে তাহাদের শয়তানদের সঙ্গে মিলিত হয় তখন বলে, ‘আমরা তো তোমাদের সঙ্গেই রহিয়াছি; আমরা শুধু তাহাদের সঙ্গে ঠাট্টা-তামাশা করিয়া থাকি।'(সূরা নম্বরঃ ২, আয়াতঃ ১৪)

এ আয়াতে “যখন তাহারা মুমিনের সংস্পর্শে আসে- তখন বলে আমরা ঈমান এনেছি। তাদেরকে শয়তান বলেছেন, মানে সেই কুপ্রবৃতির মানুষই প্রকাশ্য শয়তান।

৭) তোমার আহ্বানে উহাদের মধ্যে যাহাকে পার পদস্খলিত কর, তোমার অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনী দ্বারা উহাদেরকে আক্রমণ কর এবং উহাদের ধনে ও সন্তান-সন্ততিতে শরীক হইয়া যাও ও উহাদেরকে প্রতিশ্রুতি দাও। শয়তান উহাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দেয় উহা ছলনা মাত্র। সূরা নম্বরঃ ১৭, আয়াত নম্বরঃ ৬৪

৮) শয়তান তো তোমাদের শত্রু ; সুতরাং তাহাকে শত্রু“ হিসাবে গ্রহণ কর। সে তো তাহার দলবলকে আহবান করে কেবল এইজন্য যে, উহারা যেন জাহান্নামী হয়। (৩৫:৬)

৯) এবং শয়তানদেরকে, যাহারা সকলেই ছিল প্রাসাদ নির্মাণকারী ও ডুবুরী, এবং শৃঙ্খলে আবদ্ধ আরও অনেককে।(৩৮:৩৭-৩৮)

১০) শয়তান যেন তোমাদেরকে কিছুতেই নিবৃত্ত না করে, সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
সূরা নম্বরঃ ৪৩, আয়াত নম্বরঃ ৬২

১১) শয়তান উহাদের উপর প্রভাব বিস্তার করিয়াছে ; ফলে উহাদেরকে ভুলাইয়া দিয়াছে আল্লাহ্‌র স্মরণ। উহারা শয়তানের দল। সাবধান! শয়তানের দল অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত। সূরা নম্বরঃ ৫৮, আয়াত নম্বরঃ ১৯

১২) ইহারাই শয়তান, তোমাদেরকে তাহার বন্ধুদের ভয় দেখায় ; সুতরাং যদি তোমরা মু’মিন হও তবে তোমরা তাহাদেরকে ভয় করিও না, আমাকেই ভয় কর। (৩: ১৭৫)

১৩) এবং সুলায়মানের রাজত্বে শয়তানরা যাহা আবৃত্তি করিত তাহারা তাহা অনুসরণ করিত। সুলায়মান কুফরী করে নাই, বরং শয়তানরাই কুফরী করিয়াছিল। তাহারা মানুষকে জাদু শিক্ষা দিত এবং যাহা বাবিল শহরে হারূত ও মারূত ফিরিশ্তাদ্বয়ের উপর অবতীর্ণ হইয়াছিল। তাহারা কাহাকেও শিক্ষা দিত না এই কথা না বলিয়া যে, ‘আমরা পরীক্ষা স্বরূপ; সুতরাং তুমি কুফরী করিও না।’ তাহারা উভয়ের নিকট হইতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যাহা বিচ্ছেদ সৃষ্টি করে তাহা শিক্ষা করিত, অথচ আল্লাহ্‌র নির্দেশ ব্যতীত তাহারা কাহারও কোন ক্ষতি সাধন করিতে পারিত না। তাহারা যাহা শিক্ষা করিত তাহা তাহাদের ক্ষতি সাধন করিত এবং কোন উপকারে আসিত না; আর তাহারা নিশ্চিত ভাবে জানিত যে, যে কেহ উহা ক্রয় করে পরকালে তাহার কোন অংশ নাই। উহা কত নিকৃষ্ট, যাহার বিনিময়ে তাহারা স্বীয় আত্মাকে বিক্রয় করিয়াছে, যদি তাহারা জানিত! সূরা নম্বরঃ ২, আয়াত নম্বরঃ ১০২

১৪) হে মানবজাতি! পৃথিবীতে যাহা কিছু বৈধ ও পবিত্র খাদ্যবস্তু রহিয়াছে তাহা হইতে তোমরা আহার কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করিও না, নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। সূরা নম্বরঃ ২, আয়াত নম্বরঃ ১৬৮

১৫) হে মু’মিনগণ! তোমরা সর্বাত্মক ভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করিও না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। (২ঃ২০৮)

১৬) যখন কোরআন পাঠ করিবে তখন অভিশপ্ত শয়তান হতে আল্লাহর স্মরণ লইবে। (সূরা নম্বরঃ ১৬, আয়াতঃ ৯৮)

By Ekramul hoq

I am A.K.M Ekramul hoq MA.LLB. Rtd Bank Manager & PO of Agrani Bank Ltd. I am interested writing and reading. Lives in Bangladesh, District Jamalpur.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

en_USEnglish
Powered by TranslatePress