অনুভুতিঃ১২৫
সালাত বা নামাজ
এ বিষয়ে বলতে গেলে অনেক সতর্কতার সহিত বলতে হয়। এটা ধর্মের একটা স্পর্শকাতর বিষয়। কথা বললে যদি মনগড়া মন্তব্য হয় তাহলে অনেকের বিরাগভাজন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আবার কেউ যদি আমার কথা বুঝতে না পারেন, অথবা আমার লেখাতে যদি দুর্বলতা থাকে, তাহলে সমস্যার তো সমাধান হবেই না বরং নতুন সমস্যার তৈরি হবে।
প্রচলিত সালাত আমাদের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ স. এর সময় থেকেই চালু হয়েছে, তবে একথাও সত্য নবীর আগে ও অন্যান্য নবীদের সময়ও সালাত বা নামাজ ছিল।
আমরা যদি নবীর নবুয়তের জীবনটাকে দুই ভাগে বিভক্ত করি, মেরাজের পূর্বের সময় এবং মেরাজ পরবর্তী রাসুল স. এর ইন্তেকাল পর্যন্ত সময়।
মিরাজের পূর্বে যে সূরা গুলো নাযিল হয়েছে যেমনঃ সূরা আলাক, সূরা কলম, সূরা মুদাস্সির, সুরা মোজাম্মেল সেখানেও সালাতের কথা উল্লেখ আছে। মেরাজের পূর্বে তো বর্তমানে প্রচলিত নামাজের নির্দেশনা আসে নাই।
তাহলে ঐ সালাত কোন সালাত এবং ঐ সেজদা কোন সেজদা?
যতটুকু বোঝা যায় শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ স. কে ঘিরে যে জমায়েত হত সে জামায়াতের উপস্থিতি এবং নবীজীকে ঘিরে যে মজলিস হত, যেখানে তিনি আল্লাহর পরিচয় তুলে ধরতেন, আল্লাহর আদেশ নিষেধ তুলে ধরতেন, ওটাই সালাত।
এবং সেজদা হলো রাসুলের কথাকে মনোযোগ সহকারে গ্রহণ করাকে। যাহারা নবীজির কথা শুনতেন তাহাদের মধ্যে কেউ কেউ বলতেন মোহাম্মদ স. আমাদের সাথেই বড় হয়েছে, একই পরিবেশে কষ্টের জীবন অতিবাহিত করেছে, পরিশ্রম করেছেন, এত সুন্দর সুন্দর কথা এত যুক্তিযুক্ত কথা, এত যৌক্তিক কথা মোহাম্মদের স. এর বলার কথা না। তাহলে মোহাম্মদ স. যে বলল ‘এগুলো আল্লাহর কথা’ সেটাই সত্য কথা। অর্থাৎ নবীজির কথাকেই যারা আল্লাহর কথা মনে করে মনে প্রাণে উপলব্ধি করেছিল তাদের সেজদা হয়েছিল। রাসুল স. এর প্রতি পুর্ণ আনুগত্য হয়েছিল।
মেরাজের রজনীর পরে আল্লাহপাকের পক্ষ থেকে নির্দেশিত যে সালাত আমাদের জন্য নিয়ে আসলেন সে নামাজ হলো রুকু-সেজদা যুক্ত সলাত যা আমরা এখনও পালন করে থাকি।
শেষ নবীর সাহাবীরা আনুগত্যের নামাজ ও সেজদা এবং মিরাজ পরবর্তী রুকু সেজদা যুক্ত সালাত দুটোই আদায় করার, পালন করার, প্রতিষ্ঠা করেন সুযোগ পেয়েছিলেন।
কিন্তু আমরা বর্তমানে রাসুলের উম্মত দাবিদাররা শুধুমাত্র রুকু-সিজদা যুক্ত নামাজ নিয়েই ব্যস্ত আছি। আনুগত্যের নামাজ, বিনয়ের নামাজ এবং যাবতীয় অশ্লীলতা থেকে মুক্তির নামাজ, মিরাজ হওয়ার নামাজ ও সিজদা আমাদের কপালে নাই আমরা দুর্ভাগা।
এই দুই প্রকার সালাত এবং সিজদা পেতে হলে আল্লাহর মনোনীত মুখলাসিন বান্দা, রাসুলের ওয়ারিশ, রাসুলের প্রতিনিধি কে পেতে হবে। যদি পাওয়া যায় তাহলে জীবন সার্থক হবে। আর তা না হলে ফেতনা ফ্যাসাদ, বিভেদ, মতভেদ, হিংসা এর মধ্য দিয়ে ধ্বংসপ্রায় ধর্মের মধ্যেই পড়ে থাকতে হবে।